কান্তনগর
রাহেল রাজিব
প্রহরীর ঘুমহীন রাত থাকে না ইতিহাসে, শুধু
নরম বিছানাকাতর পুরুষ-নারী।
শীতার্ত কান্তনগরে সম্পর্কের জ্যামিতিক নকশা
এঁকে সেটে দেই সময়ের দেয়ালে-দেয়ালে।
নির্ঘুম রাতের মায়া শুষে নেয় ক্রোধ-ঈর্ষা
বৃদ্ধের চাহনি। সদ্য মৃত মাছের চোখের মতো
ভোরের আলোর অপেক্ষায় কাটে শিল্পীর অক্ষম রাত!
প্রসঙ্গ
বীরেন মুখার্জী
তোমার শরীরে বাঁধা একুশ শতকের আয়না
ক্রমেই ঢুকে পড়ছে প্রসঙ্গে,
কিছুতেই ফিরতে পারছি না নিজস্ব স্টেশনে-
ফিরতে চাইছিও না;
ওহে জাদুময় প্রসঙ্গ-
ভালোবাসি বলে ডুবে যাচ্ছি তোমার সৃষ্টিতে
যেখানে খেলা করছে একফালি চাঁদ-একা!
তোমার প্রসঙ্গে অসংখ্য গ্রামফুল; তৈরি হচ্ছে
প্রত্যাশার সারেগামা, আর দিনানুদিন সিঞ্চন করে,
তুলে আনছি নিভাঁজ, নির্জন প্রতিবিম্ব;
চাইছি-উদ্ভাসিত হও তুমিও-অবশিষ্ট প্রসঙ্গে;
তোমার শরীরে বাঁধা একুশ শতকের আয়না, আর
নিষ্ক্রিয় দর্শকের সারিতে, উড়ছে প্রসঙ্গের রকমফের।
সম্পর্ক
অরবিন্দ চক্রবর্তী
যার তার গায়ে রং ছিটাতে নেই, আগুনের হলুদ এই গল্পই বলে।
কাফকা জানেন, ঘা কোন ধরনের শিল্প―মাছি তার দাস, কেরানি।
উপদেশক, তোমরা নিশ্চয়ই দেখো, সম্পর্কের গায়ে রং লেগেছে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে সেতু রচনা করে।
গতির প্রাণে রয়েছে
আগন্তুকের আদি অনুরোধ
দেখো দেখো, ঘোড়ার সঙ্গে ঘোটকী নেই
খুরে উড়ছে ছাই
ঘর পুড়েছে সওয়ারের।
ফলে, আজ আমরা গতির জাতক।
ব্যথাবন থেকে চুক্তি হোক, হলুদকে যারা রং বলে
ঘাকে যারা জীবনের অঙ্গ মানে
তাদের পেছনে ছুটবে ঘোটকীহীন রেখা।
যার গায়ে রং ছিটিয়ে দেবে,
সে সুতো ছড়াতে ছড়াতে রচনা করবে রাতুলহিল্লোল।
নভেম্বর রেইন
সুদেব চক্রবর্তী
আকাশটা খুলে দিয়েছে কান্নাসমগ্র;
আলোহীন গলির সরলরেখায়
আমি তার দৈর্ঘ্য মাপি।
নবান্নের ঘ্রাণ চাপা পড়ে গেল
ভেজা বাতাসের অকালবোধনে,
বিলাসী শহরে শীতের বদলে নেমে এল
ইন্দ্রের অভিশাপ।
কে বলে পোড়াতে পারে না জল?
বুক পোড়ায়-
দহনের আড়ালে মৃদুস্বরে
চলতে থাকে বাষ্প তৈরির কারখানা,
চোখের কার্নিশ বেয়ে নুয়ে পড়ে মেঘের পাপড়ি,
অলস সাপের গতি নিয়ে নেমে আসে জল;
দিনের আলোতেও যার গভীরতা মাপেনি কেউ।