রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
লেখক

Suraiya Naznin

Suraiya Naznin

বিশেষ রচনাসচেতনতাস্বাস্থ্য

আপেল সিডার ভিনিগারেও হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ১৩, ২০২২

রোদসী ডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত মাত্রায় আপেল সিডার খেলে এর অম্ল গুণ শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে দিতে পারে। ওজন ঝরাতে ইদানীং অনেকে আপেল সিডার ভিনিগার-এর উপরেই ভরসা রাখেন। কিন্তু ভিনিগার অম্ল হওয়ার কারণে তা দৈনিক খাদ্যতালিকায় যোগ করার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম পালন করা জরুরি।

 

দিনে ১৫ মিলিলিটার বা বড় চামচের এক চামচের বেশি আপেল সিডার খাবেন না, খেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত মাত্রায় আপেল সিডার খেলে এর অম্ল গুণ শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে দিতে পারে। এ ছাড়া যখনই এই ভিনিগার খাবেন, তা অবশ্যই জলের সঙ্গে মিশিয়ে পাতলা করে খেতে হবে। এ ক্ষেত্রে এই পানীয়তে অন্য কিছু ভুলেও মেলাবেন না।

বদহজমের সমস্যা থাকলে সকালে আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়া যেতে পারে। সকালে এই পানীয় খেলে গ্যাস অম্বলের সমস্যা দূর হবে। তবে সকালে খালি পেটে এটি খেলে এর গন্ধে অনেকের বমি বমি ভাব হয়। সে ক্ষেত্রে জলখাবারের পরে এই পানীয় খাওয়া যেতে পারে।

ডায়াবিটিসের সমস্যায় এই ভিনিগার উপকারী। মূলত ইনসুলিন তৈরি করতে না পারা বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্টের কারণেই রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ে। খাওয়াদাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ আপেল সিডার মিশিয়ে খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। গলা ব্যথা কিংবা টনসিলের সমস্যা থাকলে রাতে ঘুমনোর আগে এক কাপ গরম জলে আপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে খেলে উপকার হয়। অনিদ্রার সমস্যায় ভুগলে রাতের বেলা ভুলেও এটি খাবেন না।

ওজন ঝরার ক্ষেত্রে খাওয়াদাওয়ার আধ ঘণ্টা পরে এই পানীয় খেলে বেশি উপকার পাওয়া যেতে পারে। এই পানীয় বিপাক হার বাড়িয়ে দেয়। ফলে হজম ভাল হয়। শরীরের মেদ দ্রুত ঝরাতে এই উপায়ের উপর ভরসা রাখতে পারেন। খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে ও ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে আপেল সিডার ভিনিগার খুবই উপকারী।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.তুমিই রোদসীনারীপ্রধান রচনাসম্ভাবনাসাফল্য

স্বপ্ন দেখি নারী দিবসের দরকারই হবে না

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ১০, ২০২২

দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি কাজ করছেন বাংলাদেশের ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে। চরের মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান নানান বিষয়ে কাজ করলেও তার মূল আগ্রহ নারীর জীবন নিয়ে। কারণ তিনি মনে করেন, নারীর উন্নয়ন না হলে সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিশ্ব নারী দিবসে রোদসীর বিশেষ সংখ্যায় কথা হলো ফ্রেন্ডশিপ-এর ফাউন্ডার ও এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রুনা খানের সঙ্গে। কথা বলেছেন সোলাইমান হোসেন-

 

রুনা খান

 

শুরুতেই আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি সাতক্ষীরার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের আন্তর্জাতিক রিবা অ্যাওয়ার্ড লাভ করার জন্য। শুরুতেই আমরা আপনার ছোটবেলার গল্প শুনতে চাচ্ছি। কীভাবে কেটেছে আপনার ছেলেবেলা?

রুনা খান : বাংলাদেশের একটি কয়েকশ বছরের পুরোনো পরিবার থেকে আমি উঠে এসেছি। আসলে একটা নির্দিষ্ট গ-ির মধ্যে আমরা বড় হয়েছি। আমাদের আশপাশে গরিব কী তা আমরা জানতাম না। ঢাকা শহরে গাড়িতে যখন বসতাম, তখন গরিব আসতÑওটাই আমাদের জন্য গরিব দেখা ছিল। এর একটাই কারণ- আসলে একটা গ-ির মধ্যে আমরা সবাই বড় হয়েছি। পারিবারিকভাবেই আমার বিয়ে হয়ে যায় এবং এখন আমার তিনটি সন্তান আছে। তবে আমি যতই নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে বড় হই না কেন, কখনো কাজ থামাইনি।

 

অনেকেরই তো অনেক রকম চিন্তা থাকে। কেউ ডাক্তার হতে চায়, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। আপনার ছোটবেলায় এমন কোনো ইচ্ছা ছিল কি?

রুনা খান : আমি আইনজীবী হতে চেয়েছিলাম। আমি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান সবখানেই পড়াশোনা করেছি। কিন্তু একটা জিনিস সারা জীবন মনে হতো, তা হলো দেশের জন্য কিছু করব। কিন্তু কী করব এমন কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তবে এটা আমার মাথায় সব সময় ছিল যে, এই দেশ ছেড়ে আমি কখনোই চলে যেতে পারব না। আমি যখনই চিন্তা করি আমি কখনো ধানখেত দেখতে পারব না, কখনো কৃষক দেখতে পারব না, আমার তখন মন খারাপ হয়ে যায়। আমি যখন নৌকা নিয়ে এদিক-সেদিক যেতাম, তখন দেখতাম সবচেয়ে গরিব লোক এখানে থাকে। তখন মনে হলে এসব মানুষকে নিয়ে কিছু একটা করা যেতে পারে। সেভাবেই শুরু।

চরের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে তো আপনারা কাজ করছেন। এর মধ্যে নারীর জীবন নিয়ে আপনার আলাদা কোনো ভাবনা আছে কি?

রুনা খান : আমি নারী, কেমন করে নারীদের জন্য ভাবব না? ভাবনা অবশ্যই আছে। নারীদের জন্য সব সময় ভাবি। নারীদের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো তাদের সন্তান। এ কারণেই নারী এবং শিশু আমার কাজের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু একটা সংসার সুন্দর হয় নারী-পুরুষ আর সন্তান নিয়ে। তাই আমি শুধু নারীকে নিয়ে কাজ করি, এটা কখনো মনে করি না। কারণ, উন্নতি সবাইকে নিয়েই হবে। যে কারণেই আমাদের কোনো কাজ শুধু নারীর জন্য নয়। তারপরও আমাদের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ উদ্যোক্তা হলেন নারী।

নারীকে নিয়ে অনেক কাজই তো করেছেন, কিন্তু এমন কোনো কাজ কি আছে, যেটা ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে তৃপ্তি দিয়েছে?

রুনা খান : চরে একটা মেয়ের যখন ফিস্টুলা কিংবা পোলাস্ট নিউট্রেস হয়, ১৯ কিংবা ২০ বছরের একটা মেয়েকে যখন দেখি এসব কারণে তার স্বামী তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে, তখন খুব খারাপ লাগে। পরিবার থেকে আলাদা করে দিয়ে আলাদা ঘরে রেখে দেয়। অথচ সাধারণ আধা ঘণ্টার একটা অপারেশন করিয়ে তাকে আবার পরিবারে ফেরত পাঠানো যায়। এমনি করে যখন আমি লাইফ চেঞ্জ দেখতে পারি, তখন এমন কাজের শান্তি অন্য রকম হয়।

আপনার দীর্ঘ কাজের অভিজ্ঞতা। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আপনার কি কখনো মনে হয়েছে নারীর কোন জায়গাটা উন্নত হলে পুরো সমাজ উন্নত হবে?

রুনা খান : আমি মনে করি, নারীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে হবে। সেই শ্রদ্ধাবোধ যেমন তার স্বামীর, সেই সঙ্গে তার পরিবারের। নারী যখন তার সঠিক শ্রদ্ধাবোধ এবং মূল্যায়নটা পাবে, তখনই কেবল নারী সব করতে পারবে। একটা নারী একই সঙ্গে বাড়ির কাজ, বাড়ির বাইরের কাজ করে সন্তান জন্ম দেওয়া, টাকা আয় করা থেকে শুরু করে সব রকম কাজের সঙ্গেই যুক্ত।

আসলে একটা সমাজ কিংবা পরিবার কিন্তু নারীকেন্দ্রিক। আমরা যতই অস্বীকার করার চেষ্টা করি না কেন, আসলে একজন নারীকে কেন্দ্র করেই কিন্তু পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র সবই চলে। আপনি বিষয়টি কীভাবে দেখেন?

রুনা খান : আসলে এ বিষয়টি অস্বীকার করার উপায় নেই। একজন নারীকে কেন্দ্র করেই তার সন্তান-সংসার এবং সমাজ। নারীকে কেন্দ্র করেই সংসারের আয়, এমনকি কিভাবে সংসারের জন্য সুন্দরভাবে ব্যয় করতে হয় সেই ব্যাপারে নারীর জানাশোনা অসামান্য। নারীরা যেভাবে সংসার চালাতে পারেন, ছেলেরা সেই আন্দাজে চালাতে পারেন না।

আসলে নারীর যে সঞ্চয়ক্ষমতা, সেটা পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি আলাদা। আমাদের দাদি-নানি কিংবা মায়েদের দেখেছি ভাতের চাল থেকে একমুঠ হয়তো রেখে দিত সঞ্চয় করার উদ্দেশ্যে। এই চাল আবার কোনো বিপদের দিনে সংসারের কাজেই লাগাত। এগুলো তো নারীর অন্য রকম ক্ষমতা।

রুনা খান : হ্যাঁ, এটা নারীদের একটা অসামান্য একটা ক্ষমতা। আর এ কারণেই আমাদের একটা ফিন্যান্সিয়াল প্রোগ্রাম আছে, যেটার নাম দিয়েছি মুষ্টি। কারণ, এটাই কিন্তু মেয়েদের সক্ষমতার জানান দেয়। এটাই নারীর বিশেষত্ব। কোনো একদিন দেখা দেখা গেলো ওই পরিবারের ঘরে চাল নেই, সেদিন এ চালই তাদের মুখে ভাত তুলে দেয়। চিন্তার এই জায়গার কারণেই তারা শ্রদ্ধার যোগ্য। মেয়ের ক্ষমতা এবং ছেলের ক্ষমতা কিন্তু আলাদা। আমি বলছি না মেয়েদের শক্তি ছেলেদের মতো হতে হবে। বা একটা মেয়ে, ছেলেদের মতোই কাজ করবে।

মেয়ে আসলে তার বৈশিষ্ট্য নিয়েই মেয়ে এবং এটাই তার সৌন্দর্য

রুনা খান : একদম তাই। মেয়ে তার নারীত্ব নিয়েই সুন্দর। একটা মেয়ের মনুষ্যত্ববোধ আর নমনীয়তাকে যে ছেলে দুর্বলতা ভাবে, সে আসলে বিরাট ভুল করে। এগুলো নারীর দুর্বলতা নয়। এটাই কিন্তু নারীর সাহস, এটাই নারীর ক্ষমতা।

সামনে বিশ্ব নারী দিবস। আপনি যে নারীদের নিয়ে কাজ করছেন, তাদের কাছে নারী দিবস এবং অন্য আর দশটা দিন একই। প্রতিবছর নারী দিবস আসে কিন্তু এই নারী দিবস কি কোনো প্রভাব তৈরি করতে পারে? এই নারী দিবসটা আপনি কীভাবে দেখেন?

রুনা খান : যখন কোনো পরিবর্তন আনতে হয়, তখন একটা একক জিনিস দিয়ে তা হয় না। আমি যদি বলি সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজই আমার সমাজ বদলে দেবে কিংবা মাইক্রোফিন্যান্সই আমার সমাজ বদলে দেবে, তা কিন্তু কখনো সম্ভব নয়। কোনো একটা কিছু দিয়ে কখনো দুনিয়া পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। দুনিয়ায় বিভিন্ন রকম মানুষ, তাই বিভিন্ন রকম জিনিস লাগে এই দুনিয়াকে পরিবর্তন করতে। আমরা নারী দিবস পালন করি, এটা আসলে একটা কম্পোনেন্ট। এটা নারীকে অনুভূতি দেয় যে, তুমি স্পেশাল। তাই আমি মনে করি নারী দিবস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমার স্বপ্ন হলো হয়তো কোনো একদিন নারী দিবসের আর দরকারই হবে না। হয়তো নারী-পুরুষ মিলে একটা দিবস পালন করবে, যেটার নাম হবে হিউম্যান ডে।

 

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, বিশেষ করে নারীদের নিয়ে?

রুনা খান : আমরা বিভিন্ন বিষয়ে অনেক উন্নতি করেছি। আমাদের মতো অর্থনীতির সক্ষমতার দেশের তুলনায় এদেশের নারীদের আমরা অনেক ওপরে নিয়ে গেছি। আপনি যদি আশপাশের কোনো দেশের সঙ্গে তুলনা করেন, তাহলে দেখবেন আমরা খুব ভালো অবস্থানে আছি। কিন্তু দারিদ্র্য আমাদের অনেক কিছু বাধাগ্রস্ত করছে। এসব কিছুর মধ্য থেকেও আমি চেষ্টা করছি চরের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে।

এবার চরের তিনটি মেয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে চান্স পেয়েছে। যাদের বাসায় একটা মাত্র কুঁড়েঘর। যেখানে কোনো রকমে তারা পরিবার নিয়ে বাস করে। অথচ এই মেয়েগুলো এখন পুরো দুনিয়ার মানুষের সঙ্গে মিশতে পারছে। আমার স্বপ্ন হলো প্রতিটি চর থেকে যেন অন্তত একটি করে মেয়েকে এমন ভাবে তৈরি করতে পারি, যারা তাদের পুরো কমিউনিটির আদর্শ হবে।

এখন তো ডিজিটালাইজেশনের যুগ। আপনি যে নারীদের নিয়ে কাজ করছেন, তাদের প্রযুক্তিগতভাবে উন্নয়নের জন্য কিছু করছেন কি?

রুনা খান : হ্যাঁ, এগুলো আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে করি। আমাদের স্কুলগুলো সব ডিজিটালাইজড। তা ছাড়া বাচ্ছাদের আমরা কম্পিউটারে দক্ষ হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দিই।

আপনারা এখন পর্যন্ত কতগুলো স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন?

রুনা খান : আমাদের প্রাইমারি স্কুল ৪৮টির মতো। হাইস্কুল আছে ২২টির মতো। এ ছাড়া অ্যাডাল্ট এডুকেশন সেন্টার আছে ৪৮টি। আর আমাদের রোহিঙ্গাদের জন্য প্রায় ৪০০ স্কুল আছে।

এর বাইরে আপনারা আর কী কী বিষয়ে কাজ করছেন?

রুনা খান : আমরা প্রথমেই চেষ্টা করি মানুষের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে। যেখানে মানুষ দাঁড়াতে পারে। সেই প্ল্যাটফর্মটা তৈরি করতে কী কী দরকার? প্রথমেই লাগে স্বাস্থ্য। আমরা স্বাস্থ্য খাতে খুব বেশি কাজ করি। প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ লোককে আমরা সরাসরি সেবা দিই। শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি। এরপর আমরা ইনকাম জেনারেশন করাই। যারা কৃষিকাজ করতে পারে, তারা সেটা করে। যারা হাঁস-মুরগি পুষতে পারে, তারা সেটা করে। কেউ বাগান করে। মাছ চাষ করে। এমন অনেক কাজ।

 

আপনার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫১ শতাংশ নারী কর্মী কাজ করেন। এটা কি কোনো বিশেষ চিন্তা থেকে করা?

রুনা খান : এটা আসলে বিভিন্ন আমাদের অফিসের বিভিন্ন দপ্তরে ভেদে কমবেশি আছে। তবে চেষ্টা থাকে নারী-পুরুষের সমন্বয়টা ঠিক রাখতে। বিশেষ কোনো চিন্তা থেকে নয়।

 

বাংলাদেশের নারীদের উদ্দেশে কিছু বলবেন?

রুনা খান : আমি বলব বাংলাদেশের লোকজন যেন নারীদের আরও একটু সম্মান করে। আমি সব পুরুষকে অনুরোধ করব আপনি আপনার স্ত্রী-সন্তান-মাকে সম্মান করুন। আপনি যদি সম্মান না করেন, তাহলে আপনি জানেনই না আপনার কি ক্ষতি হচ্ছে। অর্ধেক সম্ভাবনা আপনি হারাচ্ছেন যদি আপনি আপনার স্ত্রীকে সম্মান না করেন।

এতক্ষণ সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
রুনা খান : আপনাকেও ধন্যবাদ।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবননারীবিশেষ রচনা

আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ৮, ২০২২

রোদসী ডেস্ক: নারী অধিকার রক্ষায় বিশ্বব্যাপি সমতাভিত্তিক সমাজ-রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে প্রতিবছর আজকের এই দিনে দিবসটি উদযাপন করা হয়। জাতিসংঘ ২০২২ সালের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে “নারীর সুস্বাস্থ্য ও জাগরণ”। এই মূল প্রতিপাদ্যের আলোকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- “টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য”।

আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সারাদেশে শোভাযাত্রা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এছাড়াও সকল সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে দিবসটি উদযাপন করবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো:আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২২ উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য’ দিবসের এই প্রতিপাদ্যটিকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সময়োপযোগী। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৯(৩) অনুচ্ছেদে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে মহিলাদের অংশগ্রহণ ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। নারীদের যথার্থ মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার নারী শিক্ষার বিস্তার, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

দেশের উন্নয়নকে টেকসই করতে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে সহযাত্রী হিসেবে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও আশাবাদ ব্যক্ত করেন, একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব গড়ার কাজে পুরুষের মতো সমান অবদান রাখার প্রত্যয় নিয়ে নারীর এগিয়ে চলা আগামীতে আরো বেগবান হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে পৃথক এক বাণীতে বিশ্বের সকল নারীর প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, নারী তার মেধা ও শ্রম দিয়ে যুগে যুগে সভ্যতার সকল অগ্রগতি এবং উন্নয়নে সমঅংশীদারিত্ব নিশ্চিত করেছে। সারাবিশ্বে তাই আজ বদলে গেছে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি। এখন নারীর কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে, স্বীকৃতিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এদেশের নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যেমন আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, তেমনিভাবে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলাও সম্ভব হবে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। আজ সকাল ১১টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদা পারভীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইউএন উইমেন এর অফিস প্রধান গীতাঞ্জলি সিং।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠনও নানা রকম কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জাতীয় প্রেসক্লাব আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে “স্বাধীনতার ৫০ বছরে নারী সাংবাদিকতা” শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে নারী নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকরা অংশ নেবেন।

৬৬ টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি নারী দিবস উপলক্ষ্যে আজ বিকাল ৩ টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এ বছর সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘নারী-পুরুষের সমতা, টেকসই আগামীর মূলকথা’। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ডিআরইউ চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য র‍্যালির আয়োজন করেছে। র‍্যালির পর ডিআরইউ’র নসরুল হামিদ মিলনায়তনে নারী দিবসের বিশেষ সংকলন ‘কণ্ঠস্বর’ এর মোড়ক উন্মোচন করা হবে।

আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট আজ আনড়ি দিবসের প্রথম প্রহরে রাত ১২ টা ০১ মিনিটে অনলাইনে রাতের আধার ভাঙার প্রতিকী আয়োজন ও পাশাপাশি হ্যাশট্যাগ (#) ‘আঁধার ভাঙ্গার শপথ’ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেছে। এই জোট এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি জানিয়েছে সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমতা ও সমঅংশীদারিত্ব নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি নারীর জন্য প্রতিটি সময়, স্থান ও মুহূর্তকে নিরাপদ করার।

এছাড়াও ক্রিশ্চিয়ান উইমেন আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আগামী ৯ মার্চ (বুধবার) বেলা ২টায় ঢাকার ব্র্যাক সেন্টার মিলনায়তনে “উইমেনস ক্যাফে: টেকসই ভবিষ্যতে নারীর অবদান” শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চেয়ারপারসন মেহের আফরোজ চুমকি।

সূত্র: বাসস

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
তুমিই রোদসীনারীপ্রধান রচনাসচেতনতা

