রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
লেখক

Shaila Hasan

Shaila Hasan

.অনুসঙ্গআয়নাঘরকেনাকাটাদিবস সবিশেষবসন ভূষণরূপ ও ফ্যাশন

পোশাকে একুশ

করেছে Shaila Hasan মার্চ ৫, ২০২৩

সঞ্চিতা খাসকেল:

ভাষা আন্দোলন এক নতুন চেতনার জন্ম দিয়েছে। সৃষ্টি করেছে এক অনন্য অসাধারণ চেতনা পুষ্ট শিল্প সাহিত্যের। দিনটিকে ঘিরে ফ্যাশন  ও পোশাকেও এসেছে নানান বৈচিত্র্যতা। বাংলাদেশ পুরো বিশ্বের কাছে আজ সমাদৃত। পুরো পৃথিবী তথা বাংলার মানুষের জাতীয় জীবনে  গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের একটি বড় অধ্যায় জুড়ে আছে আমাদের মহান একুশে ফেব্রুয়ারি।

বাঙালি তথা গোটা বিশ্ববাসী এই দিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে জাতির সূর্যসন্তানদের। যাদের  আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা অর্জন করেছি আমাদের  প্রিয় মাতৃভাষা। পুরো পৃথিবী বিস্ময় এ হতবাক হয়ে গেছে ভাষার জন্য বীরদর্পে বাঙালির আত্মত্যাগ দেখে। যে  আত্মত্যাগ নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে শেখায়। যে আত্মত্যাগ আমাদের দেশের প্রতি দায়িত্বশীল, নিষ্ঠাবান, সৎ আর নির্ভীক হতে শিক্ষা দেয়  প্রতিনিয়ত। একুশে ফেব্রুয়ারি আজ আর শুধু আমাদের মাতৃভাষা দিবস নয়। সারাবিশ্বে এই দিনটি আজ সমাদৃত  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। জাতীয় চেতনার মানসপটে ভাষা আন্দোলন এক নতুন চেতনার জন্ম দিয়েছে। সৃষ্টি করেছে এক অনন্য অসাধারণ চেতনাপুষ্ট শিল্প-সাহিত্যের। তাই তো নানা আনুষ্ঠানিকতার মাঝে বাঙালি দিনটিকে উদ্যাপন করে আসছে প্রতিবছর। দিনটিকে ঘিরে তাই ফ্যাশন ও পোশাকেও এসেছে নানান বৈচিত্র্যতা।

যেহেতু একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় শোক দিবস, তাই এই দিনটিকে সাজানো হয় কালো আর সাদা রঙের আঙ্গিকে। বাঙালি  মেয়েরা সাধারণত সাদা রঙের শাড়ি তাতে কালো পাড় অথবা সাদা রঙের সালোয়ার ওড়না আর কালো রঙের কামিজ পরতেই বেশি পছন্দ করে এই দিনটিতে। তবে যুগের হাওয়া বদলের সঙ্গে সঙ্গে  পোশাকেও এসেছে নতুন সংযোজন। কালো রঙের শাড়িতে ফুটে উঠেছে নানান রঙের বর্ণমালা। কখনও বা আঁচলে শোভা পায় জাতীয় স্মৃতিসৌধ,শহিদ  মিনার অথবা লাল-সবুজের চিরচেনা সেই গ্রামীণ দৃশ্যপট। কখনও বা শাড়িতে ফুটিয়ে তোলা হয় মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন চিত্র। ছেলেদের পোশাকেও ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। সাদা পাঞ্জাবির পুরোটা জুড়ে  থাকে প্রিয় বর্ণমালারা। কখনও বা কালো পাঞ্জাবির বুকে থাকে শহিদ মিনার অথবা ছেলেদের টি-শার্টে শোভা পায় প্রিয় কবির  পংক্তিমালা-

‘মোদের গরব মোদের আশা

আ মরি বাংলা ভাষা’

কবি মাহমুদুল হাসান বলেছেন,

“মাতৃ ধ্বনিতে গুঞ্জন ফাগুনের সমীরণ

অগ্নি কণায় বাংলা বর্ণমালার আলিঙ্গন।”

প্রিয় কবির আহবানে সাড়া দিয়ে কেউ কেউ আবার কালো রঙের শাড়িতে লাল রঙের আঁচলের মাঝে রক্তিম সূর্যের আভা ছড়িয়ে দেন।

সাদা কালো সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে মিল রেখে ওড়নার মাঝে কখনওবা ভেসে বেড়ায় শুভ্র মেঘপুঞ্জ। এ বিশেষদিনটিতে বড়দের  সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিশুদের পোশাকেও এসেছে বৈচিত্র্যতার ধারা। বড়দের মতো শিশুরাও বর্ণিল বর্ণমালায় তাদের শাড়ি রাঙিয়ে নেয়।সঙ্গে  থাকে কালো রঙের ফেন্সি ব্লাউজ। কখনও বা কালো ধুতিসালোয়ারের সঙ্গে থাকে সাদা রঙের ফতুয়া। কখনও কখনও ছোট্টশিশুরা বেছে নেয় সাদা ফ্রক।

হালফ্যাশনে ছেলে বাবুরাও পিছিয়ে নেই। এই দিনে ওরাও বেছে নেয় চমৎকার সব টি-শার্ট আর পাঞ্জাবি। ছেলেবাবুদের টি-শার্টে উড়ে  বেড়ায় রংবেরঙের প্রজাপতি, ঘাসফড়িং। পাঞ্জাবির বুকে শোভা পায় সংগ্রামী মুক্তিযোদ্ধার ছবি। কখনও কখনও টি-শার্ট   বা পাঞ্জাবিতে ব্যবহার করা হয় মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন প্রতীক। কেউ কেউ আবার সাদা পাঞ্জাবির সঙ্গে ব্যবহার করে কালো রঙের মুজিব কোট।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.কান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাদিবস সবিশেষদেহ ও মনবাতিঘরবিশেষ রচনাসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

ক্যান্সার মানেই মৃত্যু নয়- লাইভ আলোচনা

করেছে Shaila Hasan মার্চ ৫, ২০২৩

সুরাইয়া নাজনীন:

প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালন করা হয়। ২০২২-২০২৪ সাল পর্যন্ত এ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে “close the care gap” অর্থাৎ‘ক্যান্সার সেবায় বৈষম্য দূর করি’। ‘ক্যান্সারমানেইমৃত্যু নয়’ এই বিষয় ধরে রোদসী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে  ফেসবুক লাইভ আলোচনা। রোদসীর সম্পাদক ও প্রকাশক সাবিনা ইয়াসমীনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। দুজন চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম ও সহকারী অধ্যাপক ডা.তন্নিমা অধিকারী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ফার্মাসিস্ট স্বাগতা সরকার লোপা-

সাবিনা ইয়াসমীন: ক্যান্সার মানেই কি মৃত্যু? আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ধরে নেয়া হয় ক্যান্সার হলেই সব শেষ- এ  ধারণা নিয়ে কিছু বলুন?

রওশন আরা বেগম: ক্যান্সার হলেই যে মৃত্যু নিশ্চিত তেমনটি নয়।আর মৃত্যুর কথা তো আমরা কেউ বলতে পারিনা। দেখতে  হবে ক্যান্সারের স্টেজ কোন পর্যায়ে আছে। স্টেজ ১ হলে ৯০ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে আবার ২ হলে ৭০ শতাংশ আবার স্টেজ ৩ হলে ৫০  শতাংশ। এটা আসলে নির্ভর করে রোগীর শারীরিক কন্ডিশনের ওপর। স্টেজ বেশি হলে সারভাইবাল কমে যায়।তবে মৃত্যু  অবধারিত এমনটি নয়।

সাবিনা ইয়াসমীন: ক্যান্সার হলে একজন মানুষ কীভাবে বুঝবে?

তন্নিমা অধিকারী: ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ আছে সেগুলো দেখে আঁচ করা যেতেপারে।  যেমন কিছু কিছু ক্ষত হলে অনেক সময় সারতে চায়না, তিন-চারসপ্তাহ ধরে থাকে। আবার শরীরের কোনো কোনো জায়গায় চাকা কিংবা পিন্ডের মতো দেখা দিলে আবার তা যদি খুব দ্রুত  বেড়ে যায় তখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার। অস্বাভাবিক রক্তপাতও চিন্তার বিষয় হতে পারে। যেমন প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত গেলে, মাসিকের সঙ্গে অস্বাভাবিক রক্ত গেলে, স্বামী-স্ত্রীর মেলামেশার পর রক্ত গেলে। আবার শরীরে আঁচিলের সংখ্যা বেড়ে  গেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার। কিন্তু বলে রাখা ভালো এসব লক্ষণ দেখা দিলেই যে ক্যান্সার হয়েছে তেমনটি ভাবারও কারণ নেই। একজন চিকিৎসকই বলতে পারবেন কী কারণে এসব লক্ষণ দেখা দিচ্ছে।

সাবিনা ইয়াসমীন: ক্যান্সারের ধরন অনুযায়ী কি এর ভয়াবহতা নির্ভর করে?

রওশন আরা বেগম: ক্যান্সারের স্টেজ ভেদে এর ভয়াবহতা নির্ভর করে। আবার চিকিৎসাও ভিন্ন হয়ে যায়। অনেক সময় শুরুর দিকে ধরা পড়েনা সেজন্য উচ্চতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। কিছু ক্যান্সার আছে কেমো সেনসিটিভ সেগুলো কেমোথেরাপি দিলে ভালো হয়ে যায়, আবার কিছু ক্যান্সারের জন্য রেডিওথেরাপি দরকার হয়।

সাবিনা ইয়াসমীন: ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কি নারী-পুরুষের কোনো প্রভাব আছে?

তন্নিমা অধিকারী:  হ্যাঁ, ব্রেস্ট, জরায়ু আর ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকে নারীরা। ব্রেস্ট ক্যান্সারপুরুষেরও হয় তবে তা ১  শতাংশের মতো। প্রোস্টেড ক্যান্সার পুরুষের হয়। আমাদের দেশে অতিমাত্রায় পান-জর্দা খাওয়ার কারণে মুখের ক্যান্সার বেশি হয়। আবার ধূমপানের ফলে ফুসফুস ক্যান্সার নারী-পুরুষ উভয়েরই হয়।

সাবিনা ইয়াসমীন: ক্যান্সার কিংবা বড় কোনো রোগ হলে আমরা চিকিৎসকের কাছে যাই কিন্তু  এক্ষেত্রে একজন ফার্মাসিস্টও বড় ভুমিকা পালন করতে পারে সেটা কীভাবে?

স্বাগতা সরকার লোপা: রোগী এবং চিকিৎসকের মধ্যকার একটা ভুমিকা পালন করে ফার্মাসিস্টরা। অনেক সময় ক্যান্সারের  মেডিসিনে অনেক রকম পার্শ্ব ¦প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, সেক্ষেত্রে ফার্মাসিস্টরা কাউন্সেলিং করে থাকেন। ওষুধের ডোজের ক্ষেত্রেও ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা রয়েছে। চিকিৎসকরাই প্রেসক্রাইব করে থাকেন, সেই মোতাবেক ফার্মাসিস্টরা রোগীর কাউন্সেলিংয়ের কাজটা করেন। যেমন কেমোথেরাপি বেশ ব্যয়বহুল আমরা সেক্ষেত্রে অ্যাড মিক্সিং করি।

সাবিনা ইয়াসমীন: নারীরা কোন বয়স থেকে সচেতন তার চিন্তাটা করবে?

রওশন আরা বেগম: আসলে সচেতনতার কোনো বয়স নেই। আমরা স্কুল-কলেজে গিয়েও সচেতন তার বিষয়টি নিশ্চিত করি। তারা  যেন জানতে পারে কীভাবে ব্রেস্ট চেক করতে হয়। কখনই বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তবে রুটিন মাফিক নিয়ম করে ৩০ বছর  থেকেই সচেতন হওয়া খুব দরকার। বিশেষ করে মাসিক শেষ হওয়ার পর ব্রেস্ট চেক করতে হয়।তাছাড়া আর একটু নিশ্চিত হওয়ার ভায়া  টেস্ট করাটাও জরুরি।

সাবিনা ইয়াসমীন: আপনার দৃষ্টিতে আমাদের দেশের মানুষ কতটুকু সচেতন?

তন্নিমা অধিকারী: আগের তুলনায় মানুষ অনেক বেশি সচেতন হয়েছে। তবে তা শহরকেন্দ্রিক। কিন্তু সমগ্র বাংলাদেশ  তো আর শহরকেন্দ্রিক নয়। তবে একটা জিনিস জেনে রাখা ভালো দেশের প্রত্যেকটা উপজেলাতে ভায়া টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে।  সেটা সিস্টাররাই করতে পারেন। কিন্তু প্রান্তিক মানুষের জানা এবং জানানো ভীষণ প্রয়োজন। এখানে সরকার এবং গণমাধ্যমের বেশ ভূমিকা রয়েছে।তবে আরও একটা জিনিস আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, আমাদের লাইফস্টাইলের পরিবর্তন করতে হবে।  এখন আমরা স্যানিটারি লাইফ লিড করি। যেমন – সারাদিন বসে কাজকর্ম করা,  হাঁটাচলা, ব্যায়াম খুব কম হয়,  এগুলো বাড়াতে হবে। খাওয়া-দাওয়ায় শাকসবজি সতেজ জিনিস বেশি খেতে হবে। ফাস্টফুড বাদ দিতেহবে।

সাবিনা ইয়াসমীন: অনেকেই ধারণা করেন কেমোথেরাপি দিলে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়, রোগীর জন্য ধারণ করাও খুব কষ্টসাধ্য। এ বিষয়ে কিছু বলুন

স্বাগতা সরকার লোপা: আজকাল শুধু নয়, ক্যান্সারের চিকিৎসায় রেডিওথেরাপি, সার্জারি, টার্গেটেড থেরাপিও দেয়া হয়। তবে কেমোথেরাপি দিলেই যে রোগীর খারাপ কিছু হবে তেমনটি নয়। কোন রোগীর জন্য কোন চিকিৎসা কার্যকর এটা চিকিৎসকরা সঠিকভাবেই প্রেসক্রাইব করেন। তবে ওই যে আমি আবার বলব, ক্যান্সার কোন স্টেজে ধরা পড়ল সেটার ওপরই চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করে। শেষের দিকে ধরা পড়লে কেমোতেও কাজ হয় না তখন পেলিয়েটিভ ট্রিটমেন্ট দিতে হয়।

সাবিনা ইয়াসমীন:  রোদসী লাইভে ক্যান্সার বিষয়ক অনেক কথাই উঠে এসেছে। প্রত্যাশা রাখি শ্রোতা, পাঠক সবাই উপকৃত হবেন এই লাইভের মাধ্যমে। রোদসী লাইভে অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

অতিথি বৃন্দ: রোদসীকে ধন্যবাদ। সব শ্রোতা ও পাঠকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

  • অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম

         এমবিবিএস, এমপিএইচ, এমফিল, ডিএমইউ, এফসিপিএস (রেডিওথেরাপি)

         অধ্যাপক, রেডিওথেরাপি বিভাগ।

          জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা।

  • ডা তন্নিমা অধিকারী

         এফসিপিএস (রেডিওথেরাপি)

         সহকারী অধ্যাপক

         রেডিওথেরাপি বিভাগ

          ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

  • স্বাগতা সরকার লোপা

          ডেপুটি ম্যানেজার

          ফার্মেসি

          এভার কেয়ার হসপিটাল, ঢাকা।  

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
ঘুরে বেড়াইচলন বলনজীবনযাত্রাদেশদেহ ও মনভ্রমণ ফাইলসুস্থ মন

মনের যত্নে বেড়ানো

করেছে Shaila Hasan মার্চ ২, ২০২৩

শরীরের শক্তি যেন মনই জোগায়। শরীরে বড় রোগ বাসা বাঁধলে, মনটাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে ঘুরে আসা যেতে পারে কাছে-দূরে কোথাও।  রোগীদের জন্য তারা যে ওষুধগুলো নিয়মিত খাচ্ছে তা পর্যাপ্ত পরিমাণে সঙ্গে নিচ্ছে কিনা। এছাড়া ডাক্তারের   প্রেসক্রিপশনের ফটোকপি বা তার শর্ট মেডিকেল হিস্ট্রি সঙ্গে থাকা ভালো। লিখেছেন কনিকা রায়।

সুন্দরবন
পৃথিবী বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল এই সুন্দরবন। এখানে রয়েছে নানা প্রজাতির হরিণের অবাধ বিচরণ। এছাড়াও দর্শনীয়   স্থানগুলোর মধ্যে করমজল ফরেস্ট স্টেশন, কটকা, হিরণপয়েন্ট, কচিখালী, মান্দারবাড়ীয়া, দুবলার চর, তিনকোনাদ্বীপ,  মংলা বন্দর ইত্যাদি। ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনের কিছু স্থান ঘুরে আসতে পারো।

জাফলং
জাফলংয়ের দর্শনীয় দিক হচ্ছে চা বাগান ও পাহাড় থেকে পাথর আহরণ। মারি নদী ও খাসিয়া পাহাড়ের পাদদেশে জাফলংঅবস্থিত।  মারি নদীতে ভ্রমণের মাধ্যমে পাথর সংগ্রহের দৃশ্য আপনাকে সত্যিই আনন্দ দেবে। এখানে প্রচুর বনজ প্রাণীর বসবাস। এখানে  গেলে খাসিয়া উপজাতিদের জীবন ও জীবিকা চোখে পড়বে। এছাড়াও দেখতে পারবে জৈন্তাপুর রাজবাড়ি, শ্রীপুর এবং তামাবিল স্থলবন্দর।  মাগুরছড়াও পথেই পড়বে।

রাতারগুল
সিলেটের রাতারগুলে রয়েছে নানান প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী। সিলেট-গোয়াইন ঘাটের সড়কের হরিপুরে বন  বিভাগের অধীনে বিশাল রাতারগুলে রয়েছে প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য নৌকায় ঘুরে বন দেখার সুবর্ণ সুযোগ। লোভাছড়া গোয়াইনঘাটের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে  কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা লোভাছড়া রয়েছে চা বাগান আর লেকবেষ্টিত নানান সৌন্দর্যপূর্ণ  স্থাপনা।

শ্রীমঙ্গল
সিলেটের শ্রীমঙ্গল যাওয়ার আগে রয়েছে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া ইকোপার্ক। বিশাল এ বনে রয়েছে নানান প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও  বিলুপ্ত অনেক বন্যপ্রাণী। এছাড়া তুমি ঘুরে আসতে পারো কুলাউড়ার ভাটেরায় প্রস্তাবিত পর্যটন স্পট ‘অভয়আশ্রমে’। যেখান থেকে  উপভোগ করা যাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হাকালুকির হাওর। দেখে আসতে পারো সুনামগঞ্জের শনিরহাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর,  দেখার হাওর,  ছাতকেরলাফার্জ সুরমা ও বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরিসহ অনেক অঞ্চল।

মাধবকুন্ড
মাধবকুন্ড দেশের বৃহত্তম একমাত্র প্রাকৃতিক জলপ্রপাত। মাধবকুন্ড ইকোপার্ক, নয়নাভিরাম দৃশ্য ও নান্দনিক পিকনিক স্পট হিসেবে  দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে সুপরিচিত। সুবিশাল পর্বতগিরি, শ্যামল সবুজ বনরাজিবেষ্টিত ইকোপার্কে প্রবীণ, নবীন, নারী-পুরুষদের  উচ্ছ্বাস অট্টহাসি আর পাহাড়ি ঝরনার প্রবাহিত জলরাশির কলকল শব্দ স্বর্গীয় ইমেজের সৃষ্টি করে।

সেন্টমার্টিন
আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল সেখানে মিলেমিশে একাকার, তীরে বাঁধা নৌকা, নান্দনিক নারকেল বৃক্ষের সারি আর ঢেউয়ের ছন্দে  মৃদু হাওয়ার কোমল স্পর্শ এটি বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন প্রবালদ্বীপের সৌন্দর্য বর্ণনার ক্ষুদ্র প্রয়াস। বালি, পাথর,  প্রবাল কিংবা জীববৈচিত্র্যের সমন্বয়ে জ্ঞান আর ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য অনুপম অবকাশকেন্দ্র সেন্টমার্টিন। কক্সবাজার জেলাশহর থেকে ১২০  কিলোমিটার দূরে সাগরবক্ষের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ সেন্টমার্টিন।

হিমছড়ি
এখানকার সৈকতের চেয়েও আকর্ষণীয় হলো এর ভ্রমণ পথ। সৈকতলাগোয়া আকাশ ছোঁয়া পাহাড় এখানের অন্যতম আকর্ষণ।  হিমছড়ির পাহাড়ের হিমশীতল ঝরনাও বেশ আকর্ষণীয়। কক্সবাজার সৈকত থেকে খোলা জিপ ছাড়ে হিমছড়ির উদ্দেশে।

ভ্রমণ হোক আনন্দদায়ক

মূল্যবান জিনিসপত্র ব্যাগে তালা মেরে চাবি হ্যান্ডব্যাগে রাখো। এ ব্যাগে জরুরি ডকুমেন্টসগুলোও রাখো। এছাড়া হ্যান্ডব্যাগে থাকবে  তোমার প্রতিদিনের ব্যবহারের ওষুধপত্র। প্রি-জার্নি লিস্ট করার সময় এগুলো খেয়াল রাখতে হবে।

  • যাদের গ্লুকোমা আছে, তারা আই গ্লাস পরে ভ্রমণ করো।
    -চোখের ইমার্জেন্সি ড্রপ নিতে ভুলবেনা। চোখে যারা লেন্সপরো তারা ধুলাবালি থেকে বাঁচতে লেন্স ক্লিনার সঙ্গে নাও। অনেকে সানগ্ওলাস পরতে পারে।
  • ক্যাপ বা হ্যাট পরতে পারো সূর্যের আলো থেকে রক্ষার জন্য,  বিশেষ করে যেখানে এসি নেই।
  • বাস-কোস্টার বা ট্রেনের বাইরে যেন বাচ্চা বা কেউ হাতবামুখ না দেয় সেদিকে নজর রাখো।
  • সিটবেল্ট বেঁধে ভ্রমণ করা উত্তম। খুব ছোট বাচ্চার জন্য স্পেশাল কট ব্যবহার করা যায়।

এছাড়া বিদেশের কিছু কিছু জায়গায় যাওয়ার আগে ম্যালেরিয়া, হেপাটাইটিস ও টাইফয়েডের ভ্যাকসিন নিয়ে নেয়াউচিত।  ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলারস গাইড থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

রোগীদের নিরাপদ জার্নি
প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে তারা যে ওষুধগুলো নিয়মিত খাচ্ছে তা পর্যাপ্ত পরিমাণে সঙ্গে নিচ্ছে কিনা। এছাড়া ডাক্তারের  প্রেসক্রিপশনের ফটোকপি বা তার শর্ট মেডিকেলহিস্ট্রি সঙ্গে থাকা ভালো। কোনো অসুবিধা হলে আশপাশের মানুষ এ কাগজ পড়ে  রোগীকে  উপকার করতে পারে। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হার্ট ডিজিজ, বাত রোগের ওষুধ, অ্যাজমা বা অ্যালার্জির ওষুধ সঙ্গে নিতে ভুলবেনা।

ইনহেলার, ইনস্যুলিন ইত্যাদিও সঙ্গে রাখবে। ডায়াবেটিস রোগীরা লজেন্স, সুগারকিউব নেবে। প্রেগন্যান্ট যারা তাদের প্রথম ছয় মাস জার্নি  করা মোটামুটি নিরাপদ। যাদের অ্যাবরশনের ইতিহাস আছে তাদের গর্ভাবস্থায় জার্নি করা উচিত নয়। বিশেষ করে শেষ তিনমাস যে  কোনো গর্ভবতীর জার্নি নিষেধ। যে কোনো ধরনের জার্নিতে তারা প্রচুর পানি খাবে। প্লেনে জার্নি করলে ঘনঘন পা ম্যাসাজ করতে হবে,  নাহলে পায়ে রক্ত জমাট বেঁধে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস বা ডিভিটি হতেপারে। তারা পায়ে রক্ত জমা প্রতিরোধকারী মোজা পরতেপারো। যাদের ওজন বেশি তারাও এ কাজটি করতে পারো।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.কান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাদেহ ও মনবিশেষ রচনাসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

দেশেই সম্ভব ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসা

করেছে Shaila Hasan মার্চ ২, ২০২৩

সাধারণ মানুষের ধারণা ক্যান্সার মানেই মরণ-ব্যাধি। বাস্তবে তা কিন্তু নয়। সঠিকসময়ে, নির্ভুল ডায়াগনোসিস ও উপযুক্ত  চিকিৎসায় অনেক ক্যান্সারই সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব। লিখেছেন অধ্যাপক ডা. মো.সালাহউদ্দীন শাহ।

সারাবিশ্বেরমতো ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশেও উদযাপন করা হয়েছে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। ক্যান্সার সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই প্রতিবছর এই দিনটি পালন করা হয়। গ্লোবোক্যান ২০২০-এর প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০২০ সালে সারা পৃথিবীতে প্রায় ১ কোটি ৯০   লাখের মতো মানুষের ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছিল। এরমধ্যে নন হজকিন ও হজকিনলিম্ফোমা, লিউকেমিয়া, মায়েলোমাসহ রক্তের  বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ লাখেরও বেশি মানুষ। একই পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে এক বছরে নতুন প্রায় দেড় লাখের মতো মানুষের ক্যান্সার শনাক্ত হয়। যার মধ্যে সাত হাজারের বেশি লোক রক্তের বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। এবছর এই  দিনটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে “ক্লোজ দ্যা কেয়ার গ্যাপ”  অর্থাৎ ক্যান্সার চিকিৎসা সেবায় কোনো ফাঁক রাখা যাবেনা। প্রতিটি মানুষই সমানভাবে এই  চিকিৎসা সেবা পাওয়ারঅধিকার রাখে। আর এভাবেই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা ক্যান্সারকে জয় করবএবং ক্যান্সার মুক্ত  পৃথিবী গড়ে তুলব।

ক্যান্সার সম্পর্কে কিছু তথ্য আপনাদের জানা থাকা দরকারঃ

– সারা পৃথিবীতে যত মানুষ মৃত্যুবরণ করে, ক্যান্সার হলো তার ২য় বৃহত্তম কারণ।

– প্রতি বছর প্রায় ১০ মিলিয়নের মতো মানুষ ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করে।

–  শতকরা ৪০ শতাংশেরও বেশি ক্যান্সারজনিত মৃত্যুকে আমরা প্রতিরোধ করতে পারি-  শুধু কিছু অভ্যাস পরিবর্তন এবং জীবনযাত্রার সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে। যেমন ধূমপান ও মদ্যপান পরিত্যাগ করতে হবে। সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।   নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে।

– ক্যান্সার জনিত মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশের বেশি আমরা প্রতিরোধ করতে পারি নিয়মিত ক্যান্সারের কিছু রুটিন স্ক্রিনিং টেস্টের  মাধ্যমে। যদি প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় সম্ভব হয়ত সঠিক চিকিৎসা নেয়া যাবে।

– স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশ অর্থাৎ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশেরও বেশি।

– ক্যান্সার প্রতিরোধের সঠিক পরিকল্পনা, প্রাথমিক ভাবে ক্যান্সার নির্ণয় ও উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে  আমরা মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষের জীবন বাঁচাতে পারি।

– ক্যান্সার চিকিৎসায় পৃথিবী ব্যাপী বাৎসরিক ব্যয় প্রায় ১.১৬ ট্রিলিয়ন ডলারের মতো। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারলে এই অর্থ স্বল্প  ও মধ্যম আয়ের দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগানো যেত।

ক্যান্সার কী?

মানুষের শরীরে যে কোষগুলো রয়েছে সেগুলো অনিয়ন্ত্রিত ও অস্বাভাবিক ভাবে যখন বৃদ্ধি পায় তখন কোষভেদে শরীরের বিভিন্ন জায়গায়  এই কোষগুলো লাম্প বা পিন্ড তৈরি করে যাকে টিউমার বলে। আর রক্তের ক্ষেত্রে রক্তের   কোষগুলো সংখ্যায় অপরিপক্বভাবে বৃদ্ধি পায়। এই ক্যান্সার কোষগুলো রক্ত ও লসিকা বা লিমফেটিক সিস্টেমের মাধ্যমে পরিপাকতন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে   ছড়িয়ে পড়ে। কখনও টিউমার গুলো হরমোন তৈরি করে যা শরীরের স্বাভাবিক কর্মকান্ড ব্যাহত করে।

ক্যান্সারের ধরনগুলো সাধারণত তিনভাগে ভাগ করা যায়ঃ

-বিনাইন

-টিউমার

-ম্যালিগন্যান্ট টিউমার এবং

-প্রি-ক্যান্সারাস অবস্থা।

বিনাইন টিউমার সাধারণত জীবনের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়না। কিন্তু ম্যালিগন্যান্ট টিউমার দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং পারিপার্শ্বিক টিস্যুতে  ছড়িয়ে পড়ে। এই ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ না করলে মৃত্যু ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে যায়। প্রি-ক্যান্সারাস অবস্থা পরবর্তীতে ক্যান্সার হতে পারে। কাজেই প্রি-ক্যান্সারাস অবস্থাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়।

ক্যান্সারের ধরনগুলো কে আমরা সাধারণত পাঁচ ভাগে ভাগ করতে পারি। যেমনঃ

-কার্সিনোমা

-সারকোমা

-লিম্ফোমা

-মাইলোমা এবং

-লিউকেমিয়া।

নন হজকিন ও হজকিনলিম্ফোমা, লিউকেমিয়া, মায়েলোমা রক্তের ক্যান্সারের অন্তর্গত। রোগের ঝুঁকি অনেকটাই নির্ভর করে ক্যান্সারের ধরন ও পর্যায়ের ওপর। প্রাথমিক পর্যায়ে যদি রোগনির্ণয় সম্ভব হয় তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে রক্তের  ক্যান্সার নিরাময় করা যায়।

ক্যান্সার হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। এক-তৃতীয়াংশের বেশি ক্যান্সার আমরা কিছু অভ্যাস, খাদ্যাভ্যাস ও   জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিরোধ করতে পারি। ক্যান্সারের কিছু কারণ রয়েছে যা আমরা পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারি  যেমনঃ

– মদ্যপান পরিত্যাগ

– শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা

– সুষম ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ

– নিয়মিত ভাবে শরীরচর্চা করা

–  ধূমপান পরিত্যাগ করা

–  অনিয়ন্ত্রিত ভাবে আয়োনাইজিং রেডিয়েশন ব্যবহার করা

– পেশাগত কারণে কেমিক্যাল ডাইয়ের সংস্পর্শে আসা যেমনঃ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে যারা কাজ করেন

– বিভিন্ন ধরনের ইনফেশনের জন্যও ক্যান্সার হতে পারে যেমনঃ হেপাটাইটিস বি, সি ও এইচ আই ভি ভাইরাসজনিত ইনফেকশন

ক্যান্সার হওয়ার আরও কিছু কারণ রয়েছে যা কিনা পরিবর্তন করা যায়- বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শরীরের কিছু জেনেটিকপরিবর্তন  ঘটে  ফলে পরবর্তীতে ক্যান্সার দেখা দেয়।

– ক্যান্সার উৎপাদনকারী কার্সিনোজেন যা মানবশরীরের জিনের পরিবর্তন ঘটিয়ে ক্যান্সার তৈরি করে।

– কিছু মানুষ দুর্ভাগ্যক্রমে জেনেটিক ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে ফলে পরবর্তীতে যা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। আবার শরীরের  দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের কারণেও ক্যান্সার হতেপারে।

ক্যান্সার হলে শরীরে কী ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে?

ক্যান্সারের প্রকারভেদে শরীরের উপসর্গও ভিন্ন ভিন্ন হতেপারেঃ

– হঠাৎ করে শরীরে অস্বাভাবিক লাম্প বা পিন্ড দেখা দিতে পারে

– কাশি, শ্বাসকষ্ট, ঢোক গিলতে অসুবিধা- এমন সমস্যাও ক্যান্সারের প্রাথমিক কারণ হতে পারে

– আবার হঠাৎ করে বাথরুমের ধরণ পরিবর্তন হতে পারে

– শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হতেপারে

– হঠাৎ করে শরীরের ওজন কমা শুরু হতে পারে

– অবসাদ, দুর্বলতা, মাংসে ও হাড়ের মধ্যে কখনও কখনও ব্যথা দেখা দিতে পারে

– শরীরে নতুন নতুন মোল অথবা মোলের ধরন পরিবর্তন হতে পারে

– হঠাৎ করে প্রস্রাবে সমস্যা দেখা দিতে পারে

– অস্বাভাবিক ভাবে স্তনের পরিবর্তন হওয়া

– খাওয়ার রুচি না থাকা ও হজমে অসুবিধা হওয়া

– শরীরের কোথাও ঘা হয়েছে কিন্তু শুকাচ্ছে না

– রাত্রে অস্বাভাবিকভাবে শরীর ঘেমে যাওয়া

ক্যান্সার প্রতিরোধ

এক-তৃতীয়াংশের বেশি ক্যান্সার আমরা প্রতিরোধ করতে পারি- বিষয়ক ক্যান্সার গুলো কমিয়ে আনার মাধ্যমে। প্রাথমিকভাবে ক্যান্সার নির্ণয়ের মাধ্যমে আমরা অনেক ক্যান্সার নির্মূল করতেপারি যেমনঃ Colorectal Cancer, Breast Cancer, Cervical Cancer, Oval Cancer  জাতীয়ভাবে আমরা Vaccination, testing and screening  সম্পর্কে জনগনকে উদ্বুদ্ধ ও সচেতন করতে পারি।

ক্যান্সার নির্ণয়:

  • রুটিন রক্ত পরীক্ষা, ক্যান্সার  screening test, অস্বাভাবিক পিন্ড বা Tumar এর Biopsy করে ক্যান্সার নির্ণয় করতে পারি।
  • Bone Marrow Examination, Immunohistochemistry, Cytochemistry, cytogenetic, Molecular Test, Next generation Sequencing, DET- CT Scan
  • USG, X-ray, CT-Scan, MRI

এসব পরীক্ষা ক্যান্সারের ধরন ভেদে যথাসময়ে করতে পারলে ক্যান্সার নির্ণয় সহজ হবে। ক্যান্সার   রোগের আধুনিক চিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই সম্ভব। সার্জারি, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, হরমোনথেরাপি, জিনথেরাপি এসব চিকিৎসা ব্যবস্থার   মাধ্যমে আমরা ক্যান্সার নির্মূল করতে পারি। প্যালিয়েটিভ কেয়ার- অনিরাময়যোগ্য ক্যান্সার চিকিৎসায় একটি নতুন সংযোজন। রক্তের   ক্যান্সারের আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসা বর্তমানে বাংলাদেশেই হচ্ছে। তবে এ রোগের আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসা বিস্তরভাবে দেয়ার জন্য   জাতীয় গবেষণা ও চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করা জরুরি। এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

অধ্যাপক ডা. মো.সালাহউদ্দীন শাহ

চেয়ারম্যান, হেমাটোলজি বিভাগ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

মোবাইল: ০১৯২২১১৭৬৭০

ই-মেইল: ংযধয.ভপঢ়ং@মসধরষ.পড়স, ংযধযথফৎ@নংসসঁ.বফঁ.নফ

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্যান্যজীবনজীবনযাত্রাবাংলাদেশ ও বিশ্ব

জন্মদিনে মোমবাতি নেভানো হয় কেন?

করেছে Shaila Hasan মার্চ ১, ২০২৩

অপরাহ উইনফ্রে একটি কথা বলেছেন, “তুমি তোমার জীবনের যত বেশি প্রশংসা এবং উদযাপন করবে, জীবনে উদযাপন করার মতো আরও বেশি কিছু আছে”। বেশিরভাগ মানুষের কাছে জীবনে উদযাপনের জন্য সবচেয়ে প্রতীক্ষার একটি দিন থাকে, আর তা হল তার জন্মদিন। কি শিশু, কি বুড়ো; সময়ের সাথে সাথে আনন্দের ছটা কিছুটা স্তিমিত হয়ে গেলেও জন্মদিনের সেই আবেগ, উত্তেজনা কিছুটা হলেও থেকেই যায়। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছো কি, জন্মদিনের সাথে পালিত যে রীতি রয়েছে, কোথা থেকে আবির্ভাব হলো তাদের? এই ব্যাপারে লিখেছেন শায়লা জাহান।

ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নিভিয়ে, কেক কাটা; আর চারপাশে করতালি দিয়ে হ্যাপি বার্থডে গান গেয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো আমাদের কাছে একটি চিরাচরিত ও পরিচিত রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জন্মদিন কেক ও মোমবাতি ছাড়া যেন সম্পূর্নই হয়না এবং এই আচারটি এমন একটি জিনিস যা সারা বিশ্বে প্রচলিত। কেক কাটা ছাড়াও, জন্মদিনের কেকে মোমবাতি লাগানো রীতি প্রায় কয়েক দশক ধরে চলে আসছে। ছোটবেলা থেকেই আমরা এই মোমবাতিটি নিভিয়ে তারপর কেক কাটতাম। আমরা কেন তা নিভিয়ে দিই এবং এর অর্থই বা কী? যদিও এই আচারের সঠিক উৎস এবং  তাৎপর্য অজানা, তবে এর একাধিক তত্ত্ব রয়েছে যা এই ঐতিহ্যকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে। আসো আমরা তা অনুসন্ধান করি।

জন্মদিনের কেকগুলোতে মোমবাতি রাখার ঐতিহ্য গ্রীকদের থেকে এসেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়। এই তত্ত্ব দাবী করে যে, প্রতি চান্দ্র মাসের ষষ্ঠ দিনে দেবী আর্টেমিসের জন্মকে সম্মান জানাতে তারা মোমবাতি ব্যবহার করতো। তাঁরা চাঁদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য বৃত্তাকার কেক বেক করত এবং প্রতিফলিত চাঁদের আলোকে উপস্থাপন করার জন্য তাতে মোমবাতি যুক্ত করা হত। এরপর সবাই মিলে প্রার্থনা করে ফুঁ দিয়ে মোমবাতি নিভিয়ে দেয়া হত। পৌত্তলিকদের কাছ থেকে আরেকটি তত্ত্ব এসেছে, যারা বলেছিল যে জন্মদিনের মোমবাতি গুলোর একটি প্রতীকী শক্তি ছিল। পূর্ববর্তী সময়ে বিশ্বাস করা হত যে খারাপ আত্মারা তাদের জন্মদিনে লোকেদের সাথে দেখা করে এবং জন্মদিনের ব্যক্তিকে রক্ষা করার জন্য, মোমবাতি জ্বালানো হয়েছিল এবং তাকে বন্ধুবান্ধব ও পরিবার দ্বারা ঘিরে রাখা হয়েছিল যাতে সে মন্দ আত্মাদের থেকে রক্ষা পায়।

কেকের উপর মোমবাতি রাখা জার্মানির একটি বিখ্যাত ঐতিহ্যও ছিল। যেখানে ধর্মীয় কারণে, লোকেরা “জীবনের আলো” প্রতীক হিসেবে কেকের কেন্দ্রে একটি বড় মোমবাতি রেখে তার চারপাশে ছোট ছোট  মোমবাতি দিয়ে সাজাত। কারো মতে, নিভে যাওয়া মোমবাতি থেকে নির্গত ধোঁয়া আকাশে আধিপত্যকারী দেবতাদের কাছে তাদের আন্তরিক ইচ্ছা এবং প্রার্থনা বহন করবে, অন্যরা বিশ্বাস করতো যে ধোঁয়া মন্দ প্রানীদের তাড়িয়ে দিতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও, ১৮৮১ সালে সুইজারল্যান্ডে মোমবাতি নিভানোর ঐতিহ্যের একটি রেফারেন্সও নথিভুক্ত করা হয়েছিলো।

এই ঐতিহ্যের পেছনে যেই তত্ত্ব থাকুক না কেন, আধুনিক সময়ে এই রীতিকে আরও বেশি আকর্ষনীয় ও অর্থবহুল করা হয়েছে। উদাহরণস্বরুপ, কেউ কেউ বিশ্বাস করে যে, জন্মদিন উদযাপনকারীকে অবশ্যই মোমবাতি নেভানোর আগে একটি নীরব শুভেচ্ছা জানাতে হবে। তারপর ফুঁ দিয়ে একসাথে মোমবাতি নেভাতে হবে। যদি একেবারেই সব বাতি নিভে যায় তবে মনে করা হয় যে, তার ইচ্ছা মঞ্জুর করা হবে এবং সেই ব্যক্তি সারা বছর সৌভাগ্য উপভোগ করবেন।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনবাংলাদেশ ও বিশ্বসাফল্যহেঁসেল

দুর্ঘটনাক্রমে তৈরি হওয়া মুখরোচক খাবার

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০২৩

শায়লা জাহান:

একটা কথার সাথে আমরা প্রায় সবাই পরিচিত- “ ভুল করে যদি দারুণ কিছু হয়, তবে ভূলই ভালো’। আর এই কথাটিই আমাদের আজকের লেখার জন্য একেবারেই প্রাসঙ্গিক। কীভাবে? আচ্ছা কখনও ভেবে দেখেছো কি, আমাদের প্রিয় যে খাবারগুলো রয়েছে তা কিভাবে এসেছে? প্রতিভাধর শেফরা সবসময় নতুন নতুন রেসিপি উদ্ভাবনে সচেষ্ট থাকে এবং তার স্বাদ আস্বাদনে আমাদের জন্য সুযোগ করে দেয়। তবে তুমি জেনে আশ্চর্য হবে যে, এমন কিছু জনপ্রিয় খাবার আছে যেগুলো নিয়মতান্ত্রিক ভাবে না হয়ে দূর্ঘটনার মাধ্যমে উদ্ভাবিত হয়েছিল। আর এমনই কিছু খাবারের তালিকা আসো দেখে নিই।

চকলেট চিপ কুকিজ

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হওয়া এই চকলেট চিপ কুকিজ দুর্ঘটনাক্রমেই তৈরি হয়েছিলো। ম্যাসাচুসেটসের হুইটম্যানের টোল হাউস ইনের মালিক রুথ ওয়েকফিল্ড ঘটনাক্রমে ১৯৩০-এর দশকে আইকনিক চকলেট চিপ কুকিজ তৈরি করেছিলেন। কীভাবে করলো? গল্পটি বলে যে, তিনি একটি চকলেট ডেজার্ট তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি তার কুকির ব্যাটারে ভাঙ্গা চকলেট বারের টুকরো যুক্ত করেছিলেন। ভেবেছিলেন যে তারা চুলায় গলে যাবে। তার আইডিয়াটি ভুল ছিলো কিন্তু বিনিময়ে বিশ্ব পেলো এক দূর্দান্ত ও জনপ্রিয় কুকি।

 

আইসক্রিম

এটি কীভাবে এসেছিল, তা নিয়ে কয়েকটি ভিন্ন গল্প রয়েছে, তবে সবচেয়ে সাধারণভাবে গৃহীত একটি হল যে এক চীনা বাবুর্চি একটি ঠাণ্ডা মিষ্টি তৈরি করার চেষ্টা করে দূর্ঘটনাক্রমে চিনির মিশ্রণের সাথে বরফ মিশ্রিত করেছিলেন,  এর মাধ্যমে  তিনি একটি সুস্বাদু খাবার তৈরি করেছিলেন যা আমরা আজও উপভোগ করি।

পটেটো চিপস

বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্ন্যাক খাবারগুলোর মধ্যে একটি ১৮৫৩ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিলো। নিউইয়র্কের মুন’স লেক হাউসের একজন শেফ জর্জ ক্রাম রাতে কাজ করছিলেন, সেই রাতে একজন অতিথি ফ্রাইয়ের প্লেট পরে প্লেট ফেরত পাঠাচ্ছিলেন। তার অভিযোগ ছিলো যে, আইটেমগুলো যথেষ্ট ক্রিসপি ছিলোনা। তার পছন্দ আনাতে ক্রাম অবশেষে আলুগুলোকে পাতলা করে কেটে গরম তেলে ভেজে, উপরে লবণ দিয়ে টস করে প্রেরণ করেন। পরে বাকিটা তো ইতিহাস। সেই সময়ে এগুলোকে সারাতোগা চিপস বলা হত। যা আমরা বর্তমানে আলুর চিপস বলে ডাকি।

কোক

কোমল পানীয় হিসেবে যা এখন কোকাকোলা নামে পরিচিত, জন পেম্বারটন প্রথম দিকে এটি কোন ড্রিংকস হিসেবে বানাতে চাননি। তার লক্ষ্য ছিল একটি মেডিকেল টনিক তৈরি করা যা মাথাব্যথা থেকে শুরু করে হজমের সমস্যা পর্যন্ত সব ধরনের রোগ নিরাময় করতে পারে। পেম্বারটন মূলত এটিতে অ্যালকোহল দিয়ে একটি টনিক তৈরি করেছিলেন কিন্তু পরবর্তীতে তা মিষ্টি স্বাদযুক্ত অ-অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়তে পরিণত হয়েছিলো।

দই

বেশিরভাগই একমত আছে যে, এটি খ্রিষ্টপুর্ব ৬শতকের প্রথম দিকে তুরস্কে তৈরি করা হয়েছিলো। এবং কীভাবে এটি আবিষ্কৃত হয়েছিলো? ইতিহাস বলে যে মধ্য এশিয় পশুবালকেরা তাদের অতিরিক্ত ছাগলের দুধ পশুর পেট থেকে তৈরি পাত্রে সংরক্ষণ করত, যা দুপুরের খাবার প্যাক করার একটি সহজ উপায়। কিছু পশুপালক অবাক হয়ে গেল যখন তারা পাত্রে দুধ দেখতে পেল যেটা ঘন হয়ে গেছে এবং টার্ট হয়েছে। কেন? যখন দুধ পেটের ব্যাগে ছিলো, ভাল ব্যাকটেরিয়া প্রস্ফূটিত হয়েছিল, এইভাবে দইয়ের আকস্মিক আবিষ্কারের দিকে পরিচালিত হয়েছিল।

পপসিকল

জানলে অবাক হবে এই পপসিকল মাত্র ১১ বছর বয়সী একটি ছেলে তৈরি করেছিলো। ১৯০৫ সালে সান ফ্রান্সিসকোতে, ফ্র্যাঙ্ক এপারসন নামে একটি ছেলে এক কাপ চিনিযুক্ত সোডা পাউডার মিশিয়ে লাঠি দিয়ে রেখে দেয়। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে যে সোডা কাঠির চারপাশে জমে গেছে। সে এর স্বাদ গ্রহণ করে এবং এটিকে এপসিকল বলার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে ১৯২৪ এর দিকে তিনি হিমায়িত ট্রিটটির পেটেন্ট করেন এবং তার নাম পরিবর্তন করে দেন পপসিকল।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.কান পেতে রইগ্রুমিংজীবনসচেতনতাসমস্যাসুস্থ মন

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা? জেনে নাও মুক্তির উপায়

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২৩

শায়লা জাহান:

নিজেদের সমস্যাগুলো সম্পর্কে চিন্তা করা সর্বদা একটি ভালো ধারণা। কিন্তু এই চিন্তার পরিমাণ যদি লাগামহীন ভাবে বাড়তেই থাকে, তাহলে কী করবে? প্রচলিত একটি কথা আছে, “ কোন কিছুতেই  খুব বেশি গভীরে যাবে না, এটি অতিরিক্ত চিন্তার দিকে নিয়ে যায় এবং অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা এমন সমস্যার দিকে নিয়ে যায় যেগুলোর কোন  অস্তিত্ব নেই।”

ক্ষুদ্র এই মানব জীবনের সাথে চিন্তা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কিন্তু এই চিন্তার পরিধি যখন আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায় তখনই তা রুপ নেয় দুশ্চিন্তার। যদিও প্রত্যেককেই কিছু না কিছু ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে কিন্তু কিছু ব্যক্তি এই ধ্রুবক বাঁধায় জর্জরিত থাকে। এই অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা অনেকটা ট্রেডমিলের মতো, যা থেকে সহজেই উতরানো যায়না। কোন কিছু সম্পর্কে খুব বেশি চিন্তা করা প্রায়শই শব্দের চেয়ে বেশি কিছু জড়িত থাকে। এটি একটি সময় এমনভাবে মাথায় গেঁড়ে বসতে পারে যা ঘুম, কাজ, সম্পর্ক, স্বাস্থ্য বা দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন দিকগুলোকে ব্যাহত করার পাশাপাশি পুরো জীবনকে নেতিবাচকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে যথেষ্ট।

ওভার থিংকিং- যাকে রিমিনেশন ও বলা হয়, এটি সাধারণত দুই ক্যাটাগরিতে পড়েঃ অতীত সম্পর্কে চিন্তা করা বা ভবিষ্যতের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। অতিরিক্ত চিন্তা করা কোন স্বীকৃত মানসিক ব্যাধি নয় ঠিকই কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থার সাথে যুক্ত থাকে, যার মধ্যে রয়েছেঃ

  • ডিপ্রেশন
  • উদ্বিগ্নতা
  • অবসেসিভ কম্পুলসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি)
  • পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি)

মুক্তির উপায়

অন্যান্য অভ্যাসের মতো, বিদ্যমান ধ্বংসাত্মক চিন্তার ধরণ পরিবর্তন করা একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। কিন্তু , ধারাবাহিক অনুশীলনের মাধ্যমে, তুমি তোমার মস্তিষ্ককে ভিন্নভাবে চিন্তা করতে প্রশিক্ষন দিতে পারো। এর জন্য কিছু উপায় রয়েছে। যেমন-

  • অতিরিক্ত চিন্তা করা এমন এক অভ্যাসে পরিণত হতে পারে যে যখন তুমি এটি করবে তখন নিজেই বুঝতে পারবেনা। এইজন্য তোমাকে শুরুতেই উদ্ভূত সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। পূর্ব থেকে সনাক্ত করা সমস্যার যদি কোন ফলপ্রসূ সমাধানের পথ না থাকে, তবে সে ব্যাপারে অহেতুক চিন্তা করা রোধ করা সম্ভব হবে।
  • জীবনে ভিড় করা হাজারো সমস্যা নিয়ে চিন্তা না করে সমধান সন্ধানের প্রতি ফোকাস করা বুদ্ধিমানের কাজ। যদি এটি এমন কিছু হয় যা সমাধানযোগ্য তবে তা বিবেচনা করে সম্ভাব্য সমাধান সনাক্ত করার জন্য নিজেকে চ্যালেঞ্জ করো। আর যদি এমন হয় যার উপরে তোমার কোন নিয়ন্ত্রণ নেই, সে ব্যাপারে তা  মোকাবেলা করার জন্য বিকল্প কৌশল গ্রহণ করো।
  • আমাদের মস্তিষ্ক যখনই ফাঁকা থাকবে তখনই এমন অতিরিক্ত চিন্তার বিষয়টি এসে ধরা দেবে। নিত্যদিনের কাজের পাশাপাশি যেকোন সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। মোট কথা মনোযোগ ভিন্নদিকে প্রবাহিত করতে হবে।
  • আমরা বর্তমান নিয়েই বসবাস করি। তাই গতকালকে রিহ্যাশ করা বা আগামীকাল নিয়ে চিন্তা করা অসম্ভব। এক্ষেত্রে মাইন্ডফুলনেস বা মননশীলতা স্কিল প্র্যাকটিস করো, এটি তোমাকে এখানে এবং এখন সম্পর্কে আরও সচেতন হতে সাহায্য করবে।
  • দীর্ঘ সময়ের জন্য যে কোন সমস্যার ব্যাপারে চিন্তা ফলদায়ক নয়, তবে সংক্ষিপ্ত প্রতিফলন সহায়ক হতে পারে। তুমি কীভাবে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পারো বা সে ব্যাপারে তোমার ত্রুটিগুলোকে স্বীকৃতি দিতে পারো সে সম্পর্কে চিন্তা করা তোমাকে ভবিষ্যতে আরও ভাল পারফর্ম করতে সহায়তা করতে পারে। এজন্য তোমার দৈনন্দিন সময়সূচীতেকিছু নির্দিশট সময় ‘চিন্তার সময়’ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে পারো। তবে সেই নির্দিষ্ট সময় শেষ হলে, অন্য কিছুতে চলে যাও। নির্ধারিত সময়ের বাইরে জিনিসগুলো নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা একেবারেই বাদ দিয়ে দিতে হবে।
  • সবশেষে, ইতিবাচক মনোভাব ধারণ করতে হবে। জীবন পুষ্পশয্যা নয়। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সবকিছুই মুদ্রার এপিঠ- ওপিঠের মতো জীবনে বিদ্যমান। পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, ভেঙ্গে পড়ে, চিন্তা করে কোন ফল পাওয়া যাবেনা। তাই সর্বক্ষেত্রেই অতিরিক্ত চিন্তা ঝেড়ে ইতিবাচক মানসিকতা পোষণ করতে হবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.অনুসঙ্গআয়নাঘরকেনাকাটারূপ ও ফ্যাশনরোদসীর পছন্দ

ঘরেই বানিয়ে নাও মেকআপ সেটিং স্প্রে

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ২৬, ২০২৩

সাজতে কে না ভালোবাসে? নিখুঁত ও পরিপাটি হয়ে নিজেকে উপস্থাপন করতে সবাই চায়। কিন্তু কিছুক্ষণ বাদেই তা যখন ঘেমে-নেয়ে একাকার হয়ে যায়, এর চেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন আর কি হতে পারে? আর এর সমাধানের জন্য রয়েছে মেকআপ সেটিং স্প্রে। যা তুমি খুব সহজেই ঘরে বসেই তৈরি করে নিতে পারো নিজের সেটিং স্প্রে। আর এমন কিছু ডিআইওয়াই সেটিং স্প্রে’র আইডিয়া শেয়ার করেছেন শায়লা জাহান।

মেকআপের মাধ্যমে নিজেকে নিখুঁত দেখাতে আমরা কতধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। ফাউন্ডেশন, কনসিলার, ব্লাশন, হাইলাইটার আরও কত কি। সাজ দীর্ঘস্থায়ী রাখার প্রয়াসে প্রাইমার আর টাচ-আপের জন্য প্রেসড পাউডার লাগাতেও ভুল হয়না আমাদের। কিন্তু এতো কিছুর পরেও দেখা যায় ঘাম এবং তেল তোমার ফাউন্ডেশনকে গলিয়ে দিতে পারে এবং বিনিময়ে তোমাকে একটি তেলতেলে চেহারা দিতে পারে যা এক বিব্রতকর পরিস্থিতির রুপ দিতে পারে। সেক্ষেত্রে সেটিং স্প্রেগুলো তোমার মেকআপকে দীর্ঘ সময়ের জন্য ধরে রাখার জন্য বোঝানো হয়, যা প্রায়শই আমরা উপেক্ষা করে থাকি। এটি মেকআপের শেষে মুখের উপর হালকাভাবে ছিটিয়ে দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, স্প্রে সেট করা তোমার সমস্ত মেকআপকে দৃঢ়ভাবে জায়গায় রাখতে সাহায্য করে- এটিকে ক্রিজ হওয়া, গলে যাওয়া বা অন্যথায় নষ্ট হওয়া থেকে রোধ করে।

মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, এটি তো কিনতেই পাওয়া যাবে, বাসায় তৈরি করতে হবে কেন? যে কোনো সচেতন সৌন্দর্যপ্রেমীর বিউটি টুলকিটে সেটিং স্প্রে অবশ্যই থাকবে। কিন্তু প্রচলিত যে সেটিং স্প্রে আছে ক্রেতাদের জন্য তা উপকারের চেয়েও কিন্তু এক মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি উপস্থাপন করে। এসব সেটিং স্প্রে বা মিস্টগুলোতে হার্শ ক্যামিকেল থাকে যা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এই পণ্যগুলো রাসায়নিক আঠালো দিয়ে তৈরি করা হয় যাতে সেগুলো ত্বকের উপরিভাগে একটি আবরণের তৈরি করে যা তোমার মেকআপকে ঠিক রাখে। দূর্ভাগ্যবশত, এই একই আঠালোভাব তোমার স্কিনের পোরস আটকাতে পারে, ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে, ত্বককে শ্বাস নেয়া বা ঘামাতে বাধা দিতে পারে, সময়ের সাথে সাথে যা শুধুমাত্র ক্ষতিতে অবদান রাখে। সেটিং স্প্রেগুলোতে ক্ষতিকারক অ্যালকোহল থাকে যা বারবার ব্যবহার করার সময় ত্বকে বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলতে পারে, শুষ্কতা, কোষের পুনর্জন্ম হ্রাস এবং ত্বকের পৃষ্ঠের ক্ষয় ঘটায়। ত্বকের এতসব পরিণতি সম্পর্কে চিন্তা করে কেন নিজের সেটিং স্প্রে তৈরি করবেনা? আর এমনই কিছু সহজ উপাদান দিয়ে স্প্রে তৈরির আইডিয়া জেনে নাও।

অ্যালোভেরা সেটিং স্প্রে

অ্যালোভেরা জেল ত্বকের উপরিভাগ ম্যাট এবং তেলমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। এটি তোমার ত্বকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি এবং আর্দ্রতা সরবরাহ করে। এছাড়াও এটি ত্বককে উজ্জ্বল করতে এবং ব্রণ কমানোর জন্যও সুপরিচিত। অ্যালোভেরা সেটিং স্প্রে শুষ্ক ও কম্বিনেশন ত্বকে খুবই ভালো কাজে দেয়। আধা কাপ পানিতে অ্যালোভেরা জেল নাও। এতে চার-পাঁচ ফোঁটা গ্লিসারিন এবং এক-দুই টেবিল চামচ গোলাপ জল ভালো করে মিশিয়ে নাও। একটি স্প্রে বোতলে মিশ্রণটি ঢেলে কিছুক্ষণ ঝাঁকিয়ে নাও। ব্যস! তোমার সেটিং স্প্রে রেডি।

রোজ ওয়াটার সেটিং স্প্রে

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং কুলিং বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ, রোজ ওয়াটার ত্বকের পিএইচ স্তর বজায় রাখে এবং তৈলাক্ততা দূর করে। এই মেকআপ সেটিং স্প্রে সতেজ এবং তৈলাক্ত এবং কম্বিনেশন ত্বকের জন্য উপযুক্ত। রেগুলার ওয়াটারের সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে নিয়ে তাতে ভিটামিন ই অয়েল, এসেনশিয়াল অয়েল যোগ করতে হবে এবং তা ভালো করে মিশিয়ে নিলেই হবে। প্রতিবার ব্যবহারের আগে ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিতে হবে।

গ্রিন টি সেটিং স্প্রে

গ্রিন টি দিয়ে তৈরি এই পুনরুজ্জীবিত মেকআপ সেটিং স্প্রে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ। এটি মেকআপকে দীর্ঘস্থায়ী করে এবং ত্বককে সতেজ এবং মসৃণ করে তোলে। ১৫-২০ মিনিটের জন্য ফুটন্ত পানিতে গ্রিন টি ব্যাগগুলো তাতে ডুবিয়ে রাখো। এরপর পানিটি ঠাণ্ডা করে তাতে মিশাও ভিটামিন ই অয়েল যোগ করে ভালোভাবে মিশালেই হয়ে যাবে।

উইচ হ্যাজেল সেটিং স্প্রে

উইচ হ্যাজেল হল এমন একটি উপাদান যা বিভিন্ন টোনার এবং ফেস ওয়াশে ব্যবহৃত হয়। প্রকৃতিতে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল, উইচ হ্যাজেল অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে। তাজা গোলাপ জলের সাথে জাদুকরী হ্যাজেল নির্যাস মিশিয়ে নাও। এই মিশ্রণটি একটি স্প্রে বোতলে ঢেলে নাও এবং এটি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত। গোলাপ জল এবং উইচ হ্যাজেল ব্রণ-প্রবণ, তৈলাক্ত এবং পরিপক্ক ত্বকের জন্যও চমৎকার উপাদান, যা এই ডিআইওয়াই সেটিং স্প্রেকে যে কোনো ধরনের ত্বকের জন্য একটি শক্তিশালী বিকল্প তৈরি করে।

ঘরে তৈরি যে কোন স্প্রে’ই ব্যবহার করার আগে এই সমস্ত স্প্রে প্যাচ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে নেয়াই ভালো।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গআয়নাঘরকেনাকাটানারীরূপ ও ফ্যাশনরোদসীর পছন্দ

মেকআপ টিপস এন্ড ট্রিকস

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২৩

শায়লা জাহান:

কর্মক্ষেত্রে যাওয়া হোক কিংবা কোন পার্টি, প্রতিনিয়তই আমরা সকলেই মোটামুটি মেকআপ করে থাকি। এই ব্যাপারে তুমি একজন বিগেইনার বা এক্সপার্ট হও না কেন, মেকআপ বিষয়ক কিছু টিপস এবং কৌশলের ব্যাপারে জানা থাকলে কোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি না হয়ে সঠিক সময়ে সঠিকভাবে নিজেকে প্রেজেন্ট করতে সর্বদা কাজে আসবে। আর এই লেখাটি সাজানো হয়েছে এমন কিছু মেকআপ কৌশল নিয়ে।

মেকআপ হল একটি শিল্প। একজন আর্টিস্ট যেমন রঙ তুলির ছোঁয়ায় একটি সাধারণ কাগজে অসাধারণ চিত্র ফুটিয়ে তুলতে পারে, তেমনি মেকআপের সাহায্যে আমরা আমাদের চেহারার স্বাভাবিক সৌন্দর্য বজায় রেখেই একে আরও উন্নত করতে পারি। আর নিখুঁতভাবে তা ফুটিয়ে তুলতে ধৈর্য ও মনোযোগের পাশাপাশি জানা দরকার কিছু কৌশলের। যা অনেক কাজে দেবে। উদাহরণস্বরূপ, একটি সাধারণ কৌশল তোমাকে আইশ্যাডো ব্যবহার করে নিখুঁত উইং ডিজাইন পেতে সাহায্য করতে পারে। আবার কন্ট্যুর করতে কিংবা হাইলাইট করতে একই আইশ্যাডো প্যালেট কীভাবে কাজে আসতে পারে। এমন অনেক ছোট ছোট আইডিয়ার মাধ্যমে তুমি খুব সহজেই ত্রুটিবিহীন এবং মার্জিত একটি লুক ক্রিয়েট করতে পারবে।

  • একটি স্মার্ট মেসি-মুক্ত মেকআপ চাও? তবে মুখের মেকআপ শুরু করার আগে চোখের মেকআপ করে নাও। আগে বেজ তৈরি করে নিলে পরবর্তীতে গালে পাউডার শ্যাডো পড়ে যাওয়া বা আই লাইনার স্ম্যাশ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই তা এড়াতে এই পদক্ষেপটি নিতে পারো। এবং চোখের কিছু দেয়ার আগে প্রাইমার বা ক্রিম শ্যাডো দিয়ে বেস ঠিক করে নিতে পারো। এতে চোখের মেকাআপের সতেজ ও মসৃণভাব দেখাবে।
  • শ্যাডোর ক্ষেত্রে ডার্ক আইয়ের জন্য ওয়ার্ম টোন এবং লাইট আইয়ের জন্য শীতল বা হালকা টোন, কখনোই তোমাকে নিরাশ করবেনা। চোখের লিডে কিছুটা ফ্যাকাশে, শিমারী শ্যাডো তোমার টায়ার্ড চোখে স্পার্কল যোগ করবে। ক্রিজের জন্য চুজ করবে মাঝারি শেড, যা যেকোন ফ্লেশিভাব দূর করতে ও চোখকে বড় দেখাতে সাহায্য করবে।
  • মেকআপকে দীর্ঘসময়ের জন্য ধরে রাখার জন্য প্রাইমারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তো সবারই জানা আছে। তেল বা ওয়াটার বেইসড যে প্রাইমারই ব্যবহার করোনা কেন, তোমার প্রাইমার এবং ফাউন্ডেশন যেন একই ধরনের হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় এদের একসাথে মিশাতে কঠিন করে তুলবে।
  • ফাউন্ডেশন এপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে কি ধরনের কভারেজ চাও আগে তা ঠিক করে নাও। যদি তুমি নিখুঁত কভারেজ চাও, তবে আঙুল দিয়ে নিয়ে তা স্কিনে ড্যাব ড্যাব করে লাগিয়ে নাও। আর যদি ফুল কভারেজ চাও তবে একটি ফাউন্ডেশন ব্রাশ বেছে নাও। সেক্ষেত্রে একসাথেই একেবারে পুরে মুখে ফাউন্ডেশন না দিয়ে অল্প অল্প করে ব্রাশ বা আঙুলের সাহায্যে লাগিয়ে তারপরে স্পঞ্জ দিয়ে যে কোন লাইন ব্লেন্ড করে দিতে পারো।
  • সবসময় নীচের দিকে স্ট্রোক করে ফাউন্ডেশন লাগাও। আমাদের বেশিরভাগের মুখে চুলের পাতলা স্তর থাকে এবং উপরের দিকে ফাউন্ডেশন লাগালে চুলের স্ট্র্যান্ডগুলো আলাদা হয়ে যায়। ফাউন্ডেশন ব্রাশ মেকআপকে ফাটল ধরা থেকে বাধা দেবে। মুখের মাঝখান থেকে শুরু করো এবং ফাউন্ডেশনকে বাইরের দিকে মিশিয়ে দাও। নাকের ছিদ্র, নাকের নীচে, ঠোঁটের চারপাশে এবং নাক থেকে মুখের ক্রিজগুলোতে নিয়ে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করে নাও। চোখের নীচে, নাকের পাশে ভেতরের কোণের জন্য ছোট কনসিলার ব্রাশ ব্যবহার করো।
  • মুখের ছোট ছোট দাগ, ডার্ক সার্কেল, পিগমেন্টেশন আড়াল করতে কনসিলারের জুড়ি নেই। সবসময় ফাউন্ডেশন থেকে এক শেড হালকা কনসিলার নির্বাচন করো। আমরা বেশিরভাগই চোখের নিচে অর্ধবৃত্তাকার প্যাটার্নে কনসিলার প্রয়োগ করতে অভ্যস্ত। কিন্তু সর্বোত্তম ফলাফলের জন্য, চোখের নিচে ত্রিভুজাকৃতি করে কনসিলার দিলে ভালো। এতে শুধুমাত্র যে তোমার পিগমেন্টেশন বা ফোলাভাব লুকানোর জন্য ভালো কাজ করে তা না, এটি মিশ্রিত করাও সহজ।
  • মুখের গুরুত্বপূর্ণ ফোকাল পয়েন্টগুলো সম্পর্কে জেনে নাও। এই হ্যাকটি তোমার তখনই বেশ কাজে দেবে, যখন তোমার তাড়া আছে বা কনসিলার সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে আলসে বোধ করছো। এক্ষেত্রে একটি ব্রাশ দিয়ে কিছুটা কনসিলার নিয়ে তোমার চোখের নীচে, মুখের কোণে এবং নাকের কাছে লাগিয়ে নাও। এর মাধ্যমে শুধুমাত্র তোমার মুখের কেন্দ্রটি হাইলাইট করাই হয়েছে।
  • মুখের বেজ মেকআপের শেষ স্তর বলা হয় ফেস পাউডার। ফেস পাউডার প্রাধানত দুই ধরনের হয়- লুজ পাউডার এবং প্রেসড পাউডার, এবং উভয়ই ডিউয়ি এবং ম্যাট ফিনিশের মধ্যে আসে। কোনটা কোন কাজে ব্যবহৃত হয় তা জানা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। লুজ পাউডার মেকাপকে সঠিকভাবে সেট করতে এবং দীর্ঘস্থায়ী করতে ব্যবহার করা হয়। আর প্রেসড পাউডার টাচ-আপের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।
  • ত্বকে একটুখানি ব্লাশনের ছোঁয়া তোমাকে তাৎক্ষণিক স্নিগ্ধ ও সজীব দেখাবে। একটু অন্যভাবে ব্লাশন ব্যবহার করতে পারো। এর জন্য তোমাকে প্রথমে ব্লাশ লাগিয়ে তার উপর ফাউন্ডেশন লাগাতে হবে। ফলাফল দেখলে তুমি নিজেই চমকে উঠবে। মনে হবে তুমি ভেতর থেকে যেন গ্লো করছো। তবে ব্লাশটি হতে হবে ক্রিম বা লিকুইড ফর্মের। পাউডার ব্লাশের ক্ষেত্রে তা প্যাচিনেস সৃষ্টি করতে পারে।
  • পাউডার দিয়ে ব্লাশ ব্লাটিং করার পরিবর্তে একটি টিস্যু পেপার ব্যবহার করো। প্রয়োগ করার পর এটিকে হালকাভাবে ব্লাশের উপর প্রেস করে নাও। তারপর ব্রাশ বা স্পঞ্জ দিয়ে বাকি কাজ শেষ করে নাও।
  • চোখে আই লাইনার লাগাতে যেয়ে বেশ হ্যাপায় পড়তে হয়না এমন সংখ্যা খুব কমই আছে। এক চোখে পারফেক্টলি ওকে থাকলে দেখা যায় আরেক চোখে সব ভন্ডুল হয়ে যায়। এই ঝামেলা থেকে বাঁচতে তোমার ল্যাশ লাইনে একেবারেই সরল রেখা আঁকার চাইতে লাইনার দিয়ে ছোট ছোট ডট বা ড্যাশ এঁকে নাও এবং তাদের একসাথে মিলিয়ে দাও। নিখুঁতভাবে করা আইলাইনার পেয়ে যাও নিমিষেই।
  • সব তো হলো। কিন্তু ঠোঁট রাঙানো ছাড়া সব সাজ যেন অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। ঠোঁটের আকৃতি সুন্দর দেখাতে লিপ লাইনার দিয়ে এর আউটার লাইন এঁকে নাও। লিপ লাইনার এবং লিপস্টিক সবসময়ই একই শেড নির্বাচন করো, না হলে তা দেখতে দৃষ্টিকটু দেখাবে। লিপস্টিক লাগাতে সবসময় মাঝখান থেকে শুরু করে বাইরের দিকে লাগাতে হবে। ঠোঁটকে আরও সুন্দর ও ডিফাইন করতে এর আউটার লাইনের বাহিরে কনসিলার দিয়ে সেট করে নাও। সবশেষে লিপস্টিকের স্থায়িত্ব ধরে রাখতে এর উপর টিস্যু পেপার ধরে কিছু পাউডার বুলিয়ে নাও।

একদিনেই কেউ রাতারাতি মেকআপে এক্সপার্ট হতে পারেনা। যত তুমি প্র্যাক্টিস করবে ততই তুমি অভিজ্ঞ হবে। তবে হ্যাঁ, শুধু মেকআপ করলেই কিন্তু হবেনা; সাথে তোমার ব্যবহার করা মেকআপ ব্রাশ, বিউটি ব্লেন্ডারগুলো সময়ে সময়ে পরিষ্কার করা জরুরী। কারণ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার সূত্রপাত কিন্তু এসব থেকেই হয়ে থাকে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.অনুসঙ্গআয়নাঘররূপ ও ফ্যাশনসচেতনতা

কালচে ঠোঁট দূরীকরণের উপায়

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ২২, ২০২৩

আমাদের ত্বকের রঙের মতোই, ঠোঁটের রঙ ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, ঠোঁটের রঙ বা অবস্থার পরিবর্তন আমাদের নির্দেশ করতে পারে যে ঠোঁটের আরও যত্নের প্রয়োজন। তোমার ঠোঁট যদি কিছুটা কালচে হয়েই যায়, চিন্তার কোন কারণ নেই। ঘরোয়া এমন অনেক উপায় আছে যার মাধ্যমে তুমি এর স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে পারবে। আর এইসব কিছু নিয়ে আইডিয়া শেয়ার করেছেন শায়লা জাহান।

আমরা সকলেই গোলাপি ঠোঁট চাই যা দেখতে গোলাপী এবং স্পর্শে নরম মনে হয়, তাই না? আসলেই কি আমাদের সকলের ঠোঁট এমন কি? প্রায় অধিকাংশেরই উত্তর আসবে না। আমরা শুধুমাত্র কালো, পিগমেন্টেড ঠোঁট আড়াল করতেই তা লিপস্টিকের প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দিই। কিন্তু এই ভারী লিপস্টিকের স্তরগুলো ছাড়াই তোমার ঠোঁটের প্রাকৃতিকভাবে কি গোলাপী ভাব আনা কি সম্ভব? এর উত্তর, অবশ্যই সম্ভব। ভাবছো কীভাবে? এই সমস্যার পেছনে সমস্ত কারণ এবং সমাধান জানিয়ে দিচ্ছি। সবার আগে আমাদের জানতে হবে ঠোঁট কালচে হবার পেছনের কারণ কি? একে আমরা দু’ভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি-

লাইফস্টাইল ইস্যু

হাইপারপিগমেন্টেশনের ফলে ঠোঁট কালো হয়ে যেতে পারে। এটি মেলানিনের আধিক্য দ্বারা সৃষ্ট একটি অবস্থা। ঠোঁটের হাইপারপিগমেন্টশনের কারণে হতে পারেঃ

– সূর্‍্যের অত্যধিক এক্সপোজার

– হাইড্রেশনের অভাব

– সিগারেট বা ধূম্রপান

– লিপস্টিক বা টুথপেস্টে (ফ্লোরাইড) উপস্থিত রাসায়নিকের এলার্জির কারণ

– বেশিমাত্রায় ক্যাফিন গ্রহণ

মেডিকেল ইস্যু

– রক্তস্বল্পতা, নির্দিষ্ট কিছু ভিটামিনের অভাব

– কেমোথেরাপি

– অত্যধিক ফ্লোরাইড ব্যবহার

কালচেভাব দূরীকরণের উপায়

ঠোঁট ময়েশ্চারাইজ করা

ঠোঁট যাতে সর্বদা ময়েশ্চারাইজ থাকে তার জন্য লিপ বাম ব্যবহার করতে হবে। বিশেষত উচ্চ এসপিএফ যুক্ত বাম, কালো ঠোঁট হালকা করতে সাহায্য করতে পারে। এই বামগুলো ঠোঁটকে আর্দ্র রাখে, এর রঙ আরও কালচে হতে বাধা দেয়।

সানব্লক ব্যবহার করা

ঘরের ভেতর বা বাহির, সবসময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরী। সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মিগুলোকে হাইপারপিগমেন্টেশন হতে বাধা দেয়ার জন্য একে ঠোঁটেও ব্যবহার করা নিশ্চিত করতে হবে।

এক্সফোলিয়েশন করা

ঠোঁটের রঙ হালকা করতে, এক্সফোলিয়েটর দিয়ে আলতো করে স্ক্রাব করতে পারো। ঠোঁটের মরা চামড়া দূর করতে সামান্য মধু ও চিনি মিশিয়ে কিংবা লেবুর রস ও চিনি দিয়ে স্ক্রাবার বানিয়ে তা ঠোঁটে এপ্ল্যাই করতে পারো।

গ্লিসারিন দিয়ে ময়েশ্চারাইজ

গ্লিসারিন ঠোঁটের সূক্ষ্ম ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে, এটি নমনীয় এবং মসৃণ রাখে। লেবুর রসের সাথে একে মিশিয়ে ব্যবহার করলে মৃত কোষ দূর করার পাশাপাশি ঠোঁটের রঙ হালকা করে।

প্রাকৃতিক প্রতিকার

  • গবেষণা দেখায় যে, অ্যালোভেরা জেলে মেলানিন প্রতিরোধকারী উপাদান রয়েছে। ঠোঁটে তাজা অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে তা শুকিয়ে ধুয়ে ফেললে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে।
  • ঠোঁটে কয়েক ফোঁটা এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল লাগাতে পারো। এটি হাইড্রেট করবে এবং গাঢ় রঙ হালকা করতে সাহায্য করবে।
  • ২০১০ এর এক সমীক্ষা অনুযায়ী, হলুদ একটি মেলানিন ইনহিবিটর হিসেবে কাজ করতে পারে। দুধের সাথে কিছুটা হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে সেই পেস্ট ঠোঁটে লাগিয়ে রাখতে হবে। পরে ধুয়ে ফেলে তোমার প্রিয় ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নাও।
  • শসা খাওয়ার পাশাপাশি এর রস লাগালে ঠোঁটের কালচে ভাব কমানো যায়। বিটরুট পেস্ট দিয়েও একই কাজ করা যায়। ধুয়ে ফেলার পর লিপবাম লাগিয়ে নাও।

পিগমেন্টেড ঠোঁট পরিস্থিতি বর্তমানে সারা বিশ্বে সাধারণ একটি সমস্যা। তবে একটু যত্ন ও মনোযোগ দিতে পারলে খুব সহজেই এগুলো প্রতিরোধ করা যায়। ঠোঁটের প্রসাধনী যেমন লিপস্টিক, লিপগ্লস বা এমনকি লিপবাম নির্বাচন করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। কারণ এসবের কিছু রাসায়নিক ঠোঁটের রঙ বদলে দিতে পারে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ঘরেই বানিয়ে নাও মেকআপ সেটিং স্প্রে

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook