রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
লেখক

Sabiha Zaman

Sabiha Zaman

এই সংখ্যায়চলন বলনজীবনবিশেষ রচনা

বর-কনের মানসিক প্রস্তুতি

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ২২, ২০২১

সায়মা রহমান তুলি: বিয়ে এমন এক বন্ধন, যা চিরস্থায়ী করতে চায় সবাই। দুজন মানুষের আত্মিক সম্পর্ক জুড়ে দিতে আয়োজনের কোনো কমতি থাকে না। কিন্তু এত সব হই-হুল্লোড়ে অবহেলায় কোণঠাসা হয়ে পড়ে বর-কনের মানসিক স্বাস্থ্য। জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বিয়ে। এ সিদ্ধান্ত গ্রহণে কোনো ভুল হলে বিশাল মাশুল গুনতে হয় পরিবার-পরিজনসহ সবাইকে। বর্তমানে নারী-পুরুষ সবাই খুব সচেতন। তারপরও ভুল হচ্ছে এবং বিচ্ছেদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ঠিক কোন বয়সে বিয়ে করতে চাও, তা পরিকল্পনা করা জরুরি। বিয়ের ব্যাপারেও অদৃষ্টবাদী দৃষ্টিভঙ্গি অনেকের জীবনকে কঠিন করে তোলে। ক্যারিয়ার ও নিজে জীবনে কী চাচ্ছ যে মানুষটা থেকে তুমি কি প্রত্যাশা করে সেই সব বিষয় খেয়াল রেখে মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে। নিজের পছন্দ বিয়ের সুবিধা পাত্র-পাত্রী আগে থেকে নিজেদের মধ্যে ভালো বন্ধুত্ব থাকার কারণে বোঝাপড়াটা সহজ। অন্যদিকে পারিবারিক বিয়েতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কম সময় পাওয়া যায়। স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই সহজ হতে সময় লাগে। বিয়ের পাকা কথা হয়ে যাওয়ার পর হবু বর-কনের বেশ কয়েকবার কথা বলা, দেখাশোনা, একসঙ্গে প্রাকৃতিক পরিবেশে হাঁটা, কোথাও খেতে যাওয়া একে অপরের ভালো লাগা-মন্দ লাগা জানাটা খুব জরুরি। দুজনকেই মনে রাখতে হবে টিভি সিরিয়াল, সিনেমা ও বাস্তবতার মধ্যে অনেক পার্থক্য। সবকিছু কল্পনা বা নিজের মতো করে হবে না সব সময়।

স্যাক্রিফাইস করার মানসিকতা থাকতে হবে দুজনের। শেয়ার করতে হবে একে অপরের সঙ্গে। যথাসম্ভব নেগেটিভ শব্দ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে অপরের প্রশংসা দিয়ে শুরু করলে ভালো। যে বিষয়গুলো ভালো লাগছে না, তা বদলাতে অনুরোধ করা যেতে পারে। যেমন স্ত্রীর যদি মনে হয় স্বামীর ধূমপান করা ভালো লাগছে না, তাহলে রিঅ্যাক্ট না করে জানাতে হবে যেহেতু বিষয়টি সবার জন্যই ক্ষতিকর তাই চেষ্টা করতে হবে বাদ দিতে। বিয়ের আগে দুজনকে সব বিষয়েই পরিষ্কার থাকা জরুরি।

বিয়ের পর
একে অপরের স্বাধীনতায় যেন বাধা না হয়। কোনো শর্ত থাকলে তা আগেই জানাতে হবে। কোনো মিথ্যার আশ্রয় কিংবা ভুল প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিয়ে করা অপরাধ। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে মেয়েরা বিয়ের আগে প্রচণ্ড মানসিক চাপে থাকে, যা কারও চোখেই পড়ে না। নতুন সংসার নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলা সব মিলিয়ে একটা ভীতি কাজ করে। অনেক মেয়ের বারবার মুড সুইং করে। ছেলেরা যে দুশ্চিন্তা করে না তা কিন্তু নয়। দায়িত্ববোধ কিংবা স্ত্রীর আগমনে সংসারের অন্যদের আচরণ কেমন হবে, তা নিয়ে ছেলেরাও ভাবে। সম্পর্কেও আগে যতটুকু প্রয়োজন জেনে নিলে আস্থা তৈরি হয়। কখনো আবেগের বশে বা কোনো রকম চাপে বিয়ে না করাই ভালো। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করা নিজেরই ক্ষতি। বিয়ে মানে একে অপরকে দয়া করে সম্পর্ক করাও নয়। উভয়ই একে অপরের পরিপূরক। যখন তুমি বুঝবে তুমি বিয়ের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নও, তখন পাত্র-পাত্রী দেখে সময় নষ্ট করবে না। অনেকের বিয়েভীতি আছে। নতুন জেনারেশনের অনেকে বিয়েতে বিশ্বাসী  নয়, এটা তাদের চয়েস। এসব ক্ষেত্রে পরিবারকে জানাতে হবে তুমি কি চাইছ। স্বাভাবিক ভীতি হলে কাউন্সিলরের পরামর্শ নিতে পারো। যার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হলো তার সঙ্গে আলাপ করে দুজনই কাউসেলিংয়ের সেবা নিতে পারো।

বিগ বাজেটে রাজকীয় আয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে উভয়ের মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষ যত্ন নেওয়া সময়ের দাবি। বিয়ের আগে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়াতে হবে। পেইন্টিং, ভালোবাসা বা সম্পর্ক নিয়ে লেখা বই, ফুল, ক্যান্ডেল, মনের ভাব প্রকাশ করে চিরকুট ছোট উপহারে সম্পর্ক বেড়ে ওঠে। জীবনসঙ্গীকে আশ^স্ত করা জরুরি সারা জীবন সঙ্গে থাকতে চায় বলেই বিয়ে করছ। একে অপরের শক্তি সুখের কারণ হবে। বিশেষ রূপচর্চা করো। নিয়মিত ঘুমাও, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করো, প্রচুর পানি খাও, মেডিটেশন করো, ভালোবাসার গান শোনো। হাসিখুশি থাকো আর উত্তেজিত হওয়া থেকে বিরত থাকো। পজিটিভ থাকতে হবে সব সময়। সম্পর্কটা শারীরিক, মানসিক, সামাজিক দায়বদ্ধতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং নতুন প্রাণের আবির্ভাবের আকাক্সক্ষা পৃথিবীকে সুন্দর করার মতো দারুণ দারুণ সব অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর।

লেখক: গবেষক, সংস্কৃতিকর্মী

ছবি: ছায়াছবি

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গআয়নাঘরএই সংখ্যায়কেনাকাটাচলন বলন

বিয়েতে বরের পোশাক

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ২২, ২০২১

সাবিহা জামান: বিয়ের মূল আকর্ষণ বর-কনে। তাই বর-কনের পোশাকের দিকে সবার আলাদা আকর্ষণ থাকে। কেনাকাটায় বউ বেশি এগিয়ে থাকলেও বর কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। বিয়েতে কী পরা হবে, তা নিয়ে ছেলেরাও কিন্তু কম ভাবে না। আর যদি বর ফ্যাশনসচেতন হয়, তাহলে হালফ্যাশনের তালে নিজের বিয়ের পোশাক বেছে নেয়। বরদের কথা ভেবেই বিয়েতে বরের পোশাক নিয়ে রোদসীর আয়োজন। বিয়েতে বরের পোশাক নিয়ে সাবিহা জামানের সঙ্গে কথা বলেছেন ফ্যাশন হাউস ইনফিনিটি ই-কমার্স অ্যান্ড ডিজিটাল মার্কেটিং ম্যানেজার এস এম সালমান জাহিদ।

বর্তমানে বরের পোশাকের হালচাল নিয়ে কথা বলেন সালমান। তিনি বলেন, বিয়েতে মূলত শেরওয়ানি, পাঞ্জাবি, স্যুটের চল এখনো চলমান। কারচুপি কাজটা এখন ভালোই চলছে। আর প্রিন্স কোট পরেও অনেকেই বিয়ে করছে। তবে বিয়েতে শেরওয়ানি বেশি পছন্দ করে নতুন বর। লম্বা শেরওয়ানির পাশাপাশি এখন সেমি লং শেরওয়ানিও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দেশি কাতান, তসর, অ্যান্ডি, মসলিন, মটকা, ধুপিয়ান কাপড়েই তৈরি হচ্ছে বিয়ের শেরওয়ানি। বর্তমান সময়ে ফ্লোরাল প্রিন্টের চাহিদা বাড়ছে। বউয়ের পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে অনেকেই ফ্লোরাল কটি বা শেরওয়ানি পছন্দ করছে।

বিয়ের একটি বড় বিষয় হচ্ছে বাজেট। রুচি আর পছন্দের ওপর মূলত বাজেট নির্ভর করে। ১০ হাজার টাকা থেকে ইনফিনিটি বিয়ের শেরওয়ানি পাওয়া যাবে। বরের জন্য ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বাজেট রাখলে ইনফিনিটি থেকে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারবে।

বিয়েতে কী রঙের পোশাক বেশি পছন্দ বরদের, এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সালমান আরও বলেন, বিয়েতে প্রচলিত রং যেমন মেরুন। সোনালি, কালো কিংবা সাদার সঙ্গে এখন অনেকে কপার, গাঢ় বেগুনি, নীল রঙের পোশাক বেছে নিচ্ছে। এ ছাড়া এখন ছেলেরাও বিয়েতে কালার কন্ট্রাস্ট করে বিয়েতে পোশাক কিনছে। নীল পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে কালো কিংবা কপার কাপারের কটির সঙ্গে হালকা মুক্তা কিংবা কারচুপি কারুকাজ পোশাক পরছে অনেকেই।

