রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
লেখক

Shaila Hasan

Shaila Hasan

বলিউডবিনোদনরোমান্স রসায়নসিনেমা

তারকাদের অসমাপ্ত প্রেমের গল্প

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২৬, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

সৃষ্টির শুরুতে আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়া থেকে শুরু করে প্রেম, ভালোবাসার সুচনা ঘটেছিলো। কত কত সাহিত্য রচিত হয়েছে একে ঘিরে। শিরিন-ফরহাদ, রোমিও-জুলিয়েট-এর মতো ইতিহাসখ্যাত চরিত্র আজো জনমনে জীবন্ত হয়ে আছে। প্রেম কী? এই প্রশ্নের সদুত্তর আজো অজানা। কারো মতে, প্রেম হলো স্বর্গ থেকে আসা এমন এক আবেগ যা জীবনে অমর হয়ে রয়। আবার কারো মতে, ব্যক্তি তো প্রেমে পড়ে না, বরং প্রেম ব্যক্তির উপর ভর করে। একে যেভাবেই সংজ্ঞায়িত করা হোক না কেন মূল ব্যাপার হল প্রেম হলো ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ যার দ্বারা অন্যের উপর তীব্র আকর্ষণ ও অনুভূতির সঞ্চার হয়। এই যদি হয় প্রেম তবে বিচ্ছেদ কী? বিখ্যাত ‘রোমিও জুলিয়েট’ নাটকের সংলাপের আলোকে বলতে হয় “বিচ্ছেদ হলো একটি মধুর দুঃখ”।

বিনোদন পাড়ার জগতে তারকাদের লাইফ স্টাইল ব্যাপারে জানার আগ্রহ কার না থাকে। আর তা যদি হয় তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক, তবে তো তা সকলের আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে। তারকারা পর্দায় কতবার প্রেমে মজেছেন। সকল বাধা বিপত্তি পেরিয়ে হিরোইজমের সহিত প্রেম হাসিলও করে নিয়েছেন। কিন্তু বাস্তব জীবনে এমন অনেকেই আছেন যারা প্রেম করে হয়েছেন ব্যর্থ। জীবনে যাদের রচিত হয়ে গেছে অসমাপ্ত প্রেমের গল্প। আজ এমনই কিছু প্রেমে ব্যর্থ তারকাদের গল্প জানা যাক।

মধুবালা-দিলীপ কুমার

মমতাজ জাহান দেহলভী, যিনি মধুবালা নামেই বেশি পরিচিত। রুপ-সৌন্দর্য, চোখের চাহনি সবকিছু মিলিয়ে তিনি ছিলেন হাজারো পুরুষের স্বপ্নের রানী। ‘মুঘল-ই-আজম’ ছবিতে তাঁর ‘প্যায়ার কিয়া তো ডরনা ক্যায়া’ গানের সাথে অসাধারণ পারফরম্যান্স সকলকে করেছে মন্ত্রমুগ্ধ। অভিনেতা ও গায়ক কিশোর কুমারের স্ত্রী হওয়ার আগে, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি কয়েকবার সম্পর্কে জড়ালেও দিলীপ কুমারের সাথে তাঁর প্রেম কাহিনী বেশ সাড়া জাগিয়েছিলো। তাদের প্রেম কাহিনী শুরু হয় ‘তারানা’ ছবির সেটে। এরপরে একদিকে যেমন পরপর ছবি করতে থাকেন, অন্যদিকে তাঁদের প্রেমও হতে থাকে গাঢ়। দুজনে দেখেছিলেনও সারাজীবন একসাথে থাকার স্বপ্ন। কিন্তু বিধির নিয়তি, না যায় খন্ডন। ক্যারিয়ারের ইগো আর মধুবালার বাবার জন্য ভেঙে যায় সেই স্বপ্ন। পরবর্তীতে দুজনে পৃথকভাবে সংসার করলেও অতৃপ্ত এক ভালোবাসা তাঁদের মনে রয়েই যায়।

রেখা-অমিতাভ

বলি ইন্ডাস্ট্রির দুই কিংবদন্তী অমিতাভ বচ্চন এবং রেখার প্রেমের গল্প এখনও পর্যন্ত বলিউডের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি। এই বহুল আলোচিত প্রেমের গল্পটি সর্বদা এক রহস্যে আবৃত রয়ে গেছে। গল্পের শুরুটা হয়েছিলো ফিল্ম ‘দো আনজানে’ এর সেটে। যদিও তার আগে থেকেই অমিতাভ ছিলেন বিবাহিত। কিন্তু প্রেম কি আর বাধা মানে? গোপনে চলে তাঁদের প্রণয় সম্পর্ক। পরে ব্যাপারটি যখন মিডিয়ার লাইমলাইটে আসে, দুজনেই প্রেমের বিষয়টি অস্বীকার করে। ঋষি কাপুর ও নিতু সিংহের বিয়েতে মাথায় সিঁদুর দিয়ে রেখার উপস্থিতি সবাইকে চমকিয়ে দেয়। গভীর প্রণয় থাকাকালে রেখা-অমিতাভ-জয়া অভিনয় করেন ‘সিলসিলা’ মুভিতে। এই ছবির শুটিংয়ে অমিতাভ ও রেখার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে ঝড় উঠে অমিতাভ-জয়ার দাম্পত্য জীবনে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত জয়াকে সামলাতে এবং দাম্পত্য জীবন সামলাতে ছবি করা তো দূরের কথা, রেখার জীবন থেকে চিরতরেই সরে যান বিগ বি।

সালমান খান-ঐশ্বরিয়া রাই

বলি-ইন্ডাস্ট্রিতে সম্পর্কের গল্প, হৃদয়বিদারক এবং দুঃখজনক সমাপ্তির শিরোনাম হতে সময় লাগেনা। বলিউডের ড্যাশিং নায়ক সালমান খান এবং সাবেক বিশ্ব সুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সম্পর্ককে এখনও সবচেয়ে রোমান্টিক এবং একই সাথে সর্বকালের খারাপ সম্পর্কগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে দেখানো হয়। তাঁদের প্রেমের মধুর রসায়ন থেকে শুরু করে উত্তপ্ত বিতর্ক যা তাঁদের বিচ্ছেদের পর বছর ধরে চলতে থাকে। সঞ্জয় লীলা বানসালি-র ‘হাম দিল দি চুকে সানাম’ ছবিতে তাঁদের অন-স্ক্রিনের পাশাপাশি অফ-স্ক্রিন কেমিস্ট্রিও জমে উঠে। পরবর্তীতে ‘হাম তুমহারে হ্যায় সানাম’ ছবিতেও তাঁদের একসাথে দেখা গেছে। ১৯৯৯-২০০১ সাল পর্যন্ত সালমান খান এবং ঐশ্বরিয়া রাই এর মাঝে সবই চলছিলো ভালোই। কিন্তু কোথাও গিয়ে ঘটে ছন্দ পতন। কথিত আছে, সালমান খানের অত্যাধিক পজেসিভনেস তাঁদের সম্পর্কের ভাঙনের নেপথ্যে ছিল। এই নিয়ে ব্যক্তিগত ও ক্যারিয়ার জীবনে উঠে অশান্তি। ঐশ্বর্যের গায়ে হাত তোলার ঘটনাও নাকি ঘটে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সম্পর্ক থেকে সরে পরেন এই বলি সুন্দরী। বর্তমানে অভিষেক বচ্চনকে বিয়ে করে সন্তান সহ সুখেই আছেন এই নীল নয়না। একাধিক সম্পর্কে জড়ালেও সালমান আজোও রয়ে গেছেন ব্যাচেলর।

অভিষেক বচ্চন-কারিশমা কাপুর

আরেকটি রহস্যময় ব্যর্থ প্রেমের গল্প রচিত হয়েছে অভিষেক বচ্চন ও কারিশমা কাপুরকে নিয়ে। তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে যখন কারিশমা ছিলো পুরোদস্তুর স্টার আর অভিষেকের তখন নায়ক পাড়ায় আগমন ঘটেনি। তাদের সম্পর্কের বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই অমিতাভের ৬০ তম জন্মদিনের পার্টিতে অনুষ্ঠিত হয় এংগেইজমেন্ট। কিন্তু কয়েকমাস যেতে না যেতেই হঠাৎ করেই বিয়েটা বন্ধ হয়ে যায়। এই ব্রেকআপের পেছনে বাতাসে ঘুরতে থাকে নানান গুঞ্জন।

বিপাশা বসু-জন আব্রাহাম

লম্বা সময় প্রায় এক দশক ধরে প্রেম করেছিলেন জন আব্রাহাম ও বিপাশা বসু। প্রথমে ডিনো মারিয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও পরবর্তীতে জন আব্রাহামের প্রেমে পরে যান এই বাংগালি সুন্দরী। কিন্তু এতো বছরের সম্পর্কও শেষ পর্যন্ত টিকাতে পারলেননা তারা।

রণবীর কাপুর-দীপিকা পাড়ুকোন

কুল বয় রণবীর এবং ডিম্পল গার্ল দীপিকার দুষ্টু মিষ্টি প্রেমের গল্প তো সবারই জানা। রণবীরের প্রেমে এতোই মজে ছিলেন দীপিকা যে তার নাম ঘাড়ে ট্যাটুও করে ফেলেছিলেন। কিন্তু সম্পর্কও বেশিদিন জোড়া ছিলোনা। ভেঙে যায় তাঁদের স্বপ্ন। শোনা যায় রণবীরই নাকি দীপিকাকে ধোঁকা দিয়েছিলো। এতে মানসিকভাবে বেশ হতাশ হয়ে পড়েছিলো দীপিকা। বহুদিন ডিপ্রেশনের মাঝেও থাকতে হয়েছিলো তাকে। যদিও সময়ের সাথে সাথে দুজনেই নিজের জীবন গুছিয়ে নিয়েছেন। দীপিকা রণবীর সিংকে বিয়ে করে ভালোই আছেন অন্যদিকে রণবীর কাপুর স্ত্রী আলিয়া ভাট ও সদ্য জন্ম নেয়া মেয়ে রাহাকে নিয়ে সুখে আছেন।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
আইনআমরা গড়িজীবনযাত্রাবাতিঘরবাংলাদেশ ও বিশ্ববিশেষ রচনাসাফল্য

স্বীকৃতি পেল মায়ের একক অভিভাবকত্ব

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২৫, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

“কোন কালে একা হয়নি ক জয়ী, পুরুষের তরবারি

প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে, বিজয়লক্ষ্মী নারী”।

প্রাগৈতিহাসিক কাল ধরেই নারী পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সভ্যতার উন্মেষ। নারীদের ত্যাগ-তিতিক্ষা, তাদের অবদান সব কিছু নিয়েই সাহিত্যে রচিত হয়েছে অসংখ্য রচনার। কিন্তু বাস্তবতা কী বলে? সমাজের মানদণ্ডে প্রাপ্য স্বীকৃতির ক্ষেত্রে নারীরা কী আসলেই মূল্যায়িত না এগুলো সবই ফাঁকা বুলি সেটাই মূখ্য বিষয়।

নারীর পরিচয় কি? বাবা, ভাই, স্বামী বা ছেলে ছাড়া কি আসলেই তার আর কোন পরিচয় নেই? ভূললে চলবেনা এই নারীর মাঝেই বাস করে এক স্নেহময়ী মায়ের জাত, একটি জাতির ভবিষ্যৎ সন্তানকে সুষ্ঠুভাবে লালন-পালনের মাধ্যমে তাঁকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে সফলতার লক্ষ্যে পৌঁছাতে মায়ের অবদান কোন অংশে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। শুধু তাই নয় দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছুক এমন অনেক পিতার অবর্তমানেও নিজের সমস্ত সুখ জলাঞ্জলি দিয়ে সন্তানের একক অভিভাবক হিসেবে যোগ্যতার সাথে মায়ের ভূমিকা পালনের অনেক নিদর্শনও রয়েছে। মায়ের অভিভাবকত্বের এই যাত্রা শুরু হয় মূলত সন্তানকে গর্ভ ধারণের পর থেকেই। অভিভাবক হিসেবে সন্তানের পিতা-মাতার উভয়ের সম-মর্যাদা থাকলেও কিন্তু এতো কিছুর পরেও শিক্ষা ও চাকরি জীবনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বাবার পরিচয়ই যেন মূখ্য হয়ে উঠে। এক্ষেত্রে মায়ের ভূমিকা হয় উপেক্ষিত। কিন্তু আশার প্রদীপ জ্বলে উঠেছে। শিক্ষাসহ প্রয়োজনীয় সব ফরম পূরণের ক্ষেত্রে অভিভাবকের নামের জায়গায় বাবার নাম ছাড়াও আইনগতভাবে শুধুমাত্র মায়ের নাম ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত মঙ্গলবার ( ২৪ জানুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ যুগান্তকারী রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট আইনুন্নাহার লিপি ও অ্যাডভোকেট আয়েশা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিত দাশগুপ্ত।

ঐতিহাসিক এই রায়ের পথ কিন্তু এতো সুগম ছিলোনা। এর পেছনের ইতিহাস জানতে হলে আমাদের যেতে হবে পনের বছর পিছনে। ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০০৭ সালে এপ্রিল মাসে বিভিন্ন সংবাদপত্রে “বাবার পরিচয় নেই, বন্ধ হলো মেয়ের পড়ালেখা” শীর্ষক সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে। প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ফরমে তথ্য পূরণের ক্ষেত্রে বাবার নাম পূরণ করতে পারেনি ঠাকুরগাঁওয়ের এক তরুনী। এর ফলশ্রুতিতে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড সে তরুনীকে প্রবেশপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানায়। উল্লেখ্য যে, মা ও সন্তানকে কোনরুপ স্বীকৃতি না দিয়ে দায়িত্বহীন বাবার চলে যাওয়ার পর ওই তরুনী তার মায়ের একক ছত্রচ্ছায়ায় বড় হয়ে উঠে। পরবর্তিতে এই ঘটনার পর্যাপ্ত অনুসন্ধান করে মায়ের অভিভাবকত্ব প্রতিষ্ঠার দাবীতে, শুধু মায়ের নাম ব্যবহার করলে পরীক্ষার ফরম অপূর্ণ বিবেচিত হবে কেন; তা জানতে চেয়ে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এবং নারীপক্ষ যৌথভাবে জনস্বার্থে ২০০৯ সালের ২ আগস্ট রিট দায়ের করে। ওই রিটের প্রেক্ষিতে আদালত তখন রুল জারি করেছিলেন। একই সঙ্গে বর্তমানে কোন কোন শিক্ষাবোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বাবা-মা উভয়ের নাম সম্পর্কিত তথ্য বাধ্যতামূলকভাবে উল্লেখ করতে হয়, তার একটি তালিকা এবং যেসব যোগ্য শিক্ষার্থী তাদের বাবার পরিচয় উল্লেখ করতে অপরাগ তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সে সম্পর্কে প্রতিবেদিন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। ২০২১ সালের ৬ জুন মানবাধিকার সংস্থা ব্লাস্ট আবেদনকারীদের পক্ষে একটি সম্পূরক হলফনামা আবেদন আকারে দাখিল করে। রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে হাইকোর্ট রায় ঘোষনার জন্য এইদিন অর্থাৎ ২৪ জানুয়ারি ধার্য করেন।

কালজয়ী এই রায়ের ফলে এখন থেকে বাবার নামের পাশাপাশি আরও দুটি অপশন যুক্ত হলো। এতে করে কেউ চাইলে বাবার পরিচয় ব্যবহার না করেও ফরম পূরনের সময় মা কিংবা আইনগতভাবে বৈধ অভিভাবকের নাম লিখতে পারবেন। এ যেন মায়ের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা লাভে এক বড় ধরনের সাফল্য সংযোজিত হলো।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
কেনাকাটাঘরকন্যারোদসীর পছন্দহেঁসেল

সঠিক হুইস্ক বাছাই করবো কীভাবে?

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২৪, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

প্যানকেকের ব্যাটার কিংবা কেকের ফ্রস্টিং তৈরি, উপাদানগুলো মেশানোর নিমিত্তে রান্নাঘরে রাখার জন্য হুইস্ক হলো একটি আবশ্যক সরঞ্জাম। কিন্তু তুমি জানো কী বিভিন্ন কাজে সাহায্য করার জন্য এর রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইন করা হুইস্ক? এর প্রতিটি প্রকার কখন ব্যবহার করতে হবে আসো জেনে নিই।

হুইস্ক বা কুকিং হুইপস হলো রান্নার এমন এক সরঞ্জাম যার এক প্রান্তে একটি সরু হাতল এবং অন্য প্রান্তে তারের লুপগুলো একত্রিত হয়। মনে হতে পারে যে, হুইস্ক তো হুইস্ক-ই। আর সব কিছুর কাজ তো বলতে গেলে একই। এটা কিন্তু অনেক বড় এক ভূল ধারনা। হুইস্কগুলো বিভিন্ন আকারে আসে এবং প্রতিটি ধরণের হুইস্ক একটি ভিন্ন উদ্দেশ্যে বা আরও কার্যকরভাবে উপাদানগুলোকে একত্রিত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। তুমি যে ধরনের হুইস্ক ব্যবহার করবে তার উপর নির্ভর করে লুপগুলোর কনফিগারেশন এবং থিকনেস পরিবর্তিত হয়। বিভিন্ন ধরণের কিছু হুইস্কের বর্ণনা নিচে দেয়া হলঃ

বেলুন হুইস্ক

বেশিরভাগ রান্নাঘরে একটি খুব পরিচিত মুখ হলো এই বেলুন হুইস্ক। এটি বেশ ঐতিহ্যগত এবং বড় তার ও প্রশস্ত লুপের সমন্বয়ে গঠিত। ১৯৬০ এর দশকে যখন জুলিয়া চাইল্ডস রান্নাঘরে এর তাৎপর্য প্রদর্শন করেছিলো তখন থেকেই এই হ্যান্ড মিক্সিং টুলটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠে। হুইস্কের এই স্টাইলটিতে বেশ কয়েকটি স্টিলের বা প্লাস্টিকের তার থাকে যা হাতলে এমনভাবে বাঁকা হয়ে সংযুক্ত থাকে যে এটি বেলুনের মতো নীচের বাল্বের আকার ছেড়ে যায়। এই বেলুন হুইস্কের কয়েকটি সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্র হলো-

-হুইপড ক্রিম

-ডিম

-ডিমের সাদা অংশ

-শুষ্ক উপাদান মেশানোতে

ফ্রেঞ্চ হুইস্ক

ফ্রেঞ্চ হুইস্ক হলো আরেকটি বহুমুখী হ্যান্ড মিক্সার যা আমরা রান্নাঘরে সচরাচর রেখে থাকি। এটি দেখতে অনেকটা বেলুন হুইস্কের মতোই। দুটি হুইস্কের বৃত্তাকার সিলুয়েট রয়েছে, যার ফলে তাদের একই দেখালেও; আদতে ফ্রেঞ্চ হুইস্কে কিছুটা ঘন তারের সাথে একটি পাতলা প্রোফাইল রয়েছে। তাদের পুরু তার এবং পাতলা ফ্রেমের জন্য এর কয়েকটি সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্র হলো-

-মেয়োনিজ

-ব্যাটারস

-প্যানকেকস

-কাস্টার্ড

ফ্ল্যাট হুইস্ক

ফ্ল্যাট বা রক্স হুইস্কে অনেকগুলো লুপযুক্ত তারের বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং তারগুলোকে একটি একক স্তর তৈরি করার জন্য সারিবদ্ধ করা হয় যা একটি বাল্ব আকার তৈরি করার পরিবর্তে সামান্য উপরে উঠে যায়। উপকরণগুলো মিশ্রিত করার সময় সর্বোত্তম কোণে পৌঁছানোর জন্য এই হুইস্কগুলো অগভীর প্যানগুলোর সাথে ব্যবহারের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। কাস্টার্ড, গ্রেভি, পনির, সস বা ক্রিম সস তৈরিতে উপযুক্ত। যেহেতু তারগুলো সারিবদ্ধ,তাই এটি অন্যান্য হুইস্কের চেয়ে পরিষ্কার করা সহজ।

বল হুইস্ক

অন্যান্য সাধারণ হ্যান্ড মিক্সারের লাইনআপের তুলনায় এই বৈচিত্র্যের চেহারা সম্পূর্ণ আলাদা। একটি বেলুন বা ফ্রেঞ্চ হুইস্কে দেখা ক্লাসিক বাঁকা তারের খেলার পরিবর্তে, এতে আছে তারের একটি সিরিজ; যার প্রতিটি মাথা একটি ধাতু বা সিলিকন বল দিয়ে আবদ্ধ। পাতলা ব্যাটারের মত হালকা, পাতলা মিশ্রণের জন্য এটি ভাল কাজ করে।

স্প্রিং হুইস্ক

একটি লম্বা হ্যান্ডেলে বসানো ছোট, স্প্রিং কয়েল এই হুইস্কটিকে একটি ছোট বাটি বা কাপে অল্প পরিমাণে উপাদান একত্রিত করার জন্য বা প্যান সস তৈরির জন্য আদর্শ করে তোলে। এই হুইস্কে যদি চাপ দিয়ে দেখো তবে এটি কিছুটা চ্যাপ্টা হয়ে যায়, যা একটি সমতল বাটির নীচে বা প্যানের পাশ এবং কোণ থেকে উপাদানগুলোকে স্ক্র্যাপ করতে সহায়তা করতে পারে। নাম অনুসারে, এটি প্যানকেক ব্যাটার, কেকের মিশ্রণ মিশ্রিত করার জন্য উপরে এবং নিচে বাউন্স করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। কয়েলের আদলে দেখতে বলে একে কয়েল হুইস্কও বলা হয়।

টর্নেডো হুইস্ক

টর্নেডো হুইস্ক, নামের মতোই এটি ফানেলের মতোই আকৃতির। তারগুলো নিচের দিকে চ্যাপ্টা হয়ে একটি সমতল সর্পিল তৈরি করে। এটি একটি বড় প্যান বা পাত্রে ব্যবহার করা উপযুক্ত। টর্নেডো হুইস্ক পাত্রের নিচে এবং আশেপাশের সমস্ত প্রান্তে সহজেই পৌঁছাতে সক্ষম। যেকোন সস, গ্রেভি, ক্রিম বা ব্যাটারকে মিশ্রিত ও মসৃণ করতে এর জুড়ি মেলা ভার।

সঠিক হুইস্ক কীভাবে নির্বাচন করবো?

কুকিং এর কাজের জন্য সঠিক ধরনের হুইস্ক বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। একটি হুইস্ক নির্বাচন করার সময় কিছু বিষয় বিবেচনা করা জরুরীঃ

-বেশিরভাগ উচ্চ মানের হুইস্ক স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি। এই স্টেইনলেস স্টিলের একটি খারাপ দিক হল এটি ননস্টিক কুকওয়্যার স্ক্র্যাচ করতে পারে। তাই এক্ষেত্রে সিলিকন হুইস্ক হলো একটি ভাল বিকল্প।

-হুইস্কের হ্যান্ডেলের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। একটি দীর্ঘ হ্যান্ডেল হুইস্ক ব্যবহার করে চুলার উপরের উপাদানগুলো মেশানোর ক্ষেত্রে উপযুক্ত হতে পারে। অন্যদিকে, ছোট বাটি এবং পাত্রে জিনিস মেশানোর জন্য ছোট হ্যান্ডেল সহ হুইস্ক হবে বেস্ট।

-কেনার আগে হুইস্কটি হাতে নিয়ে দেখো। হ্যান্ডেলটির আরামদায়কতা ও পুরুত্বতা নিশ্চিত করে নাও। কিছু হুইস্কে সিলিকন বা মোল্ড করা হাতল থাকে, যা ধরে রাখতে সহজ হতে পারে।

-যখন হুইস্কের তারের প্রসঙ্গ আসে, তখন কি কাজের নিমিত্তে কেনা হবে তা বিবেচনা করে তারের সন্নিবেশের দিকে মনোনিবেশ দিতে হবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
ঢালিউডবিনোদনবিশেষ রচনাশিল্প-সংস্কৃতিসিনেমা

শুভ জন্মদিন নায়ক রাজ

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২৩, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

সাদা পর্দা থেকে শুরু করে রঙিন পর্দা, সব ধাপেই সমভাবে তিনি দেখিয়েছিলেন তার অসাধারণ অভিনয়ের নৈপুন্যতা। সাধারণ এক মানুষ থেকে হয়ে উঠেছিলেন নায়ক রাজ। বলা হচ্ছে বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী নায়ক রাজ্জাকের কথা। আজ (২৩ জানুয়ারি) এই মহান নায়কের জন্মদিন। অন্তর্ধানের এতো বছর পরেও তিনি আজো বেঁচে আছেন তাঁর সকল ভক্তের স্মৃতির মণিকোঠায়।

ষাট দশক থেকে শুরু করে প্রায় তিন দশক ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে রাজত্ব করা দাপুটে অভিনেতা আব্দুর রাজ্জাক, যিনি নায়ক রাজ্জাক হিসেবে পরিচিত; ১৯৪২ সালের আজকের দিনে কলকাতার নাকতলায় জমিদার বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর অভিনয়ের হাতেখড়ি হয় সপ্তম শ্রেনীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে। সরস্বতী পূজা চলাকালীন শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী কেন্দ্রীয় চরিত্রের জন্য তাঁকে মনোনীত করেন। পরবর্তীতে কলেজ জীবনে ‘রতন লাল বাঙ্গালি’ সিনেমার মাধ্যমে তাঁর সিনে-জগতে প্রবেশ ঘটে। ১৯৬৪ সালে কলকাতায় হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার কারণে পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন তিনি। আভিনয়ের ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে ঘরোয়া নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের মাঝে বেশ জনপ্রিয় হোন। ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ’১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’, ‘ডাক বাবু’, ‘আখেরি স্টেশন’ সহ বিভিন্ন চলচ্চিত্রে ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন। নায়ক রাজ্জাকের অভিনয় জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ঘুরে যায় ১৯৬৬ সালে পৌরাণিক কাহিনীধর্মী ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে লখিন্দর চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে। এই চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে একটি মাইলফলক হয়ে আছে। মূলত সেই থেকেই তাঁর ক্রমান্বয়ে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছানোর যাত্রা শুরু হয়ে যায়।

 

বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার জীবন

বিভিন্ন ঘরানার ছবিতে বহুমুখী চরিত্রে সাবলীলভাবে নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন এই শক্তিমান অভিনেতা। পৌরাণিক চরিত্র বেহুলার স্বামী লখিন্দর হিসেবে যেমন জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, তেমনি এর পরবর্তীতে লোককাহিনীধর্মী ‘সুয়োরানী দুয়োরানী’ ছবিতে শাহজাদার চরিত্রেও অভিনয় করে হয়েছিলেন প্রশংসিত। রোমান্টিকধর্মী ছবিতেও তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী। নারায়ণ ঘোষ মিতার রোমান্টিক ঘরানার ‘নীল আকাশের নিচে’ ছবিতে মামুন চরিত্রে অভিনয় করেন। রাজনৈতিক-ব্যঙ্গধর্মী ‘জীবন থেকে নেয়া’ ছবিতে তাঁকে দেখা যায় পরাধীন দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে। এছাড়াও তাঁর অভিনীত অন্যান্য ছবি ছিলো ‘সংসার’, ‘মনের মত বউ’, ‘আবির্ভাব’, ‘পীচ ঢালা পথ’, ‘ওরা এগার জন’, ‘ছুটির ঘন্টা’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’ সহ মোট ৩০০ টি বাংলা ও উর্দু ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন।

জুটি প্রথা

নায়ক রাজ রাজ্জাক অনেক স্বনামধন্য অভিনেত্রীদের সাথে অভিনয়ের মাধ্যমে দারুন জুটি গড়ে তুলতে পেরেছিলেন। সুদর্শন রাজ্জাক এবং লাস্যময়ী কবরী জুটি আজো জনমনে দাগ কেটে আছে। ‘তুমি যে আমার কবিতা’,  কিংবা ‘সে যে কেন এলোনা,কিছু ভালো লাগেনা’ এই জুটির গানগুলো এখনও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। ‘পীচ ঢালা পথ’ ছবির মাধ্যমে জুটি হয়ে আসেন ববিতার সাথে। সফলতার ধারাবাহিকতায় ববিতার বিপরীতে পরবর্তীতে তাঁকে দেখা যায় ‘টাকা আনা পাই’, ‘স্বরলিপি’, ‘মানুষের মন’, ‘প্রিয়তমা’-র মতো জনপ্রিয় ছবিগুলোতে। আরেক গুণী অভিনেত্রী শাবানার বিপরীতে তিনি সর্বাধিক ৪০টি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।

সাফল্য ও পুরস্কারপ্রাপ্তি

১৯৭৬, ১৯৭৮, ১৯৮২, ১৯৮৪ ও ১৯৮৮ সালে তিনি মোট পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। ২০১৩ সালে পেয়েছিলেন আজীবন সম্মাননা পুরষ্কার। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য তাঁকে স্বাধীনতা পুরষ্কার প্রদান করেন। এছাড়াও বাচসাস পুরষ্কার, মেরিল-প্রথম আলো পুরষ্কার সহ অসংখ্য পুরষ্কার তাঁর ঝুলিতে রয়েছে।

ব্যক্তিগত ও ক্যারিয়ার জীবনে সফল, সকলের পছন্দের এই মানুষটি ২০১৭ সালের ২১শে আগস্ট ৭৫ বছর বয়সে এই দুনিয়ার মায়া ছেড়ে চলে গেছেন চিরতরে। বাংলার চলচ্চিত্র গগণে যতদিন সূর্য উদিত হবে, চিত্রনায়ক রাজ্জাকের নাম জ্বলজ্বল করে জ্বলে উঠবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

স্লিপ অ্যাপনিয়া হলে কী করণীয়?

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২২, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

ঘুমের সময় নাক ডাকা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া, বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া এমন অনেক সমস্যার সাথেই আমরা অনেকেই পরিচিত। ঘুমের মাঝে এই ব্যাঘাত, ঘুম পূর্ণতা পেতে বাধার সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে দেখা যায় দিনের বেলায়ও সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব থেকে যায়। এই পরিস্থিতিকে বলা হয় ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ বা ‘নিদ্রাকালীন শ্বাসব্যাঘাত’।

ঘুম মানুষের একটি অত্যাবশ্যকীয় শরীরতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। পরিমিত ঘুম সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। হৃদরোগ সহ নানা রোগের ঝুঁকিও কমায়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে যদি শ্বাসনালী বাধাগ্রস্থ হয়, তবে ঘুমের মধ্যে সশব্দে নাক ডাকার শব্দ হয়। স্লিপ অ্যাপনিয়া হলো নাক ডাকার ও ঘুম কম হওয়ার সমস্যা। বিভিন্ন ধরনের স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে, তবে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ) হল সবচেয়ে সাধারণ ঘুম-সম্পর্কিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যাধি। এই ধরনের অ্যাপনিয়া ঘটে যখন গলার পেশী মাঝে মাঝে শিথিল হয় এবং ঘুমের সময় শ্বাসনালী ব্লক করে। সারা বিশ্বে সাধারণত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে দুই থেকে চারজন এই ওএসএ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগে থাকে। বাংলাদেশের শহুরে জনসংখ্যার এক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষ ও নারীদের ৪.৪৯ ও ২.১৪ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত। স্লিপ অ্যাপনিয়া হলে এর চিকিৎসা করা দরকার না হয় এটি আরও গুরুতর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

লক্ষণ

কিছু লক্ষণ রোগীর নিদ্রার সময় দেখা দেয়। ফলে রোগী নিজেও বুঝতে পারেনা। কিন্তু ঘুমানোর সময় পাশে কেউ থেকে সাহায্য করতে পারে যাতে তারা লক্ষণগুলো পরীক্ষা করতে পারে। এর লক্ষণ ও উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

-দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম

-জোরে নাক ডাকা

-হঠাৎ জেগে উঠার সাথে হাঁপাতে বা দম বন্ধ হয়ে যাওয়া

-মুখ ও গলা শুকিয়ে যাওয়া

-সকালে মাথাব্যথা

-মেজাজ পরিবর্তন যেমন বিষন্নতা বা বিরক্তি

-উচ্চ রক্তচাপ

ঝুঁকির কারণ

যে কারো অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে। যাইহোক, কিছু কারণ যা তোমাকে এই ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। যার মধ্যে রয়েছেঃ

-যাদের অতিরিক্ত ওজন রয়েছে তাদের স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

-এক্ষেত্রে বয়সও একটি ফ্যাক্ট। ৩০ থেকে ৬৫ বছর বয়সীদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার প্রবণতা বেশি। তবে, শিশুদের ক্ষেত্রে যাদের টনসিল বা অ্যাডিনয়েড আকারে বড় হয়, তাদেরও হতে পারে।

-মুখ ও করোটির গঠনগত ত্রুটি থাকলেও স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে।

-যারা ধূমপান করে, তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

-আরেকটি কারণ হতে পারে জেনেটিক বা বংশগত। হার্ট ফেইলিওর, অ্যাজমা, স্ট্রোক ইত্যাদি এ রোগ বাড়িয়ে দেয়।

করনীয় ও প্রতিকার

স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে এর ধরণ ও তীব্রতার উপর। অবস্থা যদি গুরুতর পর্যায়ে চলে যায় তবে সেক্ষেত্রে সিপিএপি মেশিন নামে একটি ডিভাইস ব্যবহার করতে হয়। এটি ঘুমের সময় মুখ বা নাকে পরা একটি মাস্কের মধ্যে বাতাস পাম্প করে শ্বাস-প্রশ্বাসের উন্নতি করে। আর যদি এটি হালকা পর্যায়ে হয়ে থাকে তবে নিজের কিছু লাইফ স্টাইল চেইঞ্জের মাধ্যমে এর প্রতিকার ব্যবস্থা নিজে নিজেই করা সম্ভব। যেমনঃ

-ওজন যদি বেশি হয় তবে তা কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

-নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। সক্রিয় থাকা নিজের ভেতর বিদ্যমান থাকা লক্ষণগুলোকে উন্নত করতে পারে এবং একটি স্বাস্থ্যকর ওজন রাখতে সাহায্য করতে পারে।

-ভালো ঘুমের অভ্যাস করতে হবে। শুতে যাওয়ার আগে চারপাশের পরিবেশ শান্ত এবং ঘুমের উপযোগী করে তুলতে হবে। প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া ও উঠার অভ্যাস করতে হবে।

-ধূমপান এবং অ্যালকোহল পানে অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করতে হবে।

-চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যে কোন ধরনের ঘুমের ঔষধ খাওয়া উচিৎ নয়। এগুলো স্লিপ অ্যাপনিয়াকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংসচেতনতাসমস্যা

সম্পর্কে ছন্দপতন, অতঃপর…

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২২, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

‘অবশেষে রাজা, রানী আর তাদের রাজকন্যা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলো’। রুপকথার কাহিনীগুলোতে প্রায় সব গল্পেরই পরিসমাপ্তি ঘটে একটি সুখী পরিবারের বুনন ঘটিয়ে। কিন্তু বাস্তবতা কখনোই রুপকথার কাহিনী নয়। এখানে সবার জীবনের গল্পেরও হ্যাপি এন্ডিংয়ের নিশ্চয়তা থাকেনা। মাঝে মাঝে সম্পর্কের দোলাচালে ঘটে ছন্দপতনের। কখনো ভেবে দেখেছো কী, জীবনের এই টানাপোড়েন ঘরের ছোট্ট সদস্যের উপর কি ধরনের প্রভাব ফেলে? 

 

ছোট্ট আরীবা, যে কিনা ছিল স্কুলে সবচেয়ে প্রাণচাঞ্চল্য ও ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট; হঠাৎ করেই মাসখানেক তার মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ক্লাসে অমনোযোগী, চুপচাপ একদম। একা থাকতেই যেন পছন্দ করে সে। তাকে ঘিরে ডিভোর্স, ব্রোকেন ফ্যামেলি এমন খটমটে শব্দ শুনতে পায় সে। কিছু বুঝে উঠতে না পারলেও আরো যেন বিষন্নতা ঘিরে ধরে তাকে। এটি একটি কল্পকাহিনী হলেও এমন ঘটনা আমাদের আশেপাশে অহরহ দেখা যাচ্ছে। বিবাহবিচ্ছেদ যেকোন পরিবারের জন্য একটি কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং বিষয় হতে পারে। একটি পরিবার ভেঙ্গে যাওয়া মানে তার সাথে সম্পর্কিত অনেকগুলো স্বপ্নের মৃত্যু। সম্পর্কের হঠাৎ এই পরিবর্তন পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপর যেমন প্রভাব ফেলে তেমনি ঘরে যে বাচ্চারা আছে তাদের উপরও সমান প্রভাব ফেলে। কিন্তু কখনও কখনও, পিতামাতারা তাদের সন্তানদের উপর এই বিচ্ছেদের পরবর্তী প্রভাবগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকেনা। দম্পতিদের জন্য তাদের সন্তানদের দীর্ঘমেয়াদী মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর বিবাহবিচ্ছেদের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে আত্মদর্শন এবং আলোচনা করা অপরিহার্য। সন্তানদের উপর কেমন প্রভাব পড়ে, আসো আমরা জেনে নিই।

খারাপ একাডেমিক পারফরম্যান্স

সম্পর্কের টানাপোড়েনের দরুন পরিবারের পরিবর্তনশীল গতিশীলতা তাদের বিভ্রান্ত করে তোলে। আর এই বিভ্রান্তিতা তাদের দৈনন্দিন ফোকাসে বাধার সৃষ্টি করে। যার ফলাফল পরে একাডেমিক পারফরম্যান্সে। শিশুরা যত বেশি বিভ্রান্ত হয়, তাদের স্কুলের কাজে মনোযোগ দিতে না পারার সম্ভাবনা তত বেশি।

আবেগীয় অনুভূতি

বিবাহবিচ্ছেদ একটি পরিবারের জন্য বিভিন্ন ধরনের আবেগকে সামনে আনতে পারে এবং এর সাথে জড়িত শিশুরাও আলাদা নয়। উত্তেজনা, নার্ভাসনেস, উদ্বেগ, ক্রোধ এমন আরও অনেক কিছুই এই পরিবর্তন থেকে আসতে পারে। ছোট বাচ্চাদের বয়স্কদের তুলনায় এটির প্রবণতা হয় বেশি কারণ তারা বাবা- মা উভয়ের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। একটি উদ্বিগ্ন শিশু তার পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে অসুবিধা বোধ করবে এবং সকলধরনের ক্রিয়াকলাপে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে যা একসময়ে তার কাছে খুবই লোভনীয় বলে মনে হতো।

বিষন্নতা

পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদের কারণে সৃষ্ট যন্ত্রণা এবং হৃদয়বিদারক অনুভূতি একটি শিশুকে বিষন্নতায় ফেলে দিতে পারে। বিষন্নতা একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং বিবাহবিচ্ছেদের সাক্ষী শিশুদের মধ্যে বিষন্নতা এবং সামাজিক প্রত্যাহারের ঘটনা বেশি থাকে। গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে শিশুদের মধ্যে বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদ একটি অবদানকারী কারণ হতে পারে।

অপরাধবোধের অনুভূতি

আমেরিকান একাডেমি অফ চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রি অনুসারে, অনেক শিশু তাদের পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদের পিছনে নিজেকে কারণ বলে মনে করে অপরাধবোধে ভোগে। এই অপরাধবোধ হতাশা, চাপ বাড়ায়; এতে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং দুঃস্বপ্নের মতো বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন

ছোট বাচ্চারা ঘন ঘন মুড সুইং এ ভুগতে পারে এবং এমনকি খিটখিটেও হতে পারে পরিচিত মানুষের সাথে যোগাযোগ করার সময়। তাদের রাগ অনুভূত কারণগুলোর বিস্তৃত পরিসরে পরিচালিত হতে পারে। বিবাহবিচ্ছেদ প্রক্রিয়াকারী শিশুরা তাদের পিতামাতা, নিজেদের, তাদের বন্ধুবান্ধব এবং অন্যদের প্রতি রাগ প্রদর্শন করতে পারে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে তারা প্রত্যাহার মোডে চলে যায়। যেখানে তারা কারও সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেবে এবং অন্যের সাথে মেশার পরিবর্তে একা সময় কাটাতে পছন্দ করবে।

ধ্বংসাত্মক আচরণের ভূমিকা

শিশুরা যখন বিবাহবিচ্ছেদের মতো এই ট্রমার মধ্য দিয়ে যায়, তখন অমিমাংসিত দ্বন্দ্ব ভবিষ্যতে অপ্রত্যাশিত ঝুঁকির দিকে নিয়ে যেতে পারে। তালাকপ্রাপ্ত পিতামাতার সাথে কিশোর-কিশোরীরা ঝুঁকিপূর্ণ আচরণে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তালাকপ্রাপ্ত বাবা-মায়ের কিশোর-কিশোরীরা আগে অ্যালকোহল পান করে এবং তাদের সমবয়সীদের তুলনায় বেশি অ্যালকোহল, গাঁজা, তামাক এবং মাদক সেবনের রিপোর্ট করে।

সন্তানের মানসিক চাপ কমানোর উপায়

বিবাহবিচ্ছেদের মতো এমন বিরুপ পরিস্থিতির সাথে শিশুরা কীভাবে সামঞ্জস্য করে তার জন্য পিতামাতারা একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে। এখানে কিছু কৌশল রয়েছে যা শিশুদের উপর মানসিক চাপ কমাতে পারেঃ

-বাবা-মায়ের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বাচ্চাদের সহজেই ট্রমাটাইজড করে দেয়। প্রকাশ্য শত্রুতা, একে অপরের উপর চিৎকার করা, হুমকি দেয়া শিশুদের আচরণের সমস্যার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সন্তানের কথা মাথায় রেখেই এগুলো পরিহার করা উচিৎ।

-বাবা-মায়ের দ্বন্দ্বের মাঝখানে বাচ্চাদের রাখা এড়িয়ে চলতে হবে। তাদের দুজনের মাঝে একজনকে বেছে নেয়া বা এমন কোনো কথা না বলা যাতে সন্তান নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। তাই সন্তানকে এত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে ফেলার আগে ভাবনাচিন্তা করা দরকার।

-বিবাহবিচ্ছেদ এমন এক বিচ্ছিন্ন ঘটনা যা কোন সুফলতা বয়ে আনেনা। কিন্তু বিচ্ছেদের পরেও সন্তানের কথা চিন্তা করেই একটি সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখা যেতে পারে। ইতিবাচক যোগাযোগ, পিতামাতা উভয়ের উষ্ণতা বাচ্চাদের উচ্চ আত্মসম্মান এবং একাডেমিক পারফরম্যান্স বিকাশে সহায়তা করে।

-পরিত্যাগের ভয় এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তা অনেক উদ্বেগের কারণ হতে পারে। সন্তানকে ভালোবাসা, নিরাপদ এবং সুরক্ষিত বোধ করতে সাহায্য করা তার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকিও কমাতে পারে।

-নিজের স্ট্রেস লেভেল কমানো তা সন্তানকে সাহায্য করার জন্য সহায়ক হতে পারে। সেজন্য স্ব-যত্ন নেয়া প্রয়োজন। আর দরকার হলে পেশাদারের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।

-ছবি সংগৃহীত

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসুস্থ মনস্বাস্থ্য

সাঁতারের যত উপকারিতা

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১৯, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

কথায় আছে, ‘একটি ফিট শরীর, একটি শান্ত মন এবং ভালোবাসায় পূর্ণ একটি ঘর- এই জিনিসগুলো কেনা যাবেনা, সেগুলো অবশ্যই অর্জন করতে হবে’। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে প্রতিদিন নিয়ম করে কিছুক্ষণ শরীরচর্চা করা আবশ্যক। আর সেই শরীরচর্চার মাঝে যদি সাঁতারকে অন্তর্ভূক্ত করা যায় তাহলে তো পুরো ষোলকলা পূর্ণ। জেনে নাও সাঁতারের যত উপকারিতার দিকসমূহ।

বিশেষজ্ঞরা একজন প্রাপ্তবয়স্ককে প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিটের মাঝারি কার্যকলাপ বা ৭৫ মিনিটের জোরালো কার্যকলাপ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি থেকে উন্নত মেজাজ পর্যন্ত, ওয়াটার ওয়ার্কআউট সুস্থতার জন্য অনেক সুবিধা নিয়ে আসে। তোমার ফিটনেস লেভেল যাই হোক না কেন, সাঁতার অনেক সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে। পুরো শরীর এবং কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের কাজ করার একটি চমৎকার একটি উপায় হলো এই সাঁতার। এটি যে সব সুবিধা প্রদান করে থাকেঃ

-গবেষণায় দেখায় যে, সাঁতার দীর্ঘজীবী করতে সাহায্য করতে পারে। ২০১৭ সালের ইংল্যান্ডের দ্বারা পরিচালিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, সাঁতারুদের প্রারম্ভিক মৃত্যুর ঝুঁকি ২৮ শতাংশ কম এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের কারণে যারা সাঁতার কাটেনা তাদের তুলনায় ৪১ শতাংশ কম মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল।

-সাঁতারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি সত্যিকার অর্থেই পুরো শরীর, মাথা থেকে পা পর্যন্ত কাজ করে। এর মাধ্যমে-

#শরীরের চাপ ছাড়াই হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করে

#পেশী টোনিং করে

#শক্তি তৈরি করে

#সহনশীলতা তৈরি করে

-অতিরিক্ত ক্যালোরি বার্ন করতে চাইলে এর বিকল্প কিছুই নেই। হার্ভাড মেডিকেল স্কুল অনুসারে, একজন ১৫৫ পাউন্ড ব্যক্তি এক ঘন্টায়, প্রায় ৪৩২ ক্যালোরি সাঁতার কাটার মাধ্যমে পোড়াতে পারে যেখানে মাঝারি গতিতে  হাঁটার মাধ্যমে বার্ন হয় ২৬৬ ক্যালোরি। ২০২১ সালে এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ১৬ সপ্তাহে সাঁতার কাটার মাধ্যমে শরীরের চর্বি এবং বিএমআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

-অ্যারবিক ব্যায়ামের অন্যান্য রুপের মতো সাঁতার কার্ডিওভাসকুলার ফিটনেস উন্নত করতে পারে। সাঁতারের ফলে হৃদপিণ্ড শক্তিশালী হতে পারে এবং ফুসফুস অক্সিজেন ব্যবহারে আরও দক্ষ হয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও, এটি হাইপারটেনশন, উচ্চ রক্তচাপ এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের অন্যান্য মার্কারের উন্নতির সাথে যুক্ত হয়েছে।

-বাত, আঘাত, অক্ষমতা সহ অন্যান্য সমস্যা যা উচ্চ প্রভাব ব্যায়ামকে কঠিন করে তোলে; তাদের জন্য সাঁতার হতে পারে একটি নিরাপদ ব্যায়ামের বিকল্প। এটি ব্যথা কমাতে এমনকি আঘাত থেকে পুনরুদ্ধারের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে। অস্টিওআর্থারাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির জয়েন্টের ব্যথা এবং দৃঢ়তা সাঁতারের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস হওয়ার প্রমান পাওয়া গেছে।

-ইনডোর পুলের আর্দ্র পরিবেশ হাঁপানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সাঁতারকে একটি দূর্দান্ত কার্যকলাপ করে তোলে। শুধু তাই নয়, খেলার সাথে যুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম যেমন শ্বাস ধরে রাখা, ফুসফুসের ক্ষমতা প্রসারিত করা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর নিয়ন্ত্রণ পেতে সাহায্য করতে পারে।

আবার কিছু গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, পুলে ব্যবহৃত ক্যামিকেল হাঁপানির ঝুঁকি বাড়াতেও পারে। তাই যদি হাঁপানির প্রবলেম থাকে তবে চিকিৎসকের সাথে আগে পরামর্শ করে নেয়া ভাল।

-সমস্ত ব্যায়াম একটি মেজাজ বুস্টার হতে পারে। এক্ষেত্রে ওয়াটার ওয়ার্কআউট একটি ভাল মেজাজ বজায় রাখতে পারে। মস্তিষ্কে সুখের রাসায়নিকের মুক্তির কারণে, বিশেষ করে এন্ডোরফিন, ডোপামিন এবং সেরোটোনিন নিয়মিত সাঁতার কাটা চাপ কমাতে পারে, উদ্বেগ কমাতে পারে এবং হতাশার বিরুদ্ধে লরাই করতে পারে।

-উন্নত ঘুম হল যে কোন ব্যায়ামের রুটিনে লেগে থাকার একটি সুবিধা। ব্যায়াম শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি পুনরায় সেট করতে সাহায্য করে এবং প্রাকৃতিক সার্কাডিয়ান ছন্দ পুনরুদ্ধার করে। এর মধ্যে সাঁতার হল একটি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনিদ্রার সমস্যাও বৃদ্ধি পায়। ইনসমনিয়ার মতো সমস্যায় যারা ভুগে থাকে, তাদের জন্য নিয়মিত সাঁতার কাটা ভালো একটি চিকিৎসা। এতে ঘুম ভালো হবে।

-বাচ্চাদের জন্য সাঁতার হতে পারে দারুন এক ওয়ার্কআউট। এটি হতে পারে তাদের জন্য একটি মজার ক্রিয়াকলাপ।

সতর্কতা

সাঁতার বেশিরভাগ মানুষের জন্যই নিরাপদ। তবে যেকোন ওয়ার্কআউটের মতোই সাঁতারের সাথে যুক্ত কিছু ঝুঁকি রয়েছে। তুমি যদি আহত হও বা কিছু চিকিৎসা শর্ত থাকে তবে সেক্ষেত্রে সাঁতার কাটার আগেই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেয়াই ভালো। সাধারণভাবে, যখনই একটি নতুন ব্যায়াম প্রোগ্রাম শুরু করবে তখন তোমার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা একটি ভাল ধারণা। এছাড়াও, সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যাযুক্ত লোকদের জন্য ক্লোরিনযুক্ত পুলের পানিতে নামা আরও সমস্যার সৃষ্টি করবে। সাঁতার কাটার আগে সবসময় পুলে বর্ণিত নির্দেশাবলি এবং লাইফগার্ডের নিয়মাবলি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
বলিউডবাংলাদেশ ও বিশ্ববিদেশবিনোদনরূপ ও ফ্যাশনশিল্প-সংস্কৃতিহলিউড

অদ্ভুতুড়ে সাজপোশাকে বিশ্বের তারকারা

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১৯, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

সাল ২০১৯, মেট গালা ইভেন্টের পর্দা উন্মোচিত হলো। পুরো নেট দুনিয়ায় এই ইভেন্টে উপস্থিত বলি-অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার অদ্ভূত সাজপোশাকের ছবি ছড়িয়ে পড়ে। দিন দিন আপগ্রেড হওয়া ফ্যাশন সেন্স নিয়ে সকলের প্রশংসা কুড়ানো এই জনপ্রিয় তারকার অদ্ভুতুড়ে অবতার দেখে সকলের চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। শুধু প্রিয়াঙ্কা চোপড়া নয়, ফ্যাশন শো’র এই আসরে লেডি গাগা, কেটি পেরি, কিম কার্দেশিয়ান সহ বিশ্বের নামকরা সব তারকারা একে একে হাজির হয়েছিলো এমনই সাজে। তাদের সাজ পোশাক দেখে মনে হচ্ছে যেমন খুশি তেমন সাজো’র প্রতিযোগিতা চলছে যেন। কি এই মেট গালা? আর কেনইবা তাদের এই অদ্ভূত দর্শন? সবকিছুই জানবো আজ।

আর আট-দশটা ফ্যাশন শো থেকে ভিন্ন, মেট গালা বেশ অসামান্য এক শো। ফ্যাশন জগতের অস্কারের সমতূল্য, ইভেন্টটি সর্বদা এর থিম এবং পোশাকের জন্য সবাইকে অবাক করে দেয়। ১৯৪৮ সাল থেকে প্রতিষ্ঠিত হওয়া মেট গালা প্রথম কয়েক দশক ধরে নিউ ইয়র্ক দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুষ্ঠিত অনেক বার্ষিক সুবিধার মধ্যে একটি ছিল। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সাল থেকে অ্যানা উইনটর দ্বারা সংগঠিত এবং সভাপতিত্ব করা, মেট গালা বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বিশিষ্ট ও একচেটিয়া সামাজিক অনুষ্ঠান হিসেবে পরিণত হয়েছে। এটি নিউ ইয়র্ক সিটির সবচেয়ে বড় তহবিল সংগ্রহের মধ্যে একটি। ২০১৩ সালে ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, তার পরের বছর ১২ মিলিয়ন এবং ২০২২ সালে রেকর্ড ১৭.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সগ্রহ করা হয়েছে। মেট গালা বা মেট বল, যাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কস্টিউম ইন্সটিউট গালা বা কস্টিউম ইনস্টিটিউট বেনিফিট বলা হয়; প্রতি বছর মে মাসের প্রথম সোমবার নিউ ইয়র্ক সিটির মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট –এ অনুষ্ঠিত হয়।

কারা আমন্ত্রিত হয়?

ফ্যাশন ম্যাগাজিন ভোগ এর প্রধান সম্পাদক এই পুরো ইভেন্টের মূল হোতা। কমিটি গঠন থেকে শুরু করে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকা তৈরি করা সবই হয় তার তত্ত্বাবধানে। এই ইভেন্টে ফ্যাশন, ফিল্ম, টেলিভিশন, থিয়েটার, সঙ্গীত, ব্যবসা, খেলাধুলা, সোশ্যাল মিডিয়া এবং রাজনীতি সহ বিভিন্ন পেশাগত ক্ষেত্রের সেলিব্রেটিদের আমন্ত্রণ জানানো হয় এতে। মোটামুটিভাবে ৬৫০ থেকে ৭০০ আমন্ত্রিত অতিথি থাকেন এই শো তে। অতিথি এবং হোস্টদের তালিকা দৃশ্যত প্রতি বছর পরিবর্তিত হয়ে থাকে। ব্লেক লাইভলি, সারা জেসিকা পার্কার, রিহানা সহ পরিচিত দীর্ঘদিনের মেট গালা অংশগ্রহণকারী ছাড়াও এখানে প্রতি বছর তরুন সৃজনশীল ব্যক্তি এবং ইন্ড্রাস্ট্রি প্যারাগনকে স্বাগত জানানো হয়।

থিম

এই ইভেন্টের সবচেয়ে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে যা থাকে তা হলো থিম। প্রত্যেক বছরই একটা করে থিম থাকে, আমন্ত্রিত অতিথিরা এই থিম অনুসরণ করে নিজেদের উপস্থাপন করে থাকে তবে তা কিন্তু বাধ্যতামূলক নয়। এতে ককটেল আওয়ার এবং একটি আনুষ্ঠানিক ডিনার অন্তর্ভুক্ত। ককটেল আওয়ারের সময়, অতিথিরা রেড কার্পেটে হেঁটে আসেন এবং পৃথিবীর বিখ্যাত সব আলোকচিত্রীদের ক্যামেরাবন্দি হোন। ফ্যাশনের পরিপ্রেক্ষিতে, ডিজাইনারদের জন্য এটি একটি সুযোগ এবং সেলিব্রেটিদের সাথে পোশাক নিয়ে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য একটি উপায়। তারকাদের সাধারণত নিয়ম মেনে চলার পরিবর্তে উদ্ভাবনী পোশাক পরতে উৎসাহিত করা হয় এখানে। নির্বাচিত থিম একটি গল্প বলে বা ইতিহাস থেকে কিছু শেখায়। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালের ইভেন্টের থিম ছিল ‘স্বর্গীয় সংস্থাঃ ফ্যাশন এবং ক্যাথলিক কল্পনা’। এটি ভ্যাটিকান থেকে শতাধিক পবিত্র জিনিসপত্র প্রদর্শন করে। রিহানা পোপের পোশাক পরে, ক্যাটি পেরি ডানা সহ দেবদূত অবতারে নিজেকে উপস্থাপন করেছগিলেন। অদ্ভুত দর্শনের সাজ পোশাকে হাজির হওয়া ২০১৯ সালের মেট গালা ইভেন্টের থিম ছিলো ‘ক্যাম্পঃ নোটস অন ফ্যাশন’। না, এখানে ক্যাম্প বলতে স্লিপিং ব্যাগ এবং তাঁবুর সহকারে ক্যাম্প নয় বরং অতিরঞ্জিত ফ্যাশন হিসেবে ক্যাম্প বুঝানো হয়েছে। ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লেখক ও পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিস্ট সুজান সোনট্যাগের লেখা ‘নোটস অন ক্যাম্প’ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই থিম নির্ধারণ করা হয়েছিলো। ২০২২ সালের থিম ছিলো ‘আমেরিকাঃ অ্যান অ্যানথোলজি অফ ফ্যাশন’। প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও নামি-দামি তারকারা মেট গালার রেড কার্পেটে চমক নিয়ে হাজির হয়েছিলেন।

-ছবি সংগৃহীত

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গঅন্দরের ডায়েরিআয়নাঘররূপ ও ফ্যাশনসমস্যা

চুলে খুশকি, কি করি?

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১২, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

মনের মতো করে সাজ-পোশাকে নিজেকে সাজিয়ে বাইরে বের হচ্ছো। হঠাৎই দেখলে কাঁধের কাছে কাপড়ে সাদা গুড়ি গুড়ি খুশকি পড়ে রয়েছে। এর চেয়ে বিব্রতকর অবস্থা আর কিছুই হতে পারেনা। শুধু কাপড়ে নয় চিরুনি, বালিশেও এর দেখা মেলে। সারাবছর চুলে খুশকির সমস্যা অনেকের থাকলেও, শীতে যেন তার উপস্থিতি আরও বেড়ে যায়।

খুশকি আমাদের মাথায় দেখা দেয় যখন মাথার স্কিনে মৃত ত্বকের কোষগুলো ঝরে যায়। কখনও কখনও, কোষগুলো অতিরিক্ত উৎপাদনে যায় এবং স্বাভাবিক হারের দ্বিগুণ হারে ঝরে যায়; যা মাথার ত্বকের জন্য একটি সমস্যা উপস্থাপন করে। যখন মাথার ত্বকে অতিরিক্ত তেল উৎপন্ন হয়, তখন তেল মৃত কোষগুলোকে একত্রে আটকে রাখে এবং সাদা ক্লাম্প অর্থাৎ খুশকি তৈরি করে। বিজ্ঞানীরা ম্যালাসেজিয়া ছত্রাককে খুশকি এবং অন্যান্য অবস্থার সাথে যুক্ত করেছেন যেমন অ্যাটোপিক একজিমা, সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এবং ফলিকুলাইটিস। ছত্রাক তেলের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং তেল উৎপাদনে ম্যালাসেজিয়া ছত্রাক বহুগুণ বেড়ে যায়। যদিও খুশকি কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করেনা, তবে যারা এতে ভুগছে তাদের জন্য এটি বেশ বিরক্তিকর হতে পারে।

কীভাবে মুক্তি পেতে পারি?

খুশকি রাতারাতি পুরোপুরিভাবে নির্মূল করা যেতে না পারলেও একে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যায়। সেজন্য কিছু পদক্ষেপ অবলম্বন করা প্রয়োজন। যেমনঃ

নিয়মিত চুল ব্রাশ করা

খুশকির চিকিৎসা বলতে বুঝায় মাথার ত্বকে চুলকানি এবং ফুসকুড়ি থেকে মুক্তি পেতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারা। এইজন্য চুল নিয়মিত ব্রাশ করা প্রয়োজন। স্থির, দৃঢ় স্ট্রোক দিয়ে মাথার ত্বক থেকে নিচের দিকে চুল ব্রাশ করো। এটি তোমার মাথার ত্বক থেকে তেলকে দূরে নিয়ে যায়, যেখানে এটি এবং ত্বকের কোষগুলো খুশকির কারণ হতে পারে। এছাড়াও এটি চুল চকচকে এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে।

শ্যাম্পু পরিবর্তন

শীতের খুশকি কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল নিয়মিত ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করা। তোমার ব্যবহার করা প্রতিদিনকার শ্যাম্পুতে এমন কিছু উপাদান থাকতে পারে যা উপসর্গগুলোকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। যেমন সালফেট, থ্যালেটস এবং উত্তেজক সুগন্ধি। খুশকির শ্যাম্পুতে অ্যান্টি ফাংগাল বৈশিষ্ট্য আছে যা খুশকিকে বিনাশ করতে সাহায্য করে। উপরন্তু, অ্যান্টি-ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পুগুলো সাধারণত ত্বকে মৃদু, আরও ময়েশ্চারাইজিং এবং হাইড্রেটিং করে।

গরম পানি এড়িয়ে চলো

শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা অনেক আরামদায়ক। তবে এক্ষেত্রে অত্যন্ত গরম পানি মাথায় ঢালা থেকে বিরত থাকতে হবে। এটি মাথার ত্বককে আরও শুষ্ক করে এবং যখন অতিরিক্ত শুষ্ক বাতাসের সাথে মিলিত হয়, তখন শীতের খুশকির উপসর্গগুলোকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

ঘরোয়া চিকিৎসা

খুশকির শ্যাম্পু ছাড়াও আরও কিছু জিনিস আছে যা এটি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। এই প্রাকৃতিক চিকিৎসার কিছু হয় ময়েশ্চারাইজিং করবে নয়তো ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের বিরুদ্ধে সহায়ক হবে।

-নারকেল তেলে এমন এক বৈশিষ্ট্য আছে যা অবিশ্বাস্যভাবে হাইড্রেটিং করে, আর তা হল- অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য। এটি একটি শক্তিশালী সংমিশ্রণ যা শীতকালীন খুশকি প্রশমিত করতে সাহায্য করে। এটি ৩ থেকে ৫ চা চামচ মাথার ত্বকে ঘষে ঘষে লাগিয়ে নাও। তারপর ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ফেলো।

-অ্যালোভেরা এমন এক রসালো উদ্ভিদ যা এর  নিরাময় বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এর পাতার জেলে অ্যামিনো অ্যাসিড এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মতো বেশ কিছু জৈব সক্রিয় যৌগ রয়েছে যা খুশকি কমাতে পারে। এছাড়াও এর জেল ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে । চুলে শ্যাম্পু করার আগে এর জেল মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখতে পারো।

-অ্যাসপিরিনে থাকা স্যালিসিলিক অ্যাসিড, এমন একটি সক্রিয় উপাদান যা সাধারণত খুশকির শ্যাম্পুতে ব্যবহৃত হয়। স্যালিসিলিক অ্যাসিড অতিরিক্ত খুশকির ফ্লেক এক্সফোলিয়েট করতে, তেল জমা হওয়া রোধ করতে এবং মাথার ত্বকে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। খুশকিতে স্যালিসালিরিক অ্যাসিড ব্যবহার করতে ১টি বা ২টি আনকোটেড অ্যাসপিরিন ট্যাবলেটকে গুঁড়ো করে তা তোমার শ্যাম্পুর সাথে মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারো। ২ মিনিটের মত রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলো।

-অলিভ অয়েলও ভালো কাজে দেয়। মাথার ত্বকে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল দিয়ে, শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে রাখো। পরদিন সকালে চুল শ্যাম্পু করে নিলেই হয়ে যাবে।

-সোডিয়াম বাইকার্বোনেট, যাকে আমরা বেকিং সোডা বলে চিনি; খুশকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। বেকিং সোডাতেও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা খুশকির জন্য দায়ী ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে এতে একটি খুব উচ্চ পিএইচ স্তর রয়েছে, যা একজন ব্যক্তি ঘন ঘন ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। তাই এটি পরিমিতভাবে ব্যবহার করা উচিৎ।

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরাণাপন্ন

সব ঘরোয়া প্রতিকার সবার জন্য কাজ করবে এমনটা ভাবা ঠিক নয়। এইসব প্রস্তুতি নেয়ার পরেও যদি তুমি দেখে থাকো সমস্যার তেমন কোন সমাধান হচ্ছেনা তবে বসে না থেকে কোন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়াই উত্তম।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
গ্রুমিংচলন বলনজীবনযাত্রাসচেতনতা

খাবার টেবিলের আদবকেতা

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১১, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

কোন ডিনার পার্টিতে আমন্ত্রিত হয়ে যাচ্ছো অথবা বাইরে রেস্টুরেন্টে খেতে যাচ্ছো, উপলক্ষ্য যাই হোক না কেন খাবার টেবিলের কিছু সাধারণ ম্যানার্স বা আচার-ব্যবহার রয়েছে যা সবাইকেই অনুসরণ করা উচিৎ। তোমার টেবিলের এই আদবকেতা আগত অতিথিদের উপর একটি দূর্দান্ত ছাপ রেখে যেতে পারে এবং এটি প্রত্যেককে তাদের খাবার উপভোগ করার সাথে সাথে খুশি এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে সহায়তা করবে।

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে- ‘ম্যানার্স মেকথ ম্যান’। এর মানে হল যে তোমার আচার-ব্যবহার তোমাকে তৈরি করে। তুমি কে এবং তোমার সম্পর্কে কারও মতামত গঠন করতে সহায়তা করে। আচার-আচরণ হল তুমি কীভাবে নিজেকে জনসমক্ষে উপস্থাপন করো এবং বিশেষ করে যখন তুমি খাচ্ছো। ডাইনিং শিষ্টাচারের ইতিহাস অনেক গভীরে প্রোথিত। অনেকের কাছে আনুষ্ঠানিক টেবিল সেটিংস হল একটি শিল্প ফর্ম এবং টেবিলের আচারগুলোকে হালকাভাবে নেয়া উচিৎ নয়। প্রাচীনতম পশ্চিমা খাবারের ঐতিহ্যগুলো প্রাচীন গ্রীকদের দ্বারা নথিভুক্ত করা হয়েছিল। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, অন্যদের সাথে খাওয়ার অভ্যাসকে আনন্দদায়ক করতে কয়েক শতাব্দী ধরে টেবিল শিষ্টাচার বিকশিত হয়েছে। টেবিল ম্যানার্স দেশ থেকে দেশে এবং সংস্কৃতি থেকে সংস্কৃতিতে পরিবর্তিত হয়। তবে সাধারণ কিছু আদব-কায়দা আছে যা সবাইকে অনুসরণ করা উচিৎঃ

-খাবার খেতে বসার আগে হাত পরিষ্কার আছে কিনা তা নিশ্চিত করে নাও। প্রয়োজনে হাত সাবান এবং পানি দিয়ে ভালো করে ধৌত করে নাও। যদি কোন বাচ্চাকে টেবিলের আচার-আচরণ শেখাও, তাহলে তাদের হাত কতক্ষণ ধুতে হবে এবং কতটা স্ক্র্যাব করতে হবে তা বলার জন্য এটি একটি মোক্ষম সময়। তবে কিছু ফ্যান্সি রেস্তোরাঁয় হাত ধোয়ার জন্য পানির একটি আলাদা পাত্রের বন্দোবস্ত থাকে।

-পরিবেশন করা খাবার দেখতে যতই সুস্বাদু বা লোভনীয় হোক না কেন, সবাই বসে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা ভালো আচরণ। আনুষ্ঠানিক সেটিংসে, প্রথমে খাওয়া শুরু করার জন্য যিনি হোস্ট তার জন্য অপেক্ষা করা ভালো। আর যদি কোন রেস্তোরাঁয় খেতে যাও, তবে প্রত্যেকে তাদের খাবার না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করাই শ্রেয়।

তবে এই নিয়মেরও ব্যতিক্রম আছে। হোস্ট যদি খাবার পরিবেশনের তদারকিতে থাকেন এবং সবার খাওয়া আগেই নিশ্চিত করতে চান, তবে সেক্ষেত্রে শুরু করা দেয়া যেতে পারে।

-খাবার টেবিলে যাওয়ার আগে হাতের মুঠোফোনটি সাইলেন্ট বা ভাইব্রেটের উপর রাখো এবং এটি একটি পার্স বা পকেটে রাখতে পারো।

-টেবিলে থাকা নির্দিষ্ট ন্যাপকিনটি খুলে তোমার পুরো কোলের উপর মেলে রাখো। এটিকে মসৃণ করো যাতে তা সমতল হয়। এটি তোমার হাত বা চামুচ থেকে পড়ে যাওয়া যেকোন খাবার ধরে ফেলবে। এছাড়াও কোলে রাখার কারণে এটি সহজে নাগালের মধ্যে থাকে, তাই যখন প্রয়োজন খাবারের সময় ন্যাপকিন ব্যবহার করে হাত বা মুখ মুছতে পারো। যদি খাবার মাঝে তোমাকে টেবিল ছেড়ে যেতে হয়, তোমার রুমালটি চেয়ারে রাখো, টেবিলে নয়। এটি সংকেত দেবে যে তুমি ফিরে আসবে এবং তোমার খাবার শেষ হয়নি।

-মুখ বন্ধ করে খাবার চিবিয়ে খাওয়া শোভন দেখায়। যদি তুমি তোমার খাবার চিবিয়ে থাকো এবং কেউ এমন কিছু বললো যার উত্তর তুমি দিতে চাও; সেক্ষেত্রে খাবার গিলে ফেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করো। মুখ খোলা রেখে চিবানো বা মুখ পূর্ণ হয়ে গেলে কথা বলাকে অনেকে অশোভন মনে করে।

-টেবিলে হাতের কনুই রেখে খেতে খুব আরামদায়ক হতে পারে। বিশেষ করে তুমি যদি ক্লান্ত হয়ে থাকো। কিন্তু তুমি যদি একটি ডিনার পার্টিতে থাকো বা রেস্তোরাঁয় থাকো, তবে কনুই টেবিল থেকে দূরে রাখাই ভাল আচরণ। কনুই টেবিলে রাখা অনেক জায়গা নেয় এবং এটিকে খারাপ আচরণ মনে করা হয়। একটি হাত তোমার কোলে রাখতে পারো যখন এটি তুমি খাবার খেতে ব্যবহার করছোনা।

-তুমি যখন কোন আনুষ্ঠানিক নৈশভোজ বা ফ্যান্সি কোন রেস্টুরেন্টে যাবে, সেখানে টেবিলে থাকা একাধিক কাঁটাচামচ, ছুরি দেখতে পাবে। তখন কোন চামচ, কাঁটা বা ছুরির ব্যবহার করতে হবে তা  নিয়ে বেশ বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। এক্ষেত্রে খাবারের কয়েকটি কোর্স হিসেবে কয়েকটি ভিন্ন চামচ এবং ফর্ক দিয়ে সেটিংস নিয়ে রাখো, যা সাধারণত বিভিন্ন আকারের হয়। আর যদি বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে একটি ডিনার পার্টিতে থাকো তবে সেখানে হয়তো একাধিক পাত্র নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা।

-রেস্তোরাঁয় খাবারের সময় সঠিকভাবে চামুচ ব্যবহার করে নাও। ডান হাতে ছুরি এবং বাম হাতে কাঁটা চামচ ধরো। ছোট ছোট টুকরো করে খাবার মুখে নাও। খাবার শেষে চামচ আর ছুরি প্লেটের মাঝ বরাবর রেখে দাও।

-নিজের খাবার যদি নিজেকে নিয়ে পরিবেশন করতে হয় তবে খাবারগুলো চারপাশে রেখে দাও। একবার তুমি পর্যাপ্ত খাবার নেয়ার পর, ডানদিকে থাকা ব্যক্তির কাছে পাত্রটি তুলে দাও। পরবর্তীতে আরও খাবারের প্রয়োজন হলে এবং তা যদি নাগালের বাইরে থাকে তাহলে তা ভদ্রভাবে দিতে বলো। কখনও অন্যজনকে অতিক্রম করে খাবার নিতে যাবেনা।

-একটি ডিনার পার্টি শুধুমাত্র খাবার দাবারের জন্যই নয়। খাওয়ার খাওয়ার সময় আশেপাশে অন্যান্য অতিথিদের সাথে কথা বলতে ভুলবেনা এবং চলমান কথোপকথন মনোযোগ সহাকারে শুনে নিজেও সে বিষয়ে যোগদান করো। তবে কথা শুরু করার আগে মুখে থাকা খাবার চিবিয়ে গিলে ফেলতে ভুলবেনা।

-খাবারের মাঝে ঢেঁকুর, হাঁচি, কাশি আসা স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে রুমাল বা হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখো এবং মুখ বন্ধ রাখো যাতে এটি জোরে না হয়।

-তুমি যদি পারিবারিক কোন নৈশভোজে থাকো তবে পরিষ্কারের জন্য হাত লাগাতে পারো। রান্নাঘরে আনতে প্লেট, ন্যাপকিন, চামচ সংগ্রহ করতে সাহায্য করো।

-খাবার শেষে হোস্টকে ধন্যবাদ দিতে ভূলবেনা। যদি কোন রেস্তোরাঁয় তোমাকে খাবার পরিবেশন করে দেয়া হয় তবে সার্ভারগুলোকেও ধন্যবাদ জানাও।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • সঠিক হুইস্ক বাছাই করবো কীভাবে?

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook