রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
লেখক

Suraiya Naznin

Suraiya Naznin

কর্মক্ষেত্রসম্ভাবনাসাফল্য

‘ঘরের কাজগুলো ভাগাভাগি হওয়া দরকার’

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ১৬, ২০২৩

কর্মজীবি নারীর প্রধান সমস্যা হলো অফিস সামলেও তাকে ঘরের কাজ করতে হয়। ঘরের কাজগুলো ভাগাভাগি হলেই নারীরা আরো অনেক বেশি নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাবে বলে আমি মনে করি এভাবেই বলছিলেন নেক্সাস টেলিভিশনের অনুষ্ঠান নির্মাতা জাকিয়া সুলতানা– তিনি নারী দিবসে রোদসীর সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুরাইয়া নাজনীন

ক্যারিয়ার শুরু করার সেই সময়ের গল্প যেমন ছিল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে মাস্টার্স করে ২০০৬ সালে বৈশাখী টিভিতে সহকারী প্রযোজক হিসাবে কর্মজীবন শুরু হয়। সম্মান ও সফলতার সাথে এখন পর্যন্ত কাজ করে যা”িছ। প্রযোজনার পাশাপাশি সরাসরি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করা হয়।

জীবনের প্রতিবন্ধকতা ছিল কী? থাকলে তা কেমন আর কিভাবে সেগুলো অতিক্রম করা হয়েছে?

আমাদের সমাজে নারীর যে অবস্থান সেই জায়গা থেকে বলতে গেলে আমি খানিকটা প্রিভিলেজড। আমার পরিবারে নারী হিসাবে আলাদাভাবে ট্রিট করেনি কেউ কখনও আর বিয়ের পরও আমি ততটাই সুবিধা পেয়েছি যতটা বিয়ের আগে পেতাম। তবে নারী হিসেবে সামাজিক ঘেরাটপগুলো আমাদের মগজে প্রথিত থাকে বলে কিছুক্ষেত্রে আমরা পিছিয়েই থাকি। সন্তান জন্মের পর আমার কর্মবিরতি ছিল। বাচ্চাকে টেক কেয়ারের জন্য নির্ভরযোগ্য অবস্থা না থাকায় কর্মবিরতি নিতে হয়। যদিও আমি সেসময়টাকে আমার উচ্চশিক্ষায় কাজে লাগাই।

নারী হিসেবে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় ঘরে ও বাইরে?

কর্মজীবি নারীদের প্রধান সমস্যা হলো অফিস সামলেও তাকে ঘরের কাজ করতে হয়। ঘরের কাজগুলো ভাগাভাগি হলেই নারীরা আরো অনেক বেশি নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাবে বলে আমি মনে করি। আর অন্যদিকে অফিসে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য তাকে পুরুষ সহকর্মীর চাইতে বেশি কাজ করতে হয় নারীদের। আবার নারীরা অফিসে ভালো করলে বাহবার বদলে পুরুষ সহকর্মীরা তার মনোবল ভেঙে দিতে চেষ্টা করে নানাভাবে। আমাদের দেশে এখনও কখনও কখনও পুরুষের চাইতে কম বেতন দেয়া হয়। নারী-পুরুষের বৈষম্যের কারণে বেসরকারি সংস্থায় সমান যোগ্যতা থাকার পরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে নারীর বেতন পুরুষের বেতনের চেয়ে কম। আবার এক অফিসে নারী ও পুরুষ কর্মকর্তা একই পদমর্যাদার হলেও অধস্তনেরা পুরুষ কর্মকর্তাকে যতটা মানেন, নারীর ক্ষেত্রে ততটা না। রাস্তাঘাটে যানবাহন সমস্যা তো রয়েছেই। সবমিলিয়ে নারীর জন্য এখনও আমাদের সমাজব্যবস্থা সহনশীল অবস্থায় পৌঁছায়নি। তাই পরিবেশ ও মানসিকতার বদল হওয়া জরুরী।

নারীর আত্মনির্ভরশীলতার সঙ্গা কি?

আমাদের দেশের নারীরা নিজের মতের গুরুত্ব না দিয়ে বাবা-ভাই-স্বামীর হাত ধরে জীবন পার করে দেয়। কিন্তু সময় বদলেছে। নারীর আত্মনির্ভরশীলতা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আত্মনির্ভরশীলতা মানে নিজের ওপর নির্ভরশীলতা। একজন নারী যখন অন্যের ওপর নির্ভর না করে নিজেই নিজের অবস্থান তৈরি করেন, তার চাহিদা মেটান, তার পছন্দমত স্বা”ছন্দ্যে চলতে পারেন সেটাই আত্মনির্ভরশীলতা।

 

নারী আত্মনির্ভরশীল হতে হলে কি কি থাকা দরকার বলে মনে হয়?

আত্মনির্ভরশীলতা হলো জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। প্রথমত নারীশিক্ষা জরুরী এরপর তাকে স্বাবলম্বী হতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী নারী অনেক বেশি আত্মনির্ভরশীল। একজন মানুষ তার নিজস্ব শক্তি ও আত্মনির্ভরশীলতা থেকেই নিজের স্বাধীনতা অনুভব করে। শুধুই সংসার ও পরিবার প্রতিপালনে নারী কখনোই সুখী হতে পারে না, কারণ চাকরিটা তাঁর কাছে যতটা না আর্থিক প্রয়োজনের, তারচেয়ে বেশি ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য বিকাশের পরিচিতির। তাই নারীর আত্মনির্ভরশীল হওয়া জরুরী। আত্মনির্ভরশীলতার মধ্য দিয়ে যেকোনো অসুবিধাকে জয় করা যায়।

নারীর আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পেছনে সমাজ ও পরিবারের কি কি করনীয় আছে?

আমাদের পরিবার থেকে কন্যা সন্তানদের এভাবেই গড়ে তোলা হয় যে, বিয়ের পর নারীদের প্রধান এবং একমাত্র অবলম্বন স্বামী। স্বামীই তাদের সর্বস্ব, স্বামীই দেবতা। কিš‘ বর্তমান নারীরা ঘরের বাইরেও নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে। দেশ ও দেশের বাইরেও তাদের সমান বিচরণ। তবু মান্ধাতা আমলের প্রথা থেকে তারা মানসিকভাবে এখনও বের হতে পারেনি। আসলে নারীদেরকে এই অবস্থা থেকে বের হতে দেওয়া হয় না। তাই নারীরা পরিবারের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে ওঠে; তাদের নির্ভরশীল করে তোলা হয়। শিশুকাল থেকেই একজন ছেলে সন্তানকে যতটা বহির্মুখী করে গড়ে তোলা হয়, কন্যাসন্তানকে ততটা অন্তর্মুখী। এভাবে নারীরা শৈশব থেকে এত বেশি ঘরমুখো হয় যে, তাদের নির্ভরশীলতাও মজ্জাগত হয়ে পড়ে। তাই নারীরা বাবার বাড়িতে যেমন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ বাবা-ভায়ের দেখানো পথে চলে, তেমনি জীবন পরিচালনা করতে আরও একটু বাড়তি সংযোজন ঘটে স্বামীর পরিবারে এসে। হুট করে বিপ্লব ঘটিয়ে নিজের অধিকার বা আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা নারীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। যুগ যুগ ধরে যে নিয়মের বেড়াজাল তৈরি হয়েছে পরিবার ও সমাজে তার বদল ঘটতে হবে সমাজ থেকেই। সমান মর্যাদায় গড়ে তুলতে হবে কন্যা ও পুত্র সন্তানকে। শিক্ষার সমান পরিবেশ দিতে হবে। তাহলেই পরিবর্তন আসবে হয়তো।

চাকরি কিংবা ব্যবসা যাই হোক পরিবারের সাপোর্ট কতটুকু দরকার?

পুরোটাই দরকার। পরিবারের বাইরে গিয়ে কাজ করা ভীষণ কষ্টসাধ্য। পরিবারের সবার সহযোগিতা পেলে তার জন্য সবকিছু সহজ হয়ে যায়। আর নারীরা কাজ করার ফলে অর্থনৈতিক সুফল তো সবাই ভোগ করবে তাই সহযোগিতাটা খুব প্রয়োজন।

চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীদের ভূমিকা ও টিকে থাকার লড়াই সম্পর্কে জানতে চাই

শুরুতেই বলেছি, আমি অন্য অনেকের চাইতে বেশ সাপোর্ট পেয়েছি তাই আমার চ্যালেঞ্জ খানিকটা কমই ছিল । পরিবারে মানুষের বাইরের কথা যদি বলি তাহলে বলবো আমি যে বিষয়ে পড়ালেখা করেছি তখন শুনতে হতো নাটক বিষয়ে পড়ে কী করবো, ক্যারিয়ার কী হবে ইত্যাদি। আমি যে সময়ে জবে জয়েন করি তখন বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ভরপুর সময়। রেজাল্ট বের হবার আগেই চাকরী পেয়ে যাই তাই বেকার থাকতে হয়নি। মিডিয়ার কাজটা অন্যান্য অফিস জবের মত না। আমি একজন অনুষ্ঠান নির্মাতা। আউটডোরে শুটিং থাকে, সরাসরি অনুষ্ঠান থাকে ফলে সেই সময়গুলো মেইনটেইন করতে হয়। একটু তো পরিশ্রম হয় কিš‘ আমি বলবো সৃষ্ঠির একটা আনন্দ শেষমেশ পাওয়া যায়।

একজন গনমাধ্যমকর্মী হিসেবে অন্য নারীর অনুপ্রেরণার জায়গা নিশ্চয়ই?

গনমাধ্যমে কাজ করার ফলে এর কন্টেন্ট নির্মাণ করতে নিজেকে হতে হয় বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী। গবেষণা থেকে শুরু করে পান্ডুলিপি তৈরি, উপস্থাপন সম্পাদনা, পরিচালনা। আবার একটি টিম পরিচালনা করার দক্ষতা ও সকলের সাথে মানিয়ে চলার একটা যোগ্যতা তৈরি হয়। নানা ধরনের মানুষের সাথে মেশার সুযোগ যেমন রয়েছে তেমনি নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত অগ্রগণ্য ব্যক্তিবর্গের জীবনযাপন সবকিছুর সাথে একাত্মতার ফলে গনমাধ্যমে কাজ করা মানুষটি একজন শুদ্ধ ও রুচিশীল মনন লাভের সুযোগ পায়। একজন শুদ্ধ, সুচিন্তার মানুষই পারেন সমাজে পরিবর্তন আনতে। নারী উন্নয়নে নারীর আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে দিতে আমরা নির্মান করছি নারীদের মন খুলে কথা বলার একটি প্ল্যাটফর্ম লেডিস ক্লাব। এখানে বিভিন্ন শ্রেনি পেশার নারীদেরকে তাদের কাজ সম্পর্কে কথা বলার সুযোগ তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। গৃহিনী থেকে শুরু করে সবাই এসে কথা বলার সুযোগ পায় ফলে তাদের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। তুমিই প্রথম অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন সেক্টরের প্রথম নারীদের জীবনযাপন, প্রতিবন্ধকতা, সফলতা তুলে ধরা হয় যা অন্য নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার। অনুষ্ঠান নির্মাতা হিসাবে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই ভালো মানের অনুষ্ঠান নির্মাণের প্রতি মনোযোগ থাকে। নির্মাতা হিসাবে নারীরা খুব কম কাজ করেন। সৃজনশীল এই পেশায় সৃষ্টির আনন্দ রয়েছে।

নারীকে স্বাবলম্বি হতে চাকরী না ব্যবসা? কোনটা বেশি সহজ করে

আমাদের দেশে নারী শিক্ষা বৃদ্ধির সাথে সাথে নারী চাকরিজীবীর হার বেড়েছে। তবে প্রথম শ্রেণির চাকরিজীবীদের মধ্যে নারী এখনো অনেক কম। এর কারণ উচ্চশিক্ষার অভাব। এছাড়া নারী দীর্ঘসময় চাকরিতে টিকে থাকে না। বিবাহিত নারীর চাকরিজীবনে অনেক প্রতিবন্ধকতারকতার মধ্যে পড়তে হয়। অনেককেই সন্তান জন্ম বা প্রতিপালনের জন্য স্বামীর জোরাজুরিতে চাকরি ছাড়তে হয়। বদলির কারণেও অনেক নারী হয় চাকরি ছাড়েন, না হয় দুর্বিষহ জীবনযাপন করেন। অনেকে চাকরির অনুমতি পান এ শর্তে যে তাঁর বেতনের পুরোটাই স্বামীর হাতে তুলে দিতে হবে। এত সব হতাশা নিয়ে চাকরি করতে গিয়ে নারীদের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায় আর দিনের বেশির ভাগ সময় অসš‘ষ্টির মধ্যে কাটিয়ে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসু¯’ হয়ে পড়েন তারা। এমনকি আমাদের দেশে এখনো কোনো কোনো অফিসে নারীর জন্য আলাদা প্রক্ষালন কক্ষের সুবিধা নেই। সন্তান পালন বা নানাবিধ কারণে কর্মক্ষেত্রে নারী ঝরে পড়ে। সংসার সামলানো একটা বড় দায়িত্ব হলেও এর অর্থনৈতিক কোন মুল্যায়ন নেই তাই ব্যবসা একটা ভালো পদক্ষেপ হতে পারে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংক নারী উদ্যেক্তাদের জন্য লোনের সুযোগ দিচ্ছে। ব্যবসা হতে পারে নারীর আত্ম কর্মসংস্থানের ভালো একটা ক্ষেত্র। এতে বাড়ির সংস্পর্শে থেকেই ঘর বাহির দুইই সামলানো যাবে।

এবার নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নারী-পুরুষের সমতায় ডিজিটাল প্রযুক্তি’ এ বিষয়ে কিছু বলুন

ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেট ভিত্তিক নানা কর্মকান্ডে নারীরা পিছিয়ে নেই। করোনাকালীন সময়ে ই কর্মাসে নারীর অগ্রগতি চোখে পরার মতো। তারা যেমন আত্মনির্ভরশীল হয়েছে তেমনি পরিবারের পাশে থেকে দেশের অর্থনীতির চাকাকে আরো বেশি জোরদার করেছে নারী। সামনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সফল করতে হলে নারী পুরুষ সবাইকে সমানভাবে কাজ করতে হবে; ডিজিটাল যুগের সাথে সমানভাবে দক্ষ হতে হবে নারী পুরুষ সকলকে।

সমাজের কথিত দৃষ্টিভঙ্গি আছে নারী মানেই না পারার দলে’ তাই কী?

নারী মানেই এক শক্তির আধার। একজন নারী প্রকৃতিগতভাবেই ধারণ করার শক্তি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। যে জন্ম দিতে পারে তার পক্ষে সব কিছুই করা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন পারিপার্শ্বিক সহযোগিতা। আর প্রয়োজন সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। তাহলেই দেশের অগ্রগতি দ্রুত সম্ভব। নারীদেরকেও দৃঢ় মনোহল রাখতে হবে। আমি নারী আমি সব পারি নিজের প্রতি এই বিশ্বাস রাখতে হবে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
বিদেশসম্ভাবনা

ফ্রান্সের জাতীয় ক্রিকেট বোর্ডের স্পন্সর হলেন সাত্তার আলী

করেছে Suraiya Naznin ফেব্রুয়ারী ২৬, ২০২৩

 

 

রোদসী ডেস্ক: ফ্রান্সের জাতীয় ক্রিকেট বোর্ড কর্তৃক ফ্রান্স-বাংলাদেশ কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত “ফ্রান্স-বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের স্পন্সর হলেন ফ্রান্সে বাংলাদেশী মালিকানাধীন দুই কোম্পানি শাহ্ ও মীর্জা গ্রুপ।

 

প্যারিসের উপকণ্ঠ সেন্ট মাউরিসে ফ্রান্স জাতীয় ক্রিকেট বোর্ডের হল রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ও চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। এসময় চুক্তিস্বাক্ষর শেষে ফ্রান্স ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি প্রভু বালানের হাতে স্পন্সর চেক তুলে দেন শাহ্ গ্রুপের চেয়ারম্যান সাত্তার আলী সুমন ওরফে শাহ্ আলম ও মীর্জা গ্রুপের চেয়ারম্যান মীর্জা মাজহারুল।

 

এসময় ফ্রান্স ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি প্রভু বালান বলেন, বাংলাদেশী মালিকানাধীন কোম্পানি কর্তৃক জাতীয় ক্রিকেট বোর্ডের স্পন্সর হওয়া একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এঘটনায় আমরা খুবই আনন্দিত। এর ফলে ফ্রান্স ক্রিকেট অনেক দূর এগিয়ে যাবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। সর্বপরি জয় হবে বিশ্ব ক্রিকেটের।

 

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ফ্রান্স জাতীয় দলে খেলছেন বাংলাদেশী বংশদ্ভূত ক্রিকেটার জুবায়ের। বোর্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে আরো অনেকে। যারা অদূর ভবিষ্যতে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাবেন।

 

শাহ্ গ্রুপের চেয়ারম্যান সাত্তার আলী সুমন ওরফে শাহ্ আলম বলেন, ফ্রান্স ক্রিকেট বাংলাদেশী তরুণদের জন্য একটি বিরাট সম্ভাবনার জায়গা। যেখানে জাতীয় দলে জুবায়েরের মতো মেধাবী ক্রিকেটার খেলার সুযোগ পেয়েছেন। আরো অনেকেই আছেন সামনের সারিতে। যা দেখে একজন বাংলাদেশী হিসেবে গর্বে বুকটা ভরে ওঠে। তাদের প্রচেষ্টার সঙ্গে শামিল হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।

 

বাংলাদেশ কমিউনিটির নতুন প্রজন্মকে ক্রিড়ামুখি করে ফ্রান্সের মাটিতে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করাই আমার লক্ষ্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মীর্জা গ্রুপের চেয়ারম্যান মীর্জা মাজহারুল বলেন, বিশ্বের বুকে লাল সবুজের পতাকাকে তুলে ধরতেই আমরা ফ্রান্স ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। আমরা চাই বাংলাদেশ কমিউনিটির তরুণ প্রজন্ম মুলধারার ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হোক। আর বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করুক।

 

এপ্রিল মাস থেকে শুরু হওয়া ফ্রান্স-বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে মোট ২৪টি দল অংশ নেবে। যার মধ্যে বাংলাদেশ কমিউনিটির রয়েছে ৪টি দল। চুক্তিস্বাক্ষর শেষে সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্স জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য জুবায়ের, বাংলাদেশ ক্রিকেট ক্লাব-ফ্রান্সের সভাপতি আজিজুল হক সুমন ও বেঙ্গল টাইগার ক্রিকেট ক্লাব- ফ্রান্সের সভাপতি আরিয়ান খান রাসেল।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নারীসংগ্রামসচেতনতাসম্ভাবনা

অভিবাসী নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি

করেছে Suraiya Naznin জানুয়ারী ১১, ২০২৩

নাজমুল হুদা খান

অভিবাসী নারী শ্রমিকদের অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। তারা অনেক বেশি অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকেন। ডায়রিয়া, যক্ষ্মা, চর্মরোগ, জন্ডিসসহ নানাবিধ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য রয়েছে।

বৈশ্বিক অর্থনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে অভিবাসী শ্রমিকেরা দেশের অর্থনীতি মজবুত করতে জোরালো ভূমিকা রাখছেন। বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজারে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বের ১৭৪টির বেশি দেশে প্রায় দেড় কোটি অভিবাসী শ্রমিকের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমৃদ্ধ করছে এবং শতকরা ১২% জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রাখছে। এই অভিবাসীদের উল্লেখযোগ্য অংশ নারী শ্রমিক। ২০০৪ সালে অভিবাসী নারী শ্রমিকের শতকরা হার ছিল মাত্র ৪ শতাংশ, এক যুগের ব্যবধানে অর্থাৎ ২০১৫ সালে এর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯ শতাংশ। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০ শতাংশে উন্নীতকরণ; যদিও করোনা অতিমারিতে এ লক্ষ্যমাত্রায় ছেদ পড়েছে।

বাংলাদেশি অভিবাসী নারী শ্রমিকদের প্রায় ৯০ শতাংশই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কর্মরত। বর্তমানে সৌদি আরবে দুই লক্ষাধিক নারী শ্রমিক রয়েছে, আরব আমিরাত ও জর্ডানে আছে দেড় লক্ষাধিক অভিবাসী নারী, লেবাননে লক্ষাধিক, ওমানে প্রায় এক লাখ। এ ছাড়া কুয়েত ও বাহরাইনে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। এসব নারী অভিবাসী শ্রমিক উল্লিখিত দেশগুলোতে গৃহকর্মী, হাসপাতাল, পোশাকশিল্প, বিভিন্ন কলকারখানা, অফিস, কৃষি খামার, মার্কেট, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি কর্মকা-ে নিযুক্ত রয়েছে। পুরুষ কর্মীদের প্রবাসে গমনের বিষয়ে সমাজ ও পরিবারের বাধাবিপত্তি না থাকলেও নারীদের নানা ধরনের বিপত্তি পেরিয়ে অগ্রসর হতে হয়। অথচ রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র দেখা যায়। পুরুষ শ্রমিকেরা যেখানে উপার্জিত আয়ের ৫০ শতাংশ দেশে প্রেরণ করে থাকেন; সেখানে নারীদের এর পরিমাণ ৯০ শতাংশ।

অভিবাসী নারী শ্রমিকদের অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। তারা অনেক বেশি অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকেন। গৃহস্থালি, রেস্টুরেন্ট, কলকারখানার গরম, আর্দ্র ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে হয় বলে অনেকেরই ডায়রিয়া, যক্ষ্মা, চর্মরোগ, জন্ডিসসহ নানাবিধ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য রয়েছে। পশুপাখির খামারের কর্মরতদের মধ্যে যক্ষ্মা, চোখের নানাবিধ ব্যাধি এবং পেশি ও অস্থিসন্ধিতে দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা ও প্রদাহ দেখা দেয়। খনি ও অন্যান্য কারখানায় কর্মরতদের ফুসফুসের কর্মক্ষমতা হ্রাস, উ”চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, প্রভৃতি রোগে ভুগতে দেখা যায়। খাবারের রেস্টুরেন্ট ও খাবার তৈরির কাজে নিয়োজিতরা খাদ্যনালি, পরিপাকতন্ত্র, লিভারসহ নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংক্রামক ব্যাধিতে ভুগে থাকেন।

প্রবাসী নারী শ্রমিকেরা বিভিন্ন সামাজিক অসংগতি, বৈষম্য ও অপরিচিত পরিবেশের কারণে শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা বৃদ্ধি ঘটে। অধিকাংশ নারী গৃহশ্রমিককে অতিরিক্ত কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা যায়। তারপরও মুখ বুজে সহ্য করে এবং নিজের অসুস্থতাকে লুকিয়ে বিদেশের মাটিতে কামড়ে পড়ে থাকতে হয়। নারী শ্রমিকদের অধিকাংশেরই নিরাপত্তাহীন বারান্দা, রান্নাঘর, স্টোররুমে রাতযাপন করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে অনেককেই দৈহিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের মুখোমুখি হতে দেখা যায়। ফলে ভুক্তভোগী নারী শ্রমিকদের যৌনবাহিত রোগ, এইডস, অনিচ্ছাকৃত ও অবৈধ গর্ভধারণ, অনিরাপদ গর্ভপাতের মতো ঘটনা সংঘটিত হয়। এ ধরনের অসহ্য নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং ডিপ্রেশন, সিজোফ্রেনিয়াসহ নানাবিধ মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। এমনকি আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। উপরš‘ পরিবারের কাছ থেকে দীর্ঘদিন আলাদা থাকা, সামাজিক ও পারিবারিক স্নেহ-মমতা থেকে বঞ্চনা, একাকিত্ব, দারিদ্র্য; সব মিলিয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হয়।

 

নারী শ্রমিকেরা অসুস্থতার পরও বিভিন্ন বাধাবিঘ্নর কারণে অথবা চিকিৎসাকেন্দ্রসমূহে প্রবেশাধিকার কিংবা ইনস্যুরেন্স না থাকার কারণে চিকিৎসা-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালমুখী হতে পারলেও ভাষা সমস্যা বা অদক্ষতার কারণে সঠিক চিকিৎসাটি পায় না। অনেক সময় বেতন কম পাওয়া বা বেতন না পাওয়ার ভয়ে শারীরিক অসুস্থতাকে পুষে রাখে; যা পরে জটিল আকারে রূপ নেয়। অবৈধ পথে গমনকারী বা অবৈধ ভিসা পাসপোর্টধারী নারী শ্রমিকদের অবস্থা আরও প্রকট।
নারী শ্রমিকেরা বিদেশ গমনকালে ফিটনেস টেস্টেও বিড়ম্বনার শিকার হয়। অনেক সময় মেডিকেল পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতি করে ফিটনেসের জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। ফিট শ্রমিককে আনফিট কিংবা আনফিটকে ফিট করতে অর্থ প্রদানে বাধ্য করা হয়।

 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) গবেষণার তথ্যমতে, ৩৮ শতাংশ নারী বিদেশে যাওয়ার পর শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, ৫২ শতাংশ নারী শ্রমিককে জোর করে অতিরিক্ত কাজে বাধ্য করা, ৬১ শতাংশ বিদেশে খাদ্য ও পানির অভাব, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে তথ্য উঠে এসেছে। ৮৭ শতাংশ নারী শ্রমিক প্রবাসে সঠিক চিকিৎসাসেবা পান না বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। চাকরি হারিয়ে বা দেশে ফিরে ৮৫ শতাংশ নারী হতাশাগ্রস্ত, ৬১ শতাংশ ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন, ৫৫ শতাংশ শারীরিকভাবে ও ২৯ শতাংশ মানসিকভাবে অসুস্থতায় ভুগে থাকেন। এমনকি বিদেশ থেকে হেয়প্রতিপন্ন হয়ে দেশে ফেরত আসার পর নারী শ্রমিকেরা সমাজ ও পরিবারের কাছে অসম্মানিত হচ্ছেন। ৩৮ শতাংশ নারী চরিত্রহীনা বলে গণ্য, ২৮ শতাংশ দাম্পত্যজীবন ক্ষতিগ্রস্ত এবং ১৫ শতাংশ তালাকপ্রাপ্ত হন। বিদেশ ভ্রমণের প্রাক্কালে নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও সেবাবিষয়ক তথ্যাদি পুরোপুরি অবগত করা হয় না। এবং বিদেশে তাদের চিকিৎসাসেবাবিষয়ক তথ্যসংবলিত চুক্তিনামাও অনেক ক্ষেত্রে থাকে না।

 

অভিবাসী শ্রমিক ও নারী শ্রমিকের স্বাস্থ্যসেবা সুনিশ্চিতের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গুরুত্বারোপ করেছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) সব দেশসমূহকে অভিবাসী শ্রমিকদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসী শ্রমিক অধিকার কনভেনশন সব অভিবাসী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা; এমনকি অবৈধ শ্রমিকের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের ওপর জোরারোপ করেছে। সুতরাং অভিবাসী শ্রমিকদের স্বাগতিক দেশসমূহকে শ্রমস্বাস্থ্যআইন সঠিকভাবে নিশ্চিতে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। শ্রমিক নিয়োগকৃত কোম্পানিসমূহকে স্বাস্থ্যসেবা চুক্তিনামা পালনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কর্মকান্ডে নজরদারি বাড়ানো উচিত।

 

মালিকপক্ষের অভিবাসী শ্রমিকদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে এগিয়ে আসা দায়িত্ব ও কর্তব্য। শ্রমিক নিয়োগ চুক্তিপত্রে হেলথ ইনস্যুরেন্স, চিকিৎসা-সুবিধা, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, জখম ও মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়গুলো স্পষ্টীকরণ করা উচিত। বাংলাদেশে অভিবাসী শ্রমিক ও নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি লাঘবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশের আলোকে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সুনির্দিষ্ট পলিসি ও ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছে। আইএলওর সহায়তায় অভিবাসী শ্রমিকের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে তিন বছর মেয়াদি জাতীয় কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছে। অভিবাসী আইন ২০১৩ এবং অভিবাসীকল্যাণ ও নিয়োগ আইন ২০১৬-তে জখম ও মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ এবং শ্রমিকের নিরাপদ ও সম্মানজনক কাজ এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় অভিবাসীদের সঠিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, হেলথ ইনস্যুরেন্স, সামাজিক ও স্বাস্থ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং স্বাস্থ্যগত কারণে ফেরত আসা অভিবাসী শ্রমিকের তথ্য-উপাত্তের প্রোফাইল সংরক্ষণের কাজ করছে।

 

অভিবাসী শ্রমিক, বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব প্রদান করে সব অভিবাসী শ্রম আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। অভিবাসী শ্রমিকের অভিবাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে পৃথক স্বায়ত্তশাসিত স্বাস্থ্য বিভাগ গঠন করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট এনজিও এবং ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিষয়সমূহ বাস্তবায়ন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন করতে ভূমিকা রাখতে এগিয়ে আসতে হবে। অভিবাসী নারী শ্রমিকের সমাজ ও পরিবারকে তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধার আসনে মর্যাদা প্রদান করতে হবে।
রাষ্ট্রের অর্থনীতি সুদৃঢ়, সামাজিক ও পরিবারের স”ছলতা আনয়নে জীবনের প্রতিটি স্তরে ঝুঁকি নিয়ে অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে নারীরা সাহসী ভূমিকা রাখছে। জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংগঠন নারীর ক্ষমতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সারা বিশ্বে ভূমিকা রাখতে উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্য ও সম্মান সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় গঠন ও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অভিবাসী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্বটি সুচারুরূপে পালনে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি পরিবার ও সমাজের অংশ হিসেবে তাদের পাশে সদা আমাদের দাঁড়াতে হবে।

লে. কর্নেল নাজমুল হুদা খান
এমফিল, এমপিএইচ
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
সাবেক সহকারী পরিচালক, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুর্মিটোলা ঢাকা।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রারূপ ও ফ্যাশন

ডার্ক সার্কেল?

করেছে Suraiya Naznin জানুয়ারী ৯, ২০২৩

নদী ইসলাম-

ডার্ক সার্কেলের সমস্যা আড়াল করতে হাইলাইটার খুবই কার্যকর। চিকবোনে হালকা করে হাইলাইটার লাগিয়ে নিতে হবে। এতে ডার্ক সার্কেলের সমস্যাও চোখে পড়বে না এবং গ্ল্যামারাস দেখতে লাগবে।

‘ডার্ক সার্কেল’ কথাটা খুব ছোট শোনালেও বিষয়টা কিš‘ একেবারেই ছোট নয়। যতই সুন্দর করে সাজগোজ করো না কেন, চোখের নিচে সামান্য ডার্ক সার্কেল পুরো লুকটাই মাটি করে দিতে পারে। পুজো আসতে আর মাত্র কয়েকটা দিনই বাকি। বাড়িতে বসে আন্ডার আই ক্রিম মেখে যতই যত্ন করো না কেন, কাছে আসা উৎসবের আগে ডার্ক সার্কেলকে নির্মূল করা একেবারেই সম্ভব নয়। তাই দরকার চটজলদি উপায়।

 

মেকআপ করার আগে ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করবে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুলে ত্বকে রক্ত চলাচলের পরিমাণ কমে যায়। ফলে মুখের অথবা চোখের নিচের ফোলাভাবও কমে যায়। এরপর পুরো মুখে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে। চোখের নিচের অংশে আই ক্রিম অথবা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারো। এর ফলে চোখের চারপাশের ত্বকের শুষ্কতা কমবে এবং মেকআপও ভালো করে বসবে।

মেকআপের শুরুতেই মুখে এবং চোখের নিচের অংশে প্রাইমার লাগাও। এতে ত্বক টানটান থাকে এবং মেকআপ অনেকক্ষণ ভালো থাকবে। ত্বক যদি শুষ্ক হয়, তাহলে ময়েশ্চারাইজিং প্রাইমার লাগাবে। ত্বক নিষ্প্রাণ ও অনুজ্জ্বল হলে ইলিউমিনেটিং প্রাইমার ভালো। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ম্যাট প্রাইমার ব্যবহার করতে পারো। অনেকের ত্বক একটু লালচে ধরনের হয়। তাদের এমন প্রাইমার বেছে নিতে হবে, যাতে সামান্য গ্রিন টিন্ট আছে। এতে ত্বকের লালচে ভাব অনেকটা কমে যাবে। এরপর ফাউন্ডেশন লাগাও। তবে মেকআপ করার সময় এমন ফাউন্ডেশন নেবে, যা স্কিন টোনের সঙ্গে মানানসই হবে। কখনোই নিজের কমপ্লিকশনের থেকে হালকা শেডের ফাউন্ডেশন নেবে না।

এরপর কনসিলারের পালা। কনসিলার সব সময় স্কিনটোনের থেকে হালকা শেডের নেবে। চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল অংশে কনসিলার লাগিয়ে মেকআপ ব্রাশ অথবা স্পঞ্জ দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নেবে। খেয়াল রাখবে, কনসিলার যেন স্কিনের সঙ্গে সমানভাবে মিশে যায়। কনসিলার যাতে অনেকটা সময় থাকে, তার জন্য পাউডার ব্রাশ দিয়ে চোখের নিচের অংশে কনসিলার লাগানোর পর কমপ্যাক্ট পাউডার লাগিয়ে নেবে। এতে চোখের নিচের ফোলাভাব অনেকটা কম দেখাবে এবং কনসিলারও অনেকক্ষণ থাকবে। এরপর পুরো মুখে কমপ্যাক্ট লাগিয়ে নেবে।

দিনের বেলা বাইরে বেরলে খুব ডার্ক আইশ্যাডো না লাগানোই ভালো। হালকা পিচ, পিঙ্ক অথবা ব্রাউন আইশ্যাডো ভালো লাগবে। আইশ্যাডো লাগানোর পর চোখের কোনার অংশে সাদা অথবা বেজ আইশ্যাডো লাগিয়ে নেবে। এর সঙ্গে সরু করে আইলাইনার পরতে পারো। মাসকারা অবশ্যই লাগাবে। এতে চোখ উজ্জ্বল ও বড় দেখতে লাগে। ডার্ক সার্কেলের সমস্যা আড়াল করতে হাইলাইটার খুবই কার্যকর। চিকবোনে হালকা করে হাইলাইটার লাগিয়ে নেবে। এতে ডার্ক সার্কলের সমস্যাও চোখে পড়বে না এবং গ্ল্যামারাস দেখাবে।

সবশেষে কমপ্লিট লুকের জন্য চাই লিপস্টিকের টাচ। দিনের বেলা বের হলে লিপস্টিকের হালকা শেড ব্যবহার করতে পারো। রাতে ডার্ক শেড চলতেই পারে। তবে কী রঙের পোশাক পরছ, সেদিকে একটু খেয়াল রাখবে। মেকআপ ছাড়াও ডার্ক সার্কলের সমস্যা দূর করতে নিয়ম করে ত্বকের একটু যত্ন নিতে হবে। দিনের বেলায় বাইরে বের হলে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাবে। চোখের পাতায়ও সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবে না। কারণ, চোখের চারপাশের অংশ খুবই সেনসিটিভ হয়, তাই এই অংশের ত্বক সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সহজেই ট্যানও পড়ে যায়

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নারীসংগ্রামসচেতনতা

নারী নিপীড়ন এবং এড়িয়ে যাওয়া

করেছে Suraiya Naznin জানুয়ারী ৯, ২০২৩

নাসরিন সুলতানা-

এড়িয়ে যাওয়া কিংবা অন্যায়ের পক্ষে কথা বলা একটু একটু করে নারী নিপীড়নের দরজা খুলে দেয়-

কোনো রকম ভিড় ঢেলে বাসে উঠল দীপা। কিছু দূর গিয়ে পেছনের সারিতে একটা সিট পেল। আঁটসাঁট হয়ে বসে দৃষ্টি শুধু এপাশ-ওপাশ। এই বুঝি কিছু হলো! গন্তব্যে পৌঁছে শঙ্কিত পায়ে দীপা নামতে গেল, ওমা? ধাক্কা লাগল সামনে বসা এক যুবকের পায়ে। দীপা দুটো কথা বলতেই বাবার বয়সী একজন বলে উঠল ছেড়ে দাও না। একটু লাগতেই পারে, তাতে কী এমন হয়েছে? দীপার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। একজন বাবার বয়সী মানুষ তিনি, প্রতিবাদ না করে অন্যায়ের পক্ষে কথা বলছেন! এই যে এড়িয়ে যাওয়া কিংবা অন্যায়ের পক্ষে কথা বলা একটু একটু করে নারী নিপীড়নের দরজা খুলে দেয়।

 

বর্তমানে গণপরিবহন এবং শপিংমলে নারীদের হেনস্তার বিষয়টিকে ভাবিয়ে তুলেছে সবাইকে। ঢাকায় কর্মজীবী অনেক নারী রয়েছেন, যাদের প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে যেতে গণপরিবহনে যাতায়াত করতে হয়। গণপরিবহনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাদের প্রতিদিন নানা রকম হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। যাত্রীর চাপ বেড়ে গেলে নারীদের বাসে না নেওয়ার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গণপরিবহনে নারীদের জন্য আসন নির্ধারিত থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তারা সেই সুবিধাটা পাচ্ছে না।

রাজধানীর অনেক প্রতিষ্ঠান যেমন ব্যাংক, মিডিয়া হাউস, হাসপাতালে যেসব নারী কাজ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নৈশ কোর্সে যারা পড়েন, তাদের প্রায় সময় রাতে গণপরিবহনে যাতায়াত করতে হয়। কোনো কোনো বাস কন্ডাক্টর যাত্রীর চাপের কারণে নির্ধারিত আসন থাকা সত্ত্বেও সে সময় নারী যাত্রীদের বাসে তুলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে থাকেন।

রাজধানীতে ঘটে যাওয়া কয়েক বছর আগেরই ঘটনা, গণপরিবহনের ভেতরে যৌন হয়রানি। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, উত্তরা ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রী বাড্ডা লিংক রোড থেকে উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে নিজের ক্যাম্পাসে যেতে তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি পথে পথে যাত্রী নামালেও নতুন করে কোনো যাত্রী তোলেনি। একসময় সেটি প্রগতি সরণিতে গেলে যাত্রীশূন্য হয়ে যায়। তখন বাসের হেলপার দরজা আটকে ছাত্রীর পাশে বসে তাকে টেনেহিঁচড়ে পেছনের সিটের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ওই ছাত্রী জোর করে বাস থেকে নামতে চাইলে সেটি দ্রুত চলতে থাকে। একপর্যায়ে মেয়েটি চিৎকার শুরু করলে চালক বাসটি থামায়। তখন ওই ছাত্রী বাস থেকে লাফিয়ে পড়ে।

ঘটনার শিকার ছাত্রী বিষয়টি উত্তরা ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে জানালে শিক্ষার্থীরা বাসের চালক-হেলপারকে গ্রেপ্তারে আন্দোলন শুরু করেন। তারা তুরাগ পরিবহনের ৩৫টি বাস আটকে রাখেন। ওই ঘটনায় ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে গুলশান থানায় মামলাও করা হয় এবং পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাসের চালক, হেলপার এবং কন্ডাক্টরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আবার নিউমার্কেট থানা এলাকার চাঁদনি চক মার্কেটে এক দল নারীকে দোকানিরা নিপীড়ন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে সে সম্পর্কিত খবরও প্রকাশিত হয়। মার্কেটটির সামনে জনসমক্ষেই এমন ঘটনা ঘটেছে দাবি করে ভুক্তভোগী এক নারী ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন এবং সেই ফেসবুক স্ট্যাটাসের পরিপ্রেক্ষিতে একটি মামলা হয় এবং তারপর ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিš‘ প্রতিদিনই এ রকম ঘটনা কমবেশি কোথাও না কোথাও ঘটছে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়জীবনযাত্রাদেহ ও মননারীসুস্থ মনস্বাস্থ্য

মেনোপজ এবং মনের যত্ন

করেছে Suraiya Naznin জানুয়ারী ৪, ২০২৩

সাবিরা ইসলাম-

একজন কিশোরী যখন পিরিয়ড জীবন শুরু করে, তখন তার ভেতরে প্রথম প্রথম কিছু অস্বস্তি কাজ করে। সেটা মানসিক এবং শারীরিক উভয়ই হতে পারে। একইভাবে মেনোপজ শুরু হলেও সে নতুন কিছু অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। তবে সেগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজন শুধু মানসিক প্রস্তুতির।

 

 

কথায় আছে, যার শুরু আছে, এর শেষও আছে। এমনকি একজন মানুষ জন্ম নেওয়ার মাধ্যমে যে জীবনযাত্রা শুরু করে, মৃত্যুর মাধ্যমে সে যাত্রা শেষ হয়। এমনিভাবে বিশ্বের যা কিছু সৃষ্টি, যা কিছু চলমান সবকিছু একটি নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে থেমে যায়। থেমে যেতে হয়। কারণ, নতুন করে অন্য কাউকে শুরু করার সুযোগ যে দিতে হবে। মেনোপজ বা রজঃনিবৃত্তি নারীর জীবনপ্রক্রিয়ায় তেমনই একটি বিষয়। একজন নারীর কিশোরী বয়সে মাসিক ঋতুস্্রবা বা রজঃ¯্রাবের মাধ্যমে জীবনের নতুন ও অর্থবহ একটি অধ্যায় শুরু করে। এর সহজ বাংলা বা প্রচলিত, পরিচিত শব্দ হচ্ছে মাসিক বা পিরিয়ড। একজন কিশোরীর মাসিক শুরু হওয়া মানে সে পরিপূর্ণ নারী জীবনে প্রবেশ করল। সে মা হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করল। এটি অনেক বড় একটি অর্জন।

 

বিশ্বকে জানিয়ে দেওয়া যে আমি সেই নারী, যে এই পৃথিবীতে আরেকজন মানবজাতিকে নিয়ে আসার সক্ষমতা অর্জন করেছি। আগে এসব বিষয়কে মনে করা হতো গোপনীয় বিষয়। লোকসমক্ষে ঋতু¯্রাব বা মাসিক বা পিরিয়ড নিয়ে আলোচনা করা ছিল লজ্জার। এখন অনেকটাই কেটে গেছে। কারণ, নেট দুনিয়ায় প্রবেশ করলে এসব বিষয়ে নানারকম আর্টিকেল অনায়াসে সামনে চলে আসে। আবার ছোট ছোট নাটিকা বা প্রামাণ্যচিত্র তৈরিকরে সামাজিক যে কুসংস্কার বা ভ্রান্ত ধারণা, তা কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। একটি নাটিকায় দেখা গেছে, মেয়ের প্রথম মাসিকের দিন মা-বাবা এবং বড় বোন কেক কেটে তা উদ্্যাপন করছে। মেয়েটিকে ঘুম থেকে ডেকে এনে কেক কাটতে বলায় তাকে যখন এর কারণ জানানো হয়, তখন মেয়েটি বিস্ময়ে আনন্দে অভিভূত হয়ে পড়ে। এটি অবশ্যই একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। তবে মোটেই অস্বাভাবিক নয়। কারণ, এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতোএরকম একটি অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়া কিশোরীটি পরিবারের সামনে সহজ হবে এবং তার সুবিধা-অসুবিধাগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারবে। মনের ভীতি কাটিয়ে ওঠা তার পক্ষে সম্ভব হবে। এটি যে আতঙ্কের কোনো বিষয় নয়, তা বুঝতে এবং গ্রহণ করতে সে সহজেই সক্ষম হবে।

 

রজঃনিবৃত্তি বা মেনোপজ হলো মাসিক বা পিরিয়ড জীবনের সমাপ্তি। একটি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করার পর নারীর আর সন্তান জন্মদানের প্রয়োজন পড়ে না। তখন এটি চলমান থাকা অস্বস্তিকর। পিরিয়ড একজন নারীর জন্য আশীর্বাদ। কারণ, সে তখন শুধু মা হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে, তা নয়। বরং শারীরিক অনেক জটিলতা থেকে মুক্তি পায়। একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হওয়ার পর ঋতু¯্রাব বন্ধ হয়ে যায়। এটি খুবই স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। ৪৯ থেকে ৫২ বছর বয়সের মধ্যেই এটি হয়ে থাকে।তবে শারীরিক কোনো জটিলতার কারণে এই বয়সসীমার এদিক-সেদিক হতে পারে। তবে খুব স্বাভাবিকভাবে নারীদের একবছর ধরে রজঃস্রাব বন্ধ থাকলে চিকিৎসকেরা এটাকে মেনোপজ বা রজঃনিবৃত্তি বলেন। এসময় ডিম্বাশয়ের কার্যক্রম হ্রাস পায় বা বন্ধ হয়ে যায়।

 

বিশ্বের সব দেশে মেনোপজের সময় এক রকম নয়। পশ্চিমাবিশ্বে রজঃনিবৃত্তির বয়স ৪০ থেকে ৬১ বছর এবং সর্বশেষ রজঃ¯্রাবের গড় বয়স ৫১ বছর। অস্ট্রেলিয়ায় প্রাকৃতিক রজঃনিবৃত্তির গড় বয়স ৫১.৭ বছর। ভারত ও ফিলিপাইনে গড়ে ৪৪ বছর বয়সে মেনোপজ হয়। রজঃনিবৃত্তির বয়স প্রথম রজঃস্রাব বা সর্বশেষ গর্ভধারণের ওপর নির্ভর করে না। এ ছাড়া এর সঙ্গে গর্ভধারণ সংখ্যা, সন্তানকে দুগ্ধদান, জন্মবিরতিকরণ বড়ি সেবন, আর্থসামাজিক অবস্থা, জাতিগত পরিচয়, উচ্চতা বা ওজনের কোনো সম্পর্ক নেই।

একজন কিশোরী যখন পিরিয়ড জীবন শুরু করে, তখন তার ভেতরে প্রথম প্রথম কিছু অস্বস্তি কাজ করে। সেটা মানসিক এবং শারীরিক উভয়ই হতে পারে। একইভাবে মেনোপজ শুরু হলেও সে নতুন কিছুঅভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। তবে সেগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজন শুধু মানসিক প্রস্তুতির। যেমন আমরা জানি, মা হতে গেলে একজন নারীকে দীর্ঘ নয় মাসের একটি ধীর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সে সময় নারীটির মানসিক প্রস্তুতি একটি সুস্থ মা ও শিশুর জন্য সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। পিরিয়ড বন্ধও এরকম একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। তখনঅনিয়মিত মাসিক হতে থাকে। অনিয়মিত বলতে বোঝানো হচ্ছে যে এটা অল্প বা বেশি সময় ধরে চলতে পারে অথবা হালকা বা বেশি পরিমাণ রক্তপাত হতে পারে। এই সময়টায়নারীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয় যেমন একধরনের গরম আভা বা উষ্ণতা অনুভব করে, যা দেহ থেকে মুখম-লের দিকে ছড়িয়ে যায়, যা হট ফ্লাশ (যড়ঃ ভষঁংযবং) নামে পরিচিত। এটা ৩০ সেকেন্ড থেকে ১০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এর সঙ্গে কাঁপুনি, রাতের বেলা অতিরিক্ত ঘাম, ত্বক লালচে হওয়া প্রভৃতি লক্ষণ থাকতে পারে। হট ফ্লাশ প্রায় ৭৫% মহিলার ক্ষেত্রে ঘটে এবং প্রায়ই এক বা দুই বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। এই সময় যোনিপথের শুষ্কতা, নিদ্রাহীনতাসহ বিভিন্নরকম মানসিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়।

 

Sad woman sitting on a sofa in the living room

তবে সবার ক্ষেত্রে এ লক্ষণ সমানভাবে প্রকাশ পায় না। নারীর পারিপাশির্^ক পরিবেশ এবং পরিবারের সদস্যের সঙ্গে তার সম্পর্কের ওপর এসবের প্রভাব নির্ভর করে। যৌনমিলনে ব্যথা অনুভব করা, যোনিপথের ঝিল্লি পাতলা হওয়া ও স্থিতিস্থাপকতা কমে যাওয়া, প্রস্্রাব আটকে রাখার অক্ষমতা, ত্বকের শুষ্কতা, ওজন বৃদ্ধি, স্তনের আকার বৃদ্ধি ও ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা, মাথাব্যথা, বুক ধড়ফড় ইত্যাদি লক্ষণ এসময় প্রকাশ পেতে পারে।

 

মানসিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে উদ্বিগ্নতা, অস্থিরতা, মনোযোগহীনতা, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি। রজঃনিবৃত্তির ফলে নারীদের অ্যাথেরোসক্লেরোসিস, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, অস্টিওপোরোসিস বা অস্থিক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে। তবে ওজন, রক্তচাপ ও রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান পরিত্যাগ করার মাধ্যমে এসব রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। মেনোপজের পর নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার কথা ভেবে অনেক নারীই আগাম মানসিক চাপে পড়ে। পরিবারের অনিবার্য একজন সদস্য হয়ে এধরনের শারীরিক, মানসিক চাপ সামলে স্বাভাবিক জীবন কীভাবে যাপন করা সম্ভব বা পরিবারের অন্যান্য সদস্য যারা, তারা এই সময়ে তার শারীরিক, মানসিক পরিবর্তনকে কতটা সহজভাবে গ্রহণ করবে বা তার আচরণগত পরিবর্তনকে কতটা স্বাভাবিকভাবে নেবে এ নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে আগে থেকেই পরিবারের সদস্যদের মেনোপজ সম্পর্কে একটুধারণা দিয়ে রাখলে পরিবর্তিত সময়কে যাপন করা সহজ হবে।

 

মেনোপজ হোক বা না হোক, প্রতিটি মানুষই জীবনের নানা স্তরে নানারকম শারীরিক ও মানসিক অস্থিতিশীলতা মোকাবিলা করে চলে। একজন মানুষের জীবনে জ¦র, সর্দি, কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা এগুলো খুব স্বাভাবিক ও সাধারণ অসুস্থতা। মেনোপজ-পরবর্তী নানা উপসর্গও তেমনই। এটিকে খুব সিরিয়াস কিছু ভেবে আগে থেকেই অস্থির হওয়ার কিছু নেই। বরং মেনোপজের কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে। যেমন পিরিয়ড টাইম পার করতে করতে একজন নারীর মনে একধরনের মানসিক অবসাদ চলে আসে। তখন তিনি এর থেকে মুক্তি কামনা করেন। প্রতি মাসে পিরিয়ডের জন্য আলাদা মনোযোগ দিতে হয় না বলে একধরনের স্বস্তি পান। যেকোনো মুভমেন্টের জন্য নিজেকে তৈরি বলে মনে করেন। এতে মানসিক স্বস্তি তৈরি হয়। রাতের ঘুম ভালো হয়। পাশ ফিরতে গিয়ে কোনো অস্বস্তি কাজ করে না। শরীরে বাড়তি কোনো কাপড় বা প্যাড ব্যবহার করতে হয় না বলেও অন্যধরনের স্বস্তি মেলে।

 

আমাদের দেশে অধিকাংশ নারী রজঃনিবৃত্তিকে ভয় পায়। এক ধরনের শঙ্কায় ভোগে। কারণ, বিষয়টি নিয়ে সব সময়ই একধরনের রাখঢাক চলে। অনেকে মনে করে, রজঃনিবৃত্তি মানে তার সোনালি জীবনের সমাপ্তি। বিষয়টি মোটেও তা নয়। বরং এই সময়ে অনেকেরই সন্তানেরা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। দীর্ঘ সংসার জীবন থেকেও অধিকাংশ নারী এই সময়ে অবসর জীবনযাপন করেন। তারা ধর্মকর্মে মন দেন। মূলত এই সময়টিই নিজের মতো করে কাটানোর সময়ই”ছা হলেই প্ল্যান করে কোথাও বেড়াতে যাওয়া যায়। দেশ-বিদেশ ভ্রমণে যাওয়া যায়। সমবয়সী নারী যারা, তাদের নিয়ে আড্ডায় কাটানো যায়। সমাজসেবামূলক কর্মকা-ে আরও বেশি সংযুক্ত হওয়া যায়।

 

 

শারীরিক সমস্যার যে বিষয়গুলোকে অনেক নারী ভয় পায়, তা একেবারেই অমূলক। কারণ, মানুষের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক নানা পরিবর্তন আসে। এছাড়া জীবনের নানা ধাপে নানা কারণে নানা রোগে ভুগি। এটিও তেমন। এতদিনের দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে চলতে থাকা শরীর নতুন অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগবেই। সেজন্য শরীরকেও একটু সময় দিতে হবে। তবে বিষয়টি যতটা না শরীরের, তার চেয়ে বেশি মনের। কারণ, মন যদি নিজেকে প্র¯‘ত রাখে, তবে যেকোনো অবস্থা মানিয়ে চলা সহজহয়। এ ব্যাপারে পরিবারকেও সহযোগিতা করতে হবে। কারণ, নতুন এই জীবনধারা নারীর জন্য আরেকটি বিশেষ অধ্যায়। এ সময় শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনজনিত যেসব আচরণ অস্বাভাবিক মনে হবে, তা পরিবারের সদস্যদের সহজভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে। বুঝতে হবে এই নারীটিকে নতুন জীবনে অভ্যস্ত হতে সময় দিতে হবে।এ সময়ে নারীর শারীরিক ও মানসিক যত্ন নেওয়া জরুরি। আসলে পুরো বিষয়টি একেবারেই মানসিক। যে নারী যত মানসিকভাবে শক্ত থাকবে, নতুন জীবনকে মানিয়ে নেওয়া ততই সহজ হবে।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনদেহ ও মনস্বাস্থ্য

অতি চেনা পাতার গন্ধেই বাড়বে স্মৃতিশক্তি

করেছে Suraiya Naznin জুলাই ২০, ২০২২

রোদসী ডেস্ক:

গবেষকদের মতে, পুদিনার গন্ধের গুণেই মূলত কাজ হয়। পুদিনা পাতার গন্ধ নাক থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছলেই রক্ত চলাচল বাড়ে। আর সেই গুণেই মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ে।

পুদিনা পাতার গুণে সচল থাকে মস্তিষ্ক। সেখানে রক্ত চলাচল বাড়ে। আর তার গুণেই বাড়ে স্মৃতিশক্তি। সম্প্রতি এ নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। অংশগ্রহণ করেন ১৪৪ ব্যক্তি। সেখানে দেখা যায়, পুদিনা পাতার তেল পাঁচ মিনিটের জন্য ব্যবহার করলেই সুফল মিলছে। আর একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, একই ধরনের তেল ব্যবহার করলে সার্বিক সচেতনতার মাত্রা বাড়ছে। কমছে উদ্বেগ, অবসাদের মতো সমস্যা। কাটছে ক্লান্তিও।

 

 

শুধু পুদিনার তেল নয়, অনেক সময়ে পুদিনা পাতা বেটে ব্যবহার করলেও একই ধরনের কাজ হয় বলেও দেখা গিয়েছে।

শুধু পুদিনার তেল নয়, অনেক সময়ে পুদিনা পাতা বেটে ব্যবহার করলেও একই ধরনের কাজ হয় বলেও দেখা গিয়েছে। শুধু পুদিনার তেল নয়, অনেক সময়ে পুদিনা পাতা বেটে ব্যবহার করলেও একই ধরনের কাজ হয় বলেও দেখা গিয়েছে।

 

কিন্তু কী ভাবে কাজ হয়?

গবেষকদের মতে, পুদিনার গন্ধের গুণেই মূলত কাজ হয়। পুদিনা পাতার গন্ধ নাক থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছলেই রক্ত চলাচল বাড়ে। আর সেই গুণেই মস্তিষ্কের শক্তি বাড়ে। স্মৃতি যেমন মজবুত হয়, তেমন বিশ্লেষণ করার ক্ষমতাও বাড়ে।

তবে পুদিনার এই গুণ নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে। ক্লান্তি কাটাতে যে এই গন্ধ সাহায্য করে, তা প্রমাণিত হয়ে থাকলেও বাকিটা এখনও বিভিন্ন সমীক্ষার উপর নির্ভরশীল।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
আড্ডাজীবনযাত্রাবিশেষ রচনাভালো থাকার ভালো খাবারহেঁসেল

উদ্বোধন হলো এসপ্রেসো হাউজের সিগনেচার আউটলেট

করেছে Suraiya Naznin জুন ২৭, ২০২২

রোদসী ডেস্ক:

হসপিটালিটি পার্টনার্স এর ব্র্যান্ড ইতালিয়ান রেষ্টুরেন্ট এসপ্রেসো হাউজ এর সিগনেচার আউটলেট এর শুভ উদ্বোধন হয়েছে গত ২৪ জুন শুক্রবার। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুষ্টিবিদ জেনিফার বিনতে হক, ড. নাফিস ইমতিয়াজ চৌধুরী, রোদসীর সম্পাদক ও প্রকাশক সাবিনা ইয়াসমীন, মিউজিশিয়ান ইমরান রাব্বানী, মডেল ফাহিম উল হক, জনপ্রিয় শিশুশিল্পী মানহা মেহজাবিন মান্যতা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী, কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব ও এসপ্রেসো হাউজের সংশ্লিষ্ট সবাই।

 

বনানীর ১৭ নম্বার রোডে অথেনটিক ইতালিয়ান খাবার, বেকারি, পেষ্ট্রি ও কলম্বিয়ান ১০০% আরাবিকা কফির স্বাদ নিশ্চিত করবে এই রেষ্টুরেন্ট। পুষ্টিবিদ জেনিফার বিনতে হক বলেন, সবাই বাইরে খেতে ভালবাসে ডায়েট এ থাকা অবস্থায় বাইরে অবশ্যই পরিমান মত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারবেন, এই রেষ্টুরেন্টকে রাখা যাবে হেলদি লাইফস্টাইল টপ লিস্টে।

এসপ্রেসো হাউজ এর প্রতিষ্ঠাতা জনাব শওকত হোসেন রনি জানান, বাংলাদেশে ইতালিয়ান খাবারের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে ফুডলাভারদের জন্য পরিপূর্ন স্বাদ নিয়ে এসেছে এসপ্রেসো হাউজ। আমাদের পিজ্জা তৈরি করা হচ্ছে ইষ্ট ছাড়া। স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য রয়েছে বিশেষ মেনু। আমরা খাবারের মান ১০০% নিশ্চিত করছি।

 


ব্র্যান্ড ম্যনেজার ইয়ারা তুলি জানান ঢাকার লাইফস্টাইল রেষ্টুরেন্ট কেবল খাবার জায়গা নয়, কর্পোরেট মিটিং,বন্ধুদেও সাথে আড্ডা, প্রিয়জন ও পরিবার এর সাথে ভাল থাবার খাওয়ার পাশাপাশি সবাই সুন্দর শান্তিপূর্ন পরিবেশ খুঁজে থাকেন। পরিবেশ ও আতিথেয়তা সব মিলিয়ে কাস্টমার স্যাটিফেকশন এর জন্য প্রস্তুত এসপ্রেসো হাউজ। প্রতিদিন সকাল ৮.৩০ থেকে রাত ১.৩০ পর্যন্ত খোলা থাকবে রেষ্টুরেন্ট।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
বিশেষ রচনাভালো থাকার ভালো খাবারস্বাস্থ্য

এসপ্রেসো হাউজ এর সিগনেচার আউটলেট উদ্বোধন

করেছে Suraiya Naznin জুন ২৩, ২০২২

রোদসী ডেস্ক:

হসপিটালিটি পার্টনার্স এর ব্র্যান্ড ইতালিয়ান রেষ্টুরেন্ট এসপ্রেসো হাউজ এর সিগনেচার আউটলেট এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল বিকেল ৩টায়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এডিশনাল ডেপুটি কমিশনার পুলিশ ইফতেখায়রুল ইসলাম, পুষ্টিবিদ জেনিফার বিনতে হক, চিত্রশিল্পি আহমেদ নওয়াজ, বিশিষ্ট ফ্যাশন ডিজাইনার তুতলি রহমান, রোদসীর সম্পাদক ও প্রকাশক সাবিনা ইয়াসমীন, চিত্রনায়ক সম্রাট, মডেল আনোয়ারুল শামীম, তাহমিদ ও নিধি, বিভিন্ন পেশাজীবী, কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব ও এসপ্রেসো হাউজ সংশ্লিষ্ট সবাই।

বনানীর ১৭ নাম্বার রোডে অথেনটিক ইতালিয়ান খাবার, বেকারি, পেষ্ট্রি ও কলম্বিয়ান ১০০% আরাবিকা কফির স্বাদ নিশ্চিত করবে এই রেষ্টুরেন্ট। পুষ্টিবিদ জেনিফার বিনতে হক বলেন, সবাই বাইরে খেতে ভালবাসে ডায়েট এ থাকা অবস্থায় বাইরে অবশ্যই পরিমান মত স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারবেন, এই রেষ্টুরেন্টকে রাখা যাবে হেলদি লাইফস্টাইল টপ লিস্টে।

এসপ্রেসো হাউজ এর প্রতিষ্ঠাতা জনাব শওকত হোসেন রনি জানান, বাংলাদেশে ইতালিয়ান খাবারের চাহিদাকে গুরুত্ব দিয়ে ফুডলাভারদের জন্য পরিপূর্ন স্বাদ নিয়ে এসেছে এসপ্রেসো হাউজ।
আমাদের পিজ্জা তৈরি করা হচ্ছে ইষ্ট ছাড়া। স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য রয়েছে বিশেষ মেনু। আমরা খাবারের মান ১০০% নিশ্চিত করছি। রেষ্টুরেন্ট এর পরিবেশ ও আতিথেয়তা সব মিলিয়ে কাস্টমার স্যাটিফেকশন এর জন্য প্রস্তুত এসপ্রেসো হাউজ। প্রতিদিন সকাল ৮.৩০ থেকে রাত ১.৩০ পর্যন্ত খোলা থাকবে রেষ্টুরেন্ট।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়জীবনযাত্রানারীপ্যারেন্টিংবিশেষ রচনাসংগ্রাম

কাজে ফেরা মাতৃত্বের পর

করেছে Suraiya Naznin মে ৩০, ২০২২

রেহনুমা তারান্নুম

অনেকেরই ম্যাটারনিটি লিভ থেকে ফিরে মনে হয় ‘একেবারে নতুন করে শুরু করছি!’ আবার বাড়িতে ছোট্ট শিশুটিকে রেখে এলে তার জন্যও মন কেমন করে। আসে ইমোশনাল ব্যাঘাত। তবে সমস্যা যা-ই হোক না কেন, স্ট্রেসড হবে না। কারণ, মাতৃত্ব কেবল নিজের জন্য নয়, উন্নত জাতির জন্যও!

মা হওয়ার পরে একটা লম্বা সময় কাজের জগৎ থেকে দূরে থাকলে অভ্যাসটা চলে যায়, এমনটাই মনে করেন বেশির ভাগ মানুষ। অবশ্য বিষয়টা যে খুব ভুল, তা-ও নয়! মা হওয়ার ঝক্কি তো কম নয়। তাই তিন মাস বা তারও বেশি পাওয়া ছুটিটা শুয়ে-বসে উপভোগ করার কোনো প্রশ্নই আসে না। ফলে ছুটি কাটিয়ে অফিসে ফিরলে যে রিফ্রেশড ব্যাপারটা আসে, এ ক্ষেত্রে তা একেবারেই অসম্ভব। রোজকার ডেডলাইনের চাপ, অফিস মিটিং, এদিক-ওদিক ছোটাছুটি এসব কিছুই এত দিন অনুপস্থিত ছিল।

 


তাই অনেকেরই ম্যাটারনিটি লিভ থেকে ফিরে মনে হয় ‘একেবারে নতুন করে শুরু করছি!’ আবার বাড়িতে ছোট্ট শিশুটিকে একলা ফেলে রেখে এলে তার জন্যও মন কেমন করে। ফলে মন দিয়ে কাজ করবে, সেখানেও কিছুটা ইমোশনাল ব্যাঘাত। তবে সমস্যা যা-ই হোক না কেন, স্ট্রেসড হবে না। পুরোনো অভ্যাসে ফিরতে একটু সময় লাগুক না! তা নিয়ে ভেবে মাথা খারাপ করার কিছু নেই।

বস ও সহকর্মীদের সঙ্গে একবার গোড়াতেই কথা বলে নাও। আগামী তিন-চার মাসে কী প্রজেক্ট আসতে পারে, ও তাতে তুমি কীভাবে কন্ট্রিবিউট করবে, সে ব্যাপারে মোটামুটি জেনে গেলে সুবিধা হয়। প্রথমেই খুব বড় প্রজেক্টে হাত দেবে না। ছোট ছোট কাজ দিয়ে শুরু করতে পারো। কয়েক দিন পর ছন্দ ফিরে পেলে আবার পুরোদমে কাজ করবে। প্রথম প্রথম অফিসের কাজ খুব হেকটিক মনে হলে অফিসের বাইরে নিজেকে প্যাম্পার করো।

 

ছুটির দিনে ঘুরতে যাওয়া, নিজেকে উপহার দেওয়া ইত্যাদি অফিস স্ট্রেস অনেকটা কমিয়ে দেবে। টাইম ম্যানেজমেন্ট খুব জরুরি। সন্তানকে বাড়িতে কারও নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে রেখে আসো। বারবার যদি বাড়িতে ফোন করতে হয়, বা সন্তান ঠিকমতো খাচ্ছে বা ঘুমাচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে টেনশন করতে হয়, তাহলে কাজে ব্যাঘাত ঘটবেই। তুমি চাকরি করছ বলেই যে সন্তানের দেখভাল ঠিকমতো করতে পারছ না, এ রকম ধারণা মনের মধ্যে রাখবে না। বেবিসিটার রাখার আগে তার স্ক্রিনিং করে নিতে হবে। এ ব্যাপারগুলো নিশ্চিত করতে পারলে, অফিসে পুরোপুরি মন দিতে পারবে। কাজের ফাঁকে এক-আধবার বাড়িতে খোঁজ নিয়ে নাও। তবে সন্তান পালনের অজুহাতে কাজে ফাঁকি দেওয়া বা দেদার অফিস ছুটি নেওয়া মোটেও কাজের কথা নয়। কাজের জগৎটা প্রফেশনাল জায়গা। সংসারের সঙ্গে অফিসের সঠিক ভারসাম্যটাই জরুরি।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ঘরেই বানিয়ে নাও মেকআপ সেটিং স্প্রে

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook