একুশের সাজ যেমন হওয়া চাই

করেছে Shaila Hasan

শায়লা জাহান:

“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কী ভূলিতে পারি?” ঐতিহাসিক এই গান আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ভাষার জন্য রাজপথে শহীদ হওয়া সালাম, বরকত, রফিক, শফিক সহ অসংখ্য নাম না জানা ভাষা শহীদদের কথা। একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি প্রতিটি বাঙালির জীবনে অনেক বিশেষ একটি দিন কারণ এর সাথে জড়িয়ে আছে বাঙালি জাতির আবেগ, ঐতিহ্য। এই ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ কে সম্মান জানাতে প্রতি বছরই শ্রদ্ধার সাথে তাঁদের স্মরণ করা হয়। এই দিনে সকল স্তরের, সকল বয়সের মানুষ ফুল হাতে সমবেত হোন শহীদ মিনারে। দিবসটিকে ঘিরে সারাদিন জুড়ে থাকে নানান ধরনের আয়োজনের। তাই দিবসটি পালনের পাশাপাশি সাজ-পোশাকের ক্ষেত্রেও থাকা চাই কিছুটা বিশেষত্বের। কেমন হবে অমর একুশের সাজ-পোশাক? আসো জেনে নিই।

– প্রকৃতিতে বইছে ফাল্গুনি হাওয়া। ফাল্গুন মানে রঙের ছাড়াছড়ি। কিছুদিন আগেই আমরা রঙ-বেরঙের সাজপোশাকে ফাল্গুনকে বরণ করে নিয়েছি। আর একদিন পরেই একুশে ফেব্রুয়ারি। একেক দিবস একেক গল্প বহন করে। তাই আমাদের সাজগোছের যাবতীয় কিছু হওয়া চাই এই আবহকে ঘিরে। একুশ মানেই শোক, একুশ মানেই সাদাকালোর এক মেলবন্ধন। আর এই সাদাকালোর ভেতরই যেন মিশে আছে একুশের ভাবগাম্ভীর্য। এই দিনে সাদা-কালোর মিশেলে কিংবা শুধু সাদা বা কালো পোশাকে নিজেকে সাজিয়ে নিতে পারো।

– আমাদের দেশের আবহে মেয়েদের পছন্দের তালিকায় থাকে শাড়ি। সাদা কালোর মিক্সড অথবা সাদা শাড়ি, কালো ব্লাউজ এমন কন্ট্রাস্টে করেও শাড়ি নির্বাচন করতে পারো। শাড়িতে মেটারিয়েল হিসেবে সুতিকে প্রাধান্য দেয়া থাকলেও, সিল্ক, জামদানি, মসলিন ইত্যাদিও পরতে পারো।

– প্রতিবছরই আমাদের দেশের ফ্যাশন হাউজগুলো এই দিবস উপলক্ষে নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাকের সমারোহ নিয়ে হাজির থাকে। ভাষার মাসে পোশাকের অবয়ব অলংকরণে বর্ণমালা ও জ্যামিতিক মোটিফের ডিজাইন প্রাধান্য পায়। বর্ণ ও শব্দ মালার বিন্যাসে অলঙ্কৃত পোশাকও বেছে নিতে পারো।

– শুধু শাড়িতেই নয়, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, টপস ইত্যাদিও তুমি অনায়াসে পরতে পারো। লাল, কালো, সাদা, ধূসর প্রধান রঙ ছাড়াও সবুজ, নীল, কমলার মতো রঙ বেছে নিতে পারো। কামিজ, ফতুয়ায় এমব্রয়ডারি, অ্যাপলিক, হ্যান্ড পেইন্ট, ব্লক, স্ক্রিন প্রিন্ট সহ বিভিন্ন নকশার প্রাধান্য পাচ্ছে। তোমার পছন্দ অনুযায়ী তা নির্বাচন করে নিতে পারো।

– সাজের প্রসঙ্গে বলতে গেলে, যতটা ন্যাচারাল দেখানো যায় তাই ভালো। একুশ মানে কিন্তু প্রভাতফেরি। এই দিনের যত আয়োজন সবকিছুর সূচনা এই প্রভাতফেরির মধ্য দিয়েই শুরু হয়ে যায়। তাই দিনের বেলা সাজে প্রসাধনীর উপস্থিতি যতটা কম হবে তত স্নিগ্ধ দেখাবে। মুখ ভালো করে ক্লিন করে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নাও। হালকা ফাউন্ডেশন দিয়ে মুখের বেজ ঠিক করে কম্প্যাক্ট পাউডার দিয়ে সেট করে নাও। দিনের আলোতে কন্ট্যুরিং ভাল দেখাবেনা। তার পরিবর্তে গালের দু’পাশে হালকা করে ব্লাশন মিশিয়ে দাও। এতে চেহারায় সতেজ ভাব দেখাবে। চোখ ভর্তি করে দিতে পারো কাজল এবং টানা করে আইলাইনার। ঠোঁটে হালকা কালারের লিপস্টিক। ব্যস! এই মিনিমাল মেকআপ লুকে তোমাকে দেখাবে অনেক সুন্দর। আর হ্যাঁ, সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলোনা যেন।

– চুল সজ্জার ক্ষেত্রে সাদামাটা বেণি বা হাতখোঁপা করলে ভালো দেখাবে। চাইলে তাতে সাদা রঙের যে কোন ফুল জড়িয়ে দিতে পারো।

– এই দিনে সাজে যেমন বাঙ্গালিয়ানা ভাব দেখতে ভালো লাগে তেমনি সাজের সাথে আনুষঙ্গিক জিনিসও সেভাবে বেছে নিতে পারো। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ কিংবা ফতুয়া সব পোশাকের সাথেই পরতে পারো দেশীয় ও ঐতিহ্যবাহী গয়না। শুধু হাত ভর্তি কাঁচের চুড়িও বেশ মানিয়ে যাবে। সাজের পাশাপাশি আরামদায়কতাকেও প্রাধান্য দিতে হবে। এজন্য পায়ে পরতে পারো চটি কিংবা স্যান্ডেল।

– যদি তোমার সারাদিনের বাইরে থাকার পরিকল্পনা থাকে, তবে সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েই বের হবে। সন্ধ্যার পর হালকা ঠান্ডায় যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য সাথে পাতলা শাল নিতে ভূলোনা যেন।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0

You may also like

তোমার মন্তব্য লেখো

one × 1 =