বিয়েতে শুধু শেরওয়ানি, পাঞ্জাবি কিংবা কোটের বিয়ের বরের কেনাকাটা শেষ হয় না। এর সঙ্গে মিলিয়ে বাহারি পাগড়ি ছাড়া বিয়ে যেন অসম্পূর্ণ থেকেই যায়। বর্তমান সময়ে ভেলভেটের পাগড়ি বেশ জনপ্রিয়, যার সঙ্গে মুক্তা আর পালকের কাজ বেশ লাগে। অনেকেই আবার শেরওয়ানির সঙ্গে বাড়তি আভিজাত্য প্রকাশ করতে ওড়না যুক্ত করে। মূলত ভেলভেটের ওড়নাই বেশি বেছে নিচ্ছে বরেরা।

আসলে বিয়েতে যেন ফ্যাশন বিরাজ করুক না কেন নিজের পছন্দ আর আরামের বিষয়টি সবার আগে দেখতে হবে। তাই তুমি বিয়েতে কোন পোশাকে বেশি আরাম পাচ্ছ আর তা অনুষ্ঠান অনুযায়ী মানাচ্ছে কি না, সে বিষয়টি দেখতে হবে।

ছবি: ইনফিনিটি মেগা মল 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গআয়নাঘরএই সংখ্যায়জীবনজীবনযাত্রারূপ ও ফ্যাশন

সাজ হবে চোখধাঁধানো

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ২১, ২০২১

সুরাইয়া নাজনীন: কনের সাজ হওয়া উচিত চোখধাঁধানো। কারণ, বিয়েবাড়ির প্রধান আকর্ষণ থাকে কনে, বরও কম যায় না। নতুন বউ দেখতে আসে আগ্রহী হয়ে থাকে। তাই কনেসাজ হতে হবে নজরকাড়া খেয়াল রখতে হবে, কনের নিজস্ব সৌন্দর্য যেন অতিরিক্ত সাজের কারণে হারিয়ে না যায়। স্বাভাবিক লুক বজায় রেখে একটা হালকা মিষ্টি ধাঁচের সাজ হলে মন্দ হবে না। এ প্রসঙ্গে রাহিমা সুলতানা বলেন, একালের মেয়েরা অতিরিক্ত মেকআপটা এমনিই পছন্দ করে না। তাই এখন এমন সাজ বেশ গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

স্যালনে হলুদ, বিয়ে, বউভাত আর পানচিনি প্রতিটির ব্রাইডাল মেকআপ পৃথকভাবে বা প্যাকেজ হিসেবে করা যায়। প্রথমে পানচিনি (বাগদান), তারপর গায়েহলুদ, আক্দ, তারপর বিয়ে-বউভাতের পুরোনো ধরন কিছুটা বদলেছে। এখন অনেক সময় বিয়ে-বউভাত আলাদা না হয়ে দুই পক্ষ থেকে একটাই বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হচ্ছে। এর সঙ্গে পানচিনি ও আকদের অনুষ্ঠান একটু ঘটা করেই হোক কিংবা ঘরোয়া ধাঁচের, মেয়েরা সবটাতেই বিউটি স্যালনের সাজাটাই পছন্দ করছে। সে ক্ষেত্রে হলুদ, আক্দ বা বিবাহোত্তর সংবর্ধনায় বিউটি স্যালনে তিনটি অনুষ্ঠানের জন্য যে মেকআপ প্যাকেজ আছে, তা নেওয়া যেতে পারে। তার সঙ্গে পারলারে বিশেষভাবে পানচিনির যে কনেসাজ (এনগেজমেন্ট মেকআপ) আছে, তা করতে পারো। তবে ঘরোয়া পানচিনি, এমনকি আকদ এই ব্রাইডাল সাজ না চাইলে অনেকেই শুধু পার্টি মেকআপ করছে। সে ক্ষেত্রে পারলারে বলতে হবে যে পার্টিসাজ চাও। ব্রাইডালের চেয়ে পার্টি মেকআপের খরচটা হবে কম।

ছবি: রেড

পছন্দ অনুযায়ী প্রতিটি অনুষ্ঠান আলাদা বিউটি স্যালনে সাজতেই পারো। তবে এক জায়গাই সাজলে প্যাকেজে সাশ্রয় তো বটেই, তার সঙ্গে কনের চেহারার বৈশিষ্ট্যের বেশ বোঝাপড়া হয়ে যায়। কনের মুখমণ্ডলের গঠন-গড়ন বুঝেশুনে একেক অনুষ্ঠানে তাকে একেক রকম মানানসই সাজ ও চুলের স্টাইল দেওয়া যায়। এমনকি বিয়ে-পূর্ব পরামর্শকালে তাকে গায়েহলুদে কেমন ফুলের গয়নায় ভালো লাগবে, সে পরামর্শও দেওয়া সম্ভব।

বিয়ে বা বউভাতের শাড়ি নিয়ে আলাদাভাবে বলার কোনো অবকাশ নেই। দুই অনুষ্ঠানে শাড়ির কাজ একই রকম হবে। তবে মাথায় রাখতে হবে এ ক্ষেত্রে রঙের বিষয়টিকে। বিয়ের শাড়ি লাল, জাম রং বা রানি রং হতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে বউভাতে লাল রংটা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। বরং সাদা, সাদা-গোলাপি, অফ হোয়াইট হালকা বেগুনি ধরনের রংগুলোতে কনেকে অনেক বেশি স্নিগ্ধ দেখাবে বউভাতের দিন।

একটি বিয়েতে সাধারণত তিনটি অনুষ্ঠান থাকে গায়েহলুদ, বিয়ে ও বউভাত এবং থাকে কনের শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি। আমাদের চেষ্টা করতে হবে কীভাবে এ তিনটি অনুষ্ঠান আকর্ষণীয় করে ফুটিয়ে তোলা যায়। তাই ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিয়ে মেকআপ ও পরিচর্যা করো।

হলুদের সাজ

হলুদের মেকআপ সাধারণত একটু সফ্ট লুক রাখা হয়। হলুদে হলুদ শাড়ি, লাল টিপ, আলপনা, আলতা, ফুলের গয়না ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আজকাল অনেক সুন্দর হলুদের গয়না পাওয়া যায়, সেগুলো শুধু ড্রাই ফ্লাওয়ার দিয়ে তৈরি করা হয় এবং শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে সেগুলো পরলে ভালো লাগে। হলুদের মেকআপে ফেসের কালার, টোন এবং সেইপ ঠিক রেখে মেকআপ করলে প্রোপার লুক চলে আসবে। যাদের কপাল ছোট, তারা উল্টো চুল আঁচড়ালে ভালো লাগবে। যাদের কপাল বড় তাদের মাঝে সিঁথি করে চুল আঁচড়ালে ভালো লাগবে। হেয়ার স্টাইলিংয়ের জন্য এখন খোঁপা ও বেণি দুটিই ভালো লাগবে।

ছবি: ছায়াছবি

বিয়ের সাজ

বিয়ের মেকআপ অবশ্যই ফেসের ধরন অনুযায়ী হতে হবে। ফেসের ধরন অনুযায়ী মেকআপ সিলেক্ট করা খুব জরুরি। বিয়ের মেকআপের আগে ফেসিয়াল, অয়েল ম্যাসাজ, ময়েশ্চারাইজার এবং মেকআপ প্রাইমার ব্যবহার করা উচিত। বিয়ের দিন সাধারণত একটু ব্রাইট সাজ ভালো লাগে। শাড়ির কালারের সঙ্গে চোখের শ্যাড মিলিয়ে লাগালে ভালো লাগবে। বিয়ের মেকআপ একটু শাইনি হতে হয়। কারণ, কনেকে সবাই অনেক দূর থেকে দেখবে। চোখের জন্য চোখের গড়ন অনুযায়ী ডাইমেনশান ক্রিয়েট করতে হয়। ব্রাইডাল মেকআপের জন্য আলাদা একটা স্পেস থাকা উচিত।

বউভাতের সাজ

বিয়ের পর বউভাতের আগে যদি হাতে সময় থাকে, তাহলে একটি বডি সার্ভিস এবং ফেসিয়াল নিলে ভালো হবে। বিয়ে যদি ট্রাডিশনাল সাজে হয়ে থাকে, তাহলে বউভাতের সাজটা মডার্ন লুকে ভালো লাগবে। এ জন্য লাল রঙের পরিবর্তে অন্যান্য কালার পরলেও ভালো লাগে। চুলে হাফ স্পাইরালের সঙ্গে খোঁপা করলে ভালো লাগে খোঁপায় থাকা চাই ফুল সাজের সঙ্গে মিল রেখে।

বিয়ের পরে ত্বকের যত্ন

বিয়ের দিন, হলুদ ও বউভাতের অনুষ্ঠানে অনেক ভারী মেকআপ করা হয় টানা কয়েক দিন ধরে। তাই সবার আগে মেকআপ খুব ভালোভাবে তুলে ফেলতে হবে এবং ত্বক পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। ত্বক পরিষ্কার করার আগেই লোশন ও আই মেকআপ রিমোভার দিয়ে তোমার মুখ ও চোখের মেকআপ তুলে ফেলতে হবে। তোমার ত্বকের ধরন যাই হোক না কেন, মেকআপ তোলার জন্য মুখ ধোয়ার আগে কোনো তেলযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করো, যাতে তোমার মেকআপ ক্রিমের সঙ্গে সহজেই মিশে যায়।

ছবি: ছায়াছবি

তবে যাদের ত্বক খুব সেনসেটিভ, তাদের জন্য গন্ধযুক্ত যে কোনো প্রোডাক্ট এড়িয়ে চলতে হবে। বাজারে অনেক মেকআপ রিমোভার লোশন পাওয়া যায়। তবে যেকোনো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেও এ কাজ যথেষ্ট কার্যকরভাবে করা যায়।

মেকআপ না তুলে ঘুমাতে যাবে না। যদি মেকআপ না তুলে ঘুমাতে যাও, তাহলে লোমের গোড়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে, মাসকারা চোখের পাপড়ি ফেলে দিতে পারে বা ভেঙে ফেলতে পারে। কোনো ভালো পারলারে গিয়ে ফেসিয়াল করাতে পারো।

বরের সাজ : বউভাতের দিন ছেলের সাজে থাকবে অবশ্যই স্যুট। স্যুটের রং হতে পারে মেয়ের শাড়ির রঙের সঙ্গে মানানসই। অথবা টাই পরতে পারো কনের শাড়ির রঙের সঙ্গে মিল রেখে। তবে ছেলের পুরো পোশাক হতে হবে গর্জিয়াস। যেন কনের সাজের পাশে ছেলের সাজকে হালকা না লাগে।

 

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গএই সংখ্যায়জীবনযাত্রারূপ ও ফ্যাশন

জুতা যেমন হবে বিয়েতে

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ২১, ২০২১

বিয়ের পোশাক আর গয়নার পরই আসে জুতার বিষয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বিয়ের গয়না আর পোশাক কিনতে গিয়ে জুতা কেনা হয় সবার শেষে। তাড়াহুড়া করতে গিয়ে অনেক বর-কনের আক্ষেপ থেকে যায় যে বিয়ের জুতা তাদের মনমতো হয়নি। বিয়ের সাজের অন্যতম অনুষঙ্গ জুতা। বর-কনের বিয়ের সাজে পরিপূর্ণতা আনতে নজরকাড়া আর মানানসই জুতা কিনতে তাড়াহুড়া করবে না। বিয়ের জুতা কেনা নিয়ে রোদসীর আজকের আয়োজন লিখেছেন সাবিহা জামান।

কনের জুতা
কনের বিয়ের পোশাকের দিকে সবার নজর থাকে বেশি। তাই না চাইতেও অনেক সময় জুতার বিষয়টি গুরুত্ব একটু কম পায়। কনের জুতা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কালার কন্ট্রাস্ট করেও কিনতে পারো। কনের জন্য শু, হিল, ব্লক হিল, পেনসিল হিলসহ বিভিন্ন ধরনের বাহারি ব্রাইডাল জুতা মিলবে বাজারে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় কনের জুতায় স্টোন, পুঁতি, ক্রিস্টালের দেখা মেলে। তবে এসব ছাড়াও কনের জুতা নিতে পারো। যেটাই কেনা হোক তা যেন পোশাকের সঙ্গে মানানসই হয় আর কনে যেন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে সেদিকে নজর রাখতে হবে। আজকাল ভেলভেট আর স্টোনের মিশেলে জুতা বিয়ের কনের জন্য বেশ ভালো লাগে আর বর্তমান সময়ে এর চল চলছে। বিয়ের জুতা কেনার সময় ভালো ব্র্যান্ড আর কনের আরামের বিষয়টি দেখতে হবে। দুই থেকে দশ হাজার টাকা বাজেট রাখো কনের জুতা কেনার জন্য। বাটা, অ্যাপেক্স, জেনিস, বে, অরিয়নসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমে মিলবে ব্রাইডাল জুতার।

বরের জুতা
বিয়েতে বরের চেয়ে কনের কেনাকাটাতেই বেশি নজর থাকে সবার। বর বেচারা বিয়ের কেনাকাটায় একটু যেন পিছিয়ে থাকে। তাই তো বরের জুতা কেনা নিয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ করা যাবে না। সেরা জুতাই কিনতে হবে বরের জন্য। জুতা দিয়ে মানুষের রুচির প্রকাশ পায়। বরের জুতা কেনার সময় সব সময় ব্র্যান্ড দেখে কিনতে হবে। বিয়ের জন্য চামড়ার জুতা কেনাই ভালো। বিয়েতে পাঞ্জাবি বা সঙ্গে নাগড়া নেওয়াই ভালো।

এ ছাড়া আজকাল হাল আমলে শীতকাল ছাড়াও বিয়ে কিংবা রিসিপশনের দিন বর স্যুট-প্যান্ট বেছে নেয় আর এর সঙ্গে মিল রেখে ফরমাল শু। বরের জুতা নির্বাচন করতে হবে পোশাকের রং দেখে। বরের স্যুট-প্যান্টের রং কালো কিংবা নীল হলে কালো কিংবা খয়েরি রঙের জুতা ভালো মানাবে। মেরুন ও অন্যান্য হালকা রঙের পোশাকের সঙ্গে কালো জুতা বেশি ভালো লাগবে। ফরমাল শু ছাড়াও লোফার আর হ্যান্ডমেইড জুতা এখন অনেক জনপ্রিয়। চার থেকে পনেরো হাজার টাকা বাজেট রাখো বরের জুতার জন্য।

ছবি: ইন্টারনেট

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গএই সংখ্যায়চলন বলনজীবনভ্রমণ ফাইলরোদসীর পছন্দ

ওয়েডিং ডেস্টিনেশন

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ২০, ২০২১

গোলাম কিবরিয়া:  বিয়ে মানেই প্রতিটি মানুষের কাছে বিশেষ কিছু। তাই এ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সবারই চেষ্টা থাকে বিশেষ কিছু করার। যুগে যুগে মানুষের জীবনাচারে যেমন বৈচিত্র্য আসে, তেমনি পরিবর্তন আসে সামাজিক বিভিন্ন আয়োজনের ট্রেন্ডেও। আবার পুরোনো অনেক ট্রেন্ড নতুন রঙে নতুন ঢঙে হাজির হয়। বিয়ের আয়োজনের পালেও তাই লেগেছে নতুন হাওয়া। বিয়ের নতুন ট্রেন্ড ডেস্টিনেশন ওয়েডিং। যদিও এ ট্রেন্ড একেবারেই নতুন নয়। এ যেন পুরোনোকে নতুন রঙে হাওয়া দেওয়া।
আদি যুগ থেকেই বিয়ের আয়োজন মানেই ছিল খোলা আকাশের নিচে আশপাশে রঙিন কাগজ টানিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বিয়ের আয়োজন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা পরিবর্তন এলেও নতুন করে ভিন্ন রূপে এ ট্রেন্ড জনপ্রিয় হতে চলেছে। যান্ত্রিক জীবন থেকে একটু দূরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে প্রিয়জনদের নিয়ে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং আয়োজন স্মরণীয় করে তোলে মুহূর্তগুলো। ধীরে ধীরে মানুষের কাছে ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের জনপ্রিয়তা বেড়েই যাচ্ছে।
বিভিন্ন সেলিব্রিটি প্রায়ই নিজেদের বিয়ের জন্য ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের আয়োজন করছে। কারণ, খোলা আকাশের নিচে খোলামেলা একটা ভেন্যু যতটা সুন্দর করে সাজানো যায়, বদ্ধ ছাদের নিচে ততটা সুন্দর করে সাজানো যায় না। ডেস্টিনেশন ওয়েডিং ইউরোপ-আমেরিকায় অনেক আগে থেকেই জনপ্রিয়। নিজেদের চেনা শহরের বাইরে গিয়ে সমুদ্র, পাহাড় বা জঙ্গলঘেরা প্রকৃতির মধ্যে আয়োজন হচ্ছে বিয়ে। এ ছাড়া কোনো ঐতিহাসিক স্থান বা রিসোর্ট ভাড়া নিয়েও ডেস্টিনেশন ওয়েডিং করার চল এবার দেশের মধ্যে বেড়েছে।
নিজের মনমতো সবকিছু করা যায় ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ে। সবকিছুই অনেক ইউনিক আর গর্জিয়াস করা যায়। তাই তোমার স্বপ্নের বিয়ের আয়োজনটাকে সবার থেকে একটু আলাদা রাখতে, সবকিছুতে কিছুটা ভিন্নতা আনতে ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের আয়োজন করতেই পারো।
প্রিয় পাঠক, এখন ভাবছ সবই তো বুঝলাম কিন্তু ডেস্টিনেশন ওয়েডিংটা করব কোথায়?

পছন্দের তালিকায় রিসোর্ট
ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের জন্য পছন্দের তালিকায় প্রথমেই রাখতে পারো শহরের কাছাকাছি পছন্দের কোনো রিসোর্টে। প্রতিনিয়তই একের পর এক গড়ে উঠছে নান্দনিক রিসোর্ট। অনিন্দ্যসুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় এসব রিসোর্টে। শহরের যান্ত্রিক কোলাহল থেকে অতিথিদের শান্তি খুঁজে দেওয়াই তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। বিয়ের দিন সকালে অথবা আগের দিন নিমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে আগে থেকে ঠিক করে রাখা গাড়ি চলে যাবে রিসোর্টে। সেখানে বিয়ের সব আয়োজনের দায়িত্ব কোনো দক্ষ ওয়েডিং প্ল্যানারকে দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারো। ঢাকার কাছে গাজীপুরে বেশ কয়েকটি রিসোর্ট আছে, যেখানে অনায়াসে মনমতো বিয়ের আয়োজন করা যেতে পারে। অবশ্যই এ ক্ষেত্রে আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখতে হবে। ঢাকার আশপাশে ও ঢাকার বাইরে এমন কিছু নান্দনিক রিসোর্ট হলো :
ছুটি রিসোর্ট জয়দেবপুর, পদ্মা রিসোর্ট মুন্সিগঞ্জ, মাওয়া রিসোর্ট মুন্সিগঞ্জ, যমুনা রিসোর্ট টাঙ্গাইল, এলেঙ্গা রিসোর্ট টাঙ্গাইল, সায়রা গার্ডেন রিসোর্ট নারায়ণগঞ্জ, হেরিটেজ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা নরসিংদী, সাইরু হিল রিসোর্ট, অরুনিমা রিসোর্ট নড়াইল, ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা গাজীপুর, জল জঙ্গলের কাব্য পূবাইল, আরশিনগর হলিডে রিসোর্ট, মেঘবাড়ি হলিডে রিসোর্ট বান্দরবান, সাহেববাড়ি রিসোর্ট গাজীপুর, সীগাল রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট গাজীপুর, গ্রীন ভিউ রিসোর্ট মৈনারটেক, পাকশী রিসোর্ট পাবনাসহ রয়েছে অসংখ্য রিসোর্ট। রিসোর্ট ছাড়াও বড় তারকা হোটেল ও বাংলোবাড়ি ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের ভেন্যু হতে পারে।

পাহাড় নয়তো সমুদ্রে
কী ভাবছ? বিয়ে করতে পাহাড় বা সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে হবে! নাহ পাঠক, এমন কিছুই নয়। বিয়ে আয়োজনকে আরেকটু ভিন্ন রূপ দিতে তুমিও চাইলে ঢাকার বাইরে পাহাড়ঘেরা প্রাকৃতিক স্থান কিংবা সমুদ্রের কাছাকাছি কোনো স্থানকে বেছে নিতে পারো। কক্সবাজার কিংবা সেন্ট মার্টিনে অসংখ্য নান্দনিক সাজে সজ্জিত রিসোর্ট কটেজ রয়েছে। নারিকেল জিঞ্জিরা খ্যাত সেন্ট মার্টিনের পশ্চিম বিচে মানুষের আনাগোনা কম থাকে। পর্যটক সমাগম কম হওয়ায় ফাঁকা জায়গাজুড়ে সাজাতে পারো বিয়ের আসর। তালিকায় আরও রাখতে পারো কুয়াকাটা সৈকত ও কক্সবাজারে শামলাপুর সৈকত। চাইলেই অতিথিদের নিয়ে মনমতো আয়োজন সেরে নিতে পারো, সেখানে অবস্থিত রিসোর্ট বা কটেজে। বান্দরবানের নীলগিরি, নীলাচল ও রাঙামাটির কাপ্তাই লেক হতে পারে পাহাড়ঘেরা সবুজের মধ্যে তোমার ওয়েডিং ডেস্টিনেশন। ভাবো তো একবার, তোমার বিয়ের আয়োজন হচ্ছে পাহাড়ঘেরা কোনো পরিবেশে নয়তো সমুদ্রের পাশে। এ যেন স্বপ্নের জগতেই হারিয়ে যাওয়া।

ঘন অরণ্যে
ভালোবাসায় পরিপূর্ণ জীবন শুরু হবে সবুজে ঘেরা ঘন অরণ্যে। পাখির কলরবের মাঝে জঙ্গল সেজে উঠবে তোমার বিয়ের জন্য। নওগাঁর আলতাদীঘি, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারে বিয়ের। দিনের বেলা সুন্দরবনের লঞ্চেও হতে পারে বিয়ের অনুষ্ঠান। তবে বনের পশুপাখিকে বিরক্ত না করেই বিয়ের অনুষ্ঠান করা শ্রেয়।


ভিলেজ ওয়েডিং
চাইলে নিজ গ্রামের বাড়িতেও বেশ ধুমধাম করে ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের আয়োজন করা যেতে পারে। বছরের পর বছর পড়ে থাকা ফাঁকা বাড়িটা আলোকসজ্জা আর আতশবাজিতে মেতে উঠবে। গ্রামের শেওলাধরা পুকুরঘাটে গায়েহলুদের ছোট্ট আসর বসবে। অনেকের নিজ গ্রামের বাড়িতে তেমন জায়গা না-ও থাকতে পারে। তবে তাতেও চিন্তা নেই। জয়রামপুর কৃষি পর্যটন গ্রাম, চারিপাড়া পর্যটন গ্রামসহ ইকো ট্যুরিজমের আওতায় দেশের বিভিন্ন জেলায় অনেক পর্যটন গ্রাম গড়ে উঠেছে। সেসব গ্রামে হতে পারে তোমার ওয়েডিং ডেস্টিনেশন। খোলামেলা উঠানে শীতলপাটিতে বসে সূচনা হবে নতুন এক অধ্যায়। ছবির মতো সুন্দর এ মুহূর্তগুলো বাকি জীবন স্মৃতির পাতায় অক্ষয় হয়ে থাকবে।

থাকো নির্ভার
ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের পরিকল্পনা খুব সহজ কথা নয়। অনুষ্ঠান অনুযায়ী ভেন্যু, খাবারের মেন্যু ঠিক করা, বর-কনের পাশাপাশি আত্মীয়স্বজনের পোশাক কেনা, নিমন্ত্রণপত্র ছাপানো, স্টেজ সাজানো, তত্ত্ব গোছানো, ছবি ভিডিও আরও কত-কী! যারা একটু সুন্দরভাবে এসব করতে চাও অথচ নিজেদের অত সময় নেই, তারা ভেন্যু ঠিক করে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট আর ওয়েডিং প্ল্যানারের সাহায্য নিতে পারো। এ ছাড়া ভ্রমণ, রিসোর্ট বুকিং, টিকেটিংয়ে সহায়তা নিতে পারো ট্যুর অপারেটর অথবা অনলাইন ট্রাভেল গ্রুপগুলোর কাছ থেকে।

বাজেট নিয়ে ভাবনা?
বাড়ি তৈরি, গাড়ি ক্রয়, ব্যবসার জন্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে অনেক ধরনের ঋণ দেয় বাংলাদেশের ব্যাংকগুলো। তবে এসব ছাড়াও এখন বিয়ে করার জন্য ঋণ দিচ্ছে অনেক ব্যাংক। এ ধরনের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের আর্থিক সক্ষমতার বিষয়টি সবার আগে বিবেচনা করা হয়। বিভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে ব্যাংকগুরো বিয়ের জন্য লোন সুবিধা দিয়ে থাকে।
শুরু হয়ে গেছে বিয়ের মৌসুম। তাই জীবনসঙ্গীকে নিয়ে আর দেরি না করে পছন্দসই ওয়েডিং ডেস্টিনেশন খুঁজে নাও। নতুন পথচলা হোক আনন্দের, শুভকামনা।

ছবি: সজীব মিয়া ও নুসরাত জাহান রিজভি 

 

 

০ মন্তব্য করো
1 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গআয়নাঘরএই সংখ্যায়জীবনজীবনযাত্রারূপ ও ফ্যাশন

বিয়ের আগে ত্বকের দেখভাল

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ২০, ২০২১

সুরাইয়া নাজনীন: বিয়েতে যেন কনের তোড়জোড়টাই বেশি। বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকেই প্রস্তুতির পালা শুরু। কনের মনে বয়ে আসা নানা রকম চিন্তাই যেন ত্বক বিগড়ে যেতে শুরু করে। তাই বিয়ের আগেই দরকার ত্বকের দেখভাল। তবে কনের ত্বকচর্চায় আছে কিছু হিসাব-নিকাশ। সেই কথাগুলোই এবার রোদসীর বিয়ে সংখ্যায়_

কী করবে কী করবে না
বিয়ের কিছুদিন আগে থেকেই মুখ ও শরীরে হলুদ লাগানো বন্ধ করতে হবে। কারণ, হলুদের রং সহজে মিটতে চায় না। তাই বিয়ের সময় মেকআপ আর্টিস্টের পক্ষে মেকআপ দিয়ে হলুদের রং ঢাকা কঠিন হয়ে পড়ে। শুতে যাওয়ার আগে কাঁচা দুধে লেবুর রস মিশিয়ে সপ্তাহে তিনবার লাগাবে। এটি প্রাকৃতিক ক্লিনজার ও অ্যাস্ট্রিজেন্টের কাজ করে। এর ফলে ত্বকের রং আরও উজ্জ্বল হয়। ব্লিচের জন্য গোল গোল করে কাটা আলু নিজের মুখে ভালো করে ঘষতে পারো। আলু প্রাকৃতিক ব্লিচের কাজ করে। মৃত ত্বক থেকে মুক্তি পেতে সপ্তাহে একবার অবশ্যই স্ক্র্যাব করবে। বিয়ের আগে থেকেই বিউটি ডায়েট মেনে চলতে হবে ও জুস খেতে হবে বেশি বেশি। যত দূর সম্ভব বাড়িতে তৈরি খাবার খাও ও বাইরের খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ খাবার কাজ করে, এটি ত্বকের জন্য উপকারী। ঘুমাতে যাওয়ার ও ঘুম থেকে ওঠার সময় সঠিক ও নির্ধারিত রাখতে হবে। চোখের তলায় কালো দাগ যাতে না পড়ে, তার জন্য বেশি রাত পর্যন্ত মোবাইল বা ল্যাপটপ নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা এড়িয়ে যেতে হবে। রোজ সকালে উঠে এক্সারসাইজ করতে ভুলবে না। এ সময় নানান মেকআপ ও কসমেটিকস কিনে নিজের ত্বকে পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। ওই সব কসমেটিকস বা মেকআপের কারণে যদি অ্যালার্জি হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তা পাল্টে ফেলবে। নিয়মিত ম্যানিকিওর ও প্যাডিকিওর করিয়ে নাও। বাড়ির বাইরে গেলে সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবে না। স্কার্ফ ও দস্তানা পরতে পারো। ত্বকে ট্যান পড়তে দেবে না।

চুল শুষ্ক হতে থাকলে প্রতি তিন দিনে গরম অলিভ বা আমন্ড তেল দিয়ে চুলে ম্যাসাজ করবে। মাসে এক-দুবার হেয়ার স্পা করাতে পারো। ফেসিয়ালের দুদিন পরে ত্বকে ঔজ্জ্বল্য আসে। তাই বিয়ের ঠিক দুদিন আগে ফেসিয়াল করিয়ে নেবে। নিজের ত্বক বুঝে ফ্রুট, আরোমা, পার্ল, গোল্ড, অক্সি বা ডায়মন্ড ফেসিয়াল করাতে পারো। বিয়ের আগের শেষ এক সপ্তাহে কোনো নতুন বিউটি ট্রিটমেন্ট বা প্রোডাক্ট ব্যবহার করবে না। এত দিন যা ব্যবহার করছ, তাই ব্যবহার করো। বিয়ের কিছুদিন আগে সারা শরীরে ওয়্যাক্সিং করালে ভালো ও বডি পলিশিং করতে পারো।

দেখভাল ত্বক বুঝে
সঠিক স্কিনকেয়ার রুটিন মেনে না চললে কিন্তু ত্বকের ক্ষতি হয়ে যাবে। বিশেষ করে বিয়ে আর বউভাতের দিন যে মেকআপ করবে, তা পরে ত্বককে মারাত্মক শুষ্ক করে তুলতে পারে, ত্বকের বয়স এক ধাক্কায় বেড়ে যেতে পারে অনেকটাই! তাই বিয়ের জন্য যত কাজের চাপই থাক, ত্বকের যত্নটাই সবচেয়ে বেশি জরুরি হওয়া উচিত! কীভাবে পরিচর্যা করবে ত্বকের, কী কী উপাদান হাতের কাছে থাকতেই হবে! নিয়মিত মেনে  চলবে এসব, বিয়ের দিনে তোমার ত্বকও খুশি আর উচ্ছল থাকবে! ত্বক সুস্থ রাখতে যে জিনিসটির সবচেয়ে বড় ভূমিকা, তার নাম ময়শ্চারাইজার। সঠিক ময়শ্চারাইজারটিও বেছে নেওয়া সমান জরুরি। ত্বকের ধরনের সঙ্গে মানানসই ময়শ্চারাইজার বেছে নিতে হবে। এটিতে ত্বক আর্দ্র রাখবে, এনে দেবে বাড়তি দীপ্তি। ত্বক আর্দ্র রাখা যতটা দরকার, ততটাই দরকার তা পরিষ্কার রাখা। কোমল ফেসওয়াশ বেছে নিতে হবে। মুখ ধোয়ার পর টোনার লাগালে রোমছিদ্রগুলো সংকুচিত হয়ে যাবে। অনেক মেয়ে টোনার হিসেবে বরফ ব্যবহার করে। তবে বরফ কখনো সরাসরি ত্বকে লাগাবে না, পরিষ্কার রুমালে মুড়ে মুখে বুলিয়ে নিতে হবে। মুখে বাড়তি জেল্লা আনতে ফেস মাস্ক খুবই জরুরি। ত্বকের ধরন আর প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী বেছে নিতে হবে ফেস মাস্ক। যদি সারা দিনে মাস্কের জন্য সময় দিতে না পারো, তবে ঘুমের সময়টাও মাস্ক লাগিয়ে শুয়ে পড়তে পারো। সকালে উঠে তারুণ্যে ভরপুর ত্বক দেখে চমকে যাবে নিজেই। সাবান কিন্তু ত্বক বেশি রুক্ষ করে দেয়। ত্বকে বাড়তি কোমলতা পেতে বিয়ের মৌসুমটায় বডিওয়াশ ব্যবহার করো। বডিওয়াশে প্রচুর এসেনশিয়াল অয়েল আর ময়শ্চারাইজার থাকে, যা ত্বক আর্দ্র রাখে। বাড়তি পাওনা হলো বডিওয়াশের মিষ্টি সুগন্ধ, যা দিনভর ঘিরে থাকবে তোমাকে।

মেকআপের পর
বিয়ের দিন একটা ভারী মেকআপ নিতেই হয় নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপনের জন্য। এরপর ওই মেকআপ নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে থাকতে হয়। যার ফলে পরদিন অনেক কনের মুখে পিম্পলের মতো সমস্যা দেখা দেয়। আবার অনেক কনের বিয়ের দিন কিছু সময় পর মেকআপ সরে যাওয়া, কেকি দেখানোর মতো সমস্যাতেও পড়তে হয়। যেটা ওই মুহূর্তে খুবই বিরক্তিকর। এর প্রধান কারণ হলো ত্বককে মেকআপ উপযোগী করে না তোলা।

দুশ্চিন্তা নষ্ট করে ত্বক
বিয়ের আগে কমবেশি সব কনে এবং বরের চোখের নিচের কালো দাগ পড়তে দেখা যায়। এর কারণ হলো, বিয়ের আগে সবার মধ্যেই কিছু দুশ্চিন্তা কাজ করে, যার কারণে পরিপূর্ণ ঘুম হয় না। আবার অনেক সময় হবু বউ আর হবু বরের মধ্যে নিজেদের চেনা-জানাতে সময় দিতে হয়, এতেও রাত জাগতে হয়। বিয়ে নিয়ে কনে এবং বর দুজনেরই বেশি সময় দিতে হয় বিয়ের কেনাকাটায়। দীর্ঘক্ষণ বাইরে ঘোরাঘুরির কারণে ত্বকে সানট্যান, পিগমেন্টেশন স্পষ্ট হয়ে যায়। অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে ত্বকের পাশাপাশি আমাদের চুলেরও বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। দীর্ঘ সময় ধরে বাইরের ঘোরাঘুরির কারণে চুলে ধুলা-ময়লা জমে চুল রুক্ষ করে চুল পড়ার সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। আর তা ছাড়া বিয়ের দিন চুল সেট করতে যে পরিমাণ হিট আর সেটিং স্প্রে ব্যবহার করা হয় এতে চুলের উজ্জ্বলতা আরও হারিয়ে যায়। তাই চুলের যত্ন নেওয়াটা আবশ্যক হয়ে যায়। কনেকে এখন থেকেই যত্ন নিতে হবে। অন্তত বিয়ের এক মাস আগে থেকেই শুরু করে দিতে হবে। আর সেটা বাসায় বসে হোক কিংবা কোনো বিউটি পারলারেই হোক। তবে বিউটি ক্লিনিকে যত্ন নেওয়াই ভালো। যার যার ত্বকের ধরন অনুযায়ী যত্ন নিলে বিয়ের দিন কনেকে আকর্ষণীয় লাগবে। যদি কোনো কারণে ত্বকে সমস্যা থাকে এখন থেকে যত্ন না নিলে বিয়ের অনুষ্ঠানগুলোতে মেকআপ ভালোভাবে বসবে না। এ ছাড়া কনেকে বিয়ের পর আত্মীয়স্বজনের বাসায় দাওয়াতে যেতে হয়। তখন তো আর ভারী মেকআপের প্রয়োজন হয় না।

ছবি: ইন্টারনেট

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.এই সংখ্যায়সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ২০, ২০২১

আমরা কেউই পারফেক্ট নই। ইম্পারফেকশনের মধ্যেই আমাদের পারফেকশন। কথাটি মাথায় গেঁথে রাখো, অন্তত জীবনসঙ্গী খোঁজার ক্ষেত্রে। অনেক সময়ই দেখা যায় অতি রূপবান ছেলেদের হয়তো চরিত্রের দোষ আছে। অতি সুন্দরী নারীর জিহ্বায় সমস্যা আছে। মুখ দিয়ে যা বেরোয়, কলিজা খানখান করে দেয়! অন্যদিকে, ঘরোয়া পরিবেশে বেড়ে ওঠা অতি সহজ সরল ও সাধারণ দর্শন মেয়েটি হয়তো যার জীবনে যাবে, তাকে ধন্য করে দেওয়ার যোগ্যতা রাখে। লেখাপড়ায় অতি সাধারণ, চেহারায় অতি সাধারণ, স্কুল-কলেজের বন্ধুবান্ধবের টিটকারির শিকার, গরিব মধ্যবিত্ত পুরুষটি হয়তো তাঁর জীবনসঙ্গিনীর জন্য প্রাণ উজাড় করা ভালোবাসা জমা করে রেখেছেন।
কথা হচ্ছে, আমরা কোন বিষয়কে প্রাধান্য দেব? একথা সত্যি পারফেক্ট ছেলে বা মেয়ে এই পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া সম্ভব না। আমাকে কোথাও না কোথাও ছাড় দিতেই হবে। আমাকেই ঠিক করতে হবে আমি কোন গুণটা বেশি করে চাই। কোন দোষটা সামান্য পরিমাণে থাকলেও আমি ইগনোর করতে পারব। সেই অনুযায়ী আমাকে জীবনসঙ্গিনী বেছে নিতে হবে।
টিভিতে মডেলিং করে এমন একজনের রূপ-ফিগারে মুগ্ধ হয়ে উ-লা-লা বলতে বলতে আমি বিয়ে করলাম এবং তারপর আবিষ্কার করলাম তাঁর মডেলিং ক্যারিয়ারটা আমার পছন্দ না। বরং আমি চাই গৃহিণী টাইপ বধূ। তাহলে আমার গালে কষে একটা চড় আমি ডিজার্ভ করি। দেশে হাজার হাজার, কোটি কোটি গৃহিণী মেয়ে ফেলে রেখে কেন একটা মডেলকে আমি বেছে নিলাম। তারপর জোর জবরদস্তি করে তাঁর মতের বিরুদ্ধে তাঁর ক্যারিয়ারের ওপর হস্তক্ষেপ করতে গেলাম?

অনেক মেয়েই সচ্ছল স্বামী চান। চান অফিসে উচ্চপদে কাজ করনেওয়ালা পতি। আবার একই সঙ্গে চান সেই স্বামী তাঁর সঙ্গে ম্যাক্সিমাম সময় কাটান। ঠিক ছয়টায় বাড়ি ফিরে আসবেন, রাতে ডিনারে যাবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। তাঁকে বলতে চাই, যে ছেলে অফিসে উচ্চপদে কাজ করেন, কিংবা ব্যবসায় ব্যস্ত থাকেন, তাঁর বাড়িতে ফিরতে প্রায়ই মধ্যরাত হয়ে যাবে। ভালোবেসে টাইম কাটানেওয়ালা স্বামী চাইলে সাধারণ চাকরিজীবীকে বিয়ে করো। কোনটা প্রায়োরিটি?
দুজন পারফেক্ট চরিত্রের অধিকারী স্বামী-স্ত্রীরও কিন্তু ডিভোর্স হওয়ার ঘটনা ঘটে। চরিত্র অবশ্যই সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর, কিন্তু তার চেয়েও বেশি জরুরি পারস্পরিক সংগতি। একজন আরেকজনের জন্য উপযুক্ত কি না। ফ্যামিলি সমপর্যায়ের কি না- বিয়ের আগে এসব বিষয় খেয়াল রাখা দরকার। বিয়েশাদিতে একটু আপ-ডাউন হবেই। কিন্তু দুজনের সংগতি যতটা কাছাকাছি হবে, তত ভালো।
যে আপা ও ভাই কথায় কথায় নিজের স্বামী/স্ত্রীকে ছেড়ে চলে আসেন, বার্ধক্যে গিয়ে আবিষ্কার করেন কতটা একা তাঁরা। আফসোস করে ভাবেন, হয়তো সামান্য আলোচনাতেই সমস্যার সমাধান হওয়াটা সম্ভব ছিল। এইটা ফ্যাক্ট, বাস্তব উদাহরণ দিচ্ছি, আশপাশে খুঁজলেই দেখতে পাবে।

বিয়ে কোনো কমপিটিশন না। বিয়ে কম্পেনিয়নশিপ। আমি আমার জীবনসঙ্গিনীকে সাহায্য করব, তিনিও আমাকে সাহায্য করবেন। দুজন মিলে একটা সংসার গড়ে তুলব। প্রচুর ঝড়-তুফান আসবে। কিন্তু বুড়ো-বুড়ি হওয়ার পরে যখন পেছন ফিরে তাকাব, তখন নিজেদের মজবুত ইমারত দেখে নিজেরাই মুগ্ধ হব।
সবার জন্য শুভকামনা।

 

 

 

১ মন্তব্য করো
1 FacebookTwitterPinterestEmail
.অনুসঙ্গএই সংখ্যায়চলন বলনজীবনযাত্রারূপ ও ফ্যাশন

ঘরেই বিয়ের সাজ

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১৯, ২০২১

বিয়ে মানে কেবল বিয়ে নয়, একটা স্বপ্ন। বিয়ের দিনে সব মেয়েই চায় সবচেয়ে সেরাভাবে সাজতে। বিয়ের সেরা সাজের জন্য সেরা পারলারগুলোয় ধুম লেগে যায় বিয়ের মৌসুম এলেই। বিয়ের পোশাক আর সাজ নিয়ে ছোট থেকেই প্রায় সব মেয়ে নানান পরিকল্পনা করে। কিন্তু সব সময় ভাবনার সঙ্গে বাস্তবের মিল হয় না। অনেক সময় দেখা যায় ঘরেই ছোট পরিসরে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। আবার অনেকের আকদের আয়োজন ঘরেই সেরে নেওয়া হয়। কিন্তু তাই বলে কি কনে সাজে কম্প্রোমাইজ করলে চলবে না। চাইলে ঘরেই ব্রাইডাল মেকআপ সম্ভব খুব সহজেই। ঘরে বিয়ের সাজ নিয়েই রোদসীর আজকের আয়োজন। লিখেছেন সাবিহা জামান_

বেস মেকআপ :

ময়েশ্চারাইজার

ব্রাইডাল মেকআপ শুরু করার আগে বেসিক তৈরি করতে হবে। প্রথমে ভালোভাবে ফেস পরিষ্কার করতে হবে। এরপর ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার দিয়ে মুখ ও গলা ময়েশ্চারাইজ করে নাও।

প্রাইমার

ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার আগে অবশ্যই প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে। কারণ, এটি মেকআপ দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখতে সাহায্য করে। যেহেতু বিয়ের সাজ আর দীর্ঘ সময় নিয়েই সাধারণত বিয়ের অনুষ্ঠান চলে, তাই ব্রাইডাল প্রাইমার ছাড়া মেকআপ করা চলবে না।

চোখের জন্য প্রাইমার
ভুলে গেলে চলবে না বেস তৈরি করার সময় চোখের দিকেও নজর দিতে হবে। ব্রাইডাল মেকআপের জন্য আইলিড প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে।

চোখের ব্রাইডাল মেকআপ :


ভুরু : চোখে মেকআপে ভুরু থেকেই শুরু করো। বাজারে বিভিন্ন ভালো ব্র্যান্ডের ভালো আইব্রো কিট পাওয়া যায়, এগুলোর দাম ৫০০ থেকে শুরু হয়। চোখের সাজ শুরু করার আগে ভুরু হাইলাইট করা জরুরি। এ জন্য ভুরুতে আইব্রো কিট দিয়ে হাইলাইট করে নাও।

ছবি: রেড স্টুডিও অ্যান্ড স্যালুন

আইশ্যাডো : চোখের সাজ আইশ্যাডো ছাড়া পূর্ণতা পায় না। ব্রাইডাল মেকআপে আইশ্যাডোর কালার সিলেক্ট করার ক্ষেত্রে বিয়ের পোশাকের সঙ্গে মিল রাখো। আইশ্যাডোর ওপরে বুভার করতে পারো গ্লিটার। এতে করে চোখ আরও বেশি হাইলাইট হবে।

আইলাইনার ও কাজল : চোখের সৌন্দর্য বাড়াতে আইলাইনার আর কাজল না হলেই নয়। ফেসের সঙ্গে মিল রেখে আইলাইনার ব্যবহার করো। চোখ বড় দেখানোর জন্য হোয়াইট বা সাদা কাজল ব্যবহার করতে পারো।

মাসকারা : মোহনীয় চোখের সাজে মাসকারা মিসিং থাকলে চলবে না। বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাসকারা পাওয়া যায়। ব্রাইডাল সাজের জন্য কার্ল মাসকারা বেছে নিতে পারো। এতে করে চোখের পাপড়ি অনেক বড় দেখাবে আর ফেসের সঙ্গে মানিয়ে যাবে।

আইল্যাশ : হাল আমলে আইল্যাশ বেশ জনপ্রিয়। যদি আই ল্যাশ পরে কমফোর্টেবল থাকো, তবে চোখের পাতা ঘন করতে আইল্যাশ লাগাতে পারো। চোখের মাপ অনুযায়ী আইল্যাশ নির্বাচন করো। তবে যদি আইল্যাশ ব্যবহার করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করো, সে ক্ষেত্রে ভালো ব্র্যান্ডের কার্ল আইশ্যাডো বেছে নাও।

ফেস মেকআপ
ফাউন্ডেশন : বিয়ের আগে সঠিক ফাউন্ডেশনটি খুঁজে বের করা উচিত। ত্বকের কালারের থেকে মিলিয়ে ফাউন্ডেশন শেড বেছে নাও। শেড ভুল হলে ভালো ব্রাইডাল মেকআপ সম্ভব নয়। আর এতে বিয়ের মতো একটি বিশেষ দিনে তোমার ছবি বাজে আসবে।
ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করার জন্য ভালো স্পঞ্জ ব্যবহার করো। তুমি যত ভালো ব্লেন্ড করবে, মেকআপ দীর্ঘক্ষণ লং লাস্টিং করবে।

কনসিলার : ব্রাইডাল মেকআপের জন্য ভালো ব্র্যান্ডের কনসিলার বেছে নিতে হবে। কনসিলার ডার্ক সার্কেল কভার করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ত্বকের দাগ স্পট ঢাকতে কনসিলারের জুড়ি নেই। ফাউন্ডেশনের মতো কনসিলার নির্বাচন করার সময় শেড ম্যাচ করতে হবে।

ছবি: ছায়াছাবি

ব্লাশন : মেকআপ কমপ্লিট করতে ব্লাশন অনিবার্য। বিভিন্ন কালারের ব্লাশন পাবে তোমার ত্বকের সঙ্গে মানিয়ে ব্লাশন নির্বাচন করো। তবে খুব বেশি ব্লাশন লাগানো উচিত নয়।

কমপ্যাক্ট পাউডার : সবশেষে কমপ্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করতে হবে। কমপ্যাক্ট পাউডার কেনার আগে স্কিন টোনের সঙ্গে মিল রেখে কিনবে। মূলত কমপ্যাক্ট পাউডার মেকআপ ব্রাইট করে। এর সঙ্গে মেকআপ স্কিনে ভালোভাবে বসতেও সাহায্য করে। অবশ্যই ভালো মানের কমপ্যাক্ট পাউডার নির্বাচন করো, যাতে করে মেকআপ লং লাস্টিং করে। এবং অনেকক্ষণ পর্যন্ত মেকআপ টিকিয়ে রাখবে। তবে কমপ্যাক্টটি দামি কিনবে।

লিপস্টিক : ঠোঁটে লিপস্টিক দেওয়ার আগে ভালোভাবে ঠোঁট ময়েশ্চারাইজার নিতে হবে। লিপলাইনার ব্যবহার করতে ভুলবে না। এতে করে ঠোঁট আরও আকর্ষণীয় লাগবে। এবার লিপস্টিক দেওয়ার পালা। ব্রাইডাল মেকআপের জন্য ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করো। কারণ, এটি দীর্ঘ সময় ঠোঁটে থাকবে। পোশাকের সঙ্গে মানানসই সঠিক লিপস্টিক কালার চয়েস করবে।

সেটিং স্প্রে : মেকআপ শেষে ভালো ব্র্যান্ডের সেটিং স্প্রে দাও। সেটিং স্প্রে মেকআপ লং লাস্টিং করে। তবে খুব কাছ থেকে কখনো সেটিং স্প্রে দেবে না। এতে করে স্প্রের দাগ থাকবে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়চলন বলনজীবনজীবনযাত্রা

বিয়ের পোশাকে প্রথাবদল

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১৯, ২০২১

বিয়ে আর বিয়ের পোশাক নিয়ে হাজারো পরিকল্পনা আর স্বপ্ন। একটা সময় বিয়ের পোশাক মানেই ছিল লাল বেনারসি আর শেরওয়ানি। তবে হাল আমলে বিয়ের পোশাকে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। কেবল লাল বেনারসিতে টুকটুকে লাল বউ নয়। এখন নানান রঙে ভিন্ন পোশাকে বিয়ের সাজে নিজেকে সাজাও বর-কনে। প্রথাবদলের বিয়ের পোশাক নিয়েই রোদসীর আয়োজন। লিখেছেন সাবিহা জামান_

পোশাকের রং
বিয়ের পোশাকের কথা বললেই আমাদের মাথায় ঘুরপাক খায় লাল টুকটুকে কনে। কারণ, সেই বহুকাল আগে থেকেই আমাদের উপমহাদেশে বিয়ের কনের পোশাকের রং লাল। বিয়েতে কনের পোশাকে লাল রংকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। আগের দিনে লাল শাড়ি, লাল লিপস্টিক ছাড়া কনের সাজ অসম্পূর্ণ থাকত। তবে বউ সাজে এখন এসেছে অনেক রং। হাল আমলে বিয়ের পোশাকের রঙে বদল এসেছে। সোনালি, সাদা, নীল, গোলাপি ও সবুজের মতো ভিন্ন ভিন্ন রঙে নিজেকে সাজায় কনে। কনের সঙ্গে মিলিয়ে আজকাল বর সাজে। আসলে বিয়েতে লাল পরতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। নিজের পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো রঙেই নিজেকে সাজাতে পারো।

সোনালি সাজে কনে
বিয়ের উৎসবে লালের রং এখন অনেক জনপ্রিয়। বেশ গর্জিয়াস লাগবে সোনালি রঙে লেহেঙ্গা অথবা শাড়িতে, সোনালি গাউনেও বিয়ের সাজে বেশ লাগবে। অনেকেই আজকাল বিয়ের জন্য সোনালি রং বেছে নিচ্ছে আর অনেকে পরছে রিসিপশনের দিনে।

নীল
বিয়েতে নিজেকে ভিন্নভাবে ও আধুনিকভাব ফুটিয়ে তুলতে নীল রং বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। অনেক বিয়েতেই দেখা যায় বর-কনে দুজনেই নীল রঙে সেজেছে। সাধারণত বউভাত বা এনগেজমেন্টে আমাদের দেশের নারীরা নীল পরে থাকলেও বর্তমানে অনেকেই বিয়েতেও এই রং পছন্দ করছেন।

ছবি: আনজারা

পিচ
অনেকেই আছে, যারা সাদামাটা থাকতে পছন্দ করে। খুব বেশি উজ্জ্বল রং পছন্দ না করলে পিচ রং বেছে নিতে পারো। ভারতীয় অভিনেত্রী আনুশকা শর্মা ও অভিনেত্রী নেহা ধুপিয়া তাদের বিয়েতে পরেছিলেন পিচ রঙের লেহেঙ্গা। সেই থেকে বিয়েতে পিচ রঙের ট্রেন্ড চালু হয়েছে। অনেকেই লাল বা সোনালি বাদ দিয়ে বিয়েতে পিচ রঙে নিজেকে সাজাচ্ছে।

সাদা
জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা তার বিয়েতে পরেছিলেন সাদা জামদানি। শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে ভারী সোনার গয়নায় সবার নজর কেড়েছিলেন তিনি। সাদা আর সোনালি পাড়ে সাউথ ইন্ডিয়ার বেশির ভাগ কনেই সাজে। এর সঙ্গে সোনার গয়নায় বেশ লাগে। সাদার সঙ্গে মিলিয়ে মেরুন ওড়নায় নিজেকে বউ হিসেবে সাজাচ্ছে আজকাল অনেকেই। ক্রমেই বিয়েতে জনপ্রিয় হচ্ছে হালকা রংগুলো, যার মধ্যে শুভ্র সাদা সবার নজর কাড়ে।

প্রথা পরিবর্তনে পোশাক
প্রত্যেক মানুষের বিয়ে নিয়ে থাকে হাজারো ভাবনা। আর এ ভাবনার বড় একটি স্থান জুড়ে থাকে বিয়ের পোশাক। নিজের বিয়ের পোশাক কী হবে, কেমন হবে, এ নিয়ে ভাবেনি এমন বর-কনে পাওয়া দায়। সমাজের প্রথা আর নিয়মের ভারে ভাবনা যা-ই হোক শেষটায় বেশির ভাগ কনের পরনে থাকে লাল শাড়ি কিংবা লেহেঙ্গা। তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে এখন বিয়ের পোশাকেও পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে। প্রথা অনুযায়ী বিয়েতে শাড়ি বা লেহেঙ্গার বাইরে গিয়ে অনেকেই সাজাচ্ছে পছন্দ অনুযায়ী।

বিয়ের পোশাকে সানজানা রিশি

গত বছর ভারতীয় নারী উদ্যোক্তা সানজানা রিশি বিয়ের পোশাক দিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। তিনি প্রথা অনুযায়ী বিয়েতে শাড়ি বা লেহেঙ্গা না পরে প্যান্ট-স্যুট পরেই বিয়ের আসরে হাজির হন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হইচই ফেলে দেন সানজানা। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমার প্যান্ট-স্যুট অনেক পছন্দ আর আমি এতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। নিজের পছন্দ আর আরামের কথা মাথায় রেখেই আমি বিয়েতে এই পোশাক বেছে নিয়েছি।’ ‘গেম অব থ্রোনস’- সিরিজের অভিনেত্রী সোফি টার্নারকেও তার বিয়ের দিন একটি সাদা ট্রাউজার পরা অবস্থায় দেখা যায়।

আসলে বিয়ে মানেই কেবল গৎবাঁধা লাল বেনারসি কিংবা লাল লেহেঙ্গা নয়। আমরা কী সহজেই শাড়িতে নারী বলে নারীকে সংজ্ঞায়িত করছি অথচ সে কী চায় এ কথা আমরা কথা মাথায় রাখি না। এখন সময়ের অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিভিন্ন ডিজাইনের ড্রেসের সমারোহে কেবল শাড়িতেই নারীরা সীমাবদ্ধ নেই। নিজের ভালো লাগা আর কমফোর্টের বিষয়টি নিয়ে এখনকার নারীরা অনেক সচেতন। কে কোন পোশাক পরবে, এটি তার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়। বিয়ের পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রেও বর্তমানে নারীরা নিজের পছন্দ আর কমফোর্টের বিষয়টি দেখে থাকে। তাই তো এখন বিয়ে শাড়ি, লেহেঙ্গার পাশাপাশি স্থান করে নিচ্ছে গাউন, সালোয়ার-কামিজ ও প্যান্ট-স্যুট। পশ্চিমা দেশগুলোয় অনেকেই বিয়েতে থিম বেইস সাজ দিচ্ছে। আবার অনেকে বিয়েতে সাজতে চায় প্রিয় সেলিব্রিটির মতো।
বছরের শেষের দিকে বিয়ের ধুম পড়ে যায় আর এ সময় আমাদের দেশে ঠান্ডা থাকে। কিন্তু আমরা বর-কনের পোশাকে এ বিষয়টা একদমই যেন ভুলে যাই। পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে এখন অনেকেই গরমের দিনে বেশি ভারী পোশাক না পরে আরামদায়ক পোশাক বেছে নেওয়াই ভালো।

ছবি: রেড

আগে বরের পোশাক বলতেই ছিল কেবল শেরওয়ানি বা পাঞ্জাবি। তবে বেশ কিছু বছর ধরে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্যুট-প্যান্ট। অনেকেই আবার ট্র্যাডিশনাল পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে ওপরে কটি পরছে, আবার কেউ বেছে নিচ্ছে কাবলি সেট। কনের সঙ্গে মিলিয়ে কাস্টমাইজ ড্রেসে অনেক বর-কনেই বিয়ে সেরে নিচ্ছে, লাগছেও বেশ।
আসলে বিয়েতে কে কী পরবে, তা প্রথাগত নিয়মে ঠিক না করাই ভালো। বিয়েতে তুমি যেটা ভালোবাসো, যা তোমাকে বিয়ের দিনে সবার থেকে সেরা করবে, তাই পরো। নিজের কমফোর্ট বাদ দিয়ে কোনো পোশাক পছন্দ করবে না। বিয়েতে মন থেকে আনন্দ করো, হাসো। কারণ, প্রাণখোলা আনন্দের থেকে সৌন্দর্য আর কিছুই না।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়পার্শ্ব রচনাবিশেষ রচনা

মানিয়ে চলো রে…

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১৯, ২০২১

রোদেলা নীলা: চোখের নিচে দগদগে কালো দাগ নিয়ে ক্লাসরুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে নীলা। সে ভেবেছিল আজ আর ক্লাস নেবে না; কিন্তু সামনে বাচ্চাদের ফাইনাল পরীক্ষা। ক্লাস মিস করলে তার যোগ্যতা নিয়ে ভীষণ রকম প্রশ্ন উঠবে। এমনিতে স্বামীর অমতে স্কুলের চাকরি কোনো রকম চালিয়ে যাচ্ছে। গেল রাতে এই বাইরে কাজ করা নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে কর্তা তার গায়ে হাত তোলে। অল্পের জন্য চোখ বাঁচিয়ে সকালে ফেস মেকআপ দিয়ে কালো দাগ সামলিয়ে স্কুলে এসেছে। প্রিন্সিপাল ম্যামকে দেখেই সে মুখ লুকিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে সালাম দিল। ম্যাডামের চোখ এড়াল না, কী হয়েছে তোমার গালে? প্রশ্নটা শুনে বেশ অপ্রস্তুত হয়ে গেল নীলা। প্রথমে আমতা-আমতা করে, পরে ধীরে ধীরে সব ঘটনা বলে দিল, ম্যাডাম ভীষণভাবে রেগে গেলেন। বললেন আইনের মাধ্যমে পুরো ব্যাপার নিষ্পত্তি করতে।
নীলা ঘাবড়ে গেল। নারী সহকর্মীকে খুলে বলতেই সে খুব বিরক্ত হলোÑ এইসব কথা তোমাকে বাইরে কে আনতে বলেছে। ছেলেদের অমন রাগ হয়ই। তারা কথায় কথায় দু-চারটা চড়-থাপ্পড় দেবে আর অমনি বউ সেটা রাষ্ট্র করে বেড়াবে, তা তো হয় না।
নীলা অবাক হয়ে প্রশ্ন করল  ওকে মোবাইলে রাতের বেলা অন্য মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করলে সে রাগ হয় আর আমাকে স্কুলে কাজ করতে দেবে না বলে।

ছবি: ছায়াছবি

সহকর্মী আরও অবাক তুমি নিষেধ করতে যাও কেন, ছেলেদের এমন নারীসঙ্গ একটু-আধটু কমবেশি সবারই থাকে; স্বামীই তো আমাদের সব, তাদের মানিয়ে আমাদের সংসার করতে হবে, তুমি বিদ্রোহী হলে কি সংসার টিকবে?
খুব কঠিন একটা প্রশ্ন নারী সহকর্মী নীলার মুখের ওপর ফেলে উঠে যায়। আসলেই তো নারী জন্মের শুরু থেকেই তো মানিয়ে নাও নয়তো মেনে নাও বাণীতে জর্জরিত এই উপমহাদেশের নারীরা। কিশোরী বয়সে যখন ইচ্ছা ছিল পুরো কলোনি সাইকেল চালিয়ে বেড়ানোর, তখন মা ঘরের ভেতর খিল দিয়ে বলেছিলেন ধামড়ি মেয়ে, বাইরে লাফ পাড়া যাবে না। নীলা মানিয়ে নিয়েছিল। যেদিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস শুরু হয়; বড় ভাইকে ল্যাপটপ কিনে দেওয়া হয় আর নীলা হাজারবার কান্নাকাটি করেও তা পায়নি, তখন মা বলেছিলেন ল্যাবে গিয়ে কম্পিউটার চালাও সবার সঙ্গে ভাগ করে। নীলা মানিয়ে নিয়েছিল। বিয়ের পর স্বামী যখন বাসররাতে বলে দিলÑ আগে মঞ্চে কাজ করেছ, করেছ, কিন্তু বিয়ের পর আর কোনো কাজ নয়। মাকে ওকথা বলতেই মা উত্তর দিয়েছিলেনÑ স্বামীর অবাধ্য হবে না। নীলা মঞ্চনাটক ছেড়ে দিয়েছিল। এমন অনেক অনেক মানিয়ে নেওয়ার গল্প এই ৩০ বছরের জীবনে নীলার হয়ে গেছে, তাই তো মানিয়ে নাও বা মেনে নাও বাণীগুলো তার কাছে অন্তত নতুন নয়। এগুলো সমাজের দেওয়া নারীর জন্য ভ্যাকসিন, যাতে অন্তত সংসার টিকে থাকে।

বিয়ের পর নতুন পরিবারে পা রাখার পর অনেকটা হিমশিম খেতে হয় মেয়েদের; বিশেষ করে যৌথ পরিবারে। বড় পরিবারে নানান মতের মানুষ, স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, দেবর, ননদ এই এতগুলো মানুষের মনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে বেশির ভাগ সময় ছাড় দিতে হয় একা নতুন বউটিকে। কিন্তু ঘটনাটা উল্টো ঘটার কথা ছিল, পরিবারে নতুন সদস্য বউ হয়ে এলে তার জন্য ঘরের পরিবেশটা তার অনুকূলে রাখা দরকার যেন সে সেখানে জীবন কাটাতে আরাম বোধ করে। আধুনিক চিন্তার ছেলেরা স্ত্রীকে নতুন সংসারে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে, সকালের নাশতার কাজে তাকে সাহায্য করে, ঘর গোছানো, স্ত্রী স্টুডেন্ট হলে তাকে পড়তে দেওয়া, স্ত্রীর বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে সংবেদনশীল হওয়া, এমন অনেক কিছু যেটা পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য করা উচিত। শ্বশুরবাড়ি যেন ভীতিকর না হয়ে নিরাপদ আশ্রয় হয়, তাহলেই জোর করে মানিয়ে নেওয়ার বিষয়টা কোনো মেয়ের মগজে আর জোরপূর্বক পুশ করতে হবে না, সে পরিবারকে ভালোবেসে তার যা যা করণীয় নিজ থেকে বুঝে করবে।

ছবি: ছায়াছবি
মেয়েদের যেভাবে যতবার মানিয়ে নাও, মেনে নাও বলা হয় তার সিকিটাও যদি ছেলেদের বলা হতো, তাহলে তাদের মধ্যে সংযত আচরণবোধ থাকত। তারা বড় হতে হতে দেখে তার নিজের মা পরিবারের অনেক দুর্ব্যবহার মেনে নিচ্ছে, মুখ গুঁজে সহ্য করে যাচ্ছে সব, সেই ছেলেটা ধরেই নেয় নারীমাত্রই সহ্যশীল। তার সঙ্গে যা ইচ্ছা করা যায়। সে ধীরে ধীরে সেই ব্যাপারটি আত্মস্থ করে ফেলে; বড় হয়ে অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে অতীতে দেখা নেতিবাচক আচরণ প্রয়োগ করে। মেয়েটি প্রতিবাদ করলে তার কাছে মনে হয় উক্ত মেয়েটি ভালো না আর যদি মেয়েটা চুপ করে থাকে তাহলে সেসহ সমাজের আর দশজন মেয়েটাকে লক্ষ্মী উপাধি দেয়। নারীরা তাদের জীবনের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে অধিকাংশ সময়ই মেনে নিতে বাধ্য হয়। কখনো পরিবারের মানুষগুলোর কথা ভেবে, কখনো সন্তানের কারণে। কখনো তাদের জীবনের অর্থনৈতিক সামর্থ্য থাকার পরও এসব সামাজিক দায়ভার বহন করে চলতে হয়। আর যারা শিক্ষিত হওয়ার পরও স্বাবলম্বী হতে পারছে না পরিবারের জন্য, তাদের জীবনটা আরও দুঃসহনীয়।
অর্থনৈতিক সামর্থ্য থাকার পরও পারিবারিক ও সামাজিকভাবে নারীরা অনেক ক্ষেত্রেই তার জীবনের পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে না। বেশির ভাগ সময় তাদের চলতে হয় অন্যের পছন্দে; অন্যের মতামতের ভিত্তিতে। মেনে নিতে নিতে একটা সময় নারীরা হয়ে যায় সামাজিকতার ঘেরাটোপে বন্দী।
বেসরকারি সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় করোনাকালে ধর্ষণের পরই সবচেয়ে বেশি পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। গত বছর ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১ হাজার ৬২৭ জন নারী এবং ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয় ৫৩ জন। একই সময়ে পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছে ৫৫৪ জন নারী। এর মধ্যে ৩৬৭ জনের মৃত্যু হয় এবং আত্মহত্যা করে ৯০ জন। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয় ২১৮ জন নারী। যৌন হয়রানি ও উত্ত্যক্তের শিকার হয় ২০১ জন নারী। ২০১৯ সালে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয় ৪২৩ জন নারী। ওই বছর ধর্ষণের শিকার হয় ১ হাজার ৪১৩ জন নারী।
২০২১ সালের প্রথম দুই মাস জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতেও ধর্ষণ ও পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা সবচেয়ে বেশি। এ সময়ে ১৬৪টি ধর্ষণ, এর মধ্যে ৮টি ধর্ষণের পর হত্যা, ৬৪টি পারিবারিক সহিংসতা, যৌতুক ২০টি এবং যৌন হয়রানির ১৭টি ঘটনা ঘটেছে। পারিবারিক সহিংসতার মধ্যে ৪৮ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে স্বামীর হাতে হত্যার শিকার হয়েছে ২৯ জন। ১২ জন নিজ পরিবারের সদস্যদের হাতে এবং ৭ জন শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে হত্যার শিকার হয়েছে।
এটা যে শুধু বাংলাদেশে ঘটেছে তা নয়। এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছিলেন, লকডাউনের মধ্যে বিশ্বব্যাপী পারিবারিক সহিংসতা ভীতিকর রকমে বেড়ে গেছে।
তথ্য : বিবিসি


তোতা পাখির মতো ‘মানিয়ে নাও’ বুলিটা যদি ঘরে ঘরে প্রত্যেক ছেলেকে শিখিয়ে দেওয়া যেত, তাহলে বোধ করি মেয়েদের ওপর সহিংসতা কিছু কমত। সেই কিশোর বয়স থেকে ছেলেরা দেখে আসছে পর্দা করা বা সংযত থাকা মেয়েদের দায়িত্ব, যদিও সেটা একেবারেই ভুল। লজ্জা এবং নমনীয়তা একটা মানসিক অনুভূতি, এটা যেকোনো বয়সে যে কারও হতে পারে। মেয়েদের মতো লজ্জা পাচ্ছেÑ কথাটা বলে পরিবারের লোকেরাই ছেলেসন্তানকে হিংস্র হতে উৎসাহ দেয়। বেশির ভাগ পরিবার থেকে তারা প্রথম শেখে পুরুষ মানেই শাসক । কিন্তু একজন পুরুষ যে সহনশীল হতে পারে, কম্প্রোমাইজিং হতে পারে তা তারা দেখে বড় হয় না, তাই শেখেও না। পরিবারের যেকোনো বিষয়ে ছেলেদের মানিয়ে নিতে জানতে হবে, নিজের কাজ নিজে করা শিখতে হবে, সঙ্গীকে ছাড় দেওয়ার বিষয়টি পরিবার তাকে বোঝাতে হবে। বিয়ে মানে হচ্ছে দুজনের জীবন একত্রকরণ সেখানে প্রত্যেক ব্যাপারে কেবল মেয়েরা ছাড় দিয়ে আসবে, ছেলেদের দিতে হবে নাÑ এই গণ্ডি থেকে বের হয়ে এলে মেয়েদের মগজে আর মানিয়ে নাও ভ্যাকসিন পুশ করতে হবে না।
স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল অথবা ইঞ্জিনিয়ারিং, কোনো জায়গায় ছেলে বা মেয়ের মধ্যে আলাদা করে সিলেবাস নেই। কিন্তু কোনো এক অজ্ঞাত কারণে আমরা ছেলেদের কাজ এবং মেয়েদের কাজ নাম দিয়ে ঘরের বাইরের কাজকে আলাদাভাবে সংজ্ঞায়িত করি। বিদ্যাপীঠের সিলেবাস যেভাবে এক করে দেওয়া হয়, ‘মানিয়ে নাও অথবা মেনে নাও’ বাক্যটির ব্যবহার এই দুই শ্রেণির জন্য সমানভাবে উপভোগ্য করে দিলে নারীর ওপর জুলুম কমত। তখন নারীদের সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য এই ভ্যাকসিন নেওয়ার আর প্রয়োজন পড়বে না, পুরুষেরাও পাশাপাশি এই ভ্যাকসিন নিতে থাকবে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ঘরেই বানিয়ে নাও মেকআপ সেটিং স্প্রে

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook