রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

প্রযুক্তি

এই সংখ্যায়প্রযুক্তিবিনোদনবিশেষ রচনা

ফিল্মি দুনিয়া ওটিটিতে

করেছে Sabiha Zaman জুলাই ১৫, ২০২১

সুরাইয়া নাজনীন

স্মার্টফোন যেন গোটা দুনিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে। ঘরে বসেই আমরা পেয়ে যাচ্ছি বিনোদনের সব অনুষঙ্গ। আগের দিনগুলোতে এসব ছিল ভাবনার বাইরে। বর্তমানে আরেক চমক ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। এটা ডিজিটাল দুনিয়ার ওয়েব বিপ্লব বটে!কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য ওয়েব ফিল্ম, ওয়েব সিরিজ তৈরির আলোচনা ছিল না। সে চিত্র পাল্টে যাচ্ছে ক্রমেই। জীবন্ত হয়ে উঠছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের ওয়েব ফিল্ম কিংবা ওয়েব সিরিজ।

ডিজিটাল যুগে সবাই ধাবিত হচ্ছে। বিশিষ্ট নির্মাতারাও ঝুঁকছেন এই সংস্কৃতিতে। এবার প্রথমবার ওয়েব ফিল্ম নির্মাণ করতে যাচ্ছেন চয়নিকা চৌধুরী। ওয়েব ফিল্মটির নাম ‘অন্তরালে’। চয়নিকা চৌধুরীর প্রথম সিনেমাতেও পরীমনি ছিলেন নায়িকা। ওয়েব ফিল্মটির গল্প লিখেছেন পান্থ শাহরিয়ার।
পরীমনির সঙ্গে কাজ করা প্রসঙ্গে চয়নিকা চৌধুরী জানান, ‘আমার প্রথম চলচ্চিত্রে পরীমনি ছিলেন। মজার বিষয় হলো প্রথম ওয়েব ফিল্মেও তিনি থাকছেন। তিনি দেখতে সুন্দর, নাচ জানেন, অভিনয় পারেন। তার চেয়েও বড় বিষয়, তার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা খুবই ভালো। আমাদের সম্পর্কটা এত সুন্দর যে হাসিখুশির মধ্য দিয়েই কাজটা শেষ করতে পারব। কোনো ব্রেক নিতে হবে না।’
এই ফিল্মে পরীমনিকে দেখা যাবে একটি হিন্দু পরিবারের বউ অর্পিতা চরিত্রে। ব্যবসায়ী স্বামীর সঙ্গে বিয়ের পরে বনেদি একটি পরিবারে বউ হিসেবে আসে অর্পিতা। স্ত্রীকে প্রচণ্ড ভালোবাসলেও ব্যবসায়িক ব্যস্ততায় স্ত্রীকে সময় দিতে পারেন না অর্পিতার স্বামী। তবে হঠাৎ করেই মফস্বল শহর থেকে আসা মনা নামক ব্যক্তির আগমনে তাদের জীবনে শুরু হয় অন্য রকম নানা ধরনের ঘটনা। এর মধ্যে ঘটে একটি খুন। আর মধ্যবিত্ত সংসারজীবনে খুনের মতো ভয়ংকর একটা ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরে তাদের জীবনে কতটা প্রভাব ফেলে এবং এতে তাদের জীবনে কী কী পরিবর্তন আসে, সেসবই দেখা যাবে অন্তরালে।


তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত ওয়েব ফিল্মটিতে একটি গান রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। এটা বাড়তেও পারে। তবে যে একটি গানের পরিকল্পনা রয়েছে, সেটি লিখেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত গীতিকার কবির বকুল এবং তাতে কণ্ঠ দেবেন কোনাল। ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট নিবেদিত ও কাজী রিটন প্রযোজিত এ ওয়েব ফিল্মটি দেখা যাবে একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে।

বাংলাদেশে ওয়েব কালচার একটু দেরিতে হলেও এসেছে। কাজ করার দুর্দান্ত সুযোগ এখানে বললেন নির্মাতা হাবিব শাকিল। তিনি সম্প্রতি ‘কিস অব জুডাস’ নামে একটি ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করেছেন, যা একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে। শিল্পী, নির্মাতা এবং দর্শকের জন্য এই প্ল্যাটফর্ম কতটুকু গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে? এ প্রশ্নে হাবিব শাকিল বলেন, নতুনের প্রতি পৃথিবীর সব মানুষেরই আগ্রহ বেশি থাকে। তাই ওয়েব সিরিজ কিংবা ওয়েব সংস্কৃতি মানুষ ধারণ করছেও খুব দ্রুত। তবে কাজের মান, কনটেন্ট, গল্পের ধারাবাহিকতার ওপর নির্ভর করবে এই মাধ্যমে টিকে থাকার হিসাব। আশার কথা হলো মহামারিতে যখন সবকিছু স্থবির, আমরা তখন বিনোদনের নতুন দুয়ারের উন্মোচন করতে পেরেছি। আমি আমার নির্মিত ওয়েব সিরিজ “কিস অব জুডাস” নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী। এখন দর্শকেরা দেখে বলবেন কাজটি কেমন হলো। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বিঞ্জে এটি মুক্তি পেয়েছে।’

কথা হলো তানিম রহমান অংশুর সঙ্গে। তিনি একজন বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন পরিচালক এবং সম্পাদক। তিনি ‘ন ডরাই’ চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি বর্তমান সময়ের ডিজিটাল বিপ্লব নিয়ে বলেন, ‘ওয়েব সিরিজ বলেন আর ওয়েব ফিল্ম, এখন কাজ করার স্বাধীনতা বেড়েছে। আগে কনটেন্টে ফিল্মি ভাবটা বেশি থাকত কিন্তু এখন জীবনবাদী গল্প বেশি আসছে, দর্শক এই ধরনের গল্পে বেশি ঝুঁকছেন। তবে বড় পর্দায় সিনেমার সঙ্গে ঘরে বসে সিনেমা দেখার তুলনা করা ভুল হবে। দুইটা দুই টেস্ট। যেহেতু চলছে লকডাউন, তাই বিনোদনের অভাব পূরণ করার প্রয়াস হতে পারে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো।’

গত বছর ‘মানিহানি’, ‘আগস্ট ১৪’, ‘কুহক’, ‘শিকল’, ‘তাকদীর’সহ বেশ কিছু ওয়েব সিরিজ আলোচনা তৈরি করেছে। ক্রমেই নির্মাতা ও দর্শক, দুই ক্ষেত্রেই ওটিটি প্ল্যাটফর্মের দিকে আগ্রহ বাড়ছে। এরই মধ্যে নতুন বছরের জন্য ওয়েব ফিল্ম ও ওয়েব সিরিজের ঘোষণা দিয়েছে বাংলা ভাষার বেশ কিছু ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। ‘জানোয়ার’, ‘ইউটিউমার’, ‘ট্রল’, ‘ছক’, ‘ডার্ক নাইট’, ‘জিরো টলারেন্স’, ‘অমানুষ’, ‘মানি মেশিন’ নামে ওয়েব ফিল্মের কথা শোনা যাচ্ছে। ওয়েব সিরিজ আসছে ‘মরীচিকা’, ‘বিলাপ’, ‘মাফিয়া গ্যাং’, ‘জাল’, ‘পাফ ড্যাডি’, ‘স্পেশাল সেভেন’ ইত্যাদি।

দেশজুড়ে ইন্টারনেট যত প্রসারিত হবে, ওয়েব কনটেন্ট ব্যবসার দিগন্তও উন্মোচিত হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। সামনে কী ধরনের বিনোদন কনটেন্ট আসতে পারে, মানুষ কী ধরনের কনটেন্ট পছন্দ করতে পারে, মানুষ তা আঁচ করতে পারছে। আগামী দিনে ওটিটিতে ওয়েব ফিল্ম ও ওয়েব সিরিজের ভালো ব্যবসা হবে।
বিঞ্জ আনছে বেশ কিছু ওয়েব সিরিজ ও ওয়েব ফিল্ম। বড় ক্যানভাসেও কিছু প্রজেক্ট নিয়ে পরিকল্পনা চলছে। শিল্পী ও শিল্পের যেন বিকাশ ঘটে, সে চেষ্টা বজায় রাখতে চায় বিঞ্জ।

তবে ওয়েব ফিল্ম এখনো বিপুল দর্শকের কাছে পৌঁছায়নি। কিন্তু শোবিজ সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করছেন, অচিরেই দর্শকদের বিরাট অংশ ওয়েব ফিল্ম দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়বে অনলাইনে। কারণ, তাদের প্রিয় নির্মাতাদের অনেকেই প্রচলিত সিনেমা হলের জন্য ছবি না বানিয়ে ঝুঁকে পড়েছেন ওয়েব ফিল্মের দিকে। তিনজন জনপ্রিয় পরিচালক ওয়েব ফিল্মে নিজেদের হাত পাকাতে এগিয়ে এসেছেন। যাদের প্রত্যেকের পরের ছবির জন্য ছিল দর্শকদের প্রতীক্ষা, সেই প্রতীক্ষাকে জিইয়ে রেখেও দর্শকদের খুশি করতে চলেছেন এই তিন পরিচালক। গিয়াসউদ্দিন সেলিম, শিহাব শাহিন এবং দীপঙ্কর দীপন আর রুপালি পর্দার জন্য ছবি করছেন না। তারা সবাই ছবি করছেন অনলাইনের জন্য। নাটক নয়, টেলিফিল্ম নয়, ওয়েব সিরিজও নয়; ওয়েব ফিল্ম বানাচ্ছেন তারা। যে গল্প তারা বলতেন সিনেমা হলে, সেই গল্পই তারা তুলে দিচ্ছেন অনলাইনে। তিন পরিচালককে বড় পর্দার মতোই সাদরে গ্রহণ করবেন কি না দর্শকেরা, তার ওপরেই নির্ভর করছে ওয়েব ফিল্মের ভবিষ্যৎ। যদিও এখন পর্যন্ত এই ধারার জনপ্রিয়তার সম্ভাবনা ষোলো আনা।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়জীবনযাত্রাপ্রযুক্তি

‘কাস্টমারদের বিশ্বস্ততা অর্জন সবচেয়ে জরুরী’

করেছে Sabiha Zaman জুলাই ১৫, ২০২১

বিশ্বের অনেক দেশের মতোই বাংলাদেশও কঠিন সময় পার করছে। করোনাভাইরাস আমাদের সমাজ এবং অর্থনীতিকে থামিয়ে দিতে চাইছে। এ অবস্থায় জনস্বাস্থ্য নিরাপদ রেখে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে ই-কমার্সের বিকল্প নেই বলে মনে করেন আলেশা হোল্ডিংস লিমিটেডের ডিরেক্টর এবং অলেশামার্ট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাদিয়া চৌধুরী। বর্তমান পরিস্থিতি এবং ডিজিটাল উন্নয়ন নিয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে, সেসব কথার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উঠে এলো রোদসীর ডিজিটাল সংখ্যায়। সাক্ষাৎকারে- সুরাইয়া নাজনীন

রোদসী – বাংলাদেশে বর্তমানে ই-কমার্স সাইটগুলোর উপযোগিতা কেমন?
সাদিয়া চৌধুরী – বিশ্বের অনেক দেশের মতোই বাংলাদেশ একটি কঠিন সময় পার করছে। করোনাভাইরাস আমাদের সমাজ এবং অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে। দেশের অর্থনীতিসহ সবকিছু স্বাভাবিক করতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। এ অবস্থায় জনস্বাস্থ্য নিরাপদ রেখে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে হলে ই-কমার্সের মতো আর কোনো কার্যকর অপশন আমার মনে পড়ছে না।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের মানুষকে ই-কমার্সের দিকে প্রলুব্ধ করলে এ সেক্টরের উপযোগিতা বেড়ে যাবে না। এরকম জরুরি পরিস্থিতিতে একদম সময়মতো মানসম্মত সেবা দিতে হবে। এখন অনেক মানুষ অনেক জরুরি সেবার জন্য ই-কমার্সের সহায়তা নেবে। তাই এখনই যদি আমরা কেউ কেউ সময়মতো মানসম্মত সেবা দিতে না পারি, কাস্টমারদের মনে আসতে পারে অনাস্থা। তখন ই-কমার্স হেরে যাবে, জনগণের আস্থাও হারাবে। এমনটা যেন কিছুতেই না হয়।

আলেশা হোল্ডিংস লিমিটেডের ডিরেক্টর এবং অলেশামার্ট লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাদিয়া চৌধুরী।

 

রোদসী – আলেশা মার্টের বিশেষত্ব কী?
সাদিয়া চৌধুরী – নিউ জেনারেশন ই-কমার্স সাইট আলেশা মার্ট কাস্টমাইজড সেবার মাধ্যমে ঝামেলাহীন দ্রুত অনলাইন কেনাকাটা নিশ্চিত করেছে। ই-কমার্স নিয়ে দেশের মানুষের মনে যে কিছুটা নেতিবাচকতা দেখা যায়, তা আলেশা মার্টই দূর করতে পারবে বলে আমি জোর আশাবাদী।
আপনি লক্ষ্য করবেন, আর সব ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের মতো শুধুই ডিসকাউন্টের লোভ আমরা দেখাইনি। কাস্টমারদের জন্য বিশ্বস্ততার পাশাপাশি আমাদের এ উদ্যোগটি নিশ্চিত করেছে মানসম্মত পণ্য এবং দ্রুত ডেলিভারি।
দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার সুযোগ আমরা করে দিয়েছি। প্রায় ২২ হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা এ প্ল্যাটফর্মের হয়ে কাজ করতে পারছে। আমরা ফ্রিল্যান্সারদের জন্য কাজের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছি।
করোনাকালে যখন কাজ হারানো ভয়াবহ গল্প চারপাশে, তখন আলেশা মার্ট ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান করতে পেরেছে আলেশা মার্ট। এ প্ল্যাটফর্মে ৫০ হাজার মানুষ মানে কিন্তু ৫০ হাজার পরিবার। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও আমাদের এ উদ্যোগটি ব্যবহার করে লাভবান হচ্ছেন। একটি কঠিন সময়ে এতগুলো মানুষের ভালোর জন্য কিছু করতে পারাটা দিন শেষে আমার মনে শান্তি এনে দেয়।

রোদসী- গ্রহণযোগ্যতার জায়গা আলেশা মার্ট কতটুকু রাখতে পারবে বা পারছে বলে মনে করেন?
সাদিয়া চৌধুরী – আলেশা মার্ট তার কার্যক্রম শুরু করেছে মাত্র ছয় মাস আগে। এরকম উদ্যোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরী গ্রাহক আর বিক্রেতা, সবার সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলা। এটা ছাড়া এমন উদ্যোগ দীর্ঘসময় টিকিয়ে রাখা সম্ভব না। আমাদের এ উদ্যোগের মাঝেই আমাদের সম্মানিত গ্রাহক আর বিক্রেতাদের মনে আস্থা জন্মাতে পেরেছে। এখন আমাদের কাজ হবে সফলভাবে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আস্থা টিকিয়ে রাখা।
গ্রাহক ও বিক্রেতা জানে যে, তাদের প্রতি আমাদের সামাজিক দায়িত্ব রয়েছে। দায়িত্বপালনের পাশাপাশি আলেশা মার্ট ব্যবসা করতে চায়। সেই ভাবনা থেকেই করোনাকালে আলেশা মার্টের কাস্টমারদের জন্য আসছে বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সেবা। রেগুলার ও আইসিইউ সম্বলিত ৬টি অ্যাম্বুলেন্সের এ সেবায় আইপি ক্যামেরার মাধ্যমে সবসময় ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে থাকবেন। আমাদের কাস্টমার ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা, বীরাঙ্গনা, সিনিয়র সিটিজেনস এবং যেকোনো জরুরি সেবাদানকারি সংস্থা শর্তসাপেক্ষে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সেবাটি পেতে যাচ্ছেন।

রোদসী- আপনাদের নতুন একটি প্রজেক্ট ‘ইনস্ট্যান্ট স্যালারিজ’। এটা নতুন ও কার্যকরী। এ সম্পর্কে বলুন।
সাদিয়া চৌধুরী- আলেশা হোল্ডিংসের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘ইনস্ট্যান্ট স্যালারিজ’। মূলত সমাজের কম সুবিধাপ্রাপ্ত চাকরিজীবীদের কথা মাথায় রেখে আমরা এটি করেছি। করোনাকাল শুরু হওয়ার পর অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের এমপ্লয়িদেরকে সময়মতো স্যালারি দিয়ে উঠতে পারছে না। নানা কারণে এ পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেছে। এরকম সময় পার করতে গিয়ে ‘ইনস্ট্যান্ট স্যালারিজ’ শুরু করার কথা আমাদের মাথায় আসে। আমরা এ পরিস্থিতি সামলাতে পারি, যদি সবার হাতে তাদের সুবিধামতো সময়ে টাকা পৌঁছে দেয়া যায়। আমাদের আরেকটি উদ্যোগ ‘আলেশা সলিউশনসের’ ডেভেলপ করা এ সার্ভিস থেকে মাসের প্রথমেই নামমাত্র রেজিস্ট্রেশন ফি’র বিনিময় টাকা তোলা যাবে। ফলে মাসের শুরুতেই সবাই তাদের মাসের বড় খরচগুলো সামলে নিতে পারবেন। সম্পূর্ণ সুদমুক্ত এ ঋণসুবিধা ব্যবহার করে দেশের মানুষ তাদের জীবন টেনশনমুক্ত করতে পারবেন।
‘আলেশা সলিউশনস’ আরও গণমুখী কাজের মাধ্যমে দেশের আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে ইতিবাচক ছাপ ফেলতে আগ্রহী। এর মাধ্যমে ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল ব্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি, অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে আমরা গুণগত পরিবর্তন আনতে চাই। আমরা আমাদের কাস্টমারকে শুধুমাত্র সবচেয়ে আধুনিক সেবা দিয়েই থামতে চাচ্ছি না। বরং পরবর্তীতে সেবার ব্যবহারযোগ্যতাকে সর্বাধুনিক আর চলমান রাখা, আইটি ওয়ার্ল্ডে কাস্টমারকে তার চাহিদা অনুযায়ী দৃশ্যমান রাখা, সব মিলিয়ে কাস্টমারকে পুরোপুরি সন্তুষ্ট রাখতে বদ্ধপরিকর আলেশা সলিউশনস।
এক ঝাঁক মেধাবী ইঞ্জিনিয়ার আমাদের কাস্টমারদেরকে প্রায় সব ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং সেবা দিচ্ছেন। ‘আলেশা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের’ এ ইঞ্জিনিয়ারগণ জ্ঞানে, দক্ষতায় একদম হালনাগাদ। ঠিক এ মুহুর্তে তারা মানিকগঞ্জ ও টাঙ্গাইল জেলায় স্কুল আর রাস্তা তৈরির কাজ করছেন। তাদের সম্পর্কেও বিস্তারিত আমাদের ওয়েবসাইট থেকে জানতে পারবেন।
আমাদের আসন্ন আরেকটি উদ্যোগ ‘আলেশা ফার্মেসি’ মানসম্মত ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য নিয়ে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা সেবা দেবে। দেশের সিনিয়র সিটিজেনগণ এখান থেকে ওষুধ কিনতে পারবেন ফ্রি হোম ডেলিভারিতে। দেশের সূর্যসন্তান মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদেরকে আমরা ১০ শতাংশ ছাড়ে সেবা দেব। দ্রুতই দেশের ৬৪ জেলায় এ সার্ভিস আমরা নিয়ে যাব।

রোদসী- দেশের বিশাল জনগোষ্ঠী এখন অনলাইননির্ভর। এটা ডিজিটাল উন্নয়নের জন্য কি ইতিবাচক দিক?
সাদিয়া চৌধুরী- ১৯৭১এর মুক্তিযুদ্ধ দিয়ে গণমানুষের জন্য যে সমৃদ্ধ ও উন্নত জীবন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম শুরু হয়েছিল তা পূর্ণতা পাবে ডিজিটাল বাংলাদেশে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা ও তাঁর দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর একটি উন্নত দেশ গড়ার কাজ চলমান রেখেছেন। একটি সমৃদ্ধ জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সমাজ, ডিজিটাল যুগের জনগোষ্ঠী, জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু এ যাত্রা তাঁর একার বলে মনে করি না। দেশের একজন সচেতন মানুষ হিসেবে আমি মনে করি আমারও কিছু দায়িত্ব আছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আমরাও ভূমিকা রাখছি। আলেশা মার্টের মাধ্যমে দেশের যেকোনো অঞ্চলের মানুষ এখন যেকোনো পণ্য কিনতে পারবে। যেকোনো অঞ্চলের কাস্টমারের কাছেই আলেশা মার্ট পণ্য ডেলিভারি করে থাকে।


সরকারি-বেসরকারি সিংহভাগ কাজই ডিজিটালাইজেশনের আওতায় এনে ফেলেছে বর্তমান সরকার। দেশের প্রতিটি মানুষকেই অনলাইনের সুবিধার আওতায় আনা অচিরেই হয়তো সম্পূর্ণ হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের এ পথচলায় আমরাও আছি।

রোদসী- গ্রাহকের নানামুখী অভিযোগ থাকে, এগুলোকে কীভাবে দেখেন? আপনাদের চ্যালেঞ্জগুলো কী?
সাদিয়া চৌধুরী- আসলে দেশের ই-কমার্স সেক্টরে আগে থেকে তৈরি হয়ে থাকা কিছু পরিস্থিতির কনসিকোয়েন্স আমাদেরকেও মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এখানে আলেশা মার্টের কথাই বলবো আমি, দেরিতে পণ্য ডেলিভারি দেয়া এবং ভুল পণ্য ডেলিভারি দেয়া, এ দুটি অভিযোগের একটিও আমাদের এ উদ্যোগের বিরুদ্ধে নেই। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমরা পণ্য ডেলিভারি করি।
কাস্টমারদের যেকোনো অভিযোগ আমরা ইতিবাচকভাবে নিতে প্রস্তুত। আমাদের সিস্টেমে যদি এখনো কোনো ত্রুটি গাফিলতি থেকে থাকে, তা আমাদের চোখ এড়ালেও কাস্টমারদের চোখ কখনোই এড়াতে পারবে না। তাদের জন্য আলেশা মার্টের একটি কাস্টমার কেয়ার সেন্টার আছে। সেখানে তারা যেকোনো অনুসন্ধান, অভিযোগ ও পরামর্শ আমাদেরকে জানালে আমরা তা সাদরে গ্রহণ করি। আমাদের নিজেদেরকে ত্রুটিমুক্ত করে সবার সেরা হয়ে ওঠা সম্ভব তখনই, যখন কাস্টমারদের অভিযোগগুলোর সমাধান আমরা দিতে পারবো এবং এগুলোর পুনরাবৃত্তি বন্ধ করতে পারবো।
অল্প সময়ের মধ্যে চমৎকার সাফল্য অর্জন করায় আলেশা মার্ট তার কাস্টমার ও সরবরাহকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আন্তরিক চেষ্টা আর নিষ্ঠার জন্য এ প্ল্যাটফর্ম তার কর্মীদের প্রতিও কৃতজ্ঞ।
চ্যালেঞ্জের কথা যদি জানতে চান, আমি বলবো, এত অল্প সময়ে টিম আলেশামার্ট যে মান আর সাফল্য অর্জন করেছে তা ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ প্ল্যাটফর্ম খুব দ্রুত দেশিয় পণ্যের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ই-কমার্স হয়ে গড়ে উঠছে। আলেশা মার্ট থেকে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে কাস্টমারদের যে অভূতপূর্ব সাড়া, কোম্পানির প্রতি যে অবিচল বিশ্বাস, এটা আমরা কিছুতেই হারাতে চাই না।

 

০ মন্তব্য করো
1 FacebookTwitterPinterestEmail
আয়নাঘরএই সংখ্যায়জীবনযাত্রাপ্রযুক্তিরূপ ও ফ্যাশন

বিউটি সেক্টরেও ডিজিটাল বিস্ময়

করেছে Sabiha Zaman জুলাই ১৫, ২০২১

সুরাইয়া নাজনীন

চলছে অনলাইন সাইক্লোন। যে কোনো পণ্য আমরা ঘরে বসেই কিনতে পারছি। তবে এখন বেড়েছে দুর্দান্ত প্রতিযোগিতা। এটা অবশ্য ডিজিটাল বিপ্লবই বটে! ফ্যাশনে হোক আর বিউটি সেক্টরেই হোক, মানুষ এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি রুচিশীল। তাই উদ্যোক্তারা সময়ের প্রয়োজনে অনলাইন পেজগুলো আপডেট রাখে প্রতি মুহূর্তেই।

বিউটি সেগমেন্টের ক্ষেত্রে অনলাইন অনেক উপযোগী হয়ে উঠেছে। সত্যি বলতে গেলে বর্তমানে মানুষ অনলাইন পেজ থেকেই বিউটি সেগমেন্টের প্রোডাক্ট বেশি কিনে সাধারণ দোকানের তুলনায়। ফলে কাস্টমার যে রকম অনেক বেশি, কম্পিটেশনও অনেক বেশি। বলছিলেন ছুমন্তর পেজের কর্ণধার সাজিয়া আফরিন। তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ সাধারণ দোকানের পরিবর্তে অনলাইন থেকে বিউটি প্রোডাক্ট কেনা শুরু করেছে। তার কারণই হলো সাধারণ দোকানগুলোতে তারা মানসম্পন্ন প্রোডাক্ট পেত না। ফলে আমার মনে হয় অনলাইনে যারা ভালো করছে, তারা আসল মানের প্রোডাক্টই দিচ্ছে। এ কারণেই মানুষ অনলাইন থেকে এখন বেশি কিনছে। আমরা যেমন আমাদের বেশির ভাগ প্রোডাক্ট সাধারণত অস্ট্রেলিয়া ইমপোর্ট করি। ক্রেতারা চাইলে আনুমানিক সময় নিয়ে তাদের ভালো প্রোডাক্ট দেওয়ার চেষ্টা করি। বেশির ভাগ বিউটি প্রোডাক্টের মধ্যে বারকোড থাকে এবং বারকোড ব্যবহার করে কাস্টমার নিজেই চেক করে নিতে পারবে প্রোডাক্টটা অথেনটিক কি না।’

ছুমন্তরের কর্ণধার সাজিয়া আফরিন, তিনি থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। তিনি একজন প্রবাসী উদ্যোক্তা হয়ে দেশের মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে দেশ-বিদেশ কোনো বাধা নয়, তবে টেকনোলজির বিষয়টি ভালোভাবে আয়ত্ত করা জরুরি, বললেন সাজিয়া। পণ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, পণ্য যে দেশেরই হোক না কেন, বারকোড ব্যবহার করে সহজেই অথেনটিসিটি সম্পর্কে জানা সম্ভব, সুতরাং সব মানুষেরই বারকোডের মাধ্যমে কীভাবে পণ্যের অথেনটিসিটিটা বের করতে হয়, সেটা জেনে রাখা ভালো। তার মাধ্যমে আসল প্রোডাক্টের মান, নিশ্চয়তা সম্পর্কে খুব সহজে এ ধরনের সমস্যা এড়িয়ে চলা সম্ভব।

রামিসা, মেকআপ আরটিস্ট-ছুমন্তর

বর্তমানে অনলাইন বিউটি সেক্টরটা সবার জন্যই উপযোগী হয়ে উঠেছে। আগে যেমন বিউটি স্যালন ছাড়া বিশেষ বিশেষ কাজ করা যেত না। সাজ নিজে করার কথা ভাবাই যেত না। আর এখন প্রযুক্তির কল্যাণে ভালো মানের কিছু প্রোডাক্ট থাকলেই ঘরে বসে চট করে সেজে নেওয়া যায়। এতে সময় আর অর্থ দুটোই সঞ্চয় হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে এক্সপেরিমেন্টেরও সুযোগ থাকছে। এ ছাড়া আগের তুলনায় মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন হয়েছে। কী প্রোডাক্ট ব্যবহার করা হচ্ছে, প্রোডাক্টের মান কী রকম, কেমিক্যালের হার কেমন, এগুলো অর্গানিক কি না, এসব ব্যাপার নিয়েও তারা অনেক সচেতন হয়েছে।

ছুমন্তরের একজন প্রতিনিধি বলেন, ‘আমরা আমাদের পেজে বৈচিত্র্য রাখার চেষ্টা করেছি যেন মানুষ সব ধরনের স্কিন কেয়ার ও বিউটি রিলেটেড জিনিস আমাদের পেজে পায়। আমাদের যেহেতু অস্ট্রেলিয়ান বেইজড পেজ, তাই অস্ট্রেলিয়ার যে লোকাল ভালো ভালো কিছু ব্র্যান্ড আছে, যে ব্র্যান্ডগুলো বাজেট ফ্রেন্ডলি। আমাদের পেজে শুধু মেয়েদের প্রোডাক্ট পাওয়া যায় তা নয়, আমাদের পেজে মেয়েদের প্রোডাক্ট ছাড়াও ছেলেদের কিছু কিছু প্রোডাক্ট এখন নিয়মিত আছে, যদি তার চাহিদা সময়ের সঙ্গে বাড়তে থাকে তাহলে আমরা আরও বিস্তারিত ভাবব। এ ছাড়া আমাদের একটা পরিকল্পনা আছে, সেটা হলো আমরা শুধু স্কিন কেয়ার ও বিউটি রিলেটেড প্রোডাক্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাই না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমরা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সব জিনিস আমাদের পেজে আমরা নিশ্চিত করতে চাই।
আগামীর পৃথিবীটাই অনলাইনকেন্দ্রিক হয়ে যাবে, এখন আমরা যে রকম অনলাইনে শুধু অর্ডার করছি কিন্তু বিভিন্ন্ন সার্ভিসের জন্য এখনো মানুষ বাইরে যাচ্ছে কিন্তু আস্তে আস্তে এমন একটা সময় চলে আসবে, যখন মানুষ যে কোনো ধরনের সার্ভিসের জন্যই অনলাইনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে যাবে। যে কোনো ধরনের সার্ভিসের জন্য একটা ফোনকল করলে বা বললেই সেটা বাসায় এসে করে দিয়ে যাবে, এই ট্রেন্ডটা যদিও এখনই শুরু হয়ে গেছে, সামনেরটা আরও সমৃদ্ধ হবে এবং মানুষ আরও বেশি ব্যবহার করা শুরু করবে, আগামী দিনে আমরা আরও বেশি অনলাইন নির্ভরশীল একটি জীবনের মধ্যে চলে যাব। সুতরাং অনলাইনের সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক বেশি সমৃদ্ধ হবে।’

সাজিয়া আফরিন, স্বত্বাধিকারী,ছুমন্তর

‘অনলাইন বিজনেস কমিউনিকেশন যেহেতু একেবারেই ভার্চ্যুয়ালি হয়, সে কারণে মাঝে মাঝে কিছু কমিউনিকেশন গ্যাপের সৃষ্টি হয়। আর সাধারণ দোকানে পণ্য বিক্রি করা এবং কেনার জন্য কনভিন্স করা যতটা সহজ, অনলাইন বিজনেসে অনেক মানুষের কাছে প্রোডাক্ট পৌঁছালেও, মানুষকে প্রোডাক্টটা কেনার জন্য কনভিন্স করা একটু কঠিন। এ ছাড়া পধংয-ড়হ-ফবষরাবৎু ক্ষেত্রে যেহেতু আমাদের ডেলিভারি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ডিলিংস থাকে, তবে মাঝে মাঝে একটু সমস্যা হয়। এ ছাড়া এফ-কমার্স দিন দিন অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এস-কমার্স রিলেটেড ফিচার এবং সুবিধা যদি সৃষ্টি করা হয়, তাহলে আমার মনে হয় ই-কমার্সের জগতে বড় ধরনের একটা পরিবর্তন আসবে এবং মানুষ আরও বেশি উৎসাহিত হবে এবং যারা কাজ করছে তাদের কাজ করার ধরন এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়ন প্রসারিত হবে,’ বললেন সাজিয়া।

সুমাইয়াস বিউটি বক্সের কর্ণধার সুমাইয়া সুমু

ই-কমার্স সেক্টর এখন সব কাজের ক্ষেত্রেই সুফল বয়ে আনছে, বিউটি সেক্টরেও এই সিস্টেমটা এখন উপযোগী ভূমিকা পালন করছে। করোনায় বিউটি পারলার সব থেকে মহামারির ধাক্কা সামলাতে পিছিয়ে ছিল। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছুটা হলেও তারা সামলে উঠেছে এবং এক্সপার্টরা অনলাইনে তাদের কাজকে তুলে ধরতে সক্ষম হচ্ছে, অনেকে তো আবার অনলাইনে বিউটি সেক্টরের বিভিন্ন কোর্সও করাচ্ছেন।
করোনা মহামারিতে বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, পারলারের ৯৯ ভাগ কর্মী নারী। করোনার প্রভাবে সবচেয়ে বেশি অর্থনৈতিকভাবে বিউটি সেক্টরের লোক, মানে আমরাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি এবং হচ্ছেও বললেন বিউটি এক্সপার্ট সুমাইয়া সুমু। তিনি আরও বলেন, এখন মানুষ পারলারে গিয়ে সার্ভিস নিতে ভয় পায় এবং এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেশি থাকায় কাস্টমারও কমে গেছে। আগে বিয়েতে মেয়েরা পারলার থেকে সাজত, করোনা পরিস্থিতিতে বেশির ভাগই বাসায় নিজেরা যতটা পাওে, ততটা মেকআপ করেই বিয়ের পিঁড়িতে বসছে।

সুমাইয়াস বিউটি বক্সের কর্ণধার সুমাইয়া সুমু বলেন, ‘মানুষের চাহিদা সময়ের সঙ্গে বদলে যায়, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন ফ্যাশনপ্রিয় মানুষেরা নিজেরাই তাদের চাহিদা অনুযায়ী ইউটিউব দেখে মেকআপ করে, এটা তারা পছন্দ করে। নিজেদের সময়টাও অনেক ক্ষেত্রে বেঁচে যায়। এটাতে খরচ কম, এটা আসলে বলা চলে না। কারণ, ব্র্যান্ড মেনে যদি কেউ প্রোডাক্ট ইউজ করে, তাহলে খরচ কম এটা কেউ বলতে পারবেন না।’

সুমাইয়া সুমু

ই-কমার্স সাইট এখন যেভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, তাতে আমি মনে করি, সামনের পৃথিবীতে আসলে প্রতিটি কাজ অনলাইনভিত্তিক হয়ে যাবে। তবে অনলাইনে ঘরে বসে সব সুবিধা পাওয়া যায় না, সরাসরি কিছু সার্ভিস থাকে, যেগুলোর জন্য সশরীর উপস্থিত হতে হয়। যেমন চুল রিবন্ডিং, ফেসিয়াল, ব্রাইডাল মেকওভার এসব কাজের ক্ষেত্রে অনলাইন সেবা প্রদান সম্ভব হয় না। এ ক্ষেত্রে অনলাইন সার্ভিস দেওয়া আসলে সম্ভব হয় না।
অফলাইন বিউটি সেক্টর এখন আগের থেকে অনেক উন্নতি করেছে, এখন যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন সার্ভিসে হাতের পাশাপাশি ইলেকট্রনিকস মেশিন ব্যবহার করা হয়, যেগুলো আগে ছিল না। এ ছাড়া যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজেও ভিন্নতা এসেছে।
শুধু বিউটি সেক্টর নয়, দেশ-বিদেশের সব সেক্টরই একসময় অনলাইনে ডাইভার্ট হয়ে যাবে, এমনটাই ধারণা ডিজিটাল বিশেষজ্ঞদের।

০ মন্তব্য করো
1 FacebookTwitterPinterestEmail
.প্রযুক্তিসম্ভাবনাসাফল্য

ই-ক্যাবের নেতৃত্বে ডিজিটাল বিপ্লব

করেছে Suraiya Naznin জুলাই ১৫, ২০২১

দেশের ই-কমার্স সেক্টরের উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। নতুন উদ্যোক্তা তৈরির পাশাপাশি এ সেক্টরের ব্যবসায়ীরা ব্যবসার ক্ষেত্রে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, সেগুলো সমাধানে কাজ করছেন তারা। উদ্যোক্তাদের দক্ষ করে তুলতে নানা বিষয়ে নিয়মিত কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ব্লগ সাইটের মাধ্যমেও উদ্যোক্তাদের তারা বিভিন্ন সহায়তাও দিচ্ছেন। ফলে প্রসারিত হচ্ছে ই-কমার্স, সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র।
বাংলাদেশে ই-কমার্স শুরু হয়েছে নব্বই দশকের শেষ ভাগে। প্রথম দিকে ধীরগতি থাকলেও গত পাঁচ বছরে এটি দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে মানুষ দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল। ফলে এই সময়ে এর চাহিদা আরও অনেক বেড়েছে।

ই-ক্যাবের কার্যক্রম নিয়ে ই-ক্যাবের সহসভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন শিপন বলেন, জাতীয় বাজেটে ৯ দফা প্রস্তাবনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে ই-ক্যাবের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল এনবিআর সভাকক্ষে এনবিআর চেয়ারম্যানকে গত ৪ মার্চ ই-ক্যাবের দাবিসমূহের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে। ট্রেড লাইসেন্স অ্যাক্ট ২০১৬ সংশোধন করে ই-কমার্স সংযুক্ত করেছে। ই-কমার্স ট্রেড লাইসেন্স ন্যূনতম ফিস ধার্য করা ও অফিস ঠিকানার বাধ্যবাধকতা রহিত করাসহ সার্বিক শর্ত সহজীকরণ করছে।
এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পেশ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অতি শিগগির ট্রেড লাইসেন্স অ্যাক্ট ২০১৬ সংশোধন করে সহজ শর্তে ই-কমার্স সংযুক্তির ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ‘ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা ২০২১’ প্রণয়ন করছেন।

সাহাব উদ্দিন শিপন

এ বিষয়ে ই-ক্যাব সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহকে খসড়া এসওপির কপি প্রেরণ করেছে। যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের মতামত দিয়েছে, সেগুলো সংযোজন করা হয়েছে এবং অভিজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে ইতিমধ্যে ই-ক্যাবের প্রস্তাবনা পেশ করেছে। শিগগিরই এ নির্দেশিকা বাস্তবায়ন হবে। এটা বাস্তবায়ন হলে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে। তাতে ব্যর্থ হলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মূল্য ফেরত দিতে হবে।

ই-ক্যাবের ভূমিকা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এমনকি আইসিটি নীতিমালায় ই-ক্যাবের বাস্তবায়নযোগ্য কাজের একটা বড় অংশ ই-ক্যাব বাস্তবায়ন করেছে। এবং কিছু বিষয় সংশোধনের জন্য প্রস্তাব পেশ করেছে। বাকিগুলো বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে।

ই-ক্যাব সদস্যদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়সীমা নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে এবং যৌক্তিকতা তুলে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভা আয়োজন করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট কথা বলছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় ঊঝঈজঙড সেবা উন্নয়নে কাজ করছে। ঊঝঈজঙড হচ্ছে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে অনলাইন পেমেন্টে প্রদত্ত ক্রেতার টাকা সরাসরি বিক্রেতার কাছে না গিয়ে ঊঝঈজঙড তে জমা থাকে।

যখন ক্রেতা সাত দিনের মধ্যে কোনো অভিযোগ না করে কেবল তখনি বিক্রেতা বা মার্কেটপ্লেস বা অনলাইন শপ টাকা পায়। এতে করে প্রতারণার সুযোগ থাকে না বা পণ্য ডেলিভারি না দেওয়া, ভুল পণ্য দেওয়া এগুলোর সুযোগ থাকে না। তাই এটা বাস্তবায়ন হলে অনলাইন ক্রেতার আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে একটি সভা আহ্বান করে। তাতে ই-ক্যাবের প্রস্তাব অনুসারে একটি কমিটি গঠন করা হয় এবং ঊঝঈজঙড সেবা চালুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ই-কমার্স খাতে সুষম প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরিতে কাজ করছে ই-ক্যাব। এ বিষয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনের সঙ্গে প্রাথমিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিশনকে এ বিষয়ে নীতি পলিসি তৈরিতে সাহায্য করছে ই-ক্যাব। এটা বাস্তবায়িত হলে অস্বাভাবিক অফার দেওয়ার পথ থাকবে না।

সাহাব উদ্দিন শিপন আরও বলেন, গ্রামীণ ও প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের জন্য লজিস্টিক ও অন্যান্য সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সঙ্গে কাজ করছে ই-ক্যাব। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ই-কমার্স অকুপেশন স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করছে। ই-কমার্স সেক্টরের কর্মী ও পেশাজীবীদের বিভিন্ন পেশা এখনো সরকার স্বীকৃত হয়নি। তাদের পেশার মান ঠিক করা ও স্বীকৃতির জন্য জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষেও কাছে প্রস্তাবনা পেশ করেছে ই-ক্যাব। যা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিবেচনাধীন।

তা ছাড়া চলতি বছর ২০২১ সালে সীমিত চলাচল ঘোষণার শুরুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আইসিটি ডিভিশনের অনুমতির মাধ্যমে স্টিকার দিয়ে সদস্য প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা সচল রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে ই-ক্যাব। ই-ক্যাবের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে সাহাব উদ্দিন শিপন বলেন, দেশের সমস্ত ই-কমার্স সাপ্লাই প্রক্রিয়া একটি অভিন্ন চেইনের মধ্যে নিয়ে আসার জন্য পরিকল্পনা করা হ”েছ। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মধ্যে নিয়ে আসতে চায় ই-ক্যাব। ই-কমার্স-সংক্রান্ত সব সেবাকে একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিসের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। ক্রসবর্ডার ই-কমার্সের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানিযোগ্য সব ই-কমার্স পণ্য অভিন্ন চেইনের মাধ্যমে বিদেশে প্রেরণের পথ সুগম করার পরিকল্পনা আছে।

গ্রন্থণা সুরাইয়া নাজনীন

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়জীবনযাত্রাপ্রযুক্তিবিশেষ রচনা

ডিজিটাল লাইফস্টাইল

করেছে Sabiha Zaman জুলাই ১৩, ২০২১

 

হিটলার এ হালিম

ধরা যাক, একজন পর্যটক যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় বেড়াতে আসবেন। তিনি নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডের বাসা থেকে জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে এলেন উবারে চেপে। ঢাকায় নেমে তিনি ডাটা (ইন্টারনেট) রোমিং করা স্মার্টফোন চালু করে উবার ডাকলেন। উঠলেন বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেলে। দিন দশেক বাংলাদেশ ঘুরেফিরে আগে থেকে গন্তব্য ঠিক করা দিল্লি যাবেন। ইচ্ছা তাজমহল দেখার। পকেট থেকে স্মার্টফোন বের করে তার নির্ধারিত এয়ারলাইনসে চেকইন করলেন। আবারও উবার ডেকে বিমানবন্দরে গিয়ে দিল্লির বিমান ধরলেন। দিল্লি নেমে উবার ডেকে হোটেলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলেন। একটি ডিজিটাল ডিভাইস তার যাত্রাপথকে কত সহজ করে দিয়েছে। জীবনযাপন স্টাইলই বদলে দিচ্ছে। এমন শতেক উদাহরণ দেওয়া যাবে ডিজিটাল লাইফ স্টাইলের।

কখনো কখনো স্মার্টফোন জানাচ্ছে, তুমি এত কিলোমিটার হেঁটেছ (স্টেপ), তোমার ক্যালরি বার্ন হয়েছে এতখানি। তুমি অনেক সময় ধরে ল্যাপটপে বুঁদ হয়ে আছো, সেটাও স্মার্টফোন খেয়াল করছে। হাতের স্মার্ট ওয়াচ জানিয়ে দিচ্ছে এখন তোমার কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করা উচিত বা এবার এক গ্লাস পানি পান করতে হবে তোমাকে। আরও অনেক কিছু তুমি পাবে ডিজিটাল ডিভাইস থেকে। হাতের ডিজিটাল ডিভাইসটি তোমার ডিজিটাল জীবনধারাই কখন বদলে দিয়েছে, তুমি নিজেও হয়তো টের পাওনি।

ব্যাংকও এখন হাতে মুঠোয়। হিসাব খোলার জন্য এখন আর ব্যাংকে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করতে হচ্ছে না। নিউ নরমালে কত কিছুই না হচ্ছে। ব্যাংক পছন্দ করে তাদের একটা অ্যাপ ডাউনলোড করে মোবাইলেই খুলে ফেলা যাচ্ছে ব্যাংক হিসাব। ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠানো যাচ্ছে বিভিন্ন হিসাবে। আবার মোবাইল ব্যাংকিং খোলা হিসাবে (বিকাশ বা নগদ) টাকা আনাও (অ্যাডমানি) যাচ্ছে। সেই টাকা দিয়ে সন্তানের স্কুলের বেতন, গৃহশিক্ষকের বেতন, বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধ করা যাচ্ছে। এমনকি গৃহকর্মীর বেতনও দেওয়া যাচ্ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। নগদ, বিকাশ, রকেট, উপায়, টিক্যাশ, এম ক্যাশ, শিওর ক্যাশ কত নামের এমএফএস সার্ভিস এখন চালু আছে। তোমার পক্ষে যেটাকে সহজ মনে হয়, সেটার অ্যাপ মোবাইলে নিয়ে নাও। ঘরে বসে স্বস্তিতে জীবন কাটাও। করোনা মহামারিতে বাইরে বের হওয়ার উপায় নেই। ঈদের সালামি দিতে চাও কিন্তু ব্যাংকে গিয়ে নতুন, চকচকে নোট নিতে পারছ না। কোনো সমস্যা নেই। ঈদের সালামি দেওয়া যাচ্ছে। ডিজিটাল উপায়ে। বিকাশ সালামি দেওয়ার দারুণ এক কৌশল চালু করেছে।

আর ঘরে বসে কেনাকাটার জন্য আছে শতেক, এমনকি হাজারো ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। পণ্য পছন্দ করে অর্ডার করে ঘরে বসেই পেয়ে যাচ্ছ প্রয়োজনীয় সবকিছু। দেশীয় ই-কমার্সে বিগত বছরগুলোতে প্রবৃদ্ধি ছিল ২৫ শতাংশ, গত বছর তা ৭০-৮০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে ৩০০ শতাংশও প্রবৃদ্ধি ঘটেছে বলে জানিয়েছে ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব। দেশে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় ধাপের লকডাউন শুরু হয় দেশে। আবারও ই-কমার্স খাত বড় একটা লাফ দিয়েছে। বিশেষ করে ঢাকায় গ্রোসারি পণ্যে এই আগ্রহটা বেশি দৃশ্যমান। তবে ই-কমার্সের এই বড় লাফের মূল অংশীদার ঢাকা। ই-কমার্সের বেশি উত্থান ঢাকাতেই।
ই-কমার্সের সাফল্যের কারণে দেশে কুরিয়ার সার্ভিস, ফুড ডেলিভারি সার্ভিস আলোর মুখ দেখেছে। করোনার এই কঠিন সময়ে ই-কুরিয়ার, পেপারফ্লাই, রেডেক্স কুরিয়ার সার্ভিস খুবই ভালো করছে এ খাতে। এ ছাড়া ফুড পান্ডা, পাঠাও ফুড, সহজ ফুড, ই-ফুড, হাংরিনাকির এখন জয়জয়কার। সার্ভিস ডেলিভারি দিয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। এদিকে ফুড ডেলিভারিও বেড়েছে। অর্ডারের পরিমাণ স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেড়েছে অন্তত ৩০-৩৫ শতাংশ। ফুড ডেলিভারিতে এগিয়ে আছে ফুড পান্ডা। পাঠাও, সহজের রাইড শেয়ারিং বন্ধ থাকলেও ফুডসহ অন্যান্য সেবা চালু আছে। ই-ফুডও গ্রোসারি ডেলিভারিতে অনেক এগিয়েছে।

অ্যাপস আমাদের জীবনকে আমূল বদলে দিয়েছে। ঘুম থেকে উঠতে অ্যাপ এবং ঘুমাতে যাওয়ার সময়ও অ্যাপ ব্যবহার হচ্ছে। জীবন সাজাতে এবং জীবন বাঁচাতে এখনো অ্যাপের কোনো জুড়ি নেই। কোথাও গিয়ে কাক্সিক্ষত জায়গা খুঁজে পাচ্ছ না, গুগল ম্যাপস চালু করে দাও। পেয়ে যাবে। উবারের কথা আগেই বলেছি। বাংলাদেশে এখন ৪ কোটি ৮০ লাখ গ্রাহক ফেসবুক ব্যবহার করে, যার বেশির ভাগই অ্যাপের মাধ্যমে। করোনা শুরুর আগে বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারী ছিল প্রায় ৪ কোটি। ওটিটি (ওভার দ্য টপ) অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ সাড়ে তিন কোটি, ভাইবার এ দেশের ২ কোটির বেশি মানুষ ব্যবহার করে। এমন কিছু নেই যে তা এখন অ্যাপে পাওয়া যাবে না। বাড়ি বদল করতে চাও? সেবা এক্সওয়াইজেড বা হান্ডিমামার অ্যাপ নামিয়ে ফেলো। বিশেষ ছাড়ে তাদের সেবা পাবে। কোনো ঝামেলা ছাড়াই বাসা বদল হয়ে যাবে। পুরোনো ফার্নিচার গ্রামের বাড়ি পাঠিয়ে দেবে, ট্রাক লাগবে অ্যাপ নামিয়ে ফেলো। অর্ডার করো। সময়মতো তোমার বাসার নিচে ট্রাক এসে ভেঁপু বাজাবে। শেয়ার কেনাবেচা করতে চাও? ব্রোকারেজ হাউসে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। অ্যাপ নামিয়ে নাও। হাতের মোবাইল ফোন দিয়ে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবে। এমনকি রাস্তায় বের হয়েছ কাজে। হঠাৎ প্রকৃতি ডাক দিল। সাড়া দিতে হবে। অবস্থা বেগতিক। পাবলিক টয়লেট খুঁজে পাচ্ছ না? গুগলে গিয়ে সার্চ দাও, পেয়ে যাবে। ঢাকা শহরে সুন্দর সুন্দর টয়লেট হয়েছে। প্রয়োজনে খুঁজে না পেলে গুগল ম্যাপসের সহায়তা নিতে পারো। ফলে অ্যাপস নিয়ে আর বলাই বাহুল্য।

করোনার দিনে সুরক্ষা নিয়ে এসেছে টেলিমেডিসিন। এখন ডাক্তার দেখাতে ঘরের বাইরে যাওয়ার দরকার নেই। ঘরে বসেই বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখিয়ে নিতে পারো। প গড় বা বাগেরহাটের রামপাল থেকে ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় আসার প্রয়োজন নেই। নিজের এলাকা থেকেই ডাক্তার দেখাতে পারবে। করোনাকালে লোকজন বাসাবাড়ির বাইরে এসে অনেকেই ডাক্তার দেখানো বন্ধ করে দিয়েছে।
দেশে ৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান টেলিমেডিসিন সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সরকারের স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩, পালস হেলথকেয়ার সার্ভিসেস, লাইফস্প্রিং, অর্ক হেলথ লিমিটেড, সিনেসিস হেলথ, টনিক, ডিজিটাল হসপিটাল, প্রাভাহেলথ ইত্যাদি।
বেসিস (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস) সূত্রে জানা গেছে, দেশে টেলিমেডিসিনের বাজার প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার। প্রতিদিন ২০ হাজারের বেশি রোগী টেলিমেডিসিন সেবা নিচ্ছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিরাও দেশের টেলিমেডিসিন সেবা নিতে পারছেন। তবে দেশে হাইব্রিড হাসপাতালের সংখ্যা বাড়লে এই বাজার আরও বড় হবে। করোনাকাল, বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন রোগের উদ্ভব, চিকিৎসাব্যবস্থার কারণে দেশের হাসপাতালগুলো হাইব্রিড ব্যবস্থায় গেলে দেশের চিকিৎসাসেবা আরও ভালো হবে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা যাতে পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য অনলাইনে ক্লাস চালু হয়েছে। বিশেষ করে শহুরে এলাকায় অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। গ্রাম বা মফস্বল শহরগুলোতে অনলাইনের সুযোগ না থাকায় সেখানে বাংলাদেশ টেলিভিশনের লাইভ ক্লাসের সুবিধা নিতে পারছে শিক্ষার্থীরা। ক্লাস শেষে সেসব পাঠ অনলাইনে তুলে দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা কোনো না কোনো মাধ্যম থেকে সেসব দেখার সুযোগ পাচ্ছে। শহরের ছেলেমেয়েরা এখন সকালে ঘুম থেকে উঠে নাশতা করে স্কুল ড্রেস পরে ল্যাপটপ বা মোবাইলের সামনে বসছে ক্লাস করতে ও প্রান্ত থেকে শিক্ষকেরা পড়াচ্ছেন, পড়া দিচ্ছেন, পড়া আদায় করেও নিচ্ছেন। এমনকি পড়া শেষ পরীক্ষাও নিচ্ছেন। ক্লাস চলাকালে মোবাইল বা ল্যাপটপের ক্যামেরা অন রাখতে হচ্ছে, যাতে করে শিক্ষার্থীরা ফাঁকি দিতে না পারে সে জন্য।

এ সময়ে অনলাইন ক্লাস ও অনলাইন মিটিংয়ের জন্য দেশে এই সময়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে জুম, মাইক্রোসফট টিমস, গুগল মিট, গুগল ক্লাসরুম, হাউস পার্টি, ওয়েবেক্স ইত্যাদি অ্যাপভিত্তিক এই ভিডিও কলিং সফটওয়্যারগুলো। তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে মেসেঞ্জার রুম। দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান আইএসপিএবি ও তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রেনিউর ল্যাব সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মোবাইলে গেমস খেলা খুব বেড়েছে এ সময়। মোবাইল গেমস বা অনলাইন গেমস বরাবরই জনপ্রিয় ছিল। করোনাকালে ছেলেপুলেদের বাইরে যাওয়ার সুযোগ কম। ফলে সময় কাটাতে বাবা-মায়েরা তাদের হাতে মোবাইল তুলে দিয়েছিলেন। এখন তারা মোটামুটি মোবাইলে বা গেমে আসক্ত। গেম থেকে তাদের ফেরানো বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। এ ঢেউ শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র ছড়িয়েছে। বন্ধের দাবি উঠেছে ফ্রি ফায়ার, পাবজির মতো গেমগুলোর।
দেশে এ সময় শীর্ষে আছে পাবজি, ফোর্টনাইট, ফ্রি-ফায়ার, ভ্যালোরেন্ট গেমস। আইএসপিগুলোর সূত্রে জানা গেছে, এ সময়ে খুব খেলা হচ্ছে পাবজি, ফোর্টনাইট, ফ্রি-ফায়ার, ভ্যালোরেন্ট, লিগ অব লেজেন্ড, ফিফা-২০২০, কাউন্টার স্ট্রাইক ইত্যাদি গেমস। দেশে এই মুহূর্তে গেমসে ব্যয় হচ্ছে সাড়ে ৫০০ জিবিপিএসর বেশি (আপ ও ডাউন স্ট্রিম মিলিয়ে) ব্যান্ডউইথ। করোনাকালের আগে যার পরিমাণ অনেক কম ছিল। তবে সবাই যে গেমস খেলে সময় নষ্ট করছে, তা নয়। অনেক শিক্ষার্থী এ সময় ইউটিউব দেখে ভিডিও বানানো শিখে ফেলছে। নিজেরাই ভিডিও শ্যুট করে বানিয়ে ফেলছে মজার বা হাসির কিছু একটা। শিক্ষামূলক ভিডিও থাকছে। নিজেই ইউটিউবে চ্যানেল খুলে ছেড়ে দিচ্ছে। লাইক, ভিউ বাড়ছে। তাদের আলাদা সক্ষমতার প্রকাশ হচ্ছে। কেউ কেউ ছবি সম্পাদনা শিখে ইমেজ প্রসেসিংয়ের কাজও করছে।

করোনাকালে লকডাউন দিলে দেশে নতুন এক সংস্কৃতির জন্ম নেয়। ওয়ার্ক ফ্রম হোম বা বাসা থেকে কর্মক্ষেত্রে কানেক্টেড থাকা। মিটিং, অফিস ওয়ার্ক, পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন সবই এখন ঘরে বসেই হচ্ছে। অফিসের কর্মীরা ঘরে ফরমাল শার্ট পরে মিটিং করছেন, হয়তো পরনে লুঙ্গি নয়তো শর্টস! তাতে কী। ক্যামেরায় না এলেই তো হয়। অনেকে ঘরের কাজ সারতে সারতে অফিস করেন। আর এই সুযোগে অনেক প্রতিষ্ঠান অফিস ছেড়ে দিয়ে কর্মীদের বাসায় থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে অফিসের ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, পানি ও অন্যান্য বিল, অফিস খরচ সেভ হচ্ছে। পরিচলন ব্যয় (ওপেক্স) কমে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো লাভের মুখ দেখছে। আর যেসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল, সেগুলো টিকে যাচ্ছে। অনেকে অফিস স্পেস কমিয়ে ফেলছে খরচ কমানোর জন্য। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান চলে যাচ্ছে কো-স্পেসে। এটা হলো অন্য একটা অফিসে নিজেদের জায়গা বেছে নেওয়া। অফিসের জন্য সব আছে সেখানে। নতুন করে কোনো কিছু কেনার প্রয়োজন নেই। মাস শেষে শুধু বিল পরিশোধ করলেই হয়। কো-স্পেস ধারণা আগে থেকে থাকলেও করোনাকালে তা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ভালোভাবে দাঁড়িয়ে গেছে, যার পোশাকি নাম কো-স্পেস। প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দু-তিনজনের বসার ব্যবস্থা করে সবাইকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বাসায়। বাসা থেকে তারা কাজ করছে। নতুন এই সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হতে শুরু করেছে সবাই।


গত মার্চ মাসে দেশে মোবাইল সিমের সংযোগ সংখ্যা বাড়লেও কমেছে এপ্রিলে। লকডাউনের কারণে কমেছে সংযোগ সংখ্যা। মার্চে দেশের মোট মোবাইল সংযোগের সংখ্যা ছিল ১৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসি প্রকাশিত এপ্রিল মাসের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মোবাইল সংযোগের সংখ্যা ১৭ কোটি ৪১ লাখ। এক মাসের ব্যবধানে সংযোগ কমেছে ৫ লাখ ৩০ হাজার। যদিও প্রতিবেদনে মোবাইল সংযোগ বাড়া, কমার কোনো কারণ উল্লেখ নেই।

বিটিআরসির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মার্চে দেশের মোবাইল সিমের সংযোগ সংখ্যা ছিল ১৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার। ফেব্রুয়ারি মাসে যা ছিল ১৭ কোটি ৩৩ লাখ ৫৭ হাজার। মার্চে এক মাসের ব্যবধানে এই সংখ্যা বাড়ে ১২ লাখ ৭৩ হাজার।
অন্যদিকে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীও কমেছে, বিশেষ করে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কমেছে ৭ লাখ ১০ হাজার। বিটিআরসির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এ বছরের মার্চ মাসের শেষে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১১ কোটি ৬১ লাখ ৪০ হাজারে। এপ্রিলের শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৫৪ লাখ ৩০ হাজারে। যদিও ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১১ কোটি ২৭ লাখ ১৫ হাজার। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গ্রাহক বাড়েওনি, কমেওনি। মার্চে যা ছিল, এপ্রিলেও তাই, ৯৮ লাখ ১০ হাজার।

এপ্রিলে দেশের তিন মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংকের সংযোগ সংখ্যা কমেছে। বেড়েছে শুধু টেলিটকের। মোবাইল সংযোগ কমার শীর্ষে রয়েছে রবি। অপারেটরটি এক মাসে গ্রাহক হারিয়েছে ২ লাখ ৯০ হাজার। গ্রামীণফোন হারিয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার। আর বাংলালিংক হারিয়েছে ৬০ হাজার সংযোগ। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের সংযোগ সংখ্যা এপ্রিলে বেড়েছে ৬০ হাজার। মার্চে অপারেটরটির গ্রাহক ছিল ৫৬ লাখ ৯০ হাজার, এপ্রিলের শেষে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৭ লাখ ৫০ হাজার।
সরকারিভাবে বলা হচ্ছে দেশে বর্তমানে ২০৩৪ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ব্যবহৃত হচ্ছে। যা এক বছরের কিছু সময় আগে ছিল ১০৫০ থেকে ১১০০ জিবিপিএস। করোনাকালে মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়ায় দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে। এক বছরে ব্যবহার বেড়েছে দ্বিগুণ। যদিও আইএসপি ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে বর্তমানে ২৫০০-২৭০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ ব্যবহার হচ্ছে। দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গ্রাহক বর্তমানে দেশে প্রায় এক কোটি। এই সংখ্যক গ্রাহক দেশের মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ১৭ শতাংশ। কিন্তু এই গ্রাহকেরা দেশের মোট ব্যান্ডউইথের ৫৮ শতাংশ ব্যবহার করে।

ইন্টারনেটে ভালো রেজল্যুশনের মুভি দেখা, ইউটিউবে শিক্ষামূলক ভিডিও দেখা, অনলাইনে গেম খেলা, রান্নার অনুষ্ঠান দেখা, হালে নাটক দেখার পরিমাণ বেড়েছে। বাসাবাড়ির ইন্টারনেট ব্যবহারের চিত্র এটি। বাসায় ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার আগে গেমাররা জানতে চান ম্যাক্সিমাম ব্যান্ডউইথ কত পাওয়া যাবে? সিঙ্গাপুর, ইউরোপের বিভিন্ন অনলাইনের গেমস স্পটের ল্যাটেন্সি কেমন?

অনলাইন বা অ্যাপ স্টোরে নেটফ্লিক্স, হৈ চৈ, বঙ্গ, জি-ফাইভ অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও, বায়োস্কোপ, সিনেম্যাটিক নামের অ্যাপগুলো এখন বেশি খোঁজে বিনোদনপ্রত্যাশীরা। এসব অ্যাপের ডাউনলোডের হারও বেড়ে গেছে। টিভিতে নাটক দেখা হালে বেশি কঠিন হয়ে পড়েছে। বিজ্ঞাপনের অত্যাচারে অনুষ্ঠান হারিয়ে যাচ্ছে। তা থেকে মুক্তি দিচ্ছে দেশীয় এবং বিদেশি প্ল্যাটফর্মগুলো। কম বিজ্ঞাপন বা বিজ্ঞাপনবিহীনভাবে এসব অ্যাপে উপভোগ করা যাচ্ছে বিনোদনের নানান শাখা।

ছবি: সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়গ্রুমিংজীবনপ্রযুক্তি

ডিজিটাল সময়ে অনলাইন কোর্স

করেছে Sabiha Zaman জুলাই ১৩, ২০২১

সাবিহা জামান: করোনার জন্য দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাই ঘরে বসেই দিন পার করছে শিক্ষার্থীরা। এ সময়টা নষ্ট না করে অনেক শিক্ষার্থী স্কিল ডেভেলপমেন্টে ব্যস্ত। ডিজিটাল উন্নয়ন আর প্রযুক্তির ব্যবহারের ঘরে বসে বিশ্ব সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স করা অসম্ভব কিছু না। বিভিন্ন দেশিয় প্রশিক্ষণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও বিভিন্ন কোর্স করাচ্ছে। শুধু তাই নয় সরকারের উদ্যোগে এলইডিপি প্রজেক্টের মাধ্যমেও করানো হচ্ছে বিভিন্ন কোর্স। নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে জব মার্কেটের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছে শিক্ষার্থীরা।

পড়াশুনা শেষ এমন শিক্ষার্থীরা বসে নেই। লকডাউনে হোম অফিস যাদের তারাও নিজের দক্ষতা বাড়াতে ব্যস্ত। অনলাইন কোর্সগুলো স্কিল ডেভেলপমেন্ট করতে অনেক সাহায্য করছে আমাদের। গ্রাফিকস, এসইও, ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কিংবা অন্যান্য দরকারি কোর্স এখন অনলাইনেই করা সম্ভব। তাই করোনা ভাইরাসের সময়ে বসে না থেকে সময়ের সঠিক ব্যবহার করছে তরুণ থেকে মধ্য বয়সীরা। দেশের বাইরের কোর্সগুলো করে দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্যান্য দেশের শিক্ষার ধরণ সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাচ্ছে সহজেই।

এলইডিপি প্রোজেক্ট
ফ্রিল্যান্সিং এখন খুব জনপ্রিয় পেশা হয়ে উঠেছে। শুধু চাকরীর আশায় আর বসে থাকছে না এখনকার তরুণ-তরুণীরা। ঘরে বসেই তারা পেশা হিসেবে বেঁছে নিচ্ছেন ফ্রিল্যান্সিংকে। বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রকল্প (এলইডিপি) এর মাধ্যমে বহু শিক্ষার্থী বিভিন্ন কোর্স করছেন বিনামূল্যে। এলইডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০ দিনব্যাপী গ্রাফিকস ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট কোর্সে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এইচএসসি বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন যেকোন শিক্ষার্থী এই প্রশিক্ষণ অংশ নিতে পারে। এই করোনাকালিন সময়ে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী কোর্সগুলো করেছেন। কোর্স শেষে শিক্ষা সনদসহ নগদ অর্থ প্রদান করেছে বাংলাদেশ সরকার যাতে করে শিক্ষার্থীরা আরো বেশি আগ্রহী হয়। অনেকেই বর্তমানে দেশ ও দেশের বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করছেন ঘরে বসেই।

গুগল ডিজিটাল গ্যারেজ
যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৫ সালে ‘গ্রো উইথ গুগলপ্রকল্পের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে গুগল গ্যারেজ। নতুন উদ্যোক্তাদের বিনামূল্যে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সাথে পরিচিত করতেই মূলত তাদের এই উদ্যোগ। কয়েক কোটি মানুষ বিভিন্ন কোর্স করছেন গুগল ডিজিটাল গ্যারেজের মাধ্যমে। ডেটা অ্যান্ড টেকনোলজি, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে আছে ১৫২টি কোর্স। বিভিন্ন কোর্সের ভিডিও রয়েছে যা থেকে আগ্রহীরা জানতে শিখতে পারেন বিভিন্ন বিষয়। সাইন ইন করার পর তোমার ইচ্ছা মত যেকোন কোর্স করতে পারবে গুগল গ্যারেজ থেকে। কোর্স শেষে মিলবে সার্টিফিকেট। কয়েক কোটি মানুষ গুগল ডিজিটাল গ্যারেজে কোর্স করেছেন আর শিখছেন ঘরে বসেই।

কোর্সেরা
বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোর্স করার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে কোর্সেরা। এখান থেকে সহজেই বিভিন্ন কোর্স করতে পারবে। অনেক কোর্স করতে পারবে বিনামূল্যে সাথে থাকবে সার্টিফিকেট। ইংরেজি দক্ষতা, ডেভলেপমেন্ট স্টাডিজ, কন্টেন্ট রাইটিং, সাইকোলজি মতো কয়েকশ কোর্স রয়েছে কোর্সারাতে। সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা শিক্ষকদের করা রেকর্ডেড ভিডিও দেখে শিখতে পারে শিক্ষার্থীরা। যাতে শিক্ষার্থীদের সুবিধা হয় তাই রয়েছে ইংরেজি সাবটাইটেল। কিছু কোর্সের জন্য অর্থ ব্যয় করতে হলেও কোর্সেরা কোর্স করার জন্য সেরা।
এডেক্সে
অনলাইনে কোর্সের জন্য এডেক্স জনপ্রিয় সাইট। এটা অনেকটা কোর্সেরার মতো। কয়েক কোটি মানুষ এখান থেকে বিভিন্ন কোর্স করছে। ৪ থেকে ১২ সাপ্তেহের মত সময়ে বিভিন্ন কোর্স করতে পারে শিক্ষার্থীরা। বিনামূল্যে কোর্স করতে পারলেও মিলবে সার্টিফিকেট। বিশ্বের জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স করতে পারবে একদম বিনামূল্যে তাও আবার ঘরে বসে থেকেই। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র যেকোন বিষয়ের কোর্স করার জন্য খুব জনপ্রিয় এডেক্স। বর্তমানে কয়েক কোটি মানুষ কোর্স করছেন এডেক্স থেকে।


ইউডেমি
ইউডেমি একটি অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম। এটা মূলত পেশাদার প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সেরা। হাজারো কোর্স পাবেন এখানে স্কিল ডেভেলপ করার জন্য তবে বিনামূল্যে কোন কোর্স করতে পারবে না এখান থেকে। অল্প পরিমাণ অর্থ ব্যয় করলেই দুর্দান্ত কোর্স করতে পারবে ইউডেমি থেকে, মিলবে সার্টিফিকেট।
ইউডেমি খুব জনপ্রিয়। খুব সহজেই বিভিন্ন কোর্স করে শিখতে পারবে এর মাধ্যমে। প্রশিক্ষকেরা অনেক দক্ষ এখানকার। কোর্স ভালো লাগলে শিক্ষার্থীরা রেটিং দিয়ে থাকে। তাই সহজেই সেরা কোর্স খুজে পাবে। তোমার পছন্দের কোন কোর্স শুরু করতে পারো আজই।
শেখার কোন বিকল্প নেই। আর অনলাইনের যুগে তুমি কোথায় আছো সেটা বিষয় না তুমি কোন স্কিল শিখতে চাও এটাই আসল। কারণ অনলাইন মাধ্যমগুলো আমাদের সুযোগ করে দিচ্ছে ঘরে বসে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কোর্স করার।

ছবি: সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়প্রযুক্তিসাফল্য

‘সফলতা আনার মুলমন্ত্র দক্ষতা অর্জন’

করেছে Sabiha Zaman জুলাই ১২, ২০২১

বর্তমান সময়ে দক্ষতা অর্জন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কর্মক্ষেত্রে সফলতা আনার মুলমন্ত্র হচ্ছে  দক্ষতা। দেশের মানুষদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে এমনি একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে‘কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশ’। প্রতিষ্ঠানটির কো-ফাউন্ডার এবং চেয়ারম্যান জনাব আজিজ
আহমদ। কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশ, ভারত,মালেশিয়ার মত ১১ টির বেশি দেশে করেছে। সারা বিশ্বই এখন প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়েচলছে। ঘরে বসেই পাওয়া যাচ্ছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজের সুযোগ। তাই নিজেকে দক্ষকরে গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। কিভাবে
সম্ভব? এই বিষয়টি নিয়ে কথা হয়েছে‘কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশ’ এর সঙ্গে।লিখেছেন সাবিহা জামান-

কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশ এর যাত্রা নিয়ে কথাবলেন কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশের ক্যান্ট্রি ডিরেক্টর ‘আতাউল গনি ওসমানী’। তিনি বলেন, ‘আমাদের শুরুটা হয়েছিলো অনেকটা গল্পের মতো। আমাদের চেয়ারম্যান জনাব আজিজআহমদ, উনার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামের
আনোয়ারায় কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে একজন বাংলাদেশী আমেরিকান হিসেবে প্রায় ৩২ বছর বসবাস করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা শেষ করে প্রথমজীবনে সুনামের সাথে চাকরি করে বর্তমানে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে বিভিন্ন কাজ করলেও দেশের সঙ্গে সংযোগটা রাখেন সবসময়।

প্রায় ১০ বছর আগে একবার বাংলাদেশে আসার পর সরকারি দপ্তরে একজন অফিস সহকারী উনার জন্য চা নিয়ে আসলে কথা প্রসঙ্গে জানতে পারেন ছেলেটি স্নাতক পাস করেছে এবং ঐ দপ্তরের সর্বনিম্ন শিক্ষিত মানুষটিও এইচএসসি করেছে। এ ঘটনার পর উনি বুঝতে পারেন আমাদের দেশে চাকরির সাথে শিক্ষার এবং দক্ষতার অনেক ব্যাবধান রয়েছে। এরপর নিজ দেশের মানুষের দক্ষতা বৃদ্ধি নিয়ে কিভাবে কাজ করা যায় তা নিয়ে ভাবতে থাকেন। কোডার্সট্রাস্ট এর আরেকজন একজন কো-ফাউন্ডার ফার্দিনান কেয়ারউল্ফ ছিলেন ড্যানিশ আর্মির ক্যাপ্টেন। উনিও শিক্ষা নিয়ে কিছু করার কথা ভাবছিলেন। ২০১৩ সালে আজিজ আহমদ আর ফার্দিনান যখন কোপেনহেগেনে যান তখন তাদের দেখা হয় ভার্জিন গ্রুপের মালিক স্যার রিচার্ড ব্রানসন এবং স্কাইপের কো-ফাউন্ডার মর্টেন লুন্ডের সঙ্গে। তখন স্কিল নিয়ে কাজ করার বিষয়ে কথা বলেন।

সেই আলাপের ফলশ্রুতিতে ২০১৪ থেকেই কোডার্সট্রাস্টের কাজের প্রস্তুতি শুরু। আজিজ স্যারের প্রচেষ্টায় ২০১৫ সালে প্রথম কোডার্সট্রাস্ট যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ থেকেই।’ আমাদের প্রথম আর চ্যালেঞ্জিং প্রজেক্ট ছিলো ইউএনডিপির সাথে। ‘লার্ন এন্ড আর্ন’ থিম নিয়ে আমরা প্রজেক্টটা শুরু করি। কড়াইল বস্তির ৪০ জন ছেলে মেয়েকে নিয়ে। আমরা তাদের বেসিক কম্পিউটার আর ইংরেজি শিক্ষা দিলাম। যাতে করে তারা ফ্রিল্যান্সিং করতে পারে। আমরা খুব ভালো সাড়া পেলেও একটা গ্যাপ ছিলো কারণ ওরা শিখলেও কম্পিউটার না থাকার অভাবে ওরা স্কিল কাজে লাগাতে পারছিলো না। আমরা তাদের অনেক বেশি সাহস দিতাম। আকলিমা নামের একটি মেয়ে তার বাবাকে বুঝিয়ে একটা কম্পিউটার কিনে ফেলল এবং ২০ ডলারের একটা কাজও পেয়ে গেল। এতে সবার ভিতর অনেক আগ্রহ বেড়ে গেলো কম্পিউটার কেনার। কিছু দিন পর আকলিমা ৫০০ ডালারের একটা কাজ পায়। শামিম নামের একটি ছেলে সেও দুর্দান্ত সফল হয়।

‘কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশ’ প্রথম প্রজেক্টের সফলটার পর আর আমরা থেমে থাকিনি। বর্তমানে ২০টির বেশি কোর্স রয়েছে। সেসব কোর্সকেই গুরুত্ব দেয়া হয় যেগুলোর মার্কেটে ডিমান্ড আছে। কোর্স শেষ হয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়। কাজ পাওয়ার পর কোন জায়গায় আটকে গেলে এখানকার মেন্টররা তাকে সাহায্য করে। এখানে মেন্টরের স্কিল ডেভেলপ করারো সযোগ
দেয়া হয় যাতে তারা শিক্ষার্থীদের ভালো ভাবে শিখাতে পারে। এপর্যন্ত বাংলাদেশ এবং গ্লোবালি সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থীদের কোর্স করানো হয়েছে। এদের বেশির ভাগই সফল বলা চলে। যারা নতুন তারাও যেমন শিখছে যাদের স্কিল রয়েছে তাদের স্কিল উন্নত করার সুযোগও রয়েছে। করোনাকালীন সময়ে কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশ এর অবস্থা নিয়ে কথা বলেন আতাউলগনি  ওসমানী, তিনি বলেন করোনায় যাতে শিক্ষার্থীরা শিখতে পারে তাই আমরা অনলাইনে কোর্স করানো শুরু করি এবং ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এছাড়াও করোনাকালীন সময়ে দেশব্যাপী স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষকরা যেন অনলাইন এ তাদের ক্লাস নিতে পারে সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা ১০ হাজার শিক্ষকদের ট্রেনিং দিয়েছি বিনামূল্যে।

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি আমাদের ট্রেনিং প্রজেক্টির উদ্বোধন করেন। বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাথে আমরা একটি পাইলট প্রজেক্ট করেছি। ১০০ জন বিদেশ ফেরত যারা দেশে এসে কোন কাজ পাচ্ছিলেন না, তাদের নিয়ে আমরা একটি ট্রেনিং করিয়েছি। দেশকে এগিয়ে নিতে নারীদের ভূমিকা ব্যাপক। কিন্তু নারীরা নানা বাধার সম্মুখীন হন সবসময়। প্রায় সব নারীরাই কাজ করতে গিয়ে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। অনেক সময় পরিবার রাজি থাকে না, আবার অনেক সময় সন্তানের কথা ভেবে নারীরা কাজ ছেড়ে দেন। একথা ভেবে আমরা শুধুমাত্র নারীদের জন্য একটি বিশেষ প্রোগ্রাম শুরু করি ১ হাজার নারীকে নিয়ে। এটা ছিল ডাচ একটি ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে। এছাড়াও যেকোন কোর্সে আমরা মেয়েদের জন্য বাড়তি সুবিধা রাখি, অনেক সময় ফ্রি কোর্স করার সুযোগ দেই। কারণ আমি মনে করি, নারীদের জন্য সেরা কাজ হছে ফ্রিল্যান্সিং কারণ, সে নিজের মতো করে ঘরে বসেই কাজ করার সুযোগ পান। আমরা মেন্টর নেওয়ার ক্ষেত্রেও চাই বেশি নারীরা আমাদের সাথে যুক্ত হোক। ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা নিয়েও কথা বলেন, আতাউল গনি ওসমানী। বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে অনেক কাজ করছে। নিচ্ছেন নানান উদ্যোগ। কিন্তু এ জন্য পর্যাপ্ত মনিটরিং প্রয়োজন আর নিরবিচ্ছিন্ন এবং সহজলভ্য ইন্টারনেট সুবিধা। এখনো আমাদের দেশের সব জায়গায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইন যাইনি। অনেক ক্ষেত্রে একজন ফ্রিল্যান্সার ইন্টারনেট সমস্যার কারণে কাজ করতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন, তাই এদিকে নজর দিতে হবে।
যাতে করে ফ্রিল্যান্সাররা কাজের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট সমস্যায় না পড়ে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়জীবনযাত্রাপ্রযুক্তিবিশেষ রচনাসম্ভাবনা

জীবন সহজ করছে ই-কমার্স সাইট

করেছে Sabiha Zaman জুলাই ১২, ২০২১

১৯৯৪ সালে আমাজন যাত্রা শুরু করে। এটা ছিল অনলাইন যাত্রার অন্যতম মাইলফলক। মানুষকে অনলাইন নিয়ে ভিন্নভাবে ভাবতে শেখায় আমাজন। ১৯৯৮ সালে আলিবাবা। এরপর একের পর এক অনলাইন তার সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে পৃথিবীজুড়ে। বাদ পড়েনি বাংলাদেশও। ডিজিটাল উন্নতি আমাদের জীবন আরও সহজ করে দিয়েছে বিভিন্ন অনলাইন সাইট। ঘরে বসে খাবার খাওয়া থেকে মশারি কিংবা এয়ারটিকিট, সব পাবে অনলাইনে। সবকিছুর সহজ সমাধান এখন অনলাইন। আর বিভিন্ন অনলাইন সার্ভিস নিয়েই আজকের আয়োজন। লিখেছেন সাবিহা জামান।

খুব বেশি নয়, মাত্র ১৫ বছর আগেও দেশে আমরা ভাবতে পারতাম না অনলাইনের বিভিন্ন সার্ভিসের কথা। দেশের বাইরে অনলাইন শপিং যাত্রা শুরু করলেও আমাদের দেশে সেগুলো একটা সময়ে শুধুই গল্প ছিল। আর এখন অনলাইন শপিং, ব্যাকিং সব আছে এই ডিজিটাল দুনিয়ায়।

বিকাশ
একটা সময় ছিল, যখন আমাদের অনেকটা সময় ব্যয় করতে হতো ব্যাংকে গিয়ে। কিন্তু বর্তমানে ব্যাংকের কাজ করতে তোমার ফোনের অ্যাপসই যথেষ্ট। ২০১১ সালের ২১ জুলাই মোবাইলে আর্থিক সেবা প্রদান করার উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশ লিমিটেড। বিকাশ বাংলাদেশের ব্যাংকিংয়ের আওতাভুক্ত এবং ব্যাংকিং আওতার বাইরের জনগণকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আর্থিক সেবা প্রদান করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত। খুব সহজে নিরাপদে মোবাইল ব্যাংকিং করার সুবিধার জন্য খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পেতে থাকে বিকাশ। ডিজিটাল যাত্রার উন্নতির সঙ্গে বিকাশ সেবা আরও আপডেট হয়েছে। ২০১৮ সালের মে মাসে বিকাশ অ্যাপ দিয়ে ব্যাংকিং আরও বেশি সহজ হয়ে যায়। বর্তমানে দেশের কয়েক কোটি গ্রাহক বিকাশ থেকে ঘরে বসে ব্যাংকিং সেবা নিচ্ছে।

ফুড পান্ডা
কেনাকাটা, শপিং সব অনলাইনে হচ্ছে এখন পুরোদমে। বাদ যাচ্ছে না খাওয়াদাওয়াও। অনলাইনের কল্যাণে এখন বৃষ্টির দিনে রান্না না করে, বাইরে না গিয়েই পেয়ে যাবে গরম খিচুড়ি হোম ডেলিভারি। অনলাইনে ফুড ডেলিভারি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ফুড পান্ডা বাংলাদেশে কাজ করছে ২০১৩ সাল থেকেই। প্রথমে তাদের কার্যক্রম ঢাকাকেন্দ্রিক হলেও বর্তমানে প্রায় সারা দেশের জেলাগুলোতে কাজ করছে ফুড পান্ডা। তাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কয়েক হাজার রেস্টুরেন্ট ও সুপারশপ। ফুড পান্ডা তাদের কাজ আরও বেশি অনলাইনভিত্তিক করতে বর্তমানে যুক্ত করেছে বিকাশে লেনদেন করার সুবিধা। বর্তমানে কয়েক লাখ গ্রাহক ঘরে বসেই খাবার আর গ্রোসারি পণ্য কিনতে পারছে ফুড পান্ডার মাধ্যমে। কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েক হাজার মানুষের। ফুড পান্ডার দেখানো পথে অনলাইনে ফুড ডেলিভারির কাজ করছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

উবার
ডিজিটাল যাত্রায় যাতায়াত সুবিধা অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে উবার। মোবাইল স্মার্টফোনের অ্যাপভিত্তিক ট্যাক্সিসেবার নেটওয়ার্ক হচ্ছে উবার। উবার হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় রাইট শেয়ারিং অ্যাপ। এটি আমেরিকাভিত্তিক অনলাইন পরিবহন নেটওয়ার্ক কোম্পানি। উবারের ফ্রি অ্যাপটির মাধ্যমে একজন যাত্রী নিজের অবস্থান থেকে সহজেই উবার কার কিংবা বাইক ডেকে সহজেই গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারে। উবারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটা নিরাপদ। গ্রাহক কোথায় আছে, কোন রাইডারের গাড়ি ব্যবহার করছে, সব তথ্য উবার নজরে রাখে। বিশ্বের ৬৩টি দেশ ও ৭৮৫টির বেশি শহরে উবারের সেবা চালু আছে। ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর বাংলাদেশে ঢাকায় প্রথম উবারের কার্যক্রম শুরু হয়। এখন উবার পার্সেল সেবাও দিচ্ছে যাত্রীদের। নতুন একটি কাজের জায়গা তৈরি করেছে উবার।

পাঠাও
২০১৫ সালে বাংলাদেশের রাজধানীতে প্রথমে ‘অন-ডিমান্ড ডেলিভারি’ সেবা হিসেবে পাঠাও প্রতিষ্ঠা করেছিল। পরে নতুনভাবে রাইট শেয়ারিং অ্যাপ হিসেবে যাত্রা শুরু করে পাঠাও। প্রথমে মাত্র ১০০টি বাইক দিয়ে কাজ শুরু করলেও এখন লাখের বেশি পাঠাও বাইক আর কারের দেখা মেলে। এখন তো পাঠাও ফুড সার্ভিসও চালু হয়েছে। সিএনজি বা ট্যাক্সিক্যাবের জন্য আর অপেক্ষা করতে হয় না। পাঠাও অ্যাপ দিয়ে নিজের অবস্থান থেকে পাঠাও কল করলেই হাজির হবে পাঠাও কার কিংবা বাইক। শুধু যাত্রী সুবিধাই নয়, পাঠাও আমাদের দেশে তৈরি করেছে নতুন এক কর্মসংস্থান। এমন অনেকেই আছে চাকরির আশায় বেকার বসে না থেকে পাঠাওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিজের মতো কাজ করছে। বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রার অন্যতম একটি অংশ রাইট শেয়ারিং অ্যাপগুলো। আমাদের জীবনযাত্রা অনেক বেশি সহজ হয়ে গেছে এই ডিজিটাল দুনিয়ায়।

ই-ভ্যালি
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইটের মধ্যে ই-ভ্যালি রয়েছে জনপ্রিয়তার শিখরে। খুব অল্প সময়ে এর জনপ্রিয়তা পায়। গাড়ি, বাইক, ফ্রিজ, টেলিভিশন শুরু করে কাঁচাবাজার সব পাবে এখানে। ২০১৮ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে ই-ভ্যালি। বর্তমানে গ্রাহক সংখ্যা কোটি পার করেছে এই ই-কমার্স সাইট। যেখানে আমরা অনলাইন শপিং করা বলতে কেবল ফ্যাশন পণ্য বুঝতাম, সে ধারণা পাল্টে দিয়েছে ই-ভ্যালি। শোরুম ঘুরে ব্র্যান্ডের পণ্য না কিনে গ্রাহক ঘরে বসেই কম মূল্যে কিনতে পারছে কাক্সিক্ষত পণ্যটি। জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের পণ্য আর আকর্ষণীয় অফারের কারণে অন্যান্য ই-কমার্স সাইট থেকে ই-ভ্যালি দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে গ্রাহকদের কাছে।

আলিশা মার্ট
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে আলিশা মার্ট। ই-ভ্যালির পর অন্যতম জনপ্রিয় ই-কমার্স সাইট বলা হচ্ছে আলিশা মার্টকে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক পণ্য সবকিছুর দেখা মিলছে এখানে। গ্রাহকদের লাইফ আরও সহজ করে দিতে আলিশা মার্ট দিচ্ছে ইনস্ট্যান্ট স্যালারির সুবিধা। আকর্ষণীয় অফার দ্রুত সময়ে পণ্য ডেলিভারি দেওয়ায় ক্রেতারা অনেকটা অভ্যস্ত। ক্রেতারা এখন শুধু বাজার ঘুরে পণ্য কেনে না, ঘরে বসে অনলাইনে অর্ডার করে ঘরেই পণ্য পাচ্ছে। তাই তারা লুফে নিচ্ছে অনলাইন সাইটগুলোর নানান অফার। করোনাকালে আমাদের আয়ের ওপরেও প্রভাব পড়ছে। আর তখনই বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট আকর্ষণীয় অফার দিচ্ছে, যা নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে।

দারাজ
বাংলাদেশে দারাজের যাত্রা শুরু হয়েছিল অনেক আগেই। ২০১৫ সালে দারাজ বাংলাদেশ নামে ই-কমার্স সাইটের কার্যক্রম শুরু হয়। একই সময়ে তারা মিয়ানমারেও তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ঘরে বসে গ্রাহকের হাতে পণ্য তুলে দিতে দারাজ বিশ্বস্ততার সঙ্গে কাজ করছে। অনলাইনে গ্রাহকের পণ্য কেনার যে ভীতি কাজ করত, তার পরিবর্তন আনে দারাজ। বহু জনপ্রিয় দেশি-বিদেশি পণ্য ঘরে বসে এক ক্লিকে কেনার সুযোগ করেছে এই জনপ্রিয় অ-কমার্স সাইট। বর্তমানে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রিতেও পিছিয়ে নেই তারা। ২০১৮ সালের দিকে দারাজ বাংলাদেশ কিনে নেয় চীনের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আলিবাবা গ্রুপ। এরপর অনলাইনে তাদের গ্রাহক সেবা হয়েছে আরও গতিশীল।

ছবি: সংগৃহীত

 

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবননারীপ্রযুক্তিবিশেষ রচনাসম্ভাবনা

ব্যবহৃত জিনিসের ভবিষ্যৎ তৈরি করে ‘রিসাইকেলবিন’

করেছে Suraiya Naznin জুলাই ১১, ২০২১

প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন চাহিদা তৈরি হচ্ছে কমবেশি সবার। দামি একটা শাড়ি পরে ফেসবুকে একবার ছবি পোস্ট করলে পরে আর ওই শাড়ির প্রতি আগ্রহ থাকে না। কিন্তু এত দামি দামি জিনিসের ভবিষ্যৎ কী? এমন ধারণা থেকেই রিসাইকেলবিনের জন্ম। কথা হলো রিসাইকেলবিনের ফাউন্ডার অ্যাডমিন ফ্লোরিডা শারমিন সেতুর সঙ্গে। কথা বলে লিখেছেন সুরাইয়া নাজনীন-

ফ্লোরিডা শারমিন বললেন, ‘আমাদের জীবনযাপন এখন হয়ে গেছে অনলাইননির্ভর। অনলাইনে যেমন কিছু পছন্দ হলে কিনে ফেলছি, তেমনি অনলাইনে ছবি পোস্ট করলে সেই জিনিস আর পরেরবার পরছি না। দু-একবার পরা জিনিস কাউকে উপহারও দেওয়া যায় না। আমি এমন সমস্যায় ছিলাম আর ভাবছিলাম আসলে এসব জিনিস তো ওয়েস্ট হয়ে যাচ্ছে। কী করা যায়? এমনটা ভাবতে ভাবতে এক রাতে সিদ্ধান্ত নিলাম এই রকমই একটা গ্রুপ খুললে কেমন হয়। আমি ভাবতেও পারিনি এমন সাড়া পাব।’

অনেকে ৩০-৪০ হাজার টাকা দিয়ে জামদানি, গাদোয়াল, মসলিন কিনছে কিন্তু পরছে হাতে গোনা দু-এক দিন। দু-এক দিন পরা সেই দামি শাড়িটাই যদি ১০-১৫ হাজারে পাওয়া যায়, তাহলে হয়তো কারও স্বপ্নপূরণও হতে পারে। আবার ঘর সাজানোর জিনিস কেনার শখ থাকে অনেকের কিন্তু সাধ্য থাকে না, আবার কেউ কেউ কয়েক দিন পরপরই ইন্টেরিয়র পরিবর্তন করে, তারা হয়তো সেই জিনিসগুলো বিক্রি করার মাধ্যম খুঁজে পায় না।

অনেকে দেশের বাইরেও চলে যায় তখন সবকিছু বিক্রি করেও দিতে চায় কিন্তু প্ল্যাটফর্ম পায় না। তাই আমরা সেই মাধ্যমটাই তৈরি করেছি, যা দুই পক্ষের জন্যই উপযোগী বললেন ফ্লোরিডা। যারা দরিদ্র তারা তাদের প্রয়োজনে মানুষের কাছে সমস্যার কথা বলে জিনিস নিতে পারে কিন্তু যারা মধ্যবিত্ত তারা চাইতে পারে না। প্রয়োজনটা ঠিকঠাক বলতেও পারে না। একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবাকে সন্তানের জন্য একটি ভালো টেবিল কিনতে হলে কিছুদিন ধরে টাকা জমাতে হয়। কিন্তু রিসাইকেলবিন কিছুটা হলেও সেসব মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরেছে বলে মনে করেন ফ্লোরিডা। করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে। চাকরি নেই অনেকের। সেই সময় কম দামে প্রয়োজনীয় পণ্যটি কিনতে পেরেছে বা পারছে রিসাইকেলবিন থেকে।

ফ্লোরিডা শারমিন সেতু

রিসাইকেলবিনের ট্যাগলাইন হলো ‘ড্রপ ইয়োর নিডলেস থিংকস’ কেন এই ট্যাগলাইন? আমাদের গ্রুপের বৈশিষ্ট্যই হলো কারও জন্য যেটা অপ্রয়োজনীয়, অন্যের জন্য সেটি প্রয়োজনও হতে পারে। সে জন্যই আমাদের ট্যাগলাইনটা ঠিক এমন, বললেন ফ্লোরিডা। আমাদের গ্রুপে প্রথম দিকে নিয়ম ছিল ৩০ জনকে ইনভাইট করে সেলপোস্ট দেওয়া কিš‘ ১৫ দিনের মধ্যে আমরা এই নিয়ম উঠিয়ে দিয়েছি, কারণ এত বেশি মেম্বার হয়ে গেছে, কুলাতে পারছিলাম না। প্রথম মাসে হয়েছে ৩ লাখ মেম্বার, পরের মাসে ৬ লাখ। বর্তমানে ১১ লাখ সদস্যের গ্রুপ রিসাইকেলবিন। রিসাইকেলবিন এখনো বেবি গ্রুপের পর্যায়ে রয়েছে। কারণ, মাত্র আট মাস বয়স এই গ্রুপের, তবে চাহিদা অনেক বেশি। আমরা মানুষের প্রয়োজনটা ধরতে পেরেছি। এত এত সদস্যের চাহিদা দেখে মনে হয়েছে আমাদের দেশে এই রকম গ্রুপের ভীষণ প্রয়োজন। তবে এখন আমরা একটু কড়া নিয়মে এসেছি। কোনো নতুন ফেসবুক আইডি আমরা অ্যাকসেপ্ট করি না কিংবা ফেক আইডি আমরা প্রচুর যাচাই-বাছাই করে অ্যাকসেপ্ট করি।

 

ফ্লোরিডা আরও বলেন, কয়েক দিন আগে এক কোটি টাকার একটি ফ্ল্যাট সেল হয়েছে। এটা আমার কাছে দুর্দান্ত সাড়া বলে মনে হয়। শখের বশে খোলা একটি গ্রুপে এমন সাড়া পাব ভাবিনি। আবার অনেকে আছে, নতুন সংসার শুরু করেছে। সাধ থাকলেও সাধ্যের জন্য সংসার গোছাতে পারছে না। তারা রিসাইকেলবিন থেকে ফার্নিচার কিনে সংসার শুরু করেছে। আমাকে ইনবক্সে ধন্যবাদ দিয়েছে তারা। আবার করোনায় চাকরি হারিয়ে আমাদের গ্রুপে গাছ বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছে। এ বিষয়গুলো খুব ইতিবাচক মনে হয় ডিজিটাল উন্নয়নে। এ রকম প্ল্যাটফর্ম থাকলে মানুষের অজানা অনেক স্বপ্ন পূরণ হওয়া সম্ভব।

ফ্লোরিডা ব্যক্তিগত জীবনে একজন ফার্মাসিস্ট। তিনি সাত বছর চাকরি করে, সন্তান হওয়ার পর চাকরি ছেড়ে দেন। ফেসবুকের সঙ্গে আগে এত সম্পৃক্ততা ছিল না। কিš‘ তার নিজের প্রয়োজন থেকে ভাবেন এই রকম একটা গ্রুপ থাকলে বোধ হয় কার কারও সুবিধা হতো। যেই ভাবা, সেই কাজ। গ্রুপ খোলার পর এত সাড়া পড়বে, তিনি বুঝতেও পারেননি। তবে আমরা যে প্রযুক্তিটাকে গ্রহণ করছি, তা মানুষের হুমড়ি খাওয়া দেখলেই বোঝা যায়। তবে এটা অবশ্যই ইতিবাচক।

কিছু মানুষ আছে, যারা ভালোটাকে খারাপে রূপ দিতে সদা ব্যস্ত থাকে। রিসাইকেলবিনেও ঢুকেছিল তারা। কেউ সেলপোস্ট দিলে তাদের খারাপ মন্তব্য করত নিয়মিত কিন্তু রিসাইকেলবিনের অ্যাডমিন প্যানেল তাদের প্রতিহত করতে পেরেছে। তবে আলাদা কোনো পলিসি থাকলে কিংবা ডিজিটাল আইনের কড়া বাস্তবায়ন থাকলে আমরা আরও স্মুদলি সামনে এগোতে পারব বলে মনে করেন ফ্লোরিডা।

০ মন্তব্য করো
1 FacebookTwitterPinterestEmail
প্রযুক্তিবাতিঘরবাংলাদেশ ও বিশ্ববিশেষ রচনা

ডিজিটাল এডুকেশন : চাকরিই খুঁজবে তোমাকে

করেছে Suraiya Naznin জুলাই ১১, ২০২১

ড. মো. আকতারুজ্জামান

কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে কিছু সম্ভাবনার দ্বারও উন্মুক্ত করেছে। পৃথিবীর প্রায় সব সেক্টরই কমবেশি এ মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত, শিক্ষাক্ষেত্রও এর ব্যতিক্রম নয়। সারা জীবন যে শিক্ষকেরা প্রচলিত টিচিং-লার্নিংয়ে অভ্যস্ত, তাদের পক্ষে কোনো রকম প্রস্তুতি ছাড়া ব্লেন্ডেড, অনলাইন বা ডিজিটাল এডুকেশনে ক্লাস নেওয়া, ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়ন করা সহজ নয়। বিগত এক বছরের অধিক সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তাকে জীবন-জীবিকার তাগিদে বিকল্প রোজগারের পথ খুঁজতে হয়েছে, সেটা নার্সারি, প্রাথমিক বা উ”চশিক্ষা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অনেকে বিকল্প রোজগারের পথ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আর দীর্ঘদিন ক্লাস ও পরীক্ষা না হওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে হতাশা এবং বিপথে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। আমরা ডিজিটালি অনেক দূর এগিয়েছি সত্যি, কিন্তু উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে এখনো ডিজিটাল এডুকেশনের প্রয়োগ যেমনটি হওয়া উচিত ছিল, তা দেখতে পাইনি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যেই সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ন্যাশনাল ব্লেন্ডেড লার্নিং মেথডের রূপরেখা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে।

 

প্রথমেই আমরা ফেস-টু-ফেস, অনলাইন, ব্লেন্ডেড, ডিজিটাল এবং এই সম্পর্কিত বিষয়গুলো একটু পরিষ্কারভাবে জেনে নিই। প্রচলিত পদ্ধতিতে আমরা যেভাবে সরাসরি ক্লাসরুমে পাঠদান করায় সেটিকে ফেস-টু-ফেস এডুকেশন বলি, যেমন ক্লাসরুমে সরাসরি গিয়ে আমরা যে লেকচার দিই। ইন্টারনেটভিত্তিক যেকোনো পাঠদান পদ্ধতিকে অনলাইন এডুকেশন বলতে পারি, যেমন জুম বা গুগল মিটের মাধ্যমে আমরা যে ক্লাস নিয়ে থাকি।

আর ফেস-টু-ফেস এবং অনলাইন এডুকেশনের সংমিশ্রণকে আমরা ব্লেন্ডেড এডুকেশন বলতে পারি, যেমন সপ্তাহের পাঁচ দিনের ক্লাস শিডিউলের মধ্যে তিন দিন সরাসরি ক্লাসরুমে এবং দুই দিন অনলাইনে পাঠদান করলে সেটা ব্লেন্ডেড এডুকেশন। তবে যেকোনো ধরনের পাঠদান পদ্ধতিকে আমরা ডিজিটাল এডুকেশন বলতে পারি যদি সেটা ডিজিটাল প্রযুক্তি বা আইসিটির সাহায্যে পরিচালিত হয়, যেমন মাল্টিমিডিয়া প্রযুক্তির মাধ্যমে সরাসরি কোনো ক্লাস নিলে সেটা ডিজিটাল এডুকেশন। আর ব্লেন্ডেড বা অনলাইন এডুকেশন যেহেতু ডিজিটাল টেকনোলজি ছাড়া সম্ভব নয়, তাই উভয় পদ্ধতিই ডিজিটাল এডুকেশনের মধ্যে পড়ে।

বর্তমানে নতুন একটি কনসেপ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, তা হচ্ছে ফিজিটাল এডুকেশন যা ফিজিক্যাল এবং ডিজিটাল এডুকেশনের একটি সমন্বিত প্রচেষ্টা। এটি ব্লেন্ডেড এডুকেশন থেকে কিছুটা ভিন্ন, কারণ ব্লেন্ডেড পদ্ধতিতে ফেস-টু-ফেস এবং অনলাইন দুটিই পাশাপাশি চলে আর ফিজিটাল পদ্ধতিতে ফেস-টু-ফেস (ফিজিক্যাল) এবং অনলাইন (ডিজিটাল) দুটো পদ্ধতির সেরা প্র্যাকটিসগুলো ইন্টিগ্রেট করে পাঠদান করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রোবোটিকস ক্লাসে ছাত্রছাত্রীদের রোবটের সঙ্গে ইন্টারাকশন, একটি ক্লাসের এক-তৃতীয়াংশ ছাত্রছাত্রী সরাসরি এবং দুই-তৃতীয়াংশ অনলাইনে একই সময়ে ক্লাস করা এ ক্ষেত্রে স্টুডেন্ট এনগেজমেন্ট এবং লার্নিং আউটকাম তুলনামূলক ভালো হয়। এডুকেশন ৪.০ এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে ফিজিটাল এডুকেশনই হবে ভবিষ্যতের শিক্ষাব্যবস্থা।

ভবিষ্যতের শিক্ষাব্যবস্থা ফিজিটাল লার্নিং অ্যাট এডুকেশন ৪.০
এখন মূল আলোচনায় আসা যাক। ব্লেন্ডেড, অনলাইন এবং ডিজিটাল এডুকেশনকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়াটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দেশ-বিদেশে বিশেষ করে আমেরিকা, কানাডা, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এবং বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অনলাইন এবং ব্লেন্ডেড এডুকেশন নিয়ে সর্বমোট এক যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করছি আমি।

এই সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে আমার মনে হয়েছে, দুর্বল গতির ইন্টারনেট, আর্থসামাজিক অবস্থা নিরিখে ডিভাইস ও উচ্চ মূল্যের ইন্টারনেট ইস্যু, শিক্ষকদের ডিজিটাল দক্ষতা বৃদ্ধিতে অনীহা, ডিজিটাল এডুকেশন সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক ধারণা এবং সর্বোপরি একটি সমষ্টিক ও গ্রহণযোগ্য ডিজিটাল এডুকেশন পলিসির অভাব এ দেশের সব স্তরে ডিজিটাল এডুকেশন বাস্তবায়ন ও প্রসারের সবচেয়ে বড় বাধা। রাতারাতি এ অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়, তবে কিছু সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিতে পারলে এবং আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে পারলে সহসাই এ পরিস্থিতি পরিবর্তন হতে পারে।

ব্লেন্ডেড, অনলাইন বা ডিজিটাল এডুকেশন নিশ্চিত করতে হলে প্রতিটি ইউনিভার্সিটিতে একটি করে কেন্দ্রীয়ভাবে ম্যানেজড এবং কাস্টমাইজড লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এলএমএস) যেমন মুডল, ক্যানভাস, ব্ল্যাকবোর্ড বা ন্যূনতম গুগল ক্লাসরুমের যেকোনো একটি অবশ্যই থাকা উচিত। এ ছাড়া সব একাডেমিক এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে স্মার্ট-এডুকেশন টাইপের প্ল্যাটফর্ম খুবই জরুরি। শিক্ষক ও কর্মকর্তারা যাতে নিয়মিতভাবে এ প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করে, তার জন্য প্রয়োজনীয় ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে করতে হবে।

আধুনিক এলএমএসের সঙ্গে ওয়েব কনফারেন্সিং সিস্টেম, লার্নিং অ্যানালিটিকস, ভিডিও এনগেজমেন্ট, ইন্টার‌্যাক্টিভ কনটেন্ট এবং মোবাইল এপ্লিকেশন যুক্ত থাকে, ফলে শিক্ষার গুণগত মানে পরিবর্তন আসে। ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষকদের প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্টের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে একাডেমিয়া ও ইন্ডাস্ট্রি প্র্যাকটিসের দূরত্ব নিরসনে এবং শিক্ষকদের নৈতিক মূল্যবোধ ও প্রফেশনালিজম তৈরিতে। এ ক্ষেত্রে ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্স (মুক) খুবই উপযোগী প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।

বিখ্যাত মুক প্রভাইডারগুলো যেমন এডেক্স, কোর্সেরা, উডাসিটি, ইউডেমির আদলে নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে সেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় কোর্স ডিজাইন করা যেতে পারে। এর ফলে টিচিং-লার্নিং আরও উন্নত এবং ইমপ্যাক্টফুল হয়।
ডিজিটাল এডুকেশনে কোলাবরেশন এবং স্টুডেন্টদের এনগেজমেন্টের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

এ জন্য খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফ্লিপড ক্লাসরুম পেডাগজি অনুসরণ করে ক্লাস শুরুর আগেই লেকচার নোট, অডিও-ভিজ্যুয়াল ম্যাটেরিয়ালস কেন্দ্রীয় এলএমএসে সরবরাহ করে, ফলে ক্লাসের সময়টা ডিসকাশন, প্রশ্নোত্তরপর্ব, ড্রিল-প্র্যাকটিস, বিষয়ভিত্তিক অধিকতর আলোচনার জন্য ব্যবহার করা যায়। লাইভ ক্লাসে গুগল ওয়ার্কস্পেস ফর এডুকেশন ফ্রি প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত প্রায় সব ফিচার ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন অনলাইনে স্ক্রিন শেয়ারের মাধ্যমে রেগুলার ক্লাসের মতো জ্যামবোর্ডে লেখা, ড্রয়িং করা, প্রেজেন্টেশনের স্লাইডে হাইলাইট করা, ফলে শিক্ষার্থীদের বুঝতে সুবিধা হয়। প্রতিটি লেকচার রেকর্ড করে ক্লাস শেষে ভিডিও এনগেজমেন্ট কুইজের মাধ্যমে সেটি শিক্ষার্থীদের কাছে এলএমএসে সরবরাহ করা যেতে পারে, যা পরে ভিডিও অ্যানালিটিকসের মাধ্যমে গ্রেডিং করা যায়।

এ ছাড়া অরিজিনালিটি চেকিং, স্মার্ট অ্যাটেনডেন্স সিস্টেম, গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্ট, ডিসকাশন ফোরাম, কুইজ, ক্রিয়েটিভ রাইটিং ইত্যাদি শিক্ষার্থীদের সঠিক মূল্যায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শিক্ষার্থীদের ফিডব্যাক এবং শিক্ষকদের জবাবদিহি এই দুটি বিষয় সামনে রেখে ডিজিটাল এডুকেশন পরিচালনা করা উচিত। শিক্ষার্থীদের ফিডব্যাক পিরিয়ডিক্যালি অ্যানালাইসিস করে সামগ্রিক প্রক্রিয়ায় নিয়মিত পরিবর্তন আনতে হবে। শিক্ষকদের প্রতি মাসে ন্যূনতম কয়েকটি বিষয়ের ওপর রিপোর্টিং এবং একটি সামগ্রিক ভিডিও প্রেজেন্টেশন জমা নেওয়া যেতে পারে স্মার্ট-এডুকেশনের মতো প্ল্যাটফর্মে, যেগুলোর মধ্যে থাকবে স্টুডেন্ট ফিডব্যাক, রিসার্চ অ্যাক্টিভিটি, সেলফ ডেভেলপমেন্ট, কন্ট্রিবিউশন ও ভ্যালু এডিশন, অ্যাটেনডেন্স, টিচার ও স্টুডেন্ট অ্যাকটিভিটি কমপ্লিশন লগ, মাসিক টাইমশিট এবং প্রেজেন্টেশন। এগুলোর ওপর ভিত্তি করে শিক্ষকদের মাসিক মূল্যায়ন এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। ইউনিভার্সিটিগুলো নিয়মিতভাবে এসব কাজ তদারক করলে কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করা সহজ হবে।

দেশের কয়েকটি পাবলিক এবং প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ডিজিটাল এডুকেশন সেক্টরে ভালো করছে যেমন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটি, বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, শাহজালাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। এর মধ্যে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিকে ব্লেন্ডেড, অনলাইন এবং ডিজিটাল এডুকেশনে বাংলাদেশের শীর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ধরা হয়। ২০১৩ সালে ব্লেন্ডেড লার্নিং সেন্টারের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ডিজিটাল এডুকেশন শুরু করেছিল ড্যাফোডিল। বর্তমানে নিজস্ব এলএমএস, মূক প্ল্যাটফর্ম এবং স্মার্ট-এডু সিস্টেমসহ অসংখ্য সল্যুলশন নিয়ে টিচিং-লার্নিং পরিচালনা করছে শীর্ষ এ প্রতিষ্ঠান। এ ক্ষেত্রে ওয়ান স্টুডেন্ট, ওয়ান ল্যাপটপ কর্মসূচির অধীনে ৩০ হাজারের অধিক ল্যাপটপ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনা মূল্যে বিতরণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটি ক্যানভাস এলএমএস এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এডেক্স প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। পাবলিক ইউনিভার্সিটির মধ্যে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস, শাহজালাল ইউনিভার্সিটিসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠান করোনা মহামারির শুরু থেকে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষাক্রম পরিচালনা করে আসছে।
অনলাইন এডুকেশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতি। আমাদের দেশে মোট মার্কের বেশির ভাগ (৭০-৮০%) বরাদ্দ থাকে সেমিস্টার ফাইনাল/মিড টার্ম পরীক্ষায়, যা আধুনিক অ্যাসেসমেন্ট সিস্টেমের সঙ্গে মোটেও মানানসই নয়। অন্যদিকে অনলাইনে প্রক্টরড এক্সামের সাফল্য আশাব্যঞ্জক নয়, বিশেষ করে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে। এ ক্ষেত্রে মিক্সড পদ্ধতি কার্যকরী হতে পারে।

৬০-৭০ শতাংশ মার্ক অনলাইনে অথেনটিক এসেসমেন্টের মাধ্যমে হতে পারে, যেমন ধরো ক্রিয়েটিভ অ্যাসাইনমেন্ট, কুইজ, কেস স্টাডিজ, প্রেজেন্টেশন, প্রজেক্ট ডেভলপমেন্ট ইত্যাদি। আর বাকি ৩০-৪০ শতাংশ মার্কের জন্য ট্রাডিশনাল এক্সাম পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ওপেন ও ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার নিয়ে একটি কনসোর্টিয়াম গঠন করা যেতে পারে। এর ফলে একদিকে যেমন শিক্ষার মান ভালো হবে, অন্যদিকে দেশব্যাপী তাদের বিশাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কাজে লাগিয়ে সত্যিকারের ব্লেন্ডেড অনলাইন এডুকেশন, বিশেষ করে অ্যাসেসমেন্ট, কাউন্সেলিং, ভিডিও স্ট্রিমিং সুবিধাগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

অনলাইন এডুকেশনের নিজস্ব কোনো সমস্যা নেই, যে প্রতিষ্ঠান এটি পরিচালনা করবে তার গ্রহণযোগ্যতা এ ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাতারাতি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন এডুকেশন যাওয়া ঠিক নয়, ধীরে ধীরে ছাত্র-শিক্ষক-স্টাফদের এর জন্য প্রস্তুত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্থিতিশীল এলএমএস প্ল্যাটফর্ম এবং প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল থাকা অত্যাবশ্যকীয়। দেশে প্রতিবছর যত শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক পাস করে, তাদের সবার জন্য নিরবিচ্ছিন্ন কার্যকরী শিক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হলে অনলাইন ডিজিটাল এডুকেশনের বিকল্প নেই। সরকারের পক্ষ থেকে ডিজিটাল এডুকেশন বাস্তবায়নে সব ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা ও নীতিমালা নির্ধারণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। যেমন ডিজিটাল এডুকেশন প্ল্যাটফর্মগুলো অ্যাকসেস করতে নামমাত্র মূল্যে শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়া, লাইব্রেরি থেকে ডিভাইস লোন হিসেবে দেওয়া, শিক্ষকদের প্রমোশনে অনলাইন ট্রেনিং সার্টিফিকেশন অন্তর্ভুক্ত করা, সক্ষমতা অনুসারে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রাথমিকভাবে কিছু কোর্স অনলাইনে পরিচালনা করতে অনুমতি দেওয়া, কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্সটাকে গুরুত্ব দেওয়া ইত্যাদি।

বর্তমানে বাংলাদেশের মাত্র দুটি ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশ ওপেন ইউনিভার্সিটি এবং বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি-অনলাইন এডুকেশন দেওয়ার প্রাতিষ্ঠানিক অনুমোদন আছে। যেহেতু ডিজিটাল বাংলাদেশ বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকার কর্মসূচি, তাই ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির মতো যারা অনেক বছর ধরে ডিজিটাল এডুকেশনে সাফল্য দেখিয়ে আসছে, তাদের শর্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় অনুমতি দিলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে তারা আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। চলো সবার জন্য ডিজিটাল এবং কার্যকরী এডুকেশন নিশ্চিত করি, তখন তোমাকে আর চাকরি খুঁজতে হবে না, চাকরিই তোমাকে খুঁজবে।

 

ড. মো. আকতারুজ্জামান
ডিজিটাল এডুকেশন এক্সপার্ট এবং পরিচালক, ব্লেন্ডেড লার্নিং সেন্টার
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটি, আশুলিয়া, ঢাকা
প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগীয় প্রধান, আইসিটি ও শিক্ষা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • সঠিক হুইস্ক বাছাই করবো কীভাবে?

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook