মনের যত্নে বেড়ানো

করেছে Shaila Hasan

শরীরের শক্তি যেন মনই জোগায়। শরীরে বড় রোগ বাসা বাঁধলে, মনটাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে ঘুরে আসা যেতে পারে কাছে-দূরে কোথাও।  রোগীদের জন্য তারা যে ওষুধগুলো নিয়মিত খাচ্ছে তা পর্যাপ্ত পরিমাণে সঙ্গে নিচ্ছে কিনা। এছাড়া ডাক্তারের   প্রেসক্রিপশনের ফটোকপি বা তার শর্ট মেডিকেল হিস্ট্রি সঙ্গে থাকা ভালো। লিখেছেন কনিকা রায়।

সুন্দরবন
পৃথিবী বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল এই সুন্দরবন। এখানে রয়েছে নানা প্রজাতির হরিণের অবাধ বিচরণ। এছাড়াও দর্শনীয়   স্থানগুলোর মধ্যে করমজল ফরেস্ট স্টেশন, কটকা, হিরণপয়েন্ট, কচিখালী, মান্দারবাড়ীয়া, দুবলার চর, তিনকোনাদ্বীপ,  মংলা বন্দর ইত্যাদি। ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনের কিছু স্থান ঘুরে আসতে পারো।

জাফলং
জাফলংয়ের দর্শনীয় দিক হচ্ছে চা বাগান ও পাহাড় থেকে পাথর আহরণ। মারি নদী ও খাসিয়া পাহাড়ের পাদদেশে জাফলংঅবস্থিত।  মারি নদীতে ভ্রমণের মাধ্যমে পাথর সংগ্রহের দৃশ্য আপনাকে সত্যিই আনন্দ দেবে। এখানে প্রচুর বনজ প্রাণীর বসবাস। এখানে  গেলে খাসিয়া উপজাতিদের জীবন ও জীবিকা চোখে পড়বে। এছাড়াও দেখতে পারবে জৈন্তাপুর রাজবাড়ি, শ্রীপুর এবং তামাবিল স্থলবন্দর।  মাগুরছড়াও পথেই পড়বে।

রাতারগুল
সিলেটের রাতারগুলে রয়েছে নানান প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী। সিলেট-গোয়াইন ঘাটের সড়কের হরিপুরে বন  বিভাগের অধীনে বিশাল রাতারগুলে রয়েছে প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য নৌকায় ঘুরে বন দেখার সুবর্ণ সুযোগ। লোভাছড়া গোয়াইনঘাটের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে  কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা লোভাছড়া রয়েছে চা বাগান আর লেকবেষ্টিত নানান সৌন্দর্যপূর্ণ  স্থাপনা।

শ্রীমঙ্গল
সিলেটের শ্রীমঙ্গল যাওয়ার আগে রয়েছে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া ইকোপার্ক। বিশাল এ বনে রয়েছে নানান প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও  বিলুপ্ত অনেক বন্যপ্রাণী। এছাড়া তুমি ঘুরে আসতে পারো কুলাউড়ার ভাটেরায় প্রস্তাবিত পর্যটন স্পট ‘অভয়আশ্রমে’। যেখান থেকে  উপভোগ করা যাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হাকালুকির হাওর। দেখে আসতে পারো সুনামগঞ্জের শনিরহাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর,  দেখার হাওর,  ছাতকেরলাফার্জ সুরমা ও বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরিসহ অনেক অঞ্চল।

মাধবকুন্ড
মাধবকুন্ড দেশের বৃহত্তম একমাত্র প্রাকৃতিক জলপ্রপাত। মাধবকুন্ড ইকোপার্ক, নয়নাভিরাম দৃশ্য ও নান্দনিক পিকনিক স্পট হিসেবে  দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে সুপরিচিত। সুবিশাল পর্বতগিরি, শ্যামল সবুজ বনরাজিবেষ্টিত ইকোপার্কে প্রবীণ, নবীন, নারী-পুরুষদের  উচ্ছ্বাস অট্টহাসি আর পাহাড়ি ঝরনার প্রবাহিত জলরাশির কলকল শব্দ স্বর্গীয় ইমেজের সৃষ্টি করে।

