শায়লা জাহান
বলা হয়, ‘হোম ইজ হোয়ার ইউর হার্ট ইজ”। সারদিনের কর্মব্যস্ততার পর ঘরই হলো প্রশান্তির জায়গা। আর এই প্রশান্তির জায়গাকে কিছুটা শিল্পবোধ ও কৌশলের মিশেলে করে তুলতে পারি আরো নান্দনিক। আর এই ক্ষেত্রে সংযোজন হতে পারে ওয়ালপেপারের ব্যবহার।
ওয়ালপেপার হল এক ধরনের আঠালো ভিনাইল স্টিকার যা দেয়াল সাজাতে ব্যবহার করা হয়। বছরের পর বছর দেয়ালে রঙ করা কম ঝক্কির ব্যাপার নয়। চাইলেই হুট করে রঙ পরিবর্তন করা সম্ভব হয়ে উঠেনা। এটা অনেক সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুলও বটে। এজন্য সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওয়ালপেপারের ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। একটি সাধারন দেয়ালে বৈচিত্র্যপূর্ন ওয়ালপেপার যোগের মাধম্যে নিজের ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলা যায়।
অ্যাপ্লিকেশন এবং উপাদান ভিত্তিতে এর কিছু ধরন রয়েছে-
-অ্যাপ্লিকেশনের ক্ষেত্রে, কিছু ওয়ালপেপার আছে যেগুলো দেয়ালে লাগানোর সময় পেছনে পেস্ট এড করতে হয়। অনেক ঝামেলার মনে হলেও কার্যতে এটি অনেক দীর্ঘমেয়াদি রেজাল্ট দেয়। আরেকধরনের আছে পিল এন্ড স্টিক। স্টিকারের মতই শুধু খুলে নিয়েই সরাসরি লাগিয়ে দেয়া যায়।
-ম্যাটারিয়েল বা উপাদানের ক্ষেত্রে আছে কিছু ধরন। যেমন ভিনাইল; যা সচরাচর বেশি দেখতে পাওয়া যায়। কাগজের ওয়ালপেপার আছে যেগুলোতে রঙগুলো সুন্দরভাবে ফুটে থাকে। তবে এর বড় অসুবিধা হল এটি অনেক সূক্ষ থাকে বিধায় ছিঁড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। হাই-কোয়ালিটি সম্পন্ন ফ্যাব্রিক ওয়ালপেপারগুলো লাগানোর ক্ষেত্রে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এটি যেহেতু প্রি-পেস্ট নয় তাই এপ্লাই করার সময় ভেতরে যাতে বুদবুদের সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হয়।
বৈশিষ্ট্যঃ
-ময়লা হলে খুব সহজেই ধুয়ে ফেলা যায়
-আর্দ্রতা-প্রতিরোধী ওয়ালপেপার ওয়াটার ড্যামেজ থেকে দেয়ালকে রক্ষা করে
-পেইন্টেবল ওয়ালপেপারগুলো হয় কিছুটা পুরু। এটি খুব সহজেই ক্ষতিগ্রস্থ দেয়ালকে ঢেকে দিতে পারে
ওয়ালপেপার নির্বাচনের নিয়মঃ
সঠিক ওয়ালপেপারটি নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বিবেচনা করা দরকার-
-যে স্থানটিতে সাজাতে চাও তার সঠিক ডাইমেনশান অনুযায়ী ওয়ালপেপারটি বাছাই করা দরকার
-সব স্থানে সব স্টিকার মানানসই লাগবেনা। উদাহনস্বরুপ রুমে যদি একটি বৃত্তাকার আয়না থাকে তার সাথে মেলাতে একটি বৃত্তাকার ধরনের স্টিকার নিতে হবে।
-রুমের থিম বা স্টাইল অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবে। বাচ্চাদের ঘরে যদি জঙ্গল থিমের আদলে সাজাতে চাও তাহলে এনিম্যাল বা গাছ দেয়া স্টিকার বাছে নেয়া যেতে পারে। আবার যদি তাদের প্রিয় কোন কার্টুনের চরিত্র থাকে তবে সে আদলেও সাজানো যায়
-শোবার ঘরের ক্ষেত্রে রুমের আসবাবপত্র, পর্দা সব কিছুর সাথে মিল রেখে চুজ করতে হবে। এখানে হিবিজিবি ডিজাইনের না রেখে কিছুটা হালকা কালারের ওয়ালপেপার নিলে রুম আরো স্নিগ্ধ দেখাবে।
-দেয়ালের কোন বিশেষ অংশকে ফোকাসে আনতে চাইলে সেক্ষেত্রে থ্রিডি ওয়ালপেপার লাগানো যায়।
ব্যবহারের নিয়মঃ
-যে দেয়ালে ওয়ালপেপার লাগানো হবে খেয়াল রাখতে হবে তা যেন শুষ্ক ও মসৃণ থাকে
-সরাসরি প্লাস্টার দেয়া দেয়ালে লাগানো যাবেনা। তাতে এক কোড রঙ হলেও থাকতে হবে
-দেয়ালে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব থাকা যাবেনা। এতে পেপার উঠে যাবে। সেক্ষেত্রে আগে পিভিসি বোর্ড লাগিয়ে তারপর ওয়ালপেপার এপ্ল্যাই করা যাবে
-বৃষ্টির দিনে বা অনেক আর্দ্রতার সময়ে না লাগালোই ভালো। আর্দ্রতাময় আবহাওয়ায় অনেক সময় ওয়ালপেপারগুলোর আঠালোভাব কমে যায়।
একটি সাধারন দেয়ালকে অনন্যসাধারন করতে ওয়ালপেপারের কোন জুড়ি নেই। রুমসজ্জার যেকোন দোকান থেকেই সহজেই সংগ্রহ করা যেতে পারে মনেরমত ডিজাইন। আর এর দাম নির্ভর করে তুমি কি কোয়ালিটি আর কেমন পরিমান নিচ্ছ তার উপরে।
-ছবি সংগৃহীত