সম্পাদকীয়

করেছে Suraiya Naznin

জন্মের সময় থেকেই বাচ্চারা রিফ্লেক্স স্মাইল দিতে শুরু করে। শিশু হাসবে খেলবে এটাই স্বাভাবিক। এটাই আনন্দদায়ক। কিন্তু অসুখ হলেই যেন অন্ধকার নেমে আসে সেই পরিবারে। কাঠফাটা এই গরমে বেড়েছে শিশুর রোগব্যাধি।

রোজই তাপমাত্রা বাড়ছে। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। এবার বাংলাদেশের তাপমাত্রায় ৫৮ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে ভাবা যায়! বড়রাই কুলিয়ে উঠতে পারছে না। সেখানে শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে সবাই বেশ উদ্বেগে। সময়টাও যেন রোগবালাই ছড়ানো নিয়ে ব্যস্ত। তাই সচেতনতার বিকল্প আমি আর কিছুই দেখছি না। শিশুর জন্য চাই বাড়তি যত্নও।

গ্রীষ্মকালের এই চিটচিটে গরম সবার জন্যই কষ্টকর। শিশুদের বেলায় তা অসহনীয়। খুব বেশি স্পর্শকাতর বলে তারা অনেক গরম আবহাওয়ায় সহজে খাপ খাওয়াতে পারে না। তীব্র গরমে নানান স্বাস্থ্য জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। তাই বাবা-মার উচিত সব সময় তাদের যত্নের বিষয়ে সচেতন থাকা। শিশু মাত্রই যত্নের দরকার প্রতি মুহূর্তেই। তা হোক শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষাকালে। তবে অন্যান্য সময়ের তুলনায় গরম কাল শিশুদের জন্য বেশি কষ্টকর হয়ে ওঠে।

গরমের এমন তীব্রতার কারণে খাওয়া-দাওয়ার প্রতি বড়রাই আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তাহলে বা”চাদের কী হাল একবার ভাবতে হবে! গরমে বা”চারা কী খাবে, খাবারের ধরনটাই বা কেমন হওয়া উচিত এইসব নিয়ে বাবা-মায়েরাও চিন্তিত থাকে। শীতকালে বা”চাদের রুচি নিয়ে তেমন সমস্যা না হলেও গরমের সময়ে কিছুটা বিপত্তি তো হয়ই। তাই এই সময় বাচ্চাদের বেশি করে ফল খাওয়ানো উচিত। সেই সঙ্গে শিশুর রোজের ডায়েটে রাখতে হবে এমন খাবার, যাতে করে সন্তানের দেহে পুষ্টির যেন কোন ঘাটতি না হয়।

আমরা অনেক সময় বাজারের চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে বা”চাকে রঙবেরঙের খাবার কিনে দেই। এটা মোটেও করা যাবে না। কষ্ট হলেও এই সময়টাতে ঘরে তৈরি খাবার নিশ্চিত করতে হবে। বাচ্চারা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাচ্ছে কিনা সেদিকেও নজর রাখতে হবে। তাতে কোনও ধরনের পেটের রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমবে। খুব ঠান্ডা বা গরম পানি বাচ্চাকে খাওয়াবে না, তা শিশুর জন্য ক্ষতিকর।

এখন জ্যোষ্ঠ মাস। বাজারে রঙবেরঙের দেশি ফলে ভরে উঠেছে। শিশুকে অল্প অল্প করে মৌসুমী ফলগুলো খাওয়াতে হবে। আম, জাম, তরমুজ, পেঁপে, তবে লিচুটা একটু বুঝেশুনে দিতে হবে। মজা করে দুটো বেশি খেয়ে নিলে পেটে গ্যাস জমে যেতে পারে। রোজের ডায়েটে থাকুক শসাও। চাইলে ফলের রসও খাওয়াতে পারো। তবে তা অবশ্যই ঘরে তৈরি। প্যাকেটজাত ফলের রস বাচ্চার শরীরের ক্ষতি করে। আসলে এই ধরনের ফলের রস সংরক্ষণের জন্য যে সব রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় তা বাচ্চার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। আর ভুলেও বাচ্চাদের কোল্ড ড্রিঙ্কস খাওয়াবে না যেন!

এইতো আর ক’টা মাস পরেই গরমকাল চলে যাবে। একটু সচেতন হয়েই থাকি আমরা। শিশুর সুস্বাস্থ্য নিয়ে দিনগুলো কেটে যাক। শিশুর হাসি থাকুক অমলিন।

তোমাদের জন্য রইল স্নেহ ও ভালোবাসা।

লেখক: সাবিনা ইয়াসমীন, সম্পাদক, প্রকাশক রোদসী

০ মন্তব্য করো
0

You may also like

তোমার মন্তব্য লেখো

3 + 11 =