বিয়েটা তো হয়ে গেল, এবার সংসার সামলানোর পালা। একদিকে কর্মজীবন, অন্যদিকে ব্যক্তিজীবন। দুই-ই সমান্তরালে চলা চাই। তাহলে সন্তান গ্রহণ করছ কবে? হ্যাঁ, এই প্রশ্নটিই সামনে চলে আসবে। প্রশ্নটি আসবে নিজের পক্ষ থেকে, প্রশ্নটি আসবে আত্মীয়স্বজন, পরিবার ও পরিজনের পক্ষ থেকেও। সব থেকে বড় বিষয় হলো তুমি-তোমরা কী চাইছ।
বিয়ে করার সঙ্গে সঙ্গে সন্তান গ্রহণ করা মনে হতে পারে ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে বাধা। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলছেন, সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীর বয়স বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকেরা বলছেন, নারীর বয়স ২৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে প্রথম সন্তান গ্রহণ করা উচিত। কেননা, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শারীরিক-মানসিক পরিবর্তন আসে।
৩৫ বছর বয়সের পরে প্রথম সন্তান গ্রহণ মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই ক্ষতির কারণ হতে পারে। দেখা দিতে পারে বিভিন্ন সমস্যা। যেমন বিকলাঙ্গ সন্তান হওয়া, গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, মায়ের উচ্চ রক্তচাপ ও খিঁচুনি, প্রসব-পরবর্তী রক্তক্ষরণ, গর্ভপাত।
তুমি যদি মনে করো, আরও কিছুদিন পরে আর্থিক সচ্ছলতা তৈরি হবে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালো বোঝাপড়া তৈরি হবে। তবে সেভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করতে পারো।
উইমেনস অ্যান্ড চিলড্রেনস হসপিটালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ জিয়াউল হকের পরামর্শ, ৩০ বছর বয়সের পরে গর্ভধারণ করতে চাইলে স্বামী-স্ত্রীর কোনো শারীরিক জটিলতা আছে কি না, পরীক্ষা করে রাখতে হবে। কোনো সমস্যা থাকলে আগে থেকেই চিকিৎসা শুরু করে দিতে হবে।
স্থায়ী ও অস্থায়ী এই দুই ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আছে। সব পদ্ধতি সব স্বামী-স্ত্রীর জন্য সমান উপযোগী নয়। কোন পদ্ধতি গ্রহণ করার আগে বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
অস্থায়ী পদ্ধতি খাবার বড়ি, কনডম, ইনজেকশন, আইইউডি, ইমপ্ল্যান্ট।
স্থায়ী পদ্ধতি ভ্যাসেকটমি (এনএসভি), টিউবেকটমি (লাইগেশন)। তোমার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা সম্পর্কে চিকিৎসককে জানিয়ে যে
কোনো একটি পদ্ধতি বেছে নিতে পারো। তবে জন্মনিয়ন্ত্রণ কেবল একা নারীর দায়িত্ব নয়। তাই স্বামী-স্ত্রী দুজনে কথা বলে ঠিক করে নাও কোন পদ্ধতি গ্রহণ করবে, কে নেবে প্রধান দায়িত্ব।
টিপস
নববিবাহিত স্বামী-স্ত্রীর জন্য, দুই থেকে তিন বছর দেরি করে সন্তান নেওয়ার জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিÑ বড়ি, কনডম, ইমপ্ল্যান্ট ব্যবহার করতে পারো।
২০ বছর বয়সের আগে মা হওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, এর আগে মায়ের শরীর গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত হয় না।
অল্প বয়সী নবদম্পতির জন্য তিন বছর বা পাঁচ বছর মেয়াদি জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ‘ইমপ্ল্যান্ট’ উপযুক্ত। এ ছাড়া জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি সেবন অথবা কনডম ব্যবহার করা যেতে পারে। যাদের হৃদ্্রোগের ঝুঁকি বেশি অথবা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের পিল এবং ইনজেকশন ব্যবহার করা উচিত নয়।
রোদসী ডেস্ক