বদলে যাওয়া কিংবা নিজেকে বদলে নেওয়া জীবনেরই অংশ। কখনো হয় ব্যক্তিগত কারণে, আবার কখনো হয় পারিবারিক, সামাজিক, পারিপার্শ্বিক কারণেও। নারীদের বদলটা বেশিই হয়, সময়ের আবেদনে। বিয়ের পর একজন নারীকে অনেক সংজ্ঞাতেই সংজ্ঞায়িত হতে হয়। মানিয়ে নিতে হয় সংসার, বুঝে নিতে হয় পরিবারের সদস্যদের বৈশিষ্ট্য। সবার মন বোঝার গুরুদায়িত্ব এসে পড়ে নতুন বউয়ের। কীভাবে নতুন সংসারে মানিয়ে নেওয়া যায়? সে বিষয়েই রইল বিয়ে সংখ্যার কিছু টিপস।
আপন ভাবতে শেখা
আগে বুঝতে হবে, তোমার সংসার তোমারই থাকবে। এরা সারা জীবনের। তাই সবাইকে আপন করে নিতে হবে। জীবনসঙ্গীর পরিবার মানে নিজেরই পরিবার। আর তার পরিবার মানেই সেটি তোমার পরিবার।
প্রতিপক্ষ না ভাবা
যখন এই কনসেপ্টটা কারও মাথায় ঢুকে যায় যে এটা আমার পরিবার নয়, অন্য পরিবার। এখানে আমি হুট করেই এসেছি, আমার পরিবার তো আমি ফেলে এসেছি, তখনি শ্বশুরবাড়ির সবাইকে প্রতিপক্ষ বলে মনে হতে থাকে। এটা না ভেবে সবাইকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে।
নতুন সংযোজন
মনে রাখা দরকার, শ্বশুরবাড়ি কখনোই তোমার প্রতিপক্ষ নয়। তাদের নিজের পরিবারের একটা নতুন সংযোজন বলে ভেবে নাও, দেখবে যে তা তখন এত অপরিচিত মনে হবে না। তোমার স্বামী এই পরিবারেই বড় হয়েছে এবং পৃথিবীর সবকিছুর চেয়ে এই পরিবারকে সে বেশি ভালোবাসে।
বিনয়ী
নতুন বাড়িতে গেলে মানিয়ে নেওয়া ততটা সহজ নয় কিন্তু মানিয়ে নিতে গিয়ে কোনো খারাপ আচরণ করা ঠিক নয়। এতে বাবার বাড়ি নিয়ে খারাপ ধারণা চলে আসে। তাই ইগো পরিহার করতে হবে। যুক্তি দিয়ে কথা বলা শিখতে হবে। সম্পর্কে তিক্ততা আসার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভ‚মিকা রাখে আমাদের ইগো। সব সময় বিনয়ী হওয়া শিখতে হবে।
তুলনা করা যাবে না
ভুলেও কখনো শ্বশুরবাড়ি আর বাবার বাড়ির তুলনা করতে যেয়ো না। দুটো পরিবার দুটো ভিন্ন পরিবেশ, এর মধ্যে কখনো তুলনা হয় না। প্রতিটি পরিবারের নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন আছে, ধারা আছে। এগুলোকে সম্মান করতে শিখতে হবে।
জানার চেষ্টা
এ ক্ষেত্রে তোমার স্বামী হতে পারে বড় সহযোগী। তার কাছ থেকে পরিবারের সবার সম্পর্কে জেনে নাও। আত্মীয়স্বজনদের চিনে নাও। তাদের সঙ্গে নিজে থেকে গিয়ে আলাপ করতে হবে। অনেক সময় বাড়ির নতুন বউকে নিয়ে একটু-আধটু মজা করা হয়, সেটা নেগেটিভভাবে নেওয়া যাবে না।
কনিষ্ঠদের প্রাধান্য
বাড়ির বাচ্চাদের সঙ্গে মিশতে হবে সবার আগে। বড়দের চেয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা অনেক বেশি সহজ। বাড়িতে বাচ্চা থাকলে তাদের সঙ্গে গল্প করো, তাদের পছন্দের খাবার তৈরি করে দাও, বা ছবি আঁকায় সাহায্য করো অথবা তাদের পড়াশোনার ব্যাপারে সাহায্য করো। এতে করে বাচ্চাদের সঙ্গে তোমার একটা সহজ সম্পর্ক তৈরি হবে।
বড়দের সম্মান
বাড়ির বড়দের সম্মান করতে হবে। বড়দের সামনে মোবাইল ফোন চাপাচাপি করা একেবারে নিষেধ। এটা খুবই খারাপ দেখায়। খাবার টেবিলে বসলে অন্যদের সঙ্গে পারিবারিক আলোচনা শুনতে হবে, তবে শুরুতেই নিজের মতামত দেওয়া যাবে না। পুরো বিষয়টা আগে বুঝতে হবে। অবসরে শাশুড়ি বা শ্বশুরের সঙ্গে তাদের পুরোনো দিনের গল্প শুনে নাও, যদি মনে করো সেটাতে তারা আনন্দ পাচ্ছে, তাহলে সে ব্যাপারে উৎসাহ দেখাতে হবে।
যোগাযোগ স্থাপন
নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। যদি শ্বশুর-শাশুড়ি বা দেবর-ননদ সঙ্গে না থাকে, তাহলে প্রতিদিন একবার শ্বশুর-শাশুড়িকে ফোন করো। তাদের দিন কেমন কেটেছে জিজ্ঞেস করে নাও, তোমার সারা দিনের কাজ তাদের সঙ্গে শেয়ার করো। এতে সম্পর্ক অল্প দিনেই সহজ হয়ে যাবে।
লেখা- রোদসী ডেস্ক
ছবি – সংগৃহিত