রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

রোমান্স রসায়ন

এই সংখ্যায়প্রধান রচনামনের মত ঘররোমান্সরোমান্স রসায়নসুস্থ মন

ভালোবাসা আর ভালো বাসা দুটোই বেশ দুর্লভ!

করেছে Wazedur Rahman ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০২০

ভালোবাসা আর ভালো বাসা দুটোই বেশ দুর্লভ! অন্তত আজকের এই দুনিয়ায় কথাটা একশ ভাগ খাঁটি। ভালোবাসা বলতে যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম আর হোয়াটসঅ্যাপের ইমোজিতে বন্দী এক সম্পর্কের নাম; ঠিক তেমনি অভিজাত এলাকার খুপরিঘরে কোনোমতে ঠাঁই নেওয়াটাই ভালো বাসার শিরোনাম। হ্যাঁ, আজকের যুগে ভালোবাসা আর ভালো বাসা তাই দুর্লভ একটা ব্যাপারই বটে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা অজানা আতঙ্কে প্রাচীন যুগের মানুষ প্রথম গুহার অভ্যন্তরে নিজেদের আশ্রয়স্থল বানিয়েছিল। কিংবা হয়তো অন্ধকারে অশুভর উপদ্রব থেকে নিজেকে আর নিজের পরিবারকে বাঁচাতে গড়েছিল গুহা বা জঙ্গলের মধ্যে বাসা। এরপর আগুন জ্বালানোর মধ্য দিয়ে সভ্যতার উন্নতি হয় ধীরে ধীরে। গুহা বা জঙ্গল ছেড়ে সুউচ্চ অট্টালিকা কিংবা দৃষ্টিনন্দন আর আভিজাত্যময় বাড়ি বানানোর পেছনে সময়, শ্রম আর অর্থ সবই ব্যয় করতে রাজি হয় মানুষ। এভাবেই কালের প্রেক্ষাপটে বদলে যায় বাসার সংজ্ঞা।

আবার ভালোবাসার সংজ্ঞাটাও কিন্তু একইভাবে সময়ের আবর্তে বদলে গেছে। নবী ইউসুফ আর জুলেখা, শিরি-ফরহাদ, লাইলী-মজনু কিংবা আধুনিক কালের রোমিও-জুলিয়েটের উপাখ্যান যা-ই বলা হোক না কেন, বদলে গেছে অনেক রীতি আর কৌশল। সবচেয়ে বড় কথা, এখনকার সময়ে অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে সামাজিকতা কিংবা পারিপার্শ্বিকতা। কিন্তু ইন্টারনেটের এই যুগে এসে যেখানে ভালোবাসা বিশ্বব্যাপী নিজের বিস্তার লাভ করার কথা ছিল, সেখানে ইন্টারনেটের সংকোচনের মতোই যেন কুঞ্চিত হয়ে এল ভালোবাসারও পরিধি।

প্রিয়জনের সঙ্গে থাকা অবস্থায়ও এখন চোখ থাকে মোবাইল ফোনে। আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দায়বদ্ধতায়ও মা-বাবার সঙ্গে অনেক সময় কথাবার্তার সুযোগ হয় না। এ ছাড়া বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সবার সঙ্গেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ সেরে নেওয়ায় কমছে বন্ধনের স্থায়িত্ব।

অথচ প্রবাদ আছে, মানুষ নাকি ভালোবাসার কাঙাল।

যদি এখন কেউ জিজ্ঞেস করো আমায় কেন বললাম এ কথা? তাহলে হয়তো আমার বিশাল পরিসরের উত্তর শোনার ধৈর্য তোমাকে রাখতে হবে। কেননা, ভালোবাসা মানেই যে প্রেমিক-প্রেমিকা কিংবা স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক এমনটা কিন্তু নয়; বরং পিতা-মাতার সঙ্গে সন্তানসন্ততির, ভাই-বোন, বন্ধুবান্ধব এমনকি আত্মীয়তার সম্পর্কগুলোও এখানে যুক্ত। আবার একইভাবে বৃহৎ পরিসরের একটা খোলামেলা বাসায়ই যে কেবল ভালো বাসার সংজ্ঞা, এমনটা ভাবাও নেহাত বোকামি।

ভালো বাসার মধ্যে ভালো পরিবেশ এবং পারিপার্শ্বিকতার একটা ব্যাপার থাকে; থাকে নির্ভরশীলতা আর আস্থার ব্যাপারগুলো। সুশিক্ষা, সুস্বাস্থ্য, সুসম্পর্ক থেকে শুরু করে সুনাগরিকতার ব্যাপারটা যুক্ত থাকে এই ভালো বাসা ব্যাপারটিতে। ভালোবাসা কিংবা ভালো বাসা দুর্লভ কেন, সেটা জানতে হলে বুঝতে হবে ভালোবাসা আর ভালো বাসার জন্য কী কী বিষয় গুরুত্বপূর্ণ আর আবশ্যক।

ভালো বাসার মধ্যে ভালো পরিবেশ এবং পারিপার্শ্বিকতার একটা ব্যাপার থাকে; থাকে নির্ভরশীলতা আর আস্থার ব্যাপারগুলো।

ভালোবাসা আর ভালো বাসা

ভালোবাসা মানেই যে শুধু মনের মানুষ তা কিন্তু নয়; প্রথমেই এই ধারণা থেকে মুক্তি দিতে হবে নিজের মস্তিষ্ককে। মনের মানুষ বলতে যে আমি প্রিয়জন কিংবা সঙ্গী বুঝিয়েছি তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে ভালোবাসার সংজ্ঞাটা এক বাক্যে দেওয়া সম্ভব হলেও এর ব্যাপ্তি সম্পর্কে বিস্তারিত বলাটা একপ্রকারের অসম্ভবই বটে।

কেননা, ভালোবাসা হচ্ছে এমন একটা ব্যাপার, যা ঠিক যতটা মানবিক, ততটাই জাগতিক আর ঐশ্বরিক। ভালোবাসাটা অদৃশ্য ঈশ্বরের প্রতি যেমন হতে পারে, তেমনি প্রকৃতির প্রতিও হতে পারে; অবলা জীবদের প্রতিও হতে পারে। আবার একইভাবে বাড়িঘর নামক এক জড়বস্তুর ওপরও ভালোবাসাটা আটকে যেতে পারে।

তাত্ত্বিকভাবে বলতে গেলে, ভালোলাগা থেকে ভালোবাসা; আর ভালোবাসা থেকে মায়া। তবে শুধু ভালোবাসি বললেই যে ভালোবাসা হয়ে যায়, এমনটা কিন্তু নয়! এর জন্য চাই মনের গভীর অনুভূতি। তাহলে এটা স্পষ্ট যে ভালোবাসা কেবল দুটি মনের বন্ধনই নয়, বরং পরিবর্তিত দুটি মনের বাঁধন। যুক্তিতর্কের বিচারে অনেকেই ভালোবাসা নামক এই অবোধ্য শব্দটিকে বুঝতে না পেরে হেসে উড়িয়ে দেয়। তাদের জন্য আছে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।

মনোবিজ্ঞানীদের মতে, পাঁচ মিনিটের মতো সময় লাগে বিপরীত লিঙ্গের কারও প্রতি আকৃষ্ট হতে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এটা ৪ মিনিট বা ৪ মিনিট ৩০-৪০ সেকেন্ড মধ্যেই ঘটে থাকে। এই আকৃষ্টতার ক্ষেত্রে মানবমস্তিষ্ক কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। অঙ্গভঙ্গি কিংবা বাহ্যিক রূপ ৫৫ শতাংশ, কণ্ঠস্বর থেকে শুরু করে মার্জিত কথা বলার ভঙ্গিমায় থাকে ৩৮ শতাংশ এবং এরপর মূল বক্তব্যের ওপর নির্ভর করে শেষ ৭ শতাংশ।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয় ভালোবাসাবিষয়ক গবেষণার ফল হিসেবে জানিয়েছে, প্রেমের মূলত তিনটি স্তর আছে। প্রতিটি স্তরেই আলাদা রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে থাকে মস্তিষ্কে এবং স্তরভেদে রাসায়নিক পদার্থ আর হরমোন নিঃসৃত হয়।

প্রথম স্তর ইচ্ছে বা আকাঙ্ক্ষা

বিপরীত লিঙ্গের কাউকে ভালো লাগলে সেই ভালো লাগা থেকে ভালোবাসার ইচ্ছা বা আকাক্সক্ষা তৈরি হয়। ছেলেদের ক্ষেত্রে টেস্টেরন আর মেয়েদের ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন নামক এক হরমোন নিঃসৃত হয়।

দ্বিতীয় স্তর আকর্ষণ

কারও সঙ্গে দীর্ঘদিন মেশার ফলে কিংবা দীর্ঘদিন ধরে কাউকে ভালোবাসার ফলে তার প্রতি একধরনের আকর্ষণবোধ তৈরি হয়। এই স্তরে তিনটি নিউরোট্রান্সমিটার জড়িত : এড্রিনালিন, ডোপামিন এবং সেরোটানিন। নিউরোট্রান্সমিটার আসলে একধরনের এন্ড্রোজেন রাসায়নিক। এটি এক স্নায়ুকোষ থেকে অন্য স্নায়ুকোষে সংকেত পাঠায়।

তৃতীয় স্তর সংযুক্তি

এই স্তরে এসেও দুটি আলাদা হরমোনের অস্তিত্ব টের পাওয়া যায় : অক্সিটোসিন এবং ভ্যাসোপ্রেসিন। দীর্ঘকাল একসঙ্গে থাকার পর পরস্পরের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। ফলে ঘর বাঁধতে রাজি হয় দুজনই।

শুধু ভালোবাসি বললেই যে ভালোবাসা হয়ে যায়, এমনটা কিন্তু নয়! এর জন্য চাই মনের গভীর অনুভূতি।

ওই আলোচনাটিকে শুধু মনের মানুষের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখাটা মোটেও সমীচীন হবে না। কেননা, মা-বাবার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্কটা যেমন নাড়ির বা অস্তিত্বগত, ঠিক তেমনি আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্কটা আবার আত্মিক। এখন অনেক পরিবারই আছে, যাদের সব সদস্যই দিন শেষে রাতে এসে কিছু সময়ের জন্য মিলিত হয় জীবনযাপনের তাগিদে। নাহ্্, এটা শুধু যে দিন আনে দিন খায় মানুষের চিত্র; এমনটা কিন্তু নয়।

বরং নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারেও একই চিত্র বিরাজমান। এখন মনে প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে তাদের ভালোবাসার বন্ধন কি ঠুনকো? নাহ্! মোটেই নয়! যদিনা তারা রাতের একটা নির্দিষ্ট প্রহর সবাই একসঙ্গে কাটায়। সারা দিনের ক্লান্তিও যেন হার মানে তাদের সেই ভালোবাসার উচ্ছ্বাসে।

তবে এই যে পরিবারের সবার একত্র হওয়া, এ ক্ষেত্রে ভালোবাসার পাশাপাশি ভালো বাসাটাও জরুরি। কেননা, একটু খোলামেলা পরিবেশ, একটু প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা, যথেষ্ট আলো-বাতাসের উপস্থিতির সঙ্গে হাঁটাচলা কিংবা নড়াচড়ার জন্যও চাই পর্যাপ্ত জায়গা। শুধু কি তাই? এর পাশাপাশি দরকার ঘরের দেয়ালের রং থেকে শুরু করে বিছানার চাদর, জানালার পর্দা, বারান্দায় টবের গাছ ইত্যাদির কথাও চলে আসে।

এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে সারা দিনের ক্লান্তি শেষে সাজানো-গোছানো একটা ঘর মনে বইয়ে দিতে পারে প্রশান্তির বাতাস। আর একটা ঘিঞ্জি ঘর করতে পারে বিরক্তির উদ্রেক, মনের অশান্তি এবং সাংসারিক কলহের সূত্রপাত। আর সাংসারিক কলহ কিন্তু আবার ঘুরেফিরে সেই ভালোবাসার ওপরই আঘাত হানে।
তাহলে এখন কী বলবে? যে লাউ সেই কদু? হ্যাঁ, যেই ভালোবাসা সেই ভালো বাসাও বলা যায়। তাহলে চলো ভালো বাসা সম্পর্কে প্রাথমিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

তবে এই যে পরিবারের সবার একত্র হওয়া, এ ক্ষেত্রে ভালোবাসার পাশাপাশি ভালো বাসাটাও জরুরি।

সকালের প্রথম সূর্য কিরণ আর স্নিগ্ধ পরিবেশ করতে পারে একটা শুভদিনের সূচনা। কেননা, ভোরের সেই কোমল আলোয় মন হয়ে ওঠে প্রশান্তিময়। আর একই কথা যদি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে যাই, তাহলে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুবিজ্ঞানীদের গবেষণার সাহায্য নিতে হয়। তাদের মতে, যাদের ঘরে দিনের আলো বেশি সময় ধরে স্থায়িত্ব হয়, তাদের শরীর আর মন দুটোই সুস্থ থাকে। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস না থাকলে গুমোট পরিবেশে মনমেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় এবং ভালো বাসার এই প্রাদুর্ভাবটা ভালোবাসার সম্পর্কেও প্রভাব ফেলে।

চাই সাজানো-গোছানো ছিমছাম বাসা! বাংলায় একটা বাক্য আছে না, ‘সাধ্যের মধ্যে সবটুকু সুখ’। ঠিক তেমনি নিজের সামর্থ্য অনুযায়ীই ঘরটাকে সাজাও। লোকদেখানো ব্যাপারটাকে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে দেখা গেল তোমার ঘরের তুলনায় আসবাব বড় হয়ে গেছে কিংবা বেমানান লাগছে; তখন কিন্তু হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি। তাই সাধ্যের পাশাপাশি নান্দনিকতার ব্যাপারটাকেও প্রাধান্য দিতে হবে। দরকারে সময় নিয়ে ঘরের আসবাব বাছাই করো; কেননা ঘরের আসবাবের ওপরই অতিথিদের ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব বিরাজ করে। আবার, একই সঙ্গে এত নান্দনিক উপস্থাপনায় ঘর সাজিয়ে অগোছালো রেখে দিলে কিন্তু বিশেষ কোনো লাভ হবে না। যে তো সেই হয়ে যাবে ব্যাপারটা। তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আর গোছানো ভাবটা সদা কাম্য।

আচ্ছা বলো তো, প্রকৃতির রং সবুজ কেন? আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানীরা এর কারণ অনুসন্ধানে গবেষণা চালিয়েছেন। আর তাতে এটাই প্রমাণিত হয়েছে যে সতেজ সবুজ রং মানুষের অনুভূতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। সৃজনশীলতা ও কর্মদক্ষতা বাড়িয়ে উদ্যমী করে তোলে। যার জন্য শত স্ট্রেস কিংবা মন খারাপের সময়গুলোতেও সবুজ মাঠ অথবা প্রান্তরের দিকে তাকালে কিংবা সবুজের মাঝে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটির পর মনে একধরনের প্রশান্তি অনুভূত হয়।

সতেজ সবুজ রং মানুষের অনুভূতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

আরেক গবেষণালব্ধ জ্ঞানে এ-ও জানা গেছে, সবুজের মাঝে গেলে ৯০ মিনিটের মধ্যেই মানুষের সব মানসিক চাপ কমে আসে ধীরে ধীরে।
তাহলে এবার চিন্তা করে দেখো তো, যদি সারা দিনের ক্লান্তি আর জ্যামের বিরক্তি নিয়ে বাড়ি ফিরে একপশলা সবুজ দেখতে পাও, তাহলে কি তোমার মন খানিকটা হলেও শান্ত হবে না? অবশ্যই হবে। সে জন্য ঘরে প্রবেশের করিডরগুলো সবুজ রঙে সাজলে নিজের পাশাপাশি অতিথিদের কাছেও ব্যাপারটা ইতিবাচক বলেই গণ্য হবে। কিন্তু অনেকেই ভাড়া বাসায় থাকে। ফলে চাইলেও সবুজ রং করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না অনেক সময়ই।

তবে কি জানো তো, সবুজ মানেই প্রকৃতি। তাই চাইলেই একগাদা প্রকৃতি ঘরের দুয়ারে কিংবা অভ্যন্তরে রেখেও এই প্রক্রিয়া চালু রাখা সম্ভব। এতে করে সিমেন্টের জঞ্জালে থেকেও থাকা যাবে প্রকৃতির আরও কাছে। নান্দনিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি ভেসে আসবে ফুলের সুবাস। একই সঙ্গে বাড়বে ধৈর্য। আবার একই সঙ্গে বারান্দা কিংবা ছাদে গড়ে তোলা সম্ভব ছোটখাটো কৃষিবাগান। মনে রেখো, মানুষ যতই যান্ত্রিক হোক না কেন আদতে সে প্রকৃতিরই সন্তান। প্রকৃতির কাছেই ফিরতে হবে তাকে। তাই প্রকৃতির প্রতি সূক্ষ্ম টানটা মানুষের আদি আর উৎসের প্রবৃত্তি।

তবে ভালো অনুভূতি জন্ম দেওয়ার ব্যাপারে সবুজের পরেই নীল আর হলুদ রঙের জুড়ি মেলা ভার। যদিও সাহিত্যের বিচারে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের এটা জ্ঞাত যে নীল হচ্ছে বেদনার রং। তবে একই সঙ্গে কবি-সাহিত্যিকেরা কিন্তু এটাও বলে যে নীল হচ্ছে প্রশান্তির এক রং। নীল রং মনকে করে প্রশান্ত। যেমনটা সমুদ্রের বিশাল নীলের কাছে নিজেকে তুচ্ছ মনে হয়। তাই হালকা নীল বা আকাশি নীল রঙের বিছানার চাদর, পর্দা মনকে রাখতে পারে প্রফুল্ল। আর হ্যাঁ, সাদা হচ্ছে শুভ্রতা আর পবিত্রতার প্রতীক। তাই সাদা রং ব্যবহার করাটাও অনিবার্য। তবে কি, সাদায় দাগ পড়লে বিরক্তির মাত্রা দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি। তাই সাদা রং ব্যবহারে চাই অতিরিক্ত সতর্কতা।

মানুষ যতই যান্ত্রিক হোক না কেন আদতে সে প্রকৃতিরই সন্তান।

আবার অনেকে হলুদ রঙের কথাও ভাবতে পারে তারুণ্যের প্রতীক ভেবে। কিন্তু হলুদ আদতে বাসাবাড়ির সবকিছুর জন্য প্রযোজ্য নয়। যেমন তোয়ালে, ফুলদানি, টব বা শোপিস হলে মানানসই বলা যায়। একই সঙ্গে লালকে ভালোবাসার রং বলা হলেও লাল রং বাড়িঘরের ক্ষেত্রে অনেক কটকটে লাগে। ঠিক যেমনটা কালো এবং অন্যান্য কটকটে রঙের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

ওপরের আলোচনায় ব্যাপারগুলো আসলে ভালো বাসার জন্য জরুরি বা আবশ্যকই বলা চলে। পরিচ্ছন্ন, ছিমছাম আর আলো ঝলমলে বাসা মনকে রাখে প্রফুল্ল আর সতেজ। বাসার আকৃতিটা খুব বেশি গুরুত্ব বহন করে না, যদি সুন্দর, নান্দনিক, ঝকঝকে, আরামদায়ক, গোছানো, পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের উপস্থিতি থাকে। এমন মনোরম পরিবেশের ভালো বাসায় ভালোবাসার অভাব হওয়ার কথা নয়; হোক না সেটা স্বামী-স্ত্রী বা মা-বাবা অথবা ভাই-বোন কিংবা পরিবার-পরিজনের সম্পর্ক।

ভালোবাসায় ভালো বাসার প্রভাব কতটুকু?

ভালোবাসা মানেই একটা সম্পর্কের সূচনা। আর এই সম্পর্কের আদতে কোনো নাম নেই। যদিও প্রচলিত ভাষায় তা ভালোবাসা বলেই খ্যাত তবে এই শব্দটা নিজের শব্দের মাঝেই বিশাল আর পরিপূর্ণ। সম্পর্ক এমন একটা ব্যাপার যে এই নামের সঙ্গে যেটাই জুড়ে দেওয়া হোক না কেন, সেটাকেই সে পূর্ণতা দেবে। তবে যে কোনো ভালোবাসার সম্পর্কের ক্ষেত্রেই গভীরতা, আস্থা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা-সম্মান এবং একে অপরকে বোঝার ক্ষমতা থাকাটা অত্যন্ত জরুরি।

ধরো, তোমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই জব করো। তো সারা দিনের ক্লান্তি শেষে বাড়ি ফিরে যদি দেখো ঘরবাড়ি অগাছালো; তাহলে কি মেজাজ ঠিক রাখা সম্ভব? নাহ্্ একদমই নয়। আবার, ধরো দিন শেষে তোমার একটু একা সময় কাটাতে ইচ্ছা করছে কিন্তু বাসাটা এতটা কনজাস্টেড যে এক মুহূর্তের জন্যও খানিকটা একা সময় কাটানোর ফুরসত নেই। তাতে করে এই বিরক্তিভাবটা মনকে প্রবোধ দিবে আর রাগের উৎপত্তিটাও এখান থেকেই ঘটবে।

ভালোবাসার সম্পর্কের ক্ষেত্রেই গভীরতা, আস্থা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা-সম্মান এবং একে অপরকে বোঝার ক্ষমতা থাকাটা অত্যন্ত জরুরি।

আবার এই অগোছালো বাসার কারণে সৃষ্ট বিরক্তির ভারটা গিয়ে পড়তে পারে সন্তানসন্ততির ওপর রাগে পরিণত হয়ে। হ্যাঁ, এটা কিন্তু অস্বাভাবিক নয়। অথচ খোলামেলা, আলো ঝলমলে এক বাস্তুসংস্থান কিন্তু রাগান্বিত একটা মনকে মুহূর্তেই শীতল করে তুলতে পারে। আর এটা যে মনোবিজ্ঞানীদের গবেষণার ফল, তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। তাই ভালোবাসার সম্পর্ক অটুট রাখতে চাই ভালো বাসা।

আবার অনেকে বাসাবাড়িতেই পোষা প্রাণীর অভয়ারণ্য গড়ে তুলতে চায়। জীবের প্রতি ভালোবাসা থেকেই এমনটা করে থাকে অনেকে। এর মধ্যে বিড়াল, কুকুর, কবুতর, টিয়া পাখি, ময়না, খরগোশ বা অ্যাকুরিয়ামে হরেক প্রজাতির মাছ উল্লেখযোগ্য। সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গেছে যে বাসায় পোষা প্রাণী থাকলে মানসিক চাপ বা স্ট্রেস থাকে কম। কেননা, তুমি যখনই একটু দুশ্চিন্তায় ডুবে যেতে শুরু করবে তখনই হয়তো তোমার পোষা প্রাণীটা উষ্ণতার খোঁজে তোমার কোলে আশ্রয় নেবে। এতে করে তোমার মস্তিষ্ক আর শরীর ব্যস্ত হয়ে পড়বে পোষা প্রাণীটিকে নিয়ে আর দুশ্চিন্তা নিমেষেই বিদায় নেবে। তবে পোষা প্রাণী যেটাই হোক না কেন, চাই বাড়তি যত্ন আর সতর্কতা। ভ্যাকসিন দেওয়া থেকে শুরু করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজটাও তোমাকে করতেই হবে।

তুমি যখনই একটু দুশ্চিন্তায় ডুবে যেতে শুরু করবে তখনই হয়তো তোমার পোষা প্রাণীটা উষ্ণতার খোঁজে তোমার কোলে আশ্রয় নেবে।

আগের আলোচনা শেষে নিশ্চয়ই তুমি আমার সঙ্গে একমত পোষণ করবে যে ভালোবাসার পরিপূর্ণতায় ভালো বাসাটাও আবশ্যক। যে ধরনের সম্পর্কই হোক না কেন, সম্পর্কে যেমন একে অপরকে বোঝার কিংবা বোঝানোর ক্ষমতা থাকা লাগে, তেমনি ভালো বাসার ক্ষেত্রেও ঘরের মাপজোখ বুঝে সে অনুযায়ী ঘরকে সাজিয়ে তোলার মানসিকতাও থাকা লাগবে। তাহলে হয়তো তোমাদের মধ্যে কেউ আমাকে চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারবে, ভালোবাসা আর ভালো বাসা এতটা দুর্লভ নয় বরং চাইলেই এটাকে সহজলভ্য করে তোলা সম্ভব।

 

লেখা: ওয়াজেদুর রহমান ওয়াজেদ 
ছবিসূত্র: ওমর ফারুক টিটু , রোদসী এবং সংগ্রহীত  

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
গল্পরোমান্সরোমান্স রসায়নশিল্প ও সাহিত্যশিল্প-সংস্কৃতি

প্রকৌশলী প্রেম: রাজু আলীম

করেছে Wazedur Rahman ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০২০

ক্লাস শেষে করিডরে জল, পেছনে রিমি; সকাল সাড়ে আটটায় ক্লাস ছিল ওদের। এখন বাজে দশটা। আজ একটাই ক্লাস। পুরো দিনই ফ্রি। জলকে রিমি বলে, এই চল রেললাইনে যাই।
-মরতে? সাতসকালে রেললাইনে?
-আরে, মরতে যাব কোন দুঃখে? যাব তো তোকে মারতে।
-কাকে?
-কেন, তোকে?
-হঠাৎ আমারে মারার সুপারি নিলি কেন?
-তোর মরা আমার হাতেই; আমি তোর আজরাইল।
-রেললাইনে নিয়ে মারতে পারবি তো?
-কেন পারব না?
-রেললাইনে বডি দেব, মাথা দেব না। মারবি কী করে? মারতে তো পারবিই না, উল্টো নিজে মরবি।
-কেন?
-মানুষ ট্রেনে কাটা পড়ে আর রেললাইনে গিয়ে তুই প্রেমে কাটা পড়বি। রেলগাড়ি ঝমাঝম পা পিছলে আলুর দম, বুঝলি, সুন্দরী?
-এই ইয়ারকি রাখ, নিয়ে যাবি কি না বল?
-সকাল সকাল তোর যদি মরার পাখনা গজায়, তবে ঠেকায় কে? পিপীলিকার পাখা ওড়ে মরিবার তরে, কাহার ষোড়শী কন্যা তুমি আনিয়াছ ঘরে? চল, রেলে তোর মরিবার সাধ পুরা করি, আমার কী? চল, তোকে মরতে সাহায্য করি।

ফ্যাকাল্টি থেকে বেরিয়ে একটু হেঁটে এসে রিকশা নেয় ওরা। জল উঠে বসে সিটে।
-এই পাশে বসলি কেন? কত দিন বলেছি আমার সাথে রিকশায় বসলে তুই ডান পাশে আর আমি বাঁ দিকে বসব? এক কথা কত দিন আর বলব? সামান্য এইটুকু মনে রাখতে পারিস না? এই মেমোরি নিয়ে তুই কী করে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চান্স পেলি? আমার না ডাউট হয়!
-এত ডাউট করা লাগবে না, এই তো সরেছি বাঁ দিকে, এবার ওঠ।

ফ্যাকাল্টির সামনে দিয়ে ভিসির বাংলো হয়ে রিকশা আসে সেন্ট্রাল লাইব্রেরির দিকে।
-এই মামা দাঁড়াও, দাঁড়াও।
-রিকশা থামালি কেন?
-বল, যা চাইব দিবি?
-কী চাই তোর?
-আগে বল দিবি?
-ন্যাকামি করিস না, কী চাই বল।
-ওই যে আমড়া মামা। বেশি করে কাসুন্দি দিয়ে আমড়ামাখা খাব।
-শোন, নেকু নেকু করবি না। আমড়া খাবি তো এত ঢং করছিলি কেন? একি এমন মহামূল্যবান জিনিস যে তার জন্য তোকে কথা দিতে হবে?
-তুই তো দেখি পুরাই পাগলি, মাথায় ছিট আছে? জুতা থুইয়া পা কালি করে?
-হুম, আমার মাথায় ছিট আছে আর সেই ছিট খালিও আছে, তুই বসবি ছিটে? যা পাগলু আমড়া মাখা নিয়ে আয়। এই শোন, সকালে না নাশতাও করিনি। খিদেয় পেট চোঁ চোঁ করছে; ওই দোকানে বানরুটি আছে। মাসকা করে মাখন লাগিয়ে একটা নিয়ে আসিস, প্লিজ। মাখন লাগানো রুটি আন, তোকে একটা দারুণ জিনিস শেখাব?

রিকশা থেকে জলকে ঠেলে নামিয়ে দেয় রিমি। ধাক্কাতে পড়ে যেতে শেষ মুহূর্তে নিজেকে সামলে নেয়। পড়ে যেতে দেখে হো হো করে হাসে রিমি।
-সামান্য এটুকু ধাক্কাতেই নিজেকে সামলাতে পারিস না। এর চেয়ে বড় ধাক্কা আসলে কী করবি? এই শক্তি নিয়ে কী করে তুই বড় বড় বিল্ডিং বানাবি, শুনি? তোর বানানো বাড়ি তো তোর মতোই নড়বড়ে তালপাতার সেপাই হবে। সামান্য হাওয়াতেই পড়ে যাবে।
-হ্যাঁ, আমার বানানো বাড়ি নড়বড়ে হবে। আর সেই বাড়ি ভেঙে পড়বে তোর ওপর আর তার তলে চাপা পড়ে মরবি তুই।
-আমি মরলে তুই তো বেঁচে যাবি।
-আরে তুই মরলে আমি বেঁচে যাব কেন? তুই মরলে তো বড়জোর বেঁচে যাবে ওই বেটা, যার সাথে আল্লা তোর বিয়ে ঠিক করে রেখেছে। আর তা না হলে তোকে বিয়ে করে ওই বেটাকেই তো নির্ঘাত সারা জীবন কাঁদতে হবে।
-আচ্ছা, যা আপাতত এখন ওই লোকের জায়গায় প্রক্সি দিয়ে তুই মর। আমার জন্য মাখন লাগানো রুটি আর আমড়া মাখা নিয়ে আয়।

রিকশায় বসে রিমি। কাসুন্দিমাখা আমড়া আনতে ছোটে জল। ছোট্ট পলিব্যাগে চারটা আমড়া, একটা দেড় লিটার মামের বোতল, কয়েকটা বেনসন, একটা ম্যাচ, দুই প্যাকেট চিপস আর দুইটা বড় বড় ছানার মিষ্টি সঙ্গে মাখন রুটিও নিয়ে নেয় জল।

রিকশা চলে লাইব্রেরির দিকে। সকালের নাশতা রিকশায়। মাখন লাগানো রুটি।
-কী নাকি শেখাবি আমাকে?
-হ্যাঁ, ভালো কথা মনে করে দিলি তো! তোকে মজার একটিা জিনিস শেখাব। একটা প্রশ্ন, উত্তর দিবি?
-কী প্রশ্ন?
-এই যে আমি মাখন-রুটি খাচ্ছি। এই মাখন নিয়ে, তোকে ঠিক ঠিক উত্তর দিতে হবে।
-কী প্রশ্ন?
-মাখন লাল সরকার ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মামা ছিলেন- এর ইংরেজি কী?
-দ্য বাটার রেড গভর্নমেন্ট ওয়াজ দ্য ডাবল মাদার অব গড মুন এডুকেশন সিস। কোনো রকম ভনিতা ছাড়া একদমে উত্তর দেয় জল।
ভড়কে যায় রিমি। খাওয়া বন্ধ। থ হয়ে তাকিয়ে জলের দিকে-তুই পারলি কী করে?
-হাঁস পাড়ে, মুরগি পাড়ে। আমি কেন পারব না?
হো-হো-হো-হো-হো-দুজন হাসতে হাসতে একসঙ্গে বলে-দ্য বাটার রেড গভর্নমেন্ট ওয়াজ দ্য ডাবল মাদার অব গড মুন এডুকেশন সিস।

জল থামে। রিমি এবার একা-দ্য বাটার রেড গভর্নমেন্ট ওয়াজ দ্য ডাবল মাদার অব গড মুন এডুকেশন সিস। হো-হো- হো-হো-হো-রিমির হাসি থামে না; বারবার বলে আর হাসে। জানিস, কালকে না প্রথম আমি এটা নেটে পড়েছি, তারপর সারারাত হেসেছি-হো-হো-হো-হো-হো-আবারও হাসে, রিমির এত হাসি দেখে এবার হাসে জলও।

ইলেকট্রিক্যাল ফ্যাকাল্টির সামনে দিয়ে লেডিস হলের দিকে রিকশা যায়, পলিব্যাগের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে আমড়া খায় রিমি। টকের স্বাদে চোখ বন্ধ করে আঙুল চেটে কাসুন্দি খেতে থাকে; আচ্ছা জল, আজকে তোর ব্যাপারটা কী বল তো। তুই এত কিছু আনলি কেন? আমি আনতে বললাম শুধু আমড়া-কাসুন্দি আর রুটি, তুই আনলি মিষ্টি, পানির বোতল, চিপসের প্যাকেট, সিগারেট-এত কিছু, ব্যাপার কী তোর? কোনো মতলব টতলব আছে নাকি আবার? আমাকে তো আবার লাইন মারার চক্করে নেই তুই?
-তার আগে তুই বল। সকাল সকাল আজ আমাকে রেললাইনে নিয়ে যাচ্ছিস কেন? লাইন মারার চক্করে যে থাকে সেই কিন্তু রেললাইনে যায়? আগে তোর মতলবটা শুনি?
-তোর মতো নড়বড়ে ইঞ্জিনিয়ারকে লাইন মারব আমি? শোন, আমিও তো ইঞ্জিনিয়ার। আমি লাইন মারলে মারব আমার চেয়ে বড় কারও সাথে?
-তো কে সে শুনি?
-আমার বিয়ে হবে কোনো পাইলট টাইলটের সাথে? তেমন কারও সাথেই লাইন মারব।
-পাইলট? মানে আমাদের ভার্সিটির বাসের ড্রাইভার মামা? হ্যাঁ, ঠিকই আছে। তোর জন্য পারফেক্ট ম্যাচিং? ঠিকঠাক মানাবে।
-এই একদম ইয়ারকি মারবি না।
-ইয়ারকি কই? আমাদের ক্যাম্পাসের বাসের ড্রাইভার মামাদের আমরা তো পাইলটই বলি? কেন তুইও তো বলিস।
-হ্যাঁ, ওটা তো আমরা মজা করে বলি।
-আমি মনে করলাম ভার্সিটির বাসে চড়তে চড়তে হয়তো তুই কোনো পাইলট মামার প্রেমে পড়ে গেছিস? তা তো হতেই পারে, তাই না?
-না, পারে না? আরে গাধা, আমি প্লেনের পাইলটের কথা বলেছি।
-ও আচ্ছা বুঝলাম, বিমানচালক, তাহলে বাসচালক না? তো দুজনে কিন্তু একই-চালক। একজন চালায় আকাশে আর একজন মাটিতে, পার্থক্য এই যা। এয়ারবাসও তো বাস, তাই না? বাসচালক আর বিমানচালকের জাত আলাদা হলেও ক্লাস কিন্তু একই, বল ঠিক না? সেই হিসেবে তোর পছন্দ ঠিকই আছে; ঠিক আছে কি না বল।
-তুই একটা হারামি, শয়তান।

কাসুন্দিমাখা হাতে জলের বাঁ হাত ধরে কিল মারতে থাকে রিমি, -তুই একটা বানর, গাধা, বলদা।
-এই আমার হাত ছাড় রিমি। একদম অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার চেষ্টা করবি না-হাত ছাড় দূরে সরে বয়; কাছে ঘেঁষবি না-নো, নো, নো, নো-অ্যাডভান্টেজ; হাত ছাড় বলছি রিমি।
-ছাড়ব না, দেখি তুই কী করিস? জলের হাত আরও শক্ত করে এবার বুকের সাথে ধরে রিমি
-তুই কি পাগল হলি? আমার হাত তোর কোথায়, দেখ তো?

বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি হাত ছাড়ে রিমি। লজ্জায় তাকায় না জলের দিকে; মাথা নিচু করে বসে আছে। মুখে কথা নেই। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টি পেরিয়ে যায় রিকশা।
-এই রিমি কি হলো? নির্বাক চলচ্চিত্র হয়ে গেলি? কথা বল কী হলো?
-তোর আমড়া খুব টেস্টি ছিল রে। থ্যাংক ইউ সো মাচ।
-আরে, আমড়া আমার হতে যাবে কেন? আমি কি আমড়া বেচি? ও তো আমড়া মামার আমড়া।
-তুই নিজেই তো একটা আমড়া কাঠের ঢেঁকি। তাই ভাবলাম আমড়াটাও তাই তোরই হবে?

হো-হো-হো-হো-হো হাসে রিমি, না হেসে পারে না জলও। হাসে দুজনে। হেসে হেসে এবার জলের কাঁধের ওপর ঝুঁকে পড়ে রিমি।
-হাসতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু হাসির ছুতোয় কাঁধের ওপর ঝুঁকে পড়া চলবে না। নো অ্যাডভান্টেজ; দূরে যা রিমি দূরে। ব্যাপার কী তোর আজ? তুই আমার শরীরের কাছে ঘেঁষছিস? ব্যাপার কী?
-তোর শরীর কি সুইমিংপুল যে ওখানে ঘেঁষতে হবে? ওটা তো একটা পচা ডোবা?
-কীভাবে টের পেলি? ডোবাতে নেমেছিস কোনো দিন?
-কোনটা সুইমিংপুল আর কোনটা পচা ডোবা তা বোঝার জন্য নেমে দেখার দরকার হয় না। পাড়ে দাঁড়ালেই বোঝা যায়। বুঝলি কিছু বুদ্ধুরাম? আবারও একসঙ্গে হাসে দুজনে।

লেডিস হলের সামনে দিয়ে রিকশা চলে। বাঁ দিকে বিশাল পুকুর। পুকুরের একবারে পাড় ঘেঁষে ছোট্ট পিচঢালা রাস্তা সোজা বোটানিক্যাল গার্ডেন পেরিয়ে চলে গেছে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির দিকে। ওই ফ্যাকাল্টির পাশেই রেললাইন।
-ওই দেখ, পুকুরের জলে আমাদের ছায়া।

তাকিয়ে দেখে পুকুরের জলে রিকশা মামা রিমি আর ও সাঁতার কাটে; পানির জলে রিকশা চলে, জলেতে রিকশায় বসে চলে দুজন। হলের পুকুরের একেবারে পাড় ঘেঁষে যায়;
-আচ্ছা, তুই কি এই পুকুরের জল? নাকি তুই নদী সাগর কুয়ো বৃষ্টি খাল বিল ডোবা নালা চোখের জল নাকি তুই নর্দমার? কিসের জল তুই, বল? কষ্টের নাকি সুখের? নাকি তুই নাকের জল?

হো-হো-হো-হো-হো হাসে রিমি উত্তর দেয় না জল; উদাস তাকিয়ে রিমির হাসা দেখে।
-আচ্ছা, যেভাবে আমড়া খাওয়ালি, সারা জীবন আমাকে এইভাবে খাওয়াবি তো?
-তোকে সারা জীবন আমড়া খাওয়াতে যাব কোন দুঃখে? কী হয়েছে? আজ মন যে খুব উরু উরু তোর! এত রোমান্টিক কথা বলছিস? অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার মতলব? সামথিং সামথিং?
-আরে, নাথিং নাথিং।
-বল, এভাবে সারা জীবন আমড়া খাওয়াবি?
-দয়াল বাবা আমড়া খাবা, গাছ লাগায়ে খাও। আমি পারব না। এসব কথা আর বলবি না-নো অ্যাডভান্টেজ।
-আরে, তুই তো আমড়া কাঠের ঢেঁকি। আমড়া খাওয়ানোর তাই দায়িত্ব তোকেই দিতে চাই। তোর মতো আমড়ার ঢেঁকি আমি আর কই পাব?

এবার পুকুরের জলের ছায়াতে রিকশা মামা খিলখিল করে হাসে-রিকশা মামার হাসিতে যোগ দেয় ওরাও। ডাঙায় তিনজন, পানিতে তিনজন মোট হাসে ছয়জন। কিন্তু মানুষ তো তিনজন।

পুকুরের পাড় পেছনে ফেলে বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনে দিয়ে রিকশা চলে। গা ছমছমে নীরবতা এই রাস্তায় সব সময়। অসম্ভব সুন্দর রোড। ক্যাম্পাসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা- রাস্তার দুই পাশে বড় বড় মেহগনিগাছ। জীবনানন্দের কবিতার মতো মেহগনির ছায়াঘন পল্লবে মোড়া। গাছের গভীর ছায়ার ফাঁকে ফাঁকে রোদ ও হাওয়ার খেলা আর এখানে ওখানে-দু এক জোড়া প্রেমিক-প্রেমিকা ছাড়া তেমন কেউ সাধারণত থাকে না এখানে -এই তুই নাকি সব কি কবিতা জানিস? একটা কবিতা আবৃত্তি কর না প্লিজ?
জলের হাত ধরে রিমি। এই হাত ছাড় বলছি। কোন অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার চেষ্টা করবি না, সেন্টিমেন্টাল কোনো ডায়ালগবাজি করবি না। যদি কাছে ঘেঁষার পাঁয়তারা করিস আমি কিন্তু তোকে ফেলে চলে যাব।
-তুই এত পার্সোনালিটি দেখাস কেন? তোর তো কোনো পার্সোনালিটি থাকার কথা না। তুই হলি জল, দ্য ওয়াটার হ্যাজ নো কালার। জলের নিজস্ব কোনো রং নেই; যখন যেখানে যে পাত্রে রাখা হয় জল সেই পাত্রের রং ধারণ করে। সুতরাং তোকে যেভাবে ইচ্ছা যেখানে সেখানে রাখব যা তা বলব তুই ঠিকঠিক সে রকম হবি? পার্সোনালিটি জলের মানায় না? তুই তো নামেই জল? জলের মতো সহজ সরল হ। খালি ত্যাড়াব্যাঁকা কথা?

জল চুপ হয়ে আছে।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির সামনে এসে রিকশা দাঁড়ায়। রাস্তা শেষ। একটু হেঁটে গেট পেরিয়েই রেললাইন। রিকশা মামাকে টাকা দিয়ে সিগারেট ধরায় জল, আজ আমি সিগারেট খাব?
তা তো খাবিই মনে তো রং? কত কিছুই করবি আজ?

গেট পেরিয়ে রেললাইনে এসে দাঁড়ায় দুজন। পুব দিকে হাঁটে জল; এই আমাকে ফেলে আগে আগে যাচ্ছিস কেন? আমার কাছে আয়? আমি তোর হাত ধরে রেললাইনের ওপরে দিয়ে হাঁটব?

-আমাকে যত কাছে টানবি, আমি তত দূরে চলে যাব। সো নো অ্যাডভান্টেজ।
-আর যদি দূরে চলে যেতে বলি তখন কি কাছে চলে আসবি?
-নো, ইমোশনাল ডায়ালগবাজি? দূরত্ব বজায় রেখে হাঁট?
-আচ্ছা, তোর হাত ধরে হাঁটতে চেয়েছি, তোকে তো আমি হাগ করতে বলিনি। তুই এত ভিতু, ইঞ্জিনিয়ার হবি কীভাবে?
-তোর সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে সাহসী হওয়ার প্রমাণ দিতে চাই না।
-হাত তোকে দিতেই হবে?
-শোন, হিমুরা কখনো কারও হাতে হাত রাখে না; আমি হলাম হিমু বুঝলি? সো ডোন্ট ট্রাই টু টেক এনি অ্যাডভান্টেজ।
-তুই হিমু আর আমি রুপা
-হিমু রুপার হাতেও হাত রাখে না। হিমুদের কোনো বন্ধন থাকতে নেই।

সিগারেটের ধোঁয়া ওড়াতে ওড়াতে সামনের দিকে এগিয়ে যায় জল। কী এক অজানা আবেগ এসে জড়ো হয় চোখে। সমান্তরাল এই রেললাইন যুগ যুগ ধরে পাশাপাশি দূরে চলে। সারি সারি উঁচু উঁচু নাম না জানা গাছের মিতালি। রোদ-ছায়ার খেলা সত্যিই অপূর্ব জীবন আর বেঁচে থাকা। মনের অজান্তে কবিতা চলে আসে মুখে। পেছনে হাঁটা রিমিকে শোনানোর জন্যই হয়তো গলা জোরে ছাড়ে জল;

-আমি যদি বনহংস হতাম, বনহংসী হতে যদি তুমি; কোনো এক দিগন্তের জলসিঁড়ি নদীর ধারে ধানখেতের কাছে ছিপছিপে শরের ভেতর এক নিরালা নীড়ে। তাহলে আজ এই ফাল্গুনের রাতে ঝাউয়ের শাখার পেছনে চাঁদ উঠতে দেখে আমরা নিম্নভূমির জলের গন্ধ ছেড়ে আকাশের রুপালি শস্যের ভেতর গা ভাসিয়ে দিতাম- তোমার পাখনায় আমার পালক-আমার পাখনায় তোমার রক্তের স্পন্দন-নীল আকাশে খইখেতের সোনালি ফুলের মতো অজস্র তারা শিরীষ বনের সবুজ রোমশ নীড়ে।

সোনার ডিমের মতো ফাল্গুনের চাঁদ। হয়তো গুলির শব্দ: আমাদের তির্যক গতিস্রোত, আমাদের পাখনায় পিষ্টনের উল্লাস, আমাদের কণ্ঠে উত্তর হাওয়ার গান। হয়তো গুলির শব্দ আবার: আমাদের স্তব্ধতা আমাদের শান্তি। আমাদের জীবনের এই টুকরো টুকরো মৃত্যু আর থাকত না থাকত না আজকের জীবনের এই টুকরো টুকরো সাধের ব্যর্থতা ও অন্ধকার। আমি যদি বনহংস হতাম, বনহংসী হতে যদি তুমি; কোনো এক দিগন্তের জলসিঁড়ি নদীর ধারে ধানখেতের কাছে।
কখন যে রিমি এসে হাত ধরেছে টের পায়নি জল, হাতে হাত রেখে কবিতার ঘোরে অনেকটা পথ এসেছে দুজন।

-এই চল ওই দেবদারুগাছের নিচে একটু বসি। তোর আবৃত্তি কিন্তু জোশ, মাইন্ড ব্লোয়িং রিয়েলি।
-রিমি একদম ফ্ল্যাট করবি না। আর অ্যাডভান্টেজ নেওয়ার চেষ্টা করবি না, তুই আমার হাত ধরেছিলি কেন?
-ওরে নেকা ষষ্ঠী দুধে-ভাতে মনে হয় কিচ্ছু বোঝো না? আমি হাত ধরেছি। তুই তো সরিয়ে দিতে পারতি? আরে বুঝি বুঝি সবই বুঝি। তোর যত বাহানা ওপরে ওপরে। সামনে এ রকম সুন্দরী থাকলে সবার মনই না উরু উরু করে? আর তোর করবে না? তোর মনও যে আঁকুপাঁকু করে আমি বুঝি?
-মোটেও না। আমি কবিতার ঘোরে ছিলাম। টেরই পাইনি কখন এসে তুই হাত ধরেছিস? নইলে আমি তোকে পাত্তা দেব? কোন চান্সই নেই ইয়ার।
-এই তুই এত ভালো আবৃত্তি করিস, কবিতা লিখিস, তোর তো সাহিত্যে পড়া দরকার ছিল?
-সাহিত্যে পড়তে কপালটা চওড়া হতে হয়। সে কপাল আমার ছিল না। ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল গল্প-উপন্যাস-কবিতা লিখব। সাহিত্যে পড়ব অথচ কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই সাহিত্যে চান্স পেলাম না। চারটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্টসে শুধু সাহিত্যের জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলাম। কিন্তু একটাতেও টিকিনি, শেষমেশ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চান্স পেলাম। এখানে আমার কপালটা দেখ, ভালো লাগে যে বিষয় তা নিয়ে পড়তে পারলাম না। আসলে মা-বাবা চায়নি আমি সাহিত্যে পড়ি। তারা চেয়েছে ইঞ্জিনিয়ার হই। তাই হয়তো হয়নি? কী আর করা। এখন আর আফসোস করে লাভ কী বল? সবই কপাল। আর এখানে পড়তে এসে কপালে জুটেছে তোর মতো এক পিস। আফসোস করে কী লাভ, সবই কপাল?
-এই কী বললি? জলের গায়ে কিল মারতে থাকে রিমি। কিছুক্ষণ কিলিয়ে হাঁপিয়ে গলা টিপে ধরে, মেরেই ফেলব তোকে। আজ মেরেই ফেলব।

কোনো রকমে রিমির হাত থেকে ছাড়া পেয়ে দূরে গিয়ে বসে জল। এই পালালি কেন? কাছে আয়; আজ তোকে মেরেই ফেলব। রেললাইনের পাথর হাতে নিয়ে ভয় দেখায় রিমি, কাছে আয়, নইলে কিন্তু সত্যি সত্যি এই পাথর ছুড়ব। বলা যায় না মেরেও দিতে পারে। কোনো গ্যারান্টি নেই। এর আগে একদিন ঝগড়া করতে করতে রিকশা থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল জলকে। এই মেয়েকে একটু বিশ্বাস নেই, রাগলে মাথা ঠিক থাকে না ওর।

-ঠিক আছে কাছে আসব কিন্তু আর কোনো ঝামেলা করবি না তো?
-কাছে আয়, আর কিছুই করব না।
-সত্যি তো?
-হ্যাঁ, সত্যি।

হাত থেকে পাথর ফেলে দেয় রিমি। জল এসে ওর কাছে বসে; পাশাপাশি দুটো স্লিপারের ওপর দুজন।
-খুব খিদে পেয়েছে রে।
-জানি তো তোর খিদে পাবে।
-এই নে খা।

মিষ্টি চিপস, পানির বোতল এগিয়ে দেয় জল,
-প্যাকেট ছিঁড়ে দে।
-সামান্য একটা চিপসের প্যাকেট ছিঁড়তে পারিস না। তুই কীভাবে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চান্স পেলি? ডাউট হচ্ছে বুঝলি?

প্যাকেট ছিঁড়ে জল। মিষ্টি চিপস খেতে থাকে দুজন। হাত উঁচিয়ে দূরে দেখায় রিমি;
-ওই দেখ কেন্নো আসে;
-সেকি কিরে গাড়ি আসছে? তাড়াতাড়ি খা।

ওরা দুজনেই উঠে দাঁড়ায়। পানি খেয়ে দাঁড়ায় দেবদারুগাছের নিচে। সামনে-পেছনে সারি সারি দেবদারুগাছ। তার ভেতর দিয়ে ছুটে আসে ট্রেন। রিমিকে দূরে দেখায় জল-
-কী যে মনোহারি, দেবদারু সারি সারি দেদার দাঁড়িয়ে আছে কাতারে কাতার।
-বাহ্ বাহ্, তুই তো দেখি চারণ কবিও?

গাড়ি আরও কাছে চলে আসে। ঝমঝম শব্দ শোনা যায়। ওরা যাত্রী নয়, কিন্তু গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে। গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে দুজন কিন্তু গাড়ি দাঁড়াবে না ওদের জন্য। পথের কোনো যাত্রীর প্রতি ট্রেনের মায়া থাকে না। মাঝপথে থেমে রাস্তা থেকে ট্রেন কাউকে তুলে নেয় না। ট্রেনের মায়া শুধু স্টেশনে দাঁড়িয়ে তার জন্য অপেক্ষায় থাকা যাত্রীর ওপর। ঠিক সময়ে যাত্রীকে স্টেশনে পৌঁছে দেওয়ার ব্রত নিয়ে গাড়ি রোজ সকালে বাড়ি ছাড়ে। গাড়ি চলে যাওয়ার অপেক্ষা করছে দুজনে। কখনো সখনো কারও চলে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। যাওয়ার সময়ে কারও মুখে যেমন কথা থাকে না তেমনি মুখ বুজে দাঁড়িয়ে ওরা। হু..হু..হু..শ..শ..শ.. শব্দে ধুলো বাতাসের ঝড়ে ওদের ছেড়ে গাড়ি ছোটে অন্য কোনো পথিকের দিকে। যে আছে সামনে দাঁড়িয়ে ওদেরই মতো ট্রেন যাওয়ার অপেক্ষায়। পেছন থেকে কেন্নোর চলে যাওয়া উদাস তাকিয়ে দেখে রিমি-এই কী হোলো তোর? আয়?

রিমির চোখ গাড়িতে আটকে আছে। ডাকের শব্দে ফিরে তাকায়-
এসে বসে জলের পাশে গা ঘেঁষে; বলেছি না আজ বিড়ি খাব; দে বিড়ি? একটা বেনসন হাতে দেয় জল, ম্যাচের কাঠি ঠুকে জ্বালায়।
খুক, খুক, খুক, খুক কাশি। থামে না আরও জোরে টানে খুক। খুক, খুক, খুক আবারও কাশে যত টান তত কাশ।
টানের চেয়ে কাশিই বেশি-

কাশি আর ধোঁয়াতে রিমির চোখে জল। তবু টান থামে না।
-এই সব ছাইপাঁশ তোরা যে কী করে গিলিস, মাথায় আসে না? রাবিশ, ফেলে দেয় সিগারেট। পার্স থেকে রুমাল বের করে চোখ মুছে জলের বা হাত টেনে নেয়; তোর হাতের কনুই থেকে নখ পর্যন্ত খুব সুন্দর। দুই হাতের মধ্যে জলের হাত চেপে ধরে আছে রিমি, তোর মুখের কালার হাতের মতো এত সুন্দর না? হাতের মতো হলে আরও ভালো হতো। সপাটে হাত টেনে নিয়ে আলতো চুমু খায় রিমি-
-হাত নেওয়া পর্যন্ত মেনে নেওয়া যায় কিন্তু তুই এ কী করলি? হাউ ননসেন্স ইউ আর?
আরও শক্ত করে এবার জলের হাত ধরে একের পর এক চুমু দেয় হাতে।
-যত বাধা দিবি, তত বাড়বে।

জল দমে যায়। জানে বাধা দিয়ে লাভ নেই। তাতে রিমির পাগলামি আরও বাড়বে। ঝমঝম বৃষ্টি। শোঁ শোঁ শব্দ। দমকা বাতাসে হঠাৎ অন্ধকার চারদিকে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই কাকভেজা দুজন। রেললাইনের ওপর হাত ধরে বসে থাকে। মুষলধারে জলের ঢল। ভারী ভারী ফোঁটার সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। কেউ নেই চোখের সীমায়। অন্ধকারে ঝাপসা একটু দূরেও ঠিকমতো দেখা যাচ্ছে না। বৃষ্টির তোড়ে উঠে দাঁড়ায় ওরা। জলের হাত ধরে টেনে নিয়ে ঝাঁকড়া দেবদারুগাছের নিচে দাঁড়ায় রিমি। অন্য হাতও টেনে নেয়। গাছের নিচে সামনাসামনি দাঁড় করায় জলকে দুই হাত দিয়ে বুকে জাপটে ধরে। তুমুল বাতাস। দমাদম বাজ পড়ার তীব্র শব্দে আরও শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে রিমি।

দুই প্রকৃতির কাছে অসহায় জল। মেয়ে প্রকৃতির সঙ্গে আসল প্রকৃতি মিলেমিশে টালমাটাল করে দেয় ওকে। রক্ত-মাংস শিউরে ওঠে জলের। ভারী বৃষ্টি উপেক্ষা করে ৪৪০ ভোল্ট কারেন্টের তেজ। জলের ভেজা বারুদের স্তূপে দাউদাউ আগুন জ্বলে। হেরে যায় দিশেহারা। ধরে রাখতে পারে না নিজেকে। জেগে ওঠে শরীর। দুই হাতে শক্ত করে জাপটে বাহুতে পেষে রিমিকে। গায়ের সব শক্তি দিয়ে একজনকে পিষে চলে বুকে। ৪ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ সালের এই বৃষ্টি জলের জন্য শুভ কি না? তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে বারো বছর?

 

ছবিসূত্র: সংগ্রহীত 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
গ্রুমিংরোমান্সরোমান্স রসায়নসুস্থ মন

একতরফা প্রেম?

করেছে Wazedur Rahman ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২০

‘আসান হ্যায় কেয়া, অ্যায়সি মহব্বত করনা, যিসকে বদলে মহব্বত না মিলে…’ নাহ্, এটা কিন্তু শুধু সিনেমার ডায়ালগ নয়, বাস্তবেও তো হয়েছে কতবার! এই তোমার-আমার সঙ্গেও! কিন্তু যদি ‘সে’ তোমার প্রেমে না পড়ে? যদি না মেনে নেয়? তাহলে কিন্তু বস কেস জন্ডিস। কিন্তু কী করবে তুমি এ রকমটা যদি হয়?

‘আসান হ্যায় কেয়া, অ্যায়সি মহব্বত করনা, যিসকে বদলে মহব্বত না মিলে…’ নাহ্, এটা কিন্তু শুধু সিনেমার ডায়ালগ নয়, বাস্তবেও তো হয়েছে কতবার! এই তোমার-আমার সঙ্গেও! এই যে ধরোই না, দিব্যি কলেজে ক্লাস করতে ছেলেটার পাশে বসে, ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে খুনসুটি, হাসি, ঠাট্টা, লেগপুলিং- সবই হতো জমিয়ে…।

তারপর হঠাৎ কি জানি কি করে দুম করে প্রেমে পড়ে গেলে তার। আবিষ্কার করে বসলে, ও শুধু যেন আর বন্ধুই নয়, তার চেয়েও বেশি…কিন্তু সেটা বের হতেই তোমার মাথায় হাত! কিংবা অঙ্ক কোচিং ক্লাসের সেই মেয়েটা- রোজই ক্লাসে যেতে মন দিয়ে অঙ্ক করবে বলেই, কিন্তু তোমার আর দোষ কী বলো, আড়চোখে তাকাতে গিয়ে সেই যে চার চক্ষুর মিলন হয়ে যেত, তারপর আর ক্লাসে মনই বসত না।

তা প্রেমে তো পড়াই যায়, তাতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথাও নয়, কিন্তু প্রেমে পড়ার পর? ধরো, যার প্রেমে তুমি পড়েছ, তাকে সাহস করে কথাটা বলতে গেলে। এবার সে-ও যদি তোমার প্রেমে হাবুডুবু খায়, তাহলে তো ঠিক আছে, নৌকো চলবে গড়গড় করে। কিন্তু যদি সে তোমার প্রেমে না পড়ে? যদি না মেনে নেয়? তাহলে কিন্তু বস কেস জন্ডিস। কিন্তু কী করবে তুমি এ রকমটা যদি হয়?  পাত্তাই দিল না!

এ রকমটা কিন্তু হতেই পারে। তুমি একজনকে মন দিয়ে বসে আছ, সে-ও যে তোমায় মন দিতে বাধ্য, এমন কিন্তু কোত্থাও লেখা নেই। তাই তোমার বন্ধুটিকে মনের কথা জানাতে গেলে এটা ধরে নিয়েই যাও। কাউকে জোর করে তোমার প্রেমে পড়াতে তো আর বাধ্য করা যায় না। সে ক্ষেত্রে সে যেটা বলবে, সেটা মেনে নেওয়া ছাড়া কিন্তু কার্যত তোমার কোনো উপায়ই নেই। চেষ্টা করো তার দিক থেকে যুক্তি দিয়ে ব্যাপারটাকে বোঝার। তোমার সেই বন্ধুটি, যার প্রেমে তুমি মজেছ, সে যদি তোমার খুব ভালো বন্ধু হয়, তাহলে তো ভালোই, সে-ও নিশ্চয়ই এমন আজব পরিস্থিতি থেকে তোমাকে বেরোতে সাহায্য করবে।

কিন্তু…ব্যাপারটা তো প্রেম, জানোই এখানে কোনো যুক্তি-বুদ্ধি খাটে না। তাই বুকে পাথর রেখে পারার চেষ্টাটা কিন্তু তোমাকে করে যেতেই হবে। আর একান্তই যদি না হয়? তাহলে চেষ্টা করো, সেই বন্ধুর সঙ্গে যত কম কথা বলা যায়, ততই তোমার মঙ্গল। সে রকম বুঝলে তার সঙ্গে কথা বন্ধ করে দিতেও পারে। প্রথম প্রথম কষ্ট হলেও পরে অভ্যাস হয়ে যাবে। কারণ, একতরফা প্রেম আর বন্ধুত্ব- দুটো কিন্তু একসঙ্গে চালানো খুব কঠিন। ম্যানেজ করাও যায় না। কারণ, সে তোমার যত ভালো বন্ধুই হোক না কেন, একবার প্রেমে পড়েছ যার, অন্য কারও সঙ্গে তার সম্পর্ক, ঘনিষ্ঠতা কিন্তু মেনে নেওয়া চাপের।

দর্দ-এ-দিল

হুঁ-হুঁ, বলা তো সহজ, কিন্তু জানি করাটা বেশ কঠিনই। প্রত্যাখ্যান নিতে সবাই পারে না, এটা তো মানছি। কিন্তু প্রত্যাখ্যানই যদি শেষমেশ তোমাকে মেনে নিতে হয়, তাহলে? মন ভাঙবে, সেটা অনিবার্য। কিন্তু মন ভাঙার পর মুড অফ করে বসে থাকার কিন্তু কোনো মানে হয় না! নিজের যেটা ভালো লাগে সেটাই করো, হতে পারে সেটা কোনো পাগলামি, কিন্তু কে কী ভাববে, সেটা না ভেবে করো।

যেসব বন্ধুর সঙ্গে থাকলে প্রাণ খুলে আড্ডা দিতে পারো, তাদের সঙ্গে হ্যাংআউটে বেরোও, সিনেমা দেখার প্ল্যান করতে পারো। নাহ্, জোর করে ভাবনা মাথা থেকে তাড়াতে বলছি না, কিন্তু অন্য কাজ করতে করতে দেখবে প্রেম-প্রেম ভাব আর তার দুঃখটা খানিক হলেও কম চাগা দেবে।

প্রশ্ন-উত্তর

প্রেম মানে কিন্তু আদতে কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া। আর প্রেম জিনিসটা কিন্তু মোটেও সোজাসাপ্টা জিনিস নয়। এমনও হতে পারে, তুমি যাকে প্রেম বলে ভাবছ, সেটা আদতে প্রেমই নয়! নিছকই অবসেশন বা অন্য কিছু! তাই কারও প্রতি সে রকম কিছু মনে হলে আগে নিজেকেই নিজের মনে প্রশ্ন করো। মানছি প্রেম যুক্তি মানে না, কিন্তু তা-ও তোমাকে কিছু যুক্তি তো মানতেই হবে।

ব্যাপারটা তুমি তাকে জানানোর পর কী কী হতে পারে, সেটাও ভেবে নাও আগে থেকে। নিজের মনেই প্রশ্নের উত্তর সাজাতে সাজাতে হয়তো দেখলে যেটাকে প্রেম বলে ভাবছ, সেটা আদৌ প্রেম নয়! তাহলে ব্যাপারটা ওখানেই মিটে যাবে।
চাপবে, নাকি…

সবচেয়ে ভালো হয়, প্রেমে পড়ার পর যদি দেখো যার প্রেমে পড়েছ, তাকে তোমার মনের কথাটা বললে বিষয়টা আরও জটিল হয়ে যাবে, তাহলে সেটা স্রেফ নিজের মধ্যে চেপে যাওয়াই শ্রেয়। কষ্ট হবে খুবই, কিন্তু জানিয়ে ব্যাপারটা খিচুড়ি পাকিয়ে ছড়ানোর থেকে একা একা ছড়ানো কিন্তু বেশি ভালো। তার সঙ্গে কথাবার্তাও চালিয়ে যাও, টুকটাক হিন্টস দিতে থাকো (যতক্ষণ না জিনিসটা বিপদের শেষ সীমা পার করে না যাচ্ছে)। কে বলতে পারে, সেও আস্তে আস্তে তোমার প্রেমে মজে গেল!

আর যদি তা না হয়? তাহলে তো জানোই কিং খানের বিখ্যাত সেই সংলাপ, ‘একতরফা পেয়ার কি তাকত হি কুছ অউর হোতি হ্যায়, অউর রিশতোঁ কি তরহা দো লোগো মে নেহি বটতি। র্সিফ মেরা হক হ্যায় ইসপে…’

 

লেখা: আশরাফুল ইসলাম 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়জীবনযাত্রাপার্শ্ব রচনারোমান্স রসায়ন

প্রেমে পড়েছ?

করেছে Sabiha Zaman ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২০

যে তুমি কখনো প্রেমে, সম্পর্কে বিশ্বাসই করতে না; ভাবতে তোমার পক্ষে প্রেমে পড়া কিছুতেই সম্ভব নয়, সেই তুমিই যেন কয়েক দিন ধরে ভীষণ করে প্রেমে বিশ্বাস করতে শুরু করে ফেললে! তারপর কয়েক দিন লাভ না ক্র্যাশ দড়ি টানাটানির পর ফাইনালি বুঝলে প্রেম-ট্রেম কিছু না, ‘ও’ ছিল নেহাতই ইনফ্যাচুয়েশন। ফলে মোহ ও হৃদয় দুই-ই ভেঙে খানখান!

স্ক্রিনটার দিকে ঠায় তাকিয়ে আছ, কখন সেই বহুপ্রতীক্ষিত ‘পিং’-টি শোনা যাবে। মুহূর্তে চোখ চলে যাবে ফোনের স্ক্রিনে। অমনি দুই আঙুল সচল, গোটা পৃথিবী একদিকে আর তুমি-তোমার ফোন একদিকে… কিংবা কলেজ ব্রেকে দেখা হওয়ার কথা আছে, ক্লাস না হলেই তুমি ছুটবে কাক্সিক্ষত সেই ডেটের পথে, ক্লাস দূরে যাক, মাঝেমধ্যেই চোখ চলে যাচ্ছে ফোনের স্ক্রিনে। আয়না না হোক, নিজেকে কেমন লাগছে দেখার জন্য তখন চারচৌকো ওই কালো খোপটিই কাফি!

চ্যাটই সব!

মাত্র কিছুদিন হলো আলাপ-পরিচয় হয়েছে ‘ওর’ সঙ্গে। এর মধ্যেই অবস্থা খুব খারাপ। কথা না বলে বা সারাক্ষণ চ্যাট না করে থাকাই যাচ্ছে না। সিরিয়াসলি প্রেম করতে শুরু করবে কি না, তা নিয়েও ভাবতে শুরু করেছ। কিন্তু সাবধান। গড়গড় করে এগিয়ে যাওয়ার আগে তিষ্ঠ বৎস! প্রেম কিন্তু অত সোজা ব্যাপার নয়, প্রেমে পড়তে বেশ সময়-টময়ও লাগে। তাই আগে ভালো করে বুঝে না-ও যে এটা প্রেমই কি না। মেনে নিচ্ছি যে তুমি সারাক্ষণ তার কথাই চিন্তা করছ, কিন্তু ভেবে দেখো, সেটা কি শুধু অবসর সময়েই চিন্তা করছ নাকি সব সময়ই! আর হ্যাঁ, সময় নিতে কিন্তু  ভুলো না। কারণ তাড়াতাড়ি যেটা হয়, সেটা কিন্তু বেশির ভাগ সময়েই ইনফ্যাচুয়েশন বা ক্র্যাশই হয়।

কিচ্ছু মেলে না?

ভাবছ প্রেমে পড়েছ, এদিকে যার প্রেমে তুমি কাত, তার কোনো কিছুই পছন্দ হচ্ছে না। ছোটখাটো জিনিস নিয়ে সারাক্ষণ খিটিমিটি লেগেই আছে! সে যদি বাসে যায়, তুমি যাও ট্যাক্সিতে, সে যদি আইসক্রিম খায়, তুমি খেতে চাও কুলফি! কোনো কিছুতেই তোমাদের মোটে মিল নেই। তোমার পছন্দকেও সে গুরুত্ব দেয় না, তুমিও তাকে সব সময় হ্যাটা করার সুযোগ পেলে ছাড়তে চাও না। এ রকম যদি তোমাদের অবস্থা হয়ে থাকে, তাহলে কিন্তু নিশ্চিত থাকো। এটা মোটেও প্রেম নয়, এমনকি এখন দিব্য প্রেম-প্রেম মনে হলেও টিকবে না মোটেও। কারণ পছন্দ না হওয়া আর সারাক্ষণ খিটিমিটি নিয়ে আর যা-ই হোক, প্রেম চলে না। খুব শিগগির তুমি হাঁফিয়ে যাবেই!

 

আরও ‘অপশন’?

প্রেমে পড়েছ বলে মনে হচ্ছে ‘তার’ কথা সারাক্ষণ ভাবতেও ইচ্ছে করছে, কাজের ফাঁকে ফাঁকা সময় পেলেই চোখ চলে যাচ্ছে ফোনের স্ক্রিনে, চ্যাটও করছ, সময়ে-সময়ে দেখাও করছ, দিব্য গপ্পোও হচ্ছে দুজনে মিলে। কিন্তু সেই সঙ্গে সমানতালে চলছে অন্যদের সঙ্গে ফ্লার্টিং। হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুকে তাদের সঙ্গে কথাও চলছে বেশ! কে তোমায় ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাল বা কে কোথায় চাকরি করে, কাকে কেমন দেখতে সেগুলোও চোখে পড়ছে তোমার। কেউ তোমায় পিং করলে তার সঙ্গে কথা চালাতেও ইচ্ছে করছে। এসব যদি হয়, তাহলে কিন্তু বুঝবে এটা আদৌ প্রেম নয়। কারণ ‘ভালো’ কাউকে পেলে ‘কে বেটার’, সেটা তোমার মন কিন্তু যুক্তিটুক্তি দিয়ে ভেবে নিতে ভুলবে না!

আফসোস!

প্রেমও (মানে তুমি যাকে প্রেম ভাবছ আরকি!) চলছে প্রেমের মতো আর তুমিও এর-তার প্রোফাইল ঘেঁটে কে কীভাবে প্রেম করছে, কোথায় খাচ্ছে, কোথায় ডিপি দিচ্ছে, কার সঙ্গে প্রেম করছে এসব দেখছ। মনে মনে আফসোসও করছ যে তোমার প্রেমটা ‘অত ভালো’ কিছুতেই হচ্ছে না। যা কিছুই করে থাকো না কেন, কেবলই মনে হচ্ছে ব্যাপারটা ঠিক অমুকের মতো হচ্ছে না। সাবধান বন্ধু।

প্রেম মানে কিন্তু তুলনা নয়। আর যখনই প্রেমের ক্ষেত্রে তুলনা চলে আসে, তখনই বুঝবে যেটার মধ্যে তুমি আছ, সেটা হয়তো আদৌ প্রেম নয়। নিছকই ইনফ্যাচুয়েশন! ভালো করে, মজা করে ‘টাইম পাস’ করার ইচ্ছে, খানিক ডিপি দেওয়া, শো অফ আর ভালো ভালো জায়গায় খাওয়া। তাই সে ক্ষেত্রে বেশি দূর না এগোনোই ভালো!

লেখা : তামান্না রহমান

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
গ্রুমিংরোমান্সরোমান্স রসায়ন

টেক্সট টেকনিক

করেছে Wazedur Rahman ফেব্রুয়ারী ১২, ২০২০

সঙ্গীকে মেসেজ করার সময় মাথায় রাখো কিছু বিষয়। অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে ফলপ্রসূ হবে এসব বিষয় –

হাতে মোবাইল থাকলেই হয় হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে গল্প, নয়তো টুকটাক টেক্সট। আর এই কাজগুলোর অনেকটাই জুড়ে আছে প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে কথোপকথন। ডেটিংয়ের যুগে ফোন পেরিয়ে মেসেজ ও হোয়াটসঅ্যাপ সম্পর্কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এখানেই আমরা করে ফেলি হরেক ভুল। সদ্য শুরু করা প্রেম হোক বা কয়েক বছরের স্থায়ী সম্পর্ক, প্রেমের মেসেজেও মাথায় রাখতে হয় বেশ কিছু বিষয়।

অনেকেই ভাবে, ভালোবাসার মানুষকে কিছু লিখছি মানে, যা-ই লিখি, যেটুকুই ভুলত্রুটি, সে তা আমল দেবে না। বিষয়টা কিন্তু তেমন নয়। সব সম্পর্কের মতোই প্রেমজ সম্পর্কও খুব স্পর্শকাতর। ভালোবাসার মানুষটির মনমেজাজ, ব্যস্ততা এই সবকিছুই খুব সাধারণ ও স্বাভাবিক বিষয়। প্রেমে পড়েছ বলেই উল্টো দিকের মানুষটির সব ভুলত্রুটি কোনো সময়ই তাকে প্রভাবিত করবে না, এমন ধারণা ঠিক নয়।

তা বলে কি সারাক্ষণ খুব সতর্ক হয়ে, মাথা খাটিয়ে আবেগের কথা বলতে হবে? না। তেমনটা একেবারেই নয়। মানুষটি তোমার জীবনে পুরোনো হোক বা নতুন, মেসেজ করতে হলে শুধু মনে রাখো বিশেষ কিছু নিয়ম। তাতে আবেগের ঘরে চুরি হবে না একেবারেই।

টেক্সটে হাসি-মশকরা করতেই পারো। হালকা বা গাঢ় রসিকতাও চলে। তবে মেসেজে মানুষের মুখ দেখা যায় না, কাজেই বোঝা যায় না কথাটি বলার সময় তার অভিব্যক্তি। এই কারণে অনেক সময় রসিকতার টেক্সটও ভুল বার্তা বহন করে। উল্টো দিকের মানুষটির মেজাজের ওপরও নির্ভর করে ওই মুহূর্তে সে আদৌ ঠাট্টা বোঝার অবস্থায় আছে কি না। তাই ফোনে এমনটা করতে চাইলে অবশ্যই সাবধান থাকো। দরকারে ঠাট্টার ইমোজি ব্যবহার করো।

একটু খেয়াল রাখো সময়েরও। প্রেম নতুন হোক বা পুরোনো, উল্টো দিকের মানুষটার ব্যস্ততার কথা মাথায় রেখেই টেক্সট করো। তা ছাড়া কাজ না থাকলেও সারাক্ষণ টেক্সট বা মেসেজ করে যাওয়াটা খুব একটা কাজের কথা নয়। অফিসের সময় বা কোনো ক্লাসে থাকার সময় বারবার টেক্সট করা উচিত নয়।

সবে প্রেম শুরু করলে আরও কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকো। ইঙ্গিতপূর্ণ কথা, শারীরিক সম্পর্ক ঘেঁষা কথা, চটুল ও লঘু রসিকতা এ ক্ষেত্রে না বলাই ভালো। ভুল বানান বা ভুল বাক্য গঠনের দিকে নজর দাও। উল্টো দিকের মানুষটার কাছে তুমি যত গুরুত্বপূর্ণই হও না কেন, ভুল বানান ও বাক্য পড়তে খুব একটা ভালো লাগে না। তাই সেদিকে নজর দাও।

ভুল ইমোজি ব্যবহার করার দিকেও সচেতন হও। নইলে বলতে চাইবে এক রকম, বোঝাবে আরেক রকম। সঙ্গীর অপ্রিয় প্রসঙ্গ বা দ্বিধা রয়েছে এমন বিষয় নিয়ে টেক্সটে কথা বলবে না। ওগুলো একান্তই এড়ানো না গেলে তুলে রাখো মুখোমুখি সাক্ষাতের সময়ের জন্য।


লেখা: রোদসী ডেস্ক 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনজীবনযাত্রারোমান্স রসায়ন

বিয়ের আগে ও পরে

করেছে Sabiha Zaman জানুয়ারী ২৩, ২০২০

প্রেমের মৃত্যু নাকি বিয়েতে! এমন নেতি দিয়ে শুরু করাটা কি ঠিক হলো? কিন্তু প্রেম করে বিয়ে করছেন যাঁরা, এ কথা তাঁদের চারপাশের মানুষজন হরহামেশাই যে বলে থাকেন। বিয়ের আসরে এটি জনপ্রিয়তম রসিকতাও বটে, যা অনুষ্ঠানের বাতাসে উড়তেই থাকে। আসলেই কি বিয়ের পর প্রেম উবে যায়? বিয়ের পর কি প্রেম হয় না? লিখেছেন আশরাফুল ইসলাম

শেষের কবিতা শুরুতে

প্রেম-বিয়ে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ স্পষ্ট বলেননি। শেষের কবিতায় প্রেমের মনস্তত্ত্ব বলেছেন অমিত রায়ের মুখে। প্রেমিকা লাবণ্যকে নয়, অমিত বিয়ে করেছে কেতকী ওরফে কেটিকে আর বলেছে ‘যে ভালোবাসা…আকাশে মুক্ত থাকে অন্তরের মধ্যে সে দেয় সঙ্গ; যে ভালোবাসা…প্রতিদিনের সবকিছুতে যুক্ত হয়ে থাকে সংসারে সে দেয় আসঙ্গ। দুটোই আমি চাই।’ যখন অমিত বলে, ‘কেতকীর সঙ্গে আমার সম্বন্ধ ভালোবাসারই; কিন্তু সে যেন ঘড়ায় তোলা জল…প্রতিদিন ব্যবহার করব আর লাবণ্যর সঙ্গে আমার ভালোবাসা সে রইল দিঘি। সে ঘরে আনবার নয়…তখন শেষের কবিতার যতির মতো আমরাও কুণ্ঠিত হয়ে বলি, কিন্তু অমিতদা, দুটোর মধ্যে একটাকেই বেছে নিতে হয় না?

রবীন্দ্রনাথের উত্তর অমিতের মুখে যার হয় তারই হয়, আমার হয় না। কিন্তু আমরা যারা জনসাধারণ, তুর্কি-তরুণ, ভালোবাসছি-বেসেছি-বাসব; প্রেম করে বিয়ে করছি, বিয়ে করেও প্রেম করব, তাদের বেলায়?

প্রথম প্রেমের গান

সদ্য বিয়ে করেছে বিশ্ববিদ্যালয় পেরিয়ে চাকরিতে ঢোকা এক তরুণী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। বলল, বিয়ের আগে ভালোবাসা হয়নি। দূর থেকে চেনাচেনা (ফেসবুকের কল্যাণে) মানুষটিকে বিয়ে করেছে পারিবারিকভাবে। বিয়ের পর কাছাকাছি হয়ে মাস ছয়েকেই গভীর প্রেমে পড়েছে দুজনেই, তো বিয়ের পরও ‘প্রথম’ প্রেম হয়!

চল্লিশের মোহনা পেরিয়ে

পেশায় প্রকৌশলী। পারিবারিক বিয়ে। চল্লিশ পেরিয়ে আজও স্ত্রীর প্রতিটি খুঁটিনাটি, পছন্দ-অপছন্দ, ছোটখাটো শখ-চাওয়া-না বলা ইচ্ছে সব পূরণ করেন, মনে রাখেন আর মুগ্ধ করেন অর্ধাঙ্গিনীকে। কীভাবে? প্রশ্নের উত্তরে তার জবাব ভালোবাসা অনেকটা লাজুক লতার মতো, তাকে সারাক্ষণ আদর-যত্নে রাখতে হয়। আলাদা করে তার অর্ধাঙ্গিনীকেও প্রশ্ন করলে সেই একই উত্তর। আসলে মেলবন্ধনে দুজনেরই প্রেম জরুরি, নইলে হয় না।

বেঁচে থাক সর্দি–কাশি

সাহিত্যে প্রেমের বৈচিত্র্যময় সব ছবি এঁকেছেন সৈয়দ মুজতবা আলী। শিরোনামটি তারই এক গল্পের। সেখানে জার্মানির শীতে সর্দি-কাশিতে পেরেশান তিতিবিরক্ত লেখককে তার প্রেমের গল্প বলছেন এক ডাক্তার। বলছেন সর্দি-কাশির ভালো দিকও আছে। কেননা, এই সর্দি-কাশিই তো মিলিয়ে দিয়েছিল তার প্রেমকে। পূর্ণতা পেয়ে প্রেম যে মোহনায় মেশে, তার নামই তো সংসার; সেখানে বিশ্বাস, সমানুভূতি আর দায়িত্বশীলতার পায়ে ভর করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয় ভালোবাসা।

বিয়ের আগে

বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীরা ছোটবেলা থেকেই মনের মাধুরী মিশিয়ে তৈরি করে রাখা আদর্শ বা পারফেক্ট পাত্র বা পাত্রী খুঁজতে থাকে। অথচ পৃথিবীর কেউ পারফেক্ট নয়। এ ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থানের কথা মাথায় রেখে প্রত্যাশার একটা ন্যূনতম মান নির্ধারণ করে পাত্র-পাত্রী খোঁজা ভালো। পাত্র-পাত্রী খোঁজার সময় তাদের ব্যক্তিত্ব, পেশাগত কাজের ধরন, পারিবারিক সংস্কৃতি ও রীতিনীতি জানা প্রয়োজন।

‘তাকে’ দেখতে যাওয়া

বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীকে দেখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পাত্র-পাত্রীর নিজেদেরও পরিচিত হয়ে নেওয়াটা জরুরি। কিন্তু বারবার দেখতে এলে তার মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। বিয়ের পরও এর নেতিবাচক প্রভাব দেখা যেতে পারে।

ছবি দেখে ও খোঁজখবর নিয়ে পছন্দ হলে কোনো রেস্টুরেন্ট বা মার্কেটে পাত্রীর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে দেখা করো এবং স্বাভাবিক সামাজিক কথাবার্তা বলে একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করাটাই ভালো। সব দিক থেকে পছন্দ হলেই শুধু আনুষ্ঠানিকভাবে পাত্র-পাত্রীর বাসায় যাওয়া উচিত। পাত্র বা পাত্রীকে দেখতে গিয়ে এমন কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য করবে না, যা তার জন্য অপমানজনক। কোনো তথ্য জানতে হলে কৌশলী হতে পারো।

বিয়ে ঠিক হলে    

বিয়ে ঠিক হলে পাত্র-পাত্রী নিজেদের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করে নিতে পারলে ভালো। একই সঙ্গে উভয় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অন্তত ফোনে হলেও কথা বলে সম্পর্কগুলো সহজ করে নেওয়া যেতে পারে। এ সময় সততার সঙ্গে তথ্যর আদান-প্রদান করা উচিত। বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রী তার ভাবী স্ত্রী বা স্বামীকে একজন আদর্শ স্ত্রী বা স্বামী হিসেবে কল্পনা করতে পছন্দ করে।

শ্বশুর-শাশুড়িসহ সবাই তাকে আদর করবে, সবার সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক থাকবে। মনে রাখতে হবে, আদর্শ ও বাস্তবতার মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য থাকবে। কারণ কেউ সব দিক থেকে আদর্শ নয়। অন্যদিকে তাদের মধ্যে কিছু আশঙ্কাও কাজ করতে থাকে। মেয়েদের মধ্যে শ্বশুরবাড়ির লোকজন কেমন হবে, তাদের সঙ্গে মানাতে পারবে কি না, স্বামী তাকে বুঝবে কি না, এ ছাড়া তার প্রিয় পরিবেশ ছেড়ে যেতে হবেÑ এটার একটা কষ্ট তার মধ্যে দানা বাঁধতে থাকে। বিয়ের আগে ও পরে পাত্র-পাত্রীর একে অপরের আশঙ্কাগুলো বুঝে তাকে আশ্বস্ত ও সহায়তা করা উচিত।

বিয়ের দিন কনেকে ঠাট্টা নয়

বিয়ের দিন ঠাট্টা বা ঠকানোর বিষয়টি পুরোনো প্রচলন। ঠকানোর বিষয়টি অন্যদের ওপর তেমন প্রভাব বিস্তার না করলেও কনের ওপর অনেক প্রভাব ফেলে। কনে অনেক মানসিক চাপ, আশঙ্কার মধ্যে থাকে এবং তাকেই নতুন পরিবেশে যেতে হয়। এ কারণে তার মনের অবস্থা নাজুক থাকে। তাই সামান্য পিনের খোঁচা বুলেটের চেয়েও বেশি ব্যথিত করে। এটার প্রভাব মেয়েটির মনের অজান্তেই দীর্ঘদিন থেকে যায়।

এ জন্য বিয়ের দিন প্রথম দেখাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। নতুন বউয়ের সঙ্গে ঠাট্টা না করে সহমর্মিতার সঙ্গে কথা বললে তার সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

বিয়ের পর

বিয়ের পর স্ত্রী স্বামীকে আরও বেশি করে অনুভব করে এবং স্বামীও তার মতো করে প্রচণ্ড আবেগ দিয়ে তার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করার প্রত্যাশা করে। অনেকে এই আবেগকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মনে করে বিরক্ত হয়। অন্যদিকে সামাজিক কারণেই স্বামীকে অনেক দায়িত্ব নিতে হয়। স্ত্রীকে সম্মানজনক অবস্থায় রাখতে হবে, সন্তানদের ভবিষ্যৎ তৈরি করতে হবে ইত্যাদি। ফলে স্ত্রী মনে করে, স্বামী তাকে আর আগের মতো ভালোবাসে না। এ সময় সন্দেহের সুপ্ত বীজ উপ্ত হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ছেলেটি যে মেয়েটিকে ভালোবাসে না তা নয়, কিন্তু তা প্রকাশ করতে পারে না অথবা প্রকাশ করার প্রয়োজন অনুভব করে না। হয়তো স্ত্রী-সন্তানদের সুখ-স্বাছন্দে নিশ্চিত করার জন্যই সে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এ সময় স্বামীর উচিত স্ত্রীর আবেগকে বোঝার চেষ্টা করা এবং স্ত্রীকে যথাসম্ভব সময় দেওয়া। একই সঙ্গে স্ত্রীরও বোঝা উচিত স্বামীর ব্যস্ততার অর্থ ভালোবাসা কমে যাওয়া নয়, এই পরিশ্রমের উদ্দেশ্য তাদের ভালো রাখার প্রচেষ্টা।

নবদম্পতি ও যৌথ পরিবার

যৌথ পরিবারে অনেক সময় দম্পতিরা একান্তে সময় কাটানো বা একটু কাছাকাছি আসতে কুণ্ঠা বোধ করে। ফলে তাদের মানসিক চাহিদা পূর্ণ হয় না। বরং একধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়। স্বামী হয়তো বাইরে গিয়ে অস্বস্তি কিছুটা কমিয়ে ফেলতে পারে, কিন্তু স্ত্রীর মধ্যে দিনে দিনে অস্বস্তিটা জমাট বাঁধতে থাকে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এই অস্বস্তি সংযুক্ত হয়ে যায়। ফলে মেয়েটির মনের অজান্তেই পরিবারের সদস্যদের প্রতি বিরক্তিবোধ তৈরি হতে থাকে। একান্ত সময়গুলোতে যাতে সে অবাধে সারা দিনের আবেগ প্রকাশ করতে পারে, সেই সুযোগ দিতে হবে। তার আবেগের প্রতি অতিপ্রতিক্রিয়াশীলতা দেখানোর প্রয়োজন নেই, বরং তার আবেগকে স্বীকৃতি দিতে হবে। যৌথ পরিবারের অন্য সদস্যদের উচিত নবদম্পতিকে কিছুটা সময় একান্তে কাটানোর সুযোগ দেওয়া। মেয়েটি যাতে এই পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠতে পারে, এ বিষয়ে তাকে সহায়তা করা।

স্ত্রী ও পরিবারের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা

বিয়ের পর ছেলেটিকে যে শক্ত কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয় তা হচ্ছে স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্য, বিশেষত মায়ের মধ্যে ব্যালান্স করা। ছেলেটির জন্য মা ও স্ত্রী তার দুই হাতের মতো; কোনোটিই তার বেশি আপন বা পর নয়। একইভাবে সে মা ও স্ত্রী উভয়েরই ভালোবাসার পাত্র, দুজনই তার কাছ থেকে যথেষ্ট মনোযোগ প্রত্যাশা করে, যা খুবই স্বাভাবিক। তাই ছেলেটিকে এ ক্ষেত্রে বিচক্ষণতার সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে হবে। মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শুনতে হবে এবং কাউকে কষ্ট না দিয়ে বিষয়টি মোকাবিলা করতে হবে।

জীবনধারার পরিবর্তন

বিয়ের পর ছেলে ও মেয়ে উভয়কেই তার লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে হয়। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে সময় দেওয়া কমে যায় এবং খাওয়া, ঘুমসহ জীবনের নানা উপাদান নতুন মানুষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করতে হয়। এ ক্ষেত্রে উভয়কেই কিছুটা ছাড় দিতে হবে। খরচের হাত কিছুটা সীমিত করতে হয়। তবে মনে রাখা দরকার, হঠাৎ করে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করা কঠিন। এ জন্য তাকে কিছুটা সময় দেওয়া উচিত এবং উন্নতি হলে উৎসাহিত করা উচিত।

কিছু বোঝাপড়া

  • বিয়ে হলেই অবধারিতভাবে ভালোবাসা এসে ধরা দেবে তা নয়। ভালোবাসা তৈরি ও রক্ষার জন্য সব সময় দুজনেরই ভূমিকা থাকতে হয়।
  • নতুন জীবনের সঙ্গে তোমার লাইফস্টাইল অ্যাডজাস্ট করে নাও। যেকোনো সম্পর্কই ছাড় প্রত্যাশা করে।
  • স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে আনন্দদায়ক কিছু করো; যেমনÑ দূরে বেড়াতে যাওয়া, একসঙ্গে হাঁটা, মার্কেটে যাওয়া। তোমার কিসে ভালো লাগে তা সঙ্গীকে জানাও তার ভালো লাগাতেও গুরুত্ব দাও।
  • সঙ্গীর ভালো কাজের সত্যিকারের প্রশংসা করো।
  • মাঝেমধ্যে উপহার দাও, সারপ্রাইজ দাও এবং সৃজনশীল কিছু করো। যাতে দুজন দুজনার প্রতি যত্ন ও ভালোবাসা প্রকাশিত হয়।
  • মনের মধ্যে কষ্ট বা ভালো লাগা তৈরি হলে তা ইতিবাচকভাবে প্রকাশ করো। সঙ্গী প্রকাশ করলেও তার স্বীকৃতি দাও। রাগ সঠিকভাবে প্রকাশ করা শেখো। স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে পছন্দনীয় কোনো নামে ডাকতে পারে।
  • পরিবারে কোনো সমস্যা তৈরি হলে খোলামেলা আলোচনা করে সমাধান করো। পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো দুজনে মিলে আলোচনা করে নাও।
  • উভয় পরিবারকে শ্রদ্ধা করো এবং পরস্পরকে খোঁচা মেরে কথা বলা এড়িয়ে চলো।
  • নিশ্চিত প্রমাণ ছাড়া একে অপরকে সন্দেহ করা এড়িয়ে চলো। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতাগুলো বারবার মনে করিয়ে দেওয়া থেকে বিরত থাকো। পরস্পরের সঙ্গে অঙ্গীকারগুলো রক্ষা করো এবং তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করো।

পাদটীকা : আনা কারেনিনা 

অবশ্য বিয়ের পরের প্রেম মানেই যে ধোয়া তুলসীপাতা, তা নয়। পরকীয়া, জানালার ওপাশে উঁকি দেওয়া মদির, নিষিদ্ধ রাতের মতো। তলস্তয় তার বিখ্যাত উপন্যাস আনা কারেনিনা শুরু করেছিলেন যে বাক্যে, উদ্ধৃতি হিসেবেও তা বিখ্যাত। পৃথিবীর প্রতিটি সুখী পরিবার একই রকমভাবে সুখী, প্রতিটি অসুখী পরিবার নিজের নিজের ধরনে অসুখী।’কিন্তু আমরা কি অসুখী হওয়ার জন্যই বিয়ে করি? সুখ সবারই চাই। আনাও চেয়েছিল। তবে সাধু সাবধান। তলস্তয়ের দিব্যদৃষ্টি ছিল। এর পরিণতি ভয়ংকর। তার চেয়ে ‘একই রকম’ভাবে সুখী হওয়াই শ্রেয় নয় কি!

লেখা : আশরাফুল ইসলাম

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রারোমান্সরোমান্স রসায়ন

রাশ টানো এসব অভ্যাসে

করেছে Sabiha Zaman জানুয়ারী ১৩, ২০২০

জীবনের গ্রাফ কখনোই এক পথে চলে না। প্রতিদিনের নানা ঘটনার কারণে নিয়ত এই গ্রাফ ওঠানামা করে। প্রত্যেকেরই নিজস্ব অভ্যাসের গণ্ডি আছে। আর সেই গণ্ডির ভেতরেই থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে বেশির ভাগ মানুষ। সেই অভ্যাসে সামান্য হলেও পরিবর্তন আসে জীবনে প্রেম এলে। একা থাকা আর কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়ার মধ্যে ফারাক কিছুটা থাকেই। ছোটখাটো নানা জিনিসের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই নতুন সম্পর্কের সঙ্গে বসত শুরু করে মানুষ।

নতুন সম্পর্ক তৈরি হলে দুই পক্ষকেই মানিয়ে নিতে হয় কিছু কিছু জিনিস। খবর রাখতে হয় একে অপরের পছন্দ-অপছন্দের দিকটারও। সে কারণেও বদল আসে কিছু অভ্যাসের। কিছু ক্ষেত্রে মানিয়ে নিতেও অসুবিধা হয়। আর তখনই সমস্যা তৈরি হয় সদ্য তৈরি হওয়া সম্পর্কে। তাই কিছু অভ্যাসে সামান্য বদল এনে সম্পর্ক ও জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখার প্রয়োজন পড়ে কখনো-সখনো। নতুন সম্পর্কে জড়ালে নিজের কোন অভ্যাসগুলোয় রাশ টানা জরুরি, সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। কোন কোন দিকে খেয়াল রাখলে প্রথম থেকেই সম্পর্কের ভিত মজবুত হবে, জানো?

 

সময় ভাগ করে নাও

মাঝেমধ্যে সম্পূর্ণ একা সময় কাটাতে চাওয়াটা দোষের নয়। সম্পর্কে থেকেও সেই সময় বের করে নেওয়া যায়। কিন্তু এই একা সময় কাটানোর ইচ্ছা যদি অভ্যাসে পরিণত হয় সম্পর্কে জড়ালে, তা বদলাতে হবে। সারাক্ষণই একা থাকতে চাওয়ার অভ্যাসে তোমার প্রেমের সম্পর্কের জন্যও ক্ষতিকর। তাই একে অপরকে সময় দাও। পরস্পরের সান্নিধ্যে খুঁজে নাও জীবনের আনন্দ।

 

একা ঘুরতে যাওয়া

অনেকেই একা ঘুরতে যেতে ভালোবাসে। জীবনে নতুন মানুষ এলেই যে তোমার একা বেড়াতে যাওয়ার অভ্যাস বন্ধ হয়ে যাবে, তা নয়। তবে একা ঘুরতে যাওয়ার পাশাপাশি দুজন বা পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার অভ্যাসটাও করে ফেলো। কোনো কোনো ট্রিপে নিজের সঙ্গীকে ও পরিবারকে নিয়ে যাও। এর ফলে তোমরা একে অপরের সঙ্গে একান্তে অনেকটা সময় কাটাতে পারবে। জেনে নিতে পারবে একে অপরের পছন্দ-অপছন্দগুলো।

 

সঙ্গীর ওপর নির্ভরতা

দীর্ঘদিন একা থাকার কারণে অনেকের মধ্যেই একটা স্বাধীন মনোভাব জন্মে যায়। তবে সম্পর্ক সুন্দর রাখতে চাইলে তোমাকে নিজের সঙ্গীর ওপর নির্ভর হতেও শিখতে হবে। সম্পর্কে জড়ানো মানেই স্বাধীনতা বিসর্জন দেওয়া নয়। আত্মনির্ভর হয়েও প্রেমিক বা প্রেমিকার ওপর কিছু কিছু বিষয়ে নির্ভর করা যায়। সম্পর্ক জড়ানোর সময় এই কথাগুলো মাথায় রাখো।

 

ইগো সরাও

সম্পর্কে থাকলে ইগোকে কিছুটা বিসর্জন দিতে হয়। এমনিতেই অকারণ ইগো জীবনে ক্ষতিই করে। সঙ্গীর সঙ্গে ভুল-বোঝাবুঝিও বাড়তে পারে এতে। কোনো বিষয়ে মতান্তর হলে দরকারে নিজে এগিয়ে মিটমাট করে নাও। সম্পর্কের শুরুতে তুমি উদারতা দেখাতে পারলে আজীবন সঙ্গীও এই সম্পর্ককে সম্মান করতে শিখবে। কোনো কারণে রাগ বা অভিমান হলে অন্তর্মুখী স্বভাবের মানুষ হলেও খারাপ লাগা-ভালো লাগার প্রকাশ করো। লক্ষ রাখো নিজের নানা কাজ ও কথায় ভালোবাসাও যেন প্রকাশ পায়।

লেখা : রোদসী ডেস্ক

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
কর্মক্ষেত্ররোমান্স রসায়ন

প্রেম বনাম অফিস

করেছে Rodoshee Magazine জানুয়ারী ২৩, ২০১৯

এক গবেষণায় দেখা গেছে, সহকর্মীর সঙ্গে প্রেম করার হার গড়ে ১৬ শতাংশ। ধরো ওই ১৬ শতাংশের তুমি একজন। আর তুমি জানো ‘যুদ্ধে ও প্রেমে সবই সঠিক’। আসলেই কি তাই? লিখেছেন স্বরলিপি।

প্রেমে পড়লে টেস্টোস্টেরন হরমোনের প্রভাবে হৃদকম্পন বেড়ে যায়। বিশেষ আকর্ষণ বোধ হয় বিপরীত লিঙ্গের প্রতি। ক্রিয়াশীল হয় ডোপামিন বা ‘সুখের হরমোন’। এই হরমোন প্রেমের প্রতি নেশা বাড়িয়ে দেয়। ফলে আবেগ সংবরণ কষ্টকর হয়ে যায়। ভালোবাসার মানুষ ছাড়া অন্যকিছু ভাবনা করাও কঠিন হয়ে পড়ে। প্রেমে পড়ার অন্তত তিন-চার মাস লেগে যায় মনে স্থিতি পেতে।
প্রেমতো বোধের, প্রেম সুখের; তাই বলে সবখানে প্রেমের লাগাম ছেড়ে রাখলে তো চলবে না। বিশেষ করে অফিসে।
অফিসে প্রেম, তবে…

বোল্ডস্কাই-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে অফিসে প্রেম প্রসঙ্গে ভালো গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে।

কাজের ফাঁকে যেটুকু সময় চা বা কফি পানের সুযোগ পাওয়া যায়, কফি খাওয়ার ছলে হতে পারে দেখা। এই সুযোগে মুখোমুখি বা পাশাপাশি বসে কফি খাওয়া আর অল্পস্বল্প কথাপর্ব শেষ করে নিতে পারো। সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে রোমান্স যেন কর্মক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ না হয়।

  •  শুধু প্রেমের সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে কর্মক্ষেত্রে সাফল্য পাওয়ার চেষ্টা করা বড় ভুল। এতে কর্মস্পৃহা কমে যায়। ভুলেও এ ধরনের চেষ্টা করা ঠিক নয়।

  •  অফিসে তোমার প্রথম পরিচয় তুমি একজন কর্মজীবী।

  •  ইনবক্সে অনবরত চ্যাট করার নেই কোনো মানে বরং অফিস টাইমের পরে একজন আর একজনকে সময় দিতে পারো। সে ক্ষেত্রে যদিও একটু নাটকীয় আচরণ দরকার হয়ে পড়ে, তবু ভালো। অফিস টাইমের পরে দেখা হোক, কথা হোক। এই সময়ে অফিশিয়াল বিষয় আলোচনায় না নেওয়াই ভালো। খুব কাছে পেয়েও যার সঙ্গে কথা বলার এতটুকু ফুরসত জোটেনি বরং তার কথা শুনতে চাও। তার কথা বুঝতে চাও।

  • অফিসের প্রেম ভালোবাসাকে গোপন রাখার পক্ষে মত দেন অনেকে। এক জরিপে দেখা দেখে, ৭১ শতাংশ চাকরিজীবী অফিসে তাদের প্রেমের সম্পর্কটা গোপন রেখেছেন।

  • প্রেমের সম্পর্ক বলে কথা, গোপন করতে চাইলেই কি গোপন করা যায়। আবার ৭২ শতাংশ ডেটিংয়ে গিয়ে অন্য কোনো সহকর্মীর কাছে হাতেনাতে ধরাও খেয়েছেন!

অফিসে রোমান্সের বিষয়টি সহকর্মীরা ভালো চোখে দেখেন না। সুতরাং রোমান্সের বহর রয়ে সয়ে দেখাও। কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীরাও তোমার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ। তাদের আলাদা গুরুত্ব দিতে হবে।
অফিসে প্রেমের উল্টো পাঠ

  • প্রেম যখন হয়েই যায়, কেউ না কেউ জেনে যায়। অফিসে যেন নিজের ব্যক্তিত্ব ঠিক থাকে। সেজন্য খেয়াল রাখো অফিসের নীতিমালা। তাছাড়া কোন কোন প্রেমের সম্পর্ক বিয়ের সম্পর্ক পর্যন্ত গড়ায় আবার কোন সম্পর্ক মোড় নেয় বিচ্ছেদের দিকে। প্রেমের পরিণতি যখন ব্রেকআপের দিকে যায়, তখন একজন আর একজনের সামনে থেকে সরে যাওয়ার পায়তারাও শুরু হয়। এতে অনেকেই চাকরি ছেড়ে দেয়। পরিস্থিতি যাইহোক নিজেকে অফিস পরিবেশের সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা থাকতে হবে। ব্যক্তিগত সম্পর্ক আর অফিসের সম্পর্ক এক করে ফেললে চলবে না।

ভালোবাসা যেন ফায়দা লুফে নেওয়ার কারণ না হয়। হঠাৎ এমন কথা আসার কারণ হলো- ক্যারিয়ারবিল্ডারডটইন এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬৮ শতাংশ কর্মজীবী তাদের থেকে পদমর্যাদায় উপর দিকের কারও সাথেই প্রেম করতে অধিক আগ্রহী থাকে।

ভালোবাসার কারণ হোক হৃদয়ে হৃদয়ে বোঝাপড়ার।

এতো গেলে প্রেমের পাঠ। এবার, যারা বিয়ে করে একই কর্মস্থলে নিয়োজিত তাদের কথায় আসা যাক।

 একই অফিসে স্বামী-স্ত্রী
অফিসে পেশাদারিত্বই প্রথম। সেক্ষেত্রে একই অফিসে স্বামী-স্ত্রী চাকরি করলে প্রয়োজন বিশেষ সতর্কতা। দূরত্ব বজায় রেখা চলা ভালো। ভারতের দাম্পত্যবিষয়ক পরামর্শদাতা ড. সঞ্জয় মুখার্জির পরামর্শ হলো, স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে একই অফিসে চাকরি করবেন, এমন চিন্তা মাথায় না রাখাই ভালো। এক অফিসে কাজ করলে দুজনের মধ্যে প্রতিযোগী মনোভাব তৈরি হয়। ফলে বিবাহিত জীবনের সুখ-শান্তি নষ্ট হতে পারে।

বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।

প্রতিযোগী মনোভাব দূর করতে হবে
কোন একজনকে বস প্রশংসা করলে অন্য আরেকজন হিংসা করবে না। বা যে কোন একজনের পদন্নতি আর একজন নিজের দূর্বলতা হিসেবেও দেখবে না। এতে মানসিক দূরত্ব তৈরি হবে। মনে রাখতে হবে, স্বামী-স্ত্রীর যে কোন একজনের পদোন্নতি মানে তো দুজনেরই সফলতা; সংসারের জন্য শুভবার্তা।

কর্মক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী একজন আর একজনের সঙ্গে সংযত আচরণ করতে হবে। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাও থাকতে হবে।

মডেল : মুহাইমিন ও রাফিয়া

ছবি : আরাফাত সৈকত লালন

০ মন্তব্য করো
1 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়রোমান্স রসায়ন

মধুর মধুচদ্রিমা

করেছে Rodoshee Magazine ডিসেম্বর ২, ২০১৮

সামনেই বিয়ে, অথচ ভেবে পাচ্ছো না ঠিক কোথায় গেলে এক্কেবারে তাক লাগিয়ে দেওয়া যাবে পছন্দের মানুষটিকে। বহু জায়গার খোঁজ নিয়েও ঠিকঠাক পছন্দের জায়গা কিছুতেই ঠিক করে উঠতে পারছ না। চিন্তা কিছুটা দূর করতে পারো এই জায়গাগুলো সম্পর্কে জেনে। তুলনামূলক কম বাজেটে পাশের দেশ থেকেই হতে পারে স্বপ্নের হানিমুন।

খজ্জিয়ার, হিমাচল প্রদেশ
সুইজারল্যান্ড দেখার শখ থেকে থাকলে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতেই পারো এই জায়গায় গিয়ে। হিমাচল প্রদেশের চাম্বার খজ্জিয়ার এলাকাটি সুইজারল্যান্ডের সৌন্দর্যের থেকে কিছু কম নয়। ডালহৌসি থেকে ২৪ কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই স্বপ্ন সুন্দর জায়গায়। খজ্জিয়ার পিকের আশপাশে ঘুরে কালাটপ অভয়ারণ্য সঙ্গীর সঙ্গে একান্তে দেখে নিতে পারো।

আলাপ্পুঝা, কেরালা
কেরালার ব্যাক ওয়াটারে হাউসবোটে যদি ঘনিষ্ঠতাকে রোমান্টিসিজমে ভরিয়ে দিতে চাও, তো যেতেই পারো কেরালা। কেরালার আলাপ্পুঝা বা আলেপ্পির অসামান্য অভিজ্ঞতায় তোমার মন ভরে যাবে। সবুজ প্রকৃতির মধ্যে আয়ুর্বেদিক ম্যাসাজে, এই সফর জীবনের অন্যতম সেরা সফর হবে।

শিলং, মেঘালয়
উত্তর-পূর্বের মনোরম প্রকৃতির নিস্তব্ধতায় একান্ত ঘনিষ্ঠতাকে আরও উসকে দেবে মেঘালয়ের শিলং। ভারতের স্কটল্যান্ড শিলংয়ে উমাইম লেক, চেরাপুঞ্জি হানিমুনের অন্যতম আকর্ষণ হতে পারে। এখানের উমেগাত নদীতে নৌবিহারের মজাই আলাদা। নদীর স্বচ্ছ পানি তোমার মন ভরিয়ে দেবে। এই এলাকার একদিকে খাসি পর্বত, অন্যদিকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত। এলাকার নৈসর্গিক দৃশ্যে মন চাঙা হবে।

তাওয়াং, অরুণাচল প্রদেশ
অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং হলো হানিমুন গন্তব্যের অন্যতম আকর্ষণীয় জায়গা। এখানের নউরাং জলপ্রপাত থেকে সঙ্গা সের লেকে একসঙ্গে স্মরণীয় কিছু মুহূর্ত কাটাতে পারো।

হাফলং, আসাম
আসামের হাফলং দম্পতিদের জন্য অত্যন্ত ভালো হানিমুন ডেস্টিনেশন। বিশেষ করে পাহাড় পছন্দ থাকলে এই জায়গাটি ঘুরে আসতেই পারো। এখানের হাফলং লেক ও স্থানীয় সংস্কৃতির খাবার তোমার মন ভরাতে বাধ্য। কর্ণাটক কফি রাজ্যের সবুজ পাহাড় আর নীরবতায় ঠাসা কুর্গ হানিমুন কাপলদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্র। কুর্গ যাওয়ার পথে বান্দিপোর জঙ্গলে থেকেও যেতে পারো, যা নিঃসন্দেহে একটি অন্যতম আকর্ষণের বিষয়। এখানের বারাপোল নদীতে রয়েছে রিভার র‌্যাফটিংয়েরও সুযোগ।

গোকর্ণ, কর্ণাটক
তোমার সঙ্গীটির যদি সমুদ্র পছন্দ হয়, তাহলে যেতেই পারো কর্ণাটকের গোকর্ণে। এখানের কুদল বিচ তোমার মন মাতাবে। আর রাতের আকাশের সৌন্দর্যে যদি সেই বিশেষ মানুষটিকে নিয়ে হারিয়ে যেতে চাও, তাহলে রয়েছে ওম বিচ। এ ছাড়া বহু আকর্ষণীয় স্পট রয়েছে এই গোকর্ণে।

তারাকারলি, মহারাষ্ট্র
মহারাষ্ট্রের তারাকারলিও আরব সাগরের কোলের একটি অপূর্ব উপকূলীয় অঞ্চল। এখানের সিন্ধুদুর্গের শোভা যে কোনো দম্পতির মন ছুঁয়ে যাবে। কোলাহল থেকে দূরে একান্ত ঘনিষ্ঠতায় থাকতে হলে এই জায়গার জুড়ি নেই।

লেখা : রোদসী ডেস্ক

সূত্র : ওয়ান ইন্ডিয়া বেঙ্গলি

রোদসী/আরএস

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়রোমান্স রসায়ন

ওয়েডিং ডেস্টিনেশন 

করেছে Rodoshee Magazine ডিসেম্বর ২, ২০১৮

শহুরে কোলাহল থেকে দূরে ছিমছাম পরিবেশ। এর মধ্যেই বিয়ের সানাই। আলোর ঝলকানি। প্রিয় মানুষের হাত ধরে জীবনের নতুন ইনিংস ওপেন করতে এর চেয়ে মোক্ষম আর কী হতে পারে?

গেল বছরের ঘটনা, বহুল আলোচিত তারকা জুটি বলিউড অভিনেত্রী আনুশকা শর্মা আর ভারতীয় ক্রিকেটার বিরাট কোহলি নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে বিয়ে করলেন ইতালিতে। অতিথি সমাগম তেমন না বাড়িয়ে কিছু নিকটাত্মীয় ও বন্ধুকে নিয়ে ইতালির মিলান শহরে সেরেছেন তাদের বিয়ে। পুরো আয়োজন হয় সেখানেই।
এদিকে অনেক জল ঘোলা করে অবশেষে সাত পাকে বাঁধা পড়লেন রণবীর সিং এবং দীপিকা পাড়–কোন। এ বছর ১৪-১৫ নভেম্বর বিয়ে হলো তাদের। বিরাট আর আনুশকার মতোই এই জুটিও বিয়ে সেরেছেন ইতালিতে। ইতালিতে সাত পাকে ঘুরে রিসেপশন পার্টি হবে বেঙ্গালুরুতে।

শুধু তারকা জুটি নয়, নতুনত্বের সন্ধানে সামর্থ্যবান অনেকের আগ্রহ এখন ওয়েডিং ডেস্টিনেশনে। নিজের কাছে তো বটেই, আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছেও বিয়ের দিনটি বিশেষভাবে আলাদা ও স্মরণীয় করে রাখতে ওয়েডিং ডেস্টিনেশন  এখন সেরা অপশন। সহজ করে বললে নিজের পরিচিত গ-ির বাইরে বিয়ে করাটাই ডেস্টিনেশন ওয়েডিং। পরিবার আর কাছের কিছু মানুষ নিয়ে শহুরে কোলাহল থেকে বাইরে গিয়ে দেশ কিংবা বিদেশের প্রাকৃতিক কোনো পরিবেশে বিয়ে করাটা ওয়েডিং ডেস্টিনেশন  হিসেবে স্বীকৃত। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত দৈনিক ‘দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট’ জগদ্বিখ্যাত সেরা দশটি ওয়েডিং ডেস্টিনেশনের তালিকা প্রকাশ করেছে। ‘রোদসী’র পাঠকের জন্য থাকল সেটিরই উপস্থাপনা।

টাস্কানি, ইতালি
সূক্ষ্ম শিল্প, চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্যের জন্য ইতালির টাস্কানি শিল্পের সর্বশ্রেষ্ঠ সংগ্রহশালা। যতটা বেশি জানবে তুমি, টাস্কানিকে ততটাই অসাধারণ মনে হবে। ক্যাস্টেলো ডি ভিঞ্চিগিলিয়াটা। ফ্লোরেন্সের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েডিং ভেন্যু হিসেবে পরিচিত এই দুর্গ। এক পায়ে পাথুরে পাহাড়ের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ঐতিহাসিক এই দুর্গটি ফ্লোরেন্স শহর থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে। বছরের উষ্ণতম দিনগুলোতে এই দুর্গের ঢালাও আঙিনা ও খোলা ছাদ যেন নিশ্চল প্রহরী।

মুশা কে, বাহামা
নীল সমুদ্রের মাঝখানে এক টুকরো ভূখ-। স্বর্গের আঙিনা দেখতে হলে নাকি এখানে আসতে হয়! অভিজাত এই গন্তব্য নিয়ে যাবে দুই মাইল জোড়া গোলাপি বালুর সৈকতে। পাথুরে খিলান দরজা খুলে বসে আছে নীল সমুদ্রের মাঝে তোমাকে স্বাগত জানাতে। একটি নয়, গোটা পাঁচটি বিলাসবহুল বাড়ির উঠোনজুড়ে নিয়ে আছে নিজস্ব সৈকত। নীল ঢেউ আছড়ে পড়া দেখতে হলেও বরাদ্দ রাখতে পারো একটি কুটির। এর থেকে মোক্ষম ওয়েডিং ডেস্টিনেশন আর কী হতে পারে?

প্যারিস, ফ্রান্স
ভালোবাসার শহর নাকি প্যারিস? আসলেই কি তাই? লোককথা বলে রোমাঞ্চের সমার্থক নাকি প্যারিস। ইতিহাসে প্রেমের যত গান, কবিতা, কল্পকথা তার কেন্দ্র এই নগরীতে। সুপ্রশস্ত রাস্তায় বেরিয়ে পড়তে পারো সকাল কিংবা সন্ধ্যায়। মাথা হেলে তোমাকে স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়ে আছে ফাইভ স্টার হোটেল আর মোটেলগুলো। শুধু তাই নয়, রীতিমতো বিয়ের রলাভনীয় সব প্যাকেজ নিয়ে।

আলহামরা প্রাসাদ, স্পেন
উঠোনজোড়া বাগিচা, দূর থেকে ভেসে আসা ঝরনাধারার ঝংকার আর প্রাসাদের এক পাশে গা এলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দিগন্তজোড়া বরফের পাহাড়। কী, স্বপ্ন মনে হয়? স্পেনের আলহামরা প্রাসাদ এমনই এক স্বপ্নলোকের মাঝে তোমাকে অভিবাদন জানাচ্ছে। বিয়ের জন্য এই প্রাসাদে রাখা আছে রাজকীয় সব ব্যবস্থা। যেখানে আলহামরা প্রাসাদ, সেখানে রাজকীয় ঢঙের কোনো খামতি থাকারও কথা নয়।

নুসা দুয়া, বালি
বালিকে বলা হয় ঈশ্বরের ভূমি। আর সেটা কেনই-বা নয়? সোনালি বালুর সৈকত, নীলাভ স্বচ্ছ পানি, উপাসনালয়, ভাসমান কাচের চ্যাপল, ডাইভিং স্পট, বাগিচা রিসোর্ট কি নেই বালিতে! নুস দুয়া বালির দক্ষিণের একটি এলাকা। গের্গার পাথর মন্দির নুস দুয়ার অন্যতম আকর্ষণ। সমুদ্রের গা ঘেঁষে বনভূমি। তার মাঝে ফিসিং ক্যাম্প। এই বিস্তর নিয়ে বালি যেন বিয়ের সামগ্রিক আয়োজনের পসরা সাজিয়ে রেখেছে।

বুদির কালো গির্জা, আইসল্যান্ড
হাতে গুনে মোট তিনটি কালো গির্জা গোটা আইসল্যান্ডে। কিন্তু এই কালো গির্জা শুভবিবাহের মূল আকর্ষণ এখানে। ধূসর আকাশ, কালচে পাহাড় আর তেপান্তরের মাঠ বরাবর দাঁড়িয়ে আছে এই বুদির কালো গির্জা। শুধু আকর্ষণ নয়, ইতিহাস ও বলা চলে একে। মধ্যযুগের এই গির্জা পরবর্তী সময়ে দুবার পুনর্নির্মাণ করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে দম্পতিরা আসে বিয়ের বন্দোবস্ত নিয়ে। শুধু বিয়ে নয়, প্রিম্যারেজ শ্যুটের জন্যও বিখ্যাত এই বুদির কালো গির্জা।

উলুরু, অস্ট্রেলিয়া
উলুরু স্থানীয়ভাবে ‘আইরিশ রক’ নামে পরিচিত। ১৮৭৩ সালে স্যার হেনরি আইজার্সের নামে এটির নামকরণ করা হয়। আইরিশ এই লাল পাথুরে রিসোর্ট অস্ট্রেলিয়াকে দিয়েছে নাটকীয় এক পরিম-ল। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ধরা দেয় সহ¯্র লালের আবির। রাতের বেলা তারা খসে পড়া দেখতে হলেও তোমাকে এখানে আসতে হবে। এখানকার অতিরিক্ত উষ্ণতা এড়াতে সূর্যোদয়ের পরে বিয়ে করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এই উষ্ণতা সত্ত্বেও এখানে বিয়ের জন্য আসা কেবল উলুরুর অসাধারণ সৌন্দর্য পরিগ্রহ করার জন্য।

হাফ মুন রিসোর্ট, জ্যামাইকা
হাফ মুন রিসোর্ট নামটাই ইঙ্গিত দিয়ে দেয় বেশ খানিকটা। বিশ্বখ্যাত জ্যামাইকার এই ওয়েডিং ডেস্টিনেশন ক্যারিবিয়ান সাগরের প্রান্তে যেন এক রাজকীয় প্যাভিলিয়ন। জ্যামাইকার এয়ারপোর্ট থেকে মাত্র ১০ মিনিটের রাস্তা। ২৬ হাজার বর্গফুটের এক জমকালো কনভেনশন সেন্টারে তোমার কল্পনার সব আয়োজন করে রাখা হয়েছে।

মাচু পিচু
পেরুর মাচু পিচু। সমুদ্রের কোল ঘেঁষে উপত্যকা। তার প্রায় আট হাজার ফুট উচ্চতায় মাচু পিচুর অবস্থান। বিয়ে এবং হানিমুনের জন্য মাচু পিচুতে রাখা আছে এক থেকে তিন দিনের সুব্যবস্থা। ১৫ শতকের নির্মিত এই অ্যাডভেঞ্চার ওয়েডিং প্লেসে লাইভ সং, হিস্টরিক্যাল থিম ও স্থানীয় পাহাড়ি ফুলের ব্যবহার অনবদ্য সমন্বয়। মাচু পিচুর আরেকটি নাম আছে জানো তো? ‘ইকাসের লস্ট সিটি’ এর আরেকটি নাম। হাজার বছরের পুরোনো এই স্থাপত্য নিদর্শন আজও নতুন দম্পতিদের জন্য এক অনন্য আর্কষণ।

ক্লাইডেন হাউস
ইংল্যান্ডের পেনসিলভানিয়া স্টেটে অবস্থিত ক্লাইডেন হাউস। অতীত ঐতিহ্যর সঙ্গে এক পুনর্নির্মাণ ঘটানোর প্রয়াস এই হোটেলের। সর্বোচ্চ ২৫০ জন গেস্টের আতিথেয়তা দিয়ে থাকে ক্লাইডেন হাউস। যেখানে বিশ্বের পুরস্কারপ্রাপ্ত সব শেফ লোভনীয় সব ফুড সার্ভিস দিয়ে থাকে। বিলাসী এই মোটেলে ৪৭টি বসন্ত কুটির, সুবিশাল ডাইনিং, বিস্তর লাইব্রেরি, সফেদ ঘোড়ার গাড়ি, কোল ঘেঁষে বয়ে চলা শান্ত নদী, নৌকা ভ্রমণ মিলিয়ে যেন একটা কম্বো প্যাক।

শহরের কাছাকাছি পছন্দের কোনো রিসোর্টেও ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের আসর বসানো যায়। সেখানে বিয়ের সব আয়োজনের দায়িত্ব কোনো দক্ষ ওয়েডিং প্ল্যানারকে দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারো। বিয়ের দিন সকালে অথবা আগের দিন নিমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে গাড়ি বর-কনে যাবে রিসোর্টে। সারা দিন হৈচৈ, খাওয়াদাওয়া ও বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে কনেকে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে সবাই ঘরে ফিরবে। ঢাকার কাছে গাজীপুরে বেশ কয়েকটি রিসোর্ট আছে, যেখানে অনায়াসে মনমতো বিয়ের আসর বসানো যেতে পারে। অবশ্যই এ ক্ষেত্রে আগে থেকে বুকিং দিয়ে রাখতে হবে। রিসোর্ট ছাড়াও বড় বড় তারকা হোটেল ও বাংলোবাড়ি ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের ভেন্যু হতে পারে।

রোদসী ডেস্ক

রোদসী/আরএস

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • সঠিক হুইস্ক বাছাই করবো কীভাবে?

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook