রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

সুস্থ মন

দেহ ও মনরোমান্সরোমান্স রসায়নসুস্থ মন

প্রেম কি কেবলি শরীরের চাহিদা?

করেছে Wazedur Rahman এপ্রিল ২২, ২০২০

পড়াশোনা, তারপর চাকরি নামক সোনার হরিণের পিছু পিছু দৌড়। কেউ নিজের প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত। শেষে বিয়েটাই পিছিয়ে যায়। কেউ বিয়ে করেন ২০ থেকে ৩০-এর কোঠায় আবার কেউ দ্বিধায় পড়েন। কিন্তু মন, দিন শেষে নির্ভরতা খোঁজে, ভালোবাসা খোঁজে। প্রেমের সম্পর্ককে এড়িয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। প্রেম কখনো কখনো গড়ায় লিভ টুগেদার পর্যন্ত। কথায় আছে, একটা মিথ্যা কথা ঢাকতে হাজারটা মিথ্যা বলতে হয়। লিভ টুগেদার এমন একটা বিষয়, দুজন মানুষকে ঠেলে দেয় অনিশ্চয়তা আর ভীত অবস্থার দিকে। তবু তো থেমে থাকছে না এই মোহময় হাতছানি, এই রক্তরাগ এই সর্বনাশ!

সায়েম (ছদ্মনাম) বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স পড়ার পাশাপাশি একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে পার্টটাইম চাকরি করছে। ক্লাসফ্রেন্ড রত্নার সঙ্গে তিন বছর প্রেম করার পর তারা রাজধানীতে একটি ছোট্ট বাসায় বসবাস শুরু করে। এরপর সন্তান ধারণ করে রত্না। তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকে। শেষে অ্যাবরশন করার সিদ্ধান্ত নেয়।

বন্যা (ছদ্মনাম) একটি প্রাইভেট স্কুলে শিক্ষকতা করে। প্রেম হয় স্কুলের সিনিয়র শিক্ষকের সঙ্গে। বিয়ে করার কথা ছিল দুজনের। সেই আশ্বাস থেকে বন্যা রনকের সঙ্গে ট্যুরে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে আসার কিছুদিন পরে রনকের আচরণ পুরোপুরি পাল্টে যায়। এরপর বন্যার মনে বাসা বাঁধে অন্য আতঙ্ক। নিজ থেকে চাকরিটা ছেড়ে দেয় বন্যা।

মিলনের নিকটাত্মীয় সামিয়া (ছদ্মনাম)। সামিয়া মফস্বল ছেড়ে রাজধানীতে আসে কোচিং করতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে। শহরে আসার পর নিয়মিত যোগাযোগ হয় মিলনের সঙ্গে। তারপর প্রেম। মিলন একদিন বলে একটি অ্যাডাল্ট সম্পর্কে যা যা হয়, এই সম্পর্কেও তাই তাই হবে। পরিণতি কত ভয়ংকর হবে বুঝতে পারে সামিয়া। কিন্তু মিলনকে এড়িয়ে যাওয়ার পথ সে খুঁজে পায় না। ধ্যানে-জ্ঞানে মিলন। মিলনের উপস্থিতি মানে সামিয়ার ভালো লাগা। ছাত্রী হোস্টেলে থাকত সামিয়া। সন্ধ্যার পর হোস্টেল থেকে বের হওয়া নিষেধ। বাইরে থাকলে রাত আটটার পর হোস্টেলে প্রবেশ করার নিষেধ।

কোচিং শেষ করে মিলনের সঙ্গে দেখা করত সামিয়া। ফিরে আসত রাত আটটার আগেই। এক রাতে ফেরা হলো না তার। হোস্টেলে ফোন করে জানিয়ে দিল জরুরি প্রয়োজনে বাড়ি গেছে। এই কথার সত্যতা প্রমাণ দেওয়ার জন্য টানা তিন দিন হোস্টেলে ফেরেনি সামিয়া। মিলনের সঙ্গে তার বাসায় ছিল। তিন দিন পর হোস্টেলে ফেরে সামিয়া। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। পড়ালেখায় আগ্রহ হারায়। বিষণ্নতা-হতাশা গ্রাস করতে থাকে সামিয়াকে।

বিয়ে করতে আগ্রহী ছিল না মিথিলা (ছদ্মনাম)। বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে। বিয়েভীতি ছিল। ভয় ছিল চাকরি হারানোরও। যদি চাকরিটা ছেড়ে দিতে হয়। যদি পরিবারের দায়িত্ব নিতে না পারে; সে ভয়ও ছিল মিথিলার। বাবা-মাকে রাখতে চেয়েছিল নিজের কাছে। কিন্তু বাবা-মায়ের সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। একসময় বিয়ে করতে রাজি হয় মিথিলা। কিন্তু বয়সের দোহাই দিয়ে বিয়ে ভেঙে যেতে থাকে। দিন শেষে সে যে ঘরে ফিরে যায়, সে ঘরে একা।

একাকিত্ব গ্রাস করছিল মিথিলাকে। নিজের ভালো থাকা-মন্দ থাকার গল্প যার সঙ্গে শেয়ার করত, একদিন তার সঙ্গেই সম্পর্ক গড়ে ওঠে মিথিলার। কিন্তু সে বিবাহিত। ঘর বাঁধতে হলে আরেকজনের ঘর ভাঙতে হবে। নীরব স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে মিথিলার সঙ্গে ঘর বাঁধতে রাজিও হয়। কিন্তু নীরবের স্ত্রী একদিন হাজির হয় মিথিলার অফিসে। মিথিলার বসের কাছে বিচার দেয়। ক্ষমা চাইতে হয় মিথিলাকে।

সমাজ বিশ্লেষকেরা মনে করেন, লিভ টুগেদার সম্পর্কে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এই সম্পর্কের জের ধরে অনেকেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

এই প্রযুক্তি প্রসারের যুগে আমাদের হাতের মুঠোই ফোন। হাই রেজল্যুশন ক্যামেরাযুক্ত ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যাও কম নয়। অনেক সময় হাতে থাকা এই ক্যামেরাটি রোমান্টিক মুহূর্তবন্দী করার কাজেও ব্যবহার করা হয়। কিন্তু গোপনীয়তার সীমা অতিক্রম করে সেই রোমান্টিক মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও যখন ছড়িয়ে পড়ে নেট দুনিয়ায়, তখন সামাজিকভাবে হেয় হয় ভিকটিম ও তার পরিবার।

একটি প্রশ্ন

আমরা কি শুধু নিজের জন্য নিজে? তা তো নয়। আমাদের সামাজিক মর্যাদার সঙ্গে মিশে থাকে পরিবারের সামাজিক মর্যাদা। তাই বিয়ের সম্পর্ক যে মানুষটির সঙ্গে নেই, যে মানুষটি সামাজিক ও আইনিভাবে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে দায়বদ্ধ নয়; তার সঙ্গে অন্তরঙ্গ হওয়ার আগে যেন প্রিয় মানুষগুলোর মর্যাদার কথা ভুলে না যাই।

কী হচ্ছে

  • বিয়েবহির্ভূত লিভ টুগেদার
  • দূরে ট্যুর
  • ভ্রণ হত্যা
  • হত্যাকাণ্ড
  • সাইবার ক্রাইম
  • নারীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত

কেন হচ্ছে এমন

  • পরিবার থেকে দূরে থাকা
  • অর্থনৈতিক মুক্তি
  • দেরিতে বিয়ে

লেখা: রোদসী ডেস্ক 
ছবি: সংগ্রহীত 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
দেহ ও মনভালো থাকার ভালো খাবারসুস্থ মন

সাত দিনের ক্রাশ ডায়েট প্ল্যান

করেছে Wazedur Rahman এপ্রিল ৯, ২০২০

মাত্র সাত দিনে ওজন কমানোর কার্যকরী উপায় হলো ক্রাশ ডায়েট। স্টাইলক্রেজ অবলম্বনে সাত দিনের একটি ক্রাশ ডায়েট চার্ট রোদসীর পাঠকদের জন্য।

প্রথম দিন

প্রথম দিনের খাদ্যতালিকায় যে কোনো ধরনের ফল রাখতে পারো। প্রাধান্য দিতে পারো তরমুজ, আপেল, কমলায়। তবে কলা খাওয়া যাবে না। সারা দিনে ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

দ্বিতীয় দিন

সেদ্ধ করা আলু, তেল ছাড়া রান্না করা সবজি খেতে হবে দ্বিতীয় দিন। সবজির তালিকায় থাকতে পারে গাজর, শিমের বিচি, টমেটো। ক্রাশ ডায়েট চলাকালীন দ্বিতীয় দিন কোনো ধরনের ফল খাওয়া যাবে না। সারা দিনে পান করতে হবে ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি।

তৃতীয় দিন

কলা ছাড়া যে কোনো ধরনের ফল, তেল ছাড়া রান্না অথবা কাঁচা সবজি খেতে হবে। কেবল একটি ধরনের ফল বা সবজি না হলে কয়েক রকম ফল আর কয়েক রকম সবজি খেতে পারলে ভালো। সারা দিনে ন্যূনতম ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

চতুর্থ দিন

চতুর্থ দিনে ৮ থেকে ১০টি কলা এবং চার গ্লাস দুধ খেতে হবে। সারা দিনে ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

পঞ্চম দিন

ছয়টি টমেটো, টমেটোর স্যুপ এবং এক কাপ ব্রাউন রাইস খেতে হবে পঞ্চম দিনে। সারা দিনে পান করতে হবে ১২ থেকে ১৫ গ্লাস পানি। পঞ্চম দিনে আলু খাদ্যতালিকায় রাখা যাবে না।

ষষ্ঠ দিন

এক কাপ ব্রাউন রাইস। কাঁচা সবজি বা তেল ছাড়া রান্না সবজি সারা দিনে খেতে হবে। দিনে ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

সপ্তম দিন

এক কাপ ব্রাউন রাইস, যে কোনো ধরনের সবজি, যে কোনো ধরনের ফলের জুস খেতে হবে ক্রাশ ডায়েটের সপ্তম দিনে।

 

লেখা: রোদসী ডেস্ক 
ছবি: সংগ্রহীত 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়দেহ ও মনবিশেষ রচনারোদসীর পছন্দসচেতনতাসুস্থ মন

চল্লিশের বিষণ্নতা

করেছে Wazedur Rahman এপ্রিল ৮, ২০২০

বয়স হওয়া মানেই কিন্তু বুড়িয়ে যাওয়া নয়। নয় জীবনের ফুলস্টপ। বরং এই চল্লিশ থেকেই শুরু হয় জীবনের এক নতুন অধ্যায়। আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে আর এই ধাপে ধাপে পরিবর্তিত আমিকে ভালোবেসে শুরু করতে হবে নতুন জার্নি। আর এই জার্নি যে খুব কঠিন তা-ও কিন্তু নয়। শুধু নিজেকে একটু গুছিয়ে নেওয়া। নানা কারণে মনে বাসা বাঁধা বিষণ্নতাকে বাই বাই জানানোর সময়ও এটা।

সময়কে ধরে রাখা যায় না। মনে হয় এই তো কিছুদিন আগে খুব সুন্দর করে সেজেগুজে ঝলমলে হয়ে কলেজ অথবা ভার্সিটি ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়িয়েছ। নিজেকে প্যাম্পার করতে যেমন সময় ব্যয় করেছ, তেমনি মানুষের সুন্দর কমপ্লিমেন্টও পেয়েছ। কিন্তু এখন আয়নার সামনে দাঁড়ালেই কেমন যেন মনটা ভরতে চায় না নিজেকে দেখে। সহজেই চোখে পড়ে চোখের নিচে, ঠোঁটের কোনায় হালকা বলিরেখা। চুলেও দেখা দিয়েছে রুপালি রেখা।

মাঝেমধ্যেই হাড়ের মধ্যে ব্যথা, ঘুমের সমস্যা, ভুলে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হওয়া অর্থাৎ ‘সায়েন্স অব এজিং’ যেন দরজায় এসে কড়া নাড়ছে। সত্যিই কি তাহলে বয়সের কবলে পড়ে গেলে! এসব মনে হতেই একরাশ বিষাদ এসে ছেঁকে ধরে। আর যেসব কারণে এই চল্লিশ বছর বয়সে পা দিয়ে একজন মানুষ বিষণ্নতায় ভোগে তা হলো খুব কাছের মানুষটির চোখে নিজেকে আগের মতো লাগছে কি না এই চিন্তা। আর এটিই মনে হয় অন্য সব চিন্তার চেয়ে বেশি ভোগায়।

এই চল্লিশে এসে আরেকটি চিন্তা নিজেকে একটু একটু করে বিষণ্নতার দিকে ঠেলে দেয় তা হলো মেনোপজ। আমরা সবাই এই ডিজিটাল যুগে মেনোপজ সম্পর্কে কমবেশি অবগত। ঋতুস্রাব, যা প্রতি মাসের একটি রুটিন ছিল তা হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেলে মনে হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক যে আমি বুঝি শেষ! একদম বুড়িয়ে গেছি। আমাকে দিয়ে আর কিছু হবে না। মেনোপজের সঙ্গে সঙ্গে হরমোনের যে বিশাল পরিবর্তন হয়, তা শরীরের ও মনের অনেক পরিবর্তন করে। এর মধ্যে চামড়ার চকচকে ভাব কমে যাওয়া, চুল পড়ে যাওয়া, অতিরিক্ত গরম বা শীত অনুভূত হওয়া, স্মরণশক্তি হ্রাস পাওয়া, শারীরিক চাহিদা কমে যাওয়ার মতো ঘটনাগুলো ঘটতে থাকে।

ইনসিকিউরিটি বোধ

পরিবারের কনিষ্ঠ কাউকে তার নিজের ব্যাপারে ব্যস্ত থাকতে দেখলেও এই বয়সে এসে নিজের গুরুত্ব নিয়ে মনে হাজারো চিন্তা আসে। এতদিন পরিবারে তোমার সিদ্ধান্তকেই সবাই শেষ সমাধান হিসেবে মেনে নিত। কিন্তু এখন মাঝেমধ্যে যখন সন্তানদের সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে হয় তখন নিজের জন্য একটা ইনসিকিউরিটি বোধ কাজ করে, যা থেকে জন্ম নেয় অবসাদ। আরেকটি ভয় এই বয়সী মানুষের মধ্যে খুব দেখা যায়, তা হলো অন্যের ওপর শারীরিক নির্ভরতা। অর্থাৎ মনে চিন্তা আসে বারবার যে এমন কোনো বড় অসুখ হবে না তো যে অন্যের ওপর নির্ভর করতে হবে?

আরও কিছু সমস্যা

  • হাই ব্লাডপ্রেশার
  • ডায়াবেটিস
  • শ্বাসকষ্ট
  • হাড়ের গিঁটে গিঁটে ব্যথা

এগুলো খুবই কমন, তাই এই ভয় মনে আসাটাও খুব স্বাভাবিক। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন এটাই তো জীবনের চিরন্তন সত্যি। কথায় আছে না, ‘চেঞ্জ ইজ দ্য অনলি কনস্ট্যান্ট ইন লাইফ।’ বয়সের সঙ্গে প্রকৃতির নিয়মে মানুষ বদলাবেই। আর এই প্রতিনিয়ত বদলে যাওয়া ‘আমিকে’ মেনে নিয়েই তো নতুন করে বাঁচতে শিখতে হবে।

প্রয়োজন নতুন রুটিন

নিজের চেহারায় যে পরিবর্তন এসেছে তাকে দেখে ভয় না পেয়ে, হতাশ না হয়ে বরং নিজের সৌন্দর্যকে ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। রুটিন করে আগের মতো নিজের ত্বকের যত্ন করা অর্থাৎ ক্লিনিং, টোনিং, ময়শ্চারাইজিং করা যাতে ত্বকের জেল্লা ফুটে ওঠে।

বয়স হয়েছে বলে পারলারে যাওয়া যাবে না, ছেলেমেয়েরা বড় হয়েছে তারা কী বলবে? এসব চিন্তাকে পাত্তা না দিয়ে মাসে একবার হলেও পারলারে যাও। সেখানে মুখের সঙ্গে সঙ্গে চুলেরও যত্ন নাও। হাত পায়ের যত্ন নাও। এভাবে নিজেকে প্যাম্পার করলে দেখবে তোমার সৌন্দর্য অবশ্যই বেরিয়ে আসবে। তোমাকে টিনএজারদের মতো না দেখাক সমস্যা নেই। কারণ, প্রত্যেক বয়সেরই একটি সৌন্দর্য আছে। তুমি সেটাকেই ঠিকমতো বহন করো। দেখবে হতাশা তোমার থেকে অনেক দূরে পালিয়ে গেছে। নিজের বয়সের ধরন অনুযায়ী সুন্দর পোশাক পরে তবেই বাইরে যাবে। এতে করে মানুষ ভালো কমপ্লিমেন্ট দেবে, যার ফলে তোমার সঙ্গে সঙ্গে তোমার সবচেয়ে কাছের মানুষটিও দেখবে ভালো বোধ করবে।

অনেক কিছু মেনে নেওয়ার মানসিক প্রস্তুতি

কার্যক্ষেত্রে তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হতে পারে। ছেলেমেয়েরা নিজের ব্যাপারে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে, এ রকম সুযোগ করে দিলে ওরাও স্পেস পাবে। যার ফলে ওরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। সন্তানদের ব্যস্ততা বাড়বেই। তাদেরও পৃথক সংসার হবে। এগুলোকে বুঝলেই আর নিজেকে নিয়ে একাকিত্ব বা ইনসিকিউরিটির চিন্তা আসবে না।

এই প্রযুক্তিনির্ভর যুগে মানুষ চাইলেই বয়স অনুযায়ী শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের ধারা, কী কী রোগ হতে পারে আর কীভাবে সেগুলো থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় তা সহজেই জানতে পারে। এগুলো সম্পর্কে জানলে আর হতাশা স্থান পাবে না। নিজের ওজনকে কমিয়ে ফেলে, মেনোপজের জন্য যে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয় এগুলো সম্পর্কে জেনে সেগুলোকে মেনে নিলেই মনে হতাশা স্থান পাবে না।

জানতে হবে

নিয়মিত রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করে শরীরে কোনো অসুখ আছে কি না জানতে হবে। হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিসের সমস্যা ধরা পড়লে আগেভাগেই এগুলোর ব্যাপারে সচেতন হতে পারলে রোগের প্রকোপ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। এর ফলে কারও ওপর বোঝা হওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।

বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ না রেখে তাদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে আড্ডা দিতে হবে। মাঝেমধ্যে বেড়াতে যেতে হবে। এতে মন প্রফুল্ল থাকবে। ভবিষ্যতের জন্য সুন্দরমতো সবকিছুর পরিকল্পনা করে রাখো। এই চল্লিশ বছর বয়সই হচ্ছে এই পরিকল্পনার জন্য আদর্শ সময়। এতে নিজের খুঁটি মজবুত থাকবে। আর তুমিও নিশ্চিন্ত থাকবে। নিজের খাওয়াদাওয়া অর্থাৎ ফ্যাটি খাবার এড়িয়ে চলা, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, বয়স অনুযায়ী এক্সারসাইজ করা ও পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা এসব দিক ঠিক রাখলেও তুমি অনেক ভালো থাকবে।

তাই বয়স বাড়ুক আনন্দে। এক একটা বছর আসবে যাবে, সমৃদ্ধ হবে আমাদের অভিজ্ঞতার ঝুলি। উন্নত হবে চেতনার স্তর। সেটাই কি বাড়তি পাওনা নয়?

লেখা: ডা. তানজিলা আল্-মিজান

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
চলন বলনজীবনজীবনযাত্রাদেহ ও মনপ্যারেন্টিংসচেতনতাসুস্থ মন

পেডোফিলিয়া

করেছে Wazedur Rahman এপ্রিল ৭, ২০২০

ক্লাস ওয়ান পড়ুয়া মেয়েটি টিচারের কাছে পড়তে যেতে চাচ্ছে না। তার অভিযোগ টিচার তাকে ব্যথা দেয়। বাবা-মা ধমক দিয়ে পাঠাল। তারা বলল, ‘এসব তোমার ফাঁকি দেওয়ার ছল!’ চোখ মুছে শিশুটি টিচারের কাছে পড়তে বসল। সে জানে না কেন স্যার তাকে কিছু জায়গায় এভাবে ছোঁয়। গৃহকর্ত্রীর দূরসম্পর্কের ভাই এসেছে বাসায়। দুপুরবেলা তারই হেফাজতে দশ বছরের কাজের মেয়েটিকে রেখে গৃহকর্ত্রী গেছেন শপিংয়ে। লোকটা মেয়েটিকে হুমকি দিল কাউকে কিছু বললে মেরে লাশ বানিয়ে ফেলবে।

সাত বছরের ফুটফুটে ছেলেটাও বুঝতে পারল না চাচ্চু তার সঙ্গে বারবার এমন করছে কেন। চাচ্চু বলেছে এটা একটা সিক্রেট মজার খেলা, কাউকে বলা যাবে না। কিন্তু তার খুব কষ্ট হচ্ছে ব্যথা লাগছে। আম্মু-আব্বুকে কি তার বলা উচিত? যদি তারা বিশ্বাস না করে? ওকেই পচা ভাবে? আচ্ছা, চাচা তো খুব ভালো, তাকে কত কী মজার খেলনা দেয়, কত গল্প করে! বলে দিলে কি চাচা আর কখনো ওকে আদর করবে না? সে কীভাবে বলবে আম্মু-আব্বুকে?

মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে মায়াবতী কন্যাশিশুটি যখন বলে উঠল গ্রামের বাড়ি বেড়াতে এসে তার সঙ্গে কী নির্মম ঘটনাটা ঘটে গেছে, হতভম্ব মা মেয়ের চোখের জল মুছে বললেন, ‘চুপ করে থাকো, কাউকে বলো না!’

কাকে আমরা চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ বলছি?

  • শিশুর গোপন অঙ্গে অনাকাক্সিক্ষত স্পর্শ
  • শিশুকে কারও গোপনাঙ্গ ধরতে বলা
  • শিশুর পর্নো ছবি তোলা
  • শিশুকে পর্নোগ্রাফি দেখানো এবং শিশুর সামনে নগ্ন হওয়া
  • শিশুদের পতিতাবৃত্তিতে ঢোকানো, বাল্যবিবাহ
  • শিশুর সঙ্গে বয়স অনুপযোগী ংবীঁধষ নবযধারড়ৎ নিয়ে আলোচনা
  • শিশুকে ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা করা (যা ছেলে বা মেয়েশিশু যে কারও ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে)
    ইত্যাদি। সুতরাং, কেবল ধর্ষণ নয়, শিশু যৌন নির্যাতন একটি ব্যাপক পরিসরের শব্দ।

পেডোফিলিয়া কী?

পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিরা যখন শিশুদের ওপর যৌনক্রিয়া করে, তাকে পেডোফিলিয়া বলে বা সংক্ষেপে পেডোফিলও বলা হয়। এটা একধরনের যৌনবিকৃতি। এসব ব্যক্তি শিশুদের দেখে তীব্র যৌন উত্তেজনা বোধ করে। ফলে তারা সুযোগ বুঝে শিশুদের ওপর যৌনক্রিয়া করে। এই রোগ পুরুষদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে চল্লিশোর্ধ্ব পুরুষদের মধ্যেই এদের সংখা বেশি। মেয়েদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা যায়, তবে খুব কম। কিংবা মানুষ জানতেই পারে না বা ধরা পড়ে না।

নিগ্রহকারীর তালিকায় প্রায়শ দেখা যায় আত্মীয়স্বজন, শিক্ষক, প্রতিবেশীদের নাম, আরও কিছু নাড়াচাড়া করলে নতুন কিছু অনভিপ্রেত আর গ্লানিকর তথ্যও বের হয়ে আসতে পারে। পেডোফিলিয়ার (চবফড়ঢ়যরষরধ) ধারণাটি আমাদের জন্য নতুন কিছু নয়। শৈশবে প্রাপ্তবয়স্ক আত্মীয় বা প্রতিবেশী দ্বারা যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা আমাদের সমাজে মোটেও বিরল নয়।

 

শিশুর ওপর প্রভাব

মানসিক

বিষণ্নতা, সহিংস আচরণ, আত্মপীড়নমূলক কার্যকলাপ (নিজেকে বিভিন্নভাবে কষ্ট দেওয়া), আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি ও হীনমন্যতা, দুঃস্বপ্ন, অসামাজিক আচরণ, সমবয়সীদের সঙ্গে মিশতে না পারা, হঠাৎ হঠাৎ চমকে ওঠা, আত্মহত্যার প্রবণতা (কিশোর বয়সীদের ক্ষেত্রে), স্বাভাবিক মানসিক বিকাশে বাধা।

শারীরিক

শিশু গুরুতরভাবে আহত হতে পারে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে চিরতরে প্রজননক্ষমতা হারাতে পারে, নিউরোলজিক্যাল ড্যামেজ, দ্রুত ওজন কমে যাওয়া, রাতে বিছানা ভেজানো ইত্যাদি।

কীভাবে একজন নির্যাতনকারীকে চিনবে? কেন কিছু মানুষ এই ঘৃণ্য আচরণটি করে?

বয়স, চেহারা, লিঙ্গ, পেশাভেদে একজন শিশু যৌন নির্যাতনকারী যে কেউ হতে পারে। সুতরাং তাকে চেনা তত সহজ নয়। এরা শিশুদের সঙ্গে খুব সহজে মিশে যেতে পারে। সাধারণত গল্প বলে ও উপহার দিয়ে প্রথমে এরা শিশুদের ভালোবাসা ও বিশ্বাস অর্জন করে নেয়, এরপর নিজেদের উদ্দেশ্য সাধন করে। খুব পরিকল্পিতভাবে এগোয়।

পেডোফিলিয়া এটা একটা সেক্সুয়াল ডিজঅর্ডার। পেডোফিলিয়ার রোগীরা কেবল শিশুদের (যারা এখনো বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছায়নি) প্রতি আসক্ত থাকে। কেন কিছু মানুষ এই ঘৃণ্য আচরণটি করে, এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, যেসব শিশু শৈশবে দীর্ঘ সময় ধরে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল, এদের কেউ কেউ যৌবনে পেডোফাইলে পরিণত হয়।

পেডোফাইলদের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, যেমন : এরা প্রধানত হয় পুরুষ (তবে কদাচিৎ নারীও হতে পারে), সমকামীদের মধ্যেও পেডোফিলিয়ার কিছু লক্ষণ দেখা যায়, প্রাপ্তবয়স্কদের সঙ্গে এদের তেমন সখ্য থাকে না বরং এদের সখ্য থাকে শিশুদের সঙ্গে, এরা শিশুদের সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো আচরণ করে।
এখানে মনে রাখা প্রয়োজন যে সব পেডোফাইল শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন করে না এবং সব শিশু যৌন নির্যাতনকারীই পেডোফাইল নয়।

নির্যাতনকারী শিশুকে সাধারণত যে কথাগুলো বলে

  • এটা তোমার আমার মাঝে একটা ‘সিক্রেট’, কাউকে বলা যাবে না। (বাচ্চারা এতে মনে করে তাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।)
  • আসো আমরা বর-বউ খেলি বা ওই মজার খেলাটা খেলি।
  • তুমি যদি এটা তোমার মাকে-বাবাকে বলে দাও আমি তোমাকে-তাদের মেরে ফেলব।
  • তুমি বলে দিলেও তোমার কথা কেউ বিশ্বাস করবে না।
  • সবাই তোমাকেই খারাপ ভাববে, সবাই তোমাকে ছেড়ে চলে যাবে।
  • তুমি যদি আমার কথামতো কাজ না করো আর কোনো দিন আমি তোমাকে ভালোবাসব না।

তোমার শিশুকে রক্ষার্থে করণীয়

  • কখনো যদি দেখো নিশ্চিতভাবে জানতে পারো কোনো প্রাপ্তবয়স্ক লোক বা মহিলা তোমার শিশুকে ‘আমার বউ’ ‘আমার বর’ বলে সম্বোধন করছে, কঠোরভাবে তাকে নিষেধ করে দেবে।
  • তোমার শিশুকে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতি অস্বাভাবিকভাবে আকৃষ্ট দেখলে তার ব্যাপারে সাবধান হও।
  • কখনো তোমার শিশুকে কারও বাসায় যেতে বা কারও কোলে বসতে, কারও পাশে বসতে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাধ্য করবে না। বরং তার কাছ থেকে অনীহার কারণ জেনে নাও আদর করে। শপিংমলে দোকানের স্টাফদের বদলে নিজেই শিশুকে পোশাক পরা বা ট্রায়াল দেওয়ায় সহায়তা করো।
  • তোমার শিশু যদি মাঠে খেলতে যায়, খেয়াল রাখো সে কাদের সঙ্গে খেলে। মাঠে বড় ছেলেরাও খেলতে যায়, এদের দ্বারাও নির্যাতিত হতে পারে তোমার শিশু। (আমরা হয়তো কল্পনাও করতে পারব না বর্তমানে ঈঝঅ এর প্রণোদনা জোগানোর জন্য ইন্টারনেটে কত জিনিস ছড়িয়ে আছে। ‘শিশু পর্নোগ্রাফি’ খুব অপ্রচলিত কিছু নয় বাংলাদেশে। সমাজে আরও অনেক ‘টিপু কিবরিয়া’ আছে।)
  • তোমার শিশুকে যদি দেখো সে তার বয়সের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ংবীঁধষ নবযধারড়ৎ জানে এবং তার বিভিন্ন গোপনাঙ্গকে বিকৃত/অদ্ভুত নামে (কোনো স্ল্যাং) চিহ্নিত করছে, তাহলে তার কাছ থেকে জেনে নাও সে এগুলো কোথা থেকে শিখেছে। রেগে গিয়ে নয়, ধৈর্যের সঙ্গে জানো। যদি জানার উৎস টিভি বা ইন্টারনেট হয়, দ্রুত উৎসমুখ বন্ধ করো। যদি জানার উৎস কোনো ব্যক্তি হয়, তার সম্পর্কে সাবধান থাকো। তার সঙ্গে শিশুকে কখনো মিশতে দেবে না।
  • গ্রামের বাড়ি বেড়াতে গেলে বা কোনো আত্মীয়ের বাড়ি বেড়াতে গেলে রাতে ঘুমানোর সময় শিশুকে আত্মীয় বা কাজিন এমন কারও সঙ্গে একা একা ঘুমাতে দেবে না। নিজের কাছে রাখো।

নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শিশুকে শেখাও

তোমার শিশুকে বা কিশোর সন্তানকে ধীরে ধীরে তার বয়স উপযোগী ংবীঁধষ বফঁপধঃরড়হ তোমাকেই দিতে হবে, না হলে কেউ তাকে বিকৃত ধারণা দিয়ে তাকে নির্যাতন করার সুযোগ নিতে পারে। একদিনে সব শেখানোর চেষ্টা করবে না।

  • শিশুকে তার প্রত্যেকটি গোপন অঙ্গের নাম জানাও। কোন অঙ্গগুলো প্রকাশ করা যাবে কোনগুলো গোপন রাখতে হবে তার পুরোপুরি জ্ঞান তাকে দিতে হবে। তোমার শিশুকে বোঝাও কোনটি ‘ভালো আদর’ কোনটি ‘মন্দ আদর’। কেউ তাকে ‘ভালো আদর’ করলে কোনো সমস্যা নেই। ‘মন্দ আদর’ করলেই সঙ্গে সঙ্গে বাবা, মা বা বাসার বড় কাউকে জানাতে হবে।
  • তাকে দুহাত ছড়িয়ে দাঁড়াতে বলো। সে যাদের পছন্দ করবে না তাদের যেন কখনো এই ত্রিভুজের মধ্যে আসতে না দেয়।
  • তাকে আরও বলতে পারো তোমার শরীরের তিনটি জায়গা আছে, অনেক বড় বিপদ ঘটতে পারে যদি কেউ এগুলো মন্দভাবে ধরে। তাকে এ-ও বুঝিয়ে বলতে পারো, কখনো কখনো গোসল করিয়ে দেওয়ার সময় মা হয়তো ধরতে পারে। অসুখ হলে বাবা-মায়ের উপস্থিতিতে ডাক্তার ধরতে পারে। ‘ভালো আদর’ করার জন্য কখনো কেউ জড়িয়ে ধরতে পারে। কিন্তু তুমি যখনই বুঝবে কেউ ‘মন্দ আদর’ করার জন্য ধরেছে তাকে জোরে ‘না’ বলতে হবে। যদি সে না শোনে তাহলে চিৎকার দিতে হবে, সে যে-ই হোক না কেন আর তাকে তুমি যতই ভালোবাসো না কেন। সেই জায়গা থেকে সরে নিরাপদ কোনো জায়গায় চলে আসতে হবে। অবশ্যই মা কিংবা বাবা যাকে তুমি সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করো তাকে বলে দিতে হবে। (আইডিয়াটি ‘সত্যমেভ জয়তে’র চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ’ নিয়ে করা এপিসোডের ওয়ার্কশপ থেকে নেওয়া হয়েছে।)
  • তোমার শিশুকে শেখাও যে সিক্রেটের সঙ্গে খারাপ কাজ জড়িয়ে থাকে, সে ‘সিক্রেট’ বলে দিতে হয়, না হলে বিপদ হয়।
  • তাকে বলো, যারা ‘মন্দ আদর’ বা ‘খারাপ আদর’ করবে তারা কখনো ভালো মানুষ নয়, তাদের ভালোবাসা যাবে না।

তোমার শিশুর সবচেয়ে ভালো বন্ধু হও। যেন সে তার সব কথা তোমার সঙ্গে নিঃসঙ্কোচে শেয়ার করতে পারে। তাকে এ কথা জানাও যে তাকে তুমি ভালোবাসো ও বিশ্বাস করো, তুমি সব সময় তাকে সাহায্য করবে। শিশুর স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে পরিচিত হবে। কোন শিক্ষক কেমন, কে তাকে আদর করে, তাকে কী কী দেয়, সে স্কুলে কী কী কওে, গল্পচ্ছলে শিশুর কাছ থেকে জেনে নাও।

ধরো, তোমার শিশু কারও দ্বারা সেক্সুয়ালি অ্যাবিউজড হলো, এখন তোমার করণীয় কী?

  • তোমার শিশু যদি কারও নামে তোমার কাছে নালিশ করে, শিশুকে বিশ্বাস করো। শিশুরা সাধারণত এই ব্যাপারে মিথ্যা বলে না। তুমি অবিশ্বাস করলে ভবিষ্যতে হয়তো আর কখনোই শিশুটি তোমার সঙ্গে শেয়ার করবে না।
  • তোমার শিশুকে এটা বুঝতে দেওয়া যাবে না তার সঙ্গে খুব ভয়ংকর কিছু ঘটে গেছে। তুমি তোমার শিশুর সঙ্গে স্বাভাবিক ব্যবহার করো, অস্থির হয়ে যাবে না।
  • নিয়মিত একজন ভালো শিশু মনোবিজ্ঞানীকে দিয়ে কাউন্সেলিং করাও।
  • শিশুটি যদি খুব গুরুতর নির্যাতনের শিকার হয় তাহলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাও। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও শিশু মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নাও। কখনোই শিশুটিকে বকাবকি করা যাবে না। বরং তাকে আশ্বস্ত করতে হবে যা হয়েছে তা কোনোভাবেই তার অপরাধ নয়, অপরাধ ওই ব্যক্তির। ব্যাপারটি যদি আদালত পর্যন্ত যায়, বিশেষ ব্যবস্থায় মনোবিজ্ঞানীর মাধ্যমে শিশুর জবানবন্দি নিতে হবে, কখনোই শিশুকে জনসমক্ষে ‘তার সঙ্গে কী হয়েছে’ এর বর্ণনা দিতে বলা যাবে না। এসব শিশুর মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
  • ভিকটিম শিশুটি যদি খুব অল্প বয়েসী হয়, তাহলে হয়তো সে তোমাকে নির্যাতনকারীর কথা বলতে পারবে না। তোমাকে আগেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শিশুকে একাকী যার-তার কোলে দেবে না। নিচের লক্ষণগুলো দেখা গেলে সাবধান হও, প্রয়োজন হলে ডাক্তার দেখাও। তবে এগুলো অন্য কারণেও হতে পারে –
  • শিশুর গোপনাঙ্গে কোনো ক্ষত বা অস্বাভাবিক ফোলা ভাব,
  • মুখে ক্ষত,
  • পেট খারাপ,
  • খাওয়ায় অরুচি,
  • বিশেষ কোনো ব্যক্তিকে দেখে ভয় পাওয়া,
  • হঠাৎ চমকে ওঠা ইত্যাদি।

নির্যাতনকারী কদাচিৎ অচেনা মানুষ হয়, অধিকাংশ সময় সে নিকট বা দূরসম্পর্কের আত্মীয়, শিক্ষক, পরিবারের লোক, পারিবারিক বন্ধু, প্রতিবেশী, কাজের লোক ইত্যাদি হয়। এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে কেবল সন্দেহ করে অহেতুক কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে না, এতে ব্যক্তিগত সম্পর্ক খারাপ হতে পারে। আবার নিশ্চিত হলে লজ্জায় চুপ করে থাকবে না, সে তোমার যত ঘনিষ্ঠ বা সম্মানিতজনই হোক না কেন। পারিবারিকভাবে সালিস করা গেলে ভালো কিংবা আইনি সহায়তা নেওয়ার প্রয়োজন হলে নাও।

আমরা তো এখন আধুনিকতার দোহাই দিয়ে অনেক বিকৃতিকেই স্বাভাবিকভাবে নেওয়া শুরু করেছি। ভাবলে ভেতরটা হিম হয়ে আসে। একসময় হয়তো আমরা চাইল্ড সেক্সুয়াল অ্যাবিউজ, পেডোফিলিয়া এবং ‘অযাচার’ (ইনসেস্ট) এর মতো জঘন্যতম বিকৃতিগুলোকেও স্বাভাবিকভাবে নিতে শুরু করব।

তোমার আমার নীরবতাই হাজারো শিশুর নির্যাতিত হওয়ার পথ সুগম করে দেবে। আসো, এদের মুখোশ খুলে দিই সভ্য সমাজে, ধিক্কার দিই, কঠোর আইন প্রণয়ন করি, আদালতে কাঠগড়ায় দাঁড় করাই, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করি। সুস্থ-স্বাভাবিক-নিরাপদ শৈশব- প্রতিটি শিশুর অধিকার! আমাদের শিশুরা বেড়ে উঠুক নিবিড় পবিত্রতায়, আল্লাহর কাছে সে দোয়া রইল।

চিকিৎসা

যৌন বিকৃত ব্যক্তি যদি সক্রিয়ভাবে এসব মনস্তাত্ত্বিক বাধা দূর করতে সমর্থ হয়, তাহলে তার সমস্যাও দূর হতে পারে। রোগী যদি নিজে নিজে এই সমস্যার সমাধান করতে না পারে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

লেখা: রোদসী ডেস্ক 
ছবি: সংগ্রহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
চলন বলনজীবনজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংসুস্থ মন

অ্যাডাল্ট প্যারেন্টিং

করেছে Wazedur Rahman এপ্রিল ৬, ২০২০

বাবা-মা তাদের সন্তানের ইতিবাচক আচরণের দিকে মনোযোগ না দিয়ে নেতিবাচক আচরণ নিয়ে বারবার কথা বলে এবং দোষারোপ করতে থাকে তাদের সন্তান নেতিবাচক আচরণের পুনরাবৃত্তি করতে থাকে। এতে সন্তান অপমানবোধ করে এবং নিজেকে বঞ্চিত মনে করে। ফলে সে নেতিবাচক আচরণগুলোর সংশোধন করায় মনোযোগী হয় না। এমন সব তথ্যই হাজির করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অ্যালান কাজদিন।

গবেষণায় পাওয়া গেছে আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো, অধিক কর্তৃত্বপরায়ণ বাবা-মায়ের সন্তান বিরক্তিকর হয়ে ওঠে এবং সমস্যা সমাধানে অদক্ষ হয়ে পড়ে।
আচ্ছা! বিষয়টি যদি এমন হয়, বয়স পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সন্তানের চিন্তাভাবনা ও তার চ্যালেঞ্জগুলো পরিবর্তিত হতে থাকবে। আর সেই সঙ্গে সন্তান আর পিতা-মাতার আচরণের পদ্ধতিটি সামঞ্জস্যপূর্ণ, দৃঢ় এবং প্রেমময় হওয়া হবে। তাহলে কেমন হয়? তাই তো হওয়া উচিত!

তা ছাড়া সন্তানকে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিখতে সাহায্য করা জরুরি। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা তোমার সন্তানের আত্মবিশ্বাস তৈরি করে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে শিখতে সহায় তা করবে।

সন্তান যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়, তার স্বনির্ভর হওয়ার তাগিদ থাকে। জীবনের গতি পরিবর্তন হয়। একাডেমিক পড়ালেখা শেষ পর্যায়ে পৌঁছায়। প্রেমের পরিণতি তার জীবনে প্রভাব ফেলে। আর্থিক সচ্ছলতার জন্য কখনো কখনো কখনো আর্থিক জোগান দরকার হয়। এই সময় সে বলতে চায়, কিন্তু শুনতে চায় কম। এই সময়ে সে আধিপত্য বিস্তার করতে চায়, শাসিত হতে চায় না। সময় তাকে তীব্র প্রতিযোগিতার দিকে ঠেলে দেয়; আর এমন সময় সন্তানকে যদি তুমি না বোঝো আর কে বোঝে! বলো।

আবির। ওর বয়স ২৭ বছর। একাডেমিক পড়ালেখা শেষ করে একটি স্বনামধন্য এজেন্সিতে আইটি বিভাগে কর্মরত। প্রায় সমবয়সী একজনের ছয় বছরের প্রেম। কিন্তু বিয়েটা হচ্ছে না। তার কারণ বাবা-মা মেনে নিতে পারছে না। সব থেকে বড় সমস্যা মেয়ের বয়স। আবির পরিবারের একমাত্র ছেলে। আবির খুব করে চাইছে, পরিবার সম্পর্কটি মেনে নিক।

আবির বলে, দুই দিক থেকেই দায়বদ্ধতা আছে। এতে একধরনের মানসিক প্রেশার ফিল করছে। সে বলে একদিকে ছয় বছর ধরে একটা সম্পর্কে আছি, কমিটমেন্ট আছে, দায়বদ্ধতা আছে। আবার অন্যদিকে মা-বাবা। মেয়ের পরিবার সম্পর্কটি মেনে নিয়েছে। কিন্তু তারাও তাদের মেয়ের জন্য বেটার কিছু চিন্তা করবে। নিশ্চয় আমার জন্য বসে থাকবে না। এদিকে আমি বসে আছি পরিবারের সম্মতির আশায়।

পরিবার মেনে নিলে বিষয়টি অন্য রকম হতে পারত। যেমন হয়ে রিমুর ক্ষেত্রে। রিমু এইচএসসি পাস করার পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চেষ্টা করে প্রথম বছর ব্যর্থ হয়। এই সময় পরিবার পুরোপুরি মানসিক সমর্থন দিয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তির প্রস্তুতি নিতে বলে। একই সঙ্গে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার জন্য তাগাদা দেয়। সেশনজটের কথা ভেবে রিমু ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়তে চায়নি। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে পরিবার প্রথমে না করে দেয়। অর্থ জোগানের বিষয়টি তাদের জন্য বোঝা হবে বলে মনে করে।

রিমু তার বাবা-মাকে বোঝাতে সমর্থ হয় যে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়ানোর জন্য তারা যে টাকা খরচ করতে রাজি ছিল, সেই পরিমাণ টাকা যদি তাকে দেওয়া হয়, তবে নিজে টিউশনি করে বাকি টাকা জোগাড় করবে।

রিমু আরও জানায়, পড়ালেখা শেষ করে এক বছর হলো চাকরি করছি। পরিবারকে সহযোগিতা করতে পারছি। আমি চেয়েছি বাবা-মা যেন তাদের ছেলে নেই বলে কখনো দুঃখ করতে না পারে। নিজের লাভ রিলেশনের কথাটিও বাবা-মাকে শুরু থেকেই জানিয়েছি। তারা মেনে নিয়েছে। বাবা-মায়ের সঙ্গে কখনো কিছু শেয়ার করতে গিয়ে মনে হয়নি, না, এ কথা বলা যাবে না। তার পুরো ক্রেডিট বাবা-মায়ের। তারা তাদের মনের দুয়ার সব সময় খুলে রেখেছে বলেই সম্ভব হয়েছে।

রন অ্যাডমন্সন অবলম্বনে অ্যাডাল্ট প্যারেন্টিংয়ে পরামর্শ:

  • সন্তানেরা ভালো মন্তব্য শুনতে চায়। মন্দ কাজ করলেও তারা শুনতে চায় যে মন্দ কাজ সে করে না। সুতরাং ভালোটা বলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করো। তাকে সন্দেহ করছ এমনটা যেন ঘুণাক্ষরেও বুঝতে না পারে। দেখবে, নিজ থেকেই সে ভালো কাজের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করবে।
  • প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানেরা বাবা-মাকে সব কথা বলতে পারে না। তারপর সন্তানের কাছে অনেক তোমার অনেক বেশি প্রত্যাশা যদি থাকে, সে অনুযায়ী ইনপুট দিতে না পারলে চুপসে যাবে। এই সময় কথা বলা জরুরি, কথা বলার ধরন হবে তার কথা জানতে চাওয়া।
  • সন্তানের বয়স মনে রেখে সেই বয়সে নিজে কেমন ছিলে, কী করতে মান চাইত, ভুল হলে মনের ওপর কেমন প্রভাব পড়ত- এগুলো মেলানোর চেষ্টা করো। আর সে অনুযায়ী সন্তানকে বুঝতে ও বোঝাতে চেষ্টা করলে তোমার আচরণ সন্তানের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

লেখা: রোদসী ডেস্ক 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
দেহ ও মনপ্যারেন্টিংসচেতনতাসুস্থ মন

কাটুক একঘেয়েমি

করেছে Wazedur Rahman মার্চ ২৯, ২০২০

সারা দিনের নানা কাজে প্রত্যেক মা-বাবাই ব্যস্ত। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যৌথ পরিবারও এখন নিউক্লিয়ার। সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানো, খেলার সঙ্গীর তালিকা ছোট হতে হতে এক বা দুইয়ে এসে থমকেছে। ফলে খুদেটির সারা দিনের সঙ্গী হয়ে উঠছে মন খারাপ।

একে তো সারা দিন একা থাকার বিরক্তি, তার ওপরে বাঁধা গতের জীবনে একঘেয়েমি গ্রাস করছে শৈশবকে। ফলে হতাশা দানা বাঁধছে শিশুমনেই। কিছু ক্ষেত্রে তার পরিণতিও ভয়ংকর। তাই গোড়াতেই সন্তানের একার রাজ্য করে তুলতে হবে সুখের ও আনন্দের।

সমস্যা কোথায়?

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মা-বাবারা সন্তানের হতাশার কারণ জানেন না। অনেক সময়েই হয়তো দেখা যায়, শিশুটির ঘরভর্তি দামি খেলনা, নামী ব্র্যান্ডের বইয়ের স্তূপ। কিন্তু তার মাঝে বসেও শিশুটির মুখে হাসি নেই। কোনো কিছুতেই যেন তার আগ্রহ নেই।

কারণ তার মনের খোরাক নেই। হয়তো তখন তার একছুটে দৌড় আসতে ইচ্ছে করছে সামনের মাঠ থেকে। বা বাড়ির পেছনের বাগানে গিয়ে দুটো পিঁপড়া ধরতে ইচ্ছে করছে।

 

প্রথম সমস্যা মা-বাবা যা দিচ্ছেন আর সন্তান যা চাইছে, তার মাঝে ব্যবধান বিস্তর।

দ্বিতীয়ত, সমবয়স্ক, সমমনস্ক সঙ্গীর অভাব। শিশুটির সর্বক্ষণের সঙ্গী বলতে বেশির ভাগ সময়েই বাড়ির দাদা-দাদি বা নানা-নানি অথবা সব সময়ে দেখভালের সঙ্গী। তারা শিশুর মনের নাগাল না-ও পেতে পারেন।

তৃতীয়ত, রোজকার রুটিন। প্যারেন্টিং কনসালট্যান্ট আবদুল আলিম বললেন, ‘মা-বাবারা নিজেদের কাজে বেরোনোর সময়ে সন্তান সারা দিন কী করবে না করবে, সেই রুটিন করে দিয়ে যাও। তা দরকারও। কিন্তু মাঝেমাঝে রুটিন ভাঙাও জরুরি।

ধরো, উইকেন্ডে বিকেলে সে আঁকার ক্লাসে যায়। সেখানে এক দিন তার আঁকার ক্লাস ক্যানসেল করে ওকে নিয়ে বরং আইসক্রিম খেতে যাও। দেখবে, ওই একটা দিনের আনন্দই ও কত দিন মনে রাখবে।’ এরপরেও সমস্যা আছে।

সন্তান একা থাকতে থাকতে বড়রা যা করে, সেটাই করতে শুরু করে। হয়তো বাড়িতে দাদি সারা দিন টিভিতে সিরিয়াল দেখছেন। শিশুটিও তার সঙ্গে সিরিয়াল দেখতে শুরু করে দিল। ফলে বয়স বাড়ার আগেই অনেক পরিণত চিন্তা তৈরি হতে শুরু করে। যা হয়তো আবার তোমার কাছে পাকামো মনে হতে পারে।

জরুরি কথা

সন্তানকে প্রয়োজনের বেশি খেলনা, রং বা উপহার দেবে না। কম জিনিসের মধ্যেই আনন্দ খুঁজে নিতে দাও। আবার সন্তানের মনোরঞ্জনের জন্য বা তোমার সময় নেই বলে ওর হাতে মোবাইল তুলে দেবে না।

বরং নিজেই সন্তানের আগ্রহ অনুযায়ী নানা ‘ডু ইট ইয়োরসেল্ফ’ শো দেখাতে পারো। ও আগ্রহ পেলে সেগুলো নিজেই তৈরি করবে।

কিন্তু স্ক্রিন টাইম বেঁধে দেওয়াও জরুরি। বইয়ের সঙ্গে সখ্য তৈরি করাও জরুরি। ওদের বইয়ের দোকানে নিয়ে যেতে হবে। পড়তে না পারলে ‘টাচ অ্যান্ড ফিল’ বই দিয়ে শুরু করতে পারো।

কী করা যেতে পারে?

সন্তানকে দেখাশোনার জন্য যিনি থাকছেন, তার ওপরে অনেকটাই দায়িত্ব বর্তাবে। ফলে সন্তানের সঙ্গে কীভাবে কথা বলবে, ওর সঙ্গে কী ধরনের খেলা খেলবে, সে বিষয়ে তাকেও বোঝাতে হবে। এমনকি তোমার করে দেওয়া রুটিন ভাঙার দায়িত্ব মাঝেমাঝে তাকেও নিতে হবে। তাহলে তোমার খুদেটি তাকে নিজের কাছের বন্ধু ভেবে ভরসা করতে শিখবে।

ফলে তুমি ওর কাছে না থাকলেও ও একজন বন্ধুকে সব সময়ে কাছে পাবে। গাছ লাগানো, তার মাটি তৈরি করা ইত্যাদি শেখাতে পারো। বার্ড হাউস রাখতে পারো বাড়ির বাগানে। সেখানে পাখিদের আনাগোনা দেখেও ওর অনেকটা সময় কেটে যাবে।

 

একঘেয়েমি কাটাতে ওর রোজকার খাবারেও বদল আনতে হবে। বাচ্চার জন্য একই ধরনের মাছের ঝোল বা মাংসের ঝোল রান্না হয় রোজ। সেখানে হঠাৎ সপ্তাহের মাঝে এক দিন দুপুরে ওর মনের মতো খাবার রান্না করে রাখতে পারো।

হতে পারে সেটা চাউ মিন বা বিরিয়ানি। কিন্তু সপ্তাহে এক দিন সেই নিয়ম ভাঙা মেনু থাকুক না হয় ওর জন্য। দিনের বাকি খাবারে ওর প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান বহাল রাখো।

অনেক সময়েই অফিস থেকে ফিরেও কাজ পিছু ছাড়ে না। ফলে কিছু কাজ চলে মোবাইল বা ল্যাপটপে। সেই সময়ে যদি তোমার সন্তান এসে তোমার সঙ্গে খেলতে বা কথা বলতে চায়, তাকে ফেরাবে না। বরং মিনিট দশেক হলেও ওর সঙ্গে একটু খেলো। ওর সঙ্গে গল্প করো। সেটুকুই ওর মনের খোরাক।

বাড়িতে পোষ্যও রাখতে পারো। পোষ্য কিন্তু খুব ভালো বন্ধু হয়। আর সন্তান একটু বড় হলে তার দেখভালের দায়িত্বও দিতে পারো তাকে। তাহলে সেখানেও ওর খানিকটা সময় কেটে যাবে।

তবে মাঝে মাঝে ওদের বোর হতে দেওয়াও জরুরি। বোরডম থেকে বেরোনোর রাস্তা ওদেরই খুঁজে বের করতে দাও। হতে পারে একার জগতে নতুন কিছুর হদিস পেয়ে গেল সে এভাবেই।

লেখা: রোদসী ডেস্ক

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
কর্মক্ষেত্রদেহ ও মনসচেতনতাসুস্থ মন

স্ট্রেসময় জীবন!

করেছে Wazedur Rahman মার্চ ২৫, ২০২০

অফিস থেকে বাড়ি, সব জায়গায় কমবেশি রয়েছে কাজের চাপ। অফিসে বসের ধমক, বাড়িতে রোজকার ঘরোয়া কাজ, জীবন যেন ষোলো আনাই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। আর তা যখন মাত্রাতিরিক্ত হয়ে ওঠে, তখনই দেখা দেয় রোজের জীবনে নানা সমস্যা। আমরা বেশি ঝগড়া করি, অনিদ্রায় ভুগি, প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে ফেলি, ফলে ওজন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হরমোনেও দেখা দিচ্ছে নানা সমস্যা।

আমাদের জীবনে স্ট্রেস যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাইগ্রেনের মতো রোগের অন্যতম কারণ হচ্ছে স্ট্রেস।

এর হাত থেকে নিস্তার পাওয়া গেলে স্ট্রেসের সঙ্গে লড়াইটা বজায় রাখতেই হবে এবং তা কমানোর একটা না একটা রাস্তাও খুঁজে বের করতে হবে। খুব সহজ কিছু পথের হদিস রইল তোমার জন্য।

কারণ খুঁজে বের করো

অফিসে বসের সঙ্গে রোজকার ঝামেলা, মতের অমিল বা চাকরির প্রতি অনিচ্ছা অথবা প্রেমিকের সঙ্গে ব্রেকআপ, যার ধাক্কা এখনো সামলে উঠতে পারছেন না। এ ধরনের সমস্যাতেই তুমি ভুগছ? তবে স্ট্রেসের কারণটাকে এড়িয়ে যাবে না, সত্যিটাকে স্বীকার করে তাকে দূর করার উপায় খুঁজে বের করো। নিজের মধ্যে অনুভূতিগুলোকে আটকে না রেখে, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আলোচনা করো, নিজের কথা বলে মনকে হালকা করো।

ঘরোয়া কাজের মাত্রা বাড়াও

তোমাকে যে ব্যায়াম করতেই হবে, তার কোনো মানে নেই। যদি মনে করো নাচলে তোমার শারীরিক বা মানসিক ক্লান্তি কাটবে, তবে নাচের ক্লাসে যোগ দাও। অবসর সময় কাটাও বাচ্চাদের সঙ্গে। মোদ্দা কথা, বাড়িতে একা বসে থাকবে না, মানুষের মধ্যে থাকো। হাসো, হাঁটাচলা করো। মেডিটেশন করতে পারলেও খুব ভালো ফল পাওয়া যায় বলে মনে করে অনেকেই।

বিবেচনা করে খাওয়াদাওয়া করো

মন চাইবে বেশি বেশি মিষ্টি, ভাজাভুজি খেতে। কারণ, ফ্যাট আর চিনি তোমাকে মানসিকভাবে খুশি রাখে। কিন্তু ইচ্ছের ওপর রাশ টানো। ওজন বাড়লে কর্মক্ষমতা আরও কমবে, আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে। ফলে ক্রমেই তুমি গুটিয়ে যাবে নিজের মধ্যে। সেটা হতে দেবে না। ডায়েটিশিয়ানের সঙ্গে কথা বলে খাদ্যতালিকায় সঠিক খাবার রাখো। নয়তো বাড়ির সাধারণ খাবার খাও। এসব খেলেই সুস্থ থাকবে।

গান শোনো

গান বা সুরও কিন্তু তোমার অস্থির জীবনকে দিতে পারে শান্তির প্রলেপ। মন খারাপ লাগলেই গান শোনো। হয়তো হালকা রিদমের বা রোমান্টিক গান ভালোবাসো বা পছন্দ করো রক্তে দোলা দেওয়া নাচের ছন্দ শুনতেÑ সুর তোমাকে কখনোই নিরাশ করবে না। মন খারাপ লাগলে নানা ধরনের মিউজিক শোনো।

 

লেখা : রোদসী ডেস্ক

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
দেহ ও মনসচেতনতাসুস্থ মন

খুব মন খারাপ হয়?

করেছে Wazedur Rahman মার্চ ২৫, ২০২০

সামান্য সর্দি, কাশি, জ্বরে কটা দিন ভুগলেও যেন বিরক্ত লাগে। বিভিন্ন কারণে সার্জারির মধ্য দিয়েও যেতে হয় অনেক রোগীকে। সার্জারির পরে চিকিৎসকও কিছুদিনের বিশ্রাম লিখে দেন। আবার পক্স, পায়ের হাড় ভাঙার মতো সমস্যাতেও বাড়িতে বন্দি হয়ে থাকতে হয় দিনের পর দিন। এদিকে বাড়িতে বসে বসে মেজাজের বারোটা। যে কোনো অসুখের এই রিকভারি পিরিয়ডটা কাটিয়ে ওঠাও কিন্তু একটা চ্যালেঞ্জ।

মিউজিক থেরাপি

গান হোক বা কোনো ইনস্ট্রুমেন্টাল মিউজিক…সুরের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী। আর সুফলও অনেক। পরীক্ষায় দেখা গেছে ভালো মিউজিক শুনলে হার্ট রেট ইমপ্রুভ করে, মস্তিষ্কের স্টিমুলেশন ভালো হয়, টেনশনও কমে। ফলে ক্লান্তি কেটে যায়। মানসিকভাবে একজন রোগী অনেকটাই সজীব হয়ে ওঠে। চিকিৎসা চলাকালে পাশাপাশি চলতে পারে মিউজিক থেরাপি। কিছু ক্ষেত্রে আবার রোগীকে লাইভ মিউজিক শোনানো হয়। এ ধরনের থেরাপি নাকি অনেক বেশি সহায়ক।

বন্দি নয়

অসুখ করলে বাড়িতে বন্দি হয়ে কিছু দিন তো কাটাতেই হয়। চার দেয়ালের মধ্যে দীর্ঘদিন থাকতে থাকতে শরীর-মন আরও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তবে চলাফেরা বন্ধ না হলে, দিনে একবার কারও সঙ্গে বাইরে থেকে কিছুক্ষণের জন্য একটু ঘুরে আসতে পারো। রাস্তায় বেরোনোর উপায় না থাকলে অন্তত বাড়ির বারান্দায় গিয়ে বসো। সামনের সবুজ গাছ বা রাস্তায় মানুষজনকে দেখলেও মন ভালো হয়ে যায়। যে ঘরে থাকবে, সকালে সেই ঘরের জানালাটাও খুলে রাখো। বাইরের রোদ-হাওয়া আসতে দাও। রোগীর ঘরের গুমোট ভাব কেটে যাবে।

রোগীর জন্য

নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া এবং ঘুম জরুরি। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সে কটা দিন পথ্য মেনে চলো। আত্মীয় বা স্বজনবান্ধবকে নিজের সমস্যার কথা বারবার বলার চেষ্টা করবে না। যে তোমার ব্যাপারে সচেতন সে নিজেই যত্ন নেবে। অসুখের দিনগুলো বিমর্ষ হয়ে না কাটিয়ে বই পড়া, সিনেমা দেখা, ঘুমানো…নিজের মতো করে যতটা পারো, সময় কাটিয়ে নাও। চেষ্টা করো ছুটির মেজাজে দিন কাটাতে। এতে সময় কাটবে তাড়াতাড়ি।

পেইন্টিংস, রিডিং

দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার ফলে অনেক সময়ে অফিস-কলেজ বন্ধ থাকে। আবার সারা দিন বাড়িতে বসেও সময় কাটতে চায় না। তখন রং-তুলি, কাগজ, কলম টেনে নিয়ে আঁকতে বসে যেতে পারো। কিংবা ভালো বইও পড়ে ফেলতে পারো। গল্পের বই হোক বা কাজের বই…যা ইচ্ছে নিয়ে বসে পড়ো। একটানা পড়ে ক্লান্ত হয়ে গেলে কাউকে ডেকে পড়ে শোনাতে বলতে পারো।

গল্প-গুজব

মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি ভাবের আদান-প্রদান। ফলে কথা না বলে বা না শুনে মানুষ থাকতে পারে না। তাই ফোনে হোক বা সামনাসামনি রোগীর সঙ্গে গল্প করো। তবে তা যেন নিখাদ গল্পই হয়। রোগবালাই প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাও। বরং তোমাদের দুজনের পছন্দের কোনো কমন বিষয়ে আড্ডা চালিয়ে যেতে পারো।

খাবার

এমন অনেক খাবার আছে, যা পলকে মুড ভালো করে দেয়। চকলেট, কফি, বিভিন্ন হার্বসও মেজাজ ভালো রাখে। তবে অসুখ অনুসারে অনেক খাবারে নিষেধও থাকে। তাই নিজের শরীর বুঝে দিনে একবার পছন্দের কোনো খাবার খেতে পারো। কিন্তু নানা অসুখে বিভিন্ন খাবার বন্ধ থাকে। তাই কিছু খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নাও।

বিশ্রাম

অসুখ সারাতে এটি সবচেয়ে বেশি জরুরি। অনেক সময়েই বই পড়া বা টিভি দেখার মতোও শারীরিক অবস্থা থাকে না। সে সময়ে বিশ্রাম নেওয়াই ভালো। ঘুমিয়ে নিলে শরীর বিশ্রামও পাবে, সুস্থও হবে তাড়াতাড়ি। মানসিকভাবেও বিশ্রাম প্রয়োজন। তাই জেগে থাকলেও নিজের অসুখ নিয়ে চিন্তা করবে না। কবে সারবে? কবে বেরোবে? এসব যত ভাববে, ততই মানসিকভাবে ব্যস্ত হয়ে উঠবে। ফলে বিরক্তি বাড়বে। তাই যথাসম্ভব অসুখের বাইরে অন্যান্য বিষয়ে মনোযোগ দাও।

পাজল, ইনডোর গেমস

কাগজে নানা ধরনের ক্রসওয়ার্ড, সুডোকু, হিতোরি ইত্যাদি নানা ব্রেনগেম থাকে। সেগুলো খেললে সময় তো কাটবেই, মাথাও খেলবে ভালো। সঙ্গী পেলে দাবা, লুডো ইত্যাদি বোর্ডগেম নিয়েও বসে পড়তে পারো। সেলাই, উল বোনা, সিনেমা দেখা…অনেকভাবেই সময় কাটাতে পারো। শরীরের অবস্থা কেমন, সে অনুসারে বেছে নাও তোমার মন ভালো রাখার দাওয়াই।

বাচ্চাদের জন্য বিশেষ যত্ন

অনেক সময়েই দেখা যায়, শিশুরা দীর্ঘদিন ধরে ভুগছ। সে সময়ে তাদের তেমন কিছু করারও থাকে না। ফলে তারা খুবই বিরক্তি বোধ করে, যা তার আচরণেও ফুটে ওঠে। তখন কিন্তু মা-বাবাকে দায়িত্ব নিতে হবে সন্তানের মন ভালো রাখার। ওকে নানা রকমের গল্প বলতে পারো। ওর প্রিয় চরিত্র বা মজার, রহস্য-রোমাঞ্চে ভরপুর গল্পই হয়ে উঠতে পারে মন ভালো করার ওষুধ।

সঙ্গসুধা

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সঙ্গ। যে কোনো অসুখেই কেউ সঙ্গে থাকলে শক্তি পাওয়া যায়। তাই বন্ধুর মতো সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করো তাকে। অসুখ যা-ই হোক না কেন, তা কাটিয়ে ওঠার জন্য যেমন ওষুধ প্রয়োজন, তেমনই দরকার প্রিয়জনের সাহচর্য। তাহলেই কেটে যায় অসুখী সময়।

 

লেখা: রোদসী ডেস্ক 
ছবি: সংগ্রহীত 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
চলন বলনজীবনজীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসুস্থ মন

ব্যায়ামে অবহেলা নয়

করেছে Wazedur Rahman মার্চ ২৪, ২০২০

শত ব্যস্ততা থাকবেই। নানা কাজে বুঁদ হয়েও থাকতে হবে। তাই বলে ব্যায়ামে অবহেলা নয়। সুস্থ থাকতে চাইলে দিনে অন্তত আধঘণ্টা নিয়ম করে শরীরচর্চা করো।

সারা দিনের শত কর্মব্যস্ততার মাঝে নিজের জন্য সময় বের করা হয়ে ওঠে না আর! বাড়ি থেকে অফিস- সবটাই সামলাচ্ছ একা হাতে। এমনকি বাচ্চার দুষ্টুমি আটকাতে তার পেছনেও ছুটে চলেছ সর্বক্ষণ। তবু মধ্যপ্রদেশ এতটুকুও কমতে নারাজ। পরিশ্রম তো নেহাত কম করছ না! তাও ওজন কেন কমছে না সেটাই ভেবে নাজেহাল।

সারা দিন কাজের মধ্যেই রয়েছ, প্রচুর খাটছ, ফলে ওজন নিজে থেকেই কমা উচিত- এ ভ্রান্ত ধারণা থেকে সবার আগে বেরিয়ে আসা দরকার। ওজন কমাতে হলে সঠিক ডায়েট প্ল্যান আর এক্সারসাইজ ছাড়া কিন্তু অন্য কোনো পথ নেই। সব কাজ সেরে জিমে যাওয়া হয়ে ওঠে না আর। কী করে দশ দিক সামলেও বাড়িতেই মেদ ঝরাতে পারো, রইল সেই হদিস।

ওজন কমানোর আগে জানতে হবে উচ্চতা অনুযায়ী তোমার ওজন ঠিক কত হওয়া উচিত। ‘আমেরিকান কাউন্সিল অন এক্সারসাইজ’-এর গাইডলাইন অনুযায়ী প্রতি মাসে দুই-তিন কিলোগ্রাম ওজন কমানোর আদর্শ লক্ষ্য হওয়া উচিত। উচ্চতা অনুযায়ী তোমার ওজন ঠিক কত হওয়া উচিত, সে হিসাবও খুব সহজে বের করে নিতে পারো।

ইঞ্চিপ্রতি এক কিলোগ্রাম- এই সোজা হিসাব মাথায় রাখলেই মিলবে সমাধান। ধরো তোমার উচ্চতা যদি হয় ৫ ফুট অর্থাৎ ৬০ ইঞ্চি, তবে বাংলাদেশি পুরুষদের ক্ষেত্রে ওজন হওয়া উচিত ৬০ কেজির আশপাশে। মহিলাদের ক্ষেত্রে এর থেকে চার-পাঁচ কেজি কমিয়ে নিতে হবে।

কাজের ফাঁকে বাড়িতেই শরীরচর্চা

ওজন কমাতে হলে প্রথমেই শরীরে ক্যালরির ঘাটতি তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সহজ পন্থা হলো প্রতিদিনের ডায়েট থেকে ২৫০ ক্যালরি কমানো, শুধু তাই নয় একই সঙ্গে শারীরিক কসরত করে ২৫০ ক্যালরি বার্নও করতে হবে। এই উপায়ে শরীরে প্রয়োজনীয় ক্যালরির খামতি তৈরি হয়, ফলে ওজন ঝরে সহজেই।

এ ক্ষেত্রে ছোট ছোট টার্গেট করে এগোনোই ভালো। শরীরে একসঙ্গে অনেকখানি ক্যালরির অভাব হলে দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। এবার প্রশ্ন উঠতেই পারে তোমার রোজকার ক্যালরির হিসাব রাখবে কী করে? এর জন্য মোবাইলে রয়েছে বিভিন্ন অ্যাপ।

এ ছাড়া রয়েছে স্মার্ট ওয়াচ, যা তুমি প্রতিদিন কত ক্যালরি খরচ করছ সেই হিসাব রাখতে সক্ষম। ডায়েটে পরিবর্তন এনেও ক্যালরির হিসাব রাখা যায়। আগে এক কাপ ভাত খেলে এখন আধ কাপ খাও, চার টুকরো মাংস খেলে সেই সংখ্যা কমিয়ে আনো দুটিতে।

দিনে অন্তত আধঘণ্টা কিন্তু নিয়ম করে বের করতেই হবে শরীরচর্চার জন্য। হাঁটা কিন্তু ওজন কমাতে দারুণ কার্যকর। সকালে সময় না হলে সন্ধেবেলায় বাড়ির নিকটবর্তী পার্কে গিয়ে জোর গতিতে আধঘণ্টা হেঁটে আসো। বাড়িতে কিংবা বারান্দায় স্পট রানিং করতে পারো।

স্কিপিং অথবা জাম্পিং জ্যাকের মতো ব্যায়ামও খুব ভালো কার্ডিও এক্সারসাইজ। এতে ওজন ঝরবে দ্রুত। এ ছাড়া স্কোয়াট, ক্রাঞ্চ এই ব্যায়ামগুলো মেদ ঝরাতে বেশ উপকারী। যদি তাড়াতাড়ি ওজন কমানোই লক্ষ্য হয়, তাহলে যোগব্যায়ামের চেয়ে এক্সারসাইজ বেশি কার্যকর।

তবে যোগব্যায়ামের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী এবং সুদূরপ্রসারী। যোগব্যায়াম কেবল শরীরকে সুস্থ রাখে তাই নয়, মনকেও ভালো রাখে। যোগাসন এবং এক্সারসাইজ দুটিই সময় ভাগ করে নিয়ে করতে পারো। যোগব্যায়াম বা প্রাণায়াম শুরু করলে কোনো পেশাদারের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।

 

লেখা: রোদসী ডেস্ক 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনজীবনযাত্রাদেহ ও মনসুস্থ মন

একলা তুমি

করেছে Wazedur Rahman ফেব্রুয়ারী ১৯, ২০২০

বয়সের বাড়ত্ব এলে আপনজন একে একে দূরে সরে যেতে থাকে। ভর করে নিদারুণ একাকিত্ব। সময়টা চ্যালেঞ্জিং বটে। তবে যা-ই হোক, সাদাকালো নয়, একাকিত্বের দিনগুলো হোক রঙিন। সময় কাটাও আনন্দে…!!

স্কুল থেকে ফেরার সময় রোজ মোহর দেখে, পাশের বাড়ির দিদা বসে আছেন জানালার ধারে। কখনো-সখনো দিদা ডেকে লজেন্স দেন, কখনো জুড়ে দেন খোশগল্প। মোহরের সেসব গল্প ভালোই লাগে। কারণ, দিদার মতো গল্প কেউ করে না। আর সে এ-ও জানে, দিদার গল্প করার লোক মোটেও নেই। দিদা বড্ড একা।

জীবনের কোনো না কোনো সময়ে একাকিত্ব বোধ করেছে প্রায় সব মানুষই। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকা একাকিত্বের রং যেন বেশিই বিষাদময়। সেখানে কোথাও ঘিরে থাকে কারও ফিরে আসার অপেক্ষা, কোথাও একরাশ শূন্যতা। তার মানে কি এই অধ্যায় থেকে সব রং হারিয়ে গিয়ে পড়ে থাকে শুধু অভিজ্ঞতার সাদাকালো জীবন? নাকি এলোমেলো নতুন রঙেরা তৈরি করে সুন্দর কোলাজ? এবার সময় এসেছে বদলে ফেলার। পাল্টে যাওয়া দৃষ্টিভঙ্গিতে বার্ধক্যেও না হয় ডানা মেলুক রঙিন দিন।

একাকিত্বের শিকড়

বার্ধক্য আগেও ছিল। কিন্তু একাকিত্ব এভাবে চেপে বসার সুযোগ পেত না। একান্নবর্তী পরিবারে নানা প্রজন্মের মানুষের সঙ্গে থাকার ফলে একাকিত্ব বোধ করার অবকাশ থাকত না। কিন্তু দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে এখনকার অনেক প্রবীণই তুলনায় বেশি একাকিত্ব বোধ করেন। চাকরির মেয়াদ ফুরিয়ে অবসর একদিন নিতেই হবে। যে মানুষটা সারা দিন অফিসের নানা কাজে ব্যস্ত থাকতেন, রিটায়ারমেন্টের পরে তাঁর যেন সময়ই কাটতে চায় না।

পড়াশোনা, কাজ বা বিয়ের সূত্রে সন্তান অন্যত্র থাকলে, বাড়তে থাকে একাকিত্ব। আবার সঙ্গীহীন হয়ে পড়লে একা হয়ে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়। অনেকের সঙ্গেই আত্মীয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বন্ধুরাও দূরে। একাকিত্বের অন্যতম কারণ হলো শারীরিক সক্ষমতা কমে যাওয়া। বয়স বাড়ার সঙ্গেই ভাঙতে থাকে শরীর। কীভাবে একাকিত্বের খোলস ছেড়ে বেরোনো যায়?

নিজের জন্য অল্প কিছু

  • নিজের উপার্জনের প্রায় সবটাই মানুষ ব্যয় করে সন্তানের উচ্চশিক্ষার জন্য। অনেক ক্ষেত্রে সঞ্চয়টুকুও চলে যায় সংসারেই। কিন্তু নিজের জন্যও ভাবা জরুরি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টাকা তো থাকবেই, নিজেদের জন্যও থাকুক কিছুটা। টাকা থাকলে সাহস জন্মায়। আর্থিকভাবে স্বাধীন থাকলে কারও ওপরে ভরসা করতে হয় না।
  • বিয়ে, ক্যারিয়ারের জাঁতাকলে পড়ে কখন যেন জীবন থেকে হারিয়ে যায় শখ। অথচ ছোটবেলায় কেউ ভালো আঁকতে পারতেন, কারও স্ট্যাম্পের খাতা মোটা হতো। কিন্তু অবসরজীবনে এসে দেখা যায়, যে চাকরি বা সংসারের জন্য এত ছোটাছুটি, তার কিছুই পড়ে নেই। হারিয়ে গেছে শখটাও। তাই শত ব্যস্ততার মধ্যেও সেটুকুকে বাঁচিয়ে রাখো। সেটাই তো তোমার নিজের আকাশ। বার্ধক্য কড়া নাড়লে আঁকড়ে ধরো শখের হাত। আর তেমন শখ না থাকলে, নতুন শখের প্রেমে পড়তেই বা ক্ষতি কী! নতুন করে তুলি ধরো, বাগান করো, গল্পের বইয়ের পাতায় বুঁদ হয়ে যাও।
  • ডিজিটাল দুনিয়ায় পাল্লা দিতে গেলে নিজেও নাহয় একটু ‘স্মার্ট’ হলে! কি-প্যাডের সাবেকি মোবাইল ছেড়ে অন্তত স্মার্টফোন ব্যবহারের অভ্যেস শুরু করতে পারো। ইনকামিং ও আউটগোয়িং ছাড়াও শুরুর দিকে মেসেজ করতে শিখতে পারো। সম্ভব হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে প্রোফাইল খোলো। সেখানেই ফিরে পেতে পারো হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের। তাদের সঙ্গে দেখা করো, সিনেমায় যাও, বাড়িতে ডেকে নাও। ফেসবুকেই রয়েছে নানা গ্রুপ। নিজের শখের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেই সব গ্রুপে যোগ দিতে পারো। এতে তোমার সামাজিক পরিধি বাড়বে। এসব কিছুতে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে ধীরে ধীরে শিখে যেতে পারো ফুড, ক্যাব, বিল পেমেন্ট-জাতীয় নানা অ্যাপের ব্যবহার। সেগুলো খুব কঠিনও নয়। আর এসব করতে পারলে একটা সময় নিজেরই আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
  • রোজ সকালে হাঁটার মতো বিকল্প কিছু নেই। এতে যেমন শরীর ভালো থাকবে, তেমনই বাড়বে বন্ধুর সংখ্যাও। হেঁটে ফেরার পথে নাহয় বাজারটাও ঘুরে এলে! মন ভালো হতে বাধ্য। সকালে উঠতে অসুবিধা হলে ইভনিং ওয়াকও মন্দ নয়।
  • নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিজেই করো। প্রয়োজনে বাড়িতে সিসিটিভি বসাও। থানায় জানিয়ে রাখো। নিরাপত্তার ব্যবস্থা আছে নানা সংস্থার তরফেও।
  • নানা ব্যস্ততায় নিজের শরীরের দিকে খেয়াল রাখার প্রয়োজন বোধ করে না অনেকেই। কিন্তু বার্ধক্যে একাকিত্ব এড়ানোর প্রধান উপায় নিজেকে সুস্থ রাখা। অনেক সময় শারীরিক অক্ষমতা থেকে আসে মানসিক অবসাদ। উল্টোটাও হতে পারে। কিন্তু চলনশক্তিহীন হয়ে পড়লে মুশকিল হয়। একাকিত্ব আরও জাপটে ধরে। কারণ, প্রতি পদে দরকার হয় কারও সাহায্যের। তাই তুমি যদি সুস্থ থাকো, মেজাজও থাকবে ফুরফুরে। চিকিৎসক, নার্সদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করে নানা সংস্থা। চেকআপ, মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা থাকে। তেমন কর্মসূচিতে নাম লেখাতে পারো।
  • নিঃসন্তান হও বা সন্তান দূরে…এমন বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করতে পারো, যেখানে হাতের কাছে আছে বন্ধু-স্বজন। কাছের বন্ধুরা মিলে একই অ্যাপার্টমেন্টে ফ্ল্যাট কিনতে পারো। একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে গেলেও ভাই-বোনেরা মিলে থাকতে পারো একই কমপ্লেক্সের নানা ফ্ল্যাটে। এতে ব্যক্তিগত পরিসর বজায় থাকে, আবার হাত বাড়ালেও পাওয়া যায় ভরসার হাত। তবে তার প্রস্তুতি শুরু করতে হবে আগেই।
  • বিদেশে অনেক মা-বাবাই চান ক্রেশে তাদের সন্তান দেখভালের কর্মীদের মধ্যে থাকুন একজন প্রবীণ। তিনিই বাচ্চাদের গল্প শোনাবেন। এতে গল্পের মান যেমন ভালো হয়, তেমনই বাচ্চারাও শেখে অনেক কিছু। চাইলে তুমিও পাড়ার ক্রেশে যুক্ত হতে পারো। তোমারও হয়তো এমন অনেক গল্প আছে, যা ভাগ করে নিতে চাও কচিকাঁচাদের সঙ্গে।

বৃদ্ধাশ্রমের ধারণা ক্লিশে নয়

একটা সময় ইচ্ছা করে পিছুটান ফেলে বাঁচতে। তখন খাবার, স্বাস্থ্য, সঞ্চয়…কোনো কিছুতেই মাথা ঘামাতে মন চায় না। ফলে অনেকেই এখন বেছে নিচ্ছে ওল্ড এজ হোম। সন্তান বাবা-মাকে দেখে না এবং বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসে- এ ধারণা বদলাচ্ছে। অনেকের মধ্যে একসঙ্গে হেসেখেলে, মজায় দিন কাটানোর জন্য অনেকেই বেছে নিচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে থাকার ব্যবস্থা। শহরে ঝাঁ চকচকে, সব সুযোগ-সুবিধাসমেত বৃদ্ধাশ্রম খুলছে। নিজের সাধ্যমতো বেছে নিতে পারো সে রকমই কোনো হোম। সেখানেই দিনযাপন, চিকিৎসা, নিরাপত্তা, ঘুরে বেড়ানো- ব্যবস্থা থাকে সবকিছুরই। চাইলে দম্পতিদের থাকার ব্যবস্থাও পাবে।

বার্ধক্য যখন গুটি গুটি এসে থাবা বসায় জীবনে, তখন চাইলেই তাকে হেলায় হারাতে পারবে। দরকার শুধু সামান্য কিছু পরিকল্পনা আর নিজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলের। তাই ‘বালিগঞ্জ কোর্ট’-এর দম্পতির নিঃসঙ্গতা, নাকি ‘শুভ মহরত’-এর মিস মার্পল ‘রাঙা পিসিমা’… কেমন জীবন বাছবে, তার চাবিকাঠি কিন্তু তোমার হাতেই।

 

লেখা: রোদসী ডেস্ক
ছবিসূত্র: সংগ্রহীত 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ওয়েডিং ডেস্টিনেশন

তুমিই রোদসী

  • স্বপ্ন দেখি নারী দিবসের দরকারই হবে না







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook