রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা

রোদসী

  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

শিল্প-সংস্কৃতি

শিল্প ও সাহিত্যশিল্প-সংস্কৃতি

অরুন্ধতি রায়ের সাক্ষাৎকার

অরুন্ধতি রায়। যার লেখায় প্রধান চরিত্ররা অ-প্রধান হয়ে ওঠে । বলে অথবা না-বলে যিনি বর্ণনা করে যেতে পারেন, চ্যালেঞ্জ নিয়ে তৈরি করতে পারেন এমন একটি পথ, যেপথ পাঠকের কাছে একেবারে নতুন। সম্প্রতি ‘অল দ্য লাইভ’স উই নেভার লিভড’ (All The Lives We Never Lived) উপন্যাসের জন্য ডিএসপি পুরস্কার ২০১৮ পেয়েছেন অরুন্ধতি।

হিন্দুস্তান টাইমস-এ দেওয়া অরুন্ধতি রায়ের সাক্ষাৎকারটি অনূদিত করে রোদসীর পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো:

 প্রশ্ন : আমরা একইসঙ্গে অ-লৌকিক এবং লৌকিক জীবন যাপন করি না। সেক্ষেত্রে, অ-লৌকিক চরিত্র কীভাবে লৌকিক হয়ে উঠতে পারে?

আমাদের লোকজীবনের গুরুত্বপূর্ণ  প্রসঙ্গ হলো ঐতিহাসিক চরিত্রগুলো। একটি বই ইতিহাস, স্মৃতি,  অ-লৌকিক থেকে লৌকিক কাহিনী তৈরি করতে পারে।  আমি আমার লেখায় চেয়েছি, জীবিতদের স্বর ঐতিহাসিক চরিত্রগুলো ধারণ করুক।

প্রশ্ন: আপনি যখন নারী চরিত্রগুলো নিয়ে লেখেন তখন কি ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হতে হয়? গায়েত্রী চরিত্রটি নিয়ে কি কোন জটিলতায় পড়েছিলেন?

গায়েত্রী চরিত্রটি আমার কাছে খুব স্বাভাবিক এবং পরিপূর্ণ রূপে ধরা দিয়েছে।  তার শক্তিশালী কণ্ঠস্বর, দারুণ ব্যক্তিত্ব একটি সময় নিয়ে চিন্তা করতে সহায়তা দিয়েছে। একটি জটিল অংশে সে তার বন্ধু বালির কাছ থেকে ইংরেজিতে লেখা একটি চিঠি পায়। এটি ১৯৩০সালে মৃত এক নারীর স্বরের প্রতিস্বর। এখানে বর্ণনা একেবারে পরিবর্তন হয়ে যায়। ওই বৃদ্ধের সময়-তার শ্রেণি, তারা কী বিশ্বাস করতো; সেই সময়ে সত্য বলে কি প্রচলিত ছিল তাই সামনে চলে আসে। এমন একটি জায়গায় গায়েত্রীর চিঠিগুলি স্বাভাবিক আর স্বত:স্ফুর্তভাবে আমাকে সেই সব সামনে নিয়ে আসতে দিয়েছে। এখানে ভিন্ন বা এককভাবে কোন নারী বা পুরুষকে খোঁজ করা হয়নি। সত্যিই না।

প্রশ্ন : পুরস্কারপ্রাপ্তিকে কীভাবে দেখেন?

পুরস্কারপ্রাপ্তির মাধ্যমে একজন লেখক বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠেন।  যেহেতু সাহিত্যিকগণ পুরস্কারের জন্য বইটি মনোনীত করেন, সেহেতু পুরস্কারপ্রাপ্তি একজন লেখকের কাছে তার কাজের সংশোধনের মতো।

প্রশ্ন : আপনি ইংরেজি, হিন্দি এবং বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারেন।  চিন্তা করার জন্য কোন ভাষাটি বেছে নিতে চান?

বাংলা ও ইংরেজি।

প্রশ্ন: লেখা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। আপনি কি মনে করেন, ডিএসসি পুরস্কারের মতো উদ্যোগগুলি উদীয়মান লেখকদের পরিপূর্ণ পেশা হিসাবে গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করবে?

লেখালেখিকে যেকোন দেশে পরিপূর্ণ পেশা হিসেবে গ্রহণ করা সম্ভব না। বেশিরভাগ লেখক অন্য পেশায় নিযুক্ত থাকেন। পশ্চিমবঙ্গে বিপুল সংখ্যক সৃজনশীল রয়েছেন, কিন্তু তারা কেবল লেখালেখিই করছেন না। এর পাশাপাশি অন্যপেশায় নিযুক্ত রয়েছেন।

 প্রশ্ন: আপনি বর্তমানে কি পড়ছেন? বই পড়ার জন্য কত সময় বরাদ্দ রাখেন?

আমার একসঙ্গে দুই থেকে তিনটি বই পড়ার ঝোঁক রয়েছে। এই সময়ে জেনেট ম্যালকম-এর ‘জার্নলিস্ট অ্যান্ড দ্য মার্ডারার’ বই পড়ছি। এতে সংবাদ এবং সাংবাদিকের মধ্যে অস্বাভাবিক সম্পর্ক নিয়ে লেখা রয়েছে।

 প্রশ্ন: বিশেষভাবে কার লেখা আপনি পছন্দ করেন, কেন পছন্দ করেন?

আমি অ্যালিস মুনরোর কাজকে ভালোবাসি – কারণ তার ছোট গল্পগুলিতে আধ্যাত্মিকতা রয়েছে। তার গল্পগুলির ছাপ মনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে। তিনি সংক্ষিপ্ত বিররণে লিখে ফেলতে পারেন। মুনরোর পর্যবেক্ষণ তীক্ষ্ন, আগে থেকে বোঝা যায় না তার লেখা আমার কাছে উপহারের মতো।

অনুবাদ : স্বরলিপি

 

০ মন্তব্য করো
0 Facebook Twitter Google + Pinterest
শিল্প-সংস্কৃতি

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ

আজ ১৩ নভেম্বর, নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৭০তম জন্মবার্ষিকী। দিনটি উপলক্ষ্যে হুমায়ূন ভক্তরা তার লেখা সাহিত্য, গান এবং নাটক-সিনেমায় তাকে স্মরণ করছেন।

প্রায় পাঁচ দশকের ধরে তিনি লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার লিখনীতে তিনি বাঙালি সমাজ ও জীবনধারা তুলে ধরতে নিজস্ব একটা কৌশল অবলম্বন করতেন। প্রাধান্য দিতেন লোকজধারাকে। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার, গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন।

হুমায়ূন আহমেদ  শিল্প-সাহিত্যর যেখানেই হাত দিয়েছেন তাঁর কীর্তি রেখেছেন। তৈরি করেছেন নিজস্ব এক ধারা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের কথাও ফুটে উঠেছে তার উপন্যাস, নাটক ও চলচ্চিত্রে। তাঁর পরিচালিত নাটক-সিনেমায় অভিনয় করে অনেকেই তারকা শিল্পীর খ্যাতি পেয়েছেন।

টেলিভিশন নাটকের বাঁক বদলে সৃষ্টি করেন নতুন এক অধ্যায়। ১৯৯৪ সালে তাঁর নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র আগুনের পরশমণি মুক্তি পায়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ আটটি পুরস্কার জিতে। তাঁর নির্মিত অন্যান্য সাড়া জাগানো চলচ্চিত্রগুলো হলো শ্রাবণ মেঘের দিন (১৯৯৯), দুই দুয়ারী (২০০০), শ্যামল ছায়া (২০০৪), ও ঘেটু পুত্র কমলা (২০১২)।

হুমায়ূন আহমেদের ১১৮টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছে অন্য প্রকাশ। তার প্রকাশিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বই হচ্ছে, মিছির আলীর চশমা, আমিই মিছির আলী,জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প,  কিশোর সমগ্র, মধ্যাহ্ন, হিমুর আছে জল, হিমুর বাবার কথামালা, লীলাবতী, হরতন ইস্কাপন, , আজ হিমুর বিয়ে, হিমু রিমান্ডে,  কিছু শৈশব, দিঘির জলে কার ছায়া গো, আগুনের পরশমণি,হুমায়ূন আহমেদের ভৌতিক অমনানিবাস।

কালজয়ী এই কথাসাহিত্যিক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ  একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পদকসহ দেশে-বিদেশে অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম। তাঁর বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মায়ের নাম আয়েশা ফয়েজ। মুক্তিযুদ্ধে তিনি শহীদ হন।

২০১২ সালের ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের দূরারোগ্য ক্যান্সারের কাছে হার মানেন এই কালজয়ী কথাশিল্পী। মৃত্যুর পর হুমায়ূন আহমেদকে গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে সমাহিত করা হয়।

রোদসী/এসআইএস।

 

০ মন্তব্য করো
0 Facebook Twitter Google + Pinterest
এই সংখ্যায়শিল্প-সংস্কৃতি

মুক্তিযুদ্ধের আঁতুড়ঘরে

(জাহানারা ইমাম একখ- বাংলাদেশ। একটা মুক্তিযুদ্ধ। একজন মা। একটা জাতির মাতা। সেই সঙ্গে পথপ্রদর্শক। যিনি দেশকে আগলে রেখেছেন বুকে। তার বাড়িতে গড়ে ওঠা জাদুঘর ঘুরে এসে ভ্রমণগদ্য লিখেছেন তাসনুভা রাইসা)

‘আজ ভোরে বাসায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা তোলা হলো। ২৫ মার্চ ফ্ল্যাগ পোলটায় বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে আবার নামিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। সেই ফ্ল্যাগপোলটায় আজ আবার সেদিনের পতাকাই তুললাম।’

জাহানারা ইমাম তার বিখ্যাত বই ‘একাত্তরের দিনগুলি’তে কথাগুলো লিখেছেন ১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে। স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রায় প্রথম একটি পূর্ণাঙ্গ দিনের শুরু হয়েছিল ৩৫৫, এলিফ্যান্ট রোডের কণিকা নামের দ্বিতল বাড়িটির ছাদে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে।

জুরু, জাহানারা বেগম, জাহানারা ইমাম এবং শহীদজননী নামগুলো আলাদা, কিন্তু মানুষটা এক। বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকা শহীদজননী জাহানারা ইমাম শরীফ ইমামের স্ত্রী, রুমী-জামীর মা। এই শহীদজননীর সঙ্গে আমার পরিচয় আমার জননীর হাত ধরে। আমাদের বাড়িতে যে বই আসত, সবই পড়ে ফেলতাম, স্কুলে থাকতেই এভাবে ‘একাত্তরের দিনগুলি’ পড়া শেষ। তাই শহীদজননী জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘর ‘কণিকা’তে মায়ের সঙ্গেই যাব, এ ব্যাপারে অনড় ছিলাম।

অবশেষে এক বিকেলে, তিন প্রজন্ম আমার মা, বাবা আর আমার দুই বছরের কন্যাকে নিয়ে ‘কণিকার’ উদ্দেশে রওনা হলাম। ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘর’-এর পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা, ‘৩৫৫ নিউ এলিফ্যান্ট রোড’ ফেসবুক পেজ থেকে সংগ্রহ করেছিলাম। কাছাকাছি যেতেই মা বলল অ্যারোপ্লেন মসজিদের কাছে হবে, সেই যে একাত্তরের দিনগুলিতে পড়েছিলেন, সেটি আওড়ালেন। বাসাটি আসলে খুব সহজ একটা অবস্থানে কিন্তু তেমন কোনো সাইনবোর্ড না থাকায় অনেকেই খুঁজে পান না। বাটা সিগন্যাল ধরে গাউছিয়া যাওয়ার পূর্বে ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের ঠিক বিপরীত গলির একদম শেষ মাথার ৬ তলা একটা অ্যাপার্টমেন্টেই ‘কণিকা’, যেটি একসময় দ্বিতল বাসা ছিল।

শুধু শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই জাদুঘর। দর্শনার্থীদের কোনো প্রবেশমূল্য দিতে হয় না। ১৯৭১ সালে পাকবাহিনীর চেষ্টা ছিল ঢাকাকে অন্তঃসারশূন্য এক নগরীতে পরিণত করার। ২৫ মার্চ সর্বপ্রথম যে নৃশংস হামলা করা হয়, সেটি এই ঢাকাতেই, মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকায় বসবাসরত মুক্তিকামী দেশপ্রেমিক, সংস্কৃতমনা শিক্ষিত পরিবারগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সাহায্য করেছেন। সে কারণেই অত্যাচার, হত্যা থেকে শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, ডাক্তার, গায়ক, গীতিকার, কাউকে বাদ রাখেনি হানাদারেরা। জাহানারা ইমাম ও তার পরিবার অগ্নিঝরা এই পুরো সময়টাতেই ‘কণিকা’ ছেড়ে কোথাও যাননি। এখান থেকেই সূর্যের মতো জ্বলজ্বলে জাহানারা ইমামের ভাষায় ‘রুমীর মতো তাগড়া’ ছেলেকে মুক্তির মশালে আলো জ্বালানোর জন্য কোরবানি করে দিয়েছিলেন।

কণিকা নামের সেই বাড়িটি এখন রূপান্তরিত হয়েছে একটি বহুতল ভবনে। সেই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ২০০৭ সালে কনিষ্ঠ পুত্র সাইফ ইমাম জামী গড়ে তোলেন ‘শহীদজননী জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘর’। ২৪ জুন ২০০৭ তারিখে জাদুঘর উদ্বোধন করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।

এক শহীদজননীর অন্দরমহলে সবই দুঃখগাথা বা শোক? কণিকার চার দেয়ালে কি শুধুই বিষাদের ছায়া? কণিকার দরজার বাইরে থেকে শোনা যাচ্ছিল, মুক্তিযুদ্ধের সময়কার উজ্জীবিত সেই গান আর সুর।

কারার ঐ লৌহ কপাট…

একে একে…

রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি বাংলাদেশের নাম…

জয় বাংলা, বাংলার জয়…

কণিকায় কোনো ভারী আসবাবপত্র নেই। ছিমছাম রুচির ছোঁয়া সবখানে। শহীদজননীর মৃত্যুর ১৩ বছর পর প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় ‘কণিকা’র মূল সামগ্রী তেমন পাওয়া যায়নি। যতটুকু জিনিস, আসবাবপত্র, ক্রোকারিজ, ছবি, ডকুমেন্ট পাওয়া গিয়েছে, সেগুলো উপস্থাপনসহ তার পুরো পরিবারের অবদান তরুণ প্রজন্মের দৃষ্টিগোচরে আনার চেষ্টা রয়েছে সবখানে। সোফাসেট, বইয়ের আলমারি, ক্রোকারিজ রাখার শোকেস, মাস্টারবেড, টি-টেবিলগুলোতে কাঠের অংশ তেঁতুল বিচি রঙের বার্নিশ করা। জাহানারা ইমাম নিজ সংসারে যেভাবে পরিপাটি আর পরিচ্ছন্নভাবে সেগুলো ব্যবহার করতেন, সেভাবে রাখা হয়েছে এখানেও। দরজা দিয়ে হলঘরে প্রবেশ করে চোখে পড়বে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে থাকাকালীন ইউনিভার্সিটি অফিসার্স কোরের পোশাক পরিচ্ছদে রুমীর হাস্যোজ্জ্বল প্রতিকৃতি। স্বতন্ত্র এক ব্যক্তিত্বকে ফ্রেমে আবদ্ধ করা। পাশেই দেয়ালে শোভা পাচ্ছে নান্দনিক এক তৈলচিত্র। কণিকার যাঁরা জীবিত নেই, জাহানারা ইমামের স্বামী এবং শহীদ রুমীর পিতা শরীফ ইমাম, তার পাশে হাস্যোজ্জ্বল এবং মধ্যমণিতে জাহানারা ইমাম।

নহে সামান্য নারী!

স্নেহবলে তিনি ‘আম্মা’, বাহুবলে রাজা। একাধারে লেখক, বিচিত্রার দুর্দান্ত টিভি ক্রিটিক, নারী আইকন এবং বাংলাদেশের সুচিত্রা সেন জাহানারা ইমামকে দেখছিলাম। স্টাইল, বিদ্যা, বুদ্ধি, সংযম, শিক্ষা, দয়া, আধুনিকতার আঁকর এই নারী। বাড়ির দোতলায় একটি বড় হলরুম এবং ছোট একটি অফিস কক্ষ নিয়ে জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত।

জাদুঘরের বড় হলঘরে জাহানারা ইমাম ও শহীদ রুমীর পরিবারের ব্যবহৃত অনেক জিনিস স্থান পেয়েছে। একটা বোর্ডে জাহানারা ইমামের নিজের হাতে লেখা চিঠি এবং তাকে নিয়ে প্রকাশিত লেখা শোভা পাচ্ছে। জাহানারা ইমামের ব্যবহৃত জিনিসগুলোকে লেবেলিং করা ‘আম্মার ওমুক জিনিস’ এভাবে। যেমন ‘আম্মার ব্যবহৃত তোয়ালে’, বারান্দায় স্টিলের আলমারির ওখানে ‘আম্মার ব্যবহৃত আলমারি’। রুমীর মা, কীভাবে সবার আম্মা হয়ে উঠলেন, সে প্রসঙ্গে জামীর বক্তব্য তথসূত্র থেকে উদ্ধৃত করলাম

‘১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১-এর আগে আম্মা ছিলেন শুধু আমার আর ভাইয়ার। ১৬ ডিসেম্বর থেকেই আম্মার ওপর আমার একচেটিয়া অধিকার অতীত হয়ে গেল। ভাইয়ার চমৎকার বন্ধুরা আর সহযোদ্ধারাও তাকে আম্মা ডাকতে শুরু করল। তাদের সবাইকে তিনি আপন করে নিলেন। ঘরভর্তি ভাই আর বোন পেয়ে গেলাম আমি।’

কণিকা ছিল ‘রুমীর বাড়ি’। স্মৃতি জাদুঘরের হলঘরে ‘আর দশজন থেকে আলাদা রুমীর স্মারকগাথা অংশের নাম ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’। ছোট্ট রুমী থেকে বিশ বছর বয়সী রুমীর নানা উপাদানের ছবি। ছাত্রজীবনে দারুণ মেধাবী শহীদ রুমীর কৃতিত্বের অনেক স্মারক রয়েছে এই অংশে। এই অংশটি দেখার সময় কেন জানি রুমীকে খুব সামনে দেখতে পেলাম। কেন পাব না? রুমী তো জেগে আছে। বারবার ফিরে এসেছে ‘রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক সাদা ছেঁড়া পালে ডিঙ্গা বায়; সেই কিশোর হয়ে বাংলার নদী মাঠ ক্ষেতে ভালোবেসে’। এই যুগের তরুণেরা অনেক মেধাবী, কিন্তু তাদের জন্য দরকার আইকনিক ‘রোলমডেল’। পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ধরার পড়ার কিছুদিন আগে যে রুমী তার মাকে বলেছিলেন, ‘আমাদের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল খালেদ মোশাররফ কি বলেন জানো? তিনি বলেন, কোনো স্বাধীন দেশ জীবিত গেরিলা চায় না; চায় রক্তাত্ব শহীদ। অতএব মামণি, আমরা সবাই শহীদ হয়ে যাব এই কথা ভেবে মনকে তৈরি করেই এসেছি।’

কণিকার এক পাশে একটি লাইব্রেরি। সেখানে দর্শনার্থী ও আগ্রহী পাঠকদের জন্য মুক্তিযুদ্ধের অনেক মূল্যবান বই রয়েছে। এখান থেকে আমি কিনলাম, ‘শহীদ শাফী ইমাম রুমী স্মারকগ্রন্থ’।

রুমীকে হারানোর পর শোক বা বেদনা অনেকটাই সামলে জাহানারা ইমাম, ছোট পুত্র জামী, পুত্রবধূ ফ্রিডা আর যমজ দুই নাতনি লিয়ানা আর লিনিয়ার ভালোবাসা আঁকড়ে ধরে উঠে দাঁড়িয়েছেন আবার। প্রিয় এই স্বজনদের ছবি সংরক্ষিত রয়েছে মাস্টার বেডের পাশে। আরও আছে লাল রঙের টেপরেকর্ডার, যেটি ছিল ১৯৭১ সালের সার্বক্ষণিক সঙ্গী, স্বাধীন বাংলা বেতার আর আকাশবাণীতে কান পেতে থাকতেন মুক্তির পানে।

থমকে যাওয়া সময়ে তন্ময় হয়ে গিয়েছিলাম স্মৃতিতে, কিন্তু বাস্তবে জাদুঘর বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে এলো, আমার কন্যাও ঘরময় ছুটে বেড়াচ্ছে, চঞ্চলতা করছে বেশ, ফেরার পালা।

ফেরার পথে আবারও শহীদজননীর মুখোমুখি। মরণব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছেন শহীদজননী জাহানারা ইমাম। অসুস্থ শরীরের তিনি একাত্তরের ঘাতক, যুদ্ধাপরাধীসহ স্বাধীনতাবিরোধী সব অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেই যাচ্ছেন। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী চেতনা আর ইতিহাস বিকৃতির কবলে পড়ে জাতি যখন দিশেহারা, যখন আবারও ধেয়ে আসছে অন্ধকার। এই অন্ধকারের বুক চিরে প্রতিবাদের মশাল হাতে এগিয়ে আসেন শহীদজননী জাহানারা ইমাম। জীবনের শেষ মুহূর্তে তিনি তার দায়িত্বের কথা না ভুলে কাঁপা কাঁপা হাতে লিখলেন দেশবাসীর উদ্দেশে। চোখ রাখলাম হাসপাতালের মৃত্যুশয্যা থেকে সহযোদ্ধা দেশবাসীর উদ্দেশে শহীদজননীর নিজ হাতে লেখা চিঠির শেষ চরণ দুটিতে

‘১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ভার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখার দায়িত্ব তুলে দিয়ে যাচ্ছি আপনাদের হাতে- বাংলাদেশের জনগণের হাতে।

অবশ্যই, জয় আমাদের হবেই।’

স্মৃতি জাদুঘরের ভেতরে যত্রতত্র ছবি তোলার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে- বাইরে যদিও লেখা ‘ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষেধ’, তারপরও আমি যখন অনুরোধ করলাম, দেখা শেষে একটি স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে যাব, জাদুঘর কর্তৃপক্ষ স্মিত হেসে সায় দিল। কী নিয়ে গেলাম ‘রুমীর বাড়ি’ শহীদজননী জাহানারা ইমাম স্মৃতি জাদুঘর থেকে?

আমি অকৃতি অধম, বেলা শেষে কবি শামসুর রাহমানের শহীদজননীকে নিবেদিত পঙতিমালা বুকে ধারণ করে নিলাম,

‘এই তিমিরাবৃত প্রহরে দেখতে পেলাম

তোমার উত্তোলিত হাতে

নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করছে ফেরারি বসন্ত,

আর আমাদের ভবিষ্যৎ’

ছবি : লেখক

রোদসী/আরএস

 

০ মন্তব্য করো
0 Facebook Twitter Google + Pinterest
শিল্প-সংস্কৃতি

যে মেয়েটি জন কিটসকে ভালোবাসত

ইংরেজি সাহিত্যের শক্তিশালী কবি জন কিটসের জন্ম এ মাসের ৩১ তারিখে। রোমান্টিক কবি কিটস ব্যক্তিজীবনেও ছিলেন একজন প্রবল প্রেমিক। অথচ প্রেমিকা ফ্যানির সঙ্গে হৃদয় লেনদেন নিয়ে আছে অনেক কানাঘুষা। তাহলে কেমন ছিল সেই প্রেম? লিখেছেন মিলন আশরাফ।

নভেম্বর মাস। সালটা ১৮১৮। হাম্পস্টেডের এক বাড়ি। ১৮ বছরের এক সুন্দরী তরুণী। আয়তচোখের ২২ বছরের টগবগে যুবক। তাদের প্রথম পরিচয় ঘটে উল্লিখিত বাড়িটিতে। শুরুর দিকে লজ্জায় কুঁকড়ে গেলেও দু-এক দিন পরে আড়মোড়া ভেঙে সম্পর্ক হয় বন্ধুত্বের। যুবকটি শেক্সপিয়ার, স্পেনসার, মলিয়ের পড়ে শোনায় তরুণীটিকে। নিমগ্ন চিত্তে তরুণীটি সেই সব অমৃত হৃদয়ে পুরে নেয় ভাবুক বুদ্ধিদীপ্ত ছেলেটির মুখের দিকে চেয়ে চেয়ে। ছেলেটির শরীর ছিল একটু শুকনা। ইংরেজ পুরুষদের তুলনায় উচ্চতা ছিল একটু কম। কোনো পার্টিতে সে মেয়েদের সঙ্গে নাচত না। কারণটা ওই উচ্চতা। তবে কোঁকড়ানো লাল-খয়েরি চুল ও আয়তচোখে তাকে দেখাত ভীষণ মায়াময়। এই মায়াময় ছেলেটিই সারা বিশ্বের সৌন্দর্যের কবি জন কিটস। ‘এ থিং অব বিউটি ইজ এ জয় ফরএভার’ এই লাইনটি শোনেনি এমন পাঠক মেলা ভার। লাইনটি কিটসের গ্রিক পুরাণের এক চরিত্রকে নিয়ে লেখা ‘এন্ডিমিয়ন’ পান্ডুলিপির। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, চার হাজার লাইনের ‘এন্ডিমিয়ন’ সেই সময়ের বিখ্যাত ম্যাগাজিন ‘ব্ল্যাকউডস এডিনবরা’ কোনো পাত্তাই দেয়নি। উল্টো সমালোচক বলেছিলেন, ‘কিটস এর উচিত কবিতা লেখা ছেড়ে দেওয়া।’ কড়া সমালোচক জন গিবসন লকহার্ট কিটসকে আক্রমণ করে বলেন, ‘কিটসের ভাষা আঞ্চলিকতা দোষে দুষ্ট, শব্দচয়ন অতি নিম্নমানের।’ সঙ্গে একটি উপদেশনামাও দেয় কিটসের জন্য। সেটি হলো, ‘সে যেন চিকিৎসাশাস্ত্রে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করে।’
সমালোচকদের এসব কথাবার্তার কারণে মাত্র ১৬ বছর বয়সে তার পরিবার তাকে শল্যচিকিৎসকের সহকারী হিসেবে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু কবিতা তাকে এমন আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে যে, চিকিৎসাশাস্ত্র ছেড়ে আবার মনোনিবেশ করেন কবিতায়। সেই সময় তার পাশে ছিলেন পরম বন্ধু আরেক বিশ্বখ্যাত কবি পিবি শেলি। পরবর্তী সময়ে শেলি জানান, ‘সমালোচকদের কড়া মন্তব্য কিটসকে ভেতর থেকে এতটাই দুমড়েমুচড়ে দিয়েছিল যে, তার হৃদয়রোগও এতটা দেয়নি হয়তো।’
কিন্তু সবকিছু বদলে যেতে থাকে তরুণী ফ্যানি ব্রাউনের সঙ্গে পরিচয় ঘটার পর থেকেই। একে একে লিখে ফেলেন বিশ্বখ্যাত সব কবিতা। ‘ব্রাইট স্টার’ নামের কবিতা ও পত্রাবলি সংকলন পড়লে যে কেউ ব্যাপারটি অনুধাবন করতে পারবেন। তাদের প্রেমকাহিনি নিয়ে হলিউডে ‘ব্রাইট স্টার’ নামে একটি সিনেমাও তৈরি হয়েছে। তিনি যে শুধু সৌন্দর্যের কবি তা নয়, প্রেমেরও। তার কথায়, ‘প্রেম আমার ধর্ম, এটার জন্য আমি মরতেও পারি।’
কিটসের প্রেমিকা ফ্যানি ব্রাউন জন্মগ্রহণ করেন ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের ৯ আগস্ট। কিটসের কাব্য সাধনায় এই মেয়েটির গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কিন্তু ভিক্টোরীয় যুগের সমালোচকেরা ফ্যানির ওপর অবিচার করেছেন। কিটসের অকালমৃত্যুর পেছনে অন্যান্য কারণ ছাড়াও ফ্যানির হৃদয়হীনতার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সেই সময়ের সমালোচকেরা। সেই হৃদয়হীনতার ভার কিছুটা লাঘব হয়ে আসে ১৯৩৭ সালে কিটসের বোনের কাছে লেখা ফ্যানির চিঠি প্রকাশিত হওয়ার পর। চিঠিগুলো কিটস ইতালি যাওয়ার পর লিখে পাঠিয়েছিলেন ফ্যানি ব্রাউন। এক চিঠিতে ফ্যানি লিখেন, ‘অন্য সকলে তোমার দাদার কথা ভুলে যাক, শুধু আমার বেদনাটা বেঁচে থাক।’ জোয়ানা রিচার্ডসন কর্তৃক লিখিত ফ্যানি ব্রাউনের জীবনী পাঠে আমরা বুঝতে পারি, কিটসকে সত্যিই ভালোবাসত ফ্যানি এবং কোনো অন্যায় আচারণও করেনি সে কবির প্রতি।
ফ্যানির সঙ্গে পরিচয়ের দেড় মাসের মাথায় বিয়ের প্রস্তাব দেন জন কিটস। সে প্রস্তাবে রাজিও হয় ফ্যানি। কিটসের বৈষয়িক অবস্থা জেনেবুঝেও এ রকম সিদ্ধান্ত বোকামির নামান্তর বটে! অল্প বয়সে বাবাকে হারান কবি। স্কুলে পড়াকালীন মা মারা যান। ছোট ভাই টমের মৃত্যুও ঘটে ওই একই রোগে। সেই সময়ে কবির নিজের স্বাস্থ্যও ভালো যাচ্ছিল না। তার ওপর আবার লাভের ব্যবসা ডাক্তারি ছেড়ে আরম্ভ করেছেন কবিতা লেখা। নিজের খরচ সে নিজেই চালাতে পারেন না। ফ্যানি যদি সত্যিই ভালো না বাসবে তাহলে এমন বোকামি কেন করবে? তাঁদের বাগদানের কথা জানল দু-একজন ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজন। তারাই ঠিক করলেন উপার্জনের একটা পথ বের করে তারপর বিয়ে হবে। কিন্তু ভাগ্যদেবতা মুখ তুলে তাকালেন না। হৃদয়রোগ প্রকাশ পেল কিটসের। তার সব আশা লন্ডভন্ড হয়ে গেল। শরীর ভেঙে পড়ল। ফ্যানি রোজ দেখতে আসতেন তাকে। কিন্তু কিটসের প্রেম ছিল সর্বগ্রাসী। তিনি চাইতেন, ফ্যানি সারাক্ষণই তার পাশে পাশে থাকুক। কিটসকে অসুস্থ অবস্থায় ফেলে সে অন্য কারও সঙ্গে নাচবে, গল্প করবে, হাসবে এসব সহ্য করা তার জন্য কঠিন ছিল। এসব সন্দেহে ফ্যানিকে অনেক অপমানও করেছেন কবি। কিন্তু ফ্যানি সব মুখ বুজে সহ্য করেছেন কবিকে ভালোবাসতেন তাই। ওই সময়টাতে কিটসের সব কবিতাতেই ফুটে উঠেছে ব্যর্থ প্রেমের হাহাকার। চিঠিগুলোতেও তাই। চরম এক হতাশায় পেয়ে বসে তাকে। ফ্যানির চরিত্রের ওপর সন্দেহের তির নিক্ষেপ করেন তিনি। এসব অভিযোগের পরেও হতাশাগ্রস্ত কবিকে ছেড়ে চলে যাননি প্রেমিকা ফ্যানি ব্রাউন।
এমন করে করে বাগদানের প্রায় এক বছর দশ মাস পার হল। সুস্থতার কোনো লক্ষণ দেখা গেল না। ডাক্তার পরামর্শ দিলেন, শীতের আগেই তাকে ইতালি নিয়ে যেতে হবে। ফ্যানির ইচ্ছা ছিল কিটস ইতালি যাওয়ার আগেই বিয়েটা হোক। আপত্তিটা আসল কিটসের কাছ থেকে। এই শরীরে তার মন সায় দিল না। তা ছাড়া ফ্যানি তখনো অপ্রাপ্তবয়স্ক। বিয়েতে তার মায়ের মতো লাগবে, তিনি মত দিলেন না। অবশেষে ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে ১৩ সেপ্টেম্বর কিটস বিদায় নিল ফ্যানির কাছ থেকে। রওনা হলো ইতালির পথে। যাওয়ার আগে ফ্যানি কবির কাপড়চোপড় গুছিয়ে বাক্সে ভরে সঙ্গে কিছু উপহারও দিয়েছিলেন। কিটস দিয়ে গিয়েছিলেন সেভার্নের আঁকা তার নিজের ছবি ও প্রিয় বইগুলো। ইতালি যাওয়ার আগে ফ্যানিদের বাড়িতে কয়েক দিন ছিলেন কিটস। এই কয়েকটি দিন ও ফ্যানির অশ্রুসিক্ত বিদায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করা পর্যন্ত বারবার মনে পড়ত তার। ফ্যানির নাম শুনলেই দেহ টালমাতাল হয়ে যেত কিটসের। ইতালি এসে তিনি আর চিঠি লিখতেন না ফ্যানির কাছে। বন্ধুরা কিটসের চিঠি পেত নিয়মিত। তাদের কাছ থেকে কিটসের খবর নিতেন ফ্যানি। একবার ফ্যানির লেখা চিঠি এলে বন্ধু সেভার্নকে ডেকে বললেন, ‘এ চিঠি আমি পড়তে পারব না। আমি মারা গেলে বুকের ওপর রেখে কবর দিও আমাকে।’ কিটসের এই নির্দেশ পালন করা হয়েছিল। এই নির্দেশ পালন করার ফলে ফ্যানির শেষ চিঠিতে কী লেখাছিল, তা অজানাই থেকে যায় চিরদিনের মতো।
১৮২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি মাত্র ২৫ বছর ৪ মাস বয়সে রোমে মারা যান কিটস। তার মৃত্যুসংবাদ খুব শান্তভাবেই গ্রহণ করেন ফ্যানি। ধারণা করা হয়, ফ্যানি চাপা স্বভাবের মেয়ে হওয়ায় কোনোরকম উচ্চবাচ্য করেননি। তার প্রেম অন্য কেউ বুঝতে পারত না। প্রকাশ ক্ষমতা কম ছিল। জীবনীকার রিচার্ডসন জানান, ‘কিটসের মৃত্যুর ৬ বছর পর্যন্ত ফ্যানি বিধবার কালো পোশাক পরেছিল, চুল ছেটেছিল ছোট করে।’ ফ্যানি খুব রূপবতী ছিলেন। কিটস তার সম্পর্কে বলেছিলেন, ’The richness, the bloom, the full form, the enchantment of love after my own heart.’

কিটস মারা যাওয়ার পর ফ্যানিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে অনেকে। সুন্দরী তরুণীর জন্য এটাই স্বাভাবিক। তাদের ফেরাতেও বেশ বেগ পেতে হয়েছে তার। বেশির ভাগ সময়ই তিনি থেকেছেন শীতল। অবশেষে জন কিটসের মৃত্যুর বারো বছর পর বিয়েতে বসেন ফ্যানি ব্রাউন। বিয়ে করেন লুই লিন্ডোকে। ধারণা করা হয়, লুই লিন্ডোর ভেতর হয়তো তিনি কিটসের ছায়া দেখতে পেয়েছিলেন। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন ফ্যানি। কিটসের দেওয়া উপহার ও চিঠিগুলো সযত্নে রেখে দিয়েছিলেন আমরণ। তা না হলে বিশ্বসাহিত্য থেকে এই অমূল্য সম্পদগুলো হারিয়ে যেত চিরতরে। কিটসকে আজীবন ভুলতে পারেননি ফ্যানি। একবার কবি ফ্যানিকে বলেছিলেন, ‘তোমার যদি ছেলে হয়, তবে তার নাম জন রেখো না। এই নামটি বড়ই অপয়া। আমার নাম জন দেখেই সেটা অনুমান করতে পারছ নিশ্চয়। তার চেয়ে বরং তোমার ছেলের নাম রেখো এডমন্ড। এটা বেশ ভালো নাম।’ ফ্যানি কবিকে আজীবন মনে রাখার আরেকটি প্রমাণ দিলেন। নিজ ছেলের নাম রেখেছিলেন কিটসের দেওয়া এডমন্ড (অর্থ-ঐশ্বর্যের সুরক্ষা)
কিটসের প্রায় সব বন্ধুই তখন মারা গেছে। ইতালিতে কিটসের কবরের কাছাকাছি থাকত সেভার্ন। ফ্যানি শেষ বয়সে হাম্পস্টেডে ফিরে আসেন। অর্থাৎ যেখানে তাদের প্রথম পরিচয় ঘটে। মৃত্যুর কিছুদিন আগে দারিদ্র্য ফ্যানিকে আঁকড়ে ধরে। অভাবে পড়েন। শেষ সম্বল বলতে কিটসের দেওয়া বন্ধু সেভার্নের আঁকা ছবি। বাঁচার শেষ অবলম্বন হিসেবে ছবিটি বিক্রির জন্য স্বামীর হাতে দিয়ে এক বন্ধুর কাছে পাঠালেন। ছবির সঙ্গে লিখে দিলেন একটি চিরকুট : ‘It would not be a light motive that would make me part with it.’
ছবিটি বিক্রির পর বেশি দিন বাঁচেননি তিনি। দারিদ্র্যের কাছে নিজের প্রেমের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে ১৮৬৫ সালে ডিসেম্বর মাসে ৬৫ বছর বয়সে ফ্যানি ব্রাউন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

পুনশ্চঃ জোয়ানা রিচার্ডসন লিখিত ‘ফ্যানি ব্রাউন’ বইটির সাহায্য নেওয়া হয়েছে।

০ মন্তব্য করো
0 Facebook Twitter Google + Pinterest
জীবনশিল্প-সংস্কৃতি

মেয়েদের জামার বোতাম বামে কেন?

বোতামের ব্যবহার শুরু সিন্ধু সভ্যতার সময়ে। ঝিনুকের খোলসে বানানো হতো। ‍১৩ শতকে জার্মানিতেও বোতামের  প্রচলন হয়। ছেলেদের শার্টের বোতাম ডানে এবং মেয়েদের বামে। কিন্তু কারন কী জানো? তাহলে জেনে নাও রহস্য…

১৩ শতকের মাঝামাঝির দিকে কেবল ধনীদের জামায় বোতাম লাগানো হতো। পুরুষরা নিজেরাই কাপড় পরতেন। শার্টের বোতামও হতো ডানে। আর ধনী নারীদের জামা পরাতে দাসী রাখা হতো। তাই দাসীদের জামা পরানোর সুবিধার জন্যেই মেয়েদের জামার বোতামগুলো বামে রাখা হতো। এমনাই দাবি করে আসছে ইতিহাসবিদদের একাংশ।

আবার আরেকদল মনে করেন, নেপোলিয়ন বোনাপার্ট এই নিয়মের প্রবর্তন করেন। নেপোলিয়নের এক হাত শার্টের ভিতর গুজে রাখার একটি অভ্যাস ছিল। নারীরা এটা নিয়ে ঠাট্টা করতো। এটি উপলদ্ধি করতে পেরেই তিনি মেয়ের শার্টের বোতাম উল্টো দিকে লাগানো আদেশ দেন।

এদিকে অধিকাংশ মানুষ ডান হাতে বেশি কাজ করেন। আর পুরুষরাই সাধারণ শার্ট পরেন। আর ডান হাতেই শার্টের বোতাম খুলতে সুবিধা। সে কারনেই পুরুষের জামার বোতাম ডানে। অন্যদিকে বাচ্চাকে মাতৃদুদ্ধ পান করানোর সময় নারীরা ডান হাত খালি রাখে। সেজন্য বাম দিকে বোতাম হলে নারীদের জন্য সহজ হয়।

রোদসী/এসআইএস।
০ মন্তব্য করো
0 Facebook Twitter Google + Pinterest
এই সংখ্যায়শিল্প-সংস্কৃতি

মুদ্রায় সৌখিনতা | মুদ্রায় ইতিহাস

মুদ্রা সংগ্রাহক নোমান নাসির। হরিকেল, সমতট, মুর্শিদাবাদসহ বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাচীন মুদ্রা তার সংগ্রহে। কেবল সংগ্রহ করেই থেমে থাকেন না, সেগুলোর ইতিহাসও জানার চেষ্টা করেন এই মুদ্রা বিশেষজ্ঞ।

১৯৮১ সালে ঢাকায় জন্ম নোমান নাসিরের। পেশায় ব্যাংকার। বাংলাদেশ নিউম্যাচম্যাটিকস কালেক্টরস সোসাইটি ও ওরিয়েন্টাল নিউম্যাচম্যাটিকস সোসাইটির (ইউকে)’র সদস্য। মুদ্রা বিষয়ে তার লেখা আর্টিকেল দেশি-বিদেশি পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে। প্রাচীন শিলালিপি নিয়েও তার যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে।

১৯৯৬ সালের দিকে গুলিস্তানে পুরোনো মুদ্রার দোকানে একটি পয়সা দেখেন। পয়সাটি ঠিক চেনা নয়! ঢাকা মিউজিয়ামে গিয়ে একই পয়সা দেখেন। তার মনে পরে গুলিস্তানে দেখা পয়সাটির কথা।
নোমান নাসির মনে করেন, এই যে মিউজিয়ামে এসে পুরোনো দিনের টাকা দেখা, বেশ ইন্টারেস্টিং। নিজেই জমাতে শুরু করেন মুদ্রা। যেই ভাবা সেই কাজ। বিশেষ ব্যক্তির উৎসাহে নয়, একটি ঘটনা তাকে এগিয়ে দিল মুদ্রা সংগ্রহের পথে।-হুম। এমনটাই জানালেন এই সংগ্রাহক।
একে একে, দুইয়ে দুইয়ে বাড়তে বাড়তে তার সংগৃহীত মুদ্রার সংখ্যা প্রায় হাজার ছাড়িয়েছে। সব মুদ্রা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করেছেন, তা কিন্তু নয়। স্বর্ণকারের কাছ থেকেও মুদ্রা সংগ্রহ করেন। অধিকাংশ মুদ্রা তার হাতে পৌঁছেছে, ডিলারদের মাধ্যমে। এই ডিলারদেও কাজ হলো গ্রামে গ্রামে ঘুরে এবং মানুষের কাছে গচ্ছিত মুদ্রা সংগ্রহ করা। তারপর একসঙ্গে অনেকগুলো নিয়ে চলে আসে মুদ্রা সংগ্রাহকদের কাছে। এসব মুদ্রার দাম নির্দিষ্ট নয়। সোনা-রুপা-ব্রোঞ্জ ধাতু দ্বারা গঠিত মুদ্রাগুলোর আকার-আয়তন ও দামের তারতম্য আছে। স্বর্ণকার বাজারদরে কিনে নিয়ে, সংগ্রাহকের কাছে আরও কিছু বেশি দামে বিক্রি করে থাকেন। শুধু দেশের ডিলারদের কাছ থেকে নয়, বিদেশী অনেক ডিলার এবং অকশন হাউস থেকেও মুদ্রা সংগ্রহ করেন নোমান নাসির।
সংগ্রহ করলেই তো হলো না, এর সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টিও চলে আসে। আবার সঠিক যত্নে রাখার বিষয়টি তো থাকছেই। সংগৃহীত মুদ্রা তিনি প্রথম প্রথম পলিথিনে জড়িয়ে কৌটায় রাখতেন। এরপর মুদ্রা রাখা শুরু করলেন অ্যালবামে।
রোদসীর শিল্পনির্দেশক তৌহিন হাসান ভাইয়ের সঙ্গে একদিন গেলাম নোমান নাসিরের বাসায়। শোনা হলো তার কথা, দেখা হলো নোমান নাসিরের সংগ্রহে থাকা স্বর্ণ-রৌপ্যর মুদ্রা।
তিনি বলেন,‘মূল আগ্রহ হচ্ছে, প্রাচীন এবং মধ্যযুগের বাংলার মুদ্রা, হাজার বছর পূর্বেও ছাপাঙ্কিত মুদ্রা থেকে শুরু করে ষোড়শ শতকের সুলতানী যুগের মুদ্রা সংগ্রহ।’
কোনো কোনো মুদ্রায় বর্ণ নেই, কেবল প্রাণীর ছবি আছে। নোমান নাসির বললেন, ‘এগুলো হরিকেল অঞ্চলের মুদ্রা।’
হরিকেল অঞ্চল বর্তমানের চট্টগ্রাম জেলা, কর্ণফুলী নদীর উত্তরাংশ নিয়ে গঠিত ছিল। পরবর্তীতে, নোয়াখালী ও কুমিল্লা নামকরণ হয়ে যায়। শ্রীহট্ট বা সিলেট এই অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হয়।
যাইহোক, কিছু মুদ্রার ওপর আরবি ক্যালিগ্রাফি। নোমান নাসির বললেন, ‘এগুলো সুলতানদের আমলের মুদ্রা’। আর কিছু মুদ্রার ওপর ব্রাহ্মলিপি খচিত। খ্রিষ্টপূর্ব (৬০০-৬৩৫) সময়ের স্বর্ণমুদ্রা সেগুলো। নোমান নাসির সে মুদ্রাগুলোকে সমতট অঞ্চলের মুদ্রা বলে উল্লেখ করলেন।
মুদ্রা দেখে অঞ্চল বা সময় বুঝতে পারেন কীভাবে? প্রশ্নের জবাবে নোমান নাসির বলেন, ‘প্রথমে যে মুদ্রাটি সংগ্রহ করেছিলাম, সেটি ছিল সম্রাট শাহজাহানের সময়ের মুদ্রা। আমি কিন্তু তখন বুঝতে পারিনি। প্রাচীন মুদ্রাগুলো যখন সংগ্রহ করা শুরু করলাম, আমার মনে হলো এ বিষয়ে পড়ালেখা করা দরকার। না হলে কিছুই জানা যাবে না। প্রথমত শখের বশেই শুরু করেছিলাম মুদ্রা সংগ্রহ, পরবর্তীতে আসলে তা আর শখ থাকল না, নেশায় পরিণত হয়ে গেল। জীবনের অনেক সময় এই মুদ্রা, কী-কেন-কোথায়-কীভাবে-কখন খুঁজে খুঁজেই কেটে যাচ্ছে।’
মুদ্রার ইতিহাস প্রাচীন আমলের শাসকের স্থায়িত্ব নিয়ে কি কিছু স্পষ্ট করে?
‘হ্যাঁ, এমনও আছে যে এক বছরে পাঁচজন শাসকের কয়েন পাওয়া গেছে। যেমন, ৮৩৭ হিজরিতে পাঁচজন শাসকের নামে কয়েন পাওয়া গেছে। এতে সহজেই বোঝা যায়, এক একজন শাসকের স্থায়িত্ব গড়ে কত দিন ছিল। ওই সময়ে একজন আর একজনকে হটিয়ে ক্ষমতায় বসেছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, একজন শাসকের সার্বভৌমত্বের প্রতীক মুদ্রা বা কয়েন। নতুন কেউ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পরেই নতুন মুদ্রার প্রচলন করেন। এর বাইরে খুতবার সময় শাসকদের নাম প্রচার করা হতো।’ বললেন নোমান নাসির।
আরও চমকিত হওয়ার মতো ব্যাপার হলো একটি প্রাচীন মুদ্রা একজন শাসক ও শাসনের সময়কাল জানার উপকরণ হতে পারে। এমন অনেক শাসকের মুদ্রাও পাওয়া গেছে যাদেও অস্তিত্ব তৎকালীন ইতিহাসে পাওয়া যায় না। শুধুমাত্র মুদ্রার ভিত্তিতে প্রমাণিত হয় যে তারা একসময় এই অঞ্চলের শাসক ছিলেন।
নোমান নাসিরের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেল, একজন শাসকের প্রচলন করা কয়েন আর একজন এসেই অনেক সময় নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কোনো কোনো শাসক পুরোপুরি সফল হয়েছে। ফলে অনেক শাসকের প্রচলন করা কয়েন অনেক দুর্লভ। এর পেছনে সব থেকে বড় রাজনৈতিক কারণ হলো, একজনের কয়েন থাকা মানে তার ইতিহাস থাকা। সেটা থাকতে দেবে না বলেই, কয়েন নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে।
নিউম্যাচম্যাটিকস হচ্ছে মুদ্রাবিজ্ঞান। একজন মুদ্রা সংগ্রাহক যদি মুদ্রার ইতিহাস উদ্ধার করতে না পারে সে কিন্তু বলতে পারবে না তার কাছে কোন সময়ের মুদ্রা আছে। যদি না সে মুদ্রাবিজ্ঞান সম্পর্কে জানে। অথচ, ইতিহাস উদ্ধারের এক অপার সম্ভাবনা থাকে মুদ্রায়। একটি মুদ্রার মাধ্যমে একজন শাসকের নাম ইতিহাসে ফিরে আসতে পারে।
নোমান নাসির যেমনটি করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার একটি আর্টিকেল ছিল, কান্তি দেবকে নিয়ে। কান্তিদেব প্রাচীন বাংলার হরিকেল অঞ্চলের একজন শাসক। তার সময়ের শিলালিপি পাওয়া গেছে। তার সময়ের মুদ্রাও পাওয়া গেছে। সেগুলো নিয়ে আমি লিখেছিলাম। ওই মুদ্রাগুলোর মধ্যে তিনটি মুদ্রা পরিচিত ছিল। এর মধ্যে দুটি মুদ্রা আমার সংগ্রহ করা ছিল, আর একটা মুদ্রা ছিল ভারতীয় এক মুদ্রা সংগ্রাহকের।’
নোমান নাসির আয়ের বড় অংশই মুদ্রা সংগ্রহে ব্যয় করেছেন। আর কোনো সঞ্চয়ে কখনো মনোযোগ দেননি তিনি। এ কাজে পরিবারের সমর্থনও পেয়েছেন।
নোমান নাসির বলেন, ‘পরিবারের সমর্থন ভবিষ্যতে থাকবে কি না জানি না। একটা সময় আমার স্ত্রী যদি হিসাব মেলাতে বসে দেখেন, আমার আশেপাশের সবার বাড়ি-গাড়ি সব আছে, কিন্তু আমার তেমন কিছু করা হয়ে ওঠেনি। এই পরিবেশ পাল্টেও যেতে পারে। হয়তো তাই হবে। প্রত্যেক সংগ্রাহকেরই তাই হয়। ধরা যাক, এই মুদ্রাগুলো ঢাকা জাদুঘরে দিয়ে দেওয়া হলো, এটা একজন সংগ্রাহকের জন্য অনেক বড় ব্যাপার। এখানে প্রশ্ন আসে, এতে পরিবারের সদস্যদের কী লাভ?’
তাই তো। তবু মুদ্রা সংগ্রাহকের সংখ্যা দিনকে দিন বেড়ে চলছেই। নতুন সংগ্রাহকদের জন্য নোমান নাসিরের পরামর্শ হলো, এটাকে কেবল শখ হিসেবে নিলে হবে না। যারা বাগান করে, তারাও কিন্তু গাছ নিয়ে অনেক পড়ালেখা করে। একই ব্যাপার মুদ্রা সংগ্রহের ক্ষেত্রেও। পড়ালেখার কোনো বিকল্প নেই। প্রাচীন ইতিহাস আমরা কীভাবে জানি? আমরা তো খুব সহজেই একটা বই পড়ি। সোর্সগুলো আসলে কী? প্রাচীন কোনো ঐতিহাসিকের লেখা, শিলালিপি, মুদ্রা; এই তিনটিই কিন্তু প্রধান সোর্স। সুতরাং একটি মুদ্রা মানে একসময়ের ইতিহাস। নতুন সংগ্রাহক বেড়েছে, এদিকে বাজারে অনেক ফেক মুদ্রাও বেড়েছে। এগুলো থেকে সাবধান হতে হবে। সংগ্রহের কাজ হুজুগে হয় না, ক্রেজি হয়ে গেলেও হবে না। প্রতি সপ্তাহেই নতুন মুদ্রা সংগ্রহ করা লাগবেই এমনটা হয় না।’
নোমান নাসির স্বপ্ন দেখেন, ব্যক্তিগত একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করবেন। সেখানে রাখবেন তিলে তিলে জমানো মুদ্রাগুলো। কেউ চাইলে সহজেই যেন গবেষণার জন্যও এই জাদুঘরটি ব্যবহার করতে পারে। সেখানে গচ্ছিত মুদ্রার ইতিহাস থাকবে।
নোমান নাসির মুদ্রা বিষয়ক গবেষণার কাজে অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছেন। প্রাচীন বাংলার মুদ্রা সম্পর্কিত তার প্রথম বই (আরলি কয়েনস অব বেঙ্গল) ২০১৬ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বইটি ভারতের বিশিষ্ট মুদ্রা গবেষক শঙ্কর কুমার বসুর সাথে যৌথভাবে লেখা। বর্তমানে কাজ করছেন সুলতানী আমলের মুদ্রা নিয়ে।
মুদ্রা সংগ্রহ নিয়ে আইনি কোনো জটিলতা আছে কি না? নোমান নাসির বললেন, ‘বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, প্রত্মসম্পদ সবই গভর্নমেন্ট প্রোপার্টি। মুদ্রা প্রত্মসম্পদ কি না বিষয়টি পরিষ্কার নয়। Treasure trove act: অনুযায়ী, মাটির নিচে পাওয়া সম্পদের মালিক সরকার। সংগ্রাহকেরা কিন্তু কখনো মুদ্রা মাটি খনন করে পায় না। নিচ থেকে আনেন না। তারা উদ্ধার হওয়া মুদ্রা ক্রয় করেন। এ কাজে সরকারের সরাসরি কোনো নিষেধাজ্ঞাও নেই। কিন্তু একটি মুদ্রা সংগ্রহ হওয়া মানে একটি ইতিহাস জানার সুযোগ তৈরি হওয়া। সংগ্রাহকেরা যদি মুদ্রা সংগ্রহ না করতেন, তাহলে এই সব প্রাচীন নিদর্শন হারিয়ে যেত, অথবা রূপান্তরিত করে ফেলা হতো। আপনার কি মনে হয়, গ্রামের একজন লোক একটা কয়েন পাওয়ার পরে একজন স্বর্ণকারের কাছে বিক্রি করবে, নাকি সেই সেটা সরকারের কোষাগারে জমা দিয়ে আসবে? যেহেতু প্রাচীন মুদ্রার অধিকাংশ মূল্যবান ধাতুর তৈরি সেক্ষেত্রে মুদ্রা পাওয়ার পর সেগুলো গলিয়ে ফেলা হত। এভাবে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন ধ্বংস হয়ে গেছে। সংগ্রাহকরা সংগ্রহ করেন বলেই মুদ্রাগুলো এখন আর গলিয়ে ফেলা হয় না।’
এরপর তিনি জানালের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে মুদ্রা সংগ্রহের পরিবেশ নিয়ে। তিনি বললেন, ‘ভারতের মুদ্রা সংগ্রহের পরিবেশ পরিস্থিতি নিয়েও। ভারতের প্রতিটি স্টেটে আলাদা প্রতিষ্ঠান আছে। তারা খুবই সক্রিয়। কলকাতায় আলাদা এক্সিবিশন হয়, ব্রুশিয়ার আছে, প্রকাশনা আছে। আমাদেও দেশেও আমরা প্রদর্শনীর আয়োজন করছি। আমার মনে হয়, সচেতনতা আরও বাড়াতে হবে।’
বাংলাদেশে মুদ্রা সংগ্রাহকদের জন্য বিশেষ কোনো সুবিধা দেওয়া হয় না। এদিকে ইচ্ছা থাকা সত্তে¡ও দেশের বাইরে কোনো প্রদর্শনীতে অংশ নিতে পারেননি বলে জানান নোমান নাসির।
মুদ্রা প্রদর্শনীতে বেশ জটিলতা আছে। বহন করা যেমন সহজ নয়, তেমনিই প্রথমেই আসে নিরাপত্তার কথা।
এবিষয়ে নোমান নাসিরের মন্তব্য, ‘দেশের ভেতরে যে প্রদর্শনীগুলো হয়, সেগুলোতেও তেমন নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে না। শুধুমাত্র ইতিহাস সংরক্ষণ অথবা জ্ঞানের প্রবৃদ্ধিই নয়, মুদ্রা সংগ্রহে উৎসাহিত করার মাধ্যমে সমাজকে মাদকাশক্তি, হতাশা এবং ক্ষতিকর নেশা থেকেও দূরে রাখা যায়।’
নোমান নাসিরের চাওয়া, ইতিহাস রক্ষার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হোক। মুদ্রা সংগ্রহ সম্পর্কিত নির্দিষ্ট আইন করা হোক।

লেখা : স্বরলিপি

রোদসী/এনপি

০ মন্তব্য করো
1 Facebook Twitter Google + Pinterest
ফটো ফিচারবাংলাদেশ ও বিশ্বশিল্প-সংস্কৃতি

মেরি কোয়ান্ট : মিনি স্কার্টের প্রবক্তা

তার সম্পর্কে বলা হয়, সঠিক সময়ে, সঠিক দেশে, সঠিক মেধা নিয়ে জন্মেছিলেন। বলা হচ্ছে, ফ্যাশন ডিজাইনার মেরি কোয়ান্টের কথা। যিনি ফ্যাশনের দুনিয়ায় যোগ করেছিলেন নতুন মাত্রা। বদলে দিয়েছিলেন, পোশাকের ধরণ। পোশাকে নতুনত্ব যোগ করে, জয় করে নিয়েছিলেন নতুন প্রজন্মের মন।

মেরি কোয়ান্টের বুটিকস হাউস ‘বাজার’।

মেরি কোয়ান্ট লন্ডনের চেলসি কিংস রোড়ে ‘বাজার’ নামে একটি বুটিকস হাউস পরিচালনা করতেন। বুটিকস হাউসের পোশাকগুলো ছিল তার নিজের ডিজাইনের। সেই কাজের ধারাবাহিকতায়, ৬০-এর দশকে মিনি স্কার্ট নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন তিনি। এটি প্রথমত আঞ্চলিক ফ্যাশন হিসেবে পরিচিতি পায়, পরে অন্যতম আন্তর্জাতিক ফ্যাশনে পরিণত হয়।

১৯৬৫ সাল : ফ্যাশন ডিজাইনার মেরি কোয়ান্ট ও তার বর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। (Photo by Keystone/Getty Images)

ওয়াইড লেগড টাউজার এবং স্যুটের ডিজাইনও করেছিলেন মেরি কোয়ান্ট। পোশাকে বিভিন্ন রংয়ের ব্যবহার করে নন্দিত একজন হয়ে ওঠেন।

মেরি কোয়ান্ট । (Photo by Reg Lancaster/Express/Getty Images)

ইংল্যান্ডের রানী এলিজাবেথের পোশাক ডিজাইনের অর্ডার পেয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ফ্যাশনে ডিজাইনে অবদান রেখে অর্জন করেছিলেন, রাষ্ট্রীয় সম্মাননা।

তার অর্জনের ঝুলিতে রয়েছে, ইংল্যান্ডের সম্মানসূচক পদক রয়াল ডিজাইনার ফর ইন্ডাসট্রি (আরডিই) পুরস্কার । এই পুরস্কারপ্রাপ্তরা তাদের নামের আগে আরডিই লিখতে পারতেন। মেরি কোয়ান্টের আরও অর্জনের মধ্যে রয়েছে, ডিবিই, এফসিএসডি পুরস্কার।

মেরি কোয়ান্ট ও অ্যালেকজান্ডার পোল্যান্ডসহ অনেকে।

পোশাকের পাশাপাশি জুতা ও ফার্নিচার ডিজাইনার হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি । মেরি কোয়ান্ট ছোটবেলা থেকেই ছিলেন ফ্যাশন সচেতন। জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন অ্যালেকজান্ডার পোল্যান্ডকে। দুজন মিলেই শুরু করেছিলেন বুটিকস’র দোকান।

ব্যক্তি জীবনে মেরি কোয়ান্ট এক সন্তানের জননী। ‘আপনি কখন থেকে সুখী?’ এমন প্রশ্নের জবাবে মেরি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘আমি আমার সন্তান হবার পর থেকে সুখী’। মেরি কোয়ান্ট সর্বোচ্চ শক্তি মানতেন সৃষ্টিকর্তাকে।

বিখ্যাত উক্তি : “Fashion is not frivolous. It is a part of being alive today.” – Mary Quant

রক্ষণশীলতার জবাবে মিনি স্কার্ট

১৯৬৫ সালের ৩০ অক্টোবর, মিনি স্কার্ট সদৃশ একটি সাদা পোষাক পরিধান করেন তারকা ব্যক্তিত্ব জঁ শ্রিম্পটন।  অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন কাপ কার্নিভালের প্রথম দিন, ডার্বি দিবসে এই পোশাক পরে তিনি সম্মুখে আসেন। এ সম্মন্ধে শ্রিম্পটনের ভাষ্য ছিলো, তিনি সমাজের রক্ষণশীলতা ভাঙার একটি সাহসিক প্রয়াস হিসেবে এই স্কার্ট পরিধান করেন। যদিও  শ্রিম্পটনের ভাষ্য তখন বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল।

উৎস : ভোগ, গার্ডিয়ান, উইকিপিডিয়া, গ্লোভারঅল.কম

লেখা : স্বরলিপি

রোদসী/আরএস

সংশ্লিষ্ট লেখা : গতানুগতিক নারী নন উইনফ্রে

০ মন্তব্য করো
0 Facebook Twitter Google + Pinterest
শিল্প-সংস্কৃতি

ভাষাসৈনিক হালিমা খাতুন আর নেই

ভাষাসৈনিক ও সাহিত্যিক অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। মঙ্গলবার দুপুর ১.৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

তিনি হৃদরোগ, কিডনি জটিলতা, রক্তদূষণের মতো নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন।  এর আগে গত ২০ জুলাই তার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রোদসী/এসআইএস

০ মন্তব্য করো
0 Facebook Twitter Google + Pinterest
পার্শ্ব রচনাশিল্প-সংস্কৃতি

নির্মলেন্দু গুণ ও তথাকথিত চেতনা | রঞ্জনা বিশ্বাস

নয়া দিগন্তে লিখে কবি নির্মলেন্দু গুণ চেতনাকে প্রশ্ন বিদ্ধ করেছেন বলে আমি মনে করি না। আজও দুটি পোস্ট দেখলাম। তারা বলেছেন, `নির্মলেন্দু গুণের জন্মদিনে সবাই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কিন্তু এই প্রশ্নটি তাকে কেউ করলো না, কেন তিনি নয় দিগন্তে লিখেছেন?’ খুবই শিশুসুলভ প্রশ্ন।

নয়া দিগন্ত, ইনকিলাব এ দেশের সরকার অনুমোদিত পত্রিকা। এদেশের পত্রিকা। এই পত্রিকার গ্রাহকসংখ্যা কম নয়, তারা কেউ ভিনগ্রহ থেকেও আসেনি। তাদের প্রতি কি কোনো দায়বোধ নেই নির্মলেন্দু গুণের? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, এই সম্পর্কিত জ্ঞান নিয়ে আপনার আমার লাভ কী- যদি তা বিরুদ্ধবাদীদের কাছে প্রচারই করতে না পারলেন? আপনার আমার চেতনার বটিকা কোথায় বিকোনো বুদ্ধিমানে কাজ? প্রফেটরা ভিন্ন-ধর্মাবলম্বীদের কাছেই গেছেন তাঁদের নব দর্শন নিয়ে। দুর্বল বিশ্বাসীদের প্রফেটরা কখনও ভিন্নমতাবলম্বীদের কাছে পাঠাননি। কারণ বায়াস হয়ে যেতে পারেন তারা! নির্মলেন্দু গুণ যেভাবে বাংলাদেশ এবং ৭১ কে ধারণ ও লালন করেন তাতে কি মনে হয় নয়া দিগন্তের দর্শন দ্বারা তিনি ধর্ষিত হতে পারেন কিংবা আমাদের চেতনাকে বিনষ্ট করে দিতে পারেন অথবা তিনিও জামাতের এজেন্ট হয়ে উঠতে পারেন? যদি তা না হয় তাহলে ক্ষোভ কেন?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেমন বাংলাদেশের সকল জনগণের তেমনি নির্মলেন্দু গুণও সকল পাঠকের। একজন রাজাকারের যদি কোনো কারণে নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হয়, তাহলে- একজন লেখক হিসেবে নির্মলেন্দু গুণ তার সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে নিশ্চয়ই কথা বলবেন। তারমানে এই নয় যে, তার বাপ দাদার বিশ্বাসের সঙ্গে তিনি আপোষ করবেন। নির্মলেন্দু গুণ সাহিত্যের এমন একজন প্রফেট যিনি সর্বজনীন, তাঁর লেখা এডিট করে ছাপানোর সাহস ওরা রাখে না। অতএব, কবি নির্মলেন্দু গুণের উচিৎ জামাতের সকল পত্রিকায় সমান তালে লেখা। ওরা যেমন ঢুকে গেছে আমাদের মধ্যে, আমাদেরও উচিৎ শক্ত অবস্থানে থেকে এই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া। চেতনা যাদের দুর্বল তারা অফ যান। বাংলাদেশ দীর্ঘজীবী হোক, নির্মলেন্দু গুণ দীর্ঘজীবী হোন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু

(রঞ্জনা বিশ্বাসের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সংগৃহীত)

রোদসী/আরএস

০ মন্তব্য করো
0 Facebook Twitter Google + Pinterest
ফটো ফিচারবিদেশশিল্প-সংস্কৃতি

ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্যবাহী বড়বুদুর মন্দির

ইন্দোনেশিয়া নামে এসেছে গ্রিক ইন্দোস ও নেসন শব্দ থেকে। যার অর্থ দ্বীপ। ১৮শ শতাব্দীতে এই নামকরণ করা হয়।  প্রায় ১৭ হাজারের বেশি দ্বীপ নিয়ে দেশটি গঠিত। সৌন্দর্যের পাশাপাশি প্রত্নতত্ত্বে র্পযটকদের কাছে পছন্দের দেশ। দেশটির বড়বুদুর মন্দিরটি পৃথিবীর বৃহৎ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের উপাসনালয় হিসেবে পরিচিত।

বিশ্বের বিভিন্নও অঞ্চলগুলোর পর্যটনে যারা আকৃষ্ট তাঁদের ভিড় এখানে। ২৫০০ বর্গ মিটার এলাকায় জুড়ে এই দৃষ্টিনন্দন মন্দির। মন্দিরটি জাভা প্রদেশের কেন্দ্র স্থলে। ৮ম শতকে শৈলেন্দ্র বংশের রাজা এই দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা নির্মাণ করেন। সৃষ্টি তত্ত্বে বৌদ্ধ ধর্মে তিনটি ধাপ রয়েছে। যেমন, রুপাধাতু , অরুপাধাতুর ও কামাধাতু। এসবকে ধারণ করে বানানো হয় এই মন্দিরটি। অনেকটা পিরামিডের মত কিন্তু খোলা ছাদ। মন্দিরের প্রত্যেকটি স্থরে আছে একাধিক গম্বুজ। ঘণ্টার মত দেখতে অনেকটা রাজমুকুট সেটি হচ্ছে চূড়ার বড় গম্বুজ।

রোদসী/এসঅাইএস

০ মন্তব্য করো
0 Facebook Twitter Google + Pinterest
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ভ্যাকেশন ম্যানেজমেন্ট

তুমিই রোদসী

  • রোদসীর আড্ডায় আমেনা সুলতানা বকুল







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০১৮
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
টাওয়ার হ্যামলেট, ৯ম তলা, ১৬ কামাল আতার্তুক অ্যাভিনিউ, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৯৮২০০১১, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

Facebook