সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে আমাদের জীবনে যুক্ত হয়েছে মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের নতুন ধারা। এই মাধ্যম মানুষকে যেমন কাছে এনেছে, আবার মানুষকে হেনস্তা করার ফাঁদেও পরিণত হয়েছে।
বন্ধুদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে নানান চেষ্টা করে থাকে তরুণেরা। অশ্লীল, আপত্তিকর, দেশদ্রোহী পর্যায়ের কমেন্টও করে বসছে ফেসবুকে। সে ভুলে যাচ্ছে, অযাচিত কার্যকলাপের জন্য আইসিটি মামলায় ফেঁসে যেতে পারে। আমরা প্রথম মনে রাখতে পারি, ফেসবুক কি শুধুই পার্সোনাল? আসলে না।
ব্যক্তিগত কিছুই এখানে ব্যক্তিগত থাকে না।
আইনজীবী বিজয় কৃষ্ণ ওঝাঁ বলেন, আইসিটি মামলায় মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা বা প্রচারণার দণ্ড যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা তিন কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। মানহানিকর তথ্য প্রকাশ, প্রচার করলে তিন বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
আক্রমণাত্মক মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ করলে তিন বছর কারাদণ্ড বা তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
এককথায় বলতে গেলে এ কথাই শেষ কথা নয়তো। আরও বিধান আছে। জটিলতা এড়াতে ব্যক্তি ইমেজ অক্ষুণ্ন রাখতে মেনে চলো কয়েকটি টিপস :
- ফেসবুকে কাকে বন্ধু বানাবে ভেবে ঠিক করো।
- ফেসবুকে নিজের দেওয়া পোস্টগুলো পাবলিক না করে ফ্রেন্ডস অপশনে রাখাই ভালো। আরও ভালো হয় পোস্ট রেস্ট্রিকটেড করে রাখলে। ফলে যারা পোস্টে কমেন্ট করবে, তারা অপরিচিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। এতে আপত্তিকর পরিস্থিতি এড়ানো সহজ হবে।
- অশ্লীল ছবি বা অশালীন ভাষাযুক্ত কোনো পোস্টে নিজে কমেন্ট করবে না।
- প্রাইভেট মেসেজ বা কথাগুলো পোস্টের কমেন্টে না লিখে ইনবক্সে লিখতে পারো।
- কোনো পোস্টের নিচে কমেন্ট করার আগে ভেবে নিও কী লিখছ। পরে ভুল মনে হলে তুমি কমেন্টটি সরিয়ে নেওয়ার আগেই কেউ স্ক্রিনশট রেখে দিতে পারে। পরে ব্ল্যাকমেইলের শিকার হতে পারো। সামাজিক মর্যাদা নষ্ট হতে পারে। একই সঙ্গে আইনিভাবেও ফেঁসে যেতে পারো।
- ভাষা ও ইমোকন ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। ইচ্ছে হলো কমেন্টের ঘরে একটা ইমোকন বসিয়ে দিলে এমন যেন না হয়।
লেখা: আইরিন রিমু
ছবি: সংগ্রহীত