রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
লেখক

Sabiha Zaman

Sabiha Zaman

এই সংখ্যায়প্যারেন্টিংবিশেষ রচনা

কেমন হবে ডে কেয়ার

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ১৬, ২০২১

মনিকা পারভীন প্রীতি:

আচ্ছা কখনো কি ভেবেছ? তোমার যাবতীয় সম্পদের পাসওয়ার্ড বা চাবি তুমি কি তোমার বাড়ির কাজের লোককে দিয়ে যাও? অথচ নির্দ্বিধায় তোমার কথা না বলতে পারা ছোট্ট একটা বাচ্চাকে তুলে দিচ্ছ যে কারও কাছে। যার জীবনপদ্ধতির সঙ্গে তোমার জীবনপদ্ধতির কোনো মিল নেই। তার সামাজিক অবস্থা, পারিবারিক অবস্থা, অর্থনৈতিক, মানসিক, শিক্ষা ও সামাজিক অবস্থানের সঙ্গে কোনো মিল নেই। তাদের কাছে বাচ্চা বড় করা মানে এক ধরনের শিক্ষা। আর তুমি হয়তো বাচ্চাকে বড় করতে চাও অন্য এক উপায়ে।
কেয়ার করার মতো দায়িত্ব নিতে পারো কিন্তু তার কাছেও অনেক সময়ই মায়েরা তাদের বাচ্চাকে রেখে নিশ্চিন্ত মনে কাজে মনোনিবেশ করতে পারে না। সারা দিন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে অফিস থেকে ফিরে যখন কোনো মা দেখে যে তার বাচ্চা সেই সকালে পরানো ডায়াপারটা বিকেল বেলা পর্যন্ত আছে। স্বাভাবিক কোনো মায়েরই মেজাজ ঠিক থাকবে না।
কিংবা তুমি বাড়িতে ফিরে তোমার ছোট্ট কথা না বলতে পারা শিশুর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দেখছ লাল লাল দাগ হয়ে আছে। তুমি কি বলতে পারবে যে এই দাগগুলো কোথা থেকে আসে? তুমি কি নিশ্চিত যে তোমার অগোচরে তোমার এই অবলা শিশুটি কাজের মানুষের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে না?
এই সব সমস্যার সমাধান আমার কাছে মনে হয় যে একজন কর্মজীবী মা যদি একটা ভালো ডে কেয়ার সেন্টার পায়, যেখানে তার বাচ্চাকে সে নিশ্চিন্ত মনে রেখে কাজে যেতে পারবে। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় ডে কেয়ার সেন্টার এখনো অপ্রতুল। আবার বাংলাদেশে এখনো কর্মজীবী নারীদের ভেতর বাচ্চাদের ডে কেয়ার সেন্টারে রাখার ব্যাপারে একদম অনীহা দেখা যায়। তাদের ভেতর দেখা যায় ডে কেয়ার ব্যবহারের ব্যাপারে অনাস্থা এবং কাজের লোকের কাছে বাচ্চাকে রাখার ব্যাপারে তারা বেশি স্বস্তিবোধ করে। যেটা বাচ্চার মানসিক এবং শারীরিকভাবে গড়ে উঠতে সত্যি অনেক বেশি সমস্যা তৈরি করে।

 

ইদানীং ঢাকা শহরে বেশ কিছু এলাকায় বেশ কিছু ভালো ভালো ডে কেয়ার তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে। আবার একই সঙ্গে দেখা যায় কিছু সস্তা মানের ডে কেয়ার সেন্টার যেখানে হয়তো বাচ্চার সে রকম দেখাশোনা হয় না। যেগুলো শুধু ব্যবসায়িক চিন্তাকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়। এ কারণে যখনই তুমি সিদ্ধান্ত নেবে যে তুমি তোমার বাচ্চাকে দেখে আরে রাখবে সে ক্ষেত্রে কিছু কিছু দিক তোমাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
# একটি ভালো মানের ডে কেয়ার অবশ্যই সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত হয়।
# ডে কেয়ারে যারা বাচ্চাদের কেয়ারগিভার হবে, তাদের সবাইকে প্রপার ট্রেনিংপ্রাপ্ত হতে হবে।
# সারা দিন বাচ্চা কী কী খাবে এবং কী কী খেলবে এবং কী কী অ্যাকটিভিটিজ তার হবে, সেগুলোর একটা লিস্ট প্যারেন্টসকে দেওয়া হবে।
#সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
#ব্যবস্থা থাকতে হবে, যেকোনো সময় বাচ্চা কিংবা যেন উভয়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে পারে অথবা দেখা করতে পারে।
#একজন ডাক্তারের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে যদি বাচ্চার কোনো ধরনের সমস্যা হয় তাহলে তাৎক্ষণিক সেই সমস্যার সমাধান দিতে পারো।
# বাচ্চার শতভাগ সিকিউরিটির গ্যারান্টি দিতে হবে ডে কেয়ার সেন্টারকেই।
এ ছাড়া একটা ডে কেয়ার সেন্টার এনসিওর করতে হবে একজন বাচ্চার মা-বাবার কী কী চাহিদা আছে এবং তা পূরণ করার ক্ষমতা তাদের আছে কি না। শুরুতেই সব ধরনের কথা খোলাখুলি আলোচনা করে নিতে হবে। যেহেতু একটা ডে কেয়ার সেন্টার একটা নির্দিষ্ট অ্যামাউন্টের পরিবর্তে তারা সার্ভিস দিয়ে থাকে তাই তাদের উচিত সবকিছু খোলামেলাভাবে আলোচনা করে নেওয়া। প্যারেন্টসের উচিত বাচ্চার সম্পর্কে প্রতিটি ইনফর্মেশন ডে কেয়ার সেন্টারকে প্রোভাইড করা। যেমন তোমার বাচ্চা কী পছন্দ করে, কী কী খায়, কোনটা তার প্রিয় খেলনা, বাচ্চার কোনো শারীরিক সমস্যা আছে কি না। এ রকম বাচ্চাবিষয়ক সব ধরনের ইনফরমেশন ডেকে দিতে হবে। যাতে তারা তোমাকে সঠিক সার্ভিসটি দিতে পারে। এবং যদি কখনো ভুল হয় তাহলে তুমিও তাদের ধরতে পারবে যে আমি তো তোমাদের প্রপার ইনফরমেশন দিয়েছিলাম তাহলে আমি কেন সার্ভিসটি পাইনি? প্রয়োজনে আইনি সহায়তা নিতে পারো।

তুমি একজন কাজের লোকের কাছ থেকে কখনোই পাবে না এ ধরনের সার্ভিস। পাবে না তোমার পরিবারের কোনো গুরুজনের কাছে তোমার বাচ্চাকে রেখে। যা পাবে তা হচ্ছে দিন শেষে মানসিক ও পারিবারিক অশান্তি। যা তোমার কাজের ওপর প্রভাব ফেলবে এবং অবশেষে একজন মায়ের ক্যারিয়ার ছেড়ে তাকে সময় দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ মনে হবে। একসময় এই মা বাচ্চা বড় হয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলে তাকে কথা শোনাবে, তোমার জন্য আমি আমার ক্যারিয়ার দেখিনি আর তুমি এমন আচার-আচরণ করো? এসব আবার সন্তান ও মায়ের সম্পর্কে ফাটল ধরায়। আরও বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার তৈরি হতেও দেখা যায়।
আজকের যে মা, তারও কিছু স্বপ্ন থাকে জীবনে কোনো কিছু করার। কিন্তু তার মা সত্তার কিছু ভুল ডিসিশন তার এবং বাচ্চার দুজনের জীবনে প্রভাব ফেলে। তাই বাচ্চাকে তোমার ক্যারিয়ারের অন্তরায় না ভেবে নিজের শক্তি ভাবা উচিত। তাকেও সঠিকভাবে বড় করতে কোনো ভুল মানুষের হাতে তার শৈশব তুলে না দিয়ে, ভালো ডে কেয়ারে দাও।
আমাদের দেশে এখন বেশ কিছু অর্গানাইজেশন অফিসের সঙ্গে ডে কেয়ারের ব্যবস্থা রাখছে। তারা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। সরকারি-বেসরকারি সব সংস্থায় এ ব্যবস্থা করা উচিত। তাহলে মায়েরা নিশ্চিন্তে কাজে মনোযোগ দিতে পারবে।
আবার অনেক গৃহিণী মা সারা দিন কাজ শেষে বাসায় থাকে, তারাও চাইলে প্রতিবেশীদের বেবি সিটিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারো, যা বিদেশে হরহামেশাই হয়। এ ক্ষেত্রে নিজেদের ভেতর একটি সমঝোতানামা লিখিয়ে নিয়েই কাজ শুরু করা যেতে পারে। একে বলে মাদার টু মাদার হেল্প। কোনো কাজ ছোট নয়, যতক্ষণ তুমি তাতে চুরি না করো। এটিও অনেক সম্মানজনক কাজ। বিদেশে হাই ডিমান্ড বেবি সিটিং মায়েদের।

বেবি সিটিং বা ডে কেয়ারে বাচ্চা বড় হতে হতে শিখে ফেলে অনেক রাইমস, ম্যানারস। বাচ্চা আরও পাঁচটা বাচ্চার সঙ্গে বড় হয়, হয় সামাজিক। কথা বলা শেখে তাড়াতাড়ি। ইনডিপেনডেন্ট হয়। আত্মবিশ্বাসী হয়। বন্ধুত্ব ও শেয়ারিং শেখে। অপরদিকে কাজের মানুষের কাছে কী কী শেখে? প্রথমে শেখে তার ভাষা, গালি, রুডনেস, ভিতু হয়ে বড় হয় আরও অনেক খারাপ অভ্যাসই বেশি আয়ত্ত করে।

 

 

 

 

 

 

 

মনিকা পারভীন প্রীতি
প্যারেন্ট এডুকেটর
ওমেন উইদাউট বর্ডারস

০ মন্তব্য করো
1 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়জীবনজীবনযাত্রাতুমিই রোদসীপ্রযুক্তিবিশেষ রচনা

দুজনই কর্মজীবী

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ১৪, ২০২১

সুরাইয়া ইসলাম মুন্নি:

সময়ের পরিবর্তনে কর্মজীবী বাবার পাশাপাশি কর্মজীবী মায়ের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বাবাদের মতো মায়েরাও পরিবারের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করছেন। মা-বাবা দুজনে ঘরের বাইরে কাজ করায় সন্তানেরা একা হয়ে পড়েছে। মা-বাবা কাজে থাকার সময়টুকুতে শিশুরা পরিবারের অন্যান্য সদস্য বা কাজের মানুষ বা ডে কেয়ার সেন্টারে অবস্থান করে। সন্তানকে সঠিকভাবে লালনপালনে কর্মজীবী মা-বাবারা কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারেন, তা নিয়েই আজকের আলোচনাÑ

কর্মজীবী বাবা-মায়ের সন্তান পালনে ইতিবাচক দিকগুলো : মা-বাবা দুজন কর্মজীবী হলে সে ক্ষেত্রে শিশুর বিকাশে বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।

১. মা-বাবা দুজনই কর্মজীবী হলে তাদের জীবনযাত্রার মান তুলনামূলক উন্নত হয়। ১৯৮১ সালে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসে প্রকাশিত বইয়ে গ্যারি বেকার লিখেছিলেন, ‘মা-বাবা দুজনই উপার্জন করলে তারা সন্তানের পুষ্টি, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা বা পারিপার্শ্বিক নিরাপত্তায় তুলনামূলক বেশি টাকা খরচ করতে পারেন।’

২. কর্মজীবী মা-বাবা দুজনেই ঘরের বাইরে যান। তাই দুজনই তাদের ঘরের বাইরের বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা সন্তানের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন, যা সন্তানকে জীবন সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পেতে সাহায্য করে।

৩. মা-বাবা কাজের জন্য বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকায় তাদের সন্তানের সঙ্গে কম সময় ব্যয় করেন, এই বিষয়টি সন্তানকে সময়ের মূল্য সম্পর্কে ধারণা দেয়।

৪. মা-বাবারা বেশির ভাগ সময় ঘরের বাইরে থাকায় তাদের সন্তানেরা খুব কম বয়সেই স্বনির্ভর হয়। মা-বাবার অনুপস্থিতিতে সন্তানেরা নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে শেখে, যা পরে তাদের আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।

 

৫. কর্মজীবী মা-বাবার সন্তানেরা ছোটবেলা থেকে দেখে তাদের মা-বাবা মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একই সঙ্গে ব্যক্তিজীবন ও কর্মজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখতে পারছে। এর ফলে সন্তানেরা মা-বাবাকে দেখে জীবনের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখে যায়।

কর্মজীবী মা-বাবার সন্তান পালনে নেতিবাচক দিকগুলো : মা-বাবা দুজন কর্মজীবী হলে সে ক্ষেত্রে শিশুর বিকাশে বেশ কিছু নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

১. শিশুকে যে ডে কেয়ার বা মানুষের (হতে পারে কোনো আত্মীয় বা কাজের মানুষ) কাছে রেখে মা-বাবা চাকরি করতে যান, সেই ডে কেয়ার বা মানুষটি শিশুকে যথেষ্ট পরিমাণ সময় দেবে কি না এবং শিশুর জন্য তারা কতটুকু নিরাপদ, তা নিয়ে মা-বাবাকে সবসময় তুলনামূলক বেশি দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়।

২. যেহেতু শিশুরা মা-বাবা ছাড়া অন্য কোনো কেয়ারগিভার বা ডে কেয়ারে দিনের বেশির ভাগ সময় কাটায়, তাই শিশুরা অস্থিরতায় ভোগে এবং নিজেদের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করা শিখতে পারে না। মা-বাবা শিশুর সঙ্গে কম সময় কাটালে শিশুরা তুলনামূলক বেশি জেদি ও আক্রমণাত্মক হয়ে থাকে।

৩. যখন মা-বাবা দুজনই বেশির ভাগ সময় বাসার বাইরে কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন এবং সন্তানের সঙ্গে খুবই কম সময় কাটান, তখন মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের মমতাময় সম্পর্ক তৈরি হতে পারে না। এর ফলে সন্তান বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের দূরত্বও বাড়তে থাকে।

৪. ২০০৫ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুযায়ী, মা-বাবা দুজনই চাকরি করার কারণে শিশুরা তাদের পরিবার ছাড়া দিনের বেশির ভাগ সময় একা কাটায়, এতে এসব শিশুর স্কুলের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ আচরণে বেশি অংশগ্রহণ করে।

৫. যেসব মা-বাবা অফিসের কাজের চাপে থাকেন, তারা তাদের অনেক কাজই সময়মতো শেষ করতে পারেন না। যার প্রভাব পরিবারের অন্য সদস্যদের, বিশেষ করে সন্তানের ওপরেও পড়তে পারে।

সন্তান লালনপালনে কর্মজীবী মা-বাবার জন্য পরামর্শ :

১. প্রতিদিন সন্তানকে কোয়ালিটি টাইম বা গুণগত সময় দাও। সন্তান যে কাজগুলো করতে বা খেলতে পছন্দ করে, তার সঙ্গে সেই কাজগুলো করো বা খেলো। যেমন একসঙ্গে ঘরের কাজ করতে পারো, ছবি আঁকতে পারো, বোর্ড গেম খেলতে পারো, ছুটির দিনে সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে যাও, সন্তানকে বই পড়ে শোনাও, ইত্যাদি। সন্তানের পছন্দের কাজগুলো করার সময় সন্তানকে পুরোপুরি মনোযোগ দাও এবং তার সঙ্গে কাজ নিয়ে আলোচনা করো।

২. কোয়ালিটি টাইমের অংশ হিসেবে সন্তানের সঙ্গে ঘরের বাইরের বিভিন্ন কাজে অংশ নাও। যেমন একসঙ্গে নামাজ পড়া, বাজারে যাওয়া, শপিংয়ে যাওয়া, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা ইত্যাদি।

৩. সন্তানকে উৎসাহিত করতে তার বিভিন্ন গুণের প্রশংসা করো। এ ছাড়া সন্তানের কাছে তুমি যে ধরনের আচরণ আশা করো, তা করামাত্রই সুনির্দিষ্টভাবে তার প্রশংসা করো। যেমন তুমি খুবই সুন্দরভাবে তোমার খেলনা গুছিয়ে রেখেছ, তুমি লক্ষ্মী ছেলে-মেয়ের মতো তোমার প্লেটের খাবার শেষ করেছ, তুমি নিখুঁতভাবে হোমওয়ার্ক শেষ করেছ, ইত্যাদি!

 

৫. সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করো। সন্তানকে নিয়ে আত্মীয় বা পরিচিতদের বাসায় যাও এবং তাদের বাসায় দাওয়াত করো। এতে সন্তানের সামাজিক দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

৬. সন্তান সারা দিন কী কী কাজ করছে এবং এ কাজগুলো তার কাছে কেমন লেগেছে, তা জেনে নাও।

৭. সন্তানের সঙ্গে যেকোনো ধরনের মনোমালিন্য হলে একসঙ্গে আলোচনা করে তা সমাধানের চেষ্টা করো। এ আলোচনায় সন্তানকে তার মতামত দেওয়ার সুযোগ দাও। পাশাপাশি সন্তানকে স্পষ্টভাবে বলো তার কোন আচরণগুলো গ্রহণযোগ্য এবং কোন আচরণগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। সন্তানের সঙ্গে কথা বলার সময় তাকে জানাও সে তোমার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

৮. সন্তানের সঙ্গে অধিক মতবিরোধ বা আচরণের হঠাৎ পরিবর্তন দেখা দিলে (চুপচাপ হয়ে যাওয়া, অস্থির হওয়া, খাদ্যাভ্যাস বা ঘুমের পরিবর্তন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফলাফলের অবনতি ইত্যাদি) দেখা দিলে অবশ্যই একজন সাইকোলজিস্টের শরণাপন্ন হও।
৯. সন্তানের বন্ধুবান্ধব এবং তাদের অভিভাবকদের ঠিকানা ও ফোন নম্বর সংগ্রহে রাখো। তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখো।

যা করবে না :

১. সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় সব ধরনের টেকনোলজি বা ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকো। সন্তানকে যখন সময় দেবে, তখন মোবাইলে গেম খেলা, ভিডিও দেখা, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার বা টিভির দিকে তাকিয়ে থাকা থেকে বিরত থাকো। সম্পূর্ণ মনোযোগ তোমার সন্তানকে দাও।

২. অনেক সময় কর্মজীবী মা-বাবা সন্তানকে সময় না দেওয়ার অপরাধবোধ থেকে সন্তান যা চায়, সঙ্গে সঙ্গে তা দেওয়ার চেষ্টা করেন। যেমন দামি খেলনা, টাকা, দামি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ঘরের বাইরে থাকার অনুমতি ইত্যাদি। এ রকম পরিস্থিতিতে সন্তানকে ‘না’ বলো। পাশাপাশি কী কারণে তাকে এসব জিনিস দেওয়া হচ্ছে না, তা-ও তাকে জানাও।

৩. সন্তানকে মারধর করা ও বকাঝকা করা থেকে বিরত থাকো। মনে রাখবে, মারধর ও বকাঝকা করলে সন্তানের সঙ্গে তোমার সুসম্পর্ক নষ্ট হবে, সম্পর্কের দূরত্ব বাড়বে।

কর্মজীবী মা-বাবা একই সঙ্গে কর্মজীবন ও ব্যক্তিজীবনের ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করে। তবে আমাদের মনে রাখতে হবে, শিশুর মনঃসামাজিক বিকাশ অনেকাংশে নির্ভর করে মা-বাবার কর্মজীবনের সন্তুষ্টি, চাপ মোকাবিলা করার দক্ষতা ও তাদের শারীরিক সুস্থতার ওপরে। সন্তান ও নিজের যত্ন নাও। সন্তানের পাশে থেকে তার বিকাশে সহায়তা করো।

 

 

 

 

 

 

 

 

সুরাইয়া ইসলাম মুন্নি
সাইকোলজিস্ট

 

০ মন্তব্য করো
1 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়প্যারেন্টিং

পরিবারের অন্য সদস্যদের ভূমিকা

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ১৪, ২০২১

আঞ্জুমান পারভীন:

‘It takes a village to raise a child’……এই আফ্রিকান প্রবাদটিতে বলা হয়েছে, একটি শিশুকে বড় করে তুলতে একটি পুরো গ্রামের ভূমিকা রয়েছে। আরেকটু ব্যাখ্যা করে বলতে গেলে বলা যায় একটি শিশুর বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় নিরাপদ ও সুষ্ঠু বিকাশের সহায়ক শিশুবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার পেছনে শিশুর বাবা-মা ছাড়াও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও সমাজের প্রতিটি মানুষের ভূমিকা রয়েছে।

এ বিষয়ে আশির দশকের খানিকটা আগে, ১৯৭৯-এর দিকে একজন রাশিয়ান আমেরিকান ডেভেলপমেন্টাল সাইকোলজিস্ট ইউরি বনফ্রেনব্রানার তার গবেষণার মাধ্যমে খুব পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছিলেন শিশুর বিকাশে কীভাবে বিভিন্ন স্তরে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। তার মতে, শিশুর জন্মের পর তার বিকাশে তার পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এখানে একটি বিষয় না বললেই নয় তা হলো, এই প্রভাব শিশুর সুষ্ঠু বিকাশের ক্ষেত্রে কতটুকু ইতিবাচক হতে পারে বা আদৌ ইতিবাচক হবে নাকি নেতিবাচক হবে, তা নির্ভর করছে পরিবারের সদস্যদের শিশু বিকাশসংক্রান্ত বিষয়ে কতটুকু বিজ্ঞানসম্মত জ্ঞান বা দক্ষতা রয়েছে, তার ওপর।
একই সঙ্গে বলা হয়েছে কীভাবে ভ্রণের সুস্থ বিকাশ মায়ের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অর্থাৎ, এই কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে গর্ভবতী মায়ের পরিবারের সদস্যরা ভ্রƒণের বিকাশের ওপরও প্রভাব বিস্তার করে আর শিশুর বিকাশে তার পরিবারের সদস্যদের ভূমিকাটি শিশু পৃথিবীতে আসার আগেই শুরু হয়।

ফলে একটি শিশুর জন্মের পূর্ব থেকেই শিশুটির বাবা-মায়ের পাশাপাশি তার পরিবারের সদস্যদেরও প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। এই প্রস্তুতি নির্ভর করবে শিশুর সঙ্গে সেই সদস্যের সম্পর্কের ধরন আার শিশুর বিকাশের কোন কোন ক্ষেত্রে তার কী ভূমিকা রয়েছে তার ওপর।
আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যতই দেখা যাক না কেন, ঠিক তার উল্টো দৃশ্য দেখা যায় শিশুর লালন-পালনের ক্ষেত্রে। যেখানে শিশু বিকাশ একটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া আর এই বিকাশের সঙ্গে একটি মানবশিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ও জাতির ভবিষ্যৎ মানবসম্পদের মান নির্ভর করছে, সেখানে দেখা যায় এই বিষয়টিতে যে কেউ তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে একজন গর্ভবতী মাকে বা এক জোড়া নতুন অভিভাবকদের তাদের সন্তান লালন-পালনের বিষয়ে উপদেশ দিয়ে থাকেন। বিষয়টাকে আমরা এত সহজভাবে নিয়ে আসছি বছরের পর বছর ধরে যেন শিশু লালন-পালনে পারদর্শী হওয়ার জন্য কোনো রকম প্রশিক্ষণ বা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার প্রয়োজন নেই। অন্যদিকে সব বিষয়ে উন্নত বিশ্বের উদাহরণ থেকে শিক্ষা নেওয়া জাতি হিসেবে আমরা শুধু এই বিষয়টিতে অবলীলায় বলে যাই, আমরা বড় হইনি? বা আমরা ছেলেমেয়ে বড় করিনি?
প্রশ্ন রাখতে চাই একুশ শতকের একটি শিশু যখন এই পৃথিবীর এক অংশে বিজ্ঞানসম্মত গবেষণার ছায়ায় বড় হবে আর আমরা যখন অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রচলিত সামাজিক কুসংস্কারের ছায়ায় শিশুকে বড় করব এই দুই শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ, চিন্তায়, আচরণে যে পার্থক্য বা ফারাক থাকবে, তা দিয়ে কি বৈশ্বিক প্রতিযাগিতায় টিকে থাকা সম্ভব হবে?


প্রতিটি মানুষ আলাদা এবং প্রত্যেকের মস্তিষ্কের কাজের ধরনও আলাদা। তাই একই পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে তাদের অভিযোজন প্রক্রিয়া ও আচরণের পার্থক্য দেখা যায়। শিশুদের ক্ষেত্রেও কিন্তু এই বিষয়টি প্রযোজ্য। তাই তুমি যখন নিজের ছোটবেলা বা তোমার সন্তানকে তুমি কীভাবে লালন পালন করেছ, তার উদাহরণ দিয়ে একজন নতুন মা-বাবাকে তাদের সন্তান লালন-পালনের বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছ, সেটা কতটুকু উচিত বা উপযুক্ত বা বিজ্ঞানসম্মত হচ্ছে, তা চিন্তা করে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।
অন্যদিকে নতুন বাবা-মায়েদের ক্ষেত্রেও দেখা যায় তারা তাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর অনেকটা চোখ বন্ধ করেই নির্ভর করে শিশুর পরিচর্যায় সেই সদস্যের আসলেই শিশুর লালন-পালনে কতটুকু দক্ষতা আছে তা চিন্তা না করেই।
সবশেষে বলতে চাই, শিশুর বিকাশে বাবা-মায়ের সঙ্গে পরিবারের ও সমাজের সব স্তরের মানুষের ঢালাওভাবে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে এবং জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে এর বিকল্প নেই।

 

 

 

 

 

আঞ্জুমান পারভীন
শিশু বিকাশ বিশেষজ্ঞ

 

ছবি: সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়জীবনজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংবিশেষ রচনা

সন্তান যখন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ১৪, ২০২১

নুরুন্নাহার নুপুর: সন্তান জন্মদানের আগে স্বামী-স্ত্রীর সুসম্পর্ক, মায়ের শারীরিক-মানসিক সুস্থতা এবং শিশুর নিরাপদ জন্মদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাতৃগর্ভে শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই পরিবারের সবারই মায়ের সুস্থতার প্রতি খেয়াল রাখা প্রয়োজন।

গর্ভকালীন সময়ের আগে মায়ের শারীরিক জটিলতা যেমন ডায়াবেটিস, হরমোন জটিলতা, হাইপারটেনশন, বাবা-মায়ের যেকোনো একজন বা উভয়ের জিনগত ত্রুটি, গর্ভকালীন সময়ে জটিলতা অথবা শিশু জন্মের সময় কোনো জটিলতা, শিশুর যেকোনো ধরনের প্রতিবন্ধিতার শিকার হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। যেকোনো কারণেই হোক যখন একটি শিশু প্রতিবন্ধিতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে অথবা পরবর্তীতে প্রতিবন্ধিতার শিকার হয় তখন কিন্তু ওই বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তার সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বের পরিধি বৃদ্ধি পায় হাজার গুণ। প্রথমেই বলে নিই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর বাবা-মা হয়ে জীবনের সব দায়িত্ব-কর্তব্য, সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে নেওয়া সহজ বিষয় নয়। সন্তানের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি বয়স পর্যন্ত বাবা-মায়ের দায়িত্ব। কিন্তু একজন প্রতিবন্ধী শিশুর ক্ষেত্রে এ দায়িত্বটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সারা জীবনের।
শিশু জন্মের পরে ধীরে ধীরে তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বয়স উপযোগী হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে কি না, সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখা জরুরি। বেড়ে ওঠার কোনো পর্যায়ে যদি কোনো অসংগতি পরিলক্ষিত হয় তবে বাবা-মাকে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে তার কারণ নির্ণয় করতে হবে। আর এর জন্য প্রয়োজন বাবা-মা উভয়েরই শিশু বিকাশের স্বাভাবিক ধাপগুলো জানা। তেমনি অস্বাভাবিক লক্ষণগুলো জানা বাঞ্ছনীয়।

নুরুন্নাহার নুপুর

বাবা-মা দুজনেই শিশুর জন্য এমন একটি পরিবেশ তৈরি করবে, যেখানে শিশুর নিরাপদ বেড়ে ওঠার পাশাপাশি ভাষার বিকাশ, পর্যাপ্ত খেলার সুযোগ, আচরণের শৃঙ্খলা, আবেগের ভারসাম্য এবং শিক্ষণের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটার সুযোগ থাকে। কর্মজীবী বাবা-মায়ের ক্ষেত্রে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুটিকে তাদের অবর্তমানে দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত সদস্যদের জানতে হবে দেখভালের সঠিক নিয়ম। যেসব ক্ষেত্রে মায়েরা চাকরি করে না, সেসব ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় প্রতিবন্ধী শিশুদের সব দায়ভার মায়ের ওপর চাপানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে মাকে দোষারোপ করা হয় প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম দেওয়ার জন্য অথবা শিশুর যথেষ্ট উন্নতি না হওয়ার জন্য। মনে রাখা প্রয়োজন প্রতিবন্ধী শিশু জন্মদানের ক্ষেত্রে মায়ের কোনো ভূমিকা থাকে না। তার ইচ্ছা-অনিচ্ছা চাওয়া না চাওয়ার কোনো গুরুত্ব এ ক্ষেত্রে মুখ্য নয়। এই বিষয়টি একজন বাবার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই যখনই কোনো বাবা-মা তাদের সন্তানের কোনো রকম প্রতিবন্ধিতার ইঙ্গিত পাবে, পরস্পরকে দোষারোপ না করে, বিরোধ বা বিভেদ সৃষ্টি না করে, সন্তানের জন্য উপযুক্ত বিকাশের পরিবেশ তৈরিতে মনোযোগ দিতে হবে।

রোগ নির্ণয়ের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে

জন্মের পর শিশুর প্রধান কাজ হচ্ছে খাওয়া, ঘুমানো, খেলা এবং হাসি-কান্নার মাধ্যমে মা এবং ধীরে ধীরে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা। এই কাজগুলোর মধ্যেই যখন কোনো ভিন্নতা পরিলক্ষিত হবে, তখনই বাবা-মাকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সাধারণত যেসব শিশু দীর্ঘ প্রসব, অল্প ওজন, ছোট-বড় মাথা, মাথায় আঘাত, জন্মের পর কান্না করে না বা আরও অন্যান্য জটিলতা থাকে তাদের অবশ্যই নিয়মিত শিশু বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে রেখে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে উপযুক্ত হারে বৃদ্ধি-বিকাশ হচ্ছে কি না খেয়াল রাখতে হবে। সাধারণত তিন মাস বয়সে ঘাড় শক্ত হওয়া, ছয় মাসে বসতে শেখা, ৬-৭ মাসে বাবলিং করা, এক বছরে দুটি শব্দ বলা, ১২ থেকে ১৪ মাসের মধ্যে হাঁটতে শেখা শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির লক্ষণ। এ ক্ষেত্রে দুই মাস কমবেশি স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যে ধরা হয়। যদি কোনো শিশুর এসব ক্ষেত্রে অতিবিলম্ব হয় বা কোনো একটি ধাপ একেবারেই অনুপস্থিত থাকে, তবে অতিসত্বর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কিছু কিছু লক্ষণ আছে, যেগুলো শিশুর মধ্যে পরিলক্ষিত হলে অবশ্যই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন :

  •  জোরে শব্দে কোনো রেসপন্স করে না বা অতিরিক্ত বিচলিত হয়।
  • কোনো ব্যক্তি বস্তু নড়াচড়া করলে সেদিকে তাকায় না।
  • শিশুর নাম ধরে ডাকলে তাকায় না বা হাসে না।
  • কোনো খেলনা ধরার প্রতি আগ্রহ দেখায় না এবং মুখে হাত দেয় না।
  •  সময়মতো শারীরিক বৃদ্ধি অর্থাৎ ঘাড় শক্ত হওয়া, বসা, উপুড় হওয়া, হামাগুড়ি দেওয়া, হাঁটা শিখতে না পারা।
  •  মুখ দিয়ে কোনো শব্দ না করা অর্থাৎ বাবলিং করে না।
  • ১২ মাসের মধ্যে কোনো অর্থবোধক শব্দ বলে না (বাবা, দাদা, মামা)।
  •  ১০-১২ মাসের মধ্যে কোনো কিছু লুকালে খোঁজার চেষ্টা করে না।
  •  পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে হাঁটে।
  •  ১৮ মাসের মধ্যে ১৫টি শব্দ বলতে পারে না।
  • ২৪ মাসের মধ্যে শব্দ বা কোনো অঙ্গভঙ্গি নকল করতে পারে না।
  • ২৪ মাসের মধ্যে যদি কোনো সাধারণ কাজের নির্দেশ অনুসরণ না করে।
  •  অন্য সমবয়সী বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা খেলে না বরং একা থাকতে পছন্দ করে।
  • একই খেলা বা আচরণ করে।
  • কোনো প্রয়োজন জানাতে পারে না বরং হাত ধরে টেনে নিয়ে দেখায়।

অধিকাংশ বাবা-মা অপেক্ষা করতে করতে অনেক দেরি করে ফেলে। শারীরিক প্রতিবন্ধিতার ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অকুপেশনাল থেরাপি, ফিজিও থেরাপি, স্পিচ থেরাপি সেবা নেওয়া উচিত। গবেষণায় দেখা গেছে অটিজম স্পেকট্রামে যেসব শিশু রয়েছে, তিন বছরের নিচে যদি তাদের ইন্টারভেনশন শুরু হয়, তবে সর্বাধিক উন্নতি সম্ভব। তাই অপেক্ষা না করে বাবা-মাকে শুধু চিকিৎসক নয় অকুপেশনাল থেরাপিস্ট, স্পিচ থেরাপিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব ইন্টারভেনশন শুরু করতে হবে।

বাড়িতেই শিশুর জন্য শিক্ষণের পরিবেশ তৈরি করা

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর বাবা-মা তাদের সামর্থ্য ও সুযোগ অনুযায়ী নিয়মিত থেরাপিস্টদের সঙ্গে কাজ করবেন। পাশাপাশি বাড়িতেও নিয়মিত ব্যায়াম, ভাষার বিকাশের সুযোগ, বয়স উপযোগী খেলা, দৈনন্দিন কাজের প্রশিক্ষণ এবং লেখাপড়া শেখানোর পরিবেশ তৈরি করবেন এবং চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। মনে রাখতে হবে উপযুক্ত ও নিয়মিত প্রশিক্ষণের শিশুরা যেমন অনেক দক্ষতা অর্জন করতে পারে, আবার অনেক শিশুর ক্ষেত্রে সাধারণ বিষয়গুলো শিখতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের ধৈর্যহারা হলে চলবে না। বাবা-মায়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির অন্য সদস্যদের মধ্যে শিশুর কাজের দায়িত্বে ভাগ করে দিতে হবে। কারণ, শিশুটি যে পরিবারের সদস্য, সেই পরিবারের সবারই তার প্রতি দায়িত্ব রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রতিবন্ধী শিশুদের থেরাপি বা প্রশিক্ষণের বিষয়টি পরিবারের অন্য সদস্যদের জানা না থাকার কারণে তারা কোনো দায়িত্ব নিতে চান না। কীভাবে শিশুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, খেলতে হবে, কোনো কিছু শেখাতে হবে তা অন্যদের জানাতে হবে।

শিশুকে বিশেষ স্কুলে দেওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া

সাধারণত আমাদের দেশের শিশুরা পাঁচ বছর বয়সে স্কুলে যায়। অনেক ক্ষেত্রে চার বছর বয়স থেকেই অভিভাবকেরা সন্তানদের কিন্ডারগার্টেন স্কুলে বা প্রি-স্কুলে পাঠায়। কিন্তু বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ক্ষেত্রে স্কুলের বিষয়টিতে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে বাবা-মায়ের নানা জটিলতায় ভোগে।
অনেক পরিবার মনে করে আগে বাচ্চার হাঁটা ঠিক হোক, কথা বলতে শিখুক, অস্থিরতা কমুক বা আচরণ ঠিক হোক, তারপর স্কুলে দেব। যেহেতু বেশির ভাগ বাবা-মা তাদের সন্তানদের বিশেষ স্কুলে দিতে চায় না, ফলে বাচ্চার উন্নতির অপেক্ষা করতে করতে ৮-৯ বছর বয়স হয়ে যায়। আবার অনেক অভিভাবক ৩-৪ বছর যখন বাচ্চার আই-কন্ট্যাক্ট নেই, নির্দেশ অনুসরণ করে না, অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে খেলে না, কথা বলে না, মনোযোগ কম বা কলম পেনসিল ধরে না, তখন তাকে মেইন স্ট্রিম স্কুলে ভর্তি করায়। তারা আশা করে তাদের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুটি অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে একই ক্লাসরুমে থাকতে পারলে দক্ষতাগুলো শিখে যাবে। মনে রাখতে হবে যেসব শিশুদের অনুকরণ করার দক্ষতা, সামাজিক যোগাযোগের দক্ষতা এবং সামাজিক আচরণের সীমাবদ্ধতা থাকে, তাদের বেশির ভাগেরই অন্য বাচ্চাদের কাছ থেকে দেখে শেখার দক্ষতা থাকে না। অবশ্যই যেসব শিশুর স্বাভাবিক বুদ্ধিমত্তার বিকাশ, যোগাযোগের দক্ষতা ও সামাজিক আচরণের দক্ষতা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে তার যেকোনো শারীরিক সীমাবদ্ধতাই থাকুক না কেন, তাকে দ্রুত স্কুলিং করতে হবে। সব বাবা-মাই চান তাদের সন্তান মূলধারার বিদ্যালয়ে যাক এবং এটি শিশুর অধিকারও বটে। একীভূত শিক্ষানীতি সব শিশুকে একই শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে। তবে বাস্তবতার নিরিখে বলা যায় আমাদের দেশের বেশির ভাগ শিক্ষকের বিশেষ পাঠদানের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নেই, স্কুলগুলোতে থেরাপির ব্যবস্থা নেই, মডিফাইড কারিকুলাম বা স্পেশাল টিচিং ম্যাটেরিয়াল নেই, ইনডিভিজ্যুয়াল এডুকেশন প্ল্যানের চর্চা নেই। সে ক্ষেত্রে একজন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর মূলধারার শ্রেণিকক্ষে শিখনের সুযোগ সীমাবদ্ধ। অভিভাবকদের উচিত বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুকে দ্রুত বিশেষ স্কুলে প্রেরণ করে তার দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতে মূলধারার শ্রেণিকক্ষের জন্য উপযুক্ত করে তোলা।

শিশুকে আত্মনির্ভরশীল করা

শিশুরা সাধারণত চারপাশের পরিবেশ বা মানুষজনের আচরণ অনুকরণ করে ধীরে ধীরে দৈনন্দিন কাজ, সামাজিক আচরণ শিখে যায়। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুরা তাদের সীমাবদ্ধতার কারণে নিজেদের কাজগুলো নিজেরা করতে পারে না বা শিখতে সমস্যা হয়। অটিজম স্পেকট্রামের শিশুরা যথাযথ মোটর ডেভেলপমেন্ট না হওয়ায় সেনসুরি সমস্যার কারণে এবং আচরণের সমস্যার কারণে দৈনন্দিন কাজগুলো শিখতে পারে না বা চায় না। অনেক অভিভাবকই দুশ্চিন্তা করে যে তাদের অবর্তমানে কে এই সন্তানের দেখাশোনা করবে? এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের মাথায় রাখতে হবে যে যত তাড়াতাড়ি শিশুকে দৈনন্দিন কাজ শেখানো যাবে, ততই তার নতুন নতুন দক্ষতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। যেকোনো সাধারণ কাজও অনেকের পক্ষে শেখা বেশ কঠিন, যেমন টয়লেট ট্রেনিং, নিজের হাতে খাওয়া, জামাকাপড় পরা, দাঁত মাজা, গোসল করা ইত্যাদি। একজন অভিজ্ঞ অকুপেশনাল থেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে কীভাবে শিশুকে এ কাজগুলো শেখাবে, বাড়িতে কীভাবে প্র্যাকটিস করাবে, কাজগুলো শেখার জন্য কী দক্ষতা প্রশিক্ষণ দরকার, কেন শিশু কোন কাজ শিখতে পারছে না সেগুলো জানতে হবে। শিশুকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার জন্য যত তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করা যাবে, বাবা-মায়ের ওপর শিশুর প্রতিটি কাজ করে দেওয়ার চাপ ততই কমে যাবে। মনে রাখতে হবে শিশুর পরিণত বয়সে কিন্তু বাবা-মায়ের শারীরিক সামর্থ্য থাকবে না তার সব কাজ করে দেওয়ার।

নুরুন্নাহার নুপুর
ম্যানেজিং ডিরেক্টর
পজিটিভ থিংকিং সার্ভিসেস ফর স্পেশাল নিডস চিলড্রেন
বিএসসি (অনার্স) ইন অকুপেশনাল থেরাপি (ঢাবি)
মাস্টার্স ইন স্পেশাল এডুকেশন (অস্ট্রেলিয়া)

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
প্রযুক্তি

স্মার্টফোন কেনার টিপস

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ১১, ২০২১

সাবিহা জামান: বাজারে প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নতুন স্মার্টফোন আসে। এদের মধ্য থেকে নিজের প্রয়োজন মতো স্মার্টফোন কেনা কিন্তু সহজ কথা নয়। স্মার্টফোন কেনার আগে কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে। এগুলো না দেখতফোন কেনা বোকামী এই স্মার্ট যুগে। 

ডিজাইন

স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে ডিজাইন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সব সময় হাল ফ্যাশানের সাথে যায় আর টেকসই হয় এমন ফোন বাছাই করো। নিজের ব্যক্তিগত চাহিদা এবং রুচি অনুযায়ী ডিজাইন পছন্দ করাই ভালো। 

ডিসপ্লে

একটি ভালো মানের স্মার্টফোনের সাথে ভালো ডিসপ্লে কোয়ালিটির বিষয়টি বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ ফোনের ডিসপ্লে বড়। তবে অনেকেই অতিরিক্ত বড় ডিসপ্লের ফোন ব্যবহার করতে চায় না। তাই স্মার্টফোন কেনার সময় নিজেস্ব রুচি ও চাহিদার উপর নির্ভর করো। সবচাইতেভালো রেজ্যুলেশনের ডিসপ্লে কেনার জন্য ফোরকে রেজ্যুলেশনের ডিসপ্লেও ব্যবহার করাই ভালো। হয়ে থাকে। 

ক্যামেরা

স্মার্টফোনের এযুগে ভালো ক্যামেরা না হলেও যলে যডি ফনে ভালো ক্যামেরা থাকে। হাল আমলে স্মার্টফোনে অনেক শক্তিশালী ক্যামেরা ব্যবহার  হচ্ছে। ক্যামেরা দিয়ে তুলা ছবি কতটা ভালো বা খারাপ হবে তা অনেকাংশেই নির্ভর করে অ্যাপারচার, সেন্সর, লেন্স ইত্যাদির উপর। স্মার্টফোন দিয়ে বর্তমানে অনেকেই ভিডিও স্যুট করছেন তার কারণ ফুল এইচডি বা ৪কে রেজুলেশনেও ভিডিও করা যায় ফোণ দিয়েই। স্মার্টফোন কেনার সময় ভালো ক্যামেরা কোয়ালিটির বিষয়টি লক্ষ্য রাখবে। 

প্রসেসর

প্রসেসর যত বেশি শক্তিশালী হবে এটি তত দ্রুত কাজ করতে সক্ষম হবে। একটি প্রসেসরের পারফরম্যান্স নির্ভর করে এতে থাকা ক্লক স্পিড, কোর সংখ্যা সহ আরো বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর। বর্তমানে ব্যবহারকারী বিচারে মিডিয়াটেক এগিয়ে রয়েছে। তবে পারফরমেন্স বিচারে কিন্ত এগিয়ে কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন।

 র‍্যাম

স্মার্টফোনে র‍্যাম যত বেশি স্মার্ট ফোন ত্তটাই ভালোভাবে কাজ করবে। এজন্য বেশি র‍্যামের ফোন কেনাই ভালো এতে করে ফোন স্লো হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা কমে যায়।  র‍্যাম বেশি থাকলে ব্যাকগ্রাউন্ডেও অনেকগুলো অ্যাপ একসাথে রান করাতে পারবে। 

আপারেটিং সিস্টেম

অপারেটিং সিস্টেম হলো সেই সফটওয়্যার যার সাথে আমরা প্রতিদিনই ইন্টারঅ্যাক্ট করে থাকি। স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেম মূলত কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমের মতোই। বর্তমানে স্মার্টফোনে ব্যবহৃত গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ওএস এবং অ্যাপলের আইওএসও দুটিই জনপ্রিয়। সবসময় লেটেস্ট ভার্সনের  অপারেটিং সিস্টেমের ফোন কেনাই ভালো এতে সময়ের সাথে থাকা যায়। আর ব্যবহার করাও বেশি সহজ হয়। 

ব্যাটারি

নানান কাজে পদিনের বেশ বড় একটি সময় আমরা ফোনে ব্যয় করি। তাই ব্যাটারি লাইফ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে। বর্তমানে ৩ থেকে ত৬  হাজার মিলিএম্পিয়ারের স্মার্টফোন রয়েছে।  কিনবেন। হেভি ইউজের জন্য ৪ হাজার মিলিএম্পিয়ার বা এর চাইতে বেশি মিলিএম্পিয়ারেরস্ফোন নেওয়াই ভালো। 

প্রতিবছর স্মার্টফোন কেনা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই যখন বিষয় ফোন থাকতে হবে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আপডেট। প্রয়োজনীয় ফিচারের সাথে বেছে নিতে হবে ভালো ব্র্যান্ডের  একটু ভালো মানের স্মার্টফোন। 

ছবি: সংগৃহীত 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
কবিতাপাঠকের কলাম

এসেছি

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ১০, ২০২১

আহসান উল্লাহ ফোয়াদ,

আমি যে এসেছি
পরন্ত রোদে শাড়ি দিয়ে
পাতায় লুকায়ে বৈশাখে
চৈতার বউ।
চঞ্চলা অথচ নিবিড়
উদ্দীপ্ত তবুও স্থবির।
উঠানে ননদিনী
স্বামীর হাতে ধানের নাড়া
আমি এসে
ভাসিয়ে দিয়েছি অকস্মাতে!
এই যে আমি
নেই কোনো সাড়া
গেরস্তের ব্যস্ততায় তার বেদনা ঢাকা।
দুর্বার অথচ শৃঙ্খল বদ্ধ
চোখে হাজারো অভিযোগ
সম্মুখে সর্বস্ব বাঁধা।
অমি যে এসেছি
বড্ড দেরিতেই
তবুও এসেছি
দিলো না সে সাড়া।

ছবি: সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
কেনাকাটাজীবনযাত্রা

কমফোর্টে কমফোর্টার

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ৯, ২০২১

সাবিহা জামান: শীতের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে কমফোর্টারের। জানান দিচ্ছে শীতে আর তাই গরম জামাকাপড় কেনার পাশাপাশি কোমফোর্টারের দোকানে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। লেপের কাভার ধোয়ার ঝামেলায় অনেকেই কম্বল ব্যবহার করেন। শীতকে বিদায় জানানোর পর ড্রাইওয়াশ করতে হয় যা আবার অনেকেরই পছন্দ না। হাল আমলের কমফোর্টারের সে সমস্যা নেই। ধোয়া বা ড্রাইওয়াশ দুটিই করা যায় এটি। ফেব্রিকসের ভেতর ফাইবার দিয়ে বানানো হয়। সিনথেটিক এবং সুতি দুই ধরনের ফেব্রিকসের কমফোর্টারের দেখা মিলবে বাজারে। 

ভালো মানের কমফোর্টার কেনার আগে 

  • সবার আগে নজর রাখতে হবে কমফোর্টারের সাইজ উপযোগি কিনা। কারণ বাজারে বিভিন্ন সাইজের কোমদফোর্টার রয়েছে তোমার প্রয়োজন বুঝে কোমফোর্টারের সাইজ নির্ধারণ করতে হবে। 
  • ভালোমানের কমফোর্টার কেনার সময় কাপড়ের মান কেমন এটা দেখতে হবষয়। বিভিন্ন মান ও ধরণের কমফোর্টার বাজারে রয়েছে। আরামদায়ক ফেব্রিকস দেখেই কমফোর্টার কিনতে হবে।
  • কমফোর্টারের ওজন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভারী কমফোর্টার নির্বাচন করাই ভালো যতি তুমি শীতকাতুরে হও। হালকা বা মিডিয়াম ওজনের কমফোর্টার মিডিয়াম শীতের জন্য উপযুক্ত।

কমফোর্টারের দরদাম

দেশি-বিদেশি দুই ধরণের কমফোর্টারের দেখা মিলবে বাজারে। তবে চায়নিজ কমফোর্টারের চাহিদা একটু বেশি। ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকায় সিঙ্গেল আর ৩ হাজার থেকে ৫ হাজারে পাবে  ডাবল পার্টসের কমফোর্টার। এছাড়া ওনেকেই নিজের পছন্দের ফেব্রিক্স আর ফাইবার দিয়ে অর্ডার দিয়ে কমফোর্টার বানিয়ে নিতে পার এতবে এক্ষেত্রে দাম একটু বেশি পরবে। 

শীতের কাপড় বিক্রি করে এমন দোকানগুলোতে গেলেই কমফোর্টার পাবে। এছাড়াও সুপারশপগুলোতে এখন শীত আসলেই বিভিন্ন ধরণের কমফোর্টার বিক্রি করে।  নিউ মার্কেট, বসুন্ধরা সুপার মার্কেট, যমুনা ফিউচার পার্ক, মৌচাক মার্কেটসহ রাজধানীর বিভিন্ন শপিং মলে দেখা মিলবে শীতের কমফোর্টেবল কোমফোর্টারের। গুলিস্তানে পাইকারি মার্কেটও একটু কম দামে দেখা মিলবে কোমফোর্টারের। 

ছবি: সংগৃহীত

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রারোমান্স রসায়ন

ধরে রাখুন প্রেমের সুত্র

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ৮, ২০২১

সাবিহা জামান: প্রেমের শুরুর সময়টা কিন্তু বেশ সুন্দর। কিন্তু সবকিছু চিরস্থায়ী নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কের চেহারা বদলায়, ঠিক তেমনই প্রেমেও পরিবর্তন আসে। প্রেম বিয়ে অবধি গড়ালে সম্পর্কে রঙে আসে আরো পরিবর্তন। ভালবাসা জিইে রাখতে হলে এই সারসত্যটা বুঝতে হবে। রোম্যান্সের ঝুলি সম্পরকের শুরুতে পূর্ণ থাকলেওম সময়ের সঙ্গে তা যেন ধাপে ধাপে কমতে থাকে। যা মেনে নেওয়া বেশ কষ্টকর। কিন্তু তুমি বা তোমরা দুজন চাইলেই কিন্তু পুরনো প্রেম জিইয়ে রাখতে পারো আজীবন। রোদসীতে থাকসে এ নিয়েই কিছু টিপস।

রোম্যান্টিক ডিনার, লং-ড্রাইভ, ফুলের বোকে, উপহারের ঘনঘটা দিয়েই সম্পর্ক শুরু হয়। এর কারণ আমরা শুরুতে পার্টনারকে মুগ্ধ করতে চাই। কিন্তু বাস্তবে এমন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় আজীবন। সময় আর বাস্তবতার চাপে ব্যালেন্স করতে গিয়ে সম্পর্কে আমরা সময় দিতে ভুলে যাই। শুরু হয়ে যায় নিত্য অশান্তি। ঝগড়াঝাঁটি, মনোমালিন্য, মান-অভিমান। বিয়ের পর আসলে দাম্পত্য খানিকটা একঘেয়ে হয়ে যায়। তবে ছোট কিছু বিষয় মেনে চললে সম্পর্ক সুন্দর থাকে।

টিপস

  • আমরা কেউই পারফেক্ট নই। এমনকি তুমি নিজেও না। তাই পার্টনারের থেকে পারফেকশন আশা করবে না। বরং তাকে বুঝতে চেষ্টা করো।
  • সব সম্পরকেই সমস্যা হয় কিন্তু তাই বলে সম্মান করা বাদ দিলে চলবে না। যে কোন ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার মুলে সম্মান। একে অপরকে সম্মান করো।
  • সবসময় অভিযোগ না করে পার্টনারকে বুঝিয়ে বলো তুমি কি চাইছো। তোমার কি সমস্যা হচ্ছে। চুপ থাকা সমাধান নয়। ভালো আলোচনা থেকেই দেখবে সমাধান আসবে।
  • পার্টনারের আবেগ, অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করতে হবে। জোর করে নিজের ইচ্ছে চাপিয়ে দেবে না।
  • সম্পর্ক গড়ার জন্যে যে এফর্ট দিয়েছেন দুজনে, বিয়ের পর সেটাই যেন ভাঁটা না পড়ে সেদিকে নজর রাখবে।
  • বিয়ের পর অনেকেই ভাবে একসাথেই তো থাকছি আলাদা করে সময় কাটানোর কি আছে। কিন্তু এমনটা না ভেবে দুজন মাঝে মাঝে বের হও। ঠিক আগের মতো ঘুরো, পুরনো দিনের কথা মনে করো দেখবে আগের সেই রোমান্স জেগে উঠেছে।
  • বিশেষ দিন যেমন, জম্মদিন, অ্যানিভার্সারিতে দুজঙ্কে সময় দাও। ছোট করে হলেও দুজনের জন্য আয়োজন করো। উপহার কিংবা বাইরে যেতে পারো।

ছবি: সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
কবিতাপাঠকের কলামশিল্প ও সাহিত্য

শীতের আবির্ভাব 

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ৭, ২০২১
 ইমরান খান রাজ:
চারিদিকে আজ শুধুই কুয়াশা
ঘন শিশিরে দুর্বাঘাসের কাণ্ডগুলো,
ভিজে একদম চুপ চুপে।
শালিক পাখিটা মনের আনন্দে
খেজুরের রস খাচ্ছে,
আর প্রাণখুলে গাইছে বাংলার গান।
সরিষা ফুলের লোভনীয় গন্ধে
মৌমাছিরা ভনভন করে,
ঘুরে বেড়াচ্ছে মধুর প্রলোভনে।
কৃষকের মুখেও আজ মুচকি হাসি
গোলাভরা ধান পেয়ে,
সেও খুশিতে যেনো আটখানা।
ছবি: সংগ্রহীত
০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
চিত্রকলাজীবনযাত্রারোমান্স রসায়ন

সম্পর্ক ভেঙে যাচ্ছে?

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ৭, ২০২১
সুরাইয়া নাজনীন: করেই কোনো সম্পর্ক তৈরি হয় না অবার কোনো সম্পর্ক তৈরি করার জন্য সময় দিতে হয়। কিন্তু সম্পর্ক ভাঙতে সময় লাগে না। মাত্র কয়েক মুহূর্তেই সম্পর্ক ভেঙে যেতে পারে। এক্ষেত্রে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার জন্য মানুষের কিছু অভ্যাসই দায়ী হতে পারে-
# আত্মবিশ্বাস না থাকলে সঙ্গীর কাছে বিশ্বস্ত হওয়া সম্ভব নয়। আত্মবিশ্বাসহীন মানুষের সঙ্গে কেউ সম্পর্ক রাখতে চান না।
# বার বার দোষারোপ করতে থাকেন অনেকে। কারও কোনো ভুল পেলেই তার দোষারোপ করা ঠিক নয়।
# গোঁড়ামি, অসহিষ্ণুতা ও অহংবোধ থাকার কারণে বিষিয়ে ওঠে ভালোবাসার সম্পর্ক। ‘আমিই সঠিক’- এ ভাবনা সম্পর্ক নষ্টের অন্যতম কারণ।
# সম্পর্ক দুজন মানুষকে নিয়ে গড়ে ওঠে। গুরুত্ব না পেলে সঙ্গী কষ্ট পেতে পারেন। সবসময় নিজেকে প্রাধান্য দিলে
# কোনো মানুষ নিজের সমালোচনা শুনতে পছন্দ করেন না। কিন্তু এমন অনেকেই রয়েছেন যারা প্রতিনিয়ত ভালোবাসার মানুষের সমালোচনা করতে থাকেন। পান থেকে চুন খসলেই সঙ্গীর ভুল ধরতে গেলে সম্পর্কে সৃষ্টি হয় তিক্ততা।
May be an image of one or more people and text
ছবি: ইন্টারনেট
০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • সঠিক হুইস্ক বাছাই করবো কীভাবে?

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook