রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
লেখক

Shaila Hasan

Shaila Hasan

অনুসঙ্গআয়নাঘরএই সংখ্যায়দিবস সবিশেষবসন ভূষণরূপ ও ফ্যাশন

একুশের সাজ যেমন হওয়া চাই

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ২০, ২০২৩

শায়লা জাহান:

“আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কী ভূলিতে পারি?” ঐতিহাসিক এই গান আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ভাষার জন্য রাজপথে শহীদ হওয়া সালাম, বরকত, রফিক, শফিক সহ অসংখ্য নাম না জানা ভাষা শহীদদের কথা। একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি প্রতিটি বাঙালির জীবনে অনেক বিশেষ একটি দিন কারণ এর সাথে জড়িয়ে আছে বাঙালি জাতির আবেগ, ঐতিহ্য। এই ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ কে সম্মান জানাতে প্রতি বছরই শ্রদ্ধার সাথে তাঁদের স্মরণ করা হয়। এই দিনে সকল স্তরের, সকল বয়সের মানুষ ফুল হাতে সমবেত হোন শহীদ মিনারে। দিবসটিকে ঘিরে সারাদিন জুড়ে থাকে নানান ধরনের আয়োজনের। তাই দিবসটি পালনের পাশাপাশি সাজ-পোশাকের ক্ষেত্রেও থাকা চাই কিছুটা বিশেষত্বের। কেমন হবে অমর একুশের সাজ-পোশাক? আসো জেনে নিই।

– প্রকৃতিতে বইছে ফাল্গুনি হাওয়া। ফাল্গুন মানে রঙের ছাড়াছড়ি। কিছুদিন আগেই আমরা রঙ-বেরঙের সাজপোশাকে ফাল্গুনকে বরণ করে নিয়েছি। আর একদিন পরেই একুশে ফেব্রুয়ারি। একেক দিবস একেক গল্প বহন করে। তাই আমাদের সাজগোছের যাবতীয় কিছু হওয়া চাই এই আবহকে ঘিরে। একুশ মানেই শোক, একুশ মানেই সাদাকালোর এক মেলবন্ধন। আর এই সাদাকালোর ভেতরই যেন মিশে আছে একুশের ভাবগাম্ভীর্য। এই দিনে সাদা-কালোর মিশেলে কিংবা শুধু সাদা বা কালো পোশাকে নিজেকে সাজিয়ে নিতে পারো।

– আমাদের দেশের আবহে মেয়েদের পছন্দের তালিকায় থাকে শাড়ি। সাদা কালোর মিক্সড অথবা সাদা শাড়ি, কালো ব্লাউজ এমন কন্ট্রাস্টে করেও শাড়ি নির্বাচন করতে পারো। শাড়িতে মেটারিয়েল হিসেবে সুতিকে প্রাধান্য দেয়া থাকলেও, সিল্ক, জামদানি, মসলিন ইত্যাদিও পরতে পারো।

– প্রতিবছরই আমাদের দেশের ফ্যাশন হাউজগুলো এই দিবস উপলক্ষে নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাকের সমারোহ নিয়ে হাজির থাকে। ভাষার মাসে পোশাকের অবয়ব অলংকরণে বর্ণমালা ও জ্যামিতিক মোটিফের ডিজাইন প্রাধান্য পায়। বর্ণ ও শব্দ মালার বিন্যাসে অলঙ্কৃত পোশাকও বেছে নিতে পারো।

– শুধু শাড়িতেই নয়, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, টপস ইত্যাদিও তুমি অনায়াসে পরতে পারো। লাল, কালো, সাদা, ধূসর প্রধান রঙ ছাড়াও সবুজ, নীল, কমলার মতো রঙ বেছে নিতে পারো। কামিজ, ফতুয়ায় এমব্রয়ডারি, অ্যাপলিক, হ্যান্ড পেইন্ট, ব্লক, স্ক্রিন প্রিন্ট সহ বিভিন্ন নকশার প্রাধান্য পাচ্ছে। তোমার পছন্দ অনুযায়ী তা নির্বাচন করে নিতে পারো।

– সাজের প্রসঙ্গে বলতে গেলে, যতটা ন্যাচারাল দেখানো যায় তাই ভালো। একুশ মানে কিন্তু প্রভাতফেরি। এই দিনের যত আয়োজন সবকিছুর সূচনা এই প্রভাতফেরির মধ্য দিয়েই শুরু হয়ে যায়। তাই দিনের বেলা সাজে প্রসাধনীর উপস্থিতি যতটা কম হবে তত স্নিগ্ধ দেখাবে। মুখ ভালো করে ক্লিন করে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নাও। হালকা ফাউন্ডেশন দিয়ে মুখের বেজ ঠিক করে কম্প্যাক্ট পাউডার দিয়ে সেট করে নাও। দিনের আলোতে কন্ট্যুরিং ভাল দেখাবেনা। তার পরিবর্তে গালের দু’পাশে হালকা করে ব্লাশন মিশিয়ে দাও। এতে চেহারায় সতেজ ভাব দেখাবে। চোখ ভর্তি করে দিতে পারো কাজল এবং টানা করে আইলাইনার। ঠোঁটে হালকা কালারের লিপস্টিক। ব্যস! এই মিনিমাল মেকআপ লুকে তোমাকে দেখাবে অনেক সুন্দর। আর হ্যাঁ, সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলোনা যেন।

– চুল সজ্জার ক্ষেত্রে সাদামাটা বেণি বা হাতখোঁপা করলে ভালো দেখাবে। চাইলে তাতে সাদা রঙের যে কোন ফুল জড়িয়ে দিতে পারো।

– এই দিনে সাজে যেমন বাঙ্গালিয়ানা ভাব দেখতে ভালো লাগে তেমনি সাজের সাথে আনুষঙ্গিক জিনিসও সেভাবে বেছে নিতে পারো। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ কিংবা ফতুয়া সব পোশাকের সাথেই পরতে পারো দেশীয় ও ঐতিহ্যবাহী গয়না। শুধু হাত ভর্তি কাঁচের চুড়িও বেশ মানিয়ে যাবে। সাজের পাশাপাশি আরামদায়কতাকেও প্রাধান্য দিতে হবে। এজন্য পায়ে পরতে পারো চটি কিংবা স্যান্ডেল।

– যদি তোমার সারাদিনের বাইরে থাকার পরিকল্পনা থাকে, তবে সেভাবে প্রস্তুতি নিয়েই বের হবে। সন্ধ্যার পর হালকা ঠান্ডায় যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য সাথে পাতলা শাল নিতে ভূলোনা যেন।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
পাঠকের রান্নাভালো থাকার ভালো খাবারহেঁসেল

কেক বেকিংয়ের সাধারণ কিছু ভুল

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ১৯, ২০২৩

শখের বশে ঘরে বসে টুকিটাকি বেকিংয়ের প্রচেষ্টা করেনি এমন কাউকে পাওয়া দুষ্কর। কেক, বিস্কুট এমন মুখরোচক আইটেম আমাদের সকলেরই প্রিয়। আর তা যদি করা হয় ঘরোয়া পরিবেশে তাহলে তো আর কথাই নেই। কাপকেক, কেক, পাউন্ড কেক, কুকিজ- এগুলোর রেসিপি দেখতে সবই সহজ মনে হলেও, অধিকাংশই সফলতার মুখ দেখতে ব্যর্থ হয়। আজ জানবো কীভাবে সাধারণ কিছু ভুল এড়িয়ে একটি পারফেক্ট পাউন্ড কেক তৈরি করা যায়। লিখেছেন শায়লা জাহান। 

পাউন্ড কেক হল ব্যান্ডট প্যানে তৈরি একটি সুস্বাদু কেক যার কারণে কেকটিকে প্রায়শই পাউন্ড কেক বা ব্যান্ডট কেক বলা হয়। ময়দা, চিনি, মাখন এবং ডিম- এই সহজলভ্য ৪টি প্রধান উপাদান থেকে এটি তৈরি করা হয়। যদিও এর অনেক বৈচিত্র্য রয়েছে, কিন্তু সেগুলো হল এর মৌলিক উপাদান। এতো সহজ উপাদানের সমন্বয়ে পাউন্ড কেক তৈরি করতে গেলেও আমাদের কমন কিছু সমস্যায় পড়তে দেখা যায়। এই হয়ত দেখা যায় ভেতরে শক্ত বা কাঁচা থেকে যাচ্ছে, নতুবা কেক কিছুটা ফুলে আবার চুপসে যাচ্ছে। শখের কেকের যাতে এই বেহাল অবস্থা না হয় সে জন্য নিচের কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারো।

সঠিক পরিমাপ

বেকিংয়ের ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে যেটা প্রয়োজন তা হল উল্লেখিত উপাদানগুলোর পরিমাপ সঠিকভাবে নেয়া। আমরা অনেক সময় হাতের আন্দাজেই উপাদানগুলো নিয়ে থাকি, যা একেবারেই ভুল। কেকের উপাদানগুলো পরিমাপ করার সময়, সঠিক নির্ভূলতার জন্য একটি পরিমাপের কাপ বা স্কেল ব্যবহার করা উচিৎ। শুকনো আইটেমগুলোর জন্য পরিমাপ কাপ বা চামুচ ব্যবহার করো। উপাদানগুলো কাপে নিয়ে ছুরি বা চামুচের সাহায্যে কাপের শীর্ষটি সমতল করে নাও। ময়দা, চিনি, ক্রিম ইত্যাদির মতো উপাদানগুলো পরিমাপ করতে এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

ফুড স্কেল ব্যবহারের আগে স্কেলটি প্রথমেই শূন্য করে দাও। তারপর বাটিটি স্কেলের উপরে রেখে, তাতে উপাদান রেখে পরিমাপ করে নিতে পারো। এটির ব্যবহার ভুলের সুযোগ কমিয়ে দেয়।

চিনি

চিনি কিন্তু তিন প্রকারের পাওয়া যায়। দানাদার, ক্যাস্টর এবং গুঁড়ো চিনি। সহজে মিশে যেতে পারে বলে ছোট দানার চিনি ব্যবহার করা উচিৎ। বিকল্প হিসেবে চিনিকে গ্রাইন্ডারে গুঁড়ো করে নেয়া যেতে পারে। দানাদার চিনি এবং গুঁড়ো চিনি কিন্তু মিষ্টতার দিক দিয়ে পার্থক্য আছে। তাই ব্যবহারের আগে সেটার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বাটার

কেক তৈরির নিমিত্তে যে বাটার ব্যবহার করছো তার গুণমান যাচাই করে দেখো। কিছু অফ ব্র্যান্ড বা সস্তা মাখনে অনেক বেশি পানি বা তরল চর্বি থাকে, সেগুলো কিন্তু বেকিংয়ে ভালো ফল দিবেনা। এরপর যেটার দিকে তাকাতে হবে তা হল মাখনটিকে ঠিকভাবে বীট করা হচ্ছে কীনা? একে ততক্ষন পর্যন্ত বীট করতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না বাটারটি একটি স্টিক সদৃশ হয়ে যায়।

উপাদানগুলোর ওভারমিক্স করা

কেকের উপাদানগুলোকে ওভারমিক্স করা থেকে বিরত থাকতে হবে। হ্যাঁ, তোমাকে একবার বলা হয়েছে বাটারকে ভালোভাবে বীট করতে। কিন্তু যখন তুমি ব্যাটারে ডিম যোগ করবে, শুধুমাত্র সব উপাদানগুলো ভালোভাবে মিশাতে যতটুকু নাড়তে হয় ততটুকুই মিক্স করবে ব্যস। কারন অতিরিক্ত মিক্সিং ব্যাটারে বাতাস যোগ করতে পারে যা শুষ্কতা সৃষ্টি করতে পারে। এটি গ্লুটেনকেও সক্রিয় করে, যা কেকের টেক্সচারকে প্রভাবিত করে। খুব বেশি মেশানো এটিকে শক্ত এবং রবারি করে তুলবে।

ঘরের তাপমাত্রার উপাদান

উপাদান যেমন মাখন, ডিম, যেকোন ভেজা উপাদান (দুধ, ক্রিম, বাটারমিল্ক, টক ক্রিম) ইত্যাদি ব্যবহারের আগেই ঘরের তাপমাত্রায় আনতে হবে। ফ্রিজে থাকলে অন্তত একঘন্টা আগে বের করে রাখতে হবে। এগুলো যদি ঠান্ডা অবস্থায় নেয়া হয় তবে দেখা যা তা ব্যাটারে ভালোভাবে মিশবেনা নতুবা পিন্ড তৈরি করতে পারে।

সঠিক কেক প্যান

তোমার কেক রেসিপিটি যে আকারের প্যানের জন্য যথার্থ হবে সেটাই নির্বাচন করে নাও। ভুল আকারের প্যান ব্যবহার করার ফলে সমস্যা হতে পারে। যেমন- ব্যাটার প্যানে ফিট হচ্ছেনা, প্যান থেকে ব্যাটার উপচে পড়ছে বা কেক চারপাশে সমানভাবে বেক হচ্ছেনা। আরেকটি জিনিস লক্ষ্য রাখবে, প্যানে ব্যাটার এমনভাবে ঢালবে, যাতে প্যানের উপর থেকে প্রায় ইঞ্চি খানেক জায়গা খালি থাকে। এই খালি জায়গায় কেকটি বেক করার সময় উঠতে পারে। যদি প্যানের আকার নিয়ে কিছুটা কনফিউশন কাজ করে, সেক্ষেত্রে ব্যাটার ছিটকে পড়া এড়াতে বড় প্যান নির্বাচন করে নাও।

তেল গ্রীস করা

নির্বাচিত প্যানে কেকের ব্যাটার ঢালার আগে, প্যানটিতে ভালোভাবে তেল গ্রীস করে নাও। গ্রীস না করলে বেক করার পর কেকটি প্যান থেকে ভালোভাবে বের করা সম্ভব হবেনা। বেকিং স্প্রে করে এই গ্রীস করতে পারো। তবে সবচেয়ে ভালো হয় ময়দা এবং তেল পদ্ধতি। এর জন্য প্রথমে প্যানের ভেতর ভালোভাবে তেলের একটি সমান স্তর দিতে হবে। তারপর তার উপর হালকা এবং সমানভাবে ময়দা দিয়ে ঢেকে দাও। শেষে প্যানটি উপুড় করে হালকা ঝাঁকালে বাড়তি ময়দা  ঝরে পড়বে।

ওভেনের তাপমাত্রা

রেসিপিতে যা বলা হয়েছে তার থেকে ১৫ ডিগ্রি বেশি তোমার ওভেনকে প্রিহিট করে নাও এবং তারপর যখন কেকটি রাখবে তখন এটি সঠিক তাপমাত্রায় কমিয়ে দাও। কেক বেক করার সময় ওভেনের দরজা বারবার খুলবেনা। বারবার এর দরজা খুলাতে এটি প্রচুর পরিমাণে তাপ হারায়। এতে কেক চুপসে যেতে পারে।

কুলিং

কেকটিকে ১০-১৫ মিনিটের জন্য একটি কুলিং র‍্যাকে ঠাণ্ডা হতে দাও। ঠাণ্ডা হলে তারপর উল্টে কেকটি বের করে নাও। আইসিং সুগার, ফল, ক্রিম অথবা চকলেট দিয়ে পছন্দমত ডেকোরেশন করে নাও আর উপভোগ করো।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংসচেতনতা

শিশুদের স্ক্রীন আসক্তি কমানোর উপায়

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২৩

শায়লা জাহান:

পাঠ্যবইয়ে পড়া সুফিয়া কামালের “আজিকার শিশু” ছড়াটির কথা মনে আছে? তাতে তিনি বলেছেন-

“আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুল খেলা/ তোমরা এ যুগে সেই বয়সেই লেখাপড়া কর মেলা/ আমরা যখন আকাশের তলে ওড়ায়েছি শুধু ঘুড়ি/ তোমরা এখন কলের জাহাজ চালাও গগণ জুড়ি।“ আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। দেশ ও জাতির উন্নতির কল্পে তাদের মাঝেই লুকায়িত হয়ে আছে হাজারো সম্ভাবনার জীয়নকাঠি। যে বয়সে তাদের মাঝে সৃজনশীল প্রতিভা বিকশিত হওয়ার কথা, সে বয়সেই এসে তারা ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের উপর চরমভাবে আসক্ত হয়ে পড়ছে; যা উদ্বিগ্ন হওয়ার মতোই বটে।

কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন এবং দূরত্ব শিক্ষার মডেলগুলোর কারণে, অনেক শিশুর মাঝেই দিনে আরও বেশি স্ক্রীন টাইম অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। এই কারণেই দিনের বাকি সময়ে ইলেকট্রনিক্সের ব্যবহার কমানো আগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে আপডেট থাকার জন্য এগুলো সংস্কৃতির একটি অংশ হলেও, শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি, স্থূলতা হ্রাস সহ আরও অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা সম্পর্ক রয়েছে এই স্ক্রীন সময় কমানোর সাথে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, করোনার সময় আমরা সবাই বাইরের কাজ, হোম স্কুলিং, বাড়ির কাজ এবং শিশু যত্নের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করার সময় বেবিসিটার হিসেবে এইসব ডিভাইসের উপর নির্ভর করেছি। মহামারী চলাকালীন এগুলো অপরিহার্য ছিল, কিন্তু এখন আমাদের বাচ্চাদের স্ক্রীন ব্যবহার ভালোর চেয়ে বেশি ক্ষতি করছে কিনা তা দেখার সময় এসেছে। আমেরিকান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্সের একটি গ্রহণযোগ্য স্ক্রীন সময়ের জন্য সুপারিশগুলো হলঃ

-২ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের জন্য স্ক্রীন টাইম নেই

-২ থেকে ১২ বছরের শিশুদের জন্য প্রতিদিন এক ঘন্টা

-কিশোর এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন দুই ঘন্টা

কিন্তু বাস্তবতা হলো ৮৫% শিশু এই পরিমানকে ছাড়িয়ে যায় যা তাদের সুস্থতা এবং বিকাশকে প্রভাবিত করছে।

স্ক্রীন আসক্তির প্রভাব

বাচ্চাদের জন্য, বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীদের জন্য স্ক্রীন টাইমের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এর মাঝে তারা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেঃ

-অন্যান্য কাজকর্মে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা

-মনোযোগ দিতে অক্ষমতা

-সামাজিকীকরণে সমস্যা

-ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা

-মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া

-স্থূলতা বৃদ্ধি পাওয়া

-মানসিক ও অন্যান্য শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়া

মুক্তির উপায়

নিজের স্ক্রীন টাইম সীমিতকরণ

বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্দার আসক্তিতে আক্রান্ত বাচ্চাদের সাহায্য করার প্রথম ধাপ হল নিজেদের দিকে তাকানো। কারো আচরণকে প্রভাবিত করার সবচেয়ে শক্তিশালী উপায় হল সেই আচরণগুলোকে মডেল করা। আমরা বড়রাই অনেক সময় কাজ থেকে ফিরে মোবাইল নিয়ে বসে পড়ি। সন্তানকে হয়তো কোন কাজে ব্যস্ত রেখে বা খেলতে দিয়ে নিজেরাই ঘন্টার পর ঘন্টা ডিভাইস নিয়ে পরে থাকি। তাই প্রথমেই আমাদের এই বদ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।

শিশুর হাতে ফোন না দেয়া

আমরা বড়রা প্রায়শই যা করি তা হলো বাচ্চা যখন কান্না করে তাদের শান্ত হতে অথবা খাওয়ানোর সময় স্মার্টফোনটি তাদের হাতে তুলে দিই। এতে কাজ হলেও, পারতপক্ষে আমরাই কিন্তু বিপদ ডেকে আনছি। শিশুর হাতে ডিভাইস তুলে দেয়া মানে তাদের ভেতর এটার অভ্যাস গড়ে তোলা, যা মোটেই ঠিক নয়। তাই এইসময়গুলোতে তাকে এসব না দিয়ে গল্প শুনিয়ে কিংবা তার পছন্দের ছড়া বা গান শুনিয়ে তার মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে যেতে হবে।

স্ক্রীন এবং স্ক্রীন-মুক্ত সময় সেট করা

বর্তমানে বাচ্চাদেরকে পুরোপুরিভাবে এর থেকে দূরে রাখা সম্ভবপর হয়ে উঠেনা। তাই প্রতিদিন একটি সময় ঠিক করে নাও, যখন যাবতীয় সব ধরনের স্ক্রীন টাইমের জন্য বিরাট নো থাকবে। এই সময়টিতে বাচ্চাদের যে কোন ধরনের এক্টিভিটিসে উৎসাহ দিতে হবে। এছাড়াও সে সময়টিতে স্কুলের পড়া, হোম ওয়ার্ক, ঘরের রুটিন ওয়ার্কগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ভারাসাম্য আনয়নের জন্য সবকিছুর মাঝেই একটি সীমা থাকা নিশ্চিত করো।

সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দেয়া

বাচ্চারা মাত্রই কল্পনাবিলাসী। এই ইমাজিনেশন পাওয়ারের মাধ্যমে তারা অনেক কিছুই অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। কিন্তু অত্যাধিক স্ক্রীন টাইম তাদের এই সম্ভাবনাকে বিকশিত করতে বাঁধা দেয়। তাই তাদের সৃজনশীল কাজের প্রতি বেশি বেশি উৎসাহ দিতে হবে। সে যা করতে ভালোবাসে- এই যেমন ছবি আঁকা, ক্রাফটিংয়ের কাজ করা বা বিশেষ কোন খেলা, সবকিছুতে তাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে হবে। প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে বা সেই সংক্রান্ত বিশেষ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে অংশ করিয়ে দিতে হবে।

বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা

যে কোন বয়সী মানুষের জন্য বই হতে পারে সর্বোত্তম বন্ধু। বাচ্চাদের হাতে গ্যাজেট তুলে না দিয়ে বই তুলে দাও। তাদের মাঝে পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলো। প্রয়োজনে তাদের লাইব্রেরিতে নিয়ে যাও, যেখানে অনেক বইয়ের মাঝে সে নিজেকে খুঁজে পাবে। ঘরেও পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য সেই সহায়ক পরিবেশ করে তোলো।

সময় দেয়া

ব্যস্ত এই জীবনে আমরা সবাই ছুটে চলেছি। কিন্তু শত ব্যস্ততার মাঝেও বাচ্চাদের সময় দেয়া একেবারেই ভুললে চলবেনা। কারণ তোমার এই শূন্যতা তাদের মাঝে এই স্ক্রীনে আসক্তি করে দিতে যথেষ্ট। কর্মজীবী হলে, ঘরে ফিরে নিজে ডিভাইসে বুঁদ না হয়ে সন্তানদের সাথে কোয়ালিটি টাইম কাটাও। উইকেন্ডে তাদের নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাওয়া যেতে পারে। প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়া খুবই জরুরী। এছাড়াও ঘরোয়া কাজেও তাদের সহযোগিতা নিতে পারো। ছোট-খাটো কাজ সমাধা করতে পারলে তাতে প্রশংসা করো। এতে দেখবে মোবাইলের প্রতি আসক্তি তাদের অনেকটুকুই কমে যাবে।

প্রতিটি শিশুই অনুকরণপ্রিয়। ছোট থেকেই তারা থাকে দলা পাকানো মাটির মতো। তাদের তুমি যেভাবে গড়বে, সেভাবেই কিন্তু সে বেড়ে উঠবে। তাই প্রথম থেকেই তাদের প্রতি বিশেষ কেয়ার করা খুবই জরুরী। কবি সুফিয়া কামাল যথার্থই বলেছেন, “তোমরা আনিবে ফুল ও ফসল পাখি-ডাকা রাঙা ভোর/ জগৎ করিবে মধুময়, প্রাণে প্রাণে বাঁধি প্রীতিডোর’’।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রারোদসীর পছন্দরোমান্সরোমান্স রসায়ন

মধুচন্দ্রিমায় বিয়ে

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ১৫, ২০২৩

বিয়ে মানেই নতুন স্বপ্ন। হাজার বছর ভালো থাকার ব্রত। তবে সেই ভালো থাকা, সুন্দর থাকা যদি হয় বিয়ের দিন থেকেই! বিয়ের দিন বর-কনের মনে থাকে নানা সংশয়। কিন্তু প্রকৃতি তা এক তুড়িতে উড়িয়ে দিতে পারে। যদি হয় স্বপ্নের জায়গায় বিয়ের স্থান নির্বাচন। লিখেছেন সায়মা ইসলাম।

অনেকেই ভাবে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং খরচসাপেক্ষ। তাই ইচ্ছা থাকলেও অনেকেই ভয় পায় এ ধরনের পরিকল্পনা করতে। আবার রয়েছে কিছু ঝক্কিও। তবে একটু সময় নিয়ে, ভেবে পরিকল্পনা করলে যেতে হবে না বিদেশে; যা দেশেই সম্ভব। নতুন প্রজন্মের মধ্যে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং। শুধু তারকারা নয়, সাধারণ মানুষও এখন আত্মীয়স্বজন, জাঁকজমক ছেড়ে চাইছে সুন্দর কোনো লোকেশনে শুধু কাছের মানুষদের নিয়ে ছিমছাম পরিসরে বিয়ে করতে। তবে বর-কনের পছন্দকে গুরুত্ব দিতে হবে সেই লোকেশন ঠিক করতে।

বিচ ওয়েডিং

যদি সমুদ্রতটের একরাশ বালিয়াড়িতে সাজাতে চাও নিজের বিয়ের আসর, তবে অবশ্যই বেছে নিতে পারো নিজের দেশেরই সমুদ্রতট। তবে কক্সবাজার পর্যটকদের সমাগম বেশি হওয়ায় বিয়ের জন্য বেছে নেওয়া উচিত বছরের এমন একটা সময়, যখন পর্যটক সমাগম হয় কম। এ ক্ষেত্রে সুবিধাজনক কুয়াকাটা কিংবা অন্য কোথাও। পর্যটক সমাগম কম হওয়ায় বিছানো সমুদ্রতটের ফাঁকা জায়গাজুড়ে সাজাতে পারো বিয়ের আসর।

প্যালেস ওয়েডিং

বাংলাদেশ কিংবা ভারতীয় তারকারা এখন অনেকেই বিয়ের জন্য বেছে নিচ্ছেন রাজস্থান বা আগ্রার বিভিন্ন প্রাসাদ। পিছিয়ে নেই হায়দরাবাদের ফলকনামা প্যালেস হোটেলও। ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের জন্য বিভিন্ন প্রাসাদকে পরিণত করা হয়েছে হোটেলে। যেখানে বিয়ের থিমও হয় রাজকীয়। অর্থাৎ, বিয়ের সাজ থেকে আবহ, খাবারের তালিকা সবকিছুতেই থাকবে রাজঐতিহ্যের ছোঁয়া। পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার রাজবাড়ি, মুর্শিদাবাদের হাজারদুয়ারি প্রাসাদ, ঝাড়গ্রাম প্রাসাদ (মেদিনীপুর),  ভুটান হাউস প্যালেসেও হতে পারে বিয়ের আসর।

মাউন্টেন ওয়েডিং

বসন্তের পর সবারই যেন বিয়ের জন্য সব থেকে পছন্দের ঋতু শীত। অনেকেই চায় ঠান্ডায় বিয়ে করতে। আর বিয়ে যদি করা যায় হিমালয়ের কোলে, তাহলে তো কথাই নেই। ঝকঝকে আকাশে বিয়ের ছবি যেমন সুন্দর হবে, তেমনই সুন্দর আবহাওয়ায়, হিমেল পরিবেশও বিয়ের অনুষ্ঠানও হবে মনোরম। পশ্চিমবঙ্গে দার্জিলিং, কালিম্পঙ, কার্সিয়ঙ, সন্দাকফু, লাভা, ডুয়ার্স, পেডং, সামসিং হয়ে উঠতে পারে অসাধারণ ওয়েডিং ডেস্টিনেশন। বিচ ও প্যালেস ওয়েডিংয়ের পাশাপাশি জনপ্রিয়তায় ক্রমেই ওপরে উঠে আসছে মাউন্টেন ওয়েডিং।

ফরেস্ট ওয়েডিং

ভালোবাসায় পরিপূর্ণ জীবন শুরু করার জন্য জঙ্গলে বিয়ের থেকে ভালো কিছুই হতে পারে না। সবুজ, পাখির কলরবের মাঝে জঙ্গল সেজে উঠবে বিয়ের জন্য। রাঙামাটি, বান্দরবান, সিলেট, কাছের সবুজ ছায়া রিসোর্টগুলোতেও পরিকল্পনা করতে পারে বিয়ের। তবে বনের পশুপাখিকে বিরক্ত না করেই বিয়ের অনুষ্ঠান করা শ্রেয়। দিনের বেলা সুন্দরবনের লঞ্চেও হতে পারে বিয়ের অনুষ্ঠান।

ভিলেজ ওয়েডিং

অনেকেই চায় বিয়ে করতে গ্রাম্য পরিবেশে। তাই বাড়ির কাছের সুন্দর গ্রামগুলোকে সাজিয়ে ফেলা যায় বিয়ের জন্য। আবার ঝক্কি মনে না হলে নিজ গ্রামকেও ওয়েডিং ডেস্টিনেশনের জন্য ভাবা যায়। সে ক্ষেত্রে নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে গ্রাম্য পরিবেশে অনায়াসে পরিকল্পনা করা যেতে পারে বিয়ের।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিঘরকন্যাজীবনযাত্রামনের মত ঘররোদসীর পছন্দ

ঘর সাজুক ফাগুনের ছোঁয়ায়  

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ১৪, ২০২৩

নির্জীব ও নিষ্প্রাণ প্রকৃতি অবশেষে আড়মোড়া ভেঙে জেগে উঠেছে। রুক্ষ পরিবেশে প্রাণ দোলানো মাতাল করা বাতাস আর কোকিলের কুহুতানে প্রাণের সঞ্চার নিয়ে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন ঘটেছে। রঙ, রস ও রূপে ভরা ফাল্গুনের সৌন্দর্য শুধু ব্যক্তির মনেই নয়, ছড়িয়ে পড়ুক ঘরের অন্দর সজ্জায়ও। আইডিয়া শেয়ার করেছেন শায়লা জাহান। 

বাঙ্গালি স্বভাবতই উৎসব প্রিয় জাতি। আর তা যদি হয় ফাল্গুনকে বরণ করার প্রস্তুতি, তাহলে তো কথাই নেই। ঘরের একঘেয়েমি সাজসজ্জায় নাভিশ্বাস উঠে গেছে? শীতের ছায়াময় দিনগুলো এবং হাইবারনেশনকে পিছনে ফেলে, বসন্তের সাজসজ্জার ধারণাগুলোকে ফোকাসে এনে ঘরকে আরও জীবন্ত আর আকর্ষনীয় করার উপযুক্ত সময় এখনই। প্রতিটি ঘরে শ্বাস নিতে দেয়া থেকে শুরু করে সাজ-সজ্জার পরিবর্তনের মাধ্যমে ঘরকে সতেজ করার নিমিত্তে কিছু আইডিয়া শেয়ার করা হলো।

দ্বার খোল

প্রথম এবং সর্বাগ্রে, ঘরকে সতেজ করার সর্বোত্তম উপায় হল ঘরে তাজা বাতাসকে আমন্ত্রণ জানানো। এই দ্বার খোলার মানে হলো পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের পথ উন্মুক্ত করে দেয়া। এই সঞ্চালনের মাধ্যমে স্থবির, জীবাণুযুক্ত, পুনর্ব্যবহৃত বায়ু বের হয়ে যায়। বাতাসে এখনও হালকা ঠাণ্ডা ভাব থাকলেও, কিছুটা সময় বাতাস চলাচলে ঘরের প্রতিটি কোণ সতেজ ও ফ্রেশ ভাব আসবেই।

ডিক্লাটার

ঘরকে পরিষ্কার বা সাজসজ্জা করার আগে, শীতকালীন আইটেমগুলোকে তাদের নিজ নিজ জায়গায় সরিয়ে দিতে ভুলবেনা। শীতের কাপড় থেকে শুরু করে শীতকালীন প্রসাধনী সবকিছুরই পুনর্বিন্যাস করতে হবে। ডিক্লাটার বা সংগঠিত করার আগে নিজেকে প্রশ্ন করো যে, এটি রাখার মতো আইটেম কিনা, যদি না হয় তবে তুলে রাখো।

নানান রঙের খেলা

বসন্ত মানেই রঙের খেলা। বসন্ত হল আউটডোরে পুনর্জন্ম এবং পুনর্নবীকরণের সময়, তাই এটি অভ্যন্তরেও অনুকরণ করার চেষ্টা করো। ঘর আপডেট করার সাথে সাথে রঙগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাথরুমের তোয়ালে থেকে শুরু করে ছোট কর্নার রাগ থেকে সাজসজ্জা এবং আনুষঙ্গিক সবকিছুর জন্য উজ্জ্বল, প্রফুল্ল রঙ নির্বাচন করো। গোলাপী, ফ্যাকাশে নীল, লিলাক এবং নরম সবুজের মতো প্যাস্টেল টোনগুলো বসন্তের সাথে যুক্ত। এগুলো একটি প্রাণবন্ত পপ নজর কেড়ে নিতে পারে এবং স্থানটিকে আরও জীবন্ত করে তুলতে পারে। ঘরের পর্দার ক্ষেত্রে রঙ নিয়ে খেলতে পারো। ঘরের অন্যান্য সবকিছু লাইট বা অনুজ্জ্বল রেখে কিছুটা বোল্ড কালারের পর্দা বেছে নিতে পারো। আর পার্থক্য? নিজেই পরখ করে নাও।

নরম গৃহসজ্জা সামগ্রীর পরিবর্তন

একটি দ্রুত, সহজ এবং সস্তা উপায়ে তোমার একটি ঘরকে বসন্তের জন্য সতেজ এবং রঙিন বোধ করতে পারো, তা হল তোমার স্থানকে নতুন নরম আসবাবপত্র যেমন- বালিশ, কুশন, রাগ দিয়ে স্টাইল করা।হোক সেটা তোমার সোফা কিংবা বিছানার, শুধুমাত্র কুশন বা থ্রো বালিশের কভার গুলো পরিবর্তন করে দাও, দেখবে পুরো লুকটাই চেঞ্জ হয়ে যাবে। বসন্তের ভাইভ আনার জন্য শীতকালীন থ্রো বালিশগুলোকে অদলবদল করে দাও। এর পরিবর্তে নিয়ে আসো ফ্লোরাল প্রিন্ট, সবুজ, হলুদ, পিঙ্কের মতো উজ্জ্বল কালারগুলো। টেক্সটাইল অদলবদল কড়া একটি ঘরকে একেবারে নতুন মনে করার একটি দূর্দান্ত উপায় হতে পারে এটি।

তাজা ফুলের যোগ

যেকোন ঘর আপডেট করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল তাজা ফুল যোগ করা। তোমার যদি ইতিমধ্যে একটি বাগান থাকে, তবে এই টিপসটি তোমার জন্য খুবই সহজলভ্য হবে। তাজা কাটা ফুল ব্যবহার করা বসন্তের জন্য সাজানোর একটি সুন্দর এবং সাশ্রয়ী মূল্যের উপায়। ড্যাফোডিল এবং টিউলিপের গুচ্ছ থেকে শুরু করে গোলাপ, রজনীগন্ধা ফুল সহজেই যেকোন স্থান থেকে সংগ্রহ করে নিতে পারো। শোভা বর্ধনের পাশাপাশি একটি মিষ্টি সুরভেও ভরে উঠবে তোমার ঘরটি।

ওয়ালপেপারের ব্যবহার

বসন্তের সাজসজ্জার রিফ্রেশের জন্য, ওয়ালপেপারের আইডিয়াগুলো তাৎক্ষণিক প্যাটার্ণ এবং রঙ যোগ করে দিতে সক্ষম। প্রথম বিকল্প হিসেবে ফ্লোরাল রুমের সাজসজ্জার দিকে যাওয়া যেতে পারে। প্রকৃতি-অনুপ্রাণিত ওয়ালপেপার হল বসন্তের জন্য বায়োফিলিক চেহারা অর্জনের একটি দূর্দান্ত উপায়। ঋতুর জন্য উপযুক্ত একটি বোটানিক্যাল স্টেটমেন্ট তৈরি করতে প্যাস্টেল গোলাপী এবং পিপারমিন্ট সবুজের সূক্ষ্ম শেড সহ ওয়ালপেপার বেছে নিতে পারো।

ঘন রাগের বিদায়

শীতের ঠান্ডায় উষ্ণতা ছড়িয়ে দিতে ঘন রাগের ব্যবহার প্রতিটি ঘরেই করা হয়। তবে এখন তাদের বিদায় জানানোর পালা। এর পরিবর্তে নিয়ে আসো পাতলা টেক্সচার এবং কালারফুল রাগ। এই আলংকারিক অনুষঙ্গ ঘরের আরও চমক বাড়াবে।

সবুজাভাব আনয়ন

ঘরের বাতাস পরিশুদ্ধ করতে ইনডোর প্ল্যান্টসের কোন তুলনা হয়না। শীতের রুক্ষ বাতাস এবং বিবর্ণ আলো গাছপালাকে বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। সেই নিস্তেজ হাউসপ্ল্যান্টের স্থানে নতুন সবুজ দিয়ে প্রতিস্থাপন করো। তবে কেনার আগে, সঠিক আলোর রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী গাছপালা বেছে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে নাও যাতে তা পরবর্তী বসন্ত পর্যন্ত বেঁচে থাকে।

হালকা কাপড়ের ব্যবহার

বসন্তের জন্য স্থান আপডেট করার আরেকটি সহজ উপায় হল টেক্সটাইলগুলোকে হালকা ওজনের কাপড়ের সাথে অদলবদল করা। ভারী উল বা পশমের কম্বলের পরিবর্তে কটন বা লিনেনের মতো হালকা কাপড়ের তৈরি প্রতিস্থাপন করতে পারো। সাদা এবং ফ্যাকাশে গোলাপী লেয়ারিং তোমার প্লেসকে নিরপেক্ষ রেখে রঙের পপ যোগ করার উপায় করে দিতে পারে।

আসবাবপত্র পুনরায় সাজানো

ঘরকে সতেজ দেখার আরেকটি উপায় হল আসবাবপত্রের পুনর্বিন্যাস করা। তুমি যদি বেডরুমের একই লেআউটে ক্লান্ত হয়ে পড়ো, তবে বিছানাটি একটি ভিন্ন দেয়ালের বিপরীতে রাখো। বসার ঘরের সোফা, আর্মচেয়ার এবং কর্নার টেবিল একটি নতুন অবস্থানে স্থানান্তর করো।

মৃদু বাতাস এবং প্রস্ফুটিত কুঁড়ির ঘ্রাণ উপভোগ করো। প্রতিটি ঋতুর সাথে বাড়ির সজ্জাকে পরিবর্তন করতে ভূলবেনা। প্রকৃতির পরিবর্তনের সাথে সাথে অভ্যন্তরীন পরিবর্তন ঘরকে করে তুলবে আরও আরামদায়ক ও আকর্ষনীয়।

-ছবি সংগৃহীত

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিঘরকন্যামনের মত ঘর

মনের রঙে সাজানো ঘর

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২৩

রঙের জাদুতে ক্লান্ত, বিধ্বস্ত মনও ফুরফুরে হয়ে ওঠে। তাছাড়া নতুন বর-কনের ঘর বলে কথা। সুন্দর দাম্পত্যের জন্য ঘরের সাজ বেশ ভূমিকা রাখে, এমন মত বিশেষজ্ঞদেরও। তাই বুঝেশুনে রং নির্বাচন জরুরি। লিখেছেন সুরাইয়া নাজনীন।

‘হর ঘর কুছ ক্যাহতা হ্যায়’ বিজ্ঞাপনের এই লাইনটা নিশ্চয়ই মনে পড়ে। কেমনভাবে নানা রঙে সেজে উঠত সাদা বাড়িটা। কোনো দেয়ালে সমুদ্রের নীল, তো কোনো ঘরে ইট লাল রঙের ক্যালাইডোস্কোপে আস্তে আস্তে প্রাণবন্ত হয়ে উঠত বাড়ি। আর সত্যিই তো, রঙের মায়া তো এমনই। নিমেষে বদলে দিতে পারে পুরো বাড়ির চেহারা। আর শুধুই কি বাড়ি, এই রঙের জাদু এমনই যে ক্লান্ত, বিধ্বস্ত মনও ফুরফুরে হয়ে ওঠে। অনেকেই হয়তো জানে না, একেক রঙের আবার একেক রকম মানে আছে। লাল মানে যেমন প্যাশন, প্রেম, ভালোবাসা; হলুদ মানে আবার হাসিখুশি মনমেজাজের ছবি। তাহলেই বোঝো, ঘরে কেমন রং করাচ্ছ, তার ওপর কিন্তু আমাদের ভালো থাকাও অনেকটা নির্ভর করে।

আগেকার দিনে বাড়ির রং নিয়ে মাথা ঘামানো বা চর্চার করার বিশেষ জায়গা ছিল না। চুনকাম করা দেয়াল বা বড়জোর হালকা হলুদ কিংবা সাদা রং বলতে এইটুকুই। টালির ছাদ থাকলে লালের অল্প ছোঁয়া। শেওলা সবুজ রংও বেশ লাগে দেয়ালে। আর সাদারং তো আরও সুন্দর।কিন্তু সাদার একটা আলাদা মাধুর্য আছে। সাদা মানেই তো প্রশস্তি। সারাদিনের পরিশ্রমের পর, ক্লান্তি কাটাতে এর থেকে ভালো আবহ কি আর কিছু হতে পারে? নবদম্পতির মনে একরাশ প্রশান্তি দিতেও সাদা রঙের জুড়ি নেই। আবার সাদা দেয়ালে রঙিন ক্যানভাস বা ওয়াল হ্যাঙ্গিং যেন আলাদাই মাত্রা পায়। আর রঙিন পর্দা, বেডকভার, ম্যাট সাদা বেসে যেন বেশি সুন্দর লাগে। আর ডেকর নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করার সুযোগও প্রচুর। ফলে সাদা কিন্তু একেবারেই ফেলনা নয়। তবে হ্যাঁ, মেইনটেন করাটা বেশ কঠিন ব্যাপার।

বাড়ির রং নিয়ে এখন অবশ্য এক্সপেরিমেন্ট করার সুযোগ প্রচুর। আর হবেই তো, বাড়ির দেয়াল তো এখন শৌখিনতার পরিচায়ক। আর তাই তো কোথাও দেখা যায় পান্না সবুজ, তো কোথাও সূর্যাস্তের কমলা। শেড কার্ডজুড়ে হাজার একটা রঙের অপশন। এর সঙ্গে টেক্সচার্ড দেয়াল তো আছেই। আসলে ঘরের রং থেকেই তো ঘরের চরিত্র নির্ধারণ করা যায়। তবে এখানেও মানতে হবে অন্দরসাজের ব্যাকরণ। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেই পারো, কিন্তু তাহলে মাথায় রাখতে হবে বাড়ির আয়তন, আসবাবের টেক্সচার, মাটির চরিত্র। তার সঙ্গে রুচি তো আছেই। আসলে ঠিক রং প্যাটার্ন এবং টেক্সচারই কিন্তু অন্দরসাজের মূল কথা।

বাড়ি রং করানোর সময় একই কালার ফ্যামিলির রং ব্যবহার করা যেতে পারে। কমপ্লিমেন্টারি রঙের মাধ্যমেও বিস্তার করতে পারো রঙিন মায়াজাল। আবার লাল, নীল, হলুদের মতো রং একসঙ্গে ব্যবহার করে সৃষ্টি করতে পারো ম্যাজিকাল ট্রায়ার্ড। তবে এ ক্ষেত্রে কিন্তু পরিমিতিবোধ থাকাটা খুব দরকার। রঙের সঠিক ব্যবহারে ইলিউশনও তৈরি করা যায়। রঙের কারসাজি এমনই যে ছোট ঘর বড় দেখায়, আবার যে ঘরে তেমন আলো-বাতাস ঢোকে না, তাই মনে হয় খোলামেলা। এই যেমন ছোট ঘরে আইসি ব্লু বা ক্রিম খুব ভালো। আসলে উজ্জ্বল এবং নরম টোন সব সময়ই ঘর বড় দেখাতে সাহায্য করে। রঙের সঙ্গে আসবাবের কিন্তু একটা আত্মিক যোগাযোগ আছে। যতক্ষণ না এরা একে অপরকে কমপ্লিমেন্ট করছে, জানবে অন্দরসাজ একেবারেই অসম্পূর্ণ। আসবাবের রং হালকা হলে, দেয়ালেও হালকা রং করাও। এতে আসবাবের আয়তন ছোট দেখায়। আর ঘরে একটা খোলামেলা আমেজ তৈরি হয়। ঘরের মোল্ডিং সবসময় দেয়ালের থেকে এক শেড হালকা রাখবে। ঘর বড় হলে একটু গাঢ় রং করানোই যায়। তবে ভালো হয় যদি একটা দেয়ালে গাঢ় রং করিয়ে বাকিগুলো নিউট্রাল রাখতে পারো। তাহলে কালার ব্যালান্সটা ঠিক থাকে। আবার ঘরে যদি প্রচুর আলো ঢোকে, তাহলেও সি গ্রিন, টারকোয়াজ, গাঢ় নীল, গাঢ় গোলাপির মতো রং করাতে পারো। এখানেই শেষ নয়। এর সঙ্গে প্যাটার্ন পেন্টিং বা টেক্সচারড ওয়ালও করাতে পারো। নানা রকম স্ট্রোকস আর নানা রঙের সংমিশ্রণে টেক্সচার্ডও কিন্তু সত্যি ম্যাজিক্যাল। পুরো ঘরের ডেফিনেশনটাই বদলে যায়। একটু খরচসাপেক্ষ ঠিকই, কিন্তু বাড়ির জন্য এইটুকু তো করাই যায়। আফটার অল, যেখানে থাকো, যা তোমারই ব্যক্তিত্বের এক্সটেনশন, সেই বাড়ি একটু সুন্দর দেখাতে একটু অ্যাফোর্ট তো দিতেই হবে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
ঘুরে বেড়াইচলন বলনজীবনযাত্রাদেশবিদেশভ্রমণ ফাইলরোমান্স রসায়ন

কাছে-দূরে হানিমুনে…

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ১৩, ২০২৩

বিয়ে মানেই নানা আয়োজন, হাজারটা আনুষ্ঠানিকতা, এটা-ওটা আরও কত-কী! এসব ঝক্কি-ঝামেলা চুকিয়ে একটু নিরিবিলিতে প্রিয় মানুষটির সান্নিধ্য আর নিজেদের পারস্পরিক বোঝাপড়াটা পোক্ত করে নিতে নবদম্পতি বেরিয়ে পড়ে মধুচন্দ্রিমায় বা হানিমুনে। আর এইসব আয়োজন নিয়েই লিখেছেন সুমন্ত গুপ্ত।

অনেক কিছুর মতোই সদ্য বিবাহিত দম্পতিদের বেড়াতে যাওয়ার এই সংস্কৃতি এ দেশে আসে ব্রিটিশদের হাত ধরে। ১৯ শতকের শেষভাগে ভারতীয় উপমহাদেশের হানিমুনের প্রচলন হলেও দীর্ঘদিন এটি ছিল আমাদের এলিট শ্রেণির মুঠোবন্দি। যুগের হাওয়া সেই কপাট ভেঙে মধ্যবিত্ত ও সীমিত আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে এই রীতিকে। মধুচন্দ্রিমা এখন আর বিলাসিতা নয়, এটি এখন বিয়ে-পরবর্তী গোছানো জীবনের অনুষঙ্গ। আর্থিক সামর্থ্যরে ওপর নির্ভর করে প্রেয়সীর হাতে হাত রেখে দু-চারটা দিন কোথায় কাটাবেন, দেশে না বিদেশে? আমাদের এই সুজলা-সুফলা, শ্যামল-সুন্দর বাংলাদেশেই রয়েছে অনেক অনেক সুন্দর জায়গা। দেশের ভেতর যদি ঘুরতে যেতে চান, তাহলে মনস্থির করে ফেলুন ঠিক কোন ধরনের জায়গায় যেতে চান। যদি পাহাড় পছন্দ হয়, তাহলে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম আর সিলেটের সবুজে ঘেরা পাহাড়গুলো; সমুদ্র চান, তাহলে কক্সবাজার, কুয়াকাটা ও সেন্টমার্টিন। আর যদি চান জঙ্গল, তাহলে সুন্দরবন, মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়াসহ দেশের গোটা বিশেক জঙ্গল। এ ছাড়া যেতে পারেন ময়মনসিংহের বিরিশিরি, বান্দরবানের বগা লেকের সিয়াম দিদিমণির পান্থশালা বা মিলনছড়ির বিলাসী অতিথিশালায়। রাঙামাটির নগর দর্শন না করে পাবলাখালীর জঙ্গল। ভোলার শেষপ্রান্তের মনপুরা দ্বীপ বা ম্যানগ্রোভ জঙ্গল। কিংবা নিঝুম দ্বীপও খারাপ হয় না মধুচন্দ্রিমার জন্য।

ঝিনুক ফোটা সাগরবেলায়

মধুচন্দ্রিমায় গন্তব্য পছন্দের এক্কেবারে ওপরে থাকে সমুদ্র। তা দেশেই হোক বা দেশের বাইরে। আর এ ব্যাপারে আমরা পৃথিবীতে সবচেয়ে এগিয়ে। কারণ, আমাদেরই আছে এ ধরিত্রীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। ভিড় এড়িয়ে একটু নিরিবিলিতে যারা অপূর্ব সুন্দর এ সৈকতে ঘুরতে চান, তাদের জন্য ঋজু খাল ঘেঁষে গড়ে ওঠা মারমেইড ইকো রিসোর্ট পারফেক্ট। পাশেই ইনানি বিচ, টেকনাফের বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ইসলামগঞ্জ-শাপলাপুর গ্রামের অনিন্দ্যসুন্দর সৈকত। ইনানি পেরিয়ে মেরিন ড্রাইভ ধরে টেকনাফ যাওয়ার পথের সি বিচগুলো এখনো বাণিজ্যিক হয়ে ওঠেনি। নিরাপত্তার ব্যাপারে একটু সাবধান থাকলেই সমুদ্র আর বালিয়াড়ির দুটোই বেশ প্রাকৃতিকভাবে উপভোগ করা যায়। টেকনাফ পেরিয়ে নারকেল জিঞ্জিরা বা সেন্টমার্টিন দ্বীপও হতে পারে আপনার মধুচন্দ্রিমার গন্তব্য। সেন্টমার্টিনের যাত্রায় আপনাকে সঙ্গ দেবে ঝাঁক ঝাঁক গাঙচিল। দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। দ্বীপটিতে নারকেলগাছের আধিপত্যের কারণে একে নারকেল জিঞ্জিরাও বলা হয়। পানির স্বচ্ছতায় সাগরতলার প্রবাল আর শৈবালগুচ্ছ আপনাদের মুগ্ধ করবেই। সেন্টমার্টিনের জেটির উত্তর প্রান্তে কিছু রিসোর্ট ও হোটেল গড়ে উঠেছে, সেগুলোর যে কোনোটিতে উঠতে পারেন।

মেঘ-পাহাড়ের মিতালি

পাহাড় যাকে একবার ডাকে, সে বারবার পাহাড়ে ছুটে যায়- কথাটা স্যার এডমন্ড হিলারির। বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটির পাহাড়গুলো আকাশছোঁয়া না হলেও মেঘছোঁয়া। শীতে উপত্যকায় জমে থাকা কুয়াশা আর তার ওপর সূর্যোদয় দেখার অনুভূতি অতুলনীয়। বান্দরবান থেকে খুব সহজেই ঘুরে আসা যায় নীলাচল, নীলগিরি, মেঘলা, স্বর্ণমন্দির। একটু এগোলেই থানচির তিন্দু, নাফাখুম, অমিয়াখুম, আলীকদম। বান্দরবান শহরের পাশের সাঙ্গু নদে নৌকা নিয়ে দিন পার করে দেওয়া যায়। কটা দিন কাটিয়ে আসতে পারেন বগা লেকের ‘বম’ অথবা ‘মুরং’ পাড়ায়। পাহাড়ের ওপরের লেকের ধারে আদিবাসীদের আতিথেয়তা মন্দ লাগবে না।

খাগড়াছড়িতে আলুটিলা, রিসাং ঝরনা, দেবতাপুকুর, নিউজিল্যান্ডপাড়ায় তো যাবেনই। একটু এগিয়ে দীঘিনালা পেরোলেই দেশের কমলার আঁধার বলে খ্যাত ফ্রুটসভ্যালি রাঙামাটির ‘সাজেক’ উপত্যকা। বেশ কটা ভালোমানের রিসোর্ট তৈরি হয়েছে সেখানে। রাঙামাটিও এখান থেকে কাছাকাছি দূরত্বে। আশপাশে আরও আছে কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান, কর্ণফুলী পেপার মিল ও কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র। রাঙামাটি শহরে এসে কাপ্তাই আর কর্ণফুলীর শীতকালীন মন্থর স্রোতে ভাসাতে পারেন নৌকায়। শহর থেকে শুভলং ঝরনায় যাওয়া যায় নৌপথে। চারদিকে পাহাড়, নৌকায় করে স্বচ্ছ পানির ওপর দিয়ে ছুটে চলা। মাঝেমধ্যে দু-একটি বক ও নাম না জানা পাখির ওড়াউড়ি। কখনো দেখবেন লেকের পানিতে ঝপ করে লাফিয়ে পড়ে সাঁতরে পার হচ্ছে গুইসাপ। দুধারে উঁচু পাহাড়ের মাঝ দিয়ে নৌকা চলার সময় দূর পাহাড় থেকে আদিবাসী গ্রামগুলোকে ছবির মতো মনে হবে। সঙ্গে বোনাস মনোরম পরিবেশ ও নির্জনে সঙ্গীসহ আপনি। মধুচন্দ্রিমার কল্পনায় এমন জায়গাই তো মানানসই। বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটিÑ তিন জেলাতেই রয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মোটেল। এছাড়া বান্দরবানে মিলনছড়ি রিসোর্ট, সেনাবাহিনীর নীলগিরি রিসোর্ট, সাকুরা রিসোর্টসহ আরও বেশকিছু ভালোমানের রিসোর্ট রয়েছে।

চায়ের দেশে

সিলেট-শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজারে ঘোরাঘুরির জন্য আদর্শ সময় বর্ষা হলেও শীতকাল এখানে উপভোগ্য। হালকা শীতে ধূমায়িত চায়ের কাপ হাতে শ্রীমঙ্গলের টি রিসোর্টের বারান্দায় প্রিয়জনকে নিয়ে বসে থাকা রোমান্টিক নিশ্চয়ই। যে সময়ই আসুন না কেন, চারদিকে সবুজের সমারোহে দৃষ্টি জুড়িয়ে যাবে। এছাড়া আছে মাধবুন্ড ঝরনা, জাফলং, জৈন্তা, খাসিয়াপল্লি। এ সময় সিলেটে এলে অন্যতম আকর্ষণ ভোলাগঞ্জ,  রাতারগুল, বিছনাকান্দি, পানথুমাই, লক্ষণছড়া মিস করবেন না নিশ্চয়ই। শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ টি-রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রিসোর্ট বুকিং দিতে হয় বেশ আগে। সেখানে ঠাঁই না মিললে রয়েছে শ্রীমঙ্গলের গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্ট, মৌলভীবাজারে দুসাই রিসোর্ট, সিলেট লালাখালের পাশে নাজিমগড় রিসোর্ট, রাতারগুলের পাশে ইকো রিসোর্ট বনলতাসহ ভালো মানের আরও অনেক হোটেল-মোটেল। চাইলে থাকতে পারেন শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, হবিগঞ্জের রেমা কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য রেস্টহাউসেও। বন বিভাগের পাশাপাশি নিসর্গ কটেজও আছে বেশকিছু।বর্ষাকাল সিলেটের হাওর আর বিলে ঘোরাঘুরির মূল সময় হলেও এ শীতে অতিথি পাখিদের সঙ্গে ভ্রমণে পাবেন এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা।

ম্যানগ্রোভ বনে

সুন্দরবন মধুচন্দ্রিমায় গন্তব্য হিসেবে মন্দ নয়। নিসর্গ উপভোগ, লঞ্চ থেকে নেমে নৌকায় সূর্যোদয় দেখা, কুমির, বানর, হরিণ, সাপ, হাজারো পাখি দেখার আনন্দই আলাদা। সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জ আর বাগেরহাটের মোংলা এ জন্য আদর্শ। মোংলায় পর্যটনের পশুর হোটেলে রাত কাটিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারেন করমজল, হারবেরিয়ার মতো জায়গাগুলো। খুলনা-মোংলা হয়ে সুন্দরবন যাওয়া যায়; মোংলা থেকে কিছুদূর গেলে কচিখালী হয়ে যাওয়া যায় কটকা পর্যন্ত। আবার সাতক্ষীরার বুড়িগোয়ালিনী রেঞ্জ দিয়ে যাওয়া যায় সুন্দরবনের অনেক গভীরে জামতলা পর্যন্ত। দূরের গন্তব্য কটকা আর হিরণ পয়েন্ট। সাতক্ষীরায় বর্ষা রিসোর্ট আর এনজিওগুলোর রেস্টহাউসে রাত কাটিয়ে গভীর অরণ্যে ঘুরে বেড়াতে পারেন অনায়াসে। তবে এখানে বেড়াতে অবশ্যই কোনো ট্রাভেল এজেন্সির (ভ্রমণ সংস্থা) সঙ্গে যেতে হবে।

দেশের বাইরে হানিমুন

শ্রীলঙ্কা

শ্রীলঙ্কা এশিয়ার অন্যতম হানিমুন স্পট। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সমুদ্রসৈকত, সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য আপনাকে করবে মুগ্ধ। জীবনকে খুঁজে পাবেন নতুন করে। কম খরচে ঘুরে আসতে পারেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর সুন্দর এই দেশটি থেকে।

থাইল্যান্ড

এশিয়ার মধ্যে বিশ্বসেরা হানিমুন স্পটের তালিকায় প্রথমেই আসে থাইল্যান্ডের নাম। এশিয়ার অন্যতম রোমান্টিক সমুদ্রসৈকত ‘পাতায়া’ থাইল্যান্ডে অবস্থিত। যেখানে রাতের গভীরতার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় আলোর ঝলকানি। তালে তালে চলে সংগীতের মূর্ছনা। পাতায়ায় আছে অসংখ্য কোরাল দ্বীপ। এর একটি দ্বীপ কোলহার্ন। চারদিকে অসীম জলরাশির মধ্য দিয়ে ছুটে চলে স্টুক্রবা ড্রাইভ, সার্ফিং এবং ফিশিং।

মালদ্বীপ

এশিয়ায় আরেকটি নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। ছোট হলেও সৌন্দর্যের দিক থেকে অনেক ওপরে দ্বীপটি। প্রতিবছর বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে লাখ লাখ পর্যটক মালদ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসেন। দেশটির উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম মিলে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার ছোট ছোট দ্বীপ। আর এই দ্বীপগুলোকে নিয়ে সৃষ্ট মালদ্বীপ।

মালয়েশিয়া

এশিয়ার একটি দ্বীপরাষ্ট্র মালয়েশিয়া। নৈসর্গিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ। দেশজুড়ে রয়েছে বিস্তৃত পাহাড়। পাহাড়ের কোলঘেঁষে গড়ে উঠেছে আধুনিক শহর। না শীত না গরম চমৎকার একটা আবহাওয়া বিদ্যমান মালয়েশিয়ায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহ্য ও প্রাচুর্যে ভরা শহর পেনাং। ‘প্রাচ্যের মুক্তা’ হিসেবে পরিচিত। পেনাং এশিয়ার বিখ্যাত দ্বীপ। যেখানে অসংখ্য রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, ডিপার্টমেন্ট স্টোর ও সমুদ্রসৈকত রয়েছে। এশিয়ার একটি ছিমছাম গোছানো দেশ মালয়েশিয়া। প্রতিবছর অসংখ্য বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় ঘুরতে যান। এদের পছন্দের ভ্রমণ গন্তব্যের তালিকায় মালয়েশিয়ার নাম প্রথম তিনটি দেশের মধ্যেই থাকে। এখানে মাত্র একটিই ঋতু বর্ষা। তাই প্রায় প্রতিদিন কমবেশি বৃষ্টি হয়। দেশজুড়ে পাহাড়ি রাস্তা আর বন-জঙ্গল। মালয়েশিয়া গিয়ে লাঙ্কাউই না গেলে হয়তো পুরো খরচই বৃথা। কুয়ালালামপুর থেকে ৪১৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই সমুদ্রসৈকত অঞ্চল আন্দামান সমুদ্রের ১০৪টি দ্বীপের সমষ্টি। ক্যাবল কার, ঝরনার ধনি, সমুদ্রের নিচ দিয়ে রাস্তা, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ইত্যাদি রয়েছে এখানে। হানিমুনটা তাই এখানেই সেরে আসতে পারেন।

গোয়া

নবদম্পতিদের ঘুরে বেড়ানোর জন্য ভারতের গোয়া অসাধারণ। এখানে রয়েছে অনেক প্রাচীন স্থাপনা। আরব সাগরের সৈকতে প্রিয়জনকে নিয়ে রোমান্টিক মুহূর্ত কাটাতে ঘুরে আসতে পারেন গোয়া থেকে।

নৈনিতাল নবদম্পতিদের বেড়ানোর জন্য সেরা এক স্থান। পর্বতের জন্য বিখ্যাত। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সব সময় মিশে থাকে একটা প্রেমের গন্ধ। নৈনিতাল ঠান্ডা জলের লেক, কেনাকাটার জন্য জমজমাট বাজার, হাতে হাত রেখে পাশাপাশি হাঁটতে নির্জন পাহাড়ি রাস্তা, আর কী চাই?

বলে রাখা ভালো… 

বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমার বিশেষ কয়েকটি দিন স্মরণীয় করে রাখার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকেন সব দম্পতিই। তবে পরিকল্পনা তো আর বিয়ের পরের জন্য ফেলে রাখলে চলে না। প্রথম কারণ অবশ্যই ছুটি সীমিত। অফিস ও সংসার জীবনে পুরোপুরি সময় দেওয়ার আগে দুজনে একান্তে বেরিয়ে আসা চাই-ই। বিয়ের প্রস্তুতিতে যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, হানিমুন প্ল্যানিংটা দুজনে মিলে করলেই ভালো। ছক কষে নিন আপনার হানিমুন পরিকল্পনা। হানিমুন প্ল্যান করার প্রথম শর্তই হলো মনের কথা শোনা। আপনার পাহাড় ভালো লাগে, তাই ধুম করে পাহাড়ে হানিমুন ঠিক করে নিলেন, এমনটা হলে চলবে না। তার চেয়ে দুজনের মনের কথায় সায় দিন। বেটার হাফের কাছে মতামত নিন।কোথায় যাওয়া যায়। দুজনের পছন্দ যদি মিলে যায়, তাহলে তো কোনো কথাই নেই। আপনি রিল্যাক্সিং হলিডের পক্ষপাতী, কিন্তু আপনার সঙ্গীর পছন্দ অ্যাডভেঞ্চার ট্যুর, তাই এমন সমস্যা হলে দুজনে মিলে ভালোমতো বুঝে প্ল্যান করুন। তবে এ ক্ষেত্রে নিজের মতামত জোর করে চাপিয়ে দিলে কিন্তু সারাজীবন কথা শুনে যেতে হবে। ইন্টারনেট ঘেঁটে অজানা জায়গায় সারপ্রাইজ ট্রিপে না যাওয়াই ভালো। জায়গাটা খুব পছন্দ হলেও আগে বিশ্বস্ত ট্রাভেল এজেন্টের কাছ থেকে ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে তারপর যান। যদি একটু অন্য ধরনের হানিমুনের প্ল্যান করতে চান, তাহলে ক্রুজ খুব ভালো অপশন। নানা ধরনের বাজেটে ফিট করে যাওয়া ক্রুজ রয়েছে। ক্রুজে বেড়াতে গেলে জায়গা দেখার সঙ্গে সঙ্গে আরাম-বিলাসের প্রচুর সুযোগও থাকে। এ ছাড়া জঙ্গল, পাহাড় বা সমুদ্রের কাছাকাছি রিসোর্টেও আরাম এবং অ্যাডভেঞ্চারের অনেক সুযোগ পাবেন। স্পা, সুইমিংপুল, বোর্ড গেমসের সঙ্গে সঙ্গে মাউন্টেন হাইকিং, বিচ অ্যাকটিভিটিজ বা সাফারিও এনজয় করতে পারেন। আর যা-ই হোক, মধুর স্মৃতি ধরে রাখতে ক্যামেরা নিয়ে যেতে কখনো ভুলবেন না। জায়গা যখন ঠিক, তখন টুক করে ছকে ফেলুন হানিমুন বাজেট। হানিমুনের জন্য যেখানে যাবেন, সেই জায়গা সম্পর্কে একটু জেনে নিন। জেনে নিন দেশে এবং দেশের বাইরে নানা ধরনের হানিমুন প্যাকেজ সম্পর্কে। দেশের সীমানা পেরিয়ে যদি যেতে চান হানিমুনে, তাহলে প্রথমেই চেক করে নিন দুজনের পাসপোর্ট আপডেট আছে কি না। তারপরই কেটে নিন পছন্দসই এয়ারলাইনসের টিকিট। হোটেল বুকিং টু টিকিট কেনা শেষ। লিস্ট বানিয়ে নিন কী কী নেবেন। কোন স্যুটকেস নিয়ে যাবেন, হানিমুনের জন্য কী কেনার আছে তা কিনুন। লাগেজ হতে হবে হালকা। সঙ্গে নেওয়ার জন্য পোশাক-আশাক আর দরকারি জিনিসের স্মার্ট একটা তালিকা করুন। কত দিন থাকবেন, কী কী করবেন, হানিমুন ডেস্টিনেশনের আবহাওয়া হিসেবে জামাকাপড়, জুতা এসবের তালিকা বানান। সঙ্গে প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু ওষুধ নিতে ভুলবেন না।  ট্রাভেল এজেন্টের সঙ্গে সবকিছু আরেকবার ঝালাই করে নিন। হোটেলগুলোর ঠিকানা, যেখানে যাচ্ছেন, সেখানকার কারও কন্ট্যাক্ট নম্বর এসব ফোনবুক ছাড়াও ডায়েরিতে আলাদাভাবে লিখে রাখুন। ব্যাংক এবং এয়ারলাইনসের যাবতীয় কাজ সেরে ফেলুন। দেশের কোনো লোকেশন হলে আর সেটা যদি বাসে অথবা ট্রেনে যাওয়া হয়, তবে টিকিট করে ফেলুন। শেষ সময়ের কিছু কেনাকাটা দরকার হলে করে নিন। আর মনে রাখবেন, হানিমুন যেন ক্লান্তিকরভাবে শেষ না হয়। যথাসম্ভব সুস্থ থাকার চেষ্টা করুন। যেখানে যাচ্ছেন, সেখানকার ঘড়ির সঙ্গে চেষ্টা করবেন ঘুমের সময় মিলিয়ে নিতে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গঅন্দরের ডায়েরিজীবন

ভালোবাসাময় গিফট র‍্যাপিংয়ের আইডিয়া

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ১২, ২০২৩

প্রকৃতিতে বইছে প্রেমের হাওয়া। সবার মনে-প্রাণে লেগেছে ভালোবাসার রঙ। সামনে আসছে ভ্যালেন্টাইনস ডে। যার তোড়জোড় শুরু হয়ে যায় ৭ ফেব্রুয়ারি থেকেই। একে একে আসে রোজ ডে, চকোলেট ডে, টেডি ডে, প্রমিস ডে, হাগ ডে, কিস ডে এবং অবশেষে কাঙ্ক্ষিত ভ্যালেন্টাইনস ডে। এই বিশেষ দিনগুলোতে প্রিয় মানুষকে উপহার দিতে সবারই ভালো লাগে। বড় বা সামান্য যাই হোক, এটা শুধু মাত্র উপহারই নয়; এটি তোমার অনুভূতি প্রকাশেরও মাধ্যম। এটি হল এমন একটি টোকেন যা বোঝায় তুমি সেই বিশেষ কাউকে নিয়ে আসলেই কতটা যত্নশীল। সেই কারণেই শুধু উপহার দিলেই হবেনা, তার সাথে সুন্দরভাবে উপস্থাপনার বিষয়টিও জড়িত। আর এইসব কিছু মাথায় রেখেই কিছু সৃজনশীল উপহারের মোড়ক ধারণা নিয়ে লিখেছেন শায়লা জাহান।

-র‍্যাপিং পেপার দিয়ে মোড়ানোর চল অনেক পুরনো। এই একঘেয়েমি থেকে বের হতে এবং কিছুটা ইউনিক ভাব আনতে পারো এই কৌশলে। দুই রঙের কাগজের দুটি স্তর ব্যবহার করে উপরের প্যানেলে হার্ট শেপ এঁকে নাও। এবার প্রত্যেকটি হার্টের অর্ধেকটি কাঁচি দিয়ে কেটে ভাঁজ করে নাও। এভাবে একটি থ্রিডি হার্ট ইফেক্ট আনতে পারো।

-একটি সাধারণ ক্রাফট বক্স হলো একটি বহুমুখী ভিত্তি যা কিছু দূর্দান্ত ছোট উপহার বক্স তৈরি করতে পারে। এই নকশার জন্য, বিভিন্ন রঙের কাগজ থেকে কিছু হার্ট শেপ কেটে নাও। তারপর প্যাটার্নের মতো একটি গ্রিডে বক্সে আটকে দাও।

-পেপার দিয়ে কাটা কিছু হার্ট শেপ নাও। সেগুলোর প্রত্যেকটিতে ছিদ্র করে তাতে সুতা দিয়ে মালার মতো তৈরি করে নাও। তারপর তা বক্সে আটকে দাও। ভিন্ন ভিন্ন রঙের সুতা এবং সুতা মোড়ানোর কৌশল প্রয়োগ করেও এতে নানান চেহারা আনতে পারো।

-কাস্টম র‍্যাপিং আইডিয়া একটি মজাদার উপায়। নিজেদের প্রিয় কোন মুহুর্তের ছবি বা যে কোন ডিজাইন প্রিন্ট আউট করে বের করো। তারপর তা গিফট মোড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করো।

-রিবন হল একটি উপহারে কিছু গভীরতা এবং টেক্সচার যোগ করার একটি সহজতম উপায়। কিছু রোমান্টিক, আকর্ষনীয় লেইস রিবন বাছাই করো। এবং তা গিফট বক্সের চারপাশে মুড়িয়ে দাও। আরও কালারফুল করার জন্য কয়েক রঙা ফিতা ব্যবহার করতে পারো।

-তোমার দেয়া উপহারটি যদি ছোট হয়ে থাকে তবে তা বাক্সবন্দী না করে, সে স্থলে ছোট গুডি ব্যাগের ব্যবহার আরও আকর্ষনীয় দেখাবে। এই ধরনের ব্যাগ কিনতে পারো কিংবা চাইলেওতুমি নিজেই তা বানিয়ে নিতে পারো। যে কোন কাপড়ের একটি বৃত্তাকার অংশ কেটে, উপহারটি মাঝামাঝিতে রাখো। সুতা বা কালারফুল রিবন দিয়ে বাইরের প্রান্তটি বেঁধে বানিয়ে নাও নিজের গুডি ব্যাগ।

-আরেকটি মজাদার ধারণা হল ইরেজার স্ট্যাম্প তৈরি করা। এটাও করা সহজ। এক্ষেত্রে তোমার পেন্সিল ইরেজার ব্যবহার করতে পারো। ইরেজারটি এমনভাবে কাটো যাতে সেখানে একটি হৃদয় আকৃতির হয় এবং তারপর তা রঙে ডুবিয়ে নাও। সেটি তোমার পছন্দমত জায়গায় স্ট্যাম্প করে দাও।

-উপহারের মোড়ানোতে ইউনিক এবং এলিগ্যান্ট লুক আনতে সাটিন কাপড়ের রিবন ব্যবহার করতে পারো। একটি ওয়াইন রঙা সাটিন কাপড় নিয়ে মুড়িয়ে মাঝখানে বো করে বেঁধে দিতে পারো। এই চমৎকার মোড়ানো শৈলী সবাইকে তাক লাগিয়ে দেবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
বলিউডবিনোদন

তারকাদের বিয়ের মঞ্চ

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ১২, ২০২৩

প্রচারের আলো থেকে একে অপরকে বাঁচিয়ে একান্তে বিয়ে সেরে ফেলাই এখন খ্যাতনামাদের মধ্যে জনপ্রিয়। এই ধারা শুরু করেছিলেন বিরাট কোহলি ও আনুষ্কা শর্মা। সপরিবার ইতালি উড়ে গিয়ে বিয়ে করে সেই পোস্ট করেছিলেন টুইটারে। চমকে গিয়েছিল গোটা দুনিয়া। এখন তারকাদের বিয়েতে ডেস্টিনেশন ওয়েডিং খুব জনপ্রিয়।

রোদসী ডেস্ক:

তারপর থেকে অনেকেই তাদের অনুসরণ করেছেন। চুপচাপ নিকটাত্মীয় এবং প্রিয় বন্ধুদের নিয়ে কোনো দুর্গম জায়গায় বিলাসবহুল দুর্গে বা রিসোর্টে গিয়ে বিয়ে সেরে ফেলেছেন বলিউডের একের পর এক খ্যাতনামা-জুটি। সাধারণ মানুষের কাছে এই সব গন্তব্যই স্বপ্নের রাজ্যের মতো। সেই খরচ করে বিয়ে করার সৌভাগ্য খুব বেশি সংখ্যার মানুষের এখনো নেই। কিন্তু এই বিভিন্ন জায়গার বিয়ের আসর দেখে নিজের বিয়ের আসর সাজানো যেতেই পারে। নিজের বিয়েবাড়ির বাগানে কিছু মঞ্চ তৈরি হতেই পারে প্রিয় অভিনেত্রীর মঞ্চের আদলে।

বিরাট-আনুষ্কা:

আনুষ্কা শর্মা ও বিরাট কোহলির বিয়ের থিমের জন্য যে রংগুলো বাছাই করা হয়েছিল, তা হলো হালকা গোলাপি ও সাদা। ইতালির এক বিখ্যাত ভিলায় এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছিল সম্পূর্ণ ভারতীয় রীতিনীতি ও সাজসজ্জা মেনে। মূল অনুষ্ঠানের জন্য ল্যাভেন্ডার, হালকা গোলাপি ও পাউডার নীল রঙের প্যালেট বেছে নেওয়া হয়েছিল। খোলা জায়গায় ফুল, কাচের লন্ঠনে ঝোলানো সাদা মোমবাতি, ফুলের তৈরি ছাউনি, ইত্যাদির মিশেলে বিয়ের মঞ্চকে করে তুলেছিল অত্যন্ত নান্দনিক।

দীপিকা-রণবীর:

যেসব বলি তারকার বিয়ে নিয়ে নেটিজেনদের উৎসাহের শেষ ছিল না, দীপিকা পাড়ুকোন ও রণবীর সিংয়ের নাম সেই তালিকায় এক নম্বর। এই দম্পতিও ইতালির লেক কোমোতে মনোরম ভিলা দেল বালবিয়ানোতে বিয়ে সম্পন্ন করেন। ফ্রেস্কো, প্রাচীন আসবাব, আরামদায়ক ফায়ারপ্লেস এবং সিলিং থেকে ঝুলন্ত অসামান্য ঝাড়বাতি ভিলাটিকে স্বপ্নময় এক বিয়ের জন্য আদর্শ স্থান করে তুলেছে।এই বিয়ের থিমের পরতে পরতে ছিল, ফুলেল নকশা এবং ঐতিহ্যবাহী লাল রংই তারা বেছে নিয়েছিল সাজানোর জন্য। এই ভিলাটিকে সাজানোর জন্য মূলত ব্যবহার করা হয়েছিল ওয়াটার লিলি ফুলও।

প্রিয়াঙ্কা-নিক:

হলিউড ও বলিউড;  বিশ্বের দুটি বৃহত্তম সিনে জগতের অন্যতম দুই তারকা প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাস বিয়ে করেন রাজস্থানের যোধপুরে উমেদ ভবন প্রাসাদে। পাঞ্জাবি নিয়মেই বিয়ে সারেন তারা। যেহেতু স্থান ছিল রাজপ্রাসাদ, তাই বিয়ের থিম যে রাজকীয় হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। রাজপ্রাসাদজুড়ে চলেছিল আলোর খেলা। উজ্জ্বল আলোর রঙে সেজে উঠেছিল উমেদভবন। হিন্দু ও খ্রিষ্টান এই দুই রীতিতেই সম্পন্ন হয়েছিল বিয়ে।

রাজকুমার-পত্রলেখা:

এক দশকের বেশি সময় ধরে সম্পর্ক থাকার পর রাজকুমার রাও ও পত্রলেখা পাল গাঁটছড়া বাঁধলেন চণ্ডীগড়ের ওবেরয় সুখবিলাস স্পা রিসোর্টে। যেটি ৮০০০ একরজুড়ে বিস্তৃত। এই বিয়েতে রঙের প্রাচুর্য দেখা গেছে। গাঁদা ফুলের ব্যবহার এবং মণ্ডপে রঙের বাহারি ফুলের কারুকাজে সুখবিলাস হয়ে উঠেছিল মোহময়। সেই সঙ্গে সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের তৈরি করা উজ্জ্বল লাল রঙের পোশাকে সেজে উঠেছিলেন পত্রলেখা, যার ওড়নায় বাংলা হরফে লেখা ছিল, ‘আমার পরানভরা ভালোবাসা আমি তোমায় সমর্পণ করলাম’। এই বিষয়টি নেটিজেনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।

ভিকি কৌশল ও ক্যাটরিনা কাইফ:

নেট দুনিয়ায় যারা বিয়ের অনুষ্ঠান কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন,তারা হলেন ভিকি কৌশল ও ক্যাটরিনা কাইফ। রাজস্থানের সওয়াই মাধোপুরের এক ঐতিহাসিক দুর্গ, ‘ফোর্ট বারোয়ারা’য় এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। যদিও চ‚ড়ান্ত কড়া নিরাপত্তার জন্য এই বিয়ের সাজসজ্জার খুব কম ছবিই পাওয়া গেছে। দুর্গটি সাজানো হয়েছিল উজ্জ্বল আলো আর ফুল দিয়ে। এই দুর্গ ইতিহাস আর সৌন্দর্যের অদ্ভুত মিশেল। বিলাসবহুল, আরামদায়ক এবং স্বপ্নময় একটি বিয়ে সম্পন্ন করার জন্য যথেষ্ট সঠিক স্থান।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
গ্রুমিংদেহ ও মনভালো থাকার ভালো খাবাররোদসীর পছন্দসচেতনতাস্বাস্থ্য

বিয়ের আগে ফিট থাকতে

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ৯, ২০২৩

রেহনুমা তারান্নুম:

নারী হোক বা পুরুষ, যেকোনো মানুষের জীবনে বিয়ে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশেষ মুহূর্ত। আর বিয়ের দিনের মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে বর ও কনে।বিয়ের আগে বর-কনের চিন্তা একটু বেশি করতে হয়। খাবারদাবার, পোশাক, গহনা থেকে শুরু করে আরও কত-কী। বিয়ের দিন-তারিখ নির্ধারণ হলেই শুরু হয় বর-কনের নানা রকম দায়িত্ব। এই সময় বিয়ের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে বাড়তি চিন্তায় অনেকেই নিজের খাবারদাবার বা ডায়েটের কথা ভুলে যায়। আবার কেউ নিজেকে তাড়াতাড়ি স্লিম দেখাতে গিয়ে একেবারেই খাওয়াদাওয়া কমিয়ে দেয়। যেটা মোটেও করা উচিত নয়।

বিয়ের অনুষ্ঠানের আগে যদি হাতে কিছু সময় থাকে, তবে সেই সময়ের মধ্যেই নিজের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন এনে নিজেকে করতে পারো ফিট এবং সুন্দর। বিয়ের এই সময়টাতে বর-কনের মানসিক চাপ বেড়ে যায় এবং এর প্রভাব পড়ে ত্বকে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা করলে চেহারায় ক্লান্তির ছাপ পড়তে পারে। ত্বক সুন্দর রাখতে তাই দুশ্চিন্তা কম করতে হবে এবং তৈলাক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। প্রচুর পানি পান করে ত্বককে ডিহাইড্রেট রাখতে হবে। সবজি, ফলমূল বেশি করে খেতে হবে। এতে ত্বক সজীব দেখাবে।

এছাড়া বিয়ের সময়টাতে অতিরিক্ত চিন্তার কারণে খাওয়াদাওয়ার অনিয়মে শরীরে ক্যালরি কম সঞ্চয় হয়। তাই বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। প্রতিদিন সকালে একমুঠো যেকোনো ধরনের বাদাম খেলে পুষ্টিও পাওয়া যাবে। সঙ্গে ক্যালরিও সঠিক মাত্রায় শরীর গ্রহণ করতে পারবে।

-বিয়ের আগে বর ও কনের অবশ্যই একটা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের নিয়ম করা উচিত। বাইরের খাবার বা ভাজাপোড়া খেয়ে যেন পেটের পীড়া না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এই সময় ডায়েট চার্টে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার এবং সবজি ও ফল রাখতে হবে। শরীরের ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে এমন খাবার ও রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়।

-বিয়ের আগে যদি হাতে একমাস সময় থাকে, তবে একমাস আগে নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করো। একমাসে মাঝেমধ্যে একদিন বেশি খেয়ে ফেললেও চিন্তার কোনো কারণ নেই। ভাত ও রুটির পরিমাণ একটু কমিয়ে দাও এবং সালাদ ও সবুজ শাকসবজি বেশি করে খাও। ব্যায়াম করার সময় একটু বাড়িয়ে দাও।

-নিজের পছন্দমতো সবজি দিয়ে তৈরি জুস খেতে পারো। ডায়েট সঠিক রাখতে গেলে গাজর, বিট রুট এবং টমেটো সব থেকে ভালো অপশন। এসময় স্কিন গ্লোর জন্যও এটি বেশ উপকারী। বাইরে খাওয়াদাওয়া করলে সঙ্গে সালাদ খাওয়ার চেষ্টা করো। ডুবোতেলে ভাজা খাবার থেকে বিরত থাকো।

-সারাদিন বাইরে থাকতে হলে ড্রাই ফ্রুটস সঙ্গে নেওয়া যেতে পারে। সেগুলো হেলদি স্ন্যাকস হিসেবে ভালো হবে। জাংক ফুড খাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে। বাইরের কোনো খাবার খেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করো। সারাদিনে খুব বেশি চা বা কফি না খাওয়াই ভালো।

-চিয়া সিডের পানি প্রতিদিন পান করার চেষ্টা করো। চিয়া সিড ওমেগা থ্রির সব থেকে ভালো উৎস, এটি অল্প পরিমাণে ফ্যাট যেমন আয়ত্তে রাখে, তেমনই স্কিনের সঙ্গে শক্তি বাড়াতে কাজ করে।

-খেতে ভালো লাগলে এক বাটি পাকা পেঁপে প্রতিদিন খেতে পারো। এটি দেহের কোষগুলোকে পুষ্টি প্রদান করে এবং সতেজ রাখতে সাহায্য করে। সঙ্গে খাবার হজমেও সহায়তা করে।

-টক দই সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। খাবারের সঙ্গে সঙ্গেই ভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম দুটিই দারুণভাবে সরবরাহ করে। সে কারণে টক দই প্রতিদিন খেতে হবে।

-রাতে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করো।

-যদি ওজন কমানোর ডায়েট করতে চাও, তাহলে অবশ্যই চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। স্টার্চযুক্ত সবজি যেমন, আলু, ভুট্টা, মিষ্টি আলু কখনোই খাবে না। দুধ চা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটা বদলে চিনি ছাড়া চা বা গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস করো। এ ছাড়া রাতে কার্বোহাইড্রেট-জাতীয় খাবার যেমন ভাত, রুটি বাদ দিয়ে সবজি ও প্রোটিনজাতীয় খাবার যেমন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ তালিকায় রাখো। পর্যাপ্ত পানি বা তরলজাতীয় খাবার গ্রহণ করো এবং অবশ্যই দিনে অন্তত ৩০ মিনিট রাখো শরীরচর্চার জন্য।

বিয়ের এক সপ্তাহ আগে খাও এই খাবারগুলো

তুমি ছেলে হও আর মেয়ে হও, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বিয়ে জীবনে একবারই হয়। বিয়ে মানেই নতুন সঙ্গীর হাত ধরে নতুন জীবনে প্রবেশ। এই সময় সবারই টেনশন, স্ট্রেস, উত্তেজনা বেশি থাকে। বিয়ের মাস তিনেক আগে থেকে সবাই ডায়েট চার্ট মেনে চলো, নিয়মিত শরীরচর্চাও করো।

এর মধ্যে অনেক খাবার স্বাস্থ্যকর হলেও বিয়ের আগের এক সপ্তাহের টেনশন, স্ট্রেসের কথা মাথায় রেখে তা ডায়েট চার্টের বাইরে রাখার পরামর্শ দেন ডায়েটিশিয়ান ও মনোবিদেরা। জেনে নাও কোন খাবারগুলো রয়েছে এর মধ্যে।

০১. চুইংগাম:

বিয়ের ছবিতে সেলফি আদর্শ। সেলফি ফেস তৈরির জন্য অনেক ট্রেনারই চুইংগাম খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু যত চুইংগাম খাবে, তত শরীরে হাওয়া ঢুকে পেট ফাঁপবে। তাই বিয়ের এক সপ্তাহ আগে থেকে চুইংগাম বন্ধ করো।

০২. ড্রাই ফ্রুট:

শুকনো ফল অবশ্যই অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। ডায়েট চার্টে অবশ্যই রাখা উচিত। কিন্তু এর মধ্যে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি থাকে। বিয়ের এক সপ্তাহ আগের টেনশনে ড্রাই ফ্রুট ওজন বাড়াতে পারে।

০৩. কপি:

বাঁধাকপি, ফুলকপি ও ব্রকলিজাতীয় সবজির মধ্যে সেলুলোজের পরিমাণ খুব বেশি থাকে, যা হজমের সমস্যা করতে পারে। বরং শসাজাতীয় সবজি এই সময় বেশি করে খাও।

০৪. কফি:

এই সময় নিয়ম করে সময় মেনে ঘুমের খুব প্রয়োজন। স্ট্রেস কাটাতে তাই কফির ওপর নির্ভর করবে না। এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে চেহারায় ক্লান্তির ছাপ পড়বে। বেশি কফি খেলে অ্যাসিডিটিও হতে পারে।

০৬. কার্বনেটেড ড্রিংক :

অনেকেই ভাবে, ডায়েট সফট ড্রিংক এই সময় খাওয়া যায়। কিন্তু বিয়ের আগে সবাই ডায়েট চার্ট মেনে চলে। সফট ড্রিংকের মধ্যে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। পেটের মধ্যেও বুদবুদ কাটে সফট ড্রিংক। ওজনও বাড়বে, স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হবে।

০৭. জাংকফুড:

এ ব্যাপারে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। এই সময় স্ট্রেস বেশি থাকে। পিজা, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ মুড ভালো করবে ঠিকই, কিন্তু হজমের সমস্যায় পড়বে।

০৮. দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার:

ভারতীয় মায়েরা মনে করে, বিয়ের আগে রোজ দুধ খাওয়া প্রয়োজন। এতে কমজোরি যেমন কাটবে, তেমনই রংও ফরসা হবে। কিন্তু ডায়েটিশিয়ানরা জানাচ্ছেন, এই সময় অনেক রকম টেনশন থাকে। দুধ থেকে হজমে সমস্যা হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে দুগ্ধজাত খাবারে ওজন বাড়ার প্রবণতাও দেখা যায়।

বিয়ের এক মাস আগে থেকেই নানা জায়গায় আইবুড়ো ভাত খাওয়া শুরু হয়ে যায়। সেই সময় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। একইসঙ্গে পেটও ভালো রাখা প্রয়োজন। এরপর আসে বিয়ের আগের দিন। সেদিন দুপুরে বাড়িতে আইবুড়ো ভাত খাওয়া হয়। তাই খাবারের দিকে যথেষ্ট লক্ষ রাখা উচিত। দুপুরের খাবারকে তুমি না বলতে পারবে না। কিন্তু সারাদিনের ডায়েট তো তোমার হাতেই থাকে।

অত্যন্ত তৈলাক্ত খাবার খাবে না

শরীর সুস্থ রাখার প্রধান শর্তই স্বাস্থ্যকর ডায়েট। তাই বিয়ের আগের দিন ডায়েটে তেল ঝাল মসলা দেওয়া খাবারকে বাদ দাও। বিয়ের আগের রাতে এমনিই ঠিকঠাক ঘুম হয় না। তার ওপর ওদিন যদি এসব খাবার খাও, তাহলে তোমার শরীর খারাপ কে আটকায় বলো দেখি। বিয়ের দিন ভালো থাকতে হলে বিয়ের আগেরদিনও তোমাকে সুস্থ থাকতে হবে।

কফি ও কোল্ড ড্রিংক খাবে না

কফি খেতে অনেকেই ভালোবাসে। শীতকালে আবার বাঙালি বাড়িতে কফি খাওয়ার একটা প্রচলন আছে। কিন্তু তুমি তোমার ডায়েট থেকে কফি বাদ দাও ওইদিনের জন্য। কারণ, কফি তোমার শরীরকে ডি-হাইড্রেটেড করে দিতে পারে। কোল্ড ড্রিংকও শরীরের জন্য খুবই খারাপ। তাই তুমি ফলের রস বা গ্রিন টি খেতে পারো।

দুধের প্রোডাক্ট

অনেকের চিকিৎসকই তাঁর ডায়েট থেকে দুগ্ধজাত খাবার বাদ দিয়ে দেন। আমার নিজেরই সেসব খাওয়া বারণ। আমি টক দই, দুধ চা কিছুই খাই না। কিন্তু যারা খেতে ভালোবাসে, তারাও বিয়ের দিনের কথা মাথায় রেখে আগের দিন এসব খাবে না। কারণ, দুধ হজম হতে সময় নেয়। তাই ঠিকঠাক ঘুম না হওয়ার কারণে সমস্যা তৈরি হতে পারে।

পর্যাপ্ত ফল খাবে

পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল খেলে তোমার শরীর এমনিই ভালো থাকবে। তুমি ব্রেকফাস্টে বা ব্রেকফাস্ট ও লাঞ্চের মাঝামাঝি সময়ে ফল খেতে পারো। তোমার শরীর ভালো থাকবে। যেহেতুতুমি লাঞ্চ বাদ দিতে পারবে না, তাই কিছু করার নেই। ফলের রসও খেতে পারো।

সালাদ

ডিনারে ভাত বা রুটির বদলে চিকেন সালাদ কিংবা স্প্রাউটস সালাদ খেতে পারো।

পানি

পরের দিনও তোমাকে ফল ও জলের ওপরেই থাকতে হবে। এবং রাতে উল্টোপাল্টা খাওয়া তো হবেই। তাই আগের দিন শরীর ডিটক্স করা প্রয়োজন। সেই সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেয়ে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে। যাতে বিয়ের দিন কোনোভাবেই ডিহাইড্রেশন হয়ে শরীর খারাপ না হয়ে যায়।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ঘরেই বানিয়ে নাও মেকআপ সেটিং স্প্রে

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook