রোদসী ডেস্ক
শহরে নারীবান্ধব টয়লেট অপ্রতুল থাকায় দীর্ঘক্ষণ টয়লেট চেপে নারীরা। টয়লেটের বেগ কমাতে পানিও কম পান করে থাকে। ফলে মূত্রনালীতে সংক্রমনসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা তৈরি হয়। তাই ইউরিন ইনফেকশনে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি ভোগে।
ইউরিন ইনফেকশন যেভাবে হয়

মানবদেহে দুটি কিডনি, দুটি ইউরেটার, একটি ইউরিনারি বøাডার (মূত্রথলি) এবং ইউরেথ্রা (মূত্রনালি) নিয়ে মূত্রতন্ত্র গঠিত। আর এই রেচনন্ত্রের যে কোনও অংশে যদি জীবাণুর সংক্রমণ হয় তাহলে ‘ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন’ হয়। কারণ প্রস্রাবে ইউরিয়া এবং অ্যামিনো অ্যাসিডের মতো টক্সিন জাতীয় পদার্থ থাকে। আর বেশিক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখলে বøাডারে যে জীবাণু জন্মায়। এছাড়া বøাডার ফুলে যেতে পারে। আর নিয়মিত প্রস্রাব চেপে রাখলে ধীরে ধীওে কিডনি কার্যক্ষমতা হারাতে শুরু করে। রক্তের বিভিন্ন সংক্রমণসহ নানা ধরণের সংক্রমণ হতে পারে।
এটি নারীর প্রজনন ক্ষমতার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
লক্ষণ

ইউরিন ইনফেকশন হলে কিছু লক্ষণের মাধ্যমে সেগুলো প্রকাশ পায়। যেমন, প্রস্রাবে দুর্গন্ধ হওয়া, রং বদলে যাওয়া, জ্বালাপোড়া বা ব্যথা অনুভূত হয় , বমি ভাব বা বমি হয়, একটু পর পর প্রস্রাবের বেগ অনুভব করলেও ঠিক মতো প্রস্রাব হয় না, তলপেটে বা পিঠের নিচের দিকে ব্যথা হওয়া, জ্বর জ্বর ভাব লাগা বা কাঁপুনি দিয়ে ঘন ঘন জ্বর আসা ইত্যাদি।
করণীয়

ইউরিন ইনফেকশ হলে প্রচুর ভিটামিন সি খেতে হবে। কারণ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতেও সহায়তা করে ভিটামিন সি। এটি মুত্রথলি ভাল রাখে এবং প্রস্রাবের সময় জ্বালা ভাব কমাতে সাহায্য করে।
পরিমিত পানি পান করতে হবে। দিনে অন্তত তিন লিটার। যদি প্র¯্রাবের হলুদভাবে দেখা দেয় তাহলে অবহেলা না করে তখনই পানি খেয়ে নিয়ে হবে।
রসালো ফল খেতে হবে। এক্ষেত্রে আনারস বেশ উপকারি। এসময় ডাক্তাররাও আক্রান্ত রোগীদের সাধারণত ব্রোমেলাইন সমৃদ্ধ অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকে। আর আনারসে ব্রোমেলাইন নামক উপকারী এনজাইম থাকে। তাই ইউরিন ইনফেকশন হলে প্রতিদিন এক কাপ আনারসের রস খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।
প্রতিকার

যখনই প্র¯্রাবের বেগ আসবে তখনই ত্যাগ করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে রাস্তাঘাটের পাবলিক টয়লেটের অপ্রতুলতা দায়ী না করে আশে পাশে থাকা শপিং মল, হাসপাতালের টয়লেট অর্থ্যাৎ ব্যবহারযোগ্য কোন একটি জায়গায় গিয়ে মূত্রত্যাগ করে নিতে হবে।
টয়লেট টিস্যু রাখতে হবে। টয়লেট শেষে ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে টিস্যু দিয়ে মুছে নিতে হবে। কারণ প্র¯্রাবের জায়াগাটি ভেজা থাকলে সংক্রণ ছড়াতে পারে।
হাই কমোড ব্যবহার করতে গেলে সেটি টিস্যু দিয়ে মুছে নিতে হবে। যদি পাবলিক প্লেসের টয়লেট হয় তবে আরো সতর্ক হতে হবে।
বাইরে গেলে পর্যাপ্ত পানি নিয়ে যেতে হবে। পিপাসা লাগলেই পান করে নিতে হবে।