‘নারীকে দায়িত্ব দিতে এখনো সংকোচ দেখা যায়’

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ৩, ২০২২

নারীদের ক্যারিয়ারে ভালো করার জন্য অবশ্যই প্রতিবন্ধকতা আছে। কারণ, কেউ নারী বললেই আগে চুপসে যান। আমার জন্যও এ চ্যালেঞ্জ আছে। অনেক প্রতিষ্ঠান আমাকে পছন্দ করে নিয়েছে। তারপরও আমাকে সংগ্রাম করতে হয়েছে। নারীকে দায়িত্ব দেওয়ার পেছনে এখনো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংকোচ দেখা যায়। বলছিলেন ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়রা আজম। গ্রন্থনা করেছেন- সুরাইয়া নাজনীন

 

জীবনের শুরুর গল্পটি জানতে চাই

হুমায়রা আজম : পুরান ঢাকায় জন্ম হলেও একদম ছোটবেলাটা আমার কাটে পশ্চিম পাকিস্তানের ইসলামাবাদে। বাবা সেখানে শিক্ষকতা করতেন। সেখান থেকে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন বাবা সৈয়দ আলী আজম। আমার ম্যাট্রিক পরীক্ষার পরপরই বাবা মারা যান। জীবনের কঠিন সময়টা শুরু হয় তখন থেকেই। মা আমাদের পাঁচ ভাইবোনকে কঠোর নিয়মে মানুষ করেন। আমাদের ছোট থেকে টিউশনি করতে হয়েছে, কষ্ট করতে হয়েছে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল শেষে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজে পড়াশোনা করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হই ১৯৮২ সালে।

আন্দোলনের কারণে ১৯৮৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হই। ১৯৯০ সালে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু করি। এএনজেড ব্যাংকে সাড়ে ছয় বছর ছিলাম। আমরা পাঁচজন একসঙ্গে যোগদান করেছিলাম। শাখা ব্যাংকিং দিয়ে শুরু করি। কয়েক মাসের মধ্যে চলে যায় করপোরেট ব্যাংকিংয়ে। ১৯৯৬-এ এইচএসবিসি বাংলাদেশে করপোরেট ব্যাংকিং দিয়ে কাজ শুরু করি। বাংলাদেশে এইচএসবিসি ব্যাংকের অফশোর লাইসেন্স, এডি লাইসেন্স, ওদের সফট লঞ্চিং সবকিছু প্রতিষ্ঠা হয়েছে আমার হাত দিয়ে। এইচএসবিসি থেকে ২০০২ সালে গেলাম স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে। সেখানে গ্রুপ স্পেশালিস্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের হেড ছিলাম। সাত বছর এই বিদেশি ব্যাংকে কাজ করেছি।

আমি ছিলাম এখানকার ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রথম নারী সদস্য। পরে ওখানে ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনের প্রধান হই। আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসিতে গেলাম ২০০৯-এর এপ্রিলে। সেখানকার প্রথম নারী এমডি ছিলাম। সে সময়ে বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকে নারী এমডি ছিলেন না। আসলে নিজেকে কখনো পুরুষ বা নারী হিসেবে ভাবিনি। নিজের সক্ষমতার ওপরই বেশি জোর দিয়েছি।

যখন আইপিডিসিতে যাই, ওদের আর্থিক অবস্থা ভয়াবহ অবস্থায় ছিল। আমি পুরো ১০০ শতাংশ মূলধন পুনরুদ্ধার করেছি। প্রতিষ্ঠানটি ভালো জায়গায় রেখে এসেছি। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংক এশিয়ায় গেলাম প্রধান ঝুঁকি পরিপালন কর্মকর্তা হয়ে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেখানে কাজ করেছি। জীবনে সব জায়গাতেই আমি সফলভাবেই কাজ করেছি। অনেক কোম্পানিকে ঘুরে দাঁড় করিয়েছি। ২০১৮ সালের মার্চে ট্রাস্ট ব্যাংকে প্রধান ঝুঁকি পরিপালন কর্মকর্তা হিসেবে এসেছি। এখন এমডি হিসেবে ট্রাস্ট ব্যাংকে দায়িত্ব পালন করছি।

 

 

হুমায়রা আজম

সংগ্রামের জোয়ারে নারীর উঠে আসাটা কতটুকু চ্যালেঞ্জের?

হুমায়রা আজম : নারীদের ক্যারিয়ারে ভালো করার জন্য অবশ্যই প্রতিবন্ধকতা আছে। কারণ, কেউ নারী বললেই আগেই চুপসে যান। আমার জন্যও এ চ্যালেঞ্জ আছে। অনেক প্রতিষ্ঠান আমাকে পছন্দ করে নিয়েছে। তারপরও আমাকেও সংগ্রাম করতে হয়েছে। নারীকে দায়িত্ব দেওয়ার পেছনে এখনো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংকোচ দেখা যায়। পরিবারকে সাহায্য করতে হবে। নারীদেরও নিজেদের উদ্যোগ থাকতে হবে, আন্তরিকতা থাকতে হবে। তাহলেই সফল হওয়া যাবে। নারী পারবে, এটা মেনে নেওয়ার মানসিক প্রতিবন্ধকতা আছে সমাজে। তবে এত দিনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, নারীরা ফাঁকি দেন কম। যারা দায়িত্বশীল, তারা দায়িত্ব নিয়েই কাজ করেন।

 

উন্নত দেশ গড়তে নারী জাগরণ কতটুকু দরকার

হুমায়রা আজম : নারী শক্তির প্রতীক-নারী উন্নয়নের প্রতীক। কিš‘ বাস্তব সত্য হচ্ছে এখনো পৃথিবীর পিছিয়ে থাকা এবং পিছিয়ে রাখা মানুষের মূল অংশটি হচ্ছে নারী। কোনো দেশের উন্নয়নের জন্য নারীর জাগরণ ও ক্ষমতায়ন একটি চাবিকাঠি। সে জন্য সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। নারীর অংশগ্রহণ বাড়ালেই শুধু চলবে না, নেতৃত্বের পর্যায়ে নারীকে আসতে হবে। পরিমাণগত ও গুণগত উভয় দিক থেকেই নারীর জাগরণ প্রয়োজন। নারীর উন্নয়নের পথে একটি বাধা তাদের দুর্বল মানসিকতা। তাই নারীর জাগরণের জন্য তাদের নিজেদের আগে এগিয়ে আসতে হবে। নারী জাগরণ শুধু নারীর জন্য দরকার নয়, একটা সমৃদ্ধ সুখী সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য দরকার। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে পেছনে ফেলে কখনোই সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ জন্য নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনায় নারীর যথাযথ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

 

এবার নারী দিবসের প্রতিপাদ্য বিলিভ ইকুয়াল। আপনার কি মনে হয় আমাদের দেশে এটা হয়?
হুমায়রা আজম : গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের নারীদের ক্ষমতায়নে ব্যাপক অগ্রগতি ঘটলেও এ কথা বললে ভুল হবে না যে বিদ্যমান সামাজিক-সাংস্কৃতিক রীতিনীতি, পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব এবং অগণতান্ত্রিক আচার-আচরণের কারণে সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্য চলে গেছে। সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করতে মেধার ওপর জোর দিতে হবে। কারণ, এটা ম্যারিটোক্রেসি বা গুণতন্ত্র হওয়া উচিত। সোজাভাবে বললে, যোগ্যতার পরিচয় যেমন দেওয়া লাগবে, তেমনি কাজে পরিশ্রমী হতে হবে। মেধা, পরিশ্রম সবকিছুর সমন্বয় এবং চ্যালেঞ্জ গ্রহণ, জায়গায় বসে নিজের কাজ ঠিকমতো করা, যারা এগুলো করতে রাজি আছে তারাই ভালো করবে ও স্বাভাবিকভাবে নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর হবে আর নইলে হবে না।

 

জীবনের প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে শিক্ষাগুলো কেমন ছিল, যা এখনো কাজে লাগে?
হুমায়রা আজম : সব মানুষকে প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়। সেটা সব জায়গাতেই। করপোরেট রাজনীতি নারী-পুরুষের জন্য আলাদা কিছু নয়, সেটা সবার জন্যই সমান। আপনি সহজ-সরল হলে, অনেক কাজ করলে তাদের জন্য মাঝেমাঝে কাজে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। এ ছাড়া যারা কাজে ফাঁকি দেয়, তারা আপনার বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করে থাকে সচরাচর। এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা কমবেশি সবারই হয় বা হয়েছে। আমি নিজের দায়িত্বকে প্রাধান্য দিয়েছি, তাই জীবনে সব জায়গাতেই আমি সফলভাবে কাজ করেছি। কখনো কোনো কাজে পিছপা হইনি, নিজেকে কখনো নারী বা পুরুষ ভাবিনি, নিজের সক্ষমতাকে জোর দিয়েছি। আজকের প্রাপ্তিটা আসলে সেই কাজেরই ধারাবাহিক সফলতা।

 

একজন নারীর টিকে থাকতে কী থাকা জরুরি
হুমায়রা আজম : নারীদের নিজেদের উন্নতি নিজেদেরই করতে হবে, পড়াশোনা করতে হবে, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে। নিজেদের কাজ ও জীবনের ভারসাম্য নিজেদের ঠিক করতে হবে। বাড়ি থেকে তাদের সাপোর্টটা পেতে হবে। মূলত সবকিছু তাদের নিজেদেরই ঠিক করে নিতে হবে। যদি তারা নিজেরা ঠিক করে নিতে পারেন, তাহলে স্বাভাবিকভাবে তারা স্ব স্ব উন্নয়নে এগিয়ে যেতে পারবেন। অবশ্য একটা ব্যাপার আছে, প্রতিষ্ঠানকেও আরও নমনীয় হতে হবে, অনেক সময় দেখা যায় তারা নারী হলেই তারা পিছপা হয়। তা, সবকিছুই ভারসাম্য করে কাজ করতে হবে। পরিবার থেকে যেমন সাপোর্ট পেতে হবে, তেমনি চ্যালেঞ্জ নিতেও প্রস্তুত থাকতে হবে।

 

যারা সামনে আসতে চায়, তাদের অনুপ্রেরণার জন্য কী বলতে চান?
হুমায়রা আজম : পরামর্শ তো আসলে কিছু না, সবাইকে কাজটা শিখতে হবে আর জানার আগ্রহ থাকতে হবে। যেটা আমি দেখি বাস্তবে, কারও যেমন শেখার আগ্রহ নেই, তেমনি কাজেরও আগ্রহও নেই। ক্যারিয়ার গড়তে হলে যেমন পরিশ্রম করতে হবে, তেমনি শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। সফলতার পথে এগিয়ে যেতে কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে। কাজে ফাঁকি দেওয়া যাবে না। পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। এ প্রতিযোগিতাপূর্ণ সময়ে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করাটা জরুরি। সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে হলে অবিরাম যোগ্যতা, দক্ষতা ও কর্মতৎপরতা বাড়াতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক সুযোগ কাজে লাগানোর মানসিকতা থাকতে হবে। আসলে যত কথাই বলি, পরিবার থেকে যদি অনুপ্রেরণা ও সমর্থন না দেওয়া হয়, তাহলে ব্যাপারটা অসম্ভব।

 

ঘরে-বাইরে কীভাবে ম্যানেজ করেন?
হুমায়রা আজম : কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবনের মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করা জরুরি। আমি অবশ্যই বলব এটি একটি চ্যালেঞ্জ, যার জন্য ধারাবাহিক প্রচেষ্টার ও ইতিবাচক মানসিকতা প্রয়োজন। আমার ক্ষেত্রে আমার পরিবার আমাকে ভীষণভাবে সাপোর্ট দিয়েছে। বিশেষ করে আমার জীবনসঙ্গী ও প্রিয় বন্ধু আমার স্বামী এরশাদুল হক খন্দকার আমাকে সাপোর্ট না দিলে আমার ক্যারিয়ার অসম্ভব ছিল। আমার ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে আসাই হচ্ছে আমার স্বামীর জন্য।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
তুমিই রোদসীনারীপ্রধান রচনা

জীবনের বাঁকবদলে

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ৩, ২০২২

মারিয়াম জাভেদ জুহি। তিনি বাংলাদেশে বসবাস করলেও নন বেঙ্গলি পরিবারের সন্তান। মা পাকিস্তানের, বাবা ইন্ডিয়ান। এক ভাই, এক বোন। খুব সংরক্ষণশীল পরিবারে বেড়ে ওঠা জুহির। ছোটবেলা থেকেই মেয়ে হিসেবে নানা বাধার বেড়াজালে আবদ্ধ ছিলেন। জীবনের নানা বাঁকবদলে  আজ তিনি সিটি ব্যাংকের-সিটি আলোর হেড হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর জীবনের গল্পগুলো উঠে এল রোদসীর নারী দিবস সংখ্যায় কথা বলেছেন – সুরাইয়া নাজনীন

 


পথচলাটা যেভাবে

মারিয়াম জাভেদ জুহি : আমাদের পরিবারের মেয়েরা কখনো চাকরি বা ব্যবসা করেনি। অনুমতিও ছিল না। বাবা, ভাই ভীষণ রাগী ছিলেন। অনেক ভয় পেতাম। কোনো দিন কোনো বন্ধুর বাসায়ও যেতে পারিনি। আমি ম্যাপললিফের স্টুডেন্ট ছিলাম। এত কড়া শাসনে চলছিল আমার জীবন। অতিরিক্ত শাসনে থাকতে থাকতে মানুষ কোথাও ভালোবাসা পেলে ভুলটা করে ফেলে, যাচাই করে না একেবারেই, ওটা আমার জন্য ভালো না খারাপ। আমার ক্ষেত্রেও তাই হলো।

আমি জীবনে ভুল সিদ্ধান্তটি নিয়ে নিলাম। তখন আমার বয়স ১৮। যাকে বিয়ে করলাম, তিনিও সে সময় কেবল পড়াশোনা শেষ করেছেন। তেমন কিছুই করতেন না। তবে এক মাস পর যেটা দেখলাম, তিনি খুবই অ্যাবিউজিং ক্যারেক্টর। চড়-থাপ্পড়, গায়ে হাত তোলা কোনো বিষয়ই না তার কাছে। কিন্তু আমার যাওয়ার কিংবা কারও কাছে কিছু বলার সব দরজাই বন্ধ। এ রকম করতে করতে কয়েক বছর পার হলো। এর মধ্যে আমি কোনোভাবে গ্র্যাজুয়েশনটা শেষ করি তেজগাঁও কলেজ থেকে।

যদি বলি ক্যারিয়ার কবে থেকে?

মারিয়াম জাভেদ জুহি : আমি গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে ভাবলাম আমাকে কিছু একটা করতেই হবে। কারণ, আমার স্বামী তখনো ভালো কিছুই করতেন না। তারপর আমি কোনোভাবে একটি চাকরি ম্যানেজ করে নিলাম। বেতন ছিল মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। ওই টাকাটা আমার কাছে যে কী মূল্যবান ছিল, তা বলার বাইরে। যাহোক তারপর আমার প্রথম সন্তান হলো। ছেলে হওয়ার পর আমাকে ব্রেক নিতে হলো। তারপর আবার কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই আবার আরেকটি সন্তান হলো। দ্বিতীয় সন্তান মেয়ে। মেয়ে হওয়ার পর জীবনের গতি কিছুটা বদলে গেল।

টার্নিং পয়েন্ট কোনটি

মারিয়াম জাভেদ জুহি : আমার সন্তান হওয়ার পর ক্যারিয়ারে বিশাল গ্যাপ পড়ে। কিন্তু টার্নিং পয়েন্ট যদি বলতে হয়, মেয়ে হওয়ার পর আমি ব্র্যাক ব্যাংক থেকে একটি অফার পেলাম। আমার আগের অফিসের কলিগের মাধ্যমে। অফারটি আমি নিয়ে নিলাম। তিন বছর আমি ব্র্যাক ব্যাংকে কাজ করেছি।

 

বলছিলেন সন্তানদের ডিপ্রেশনের কথা

মারিয়াম জাভেদ জুহি : হ্যাঁ, সে গল্পটি আসলে খুব ব্যথিত করে আমাকে। আমার সন্তানদের আমি টপ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলাম। খরচ আমিই চালাতাম। কিন্তু প্রতিদিন ওরা স্কুলে গিয়ে কান্নাকাটি করত। পড়ালেখায় কোনোভাবেই মনোযোগ দিতে পারত না। রাতে বাড়ি ফেরার পর ওরা ঘুমানোর অভিনয় করত। কারণ ওরা দেখত মায়ের ওপর বাবার নির্যাতন শুরু হবে এখন। এসব পারিবারিক কলহ দেখতে দেখতে ওরা অসুস্থ হয়ে পড়ল। তখন আমার মনে হলো এবার আমার স্টেপ নেওয়ার সময় এসেছে। এভাবে সহ্য আর না। এখন আমার বাবা-মাকে সবকিছু জানাতে হবে। আমি আমার ভাইকে জানালাম, বাবা-মাকেও জানালাম। তবে খুব ভয়ে ছিলাম ওরা কীভাবে নেবে বিষয়টি। আমাকে পরিবার থেকে খুব সাপোর্ট করল।

কিন্তু মা বললেন, না, ঘর ছেড়ে আসা যাবে না। যা-ই হোক মানিয়ে নাও। আমি বারবার কান্নাকাটি করে মায়ের বাড়ি চলে আসতাম। মা আমাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে আবার পাঠিয়ে দিতেন। বারবার এগুলো দেখতে দেখতে বাবা শেষবার বললেন, ও আর যাবে না। ডিভোর্স লেটারটা আমিই পাঠালাম পরিবারের সহযোগিতায়। কিন্তু আমার সন্তানের বাবার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়েছিল, ভদ্রলোক কখনো ভাবেননি আমি এটা করব। আমাকে নিরুপায় হয়ে জলে ভাসা পদ্মের মতো সংসার করতে হয়েছিল। তারপর ছয় বছর সিঙ্গেল মাদার হিসেবে ছিলাম। সন্তানদের বাবা কোনো তখনো কোন খরচপাতি দিতেন না।

নতুন করে আবার যেভাবে

মারিয়াম জাভেদ জুহি : আমি কাজের ক্ষেত্রে খুবই অনুগত ছিলাম। আমার কাজটা আমি সব সময় দায়িত্বের সঙ্গে করেছি। ব্র্যাক ব্যাংকে আমার প্রমোশন হলো। খুব ভালো যাচ্ছিল চাকরিটা। তারপর আমার সিটি ব্যাংক থেকে একটি অফার এল। ২০০৯ সালে আমি সিটি ব্যাংকে সার্ভিস কোয়ালিটি ম্যানেজার হিসেবে জয়েন করলাম। সবার কাছ থেকে খুবই সাপোর্ট পেয়েছি, বিশেষ করে সময়ের ফ্লেক্সিবিলিটির জন্য। আমার কাজটি করে আমি বের হয়েছি কখনো কেউ আমাকে বদার করেননি। সহকর্মীরা ভালো ছিলেন বলেই আমার টিকে থাকাটা সম্ভব হয়েছে। তারপর সিটি ব্যাংকে আমেরিকান এক্সপ্রেস লঞ্চ হয়েছিল।

আমি সেখানকার লাউঞ্জ ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছি দেড় বছর। তারপর প্রায়োরিটি ব্যাংক সিটিজেন লঞ্চ হলো। এটা খুব বড় একটি প্রজেক্ট ছিল। আমি সেখানকার প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ শুরু করলাম। তারপর সিটি ব্যাংক নতুনভাবে একটি প্রজেক্ট চালু করল ওমেন ব্যাংকিং-সিটি আলো। তখন আমাকে বলা হলো এই প্রজেক্টটি আমাকে দেখতে হবে। আমি এই প্রজেক্টটি নিয়ে খুবই এক্সাইটেড ছিলাম। যেহেতু নারীদের নিয়ে কাজ হবে। তবে আমার কাছে মনে হয় সিটি আলো ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। তা ছাড়া সিটি ব্যাংকের বড় তিনটি প্রজেক্টের সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম। যেগুলো সফলতার সঙ্গে আমি করতে পেরেছিলাম।

সিটি আলো নিয়ে জানতে চাই

মারিয়াম জাভেদ জুহি : এই প্রজেক্ট আমার জন্য খুব অনুপ্রেরণার এবং অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের ছিল। ২০১৮ সালে আমরা সিটি আলোর প্রজেক্টটি লঞ্চ করেছি। তারপর তো করোনা চলে এল। তবু অনেক নারী সিটি আলো থেকে অনেক বেশি সহযোগিতা পেয়েছে। কারণ, সে সময় ঘরে বসে ব্যবসা করার একটি বিপ্লব হয়। মহামারির সময় সিটি আলো অসংখ্য নারীকে নিয়ে কাজ করেছে। অনেক নারী আছে খুব ভালো কাজ করেন, কিন্তু ব্যাংকিং বোঝেন না। তাদের প্রয়োজনীয়তার জায়গাটি বুঝিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পথ সুগম করেছে সিটি আলো।

 

 

যেমন ছিল পরিবারের সহযোগিতা

মারিয়াম জাভেদ জুহি : পরিবারের কথা অনেক বলে ফেলেছি। জীবনের অনেক চড়াই-উতরাই পার করে এ পর্যন্ত আসা। জীবন শুরুর প্রথম দিকে কোনো সহযোগিতাই পাইনি। জীবনযুদ্ধ প্রতিটি পর্যায়েই ছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতি যদি বলতে হয়, তাহলে আবার একটু পেছনে ফিরে যেতে হবে। আমি ছয় বছর যখন সিঙ্গেল মাদার হিসেবে ছিলাম। তখন বাবা-মা, ভাই-ভাবির কাছ থেকে অনেক বেশি সহযোগিতা পেয়েছি, যা বলার বাইরে। আমাকে আমার পরিবার থেকে কোনো টেনশন দেওয়া হতো না।

সব সময় আমাকে তারা চিন্তামুক্ত রাখার চেষ্টা করে। দিন কাটছিল ভালোই, একটা সময় মনে হলো এখন একজনকে দরকার, যাকে দিন শেষে কিছু বলা যায়। তারপর পারিবারিক আয়োজনে একজন জীবনসঙ্গীর দেখা পাওয়া হলো। অবশ্য সেই সিদ্ধান্তটাও ছিল খুবই সেনসিটিভ। কারণ, আমার সন্তানেরা আছে তারা এটা মেনে নেবে কি না। কিন্তু যিনি আমার জীবনসঙ্গী হয়েছেন, ওনারও আগের জীবন ছিল, সন্তান আছে। তাদের নিয়ে বেশ ভালো আছি এখন। আমার হাজব্যান্ড আমাকে বলেছেন কষ্ট হলে চাকরি ছেড়ে দিতে পারো। কিন্তু আমি তা কখনো ভাবতে পারি না। কারণ, আমার জীবনটাকে বারবার বাঁচিয়ে দিয়েছে আমার চাকরি। তাই প্রত্যেক নারীর উচিত ক্যারিয়ারটা ধরে রাখা।

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
তুমিই রোদসীনারীপ্রধান রচনাসংগ্রামসচেতনতা

কনফিডেন্ট হওয়া খুব জরুরি

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ৩, ২০২২

বাবা বদলির চাকরি করতেন, সেই সুবাদে নানা জায়গায় ঘোরার সুযোগ মিলেছে। পড়াশোনা হলিক্রস থেকে। তারপর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন করা। বলছিলাম ইশিতা শারমিনের কথা। তিনি বর্তমানে বিক্রয় ডটকমের সিইও হিসেবে কাজ করছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- সুরাইয়া নাজনীন

 

জীবনযাত্রার বেলায়
ইশিতা শারমিন : আমার পড়াশোনা যখন শেষ হয়, তারপর আমি মোবাইল কোম্পানি সিটিসেলে জয়েন করি। বাংলাদেশে প্রথম ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করে সিটিসেল। আমি ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস নিয়ে কাজ করতাম। আমাদের হুয়াওয়ের সঙ্গে কাজ হতো চায়নায়। সেখানে আমি ট্রেনিংয়ের জন্য যাই। পরবর্তী সময়ে আমি খুব কম সময়ের মধ্যে প্রমোশন পাই। তারপর ২০১০ সালে আমি সিটিসেল ছেড়ে দিই, তখন আমার বিয়ে হয়ে যায়। তারপর আমি দুবাইয়ে চলে যাই। দুবাইয়ে ব্লুবেরি টেকনোলজিতে বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছি। এরপর আমি সল্টসাইট টেকনোলজিতে কাজ করেছি। এটা একেবারেই অন্য রকম একটি কোম্পানি ছিল। এদের কাজ ছিল পুুরো বিশ্বে অনলাইনে ওয়েবসাইট লঞ্চ করা।

 

ইশিতা শারমিন

 

 

বিক্রয় ডটকমে যেভাবে এলেন
ইশিতা শারমিন : দুবাইয়ে যখন সল্টসাইটে কাজ করি, তখন ওরা বাংলাদেশে একটি ওয়েবসাইট লঞ্চ করার সিদ্ধান্ত নেয়, বিক্রয় ডটকম নামে। সল্টসাইট একটি ব্রিটিশ কোম্পানি, যারা বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও আফ্রিকার সঙ্গে কাজ করত দুবাইয়ে বসে। পরে আমাকে সল্টসাইট থেকে বিক্রয় ডটকমের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওখানকার মার্কেটিং পলিসি নিয়ে আমি কাজ করতাম। ২০১৬ পর্যন্ত আমি বিক্রয় ডটকমে মার্কেটিংয়ের হেড হিসেবে কাজ করেছি। পরে বাংলাদেশে অফিস নিয়ে খুব বড় পরিসরে সেটআপ করা হয়। কিš‘ পরবর্তী সময়ে আমি আবার দুবাইয়ে সেটেল ডাউন করি। তখন অনলাইন মার্কেটিং কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করছিলাম ২০১৬ এবং ২০১৭ পর্যন্ত। এরপর আমি আবার বাংলাদেশে ব্যাক করি ২০১৮ সালে। এখন আমি বিক্রয় ডট কমের সিইও হয়ে কাজ করছি।

 

জীবনের সংগ্রামটা কি নারীর জন্য একেবারেই আলাদা?
ইশিতা শারমিন : আসলে সংগ্রামটা নারী-পুরুষ সবাইকে করতে হয়। তবে একটু ভিন্নভাবে। নারীর জন্য যেটা হয় তা হলো কেউ প্রায়োরিটির জায়গায় রাখে না নারীর ক্যারিয়ার। নারী মানেই একটু গৃহবন্দী টাইপ কিছু ব্যাপার সবার চিন্তায়। তবে নারীর মনের ইচ্ছাটা খুব জরুরি। আমি কী করতে চাই এবং যেটা করব সেটাতে কি আমি স্বাচ্ছন্দ্য। যে কাজ ভালো লাগবে না, সেটা ধরে টিকে থাকাটাও কঠিন।

 


নারীর জন্য ক্যারিয়ারসচেতন হওয়া কতটা জরুরি?
ইশিতা শারমিন : অবশ্যই জরুরি। কখনো কেউ বলতে পারে না জীবনের দুর্র্ঘটনার কথা। পরিবারের স্বাবলম্বী ব্যক্তিটির হঠাৎ করে যদি কিছু হয়ে যায়, কে সেই পরিবারের দায়িত্ব নেবে? আমাদের সরকারব্যবস্থা ও ততটা সক্ষম নয় যে সেই পরিবারের পাশে সারা জীবন দাঁড়াবে। তাই সবার আগে পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। বিকল্প কেউ কিছু করলে সেই পরিবারের আর সমস্যা হবে না। সে জন্য বিকল্প হয়েও নারী যদি কিছু করতে চায়, খারাপ কী?

পরিবারের সহযোগিতার জন্য একজন নারী কতটুকু এগিয়ে আসে?

ইশিতা শারমিন : বিয়ের পর একজন নারী তার স্বামী, সন্তান এবং তার পরিবারকে ভালো রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। অনেকে ভাবেন বিয়ে হয়েছে, সন্তান হয়েছে, সন্তান মানুষ করবে চাকরির কী দরকার! কিš‘ ওই সন্তানদের ভালো ভবিষ্যতের জন্যই একজন নারী কিংবা মায়ের চাকরির দরকার। আবার কর্মজীবী মায়ের সন্তানেরাও অনেক বেশি আত্মনির্ভরশীল হয়, যা তার ভবিষ্যৎ প্রয়োজনে অনেক কাজে লাগে।

 


কনফিডেন্ট থাকাটা কতটা জরুরি?
ইশিতা শারমিন : এটার কোনো বিকল্প নেই। অনেক সময় একজন নারীই তার সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন। এটা কি আমি করব? কিংবা এটা কি আমাকে দিয়ে হবে? এসব আচরণের কারণে পুরুষেরাও এটার সুযোগ নেন। নারীকে কোনো বড় দায়িত্ব দিতে চান না। তাই নারীকে স্কিলড হয়ে নিজের জায়গাটি ধরে রাখতে হবে। তাহলে কনফিডেন্ট লেভেলটি আরও উন্নত হবে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
তুমিই রোদসীনারীপ্রধান রচনাসংগ্রামসম্ভাবনা

হাল ছেড়ো না, সুদিন আসবেই

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ৩, ২০২২

নারীর ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টে পরিবারের সহযোগিতাটা মুখ্য বিষয়। আমি আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছি সন্তান হওয়ার পর। তাই ওদের রেখেই আমাকে অফিস করতে হয়। এখানে যদি আমার স্বামীর কিংবা আমার পরিবারের সার্বিক সহযোগিতা না থাকত, তাহলে আমি হয়তো থেমে যেতাম। বলছিলেন সাংবাদিক নাদিরা জাহান, সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- সুরাইয়া নাজনীন

 

নাদিরা জাহান

কীভাবে মিডিয়ায় এলেন?
নাদিরা জাহান : আমার ছোটবেলা থেকেই মিডিয়ার প্রতি ভালোলাগা ছিল। যখন একুশে টেলিভিশন দেখতাম, মনে হতো যদি কাজ করতে পারতাম ওখানে। পরে মিডিয়ার ওপর নানা রকম কোর্স করেছি। পরে আমি ২০১৩ সালে এবিসি রেডিওতে যোগ দিই। আর আমার বাড়তি একটি পাওনা ছিল, আমার স্বামীও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। তাই ওনার কাছ থেকে অনেক কিছু জানার সুযোগ হতো। আমি রেডিও দিয়ে শুরু করেছিলাম, পরে চ্যানেল ২৪, এরপর নেক্সাস টিভি, আর এখন তো দেশ টিভিতে আছি।

 

প্রতিবন্ধকতা ছিল কি?
নাদিরা জাহান : আমার ক্যারিয়ার গড়তে তেমন কোনো সমস্যা মোকাবিলা করতে হয়নি। আমার বাবা ভীষণ সহযোগী ছিলেন। আর বর্তমানে স্বামী খুব সহযোগিতা করেন কাজের বিষয়ে। এমনকি ঘরের কাজগুলোতেও আমি বেশ সাপোর্ট পাই, তা না হলে সন্তান নিয়ে চাকরি করাটা সম্ভব হতো না।

 

নারীর জন্য মানসিক শক্তি কতটুকু দরকার?
নাদিরা জাহান : একজন নারীর স্বপ্ন তৈরি করতে এবং তার বাস্তবায়নের জন্য মানসিক শক্তি ভীষণ দরকার। আমি যখন নেক্সাস টিভিতে কাজ করি, তখন একটি প্রোগ্রাম ‘লেডিস ক্লাব’ আমার হাত দিয়েই অনেকটা যাত্রা, তখন দেখেছি কত শত নারীর সংগ্রামের গল্প। গল্প শুনে মনে হতো এত সংগ্রাম করে নারীরা যে এত দূর আসতে পারে, ভাবার বাইরে। আসলেই একেবারে অবাক করা বিষয়। তাদের মানসিক সাহস কিংবা শক্তি না থাকলে এটা একেবারেই সম্ভব হতো না।

 

নারী জাগরণ বলতে কী বোঝেন
নাদিরা জাহান : এটা আসলে একটি ভাসমান বিষয়। দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হলে নারী জাগরণ অনেকটা নিশ্চিত হবে। একটি পরিবারে যদি চারজন সদস্য থাকে, তার মধ্যে যদি একজন আর্থিক সহায়তা করেন, তাহলে পরিবারটির ওপর অনেক চাপ পড়ে। আবার জীবনে দুর্ঘটনার কথা কেউ বলতেও পারে না। তাই একজন হাল ধরার মানুষ খুব প্রয়োজন। নারী বলে সে কাজ করতে পারবে না, এটা কোনো যৌক্তিক বিষয় নয়।

 

দেশের উন্নয়নের জন্য কি নারীর ভূমিকা আছে?
নাদিরা জাহান : এককভাবে বা একা একা উন্নয়ন সম্ভব নয়। উন্নয়নে একজন নারীর যেমন এগিয়ে আসা দরকার, তেমনি একজন পুরুষেরও। আপনি যদি ছোট পরিসরে ফিরে যান, অর্থাৎ একটি সংসারে সবকিছু যদি নারী একা করে, তাহলে তার জন্য সত্যি কষ্টের সবকিছু। তবে একজন পুরুষ যদি সহযোগী হয়ে পাশে দাঁড়ায়, তাহলে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। তাই ঘর থেকে আমরা যদি পরিবর্তন শুরু করতে পারি, তাহলে বিষয়গুলোর চমৎকার প্রভাব পড়বে সমাজের ওপর।

 

নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত, আমরা কি বলতে পারি এখন?
নাদিরা জাহান : আসলে কখনো বলা যায়, আবার কখনো না। তবে পরিবর্তন হচ্ছে অনেকটাই। আমরা করোনাকালীন দেখেছি প্রচুর নারী ঘরে বসে উদ্যোক্তা হয়েছে। একেকজন উদ্যোক্তা এখন অনেকেই আরও বিশাল পরিসরে স্বপ্ন দেখছেন। ঘরে বসেই যে মেধার সঠিক ব্যবহার হয়েছে এবং তা ফলপ্রসূ শতভাগ। এটা তো আমার কাছে বড় বিপ্লব মনে হয়েছে। সেই সঙ্গে ডিজিটাল যুগের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়ানো, নিজেকে তৈরি করা কম কথা নয়।

 

জীবনে চলার পথের প্রতিকূলতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে কি?
নাদিরা জাহান : আমরা প্রতিমুহূর্তেই শিখি। নিজের প্রতিকূলতা ছাড়াও অন্যের প্রতিকূলতা দেখে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। যদি শিক্ষা গ্রহণের মানসিকতা থাকে। আর আমার কাছে মনে হয় জীবনে কোনো সিদ্ধান্ত চটজলদি নেওয়া ঠিক নয়। একটু ভেবেচিন্তে বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিলে তার ফলাফল ভালো হয়।

 

নারীর টিকে থাকা
নাদিরা জাহান : টিকে থাকতে হলে নারী-পুরুষ দুজনকেই মানবিক হতে হবে। মানবিকতা ছাড়া গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া অনেক কঠিন। মানবিক গুণাবলি দিয়ে কাজকে ভালোবেসে সামনে এগোলে সে তার সমাজে টিকে থাকবে।

 

 

কী বলবেন নতুনদের জন্য
নাদিরা জাহান : হাল ছাড়লে চলবে না। লেগে থাকতে হবে। যেকোনো বাধাকে মোকাবিলা করার সাহস রাখতে হবে। জীবন অনেকটা চলে গেছে, এখন আর সময় নেই এটা ভাবলে হবে না। যখন থেকেই আপনি প্রস্তুতি, তখন থেকেই শুরু করুন।

 

পারিবারিক সহযোগিতা
নাদিরা জাহান : শুরুতেই বলেছি একজন নারীর ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টে পরিবারের সহযোগিতাটা মুখ্য বিষয়। আমি আমার ক্যারিয়ার শুরু করেছি সন্তান হওয়ার পর। তাই ওদের রেখেই আমাকে অফিস করতে হয়। এখানে যদি আমার স্বামীর কিংবা আমার পরিবারের সার্বিক সহযোগিতা না থাকত, তাহলে আমি হয়তো থেমে যেতাম। নিজেকে প্রমাণের কোনো সুযোগই থাকত না।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রা

পুরুষরা যে বিষয়গুলো গোপন করেন নারীর কাছ থেকে

করেছে Suraiya Naznin ফেব্রুয়ারী ১৫, ২০২২

রোদসী ডেস্ক-

জন্মগতভাবেই সব পুরুষরাই একটু চাপা স্বভাবের হয়। অনেক কথা শেয়ার করেন আবার অনেক প্রয়োজনীয় কথাও গোপন করে রাখেন। তবে কিছু বিষয় যেগুলো তারা কখনওই কাউকে বলেন না। তবে নারীদের কাছে বেশি গোপন করেন বিষয়গুলো-

জেনে নিন তেমন কয়েকটি গোপনীয়তা সম্পর্কে যা পুরুষরা কখনই কাউকে বলে না, বিশেষ করে তাদের স্ত্রী কিংবা প্রেমিকাকে তো নয়-ই!

প্রত্যেক পুরুষেরই তার সঙ্গীর কাছ থেকে মানসিক সমর্থন প্রয়োজন। কিন্তু তারা কখনোই তা উচ্চস্বরে স্বীকার করবে না। পুরুষরা সবসময় নিজেকে শক্তিশালী প্রমাণ করতে চেষ্টা করে। আবার সেইসঙ্গে তারা ভালোবাসাও অনুভব করতে চায়। দৈনন্দিন জীবনের চাপ সবাইকে প্রভাবিত করে। পুরুষেরাও এর ব্যতিক্রম নয়। তারা মনে মনে সমর্থন ও ভালোবাসা চায়, দুটো ভালো কথাও শুনতে চায়। কিন্তু মুখ ফুটে কখনোই তা সঙ্গীকে বলবে না।

পুরুষরা খুব কমই তাদের ভয় প্রকাশ করে। কারণ তারা নিজেদের দুর্বল হিসেবে দেখতে চায় না। পুরুষদের শক্তিশালী বলে মনে করা হয় এবং তাদের সমাজের সামনে সাহসী মুখ হিসেবে তুলে ধরা হয়। কিন্তু মাঝে মাঝে তারাও ভয়ে গ্রাস হতে পারে। তবে সেকথা তারা কখনোই স্বীকার করবে না।

পুরুষরা এটা স্বীকার নাও করতে পারে তবে বেশির ভাগই পাশ দিয়ে যাওয়া প্রতিটি নারীর দিকে তাকায়। বেশির ভাগ পুরুষ চেহারা দ্বারা নারীদের মূল্যায়ন করতে থাকে। তারা কাউকে পছন্দ করার পরে, তাদের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়। তবে একথা স্বীকার করার থেকে না করাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে তারা মনে করে।

 

পুরুষরা নারীদের মতো ছোটখাটো তুচ্ছ ঘটনা এবং দ্বন্দ্ব নিয়ে থাকতে পছন্দ করে না। কখনো কখনো, নারীরা কী নিয়ে লড়াই করছে সে সম্পর্কে তারা বুঝতেও পারে না। স্ত্রী বা প্রেমিকা যদি সামান্য বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব করে পুরুষেরা তাতে মোটেই মনোনিবেশ করতে চায় না।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
তুমিই রোদসীনারীসম্ভাবনা

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ভিসি হলেন ড. রুবানা হক

করেছে Suraiya Naznin ফেব্রুয়ারী ১৫, ২০২২

রোদসী ডেস্ক-

‌‌‌’এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) হলেন ড. রুবানা হক। চট্টগ্রামে অবস্থিত এটি আর্ন্তজাতিক বিশ্ববিদ্যালয়। ড. রুবানা হক এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্ট্রি মেম্বার ছিলেন। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী।

ডাঃ রুবানা হক বলেন, আমার প্রচেষ্টা থাকবে শিক্ষার্থীদের অদম্য চেষ্টাকে আরও সামনে নিয়ে যাওয়ার জন্য। সবার প্রতিভা এবং মূল্যবোধের মাধ্যমে যেন ভালো কিছু হয়, সেই প্রত্যাশা করছি।

শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি বলেন, ডাঃ রুবানা হক এই বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাবেন। আর তার বুদ্ধিবৃত্তিক গুণাবলীর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটি অবস্থানে দাঁড় করাবেন।

ড. রুবানা হক বাংলাদেশের একজন স্বনামখ্যাত নারী উদ্যোক্তা। তিনি মোহাম্মদী গ্রুপের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এর নির্বাচিত প্রথম নারী সভাপতি ছিলেন তিনি। ড. রুবানা ২০১৩ ও ২০১৪ সালে পরপর দুবার ‘বিবিসি ১০০ নারী’ নিবন্ধে স্থান পেয়েছিলেন।

ড. রুবানা হকের জন্ম ১৯৬৪ সালে ৯ই ফেব্রুয়ারি। পড়াশুনা করেছেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল, হলিক্রস কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুরুষোত্তম লালের প্রকাশনা সংস্থা ও রাইটারস ওয়ার্কশপের ওপর ‘রাইটারস ওয়ার্কশপ: এজেন্ট অব চেঞ্জ’ বিষয়ে পিএইচডি করেছেন। ২০০৮ সালে তিনি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল নিয়ে এমএ করেন। মেধাবী এই নারী এসএসসি, এইচএসসিতে বোর্ড সেরা হয়েছিলেন। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি সাহিত্য চর্চার সঙ্গেও জড়িত।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনদেহ ও মনবিশেষ রচনারোমান্স রসায়নশিল্প ও সাহিত্য

অনুভূতির যোগ-বিয়োগ

করেছে Suraiya Naznin ফেব্রুয়ারী ১৪, ২০২২

লিজা নাজনীন-

 

আত্মিক অনুভূতি থেকে ভালোবাসার জন্ম। হৃদয়ের চিরন্তন আবেগ থেকে বিখ্যাতদের ভালোবাসার জন্য জীবন দিতেও দেখা গেছে। ইতিহাসের সোনালি পাতায় আজও সেসব গল্প অমর হয়ে আছে। আগের দিনে প্রেমের প্রতীক্ষাতেও ছিল ধৈর্যেরই পরীক্ষা। এখন অবশ্য সেই অপেক্ষা কিংবা প্রতীক্ষার বদল হয়েছে অনেক। হয়েছে অনুভূতির যোগ-বিয়োগ

 

কবি জীবনানন্দ দাশ ভালোবাসার বিশ্লেষণ নিয়ে বলেছেন-
‘তবু তোমাকে ভালোবেসে
মুহূর্তের মধ্যে ফিরে এসে
বুঝেছি অকূলে জেগে রয়
ঘড়ির সময়ে আর মহাকালে
যেখানেই রাখি এ হৃদয়’

ভালোবাসার অপেক্ষা নিয়ে নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন,
‘অপেক্ষা হলো শুদ্ধতম ভালোবাসার একটি চিহ্ন। সবাই ভালোবাসি বলতে পারে। কিন্তু সবাই অপেক্ষা করে সেই ভালোবাসা প্রমাণ করতে পারে না।’

ওবেলায় যেমন ছিল ভালোবাসা-

সেকালের প্রেম ছিল আলো-আঁধারির দীর্ঘশ্বাসে ভরা। প্রেম একটি ধোঁয়া মাত্র যা সৃষ্টি হয় দীর্ঘশ্বাস থেকে রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’-এর একেবারে গোড়ায় এ কথা বলেছিলেন স্বয়ং শেক্সপিয়ার। রোমিও আর জুলিয়েটের মতো প্রথম প্রেমের নজির বিশ্বসাহিত্যে খুব কমই আছে। প্রথম প্রেম। শব্দবন্ধটা শুনলেই একটা চমৎকার ঘুমভাঙা সকাল, একটা পাটভাঙা জামার খসখসে মিঠে গন্ধ, একটা হাতে লেখা চিঠির সারপ্রাইজ। প্রথম প্রেম ভাবলেই একখানা অপার্থিব মুখ, যার দিকে তাকিয়ে থাকাই জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য, দুটো আশ্চর্য হাত, যার মুঠোর ভেতরে পৃথিবীর সেরা নিশ্চয়তা লুকানো আর একটা অলীক কণ্ঠস্বর, কেবল যেটার জন্যই আমার নামটা রাখা হয়েছিল কখনো। এই ছিল তখনকার প্রেম।

 


উত্তম-সুচিত্রার হিট জুটির সিনেমা মানেই এই ধুলার ছদ্মবেশে গোলাপি আবির মার্কা প্রেম যা হাতের মুঠোয় ঝিনুকের মতো পড়ে থাকে। প্রেম নিয়ে লেখেননি এমন কবি মেলা ভার, প্রেমের ছবি আঁকেননি এমন চিত্রকরও দুর্লভ। শিল্পীদের একটা সুবিধা আছে, তারা যেটুকু আড়াল করার, সেটুকু লুকিয়ে রেখে বাকিটা প্রকাশ করে ফেলতে পারে। এতে শ্যামও থাকল, কুলও গেল না। কিন্তু বাকিদের কষ্ট বোধ হয় আরও বেশি। আগেকার দিনে তারা প্রেমে দাগা খেলে কিছুদিন দেবদাসের কালাশৌচ পালন করত। নয়তো ধর্মযাজক বা সমাজসংস্কারী হয়ে যেত। কেউ কেউ বিয়ে করতেন না। কেউবা আবার সন্ন্যাস নিতেন। কী মহিমা প্রেমের!

আসলে প্রেমের মহিমা ট্র্যাজেডিতে। ট্র্যাজেডি। মানুষ তো আজীবন ট্র্যাজেডিকেই সেলিব্রেট করেছে। কী শিল্পে, কী জীবনে। যা জীবনে সফল, স্মৃতিতে বা শিল্পে তার দাম মেলেনি। পথ যেখানে আলাদা হয়ে যাচ্ছে, সেখান থেকেই তো রাস্তা শুরু। আমরা কে না জানি মার্গারিটের কথা। আইওয়াহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক লেখক কর্মশালায় এক বছর থাকার সুবাদে সেই ফরাসি তরুণীর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল দুর্দান্ত যুবক সুনীলের। সে কথা সুনীলই পরে লিখেছেন বহু জায়গায়। পরস্পরকে ভালোবেসে ফেলেছিলেন তারা। কিন্তু একসঙ্গে থাকা হয়নি বাস্তবিক কারণে।

থাকা হয়নি মানুষ দুটোর। কিন্তু ভালোবাসাটা ছিল। আর এই বিচ্ছেদ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বিভিন্ন কবিতা ও উপন্যাস ‘সোনালী দুঃখ’। সেই সুনীলই যখন ‘প্রথম আলো’ লিখছেন, তখন তার পাতায় পাতায় উঠে আসছে কাদম্বরী দেবীর প্রতি রবি ঠাকুরের অন্ধ মুগ্ধতা আর নির্ভরতার কথা। বৌঠানের অকালপ্রয়াণের পর রবির হাজারো লেখায় তার ছায়া ফিরে ফিরে আসার কথা। তারপরও রবীন্দ্রনাথ ভালোবেসেছেন, আর সেটাই স্বাভাবিক। কিš‘ অত গভীর ছায়া আর কোনো সম্পর্ক ফেলতে পেরেছে কি? সম্ভবত পারেনি। তিনিও সারাজীবন বিচ্ছেদের উৎসবে মেতেছেন।

চিঠির স্পর্শে
ওবেলার প্রেমে বড় মধুময় সময় ছিল চিঠি। আর চিঠিতে মুখফুটে না বলা কথাগুলো প্রেয়সী লিখে ফেলত। সামনে এলেই লজ্জায় লাল। শুধু মুচকি হাসির আবডালে ভালোবাসা প্রকাশের সময় ছিল ওবেলার সময়টা। মুখ ফুটে সরাসরি প্রেমের আবেদন জানানোর সাহস না করে চিঠির মাধ্যমে প্রেম নিবেদন করে অপেক্ষার প্রহর গোনা হতো প্রত্যুত্তরের। এতে নানা ধরনের মুখরোচক ও আবেগময় লেখা থাকত। প্রেমের চিঠি আদান-প্রদানের সময় বন্ধু বা বান্ধবীর প্রতিবেশী বা সমমনা বন্ধুবান্ধব অথবা বাড়ির ছোট ছোট কিশোর-কিশোরীকে ব্যবহার করা হতো এবং এ কাজের জন্য তাদের নানান ধরনের পুরস্কারেও ভূষিত করা হতো।

 

প্রেমিক বা প্রেমিকা চিঠি পেয়ে সাড়া দিলে তখনি চিঠির উত্তর দিয়ে চিঠি চালাচালির মাধ্যমে প্রেমের প্রথম পর্ব শুরু হতো। আবার অনেকে প্রেম প্রত্যাখ্যান করলে চিঠি ছিঁড়ে বা পুড়িয়ে ফেলত। বাহকের কাছ থেকে যেকোনোভাবে জায়গামতো না গিয়ে অভিভাবক বা মুরব্বি কারও হাতে চিঠি গেলে বিচার-আচার কিংবা ঝগড়াঝাঁটি-মারামারিও হতো। অনেকেই নিজে চিঠি লেখার বা লেখানোর পরও বারবার পাঠ করে শুনতেন বা শোনাতেন যাতে কোনো তথ্য অসম্পূর্ণ না থাকে।
সময়ের বিবর্তনে আজ চিঠি বিলুপ্তপ্রায়। প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা একটা চিঠি পড়ে বোঝা যায়, চিঠি কত আবেগময়, জীবন্ত হতে পারে। কবিকে তার প্রথম স্ত্রী নার্গিস একটি পত্র লিখেছিলেন। কুমিল্লা থেকে কবি চলে যাওয়ার কিছুদিন পর। বিয়ের পরপরই চরম আপন ভাবা ভালোবাসার মানুষ ছেড়ে কেউ যায়? কবি নজরুল যে বাঁধনহারা। শিকল ছেঁড়া বিদ্রোহী। সেই চিঠির উত্তর দিয়েছিলেন পনেরো বছর! চিঠির শুরু এভাবে হয়েছিল

কল্যাণীয়াসু,
তোমার পত্র পেয়েছি সেদিন নব বর্ষার নবঘনসিক্ত প্রভাতে। মেঘ মেদুর গগনে সেদিন অশান্ত ধারায় বারি ঝরছিল। পনেরো বছর আগে এমনি এক আষাঢ়ে এমনি এক বারিধারায় প্লাবন নেমেছিল তা তুমিও হয়তো স্মরণ করতে পারো। এই আষাঢ় আমায় কল্পনার স্বর্গলোক থেকে টেনে ভাসিয়ে দিয়েছে বেদনার অনন্ত ¯্রােতে। যাক, তোমার অনুযোগের অভিযোগের উত্তর দিই। তুমি বিশ্বাস করো, আমি যা লিখছি তা সত্য। লোকের মুখে শোনা কথা দিয়ে যদি আমার মূর্তির কল্পনা করে থাকো, তাহলে আমায় ভুল বুঝবে, আর তা মিথ্যা।

তোমার ওপর আমি কোনো ‘জিঘাংসা’ পোষণ করি না এ আমি সকল অন্তর দিয়ে বলছি।
কী অদ্ভুত শব্দচয়ণ। মনে হয় যেন বুকের ভেতর থেকে কথাগুলো টেনে টেনে বের করে কবি গাঁথছেন চিঠি নামের এক ফুলমালা। কবি চলে আসার কারণ লিখতে অন্তর্যামীকে নিয়ে আসেন। তিনিই যে কবির ভেতরটা দেখেন।
আমার অন্তর্যামী জানেন তোমার জন্য আমার হৃদয়ে কি গভীর ক্ষত, কী অসীম বেদনা! কিš‘ সে বেদনার আগুনে আমিই পুড়েছি তা দিয়ে তোমায় কোনো দিন দগ্ধ করতে চাইনি।

 

 

কবি তার স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসাকে প্রজ্বলিত ব্যথার আগুনের সঙ্গে তুলনা করেছেন। দীর্ঘ পনেরো বছর কবি সে আগুনে নিজে পুড়ছেন। নার্গিসকে পোড়াতে চাননি। আগুন তার হৃদয় পুড়িয়ে তাকে নিখাদ সোনা বানিয়েছে। সাফল্য এনে দিয়েছে। নজরুল নির্দ্বিধায় সে সত্যকে স্বীকার করে লিখেছেন, তুমি এই আগুনের পরশ মানিক না দিলে আমি ‘অগ্নিবীণা’ বাজাতে পারতাম না আমি ধূমকেতুর বিস্ময় নিয়ে উদিত হতে পারতাম না। তোমার যে কল্যাণ রূপ আমি আমার কিশোর বয়সে প্রথম দেখেছিলাম, যে রূপকে আমার জীবনের সর্ব প্রথম ভালোবাসার অঞ্জলি দিয়েছিলাম, সে রূপ আজও স্বর্গের পারিজাত-মন্দারের মতো চির অম্লান হয়েই আছে আমার বক্ষে। অন্তরের সে আগুন- বাইরের সে ফুলহারকে স্পর্শ করতে পারেনি।

দীর্ঘ পনেরো বছর আগের স্মৃতিচারণা বর্ণনায় কবি লেখেন, হঠাৎ মনে পড়ে গেল পনেরো বছর আগের কথা। তোমার জ্বর হয়েছিল, বহু সাধনার পর আমার তৃষিত দুটি তোমার শুভ্র ললাট স্পর্শ করতে পেরেছিল; তোমার তপ্ত ললাটের স্পর্শ যেন আজও অনুভব করতে পারি। তুমি কি চেয়ে দেখেছিলে? আমার চোখে ছিল জল, হাতে সেবা করার আকুলস্পৃহা, অন্তরে শ্রীবিধাতার চরণে তোমার আরোগ্যলাভের জন্য করুণ মিনতি। মনে হয় যেন কালকের কথা। মহাকাল যে স্মৃতি মুছে ফেলতে পারল না। কী উদগ্র অতৃপ্তি, কী দুর্দমনীয় প্রেমের জোয়ারই সেদিন এসেছিল। সারা দিন রাত আমার চোখে ঘুম ছিল না।

এত ভালোবাসার পরেও কবি তার আপন পথের, গন্তব্যের দিকে ছুটবেন সবকিছু মাড়িয়ে। অনুরোধ, প্রার্থনা ও কৈফিয়ত দিলেন, যাক আজ চলেছি জীবনের অস্তমান দিনের শেষে রশ্মি ধরে ভাটার ¯্রােতে, তোমার ক্ষমতা নেই সে পথ থেকে ফেরানোর। আর তার চেষ্টা করো না। তোমাকে লেখা এই আমার প্রথম ও শেষ চিঠি হোক। যেখানেই থাকি বিশ্বাস করো আমার অক্ষয় আশীর্বাদকবচ তোমায় ঘিরে থাকবে। তুমি সুখী হও, শান্তি পাও এই প্রার্থনা। আমায় যত মন্দ বলে বিশ্বাস করো, আমি তত মন্দ নই এই আমার শেষ কৈফিয়ত।
চিঠি নিয়ে যদি গবেষণা হয়, তো কবি নজরুলের এই চিঠি জীবন্ত প্রেমময়ী চিঠি হবে।

এবেলার ভালোবাসা যেমন-

বর্তমান যুগে অপেক্ষার জন্য কেউ তোয়াক্কা করে না। কম সময়ে সবকিছু হাতের নাগালে এসে হাজির হবে সেই চিন্তার দৌড়। বর্তমানে ঘরে বসেই ভালোবাসার সব স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্বল্প খরচে চ্যাটিং করা যায় এবং উভয় উভয়ের আলাপ সরাসরি শোনার পাশাপাশি দেখতেও পারে ওয়েব ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরের পর্দায়। ফেসবুকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাৎচিত করা যায়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশের ফলে বর্তমানে ইন্টারনেট, ই-মেইল, ভয়েস মেইল, চ্যাটিং, ফোন ও মোবাইলের যুগে আজ তা ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে।

জাদুঘরের বন্ধ খাঁচার দিকে ক্রমেই ধাবমান আর ইতিহাসের পাতায় বন্দী হওয়ার মতো অবস্থা। ই-মেইল, ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপস চ্যাট, এসএমএস, মাল্টিমিডিয়া মেসেজ, ফ্লাশ মেসেজ, অডিও মেসেজ, টেলিকানেকশন ও মোবাইলের জয়জয়কারে দেশ-বিদেশের স্বজনদের সঙ্গে পত্র যোগাযোগ এখন সেকেলে মডেলে পরিণত হয়েছে। এখন হয়ে গেছে এই চাইলাম ভালোবাসলাম, আবার হুটহাট ব্রেকআপ করে ফেললাম…এখন আবার অনেকে ব্রেকআপ পার্টিও দেওয়া হয়। সেই ছবি ফেসবুকে আপলোড দিয়ে বিজয়ের হাসি দেয়। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামে নিজের ভালোবাসার মানুষকে কমপ্লিমেন্ট দিয়ে প্রেমের ঘোষণা করছেন সেলিব্রিটিরা। চোখে চোখ, হাতে হাত, ঠোঁটে ঠোঁট মেলানোর জন্য যারা লোকলজ্জার তোয়াক্কা করে না, তাদের বলা হয় পিডিএ (পাবলিক ডিসপ্লে অব অ্যাফেকশন) যুগল।

 

ডিজিটাল ভালোবাসা-

এই যুগের ভালোবাসা ভিন্ন সুতোয় বোনা। বিশেষ করে, বর্তমান জেনারেশন তাদের মনের মানুষ খোঁজার ব্যাপারে অনেক বেশি স্বাবলম্বী, অনেক বেশি স্বাধীন। তাদের অনেকেই অনলাইন ডেটিংয়ে বিশ্বাসী, যেটা কিনা ফেস টু ফেস রোমান্সের পরিবর্তে স্ক্রিন টু স্ক্রিন রোমান্সকে হাইলাইট করে। সেটা কী রকম?

 

 

বর্তমান সময়ে পশ্চিমা জগতের তরুণ-তরুণীদের মধ্যে যে বিষয়টি বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে , তা হলো অনলাইন ডেটিং বা অনস্ক্রিন রোমান্স। আমেরিকার কয়েকটি জরিপে দেখা গেছে, ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী ছেলেমেয়েরা শুধু বন্ধু-বান্ধবী খোঁজার উদ্দেশ্যে অনলাইন ডেটিং সাইটগুলো ব্যবহার করে। অন্যদিকে ত্রিশোর্ধ্ব বয়সীরা বা মধ্যবয়সীরা তাদের মনের মানুষ খোঁজার লক্ষ্যে এটিতে সাইনআপ করে। ডেটিং সাইটগুলোর প্রায় ৫৪ শতাংশ রেজিস্টার্ড সদস্যরা বিশ্বাস করে।

আমেরিকার ২০ শতাংশ বিয়ে হয়ে থাকে এই অনলাইন ডেটিংয়ের মাধ্যমে। যারা অনলাইনে প্রেম করে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়, তাদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ বা ডিভোর্সের হার তুলনামূলক কম। কারণ, এই ডেটিং সাইটগুলো অনেক রকম ম্যাচিং অ্যালগরিদমের ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই করে সদস্যদের জন্য তালিকা তৈরি করে, যাতে কপোত-কপোতীরা তাদের সমমানসিকতার বন্ধু-বান্ধবীদের খুব সহজেই বেছে নিতে পারে।


নিজের ব্যক্তিগত কিছু তথ্য আর ছবি দিয়ে একটি প্রোফাইল খুলতে হয়। তারপর এই সাইটগুলো একের পর এক ওই সব তথ্যের সঙ্গে ম্যাচ করে সম্ভাব্য প্রেমিক-প্রেমিকার সন্ধান দিতে থাকে। পরবর্তী সময়ে এই বাছাইকৃত তালিকা থেকে ছেলেমেয়েরা তাদের পছন্দের মানুষের সঙ্গে ভিডিও চ্যাট চালিয়ে যায়। এরপর যদি কাউকে ভালো লেগে যায় বা সত্যি কোনো সম্ভাবনা থেকে থাকে, তাহলে একদিন সামনাসামনি দেখা করা হয়। আরও দূর অগ্রসর হলে গভীর প্রেম, অতঃপর বিয়ে। এভাবেই প্রযুক্তির বদলের সঙ্গে সঙ্গে হ”েছ ভালোবাসারও ভার্চ্যুয়াল পরিবর্তন।

 

 

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ওয়েডিং ডেস্টিনেশন

তুমিই রোদসী

  • স্বপ্ন দেখি নারী দিবসের দরকারই হবে না







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook