অন্দরের শোভা বাড়ায় নান্দনিক আয়না। নিজের অবয়ব দেখার পাশাপাশি আয়নার সাজে পুরো ঘর হয়ে উঠতে পারে অনন্য। অন্দরে আভিজাত্যও ফুটিয়ে তোলে আয়না।
প্রবেশপথে আয়না
অন্দরের প্রবেশপথে আয়না থাকলে অতিথিদের আকৃষ্ট করা যায়। আর বাইরে বের হবার আগে নিজেকে সাজিয়ে নেয়ার পর কেমন দেখায় তা এক ঝলক দেখে নেয়া যেতে পারে এই আয়নায়। আয়নার পাশে কোলাজ ফ্রেমে নিজের ছবি সাজিয়ে নেয়া যেতে পারে তাহলে অন্দরে সাজে আসবে বৈচিত্র্য। ফলস সিলিং তৈরিতে অনেক সময় কাচ ব্যবহার করা হয়।
চাইলে সেখানে আয়নাও ব্যবহার করা যায়। তবে প্রবেশমুখে ছোট আকৃতির আয়না দরকার। গোল আকৃতির হলে বেশ সুন্দর দেখায়। আয়নার চারিপাশে কাপড় বা কাচের কারুকাজ করিয়ে নিলে বেশ জাকজমকপূর্ণ দেখায়। প্রকৃতিপ্রেমীরা আয়নায় পছন্দের লতা পাতাও ঝুলিয়ে দেয়। সাজ যেমনই হোক না কেন অন্দরের অন্তরে প্রবেশে এই আয়না আন্তরিক আহ্বান জানায়।

প্রবেশপথে আয়না
বসার ঘরে আয়না
অন্দরের আবহ নান্দনিক করে তোলে দেয়ালজুড়ে থাকা আয়না। বসার ঘরের দেয়ালটি রাঙিয়ে নিয়ে মাটির টেরাকোটার ফ্রেম করা আয়নায় সাজিয়ে নিলে আয়নার ফাঁক গলে রোদের আলোয় ঘরে চমৎকার আবহ তৈরি হয়।
এজন্য জানালার বিপরীত দেয়ালটি বেছে নিতে হবে। সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে অন্দর আলোকিত রাখার পাশাপাশি অন্দর বড়ও দেখায়। তবে আসবাবের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আয়নার ফ্রেম নির্বাচন করতে হবে। চার কোণা, লম্বা, গোল এমন নানা আকৃতির ছোট-বড় আয়না পাওয়া যায়। অন্দরের ধরণ দেখে মিলিয়ে নিতে হবে।

বসার ঘরে আয়না
শোবার ঘরে আয়না
ড্রেসিং টেবিলের আয়নাটি অনেকেই শোবার ঘরেই রাখে। কারণ ঘুমানোর আগে চুল আঁছড়ে নিতে কিংবা মেকাপ তুলে নিতে দরকার হয় আয়নার। যদি আলাদা করে ড্রেসিং টেবিল রাখতে ইচ্ছে না হয় তাহলে ওয়ারড্রোবের বা আলমারির এক পাশে চারকোনা আয়না লাগিয়ে নেয়া যায়। কারণ কারুকার্যময় আয়না থাকলে আলাদা করে ড্রেসিং টেবিলের প্রয়োজন পড়ে না। তবে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে অর্থ্যাৎ বিছানার কাছাকাছি আয়না না রাখাই ভালো।
সাজের সব উপকরণ আয়নার পাশে কাঠের ছোট টেবিল বানিয়ে রাখা যাবে। দেশীয় সাজের লুক পেতে নকশিকাঁথা ও শীতল পাটি দিয়ে ফ্রেম বানিয়ে নেয়া যায়। কাঠ ও বেতের ত্রিকোণ ফ্রেমও মানিয়ে যায়। তবে আধুনিক সাজে কারুকাজ করা কাঠ, পোরসেলিন, মেটাল বা হ্যান্ডপেইন্টের আয়না ব্যবহার করে অনেকেই। তবে শোবার ঘরে আয়নায় কাঠের সঙ্গে পিতল বা তামার ব্যবহার হলে জাকজমকপূর্ণ লুক আসবে।

শোবার ঘরে আয়না
খাবার ঘরে আয়না
খাবার ঘরে ফলের আকৃতির একটা নকশাদার আয়না বসিয়ে নিলে বেশ সুন্দর দেখাবে। খাবার ঘরের পাশে বেসিন থাকলে সেই আয়নাটিও সাজিয়ে নেয়া যেতে পারে।
খাবার ঘর থেকে অন্য ঘরে যাওয়ার পথে প্যাসেজ বা একটা দেয়াল থাকলে সেখানেও আয়নার ব্যবহার মানিয়ে যাবে। তবে কোন ভাবেই খাবার ঘরে একাধিক আয়না ব্যবহার ঠিক না। আবার বসে খাবার সময় যেন আয়নাটি না দেখা যায় সে খেয়ালও রাখতে হবে। কারণ রুচিসম্মত শৌখিন আসবাব ঘরে নিয়ে আসে শৈল্পিকতার ছোঁয়া।

খাবার ঘরে আয়না
স্নান ঘরে আয়না
স্নানঘরের অন্দরসজ্জায় আয়নার ব্যবহার বেশ নজড় কাড়ে। আয়নার উপর স্পটলাইট লাগিয়ে নিলে পানিতে আলোর প্রতিফলনে ঝলমলে পরিবেশের তৈরি হবে। গোসলের সময় এমন পরিবেশ বেশ স্বস্তি দেবে।

স্নান ঘরে আয়না
যতনে রাখি
অন্দরসাজে আয়নার ব্যবহারে যতœ নিতে হবে নিয়মিত। কারণ আয়নায় অল্পতেই ধুলো জমে। নিয়মিত পরিষ্কার না করলে স্বাধের আয়নায় বিশ্রি দাগ লেগে যেতে পারে। এক্ষেত্রে নরম সুতি কাপড়ে পানি বা ডিটারজেন্টসহ পানি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
আয়নায় যদি ভাঙণ দেখা বা ফাটল চোখে পড়ে সাথে সাথেই মেরামত করিয়ে নিতে হবে।
মুখের অবয়ব ভালোভাবে দেখা যায় এমন আয়না কিনতে হবে। অস্পষ্ট আয়নায় চেহারা দেখলে চোখের উপর প্রভাব পড়তে পারে।
লেখা : রোদসী ডেস্ক