ম্যারেজ মিডিয়া ওয়েবসাইটগুলোর জনপ্রিয়তা এখন তুঙ্গে। বাস্তবতা মেনেই বাড়ছে অনলাইনে জীবনসঙ্গী খোঁজার ঝোঁক। বিবিসির তথ্য বলছে, খোদ ঢাকা শহরেই তিন শর অধিক ম্যারেজ মিডিয়া রয়েছে। এর বাইরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও জনপ্রিয়তা পেয়ে যাচ্ছে বৈবাহিক ওয়েবসাইট বা ম্যারেজ মিডিয়া।
ইন্টারনেটের এই যুগে, শুধু তরুণ-তরুণীরাই অনলাইনে নিজের জীবনসঙ্গী খোঁজ করছে না, বিবাহযোগ্য ছেলেমেয়ের মা-বাবারাও যোগাযোগ করছেন এসব প্রতিষ্ঠানে। কয়েক ধাপে ম্যারেজ মিডিয়ার মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়।

সৈয়দ জুলফিকার হুসাইন
রাজধানী মিরপুরের ম্যারেজ মিডিয়া সেন্টার ‘সানাই’-এর স্বত্বাধিকারী সৈয়দ জুলফিকার হুসাইন বললেন, ‘ম্যারেজ মিডিয়ার প্রাথমিক সদস্য হতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিতে হয়, এরপর বায়োডাটা দিতে হয়। জানাতে হয় নিজের চাহিদা। সে অনুযায়ী পাত্র বা পাত্রীর খোঁজ দেওয়া হয়।’
টিচার থেকে আইটি প্রফেশনাল, ব্যাংকার থেকে বিজনেস ওনার সব ধরনের পাত্র-পাত্রীর খোঁজ দিয়ে থাকে এসব ম্যারেজ মিডিয়া। সৈয়দ জুলফিকার হুসাইন জানান, একজন আরেকজনের বায়োডাটা দেখে পছন্দ করলে দুই পক্ষকে ম্যারেজ মিডিয়া সেন্টারে ডেকে নেওয়া হয়। তারপর তারা যদি মনে করে গ্রামের বাড়িতে দেখাশোনা করবে, সেভাবেই আয়োজন করা হয়।
ঝুঁকি আছে
কেন এমন করা হয়? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ম্যারেজ মিডিয়া বাংলাদেশে প্রসার লাভ করেছে এটা সত্য, কিন্তু পরিপূর্ণতা এখনো আসেনি। মেয়ে বা তার অভিভাবকেরা চান না মেয়ের ছবি ওয়েবসাইটে দেখানো হোক। তারা গোপনীয়তা বজায় রেখে ম্যারেজ মিডিয়ার মাধ্যমে কাজটি এগিয়ে নিতে চান। সৈয়দ জুলফিকার হুসাইন জানিয়েছেন, ছবি প্রকাশ নিয়ে দুই পক্ষের পক্ষ থেকেই অনেক সময় বিভিন্ন বাধানিষেধ থাকে। সে জন্য ওয়েবসাইটগুলোতে অনেক সময় বিবাহিত নারী-পুরুষের ছবি বা বিদেশি নারীর ছবি দিয়ে রাখা হয়। ছবি দেখেই পাত্র-পাত্রী নির্বাচন করতে যাওয়া বোকামি হবে। ঠিকঠাক প্রক্রিয়ার বিয়ে সম্পন্ন করতে বৈবাহিক ওয়েবসাইট অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
এ কথাই শেষ কথা নয়
দেখেশুনে পছন্দ হয়ে গেলে ম্যারেজ মিডিয়াকে শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে দুই পক্ষ মিউচুয়ালি বিয়ে করে ফেলে, এমন উদাহরণও আছে, জানিয়েছেন সৈয়দ জুলফিকার। আর নিয়ম মেনে বিয়ে সম্পন্ন করতে চাইলে দুই ধাপে টাকা খরচ করতে হবে। কোনো ম্যারেজ মিডিয়ার প্রাথমিক সদস্য হওয়ার জন্য সাধারণত আট থেকে দশ হাজার টাকা লাগে। বিয়ে সম্পন্ন হলে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ম্যারেজ মিডিয়াকে দিতে হয়।
কিছু কথা
সব ঝুঁকি উপেক্ষা করে প্রযুক্তি নির্ভরতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বৈবাহিক ওয়েবসাইটকেন্দ্রিক বিয়ে। জানাশোনা, দেখাশোনা, ভালোলাগা, সমঝোতা তৈরি হলেই ছাদনাতলা তৈরির প্রসঙ্গ আসে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিয়ে বিষয়টা সহজ হয় দুজনের বয়স আর মনন কাছাকাছি হলে। বিষয়টা বিবেচনায় নিয়ে সঙ্গীর চিন্তাভাবনা আর মানসিকতার জগৎ কতটা মিলবে সে দিকটা বেশি নজর দেওয়া উচিত অন্য কিছুর চেয়ে।
লেখা : স্বরলিপি
রোদসী/আরএস