সেন্টমার্টিন
আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল সেখানে মিলেমিশে একাকার, তীরে বাঁধা নৌকা, নান্দনিক নারকেল বৃক্ষের সারি আর ঢেউয়ের ছন্দে  মৃদু হাওয়ার কোমল স্পর্শ এটি বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন প্রবালদ্বীপের সৌন্দর্য বর্ণনার ক্ষুদ্র প্রয়াস। বালি, পাথর,  প্রবাল কিংবা জীববৈচিত্র্যের সমন্বয়ে জ্ঞান আর ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য অনুপম অবকাশকেন্দ্র সেন্টমার্টিন। কক্সবাজার জেলাশহর থেকে ১২০  কিলোমিটার দূরে সাগরবক্ষের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ সেন্টমার্টিন।

হিমছড়ি
এখানকার সৈকতের চেয়েও আকর্ষণীয় হলো এর ভ্রমণ পথ। সৈকতলাগোয়া আকাশ ছোঁয়া পাহাড় এখানের অন্যতম আকর্ষণ।  হিমছড়ির পাহাড়ের হিমশীতল ঝরনাও বেশ আকর্ষণীয়। কক্সবাজার সৈকত থেকে খোলা জিপ ছাড়ে হিমছড়ির উদ্দেশে।

ভ্রমণ হোক আনন্দদায়ক

মূল্যবান জিনিসপত্র ব্যাগে তালা মেরে চাবি হ্যান্ডব্যাগে রাখো। এ ব্যাগে জরুরি ডকুমেন্টসগুলোও রাখো। এছাড়া হ্যান্ডব্যাগে থাকবে  তোমার প্রতিদিনের ব্যবহারের ওষুধপত্র। প্রি-জার্নি লিস্ট করার সময় এগুলো খেয়াল রাখতে হবে।

  • যাদের গ্লুকোমা আছে, তারা আই গ্লাস পরে ভ্রমণ করো।
    -চোখের ইমার্জেন্সি ড্রপ নিতে ভুলবেনা। চোখে যারা লেন্সপরো তারা ধুলাবালি থেকে বাঁচতে লেন্স ক্লিনার সঙ্গে নাও। অনেকে সানগ্ওলাস পরতে পারে।
  • ক্যাপ বা হ্যাট পরতে পারো সূর্যের আলো থেকে রক্ষার জন্য,  বিশেষ করে যেখানে এসি নেই।
  • বাস-কোস্টার বা ট্রেনের বাইরে যেন বাচ্চা বা কেউ হাতবামুখ না দেয় সেদিকে নজর রাখো।
  • সিটবেল্ট বেঁধে ভ্রমণ করা উত্তম। খুব ছোট বাচ্চার জন্য স্পেশাল কট ব্যবহার করা যায়।

এছাড়া বিদেশের কিছু কিছু জায়গায় যাওয়ার আগে ম্যালেরিয়া, হেপাটাইটিস ও টাইফয়েডের ভ্যাকসিন নিয়ে নেয়াউচিত।  ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলারস গাইড থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

রোগীদের নিরাপদ জার্নি
প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে তারা যে ওষুধগুলো নিয়মিত খাচ্ছে তা পর্যাপ্ত পরিমাণে সঙ্গে নিচ্ছে কিনা। এছাড়া ডাক্তারের  প্রেসক্রিপশনের ফটোকপি বা তার শর্ট মেডিকেলহিস্ট্রি সঙ্গে থাকা ভালো। কোনো অসুবিধা হলে আশপাশের মানুষ এ কাগজ পড়ে  রোগীকে  উপকার করতে পারে। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হার্ট ডিজিজ, বাত রোগের ওষুধ, অ্যাজমা বা অ্যালার্জির ওষুধ সঙ্গে নিতে ভুলবেনা।

ইনহেলার, ইনস্যুলিন ইত্যাদিও সঙ্গে রাখবে। ডায়াবেটিস রোগীরা লজেন্স, সুগারকিউব নেবে। প্রেগন্যান্ট যারা তাদের প্রথম ছয় মাস জার্নি  করা মোটামুটি নিরাপদ। যাদের অ্যাবরশনের ইতিহাস আছে তাদের গর্ভাবস্থায় জার্নি করা উচিত নয়। বিশেষ করে শেষ তিনমাস যে  কোনো গর্ভবতীর জার্নি নিষেধ। যে কোনো ধরনের জার্নিতে তারা প্রচুর পানি খাবে। প্লেনে জার্নি করলে ঘনঘন পা ম্যাসাজ করতে হবে,  নাহলে পায়ে রক্ত জমাট বেঁধে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস বা ডিভিটি হতেপারে। তারা পায়ে রক্ত জমা প্রতিরোধকারী মোজা পরতেপারো। যাদের ওজন বেশি তারাও এ কাজটি করতে পারো।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0

You may also like

তোমার মন্তব্য লেখো

four × 5 =