রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

জীবনযাত্রা

গ্রুমিংজীবনজীবনযাত্রারোমান্স রসায়ন

অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ বনাম লাভ ম্যারেজ

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ৩১, ২০২৩

শায়লা জাহান:

বলা হয় বিয়ে হলো দিল্লি কা লাড্ডু; যে খেলো সেও পস্তালো, আর যে খেল না সেও পস্তালো। আবার অনেকে তো এক কাঠি সরেস। তাদের মতে, পুরুষ মানুষ হল দু’প্রকারঃ জীবিত ও বিবাহিত। বিবাহিত মানে প্রকারন্তরেতে মৃত। যতই কৌতুকপূর্ণ মতামত চালু থাকুক না কেনো, যুগ যুগ ধরে বিয়ের প্রথাকে মঙ্গলজনক ও ঐতিহ্যবাহী বন্ধন হিসেবে মনে করা হয়। এটি এমন এক সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে নারী ও পুরুষ একত্রে এক নতুন জীবনের সূচনা করে। পারিবারিক বিয়ে নাকি প্রেমের বিয়ে, কিসে সুখী হয় বেশী? এই নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। আসো এই ব্যাপারে আমরাও কিছু জেনে নিই।

বিয়ে হচ্ছে আজীবন একসাথে থাকার প্রতিশ্রুতি এবং এটি কেউই লাক বায় চান্স বলে ছেড়ে দিতে পারেনা। তাই সঠিক সঙ্গী বেছে নেয়াতে সাফল্য ও সুখের চাবিকাঠি নিহিত। পারিবারিক বিয়ে এবং প্রেমের বিয়ে- দুটিই বিয়ে করার দুটি পথ হলেও এদের পক্ষে-বিপক্ষে মতামতের শেষ নেই। ১৮শতক পর্যন্ত পরিবারের জন্য একটি সম্পর্ক সংগঠিত করার প্রয়াসে অ্যারেঞ্জড ম্যারেজকে আদর্শ উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হতো। এই ব্যবস্থাগুলো সাধারণত পরিবারের অভিভাবক অর্থাৎ দম্পতির পিতামাতা বা দাদা-দাদি দ্বারা সম্পন্ন হতো। শুধু বর-কনে নয়, দুই পরিবারের সদস্যদের সম্মতি ও অংশগ্রহনের মাধ্যমে এই পারিবারিক বিয়েগুলো হয়ে থাকে। অন্যদিকে বর্তমানে তরুন প্রজন্মের কাছে লাভ ম্যারেজ অত্যধিক জনপ্রিয়। এখানে মূলত দম্পতির একক সিদ্ধান্ত থাকে এবং তারা তাদের পছন্দের কারও সাথে গাঁটছড়া বাঁধতেই বেশি পছন্দ করে।

পারিবারিক বিয়ে বনাম প্রেমের বিয়ে

পারিবারিক ভাবে বিয়ে বেশি টেকসই নাকি প্রেমের বিয়ে-এই বিতর্ক অনেক পুরনো। কেউ প্রেমের বিয়ে পছন্দ করেন তো কেউবা পারিবারিক বিয়ের পক্ষে। এই দু’ধরনের বিয়ে ব্যবস্থার তুলনামূলক কিছু সুবিধা-অসুবিধা উল্লেখ করা হলঃ

পারিবারিক বিয়ের সুবিধা

-এই ধরনের বিয়ে যেহেতু দু’পক্ষের পরিবারের সদস্যদের দ্বারা অনুমোদিত হওয়ার পরেই হয়, তাই এতে সম্পর্কের ভিত্তি হয় মজবুত এবং পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।

-যেহেতু এটি অভিভাবকদের পারস্পরিক সিদ্ধান্তে হয়ে থাকে, তাই প্রেমের বিয়েতে যতটা না সম্মান থাকে তার থেকে এতে দুজনের মধ্যে অনেক বেশি সম্মানের বিষয়টি জড়িত থাকে।

-অ্যারেঞ্জ ম্যারেজে, বাবা-মা একে অপরের পরিবার এবং তাদের সার্কেল সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। নিজ সন্তানের আগ্রহ, পছন্দ, অপছন্দ ইত্যাদি মাথায় রেখেই তার জীবনসঙ্গী বেছে নেন। তারা শুধুমাত্র এমন কাউকে বেছে নেবেন যার মূল্যবোধ, লক্ষ্য এবং বিশ্বাস সবকিছুই নিজেদের সাথেই সাদৃশ্যপূর্ণ থাকবে।

-নিঃসন্দেহে তুমি যখন অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ করছো, তখন তোমার কাছে অফুরন্ত সংখ্যক অপশন এভেলএবেল থাকবে। তুমি যে ধরনের ব্যক্তিকে বিয়ে করতে চাও এবং বাকি জীবন কাটাতে চাও তা বেছে নিতে পারো।

-আমেরিকান মনোবিজ্ঞানী ডক্টর রবার্ট এপস্টেইনের গবেষণা অনুসারে, প্রেমের বিয়েতে প্রেম সময়ের সাথে সাথে ম্লান হয়ে যায়, যেখানে পারিবারিক বিয়েতে প্রেম সময়ের সাথে বৃদ্ধি পায়।

-সর্বোপরি, এটি একটি পরিবারের সংস্কৃতি, জাতিসত্তা, নৈতিকতা এবং পরিচয়ের ঐতিহ্য বজায় রাখে।

পারিবারিক বিয়ের অসুবিধা

-অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ অনেকটা লটারির মতো। দম্পতিদের মধ্যে পরস্পরের জন্য প্রেম, অনুভূতি জাগতে পারে আবার নাও পারে।

-যেহেতু দু’জন সম্পূর্ণ ভিন্ন দুটি পরিবার থেকে আগত। বিয়ের আগে একে অপরকে চেনার পরিসর কম থাকে। তাই এক্ষেত্রে অনেকসময় পারস্পরিক এডজাস্টমেন্টের সমস্যা হতে পারে। আর এটা যদি বাড়তে থাকে তবে বিয়ে ভাঙার মতো অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার আবির্ভাব হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

-যদিও তুলনামূলকভাবে প্রেমের বিয়ের তুলনায় পারিবারিক বিয়েতে বিচ্ছেদের হার কম থাকে, তবুও বলা যায় না যে তারা সুখী দম্পতি। এমন অনেকেই আছে যারা বৈবাহিক জীবনে তেমন সুখী নয়, কিন্তু সামাজিক চাপ, লোকলজ্জার ভয়ে বিচ্ছেদের পথ বেছে নিতে না পেরে আত্মহত্যার মতো পথ বেছে নেয়।

-অ্যারেঞ্জড ম্যারেজের নামে আজও অনেক জায়গায় জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার প্রচলন রয়েছে।

লাভ ম্যারেজের সুবিধা

-এই বিয়েতে যেহেতু পার্টনার একে অপরকে আগে থেকেই ভালভাবে জানে তাই বিয়ের পরে তাদের মাঝে বোঝাপড়ার সমস্যা থাকেনা।

-প্রেম বিবাহ বিশেষভাবে উদার মনের ব্যক্তিদের জন্য বোঝানো হয়। এখানে নিজ সঙ্গী নির্বাচনের পুরোপুরি স্বাধীনতা রয়েছে।

-একে অপরের জন্য সবচেয়ে বড় সাপোর্টিভ হয়ে উঠবে। পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য একে অপরকে বিশ্বাস করা, সম্মান করা আগে থেকেই চলে আসে। তুমি যে ব্যক্তির সাথে সম্পর্কে ছিলে এবং যে তোমাকে খুব ভালবাসে তার চেয়ে ভাল উপায়ে আর কে সমর্থন করতে পারে।

লাভ ম্যারেজের অসুবিধা

-এই বিয়েতে বিচ্ছেদ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। কখনও কখনও দম্পতিদের মাঝে প্রেম ফুরিয়ে যায় বা অনেক সময় তারা একে অপরের প্রতি ক্লান্ত হয়ে যায়।

-এমন বিয়েতে অনেক সময় তোমার সঙ্গী নির্বাচন পরিবার এবং বন্ধুদের দ্বারা অনুমোদিত নাও হতে পারে। তাই তুমি যখন চলার পথে কোন সমস্যায় পড়বে, সেখান থেকে মুক্তির জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার মত কাউকে নাও পেতে পারো।

-সাংসারিক জীবনে বিরোধের দেখা দিতে পারে। বিয়ের আগে এবং  বিয়ের পরে লাইফ স্টাইল অনেক পরিবর্তন হয়ে যায় উভয়ের। এটা মেনে না নিতে পেরে শুরু হয়ে যায় সাংসারিক ঝামেলার।

-জীবনে যে শুধুমাত্র ভালোবাসাই প্রয়োজন তা কিন্তু নয়। পারিবারিক পটভূমি, অর্থনৈতিক অবস্থা, বেড়ে উঠার পরিবেশ এগুলোও বিবেচ্য বিষয়। তাই বিয়ের মত এতো বড় সিদ্ধান্তে আবেগ থেকেও বাস্তবতা যাচাই করা উচিৎ।

প্রেমের বিয়েই হোক কিংবা পারিবারিক বিয়ে, সম্পর্ক তখনই কাজ করবে যখন পরস্পরের মাঝে সৎ, শ্রদ্ধাবোধ থাকবে। আজকাল অবশ্য পারিবারিকভাবে বিয়ে ব্যবস্থায়ও একে অপরকে জানতে সময় নিচ্ছে। জীবনসঙ্গীকে জোর করে নয়, নিজের মনের মতো করে নির্বাচন করা উচিৎ।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
আইনআমরা গড়িজীবনযাত্রাবাতিঘরবাংলাদেশ ও বিশ্ববিশেষ রচনাসাফল্য

স্বীকৃতি পেল মায়ের একক অভিভাবকত্ব

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২৫, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

“কোন কালে একা হয়নি ক জয়ী, পুরুষের তরবারি

প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে, বিজয়লক্ষ্মী নারী”।

প্রাগৈতিহাসিক কাল ধরেই নারী পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সভ্যতার উন্মেষ। নারীদের ত্যাগ-তিতিক্ষা, তাদের অবদান সব কিছু নিয়েই সাহিত্যে রচিত হয়েছে অসংখ্য রচনার। কিন্তু বাস্তবতা কী বলে? সমাজের মানদণ্ডে প্রাপ্য স্বীকৃতির ক্ষেত্রে নারীরা কী আসলেই মূল্যায়িত না এগুলো সবই ফাঁকা বুলি সেটাই মূখ্য বিষয়।

নারীর পরিচয় কি? বাবা, ভাই, স্বামী বা ছেলে ছাড়া কি আসলেই তার আর কোন পরিচয় নেই? ভূললে চলবেনা এই নারীর মাঝেই বাস করে এক স্নেহময়ী মায়ের জাত, একটি জাতির ভবিষ্যৎ সন্তানকে সুষ্ঠুভাবে লালন-পালনের মাধ্যমে তাঁকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে সফলতার লক্ষ্যে পৌঁছাতে মায়ের অবদান কোন অংশে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। শুধু তাই নয় দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছুক এমন অনেক পিতার অবর্তমানেও নিজের সমস্ত সুখ জলাঞ্জলি দিয়ে সন্তানের একক অভিভাবক হিসেবে যোগ্যতার সাথে মায়ের ভূমিকা পালনের অনেক নিদর্শনও রয়েছে। মায়ের অভিভাবকত্বের এই যাত্রা শুরু হয় মূলত সন্তানকে গর্ভ ধারণের পর থেকেই। অভিভাবক হিসেবে সন্তানের পিতা-মাতার উভয়ের সম-মর্যাদা থাকলেও কিন্তু এতো কিছুর পরেও শিক্ষা ও চাকরি জীবনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বাবার পরিচয়ই যেন মূখ্য হয়ে উঠে। এক্ষেত্রে মায়ের ভূমিকা হয় উপেক্ষিত। কিন্তু আশার প্রদীপ জ্বলে উঠেছে। শিক্ষাসহ প্রয়োজনীয় সব ফরম পূরণের ক্ষেত্রে অভিভাবকের নামের জায়গায় বাবার নাম ছাড়াও আইনগতভাবে শুধুমাত্র মায়ের নাম ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত মঙ্গলবার ( ২৪ জানুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ যুগান্তকারী রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট আইনুন্নাহার লিপি ও অ্যাডভোকেট আয়েশা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিত দাশগুপ্ত।

ঐতিহাসিক এই রায়ের পথ কিন্তু এতো সুগম ছিলোনা। এর পেছনের ইতিহাস জানতে হলে আমাদের যেতে হবে পনের বছর পিছনে। ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০০৭ সালে এপ্রিল মাসে বিভিন্ন সংবাদপত্রে “বাবার পরিচয় নেই, বন্ধ হলো মেয়ের পড়ালেখা” শীর্ষক সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে। প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ফরমে তথ্য পূরণের ক্ষেত্রে বাবার নাম পূরণ করতে পারেনি ঠাকুরগাঁওয়ের এক তরুনী। এর ফলশ্রুতিতে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড সে তরুনীকে প্রবেশপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানায়। উল্লেখ্য যে, মা ও সন্তানকে কোনরুপ স্বীকৃতি না দিয়ে দায়িত্বহীন বাবার চলে যাওয়ার পর ওই তরুনী তার মায়ের একক ছত্রচ্ছায়ায় বড় হয়ে উঠে। পরবর্তিতে এই ঘটনার পর্যাপ্ত অনুসন্ধান করে মায়ের অভিভাবকত্ব প্রতিষ্ঠার দাবীতে, শুধু মায়ের নাম ব্যবহার করলে পরীক্ষার ফরম অপূর্ণ বিবেচিত হবে কেন; তা জানতে চেয়ে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এবং নারীপক্ষ যৌথভাবে জনস্বার্থে ২০০৯ সালের ২ আগস্ট রিট দায়ের করে। ওই রিটের প্রেক্ষিতে আদালত তখন রুল জারি করেছিলেন। একই সঙ্গে বর্তমানে কোন কোন শিক্ষাবোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বাবা-মা উভয়ের নাম সম্পর্কিত তথ্য বাধ্যতামূলকভাবে উল্লেখ করতে হয়, তার একটি তালিকা এবং যেসব যোগ্য শিক্ষার্থী তাদের বাবার পরিচয় উল্লেখ করতে অপরাগ তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সে সম্পর্কে প্রতিবেদিন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। ২০২১ সালের ৬ জুন মানবাধিকার সংস্থা ব্লাস্ট আবেদনকারীদের পক্ষে একটি সম্পূরক হলফনামা আবেদন আকারে দাখিল করে। রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে হাইকোর্ট রায় ঘোষনার জন্য এইদিন অর্থাৎ ২৪ জানুয়ারি ধার্য করেন।

কালজয়ী এই রায়ের ফলে এখন থেকে বাবার নামের পাশাপাশি আরও দুটি অপশন যুক্ত হলো। এতে করে কেউ চাইলে বাবার পরিচয় ব্যবহার না করেও ফরম পূরনের সময় মা কিংবা আইনগতভাবে বৈধ অভিভাবকের নাম লিখতে পারবেন। এ যেন মায়ের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা লাভে এক বড় ধরনের সাফল্য সংযোজিত হলো।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

স্লিপ অ্যাপনিয়া হলে কী করণীয়?

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২২, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

ঘুমের সময় নাক ডাকা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া, বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া এমন অনেক সমস্যার সাথেই আমরা অনেকেই পরিচিত। ঘুমের মাঝে এই ব্যাঘাত, ঘুম পূর্ণতা পেতে বাধার সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে দেখা যায় দিনের বেলায়ও সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব থেকে যায়। এই পরিস্থিতিকে বলা হয় ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ বা ‘নিদ্রাকালীন শ্বাসব্যাঘাত’।

ঘুম মানুষের একটি অত্যাবশ্যকীয় শরীরতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। পরিমিত ঘুম সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। হৃদরোগ সহ নানা রোগের ঝুঁকিও কমায়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে যদি শ্বাসনালী বাধাগ্রস্থ হয়, তবে ঘুমের মধ্যে সশব্দে নাক ডাকার শব্দ হয়। স্লিপ অ্যাপনিয়া হলো নাক ডাকার ও ঘুম কম হওয়ার সমস্যা। বিভিন্ন ধরনের স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে, তবে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ) হল সবচেয়ে সাধারণ ঘুম-সম্পর্কিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যাধি। এই ধরনের অ্যাপনিয়া ঘটে যখন গলার পেশী মাঝে মাঝে শিথিল হয় এবং ঘুমের সময় শ্বাসনালী ব্লক করে। সারা বিশ্বে সাধারণত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে দুই থেকে চারজন এই ওএসএ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগে থাকে। বাংলাদেশের শহুরে জনসংখ্যার এক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষ ও নারীদের ৪.৪৯ ও ২.১৪ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত। স্লিপ অ্যাপনিয়া হলে এর চিকিৎসা করা দরকার না হয় এটি আরও গুরুতর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

লক্ষণ

কিছু লক্ষণ রোগীর নিদ্রার সময় দেখা দেয়। ফলে রোগী নিজেও বুঝতে পারেনা। কিন্তু ঘুমানোর সময় পাশে কেউ থেকে সাহায্য করতে পারে যাতে তারা লক্ষণগুলো পরীক্ষা করতে পারে। এর লক্ষণ ও উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

-দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম

-জোরে নাক ডাকা

-হঠাৎ জেগে উঠার সাথে হাঁপাতে বা দম বন্ধ হয়ে যাওয়া

-মুখ ও গলা শুকিয়ে যাওয়া

-সকালে মাথাব্যথা

-মেজাজ পরিবর্তন যেমন বিষন্নতা বা বিরক্তি

-উচ্চ রক্তচাপ

ঝুঁকির কারণ

যে কারো অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে। যাইহোক, কিছু কারণ যা তোমাকে এই ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। যার মধ্যে রয়েছেঃ

-যাদের অতিরিক্ত ওজন রয়েছে তাদের স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

-এক্ষেত্রে বয়সও একটি ফ্যাক্ট। ৩০ থেকে ৬৫ বছর বয়সীদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার প্রবণতা বেশি। তবে, শিশুদের ক্ষেত্রে যাদের টনসিল বা অ্যাডিনয়েড আকারে বড় হয়, তাদেরও হতে পারে।

-মুখ ও করোটির গঠনগত ত্রুটি থাকলেও স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে।

-যারা ধূমপান করে, তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

-আরেকটি কারণ হতে পারে জেনেটিক বা বংশগত। হার্ট ফেইলিওর, অ্যাজমা, স্ট্রোক ইত্যাদি এ রোগ বাড়িয়ে দেয়।

করনীয় ও প্রতিকার

স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে এর ধরণ ও তীব্রতার উপর। অবস্থা যদি গুরুতর পর্যায়ে চলে যায় তবে সেক্ষেত্রে সিপিএপি মেশিন নামে একটি ডিভাইস ব্যবহার করতে হয়। এটি ঘুমের সময় মুখ বা নাকে পরা একটি মাস্কের মধ্যে বাতাস পাম্প করে শ্বাস-প্রশ্বাসের উন্নতি করে। আর যদি এটি হালকা পর্যায়ে হয়ে থাকে তবে নিজের কিছু লাইফ স্টাইল চেইঞ্জের মাধ্যমে এর প্রতিকার ব্যবস্থা নিজে নিজেই করা সম্ভব। যেমনঃ

-ওজন যদি বেশি হয় তবে তা কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

-নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। সক্রিয় থাকা নিজের ভেতর বিদ্যমান থাকা লক্ষণগুলোকে উন্নত করতে পারে এবং একটি স্বাস্থ্যকর ওজন রাখতে সাহায্য করতে পারে।

-ভালো ঘুমের অভ্যাস করতে হবে। শুতে যাওয়ার আগে চারপাশের পরিবেশ শান্ত এবং ঘুমের উপযোগী করে তুলতে হবে। প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া ও উঠার অভ্যাস করতে হবে।

-ধূমপান এবং অ্যালকোহল পানে অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করতে হবে।

-চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যে কোন ধরনের ঘুমের ঔষধ খাওয়া উচিৎ নয়। এগুলো স্লিপ অ্যাপনিয়াকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংসচেতনতাসমস্যা

সম্পর্কে ছন্দপতন, অতঃপর…

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২২, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

‘অবশেষে রাজা, রানী আর তাদের রাজকন্যা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলো’। রুপকথার কাহিনীগুলোতে প্রায় সব গল্পেরই পরিসমাপ্তি ঘটে একটি সুখী পরিবারের বুনন ঘটিয়ে। কিন্তু বাস্তবতা কখনোই রুপকথার কাহিনী নয়। এখানে সবার জীবনের গল্পেরও হ্যাপি এন্ডিংয়ের নিশ্চয়তা থাকেনা। মাঝে মাঝে সম্পর্কের দোলাচালে ঘটে ছন্দপতনের। কখনো ভেবে দেখেছো কী, জীবনের এই টানাপোড়েন ঘরের ছোট্ট সদস্যের উপর কি ধরনের প্রভাব ফেলে? 

 

ছোট্ট আরীবা, যে কিনা ছিল স্কুলে সবচেয়ে প্রাণচাঞ্চল্য ও ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট; হঠাৎ করেই মাসখানেক তার মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ক্লাসে অমনোযোগী, চুপচাপ একদম। একা থাকতেই যেন পছন্দ করে সে। তাকে ঘিরে ডিভোর্স, ব্রোকেন ফ্যামেলি এমন খটমটে শব্দ শুনতে পায় সে। কিছু বুঝে উঠতে না পারলেও আরো যেন বিষন্নতা ঘিরে ধরে তাকে। এটি একটি কল্পকাহিনী হলেও এমন ঘটনা আমাদের আশেপাশে অহরহ দেখা যাচ্ছে। বিবাহবিচ্ছেদ যেকোন পরিবারের জন্য একটি কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং বিষয় হতে পারে। একটি পরিবার ভেঙ্গে যাওয়া মানে তার সাথে সম্পর্কিত অনেকগুলো স্বপ্নের মৃত্যু। সম্পর্কের হঠাৎ এই পরিবর্তন পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপর যেমন প্রভাব ফেলে তেমনি ঘরে যে বাচ্চারা আছে তাদের উপরও সমান প্রভাব ফেলে। কিন্তু কখনও কখনও, পিতামাতারা তাদের সন্তানদের উপর এই বিচ্ছেদের পরবর্তী প্রভাবগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকেনা। দম্পতিদের জন্য তাদের সন্তানদের দীর্ঘমেয়াদী মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর বিবাহবিচ্ছেদের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে আত্মদর্শন এবং আলোচনা করা অপরিহার্য। সন্তানদের উপর কেমন প্রভাব পড়ে, আসো আমরা জেনে নিই।

খারাপ একাডেমিক পারফরম্যান্স

সম্পর্কের টানাপোড়েনের দরুন পরিবারের পরিবর্তনশীল গতিশীলতা তাদের বিভ্রান্ত করে তোলে। আর এই বিভ্রান্তিতা তাদের দৈনন্দিন ফোকাসে বাধার সৃষ্টি করে। যার ফলাফল পরে একাডেমিক পারফরম্যান্সে। শিশুরা যত বেশি বিভ্রান্ত হয়, তাদের স্কুলের কাজে মনোযোগ দিতে না পারার সম্ভাবনা তত বেশি।

আবেগীয় অনুভূতি

বিবাহবিচ্ছেদ একটি পরিবারের জন্য বিভিন্ন ধরনের আবেগকে সামনে আনতে পারে এবং এর সাথে জড়িত শিশুরাও আলাদা নয়। উত্তেজনা, নার্ভাসনেস, উদ্বেগ, ক্রোধ এমন আরও অনেক কিছুই এই পরিবর্তন থেকে আসতে পারে। ছোট বাচ্চাদের বয়স্কদের তুলনায় এটির প্রবণতা হয় বেশি কারণ তারা বাবা- মা উভয়ের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। একটি উদ্বিগ্ন শিশু তার পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে অসুবিধা বোধ করবে এবং সকলধরনের ক্রিয়াকলাপে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে যা একসময়ে তার কাছে খুবই লোভনীয় বলে মনে হতো।

বিষন্নতা

পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদের কারণে সৃষ্ট যন্ত্রণা এবং হৃদয়বিদারক অনুভূতি একটি শিশুকে বিষন্নতায় ফেলে দিতে পারে। বিষন্নতা একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং বিবাহবিচ্ছেদের সাক্ষী শিশুদের মধ্যে বিষন্নতা এবং সামাজিক প্রত্যাহারের ঘটনা বেশি থাকে। গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে শিশুদের মধ্যে বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদ একটি অবদানকারী কারণ হতে পারে।

অপরাধবোধের অনুভূতি

আমেরিকান একাডেমি অফ চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রি অনুসারে, অনেক শিশু তাদের পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদের পিছনে নিজেকে কারণ বলে মনে করে অপরাধবোধে ভোগে। এই অপরাধবোধ হতাশা, চাপ বাড়ায়; এতে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং দুঃস্বপ্নের মতো বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন

ছোট বাচ্চারা ঘন ঘন মুড সুইং এ ভুগতে পারে এবং এমনকি খিটখিটেও হতে পারে পরিচিত মানুষের সাথে যোগাযোগ করার সময়। তাদের রাগ অনুভূত কারণগুলোর বিস্তৃত পরিসরে পরিচালিত হতে পারে। বিবাহবিচ্ছেদ প্রক্রিয়াকারী শিশুরা তাদের পিতামাতা, নিজেদের, তাদের বন্ধুবান্ধব এবং অন্যদের প্রতি রাগ প্রদর্শন করতে পারে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে তারা প্রত্যাহার মোডে চলে যায়। যেখানে তারা কারও সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেবে এবং অন্যের সাথে মেশার পরিবর্তে একা সময় কাটাতে পছন্দ করবে।

ধ্বংসাত্মক আচরণের ভূমিকা

শিশুরা যখন বিবাহবিচ্ছেদের মতো এই ট্রমার মধ্য দিয়ে যায়, তখন অমিমাংসিত দ্বন্দ্ব ভবিষ্যতে অপ্রত্যাশিত ঝুঁকির দিকে নিয়ে যেতে পারে। তালাকপ্রাপ্ত পিতামাতার সাথে কিশোর-কিশোরীরা ঝুঁকিপূর্ণ আচরণে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তালাকপ্রাপ্ত বাবা-মায়ের কিশোর-কিশোরীরা আগে অ্যালকোহল পান করে এবং তাদের সমবয়সীদের তুলনায় বেশি অ্যালকোহল, গাঁজা, তামাক এবং মাদক সেবনের রিপোর্ট করে।

সন্তানের মানসিক চাপ কমানোর উপায়

বিবাহবিচ্ছেদের মতো এমন বিরুপ পরিস্থিতির সাথে শিশুরা কীভাবে সামঞ্জস্য করে তার জন্য পিতামাতারা একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে। এখানে কিছু কৌশল রয়েছে যা শিশুদের উপর মানসিক চাপ কমাতে পারেঃ

-বাবা-মায়ের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বাচ্চাদের সহজেই ট্রমাটাইজড করে দেয়। প্রকাশ্য শত্রুতা, একে অপরের উপর চিৎকার করা, হুমকি দেয়া শিশুদের আচরণের সমস্যার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সন্তানের কথা মাথায় রেখেই এগুলো পরিহার করা উচিৎ।

-বাবা-মায়ের দ্বন্দ্বের মাঝখানে বাচ্চাদের রাখা এড়িয়ে চলতে হবে। তাদের দুজনের মাঝে একজনকে বেছে নেয়া বা এমন কোনো কথা না বলা যাতে সন্তান নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। তাই সন্তানকে এত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে ফেলার আগে ভাবনাচিন্তা করা দরকার।

-বিবাহবিচ্ছেদ এমন এক বিচ্ছিন্ন ঘটনা যা কোন সুফলতা বয়ে আনেনা। কিন্তু বিচ্ছেদের পরেও সন্তানের কথা চিন্তা করেই একটি সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখা যেতে পারে। ইতিবাচক যোগাযোগ, পিতামাতা উভয়ের উষ্ণতা বাচ্চাদের উচ্চ আত্মসম্মান এবং একাডেমিক পারফরম্যান্স বিকাশে সহায়তা করে।

-পরিত্যাগের ভয় এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তা অনেক উদ্বেগের কারণ হতে পারে। সন্তানকে ভালোবাসা, নিরাপদ এবং সুরক্ষিত বোধ করতে সাহায্য করা তার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকিও কমাতে পারে।

-নিজের স্ট্রেস লেভেল কমানো তা সন্তানকে সাহায্য করার জন্য সহায়ক হতে পারে। সেজন্য স্ব-যত্ন নেয়া প্রয়োজন। আর দরকার হলে পেশাদারের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।

-ছবি সংগৃহীত

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসুস্থ মনস্বাস্থ্য

সাঁতারের যত উপকারিতা

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১৯, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

কথায় আছে, ‘একটি ফিট শরীর, একটি শান্ত মন এবং ভালোবাসায় পূর্ণ একটি ঘর- এই জিনিসগুলো কেনা যাবেনা, সেগুলো অবশ্যই অর্জন করতে হবে’। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে প্রতিদিন নিয়ম করে কিছুক্ষণ শরীরচর্চা করা আবশ্যক। আর সেই শরীরচর্চার মাঝে যদি সাঁতারকে অন্তর্ভূক্ত করা যায় তাহলে তো পুরো ষোলকলা পূর্ণ। জেনে নাও সাঁতারের যত উপকারিতার দিকসমূহ।

বিশেষজ্ঞরা একজন প্রাপ্তবয়স্ককে প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিটের মাঝারি কার্যকলাপ বা ৭৫ মিনিটের জোরালো কার্যকলাপ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি থেকে উন্নত মেজাজ পর্যন্ত, ওয়াটার ওয়ার্কআউট সুস্থতার জন্য অনেক সুবিধা নিয়ে আসে। তোমার ফিটনেস লেভেল যাই হোক না কেন, সাঁতার অনেক সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে। পুরো শরীর এবং কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের কাজ করার একটি চমৎকার একটি উপায় হলো এই সাঁতার। এটি যে সব সুবিধা প্রদান করে থাকেঃ

-গবেষণায় দেখায় যে, সাঁতার দীর্ঘজীবী করতে সাহায্য করতে পারে। ২০১৭ সালের ইংল্যান্ডের দ্বারা পরিচালিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, সাঁতারুদের প্রারম্ভিক মৃত্যুর ঝুঁকি ২৮ শতাংশ কম এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের কারণে যারা সাঁতার কাটেনা তাদের তুলনায় ৪১ শতাংশ কম মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল।

-সাঁতারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি সত্যিকার অর্থেই পুরো শরীর, মাথা থেকে পা পর্যন্ত কাজ করে। এর মাধ্যমে-

#শরীরের চাপ ছাড়াই হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করে

#পেশী টোনিং করে

#শক্তি তৈরি করে

#সহনশীলতা তৈরি করে

-অতিরিক্ত ক্যালোরি বার্ন করতে চাইলে এর বিকল্প কিছুই নেই। হার্ভাড মেডিকেল স্কুল অনুসারে, একজন ১৫৫ পাউন্ড ব্যক্তি এক ঘন্টায়, প্রায় ৪৩২ ক্যালোরি সাঁতার কাটার মাধ্যমে পোড়াতে পারে যেখানে মাঝারি গতিতে  হাঁটার মাধ্যমে বার্ন হয় ২৬৬ ক্যালোরি। ২০২১ সালে এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ১৬ সপ্তাহে সাঁতার কাটার মাধ্যমে শরীরের চর্বি এবং বিএমআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

-অ্যারবিক ব্যায়ামের অন্যান্য রুপের মতো সাঁতার কার্ডিওভাসকুলার ফিটনেস উন্নত করতে পারে। সাঁতারের ফলে হৃদপিণ্ড শক্তিশালী হতে পারে এবং ফুসফুস অক্সিজেন ব্যবহারে আরও দক্ষ হয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও, এটি হাইপারটেনশন, উচ্চ রক্তচাপ এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের অন্যান্য মার্কারের উন্নতির সাথে যুক্ত হয়েছে।

-বাত, আঘাত, অক্ষমতা সহ অন্যান্য সমস্যা যা উচ্চ প্রভাব ব্যায়ামকে কঠিন করে তোলে; তাদের জন্য সাঁতার হতে পারে একটি নিরাপদ ব্যায়ামের বিকল্প। এটি ব্যথা কমাতে এমনকি আঘাত থেকে পুনরুদ্ধারের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে। অস্টিওআর্থারাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির জয়েন্টের ব্যথা এবং দৃঢ়তা সাঁতারের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস হওয়ার প্রমান পাওয়া গেছে।

-ইনডোর পুলের আর্দ্র পরিবেশ হাঁপানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সাঁতারকে একটি দূর্দান্ত কার্যকলাপ করে তোলে। শুধু তাই নয়, খেলার সাথে যুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম যেমন শ্বাস ধরে রাখা, ফুসফুসের ক্ষমতা প্রসারিত করা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর নিয়ন্ত্রণ পেতে সাহায্য করতে পারে।

আবার কিছু গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, পুলে ব্যবহৃত ক্যামিকেল হাঁপানির ঝুঁকি বাড়াতেও পারে। তাই যদি হাঁপানির প্রবলেম থাকে তবে চিকিৎসকের সাথে আগে পরামর্শ করে নেয়া ভাল।

-সমস্ত ব্যায়াম একটি মেজাজ বুস্টার হতে পারে। এক্ষেত্রে ওয়াটার ওয়ার্কআউট একটি ভাল মেজাজ বজায় রাখতে পারে। মস্তিষ্কে সুখের রাসায়নিকের মুক্তির কারণে, বিশেষ করে এন্ডোরফিন, ডোপামিন এবং সেরোটোনিন নিয়মিত সাঁতার কাটা চাপ কমাতে পারে, উদ্বেগ কমাতে পারে এবং হতাশার বিরুদ্ধে লরাই করতে পারে।

-উন্নত ঘুম হল যে কোন ব্যায়ামের রুটিনে লেগে থাকার একটি সুবিধা। ব্যায়াম শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি পুনরায় সেট করতে সাহায্য করে এবং প্রাকৃতিক সার্কাডিয়ান ছন্দ পুনরুদ্ধার করে। এর মধ্যে সাঁতার হল একটি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনিদ্রার সমস্যাও বৃদ্ধি পায়। ইনসমনিয়ার মতো সমস্যায় যারা ভুগে থাকে, তাদের জন্য নিয়মিত সাঁতার কাটা ভালো একটি চিকিৎসা। এতে ঘুম ভালো হবে।

-বাচ্চাদের জন্য সাঁতার হতে পারে দারুন এক ওয়ার্কআউট। এটি হতে পারে তাদের জন্য একটি মজার ক্রিয়াকলাপ।

সতর্কতা

সাঁতার বেশিরভাগ মানুষের জন্যই নিরাপদ। তবে যেকোন ওয়ার্কআউটের মতোই সাঁতারের সাথে যুক্ত কিছু ঝুঁকি রয়েছে। তুমি যদি আহত হও বা কিছু চিকিৎসা শর্ত থাকে তবে সেক্ষেত্রে সাঁতার কাটার আগেই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেয়াই ভালো। সাধারণভাবে, যখনই একটি নতুন ব্যায়াম প্রোগ্রাম শুরু করবে তখন তোমার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা একটি ভাল ধারণা। এছাড়াও, সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যাযুক্ত লোকদের জন্য ক্লোরিনযুক্ত পুলের পানিতে নামা আরও সমস্যার সৃষ্টি করবে। সাঁতার কাটার আগে সবসময় পুলে বর্ণিত নির্দেশাবলি এবং লাইফগার্ডের নিয়মাবলি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
গ্রুমিংচলন বলনজীবনযাত্রাসচেতনতা

খাবার টেবিলের আদবকেতা

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১১, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

কোন ডিনার পার্টিতে আমন্ত্রিত হয়ে যাচ্ছো অথবা বাইরে রেস্টুরেন্টে খেতে যাচ্ছো, উপলক্ষ্য যাই হোক না কেন খাবার টেবিলের কিছু সাধারণ ম্যানার্স বা আচার-ব্যবহার রয়েছে যা সবাইকেই অনুসরণ করা উচিৎ। তোমার টেবিলের এই আদবকেতা আগত অতিথিদের উপর একটি দূর্দান্ত ছাপ রেখে যেতে পারে এবং এটি প্রত্যেককে তাদের খাবার উপভোগ করার সাথে সাথে খুশি এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে সহায়তা করবে।

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে- ‘ম্যানার্স মেকথ ম্যান’। এর মানে হল যে তোমার আচার-ব্যবহার তোমাকে তৈরি করে। তুমি কে এবং তোমার সম্পর্কে কারও মতামত গঠন করতে সহায়তা করে। আচার-আচরণ হল তুমি কীভাবে নিজেকে জনসমক্ষে উপস্থাপন করো এবং বিশেষ করে যখন তুমি খাচ্ছো। ডাইনিং শিষ্টাচারের ইতিহাস অনেক গভীরে প্রোথিত। অনেকের কাছে আনুষ্ঠানিক টেবিল সেটিংস হল একটি শিল্প ফর্ম এবং টেবিলের আচারগুলোকে হালকাভাবে নেয়া উচিৎ নয়। প্রাচীনতম পশ্চিমা খাবারের ঐতিহ্যগুলো প্রাচীন গ্রীকদের দ্বারা নথিভুক্ত করা হয়েছিল। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, অন্যদের সাথে খাওয়ার অভ্যাসকে আনন্দদায়ক করতে কয়েক শতাব্দী ধরে টেবিল শিষ্টাচার বিকশিত হয়েছে। টেবিল ম্যানার্স দেশ থেকে দেশে এবং সংস্কৃতি থেকে সংস্কৃতিতে পরিবর্তিত হয়। তবে সাধারণ কিছু আদব-কায়দা আছে যা সবাইকে অনুসরণ করা উচিৎঃ

-খাবার খেতে বসার আগে হাত পরিষ্কার আছে কিনা তা নিশ্চিত করে নাও। প্রয়োজনে হাত সাবান এবং পানি দিয়ে ভালো করে ধৌত করে নাও। যদি কোন বাচ্চাকে টেবিলের আচার-আচরণ শেখাও, তাহলে তাদের হাত কতক্ষণ ধুতে হবে এবং কতটা স্ক্র্যাব করতে হবে তা বলার জন্য এটি একটি মোক্ষম সময়। তবে কিছু ফ্যান্সি রেস্তোরাঁয় হাত ধোয়ার জন্য পানির একটি আলাদা পাত্রের বন্দোবস্ত থাকে।

-পরিবেশন করা খাবার দেখতে যতই সুস্বাদু বা লোভনীয় হোক না কেন, সবাই বসে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা ভালো আচরণ। আনুষ্ঠানিক সেটিংসে, প্রথমে খাওয়া শুরু করার জন্য যিনি হোস্ট তার জন্য অপেক্ষা করা ভালো। আর যদি কোন রেস্তোরাঁয় খেতে যাও, তবে প্রত্যেকে তাদের খাবার না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করাই শ্রেয়।

তবে এই নিয়মেরও ব্যতিক্রম আছে। হোস্ট যদি খাবার পরিবেশনের তদারকিতে থাকেন এবং সবার খাওয়া আগেই নিশ্চিত করতে চান, তবে সেক্ষেত্রে শুরু করা দেয়া যেতে পারে।

-খাবার টেবিলে যাওয়ার আগে হাতের মুঠোফোনটি সাইলেন্ট বা ভাইব্রেটের উপর রাখো এবং এটি একটি পার্স বা পকেটে রাখতে পারো।

-টেবিলে থাকা নির্দিষ্ট ন্যাপকিনটি খুলে তোমার পুরো কোলের উপর মেলে রাখো। এটিকে মসৃণ করো যাতে তা সমতল হয়। এটি তোমার হাত বা চামুচ থেকে পড়ে যাওয়া যেকোন খাবার ধরে ফেলবে। এছাড়াও কোলে রাখার কারণে এটি সহজে নাগালের মধ্যে থাকে, তাই যখন প্রয়োজন খাবারের সময় ন্যাপকিন ব্যবহার করে হাত বা মুখ মুছতে পারো। যদি খাবার মাঝে তোমাকে টেবিল ছেড়ে যেতে হয়, তোমার রুমালটি চেয়ারে রাখো, টেবিলে নয়। এটি সংকেত দেবে যে তুমি ফিরে আসবে এবং তোমার খাবার শেষ হয়নি।

-মুখ বন্ধ করে খাবার চিবিয়ে খাওয়া শোভন দেখায়। যদি তুমি তোমার খাবার চিবিয়ে থাকো এবং কেউ এমন কিছু বললো যার উত্তর তুমি দিতে চাও; সেক্ষেত্রে খাবার গিলে ফেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করো। মুখ খোলা রেখে চিবানো বা মুখ পূর্ণ হয়ে গেলে কথা বলাকে অনেকে অশোভন মনে করে।

-টেবিলে হাতের কনুই রেখে খেতে খুব আরামদায়ক হতে পারে। বিশেষ করে তুমি যদি ক্লান্ত হয়ে থাকো। কিন্তু তুমি যদি একটি ডিনার পার্টিতে থাকো বা রেস্তোরাঁয় থাকো, তবে কনুই টেবিল থেকে দূরে রাখাই ভাল আচরণ। কনুই টেবিলে রাখা অনেক জায়গা নেয় এবং এটিকে খারাপ আচরণ মনে করা হয়। একটি হাত তোমার কোলে রাখতে পারো যখন এটি তুমি খাবার খেতে ব্যবহার করছোনা।

-তুমি যখন কোন আনুষ্ঠানিক নৈশভোজ বা ফ্যান্সি কোন রেস্টুরেন্টে যাবে, সেখানে টেবিলে থাকা একাধিক কাঁটাচামচ, ছুরি দেখতে পাবে। তখন কোন চামচ, কাঁটা বা ছুরির ব্যবহার করতে হবে তা  নিয়ে বেশ বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। এক্ষেত্রে খাবারের কয়েকটি কোর্স হিসেবে কয়েকটি ভিন্ন চামচ এবং ফর্ক দিয়ে সেটিংস নিয়ে রাখো, যা সাধারণত বিভিন্ন আকারের হয়। আর যদি বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে একটি ডিনার পার্টিতে থাকো তবে সেখানে হয়তো একাধিক পাত্র নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা।

-রেস্তোরাঁয় খাবারের সময় সঠিকভাবে চামুচ ব্যবহার করে নাও। ডান হাতে ছুরি এবং বাম হাতে কাঁটা চামচ ধরো। ছোট ছোট টুকরো করে খাবার মুখে নাও। খাবার শেষে চামচ আর ছুরি প্লেটের মাঝ বরাবর রেখে দাও।

-নিজের খাবার যদি নিজেকে নিয়ে পরিবেশন করতে হয় তবে খাবারগুলো চারপাশে রেখে দাও। একবার তুমি পর্যাপ্ত খাবার নেয়ার পর, ডানদিকে থাকা ব্যক্তির কাছে পাত্রটি তুলে দাও। পরবর্তীতে আরও খাবারের প্রয়োজন হলে এবং তা যদি নাগালের বাইরে থাকে তাহলে তা ভদ্রভাবে দিতে বলো। কখনও অন্যজনকে অতিক্রম করে খাবার নিতে যাবেনা।

-একটি ডিনার পার্টি শুধুমাত্র খাবার দাবারের জন্যই নয়। খাওয়ার খাওয়ার সময় আশেপাশে অন্যান্য অতিথিদের সাথে কথা বলতে ভুলবেনা এবং চলমান কথোপকথন মনোযোগ সহাকারে শুনে নিজেও সে বিষয়ে যোগদান করো। তবে কথা শুরু করার আগে মুখে থাকা খাবার চিবিয়ে গিলে ফেলতে ভুলবেনা।

-খাবারের মাঝে ঢেঁকুর, হাঁচি, কাশি আসা স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে রুমাল বা হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখো এবং মুখ বন্ধ রাখো যাতে এটি জোরে না হয়।

-তুমি যদি পারিবারিক কোন নৈশভোজে থাকো তবে পরিষ্কারের জন্য হাত লাগাতে পারো। রান্নাঘরে আনতে প্লেট, ন্যাপকিন, চামচ সংগ্রহ করতে সাহায্য করো।

-খাবার শেষে হোস্টকে ধন্যবাদ দিতে ভূলবেনা। যদি কোন রেস্তোরাঁয় তোমাকে খাবার পরিবেশন করে দেয়া হয় তবে সার্ভারগুলোকেও ধন্যবাদ জানাও।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
চলন বলনজীবনজীবনযাত্রাদেহ ও মনবিদেশভালো থাকার ভালো খাবারস্বাস্থ্য

বয়স? সে তো শুধুই একটি সংখ্যা!

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১১, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

বর্তমানে পুরো দুনিয়ায় কোরিয়ান ড্রামা, মুভি, মিউজিক এবং টিভি শো’র ক্রেজ এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে গেছে। তাদের সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্য দেখে মানুষ বিস্মিত হয়। অনন্য সাংস্কৃতিক দিক ছাড়াও তারা নিখুঁত ত্বক এবং ফিট শরীরের জন্য সুপরিচিত। কোরিয়ান মহিলাদের বিশেষ করে একটি দর্শনীয়ভাবে ফিট ব্যক্তিত্ব রয়েছে যা সারা বিশ্বের সকলকে কৌতুহলী এবং বিস্ময়কর করে তুলেছে। কখনও মনে জেগেছে কি, তাদের দেখতে এমন কী করে হয়? কিইবা তাদের রহস্য? আসো একসাথে আজ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে নিই।

এশিয়ান সংস্কৃতিতে খাবারের অনেক কদর রয়েছে। এমনই একটি এশিয়ান দেশ যেখানে মানুষ খেতে খুবই ভালোবাসে তা হল কোরিয়া। শুনতে অদ্ভূত শোনালেও এটাই বাস্তব সত্য। ফুলকোর্স ভারী খাবার খাওয়া সত্ত্বেও, তাদের শরীর ফিট এবং স্লিম থাকে যা অনেকের জন্য স্বপ্ন। কোরিয়ান খাবার এবং জীবনধারা ওজন বজায় রাখতে এবং শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারা তাদের খাবার এবং ডায়েট সম্পর্কে খুব নির্দিষ্ট এবং কঠোর। যে খাবার গ্রহণ করে তাতে ভারসাম্যতা নিশ্চিত করে। উদাহরণস্বরূপ, তারা কার্বোহাইড্রেট থেকে ফ্যাট থেকে প্রোটিন পর্যন্ত গ্রহণ করে। তারা ওজন বাড়ায় না কারণ সবকিছুই সুষম অনুপাতে গ্রহণ করা হয়ে থাকে। তাদের খাদ্যাভ্যাস এবং লাইফস্টাইলের ব্যাপারে কিছু জেনে নিইঃ

শাকসবজি প্রাধান খাদ্য

অ্যাপেটাইজার, মেইন কোর্স, স্ন্যাকস অথবা যে কোন ঐতিহ্যগত কোরিয়ান খাবার উপভোগ করতে যাও না কেন, প্রথমেই টেবিলে বিস্তৃত পরিসরে শাকসবজির উপস্থিতি দেখতে পাবে। কোরিয়ান লোকেরা তাদের শাকসবজি পছন্দ করে, যা তাদের স্লিম এবং ফিট থাকার পিছনে অন্যতম প্রাধান কারণ। প্রদত্ত যে বেশিরভাগ শাকসবজি আঁশযুক্ত, স্বাস্থ্যকর এবং কম ক্যালোরি যা ওজন কমাতে দারুনভাবে সাহায্য করে। শাকসবজিতে থাকা ফাইবার তৃপ্তি বোধ করতে সাহায্য করে ও অন্যান্য উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখে।

ফার্মেন্টেড বা গাঁজানো খাবারের অন্তর্ভুক্তি

তাদের সমস্ত খাবারের সাথে একটি সাইট ডিশ থাকে, যা সাধারণত গাঁজন করা খাবারের একটি সিরিজ। কিমচি, সেই গাঁজনযুক্ত মশলাদার বাঁধাকপি যা বিশ্বব্যাপী ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই জাতীয় খাবারগুলো অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য দূর্দান্ত এবং তা হজমেরও উন্নতি করে। এটি রোগক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করার পাশাপাশি ওজন কমাতেও কাজ করে। অনেক ধরনের কিমচি রয়েছে এবং সবকিছুই বাঁধাকপি থেকে তৈরি হয়না। মূলা, শসা সহ প্রায় যেকোন সবজি দিয়েই হয়ে উঠতে পারে কিমচি।

সামুদ্রিক খাবার

কোরিয়াকে তিন দিকে সাগর ঘিরে রেখেছে। সামুদ্রিক খাবার কোরিয়ার অন্যতম প্রধান খাবার। তাদের দুর্দান্ত চুল, ত্বক এবং স্বাস্থ্যের পিছনে একটি প্রধান কারণ হল সামুদ্রিক খাবারের প্রতি তাদের ভালোবাসা। গ্রিলড ম্যাকেরেল, স্কুইড, অক্টোপাস তাদের অনেক প্রিয় আইটেম। চর্বিযুক্ত মাছ ব্যতীত, যা স্বাস্থ্যের জন্য দূর্দান্ত; সামুদ্রিক শৈবাল একটি সাধারণ কোরিয়ান খাদ্য আইটেম যা তারা স্যুপ থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুতে অন্তর্ভুক্ত করে। ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ, সামুদ্রিক শৈবালের মধ্যে প্রচুর ফাইবার আছে, যা হজমের জন্য দূর্দান্ত এবং তোমাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য পূর্নতা অনুভব করে।

ঘরে তৈরি খাবারের প্রাধান্য

কোরিয়ান মহিলাদের ফিট শরীরের পিছনে মূল কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হল তাদের খাবারের পছন্দগুলো। তুমি যখন ওজন কমাতে মনোস্থির করো সেক্ষেত্রে ঘরে তৈরি খাবারের চেয়ে ভালো আর কিছুই নেই। প্রক্রিয়াজাত, অস্বাস্থ্যকর খাবার, ফাস্টফুড- এগুলো শুধুমাত্র ওজন বাড়াতে দায়ী নয়, দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। কোরিয়ানরা বাইরের পরিবর্তে ঘরের খাবারের প্রতি বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তাদের শরীরের জন্য ভাল খাবার সম্পর্কে তারা সচেতন এবং সেই অনুযায়ী তারা সেভাবে খাবার নির্বাচন করে থাকে।

চিনি কম, উপকারিতা বেশি

কোরিয়ান খাবার বেশিরভাগই মশলাদার এবং টক। তারা তাদের খাদ্য তালিকায় ভারী মিষ্টি অন্তর্ভূক্ত করেনা, তাদের মিষ্টান্নগুলো ফলের রস, এক বাটি তাজা ফল বা মিষ্টি ভাতের পানীয়ের মতো হালকা। এগুলো শরীরের ওজন বাড়ায় না। বিখ্যাত কোরিয়ান ডেজার্টগুলোর মধ্যে পাটবিংসু সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর। এটি চাঁচা বরফ দিয়ে তৈরি এবং এতে কোন কৃত্রিম রঙ নেই। এটি স্বাস্থ্যকর করতে তারা এতে প্রচুর ফল ব্যবহার করে।

সোডা কে না

তারা কোক এবং সোডা তেমন খায়না, তার পরিবর্তে প্রচুর চা খায়। বার্লি চা, যাতে অনেক কিছুই আছে। এটির স্বাদ অদ্ভুত তবে এটি একটি চিনিহীন চা। এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। এটি ঘুমের অভ্যাস উন্নত করতে, হজমে সাহায্য করে এবং রক্ত সঞ্চালনেও কাজ করে।

হাঁটা, হাঁটা এবং হাঁটা

বেশিরভাগ কোরিয়ানরা হাঁটা পছন্দ করে। তারা তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য পাবলিক পরিবহণের পরিবর্তে তাদের পা ব্যবহার করতে পছন্দ করে। একটি সক্রিয় জীবনধারা নেতৃত্ব দেওয়া বেশিরভাগ কোরিয়ান মহিলাদের সুস্থ রাখে এবং তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখে। তাদের জন্য দিনে ১০,০০০ পদক্ষেপ সম্পূর্ণ করা কোন বড় ব্যাপার নয়। আমরা সবাই জানি শারীরিক ক্রিয়াকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন এটি আমাদের শরীরের ওজন এবং আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আসে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংসচেতনতাসমস্যা

বয়স যখন দুই

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ৯, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

এমন কখনো খেয়াল করে দেখেছো কি বাসার যে ছোট্ট সদস্যটি রয়েছে, যে সদ্য কথা বলতে শিখেছে, আধো আধো বোলে ঘরকে মাতিয়ে রেখেছে সেই বাচ্চার রাগ, জেদে সবার অবস্থা নাজেহাল। একদিকে সে চায় তার সব কাজ সে নিজে নিজেই করতে আবার অন্যদিকে সেই প্রচেষ্টার বিফল ঘটলে হয়ে যায় হতাশ, পরবর্তীতে যা রুপ নেয় বদমেজাজে। শিশুর জীবনের এই টার্মকে বলে টেরিবল টু। অনেকেই এই শব্দটির সাথে পরিচিত না থাকলেও বাচ্চার এই আচরণগত পরিবর্তনের সাথে কম বেশি সবাই পরিচিত।

টেরিবল টু বা ভয়ংকর দুই শব্দটি দীর্ঘকাল ধরে ২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে বাবা মায়েরা যে পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করে তা বর্ণনা করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। সন্তানের মেজাজ এবং আচরণের দ্রুত পরিবর্তন এবং তাদের সাথে মোকাবেলা করার অসুবিধার কারণে একজন পিতামাতা এই বয়সটিকে ভয়ানক বলে মনে করতে পারে। এটি একটি শিশুর বিকাশের স্বাভাবিক পর্যায়কে বোঝায় যেখানে একটি শিশু নিয়মিতভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের উপর নির্ভরতা এবং স্বাধীনতার জন্য নতুনভাবে বেড়ে উঠার আকাঙ্ক্ষার মধ্যে বাউন্স করতে পারে। লক্ষণগুলো শিশুর মধ্যে ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন এবং মেজাজ ক্ষুব্ধ হতে পারে। এক মিনিটে দেখা যাবে বাচ্চাটি পরম মমতায় তোমাকে আঁকড়ে ধরে থাকবে আবার পরের মিনিটেই দেখা যাবে সে বিপরীত দিকে দৌড়াচ্ছে। টেরিবল টু বলা হলেও এই ধরনের আচরণ প্রায়শই ১৮ মাস থেকে শুরু হয় এবং তা ৪ বছর বয়স পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

এটি কেন হয়?

২ বছর বয়সের আশেপাশে শিশুরা সাধারণত অনেক ধরনের বড় উন্নয়নমূলক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। এই সময় তাদের মধ্যে নতুন সব ধরনের দক্ষতার বিকাশ পরিলক্ষিত হয়। যেমন জাম্পিং, ক্লাইম্বিং, ব্লক স্ট্যাক করা, ক্রেয়ন বা মার্কার দিয়ে আঁকিবুঁকি করা ইত্যাদি। এই পর্যায়ে সে চাইবে স্বাভাবিকভাবেই নিজের একটা পরিবেশ অন্বেষণ করতে এবং নিজের মতো করে সব কিছু করতে। এটা সবই স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত আচরণ। কিন্তু এই সময় তাদের মৌখিক, শারীরিক এবং মানসিক দক্ষতা ভালোভাবে বিকশিত না হওয়ায়, সন্তান পর্যাপ্তভাবে যোগাযোগ করতে বা কোনো কাজ করতে ব্যর্থ হয়। তাদের চাহিদা এবং তা প্রকাশের অক্ষমতার জন্য তারা তখন এই ধরনের আচরণ করে থাকে।

লক্ষণ

সকল বাচ্চাই সমান নয় এবং সমভাবে তারা আচরণও করেনা। তাই এই টেরিবল টু’র লক্ষণগুলো বাচ্চা থেকে বাচ্চাদের মধ্যে আলাদা। তবে কিছু আচরণগত নিদর্শন রয়েছে যা পিতামাতাকে সংকেত দিতে পারে যে তাদের সন্তান এই জটিল বিকাশের পর্যায়ে থাকতে পারে। যেমনঃ

-ভাইবোন বা খেলার সাথীদের সাথে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঝগড়া করা

-রাগ হলে লাথি, থুতু বা কামড় দেয়া

-ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন যেমন এই হাসি তো এই কান্না

-মনোযোগ আকর্ষনের জন্য চিৎকার চেঁচামেচি করা, হাতের কাছে জিনিস ছুঁড়ে ফেলা

টেরিবল টু-এর সাথে আসা উত্তেজনা এবং অবাধ্যতা স্বাভাবিক যা সময়ের সাথে সাথে চলে যেতে পারে। কিন্তু তুমি যদি মনে করো যে আচরণগুলো বেশ দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং তা বাচ্চার খাওয়া, ঘুম বা ডে কেয়ারে যোগদান করাকে প্রভাবিত করছে, তখন একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে নিলে ভালো হয়। এক্ষেত্রে তারা সন্তানের আচরণ সংশোধন করার জন্য টিপস দিতে পারেন এবং মানসিক স্বাস্থ্য মূল্যায়নের প্রয়োজন হলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে পারেন।

টেরিবল টু ম্যানেজের টিপস

সন্তান এবং নিজেকে এই ভয়াবহ টার্মটি পরিচালনার জন্য কিছু টিপস ফলো করতে পারোঃ

-বাচ্চার ঘুমের সময়সূচী রাখো। সন্তান যখন ক্লান্ত থাকে তখন এই ধরনের আচরণ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই তার ঘুমের সময় যতটা সম্ভব সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার চেষ্টা করো। ভালো ঘুম ও বিশ্রাম তাদের মেজাজ স্থির রাখতে সাহায্য করবে।

-একই কথা খাবারের বেলায়ও প্রযোজ্য। বাচ্চারা যখন ক্ষুদার্ত অনুভব করে তখন বাইরে যাওয়া এড়াতে চেষ্টা করো। আর যদি খাবারের সময় সন্তানের সাথে বাইরে থাকতেই হয় তবে খাবার প্যাক করে সাথে নিয়ে রাখতে পারো।

-তুমি যে আচরণগুলো অনুমোদন করবে সেগুলোর প্রশংসা করো এবং যেগুলো থেকে বিরত রাখতে চাও সেগুলোকে উপেক্ষা করো।

-সন্তানের সামনে অহিংস আচরণ উপস্থাপন করতে চাইলে তাদের আঘাত করবেনা এবং তাদের উপর চেঁচামেচি করা এড়াতে হবে।

-তাদের কোন কিছু করতে পুননির্দেশ বা বিভ্রান্ত করো। বাচ্চা যখন উত্তেজিত হয়ে চেঁচামেচি করা শুরু করতে থাকে তখন তাদের মনোযোগ অন্য দিকে ডাইভার্ট করার জন্য মজার বা আকর্ষনীয় কিছু দেখানো বা করার নির্দেশ করো।

-বাচ্চার জন্য একটি নিরাপদ, শিশুরোধী পরিবেশ নিশ্চিত করো। ভঙ্গুর বা মূল্যবান বস্তু তার হাতের নাগালে থাকতে পারে এমন জায়গায় রাখবেনা।

-বাচ্চাকে সীমিত পছন্দ করার ব্যাপারে অফার করো। উদাহণস্বরুপ, সে কি খেতে চায় তা জিজ্ঞাসা না করে তাদের আপেল বা কমলা থেকে একটি বেছে নিতে বলতে পারো। এটি শিশুকে অনেক পছন্দের সাথে যোগ না করে নিয়ন্ত্রণের অনুভূতি দেয়।

-সর্বোপরি নিজেকে শান্ত রাখো। এমন পরিস্থিতিতে যে কারোরই মেজাজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু নিজেও ধৈর্য্য হারা হয়ে গেলে এতে আরও বিপত্তি বাড়ে। তাই যখনই পরিস্থিতি তোমাকে রাগের প্রান্তে নিয়ে আসে, তখন কিছুক্ষন বসে থেকে গভীরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার জন্য সময় নাও। এটি তোমাকে শান্ত করতে এবং সহানুভুতির সাথে সন্তানের সাথে যোগাযোগ করতে সহায়তা করবে।

সন্তান যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা গ্রহণ করে এবং তাকে বা তার ভালোবাসা এবং সম্মান দেখানোর মাধ্যমে, তুমি তোমার সন্তানকে এই কঠিন পর্যায়ে সাহায্য করতে পারবে এবং তাদের মাঝে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে সহায়তা করতে পারবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রারূপ ও ফ্যাশন

ডার্ক সার্কেল?

করেছে Suraiya Naznin জানুয়ারী ৯, ২০২৩

নদী ইসলাম-

ডার্ক সার্কেলের সমস্যা আড়াল করতে হাইলাইটার খুবই কার্যকর। চিকবোনে হালকা করে হাইলাইটার লাগিয়ে নিতে হবে। এতে ডার্ক সার্কেলের সমস্যাও চোখে পড়বে না এবং গ্ল্যামারাস দেখতে লাগবে।

‘ডার্ক সার্কেল’ কথাটা খুব ছোট শোনালেও বিষয়টা কিš‘ একেবারেই ছোট নয়। যতই সুন্দর করে সাজগোজ করো না কেন, চোখের নিচে সামান্য ডার্ক সার্কেল পুরো লুকটাই মাটি করে দিতে পারে। পুজো আসতে আর মাত্র কয়েকটা দিনই বাকি। বাড়িতে বসে আন্ডার আই ক্রিম মেখে যতই যত্ন করো না কেন, কাছে আসা উৎসবের আগে ডার্ক সার্কেলকে নির্মূল করা একেবারেই সম্ভব নয়। তাই দরকার চটজলদি উপায়।

 

মেকআপ করার আগে ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করবে। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। ঠান্ডা পানিতে মুখ ধুলে ত্বকে রক্ত চলাচলের পরিমাণ কমে যায়। ফলে মুখের অথবা চোখের নিচের ফোলাভাবও কমে যায়। এরপর পুরো মুখে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে। চোখের নিচের অংশে আই ক্রিম অথবা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারো। এর ফলে চোখের চারপাশের ত্বকের শুষ্কতা কমবে এবং মেকআপও ভালো করে বসবে।

মেকআপের শুরুতেই মুখে এবং চোখের নিচের অংশে প্রাইমার লাগাও। এতে ত্বক টানটান থাকে এবং মেকআপ অনেকক্ষণ ভালো থাকবে। ত্বক যদি শুষ্ক হয়, তাহলে ময়েশ্চারাইজিং প্রাইমার লাগাবে। ত্বক নিষ্প্রাণ ও অনুজ্জ্বল হলে ইলিউমিনেটিং প্রাইমার ভালো। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ম্যাট প্রাইমার ব্যবহার করতে পারো। অনেকের ত্বক একটু লালচে ধরনের হয়। তাদের এমন প্রাইমার বেছে নিতে হবে, যাতে সামান্য গ্রিন টিন্ট আছে। এতে ত্বকের লালচে ভাব অনেকটা কমে যাবে। এরপর ফাউন্ডেশন লাগাও। তবে মেকআপ করার সময় এমন ফাউন্ডেশন নেবে, যা স্কিন টোনের সঙ্গে মানানসই হবে। কখনোই নিজের কমপ্লিকশনের থেকে হালকা শেডের ফাউন্ডেশন নেবে না।

এরপর কনসিলারের পালা। কনসিলার সব সময় স্কিনটোনের থেকে হালকা শেডের নেবে। চোখের নিচে ডার্ক সার্কেল অংশে কনসিলার লাগিয়ে মেকআপ ব্রাশ অথবা স্পঞ্জ দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নেবে। খেয়াল রাখবে, কনসিলার যেন স্কিনের সঙ্গে সমানভাবে মিশে যায়। কনসিলার যাতে অনেকটা সময় থাকে, তার জন্য পাউডার ব্রাশ দিয়ে চোখের নিচের অংশে কনসিলার লাগানোর পর কমপ্যাক্ট পাউডার লাগিয়ে নেবে। এতে চোখের নিচের ফোলাভাব অনেকটা কম দেখাবে এবং কনসিলারও অনেকক্ষণ থাকবে। এরপর পুরো মুখে কমপ্যাক্ট লাগিয়ে নেবে।

দিনের বেলা বাইরে বেরলে খুব ডার্ক আইশ্যাডো না লাগানোই ভালো। হালকা পিচ, পিঙ্ক অথবা ব্রাউন আইশ্যাডো ভালো লাগবে। আইশ্যাডো লাগানোর পর চোখের কোনার অংশে সাদা অথবা বেজ আইশ্যাডো লাগিয়ে নেবে। এর সঙ্গে সরু করে আইলাইনার পরতে পারো। মাসকারা অবশ্যই লাগাবে। এতে চোখ উজ্জ্বল ও বড় দেখতে লাগে। ডার্ক সার্কেলের সমস্যা আড়াল করতে হাইলাইটার খুবই কার্যকর। চিকবোনে হালকা করে হাইলাইটার লাগিয়ে নেবে। এতে ডার্ক সার্কলের সমস্যাও চোখে পড়বে না এবং গ্ল্যামারাস দেখাবে।

সবশেষে কমপ্লিট লুকের জন্য চাই লিপস্টিকের টাচ। দিনের বেলা বের হলে লিপস্টিকের হালকা শেড ব্যবহার করতে পারো। রাতে ডার্ক শেড চলতেই পারে। তবে কী রঙের পোশাক পরছ, সেদিকে একটু খেয়াল রাখবে। মেকআপ ছাড়াও ডার্ক সার্কলের সমস্যা দূর করতে নিয়ম করে ত্বকের একটু যত্ন নিতে হবে। দিনের বেলায় বাইরে বের হলে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাবে। চোখের পাতায়ও সানস্ক্রিন লাগাতে ভুলবে না। কারণ, চোখের চারপাশের অংশ খুবই সেনসিটিভ হয়, তাই এই অংশের ত্বক সহজেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সহজেই ট্যানও পড়ে যায়

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রাবিদেশহেঁসেল

আমেরিকায় উদ্ভাবিত জনপ্রিয় যত খাবার

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ৯, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

সারাবিশ্বে যত ধরনের রন্ধনপ্রণালী প্রচলিত রয়েছে তাতে বেশিরভাগই বিভিন্ন সংস্কৃতির খাবার এবং কৌশলের মিশেল জড়িয়ে রয়েছে। আমেরিকান খাবার বলতেই আমাদের চোখে ভাসে অত্যধিক চিজি, চর্বিযুক্ত, চিনিযুক্ত খাবারের নাম। বার্গার, লবস্টার রোল, চিজস্টেক, বারবিকিউ এমন আরও অনেক কিছুই আছে লিস্টে যার অরিজিন আমেরিকা। ফ্রাইড চিকেন বা ডিপ-ডিশ পিজ্জাকে পাশে সরিয়ে এমন কিছু খাবার আছে যা মনে হয় যে সেগুলো অন্য দেশের হতে পারে বা তাতে বহিরাগত শিকড় থাকতে পারে। আজ আমরা এমন কিছুর আইটেমের ব্যাপারে জানবো যা আদতে খোদ আমেরিকায় উদ্ভাবিত হয়েছিল।

ক্যালিফোর্নিয়া রোল

জাপানিজ খাবারের নাম বলতে বললে বেশিরভাগ মানুষই নরি সামুদ্রিক শৈবালে মোড়ানো সুশি’র কথা বলবে। এটি জাপানের ঐতিহ্যবাহী খাবার। তবে সব সুশি রোল কিন্তু জাপান থেকে আসেনা। ক্যালিফোর্নিয়া রোল তেমনই এক আইটেম। তবে এর সুনির্দিষ্ট ইতিহাস অনিশ্চিত। লস অ্যাঞ্জেলেস এবং ভ্যাঙ্কুভার, ব্রিটিশ কলম্বিয়ার শেফরা উভয়ই খাবারটি আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি করেন। এলএ ভিত্তিক শেফ কেন সিউসা ক্যালফোর্নিয়া রোলের মালিকানা দাবি করেছেন এবং ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের নিবন্ধ থেকে এই খাবারের প্রথম নথিভুক্ত সংস্করণ তাঁর কাছে রয়েছে। অ্যাভোকাডো, শসা এবং নকল কাঁকড়া দিয়ে তৈরি সেই রোলটির অভ্যন্তরে সামুদ্রিক শৈবাল রয়েছে। মার্কিন আবিষ্কৃত সুশি রোলগুলো জাপানি সুশির চেয়ে স্বাদে আরও স্ট্রং এবং এতে আরও বেশি উপাদানের মিশ্রণ থাকে। অন্যান্য অল-আমেরিকান সুশি রোলের মধ্যে রয়েছে মশলাদার টুনা রোল, ফিলাডেলফিয়া রোল এবং রেইনবো রোল।

চিমিচাঙ্গা

যদিও এই খাবারের আইটেমটি দেখতে এবং স্বাদে মেক্সিকো খাবারের মতো হতে পারে, চিমিচাঙ্গা আসলে অ্যারিজোনার টাকসনের এল চারোতে উদ্ভাবিত হয়েছিল বলে জানা গেছে। কথিত আছে যে, রেস্তোরাঁটির প্রতিষ্ঠাতা মনিকা ফ্লিন ঘটনাক্রমে একটি গভীর ফ্রায়ারের মধ্যে একটি বুরিটো ফেলেছিলেন। তিনি একটি স্প্যানিশ অভিশাপ শব্দ উচ্চারণ করলেন কিন্তু তারপর নিজেকে থামিয়ে চিৎকার করলেন চিমিচাঙ্গা বলে। এছাড়াও ফিনিক্সের ম্যাকায়োর মেক্সিকান টেবিলটিও দাবি করে যে এর প্রতিষ্ঠাতা উডি জনসন। যাই হোক, সকল বিতর্কের নির্বিশেষে এই আইটেমটি নিঃসন্দেহে অবশ্যই অ্যারিজোনান এবং আমেরিকার অন্যতম আইকনিক খাবার।

ফজিটাস

স্প্যানিশ শব্দ ফাজা, যার অর্থ স্ট্রিপ থেকে উদ্ভূত; এবং ফাজিটা হলো মাংসের ছোট স্ট্রিপের একটি খাবার যা বেল পেপার এবং পেয়াজ দিয়ে উচ্চ তাপে রান্না করা হয় এবং ময়দার টর্টিলাতে পরিবেশন করা হয়। ফাজিটাস মূলত টেক্সাসের চকওয়াগন শেফদের দ্বারা গবাদি পশুর চালনায় রান্না করা ট্রেইল খাবার ছিল। আধুনিক সংস্করণগুলো, যা শুধুমাত্র ২০ শতকের শেষের দিকে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলো, তা শুধুমাত্র গরুর মাংস দিয়ে নয় মুরগির মাংস, চিংড়ি এবং অন্যান্য প্রোটিন দিয়ে তৈরি করা হয় এবং সধারণত গরম ধাতব থালায় সিজলিং করা হয়।

কিউবান স্যান্ডউইচ

শুধুমাত্র একটি দেশের নামের সাথে মিল রেখে নামকরণের অর্থ এই নয় যে তা সেই দেশী। রেসিপিটিতে রোস্ট করা পোর্ক, হ্যাম, সুইস পনির এবং সরিষা মিশ্রিত আচারের ব্যবহার করা হয় এবং তা একটি পাতলা, মুচমুচে ক্রাস্ট সহ একটি ব্যাগুয়েটের মতো রুটি সহকারে পরিবেশন করা হয়। কিউবান স্যান্ডউইচ ১৯ শতকের শেষের দিকে ফ্লোরিডায় কী ওয়েস্টে অভিবাসী সিগার প্রস্তুতকারকদের দ্বারা তৈরি করা হয়েছিলো এবং পরে তাম্পায় তা পরিমার্জিত হয়েছিলো।

ফরচুন কুকি

তিল বীজের স্বাদযুক্ত ফরচুন কুকিজের মতো একটি মিষ্টান্ন প্রথম ১৯ শতকে জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজধানী কিয়োটোতে তৈরি করা হয়েছিলো। এগুলো ও- মিকুজি নামক কাগজের স্লিপের চারপাশে ভাঁজ করা হয়েছিলো যাতে ছোট ছোট রে ব্লেস ওয়ার্ড এবং আর্থিক বা ব্যক্তিগত ভবিষ্যৎ বানী থাকতো। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় যখন জাপানি আমেরিকানদের দ্বারা আটক করা হয়েছিলো এবং তাদের ব্যবসা হারিয়েছিলো, তখন চীনা বেকাররা রেসিপিটি পরিবর্তন করে। ১৯৭৩ সালে শাক ই নামে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা আমেরিকান স্নাতক তাদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভাঁজ করার জন্য একটি মেশিন আবিষ্কার করে কুকিগুলোর ভাগ্য পরিবর্তন করে দেয়।

ফ্রেঞ্চ ড্রেসিং

ফরাসিরা প্রায় সময়ই ভিনাইগ্রেট দিয়ে তাদের সালাদ ড্রেসিং করে থাকে। এতে অলিভ অয়েল এবং ওয়াইন ভিনেগারের ইমালসন, সরিষা, লবণ, রসুন, বিভিন্ন ভেষজ মিশান হয়। মিষ্টি, ক্রিমি এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফ্রেঞ্চ ড্রেসিং হিসেবে বিক্রি হয়।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • বয়স সবে উনিশ-কুড়ি

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook