রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

সুস্থ মন

ঘুরে বেড়াইচলন বলনজীবনযাত্রাদেশদেহ ও মনভ্রমণ ফাইলসুস্থ মন

মনের যত্নে বেড়ানো

করেছে Shaila Hasan মার্চ ২, ২০২৩

শরীরের শক্তি যেন মনই জোগায়। শরীরে বড় রোগ বাসা বাঁধলে, মনটাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে ঘুরে আসা যেতে পারে কাছে-দূরে কোথাও।  রোগীদের জন্য তারা যে ওষুধগুলো নিয়মিত খাচ্ছে তা পর্যাপ্ত পরিমাণে সঙ্গে নিচ্ছে কিনা। এছাড়া ডাক্তারের   প্রেসক্রিপশনের ফটোকপি বা তার শর্ট মেডিকেল হিস্ট্রি সঙ্গে থাকা ভালো। লিখেছেন কনিকা রায়।

সুন্দরবন
পৃথিবী বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল এই সুন্দরবন। এখানে রয়েছে নানা প্রজাতির হরিণের অবাধ বিচরণ। এছাড়াও দর্শনীয়   স্থানগুলোর মধ্যে করমজল ফরেস্ট স্টেশন, কটকা, হিরণপয়েন্ট, কচিখালী, মান্দারবাড়ীয়া, দুবলার চর, তিনকোনাদ্বীপ,  মংলা বন্দর ইত্যাদি। ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনের কিছু স্থান ঘুরে আসতে পারো।

জাফলং
জাফলংয়ের দর্শনীয় দিক হচ্ছে চা বাগান ও পাহাড় থেকে পাথর আহরণ। মারি নদী ও খাসিয়া পাহাড়ের পাদদেশে জাফলংঅবস্থিত।  মারি নদীতে ভ্রমণের মাধ্যমে পাথর সংগ্রহের দৃশ্য আপনাকে সত্যিই আনন্দ দেবে। এখানে প্রচুর বনজ প্রাণীর বসবাস। এখানে  গেলে খাসিয়া উপজাতিদের জীবন ও জীবিকা চোখে পড়বে। এছাড়াও দেখতে পারবে জৈন্তাপুর রাজবাড়ি, শ্রীপুর এবং তামাবিল স্থলবন্দর।  মাগুরছড়াও পথেই পড়বে।

রাতারগুল
সিলেটের রাতারগুলে রয়েছে নানান প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী। সিলেট-গোয়াইন ঘাটের সড়কের হরিপুরে বন  বিভাগের অধীনে বিশাল রাতারগুলে রয়েছে প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য নৌকায় ঘুরে বন দেখার সুবর্ণ সুযোগ। লোভাছড়া গোয়াইনঘাটের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে  কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা লোভাছড়া রয়েছে চা বাগান আর লেকবেষ্টিত নানান সৌন্দর্যপূর্ণ  স্থাপনা।

শ্রীমঙ্গল
সিলেটের শ্রীমঙ্গল যাওয়ার আগে রয়েছে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া ইকোপার্ক। বিশাল এ বনে রয়েছে নানান প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও  বিলুপ্ত অনেক বন্যপ্রাণী। এছাড়া তুমি ঘুরে আসতে পারো কুলাউড়ার ভাটেরায় প্রস্তাবিত পর্যটন স্পট ‘অভয়আশ্রমে’। যেখান থেকে  উপভোগ করা যাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হাকালুকির হাওর। দেখে আসতে পারো সুনামগঞ্জের শনিরহাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর,  দেখার হাওর,  ছাতকেরলাফার্জ সুরমা ও বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরিসহ অনেক অঞ্চল।

মাধবকুন্ড
মাধবকুন্ড দেশের বৃহত্তম একমাত্র প্রাকৃতিক জলপ্রপাত। মাধবকুন্ড ইকোপার্ক, নয়নাভিরাম দৃশ্য ও নান্দনিক পিকনিক স্পট হিসেবে  দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে সুপরিচিত। সুবিশাল পর্বতগিরি, শ্যামল সবুজ বনরাজিবেষ্টিত ইকোপার্কে প্রবীণ, নবীন, নারী-পুরুষদের  উচ্ছ্বাস অট্টহাসি আর পাহাড়ি ঝরনার প্রবাহিত জলরাশির কলকল শব্দ স্বর্গীয় ইমেজের সৃষ্টি করে।

সেন্টমার্টিন
আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল সেখানে মিলেমিশে একাকার, তীরে বাঁধা নৌকা, নান্দনিক নারকেল বৃক্ষের সারি আর ঢেউয়ের ছন্দে  মৃদু হাওয়ার কোমল স্পর্শ এটি বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন প্রবালদ্বীপের সৌন্দর্য বর্ণনার ক্ষুদ্র প্রয়াস। বালি, পাথর,  প্রবাল কিংবা জীববৈচিত্র্যের সমন্বয়ে জ্ঞান আর ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য অনুপম অবকাশকেন্দ্র সেন্টমার্টিন। কক্সবাজার জেলাশহর থেকে ১২০  কিলোমিটার দূরে সাগরবক্ষের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ সেন্টমার্টিন।

হিমছড়ি
এখানকার সৈকতের চেয়েও আকর্ষণীয় হলো এর ভ্রমণ পথ। সৈকতলাগোয়া আকাশ ছোঁয়া পাহাড় এখানের অন্যতম আকর্ষণ।  হিমছড়ির পাহাড়ের হিমশীতল ঝরনাও বেশ আকর্ষণীয়। কক্সবাজার সৈকত থেকে খোলা জিপ ছাড়ে হিমছড়ির উদ্দেশে।

ভ্রমণ হোক আনন্দদায়ক

মূল্যবান জিনিসপত্র ব্যাগে তালা মেরে চাবি হ্যান্ডব্যাগে রাখো। এ ব্যাগে জরুরি ডকুমেন্টসগুলোও রাখো। এছাড়া হ্যান্ডব্যাগে থাকবে  তোমার প্রতিদিনের ব্যবহারের ওষুধপত্র। প্রি-জার্নি লিস্ট করার সময় এগুলো খেয়াল রাখতে হবে।

  • যাদের গ্লুকোমা আছে, তারা আই গ্লাস পরে ভ্রমণ করো।
    -চোখের ইমার্জেন্সি ড্রপ নিতে ভুলবেনা। চোখে যারা লেন্সপরো তারা ধুলাবালি থেকে বাঁচতে লেন্স ক্লিনার সঙ্গে নাও। অনেকে সানগ্ওলাস পরতে পারে।
  • ক্যাপ বা হ্যাট পরতে পারো সূর্যের আলো থেকে রক্ষার জন্য,  বিশেষ করে যেখানে এসি নেই।
  • বাস-কোস্টার বা ট্রেনের বাইরে যেন বাচ্চা বা কেউ হাতবামুখ না দেয় সেদিকে নজর রাখো।
  • সিটবেল্ট বেঁধে ভ্রমণ করা উত্তম। খুব ছোট বাচ্চার জন্য স্পেশাল কট ব্যবহার করা যায়।

এছাড়া বিদেশের কিছু কিছু জায়গায় যাওয়ার আগে ম্যালেরিয়া, হেপাটাইটিস ও টাইফয়েডের ভ্যাকসিন নিয়ে নেয়াউচিত।  ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলারস গাইড থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

রোগীদের নিরাপদ জার্নি
প্রথমেই খেয়াল রাখতে হবে তারা যে ওষুধগুলো নিয়মিত খাচ্ছে তা পর্যাপ্ত পরিমাণে সঙ্গে নিচ্ছে কিনা। এছাড়া ডাক্তারের  প্রেসক্রিপশনের ফটোকপি বা তার শর্ট মেডিকেলহিস্ট্রি সঙ্গে থাকা ভালো। কোনো অসুবিধা হলে আশপাশের মানুষ এ কাগজ পড়ে  রোগীকে  উপকার করতে পারে। ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হার্ট ডিজিজ, বাত রোগের ওষুধ, অ্যাজমা বা অ্যালার্জির ওষুধ সঙ্গে নিতে ভুলবেনা।

ইনহেলার, ইনস্যুলিন ইত্যাদিও সঙ্গে রাখবে। ডায়াবেটিস রোগীরা লজেন্স, সুগারকিউব নেবে। প্রেগন্যান্ট যারা তাদের প্রথম ছয় মাস জার্নি  করা মোটামুটি নিরাপদ। যাদের অ্যাবরশনের ইতিহাস আছে তাদের গর্ভাবস্থায় জার্নি করা উচিত নয়। বিশেষ করে শেষ তিনমাস যে  কোনো গর্ভবতীর জার্নি নিষেধ। যে কোনো ধরনের জার্নিতে তারা প্রচুর পানি খাবে। প্লেনে জার্নি করলে ঘনঘন পা ম্যাসাজ করতে হবে,  নাহলে পায়ে রক্ত জমাট বেঁধে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস বা ডিভিটি হতেপারে। তারা পায়ে রক্ত জমা প্রতিরোধকারী মোজা পরতেপারো। যাদের ওজন বেশি তারাও এ কাজটি করতে পারো।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.কান পেতে রইগ্রুমিংজীবনসচেতনতাসমস্যাসুস্থ মন

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা? জেনে নাও মুক্তির উপায়

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২৩

শায়লা জাহান:

নিজেদের সমস্যাগুলো সম্পর্কে চিন্তা করা সর্বদা একটি ভালো ধারণা। কিন্তু এই চিন্তার পরিমাণ যদি লাগামহীন ভাবে বাড়তেই থাকে, তাহলে কী করবে? প্রচলিত একটি কথা আছে, “ কোন কিছুতেই  খুব বেশি গভীরে যাবে না, এটি অতিরিক্ত চিন্তার দিকে নিয়ে যায় এবং অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা এমন সমস্যার দিকে নিয়ে যায় যেগুলোর কোন  অস্তিত্ব নেই।”

ক্ষুদ্র এই মানব জীবনের সাথে চিন্তা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কিন্তু এই চিন্তার পরিধি যখন আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায় তখনই তা রুপ নেয় দুশ্চিন্তার। যদিও প্রত্যেককেই কিছু না কিছু ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে কিন্তু কিছু ব্যক্তি এই ধ্রুবক বাঁধায় জর্জরিত থাকে। এই অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা অনেকটা ট্রেডমিলের মতো, যা থেকে সহজেই উতরানো যায়না। কোন কিছু সম্পর্কে খুব বেশি চিন্তা করা প্রায়শই শব্দের চেয়ে বেশি কিছু জড়িত থাকে। এটি একটি সময় এমনভাবে মাথায় গেঁড়ে বসতে পারে যা ঘুম, কাজ, সম্পর্ক, স্বাস্থ্য বা দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন দিকগুলোকে ব্যাহত করার পাশাপাশি পুরো জীবনকে নেতিবাচকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে যথেষ্ট।

ওভার থিংকিং- যাকে রিমিনেশন ও বলা হয়, এটি সাধারণত দুই ক্যাটাগরিতে পড়েঃ অতীত সম্পর্কে চিন্তা করা বা ভবিষ্যতের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। অতিরিক্ত চিন্তা করা কোন স্বীকৃত মানসিক ব্যাধি নয় ঠিকই কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থার সাথে যুক্ত থাকে, যার মধ্যে রয়েছেঃ

  • ডিপ্রেশন
  • উদ্বিগ্নতা
  • অবসেসিভ কম্পুলসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি)
  • পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি)

মুক্তির উপায়

অন্যান্য অভ্যাসের মতো, বিদ্যমান ধ্বংসাত্মক চিন্তার ধরণ পরিবর্তন করা একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। কিন্তু , ধারাবাহিক অনুশীলনের মাধ্যমে, তুমি তোমার মস্তিষ্ককে ভিন্নভাবে চিন্তা করতে প্রশিক্ষন দিতে পারো। এর জন্য কিছু উপায় রয়েছে। যেমন-

  • অতিরিক্ত চিন্তা করা এমন এক অভ্যাসে পরিণত হতে পারে যে যখন তুমি এটি করবে তখন নিজেই বুঝতে পারবেনা। এইজন্য তোমাকে শুরুতেই উদ্ভূত সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। পূর্ব থেকে সনাক্ত করা সমস্যার যদি কোন ফলপ্রসূ সমাধানের পথ না থাকে, তবে সে ব্যাপারে অহেতুক চিন্তা করা রোধ করা সম্ভব হবে।
  • জীবনে ভিড় করা হাজারো সমস্যা নিয়ে চিন্তা না করে সমধান সন্ধানের প্রতি ফোকাস করা বুদ্ধিমানের কাজ। যদি এটি এমন কিছু হয় যা সমাধানযোগ্য তবে তা বিবেচনা করে সম্ভাব্য সমাধান সনাক্ত করার জন্য নিজেকে চ্যালেঞ্জ করো। আর যদি এমন হয় যার উপরে তোমার কোন নিয়ন্ত্রণ নেই, সে ব্যাপারে তা  মোকাবেলা করার জন্য বিকল্প কৌশল গ্রহণ করো।
  • আমাদের মস্তিষ্ক যখনই ফাঁকা থাকবে তখনই এমন অতিরিক্ত চিন্তার বিষয়টি এসে ধরা দেবে। নিত্যদিনের কাজের পাশাপাশি যেকোন সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। মোট কথা মনোযোগ ভিন্নদিকে প্রবাহিত করতে হবে।
  • আমরা বর্তমান নিয়েই বসবাস করি। তাই গতকালকে রিহ্যাশ করা বা আগামীকাল নিয়ে চিন্তা করা অসম্ভব। এক্ষেত্রে মাইন্ডফুলনেস বা মননশীলতা স্কিল প্র্যাকটিস করো, এটি তোমাকে এখানে এবং এখন সম্পর্কে আরও সচেতন হতে সাহায্য করবে।
  • দীর্ঘ সময়ের জন্য যে কোন সমস্যার ব্যাপারে চিন্তা ফলদায়ক নয়, তবে সংক্ষিপ্ত প্রতিফলন সহায়ক হতে পারে। তুমি কীভাবে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পারো বা সে ব্যাপারে তোমার ত্রুটিগুলোকে স্বীকৃতি দিতে পারো সে সম্পর্কে চিন্তা করা তোমাকে ভবিষ্যতে আরও ভাল পারফর্ম করতে সহায়তা করতে পারে। এজন্য তোমার দৈনন্দিন সময়সূচীতেকিছু নির্দিশট সময় ‘চিন্তার সময়’ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে পারো। তবে সেই নির্দিষ্ট সময় শেষ হলে, অন্য কিছুতে চলে যাও। নির্ধারিত সময়ের বাইরে জিনিসগুলো নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা একেবারেই বাদ দিয়ে দিতে হবে।
  • সবশেষে, ইতিবাচক মনোভাব ধারণ করতে হবে। জীবন পুষ্পশয্যা নয়। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সবকিছুই মুদ্রার এপিঠ- ওপিঠের মতো জীবনে বিদ্যমান। পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, ভেঙ্গে পড়ে, চিন্তা করে কোন ফল পাওয়া যাবেনা। তাই সর্বক্ষেত্রেই অতিরিক্ত চিন্তা ঝেড়ে ইতিবাচক মানসিকতা পোষণ করতে হবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনরোমান্স রসায়নসচেতনতাসমস্যাসুস্থ মন

সুস্থ সম্পর্কের জন্য…

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২৩

শায়লা জাহান:

কথায় বলে, ‘তোমার সম্পর্কগুলো কেবল তোমার মতো স্বাস্থ্যকর হতে পারে’। একটি সুস্থ সম্পর্ক আমাদের সুখ বাড়াতে, স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে এবং চাপ কমাতে অনেক কার্যকর। কিন্তু বাস্তবে সব সম্পর্কেই সবসময় সুখকর অবস্থা বিরাজমান নয়। নানান উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায়। সম্পর্কগুলো ভালোভাবে চলতে, ভারসাম্য আনতে জেনে নিতে পারো কিছু টিপস।

আতিয়া, বিয়ের বয়স সবে বছরখানেক হলো। তাদের নবদম্পতি বলাই চলে। কিন্তু কিছুদিন ধরে সে যেন লক্ষ করছে তাদের সম্পর্কের সেই ফিলিংস, সেই টান যেন কিছুটা কমে যাচ্ছে। এর পেছনে কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ না থাকলেও কোথায় যেন সুর কেটে যাচ্ছে। ঘটনাটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক হলেও এমন আতিয়া আমাদের আশপাশে অনেক আছে। সব রোমান্টিক সম্পর্ক অনেক আপস-ডাউনের মধ্য দিয়ে যায় এবং তা সত্ত্বেও সবাই নিজ সঙ্গীর সঙ্গে মানিয়ে নিতে বা পরিবর্তিত হতে চায়।একটি সুস্থ সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করার একটি অংশ হলো তুমি সম্পর্কটি ঠিক কীভাবে দেখতে চাও এবং তা কোথায় নিয়ে যেতে চাও, তার একটি লক্ষ্য সেট করে নেওয়া। সম্পর্ক সবে শুরু হোক বা বছরের পর বছর চলতে থাকুক, একটি সুস্থ সম্পর্ক গড়ে তুলতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। আর এগুলোই হতে পারে সুসম্পর্কের মূল চাবিকাঠি।

বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা

আমরা সবাই চাই নিজ পার্টনার যেন মনের মতো হয়। কিন্তু কেউই সবকিছু হতে পারে না, যা আমরা তাদের মধ্যে দেখতে চাই। একটি সম্পর্কের মধ্যে থাকা দুজন ব্যক্তি পৃথক অভিজ্ঞতা, চিন্তাভাবনা, আচরণ এবং ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকে। স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের অর্থ হলো যে যেমন আছে তাকে তেমনই গ্রহণ করা এবং তাদের মধ্যে জোর করে পরিবর্তন করার চেষ্টা না করা।

কমিউনিকেশন ব্যবস্থা

একটি হেলদি এবং স্ট্রং রিলেশনের জন্য স্মুথলি কমিউনিকেশন অপরিহার্য। সঙ্গীকে প্রয়োজনীয়, পছন্দসই এবং প্রশংসা করার জন্য কীভাবে যোগাযোগ ব্যবহার করবে, সে সম্পর্কে চিন্তা করো। যেকোনো ধরনের আগ্রাসন, নীরব আচরণ, গালিগালাজ বা এই ধরনের কার্যক্রম উদ্বেগের সংকেত দেয়। তাই একে অন্যের নানা বিষয়ে অভিজ্ঞতা, অনুভ‚তিএবং আগ্রহ সম্পর্কে জানতে হবে। যেকোনো বিষয়ে তথ্য ভাগাভাগি করা, সে ব্যাপারে মতামত প্রদান করাকে সম্মান জানাতে হবে।

ন্যায্য যুদ্ধ

ব্যাপারটি দেখলে মনে হবে বিধ্বংসী যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে। আসলে ব্যাপারটি তা নয়। বেশিরভাগ সম্পর্কের মধ্যেই কিছু দ্বন্দ্ব থাকে। এর মানে এই নয় যে তুমি কোনো বিষয়ে একমত নও; আবার এটাও নয় যে তুমি একে অপরকে পছন্দ করোনা। একসঙ্গে চলতে গেলে এমন মনোমালিন্য থাকবেই। আর এর জন্য যা করতে হবেঃ

-কথা বলার আগে নিজেকে ঠান্ডা করো। রাগের মাথায় মানুষ সবচেয়ে বেশি ভুল ডিসিশন নিয়ে থাকে। তাই কথোপকথনটি আরও ফলপ্রসূ হবে, যদি তোমার আবেগ কিছুটা ঠান্ডা হয়ে যায়। তাই এমন কিছু বলবেনা, যা পরে অনুশোচনার সৃষ্টি করে।

-অন্যকে সরাসরি ব্লেম বা দোষ দেওয়ার পরিবর্তে ঘটমান পরিস্থিতিতে তুমি কী ফিল করছ এবং তুমি কী চাও, তা শেয়ার করো।

-বলার ভাষা পরিষ্কার এবং নির্দিষ্ট রাখো। সমালোচনা ও বিচার না করে পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করো।অর্থাৎ সমস্যাকে আক্রমণ করো, ব্যক্তিকে নয়।

-বর্তমান ইস্যুতে ফোকাস করো। আগে কী হয়েছে না হয়েছে, তা সবকিছু স্তুপ করা এড়িয়ে একেবারে একটি সমস্যা সমাধান করো।

-নিজের ভুল স্বীকার করার মানসিকতা থাকতে হবে। তুমি যদি কিছু ভুল করে থাকো, তবে তা মানার দায়িত্ব নিতে হবে। এই ছোট্ট একটি কাজ অনেক সমস্যার সমাধান করে দেয়।

অনুভূতির প্রকাশ

সম্পর্ক গবেষক জন গটম্যানের মতে, সুখী দম্পতিদের প্রতি একটি নেতিবাচক মিথস্ক্রিয়া বা অনুভূতির জন্য পাঁচটি ইতিবাচক মিথস্ক্রিয়া বা অনুভূতির অনুপাত থাকে। সময়ে সময়ে নিজের উষ্ণতা এবং এফেকশান প্রকাশ করো।

কমিটমেন্ট থাকা

প্রতিশ্রুতি মানে একে অপরকে এবং সম্পর্ককে প্রথমে রাখা। এর জন্য অনেক কিছু দিতে হবে এবং অবশ্যই ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। কিন্তু প্রতিদান হলো এমন একটি সম্পর্ক, যা একে অপরের জীবনে সত্যিকারের আনন্দ এবং পরিপূর্ণতা নিয়ে আসে। প্রতিটি ব্যক্তি চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে কাজ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং একসঙ্গে বেড়ে ওঠা বিশ্বাস এবং ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে এবং দম্পতিদের ভয় ও সন্দেহ মুক্তি দিতে সাহায্য করে।

প্রতিটি সম্পর্কই চ্যালেঞ্জিং হতে পারে এবং মানসিক, শারীরিক স্বাস্থ্য, মেজাজ বা এমনকি তা কর্মক্ষেত্রে ফোকাস করতে পারে। তাই কোনো সম্পর্ক বা ব্যক্তিগত উদ্বেগের বিষয়ে পারস্পরিক খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে ফেলাই বিচক্ষণের কাজ হবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসুস্থ মনস্বাস্থ্য

সাঁতারের যত উপকারিতা

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১৯, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

কথায় আছে, ‘একটি ফিট শরীর, একটি শান্ত মন এবং ভালোবাসায় পূর্ণ একটি ঘর- এই জিনিসগুলো কেনা যাবেনা, সেগুলো অবশ্যই অর্জন করতে হবে’। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে প্রতিদিন নিয়ম করে কিছুক্ষণ শরীরচর্চা করা আবশ্যক। আর সেই শরীরচর্চার মাঝে যদি সাঁতারকে অন্তর্ভূক্ত করা যায় তাহলে তো পুরো ষোলকলা পূর্ণ। জেনে নাও সাঁতারের যত উপকারিতার দিকসমূহ।

বিশেষজ্ঞরা একজন প্রাপ্তবয়স্ককে প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিটের মাঝারি কার্যকলাপ বা ৭৫ মিনিটের জোরালো কার্যকলাপ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি থেকে উন্নত মেজাজ পর্যন্ত, ওয়াটার ওয়ার্কআউট সুস্থতার জন্য অনেক সুবিধা নিয়ে আসে। তোমার ফিটনেস লেভেল যাই হোক না কেন, সাঁতার অনেক সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে। পুরো শরীর এবং কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের কাজ করার একটি চমৎকার একটি উপায় হলো এই সাঁতার। এটি যে সব সুবিধা প্রদান করে থাকেঃ

-গবেষণায় দেখায় যে, সাঁতার দীর্ঘজীবী করতে সাহায্য করতে পারে। ২০১৭ সালের ইংল্যান্ডের দ্বারা পরিচালিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, সাঁতারুদের প্রারম্ভিক মৃত্যুর ঝুঁকি ২৮ শতাংশ কম এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের কারণে যারা সাঁতার কাটেনা তাদের তুলনায় ৪১ শতাংশ কম মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল।

-সাঁতারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি সত্যিকার অর্থেই পুরো শরীর, মাথা থেকে পা পর্যন্ত কাজ করে। এর মাধ্যমে-

#শরীরের চাপ ছাড়াই হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করে

#পেশী টোনিং করে

#শক্তি তৈরি করে

#সহনশীলতা তৈরি করে

-অতিরিক্ত ক্যালোরি বার্ন করতে চাইলে এর বিকল্প কিছুই নেই। হার্ভাড মেডিকেল স্কুল অনুসারে, একজন ১৫৫ পাউন্ড ব্যক্তি এক ঘন্টায়, প্রায় ৪৩২ ক্যালোরি সাঁতার কাটার মাধ্যমে পোড়াতে পারে যেখানে মাঝারি গতিতে  হাঁটার মাধ্যমে বার্ন হয় ২৬৬ ক্যালোরি। ২০২১ সালে এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ১৬ সপ্তাহে সাঁতার কাটার মাধ্যমে শরীরের চর্বি এবং বিএমআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

-অ্যারবিক ব্যায়ামের অন্যান্য রুপের মতো সাঁতার কার্ডিওভাসকুলার ফিটনেস উন্নত করতে পারে। সাঁতারের ফলে হৃদপিণ্ড শক্তিশালী হতে পারে এবং ফুসফুস অক্সিজেন ব্যবহারে আরও দক্ষ হয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও, এটি হাইপারটেনশন, উচ্চ রক্তচাপ এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের অন্যান্য মার্কারের উন্নতির সাথে যুক্ত হয়েছে।

-বাত, আঘাত, অক্ষমতা সহ অন্যান্য সমস্যা যা উচ্চ প্রভাব ব্যায়ামকে কঠিন করে তোলে; তাদের জন্য সাঁতার হতে পারে একটি নিরাপদ ব্যায়ামের বিকল্প। এটি ব্যথা কমাতে এমনকি আঘাত থেকে পুনরুদ্ধারের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে। অস্টিওআর্থারাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির জয়েন্টের ব্যথা এবং দৃঢ়তা সাঁতারের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস হওয়ার প্রমান পাওয়া গেছে।

-ইনডোর পুলের আর্দ্র পরিবেশ হাঁপানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সাঁতারকে একটি দূর্দান্ত কার্যকলাপ করে তোলে। শুধু তাই নয়, খেলার সাথে যুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম যেমন শ্বাস ধরে রাখা, ফুসফুসের ক্ষমতা প্রসারিত করা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর নিয়ন্ত্রণ পেতে সাহায্য করতে পারে।

আবার কিছু গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, পুলে ব্যবহৃত ক্যামিকেল হাঁপানির ঝুঁকি বাড়াতেও পারে। তাই যদি হাঁপানির প্রবলেম থাকে তবে চিকিৎসকের সাথে আগে পরামর্শ করে নেয়া ভাল।

-সমস্ত ব্যায়াম একটি মেজাজ বুস্টার হতে পারে। এক্ষেত্রে ওয়াটার ওয়ার্কআউট একটি ভাল মেজাজ বজায় রাখতে পারে। মস্তিষ্কে সুখের রাসায়নিকের মুক্তির কারণে, বিশেষ করে এন্ডোরফিন, ডোপামিন এবং সেরোটোনিন নিয়মিত সাঁতার কাটা চাপ কমাতে পারে, উদ্বেগ কমাতে পারে এবং হতাশার বিরুদ্ধে লরাই করতে পারে।

-উন্নত ঘুম হল যে কোন ব্যায়ামের রুটিনে লেগে থাকার একটি সুবিধা। ব্যায়াম শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি পুনরায় সেট করতে সাহায্য করে এবং প্রাকৃতিক সার্কাডিয়ান ছন্দ পুনরুদ্ধার করে। এর মধ্যে সাঁতার হল একটি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনিদ্রার সমস্যাও বৃদ্ধি পায়। ইনসমনিয়ার মতো সমস্যায় যারা ভুগে থাকে, তাদের জন্য নিয়মিত সাঁতার কাটা ভালো একটি চিকিৎসা। এতে ঘুম ভালো হবে।

-বাচ্চাদের জন্য সাঁতার হতে পারে দারুন এক ওয়ার্কআউট। এটি হতে পারে তাদের জন্য একটি মজার ক্রিয়াকলাপ।

সতর্কতা

সাঁতার বেশিরভাগ মানুষের জন্যই নিরাপদ। তবে যেকোন ওয়ার্কআউটের মতোই সাঁতারের সাথে যুক্ত কিছু ঝুঁকি রয়েছে। তুমি যদি আহত হও বা কিছু চিকিৎসা শর্ত থাকে তবে সেক্ষেত্রে সাঁতার কাটার আগেই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেয়াই ভালো। সাধারণভাবে, যখনই একটি নতুন ব্যায়াম প্রোগ্রাম শুরু করবে তখন তোমার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা একটি ভাল ধারণা। এছাড়াও, সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যাযুক্ত লোকদের জন্য ক্লোরিনযুক্ত পুলের পানিতে নামা আরও সমস্যার সৃষ্টি করবে। সাঁতার কাটার আগে সবসময় পুলে বর্ণিত নির্দেশাবলি এবং লাইফগার্ডের নিয়মাবলি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়জীবনযাত্রাদেহ ও মননারীসুস্থ মনস্বাস্থ্য

মেনোপজ এবং মনের যত্ন

করেছে Suraiya Naznin জানুয়ারী ৪, ২০২৩

সাবিরা ইসলাম-

একজন কিশোরী যখন পিরিয়ড জীবন শুরু করে, তখন তার ভেতরে প্রথম প্রথম কিছু অস্বস্তি কাজ করে। সেটা মানসিক এবং শারীরিক উভয়ই হতে পারে। একইভাবে মেনোপজ শুরু হলেও সে নতুন কিছু অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। তবে সেগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজন শুধু মানসিক প্রস্তুতির।

 

 

কথায় আছে, যার শুরু আছে, এর শেষও আছে। এমনকি একজন মানুষ জন্ম নেওয়ার মাধ্যমে যে জীবনযাত্রা শুরু করে, মৃত্যুর মাধ্যমে সে যাত্রা শেষ হয়। এমনিভাবে বিশ্বের যা কিছু সৃষ্টি, যা কিছু চলমান সবকিছু একটি নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে থেমে যায়। থেমে যেতে হয়। কারণ, নতুন করে অন্য কাউকে শুরু করার সুযোগ যে দিতে হবে। মেনোপজ বা রজঃনিবৃত্তি নারীর জীবনপ্রক্রিয়ায় তেমনই একটি বিষয়। একজন নারীর কিশোরী বয়সে মাসিক ঋতুস্্রবা বা রজঃ¯্রাবের মাধ্যমে জীবনের নতুন ও অর্থবহ একটি অধ্যায় শুরু করে। এর সহজ বাংলা বা প্রচলিত, পরিচিত শব্দ হচ্ছে মাসিক বা পিরিয়ড। একজন কিশোরীর মাসিক শুরু হওয়া মানে সে পরিপূর্ণ নারী জীবনে প্রবেশ করল। সে মা হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করল। এটি অনেক বড় একটি অর্জন।

 

বিশ্বকে জানিয়ে দেওয়া যে আমি সেই নারী, যে এই পৃথিবীতে আরেকজন মানবজাতিকে নিয়ে আসার সক্ষমতা অর্জন করেছি। আগে এসব বিষয়কে মনে করা হতো গোপনীয় বিষয়। লোকসমক্ষে ঋতু¯্রাব বা মাসিক বা পিরিয়ড নিয়ে আলোচনা করা ছিল লজ্জার। এখন অনেকটাই কেটে গেছে। কারণ, নেট দুনিয়ায় প্রবেশ করলে এসব বিষয়ে নানারকম আর্টিকেল অনায়াসে সামনে চলে আসে। আবার ছোট ছোট নাটিকা বা প্রামাণ্যচিত্র তৈরিকরে সামাজিক যে কুসংস্কার বা ভ্রান্ত ধারণা, তা কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। একটি নাটিকায় দেখা গেছে, মেয়ের প্রথম মাসিকের দিন মা-বাবা এবং বড় বোন কেক কেটে তা উদ্্যাপন করছে। মেয়েটিকে ঘুম থেকে ডেকে এনে কেক কাটতে বলায় তাকে যখন এর কারণ জানানো হয়, তখন মেয়েটি বিস্ময়ে আনন্দে অভিভূত হয়ে পড়ে। এটি অবশ্যই একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। তবে মোটেই অস্বাভাবিক নয়। কারণ, এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতোএরকম একটি অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়া কিশোরীটি পরিবারের সামনে সহজ হবে এবং তার সুবিধা-অসুবিধাগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারবে। মনের ভীতি কাটিয়ে ওঠা তার পক্ষে সম্ভব হবে। এটি যে আতঙ্কের কোনো বিষয় নয়, তা বুঝতে এবং গ্রহণ করতে সে সহজেই সক্ষম হবে।

 

রজঃনিবৃত্তি বা মেনোপজ হলো মাসিক বা পিরিয়ড জীবনের সমাপ্তি। একটি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করার পর নারীর আর সন্তান জন্মদানের প্রয়োজন পড়ে না। তখন এটি চলমান থাকা অস্বস্তিকর। পিরিয়ড একজন নারীর জন্য আশীর্বাদ। কারণ, সে তখন শুধু মা হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে, তা নয়। বরং শারীরিক অনেক জটিলতা থেকে মুক্তি পায়। একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হওয়ার পর ঋতু¯্রাব বন্ধ হয়ে যায়। এটি খুবই স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। ৪৯ থেকে ৫২ বছর বয়সের মধ্যেই এটি হয়ে থাকে।তবে শারীরিক কোনো জটিলতার কারণে এই বয়সসীমার এদিক-সেদিক হতে পারে। তবে খুব স্বাভাবিকভাবে নারীদের একবছর ধরে রজঃস্রাব বন্ধ থাকলে চিকিৎসকেরা এটাকে মেনোপজ বা রজঃনিবৃত্তি বলেন। এসময় ডিম্বাশয়ের কার্যক্রম হ্রাস পায় বা বন্ধ হয়ে যায়।

 

বিশ্বের সব দেশে মেনোপজের সময় এক রকম নয়। পশ্চিমাবিশ্বে রজঃনিবৃত্তির বয়স ৪০ থেকে ৬১ বছর এবং সর্বশেষ রজঃ¯্রাবের গড় বয়স ৫১ বছর। অস্ট্রেলিয়ায় প্রাকৃতিক রজঃনিবৃত্তির গড় বয়স ৫১.৭ বছর। ভারত ও ফিলিপাইনে গড়ে ৪৪ বছর বয়সে মেনোপজ হয়। রজঃনিবৃত্তির বয়স প্রথম রজঃস্রাব বা সর্বশেষ গর্ভধারণের ওপর নির্ভর করে না। এ ছাড়া এর সঙ্গে গর্ভধারণ সংখ্যা, সন্তানকে দুগ্ধদান, জন্মবিরতিকরণ বড়ি সেবন, আর্থসামাজিক অবস্থা, জাতিগত পরিচয়, উচ্চতা বা ওজনের কোনো সম্পর্ক নেই।

একজন কিশোরী যখন পিরিয়ড জীবন শুরু করে, তখন তার ভেতরে প্রথম প্রথম কিছু অস্বস্তি কাজ করে। সেটা মানসিক এবং শারীরিক উভয়ই হতে পারে। একইভাবে মেনোপজ শুরু হলেও সে নতুন কিছুঅভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। তবে সেগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজন শুধু মানসিক প্রস্তুতির। যেমন আমরা জানি, মা হতে গেলে একজন নারীকে দীর্ঘ নয় মাসের একটি ধীর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সে সময় নারীটির মানসিক প্রস্তুতি একটি সুস্থ মা ও শিশুর জন্য সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। পিরিয়ড বন্ধও এরকম একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। তখনঅনিয়মিত মাসিক হতে থাকে। অনিয়মিত বলতে বোঝানো হচ্ছে যে এটা অল্প বা বেশি সময় ধরে চলতে পারে অথবা হালকা বা বেশি পরিমাণ রক্তপাত হতে পারে। এই সময়টায়নারীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয় যেমন একধরনের গরম আভা বা উষ্ণতা অনুভব করে, যা দেহ থেকে মুখম-লের দিকে ছড়িয়ে যায়, যা হট ফ্লাশ (যড়ঃ ভষঁংযবং) নামে পরিচিত। এটা ৩০ সেকেন্ড থেকে ১০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এর সঙ্গে কাঁপুনি, রাতের বেলা অতিরিক্ত ঘাম, ত্বক লালচে হওয়া প্রভৃতি লক্ষণ থাকতে পারে। হট ফ্লাশ প্রায় ৭৫% মহিলার ক্ষেত্রে ঘটে এবং প্রায়ই এক বা দুই বছরের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায়। এই সময় যোনিপথের শুষ্কতা, নিদ্রাহীনতাসহ বিভিন্নরকম মানসিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়।

 

Sad woman sitting on a sofa in the living room

তবে সবার ক্ষেত্রে এ লক্ষণ সমানভাবে প্রকাশ পায় না। নারীর পারিপাশির্^ক পরিবেশ এবং পরিবারের সদস্যের সঙ্গে তার সম্পর্কের ওপর এসবের প্রভাব নির্ভর করে। যৌনমিলনে ব্যথা অনুভব করা, যোনিপথের ঝিল্লি পাতলা হওয়া ও স্থিতিস্থাপকতা কমে যাওয়া, প্রস্্রাব আটকে রাখার অক্ষমতা, ত্বকের শুষ্কতা, ওজন বৃদ্ধি, স্তনের আকার বৃদ্ধি ও ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা, মাথাব্যথা, বুক ধড়ফড় ইত্যাদি লক্ষণ এসময় প্রকাশ পেতে পারে।

 

মানসিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে উদ্বিগ্নতা, অস্থিরতা, মনোযোগহীনতা, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি। রজঃনিবৃত্তির ফলে নারীদের অ্যাথেরোসক্লেরোসিস, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, অস্টিওপোরোসিস বা অস্থিক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে। তবে ওজন, রক্তচাপ ও রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান পরিত্যাগ করার মাধ্যমে এসব রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। মেনোপজের পর নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার কথা ভেবে অনেক নারীই আগাম মানসিক চাপে পড়ে। পরিবারের অনিবার্য একজন সদস্য হয়ে এধরনের শারীরিক, মানসিক চাপ সামলে স্বাভাবিক জীবন কীভাবে যাপন করা সম্ভব বা পরিবারের অন্যান্য সদস্য যারা, তারা এই সময়ে তার শারীরিক, মানসিক পরিবর্তনকে কতটা সহজভাবে গ্রহণ করবে বা তার আচরণগত পরিবর্তনকে কতটা স্বাভাবিকভাবে নেবে এ নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে আগে থেকেই পরিবারের সদস্যদের মেনোপজ সম্পর্কে একটুধারণা দিয়ে রাখলে পরিবর্তিত সময়কে যাপন করা সহজ হবে।

 

মেনোপজ হোক বা না হোক, প্রতিটি মানুষই জীবনের নানা স্তরে নানারকম শারীরিক ও মানসিক অস্থিতিশীলতা মোকাবিলা করে চলে। একজন মানুষের জীবনে জ¦র, সর্দি, কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা এগুলো খুব স্বাভাবিক ও সাধারণ অসুস্থতা। মেনোপজ-পরবর্তী নানা উপসর্গও তেমনই। এটিকে খুব সিরিয়াস কিছু ভেবে আগে থেকেই অস্থির হওয়ার কিছু নেই। বরং মেনোপজের কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে। যেমন পিরিয়ড টাইম পার করতে করতে একজন নারীর মনে একধরনের মানসিক অবসাদ চলে আসে। তখন তিনি এর থেকে মুক্তি কামনা করেন। প্রতি মাসে পিরিয়ডের জন্য আলাদা মনোযোগ দিতে হয় না বলে একধরনের স্বস্তি পান। যেকোনো মুভমেন্টের জন্য নিজেকে তৈরি বলে মনে করেন। এতে মানসিক স্বস্তি তৈরি হয়। রাতের ঘুম ভালো হয়। পাশ ফিরতে গিয়ে কোনো অস্বস্তি কাজ করে না। শরীরে বাড়তি কোনো কাপড় বা প্যাড ব্যবহার করতে হয় না বলেও অন্যধরনের স্বস্তি মেলে।

 

আমাদের দেশে অধিকাংশ নারী রজঃনিবৃত্তিকে ভয় পায়। এক ধরনের শঙ্কায় ভোগে। কারণ, বিষয়টি নিয়ে সব সময়ই একধরনের রাখঢাক চলে। অনেকে মনে করে, রজঃনিবৃত্তি মানে তার সোনালি জীবনের সমাপ্তি। বিষয়টি মোটেও তা নয়। বরং এই সময়ে অনেকেরই সন্তানেরা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। দীর্ঘ সংসার জীবন থেকেও অধিকাংশ নারী এই সময়ে অবসর জীবনযাপন করেন। তারা ধর্মকর্মে মন দেন। মূলত এই সময়টিই নিজের মতো করে কাটানোর সময়ই”ছা হলেই প্ল্যান করে কোথাও বেড়াতে যাওয়া যায়। দেশ-বিদেশ ভ্রমণে যাওয়া যায়। সমবয়সী নারী যারা, তাদের নিয়ে আড্ডায় কাটানো যায়। সমাজসেবামূলক কর্মকা-ে আরও বেশি সংযুক্ত হওয়া যায়।

 

 

শারীরিক সমস্যার যে বিষয়গুলোকে অনেক নারী ভয় পায়, তা একেবারেই অমূলক। কারণ, মানুষের বয়সের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক নানা পরিবর্তন আসে। এছাড়া জীবনের নানা ধাপে নানা কারণে নানা রোগে ভুগি। এটিও তেমন। এতদিনের দীর্ঘ একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে চলতে থাকা শরীর নতুন অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগবেই। সেজন্য শরীরকেও একটু সময় দিতে হবে। তবে বিষয়টি যতটা না শরীরের, তার চেয়ে বেশি মনের। কারণ, মন যদি নিজেকে প্র¯‘ত রাখে, তবে যেকোনো অবস্থা মানিয়ে চলা সহজহয়। এ ব্যাপারে পরিবারকেও সহযোগিতা করতে হবে। কারণ, নতুন এই জীবনধারা নারীর জন্য আরেকটি বিশেষ অধ্যায়। এ সময় শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনজনিত যেসব আচরণ অস্বাভাবিক মনে হবে, তা পরিবারের সদস্যদের সহজভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতে হবে। বুঝতে হবে এই নারীটিকে নতুন জীবনে অভ্যস্ত হতে সময় দিতে হবে।এ সময়ে নারীর শারীরিক ও মানসিক যত্ন নেওয়া জরুরি। আসলে পুরো বিষয়টি একেবারেই মানসিক। যে নারী যত মানসিকভাবে শক্ত থাকবে, নতুন জীবনকে মানিয়ে নেওয়া ততই সহজ হবে।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবননারীপ্যারেন্টিংরোদসীর পছন্দসংগ্রামসমস্যাসুস্থ মন

একলা চলো রে

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ৩, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

মাতৃত্ব এমন এক অনুভূতি যার কোন তুলনা হয়না। কিন্তু মাতৃত্বের যাত্রা সবার জন্য সহজবোধ্য হয়না, আর তা যদি হয় সিঙ্গেল মাদারহুড; তখন পরিস্থিতি তো আরও কঠিন মনে হতে পারে। এমন অনেক দ্বন্দ্ব এবং চাপ রয়েছে যা একক মায়েদের মধ্য দিয়ে যায় যা অন্য পরিবারগুলো সরাসরি অনুভব করতে পারেনা। একক মায়েদের শক্তি এবং স্থিতিস্থাপকতা অবিশ্বাস্যভাবে প্রশংসনীয়, তবে এর পেছনে তাদের ক্লান্তি অনুভব করাও বোধগম্য।

সুখী সমৃদ্ধময় একটি পারিবারিক জীবন কে না চায়। কিন্তু অনেক সময় বাস্তবতার খাতিরে আমাদের এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় যা কারোরই কাম্য হতে পারেনা। সিঙ্গেল প্যারেন্টস এমনই এক বিষয়। একক অভিভাবক হওয়ার পেছনে অনেক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বিবাহবিচ্ছেদ, পরিত্যাগ, বিধবা হওয়া, ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স, একক ব্যক্তি দ্বারা সন্তান জন্মাদান বা দত্তক নেয়া। সঙ্গীর সাথে অভিভাবকত্ব ইতিমধ্যেই অপ্রতিরোধ্য এবং চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। সেখানে একক মা হওয়া সম্পূর্ণ অন্য এক অগ্নিপরীক্ষা। তাদের প্রতিনিয়ত জীবনে বেশকিছু অপ্রতিরোধ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। যেমনঃ

আর্থিক চ্যালেঞ্জ

সন্তানের জীবনে একমাত্র উপার্জনকারী এবং যত্নশীল হওয়া অবিশ্বাস্যভাবে চ্যালেঞ্জিং। একজন প্রাপ্তবয়স্ককে একাই ভার বহন করতে হয় যা সাধারণত দুজন বহন করে। এতে করে বিশাল এক দায়িত্ব এসে পড়ে। এই কষ্ট শুধুমাত্র আর্থিক নয়, এটি একটি মানসিক বোঝাও বটে এবং মা প্রায়ই তার বাচ্চাদের জন্য যথেষ্ট না দেওয়ার জন্য নিজেকে দোষী বোধ করেন।

মানসিক চ্যালেঞ্জ

বাস্তবতা হলো একক মা হওয়া মানে একাকী হয়ে যাওয়া। নিজেদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা শেয়ার করার মতো কোন সঙ্গী থাকেনা। উদ্বেগ, স্ট্রেস, আশাহীন বা মূল্যহীন বোধের মতো মানসিক স্বাস্থ্যের লড়াই একক মায়েদের জন্য সাধারণ।

সামাজিক বিচ্ছিন্নতা

একটি একক মায়ের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা অনেক বড় এক প্রতিবন্ধকতার কাজ করে। সিঙ্গেল মাদারহুডের সাথে সাথে সামাজিকভাবে যে অপবাদ আসে তা পুরানো এবং সেকেলে কিন্তু কোনভাবেই তা দূর করা যাবেনা। সমাজ এখনও মনে করে একজন একক বাবা শান্ত ও সাহসী এবং একক মা দরিদ্র ও ক্লান্ত।

সিদ্ধান্তের চাপ

অভিভাবকত্ব দায়িত্ব পালন করা কঠিন। বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে এই দায়িত্ব আরও বেশি বেড়ে যায়। একজন সঙ্গীর সমর্থন ছাড়া একটি সন্তানের জীবনের অনেক বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য একক মায়ের উপর সবকিছুই ছেড়ে দেয়া হয়। এটি অবিশ্বাস্যভাবে ভীতিজনক এবং প্রচুর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

অপরাধবোধ

সমস্ত একক মায়ের সংগ্রামের মধ্যে, এটির বিরুদ্ধে লড়াই করা সবচেয়ে কঠিন হতে পারে। তাদের মনে অপরাধবোধ আসার যেন শেষ নেই। নিজে যে আর্থিক জিনিসগুলো সরবরাহ করতে পারবেনা সে সম্পর্কে অপরাধবোধ, বাচ্চাদের থেকে দূরে কাটানো সময় সম্পর্কে অপরাধবোধ, পরিস্থিতি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে যেগুলো করতে পারা যায়না সে সম্পর্কে অপরাধবোধ। সন্তানরা একক পিতামাতার সন্তান হিসেবে যেভাবেই বেড়ে উঠুক না কেন তা তাদের উপর কী প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ও নিজেদের দায়ী বোধ মনে হয়।

একক মাতৃত্ব সহজ করার উপায়

একটি শিশুকে নিজের মতো করে বড় করা সহজ কাজ নয়, তবে তুমি একা নও। নিজের মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে, ব্যক্তি হিসেবে উন্নতি করতে এবং মাতৃত্ব সহজ করার কিছু উপায় দেয়া হলঃ

-তুমি তোমার ধারণার চেয়েও বেশি শক্তিশালী। একজন সঙ্গী ছাড়া সবচেয়ে কঠিন কাজ তুমি একাই করতে পারছো। যখন ক্লান্তি ও হতাশা মনে ধরে যাবে তখন নিজেকে ব্যর্থ মনে হবে। কিন্তু সেখান থেকে একবার পাশ কাটিয়ে উঠে যখন দেখবে দিন শেষে বাচ্চারা সুস্থ থাকে, সুখী হয় তাহলে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিছুতেই নেই।

-মাতৃত্বের কঠিন সময়ে পরিবার এবং বন্ধুদের উপর নির্ভর করতে সক্ষম হওয়া তোমার সুস্থতা রক্ষার জন্য অপরিহার্য। সাহায্য প্রয়োজন তা স্বীকার করা শক্তি প্রমাণ করে, দূর্বলতা নয়।

-নিজের জন্য সময় বের করা। যদিও এটা অর্জন করা কঠিন হতে পারে কিন্তু নিজের জন্য কিছুটা সময় বের করা বার্নআউট এবং ক্লান্তি এড়াতে প্রয়োজনীয়। নিয়মিতভাবে মাইন্ডফুলনেস ভিত্তিক স্ব-যত্ন অভ্যাস অনুশীলন করতে হবে। এটি শারীরিক পাশাপাশি মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

-কীভাবে একজন একক মা সুখী হতে পারে? নিজেকে জীবনে অনুপ্রাণিত রাখতে নিজের জন্য স্মার্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। যদিও তোমার সন্তানের উপর ফোকাস করা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে তোমার সমগ্র জীবনকে কেন্দ্র করে তাদের চারপাশে থাকতে পারবেনা। তাই নিজের জন্যও কিছু ব্যক্তিগত লক্ষ্য থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

-একাকীত্ব বোধ এমন এক জিনিস যা অনেকের ভিড়ে থেকেও নিজেকে নিঃসঙ্গ বোধ করিয়ে দেয়। এই একাকীত্ব বোধের সাথে লড়াই করতে হবে। ছবি আঁকা, বই পড়া, গান শোনা বা বন্ধুদের নিয়ে প্রিয় কোন মুভি দেখতে যাওয়ার মতো কাজ করা যেতে পারে।

তুমি তোমার জীবনের স্থপতি। মনে রাখবে প্রতিটি দিন নতুন করে তৈরি হয়। নিজেকে বিশ্বাস ও সম্মান করা তোমার সন্তানের জন্য একটি চরিত্র গঠনের পরিবেশ তৈরী করতে সাহায্য করে।

-ছবি সংগৃহীত

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসাফল্যসুস্থ মন

জীবনে বদলে দিতে পারে যে অভ্যাস

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ২৯, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

অভ্যাস এবং রুটিন থাকা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য দিক। তুমি একটি লক্ষ্য পূরণ করতে চাও, আরও উৎপাদনশীল হতে চাও বা আরও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন করতে চাও; অভ্যাসগুলো হল সেই ছোট ছোট পরিবর্তনের সমন্বয় যা সময়ের পালাক্রমে উল্লেখযোগ্য ফলাফল যোগ করতে পারে।

‘সফল ব্যক্তিরা কেবল শীর্ষে চলে যান না। সেখানে পৌঁছানোর জন্য জিনিসগুলো ঘটানোর জন্য প্রতিদিন ফোকাসড অ্যাকশন, ব্যক্তিগত শৃঙ্খলা এবং প্রচুর শক্তি প্রয়োজন’। আমেরিকান লেখক এবং উদ্যোক্তা জ্যাক ক্যানফিল্ড এর উক্তি দ্বারা বোঝা যায় একটি সুখী এবং আরও উৎপাদনশীল জীবনের জন্য কতিপয় অভ্যাস গড়ে তোলা কত প্রয়োজনীয়। আমরা যা কিছু ভাবি, বলি এবং করি তা বছরের পর বছর ধরে আমাদের মনের মধ্যে গেঁথে থাকা অভ্যাসের ফল। তারা আমাদের জীবনের সাথে এতটাই অবিচ্ছেদ্য যে একটি গবেষণায় নির্ধারণ করা হয়েছে যে আমরা প্রতিদিন যা কিছু করি তার প্রায় ৪৫ শতাংশ আমাদের অভ্যাস দ্বারা চালিত হয়। তোমার মনোভাবই তোমার উচ্চতা নির্ধারণ করে। তাই পুরাতন অভ্যাসগুলো তোমাকে আটকে রাখতে দেবেনা এবং কিছু সহজ তবে প্রয়োজনীয় অভ্যাসগুলো তৈরি করা শুরু করে দাও।

ভোরে জেগে উঠো

ভোরবেলা হলো শান্তিপূর্ণ প্রতিফলন এবং পর্যাপ্ত উৎপাদনশীলতার একটি সময়; যেখানে পৃথিবী স্থির এবং ঘুমিয়ে আছে, যা তোমাকে তোমার দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যগুলোতে ফোকাস করার অনেক সময় দেয়। হয়তো তুমি দৌড়ের জন্য যেতে চাও অথবা স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশ উপভোগ করতে পছন্দ করো। একটি অর্থপূর্ণ সকালে এই ধরনের কার্যক্রম তোমাকে সুপারচার্জ বোধ করায়। এই অভ্যাস ইলন মাস্ক, মার্ক জুকারবার্গের মতো নেতারা প্রতিদিন অনুশীলন করে। তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠা একটি দৈনন্দিন রুটিনে সেট করবে যা তোমাকে আরও উৎপাদনশীল হতে সাহায্য করতে পারে।

যা আছে তাতে ফোকাস করো

আমরা আমাদের সমস্যায় ডুবে অনেক সময় ব্যয় করি। কিন্তু সমস্যাগুলোও জীবনের একটি অংশ। তুমি যদি তোমার সমস্যাগুলো থেকে তোমার ফোকাসকে সরিয়ে নিতে চাও তবে তোমার যা আছে তার জন্য কৃতজ্ঞ হতে হবে। কৃতজ্ঞতা স্বাস্থ্য, সুখ এবং সাফল্যের নিশ্চিত পথ। এটি আমাদের যা নেই তার চেয়ে আমাদের যা আছে তার দিকে আমাদের মনোযোগ সরিয়ে দেয়।

দিন নির্ধারণ করো

তোমার দিন নির্ধারণ করা অভ্যাসের এই তালিকায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন যা তোমার জীবনকে পরিবর্তন করতে পারে। বিভ্রান্ত হওয়া এবং ফোকাস হারানো এড়াতে তুমি দিনের জন্য কী করছো তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, দিনের সময় নির্ধারণ করা তোমার অগ্রাধিকার সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে যাতে তুমি তোমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কী তা সম্পন্ন করতে পারো।

প্রাণ খুলে হাসো

গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা সত্যিকারের হাসি হাসে তারা জীবনে সুখী হয়। এটি তোমাকে সময়ের সাথে সাথে মানসিক এবং আধ্যাত্মিক শান্তি খুঁজে পাওয়ার একটি সেরা অভ্যাস। আমাদের দেহের ফিজিওলজি আমাদের মনের মনস্তত্ত্বকে নির্দেশ করে। যখন আমাদের মাঝে হতাশা ও অসুখের অনুভূতি প্রকাশ হয়, তখন আমাদের মন সেই ইঙ্গিতগুলো গ্রহণ করে এবং তাদের সাথে চলে। যাইহোক, একবার আমরা সচেতনভাবে নিজেদেরকে সামঞ্জস্য করে আমাদের বাহ্যিক চেহারা পরিবর্তন করি, দেখবে আমাদের অভ্যন্তরীণ অনুভূতিও তা অনুসরণ করে নিবে।

৮০/২০ নিয়ম অনুসরণ

প্যারোটের নীতি বা ৮০/২০ নিয়ম মানে যে কোন পরিস্থিতিতে, ২০% কাজগুলো ৮০% ফলাফল দেয়। সুতরাং, তুমি সেই কাজগুলোতে তোমার বেশিরভাগ সময় এবং শক্তি বিনিয়োগ করে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারো যা সবচেয়ে বড় প্রভাব তৈরি করবে। একবার তুমি সেই কাজগুলো শেষ করে ফেললে, তোমার করণিয় তালিকায় থাকা অন্যান্য ক্রিয়াকলাপগুলোতে ফোকাস করতে পারবে।

পড়, পড় এবং পড়

বই পড়া জ্ঞান অর্জন এবং সৃজনশীলতাকে উদ্দীপিত করার একটি দূর্দান্ত উপায়। এটি মনোযোগকে উন্নত করে এবং ধ্যানের মতই মনে শান্ত প্রভাব ফেলে। তাছাড়া, ঘুমানোর আগে পড়া ভালো ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে।

ইতিবাচক মানুষের মাঝে থাকা

কার সাথে সময় কাটাচ্ছো তা সাবধানতার সাথে বিবেচনা করা উচিৎ। এমন সম্পর্কগুলো ছেড়ে দাও যা তোমাকে উপরে তোলার পরিবর্তে নীচে নিয়ে আসে। এমন লোকদের সাথে মিশো যারা সুখ ভাগ করে নিতে জানে। যেহেতু সুখ সংক্রামক, এটি তোমার জীবনে ইতিবাচকতা তৈরি করার সবচেয়ে সহজ উপায়গুলোর মধ্যে একটি।

প্রতিদিন ব্যায়াম করো

জীবনের সর্বোত্তম অভ্যাসগুলোর মধ্যে একটি হল প্রতিদিন ব্যায়াম করা। এটি ভারি ভারোত্তোলন বা ম্যারাথন দৌড়ানো নয়। রক্তের অক্সিজেন এবং শরীরে এন্ডোরফিন বাড়াতে হালকা কার্যকলাপের সাথে যুক্ত। তুমি যখন এই অভ্যাসটি শুরু করবে তখন কেবল শারীরিকভাবে ভাল বোধ করবেনা, আরও অনুপ্রাণিত বোধ করবে এবং মানসিকভাবে সুস্থ হবে। ব্যায়াম ডোপামিনিন, অক্সিটোসিন এবং সেরোটোনিনকে সিস্টেমে ছেড়ে দেয়, যা কোন ঔষধের ব্যবহার ছাড়াই ভালো প্রভাব বিস্তার করে।

ভয় মোকাবেলা করো

আমরা অনেক সময় ভয়ে ডুবে থাকি। আমরা ভবিষ্যৎ নিয়ে এতটাই চিন্তিত এবং নার্ভাস থাকি যে বর্তমান মুহূর্ত উপভোগ করতে ভুলে যাই। জিনিসগুলোকে ভয় করা আমাদের মনে এতটাই গেঁথে গেছে যে এটি আমাদের অগ্রগতিকে বাধা দেয়। ভয় ভেঙে ফেলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাসগুলোর মধ্যে একটি যা তুমি বিকাশ করতে পারো।

নিজের জন্য সময় বের করা

এমন একটি অভ্যাস যা আমাদের অধিকাংশই জীবনে বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয় তা হল কিছুটা নিজস্ব সময় উপভোগ করা। প্রতিদিন এমন একটা ছোট কাজ করো যা করতে তুমি পছন্দ করো। এই কাজ করার মাধ্যমে, তোমার মনে শান্তি স্থাপন হবে যা তোমার মেজাজ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং আত্ম-সম্মানের জন্য বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। হেডফোনের মাধ্যমে নিজের পছন্দের মিউজিক শুনো না কেন, পার্কের মধ্যে হাঁটাহাঁটি, প্রিয় রাস্তা ধরে ড্রাইভ অথবা প্রিয় কোন সিনেমা দেখা- যাই করোনা কেন, নিশ্চিত হও যে সর্বদা নিজের জন্য কিছুটা সময় বের করতে পারছো।

এই অভ্যাসগুলো বিকাশের জন্য দৃঢ় সংকল্প, ধৈর্য এবং অবিরাম প্রচেষ্টা প্রয়োজন। হতে পারে এটি মাত্র কয়েক সপ্তাহ বা এক বছরেরও বেশি সময় নিতে পারে। তবে হাল ছেড়োনা, জয় হবেই।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনজীবনযাত্রাদেহ ও মনবিশেষ রচনাসচেতনতাসমস্যাসুস্থ মন

যদি ডাক শুনে কেউ না আসে

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ১২, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

 

জীবন মাঝে মাঝে অনেক চাপের হতে পারে। যখন তা আয়ত্ত্বের বাইরে চলে যায় মনে হয় এই বুঝি ঘুরে দাঁড়ানো অসম্ভব। কিন্তু পরাজিত বোধ করে আশা ছেড়ে দিওনা। রাত যত দীর্ঘ হোক, ভোর হবেই।

কল্পনা করো তুমি এমন এক জায়গায় বাস করছো যেটি দীর্ঘ খরার সাথে লড়াই করছে। যেদিকেই তাকাও চারপাশ নির্জীব, ধুলোমাখা আর প্রাণহীন। যেন সেখানে কখনো বৃষ্টির ছোঁয়াও পড়েনি। দেখে মনে হতে পারে ফসল বা গাছ কখনো জন্মাবেনা। কিন্তু তুমি যদি দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকো তবে জানো যে দীর্ঘতম খরাও এক সময় বৃষ্টিপাতের দ্বারা ভেঙে যেতে পারে। জীবনেও আমরা সেই শুকনো, খরার মতো অনুভব করতে পারি। হয়তো তুমি এমন এক সম্পর্কের মাঝে আছো যা কঠিন হয়ে উঠেছে, কারো উপর হয়তো আশা রেখেছিলে এবং হতাশ হয়েছিলে। এক পর্যায়ে আবিষ্কার করলে এই মিথ্যে আশা তোমার জীবনকে শুষ্ক এবং কঠিন করে তুলেছে। আবার অনেক সময় দেখা যায় বারংবার প্রাণান্তকর চেষ্টার পরেও আমরা আমাদের আরাধ্য জিনিস লাভ করতে পারিনি। এই অনুভূতি তখন আমাদের আশাহত করে দেয়। তখন হয়তো মনে হতে পারে সামনে আর কোন পথ নেই এবং সেই আশাহীনতার শুকনো জায়গায় নিজেকে একাকী পথিক মনে হবে। জীবনের এই কঠিন ক্রান্তিলগ্নে হতাশা ঝেড়ে ফেলে আবার ঘুরে দাঁড়াতে আসো কিছু টিপস দেখে নিইঃ

জীবন ক্রমাগত পরিবর্তনশীল

হতাশার অনুভূতি মানে জীবন আরও ভাল হবে তা কল্পনা করতে না পারে। এই নিষ্পেশন অনুভূতি সবকিছুতে অন্ধকার নিক্ষেপ করতে পারে। কিন্তু সত্য যে, জীবন সবসময় পরিবর্তনশীল, পরিবর্তন আসলে অনিবার্য। আমরা যদি বিশ্বাস রাখি এবং ইতিবাচক ও গঠনমূলক কর্মের সাথে পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া জানাই, তাহলে হতাশার এই চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে পারি। কখনো কখনো আমাদের যা করতে হবে তা হল কেবল সময়কে অতিবাহিত করতে দেয়া এবং সমস্যাটিকে বাড়িয়ে তোলার প্রলোভনকে প্রতিরোধ করা। জীবনে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা সবসময়ই থাকে।

অতীতে পার করা কঠিন সময়গুলো স্মরন করা

একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্যে দিয়ে চলার সময় ভয়, আত্ম-সন্দেহ এবং হতাশাবাদী  চিন্তা দ্বারা আঁকড়ে থাকা স্বাভাবিক। যা আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে বাধা সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে একটি সহজ কিন্তু অনেক কার্যকরী কাজ হলো জীবনের এমন ঘটনাগুলোকে তালিকাবদ্ধ করা যা আমরা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে পার করেছি। পাশাপাশি এগুলো উতরে যখন সফল হওয়ার চিত্রগুলো লিপিবদ্ধ করবে তখন দেখবে নিজের এবং অজানা ভবিষ্যতের প্রতি নতুন বিশ্বাস খুঁজে পাবে, যা তোমাকে ভয়ের পরিবর্তে এক ভাললাগা নিয়ে আসতে পারে।

মনের কথা লিখো

বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তুমি কেমন অনুভব করছো তা সম্পর্কে ডায়েরি লিখো, যা তোমার আবেগ এবং চিন্তাভাবনাগুলোকে গভীরভাবে খনন করতে সহায়তা করে। চিন্তা, আবেগ মাথায় ঘুরতে না দিয়ে তা শব্দের মধ্যে তুলে ধরো এবং এটি খুবই থেরাপিউটিক।

সবকিছুই খারাপভাবে না দেখা

চলমান ইস্যুতে জুম আউট করো এবং ফোকাস করো। সবকিছুই খারাপভাবে দেখা যা, আমাদের মনোযোগকে কেড়ে নেয় এবং এর ভেতরে কোন ইতিবাচক চিত্র যে থাকতে পারে তা দেখতে আমরা ব্যর্থ হই। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমাদের সমস্যাগুলো আমাদের জীবনে যা কিছু চলছে তার একটি উপসেট মাত্র এবং দুশ্চিন্তা, ভয় এবং উদ্বেগকে মনকে ছাপিয়ে যেতে দিবে না। এমনকি তা যদি আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র যেমন স্বাস্থ্য, সম্পর্ক, কাজ, অর্থ এবং আবেগ বিপর্যস্থ হয়ে যায়, তবুও আমরা বেঁচে আছি এর অর্থ হলো পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়ানোর আশা আছে।

উদ্দেশ্যমূলক কিছু খুঁজে নাও

আমাদের জীবনের অর্থ ও উদ্দেশ্যের অভাব রয়েছে বলে আমরা সহজেই হতাশা বোধ করি। এমতাবস্থায় যখন উদ্দেশ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে কথা বলা হয় তখন তা বিভ্রান্তিকর মনে হতে পারে। কথায় আছে, ‘যতক্ষণ শ্বাস, ততক্ষণ আশ।’ তাই জীবনকে উদ্দেশ্যপূর্ন বোধ করার জন্য আমাদের সকলকে জীবনে কিছু বিশাল মিশন খুঁজে বের করতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিরতি

আমরা বর্তমানে এমন এক সময় পার করছি যেখানে আমাদের সবকিছু প্রযুক্তির কাছে আটকে আছে। আমাদের ভালো লাগা, খারাপ লাগা, বিষন্নবোধ সবকিছুতেই আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এসে সমাধান খুঁজতে যাই। কিন্তু সত্য হলো যে, যখন জীবনে ভালো অনুভব করবেনা তখন এই সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের আরও খারাপ বোধ করতে পারে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে, এর কোন প্লাস পয়েন্ট নেই কিন্তু যখন জীবন থমকে যায় তখন সামাজিকতার অনেক খারাপ দিক নির্দেশ করেছে মিডিয়া যা মানসিক স্বাস্থ্যকে সাহায্য করেনা। এর মাধ্যমেঃ

-বিষন্নতার মাত্রা বেড়ে যায়

-অন্য মানুষের সাথে নিজের জীবনকে অন্যায়ভাবে তুলনা করতে উৎসাহিত করে

-ঈর্ষা বোধের সৃষ্টি করে

-আরও একাকী বোধ করে

সক্রিয় হও

শারীরিক কার্যকলাপ হতাশার অনুভূতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরেকটি দূর্দান্ত হাতিয়ার। গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়াম হতাশার জন্য উপকারী হতে পারে এবং ফলস্বরুপ একটি ভালো মেজাজ তৈরি করতে পারে। এটি সকল নেতিবাচকতা ঝেড়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রদান করতে পারে। এই সক্রিয় হওয়া অনেক ধরনের হতে পারে। তা হতে পারে ব্যায়াম করা কিংবা খেলাধুলা করা, হতে পারে বাগান করাও।

কথা বলো

নিজের অনুভূতি সম্পর্কে কারো সাথে কথা বলা অবিশ্বাস্যভাবে সহায়ক হতে পারে। এটি কোন বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা থেরাপিস্টের সাথে কথা বলা হোক না কেন, নিজ অনুভূতিগুলো সম্পর্কে কথা বলা তাদের বুক থেকে সরিয়ে নেয়ার একটি দূর্দান্ত উপায় হতে পারে। এই চিন্তাভাবনা এবং অনুভূতি ভাগ করে নেয়ার মাধ্যমে, তারা তোমাকে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং কীভাবে এগিয়ে যাবে সে সম্পর্কে পরামর্শ দিতে সক্ষম হতে পারে।

এই তত্ত্বটি বিপরীতমুখী বলে মনে হতে পারে, তবে এটি সত্য যে জীবনের বেদনাদায়ক সময়গুলো ব্যক্তিগত বিকাশের জন্য একটি প্রেরণা হিসেবে কাজ করতে পারে। বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা এবং অসন্তোষ আমাদের শিক্ষা দেয় এবং আমাদের বেড়ে ওঠার সুযোগ দেয়।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.অন্দরের ডায়েরিদেহ ও মনসুস্থ মন

ভোরে ওঠার উপকারিতা

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ১২, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

 

বলা হয় ‘স্লিপ ইজ দ্যা বেস্ট মেডিটেশন।‘ দেহ ও মনের সুস্থতার জন্য ঘুম কতটা জরুরী তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। ছোট থেকেই আমরা জেনে আসছি তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং তাড়াতাড়ি উঠে যাওয়া কিভাবে একজন মানুষকে স্বাস্থ্যকর, সম্পদশালী এবং জ্ঞানী বানায়। যদিও মানুষের মধ্যে ঘুমের সময়সূচী আলাদা, কিছু স্বাভাবিকভাবেই তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যেতে পছন্দ করে তো অন্যরা দেরি করে ঘুমাতে পছন্দ করে। দৈনন্দিন পরিভাষায়, দেরি করে জেগে থাকার প্রবণতা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের প্রায়শই নাইট আউল বা রাত্রি পেঁচা বলা হয় এবং তাড়াতাড়ি জাগে তাদের বলা হয় আর্লি বার্ড। এই আর্লি বার্ড যারা তাদের বেনেফিট হলো একটি নিরবচ্ছিন্ন শান্তি, নির্মল আকাশ এবং সারাদিনের জন্য রিচার্জ করার জন্য প্রচুর সময় হাতে পাওয়া। ‘বিলিওনিয়ার’স রুটিন’ অনুসরণ করার বিভিন্ন ট্রেন্ডের মধ্যে একটি হল ভোরে ঘুম থেকে উঠা। ভোরে উঠার বিনেফিট টাই বা কী, তার কারণ নিয়েই আমরা এসেছি।

নিজের জন্য সময়

যখন তুমি তোমার নির্ধারিত সময়ের চেয়ে আগে ঘুম থেকে উঠো, তখন কেবল যে সকালের কফি বা চায়ের স্বাদ নিতে পারবে তা কিন্তু নয়, বরং অনেক কাজও করতে পারবে। এই কর্মব্যস্তময় জীবলে নিজের একান্ত যে শখ রয়েছে তার জন্য সময় নেই? খুবই সহজ সমাধান, তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পরো। যোগব্যায়ামকে রুটিনে অন্তর্ভূক্ত করতে চাও? তড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠো। বিজ্ঞানীরা ঘুমের জড়তার অস্তিত্বও প্রমাণ করেছেন। ঘুম থেকে উঠার পর দুই-চার ঘন্টার সময় আমাদের মস্তিষ্ক পূর্ণ ক্ষমতায় তার ক্রিয়াকলাপ করতে পারেনা। ঘুম থেকে উঠার এই অভ্যাস একবার রপ্ত করলে, তোমার ভেতরকার সতেজতা এবং কাজের প্রতি স্পৃহা বৃদ্ধি পাবে।

রাতে ভালো ঘুম

যারা ভোরে ঘুম থেকে উঠে তারাও রাতে নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমিয়ে পড়ে। যেহেতু ভোরে উঠার কারণে রাতে ক্লান্তি বোধ করে, এতে অহেতুক রাত জাগার পরিবর্তে তাড়াতাড়ি নিজেকে বিছানায় যাওয়ার ঝোঁক বাড়তে পারে। এটি তোমাকে ঘুমের সমস্ত চার-ছয়টি চক্র সম্পূর্ণ করতে দেয় যাতে তুমি পরের দিন পুনরুজ্জীবিত বোধ করতে পারো।

সতেজ ত্বক

এটি একটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে ত্বককে সতেজ ও সুন্দর দেখাতে পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন। ঘুমের অভাব বা অনুপযুক্ত ঘুমের চক্রের কারণে ফাইন লাইন, বলিরেখা, ডার্ক সার্কেল এবং ব্রণ হতে পারে। ঘুমানোর সময় ত্বকের কোষগুলো পুনরুত্থিত হয়, ইউভি ক্ষতি ঠিক করে এবং কোলাজেন ও রক্ত প্রবাহ বাড়ায়।

উন্নত মানসিক স্বাস্থ্য

গবেষণা দেখায় যে, যারা দেরীতে ঘুমাতে ও জেগে উঠার প্রবণতা বেশি তাদের ভেতরে উদ্বেগ এবং বিষন্নতা, যারা আগে ঘুমায় এবং জেগে উঠে তাদের তুলনায় বেশি। ভোরে যারা উঠে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের লক্ষণগুলো ভালো দেখায়। তারা আশাবাদী, সন্তুষ্ট এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে ইতিবাচক বোধ করে। যাইহোক, একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে যারা দেরীতে ঘুমাতে পছন্দ করে তারা তাদের ঘুমের সময় সামঞ্জস্য করে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমাতে সক্ষম হতে পারে।

সকালের ব্যায়ামের সময়

যেকোন প্রকারের শরীরচর্চা স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খুবই উপকারী। হোক সেটা হার্ড কোন এক্সাইরসাইজ কিংবা শুধুমাত্র হাঁটা, নিয়মিত ব্যায়াম করলে তা ভালো মানের ঘুমেরও নিশ্চয়তা দেয়। দেখা গেছে যে, যাদের ঘুমের সমস্যা হয় তাদের ঘুমের মান উন্নত করতে সন্ধ্যার ব্যায়ামের তুলনায় সকালের ব্যায়াম অনেক কাজে দেয়।

সুষম খাদ্য নিশ্চয়তা

সকালের নাস্তা হল দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন খাবার। এটি তোমাকে সারাদিনে চলার জন্য জীবনীশক্তি বাড়ায়। সকালে তাড়াতাড়ি উঠলে একটি সুষম ও সুস্বাদু প্রাতঃরাশ গ্রহণের নিশ্চয়তা করা যায়। দেখা গেছে যারা সকালের নাস্তা খায় তারা সকালে বেশি সতর্ক বোধ করে এবং যারা এই খাবার এড়িয়ে যায় তাদের তুলনায় তাদের মেজাজ ভালো থাকে।

ভোরে ঘুম থেকে উঠার টিপস

রাত্রি পেঁচা যারা তাদের জন্য তাড়াতাড়ি ঘুমানো এবং ভোরে উঠা কঠিন মনে হতে পারে। কিন্তু কিছু টিপস ফলও করলে তারা সফলভাবে নিজেদের রুটিন রুপান্তর করতে পারে-

-হঠাৎ করেই সম্পূর্ণ নতুন ঘুমের সময়সূচী শুরু করার পরিবর্তে, ধীরে ধীরে পরিবর্তন শুরু করো। ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থে উঠার সময় ১৫ মিনিট করে সময় আগপিছ করে নাও। আস্তে আস্তে যখন এতে অভ্যস্থ হয়ে উঠবে তখন আবার সময়সূচী পরিবর্তন করো যতক্ষন পর্যন্ত না কাঙ্ক্ষিত সময়ে পৌঁছাও।

-মানসিক ভাবে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে হবে। এই নিমিত্তে অ্যালার্ম সেট করে তা হতের কাছে না রেখে দূরে রাখতে হবে।

-আগেই বলেছি সকালের ব্যায়াম ভালো ঘুমের নিশ্চয়তা দেয়। তাই নিয়মিত ভোরে উঠে ব্যায়াম করার অভ্যাস রপ্ত করতে হবে।

-সকালের ব্যায়ামের মত তাড়াতাড়ি খাবার গ্রহণ করাও জরুরী। সকালের প্রাতঃরাশ খাওয়ার পাশাপাশি দুপুরের খাবার এনং রাতের খাবার সবসময় একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে এবং ঘুমানোর আগে আগে কোন কিছু খাওয়া পরিহার করতে হবে।

-ক্যাফেইন একজন ব্যক্তির ঘুমের ক্ষমতা নষ্ট করতে পারে। আগে ঘুমানো এবং জেগে যদি উঠতে চাও, তবে দিনের পরে কফি, চা এবং ক্যাফিনের অন্যান্য উৎস এড়াতে হবে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.গ্রুমিংজীবনজীবনযাত্রাদেহ ও মনসুস্থ মনস্বাস্থ্য

মেডিটেশনঃ স্ট্রেস কমানোর সহজতম উপায়

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ৬, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

 

কর্মক্ষেত্র হোক কিংবা সাংসারিক জীবন, আমাদের সকলকেই নিয়মিত কিছু ধরনের চাপ মোকাবেলা করতে হয়। এই চাপকে উপেক্ষা করলে মানসিক এবং শারীরিক উভয় ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। সৌভাগ্যবশত এই ধরনের মানসিক চাপ কমানোর বিভিন্ন ওয়ে রয়েছে, যার মধ্যে আছে এমন পদ্ধতি যা গত কয়েক বছর ধরে অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, আর তা হল মেডিটেশন। যদিও এর প্র্যাকটিস অনেক প্রাচীন, কিন্তু এখনও অনেক সংখ্যক মানুষ এর রিলাক্সিং ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ শান্তি আনয়নের পাশাপাশি মানসিক চাপ উপশম করতে সক্ষম হয়েছে।

হাজার হাজার বছর ধরে অনুশীলন করা মেডিটেশন মূলত জীবনের পবিত্র এবং রহস্যময় শক্তিগুলোকে গভীরভাবে বুঝতে সাহায্য করার জন্য বোঝানো হয়েছিল। আজকাল, ধ্যান সাধারণত শিথিলকরণ এবং চাপ কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। ধ্যানকে মনে করা হয় এক ধরনের মন-শরীরের পরিপূরক ওষুধ। ধ্যান একটি শিথিল অবস্থা এবং একটি প্রশান্ত মন তৈরি করতে পারে। এছাড়াও, এটি ফোকাস এবং মনোযোগ তীক্ষ্ণ করতে, শরীর এবং শ্বাসের সাথে সংযোগ স্থাপন, কঠিন আবেগের গ্রহণযোগ্যতা বিকাশ এবং এমনকি চেতনা পরিবর্তন করার অনুশীলনকে অন্তর্ভূক্ত করতে পারে। নয় ধরনের জনপ্রিয় ধ্যান অনুশীলন রয়েছে। মননশীলতা, আধ্যাত্মিক, ফোকাসড বা নিবদ্ধ, মুভমেন্ট মেডিটেশন, মন্ত্র, প্রগ্রেসিভ, ভিজ্যুয়ালাইজেশন ইত্যাদি। সমস্ত ধ্যান শৈলী সবার জন্য সঠিক নয়। এই অনুশীলনের জন্য বিভিন্ন দক্ষতা এবং মানসিকতা প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন হলো কীভাবে বুঝবে কোন অনুশীলন তোমার জন্য সঠিক? এই প্রসঙ্গে মেডিটেশন লেখিকা এবং নিউট্রিশনিস্ট মিরা ডেসি’র মতে, তাই বেছে নাও যা তোমাকে আরামদায়ক বোধ করে এবং যা অনুশীলন করতে তুমি উৎসাহিত হও।

প্রতিদিন ধ্যান করা উচিৎ?

গবেষণায় অনেক কারণ পাওয়া গেছে যে কেন ধ্যান আমাদের জন্য মানসিক এবং শারীরিকভাবে ভালো। এখানে বিজ্ঞান-সমর্থিত কিছু কারণ দেখনো হলঃ

-নিয়মিত ধ্যান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষকরা দেখেছেন যে, মেডিটেশন মস্তিষ্কের বাম দিকে বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ বাড়ায়- যা তোমার ইমিউন সিস্টেমের জন্য দায়ী। এটাও পাওয়া গেছে যারা ধ্যান করে তাদের রক্তে অ্যান্টিবডির সংখ্যা বেশি থাকে, যা অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

-ক্রনিক পেইন বা মাথাব্যথা কমাতেও ধ্যান সাহায্য করে। বিজ্ঞানীরা মননশীলতা ধ্যান এবং ব্যথা উপশমের মধ্যে একটি লিঙ্ক খুঁজে পেয়েছেন। যদিও এর পেছনে সঠিক কারণ এখনও অস্পষ্ট, তবে অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার চিকিৎসার পাশাপাশি নিয়মিত ধ্যানের পরামর্শ দেন।

-যদিও এটি কিছুটা বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, তবে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞরা সম্মত হন যে চিকিৎসা, স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং ব্যায়াম ছাড়াও ধ্যান রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করার একটি ভালো উপায় হতে পারে। যদিও ধ্যান সরাসরি রক্তচাপকে নাও কমাতে পারে, অভ্যাসটি স্ট্রেস এবং উদ্বেগের সাথে লড়াই করতে সাহায্য করে- যা উভয়ই উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী।

-ধ্যানের শক্তিশালী উদ্বেগ-বিরোধী সুবিধা রয়েছে। ধ্যান করার প্রধান কারণ হল অতিরিক্ত সক্রিয় মনকে শান্ত করতে সহায়তা করা। ২০১৩ সালে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ধ্যানের মাধ্যমে ৪০% উদ্বেগ কমানো সম্ভব।

-আমাদের অনেকেরই আমাদের আবেগ বুঝতে সমস্যা হয়। মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন আমাদের শেখায় যে কিভাবে আমাদের অনুভূতি এবং আবেগ সম্পর্কে সচেতন হতে হয় এবং কীভাবে সেগুলো আরও ভালোভাবে প্রক্রিয়া করা যায়।

মেডিটেশনের বৈশিষ্ট্য

ধ্যান করতে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ধ্যানের মধ্যে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য অন্তর্ভূক্ত থাকতে পারে। কে কোন ধরনের ধ্যান করছে তার উপর ভিত্তি করে এই বৈশিষ্ট্যগুলো পরিবর্তিত হতে পারে। তবে সব মেডিটেশনের কমন কিছু ফিচার রয়েছেঃ

মনোযোগ নিবদ্ধ

মনোযোগকে কেন্দ্রীভূত করা সাধারণত ধ্যানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। মনোযোগ কেন্দ্রীভূ করার মাধ্যমে মনকে স্ট্রেস এবং উদ্বেগ সৃষ্টিকারী অনেক বিভ্রান্তি থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করে। একটি নির্দিষ্ট বস্তু, চিত্র এমনকি শ্বাস প্রশ্বাসের মত জিনিসগুলোতে এই মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে পারো।

রিলাক্সড ব্রিথিং

এই কৌশলটি ফুসফুস প্রসারিত করতে ডায়াফ্রাম পেশী ব্যবহার করে গভীর, সমান গতির শ্বাস প্রশ্বাস জড়িত। উদ্দেশ্য হল তোমার শ্বাস প্রশ্বাস ধীর করা, আরও অক্সিজেন গ্রহণ করা এবং শ্বাস নেয়ার সময় কাঁধ, ঘাড় এবং উপরের বুকের পেশীগুলোর ব্যবহার কমানো যাতে আরও দক্ষতার সাথে শ্বাস নিতে পার।

একটি শান্ত সেটিং

ধ্যানের ক্ষেত্রে যদি শিক্ষানবিস হয়ে থাকো তবে চুপচাপ শান্ত পরিবেশই হবে ধ্যান অনুশীলনের জন্য আদর্শ জায়গা। সময়ের সাথে সাথে এক্সপার্ট হয়ে গেলে যে কোন জায়গায়, যে কোন পরিস্থিতিতে এর প্র্যাকটিসে সক্ষম হতে পারো।

আরামদায়ক পজিশন

তুমি মেডিটেশন করতে পারো বসে, শুয়ে, দাঁড়িয়ে যেকোন অবস্থানে। তবে যে অবস্থানেই থেকে করোনা কেন তা যেন তোমার জন্য আরামদায়ক হয় তা নিশ্চিত করতে হবে তবেই তুমি ধ্যানে পূর্ণ মনোনিবেশ করতে পারবে।

সকল ধরনের হেলথ ইস্যুর জন্য মেডিটেশন একমাত্র জাদুকরী সমাধান নয়। অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের পাশাপাশি এটি তোমাকে ভালো থাকতে, খুশি রাখতে সাহায্য করবে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ঘরেই বানিয়ে নাও মেকআপ সেটিং স্প্রে

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook