রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
লেখক

Sabiha Zaman

Sabiha Zaman

অনুসঙ্গআয়নাঘরএই সংখ্যায়গ্রুমিংজীবনবসন ভূষণরূপ ও ফ্যাশন

বিয়ের গয়নার চলতি ট্রেন্ড

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১৯, ২০২১

বিয়ের সাজে পোশাকের পর আসে গয়নার কথা। গয়না ছাড়া বিয়ের সাজ যেন অপূর্ণ থেকে যায়। আকদ হোক বা বড় আয়োজনের বিয়ে, গয়নায় বউয়ের সাজের পূর্ণতা আসে। একটা সময় ছিল যখন বিয়ের গয়না মানেই ছিল ভারী গয়না। কিন্তু এখন আর সে যুগ নেই। বেশির ভাগ কনেই বিয়েতে হালকা গয়না পরতে চায়। হালকা নকশার ট্রেন্ডি গয়নায় বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে ফ্যাশনসচেতন কনেদের কাছে। বিয়ের গয়নার চলতি ট্রেন্ড নিয়ে রোদসীর আজকের আয়োজন। লিখেছেন সাবিহা জামান-

বর্তমানে বিয়ের গয়নার ট্রেন্ড নিয়ে কথা বলেন অনলাইন শপ ‘তন্দ্রাবিলাশ’-এর অনিয়া অনি। তিনি বলেন, বিয়েতে এখন শুধু সোনার গয়নাই পরে না বউয়েরা। এখন অনেকেই পাকিস্তানি কনেদের মতো সাজে। মুলতানি আর কুন্দন গয়না বর্তমান ট্রেন্ডে খুব চলছে। অনি আরও বলেন, ‘আগে একটা সময় ছিল যখন আমরা বিয়ের শপিং করতে শপেই যেতাম। কিন্তু করোনার কারণে দুই বছর ধরে অনলাইন শপ থেকেও এখন কনেরা বিয়ের শপিং করছেন। এর অন্যতম কারণ অনলাইন শপগুলোতে ট্রেন্ড মাথায় রেখে আনকমন গয়না আনে।’

সোনার গয়না
আসলে বিয়েতে সোনার গয়নার আবেদন সব সময় রয়েছে। সেই আদিকাল থেকে আজ অবধি বিয়েতে সোনার গয়না ছাড়া যেন পূর্ণতা পায় না। তবে আগের মতো এখন আর ভারী সোনার গয়নার যুগ নেই। বাজেট আর নিজের স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি মাথায় রেখে সবাই হালকা ওজনের গয়নাই বেছে নেয়। আজকাল শুধু সোনা দিয়েই বিয়ের গয়না তৈরি হয় না। সোনার সঙ্গে মুক্তা, কুন্দন, পাথরের মিশেলে চমৎকার গয়নার সাজে কনেরা সাজছে। সলিড গোল্ডের পাশাপাশি পুঁতি, মুক্তা, স্টোন ও কুন্দনের মিশেলে তৈরি হচ্ছে বিয়ের গয়না। চলতি ট্রেন্ডে রুবি ও মিনাকারির কাজের সঙ্গে জারকান স্টোনের গয়নায় সাজছে বিয়ের কনে। কনেদের পছন্দের তালিকায় রোজ গোল্ড বা গোলাপি সোনা দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
বিয়ের গয়নার ক্ষেত্রে বেশির ভাগ কনেই ২২ ও ২৪ ক্যারেটের সোনা ব্যবহার করছেন। রেডিমেড কিংবা পছন্দ অনুযায়ী বানিয়ে নিতে পারো তোমার বিয়ের সোনার গয়না।

মডেল: তাসনিয়া ফারিন। জুয়েলারি: তন্দ্রাবিলাশ

রুপা
বিয়েতে কেবল যে স্বর্ণ বা হীরার অলংকার পরতে হবে, এমন কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। এই একবিংশ শতাব্দীতে আমরা কোনো নিয়ম বা প্রথায় আবদ্ধ না থেকে নিজের যেটা ভালো লাগে সে গয়নায় বিয়েতে সাজতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এখন বিয়েতে অনেকেই রুপার গয়নায় রুপালি সাজে সাজছে। বিশেষ করে হলুদের দিন রুপার গয়নার প্রচলন দিন দিন বাড়ছে। এ ছাড়া রুপার ওপরে গোল্ড প্লেটের গয়না বেশ জনপ্রিয়। নিজের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইনে রুপার গয়না গড়িয়ে নিচ্ছেন কনেরা।

হীরার গয়না
প্রায় সব মেয়েই চায় হীরার কোনো গয়না তার থাকুক। এখন অনেকেই বিয়েতে সোনা আর হীরার মিশেলে গয়না বেছে নিচ্ছে। অনেকে আবার প্লাটিনামের সঙ্গে হীরার জুড়ি মিলিয়ে বিয়েতে পরছে। হীরা মূলত আভিজাত্যের প্রতীক আর বিয়ের দিন কনের সাজে আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলতে হীরার গয়নার জুড়ি মেলা ভার। হীরার গয়না বলতে কিন্তু আমরা প্রায় সব সময় একটি ভুল করে থাকি। আমরা ধরেই নিই হীরা কেবল উচ্চবিত্তের নাগালে। কিন্তু এখন মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যেও হীরা পাওয়া যায়। বিয়ের মৌসুম ছাড়াও বিভিন্ন সময় হীরার ওপরে বিভিন্ন ছাড় দিয়ে থাকে জুয়েলারি শপগুলো।

আমাদের দেশে দুই ধরনের হীরা পাওয়া যায়, যার একটি বোম্বে কাট আর অন্যটি বেলজিয়াম কাট। বোম্বে কাটের দাম কম থাকায় এর সস্তা চাহিদাও বেশি। হীরার গয়না ক্যারেট হিসাব করে হয়। যে হীরা যত বেশি ক্যারেট, এর দামও বেশি। হীরা কেনার সময় হলমার্কের লোগো দেখে কিনতে হবে। ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, ডায়মন্ড গ্যালারি, ভেনাস ডায়াগোল্ড, অলংকার নিকেতন, নিউ জড়োয়া হাউসÑ এসব জুয়েলারি শপে বিয়ে আসলেই ভিড় পড়ে যায়।

ছবি: রেড

পাকিস্তানি আর ভারতীয় গয়নার চলন

হুহু করে বেড়েই চলেছে বিয়েতে পাকিস্তানি আর ভারতীয় গয়নার চল। অনেক কনেই বিয়ের বিশেষ দিনে সাজছে পাকিস্তানি কিংবা ভারতীয় গয়না দিয়ে। বিয়ের জন্য কুন্দন আর জয়পুরি গয়না এখন অনেক কনেই রাখছে পছন্দের তালিকায়। আর এ দুই গয়নাই আসে ভারত থেকে। কুন্দনের গয়নার জন্য ভারত জনপ্রিয়। ভারী গয়না যাদের পছন্দ, তারা অনেকেই ঝুঁকছে কুন্দনের গয়নার দিকে। আর যারা হালকার ভেতরে গয়না চায়, তারা জয়পুরি গয়নাগুলো পছন্দ করে।

পাকিস্তানি গয়নার কদর দিন দিন বাড়ছে। এখন অনেক কনেই পাকিস্তানি পোশাক আর গয়নায় ভিন্নভাবে সাজতে চায়। পাকিস্তানি কাটাই আর মুলতানি গয়নাগুলো ব্রাইডাল সেট হিসেবে অনেকেই বেছে নিচ্ছে। কাটাই গয়না পুরোটাই হাতে কাজ করা হয়। তাই দেখতে বেশ লাগে। তবে আমাদের দেশের কাটাই থেকে পাকিস্তানি কাটাই বেশ আলাদা। তাই কনেরা বিয়েতে পাকিস্তানি কাটাই রাখে পছন্দের শীর্ষে। আর এ কাটাইগুলো ওজনে হালকা আর গোল্ড পলিশ করা থাকে বলে সোনার মতোই মনে হয়। মুলতানি গয়নাগুলোও অনেক জনপ্রিয় এখন। বিয়েতে ইউনিক লুক দিতে মুলতানি জুয়েলারির তুলনা নেই।

 

‘তন্দ্রাবিলাশ’-এর অনিয়া অনি

 

 

 

 

 

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গএই সংখ্যায়চলন বলনজীবনজীবনযাত্রাপ্রযুক্তিরোদসীর পছন্দ

ছবিতে মোহমায়া

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১৬, ২০২১

গায়েহলুদ, আকদ, বউভাত সব মিলে বিয়ের আয়োজন মানে মহাযজ্ঞ। বিয়েতে কেবল বর-কনে নয়,পরিবারের প্রতিটি সদস্যের ভূমিকা থাকে। দুই পরিবারের সদস্যদের কয়েক দিনের পরিশ্রমে বিয়েবাড়ি ঝলমল করে ওঠে। বিয়েকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় হাজারো মধুর স্মৃতি। বিয়ের সুন্দর মুহূর্তগুলো যেন আয়োজন শেষে উবে না যায়, তাই সময়গুলো ধরে রাখতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ওয়েডিং ফটোগ্রাফির জনপ্রিয়তা। বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে ওয়েডিং ফটোগ্রাফির জগতে বেশ জনপ্রিয় ছায়াছবি। ওয়েডিং ফটোগ্রাফির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সাবিহা জামানের সঙ্গে কথা বলেছেন ছায়াছবির সিইও অ্যান্ড কোর সিনেমাটোগ্রাফার-সানী রহমান।

হাল আমলে ওয়েডিং ফটোগ্রাফির পরিবর্তন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘সাধারণত বিয়ের অনুষ্ঠানে বা বিয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত কর্মসমূহের আলোকচিত্রই হলো ওয়েডিং ফটোগ্রাফি। ১৮৪০ সাল থেকে ওয়েডিং ফটোগ্রাফির প্রচলন শুরু হয়। উনিশ শতক থেকে ট্র্যাডিশনাল ফটোগ্রাফি শুরু হয়। তবে ওয়েডিং ফটোগ্রাফি বর্তমান সময়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। বিগত কয়েক বছর আগেও যেখানে ওয়েডিং ফটোগ্রাফি তথাকথিত ধারায় চলত। সেখানে বর্তমান সময়ে তার নানা পরিবর্তন শুরু হয়েছে। এই পরিবর্তনের রেশ ধরে সবার মধ্যে ওয়েডিং ফটোগ্রাফি বা সিনেমাটিক ফটোগ্রাফির চাহিদা বেড়েছে। সে ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ার একটা অন্যতম ভূমিকা রয়েছে।’

স্মার্ট ওয়েডিং ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে কী বিষয় যুক্ত করা যেতে পারে, এ বিষয়গুলো নিয়েও কথা বলেন সানী। তার মতে, ‘স্মার্ট ওয়েডিং ফটোগ্রাফি বিয়ের উৎসবকে শৈল্পিক পর্যায়ে নিয়ে গেছে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নিত্যনতুন থিম, পোশাকের আইডিয়া, লোকেশন। বিবাহ-পূর্ববর্তী ফটোগ্রাফি ও পরবর্তী ফটোগ্রাফিতে নিত্যনতুন থিমের ব্যবহারের মাধ্যমে সবার মধ্যে ওয়েডিং ফটোগ্রাফির চাহিদা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। সঙ্গে বিবাহ অনুষ্ঠানেও নানা আয়োজন বেড়ে যাচ্ছে ফটোগ্রাফিকে কেন্দ্র করে। তাই নিত্যনতুন থিম যুক্ত করে কাজের মান বাড়ানো সম্ভব। সঙ্গে পোশাকের ভিন্নতা, লোকেশন, ডেকোরেশন। তিনি আরও জানান, ভালো মানের ছবির জন্য ডেকোরেশন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ছবির সাবজেক্টের ব্যাকগ্রাউন্ড এবং আশপাশের এলিমেন্টস একটা ছবিকে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

বিয়েতে বর-কনের পোশাকের সঙ্গে ভালো ছবির কোনো সম্পর্ক নিয়ে কথা বলার সময়ে সানী বলেন, বর-কনের পোশাকের সঙ্গে একটা ছবি সুন্দরভাবে ফুটে ওঠার বিষয়টা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দেহের গঠনের সঙ্গে মানানসই পোশাক, পোশাকের রং এবং দিন ও রাতের অনুষ্ঠানের জন্য আলাদা রঙের পোশাক নির্বাচনের বিষয়টা মাথায় রাখা উচিত। এ ছাড়া অনেক কনের প্রশ্ন থাকে মেকআপ কতটা জরুরি ব্রাইডাল ফটোগ্রাফিতে। তাদের উদ্দেশে সানী বলেন, মেকআপ ছবির জন্য জরুরি। তবে ভালো মেকআপের চেয়েও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে চেহারার গঠনের সঙ্গে মানানসই মেকআপ। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় মেকআপের হেরফেরের কারণে ছবিতে চেহারার বেসিক সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। বর-কনেকে বিভিন্ন কারণেই ছবি তুলতে গেলে মোটা লাগে। যার মধ্যে প্রধান কারণ ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল এবং পোশাক। অ্যাঙ্গেলের কারণে মোটা লাগতে পারে আবার পোশাকের কারণে অনেকেই মোটা মনে হয়।

বিয়েতে ভালো ছবি পেতে বর-কনের বিষয়ে আরও কথা বলতে গিয়ে সানী রহমান আরও বলেন, বিয়েতে ভালো ছবির ক্ষেত্রে কোন অ্যাঙ্গেলে ভালো ছবি আসবে, তা নির্ভর করে লাইট, ফ্রেমের ওপর। ছবির সাবজেক্ট যে অ্যাঙ্গেল ডিমান্ড করবে, ছবিও সেই অ্যাঙ্গেলে হবে। সে ক্ষেত্রে লাইট আর ফ্রেম একটা মুখ্য ভূমিকা পালন করে। ওয়েডিং ফটোগ্রাফিতে মুখ্য বিষয় বর-কনে। অর্থাৎ যাদের উদ্দেশ করে আয়োজন করা হয়। তাই সে ক্ষেত্রে ভালো ফটোগ্রাফি বা সিনেমাটিকের জন্য বর-কনেকে আন্তরিক হতে হয়। তার সঙ্গে পরিশ্রম করা এবং ধৈর্য রাখার মানসিকতা থাকতে হয়। তাহলেই সুন্দর ছবি হতে বাধ্য।


ওয়েডিং ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে বিয়ের কয় দিন আগে বুকিং দেওয়া উচিত আর কেমন বাজেট রাখা যায়, এ নিয়েও কথা হয় ছায়াছবির সানী রহমানের সঙ্গে। এ বিষয়ে তিনি জানান, ‘বিয়েতে ছবি তোলাকে একটা সময় খুব সাধারণভাবে চিন্তা করলেও বর্তমান সময়ে তা শিল্প। এবং একজন ফটোগ্রাফার তার চিন্তাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিত্যনতুন থিম নিয়ে কাজ করেন ওয়েডিং ফটোগ্রাফিতে। সে ক্ষেত্রে একজন ভালো ফটোগ্রাফার একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর ভালো ফটোগ্রাফারের চাহিদাও অনেক। সে ক্ষেত্রে বাজেট এবং সময় দুইটাই গুরুত্বপূর্ণ। ভালো কাজের জন্য কমপক্ষে এক মাস আগে বুকিং দেওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে একজন ফটোগ্রাফার তার চিন্তাশক্তির উত্তম ব্যবহার করতে সক্ষম। আর ভালো ফটোগ্রাফারের ক্ষেত্রে বাজেটও একটু বেশি রাখতে হবে। তাহলেই সুন্দর ছবি পাওয়া সম্ভব।

গৎবাঁধা নিয়মের বাইরে গিয়ে ভিন্ন ধরনের ছবি তোলার জন্য বেশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ছায়াছবি। এ নিয়েও রোদসীর সঙ্গে কথা বলেন সানী। তার মতে, কোনো শিল্পীই চায় না তাদের কাজ গৎবাঁধা হোক। সবাই চায় একটু আলাদা কিছু হোক, নতুন কিছু হোক। সেই চেষ্টা থেকে আমাদের ছুটে চলা। বৃত্তের বাইরে থেকে ভালো কিছু তৈরি করাই আমাদের চেষ্টা এবং চিন্তাশক্তিকে এক করেছে। তাই আমরা আলাদা কিছু উপহার দিতে পারি আমাদের ক্লায়েন্টদের। এবং ওনারা আমাদের সে ক্ষেত্রে অনেক সাপোর্ট এবং বিশ্বাস করে থাকেন। প্রতিটি মানুষেরই জীবনের আলাদা গল্প থাকে। হোক সেটা লাভ ম্যারেজ বা অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ। আমরা চেষ্টা করি প্রতিটি গল্পকে ছবি বা ভিডিওতে ফুটিয়ে তোলার। সবার আলাদা গল্প থেকেই আমাদের কাজও তাই আলাদা হয়ে যায়।

তরুণ ওয়েডিং ফটোগ্রাফারদের উদ্দেশে সানী বলেন, ‘তরুণ যারা ওয়েডিং ফটোগ্রাফি করতে চান, তাদের উদ্দেশে বলব, প্রথমে নিজের মনকে ফটোগ্রাফিতে স্থির করতে হবে। তারপর ফটোগ্রাফি নিয়ে স্টাডি করতে হবে এবং যার কোনো বিকল্প নাই। সেই সাথে প্রতিদিন ছবি তোলার চর্চা চালিয়ে যেতে হবে। সাথে দেশ-বিদেশের ফটোগ্রাফারদের ছবি দেখে ছবির গভীরতা নিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। চর্চার কোনো বিকল্প নেই। তাই সঠিক এবং সুষ্ঠু চর্চার মাধ্যমে আসুন ওয়েডিং ফটোগ্রাফিকে এগিয়ে নিয়ে যাই।’

ছায়াছবির সিইও অ্যান্ড কোর সিনেমাটোগ্রাফার- সানী রহমান।

ছবি: ছায়াছবি

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গআয়নাঘরএই সংখ্যায়কেনাকাটাজীবনজীবনযাত্রাবসন ভূষণরূপ ও ফ্যাশনরোদসীর পছন্দ

ট্র্র্যাডিশনাল ট্রেন্ডিতে আনজারা

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১৫, ২০২১

সুরাইয়া নাজনীন: বিয়ের উৎসব জমে উঠেছে। ধুম পড়েছে বিয়ের কেনাকাটায়। পথের বিচরণ আলোয় আলোয়। এবার কনের পোশাকে রয়েছে জমজমাট আয়োজন। পোশাকের কাজ আর নকশায় বিয়ের মঞ্চে কনে হয়ে উঠছে অপরূপা। বিয়ের পোশাকের ট্রেন্ড কেমন, নিশ্চয়ই তা জানতে ইচ্ছা করছে? বিয়ের পোশাকের নকশা আর ট্রেন্ড নিয়ে কথা হলো আনজারার স্বত্বাধিকারী আবির চৌধুরীর সঙ্গে-

এবারের ব্রাইডাল ড্রেসের ট্রেন্ড কেমন?
আবির চৌধুরী জানালেন, ঐতিহ্যকে ধরে যদি বলতে হয় লাল, মেরুনের ট্রেন্ড সব সময় ছিল, এখনো আছে। এই ডিমান্ড কমে যায়নি। অনেক ব্রাইড আগে থেকে পরিকল্পনা করেই রাখে আমি রেডই পরব কিংবা মেরুনই পরব, আবার অনেকে ডার্ক কালারটাও বেছে নেয়। শাড়ি, লেহেঙ্গাও চলছে ঠিক আগের মতোই। আমরা সব সময় গ্রাহকের পছন্দকে গুরুত্ব দিই। তবে ফ্যাশনের পরিবর্তন হয়নি তা কিন্তু নয়। লাইট কালারও পছন্দের তালিকায় রয়েছে। রয়েছে প্যাস্টেল শেড কালারও। আমরা লাইট কালার নিয়েও প্রচুর কাজ করেছি এবার। মজার ব্যাপার হলো থিম ধরেও কাজ হচ্ছে ব্রাইডাল ড্রেসে। ফ্লোরাল প্রিন্ট, দেশীয় ঐতিহ্যের নানা রকম মোটিফ থাকছে ব্রাইডাল ড্রেসে। বাড়ির অভিভাবকেরাও এসব মোটিফওয়ালা পোশাকে আপত্তি করছে না। যেটা পরিবর্তনের একটি অংশ। প্যাটার্নে পাকিস্তানি ডিজাইন পছন্দ করছে অনেকে, যেমন ঘারারা, সারারা, লং জ্যাকেট এসবও বিয়ের পোশাকের তালিকায় রয়েছে।

রঙের কোনো প্রথা বদল হয়েছে কি?
হ্যাঁ, অবশ্যই হয়েছে। গুগলে যদি ব্রাইড লিখে সার্চ করে, দেখবে লাল কিংবা মেরুন ব্রাইডের ছবিই বেশি আসবে। তবে এখন অনেকেই ভিন্ন রঙের পোশাক পরে অনুষ্ঠান করতে চাইছে। ব্রাইডের পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে পুরো ইভেন্টের রং নির্বাচন করা হয়। স্টেজ সাজানো, গাড়ি সাজানো, বাসর সাজানো, কার্ডের নকশা এসব সবই হচ্ছে কনের পোশাকের রংকে কেন্দ্র করে। আবার ফটোগ্রাফিতে কোনটি ফুটবে বেশি, সেটার হিসাব-নিকাশও মাথায় রাখতে হচ্ছে। চাহিদার প্রথম সারিতে রয়েছে প্যাস্টেল কালার, ডাস্টি কালার, খুব লাইট শেড কালারও।

প্যাটার্নে এগিয়ে কোনগুলো?
প্যাটার্নের কথা বলতে গেলে এবার লেহেঙ্গা, সারারা, ঘারারা, গাউন এগুলোই চলছে বেশি। আবার দামটা সাধ্যের মধ্যেই থাকছে। তবে পছন্দের শীর্ষে রয়েছে লং ট্রিল গাউন। লং ট্রিল গাউনের নকশা বেশি আর জাঁকজমক। এতে রয়েছে অনেক বেশি কাজের সুযোগ। তাই বিয়ের প্রধান পোশাক হিসেবে গাউন অনেকে পছন্দের তালিকায় রাখছে। তবে লং ট্রিল গাউনে লাইট কালারের থেকে ট্র্যাডিশনাল কালার বেশি থাকছে। ঘারারা, সারারা কনসেপ্টটাও এখন ব্রাইডাল ড্রেসে অনেকেই অ্যাকসেপ্ট করছে। এই ড্রেসগুলোর প্যাটার্নটা হলো ওপরে ৩৫-৪০ ইঞ্চি কামিজের মতো হয়ে নিচে লেহেঙ্গা টাইপ। অনেক ব্রাইড আছে, যারা বেলি শো করতে চায় না। হিজাব পরে কিংবা পারিবারিক কিছু ডিমান্ডের কারণেও এই পোশাক বেছে নেয়। তবে পোশাকটি গুছিয়ে পরলে বেশ সুন্দরই লাগে। বিয়ের পোশাকে শাড়ির আবেদন সব সময় ছিল, এখনো আছে। কাতান শাড়ি এখন বেশ চাহিদার জায়গা দখল করে রয়েছে।

ডিমান্ডের জায়গা নিয়ে বলো
যখন যে জিনিস আমরা আমাদের জায়গা থেকে প্রমোট করছি কিংবা ট্রেন্ডে রয়েছে এমন কিছু প্রোডাক্টই ডিমান্ডের জায়গা দখল করে নেয়। আবার অনেকে দেখে আমাকে কোনটা মানাচ্ছে, সেই পোশাকটাই বিয়েতে পরো। যে পোশাকটি নিজে ক্যারি করতে পারবে কিংবা কমফোর্ট এবং ফ্যাশনেও এগিয়ে, সেই ধরনের পোশাকগুলোর চাহিদা সব সময় বেশি।

বিয়ের পোশাক-কমফোর্ট নাকি ফ্যাশন?
শেষ প্রশ্নে আবির চৌধুরী জানালেন, বিয়ের পোশাক ডিজাইনের ক্ষেত্রে দুটো জিনিসই মাথায় রাখা হয়। তবে কমফোর্ট খুব জরুরি বিষয়। কমফোর্টের কথা মাথায় রেখে আমরা এখন কলির সংখ্যা বাড়িয়ে দিচ্ছি। কলি কম থাকলে লেহেঙ্গাটা ফিস কাটের মতো হয়ে যায়, এটা পরে হাঁটা কিংবা বসা কষ্টই বটে! সে জন্য আমরা ঘেরের দিকে ফোকাস দিচ্ছি বেশি। ঘের এবং কলি বাড়িয়ে দেওয়ার কারণে দেখতেও যেমন গর্জিয়াস লাগে, তেমনি কমফোর্টটাও ঠিক থাকে। এখন আসি ফেব্রিকে। আগে দেখা যেত লেহেঙ্গা মানেই খুব পুরু ভেলভেট কাপড়। তবে এখন যে ভেলভেট ব্যবহার হচ্ছে না, তা নয়। ভেলভেট কাপড়ের অনেক ধরন রয়েছে। মোটা ভেলভেট কাপড়ের লেহেঙ্গা খুব গরম অনুভূত হয় আর আরামদায়ক নয় একেবারেই। কিন্তু লাইকার ভেলভেট যদি ব্যবহার করা হয়, এই পোশাকটি হবে কমফোর্টের জায়গায় নিশ্চিন্ত। আবার ঘারারা, সারারার ক্ষেত্রে নেট ফেব্রিক ব্যবহার করা হচ্ছে। গর্জিয়াস লুক দিচ্ছে কাতানও।

আনজারার স্বত্বাধিকারী আবির চৌধুরী

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

ছবি: আনজারা 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়চলন বলনজীবনজীবনযাত্রাপ্রধান রচনাবিশেষ রচনা

“ভালো পাত্রী” চাই!

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১৫, ২০২১

রোদেলা নীলা:  চব্বিশতম বিসিএস সরকারি কর্মকর্তা বন্ধুর বাসার ড্রয়িংরুমে যখন কিশোরী একটি মেয়ে চায়ের ট্রে হাতে পাশে বসে বলেছিল, আসসালামু আলাইকুম আপা, নিন চা নিন। তখন চমকে গিয়ে মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তুমি কোন ক্লাসে পড়ো? মেয়েটি যেন লাজুক লতার চেয়েও তিন গুণ লজ্জায় নিজের মুখ ঢেকেছিল শাড়ির আঁচলে। আমার উচ্চশিক্ষিত বন্ধু হই হই করে উঠেছিল, ওর আর পড়ার দরকার কী; এসএসসি পাস করেছে; অনেক হয়েছে। আমার দিকে কাপ এগিয়ে দিয়ে বন্ধু হেসে বলল, নে চা নে, তোর ভাবি দারুণ চা বানায়। আমি মোটামুটি ৮ রিখটার স্কেলে ধাক্কা খেলাম, এই যে পাশে নরম-শরম মেয়েটা বসে আছে, সে আমার চল্লিশোর্ধ্ব বন্ধুর বউ; তাকে আমি বন্ধুর ছোট বোন ভেবে বিরাট একটা ভুল করেছিলাম। অসম বয়সী বিয়ে করা যাবে না এমন কোনো আইন নেই, কিন্তু জেনারেশন গ্যাপ বলে যে একটা শব্দ আছে, সেটা তো বৈবাহিক সম্পর্কে দারুণ দরকারী সেটা অনেকেই ভুলে যায়।

আমার মতো বোকা হয়তো জীবনে কমবেশি অনেকেই হয়েছে, একবার পার্কে হাঁটতে গিয়ে একজন বয়স্ক লোকের ঘাড় জড়িয়ে কিশোরী মেয়েকে দেখে বলেই ফেলেছিলাম, আপনার নাতনি কিন্তু দেখতে বেশ, পেছন থেকে আমার স্বামী থামিয়ে দিয়েছিল আরে, চোখের মাথা খেয়েছ নাকি, ওটা বুড়ার বউ। সত্যি আমি আজকাল চোখের মাথা খেয়ে বসে আছি; আমি জানি বিয়ে করতে হয় দুজন নর-নারীর বয়সের ভারসাম্য এবং মানসিক মিল কতটা হবে তার ওপর নির্ভর করে। বিয়ে করে ফেলাটাই কেবল উদ্দেশ্য থাকার কথা নয়, কলহকে জয় করে ঠিকঠাক সংসার করা আসল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।

বিয়ে নিয়ে বিখ্যাত মানুষের দুটো উক্তি
বিয়ের সময় বাহ্যিক সৌন্দর্য দেখে ভুলো না, অন্তরের সৌন্দর্যের সন্ধান নাও আর বি ল্যান্ডাস

সুখী সেই ব্যক্তি, যিনি তার স্ত্রীর মধ্যে একজন সত্যিকারের বন্ধু খুঁজে পান
ফ্রাঞ্জ শুবার্ট

এই একবিংশ শতাব্দীতে তো অসম বয়সী জোড়া আশা করাই যায় না, যেখানে ঘরে বসে আজকাল মনের মতো সঙ্গী খোঁজা খুব সহজ। অনলাইনের বদৌলতে দেশে বসে শিক্ষিত ছেলেরা উন্নত বিশ্ব থেকে মনের মতো পাত্রী নিয়ে আসছে। বিয়ের জন্য পাত্রী চেয়ে বিজ্ঞাপন পড়লে মনে হয় না ভেতরের সৌন্দর্যকে পাত্রপক্ষ প্রাধান্য দিচ্ছে, সারাক্ষণ সুন্দরী মেয়ে খোঁজার যে প্রবণতা দেখা যায়, তাতে ভালো মনের মেয়েরা হারিয়ে যাচ্ছে।

ছবি-রেড, মেকওভার বাই আফরোজা সোমা

যদি নিজের চাওয়াটা হয় এমন নিচু মনের, তাহলে বিজ্ঞাপনের পয়সা দিয়ে কেবল ঘরের আসবাবের মতো একটি বউ পাওয়া সম্ভব, উপযুক্ত সঙ্গী নয়। দেখা যাক, অধিকাংশ বিজ্ঞাপনদাতা কী চান-

পাত্রী চাই অ্যাঞ্জেলিনা

পত্রিকার পাতা ওলটালে বেশ চটকদার বিজ্ঞাপন এখনো আমাদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়। এসব পাত্রের পরিবারেরা আসলে ছেলের জন্য জীবনসঙ্গী খোঁজেন নাকি ঘরের শোভাবর্ধনের জন্য জিনিস খোঁজেন, সে প্রশ্ন আমার মনে সব সময়।

নমুনা ১-
ঢাকায় নিজস্ব বাড়ি-গাড়ি, বিদেশে পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক, ২৬ বছর, ৫’৯” ‘সুদর্শন’ পাত্রের জন্য ‘ঢাকায় বসবাসকারী’ পর্দানশীন ৫’৩” ঊর্ধ্ব উচ্চতার ‘প্রকৃত’ সুন্দরী পাত্রী চাই। কী মনে হচ্ছে? বিয়ের পাত্রীর খোঁজ, নাকি দোকানে গিয়ে সর্বোচ্চ দামে ভালো ‘পণ্য’টা কেনার প্রচেষ্টা? ‘প্রকৃত সুন্দরী’টা কী বস্তু?

নমুনা ২-
বিদেশি হাউজিং কোম্পানির সিইও, এমবিএ, ঢাকায় বসবাসরত সুদর্শন পাত্রের জন্য আর্কিটেক্ট/ইঞ্জিনিয়ারিং/এমবিএ অধ্যয়নরতা ঢাকায় সেটেল্ড, ‘লম্বা, সুন্দরী’ পাত্রী আবশ্যক।

বাঙালি ছেলেরা বউ খুঁজতে গেলে সব সময় অ্যাঞ্জেলিনা জোলি খোঁজে, সমস্যা হলো নিজে যে তারা ব্র্যাড পিট না সেটা মনে রাখে না। আবার এই অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে ঘরে নিয়ে বোরখা পরিয়ে রাখে; বড়ই বিচিত্র এদের মন।

পাত্রী হবে পর্দানশীল

ইদানীং মাথা প্যাঁচানো হিজাবি পাত্রীর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সত্তর দশকে বাংলাদেশে শহরের মেয়েরা যতটা মুক্তমনের সাধারণ জীবন যাপন করত; আজ আর তেমন দেখা যায় না। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে অফিস পাড়াতেও হিজাবি মেয়ের সংখ্যা অনেক। হিজাব মানে কেবল বোরখা পরে পর্দা করা নয় কিন্তু; বেশ আকর্ষণীয় কাপড়ে নিজের অবয়ব ঢেকে রাখা; আর এই পোশাকের প্রতি একটা বাড়তি আগ্রহ লক্ষ করা যায় যুবক-যুবতীদের। বিজ্ঞাপনের অনেকটা জুড়ে থাকে পাত্রীকে পর্দানশীল হতে হবে, নামাজি হতে হবে, বিষয়টা এমন যে পর্দানশীল বা নামাজি হলেই যেন পাত্রের সঙ্গে সে মৃত্যু অব্দি সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। একজন খোলামেলা উন্নত-মিশুক মনের মেয়ের চেয়ে পর্দানশীল অনেক ক্ষেত্রে সংকীর্ণমনা মেয়েটির চাহিদা বাজারে এখন অনেক বেশি। দূর থেকে বোরখা পরা একটা মেয়েকে দেখে আমাদের মধ্যে যে ধরনের শ্রদ্ধাবোধ জেগে ওঠে, সেই একই মেয়ে যদি সাধারণ পোশাকে বের হয়, সেই অনুভূতি মানুষের মধ্যে কাজ করে না।

সুন্দরী পাত্রী আবশ্যক

এই একটি বিশেষণ একজন নারীর যোগ্যতা সরাসরি প্রশ্নবিদ্ধ করে দেয়; সুন্দরী আবার তার পাশে লেখা থাকে শিক্ষিতা, তার মানে ডাবল যোগ্যতা। পড়তে পড়তে মাথার চুল ফেলে দিলেও মেয়েটিকে সুন্দরী হতেই হবে নয়তো বাজারে যোগ্য বর পাওয়া যাবে না। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় কম শিক্ষিত মেয়েরাই এগিয়ে থাকে, তাদের পড়ালেখা কম, মাথাভর্তি গোছা গোছা চুল, চোখের নিচে কালি পড়েনি এবং চোখে মোটা চশমাও দিতে হচ্ছে না। অতএব মেয়ে তো মহা সুন্দরী, এর মগজে বুদ্ধি যতই কম থাকুক; ঠিকঠাক আত্মীয়স্বজনের সামনে বসিয়ে রাখা যাবে। আর অনেক শিক্ষিত পুরুষদের ধারণা বউ কম শিক্ষিত হলে ভালো; বুঝবে কম, প্রশ্ন করবে কম, তাই বৈবাহিক জীবনে ঝামেলাও কম।

বড়লোকের কন্যা চাই

পাত্রী খোঁজার সময় এই যোগ্যতাটা অনেক সময় প্রকাশ্যে খুব বেশি আনা হয় না; কিন্তু ভেতরে ভেতরে ছেলেরা বউ সার্চ করার সময় দেখে নেয় মেয়েটির বাবার ঢাকায় নিজস্ব বাড়ি আছে কি না। কারণ, চাকরি করে ঢাকা শহরে বাসা ভাড়া দিয়ে বাচ্চাদের ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ানোর মতো আর্থিক সংগতি অনেকেরই হয় না। তাই নিজের বাড়ি কোনো এক অজপাড়াগাঁয়ে হলেও বউটির বাড়ি যদি ঢাকায় হয় তবে তো সুখ আর সুখ, বাসা ভাড়ার বাড়তি টাকাটা আর খরচ করতে হলো না। তাই তো ঢাকায় নিজস্ব (পিতার) বাড়ি পাত্রীদের একটা আলাদা যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হয় সমাজে।

 

ছবি-রেড, মেকওভার বাই আফরোজা সোমা

এই এত্তো এত্তো যোগ্যতার ভিড়ে মনের মতো একটি সঙ্গী খোঁজা ব্যাপারটা কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। জীবনচলার পথে দরকার একজন সহনশীল, ধৈর্যশীল, ভালো মনের স্ত্রী সেটা কোনোভাবেই কোনো বিজ্ঞাপনে আজ অব্দি আসেনি কিংবা এসে থাকলেও তেমন করে পাত্রের পরিবারকে টানতে পারেনি। বিয়ে তো আর এক-দুই দিনের ব্যাপার নয়, সারা জীবন একই ছাদের নিচে থেকে দুঃখ-কষ্ট, আনন্দ-বেদনা ভাগাভাগি করে নেওয়ার বিষয়। তাই নারীর বাহ্যিক সৌন্দর্যে প্রাধান্য না দিয়ে ভেতরের গুণটাকে যাচাই করে নেওয়াটাই বুদ্ধিমান পাত্রের কাজ। তবে এখন সময় এসেছে পাত্রীকেও জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের। তাই পাত্রী বাছাই না করে একজন ভালো মানুষ বাছাই করতে হবে জীবনের জন্য, অনেকে গায়ের রংটাও অনেক বেশি প্রধান্য দিয়ে থাকে কিন্তু রং দিয়ে কিবা যায় আসে। মানুষটার মনটাই যদি কালো হয়। জীবনসঙ্গী বাছাইয়ে কিছু ইতিবাচক চিন্তা করতেই পারি-

জাতের মেয়ে কালো ভালো

কালোর প্রতি আমাদের অবহেলা চিরদিনের; ফরসা মেয়ে দেখলেই আমাদের আগ্রহ দ্বিগুণ বেড়ে যায়। তার পরিবারের কে কী করে, তারা কোথা থেকে উঠে এসেছে এ বিষয়গুলো কোনোভাবেই প্রাধান্য পায় না। কিন্তু বিয়ের ক্ষেত্রে দুই পরিবারের সম্পর্কে সম্পূর্ণ জানা একটি প্রাচীন প্রথা এবং আমি বিশ্বাস করি এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি রীতি। মেয়েটি হিন্দুর ঘরে জন্মেছে নাকি মুসলিম ঘরে জন্মেছে, সেটা জানার চেয়ে বেশি দরকার মেয়েটি কী শিক্ষায় বড় হয়েছে। অনেক দরিদ্র পরিবারের কন্যাসন্তান বেশ আদবকায়দা শিখে বড় হয়, তার ছোটবেলার শিক্ষা তাকে আলোকিত করে পরিণত বয়সে। একটি নম্রভদ্র ব্যবহারের মেয়ে যদি অসুন্দরীও হয়, তার কাছ থেকে তার ভবিষ্যৎ সন্তানেরা সুস্থ ব্যবহার শিখবে আর অবশ্যই দাম্পত্যজীবনে এমন মেয়ে একটি ছেলেকে শান্তি দিতে সক্ষম হবে।

শিক্ষিত নারী শিক্ষিত জাতি

নেপোলিয়ানের সেই বিখ্যাত বাণীটি আজ বলতে ইচ্ছা করছে ‘আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব।’ বিয়ে করার অন্যতম একটি উদ্দেশ্য যদি হয় সন্তানের বাবা হতে চাওয়া, অবশ্যই সে ক্ষেত্রে একজন শিক্ষিত মেয়েকেই ঘরে আনাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। মেয়েটি যেমন বাইরে কাজ করে পয়সা উপার্জন করবে, তেমনভাবে সন্তানদের সুন্দরভাবে লেখাপড়া করাতে পারবে। অনেক শিক্ষিত ছেলে ভাবে; মেয়েরা বাইরে কাজ করলে তার ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। কিন্তু এটা কি একবার ভেবে দেখেছেন; পরিবারের কর্তাব্যক্তিটির যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তিনি পঙ্গু হয়ে গেলেন বা মারা গেলেন, তাহলে তার অবর্তমানে তার সংসারের দায়িত্ব কে নেবে? তাই শিক্ষিত স্ত্রী হচ্ছে পরিবারের একটি সম্পদ, যিনি ইচ্ছা করলেই যেকোনো অফিসে কাজ পেয়ে যেতে পারবেন, যে কোনো সময় এবং সংসারের দায়িত্ব নিতে পারবেন।

ধৈর্যশীল এবং সহনশীলতা অন্যতম গুণ

শুধু পাত্রীদের ক্ষেত্রে নয়, সংসার সুখী করার জন্য পাত্র-পাত্রী দুজনকেই যথেষ্ট ধৈর্য ও সহনশীল হওয়াটা দরকার। জীবনে ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উতরাই থাকবে, আর এই সবকিছুকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেওয়াই একজন সহনশীল মানুষের কাজ। বিয়ের বাজারে কেউ যদি এমন বিজ্ঞাপন দেয় যে একজন ধৈর্যশীলা পাত্রী আবশ্যক, তাহলে হয়তো পাত্রীর লম্বা লাইন কিছু হলেও খাটো হবে, তাতে ক্ষতি নেই, দাম্পত্যজীবনকে সফল করতে চাইলে লিস্টটা শর্ট করে নিয়ে মনটা ব্রড করা ভালো।

স্ত্রী নয় বন্ধু খুঁজুন

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি করাটা খুব জরুরি, সে জন্য কাছাকাছি বয়স হলে দুজনের মধ্যে শেয়ারিংয়ের জায়গাটা আরও ব্যাপক হয়। নিজেকে লিডারের জায়গায় বসিয়ে ওয়াইফকে ডোমিনেট করার মধ্যে সাময়িক তৃপ্তি লাভ করলেও দীর্ঘ সময়ে সে সম্পর্কটা তেতো হয়ে যায়। মানুষমাত্রই স্বাধীন চিন্তার, সবাই নিজ নিজ জায়গায় স্বতন্ত্র থাকতেই বেশি পছন্দ করে, তাই তো জীবনসঙ্গীর সঙ্গে যেন সব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করা যায় এবং সেটা বোঝার মতো পরিপক্ব ম্যাচিউরিটি যেন তার থাকে এমন একজন পাত্রীর সন্ধান করাই শ্রেয়।’Happy is the man who finds a true friend, and far happier is he who finds that true friend in his wife.’—Franz Schubert

মানুষ যখন বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়, তখন কেউই চায় না এত পয়সা খরচ করে লোক জানিয়ে ধুমধাম করে সেই বিয়েটা ভেঙে যাক। সবাই চায় সংসারী হতে; প্রিয় মানুষটির হাতে হাত রেখে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করতে। বিয়ে একটি সামাজিক চুক্তি, তাই দুই পরিবারের মধ্যে চুক্তিটা পাকাপোক্ত না হলে সম্পর্কটা শক্ত করা মুশকিল। চাওয়াটা যদি হয় এতটাই প্রশস্ত তাহলে চাওয়ার পন্থাটা যেন না হয় সংকীর্ণ; পাত্রী চেয়ে বিজ্ঞাপন দেবার ব্যাপারে নিজেদের অন্ধকার মনের পরিচয় দিলে কখনোই একজন উপযুক্ত পাত্রী পাওয়া যাবে না। মানুষের জন্য মানুষ দরকার, জাহির করে পণ্য কেনা বন্ধ করতে হবে। এমন বস্তাপচা বিশেষণ; সুন্দরী পর্দানশীল পাত্রী না খুঁজে ধৈর্যশীল ভালো মনের পাত্রী খোঁজা হোক একবিংশ শতাব্দীর পাত্রী চেয়ে বিজ্ঞাপন।
‘প্রকৃত’ সুন্দরী নয়, একজন ‘প্রকৃত’ ভালো নারী পারে তার সংসারে যত ঝড়ই নেমে আসুক না কেন কান্ডারি হয়ে সেটাকে প্রতিহত করতে। একটি আদর্শ পরিবার গড়তে এমন কান্ডারি আমাদের দরকার।

ছেলেরাও কম যায় না 

বিয়ের জন্য পাত্র পক্ষের কনে খোঁজার ব্যাপারে যেমন হাজার খানেক শর্ত থাকে , তেমন করে পাত্রী পক্ষও কিন্তু বিরাট ফিরিস্তি নিয়ে বসেন ।পাত্র অবশ্যই লম্বা হতে হবে ,ঢাকায় বাড়ি থাকতে হবে , পাত্রের পেট মোটা থাকা যাবে না অথবা মাথায় টাক যেন না থাকে ; এ ক্ষেত্রে কন্যাটি যতোই বেটে হোক । এই এতো এতো চাহিদার ভিড়ে পাত্রের মানুষ হিসেবে যে যোগ্যতা টুকু থাকতে পারে তা একেবারেই ম্লান হয়ে যায় । ব্যাপার যেন এমন বিয়ের পর মেয়েটি সংসার করবে একজন সুদর্শন নায়ক গোছের কারো সাথে প্রাসাদ সমতূল্য বাড়িতে ।
কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন ,দেখতে যতো সুশ্রি হোক ,মানুষ হিসেবে পাত্র যদি সৎ না হন পরিশ্রমী না হন তবেতো সংসার টিকিয়ে রাখাই মুশকিল । মানুষের বাহ্যিক সৌন্দর্য দিয়ে কী আর আজীবন একী ছাদের নিচে থাকা সম্ভব ! এর বাইরেও পাত্রী পক্ষের চাহিদা বাড়তে থাকে যৌথ পরিবারে মেয়েকে বিয়ে দেওয়া যাবে না । আচ্ছা ,যে ছেলের বাবা মা তাকে এতো দূর লেখা পড়া করিয়ে বড় করলো তার ওপর কী সেই ছেলের বাবা মা’র অধিকার নেই ? নাকি সন্তান হিসেবে কোন দায়িত্ব নেই তার ? ছেলে কী মেয়ে ,সব সন্তানই সব বাবা মায়ের কাছে প্রিয়; কেও নিশ্চই চাইবে না তার নিজের সন্তানকে আলাদা করে রাখতে । বিয়ের পরে মেয়েরা স্বামীর বাড়ি যাবে এটা একটা প্রথা ,তাই বলে কোথাও লেখা থাকে না সেখানে মেয়ের বাবা বা মা থাকতে পারবে না । বরং বড় পরিবারে নতুন সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তার মনটা আরো বেশী ব্যাপক হবে । তাইতো দুই পরিবার পাশাপাশি অবস্থান করতে পারলে ভালো ; যদি সম্ভব হয় ।
এখন সময় এসেছে পুরনো মিথ ভেঙ্গে নতুন করে পরিবার গঠন করবার ,নতুন ভাবে চিন্তা করলে সমাজ থেকে বিয়ে নিয়ে ভীতি অন্তত কমে আসবে ।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়জীবনজীবনযাত্রা

বর্ণিল বিয়ের মঞ্চ

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১৫, ২০২১

বিয়ে আয়োজনের একটি বড় অংশজুড়ে থাকে বিয়েতে স্টেজ আর ঘর সাজানো। এখন বিয়ের স্টেজ আর বিয়েবাড়ির সাজে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। আলোর রোশনাই আর ফুলের সমারোহে সব মিলিয়ে তৈরি হয় উৎসবের আমেজ, যার প্রকাশ পায় বিয়েবাড়ির লোকজনের চোখেমুখে। বিয়ের খুশি কেবল পরিবারের লোকদের মধ্য সীমাবদ্ধ না থেকে তা ছড়িয়ে পড়ে বিয়ে পুরো বাড়িতেই। বিয়েবাড়ির সাজ আর স্টেজ সাজানোর নানান বিষয় নিয়ে সাবিহা জামানের সঙ্গে কথা বলেন শাদিয়ানা ওয়েডিং অ্যান্ড ফেস্টিভ সল্যুশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও রুফায়দাহ পন্নী-

প্রফেশন হিসেবে এ কাজটি বেছে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রুফায়দাহ পন্নী জানান, ‘অনেক ছোট থেকেই আমার ফ্যামিলি আর ফ্রেন্ডের বিয়েতে আমার ডাক পড়ত ডালা সাজানো, স্টেজ সাজানো, ফুলের গয়না আর ড্রেসের ডিজাইন এগুলো করার জন্য। যেহেতু এ কাজে ক্রিয়েটিভিটি প্রকাশ করার সুযোগ ছিল, তাই আমার এটা করতে খুব ভালো লাগত। পড়াশোনা শেষ করার পর আমি এ কাজের সঙ্গে যুক্ত হই। ২০০৭ সালে আমি আমার এ বিজনেস চালু করি। সে সময়ে বিয়ের স্টেজ ও ফটোগ্রাফি, গাড়ি সাজানো কিংবা বাসরঘর সাজানোসহ বিয়ের বিভিন্ন কাজ করতে হতো আলাদা লোক দিয়ে। আমি ভাবলাম যদি সব কাজ একই জায়গায় হয়, তাহলে তো বেশ হয়। এ ভাবনা থেকেই শুরু হলেও আজ ১৪ বছর পর বিয়ের কার্ড ছাপানো থেকে শুরু করে ব্রাইডাল মেকআপ, গাড়ি সাজানোসহ বিয়ের যাবতীয় ডেকোরেশনের কাজ করছে আমার শাদিয়ানা।’

বিয়েতে চলটি ডেকোরেশনের ট্রেন্ড নিয়ে বলতে গিয়ে পন্নী উল্লেখ করেন, ‘বর্তমানে আমাদের দেশে ভারতীয় কালচারের প্রভাব রয়েছে। অনেকেই বিয়ের স্টেজ সাজাতে ভারতীয় কনসেপ্ট বেছে নিচ্ছে। এর পাশাপাশি পাকিস্তানি কনসেপ্টটাও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। আবার অনেকেই যান পুরোপুরি ট্র্যাডিশনাল ধারায় সাজাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় ওয়েস্টার্নভাবে স্টেজ সাজাতে চাচ্ছেন অনেকেই।’ আসলে ধারা যা-ই থাক, মানুষের ব্যক্তিগত পছন্দ ঠিক করে দেয় তিনি বিয়েতে কীভাবে ঘর সাজাবেন আর স্টেজটাই কেমন হবে।’

কাস্টমাইজ কালার ওয়েডিংয়ের বিষয় নিয়েও কথা বলেন তিনি। পন্নী জানান, ‘বর-বউয়ের পোশাক আর সাজের সঙ্গে মিলিয়ে ডেকোরেশন করাই মূলত কাস্টমাইজ কালার ওয়েডিং। তাদের পোশাকের সঙ্গে ম্যাচ করে আমরা পুরো থিম তৈরি করি, যাতে করে দেখতে ভালো লাগে আর ছবি ভালো আসে। কাস্টমাইজ কালার ওয়েডিংয়ের ক্ষেত্রে পোশাকের রং খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’ কথা হয় বিয়ের ডেকোরেশনের বাজেটের বিষয় নিয়েও। রুফায়দাহ পন্নী বলেন, ‘বিয়ের ডেকোরেশনের জন্য সর্বনিম্ন ৬০ হাজার টাকা থেকেই আমরা প্যাকেজ দিচ্ছি, যাতে প্রয়োজনীয় সব আয়োজন থাকবে। কম বাজেটেও আমরা আমাদের বেস্ট কাজ করার চেষ্টা করি।’।

শাদিয়ানা ওয়েডিং অ্যান্ড ফেস্টিভ সল্যুশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও রুফায়দাহ পন্নী

ছবি: শাদিয়ানা

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
আড্ডাএই সংখ্যায়বিশেষ রচনা

সাজের বিবর্তন নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১৪, ২০২১

চলছে বিয়ের মৌসুম। প্রতিবছর এই সময় ফ্যাশন এবং সাজগোজের নানা খেলা দেখা যায়। বিবর্তন চোখে পড়ে খুব বেশি। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, বিবর্তন কেন হয়? সেই সব প্রশ্নের নানা রকম বিশ্লেষণ নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল রোদসীর গোলটেবিল বৈঠক। উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় বিউটি এক্সপার্টরা। রোদসীর সম্পাদক সাবিনা ইয়াসমীনের সঞ্চালনায় পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়েছে সুনিপুণভাবে। গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠানের বিস্তারিত বর্ণনা শুনে লিখেছেন সুরাইয়া নাজনীন

সাবিনা ইয়াসমীন, সম্পাদক, রোদসী_
বিয়ে একটি সামাজিক নীতি। আইনতভাবে একজন নারী ও পুরুষকে একসঙ্গে থাকার, জীবন কাটানোর অনুমতি প্রদান করা হয়। প্রাচীনকাল থেকেই বিয়ের জন্য একটি মৌসুম রয়েছে। আর সেই সময় ধরেই বিয়ের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিয়েতে সাজগোজ ছাড়া কনে যেন অম্লান। আগেকার দিনে বর-কনের সাজ দেখা যেত সেই সময়কার চাহিদা এবং ট্রেন্ড ধরে। এখন তার ঢের তফাত। গয়নায় হোক, পোশাকে হোক, সাজের ম্যাটেরিয়ালে হোক। বিয়ের সাজের বিবর্তনটাই এবারের রোদসীর বিয়ের আয়োজনের গোলটেবিল বৈঠকের বিষয়বস্তু। আর এই বিষয়টা ধরেই কথা বলেছেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।

সাবিনা ইয়াসমীন, সম্পাদক, রোদসী

রওশনয়ারা জামান মিলি, উপসম্পাদক, রোদসী_
বিয়েতে সাজগোজ তো আছেই। তবে পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হলে অনেক সময় কনের মনের ওপর অনেক চাপ থাকে। এতেই কিন্তু ত্বক উজ্জ¦লতা হারায়। এ সময় আসলে কী করা দরকার?
আফরোজা পারভীন এই প্রশ্নের উত্তরে বললেন, হ্যাঁ, এটা তো খুব স্বাভাবিক বিষয়। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের আছে প্রি-ওয়েডিং কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা। যেখানে একটা সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়, সেই সময়মতো তারা আসেন। আমরা তাদের মানসিক প্রস্তুতির সামগ্রিক বিষয় নিয়ে একটা কাউন্সেলিং দিয়ে দিই। এতে অনেকখানি কাজ হয়ে যায়। বিয়ের দিন পর্যন্ত তারা নির্ভার থাকেন। সেই চাপটি আর চেহারায় দেখা যায় না।

রওশনয়ারা জামান মিলি, উপসম্পাদক, রোদসী_

আফরোজা পারভীন, স্বত্বাধিকারী, রেড বিউটি স্টুডিও অ্যান্ড স্যালন_

বিয়েকে কেন্দ্র করে অনেক কিছুরই বিস্তার ঘটে। দুটি মনের মেলবন্ধন তৈরি হয়, সঙ্গে দুটি পরিবারেরও। আর বিয়ের দিনটাকে স্মৃতিবিজড়িত করে রাখতে অনেক রকম পরিকল্পনা করা হয়। প্রায় এক মাস ধরে চলে ঝলমলে উৎসব। বিয়ে মানেই সাজ। এককথায় সাজ ছাড়া বিয়ে হয় না। আগে যেমন হুটহাট করে বিয়ের কথা পাকা হতো। আমি অর্ধেক রাতেও বিয়ে ঠিক হতে দেখেছি। সে ক্ষেত্রেও কিন্তু আয়োজনের কমতি রাখত না বাড়ির লোকেরা। বাজারের দোকানদারকে উঠিয়ে সাজসজ্জার জিনিস কিনে বর-কনেকে সাজিয়েই তবে বিয়ে। মাঝখানের সময়টাতে দেখা যেত কনেকে মেকআপে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছে সাজের ক্ষেত্রে। অবশ্য সে সময় ওইটাই ট্রেন্ড ছিল। আবার ইদানীং দেখা যায় বর নিজেই খুঁজে খুঁজে ভালো বিউটি স্যালন ঠিক করছে। আবার ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছে যেন সাজটা ন্যাচারাল হয়। তবে সাজের বিবর্তনের কথা বলতে গেলে বলতে হবে এখন চলছে ন্যাচারাল সাজের ট্রেন্ড। কনের মুখে যদি পিম্পল থাকে, তবে তা ঢাকাও হয় না এখন। খুব ন্যাচারাল টোনে স্নিগ্ধ সাজটাই চলছে। ব্যবহার করা হচ্ছে খুব ভালো মানের মেকআপ প্রোডাক্ট। হেয়ার স্টাইলেও এসেছে নানা পরিবর্তন। খুব ফুলিয়ে এখন চুল বাঁধা হয় না। স্টিকি স্প্রে ব্যবহারের দিনও শেষ। আগে যেমন বাঁধা চুল খুলতেই সারা রাতের ঝক্কি ছিল। এখন কমফোর্টটাও বিবেচনা করা হয়।

আফরোজা পারভীন, স্বত্বাধিকারী, রেড বিউটি স্টুডিও অ্যান্ড স্যালন_

ফারহানা রুমি, স্বত্বাধিকারী, জারাস বিউটি লঞ্জ অ্যান্ড ফিটনেস সেন্টার_
সাজের বিবর্তন নিয়ে যদি বলতে হয়, আমি বলব হ্যাঁ, সাজের বিবর্তন হয়েছে। এখন বিউটি সেক্টরটাকে পার্লামেন্টেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। আগের সেই নাক সিটকানো ভাবটা আর নেই। এখন ঘরে ঘরে সবাই বেশ সচেতন। বউ আর শাশুড়ি একসঙ্গে স্যালনে এসে কাজ করে যাচ্ছে। শাশুড়িরাই বউদের বলছে নিজের কেয়ার নাও। এভাবেই দিন বদলাচ্ছে। বদলের সঙ্গে সঙ্গেই আমাদেরও বিবর্তিত হতে হচ্ছে। ডিমান্ডে এসেছে অভিনবত্ব। যুগে যুগে এই পরিবর্তন থাকবেই।

ফারহানা রুমি, স্বত্বাধিকারী, জারাস বিউটি লঞ্জ অ্যান্ড ফিটনেস সেন্টার_

শারমিন সেলিম তুলি, স্বত্বাধিকারী, বেয়ার বিজ_
মানুষ একটা সময় ভাবত সুন্দর মানেই ফরসা। ফরসা না হলে সে সুন্দর নয়। বিয়ের সাজে শ্যামলা কিংবা বর্ণেও কনেকে ফরসা বানানোটাই রেওয়াজ ছিল। কিন্তু এখন গায়ের রং বিবেচনা করা হয় না। নিজস্ব গায়ের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে ন্যাচারাল শেডে মেকআপ করা হয়। বলতে গেলে মেকআপের বিবর্তন হয়েছে ওয়ার্ল্ডওয়াইড। আমরা আমাদের ইচ্ছেমতো সবকিছু হাতের নাগালে পাচ্ছি। সাজের থিমগুলো ব্রাইডরা পছন্দ করে রাখে আগেভাগেই। বিবর্তনের কারণ বলতে গেলে অনেক আছে। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বিবর্তন হবেই, এটাই স্বাভাবিক।

শারমিন সেলিম তুলি, স্বত্বাধিকারী, বেয়ার বিজ_

জুলিয়া আজাদ, স্বত্বাধিকারী, আকাঙ্ক্ষা  গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড_
আগেকার দিনে হার্ড মেকআপ করা হতো। কেকি মেকআপ লুকটাই চলত। খুব মোটা করে ফাউন্ডেশন ব্যবহার হতো। তখন মুখের আসল অবয়বটাই বোঝা যেত না। তাই অনেকে মজা করে বলত বিয়ের পরে বউকে আর চেনাই যায় না। কিন্তু সেসব ট্রেন্ড এখন বদলেছে। ইন্টারনেটের যুগে মানুষের সবকিছুই হাতের মুঠোয়। নিজের স্কিন টোনের সঙ্গে মিলিয়ে এখন সবাই সাজতে পছন্দ করে। ডার্ক শেডকে লাইট করা বর্তমানে ব্রাইডরা পছন্দ করে না। আবার কাউকে বিয়েতে সুন্দর লাগল, সেটাই নিজের জন্য সাজের চাহিদা হয়ে যায়। মোটকথা এখন সাজের একটা ব্যালান্স তৈরি হয়েছে। এভাবেই আসলে সাজের বিবর্তনগুলো হয়।

জুলিয়া আজাদ, স্বত্বাধিকারী, আকাঙ্ক্ষা  গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড_

সাহিদা আহসান, স্বত্বাধিকারী, সাহিদা’স বিউটি ওয়ালেট_
আমার একটি ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে। সেখানে মেয়েদের নানাভাবে গ্রুমিং করানো হয়। সাজের নানা রকম ধাপ রয়েছে। সেই ধাপগুলো একটা ব্রাইডের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে ভাবে বিয়ের কনে মানেই যা পারছি তাই দিয়ে সাজিয়ে ফেলি। একদমই তেমনটি ভাবা উচিত নয়। আগে এই চলটি খুব ছিল। বউ মানেই জবরজং সাজ। এখন বউয়ের পরিবার আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখে সাজটা আসলে কেমন হবে। শৈল্পিকতার যুগে এই বিবর্তনটা আসলেই দরকার ছিল।

সাহিদা আহসান, স্বত্বাধিকারী, সাহিদা’স বিউটি ওয়ালেট_

শোভন সাহা, স্বত্বাধিকারী, শোভন মেকওভার_
একটা সময় ছিল বিয়ে মানেই সাজ কিংবা বিয়েকে কেন্দ্র করেই সাজ। এখন কিন্তু তা আর নেই। এখন ছোটখাটো পার্টিতে যাওয়ার সময়ও সাজের চল এসেছে। বেবি শাওয়ারেও দেখা যায় জমজমাট আয়োজন। আর সাজ তো মাস্ট। এখন বাংলাদেশে প্রচুর ডে ওয়েডিং হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সাজের প্যাটার্ন কিছুটা বদলাতে হয়। কারণ সূর্যের আলো মাথায় রেখে সাজানো ভালো। এখন ওয়েডিং ফটোগ্রাফি গুরুত্বের জায়গা দখল করে রয়েছে। ফটোগ্রাফাররা আমাদের বলে দেন মেকআপ কোন লুকে করতে হবে। ছবি যেন জ্বলে না যায়। সাজের অনেক বিষয়ই এখন মাথায় রাখতে হয়। কনের পোশাক, স্টেজের থিম সবকিছু।

শোভন সাহা, স্বত্বাধিকারী, শোভন মেকওভার_

লিয়া নাজ, স্বত্বাধিকারী, লিয়াস বিউটি বক্স_

সাজগোজের চর্চা বহুকাল থেকে ছিল, আছে, থাকবে। আগে দাদি-নানিরা যেমন চোখে কাজল, সুরমা ব্যবহার করত, এটাও কিন্তু সাজের অংশ। কিছু না থাকলেও চুলটা পরিপাটি করে বেঁধে রাখত, এটাও সাজের বাইরে নয়। আর বিয়েতে বাড়তি নজর বউয়ের দিকে। এখন অবশ্য কনের পাশাপাশি বরেরাও হালকা-পাতলা সাজগোজ করে। ওই যে ছবির প্রসঙ্গে আবার আসতে হয়। কনেকে ঝলমলে দেখাবে, অন্যদিকে বর ফ্যাকাশে। এটা ছবিতে ভালো লাগে না। তাই বরও আজকাল স্কিন কেয়ারের দিকে নজরটা রাখে, যেটা আগে দেখা যেত না। এটাও বিবর্তনের বিষয়।

লিয়া নাজ, স্বত্বাধিকারী, লিয়াস বিউটি বক্স_

ছবি: রোদসী 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গআয়নাঘরএই সংখ্যায়জীবনজীবনযাত্রাবসন ভূষণরূপ ও ফ্যাশন

ঝলমলে পোশাকে

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১৪, ২০২১

সুরাইয়া নাজনীন:  শীতের আভা এই তো শুরু। নগরের রাস্তাগুলো সোনালি-রুপালি আলোয় ঝলমলে। নতুন বধূর মিটিমিটি চাহনিই বলে দিচ্ছে এখন বিয়ের মৌসুম। বিয়ের এই মৌসুমে সাজগোজ আর পোশাকের নিরীক্ষায় ব্যতিব্যস্ত বিশেষজ্ঞরা। তবে খুব করে দেখা যাচ্ছে প্রথা বদলানোর। এই যে বিয়েতে লাল রংই পরতে হবে, শাড়িই মাস্ট। এসব আর ট্রেন্ডে নেই। সেই কথাই বললেন আবায়া অ্যান্ড গাউনের স্বত্বাধিকারী মারুফা জাহান_

বিয়েতে বউয়ের পাশাপাশি বিয়েবাড়ির অন্য সদস্যদের পোশাক নিয়ে থাকে নানা কল্পনা। বউয়ের বোন কিংবা বান্ধবীদের পোশাকও হতে হবে ঝলমলে। অনেকে আছে নির্দিষ্ট পোশাকে অভ্যস্ত কিন্তু তারা ফ্যাশনেও এগিয়ে থাকতে চায়। তাদের জন্য মারুফা জাহান নিজের হাউসেই রেখেছেন সুন্দর আয়োজন। গর্জিয়াস সব আয়োজনে রয়েছে গাউন, আবায়া, স্টোনের কাজের মজার মজার বৈচিত্র্যময় কালেকশন।

মারুফা জাহান আরও জানালেন, শাড়ি পরার চল ইদানীং কমই দেখা যাচ্ছে। কমফোর্টটাই এখন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। আগে গাউন পরে বিয়ের কথা কেউ ভাবতেই পারত না, এখন তা হয়েছে। কোট পরেও অনেকে বসে পড়ছে বিয়ের পিঁড়িতে। এখন আবায়া, গাউন পরেও বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন হচ্ছে। তো ট্রেন্ড এভাবেই বদলায়। আসে ফ্যাশনের বিশেষ বিশেষ পরিবর্তন।

আবায়া অ্যান্ড গাউন প্রত্যেক বছরই নতুন বউয়ের জন্য পোশাক সংগ্রহে রাখে। তবে ব্রাইডমেডদের জন্য থাকে বাহারি ডিজাইন। আবায়া অ্যান্ড গাউন- ‘এঅ্যান্ডজি’ সব সময়ই গতানুগতিক অবস্থা থেকে একটু ভিন্ন কাজ করতে পছন্দ করে। এবার বিশেষ আকর্ষণ ওয়েডিং কালেকশন। বিয়ে, হলুদ, মেহেদিতে যারা আসবে, তাদের জন্য ডিজাইন করে স্বনামধন্য এই ফ্যাশন হাউস। এখানকার প্রতিটি কালেকশন নিজস্ব ডিজাইনে করা। নিজস্ব কারচুপি ফ্যাক্টরি, এমব্রয়ডারি ফ্যাক্টরি, প্রডাকশন ফ্যাক্টরি আছে। যেখানে ড্রেসগুলো তৈরি হয়, জানালেন মারুফা জাহান।

এবার বিয়ের মৌসুমে আরেকটা চমক নিয়ে এসেছে আবায়া অ্যান্ড গাউন। যারা মসলিনের ওপর জামদানির কাজ করছে এবং নিজস্ব ফ্যাক্টরিতে কারচুপি, এমব্রয়ডারি, ক্যাটওয়ার্কের কাজ করছে। সেই সঙ্গে থ্রিডি ফ্লোরাল ওয়ার্কও করা হয়েছে। পোশাকের নানা রঙের সঙ্গে মিলিয়ে সংগ্রহ সম্ভারে রয়েছে গর্জিয়াস হিজাবের কালেকশন। যেসব হিজাব একদম নিজস্ব ডিজাইনে ফ্যাক্টরিতে তৈরি। এসব হিজাব অনায়াসে বিয়েতে পরা যাবে।

দেশের ঐতিহ্যের জনপ্রিয়তায় আছে মসলিন এবং জামদানি, যা প্রত্যেক উৎসবের জন্য চাহিদার শীর্ষে থাকে। কিন্তু গাউন কিংবা আবায়াতে কি এগুলো সম্ভব? যারা এই পোশাকগুলো পরে তারা কি ঐতিহ্যের ছোঁয়া পাবে না? কেন? সেই ভাবনা এবং উত্তর দেওয়ার জন্যই মারুফা জাহান বাংলাদেশে প্রথম গাউন আর আবায়াতে নিয়ে এসেছে মসলিন ও জামদানি। তিনি ভাবেন, এসব পোশাকে ফ্যাশনপ্রিয় মানুষের রুচিবোধের প্রকাশ পায় অনায়াসে। মারুফা জাহান উদ্যোক্তা হওয়ার আগে খুব সমস্যায় পড়তেন পোশাক নিয়ে। মনের মতো পোশাকটিই যেন পেতেন না। নিজের সমস্যা থেকেই অনুধাবন করলেন অন্যদেরও তো এমন সমস্যা হতে পারে। তারপর সাত বছর আগে ‘এঅ্যান্ডজি’র যাত্রা শুরু করলেন। এখন গ্রাহকের নানা প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখে এই ফ্যাশন হাউস। ঝকমকে দেখে সবাই ভাবতে পারেন দাম হবে হাতের নাগালের বাইরে। সাধারণের এসব ধারণা টপকিয়ে মারুফা জাহান সব প্রডাক্টের দাম নির্ধারণ করেছেন সবার সাধ্যের মধ্যে। আর কমফোর্টকে গুরুত্ব দিয়েছেন শতভাগ।

ছবি: মারুফা জাহান, স্বত্বাধিকারী আবায়া অ্যান্ড গাউন

 

 

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
বিশেষ রচনা

চেষ্টা নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে বীর কন্যা ফুলবানুকে গৃহ নির্মাণ  

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১২, ২০২১

রোদসী ডেস্ক:  বিজয়ের মাসে চেষ্টা নারী সংগঠনের উদ্যোগে বড়ধর্মপুর লালমাই কুমিল্লার বীর কন্যা ফুলবানুকে গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। ১১ ডিসেম্বর বীর কন্যা ফুলবানুর বাড়ির ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করা হয়। স্বাধীনতা দিবসের দিন বাড়িটি হস্তান্তর করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। একই দিনে রোটারি ক্লাব অব ঢাকা সর্বজয়ার পক্ষ থেকে এই বীর কন্যাকে শীতবস্ত্রসহ উপহার সামগ্রী দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান, মুক্তি যোদ্ধা জেলা কমান্ডার সফিউল আহামেদ বাবুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং রোটারি ক্লাবের চাটার্ড প্রেসিডেন্ট গুলসান নাসরীন চৌধুরী, ভাইসপ্রেসিন্ডেন্ট লায়লা নাজনীন হারুন, রোদসীর সম্পাদক ও বোর্ড মেম্বার সাবিনা ইয়াসমীন, সাধারণ সম্পাদক দিলরুবা বেগম, প্রচার ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদা সুলতানা, চেষ্টার সদস্যবৃন্দ এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি বর্গ।

ছবি: রোদসী

 

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়প্যারেন্টিং

প্যারেন্টিংয়ের কিছু ভুল ধারণা

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ২৮, ২০২১

শিশুকে বড় করার ক্ষেত্রে মা-বাবা ও অভিভাবকেরা কিছু পুরোনো ধারণাকে সত্যি বলে মনে করেন। এমনি কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা নিয়ে আজকের আয়োজন। লিখেছেন সাবিহা জামান

আত্মবিশ্বাস বাড়াতে প্রশংসা

তুমি হয়তো ভাবছ বাচ্চাকে প্রশংসা করি, এতে করে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। এমন ধারণা অনেক মা-বাবা করে থাকেন। কিন্তু এটি একটি প্রচলিত ভুল ধারণা। অনেক সময় দেখা যায় বাচ্চা কোন খেলায় প্রথম হলো আর তাকে অনেক বেশি প্রশংসা করলে এতে করে সে আত্মবিশ্বাসী হলেও অনেক সময় আমি তো পারি বলে হয়তো নতুন কিছু শিখতে চাইবে না। নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে আর অভিভাবকদের কাছ থেকে প্রশংসা শোনার জন্য শিশু যা পাওে, তাই করবে নতুন বা কোনো জটিল কিছু সমাধানে সে যাবে না। শুধু প্রশংসা না করে তাকে পরিশ্রমী হতে শেখাও। চেষ্টাকে উৎসাহিত করো শুধু সফলতাকেই নয়।

সত্য আদায়ে শাস্তি বা ভয় দেখানো

অনেক সময় শিশুরা মিথ্যা বলে মা-বাবাকে খুশি করতে। অনেক অভিভাবক মনে করেন, শিশুদের শাস্তি দিলে বা ভয় দেখালে সে সত্যি কথা বলা শিখবে। কিন্তু এটা ঠিক নয়। বাচ্চারা মিথ্যা বললে তাকে বোঝাতে হবে। হয়তো সে একদিনে শিখবে না, কিন্তু সময় নিয়ে তাকে ভালোভাবে বুঝিয়ে বললে শিশু মিথ্যা বলে ছেড়ে দেবে একটা সময়ে।

ছোট থেকেই ইংরেজি

ইংরেজি একটি ভাষা। ছোট থেকে ইংরেজি না জানলে কিংবা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে না পড়লে সব শেষ হয়ে যাবে, এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বাংলা মিডিয়ামে পড়েও ইংরেজিতে ভালো হওয়া সম্ভব। ঠিক একইভাবে ছোটবেলা থেকে ইংরেজি না জানলেও চেষ্টা থাকলে বড় হয়ে শিশু ইংরেজিতে ভালো হতে পারে। আমাদের জীবনের সফলতার মানদণ্ড ইংরেজি নয়, আমাদের কাজ আর আমাদের পরিশ্রম আমাদের সফলতা এনে দেয়। তাই ইংরেজি তোমাকে পারতেই হবে, নয়তো সফল হবে না, এ ধরনের ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

প্রয়োজনাতিরিক্ত নিরাপত্তা

শিশুদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা করা খুব জরুরি। নিরাপত্তাহীনতার অভাবে শিশুরা অনেক সময় আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। তবে অতিরিক্ত নিরাপত্তা কিন্তু শিশুদের পরনির্ভরশীল করে দেয়। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি নিরাপত্তা প্রদান করলে শিশুরা আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে এবং তাদের মধ্যে হীনম্মন্যতার ভাব জন্মায়। তাই নিরাপত্তা গুরুত্বপূর্ণ হলেও এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখো।

তুলনা করে শেখানো

মা-বাবারা মনে করেন, অন্য বাচ্চার ভালো দিক নিজেদের বাচ্চাদের সামনে তুলে ধরলে বাচ্চারা শিখতে আগ্রহী হবে। কিন্তু তুলনা করে শেখানো একটি ভুল ধারণা। তুলনা করার ফলে শিশুরা শিখতে আগ্রহী হয় না, উল্টো শিশুদের মনের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভব ও ঈর্ষা জন্ম নেয়। শুধু তা-ই নয়, আত্মবিশ্বাসও কমতে থাকে শিশুদের।

সুস্থ থাকতে বেশি খাবার

বেশি খাবার খেলেই পুষ্টি আসবে আর সুস্থ থাকা যাবে। এটি খুব বড় একটি ভুল ধারণা। বেশি খেলে বাচ্চা সুস্থ থাকে না কিংবা পুষ্টি পায় না। সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার আর একটি আদর্শ সুষম খাদ্যতালিকার। বারবার খেলেই শিশু সুস্থ থাকে না।
খাবার হজম হতে সময় লাগে। তুমি যদি এক ঘণ্টায় দুবার খাবার খাওয়াও বাচ্চাকে, তাহলে সে খেতেও চাইবে না। আর পাশাপাশি তার হজমে সমস্যা হবে।

বাচ্চাকে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ করলে কথা শুনবে না

শিশুকে অনুশাসনের মধ্যে রাখতে অনেক অভিভাবক তাদের ওপর প্রয়োজনাতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করেন। তারা মনে করেন, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ করলে সন্তান তাদের কথা শুনবে, আর সে একটা সময়ে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। এটি সম্পূর্ণ একটি ভুল বিশ্বাস। কারণ অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ করে সন্তানকে কিছু শেখানো যায় না, উল্টো মা-বাবার সঙ্গে শিশুর দূরত্ব তৈরি হয়। মনের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে। পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসও কমে যায় শিশুর।

ছবি : ইন্টারনেট

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়জীবনজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংস্বাস্থ্য

শিশুর বাড়তি খাবার

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ২৫, ২০২১

ডা. লুনা পারভীন: অনেক বাবা-মা তাদের সন্তানদের মায়ের দুধের পাশাপাশি কখন কীভাবে সম্পূরক খাবার দিতে হয় সে বিষয়ে সঠিক তথ্য পান না। অথচ শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশের সময় পুষ্টিহীনতা এড়াতে এটা খুবই জরুরি বিষয়। পুষ্টিকর উপাদান নিশ্চিত করা এবং শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিশুকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত অবশ্যই মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে-

কেন দেবেন?

ছয় মাস পর্যন্ত শুধু বুকের দুধেই বাচ্চার সব প্রয়োজন মিটে যায়। ছয় মাস পূর্ণ হলে বাড়তি খাবার লাগে বাচ্চার শরীর বৃদ্ধি, মস্তিষ্কের বিকাশ ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে, যা শুধু বুকের দুধ দিয়ে আর সম্ভব হয় না। টার্গেট হবে এক বছর বয়সের মধ্যে ঘরে তৈরি সব খাবার বাচ্চার সঙ্গে পরিচিত করাতে হবে।

কখন দেবেন?

ছয় মাস পূর্ণ হলে, প্রয়োজনে এর আশপাশে (তবে চার মাসের আগে অবশ্যই নয়)
যখন বাচ্চার ঘাড় শক্ত হবে, মাথা স্থির থাকবে, বসালে
বাচ্চা সাপোর্টসহ বা ছাড়া বসে থাকতে পারবে, হাঁ করে বড়দের খাবার খাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করবে।

সাবির

কীভাবে দেবেন?

সবচেয়ে ভালো হলো ছয় মাস পূর্ণ হওয়ার ১০-১২ দিন আগে থেকে পরিবারের সবাই যখন একসঙ্গে খেতে বসবে, তখন বাচ্চাকে একটা হাতলওয়ালা উঁচু চেয়ারে (বয়স উপযোগী) বসাতে হবে। খাওয়ার জন্য হাঁ করলে একটা-দুটো ভাত চটকে জিহ্বায় ডলে দেবেন, যেন মুখে দিয়ে নাড়াচাড়া করে আগ্রহ নিয়ে।
এভাবে ৪-৫ দিন দেওয়ার পর আলু সেদ্ধ, পেঁপে, পাকা কলা, আপেল চটকে দেবেন। যখন দেবেন, একটাই নতুন খাবার দেবেন এবং ৩-৪ দিন টানা দিয়ে তাকে অভ্যস্ত করবেন ও দেখবেন কোনো সমস্যা হয় কি না। যেমন পেটফাঁপা, বমি, বদহজম বা অ্যালার্জি।

কী কী দেবেন?

জাউভাত
খিচুড়ি শুধু চাল-ডাল-তেল দিয়ে
সেদ্ধ আলু, পেঁপে, ব্রকলি
পাকা কলা, পেঁপে, আপেলের পাশাপাশি শুরুতেই চামচে বা মামপটে পানি খাওয়ার অভ্যাসটা করাবেন।

কতবার দেবেন? কতক্ষণ দেবেন?

শুরুতে একবার, এরপর তিনবার পর্যন্ত দিতে পারবে সারা দিনে ৯ মাস পর্যন্ত। এরপর দিনে পাঁচবার এক বছর এবং এর পরে।
পাঁচ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা পর্যন্ত বা বাচ্চা যতটুকু আগ্রহ করে নিতে চায়।

কীভাবে বুঝবে বাচ্চার খাওয়া শেষ?

বাচ্চা মুখ সরিয়ে নেবে, মুখ থেকে ফেলে দেবে, মুখে বমিভাব করতে পারে। তেমন হলে জোর করবেন না মোটেও।
মনে রাখবেন, বাচ্চাকে বাড়তি খাবার দিচ্ছেন চেনানোর জন্য, পেট ভরার জন্য নয়। কাজেই শুরুতেই এক বাটি খাবার বাচ্চা খেতে নাও চাইতে পারে।

বাড়তি খাবার খেতে না চাইলে কী করবেন?

অপেক্ষা এবং বিরতি-
৩-৪ দিন পর আবার শুরু করুন, প্রয়োজনে অন্য কোনো খাবার দিয়ে শুরু করুন।
তরল করে জাউ, ভর্তা, পেটে গ্যাসের সমস্যা না হলে পিউরি বা রস করে দিতে পারো। তবে ব্লেন্ড নয় অবশ্যই। চেষ্টা করবে আস্তে আস্তে সেমিসলিড বা জাউয়ের মতো নরম খাবারে তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে আনার।
বুকের দুধ খাওয়ানো কমিয়ে তারপর বাড়তি খাবার দেবেন, যেমন তিনবার বাড়তি খাবার দিলে তিনবার বুকের দুধ খাওয়ানো বাদ দেবেন।

ফিডিং চার্ট, ক্যালরি হিসাব করা কি জরুরি?

সব বাচ্চার খাওয়ার চাহিদা, পরিমাণ, ধরন ও রুচি একরকম নয়। কাজেই এক বাচ্চার রুটিন আরেক বাচ্চাকে জোর করে চেষ্টা করলে বরং খাওয়ার ইচ্ছাটা নষ্ট হয়ে যায় বাচ্চাদের। আর ক্যালরি হিসাব করে খাবে অপুষ্টির বাচ্চারা যেন তাদের খাবার হজম হয়, আবার ওজনও স্বাভাবিক হতে থাকে। তোমার বাচ্চার খাবারে ভাত, সবজি, মাছ, মাংস, ডাল, ডিম, ফল এক পিস করে থাকলেই হলো।

সকালবেলা:
খিচুড়ি, রুটি-সবজি, রুটি-ডিম, পাউরুটি, নুডলস, স্যুপ

মিড মিল:
একটা ফল, ডিম, হালকা খাবার

দুপুরবেলা :
ভাত, ডাল, সবজি, মাছ, মাংস
খিচুড়ি

বিকেলবেলা :
হালকা নাশতা,
নুডুলস, ফল, আলুর চপ, সবজি বড়া, স্যুপ
রাতের বেলা
দুপুরের মতো।
এর বাইরে তিন-পাঁচবার বুকের দুধ বয়সভেদে।

বাড়তি খাবারে যা করবেন না

শোয়ায়ে কখনোই বাড়তি খাবার দেবেন না। গলায় আটকে যেতে পারে।
খাবার ভুলেও ব্লেন্ড করে দেবেন না এবং গলায় আটকাতে পারে এমন ছোট পিস করেও দেবেন না।
এক বছরের আগে গরুর দুধ দিয়ে তৈরি খাবার দিবেন না। যদি অ্যালার্জি, বদহজম ও রক্তস্বল্পতা না হয়, তাহলে এক বছর হলে দিতে পারবে এবং দুই বছর হলে গরুর দুধ সরাসরি দিতে পারবে আধা কাপ দিনে একবার।
সুজি, চালের গুঁড়া কোনো পুষ্টিকর খাবার নয়। শুরুতে দিলে বরং বাচ্চার পর সময়ে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস হয় না। রুচি বদলের জন্য পরে হালুয়া হিসেবে দিতে পারবে। সঙ্গে ডিম, ঘি মিশিয়ে পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে।
ঘুমের মধ্যে বাচ্চাকে খাওয়াবেন না, এমনকি বুকের দুধও। নবজাতক ছাড়া বেশির ভাগ বাচ্চাই টানা কমপক্ষে চার-পাঁচ ঘণ্টা ঘুমালে সমস্যা নেই। একটু বড় বাচ্চারা টানা ৮-১০ ঘণ্টাও ঘুমাতে পারবে।

ডা. লুনা পারভীন
শিশু বিশেষজ্ঞ, বহির্বিভাগ
ঢাকা শিশু হাসপাতাল
শ্যামলী।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • বয়স সবে উনিশ-কুড়ি

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook