রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

সচেতনতা

অনুসঙ্গআয়নাঘরগ্রুমিংরূপ ও ফ্যাশনরোদসীর পছন্দসচেতনতাসমস্যা

বয়স সবে উনিশ-কুড়ি

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ১, ২০২৩

‘কুড়িতে বুড়ি’- এই টার্মটির সাথে পরিচিত নেই এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কথাটি শুনতে হাস্যকর মনে হলেও, শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের সাথে সাথে এইসময় ত্বকে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু এজিং সাইন দেখা যায়, যা বেশ বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করে। যদিও বর্তমানে মানুষ এখন অনেক সচেতন। ভাল জীবনধারা এবং ত্বকের যত্নের অভ্যাস এই বয়স থেকেই অনুশীলন করার মাধ্যমে অকালে ত্বকে পড়া এই বার্ধক্য কমিয়ে এনে আগামী বছরগুলোতে হয়ে উঠতে পারবে ঝলমলে। আর এইসব আয়োজন নিয়েই হাজির হয়েছি আমি শায়লা জাহান। 

অনেক কিছুই আমাদের ত্বকের বয়স বাড়াতে নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। তার মধ্যে কিছু বিষয়ে আমাদের কিছুই করার থাকেনা, আর কিছু বিষয়কে আমরা প্রভাবিত করতে পারি। প্রাকৃতিক নিয়মে আমাদের সকলেরই ধীরে ধীরে বয়স বেড়েই যায়। বয়স বাড়ার সাথে মুখের আগের সেই তারুন্যতা, লাবন্যতা হারিয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু অকাল বার্ধক্য হল যখন বার্ধক্যের সাধারণ প্রভাবগুলো তাড়াতাড়ি ঘটে। এতে তোমার শরীর প্রকৃত বয়সের চেয়ে বড় দেখায়। বলিরেখা, বয়সের দাগ, শুষ্কতা, চুল পড়া বা পাকা চুল ইত্যাদি অকাল বার্ধক্যের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। এই অবস্থাটি সময়ের আগেই এবং দ্রুত ঘটে থাকে। এর পেছনে জড়িয়ে আছে পরিবেশগত এবং জীবনধারা ব্যবস্থার কারণ। কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে আমরা এই অবস্থাকে রোধ করতে পারি।

অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধের উপায়

বয়সের আগেই যদি ত্বকে এজিং সাইনের দেখা মেলে, তা নির্দেশ দেয় যে কিছু কিছু অভ্যাস পরিত্যাগ করার এবং নিজের যত্ন নেয়ার এখনই সময়। এইক্ষেত্রে নীচের কিছু সহজ টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে, যা একে থামাতে এবং আরও খারাপ হওয়া থেকে রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।

-সূর্য আমাদের ত্বকের অকালে বার্ধক্যের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে। তাই ত্বককে রোদ থেকে রক্ষা করতে হবে। কোথাও অবকাশ যাপনে যাওয়া হোক কিংবা কাজে বের হতে হোক, সূর্য থেকে সুরক্ষা পাওয়া অপরিহার্য। চোখকে ঢাকার জন্য ইউভি সুরক্ষা সহ সানগ্লাস পরিধান করা যেতে পারে। পাশাপাশি কাপড় দ্বারা অনাবৃত শরীরের অংশগুলোতে ভাল করে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে।

-অভ্যাসবশত আমরা কিছু কিছু মুখের অভিব্যক্তি করে থাকি যা অজ্ঞনতাবশত আমরা বারংবার করে থাকি। এমন অভ্যাস থাকলে তা এখনই এড়িয়ে চলতে হবে। এইধরনের মুখের অভিব্যক্তি অন্তর্নিহিত পেশীগুলোকে সংকুচিত করে এবং তা পুনরাবৃত্তি করার জন্য লাইনগুলো স্থায়ী হয়ে যায়।

-স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্যচার্ট অনুসরণ করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে তাজা ফল এবং শাকসবজি খাওয়া এই ধরনের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে। চিনি বা অন্যান্য পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাদ্যও এই অকাল বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করতে পারে।

-পরিমিত ব্যায়াম রক্তসঞ্চালন উন্নত করতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এছাড়াও এটি ত্বককে আরও তারুন্যময় এনে দিতে পারে।

-ভালোভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে। ময়লা, মেকআপ, ঘাম এবং অন্যান্য পদার্থ দূর করতে প্রতিদিন নিয়ম করে স্কিন ক্লিন রাখা মাস্ট। সুগন্ধি বা উচ্চ পিএইচ যুক্ত কঠোর ত্বকের পণ্য থেকে দূরে থাকতে হবে। শুষ্কতা দূর করতে ত্বকে প্রতিদিন ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করতে হবে।

-রাতারাতি ত্বক ঔজ্জ্বল্য বাড়ানোর ভাইরাল প্রোডাক্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও এন্টি এজিং এর কোন কিছু ব্যবহার করতে চাইলেও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া না ব্যবহার করাই উত্তম।

-জীবন থেকে স্ট্রেস লেভেল কমাতে হবে। যে স্ট্রেস কমাতে ব্যর্থ হবে তার জন্য স্বাস্থ্যকর স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট কৌশল যেমন ধ্যান বা ব্যায়ামের অনুসন্ধান করো।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

স্লিপ অ্যাপনিয়া হলে কী করণীয়?

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২২, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

ঘুমের সময় নাক ডাকা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া, বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া এমন অনেক সমস্যার সাথেই আমরা অনেকেই পরিচিত। ঘুমের মাঝে এই ব্যাঘাত, ঘুম পূর্ণতা পেতে বাধার সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে দেখা যায় দিনের বেলায়ও সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব থেকে যায়। এই পরিস্থিতিকে বলা হয় ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ বা ‘নিদ্রাকালীন শ্বাসব্যাঘাত’।

ঘুম মানুষের একটি অত্যাবশ্যকীয় শরীরতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। পরিমিত ঘুম সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। হৃদরোগ সহ নানা রোগের ঝুঁকিও কমায়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে যদি শ্বাসনালী বাধাগ্রস্থ হয়, তবে ঘুমের মধ্যে সশব্দে নাক ডাকার শব্দ হয়। স্লিপ অ্যাপনিয়া হলো নাক ডাকার ও ঘুম কম হওয়ার সমস্যা। বিভিন্ন ধরনের স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে, তবে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ) হল সবচেয়ে সাধারণ ঘুম-সম্পর্কিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যাধি। এই ধরনের অ্যাপনিয়া ঘটে যখন গলার পেশী মাঝে মাঝে শিথিল হয় এবং ঘুমের সময় শ্বাসনালী ব্লক করে। সারা বিশ্বে সাধারণত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে দুই থেকে চারজন এই ওএসএ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগে থাকে। বাংলাদেশের শহুরে জনসংখ্যার এক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষ ও নারীদের ৪.৪৯ ও ২.১৪ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত। স্লিপ অ্যাপনিয়া হলে এর চিকিৎসা করা দরকার না হয় এটি আরও গুরুতর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

লক্ষণ

কিছু লক্ষণ রোগীর নিদ্রার সময় দেখা দেয়। ফলে রোগী নিজেও বুঝতে পারেনা। কিন্তু ঘুমানোর সময় পাশে কেউ থেকে সাহায্য করতে পারে যাতে তারা লক্ষণগুলো পরীক্ষা করতে পারে। এর লক্ষণ ও উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

-দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম

-জোরে নাক ডাকা

-হঠাৎ জেগে উঠার সাথে হাঁপাতে বা দম বন্ধ হয়ে যাওয়া

-মুখ ও গলা শুকিয়ে যাওয়া

-সকালে মাথাব্যথা

-মেজাজ পরিবর্তন যেমন বিষন্নতা বা বিরক্তি

-উচ্চ রক্তচাপ

ঝুঁকির কারণ

যে কারো অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে। যাইহোক, কিছু কারণ যা তোমাকে এই ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। যার মধ্যে রয়েছেঃ

-যাদের অতিরিক্ত ওজন রয়েছে তাদের স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

-এক্ষেত্রে বয়সও একটি ফ্যাক্ট। ৩০ থেকে ৬৫ বছর বয়সীদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার প্রবণতা বেশি। তবে, শিশুদের ক্ষেত্রে যাদের টনসিল বা অ্যাডিনয়েড আকারে বড় হয়, তাদেরও হতে পারে।

-মুখ ও করোটির গঠনগত ত্রুটি থাকলেও স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে।

-যারা ধূমপান করে, তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

-আরেকটি কারণ হতে পারে জেনেটিক বা বংশগত। হার্ট ফেইলিওর, অ্যাজমা, স্ট্রোক ইত্যাদি এ রোগ বাড়িয়ে দেয়।

করনীয় ও প্রতিকার

স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে এর ধরণ ও তীব্রতার উপর। অবস্থা যদি গুরুতর পর্যায়ে চলে যায় তবে সেক্ষেত্রে সিপিএপি মেশিন নামে একটি ডিভাইস ব্যবহার করতে হয়। এটি ঘুমের সময় মুখ বা নাকে পরা একটি মাস্কের মধ্যে বাতাস পাম্প করে শ্বাস-প্রশ্বাসের উন্নতি করে। আর যদি এটি হালকা পর্যায়ে হয়ে থাকে তবে নিজের কিছু লাইফ স্টাইল চেইঞ্জের মাধ্যমে এর প্রতিকার ব্যবস্থা নিজে নিজেই করা সম্ভব। যেমনঃ

-ওজন যদি বেশি হয় তবে তা কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

-নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। সক্রিয় থাকা নিজের ভেতর বিদ্যমান থাকা লক্ষণগুলোকে উন্নত করতে পারে এবং একটি স্বাস্থ্যকর ওজন রাখতে সাহায্য করতে পারে।

-ভালো ঘুমের অভ্যাস করতে হবে। শুতে যাওয়ার আগে চারপাশের পরিবেশ শান্ত এবং ঘুমের উপযোগী করে তুলতে হবে। প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া ও উঠার অভ্যাস করতে হবে।

-ধূমপান এবং অ্যালকোহল পানে অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করতে হবে।

-চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যে কোন ধরনের ঘুমের ঔষধ খাওয়া উচিৎ নয়। এগুলো স্লিপ অ্যাপনিয়াকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংসচেতনতাসমস্যা

সম্পর্কে ছন্দপতন, অতঃপর…

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২২, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

‘অবশেষে রাজা, রানী আর তাদের রাজকন্যা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলো’। রুপকথার কাহিনীগুলোতে প্রায় সব গল্পেরই পরিসমাপ্তি ঘটে একটি সুখী পরিবারের বুনন ঘটিয়ে। কিন্তু বাস্তবতা কখনোই রুপকথার কাহিনী নয়। এখানে সবার জীবনের গল্পেরও হ্যাপি এন্ডিংয়ের নিশ্চয়তা থাকেনা। মাঝে মাঝে সম্পর্কের দোলাচালে ঘটে ছন্দপতনের। কখনো ভেবে দেখেছো কী, জীবনের এই টানাপোড়েন ঘরের ছোট্ট সদস্যের উপর কি ধরনের প্রভাব ফেলে? 

 

ছোট্ট আরীবা, যে কিনা ছিল স্কুলে সবচেয়ে প্রাণচাঞ্চল্য ও ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট; হঠাৎ করেই মাসখানেক তার মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ক্লাসে অমনোযোগী, চুপচাপ একদম। একা থাকতেই যেন পছন্দ করে সে। তাকে ঘিরে ডিভোর্স, ব্রোকেন ফ্যামেলি এমন খটমটে শব্দ শুনতে পায় সে। কিছু বুঝে উঠতে না পারলেও আরো যেন বিষন্নতা ঘিরে ধরে তাকে। এটি একটি কল্পকাহিনী হলেও এমন ঘটনা আমাদের আশেপাশে অহরহ দেখা যাচ্ছে। বিবাহবিচ্ছেদ যেকোন পরিবারের জন্য একটি কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং বিষয় হতে পারে। একটি পরিবার ভেঙ্গে যাওয়া মানে তার সাথে সম্পর্কিত অনেকগুলো স্বপ্নের মৃত্যু। সম্পর্কের হঠাৎ এই পরিবর্তন পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপর যেমন প্রভাব ফেলে তেমনি ঘরে যে বাচ্চারা আছে তাদের উপরও সমান প্রভাব ফেলে। কিন্তু কখনও কখনও, পিতামাতারা তাদের সন্তানদের উপর এই বিচ্ছেদের পরবর্তী প্রভাবগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকেনা। দম্পতিদের জন্য তাদের সন্তানদের দীর্ঘমেয়াদী মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর বিবাহবিচ্ছেদের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে আত্মদর্শন এবং আলোচনা করা অপরিহার্য। সন্তানদের উপর কেমন প্রভাব পড়ে, আসো আমরা জেনে নিই।

খারাপ একাডেমিক পারফরম্যান্স

সম্পর্কের টানাপোড়েনের দরুন পরিবারের পরিবর্তনশীল গতিশীলতা তাদের বিভ্রান্ত করে তোলে। আর এই বিভ্রান্তিতা তাদের দৈনন্দিন ফোকাসে বাধার সৃষ্টি করে। যার ফলাফল পরে একাডেমিক পারফরম্যান্সে। শিশুরা যত বেশি বিভ্রান্ত হয়, তাদের স্কুলের কাজে মনোযোগ দিতে না পারার সম্ভাবনা তত বেশি।

আবেগীয় অনুভূতি

বিবাহবিচ্ছেদ একটি পরিবারের জন্য বিভিন্ন ধরনের আবেগকে সামনে আনতে পারে এবং এর সাথে জড়িত শিশুরাও আলাদা নয়। উত্তেজনা, নার্ভাসনেস, উদ্বেগ, ক্রোধ এমন আরও অনেক কিছুই এই পরিবর্তন থেকে আসতে পারে। ছোট বাচ্চাদের বয়স্কদের তুলনায় এটির প্রবণতা হয় বেশি কারণ তারা বাবা- মা উভয়ের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। একটি উদ্বিগ্ন শিশু তার পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে অসুবিধা বোধ করবে এবং সকলধরনের ক্রিয়াকলাপে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে যা একসময়ে তার কাছে খুবই লোভনীয় বলে মনে হতো।

বিষন্নতা

পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদের কারণে সৃষ্ট যন্ত্রণা এবং হৃদয়বিদারক অনুভূতি একটি শিশুকে বিষন্নতায় ফেলে দিতে পারে। বিষন্নতা একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং বিবাহবিচ্ছেদের সাক্ষী শিশুদের মধ্যে বিষন্নতা এবং সামাজিক প্রত্যাহারের ঘটনা বেশি থাকে। গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে শিশুদের মধ্যে বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদ একটি অবদানকারী কারণ হতে পারে।

অপরাধবোধের অনুভূতি

আমেরিকান একাডেমি অফ চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রি অনুসারে, অনেক শিশু তাদের পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদের পিছনে নিজেকে কারণ বলে মনে করে অপরাধবোধে ভোগে। এই অপরাধবোধ হতাশা, চাপ বাড়ায়; এতে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং দুঃস্বপ্নের মতো বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন

ছোট বাচ্চারা ঘন ঘন মুড সুইং এ ভুগতে পারে এবং এমনকি খিটখিটেও হতে পারে পরিচিত মানুষের সাথে যোগাযোগ করার সময়। তাদের রাগ অনুভূত কারণগুলোর বিস্তৃত পরিসরে পরিচালিত হতে পারে। বিবাহবিচ্ছেদ প্রক্রিয়াকারী শিশুরা তাদের পিতামাতা, নিজেদের, তাদের বন্ধুবান্ধব এবং অন্যদের প্রতি রাগ প্রদর্শন করতে পারে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে তারা প্রত্যাহার মোডে চলে যায়। যেখানে তারা কারও সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেবে এবং অন্যের সাথে মেশার পরিবর্তে একা সময় কাটাতে পছন্দ করবে।

ধ্বংসাত্মক আচরণের ভূমিকা

শিশুরা যখন বিবাহবিচ্ছেদের মতো এই ট্রমার মধ্য দিয়ে যায়, তখন অমিমাংসিত দ্বন্দ্ব ভবিষ্যতে অপ্রত্যাশিত ঝুঁকির দিকে নিয়ে যেতে পারে। তালাকপ্রাপ্ত পিতামাতার সাথে কিশোর-কিশোরীরা ঝুঁকিপূর্ণ আচরণে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তালাকপ্রাপ্ত বাবা-মায়ের কিশোর-কিশোরীরা আগে অ্যালকোহল পান করে এবং তাদের সমবয়সীদের তুলনায় বেশি অ্যালকোহল, গাঁজা, তামাক এবং মাদক সেবনের রিপোর্ট করে।

সন্তানের মানসিক চাপ কমানোর উপায়

বিবাহবিচ্ছেদের মতো এমন বিরুপ পরিস্থিতির সাথে শিশুরা কীভাবে সামঞ্জস্য করে তার জন্য পিতামাতারা একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে। এখানে কিছু কৌশল রয়েছে যা শিশুদের উপর মানসিক চাপ কমাতে পারেঃ

-বাবা-মায়ের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বাচ্চাদের সহজেই ট্রমাটাইজড করে দেয়। প্রকাশ্য শত্রুতা, একে অপরের উপর চিৎকার করা, হুমকি দেয়া শিশুদের আচরণের সমস্যার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সন্তানের কথা মাথায় রেখেই এগুলো পরিহার করা উচিৎ।

-বাবা-মায়ের দ্বন্দ্বের মাঝখানে বাচ্চাদের রাখা এড়িয়ে চলতে হবে। তাদের দুজনের মাঝে একজনকে বেছে নেয়া বা এমন কোনো কথা না বলা যাতে সন্তান নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। তাই সন্তানকে এত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে ফেলার আগে ভাবনাচিন্তা করা দরকার।

-বিবাহবিচ্ছেদ এমন এক বিচ্ছিন্ন ঘটনা যা কোন সুফলতা বয়ে আনেনা। কিন্তু বিচ্ছেদের পরেও সন্তানের কথা চিন্তা করেই একটি সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখা যেতে পারে। ইতিবাচক যোগাযোগ, পিতামাতা উভয়ের উষ্ণতা বাচ্চাদের উচ্চ আত্মসম্মান এবং একাডেমিক পারফরম্যান্স বিকাশে সহায়তা করে।

-পরিত্যাগের ভয় এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তা অনেক উদ্বেগের কারণ হতে পারে। সন্তানকে ভালোবাসা, নিরাপদ এবং সুরক্ষিত বোধ করতে সাহায্য করা তার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকিও কমাতে পারে।

-নিজের স্ট্রেস লেভেল কমানো তা সন্তানকে সাহায্য করার জন্য সহায়ক হতে পারে। সেজন্য স্ব-যত্ন নেয়া প্রয়োজন। আর দরকার হলে পেশাদারের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।

-ছবি সংগৃহীত

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসুস্থ মনস্বাস্থ্য

সাঁতারের যত উপকারিতা

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১৯, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

কথায় আছে, ‘একটি ফিট শরীর, একটি শান্ত মন এবং ভালোবাসায় পূর্ণ একটি ঘর- এই জিনিসগুলো কেনা যাবেনা, সেগুলো অবশ্যই অর্জন করতে হবে’। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে প্রতিদিন নিয়ম করে কিছুক্ষণ শরীরচর্চা করা আবশ্যক। আর সেই শরীরচর্চার মাঝে যদি সাঁতারকে অন্তর্ভূক্ত করা যায় তাহলে তো পুরো ষোলকলা পূর্ণ। জেনে নাও সাঁতারের যত উপকারিতার দিকসমূহ।

বিশেষজ্ঞরা একজন প্রাপ্তবয়স্ককে প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিটের মাঝারি কার্যকলাপ বা ৭৫ মিনিটের জোরালো কার্যকলাপ করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি থেকে উন্নত মেজাজ পর্যন্ত, ওয়াটার ওয়ার্কআউট সুস্থতার জন্য অনেক সুবিধা নিয়ে আসে। তোমার ফিটনেস লেভেল যাই হোক না কেন, সাঁতার অনেক সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সুবিধা প্রদান করে। পুরো শরীর এবং কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমের কাজ করার একটি চমৎকার একটি উপায় হলো এই সাঁতার। এটি যে সব সুবিধা প্রদান করে থাকেঃ

-গবেষণায় দেখায় যে, সাঁতার দীর্ঘজীবী করতে সাহায্য করতে পারে। ২০১৭ সালের ইংল্যান্ডের দ্বারা পরিচালিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, সাঁতারুদের প্রারম্ভিক মৃত্যুর ঝুঁকি ২৮ শতাংশ কম এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের কারণে যারা সাঁতার কাটেনা তাদের তুলনায় ৪১ শতাংশ কম মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল।

-সাঁতারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি সত্যিকার অর্থেই পুরো শরীর, মাথা থেকে পা পর্যন্ত কাজ করে। এর মাধ্যমে-

#শরীরের চাপ ছাড়াই হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করে

#পেশী টোনিং করে

#শক্তি তৈরি করে

#সহনশীলতা তৈরি করে

-অতিরিক্ত ক্যালোরি বার্ন করতে চাইলে এর বিকল্প কিছুই নেই। হার্ভাড মেডিকেল স্কুল অনুসারে, একজন ১৫৫ পাউন্ড ব্যক্তি এক ঘন্টায়, প্রায় ৪৩২ ক্যালোরি সাঁতার কাটার মাধ্যমে পোড়াতে পারে যেখানে মাঝারি গতিতে  হাঁটার মাধ্যমে বার্ন হয় ২৬৬ ক্যালোরি। ২০২১ সালে এক সমীক্ষায় দেখা যায়, ১৬ সপ্তাহে সাঁতার কাটার মাধ্যমে শরীরের চর্বি এবং বিএমআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।

-অ্যারবিক ব্যায়ামের অন্যান্য রুপের মতো সাঁতার কার্ডিওভাসকুলার ফিটনেস উন্নত করতে পারে। সাঁতারের ফলে হৃদপিণ্ড শক্তিশালী হতে পারে এবং ফুসফুস অক্সিজেন ব্যবহারে আরও দক্ষ হয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও, এটি হাইপারটেনশন, উচ্চ রক্তচাপ এবং কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের অন্যান্য মার্কারের উন্নতির সাথে যুক্ত হয়েছে।

-বাত, আঘাত, অক্ষমতা সহ অন্যান্য সমস্যা যা উচ্চ প্রভাব ব্যায়ামকে কঠিন করে তোলে; তাদের জন্য সাঁতার হতে পারে একটি নিরাপদ ব্যায়ামের বিকল্প। এটি ব্যথা কমাতে এমনকি আঘাত থেকে পুনরুদ্ধারের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে। অস্টিওআর্থারাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির জয়েন্টের ব্যথা এবং দৃঢ়তা সাঁতারের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস হওয়ার প্রমান পাওয়া গেছে।

-ইনডোর পুলের আর্দ্র পরিবেশ হাঁপানিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সাঁতারকে একটি দূর্দান্ত কার্যকলাপ করে তোলে। শুধু তাই নয়, খেলার সাথে যুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম যেমন শ্বাস ধরে রাখা, ফুসফুসের ক্ষমতা প্রসারিত করা এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর নিয়ন্ত্রণ পেতে সাহায্য করতে পারে।

আবার কিছু গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, পুলে ব্যবহৃত ক্যামিকেল হাঁপানির ঝুঁকি বাড়াতেও পারে। তাই যদি হাঁপানির প্রবলেম থাকে তবে চিকিৎসকের সাথে আগে পরামর্শ করে নেয়া ভাল।

-সমস্ত ব্যায়াম একটি মেজাজ বুস্টার হতে পারে। এক্ষেত্রে ওয়াটার ওয়ার্কআউট একটি ভাল মেজাজ বজায় রাখতে পারে। মস্তিষ্কে সুখের রাসায়নিকের মুক্তির কারণে, বিশেষ করে এন্ডোরফিন, ডোপামিন এবং সেরোটোনিন নিয়মিত সাঁতার কাটা চাপ কমাতে পারে, উদ্বেগ কমাতে পারে এবং হতাশার বিরুদ্ধে লরাই করতে পারে।

-উন্নত ঘুম হল যে কোন ব্যায়ামের রুটিনে লেগে থাকার একটি সুবিধা। ব্যায়াম শরীরের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি পুনরায় সেট করতে সাহায্য করে এবং প্রাকৃতিক সার্কাডিয়ান ছন্দ পুনরুদ্ধার করে। এর মধ্যে সাঁতার হল একটি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনিদ্রার সমস্যাও বৃদ্ধি পায়। ইনসমনিয়ার মতো সমস্যায় যারা ভুগে থাকে, তাদের জন্য নিয়মিত সাঁতার কাটা ভালো একটি চিকিৎসা। এতে ঘুম ভালো হবে।

-বাচ্চাদের জন্য সাঁতার হতে পারে দারুন এক ওয়ার্কআউট। এটি হতে পারে তাদের জন্য একটি মজার ক্রিয়াকলাপ।

সতর্কতা

সাঁতার বেশিরভাগ মানুষের জন্যই নিরাপদ। তবে যেকোন ওয়ার্কআউটের মতোই সাঁতারের সাথে যুক্ত কিছু ঝুঁকি রয়েছে। তুমি যদি আহত হও বা কিছু চিকিৎসা শর্ত থাকে তবে সেক্ষেত্রে সাঁতার কাটার আগেই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেয়াই ভালো। সাধারণভাবে, যখনই একটি নতুন ব্যায়াম প্রোগ্রাম শুরু করবে তখন তোমার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা একটি ভাল ধারণা। এছাড়াও, সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যাযুক্ত লোকদের জন্য ক্লোরিনযুক্ত পুলের পানিতে নামা আরও সমস্যার সৃষ্টি করবে। সাঁতার কাটার আগে সবসময় পুলে বর্ণিত নির্দেশাবলি এবং লাইফগার্ডের নিয়মাবলি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
গ্রুমিংচলন বলনজীবনযাত্রাসচেতনতা

খাবার টেবিলের আদবকেতা

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১১, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

কোন ডিনার পার্টিতে আমন্ত্রিত হয়ে যাচ্ছো অথবা বাইরে রেস্টুরেন্টে খেতে যাচ্ছো, উপলক্ষ্য যাই হোক না কেন খাবার টেবিলের কিছু সাধারণ ম্যানার্স বা আচার-ব্যবহার রয়েছে যা সবাইকেই অনুসরণ করা উচিৎ। তোমার টেবিলের এই আদবকেতা আগত অতিথিদের উপর একটি দূর্দান্ত ছাপ রেখে যেতে পারে এবং এটি প্রত্যেককে তাদের খাবার উপভোগ করার সাথে সাথে খুশি এবং স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে সহায়তা করবে।

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে- ‘ম্যানার্স মেকথ ম্যান’। এর মানে হল যে তোমার আচার-ব্যবহার তোমাকে তৈরি করে। তুমি কে এবং তোমার সম্পর্কে কারও মতামত গঠন করতে সহায়তা করে। আচার-আচরণ হল তুমি কীভাবে নিজেকে জনসমক্ষে উপস্থাপন করো এবং বিশেষ করে যখন তুমি খাচ্ছো। ডাইনিং শিষ্টাচারের ইতিহাস অনেক গভীরে প্রোথিত। অনেকের কাছে আনুষ্ঠানিক টেবিল সেটিংস হল একটি শিল্প ফর্ম এবং টেবিলের আচারগুলোকে হালকাভাবে নেয়া উচিৎ নয়। প্রাচীনতম পশ্চিমা খাবারের ঐতিহ্যগুলো প্রাচীন গ্রীকদের দ্বারা নথিভুক্ত করা হয়েছিল। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, অন্যদের সাথে খাওয়ার অভ্যাসকে আনন্দদায়ক করতে কয়েক শতাব্দী ধরে টেবিল শিষ্টাচার বিকশিত হয়েছে। টেবিল ম্যানার্স দেশ থেকে দেশে এবং সংস্কৃতি থেকে সংস্কৃতিতে পরিবর্তিত হয়। তবে সাধারণ কিছু আদব-কায়দা আছে যা সবাইকে অনুসরণ করা উচিৎঃ

-খাবার খেতে বসার আগে হাত পরিষ্কার আছে কিনা তা নিশ্চিত করে নাও। প্রয়োজনে হাত সাবান এবং পানি দিয়ে ভালো করে ধৌত করে নাও। যদি কোন বাচ্চাকে টেবিলের আচার-আচরণ শেখাও, তাহলে তাদের হাত কতক্ষণ ধুতে হবে এবং কতটা স্ক্র্যাব করতে হবে তা বলার জন্য এটি একটি মোক্ষম সময়। তবে কিছু ফ্যান্সি রেস্তোরাঁয় হাত ধোয়ার জন্য পানির একটি আলাদা পাত্রের বন্দোবস্ত থাকে।

-পরিবেশন করা খাবার দেখতে যতই সুস্বাদু বা লোভনীয় হোক না কেন, সবাই বসে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা ভালো আচরণ। আনুষ্ঠানিক সেটিংসে, প্রথমে খাওয়া শুরু করার জন্য যিনি হোস্ট তার জন্য অপেক্ষা করা ভালো। আর যদি কোন রেস্তোরাঁয় খেতে যাও, তবে প্রত্যেকে তাদের খাবার না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করাই শ্রেয়।

তবে এই নিয়মেরও ব্যতিক্রম আছে। হোস্ট যদি খাবার পরিবেশনের তদারকিতে থাকেন এবং সবার খাওয়া আগেই নিশ্চিত করতে চান, তবে সেক্ষেত্রে শুরু করা দেয়া যেতে পারে।

-খাবার টেবিলে যাওয়ার আগে হাতের মুঠোফোনটি সাইলেন্ট বা ভাইব্রেটের উপর রাখো এবং এটি একটি পার্স বা পকেটে রাখতে পারো।

-টেবিলে থাকা নির্দিষ্ট ন্যাপকিনটি খুলে তোমার পুরো কোলের উপর মেলে রাখো। এটিকে মসৃণ করো যাতে তা সমতল হয়। এটি তোমার হাত বা চামুচ থেকে পড়ে যাওয়া যেকোন খাবার ধরে ফেলবে। এছাড়াও কোলে রাখার কারণে এটি সহজে নাগালের মধ্যে থাকে, তাই যখন প্রয়োজন খাবারের সময় ন্যাপকিন ব্যবহার করে হাত বা মুখ মুছতে পারো। যদি খাবার মাঝে তোমাকে টেবিল ছেড়ে যেতে হয়, তোমার রুমালটি চেয়ারে রাখো, টেবিলে নয়। এটি সংকেত দেবে যে তুমি ফিরে আসবে এবং তোমার খাবার শেষ হয়নি।

-মুখ বন্ধ করে খাবার চিবিয়ে খাওয়া শোভন দেখায়। যদি তুমি তোমার খাবার চিবিয়ে থাকো এবং কেউ এমন কিছু বললো যার উত্তর তুমি দিতে চাও; সেক্ষেত্রে খাবার গিলে ফেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করো। মুখ খোলা রেখে চিবানো বা মুখ পূর্ণ হয়ে গেলে কথা বলাকে অনেকে অশোভন মনে করে।

-টেবিলে হাতের কনুই রেখে খেতে খুব আরামদায়ক হতে পারে। বিশেষ করে তুমি যদি ক্লান্ত হয়ে থাকো। কিন্তু তুমি যদি একটি ডিনার পার্টিতে থাকো বা রেস্তোরাঁয় থাকো, তবে কনুই টেবিল থেকে দূরে রাখাই ভাল আচরণ। কনুই টেবিলে রাখা অনেক জায়গা নেয় এবং এটিকে খারাপ আচরণ মনে করা হয়। একটি হাত তোমার কোলে রাখতে পারো যখন এটি তুমি খাবার খেতে ব্যবহার করছোনা।

-তুমি যখন কোন আনুষ্ঠানিক নৈশভোজ বা ফ্যান্সি কোন রেস্টুরেন্টে যাবে, সেখানে টেবিলে থাকা একাধিক কাঁটাচামচ, ছুরি দেখতে পাবে। তখন কোন চামচ, কাঁটা বা ছুরির ব্যবহার করতে হবে তা  নিয়ে বেশ বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। এক্ষেত্রে খাবারের কয়েকটি কোর্স হিসেবে কয়েকটি ভিন্ন চামচ এবং ফর্ক দিয়ে সেটিংস নিয়ে রাখো, যা সাধারণত বিভিন্ন আকারের হয়। আর যদি বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে একটি ডিনার পার্টিতে থাকো তবে সেখানে হয়তো একাধিক পাত্র নিয়ে চিন্তা করতে হবেনা।

-রেস্তোরাঁয় খাবারের সময় সঠিকভাবে চামুচ ব্যবহার করে নাও। ডান হাতে ছুরি এবং বাম হাতে কাঁটা চামচ ধরো। ছোট ছোট টুকরো করে খাবার মুখে নাও। খাবার শেষে চামচ আর ছুরি প্লেটের মাঝ বরাবর রেখে দাও।

-নিজের খাবার যদি নিজেকে নিয়ে পরিবেশন করতে হয় তবে খাবারগুলো চারপাশে রেখে দাও। একবার তুমি পর্যাপ্ত খাবার নেয়ার পর, ডানদিকে থাকা ব্যক্তির কাছে পাত্রটি তুলে দাও। পরবর্তীতে আরও খাবারের প্রয়োজন হলে এবং তা যদি নাগালের বাইরে থাকে তাহলে তা ভদ্রভাবে দিতে বলো। কখনও অন্যজনকে অতিক্রম করে খাবার নিতে যাবেনা।

-একটি ডিনার পার্টি শুধুমাত্র খাবার দাবারের জন্যই নয়। খাওয়ার খাওয়ার সময় আশেপাশে অন্যান্য অতিথিদের সাথে কথা বলতে ভুলবেনা এবং চলমান কথোপকথন মনোযোগ সহাকারে শুনে নিজেও সে বিষয়ে যোগদান করো। তবে কথা শুরু করার আগে মুখে থাকা খাবার চিবিয়ে গিলে ফেলতে ভুলবেনা।

-খাবারের মাঝে ঢেঁকুর, হাঁচি, কাশি আসা স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে রুমাল বা হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখো এবং মুখ বন্ধ রাখো যাতে এটি জোরে না হয়।

-তুমি যদি পারিবারিক কোন নৈশভোজে থাকো তবে পরিষ্কারের জন্য হাত লাগাতে পারো। রান্নাঘরে আনতে প্লেট, ন্যাপকিন, চামচ সংগ্রহ করতে সাহায্য করো।

-খাবার শেষে হোস্টকে ধন্যবাদ দিতে ভূলবেনা। যদি কোন রেস্তোরাঁয় তোমাকে খাবার পরিবেশন করে দেয়া হয় তবে সার্ভারগুলোকেও ধন্যবাদ জানাও।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নারীসংগ্রামসচেতনতাসম্ভাবনা

অভিবাসী নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি

করেছে Suraiya Naznin জানুয়ারী ১১, ২০২৩

নাজমুল হুদা খান

অভিবাসী নারী শ্রমিকদের অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। তারা অনেক বেশি অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকেন। ডায়রিয়া, যক্ষ্মা, চর্মরোগ, জন্ডিসসহ নানাবিধ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য রয়েছে।

বৈশ্বিক অর্থনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে অভিবাসী শ্রমিকেরা দেশের অর্থনীতি মজবুত করতে জোরালো ভূমিকা রাখছেন। বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজারে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বের ১৭৪টির বেশি দেশে প্রায় দেড় কোটি অভিবাসী শ্রমিকের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমৃদ্ধ করছে এবং শতকরা ১২% জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রাখছে। এই অভিবাসীদের উল্লেখযোগ্য অংশ নারী শ্রমিক। ২০০৪ সালে অভিবাসী নারী শ্রমিকের শতকরা হার ছিল মাত্র ৪ শতাংশ, এক যুগের ব্যবধানে অর্থাৎ ২০১৫ সালে এর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯ শতাংশ। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০ শতাংশে উন্নীতকরণ; যদিও করোনা অতিমারিতে এ লক্ষ্যমাত্রায় ছেদ পড়েছে।

বাংলাদেশি অভিবাসী নারী শ্রমিকদের প্রায় ৯০ শতাংশই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কর্মরত। বর্তমানে সৌদি আরবে দুই লক্ষাধিক নারী শ্রমিক রয়েছে, আরব আমিরাত ও জর্ডানে আছে দেড় লক্ষাধিক অভিবাসী নারী, লেবাননে লক্ষাধিক, ওমানে প্রায় এক লাখ। এ ছাড়া কুয়েত ও বাহরাইনে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। এসব নারী অভিবাসী শ্রমিক উল্লিখিত দেশগুলোতে গৃহকর্মী, হাসপাতাল, পোশাকশিল্প, বিভিন্ন কলকারখানা, অফিস, কৃষি খামার, মার্কেট, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি কর্মকা-ে নিযুক্ত রয়েছে। পুরুষ কর্মীদের প্রবাসে গমনের বিষয়ে সমাজ ও পরিবারের বাধাবিপত্তি না থাকলেও নারীদের নানা ধরনের বিপত্তি পেরিয়ে অগ্রসর হতে হয়। অথচ রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র দেখা যায়। পুরুষ শ্রমিকেরা যেখানে উপার্জিত আয়ের ৫০ শতাংশ দেশে প্রেরণ করে থাকেন; সেখানে নারীদের এর পরিমাণ ৯০ শতাংশ।

অভিবাসী নারী শ্রমিকদের অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। তারা অনেক বেশি অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকেন। গৃহস্থালি, রেস্টুরেন্ট, কলকারখানার গরম, আর্দ্র ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে হয় বলে অনেকেরই ডায়রিয়া, যক্ষ্মা, চর্মরোগ, জন্ডিসসহ নানাবিধ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য রয়েছে। পশুপাখির খামারের কর্মরতদের মধ্যে যক্ষ্মা, চোখের নানাবিধ ব্যাধি এবং পেশি ও অস্থিসন্ধিতে দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা ও প্রদাহ দেখা দেয়। খনি ও অন্যান্য কারখানায় কর্মরতদের ফুসফুসের কর্মক্ষমতা হ্রাস, উ”চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, প্রভৃতি রোগে ভুগতে দেখা যায়। খাবারের রেস্টুরেন্ট ও খাবার তৈরির কাজে নিয়োজিতরা খাদ্যনালি, পরিপাকতন্ত্র, লিভারসহ নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংক্রামক ব্যাধিতে ভুগে থাকেন।

প্রবাসী নারী শ্রমিকেরা বিভিন্ন সামাজিক অসংগতি, বৈষম্য ও অপরিচিত পরিবেশের কারণে শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা বৃদ্ধি ঘটে। অধিকাংশ নারী গৃহশ্রমিককে অতিরিক্ত কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা যায়। তারপরও মুখ বুজে সহ্য করে এবং নিজের অসুস্থতাকে লুকিয়ে বিদেশের মাটিতে কামড়ে পড়ে থাকতে হয়। নারী শ্রমিকদের অধিকাংশেরই নিরাপত্তাহীন বারান্দা, রান্নাঘর, স্টোররুমে রাতযাপন করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে অনেককেই দৈহিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের মুখোমুখি হতে দেখা যায়। ফলে ভুক্তভোগী নারী শ্রমিকদের যৌনবাহিত রোগ, এইডস, অনিচ্ছাকৃত ও অবৈধ গর্ভধারণ, অনিরাপদ গর্ভপাতের মতো ঘটনা সংঘটিত হয়। এ ধরনের অসহ্য নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং ডিপ্রেশন, সিজোফ্রেনিয়াসহ নানাবিধ মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। এমনকি আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। উপরš‘ পরিবারের কাছ থেকে দীর্ঘদিন আলাদা থাকা, সামাজিক ও পারিবারিক স্নেহ-মমতা থেকে বঞ্চনা, একাকিত্ব, দারিদ্র্য; সব মিলিয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হয়।

 

নারী শ্রমিকেরা অসুস্থতার পরও বিভিন্ন বাধাবিঘ্নর কারণে অথবা চিকিৎসাকেন্দ্রসমূহে প্রবেশাধিকার কিংবা ইনস্যুরেন্স না থাকার কারণে চিকিৎসা-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালমুখী হতে পারলেও ভাষা সমস্যা বা অদক্ষতার কারণে সঠিক চিকিৎসাটি পায় না। অনেক সময় বেতন কম পাওয়া বা বেতন না পাওয়ার ভয়ে শারীরিক অসুস্থতাকে পুষে রাখে; যা পরে জটিল আকারে রূপ নেয়। অবৈধ পথে গমনকারী বা অবৈধ ভিসা পাসপোর্টধারী নারী শ্রমিকদের অবস্থা আরও প্রকট।
নারী শ্রমিকেরা বিদেশ গমনকালে ফিটনেস টেস্টেও বিড়ম্বনার শিকার হয়। অনেক সময় মেডিকেল পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতি করে ফিটনেসের জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। ফিট শ্রমিককে আনফিট কিংবা আনফিটকে ফিট করতে অর্থ প্রদানে বাধ্য করা হয়।

 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) গবেষণার তথ্যমতে, ৩৮ শতাংশ নারী বিদেশে যাওয়ার পর শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, ৫২ শতাংশ নারী শ্রমিককে জোর করে অতিরিক্ত কাজে বাধ্য করা, ৬১ শতাংশ বিদেশে খাদ্য ও পানির অভাব, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে তথ্য উঠে এসেছে। ৮৭ শতাংশ নারী শ্রমিক প্রবাসে সঠিক চিকিৎসাসেবা পান না বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। চাকরি হারিয়ে বা দেশে ফিরে ৮৫ শতাংশ নারী হতাশাগ্রস্ত, ৬১ শতাংশ ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন, ৫৫ শতাংশ শারীরিকভাবে ও ২৯ শতাংশ মানসিকভাবে অসুস্থতায় ভুগে থাকেন। এমনকি বিদেশ থেকে হেয়প্রতিপন্ন হয়ে দেশে ফেরত আসার পর নারী শ্রমিকেরা সমাজ ও পরিবারের কাছে অসম্মানিত হচ্ছেন। ৩৮ শতাংশ নারী চরিত্রহীনা বলে গণ্য, ২৮ শতাংশ দাম্পত্যজীবন ক্ষতিগ্রস্ত এবং ১৫ শতাংশ তালাকপ্রাপ্ত হন। বিদেশ ভ্রমণের প্রাক্কালে নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও সেবাবিষয়ক তথ্যাদি পুরোপুরি অবগত করা হয় না। এবং বিদেশে তাদের চিকিৎসাসেবাবিষয়ক তথ্যসংবলিত চুক্তিনামাও অনেক ক্ষেত্রে থাকে না।

 

অভিবাসী শ্রমিক ও নারী শ্রমিকের স্বাস্থ্যসেবা সুনিশ্চিতের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গুরুত্বারোপ করেছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) সব দেশসমূহকে অভিবাসী শ্রমিকদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসী শ্রমিক অধিকার কনভেনশন সব অভিবাসী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা; এমনকি অবৈধ শ্রমিকের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের ওপর জোরারোপ করেছে। সুতরাং অভিবাসী শ্রমিকদের স্বাগতিক দেশসমূহকে শ্রমস্বাস্থ্যআইন সঠিকভাবে নিশ্চিতে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। শ্রমিক নিয়োগকৃত কোম্পানিসমূহকে স্বাস্থ্যসেবা চুক্তিনামা পালনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কর্মকান্ডে নজরদারি বাড়ানো উচিত।

 

মালিকপক্ষের অভিবাসী শ্রমিকদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে এগিয়ে আসা দায়িত্ব ও কর্তব্য। শ্রমিক নিয়োগ চুক্তিপত্রে হেলথ ইনস্যুরেন্স, চিকিৎসা-সুবিধা, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, জখম ও মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়গুলো স্পষ্টীকরণ করা উচিত। বাংলাদেশে অভিবাসী শ্রমিক ও নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি লাঘবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশের আলোকে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সুনির্দিষ্ট পলিসি ও ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছে। আইএলওর সহায়তায় অভিবাসী শ্রমিকের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে তিন বছর মেয়াদি জাতীয় কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছে। অভিবাসী আইন ২০১৩ এবং অভিবাসীকল্যাণ ও নিয়োগ আইন ২০১৬-তে জখম ও মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ এবং শ্রমিকের নিরাপদ ও সম্মানজনক কাজ এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় অভিবাসীদের সঠিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, হেলথ ইনস্যুরেন্স, সামাজিক ও স্বাস্থ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং স্বাস্থ্যগত কারণে ফেরত আসা অভিবাসী শ্রমিকের তথ্য-উপাত্তের প্রোফাইল সংরক্ষণের কাজ করছে।

 

অভিবাসী শ্রমিক, বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব প্রদান করে সব অভিবাসী শ্রম আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। অভিবাসী শ্রমিকের অভিবাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে পৃথক স্বায়ত্তশাসিত স্বাস্থ্য বিভাগ গঠন করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট এনজিও এবং ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিষয়সমূহ বাস্তবায়ন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন করতে ভূমিকা রাখতে এগিয়ে আসতে হবে। অভিবাসী নারী শ্রমিকের সমাজ ও পরিবারকে তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধার আসনে মর্যাদা প্রদান করতে হবে।
রাষ্ট্রের অর্থনীতি সুদৃঢ়, সামাজিক ও পরিবারের স”ছলতা আনয়নে জীবনের প্রতিটি স্তরে ঝুঁকি নিয়ে অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে নারীরা সাহসী ভূমিকা রাখছে। জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংগঠন নারীর ক্ষমতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সারা বিশ্বে ভূমিকা রাখতে উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্য ও সম্মান সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় গঠন ও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অভিবাসী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্বটি সুচারুরূপে পালনে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি পরিবার ও সমাজের অংশ হিসেবে তাদের পাশে সদা আমাদের দাঁড়াতে হবে।

লে. কর্নেল নাজমুল হুদা খান
এমফিল, এমপিএইচ
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
সাবেক সহকারী পরিচালক, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুর্মিটোলা ঢাকা।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিপ্যারেন্টিংসচেতনতাস্বাস্থ্য

বেবী ম্যাসেজঃ ভালো না খারাপ?

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১০, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

পরিবারে একটি নতুন শিশুর আগমন অনেক আনন্দ ও খুশির বার্তা নিয়ে আসে। শিশুটির পিতা-মাতা থেকে শুরু করে পরিবারের বয়োজৈষ্ঠ্য সকলেরই চোখের মণি হয়ে উঠে সে। কিন্তু প্রায়শই যে একটা ব্যাপার নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মাঝে কিছুটা মতানৈক্য শুরু হয় তা হল শিশুকে ম্যাসেজ বা মালিশ করা নিয়ে। এটি ভালো না খারাপ তা নিয়ে চলে বিতর্কের। আজ আমরা এই সব কিছু নিয়েই জানবো।

নবজাতক শিশুকে ম্যাসেজ করা বিশ্বব্যাপী একটি প্রাচীন ঐতিহ্য এবং আমাদের দেশে তো তা আরও ব্যাপক। বাচ্চার গোসলের ঠিক আগে তাদের রোদে শুইয়ে পুরো শরীরে তেল মালিশ করে নেয়া হয়। মৃদু স্ট্রোকে করা এই মালিশে জড়িয়ে থাকে আদর এবং ভালোবাসার ছোঁয়া। নিয়মিতভাবে শিশুকে  ম্যাসেজ করা তাদের আরও অনেক কিছু দেওয়ার একটি উপায়। আরও বন্ধন সময়, আরও সংবেদনশীল উদ্দীপনা, আরও স্বাস্থ্যকর বিকাশ। গবেষণা প্রকাশ করে যে, নিয়মিত স্পর্শ এবং ম্যাসেজ উন্নত শারীরবৃত্তিয়, জ্ঞানীয়, মানসিক এবং সামাজিক বিকাশের দিকে পরিচালিত করতে পারে। শিশুর প্রথম মানসিক বন্ধন দৈহিক যোগাযোগ থেকে তৈরি হয় এবং এগুলো পরবর্তী জীবনে মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। নবজাতকের সাথে স্পর্শই হলো আমাদের প্রথম ভাষা আর এই প্রেমময় স্পর্শ তাদের শক্তিশালী হতে এবং কম উদ্বেগ অনুভব করতে সাহায্য করতে পারে।

শিশুর ম্যাসেজের স্বাস্থ্য উপকারিতা

-ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইনফ্যান্ট ম্যাসেজ (আইএআইএম) অনুসারে, শিশুর ম্যাসেজ রক্ত সঞ্চালন এবং পাচনতন্ত্রকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করতে পারে

-হজমে সাহায্য করে এবং গ্যাস, ক্র্যাম্প, কোলিক, কোষ্ঠকাঠিন্য এর মতো পরিস্থিতি দূর করতে সাহায্য করে

-নিয়মিত মালিশ করা তাদের মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে সহায়তা করে

-এর মাধ্যমে কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) কমিয়ে হ্যাপি হরমোন যেমন সেরোটোনিন এবং ডোপামিন বৃদ্ধি করে, যা শিশুকে আরও ভাল ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে

-নাক বন্ধ এবং দাঁতের অস্বস্তি দূর করে

-ভালো পেশীর সমন্বয় ও নমনীয়তা বিকাশে সহায়তা করে

-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

-ত্বকের গঠন উন্নত করে

এইতো গেল ম্যাসেজের উপকারী দিক।

তবে কিছু কিছু জিনিস বাচ্চার ভালোর জন্য সবসময় মনে রাখতে হবে। যেমনঃ

-বাড়িতে বাচ্চাকে ম্যাসেজ করার জন্য অনেক সময় অনেকেই এক্সট্রা লোক নিয়োগ করে থাকে। যিনি ম্যাসেজ করতে আসে তাদের প্যাটার্ন প্রায়ই রুক্ষ হয়, বাচ্চার বাহু এবং পা অতিরিক্ত প্রসারিত করার চেষ্টা করা হয়। এতে জয়েন্টগুলোর স্থানচ্যুতি বা এমনকি ফ্রাকচার হতে পারে। ফলস্বরুপ, ম্যাসেজ প্রায়ই একটি প্রশান্তিদায়ক অভিজ্ঞতার পরিবর্তে একটি চাপযুক্ত অভিজ্ঞতা হয়ে উঠে। এগুলো পরিহার করতে হবে।

-কখনও কখনও শিশুর ম্যাসেজ করার জন্য ব্যবহৃত তেলগুলো ত্বকে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। শিশুর ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং এতে শক্তিশালী/ কঠোর পদার্থ সহ্য করার ক্ষমতা থাকেনা।

-শিশুর কানে তেল দেওয়ার অভ্যাস তার কানে ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকিতে ফেলে।

-ম্যাসেজ করার সময় যদি মনে হয় যে তার কোন ধরনের অস্বস্তি বোধ হচ্ছে বা তার মাঝে তেমন আরামের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছেনা তবে তৎক্ষণাৎ তা থামিয়ে দেয়াই ভালো।

-খাবার খাওয়ার পর পরই কখন ম্যাসেজ করবেনা।

তেল ব্যবহার কি অপরিহার্য?

শিশুর শরীর ম্যাসেজের মতোই তেল ব্যবহারের বিষয় নিয়েও চলে অনেক মতানৈক্যের। আগেরকার সময়ে দাদি-নানিরা খাঁটি সরিষা তেল দিয়ে নবজাতকের পুরো শরীর মালিশ করে দিতো, যা এখনকার সময়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিষেধ করা হয়ে থাকে। তাহলে উপায়?

-তেল ম্যাসেজ শিশুর নরম, সূক্ষ্ম ত্বককে রক্ষা করতে এবং একই সাথে এটিকে ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে। কিন্তু তাই বলে সমস্ত তেল সমান নয় এবং সেগুলো শিশুর ত্বকের জন্য ভাল নয়। শিশুর ম্যাসেজের জন্য সঠিক তেলের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

-নির্বাচিত তেল প্রথমেই শিশুর ত্বকের একটি প্যাচে ছোট ড্যাব করে প্রয়োগ করে দেখতে হবে তাতে কোন প্রতিক্রিয়া হয় কিনা। অ্যালার্জি বা সংবেদনশীল ত্বকের শিশুদের জন্য এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

-সরিষা তেল ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয় কারণ এটি ত্বকের উপর বিষাক্ত প্রভাব ফেলতে পারে, যার ফলে শিশুর সূক্ষ্ম ত্বকে জ্বালা এবং সম্ভাব্য ক্ষতি হতে পারে।

-পরিচিত তেলের মধ্যে অনেকেই অলিভ অয়েল ব্যবহার করলেও এর উচ্চ অলিক অ্যাসিডের কারণে শিশুর মালিশের জন্য একেও সুপারিশ করা হয়না। এটি বাচ্চার ত্বকের শুষ্কতার কিছু স্তর তৈরি করতে পারে।

-২০২০ সালে এক গবেষণায় বলা হয় যে, নবজাতকের উপর ভার্জিন নারকেল তেল প্রয়োগ করা তাদের ত্বকের উন্নতি এবং শক্তিশালী করতে সহায়তা করতে পারে। এটি নবজাতক এবং বয়স্ক শিশুদের জন্য একটি ম্যাসেজ তেল এবং ময়েশ্চারাইজার হিসেবে একই কাজ করতে পারে।

-বাদাম তেল ভিটামিন ই সমৃদ্ধ এবং ২০২০ থেকে ক্লিনিক্যাল গবেষণায় দেখায় যে এটি শিশুর উপর প্রয়োগ করা নিরাপদ।

-এছাড়াও, বিভিন্ন বেবি অয়েল যা আসলে একটি খনিজ তেল এগুলোও ব্যবহার করা নিরাপদ। পেট্রোলিয়াম জেলির মতো খনিজ তেলগুলো শিশুর ত্বকে কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেনা।

শিশুর ম্যাসেজ একটি চমৎকার, প্রশান্তিদায়ক থেরাপি যা শিশুকে শান্ত করতে এবং বন্ধনের দৃঢ়তা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সঠিকভাবে ম্যাসেজ করার আগে কয়েকবার অনুশীলন করে নাও। প্রতিটি অনুশীলনের সাথে তুমি তোমার শিশুর সাথে একটি গভীর ও প্রেমময় সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংসচেতনতাসমস্যা

বয়স যখন দুই

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ৯, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

এমন কখনো খেয়াল করে দেখেছো কি বাসার যে ছোট্ট সদস্যটি রয়েছে, যে সদ্য কথা বলতে শিখেছে, আধো আধো বোলে ঘরকে মাতিয়ে রেখেছে সেই বাচ্চার রাগ, জেদে সবার অবস্থা নাজেহাল। একদিকে সে চায় তার সব কাজ সে নিজে নিজেই করতে আবার অন্যদিকে সেই প্রচেষ্টার বিফল ঘটলে হয়ে যায় হতাশ, পরবর্তীতে যা রুপ নেয় বদমেজাজে। শিশুর জীবনের এই টার্মকে বলে টেরিবল টু। অনেকেই এই শব্দটির সাথে পরিচিত না থাকলেও বাচ্চার এই আচরণগত পরিবর্তনের সাথে কম বেশি সবাই পরিচিত।

টেরিবল টু বা ভয়ংকর দুই শব্দটি দীর্ঘকাল ধরে ২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে বাবা মায়েরা যে পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করে তা বর্ণনা করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। সন্তানের মেজাজ এবং আচরণের দ্রুত পরিবর্তন এবং তাদের সাথে মোকাবেলা করার অসুবিধার কারণে একজন পিতামাতা এই বয়সটিকে ভয়ানক বলে মনে করতে পারে। এটি একটি শিশুর বিকাশের স্বাভাবিক পর্যায়কে বোঝায় যেখানে একটি শিশু নিয়মিতভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের উপর নির্ভরতা এবং স্বাধীনতার জন্য নতুনভাবে বেড়ে উঠার আকাঙ্ক্ষার মধ্যে বাউন্স করতে পারে। লক্ষণগুলো শিশুর মধ্যে ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন এবং মেজাজ ক্ষুব্ধ হতে পারে। এক মিনিটে দেখা যাবে বাচ্চাটি পরম মমতায় তোমাকে আঁকড়ে ধরে থাকবে আবার পরের মিনিটেই দেখা যাবে সে বিপরীত দিকে দৌড়াচ্ছে। টেরিবল টু বলা হলেও এই ধরনের আচরণ প্রায়শই ১৮ মাস থেকে শুরু হয় এবং তা ৪ বছর বয়স পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

এটি কেন হয়?

২ বছর বয়সের আশেপাশে শিশুরা সাধারণত অনেক ধরনের বড় উন্নয়নমূলক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। এই সময় তাদের মধ্যে নতুন সব ধরনের দক্ষতার বিকাশ পরিলক্ষিত হয়। যেমন জাম্পিং, ক্লাইম্বিং, ব্লক স্ট্যাক করা, ক্রেয়ন বা মার্কার দিয়ে আঁকিবুঁকি করা ইত্যাদি। এই পর্যায়ে সে চাইবে স্বাভাবিকভাবেই নিজের একটা পরিবেশ অন্বেষণ করতে এবং নিজের মতো করে সব কিছু করতে। এটা সবই স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত আচরণ। কিন্তু এই সময় তাদের মৌখিক, শারীরিক এবং মানসিক দক্ষতা ভালোভাবে বিকশিত না হওয়ায়, সন্তান পর্যাপ্তভাবে যোগাযোগ করতে বা কোনো কাজ করতে ব্যর্থ হয়। তাদের চাহিদা এবং তা প্রকাশের অক্ষমতার জন্য তারা তখন এই ধরনের আচরণ করে থাকে।

লক্ষণ

সকল বাচ্চাই সমান নয় এবং সমভাবে তারা আচরণও করেনা। তাই এই টেরিবল টু’র লক্ষণগুলো বাচ্চা থেকে বাচ্চাদের মধ্যে আলাদা। তবে কিছু আচরণগত নিদর্শন রয়েছে যা পিতামাতাকে সংকেত দিতে পারে যে তাদের সন্তান এই জটিল বিকাশের পর্যায়ে থাকতে পারে। যেমনঃ

-ভাইবোন বা খেলার সাথীদের সাথে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঝগড়া করা

-রাগ হলে লাথি, থুতু বা কামড় দেয়া

-ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন যেমন এই হাসি তো এই কান্না

-মনোযোগ আকর্ষনের জন্য চিৎকার চেঁচামেচি করা, হাতের কাছে জিনিস ছুঁড়ে ফেলা

টেরিবল টু-এর সাথে আসা উত্তেজনা এবং অবাধ্যতা স্বাভাবিক যা সময়ের সাথে সাথে চলে যেতে পারে। কিন্তু তুমি যদি মনে করো যে আচরণগুলো বেশ দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং তা বাচ্চার খাওয়া, ঘুম বা ডে কেয়ারে যোগদান করাকে প্রভাবিত করছে, তখন একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে নিলে ভালো হয়। এক্ষেত্রে তারা সন্তানের আচরণ সংশোধন করার জন্য টিপস দিতে পারেন এবং মানসিক স্বাস্থ্য মূল্যায়নের প্রয়োজন হলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে পারেন।

টেরিবল টু ম্যানেজের টিপস

সন্তান এবং নিজেকে এই ভয়াবহ টার্মটি পরিচালনার জন্য কিছু টিপস ফলো করতে পারোঃ

-বাচ্চার ঘুমের সময়সূচী রাখো। সন্তান যখন ক্লান্ত থাকে তখন এই ধরনের আচরণ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই তার ঘুমের সময় যতটা সম্ভব সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার চেষ্টা করো। ভালো ঘুম ও বিশ্রাম তাদের মেজাজ স্থির রাখতে সাহায্য করবে।

-একই কথা খাবারের বেলায়ও প্রযোজ্য। বাচ্চারা যখন ক্ষুদার্ত অনুভব করে তখন বাইরে যাওয়া এড়াতে চেষ্টা করো। আর যদি খাবারের সময় সন্তানের সাথে বাইরে থাকতেই হয় তবে খাবার প্যাক করে সাথে নিয়ে রাখতে পারো।

-তুমি যে আচরণগুলো অনুমোদন করবে সেগুলোর প্রশংসা করো এবং যেগুলো থেকে বিরত রাখতে চাও সেগুলোকে উপেক্ষা করো।

-সন্তানের সামনে অহিংস আচরণ উপস্থাপন করতে চাইলে তাদের আঘাত করবেনা এবং তাদের উপর চেঁচামেচি করা এড়াতে হবে।

-তাদের কোন কিছু করতে পুননির্দেশ বা বিভ্রান্ত করো। বাচ্চা যখন উত্তেজিত হয়ে চেঁচামেচি করা শুরু করতে থাকে তখন তাদের মনোযোগ অন্য দিকে ডাইভার্ট করার জন্য মজার বা আকর্ষনীয় কিছু দেখানো বা করার নির্দেশ করো।

-বাচ্চার জন্য একটি নিরাপদ, শিশুরোধী পরিবেশ নিশ্চিত করো। ভঙ্গুর বা মূল্যবান বস্তু তার হাতের নাগালে থাকতে পারে এমন জায়গায় রাখবেনা।

-বাচ্চাকে সীমিত পছন্দ করার ব্যাপারে অফার করো। উদাহণস্বরুপ, সে কি খেতে চায় তা জিজ্ঞাসা না করে তাদের আপেল বা কমলা থেকে একটি বেছে নিতে বলতে পারো। এটি শিশুকে অনেক পছন্দের সাথে যোগ না করে নিয়ন্ত্রণের অনুভূতি দেয়।

-সর্বোপরি নিজেকে শান্ত রাখো। এমন পরিস্থিতিতে যে কারোরই মেজাজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু নিজেও ধৈর্য্য হারা হয়ে গেলে এতে আরও বিপত্তি বাড়ে। তাই যখনই পরিস্থিতি তোমাকে রাগের প্রান্তে নিয়ে আসে, তখন কিছুক্ষন বসে থেকে গভীরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার জন্য সময় নাও। এটি তোমাকে শান্ত করতে এবং সহানুভুতির সাথে সন্তানের সাথে যোগাযোগ করতে সহায়তা করবে।

সন্তান যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা গ্রহণ করে এবং তাকে বা তার ভালোবাসা এবং সম্মান দেখানোর মাধ্যমে, তুমি তোমার সন্তানকে এই কঠিন পর্যায়ে সাহায্য করতে পারবে এবং তাদের মাঝে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে সহায়তা করতে পারবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নারীসংগ্রামসচেতনতা

নারী নিপীড়ন এবং এড়িয়ে যাওয়া

করেছে Suraiya Naznin জানুয়ারী ৯, ২০২৩

নাসরিন সুলতানা-

এড়িয়ে যাওয়া কিংবা অন্যায়ের পক্ষে কথা বলা একটু একটু করে নারী নিপীড়নের দরজা খুলে দেয়-

কোনো রকম ভিড় ঢেলে বাসে উঠল দীপা। কিছু দূর গিয়ে পেছনের সারিতে একটা সিট পেল। আঁটসাঁট হয়ে বসে দৃষ্টি শুধু এপাশ-ওপাশ। এই বুঝি কিছু হলো! গন্তব্যে পৌঁছে শঙ্কিত পায়ে দীপা নামতে গেল, ওমা? ধাক্কা লাগল সামনে বসা এক যুবকের পায়ে। দীপা দুটো কথা বলতেই বাবার বয়সী একজন বলে উঠল ছেড়ে দাও না। একটু লাগতেই পারে, তাতে কী এমন হয়েছে? দীপার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। একজন বাবার বয়সী মানুষ তিনি, প্রতিবাদ না করে অন্যায়ের পক্ষে কথা বলছেন! এই যে এড়িয়ে যাওয়া কিংবা অন্যায়ের পক্ষে কথা বলা একটু একটু করে নারী নিপীড়নের দরজা খুলে দেয়।

 

বর্তমানে গণপরিবহন এবং শপিংমলে নারীদের হেনস্তার বিষয়টিকে ভাবিয়ে তুলেছে সবাইকে। ঢাকায় কর্মজীবী অনেক নারী রয়েছেন, যাদের প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে যেতে গণপরিবহনে যাতায়াত করতে হয়। গণপরিবহনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাদের প্রতিদিন নানা রকম হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। যাত্রীর চাপ বেড়ে গেলে নারীদের বাসে না নেওয়ার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গণপরিবহনে নারীদের জন্য আসন নির্ধারিত থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তারা সেই সুবিধাটা পাচ্ছে না।

রাজধানীর অনেক প্রতিষ্ঠান যেমন ব্যাংক, মিডিয়া হাউস, হাসপাতালে যেসব নারী কাজ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নৈশ কোর্সে যারা পড়েন, তাদের প্রায় সময় রাতে গণপরিবহনে যাতায়াত করতে হয়। কোনো কোনো বাস কন্ডাক্টর যাত্রীর চাপের কারণে নির্ধারিত আসন থাকা সত্ত্বেও সে সময় নারী যাত্রীদের বাসে তুলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে থাকেন।

রাজধানীতে ঘটে যাওয়া কয়েক বছর আগেরই ঘটনা, গণপরিবহনের ভেতরে যৌন হয়রানি। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, উত্তরা ইউনিভার্সিটির এক ছাত্রী বাড্ডা লিংক রোড থেকে উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরে নিজের ক্যাম্পাসে যেতে তুরাগ পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি পথে পথে যাত্রী নামালেও নতুন করে কোনো যাত্রী তোলেনি। একসময় সেটি প্রগতি সরণিতে গেলে যাত্রীশূন্য হয়ে যায়। তখন বাসের হেলপার দরজা আটকে ছাত্রীর পাশে বসে তাকে টেনেহিঁচড়ে পেছনের সিটের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ওই ছাত্রী জোর করে বাস থেকে নামতে চাইলে সেটি দ্রুত চলতে থাকে। একপর্যায়ে মেয়েটি চিৎকার শুরু করলে চালক বাসটি থামায়। তখন ওই ছাত্রী বাস থেকে লাফিয়ে পড়ে।

ঘটনার শিকার ছাত্রী বিষয়টি উত্তরা ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে জানালে শিক্ষার্থীরা বাসের চালক-হেলপারকে গ্রেপ্তারে আন্দোলন শুরু করেন। তারা তুরাগ পরিবহনের ৩৫টি বাস আটকে রাখেন। ওই ঘটনায় ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে গুলশান থানায় মামলাও করা হয় এবং পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাসের চালক, হেলপার এবং কন্ডাক্টরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আবার নিউমার্কেট থানা এলাকার চাঁদনি চক মার্কেটে এক দল নারীকে দোকানিরা নিপীড়ন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে সে সম্পর্কিত খবরও প্রকাশিত হয়। মার্কেটটির সামনে জনসমক্ষেই এমন ঘটনা ঘটেছে দাবি করে ভুক্তভোগী এক নারী ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন এবং সেই ফেসবুক স্ট্যাটাসের পরিপ্রেক্ষিতে একটি মামলা হয় এবং তারপর ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিš‘ প্রতিদিনই এ রকম ঘটনা কমবেশি কোথাও না কোথাও ঘটছে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
চলন বলনজীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

ব্যাক পেইন থেকে মুক্তি? জেনে নাও এখনই

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ৩, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

ব্যাক পেইন বর্তমানে সবচেয়ে সাধারণ শারীরিক সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। গবেষণায় দেখা যায় যে প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৮জন তাদের জীবনের কোন না কোন সময়ে এই ব্যথার মুখোমুখি হয়। এটি একটি নিস্তেজ, অবিরাম ব্যথা থেকে হঠাৎ তীক্ষ্ম ব্যথা পর্যন্ত হতে পারে। যে কোন বয়সে, যে কোন পরিস্থিতিতে এর যন্ত্রণা শুরু হতে পারে; যা স্বাভাবিক জীবনযাপনের প্রতি পদে পদে বাধার সৃষ্টি করে। কারণ ও উপসর্গের উপর  নির্ভর করে এর চিকিৎসা পদ্ধতি পরিবর্তিত হয়।

মূলত মেরুদন্ড বা স্পাইন সম্পর্কিত ব্যথাকেই আমারা ব্যাক পেইন বলে থাকি। ব্যাক পেইন কেন হয়? এর নির্দিষ্ট কোন উত্তর নেই। মানুষের পিঠ পেশী, লিগামেন্ট, টেন্ডন, ডিস্ক এবং হাড়ের একটি জটিল কাঠামোর সমন্বয়ে গঠিত, যা শরীরকে সমর্থন করার জন্য একসাথে কাজ করে এবং আমাদের চারপাশে চলাফেরা করতে সক্ষম করে। এই উপাদানগুলোর যেকোন একটির সমস্যা হলে ব্যাক পেইন হতে পারে। কখনও কখনও এটি হঠাৎ আসতে পারে- দূর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া বা ভারী কিছু তোলার কারণে বা মেরুদন্ডে বয়স-সম্পর্কিত অবক্ষয়জনিত পরিবর্তনের কারণে এটি ধীরে ধীরে বিকাশ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, প্রদাহজনিত ব্যাধি বা অন্যান্য চিকিৎসার কারণে এই ব্যথা হয়ে থাকে। আবার আমাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপও এইক্ষেত্রে দায়ী হতে পারে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা বা বসে থাকে, ঘাড় সামনের দিকে চাপিয়ে গাড়ি চালানো বা কম্পিউটার ব্যবহার করা, এমন বেডে শোয়া যা শরীরের জন্য উপযুক্ত নয় ইত্যাদি। এটি সাধারণত শুরুতে একটি নির্দিষ্ট স্থানে লোকাল পেইন থেকে শুরু করে পুরো পিঠে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কখনও কখনও ব্যথা পিঠ থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে যেমন নিতম্ব, পা বা পেটে ছড়িয়ে পড়ে। এই ব্যথার তীব্রতা প্রতিটি ব্যক্তির জন্য পরিবর্তিত হয়।

ঘরোয়া প্রতিকার

হঠাৎ বা তীব্র ব্যথা ডাক্তার বা শারীরিক থেরাপিস্ট দ্বারা পরীক্ষা করা উচিৎ। কিন্তু কখনও কখনও তুমি নিজেই এই বিরক্তিকর ব্যথা এবং অস্বস্তি দূর করতে ঘরোয়াভাবে কিছু ব্যবস্থা নিতে পারো।

ভালো ঘুম

ব্যাক পেইন দেখা দিলে তা ঘুমের জন্য কঠিন হতে পারে। এটি একটি দুষ্টচক্র হতে পারে কারণ যখন তুমি পর্যাপ্ত ঘুমাতে পারবেনা তা ব্যথার মাত্রা অসহনীয় করে তোলে। এক্ষেত্রে পাশ ফিরে শুতে পারো যাতে মেরুদন্ড একটি নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে পারে এবং পিঠের উপর চাপ কমাতে হাঁটুর মধ্যে বালিশ রাখতে পারো। এছাড়াও ম্যাট্রেসও এক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। আরামদায়ক শক্ত ম্যাট্রেস নির্বাচন করতে ভূলবেনা।

সঠিক ভঙ্গি

সঠিক ভঙ্গিমার অভাবেও ব্যথার উদ্রেক হতে পারে, বিশেষ করে যদি তোমাকে দীর্ঘ সময় ধরে বসে থেকে কাজ করতে হয়। স্ক্রিনের সামনে কাজ করতে হলে তা টেবিল বা ডেস্কে এমনভাবে রাখো যাতে বাহুর সমভাবে অবস্থান থাকে এবং পর্দার শীর্ষে চোখ সমান থাকে। অযথা কীবোর্ডের উপর ঝুঁকে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম

শক্তিশালী পেশী, বিশেষ করে পেটের মাসল পিঠকে সর্থন করতে সাহায্য করে। শক্তি এবং নমনীয়তা উভয়ই ব্যথা উপশমে এবং এটি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করতে পারে। যোগব্যায়াম, পাইলেটস এবং তাই চি হলো পেটের কোর এবং নিতম্বের চারপাশের পেশীগুলোকে শক্তিশালী করার কয়েকটি উপায়। বয়স্ক ব্যক্তিরাও ইয়োগার কিছু স্টেপ ফলো করেও উপকার পেতে পারে।

স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা

শরীরের অতিরিক্ত ওজন ঝরানো পিঠের উপর লোড হালকা করে।ওজন কামানো ব্যথায় দারুন কাজ করে কারণ এটি মেরুদন্ডে যান্ত্রিক শক্তির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। যদি মাত্রাতিরিক্ত ওজন হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শে ডায়েট এবং ব্যায়ামের পরিকল্পনা করে নিতে পারো।

আইস এবং হিট থেরাপি

বেদনাদায়ক জায়গায় বরফের নিয়মিত প্রয়োগ আঘাত থেকে ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। প্রতিবার ২০ মিনিট পর্যন্ত এটি দিনে কয়েকবার চেষ্টা করো। ত্বকের সুরক্ষার জন্য একটি পাতলা কাপড়ে বরফের প্যাকটি মুড়িয়ে রাখো। কয়েক দিন পর, হিটে স্যুইচ করো। পেশী শিথিল করতে এবং আক্রান্ত স্থানে রক্ত প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করার জন্য একটি হিটিং প্যাড প্রয়োগ করো। এছাড়া শিথিলায়নের জন্য উষ্ণ পানি দিয়ে গোসল করতে পারো। পোড়া এবং টিস্যুর ক্ষতি এড়াতে কখনোই হিটিং প্যাড নিয়ে ঘুমাবেনা।

সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ

আমরা যা খাই তা থেকে ভিটামিন এবং মিনারেল পাওয়া ভালো। কিন্তু যদি কোন প্রকার সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন দেখা দেয় তবে ডাক্তারের পরামর্শে তা নেয়া ভালো। উদাহরণস্বরূপ, অনেকেই পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পায় না, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি সূর্যালোকের এক্সপোজারের অভাব থেকে বা শরীর খাবার থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি শোষণ করতে পারেনা বলে ঘটতে পারে। ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি পেশী দূর্বলতা এবং ক্র্যাম্প হতে পারে। এক্ষেত্রে যথাযথ সাপ্লিমেন্ট গ্রহনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নাও।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • বয়স সবে উনিশ-কুড়ি

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook