রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

সুস্থ মন

দেহ ও মনসচেতনতাসম্ভাবনাসুস্থ মনস্বাস্থ্য

মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতন হওয়া জরুরি

করেছে Tania Akter ফেব্রুয়ারী ১৪, ২০২২

বর্তমানে ব্যস্তময় পৃথিবীতে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি। কারণ মানসিক অবসাদে ভোগা রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। অথচ বেশির ভাগ রোগীই জানে না সে মানসিক অবসাদে ভুগছে। তাই মানসিক রোগের লক্ষণ জানা, চিকিৎসা সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া ও প্রয়োজনে সঠিক চিকিৎসাব্যবস্থা গ্রহণ করলে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে ভারসাম্য থাকবে।
রোদসীর এবারের আড্ডায় মুখোমুখি হয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যাপক ডা. মো. তাজুল ইসলাম

রোদসী : মানসিক চাপের কারণে মস্তিষ্কের ক্ষতি সম্পর্কে বলুন

ডা. মো. তাজুল ইসলাম : মস্তিষ্কে বিভিন্ন ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার, সার্কিট ও চ্যানেল আছে। এগুলোর ভেতর বিভিন্ন সূক্ষ্ম পরিবর্তন হয়। এ ছাড়া বংশগত, সামাজিক ও পারিবারিক কারণেও মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। ফলে মস্তিষ্কের রক্তনালি ছিঁড়ে যায়। রক্তপাত হয়। রক্তনালি চিকন হয়ে ব্লক হয়ে যায়। ফলে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে সে অংশটা নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে স্ট্রোক, প্যারালাইসিস এমনকি কেউ কেউ অন্ধও হয়ে যায়। এটা হয় মূলত মানসিক স্বাস্থ্যের কাঠামো অনেক দুর্বল অবস্থায় থাকলে অর্থাৎ যারা মানসিকভাবে অল্পতেই নার্ভাস হয়ে যায়, চাপ নিতে পারে না, বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে, সহজে কোনো কথা ভুলতে না পারা এসব বিষয়ে মনের ওপর চাপ তৈরি হয়েই মস্তিষ্কের সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলো হয়।

রোদসী : মানসিক অবসাদ বোঝার উপায় কী?

ডা. মো. তাজুল ইসলাম : জীবনে আনন্দ পাওয়ার কারণে আমরা বেঁেচ থাকি। কিন্তু এই আনন্দ যখন চলে যেতে শুরু করে, তখন কোন কাজ, কথা বা কোন স্থানে আনন্দ পাওয়া যায় তখন ক্লান্তি ও দুর্বলতা তৈরি হয়। নেতিবাচক নানা চিন্তা আসতে থাকে। অতীত উজ্জ্বল থাকলেও সব ব্যর্থ মনে হয়। বর্তমানে সব ঠিক থাকলেও মনে হতে থাকে কিছুই ভালো লাগছে না। ভবিষ্যতেও কোনো আশার আলো দেখে না। এত কষ্ট, এত দুঃখ অথচ বেঁচে কেন আছে এমন প্রশ্ন আসতে থাকা এসব লক্ষণে স্পষ্ট হয় সে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত।

রোদসী : অবসাদগ্রস্ত রোগীদের ভাবনাগুলো কেমন হয়?
ডা. মো. তাজুল ইসলাম : মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত থাকলে শারীরিক জটিলতাসহ আক্রান্ত রোগীর বেঁচে থাকাও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। কারণ মানসিক অবসাদের গুরুতর অবস্থায় যখন কেউ পৌঁছায়, তখন তার মনে হতে থাকে বেঁচে থাকা অর্থহীন। মৃত্যু মানেই মুক্তি। সব অবসাদ থেকে মুক্তি পাওয়ার আনন্দে আত্মহননের পথ পর্যন্ত বেছে নেয়। এমন অনেক রোগীর স্বজনেরা জানায় মৃত্যুর কয়েক দিন আগে তারা খুবই প্রফুল্ল থাকে। দেখে মনে হয় সব ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু কয়েক দিন পরেই নিজেকে হত্যা করে ফেলে! এই রোগীদের বেঁচে থাকার সামর্থ্য থাকে না, আবার চেষ্টাও থাকে না। এটা হলো গুরুতর মানসিক অবসাদ। আর এক ধরনের মানসিক অবসাদ রয়েছে, যা বেশির ভাগ মানুষেরাই আক্রান্ত। তাদের ভাবনাগুলো বেশির ভাগ আর্থিক ও পারিবারিক দায়িত্বের বিষয় নিয়ে থাকে। এটি এতটা গভীর না হলেও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর।

রোদসী : মানসিক রোগীদের গুরুতর অবস্থা থেকে বের হওয়ার ওষুধের কোনো চিকিৎসা রয়েছে কি?

ডা. মো. তাজুল ইসলাম : অবশ্যই মানসিক রোগীদের গুরুতর অবস্থা থেকে বের হওয়ার চিকিৎসা রয়েছে। আমাদের দেশে এখন অনেক ভালো মানের চিকিৎসা রয়েছে। এই চিকিৎসাগুলো নিলে শতভাগ সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু প্রচারের অভাব রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের থেরাপিও দিতে হয়। তবে দুটো থেরাপি দিতে হবে সিবিটি বা কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি আরেকটি হলো ইন্টার পার্সোনাল থেরাপি বা আইপিটি। ওষুধ চিকিৎসার পাশাপাশি মনোবিদ চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

রোদসী : মানসিক রোগ থেকে বাঁচতে পরিবারের ভূমিকা কতটা?
ডা. মো. তাজুল ইসলাম : মানসিক রোগ থেকে বাঁচতে পরিবারের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি। কারণ, গুরুতর মানসিক অবস্থার বাইরে যারা সাধারণভাবে অবসাদগ্রস্ত, তাদের যে সময়টা ভালো লাগছে না সেই মুহূর্তেই এটি চিহ্নিত করতে হবে যে কেন ভালো লাগছে না। নিজের পাশাপাশি নিকটজনের ভূমিকা বেশি। তাদের প্রিয়জনদের মনের খোঁজ রাখতে হবে। কারণ, এক দিনেই কেউ রোগী হয়ে যায় না। তাদের ডাক্তারের কাছে না নিলেও চলে। তাই পরিবারের বা প্রিয়জনদের যারা আবেগের দিক থেকে দুর্বল, তাদের দায়িত্ব নিতে হবে। হতাশার গর্তে পড়তে দেওয়া যাবে না। ঘুরে দাঁড়ানোর মনোবল দিতে হবে। পরিবারে অভিভাবকেরা সন্তানের লালন-পালনের সঠিক কারণ না জানা ভয়াবহ ক্ষতি হয়। শুধু আর্থিকভাবে সহায়তা দিলেই হবে না, তার মানসিক অবস্থা জেনে সঠিক জীবনের দিক নির্দেশনা দিতে হবে।

রোদসী : শিক্ষাব্যবস্থায় মানসিক বিষয় থাকাটা কতটা জরুরি?
ডা. মো. তাজুল ইসলাম : মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো শিক্ষাব্যবস্থায় যুক্ত হওয়া জরুরি। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই এই বিষয়ে শেখাটা গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য জরুরি কিছু টিপস প্রায়োগিক ভাষায় লেখার মাধ্যমে কারিকুলামে যুক্ত করতে হবে। আমাদের মনোবিদদের সংগঠন এ বিষয়ে সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি করে যাচ্ছি।

রোদসী : সময় দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ
ডা. মো. তাজুল ইসলাম : এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পেরে ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকেও।

লেখা: রোদসী ডেস্ক

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
তুমিই রোদসীদেহ ও মনবিনোদনভালো থাকার ভালো খাবারসচেতনতাসুস্থ মনস্বাস্থ্য

মধুমিতার ফিটনেস রহস্য

করেছে Suraiya Naznin ফেব্রুয়ারী ৮, ২০২২

রোদসী ডেস্ক-

পর্দায় তিনি পাখি নামে পরিচিত। তবে বাস্তবেও তিনি পাখির মতোই। তাকে নিয়ে সবার খুব আগ্রহ। ফিটনেস কিভাবে ধরে রাখেন তিনি। তবে কী খাওয়া-দাওয়া একেবারেই করেন না? আজ বলবো মধুমিতার ফিটনেস চার্ট নিয়ে-

 


মধুমিতার অভিনয়ে মুগ্ধ অনেকেই। কী খেয়ে সারা ক্ষণ এত প্রাণবন্ত থাকেন তাদের প্রিয় নায়িকা, তা নিয়েও কৌতূহলের শেষ নেই মধুমিতার অনুরাগীদের মধ্যে।

মধুমিতার রোজকার খাদ্যাভ্যাসের তালিকা-

সকাল

শ্যুটিং না থাকলে মধুমিতা খানিক বেলায় উঠতেই পছন্দ করেন। ঘুম থেকে ওঠার পর গ্রিন টি-র কাপে চুমুক দেন। সঙ্গে থাকে তাঁর পছন্দের বিস্কুট।

প্রাতরাশ

বিশেষ ভারী কোনও খাবার মধুমিতার সকালের খাবারে থাকে না। দু’টি ডিম সেদ্ধ এবং মৌসুমী দু’-একটি ফলই তার খাবারে বরাদ্দ।

দুপুরের খাবারে

বাড়িতে থাকলে মধুমিতার দুপুরের খাবারে থাকে অল্প পরিমাণ ভাত, বেশ খানিকটা সব্জি আর মাছ। শ্যুটিংয়ে থাকলে মধুমিতা দুপুরে খান বেকড চিকেন, কখনও বা বেকড ফিশ। মাঝে মাঝে ছাতুর শরবতও খেয়ে থাকেন তিনি।

সন্ধ্যের খাবারে

মধুমিতা একেবারেই খাদ্যরসিক নন। ছোট থেকেই খাবারের প্রতি তার ভীষণ অনীহা। তবে ফুচকা খেতে ভীষণ ভালবাসেন। সময় পেলেই বেরিয়ে পড়েন ফুচকা খেতে। ফুচকা ছাড়াও আরও একটি খাবার মধুমিতার পছন্দের তালিকায় রয়েছে। তা হল ‘ডায়নামাইট চিকেন’। মধুমিতার কাছে আসলে ওটা ‘চিলি চিকেন’। কারণ ওটাতে চিকেন আর লঙ্কা ছাড়া আর কিছুই থাকে না।

নৈশভোজে

ঘড়ির কাঁটা ৮টায় পৌঁছনোর আগেই মধুমিতা তাঁর রাতের খাওয়া সেরে নেন। নৈশভোজে বিশেষ কোনও বিধিনিষেধ তাঁর নেই। ভাত, রুটি হোক বা বাড়িতে তৈরি বিরিয়ানি, রাত ৮টার আগে কিছু একটা খেয়ে নেন তিনি।

 

শরীরচর্চা

নিয়ম করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে কাটাতে পছন্দ করেন না তিনি। জিমের বদলে ঘাম ঝরাতে বাবার সঙ্গে টেবিল টেনিস খেলতেই বেশি পছন্দ করেন মধুমিতা। অভিনয়ের প্রয়োজনে মার্শাল আর্টেরও প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। মধুমিতার মতে, ওজন কমানোর জন্য যে সব সময়ে ব্যায়াম, যোগ অথবা জিমে গিয়ে কঠোর পরিশ্রম করতেই হবে, তার কোনও মানে নেই। বরং কেউ যদি নাচ করতে বা সাঁতার কাটতে ভালবাসেন, সেটাই নিয়ম করে করা উচিত।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রাদেহ ও মনসুস্থ মন

মনখারাপ কেটে যাবে দশ মিনিটেই

করেছে Suraiya Naznin ফেব্রুয়ারী ৭, ২০২২

রোদসী ডেস্ক:

দশ মিনিট দৌড়ে নিলেই ভাল হয়ে যেতে পারে মন। এটা গবেষণা করেছেন জাপানের একদল গবেষক।

প্রখ্যাত বিজ্ঞান বিষয়ক একটি পত্রিকায় প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জাপানের একদল গবেষক জানালেন, মস্তিষ্কের যে অংশ থেকে মানুষের মেজাজ নিয়ন্ত্রিত হয়, দশ মিনিট একটানা দৌড়ালে সেই অংশে এমন কিছু রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে যাতে ভাল হয় মেজাজ। গবেষকরা এই পরীক্ষায় ব্যবহার করেছেন রক্তের নমুনা ও ইনফ্রারেড স্পেক্ট্রোস্কোপি।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রাসচেতনতাসুস্থ মন

প্রেগনেন্সির সময়ে যৌনমিলন কি নিরাপদ?

করেছে Suraiya Naznin জানুয়ারী ১৬, ২০২২

রোদসী ডেস্ক

প্রতিটি নারীর জীবনে প্রেগনেন্সির সময়টা খুবই সংবেদনশীল। এই সময় অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে কি করবো আর কিই বা করবো না। নানা রকম প্রশ্নের দ্বীধায় কাটে অনেকটা সময়। তবে যেকোন কিছুই এসময় চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ভালো। তবে যারা বাবা হচ্ছেন তাদেরও কারও কারও জানা থাকে না এসময় যৌনমিলন আসলেই সম্ভব কিনা। ছোট ছোট জানার ভুলের কারণে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে দেখা নেয়া যাক গাইনোকোলজিস্টের মতামত-

 

আমেরিকান কলেজ অফ অবস্টেট্রিশিয়ানস অ্যান্ড গাইনিকলজিস্টস-এর মতে,

প্রেগনেন্সির সময়ে যৌনমিলন এমনিতে নিরাপদ, যদি না এর কোনও বিপরীত প্রতিক্রিয়া সেই যুগলের উপর দেখা যায়। একজন প্রেগনেন্ট নারীর ইন্টারকোর্স এড়িয়ে চলা উচিত যদি তার আগে প্রিম্যাচিওর ডেলিভারি হয়ে থাকে। যদি তার সার্ভিক্সে কোনও সমস্যা থাকে বা এর আগে অ্যাবরশন হয়ে গিয়ে থাকে, ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং বা স্পটিংয়ের সমস্যায় ভোগেন—তাহলেও ইন্টারকোর্স এড়িয়ে চলতে হবে।

অনেকেরই প্লাসেন্টা প্রাভিয়া বলে একটি অসুখ হয়। এতে প্লাসেন্টা জরায়ুর মুখ পুরোপুরি বা আংশিকভাবে বন্ধ করে দেয়। অ্যামনিয়োটিক ফ্লুইড লিক করতে থাকে। তবে এই সমস্যাগুলোর কোনওটাই যদি না থাকে, তাহলে প্রেগনেন্সির সময়েও যৌনমিলন করা সম্ভব হবে। ডেলিভারির দু’সপ্তাহ আগে পর্যন্ত পার্টনারের সঙ্গে মিলিত হতে পারো। তবে একবার ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিতে হবে অবশ্যই। আর কিছু বিষয়ে সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন। হবু মায়ের তলপেটে যেন কোনওভাবেই চাপ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন।

 

সন্তান জন্মের তিন সপ্তাহ পরে আবার ইন্টারকোর্স শুরু করা যেতে পারে। তবে যদি সিজ়ারিয়ান সার্জারি হয় বা এপিসিয়োটোমি (পেরিনিয়াম কেটে আবার স্টিচ করা) হয়, তাহলে খুব সতর্ক থাকতে হবে। ওই বিশেষ জায়গায় যাতে চাপ না পড়ে, তার জন্য কয়েটাল পজ়িশন একটু বদলাতে হতে পারে। মনে রাখতে হবে, স্ত্রীর স্বাচ্ছন্দ্য গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষতস্থান পুরো শুকিয়ে গেলে তারপরেই ইন্টারকোর্স করা ভাল। এই ছোট ছোট বিষয়গুলো শুধুমাত্র স্ত্রীর নয় স্বামীরও নজর দিতে হবে।

ছবি: সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
খেলাধুলাচলন বলনজীবনজীবনযাত্রাদেহ ও মনভ্রমণ ফাইলসুস্থ মন

খেলাচ্ছলেই ব্যায়াম

করেছে Tania Akter জানুয়ারী ১২, ২০২২

রেহনুমা তারান্নুম

 

মুটিয়ে যাওয়ার পর একটা সময় সবাই ভাবে, না! এখন থেকে ব্যায়াম করতেই হবে। কিন্তু সেই সময়টি যেন আর হয়ে ওঠে না। অনেকে মনে করে, ব্যায়ামের এত প্রস্তুতি, থাক কদিন যাক। তবে ব্যায়াম যদি হয় খেলাচ্ছলে। তাহলে কিন্তু মন্দ হয় না ! সহজ, চেনা কিছু শারীরিক কসরতে, প্রায় খেলাচ্ছলেই শরীর আবার ফিরে পাবে আগের মতো যথাযথ আকার। বিগত ১২ মাসের লাভ-ক্ষতির অঙ্ক করতে বসে যদি দেখো বেশ কিছুটা মেদ শরীরে জমেছে, তবে মোটেই মেজাজ থাকবে না আর। তা ছাড়া অতিমারির জন্য অনেকটা সময় বাড়িতে থেকে কাজ করতে হয়েছে।

 

বাইরে নিয়মিত গেলে যে শারীরিক পরিশ্রমটা হয় সেটাও হয়নি। খাবারেও হয়েছে বড়সড় অনিয়ম। ফলে ছিপছিপে শরীরে ক্যালরি বেড়ে যদি নিজেকে বেঢপ মনে করো, তবে হাতের কাছেই আছে সমস্যার সমাধানও। সহজ, চেনা কিছু শারীরিক কসরতে, প্রায় খেলাচ্ছলেই দেহ আবার ফিরে পাবে আগের মতো যথাযথ আকার, কমবে ক্যালরি, উপরন্তু বাড়বে দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা।

 

সাইক্লিং

সাইকেল চালানো তোমার হাঁটুকে শক্তিশালী করার জন্য দুর্দান্ত একটি ব্যায়াম। বিশেষ করে তোমার যদি দৌড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই হাঁটুতে ব্যথা হয় বা অতিরিক্ত মেদের ফলে হাঁটুতে চাপ পড়ে, তবে সাইকেল চালালে পেতে পারো প্রভূত উপকার। বহু জিমেও তাই এই ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে শরীরচর্চা করানো হয় এখন। ক্যালরি বর্জন করতে ছোটবেলার এই খেলা আমাদের অনেকটা সাহায্য করতে পারে। ক্যালরি বর্জন করতে ছোটবেলার এই খেলা আমাদের অনেকটা সাহায্য করতে পারে।

 

জগিং

রোজ নিয়ম করে কিছুক্ষণ জগিং করলে শরীরে মেদ জমার সুযোগই পাবে না। এতে খুব দ্রুত সারা দেহে রক্ত সঞ্চালন হয় আর ক্যালরিও ঝরে যায়। প্রত্যেক দিন সময় না পেলে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন নিয়ম করে খানিকক্ষণ জগিং করতে হবে। সঙ্গে অবশ্য ভাজাভুজি বাদ রেখে সুষম খাদ্য খাওয়াও জরুরি।

 

সাঁতার

আমরা একটু সচেতন হয়ে খেয়াল করলে দেখব যে যারা নিয়মিত সাঁতার কাটে, তাদের শরীরে মেদের আধিক্য প্রায় নেই। জলে ভেসে থাকতে গেলে ওজনদার আকৃতি নিয়ে কিন্তু মুশকিলই হয়। তা ছাড়া সাঁতারের সময় শরীরের প্রত্যেক অঙ্গের ব্যায়াম বিশেষজ্ঞদের মতো এমনটাই। শীতকালে ঠান্ডার ভয়ে পানিতে নামতে না চাইলে এমন সুইমিংপুলের সন্ধান করতে পারো, যেখানে পুলের পানিতে থাকে নাতিশীতোষ্ণ।

 

দড়ি লাফানো

দড়ি লাফানো বা আরেকটু চেনা ভাষায় বললে লাফদড়ি খেলার সঙ্গে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। কিন্তু অনেকেই জানি না যে ক্যালরি বর্জন করতে ছোটবেলার এই খেলা আমাদের কতখানি কাজে লাগতে পারে। ঘণ্টায় ৬০০ থেকে প্রায় ৯০০ ক্যালরি শরীর থেকে বাদ দিয়ে দিতে সক্ষম এই কসরতটি। তা ছাড়া এটি হাড়ের ঘনত্ব তৈরি করতে সাহায্য করে, যা হাড়ের ক্ষয় বা অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগ প্রতিরোধে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 

লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি

সবচেয়ে সহজ যে উপায়ে ওজন কমতে পারে তা হলো সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা। অনেকে একে শরীরচর্চার অঙ্গ হিসেবে ধরতে চায় না। কিন্তু যারা কোনো না কোনো বহুতলে থাকে কিংবা চাকরিসূত্রে যাতায়াত করে, তারা খুব ভালো জানে লিফট না চললে সিঁড়ি ব্যবহার করার সময়ে কতখানি ধকল যায়। মেদ কমার পাশাপাশি এভাবে পায়ের পেশি শক্ত হয়, আঙুলের যন্ত্রণা কমে, নিঃশ্বাসের ব্যায়াম হয় এবং কোমরের পেশিতে রক্ত সঞ্চালন হয় যথাযথভাবে।

ছবি: সংগৃহীত

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়গ্রুমিংদেহ ও মনসচেতনতাসুস্থ মনস্বাস্থ্য

মন এবং মেডিটেশন

করেছে Sabiha Zaman অক্টোবর ২৭, ২০২১

রেহনুমা তারান্নুম

জীবন সুন্দর। তবে অনেকে অল্পতেই হতাশায় পড়ে। ভাবতে থাকে এই জীবন রেখে কী হবে? আমি তো কিছুই পেলাম না! কী হবে? হাবিজাবি এই সব দুশ্চিন্তায় প্রচণ্ড খারাপ সময় কাটাতে থাকে। কিন্তু একটিবার ভেবে দেখো তো! যে জীবনে সব পেয়েছে, সে-ও কি শতভাগ সুখী? হয়তো নয়! কারণ সুখ আপেক্ষিক। তুমি চাইলেই আনন্দ বইয়ে দিতে পারো নিজের জীবনে। কীভাবে? সময় দাও নিজেকে। বারবার প্রশ্ন করো। তুমি আসলে কী চাও। তবে মনকে সুস্থ রাখতে, ভালো রাখতে মেডিটেশন কিন্তু খুব ভালো উপায়। বিশেষজ্ঞরাও তাই বলেন-

জীবন গতিশীল। সুখ-দুঃখ, আনন্দ, হাসি, কান্না নিয়েই আমাদের জীবন। হঠাৎ যখন প্রচণ্ড আনন্দ, হতাশা যখন ধেয়ে আসে, তখন দৈনন্দিন জীবনের গতি থমকে যায়। তবে সারা দিনের এই ক্লান্তি, হতাশা, মলিনতাকে পেছনে ফেলে পৌঁছে যেতে পারো সুস্থ-শান্ত পরিবেশে। শুধু সঠিক ডায়েট ও পর্যাপ্ত ঘুমই যথেষ্ট নয়। যদি নিয়ম করে রোজ সকালে বা সন্ধ্যায় সামান্য সময় দিতে পারো নিজের মনের সঠিক বিশ্রামের জন্য, তবে সাফল্য-সুখ-শান্তি ও সুস্বাস্থ্য থাকবে সমপরিমাণে।
কেউ যদি নিয়মিত মেডিটেশন করে, তাহলে সে সুস্থ সফল সুখী জীবনের অধিকারী হবেই এবং সে অনেকগুলো সমস্যা থেকেও দূরে সরে আসবে। যেমন ঘুম, দুশ্চিন্তা, মাইগ্রেন, উদ্যোগ ইত্যাদি থেকে মুক্তি পেতে পারে। এ ছাড়া নানা ধরনের শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থেকেও রেহাই পাবে।


করোনার সময় মানুষ নানা ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভয়, উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা, একাকিত্বে মানুষ বেশি ভুগছে। অনেকে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে। বলা যায়, এখন পর্যন্ত এমন কোনো ওষুধ তৈরি হয়নি, যা দিয়ে মানসিক শক্তি বাড়ানো যায়। সুতরাং এ ক্ষেত্রে মেডিটেশনের বিকল্প নেই। এমনকি মেডিটেশনের মাধ্যমে আমাদের জিনও পরিবর্তিত হয়, যার ফলে সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ করা সম্ভব। যেকোনো ধরনের জীবাণু ধ্বংসের ক্ষমতা বাড়ানো যায়। সুতরাং বলা যায়, মেডিটেশনের মাধ্যমে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। আর যাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে, তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অনেক বেশি থাকে, যা এই করোনার সময়ে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

মেডিটেশনের আগে

* সুতির আরামদায়ক যেকোনো পোশাকই মেডিটেশনের জন্য উপযোগী।
*পরিষ্কার পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে করতে পারো মেডিটেশন।
*ট্রাউজার বা ট্রাক স্যুটও চলবে।
*যেকোনো ঢিলেঢালা পোশাক পরতে পারো।
*শরীরে যেকোনো অলংকার না রাখাই ভালো।

যেভাবে করতে হবে মেডিটেশন

মেডিটেশন বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। তবে সহজ হলো ব্রিদিং মেডিটেশন। দিনে যদি দুই থেকে তিনবার ১০-১৫ মিনিট সময় বের করতে পারো, তাহলেই ব্রিদিং মেডিটেশন করা সম্ভব। সাধারণত মেডিটেশন করতে হয় পদ্মাসন, সুখাসন, অর্ধপদ্মাসন, স্বস্তিকা আসনে বসে।

দুই হাত থাকবে দুধারে, ধ্যানমুদ্রায়। কোমর, কাঁধ, মাথা একটি সরলরেখায় থাকবে। শিথিল করে রাখতে হবে কাঁধ। এই ভঙ্গিতে বসে কিছুক্ষণ অন্য সব চিন্তা দূরে সরিয়ে মনকে কেন্দ্রীভূত করো। দুর্বল, অসুস্থ শরীর মেডিটেশনের জন্য উপযোগী নয়। তাই সুস্থ হতে হবে আগে। বাদ দিতে হবে অতিরিক্ত ভোজন। প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুম পরিহার করতে হবে। একটি শান্ত জায়গা খুঁজে নাও, যেখানে তুমি আরামে বসতে পারবে। দুই পা একটির ওপর আরেকটি তুলে ক্রুশ করে বসো। তবে পিঠ ও শিরদাঁড়া সোজা রেখে তুমি যেকোনো পজিশনে বসতে পারো। পিঠ সোজা করে না বসলে ঘুম পেয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। দুচোখ আধো বন্ধ করে নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর মনোনিবেশ করো। স্বাভাবিকভাবে নিশ্বাস নাও। নিজের শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করবে না। বোঝার চেষ্টা করো কীভাবে হাওয়া নাকের ভেতর দিয়ে ঢুকে ফুসফুসে যাচ্ছে। কীভাবে ফুসফুসে হাওয়া ভরছে আর তোমার বুক ওঠা-নামা করছে। একইভাবে যখন শ্বাস ছাড়ছ, সেই ব্যাপারটাও অনুভব করার চেষ্টা করো। কীভাবে হাওয়া তোমার নাকের ভেতর দিয়ে আবার তোমার শরীরের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে, এটা বোঝাও মেডিটেশনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শ্বাস-প্রশ্বাসের এই প্রক্রিয়া ছাড়া আর কোনো কিছুর ওপরই মনোযোগ দেবে না।

 

মনে রাখতে হবে

সারা দিনের কাজের চাপের কারণে তোমার মনে হতেই পারে যে মেডিটেশন তোমাকে আরও ব্যস্ত করে তুলেছে। তবে বাস্তব চিত্রটা একটু অন্য রকম। মেডিটেশন আসলে ভাবনার প্রতি আমাদের সচেতনতা বাড়ায়। মেডিটেশন করার সময় যতবার মন অন্যদিকে যাবে, ততবার শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর মনোনিবেশ করবে। যত দিন যাবে, দেখবে যে তোমার মনঃসংযোগ বাড়বে এবং তুমি আরও বেশি মানসিক প্রশান্তি অনুভব করবে।

সুস্থ সফল সুখী জীবনের জন্য মেডিটেশন

মনকে শান্ত ও সুস্থ রাখতে মেডিটেশন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এর চর্চা সম্পর্কে আমাদের দেশের মানুষ খুবই কম জানে। ফলে মানুষের মধ্যে আগ্রহও কম। কিন্তু বিশ্বজুড়ে এখন প্রায় ৫০ কোটি মানুষ নিয়মিত মেডিটেশন করে। মেডিটেশন হচ্ছে মনের ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় মেডিটেশনের তিনটি প্রধান সুফল উল্লেখ করেছে। এক. হার্টরেট স্বাভাবিক থাকা, দুই. মেন্টাল স্ট্রেস কমে যায় এবং তিন. উচ্চ রক্তচাপ কমে ও হার্ট নিয়ন্ত্রিত থাকে।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা হৃদ্্রোগে আক্রান্ত হয়েছে, তারা এর দুই বা তিন মাস আগে কোনো না কোনো সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং পারিবারিক বিষয়ে মানসিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সুতরাং বলা যায়, মানসিকভাবে ভালো থাকলে হৃদ্্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।

সুস্থতা জীবন উপভোগ করতে সহায়তা করবে। চিন্তাভাবনাকে প্রসারিত করতে সহায়তা করবে। তাই নিজেকে সুস্থ এবং প্রাণোচ্ছল রাখতে নিয়মিত ইয়োগা এবং মেডিটেশন শুরু করতে হবে। চিন্তা করা মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। তবে দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ নিমেষেই কেড়ে নেয় মনের সুখ-শান্তি। যা জন্ম দেয় বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক রোগ। তাই ভালো থাকতে দুশ্চিন্তামুক্ত ও মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে। না, কাজটি খুব কঠিন নয়। নিয়মিত ইয়োগা, মেডিটেশন, ব্যায়ামের মতো কিছু সু-অভ্যাসের মাধ্যমে খুব সহজেই শারীরিকভাবে সুস্থ এবং মানসিক চাপমুক্ত ও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে পারো। হেমন্তের শীতের আমেজে চাঙা থাকতেও জাদুর মতো কাজ করবে ইয়োগা ও বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম।
হিম হিম শীতে শরীরের রক্তসঞ্চালন ঠিক রাখতে, কর্মচাঞ্চল্য ধরে রাখতে, রোগবালাই দূরে রাখতে এবং মনকে ফুরফুরে রাখতে টনিকের মতো কাজ করে ব্যায়াম। সঙ্গে শীতটাকেও করে তোলে উপভোগ্য। তাই বলে শুধু যে ব্যায়ামাগারে গিয়েই ব্যায়াম করতে হবে তা কিন্তু নয়, হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটাÑ এগুলো সবই শরীরচর্চার মধ্যে পড়ে। তাই সময় এবং সুযোগমতো করতে পারো এর যেকোনোটি।
শত ব্যস্ততার মধ্যেও প্রতিদিন নিজের জন্য কিছুটা সময় রাখো। আর এ সময়টা ব্যয় করো একদমই নিজের মতো করে। এ সময় গান শুনে, বই পড়ে, সিনেমা দেখে কিংবা ভালো লাগার যেকোনো কিছু করে সময় কাটাতে পারো। এ ছাড়া সম্ভব হলে প্রতিদিন খোলা আকাশের নিচে সবুজ প্রকৃতিতে কিছুটা সময় কাটাও।
একটানা কাজ না করে কাজের ফাঁকে ফাঁকে ৫-১০ মিনিট বিশ্রাম নাও। আর লম্বা কাজের পর আয়েশ করে কিছুটা সময় বিশ্রাম নাও এবং প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমাও।

ছবি: ইন্টারনেট

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়দেহ ও মনসুস্থ মন

চাই মানসিক নির্ভরতা

করেছে Sabiha Zaman এপ্রিল ১২, ২০২১

খুব খারাপ সময় কাটছে মিরার। একা একা লাগে ভীষণ। স্বামী মারা গেছে তা-ও ৯ বছর হলো। ছেলেমেয়েরা যে যার মতো ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। মিরা চাকরি থেকে অবসর নিল ছয় মাস আগে। এখন সময়ের বেশির ভাগটাই কাটে জানালার রেলিংয়ে। জীবনের মানে খুঁজতে হচ্ছে বয়সের সীমানায় এসে। মেনোপজের পর থেকে মিরা আরও বেশি অবসাদে ভুগছে। কিন্তু এ সময় দরকার মানসিক নির্ভরতা। এই বয়সটা সব নারীকে বেশি ভাবিয়ে তোলে। কেউ উতরে যায় খুব সহজে, আবার কেউবা চোরাবালির চোরাকাঁটায় আটকে যেতে থাকে।

এই বয়সটা এক হতাশা তৈরির সময়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয় শরীরে, তা থেকে বিরক্তি আসে। বিশেষত নারীদের মেনোপজের পর থেকে নানা সমস্যা শুরু হয়। হাঁটুর ব্যথা, চোখে কম দেখা, বদহজমের সমস্যা তো আছেই। শারীরিক অক্ষমতায় অন্যের ওপরে নির্ভর করাটা করাটা বিরক্তিকর। তার সঙ্গে রয়েছে একাকিত্ব। এখন অনেকের সন্তানই বিদেশে বা ভিনরাজ্যে বা অন্য জেলায় কর্মসূত্রে বসবাস করে। এক ছাদের তলায় থাকলেও মা-বাবার সঙ্গে বসে বেশ খানিকটা সময় গল্প করে, আনন্দ করে কাটাচ্ছে, এমনও তো নয়। ফলে তারা ক্রমে একা হয়ে পড়ে। তার থেকেও হতাশা দানা বাঁধে।

একজন সারা জীবন চাকরি করেছেন। বিশেষ পদমর্যাদা ভোগ করেছেন। সেই সুবাদে অনেক মানুষ তাকে ঘিরে থেকেছে, তার কাজের প্রশংসা করেছে। কিন্তু অবসর গ্রহণের পর থেকে সেই বৃত্ত ছোট হয়ে আসে। সেখানে প্রশংসা তো দূরের কথা, ন্যূনতম স্বীকৃতি পাওয়াও বেশ দুর্লভ। প্রত্যেক মানুষই স্বীকৃতি চায়। কিন্তু সেটা হয়তো সব সময়ে পায় না।
এর পরে রয়েছে সাংসারিক অশান্তি। কিছু পরিবারে হয়তো বৃদ্ধ-বৃদ্ধা আকাক্সিক্ষত নয়। তাই নিয়ে রোজকার কলহ। একটা মানুষ প্রতি মুহূর্তে যদি বুঝতে পারে যে তাকে কেউ চাইছে না, এদিকে তার অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গাও নেই। সেই অনুভূতি থেকেও অবসাদ গ্রাস করে। একটা বয়সের পরে হতাশা কমে না। ক্রমে তা বেড়েই চলে। কিছু ক্ষেত্রে আত্মহত্যার প্রবণতাও অস্বাভাবিক নয়। বিশেষ করে কোনো দম্পতি যদি খুব সুখী জীবন কাটায়, তার মধ্যে হঠাৎ একজন চলে গেলে অন্যজন ভেঙে পড়ে। বয়সকালে একা থাকার ভয়, অনিশ্চয়তা থেকে একধরনের অবসাদ তৈরি হয়। আবার যাদের হয়তো দাম্পত্যে তেমন মিলমিশ ছিল না, তা-ও কাজে-কর্মে একসঙ্গে কাটিয়ে দিয়েছে, তাদেরও কিন্তু এই বয়সে এক ছাদের তলায় থাকতে থাকতে সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে যায়। তার থেকেও হতাশা তৈরি হয়। তবে এই অসুখের সুবিধা হলো, এটা যার সমস্যা, সে নিজেই বুঝতে পারে। নিজের মন খারাপ হলে, তা কিন্তু বোঝা যায়। হতাশা গ্রাস করছে বুঝতে পারলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে তাদের মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যাওয়াটাও একটা চ্যালেঞ্জ। অনেকেই যেতে চায় না। কিন্তু দরকার হলে চিকিৎসকের কাছে যেতেই হবে। তার আগে আশপাশের মানুষেরও কিছুটা সচেতনতা জরুরি। প্রাথমিকভাবে ওদের পাশে থাকার মাধ্যমেই অনেকটা হতাশা কাটানো সম্ভব।

সংসারে বৃদ্ধ মা, বাবা, শ্বশুর, শাশুড়ি থাকলে তাদের সময় দাও। বিদেশে বা অন্য রাজ্যে থাকলেও এখন দূরত্বটা বাধা নয়। ফোন কলে তাদের সঙ্গ দাও। তিনি কী খেলেন, সারা দিন কী করলেন, ছোটবেলার সুখস্মৃতির আলোচনা এগুলো জরুরি। সুখস্মৃতি মানুষের মনে আলো দেখায়। দূরে থাকলেও কথাবার্তায় তাদের সঙ্গে সময় কাটানো কঠিন নয়।

একটি শিশুর যেমন যত্ন দরকার, বাড়ির প্রবীণদেরও ঠিক ততটাই যত্ন দরকার। একদিন শাশুড়ি বা মায়ের চিরুনিটা হাতে নিয়ে যত্ন করে তার চুল বেঁধে দাও। দেখবে খুশি হবে। স্পর্শ খুব জরুরি। এই স্পর্শই তাদের জীবনের দিকে ফেরাবে।
প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু শখ থাকে। গাছ লাগানোর, বই পড়ার, সেলাইয়ের বা ভালো সিনেমা দেখার। একটু কথা বললেই সেই শখের কথা জানা যায়। সেই শখ পূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
উৎসাহ দাও নতুন কাজে। অনেক সময়েই বাড়ির প্রবীণ মানুষটিকে গুটিয়ে যেতে দেখা যায়। ‘তোরা যা, আমি যাব না’, ‘ওরে বাবা! আমি পারব না’ এগুলো ওদের মুখে খুব পরিচিত। কথাগুলো থেকে ‘না’-টা সরানোর দায়িত্ব নিতে হবে। কেউ এক সময়ে খুব ভালো রাঁধতেন, এখন কনফিডেন্স পান না। একদিন বলে ফেলো, ‘তোমার হাতে পায়েস খেতে খুব ইচ্ছে করছে, তোমার মতো কেউ পারে না।’ তিনি রাঁধলে সেটা ভালোবেসে খাও। ‘এই তো তুমি পেরেছ’ এইটুকু আশ্বাসই তাদের মন ভালো রাখার মেডিসিন হিসেবে কাজ করবে।

অনেকেই বলে, মা-বাবা নতুন জামাকাপড় চান না। উপহার কী দেবে বুঝতে পারে না। ওদের এমন জিনিস দাও, যাতে ওদের সময় কাটে। হতে পারে সেটি আধুনিক জীবনের সঙ্গে খাপ খায় না, কিন্তু ওদের প্রিয়। মা-বাবা, শ্বশুর-শাশুড়ির বন্ধুদের গেট টুগেদারের ব্যবস্থা করা যায়। ঠিক যেমন বাড়িতে সন্তানের জন্মদিনের আয়োজন করা হয়, তাদের আনন্দের জন্যও একটা দিন না হয় সাজিয়ে দাও। দেখবে, সেই এক দিনের আনন্দ নিয়েই কত দিন আলোচনা করবেন আপন ভালোবাসায়।

লেখা : সুরাইয়া নাজনীন

ছবি : সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
দেহ ও মনরোদসীর পছন্দসচেতনতাসমস্যাসুস্থ মনস্বাস্থ্য

শরীর নিয়ে সমস্যা!

করেছে Sabiha Zaman মে ১৪, ২০২০

নিজেকে নিয়ে মানুষের ভুল ধারণার শেষ নেই। এমন ধারণা থেকে শেষ পর্যন্ত জন্ম নিতে পারে মানসিক রোগ। লোকে কী ভাবছে নয়, যেমন আছি ভালো আছি এই বিশ্বাস না থাকলে সমস্যা থেকে উত্তরণ সত্যিই কষ্টকর।

ছেলেটি কলেজে পড়ে। এসএসসিতে রেজাল্ট খুব ভালো। কিন্তু এখন তার বিশ্বাস, নাকটা ভীষণ কুৎসিত, মুখের সঙ্গে একেবারেই অসামঞ্জস্যপূর্ণ, যদিও আজ পর্যন্ত এ কথা তাকে কেউ বলেনি। সে এ-ও বিশ্বাস করে, সে যখন বাইরে যায়, তখন মানুষ অবাক হয়ে তার নাকের দিকে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু মুখে কিছু বলে না। লজ্জায় তাই সে একটা রুমাল দিয়ে নাক ঢেকে রাখে সব সময়। ছেলেটি মনোচিকিৎসককে নাক দেখাতে মোটেও রাজি নয়। ফলে প্রচণ্ড হতাশায় ভোগে। রোগীকে আত্মীয়স্বজন জোর করে মানসিক হাসপাতালে নিয়ে এসেছিল।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় রোগটির নাম বডি ডিসমরফিক ডিসঅর্ডার। এ রোগে আক্রান্তদের বিশ্বাস, তাদের শরীরের কোনো এক অংশ কুৎসিত, অসামঞ্জস্য, ত্রুটিপূর্ণ  ; যদিও বাস্তবে এদের শরীরে কোনো ত্রুটি নেই বা থাকলেও তা অতি নগণ্য। এই কাল্পনিক ত্রুতির কারণে রোগী প্রচণ্ড টেনশন ও হতাশায় ভুগে থাকে। এ সমস্যা দূর করতে রোগী পাগল হয়ে ওঠে। রোগীর পরিবার এ কাজে বাধা দিলে রোগীর হিংস্র হয়, আত্মহত্যার হুমকি দেয়।

এ ত্রুটি দূর করতে তারা সাধারণত কসমেটিক সার্জনের কাছে যায়। সাধারণত মনোবিজ্ঞানীর কাছে যেতে চায় না। রোগীরা বারবার আয়নায় নিজেকে দেখে। অন্যদের সঙ্গে নিজের ত্রুটি যুক্ত (কাল্পনিক) অংশের তুলনা করে। শরীরের কোনো কোনো অংশের ত্রুটি রোগী শনাক্ত করে। রোগীর নাক, ঠোঁট, চোখ, ব্রেস্ট (নারীদের ক্ষেত্রে) নিতম্ব, পুরুষাঙ্গ (পুরুষের ক্ষেত্রে) আগে বডি ডিসমরফিক ডিসঅর্ডার সোমাটোফর্ম ডিসঅর্ডারের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এখন এটি অবসেশিভ ডিসঅর্ডারের মধ্যে ধরা হয়। কারণ, রোগীর মধ্যে এ চিন্তা বারবার মাথায় আসে। এ চিন্তা দূর করতে রোগীরা কিছু কমপালসিভ কাজ করে। যেমন আয়নায় বারবার নিজের শরীর বা শরীরের অংশ দেখা, বারবার নিজেকে দেখে বা অন্যকে দিয়ে পরীক্ষা করায়। রোগী অন্য ব্যক্তির মুখ থেকে সান্ত্বনা ও আশ্বাস শুনতে চায়। তাকে সাপোর্ট করার জন্য উদগ্রীব থাকে।

অন্যরা যদি তাকে বলে, তোমার কিছুই হয়নি বা তোমার শরীরে তেমন দৃষ্টিকটু কিছু নেই, তাতে রোগীর চিন্তা একই থাকে। বরং ফল হয় উল্টো। রোগী নিজ উদ্যোগে কসমেটিক সার্জনের শরণাপন্ন হয় এবং সার্জারি করতে চাপ দেয়। অপারেশনের পরও রোগীর মানসিক তৃপ্তি আসে না। বরং মানসিক কষ্ট বাড়ে। তাই কসমেটিক সার্জারি এ রোগ নিরাময়ে কোনো সমাধান নয়। অসফল সার্জারি বা বারবার সার্জারিতে কারও কারও মুখ, ব্রেস্ট বা শরীরের অন্য অংশ ভয়াবহ বিকৃত হয়ে পড়ে।

 

বিশ্বখ্যাত পপ গায়ক মাইকেল জ্যাকসন বডি ডিসমরফিক ডিসঅর্ডার রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তিনি মুখসহ অন্যান্য স্থানে ১১ বার কসমেটিক সার্জারি করান। চিকিৎসকদের নিষেধ সত্তে¡ও তিনি তা করান। তবু তার মনে কোনো তৃপ্তি আসেনি। বরং ভয়াবহ  বিষণ্নতায়  আক্রান্ত হয়েছিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কমপক্ষে ১ শতাংশ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত।

আমাদের দেশে এ ধরনের রোগী কত, সে সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য নেই। তাই বলে দেশে এ ধরনের রোগী নেই, এমন নয়। এ ধরনের রোগীর স্বাভাবিক ও পারিবারিক জীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রোগী লজ্জা ও সংকোচে সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে চায় না। মানুষের সঙ্গ পছন্দ করে না। ক্রমে রোগী গৃহবন্দী হয়ে পড়ে।

রোগের লক্ষণ

  •  দেহকাঠামো নিয়ে মনে মনে বারবার অহেতুক চিন্তার উদয় হয়।
  • নিজের চেহারার গঠন নিয়ে মনে অলীক বা অস্বাভাবিক ধারণার জন্ম হয়।
  • মাঝেমধ্যেই আয়নায় নিজেকে দেখার একপ্রকার প্রবণতা দেখা যায়।
  • কাছের মানুষের কাছ থেকে নিজের এমন বদ্ধমূল ধারণা যাচাই করার মানসিকতার জন্ম হয়।
  • নিজের সম্পর্কে হীনমন্যতার বোধ জাগ্রত হয়।
  • চিন্তাভাবনায় অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে।
  • রাগ এবং হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
  • স্কুল, কলেজ বা কাজের জায়গায় সমস্যার সৃষ্টি হয়। কারণ, মনের অস্থিরতার জন্য কাজের দক্ষতা হ্রাস পায়।
  • নিজের চেহারার গড়নের জন্য মনের মধ্যে এমন অস্বস্তি এবং ভয়ের জন্ম হয় যে বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে আর যোগাযোগের কোনো ইচ্ছা থাকে না।
  • সর্বোপরি, সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করলে রোগীর আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা যায়।

এ সমস্যার সঙ্গে কো-মরবিডিটি হিসেবে বিষণ্নতা  , আত্মহত্যার প্রবণতা, শুচিবাই, সোশ্যাল ফোবিয়া দেখা দিতে পারে।

রোগের কারণ
অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত সমস্যার মতো এ ক্ষেত্রে কোনো একটি কারণকে চিহ্নিত করা মোটেই সহজ বিষয় নয়। এর পেছনে রয়েছে নানাবিধ কারণ।
ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ
আমাদের সমাজ, পরিবার বা বন্ধুদের মধ্যে কারও চেহারার গড়ন নিয়ে হাসাহাসি বা ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ খুব স্বাভাবিক ঘটনা। যেমন লম্বা লোককে হিন্দিতে ‘লম্বু’ বা মোটা মানুষকে ‘ডুম্মি’ বলে ডাকা হয়। পরিবার বা বন্ধুদের কাছ থেকে এ ধরনের ব্যঙ্গ শুনে মানুষের মনে তার নিজের সম্পর্কে একধরনের অসন্তোষ, হীনমন্যতা বা নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়।

নেতিবাচক আত্মকল্পনা
আত্মবিশ্বাসহীনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে একজনের অতিরিক্ত অস্বাভাবিক চালচলনে, অত্যধিক শরীরচর্চা, বেশি খাওয়াদাওয়া করা বা কম পরিমাণ খাদ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে।
উদ্বেগ
চরিত্রগত বা ব্যক্তিত্বের সমস্যা, যেমন কেউ অতিরিক্ত নিখুঁত হতে চেষ্টা করে। এর ফলে সৃষ্টি হয় মানসিক উদ্বেগজনিত বিকার।

চিকিৎসা

বিডিডির চিকিৎসায় অনেক পদ্ধতির ব্যবহার লক্ষ করা যায়। যদিও সমস্যা গুরুতর আকার নিয়ে মানুষকে অবসাদ বা আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দেয়। চিকিৎসার প্রথম ধাপ হিসেবে যথাযথ ওষুধ প্রয়োগ একান্ত জরুরি। আরেকটি কার্যকরী পদ্ধতি হলো কগনিটিভ বিহেভিয়ারেবল থেরাপি বা সিবিটি।

এই কৌশলের মাধ্যমে ত্রুটিপূর্ণ শারীরিক গঠনের বদ্ধমূল বিশ্বাসকে লঘু, ভাঙার বা বদল করার চেষ্টা করা হয়। এই দুটি কৌশলেরই লক্ষ্য হলো আক্রান্ত ব্যক্তির সামাজিক এবং সর্বাঙ্গীণ কার্যকলাপকে উন্নত করা। এ ধরনের রোগ নিরাময়ে রয়েছে উপযুক্ত চিকিৎসা এবং আমাদের দেশেই তা দেওয়া সম্ভব।

সিবিটি (কগনিটিভ বিহেভিয়ারেবল থেরাপি)
রোগীর চিন্তার ত্রুটি বের করে তা ঠিক করতে দীর্ঘমেয়াদি সাইকোথেরাপি দেওয়া হয়।
সাইকো এডুকেশন
রোগী ও তার পরিবারকে বডি ডিসমরফিক ডিসঅর্ডার সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান দেওয়া। সাইকোথেরাপি ও ওষুধের ভূমিকা এবং উপকারিতা ও পরিণতি বোঝানো হয়।

ফ্যামিলি থেরাপি
সাপোর্টিভ সাইকোথেরাপি ইত্যাদির মাধ্যমেও রোগীকে সুস্থ করে তোলা যায়। এ ছাড়া রয়েছে শিথিলায়ন বা রিলাক্সেশন ট্রেনিং। তবে ওষুধ ও সাইকোথেরাপি দুটো চিকিৎসা একসঙ্গে দেওয়া সম্ভব হলে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।

লেখা : রোদসী ডেস্ক

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
দেহ ও মনপ্যারেন্টিংভালো থাকার ভালো খাবারসুস্থ মন

শিশু কিছু খেতে চায় না

করেছে Wazedur Rahman মে ৩, ২০২০

একটি শিশুকে তিলে তিলে বড় করতে হলে বাবা-মাকে কত দায়িত্বই যে পালন করতে হয়, তা হিসাব করে শেষ করা যাবে না। শুধু দায়িত্ব পালনেই শেষ নয়, রীতিমতো মানসিক যন্ত্রণাও ভোগ করতে হয় কখনো কখনো। আর এই মানসিক যন্ত্রণাদায়ক ব্যাপারগুলোর মধ্যে একেবারে অন্যতম হচ্ছে শিশুর খেতে না চাওয়ার বায়না। ডা. তানজিনা আল্-মিজান।

শিশু কিছু খেতে চায় না এই সমস্যাটি যেন এখন একেবারে নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাবা-মায়ের এই নালিশ এখন খুবই চেনা। কিন্তু বাচ্চা কিছু খেতে চাচ্ছে না অথবা খায় না এই সমস্যাটির সমাধান করার আগে জানতে হবে তার কারণ। অর্থাৎ তার কোনো শারীরিক সমস্যার জন্য খেতে চাচ্ছে না নাকি বাবা-মায়ের অতিরিক্ত সচেতনতার ফলাফল এই না খেতে চাওয়া।

প্রথমেই মনে রাখতে হবে প্রত্যেক বাচ্চাই আলাদা। অনেকে একেবারে বেশি পরিমাণ খেতে পারে, অনেকে আবার বারবার অল্প পরিমাণ খেতে পারে। তাই অন্যের সঙ্গে তুলনা করে বাচ্চা কতটা খাবে, সেটা ঠিক করা বন্ধ করতে হবে।

কোনো বাবা-মায়ের যদি মনে হয় বাচ্চা কম খাচ্ছে বা কিছু খেতে চাচ্ছে না, তাহলে অবশ্যই শিশু ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। তবে কিছু বিষয় লক্ষ করতে হবে। যেমন, বাচ্চাদের বয়সের সঙ্গে ওজনের একটা সামঞ্জস্য থাকতে হয়। যদি সেটা ঠিক থাকে তাহলে অযথা চিন্তা করার দরকার নেই। আবার বাচ্চার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার উচ্চতা, স্বাভাবিক বুদ্ধিমত্তা এবং বাচ্চা প্লে ফুল কি না সেটাও খুবই জরুরি বিষয়। এগুলো যদি ঠিক থাকে, তবে বুঝতে হবে বাচ্চার শারীরিক সমস্যা নেই এবং তার খাবারের চাহিদা পূরণ হচ্ছে।

 

আমাদের দেশের মানুষজন খুব সহজেই কৃমির দ্বারা আক্রান্ত হয়। কাজেই নির্দিষ্ট সময় পরপর ও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটিতে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, বাচ্চারা মাঠে ধুলাবালিতে খেলাধুলা করে। কাজেই বাচ্চাদের কৃমি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কৃমির আক্রমণের কারণে শিশুর খাবারে অরুচি হয়।

আবার কৃমি হলে বাচ্চাদের রক্তশূন্যতা দেখা দেয় এবং খাদ্যের অরুচির জন্য শিশুদের ভিটামিনের অভাবও হয়। এই আয়রন ও ভিটামিনের অভাব হলে বাচ্চাদের মেজাজ খিটখিটে হয় এবং শিশু কিছু খেতে চায় না। বিরক্ত করে।

শিশুর পেট যখন দীর্ঘ সময় খালি থাকবে অথবা এটা-সেটা খাবে, তখন পেটে গ্যাস তৈরি হবে। ফলে বাচ্চা খেতে চাইবে না। এই ডিজিটাল যুগে বাচ্চাদের জাংক ফুড আসক্তি এখন তুঙ্গে। আর এই জাংক ফুড অর্থাৎ চিপস, বার্গার, চকলেট এগুলো ক্ষুধামন্দা করার অন্যতম চাবি। কাজেই এগুলো থেকে বাচ্চাদের যত দূর সম্ভব দূরে রাখতে হবে।

আরেকটি ব্যাপারে খুব গুরুত্ব দিতে হবে, আর সেটি হলো বাচ্চার খাদ্য রুটিন। প্রতিদিন পোলাও দিলেও কিন্তু আমাদের ভালো লাগবে না। অর্থাৎ একই খাবার প্রতিদিন দিলে সে বিরক্ত হতে বাধ্য। বাচ্চার খাবারের একটি প্ল্যান করতে পারলে সবচেয়ে ভালো। বাচ্চাদের রোজ একধরনের খাবার না দিয়ে মাঝেমধ্যে একটু বদলে দিতে হবে। ব্রেকফাস্ট সারা দিনের সবচেয়ে জরুরি খাবার। মনে রাখতে হবে বাচ্চার ব্রেকফাস্ট যেন হেভি ও স্বাস্থ্যসম্মত হয়। কার্বহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট এগুলো যেন সকালের নাশতায় থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

 

বিকেলে একদিন সবজির স্যুপ দিলে অন্য দিন বিস্কুট দিলেই বাচ্চার খাবারের ইচ্ছা তৈরি হবে অর্থাৎ মনোটোনাস ভাব যেন না আসে। উইনিংয়ের সময় অর্থাৎ ছয় মাস পার হলেই কিন্তু মনে রাখতে হবে, তখন বাচ্চা আর দুই ঘণ্টা পরপর খাবে না। কারণ, তখন সে বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবারও খাচ্ছে। কাজেই তখন যদি বাবা-মা দুই ঘণ্টা অন্তর বাচ্চাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করেন তাহলে শিশু কিন্তু খেতে চাইবে না এটাই স্বাভাবিক। এই সময় বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময় বাড়াতে হবে এবং বাড়ির খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে। বাচ্চার খাবার মানেই একেবারে ট্যালটালে বা সেদ্ধ খাবার বানাতে হবে তার মানে নেই। বাড়িতে তৈরি পরিষ্কারভাবে তৈরি হলেই যথেষ্ট।

বাচ্চাদের সব সময় আলাদা করে খেতে দিতে হবে এমন নয়। বাড়ির অন্য সদস্যদের সঙ্গে খেতে দিলে বাচ্চারা ভালো খায়। সব সময় বাচ্চাকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর খেতে দিলে বাচ্চা খেতে চাইবে না। বাচ্চা কোনো খাবার খেতে না চাইলে জোর না করে তখন খাওয়ানো বন্ধ রেখে কিছুক্ষণ পর খাওয়ালে বরং সে খাবে।

অনেক সময় সে কি খেতে চায় এসব তার কাছে শুনে নিয়েই মেনু তৈরি করা যেতে পারে। বাচ্চা মেইন মিলের পূর্বে কোনো স্ন্যাকস যেন না খায় সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। আস্তে আস্তে বড়দের ফিডিং প্যাটার্নেই বাচ্চাদের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে ভালো।

এই দিকগুলো খেয়াল করতে পারলে শিশু কিছু খেতে চায় না এই অতিপরিচিত সমস্যার সমাধান অনেকাংশেই হবে। যদি এরপরও সমস্যা মনে হয় তবে শিশু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। কোনোভাবেই শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে অবহেলা করা যাবে না।

লেখা: রোদসী ডেস্ক

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
দেহ ও মনরোমান্সরোমান্স রসায়নসুস্থ মন

বন্ধুত্ব থেকে প্রেম, তারপর?

করেছে Wazedur Rahman এপ্রিল ২৩, ২০২০

মানুষের একটি বিশ্বাস রয়েছে যে সবচেয়ে কাছের বন্ধুরা একে অপরের প্রেমে পড়লে তারা সেরা জুটি হয়, আবার অনেকেই পরামর্শ দেন যে সবচেয়ে কাছের বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক না জড়ানোই ভালো। কী যে ভালো আর কী মন্দ সঠিকভাবে বলা কঠিন। তবু বলার চেষ্টা।

একবার যদি ভালোবাসা আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তাহলে ভালোবাসার পাশাপাশি বন্ধুত্বটাও নষ্ট হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বলেছেন, প্রেমের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের পরিচিতজনকে (বন্ধু) অন্যের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় মনে হতে পারে। এই পরিচিতজনকে প্রেমের সঙ্গী হিসেবে বেছে নিলে সম্পর্ক ভালো হয়।

নিরাপত্তাবোধ থেকে কাছে আসা

যে কোনো সমর্থন, সমর্পণে যার কাছে যাওয়া যায়, সেই তো বন্ধু। ছোটবেলা থেকেই যদি একসঙ্গে বড় হয় দুজন, তাহলে বোঝাপড়াটা অনেক মজবুত থাকে। সে ক্ষেত্রে নতুন একটা সম্পর্কের শুরুতে দুজনেই মানসিকভাবে যথেষ্ট নিরাপদ বোধ করে।

বন্ধুত্ব থেকে প্রেম না হলে যার কাছে গেলেই সব শান্তি হতো তখন তার কাছে গেলেই কষ্ট পাওয়ার ভয়ে সম্পর্ক পরিণত হয় এড়িয়ে যাওয়ার। অনেক ক্ষেত্রেই অনেক বন্ধু তার সেরা বন্ধুর কাছে প্রেমের আহ্বান আশা করে না সে ক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যানের মতো ব্যাপার ঘটে থাকে। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম হলে পুরো প্রেম পর্বটাই থাকে জমজমাট। সাধারণত পড়াশোনা চলাকালীন সময়টার অনিশ্চয়তা, চতুর্মুখী চাপের সময়টায় বন্ধুত্বের পাশাপাশি প্রেমের এই অনুভূতিটুকু পারস্পরিক প্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়।

আর যদি প্রেমটাই না হয়

সহজ, স্বাভাবিক বন্ধুত্বে নেমে আসা কঠিন হয়ে যায়। বন্ধুত্বে ফিরে আসা কঠিন হয়ে যায়। এটুকু মনে রাখা যায়, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যাখ্যা গভীরভাবে চমৎকার,

বন্ধুত্ব ক্রমশ পরিবর্তিত হইয়া ভালোবাসায় উপনীত হইতে পারে, কিন্তু ভালোবাসা নামিয়া অবশেষে বন্ধুত্বে আসিয়া ঠেকিতে পারে না। একবার যাহাকে ভালোবাসিয়াছি, হয় তাহাকে ভালোবাসিব নয় ভালোবাসিব না; কিন্তু একবার যাহার সঙ্গে বন্ধুত্ব হইয়াছে, ক্রমে তাহার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপিত হইতে আটক নাই।

সুতরাং একজন আরেকজনকে প্রপোজ করার আগে, আকার-ইঙ্গিত সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিয়ে প্রপোজ করা উচিত। যদি পজিটিভ মনে না হয়, তবে বন্ধু হয়েই থাক না।

ভালো-মন্দে

বন্ধুত্ব থেকে প্রেম অতঃপর বিয়েতে গড়ালে নতুন করে নিজেকে চেনানোর ব্যাপারগুলো থাকে না। একজন আরেক জনের পছন্দ, অভ্যাস, অন্যভস্ততা, রুচির ব্যাপারগুলো পরিচিত থাকায় নতুন করে আর মানিয়ে নিতে কষ্ট হয় না।

কতটুকু সফল

টানাপোড়েন এ সম্পর্কের মাধুর্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একই ক্লাসে একই বিষয়ে পড়াশোনা করে একই পেশায় ক্যারিয়ার গঠন বা একই সঙ্গে উচ্চতর পড়াশোনায় যারা আছে তাদের জীবন সম্পর্কে জানা যায় বিয়ের আগে বেশির ভাগেরই বন্ধুত্ব থেকে প্রেমের পর সম্পর্ক বিয়েতে গড়িয়েছে।

স্বস্তিদায়ক হয় এই সম্পর্কগুলো? যদিও ‘The secret of a happy marriage remains secret’। তারপরও বিপরীত গল্প তৈরি হয়। খুব আবেগপ্রবণ ভালোবাসাই যে সফল দাম্পত্য জীবন নিশ্চিত করে, ব্যাপারটি তা হয়ে ওঠে না।

শুধু ভালোবাসার অভাব নয় বিয়ের পর বন্ধুত্বের অভাবই অসুখী দাম্পত্য জীবনের একটি কারণ হতে পারে। তাই বিবাহিত জীবন স্বস্তিদায়ক ভালোবাসার চেয়েও অন্যান্য যে কটি উপাদান গুরুত্বপূর্ণ ‘বন্ধুত্ব’ তার মাঝে একটি।

এমনটিও ঘটে থাকে, এমন জুটি রয়েছে কখনোই বন্ধু ছিল না বা দীর্ঘদিনের পরিচিতও নয়, তারা একে অপরের প্রতি দুর্বল হয়েছে স্বল্প সাক্ষাতেই, প্রথমেই বন্ধুত্বে পরিণত হয় না এই সম্পর্ক। জানাশোনা বাড়ার পাশাপাশি ধীরে ধীরে এই আকর্ষণ বাড়তে থাকে, ভালোবাসার বন্ধনটাও মজবুত হয়, তারপর তারা আবিষ্কার করে যে তারা একে অপরের ভালো বন্ধুও। এই আবিষ্কার একসঙ্গে চলার জীবনের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো সহজতর করে তোলে।

আসলেই কি রোমান্স কমে যায়?

অনেকেই ভাবে, বন্ধু যদি জীবনসঙ্গী হয় তাহলে রোমান্স একটু কমে যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এটাও বলা যায় যে একটা সম্পর্কের সফলতা কেবল রোমান্সের ওপরই নির্ভর করে না। একটি সফল সম্পর্কের আরও অনেক উপাদান রয়েছে, যেগুলো সম্পর্ককে সুন্দর ও আনন্দের করে তুলতে সর্বোপরি এ কথাই সবচেয়ে বড় সত্য যে সঙ্গী একই সঙ্গে কখনো বন্ধু, কখনো জীবনসঙ্গী, কখনো ভালোবাসার মানুষ। সবচেয়ে বেশি মনোযোগ, সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা পাওয়ার আশা সে-ই করতে পারে।

আরবি ভাষার বিশ্বখ্যাত কবি, দার্শনিক, চিত্রশিল্পী কাহলিল জিবরান ‘যা তোমার সর্বোৎকৃষ্ট’ তাই বন্ধুকে দিতে বলেছেন। আর জীবনসঙ্গী যদি হয় বন্ধু তবে তুমিই তার জন্য বড় উপহার। আর সেও তোমার জীবনে সর্বোৎকৃষ্ট কেউ।

 

লেখা: তাসনুভা রাইসা 
ছবি: সংগ্রহীত 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ওয়েডিং ডেস্টিনেশন

তুমিই রোদসী

  • স্বপ্ন দেখি নারী দিবসের দরকারই হবে না







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook