রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

সচেতনতা

প্রধান রচনাসচেতনতাস্বাস্থ্য

গরমে শিশুস্বাস্থ্য

করেছে Suraiya Naznin মে ৩১, ২০২৩

লে. কর্নেল নাজমুল হুদা খান

প্রচন্ড তাপের কারণে কর্মব্যস্ত মানুষের শরীরে অতিরিক্ত ঘাম, তাপ-শ্রান্তি, তাপাঘাত, শিরটান বা খিঁচুনি, মূর্ছা যাওয়া, এমনকি মৃত্যুর খবরও আসছে প্রায়ই। এই প্রচন্ড গরমে বড়দের চেয়ে শিশুদের অবস্থা আরও নাজেহাল। ইউনিসেফের মতে, বিশ্বে প্রায় ৬০ কোটি শিশু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাপমাত্রাজনিত রোগে ভুগে থাকে-

বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবে গ্রীষ্ম শুরুর আগেই বিরূপ আবহাওয়ার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশে। প্রচ- দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। এ দাবদাহে মানুষের কর্মক্ষমতা হ্রাস, উৎপাদনে নিম্নগতি, চলাচলে ব্যাঘাতসহ জনস্বাস্থ্য নানামুখী নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ক্রমাগত দাবদাহ বিরাজ করার কারণে কর্মব্যস্ত মানুষের শরীরে অতিরিক্ত ঘাম, তাপ-শ্রান্তি, তাপাঘাত, শিরটান বা খিঁচুনি, মূর্ছা যাওয়া, এমনকি মৃত্যুর খবরও আসছে প্রায়ই। এই প্রচন্ড গরমে বড়দের চেয়ে শিশুদের অবস্থা আরও নাজেহাল। ইউনিসেফের মতে, বিশ্বে প্রায় ৬০ কোটি শিশু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তাপমাত্রাজনিত রোগে ভুগে থাকে।

পরিণত বয়সে না পৌঁছার কারণে শিশুদের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গঠনে পরিপূর্ণতা আসে না। তাই তাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকে। এ জন্য প্রচন্ড গরমে শিশুদের নানা ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। তন্মধ্যে পানিশূন্যতা, শ্বাসতন্ত্রের রোগ যথা : সর্দি-কাশি-নিউমোনিয়া, চামড়ার ব্যাধি যেমন : ঘামাচি ও র্যাশ এবং তাপমাত্রার আধিক্যের কারণে মূর্ছা যাওয়া, হিট স্ট্রোক ও হিট এক্সাশন ইত্যাদি অন্যতম। এ ছাড়া গরম ও অতিরিক্ত আর্দ্রতায় বিভিন্ন জীবাণু সংক্রমণের কারণে খাদ্য, পানি ও বায়ুবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবও দেখা যায়, যথা জলবসন্ত বা চিকেন পক্স, ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং, জন্ডিস, টাইফয়েড ইত্যাদি।

পানিশূন্যতা
শিশুরা এমনিতেই পানি পান করতে চায় না। গরমের সময় প্রয়োজনমতো তরল বা পানি পান না করার কারণে তারা সহজেই পানিস্বল্পতা বা পানিশূন্যতায় ভোগে। বমি বা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে শিশুদের পানিস্বল্পতা হতে পারে। মৃদু বা মাঝারি ধরনের পানিশূন্যতায় তাদের জিহ্বা শুকিয়ে যেতে পারে, কান্নায় চোখ দিয়ে সামান্য পানি পড়ে বা একেবারেই পানি পড়ে না, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়, প্রস্রাব কম হয় কিংবা অস্থিরতা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। তীব্র পানিশূন্যতায় মুখগহ্বর শুকিয়ে যায়, পেটের চামড়া ঢিলা হয়ে যায়, শরীর নিস্তেজ ও ঘুম ঘুম ভাব থাকে, চোখ গর্তে ঢুকে যায়, নবজাতকদের মাথার চাঁদি ভেতরে বসে যায় এবং দ্রুত ও গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া প্রভৃতি উপসর্গ দেখা যায়। এ অবস্থা শিশুদের নাড়ির গতি দ্রুত ও দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।

পানিশূন্যতা দেখা দিলে শিশুদের বারবার তরল খাবার বা পানীয় যথা পানি, ডাবের পানি, ফলের জুস বা তরল-জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে বয়স অনুযায়ী পরিমাণমতো খাওয়ার স্যালাইন খাওয়ানো যেতে পারে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ঘামাচি
গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় শিশুদের শরীরে প্রায়ই ঘামাচি দেখা দেয়। অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীরে ঘাম বের হওয়ার নালিমুখ বন্ধ হয়ে ঘামাচির সৃষ্টি হয়। কখনো কখনো ঘামাচি লাল হয়ে শিশুর ঘাড়ে, গলায়, পিঠে ও বুকে ছড়িয়ে পড়ে এবুং প্রচন্ড চুলকানির সৃষ্টি হয়। অনেক সময় ঘামাচির মুখ পেকে পুঁজেরও সৃষ্টি হতে পারে। ঘামাচি প্রতিরোধে শিশুকে সরাসরি রোদে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। এ সময় স্কুলে বেশিক্ষণ বহিরাঙ্গন খেলাধুলা না করা ভালো। শিশুদের যথাসম্ভব সুতি জামাকাপড় পরাতে হবে। প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে শিশুর গা ঠান্ডা পানিতে মুছিয়ে দিলে ঘামাচি প্রতিরোধে সহায়ক। বাজারে সজলভ্য ঘামাচিরোধী পাউডার এ কষ্ট লাঘবে অনেক সময় সহায়তা করে।

শ্বাসতন্ত্রের রোগ-সর্দি, কাশি ও নিউমোনিয়া
গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া বাতাসে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস প্রভৃতি রোগজীবাণু বৃদ্ধিতে সহায়ক। এ সময় শিশুদের সর্দি, কাশি ও শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ তথা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে। এ ধরনের সর্দি, কাশি ও শ্বাসতন্ত্রের রোগ প্রতিরোধে শিশুদের পরিষ্কার পরি”ছন্ন রাখতে হবে। ভিটামিন সি-যুক্ত ফলমূল যথা: আনারস, কমলা, কামরাঙা, পেয়ারা, আম ইত্যাদি এবং নানা ধরনের মৌসুমি ফল এসব রোগ প্রতিরোধে উপকারী। সর্দিতে নাক বন্ধ হলে নরসলজাতীয় ড্রপ নাকে ব্যবহার করা যেতে পারে। কুসুমকুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে পরিষ্কার নরম কাপড়ে ভিজিয়ে নাকে দেওয়া যেতে পারে। কাশি হলে ছোট শিশুদের লেবুর রস মেশানো গরম পানি ও তুলসীপাতার রস কার্যকর। শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

জ্বর
শিশুরা নিজের অজান্তে অনেক সময় অপরিষ্কার ও জীবাণুযুক্ত দ্রব্যসামগ্রীর সংস্পর্শে আসে বিধায় জীবাণু সংক্রমণ ও জ্বরের প্রবণতা বেশি থাকে। গরমের সময় এ হার আরও বেড়ে যায়। তবে এ জ্বর তেমন মারাত্মক নয়। জ্বর হলে নিজেরা কোনো ওষুধ শুরু না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে জ্বর কমাতে গরম পানিতে নরম কাপড় ভিজিয়ে শিশুর পুরো শরীর মুছে দিলে জ্বর কমে আসে এবং শিশু তাৎক্ষণিক আরাম বোধ করে থাকে। আইসপ্যাক বা ঠান্ডা পানি না ব্যবহার করাই ভালো। কারণ, এতে পরবর্তী সময়ে জ্বর বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। জ্বরের সময় শিশুর শরীরে পানিস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। পানিস্বল্পতা রোধে বেশি বেশি তরল খাবার ও পানীয় খাওয়াতে হবে; তবে চা বা কফি ইত্যাদি পরিহার যুক্তিযুক্ত। জ্বরের সঙ্গে বমি বা পাতলা পায়খানা থাকলে মুখে খাওয়ার স্যালাইন খাওয়াতে হবে।

হিট এক্সাশন, হিট ক্র্যাম্প, হিট স্ট্রোক, হিট সিনকোপ বা মূর্ছা যাওয়া
অত্যধিক গরমে আমাদের শরীরের শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন ঘটে। প্রথমে অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীর থেকে পানি ও খনিজ পদার্থ বের হয়ে যায়। এতে শরীর কিছুটা অবসাদগ্রস্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে। হাত ও পা কিছুটা ফুলে যায় ও চামড়া লালচে হয়ে পড়ে। এ পর্যায়কে হিট ক্র্যাম্প বলা হয়। হিট ক্র্যাম্পের পরবর্তী পর্যায় হিট এক্সাশন। এ সময় শিশুর পুরো শরীর ঘামে ভেজা থাকে, শিশু অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়ে, মাথাব্যথা, বমিভাব ও ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়। নাড়ির গতি দ্রুত ও দুর্বল হয়ে পড়ে। তৃতীয় ধরনের মারাত্মক সমস্যাটিকে বলে হিট স্ট্রোক। এ পর্যায়ে শরীর শুকিয়ে যায়, নাড়ির গতি দুর্বল, দ্রুত ও অনিয়মিত হতে দেখা যায়। শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে, শ্বাসের গতি বেড়ে যেতে পারে; শিশু খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে, প্রলাপ বকা বা খিঁচুনি হতে পারে কিংবা মূর্ছাও যেতে পারে। দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা না নিলে শিশুর মৃত্যুও ঘটতে পারে।

এসব পরিস্থিতিতে শিশুকে তাড়াতাড়ি শীতল স্থানে বা ছায়ায় নিয়ে আসতে হবে। শরীর থেকে পরিধেয় কাপড়চোপড় খুলে পাখার বাতাস বা ফ্যান ছেড়ে দিতে হবে। শিশুর পায়ের দিক উঁচু করে শুয়ে রাখতে হবে। জ্ঞান থাকলে ঠান্ডা পানিতে শরীর মুছে দিন। ঠান্ডা, পরিষ্কার, তরল বা পানীয় খেতে দিন। শিশু যদি বমি করতে থাকে, তাকে এক পাশ করে রাখুন, বমি শ্বাসনালিতে চলে না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

ডায়রিয়া বা ফুড পয়জনিং
গরমের সময় দ্রুত খাবার বা পানিতে রোগজীবাণুর বংশবৃদ্ধি ঘটে। এ সময় শিশুদের নানা ধরনের পানি বা খাদ্যবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা যায়, যথা : ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং, আমাশয়, টাইফয়েড, জন্ডিস ইত্যাদি। শিশুর ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে যতক্ষণ পর্যন্ত শিশুর পায়খানা স্বাভাবিক না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ঘন ঘন স্যালাইন খাওয়াতে হবে। সঙ্গে পানি অথবা ডাবের পানি খাওয়ানো ভালো। একই সঙ্গে তাকে তরল খাবারও দিতে হবে। শিশুর শরীরে যাতে পানিশূন্যতা না হয় এবং তার প্রস্রাবের পরিমাণ স্বাভাবিক থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিশুর পায়খানা নিয়ন্ত্রণ না হলে বা সঙ্গে রক্ত গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। শরীরে জন্ডিসের লক্ষণ দেখা দিলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম দিতে হবে এবং তরল ও স্বাভাবিক খাবার খাওয়াতে হবে।

গরম ও অতিরিক্ত তাপমাত্রাজনিত শিশুদের সিংহভাগ শারীরিক সমস্যাই প্রতিরোধযোগ্য। বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে এবং সংশ্লিষ্টদের অসচেতনতা তাপমাত্রাজনিত রোগব্যাধিতে আক্রান্ত শিশুর বর্তমান সংখ্যা ৫০ কোটি থেকে ২০৫০ সালে এ সংখ্যা দাঁড়াবে ২০০ কোটি টাকা। তাই ইউনিসেফ বিশ্বের সব দেশকে শিশুদের বাঁচাতে বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলেছে।

ক্স রোদের সরাসরি প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষা করুন।
ক্স গরমের দিনে শিশুদের বেশি বেশি পানি পান করাবেন।
ক্স গরমের দিনে শিশুদের সহজপাচ্য ও স্বাস্থকর খাবার দিন।
ক্স এ সময় শিশুদের ঢিলেঢালা ও সুতি কাপড় পরিধানের ব্যবস্থা নিন।
ক্স বা”চাদের নিয়মিত গোসল করান।
ক্স যথাসম্ভব ছেলেমেয়েদের ইনডোর বা শীতল স্থানে খেলাধুলার ব্যবস্থা করুন।
ক্স বাসস্থানে যথাসম্ভব আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন।
ক্স গরমে বাচ্চাদের নিয়ে দূরপাল্লার ভ্রমণ কিংবা আউটডোর কর্মকান্ড পরিহার করুন।

গরমের দিনে অভিভাবকেরা কিংবা স্কুল কর্তৃপক্ষ ছেলেমেয়েদের অতিরিক্ত পিপাসা লাগা, হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, ঘন ঘন পাতলা পায়খানা, বমি, কিছু খেতে না চাওয়া, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, চোখ বসে যাওয়া বা জিহ্বা শুকিয়ে যাওয়া এবং বা”চাদের দুর্বল ও নিস্তেজভাব দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

সাধারণত শিশুদের শরীরের ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ গড়ে ওঠে না। যেকোনো ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়ায় তাদের শরীরের ওপর প্রতিক্রিয়া শিশুরা বুঝতে পারে না। তারা ঠিকমতো বলতে পারে না কী ধরনের সমস্যায় ভুগছে। শিশুদের শারীরিক গঠন এমন যে দাবদাহের কারণে যেকোনো মুহূর্তে পূর্বসতর্কতা ছাড়াই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। এসব পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে শিশুরা অজ্ঞ। তীব্র গরমে নানান স্বাস্থ্য জটিলতার মুখোমুখি হয় শিশুরা। তাই অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উচিত এ সময় শিশুদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতন থাকা।

লেখক : লে. কর্নেল নাজমুল হুদা খান, এমপিএইচ, এমফিল
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
সচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

আগুনে পুড়লে

করেছে Suraiya Naznin এপ্রিল ৪, ২০২৩

রোদসী ডেস্ক: শরীরের কোথাও গভীরভাবে পুড়ে গেলে ব্যথা অনুভব করার জন্য প্রয়োজনীয় নার্ভ বা স্নায়ুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই এমন ক্ষেত্রে অবহেলা না করে রোগীকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত-

পানি ঢালা: শরীরের কোথাও হালকা পুড়ে গেলে পোড়া স্থানের ওপর প্রায় ২০ মিনিট ঠান্ডা পানি ঢালতে হবে, তবে ফ্রিজের পানি নয়। তারপর পোড়া স্থানকে ত্বক সহনীয় সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

ঠান্ডা সেঁক : পোড়া স্থানের ওপর কোল্ড কমপ্রেস বা কাপড়ে পেঁচানো বরফের টুকরো ১০-১৫ মিনিট ধরে রাখলে ব্যথা ও ফোলা উপশম হবে। ১০-১৫ মিনিট বিরতি নিয়ে প্রয়োজন পড়লে পুনরায় সেঁক দেওয়া যেতে পারে । তবে খুব বেশি ঠান্ডা সেঁক দেওয়া যাবে না, কারণ ব্যথা বেড়ে যেতে পারে।

অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম: অ্যান্টিবায়োটিক অয়েন্টমেন্ট বা ক্রিম পোড়া স্থানে ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে পারে। পোড়া স্থানের ওপর ব্যাসিট্রাসিন বা নিওসপোরিন অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল অয়েন্টমেন্ট লাগানো যেতে পারে। তারপর জীবাণুমুক্ত কাপড় দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।

অ্যালোভেরা জেল: পোড়া স্থানের চিকিৎসায় অ্যালোভেরা এত বেশি কার্যকর যে, এটা বার্ন প্লান্ট হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। গবেষণায় প্রমাণিত যে, ফার্স্ট ডিগ্রি বার্ন ও সেকেন্ড ডিগ্রি বার্ন নিরাময়ে অ্যালোভেরা খুবই কার্যকর। অ্যালোভেরা প্রদাহ কমায়, রক্ত সংবহন বাড়ায় এবং ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার ঠেকায়। অ্যালোভেরার পাতা থেকে প্রয়োজনীয় পরিমাণে জেল নিয়ে সরাসরি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে নিতে হবে। অথবা ফার্মেসি থেকে ওষুধ কোম্পানির অ্যালোভেরা ক্রিম কিনেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

মধুর প্রলেপ: মধু খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এটা কে না জানে? চমকপ্রদ তথ্য হলো, মধু ত্বকেও ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে, মৃদু পোড়া স্থানে মধুর প্রলেপ দিলে দ্রুত সেরে ওঠে। মধুতে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক বিনাশক শক্তি রয়েছে। এছাড়া প্রদাহও কমাতে পারে।

ফোসকা ফাটানো যাবে না: ফোসকা চোখে পড়লে ফেটে ফেলতে ইচ্ছে হয়। ফোসকাকে তার মতো থাকতে দিতে হবে। এটা সময়মত নিজ থেকে ফেটে যাবে। ফেটে ফেললে ইনফেকশনের ঝুঁকি আছে। তবে ফোসকাকে উদ্বেগজনক মনে হলে চিকিৎসকের কাছে চলে যেতে হবে।

ব্যথানাশক ওষুধ: পোড়া স্থানে ব্যথা অনুভব করলে ওভার-দ্য-কাউন্টার (যেসব ওষুধ কিনতে প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজন পড়ে না) ব্যথানাশক ওষুধ খেতে পারেন, যেমন- আইবুপ্রোফেন বা ন্যাপ্রোক্সেন। অবশ্যই বয়স অনুসারে সঠিক ডোজে ব্যবহার করতে হবে। এ সংক্রান্ত ধারণা না থাকলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে হবে।

যা ব্যবহার করা যাবে না

পোড়া স্থানে মাখন, তেল, ডিমের সাদা অংশ ও টুথপেস্ট লাগাবে না। এসবকিছু ক্ষতস্থান সারিয়ে তোলে জাতীয় ভুল ধারণার প্রচলন রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এসবের প্রয়োগে পোড়া স্থানের অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে। মাখন তাপ ধরে রাখে ও ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার ঘটাতে পারে। তেলও তাপ ধরে রাখে, এমনকি নারকেল তেলও। ডিমের সাদা অংশ লাগালে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন ও অ্যালার্জিক রিয়্যাকশনের ঝুঁকি আছে। টুথপেস্ট ত্বককে উক্ত্যক্ত করার পাশাপাশি ইনফেকশনের উপযোগী করে তোলে।

যখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে

ফার্স্ট ডিগ্রি বার্নের চিকিৎসা ঘরে করলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই বললেই চলে। তবে সেকেন্ড ডিগ্রি বার্নের চিকিৎসা ঘরোয়া উপায়ে করলেও বাড়তি সচেতনতার প্রয়োজন আছে, কারণ ক্ষেত্রবিশেষে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। যখন চিকিৎসক দেখাবে-

* পোড়া স্থানের ডায়ামিটার ৩ ইঞ্চির বেশি হলে।

* মুখমণ্ডল, হাত, নিতম্ব ও কুঁচকিতে পুড়ে গেলে।

* পোড়া স্থানের যন্ত্রণা অসহনীয় হলে বা দুর্গন্ধ ছড়ালে।

* উচ্চ মাত্রায় জ্বর আসলে।

* যদি মনে করেন যে থার্ড ডিগ্রি বার্ন হয়েছে।

* যদি পোড়ার মাত্রা বুঝতে না পারেন।

* সবশেষ টিটেনাস শট নিয়েছেন ৫ বছরের বেশি হলে।

তথ্যসূত্র: হেলথ লাইন

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.কান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাদিবস সবিশেষদেহ ও মনবাতিঘরবিশেষ রচনাসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

ক্যান্সার মানেই মৃত্যু নয়- লাইভ আলোচনা

করেছে Shaila Hasan মার্চ ৫, ২০২৩

সুরাইয়া নাজনীন:

প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালন করা হয়। ২০২২-২০২৪ সাল পর্যন্ত এ দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে “close the care gap” অর্থাৎ‘ক্যান্সার সেবায় বৈষম্য দূর করি’। ‘ক্যান্সারমানেইমৃত্যু নয়’ এই বিষয় ধরে রোদসী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে  ফেসবুক লাইভ আলোচনা। রোদসীর সম্পাদক ও প্রকাশক সাবিনা ইয়াসমীনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটি পরিচালিত হয়। দুজন চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম ও সহকারী অধ্যাপক ডা.তন্নিমা অধিকারী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ফার্মাসিস্ট স্বাগতা সরকার লোপা-

সাবিনা ইয়াসমীন: ক্যান্সার মানেই কি মৃত্যু? আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ধরে নেয়া হয় ক্যান্সার হলেই সব শেষ- এ  ধারণা নিয়ে কিছু বলুন?

রওশন আরা বেগম: ক্যান্সার হলেই যে মৃত্যু নিশ্চিত তেমনটি নয়।আর মৃত্যুর কথা তো আমরা কেউ বলতে পারিনা। দেখতে  হবে ক্যান্সারের স্টেজ কোন পর্যায়ে আছে। স্টেজ ১ হলে ৯০ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে আবার ২ হলে ৭০ শতাংশ আবার স্টেজ ৩ হলে ৫০  শতাংশ। এটা আসলে নির্ভর করে রোগীর শারীরিক কন্ডিশনের ওপর। স্টেজ বেশি হলে সারভাইবাল কমে যায়।তবে মৃত্যু  অবধারিত এমনটি নয়।

সাবিনা ইয়াসমীন: ক্যান্সার হলে একজন মানুষ কীভাবে বুঝবে?

তন্নিমা অধিকারী: ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ আছে সেগুলো দেখে আঁচ করা যেতেপারে।  যেমন কিছু কিছু ক্ষত হলে অনেক সময় সারতে চায়না, তিন-চারসপ্তাহ ধরে থাকে। আবার শরীরের কোনো কোনো জায়গায় চাকা কিংবা পিন্ডের মতো দেখা দিলে আবার তা যদি খুব দ্রুত  বেড়ে যায় তখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার। অস্বাভাবিক রক্তপাতও চিন্তার বিষয় হতে পারে। যেমন প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত গেলে, মাসিকের সঙ্গে অস্বাভাবিক রক্ত গেলে, স্বামী-স্ত্রীর মেলামেশার পর রক্ত গেলে। আবার শরীরে আঁচিলের সংখ্যা বেড়ে  গেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া দরকার। কিন্তু বলে রাখা ভালো এসব লক্ষণ দেখা দিলেই যে ক্যান্সার হয়েছে তেমনটি ভাবারও কারণ নেই। একজন চিকিৎসকই বলতে পারবেন কী কারণে এসব লক্ষণ দেখা দিচ্ছে।

সাবিনা ইয়াসমীন: ক্যান্সারের ধরন অনুযায়ী কি এর ভয়াবহতা নির্ভর করে?

রওশন আরা বেগম: ক্যান্সারের স্টেজ ভেদে এর ভয়াবহতা নির্ভর করে। আবার চিকিৎসাও ভিন্ন হয়ে যায়। অনেক সময় শুরুর দিকে ধরা পড়েনা সেজন্য উচ্চতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। কিছু ক্যান্সার আছে কেমো সেনসিটিভ সেগুলো কেমোথেরাপি দিলে ভালো হয়ে যায়, আবার কিছু ক্যান্সারের জন্য রেডিওথেরাপি দরকার হয়।

সাবিনা ইয়াসমীন: ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কি নারী-পুরুষের কোনো প্রভাব আছে?

তন্নিমা অধিকারী:  হ্যাঁ, ব্রেস্ট, জরায়ু আর ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকে নারীরা। ব্রেস্ট ক্যান্সারপুরুষেরও হয় তবে তা ১  শতাংশের মতো। প্রোস্টেড ক্যান্সার পুরুষের হয়। আমাদের দেশে অতিমাত্রায় পান-জর্দা খাওয়ার কারণে মুখের ক্যান্সার বেশি হয়। আবার ধূমপানের ফলে ফুসফুস ক্যান্সার নারী-পুরুষ উভয়েরই হয়।

সাবিনা ইয়াসমীন: ক্যান্সার কিংবা বড় কোনো রোগ হলে আমরা চিকিৎসকের কাছে যাই কিন্তু  এক্ষেত্রে একজন ফার্মাসিস্টও বড় ভুমিকা পালন করতে পারে সেটা কীভাবে?

স্বাগতা সরকার লোপা: রোগী এবং চিকিৎসকের মধ্যকার একটা ভুমিকা পালন করে ফার্মাসিস্টরা। অনেক সময় ক্যান্সারের  মেডিসিনে অনেক রকম পার্শ্ব ¦প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, সেক্ষেত্রে ফার্মাসিস্টরা কাউন্সেলিং করে থাকেন। ওষুধের ডোজের ক্ষেত্রেও ফার্মাসিস্টদের ভূমিকা রয়েছে। চিকিৎসকরাই প্রেসক্রাইব করে থাকেন, সেই মোতাবেক ফার্মাসিস্টরা রোগীর কাউন্সেলিংয়ের কাজটা করেন। যেমন কেমোথেরাপি বেশ ব্যয়বহুল আমরা সেক্ষেত্রে অ্যাড মিক্সিং করি।

সাবিনা ইয়াসমীন: নারীরা কোন বয়স থেকে সচেতন তার চিন্তাটা করবে?

রওশন আরা বেগম: আসলে সচেতনতার কোনো বয়স নেই। আমরা স্কুল-কলেজে গিয়েও সচেতন তার বিষয়টি নিশ্চিত করি। তারা  যেন জানতে পারে কীভাবে ব্রেস্ট চেক করতে হয়। কখনই বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তবে রুটিন মাফিক নিয়ম করে ৩০ বছর  থেকেই সচেতন হওয়া খুব দরকার। বিশেষ করে মাসিক শেষ হওয়ার পর ব্রেস্ট চেক করতে হয়।তাছাড়া আর একটু নিশ্চিত হওয়ার ভায়া  টেস্ট করাটাও জরুরি।

সাবিনা ইয়াসমীন: আপনার দৃষ্টিতে আমাদের দেশের মানুষ কতটুকু সচেতন?

তন্নিমা অধিকারী: আগের তুলনায় মানুষ অনেক বেশি সচেতন হয়েছে। তবে তা শহরকেন্দ্রিক। কিন্তু সমগ্র বাংলাদেশ  তো আর শহরকেন্দ্রিক নয়। তবে একটা জিনিস জেনে রাখা ভালো দেশের প্রত্যেকটা উপজেলাতে ভায়া টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে।  সেটা সিস্টাররাই করতে পারেন। কিন্তু প্রান্তিক মানুষের জানা এবং জানানো ভীষণ প্রয়োজন। এখানে সরকার এবং গণমাধ্যমের বেশ ভূমিকা রয়েছে।তবে আরও একটা জিনিস আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, আমাদের লাইফস্টাইলের পরিবর্তন করতে হবে।  এখন আমরা স্যানিটারি লাইফ লিড করি। যেমন – সারাদিন বসে কাজকর্ম করা,  হাঁটাচলা, ব্যায়াম খুব কম হয়,  এগুলো বাড়াতে হবে। খাওয়া-দাওয়ায় শাকসবজি সতেজ জিনিস বেশি খেতে হবে। ফাস্টফুড বাদ দিতেহবে।

সাবিনা ইয়াসমীন: অনেকেই ধারণা করেন কেমোথেরাপি দিলে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়, রোগীর জন্য ধারণ করাও খুব কষ্টসাধ্য। এ বিষয়ে কিছু বলুন

স্বাগতা সরকার লোপা: আজকাল শুধু নয়, ক্যান্সারের চিকিৎসায় রেডিওথেরাপি, সার্জারি, টার্গেটেড থেরাপিও দেয়া হয়। তবে কেমোথেরাপি দিলেই যে রোগীর খারাপ কিছু হবে তেমনটি নয়। কোন রোগীর জন্য কোন চিকিৎসা কার্যকর এটা চিকিৎসকরা সঠিকভাবেই প্রেসক্রাইব করেন। তবে ওই যে আমি আবার বলব, ক্যান্সার কোন স্টেজে ধরা পড়ল সেটার ওপরই চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করে। শেষের দিকে ধরা পড়লে কেমোতেও কাজ হয় না তখন পেলিয়েটিভ ট্রিটমেন্ট দিতে হয়।

সাবিনা ইয়াসমীন:  রোদসী লাইভে ক্যান্সার বিষয়ক অনেক কথাই উঠে এসেছে। প্রত্যাশা রাখি শ্রোতা, পাঠক সবাই উপকৃত হবেন এই লাইভের মাধ্যমে। রোদসী লাইভে অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

অতিথি বৃন্দ: রোদসীকে ধন্যবাদ। সব শ্রোতা ও পাঠকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

  • অধ্যাপক ডা. রওশন আরা বেগম

         এমবিবিএস, এমপিএইচ, এমফিল, ডিএমইউ, এফসিপিএস (রেডিওথেরাপি)

         অধ্যাপক, রেডিওথেরাপি বিভাগ।

          জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা।

  • ডা তন্নিমা অধিকারী

         এফসিপিএস (রেডিওথেরাপি)

         সহকারী অধ্যাপক

         রেডিওথেরাপি বিভাগ

          ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

  • স্বাগতা সরকার লোপা

          ডেপুটি ম্যানেজার

          ফার্মেসি

          এভার কেয়ার হসপিটাল, ঢাকা।  

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.কান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাদেহ ও মনবিশেষ রচনাসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

দেশেই সম্ভব ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসা

করেছে Shaila Hasan মার্চ ২, ২০২৩

সাধারণ মানুষের ধারণা ক্যান্সার মানেই মরণ-ব্যাধি। বাস্তবে তা কিন্তু নয়। সঠিকসময়ে, নির্ভুল ডায়াগনোসিস ও উপযুক্ত  চিকিৎসায় অনেক ক্যান্সারই সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা সম্ভব। লিখেছেন অধ্যাপক ডা. মো.সালাহউদ্দীন শাহ।

সারাবিশ্বেরমতো ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশেও উদযাপন করা হয়েছে বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। ক্যান্সার সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই প্রতিবছর এই দিনটি পালন করা হয়। গ্লোবোক্যান ২০২০-এর প্রক্ষেপণ অনুযায়ী ২০২০ সালে সারা পৃথিবীতে প্রায় ১ কোটি ৯০   লাখের মতো মানুষের ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছিল। এরমধ্যে নন হজকিন ও হজকিনলিম্ফোমা, লিউকেমিয়া, মায়েলোমাসহ রক্তের  বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ লাখেরও বেশি মানুষ। একই পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে এক বছরে নতুন প্রায় দেড় লাখের মতো মানুষের ক্যান্সার শনাক্ত হয়। যার মধ্যে সাত হাজারের বেশি লোক রক্তের বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। এবছর এই  দিনটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে “ক্লোজ দ্যা কেয়ার গ্যাপ”  অর্থাৎ ক্যান্সার চিকিৎসা সেবায় কোনো ফাঁক রাখা যাবেনা। প্রতিটি মানুষই সমানভাবে এই  চিকিৎসা সেবা পাওয়ারঅধিকার রাখে। আর এভাবেই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা ক্যান্সারকে জয় করবএবং ক্যান্সার মুক্ত  পৃথিবী গড়ে তুলব।

ক্যান্সার সম্পর্কে কিছু তথ্য আপনাদের জানা থাকা দরকারঃ

– সারা পৃথিবীতে যত মানুষ মৃত্যুবরণ করে, ক্যান্সার হলো তার ২য় বৃহত্তম কারণ।

– প্রতি বছর প্রায় ১০ মিলিয়নের মতো মানুষ ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করে।

–  শতকরা ৪০ শতাংশেরও বেশি ক্যান্সারজনিত মৃত্যুকে আমরা প্রতিরোধ করতে পারি-  শুধু কিছু অভ্যাস পরিবর্তন এবং জীবনযাত্রার সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে। যেমন ধূমপান ও মদ্যপান পরিত্যাগ করতে হবে। সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।   নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে।

– ক্যান্সার জনিত মৃত্যুর এক-তৃতীয়াংশের বেশি আমরা প্রতিরোধ করতে পারি নিয়মিত ক্যান্সারের কিছু রুটিন স্ক্রিনিং টেস্টের  মাধ্যমে। যদি প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় সম্ভব হয়ত সঠিক চিকিৎসা নেয়া যাবে।

– স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশ অর্থাৎ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশেরও বেশি।

– ক্যান্সার প্রতিরোধের সঠিক পরিকল্পনা, প্রাথমিক ভাবে ক্যান্সার নির্ণয় ও উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে  আমরা মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষের জীবন বাঁচাতে পারি।

– ক্যান্সার চিকিৎসায় পৃথিবী ব্যাপী বাৎসরিক ব্যয় প্রায় ১.১৬ ট্রিলিয়ন ডলারের মতো। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারলে এই অর্থ স্বল্প  ও মধ্যম আয়ের দেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজে লাগানো যেত।

ক্যান্সার কী?

মানুষের শরীরে যে কোষগুলো রয়েছে সেগুলো অনিয়ন্ত্রিত ও অস্বাভাবিক ভাবে যখন বৃদ্ধি পায় তখন কোষভেদে শরীরের বিভিন্ন জায়গায়  এই কোষগুলো লাম্প বা পিন্ড তৈরি করে যাকে টিউমার বলে। আর রক্তের ক্ষেত্রে রক্তের   কোষগুলো সংখ্যায় অপরিপক্বভাবে বৃদ্ধি পায়। এই ক্যান্সার কোষগুলো রক্ত ও লসিকা বা লিমফেটিক সিস্টেমের মাধ্যমে পরিপাকতন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে   ছড়িয়ে পড়ে। কখনও টিউমার গুলো হরমোন তৈরি করে যা শরীরের স্বাভাবিক কর্মকান্ড ব্যাহত করে।

ক্যান্সারের ধরনগুলো সাধারণত তিনভাগে ভাগ করা যায়ঃ

-বিনাইন

-টিউমার

-ম্যালিগন্যান্ট টিউমার এবং

-প্রি-ক্যান্সারাস অবস্থা।

বিনাইন টিউমার সাধারণত জীবনের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়না। কিন্তু ম্যালিগন্যান্ট টিউমার দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং পারিপার্শ্বিক টিস্যুতে  ছড়িয়ে পড়ে। এই ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ না করলে মৃত্যু ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে যায়। প্রি-ক্যান্সারাস অবস্থা পরবর্তীতে ক্যান্সার হতে পারে। কাজেই প্রি-ক্যান্সারাস অবস্থাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়।

ক্যান্সারের ধরনগুলো কে আমরা সাধারণত পাঁচ ভাগে ভাগ করতে পারি। যেমনঃ

-কার্সিনোমা

-সারকোমা

-লিম্ফোমা

-মাইলোমা এবং

-লিউকেমিয়া।

নন হজকিন ও হজকিনলিম্ফোমা, লিউকেমিয়া, মায়েলোমা রক্তের ক্যান্সারের অন্তর্গত। রোগের ঝুঁকি অনেকটাই নির্ভর করে ক্যান্সারের ধরন ও পর্যায়ের ওপর। প্রাথমিক পর্যায়ে যদি রোগনির্ণয় সম্ভব হয় তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যথাযথ চিকিৎসার মাধ্যমে রক্তের  ক্যান্সার নিরাময় করা যায়।

ক্যান্সার হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। এক-তৃতীয়াংশের বেশি ক্যান্সার আমরা কিছু অভ্যাস, খাদ্যাভ্যাস ও   জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিরোধ করতে পারি। ক্যান্সারের কিছু কারণ রয়েছে যা আমরা পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারি  যেমনঃ

– মদ্যপান পরিত্যাগ

– শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা

– সুষম ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ

– নিয়মিত ভাবে শরীরচর্চা করা

–  ধূমপান পরিত্যাগ করা

–  অনিয়ন্ত্রিত ভাবে আয়োনাইজিং রেডিয়েশন ব্যবহার করা

– পেশাগত কারণে কেমিক্যাল ডাইয়ের সংস্পর্শে আসা যেমনঃ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে যারা কাজ করেন

– বিভিন্ন ধরনের ইনফেশনের জন্যও ক্যান্সার হতে পারে যেমনঃ হেপাটাইটিস বি, সি ও এইচ আই ভি ভাইরাসজনিত ইনফেকশন

ক্যান্সার হওয়ার আরও কিছু কারণ রয়েছে যা কিনা পরিবর্তন করা যায়- বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শরীরের কিছু জেনেটিকপরিবর্তন  ঘটে  ফলে পরবর্তীতে ক্যান্সার দেখা দেয়।

– ক্যান্সার উৎপাদনকারী কার্সিনোজেন যা মানবশরীরের জিনের পরিবর্তন ঘটিয়ে ক্যান্সার তৈরি করে।

– কিছু মানুষ দুর্ভাগ্যক্রমে জেনেটিক ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে ফলে পরবর্তীতে যা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। আবার শরীরের  দুর্বল ইমিউন সিস্টেমের কারণেও ক্যান্সার হতেপারে।

ক্যান্সার হলে শরীরে কী ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে?

ক্যান্সারের প্রকারভেদে শরীরের উপসর্গও ভিন্ন ভিন্ন হতেপারেঃ

– হঠাৎ করে শরীরে অস্বাভাবিক লাম্প বা পিন্ড দেখা দিতে পারে

– কাশি, শ্বাসকষ্ট, ঢোক গিলতে অসুবিধা- এমন সমস্যাও ক্যান্সারের প্রাথমিক কারণ হতে পারে

– আবার হঠাৎ করে বাথরুমের ধরণ পরিবর্তন হতে পারে

– শরীরের বিভিন্ন জায়গায় অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হতেপারে

– হঠাৎ করে শরীরের ওজন কমা শুরু হতে পারে

– অবসাদ, দুর্বলতা, মাংসে ও হাড়ের মধ্যে কখনও কখনও ব্যথা দেখা দিতে পারে

– শরীরে নতুন নতুন মোল অথবা মোলের ধরন পরিবর্তন হতে পারে

– হঠাৎ করে প্রস্রাবে সমস্যা দেখা দিতে পারে

– অস্বাভাবিক ভাবে স্তনের পরিবর্তন হওয়া

– খাওয়ার রুচি না থাকা ও হজমে অসুবিধা হওয়া

– শরীরের কোথাও ঘা হয়েছে কিন্তু শুকাচ্ছে না

– রাত্রে অস্বাভাবিকভাবে শরীর ঘেমে যাওয়া

ক্যান্সার প্রতিরোধ

এক-তৃতীয়াংশের বেশি ক্যান্সার আমরা প্রতিরোধ করতে পারি- বিষয়ক ক্যান্সার গুলো কমিয়ে আনার মাধ্যমে। প্রাথমিকভাবে ক্যান্সার নির্ণয়ের মাধ্যমে আমরা অনেক ক্যান্সার নির্মূল করতেপারি যেমনঃ Colorectal Cancer, Breast Cancer, Cervical Cancer, Oval Cancer  জাতীয়ভাবে আমরা Vaccination, testing and screening  সম্পর্কে জনগনকে উদ্বুদ্ধ ও সচেতন করতে পারি।

ক্যান্সার নির্ণয়:

  • রুটিন রক্ত পরীক্ষা, ক্যান্সার  screening test, অস্বাভাবিক পিন্ড বা Tumar এর Biopsy করে ক্যান্সার নির্ণয় করতে পারি।
  • Bone Marrow Examination, Immunohistochemistry, Cytochemistry, cytogenetic, Molecular Test, Next generation Sequencing, DET- CT Scan
  • USG, X-ray, CT-Scan, MRI

এসব পরীক্ষা ক্যান্সারের ধরন ভেদে যথাসময়ে করতে পারলে ক্যান্সার নির্ণয় সহজ হবে। ক্যান্সার   রোগের আধুনিক চিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই সম্ভব। সার্জারি, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, হরমোনথেরাপি, জিনথেরাপি এসব চিকিৎসা ব্যবস্থার   মাধ্যমে আমরা ক্যান্সার নির্মূল করতে পারি। প্যালিয়েটিভ কেয়ার- অনিরাময়যোগ্য ক্যান্সার চিকিৎসায় একটি নতুন সংযোজন। রক্তের   ক্যান্সারের আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসা বর্তমানে বাংলাদেশেই হচ্ছে। তবে এ রোগের আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসা বিস্তরভাবে দেয়ার জন্য   জাতীয় গবেষণা ও চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করা জরুরি। এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

অধ্যাপক ডা. মো.সালাহউদ্দীন শাহ

চেয়ারম্যান, হেমাটোলজি বিভাগ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়

মোবাইল: ০১৯২২১১৭৬৭০

ই-মেইল: ংযধয.ভপঢ়ং@মসধরষ.পড়স, ংযধযথফৎ@নংসসঁ.বফঁ.নফ

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.কান পেতে রইগ্রুমিংজীবনসচেতনতাসমস্যাসুস্থ মন

অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা? জেনে নাও মুক্তির উপায়

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২৩

শায়লা জাহান:

নিজেদের সমস্যাগুলো সম্পর্কে চিন্তা করা সর্বদা একটি ভালো ধারণা। কিন্তু এই চিন্তার পরিমাণ যদি লাগামহীন ভাবে বাড়তেই থাকে, তাহলে কী করবে? প্রচলিত একটি কথা আছে, “ কোন কিছুতেই  খুব বেশি গভীরে যাবে না, এটি অতিরিক্ত চিন্তার দিকে নিয়ে যায় এবং অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা এমন সমস্যার দিকে নিয়ে যায় যেগুলোর কোন  অস্তিত্ব নেই।”

ক্ষুদ্র এই মানব জীবনের সাথে চিন্তা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। কিন্তু এই চিন্তার পরিধি যখন আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায় তখনই তা রুপ নেয় দুশ্চিন্তার। যদিও প্রত্যেককেই কিছু না কিছু ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে কিন্তু কিছু ব্যক্তি এই ধ্রুবক বাঁধায় জর্জরিত থাকে। এই অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা অনেকটা ট্রেডমিলের মতো, যা থেকে সহজেই উতরানো যায়না। কোন কিছু সম্পর্কে খুব বেশি চিন্তা করা প্রায়শই শব্দের চেয়ে বেশি কিছু জড়িত থাকে। এটি একটি সময় এমনভাবে মাথায় গেঁড়ে বসতে পারে যা ঘুম, কাজ, সম্পর্ক, স্বাস্থ্য বা দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন দিকগুলোকে ব্যাহত করার পাশাপাশি পুরো জীবনকে নেতিবাচকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে যথেষ্ট।

ওভার থিংকিং- যাকে রিমিনেশন ও বলা হয়, এটি সাধারণত দুই ক্যাটাগরিতে পড়েঃ অতীত সম্পর্কে চিন্তা করা বা ভবিষ্যতের বিষয়ে উদ্বিগ্ন। অতিরিক্ত চিন্তা করা কোন স্বীকৃত মানসিক ব্যাধি নয় ঠিকই কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থার সাথে যুক্ত থাকে, যার মধ্যে রয়েছেঃ

  • ডিপ্রেশন
  • উদ্বিগ্নতা
  • অবসেসিভ কম্পুলসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি)
  • পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি)

মুক্তির উপায়

অন্যান্য অভ্যাসের মতো, বিদ্যমান ধ্বংসাত্মক চিন্তার ধরণ পরিবর্তন করা একটি চ্যালেঞ্জ হতে পারে। কিন্তু , ধারাবাহিক অনুশীলনের মাধ্যমে, তুমি তোমার মস্তিষ্ককে ভিন্নভাবে চিন্তা করতে প্রশিক্ষন দিতে পারো। এর জন্য কিছু উপায় রয়েছে। যেমন-

  • অতিরিক্ত চিন্তা করা এমন এক অভ্যাসে পরিণত হতে পারে যে যখন তুমি এটি করবে তখন নিজেই বুঝতে পারবেনা। এইজন্য তোমাকে শুরুতেই উদ্ভূত সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। পূর্ব থেকে সনাক্ত করা সমস্যার যদি কোন ফলপ্রসূ সমাধানের পথ না থাকে, তবে সে ব্যাপারে অহেতুক চিন্তা করা রোধ করা সম্ভব হবে।
  • জীবনে ভিড় করা হাজারো সমস্যা নিয়ে চিন্তা না করে সমধান সন্ধানের প্রতি ফোকাস করা বুদ্ধিমানের কাজ। যদি এটি এমন কিছু হয় যা সমাধানযোগ্য তবে তা বিবেচনা করে সম্ভাব্য সমাধান সনাক্ত করার জন্য নিজেকে চ্যালেঞ্জ করো। আর যদি এমন হয় যার উপরে তোমার কোন নিয়ন্ত্রণ নেই, সে ব্যাপারে তা  মোকাবেলা করার জন্য বিকল্প কৌশল গ্রহণ করো।
  • আমাদের মস্তিষ্ক যখনই ফাঁকা থাকবে তখনই এমন অতিরিক্ত চিন্তার বিষয়টি এসে ধরা দেবে। নিত্যদিনের কাজের পাশাপাশি যেকোন সৃজনশীল কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হবে। মোট কথা মনোযোগ ভিন্নদিকে প্রবাহিত করতে হবে।
  • আমরা বর্তমান নিয়েই বসবাস করি। তাই গতকালকে রিহ্যাশ করা বা আগামীকাল নিয়ে চিন্তা করা অসম্ভব। এক্ষেত্রে মাইন্ডফুলনেস বা মননশীলতা স্কিল প্র্যাকটিস করো, এটি তোমাকে এখানে এবং এখন সম্পর্কে আরও সচেতন হতে সাহায্য করবে।
  • দীর্ঘ সময়ের জন্য যে কোন সমস্যার ব্যাপারে চিন্তা ফলদায়ক নয়, তবে সংক্ষিপ্ত প্রতিফলন সহায়ক হতে পারে। তুমি কীভাবে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পারো বা সে ব্যাপারে তোমার ত্রুটিগুলোকে স্বীকৃতি দিতে পারো সে সম্পর্কে চিন্তা করা তোমাকে ভবিষ্যতে আরও ভাল পারফর্ম করতে সহায়তা করতে পারে। এজন্য তোমার দৈনন্দিন সময়সূচীতেকিছু নির্দিশট সময় ‘চিন্তার সময়’ হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে পারো। তবে সেই নির্দিষ্ট সময় শেষ হলে, অন্য কিছুতে চলে যাও। নির্ধারিত সময়ের বাইরে জিনিসগুলো নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করা একেবারেই বাদ দিয়ে দিতে হবে।
  • সবশেষে, ইতিবাচক মনোভাব ধারণ করতে হবে। জীবন পুষ্পশয্যা নয়। সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সবকিছুই মুদ্রার এপিঠ- ওপিঠের মতো জীবনে বিদ্যমান। পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, ভেঙ্গে পড়ে, চিন্তা করে কোন ফল পাওয়া যাবেনা। তাই সর্বক্ষেত্রেই অতিরিক্ত চিন্তা ঝেড়ে ইতিবাচক মানসিকতা পোষণ করতে হবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.অনুসঙ্গআয়নাঘররূপ ও ফ্যাশনসচেতনতা

কালচে ঠোঁট দূরীকরণের উপায়

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ২২, ২০২৩

আমাদের ত্বকের রঙের মতোই, ঠোঁটের রঙ ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, ঠোঁটের রঙ বা অবস্থার পরিবর্তন আমাদের নির্দেশ করতে পারে যে ঠোঁটের আরও যত্নের প্রয়োজন। তোমার ঠোঁট যদি কিছুটা কালচে হয়েই যায়, চিন্তার কোন কারণ নেই। ঘরোয়া এমন অনেক উপায় আছে যার মাধ্যমে তুমি এর স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে পারবে। আর এইসব কিছু নিয়ে আইডিয়া শেয়ার করেছেন শায়লা জাহান।

আমরা সকলেই গোলাপি ঠোঁট চাই যা দেখতে গোলাপী এবং স্পর্শে নরম মনে হয়, তাই না? আসলেই কি আমাদের সকলের ঠোঁট এমন কি? প্রায় অধিকাংশেরই উত্তর আসবে না। আমরা শুধুমাত্র কালো, পিগমেন্টেড ঠোঁট আড়াল করতেই তা লিপস্টিকের প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দিই। কিন্তু এই ভারী লিপস্টিকের স্তরগুলো ছাড়াই তোমার ঠোঁটের প্রাকৃতিকভাবে কি গোলাপী ভাব আনা কি সম্ভব? এর উত্তর, অবশ্যই সম্ভব। ভাবছো কীভাবে? এই সমস্যার পেছনে সমস্ত কারণ এবং সমাধান জানিয়ে দিচ্ছি। সবার আগে আমাদের জানতে হবে ঠোঁট কালচে হবার পেছনের কারণ কি? একে আমরা দু’ভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি-

লাইফস্টাইল ইস্যু

হাইপারপিগমেন্টেশনের ফলে ঠোঁট কালো হয়ে যেতে পারে। এটি মেলানিনের আধিক্য দ্বারা সৃষ্ট একটি অবস্থা। ঠোঁটের হাইপারপিগমেন্টশনের কারণে হতে পারেঃ

– সূর্‍্যের অত্যধিক এক্সপোজার

– হাইড্রেশনের অভাব

– সিগারেট বা ধূম্রপান

– লিপস্টিক বা টুথপেস্টে (ফ্লোরাইড) উপস্থিত রাসায়নিকের এলার্জির কারণ

– বেশিমাত্রায় ক্যাফিন গ্রহণ

মেডিকেল ইস্যু

– রক্তস্বল্পতা, নির্দিষ্ট কিছু ভিটামিনের অভাব

– কেমোথেরাপি

– অত্যধিক ফ্লোরাইড ব্যবহার

কালচেভাব দূরীকরণের উপায়

ঠোঁট ময়েশ্চারাইজ করা

ঠোঁট যাতে সর্বদা ময়েশ্চারাইজ থাকে তার জন্য লিপ বাম ব্যবহার করতে হবে। বিশেষত উচ্চ এসপিএফ যুক্ত বাম, কালো ঠোঁট হালকা করতে সাহায্য করতে পারে। এই বামগুলো ঠোঁটকে আর্দ্র রাখে, এর রঙ আরও কালচে হতে বাধা দেয়।

সানব্লক ব্যবহার করা

ঘরের ভেতর বা বাহির, সবসময় সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরী। সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মিগুলোকে হাইপারপিগমেন্টেশন হতে বাধা দেয়ার জন্য একে ঠোঁটেও ব্যবহার করা নিশ্চিত করতে হবে।

এক্সফোলিয়েশন করা

ঠোঁটের রঙ হালকা করতে, এক্সফোলিয়েটর দিয়ে আলতো করে স্ক্রাব করতে পারো। ঠোঁটের মরা চামড়া দূর করতে সামান্য মধু ও চিনি মিশিয়ে কিংবা লেবুর রস ও চিনি দিয়ে স্ক্রাবার বানিয়ে তা ঠোঁটে এপ্ল্যাই করতে পারো।

গ্লিসারিন দিয়ে ময়েশ্চারাইজ

গ্লিসারিন ঠোঁটের সূক্ষ্ম ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে, এটি নমনীয় এবং মসৃণ রাখে। লেবুর রসের সাথে একে মিশিয়ে ব্যবহার করলে মৃত কোষ দূর করার পাশাপাশি ঠোঁটের রঙ হালকা করে।

প্রাকৃতিক প্রতিকার

  • গবেষণা দেখায় যে, অ্যালোভেরা জেলে মেলানিন প্রতিরোধকারী উপাদান রয়েছে। ঠোঁটে তাজা অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে তা শুকিয়ে ধুয়ে ফেললে ভালো রেজাল্ট পাওয়া যাবে।
  • ঠোঁটে কয়েক ফোঁটা এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল লাগাতে পারো। এটি হাইড্রেট করবে এবং গাঢ় রঙ হালকা করতে সাহায্য করবে।
  • ২০১০ এর এক সমীক্ষা অনুযায়ী, হলুদ একটি মেলানিন ইনহিবিটর হিসেবে কাজ করতে পারে। দুধের সাথে কিছুটা হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে সেই পেস্ট ঠোঁটে লাগিয়ে রাখতে হবে। পরে ধুয়ে ফেলে তোমার প্রিয় ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নাও।
  • শসা খাওয়ার পাশাপাশি এর রস লাগালে ঠোঁটের কালচে ভাব কমানো যায়। বিটরুট পেস্ট দিয়েও একই কাজ করা যায়। ধুয়ে ফেলার পর লিপবাম লাগিয়ে নাও।

পিগমেন্টেড ঠোঁট পরিস্থিতি বর্তমানে সারা বিশ্বে সাধারণ একটি সমস্যা। তবে একটু যত্ন ও মনোযোগ দিতে পারলে খুব সহজেই এগুলো প্রতিরোধ করা যায়। ঠোঁটের প্রসাধনী যেমন লিপস্টিক, লিপগ্লস বা এমনকি লিপবাম নির্বাচন করার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরী। কারণ এসবের কিছু রাসায়নিক ঠোঁটের রঙ বদলে দিতে পারে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংসচেতনতা

শিশুদের স্ক্রীন আসক্তি কমানোর উপায়

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ১৬, ২০২৩

শায়লা জাহান:

পাঠ্যবইয়ে পড়া সুফিয়া কামালের “আজিকার শিশু” ছড়াটির কথা মনে আছে? তাতে তিনি বলেছেন-

“আমাদের যুগে আমরা যখন খেলেছি পুতুল খেলা/ তোমরা এ যুগে সেই বয়সেই লেখাপড়া কর মেলা/ আমরা যখন আকাশের তলে ওড়ায়েছি শুধু ঘুড়ি/ তোমরা এখন কলের জাহাজ চালাও গগণ জুড়ি।“ আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। দেশ ও জাতির উন্নতির কল্পে তাদের মাঝেই লুকায়িত হয়ে আছে হাজারো সম্ভাবনার জীয়নকাঠি। যে বয়সে তাদের মাঝে সৃজনশীল প্রতিভা বিকশিত হওয়ার কথা, সে বয়সেই এসে তারা ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের উপর চরমভাবে আসক্ত হয়ে পড়ছে; যা উদ্বিগ্ন হওয়ার মতোই বটে।

কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন এবং দূরত্ব শিক্ষার মডেলগুলোর কারণে, অনেক শিশুর মাঝেই দিনে আরও বেশি স্ক্রীন টাইম অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। এই কারণেই দিনের বাকি সময়ে ইলেকট্রনিক্সের ব্যবহার কমানো আগের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে আপডেট থাকার জন্য এগুলো সংস্কৃতির একটি অংশ হলেও, শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি, স্থূলতা হ্রাস সহ আরও অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা সম্পর্ক রয়েছে এই স্ক্রীন সময় কমানোর সাথে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, করোনার সময় আমরা সবাই বাইরের কাজ, হোম স্কুলিং, বাড়ির কাজ এবং শিশু যত্নের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করার সময় বেবিসিটার হিসেবে এইসব ডিভাইসের উপর নির্ভর করেছি। মহামারী চলাকালীন এগুলো অপরিহার্য ছিল, কিন্তু এখন আমাদের বাচ্চাদের স্ক্রীন ব্যবহার ভালোর চেয়ে বেশি ক্ষতি করছে কিনা তা দেখার সময় এসেছে। আমেরিকান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্সের একটি গ্রহণযোগ্য স্ক্রীন সময়ের জন্য সুপারিশগুলো হলঃ

-২ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের জন্য স্ক্রীন টাইম নেই

-২ থেকে ১২ বছরের শিশুদের জন্য প্রতিদিন এক ঘন্টা

-কিশোর এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন দুই ঘন্টা

কিন্তু বাস্তবতা হলো ৮৫% শিশু এই পরিমানকে ছাড়িয়ে যায় যা তাদের সুস্থতা এবং বিকাশকে প্রভাবিত করছে।

স্ক্রীন আসক্তির প্রভাব

বাচ্চাদের জন্য, বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীদের জন্য স্ক্রীন টাইমের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এর মাঝে তারা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেঃ

-অন্যান্য কাজকর্মে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা

-মনোযোগ দিতে অক্ষমতা

-সামাজিকীকরণে সমস্যা

-ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা

-মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া

-স্থূলতা বৃদ্ধি পাওয়া

-মানসিক ও অন্যান্য শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়া

মুক্তির উপায়

নিজের স্ক্রীন টাইম সীমিতকরণ

বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্দার আসক্তিতে আক্রান্ত বাচ্চাদের সাহায্য করার প্রথম ধাপ হল নিজেদের দিকে তাকানো। কারো আচরণকে প্রভাবিত করার সবচেয়ে শক্তিশালী উপায় হল সেই আচরণগুলোকে মডেল করা। আমরা বড়রাই অনেক সময় কাজ থেকে ফিরে মোবাইল নিয়ে বসে পড়ি। সন্তানকে হয়তো কোন কাজে ব্যস্ত রেখে বা খেলতে দিয়ে নিজেরাই ঘন্টার পর ঘন্টা ডিভাইস নিয়ে পরে থাকি। তাই প্রথমেই আমাদের এই বদ অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।

শিশুর হাতে ফোন না দেয়া

আমরা বড়রা প্রায়শই যা করি তা হলো বাচ্চা যখন কান্না করে তাদের শান্ত হতে অথবা খাওয়ানোর সময় স্মার্টফোনটি তাদের হাতে তুলে দিই। এতে কাজ হলেও, পারতপক্ষে আমরাই কিন্তু বিপদ ডেকে আনছি। শিশুর হাতে ডিভাইস তুলে দেয়া মানে তাদের ভেতর এটার অভ্যাস গড়ে তোলা, যা মোটেই ঠিক নয়। তাই এইসময়গুলোতে তাকে এসব না দিয়ে গল্প শুনিয়ে কিংবা তার পছন্দের ছড়া বা গান শুনিয়ে তার মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে যেতে হবে।

স্ক্রীন এবং স্ক্রীন-মুক্ত সময় সেট করা

বর্তমানে বাচ্চাদেরকে পুরোপুরিভাবে এর থেকে দূরে রাখা সম্ভবপর হয়ে উঠেনা। তাই প্রতিদিন একটি সময় ঠিক করে নাও, যখন যাবতীয় সব ধরনের স্ক্রীন টাইমের জন্য বিরাট নো থাকবে। এই সময়টিতে বাচ্চাদের যে কোন ধরনের এক্টিভিটিসে উৎসাহ দিতে হবে। এছাড়াও সে সময়টিতে স্কুলের পড়া, হোম ওয়ার্ক, ঘরের রুটিন ওয়ার্কগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ভারাসাম্য আনয়নের জন্য সবকিছুর মাঝেই একটি সীমা থাকা নিশ্চিত করো।

সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দেয়া

বাচ্চারা মাত্রই কল্পনাবিলাসী। এই ইমাজিনেশন পাওয়ারের মাধ্যমে তারা অনেক কিছুই অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। কিন্তু অত্যাধিক স্ক্রীন টাইম তাদের এই সম্ভাবনাকে বিকশিত করতে বাঁধা দেয়। তাই তাদের সৃজনশীল কাজের প্রতি বেশি বেশি উৎসাহ দিতে হবে। সে যা করতে ভালোবাসে- এই যেমন ছবি আঁকা, ক্রাফটিংয়ের কাজ করা বা বিশেষ কোন খেলা, সবকিছুতে তাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করতে হবে। প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে বা সেই সংক্রান্ত বিশেষ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে অংশ করিয়ে দিতে হবে।

বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা

যে কোন বয়সী মানুষের জন্য বই হতে পারে সর্বোত্তম বন্ধু। বাচ্চাদের হাতে গ্যাজেট তুলে না দিয়ে বই তুলে দাও। তাদের মাঝে পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলো। প্রয়োজনে তাদের লাইব্রেরিতে নিয়ে যাও, যেখানে অনেক বইয়ের মাঝে সে নিজেকে খুঁজে পাবে। ঘরেও পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য সেই সহায়ক পরিবেশ করে তোলো।

সময় দেয়া

ব্যস্ত এই জীবনে আমরা সবাই ছুটে চলেছি। কিন্তু শত ব্যস্ততার মাঝেও বাচ্চাদের সময় দেয়া একেবারেই ভুললে চলবেনা। কারণ তোমার এই শূন্যতা তাদের মাঝে এই স্ক্রীনে আসক্তি করে দিতে যথেষ্ট। কর্মজীবী হলে, ঘরে ফিরে নিজে ডিভাইসে বুঁদ না হয়ে সন্তানদের সাথে কোয়ালিটি টাইম কাটাও। উইকেন্ডে তাদের নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাওয়া যেতে পারে। প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিয়ে যাওয়া খুবই জরুরী। এছাড়াও ঘরোয়া কাজেও তাদের সহযোগিতা নিতে পারো। ছোট-খাটো কাজ সমাধা করতে পারলে তাতে প্রশংসা করো। এতে দেখবে মোবাইলের প্রতি আসক্তি তাদের অনেকটুকুই কমে যাবে।

প্রতিটি শিশুই অনুকরণপ্রিয়। ছোট থেকেই তারা থাকে দলা পাকানো মাটির মতো। তাদের তুমি যেভাবে গড়বে, সেভাবেই কিন্তু সে বেড়ে উঠবে। তাই প্রথম থেকেই তাদের প্রতি বিশেষ কেয়ার করা খুবই জরুরী। কবি সুফিয়া কামাল যথার্থই বলেছেন, “তোমরা আনিবে ফুল ও ফসল পাখি-ডাকা রাঙা ভোর/ জগৎ করিবে মধুময়, প্রাণে প্রাণে বাঁধি প্রীতিডোর’’।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
গ্রুমিংদেহ ও মনভালো থাকার ভালো খাবাররোদসীর পছন্দসচেতনতাস্বাস্থ্য

বিয়ের আগে ফিট থাকতে

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ৯, ২০২৩

রেহনুমা তারান্নুম:

নারী হোক বা পুরুষ, যেকোনো মানুষের জীবনে বিয়ে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিশেষ মুহূর্ত। আর বিয়ের দিনের মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে বর ও কনে।বিয়ের আগে বর-কনের চিন্তা একটু বেশি করতে হয়। খাবারদাবার, পোশাক, গহনা থেকে শুরু করে আরও কত-কী। বিয়ের দিন-তারিখ নির্ধারণ হলেই শুরু হয় বর-কনের নানা রকম দায়িত্ব। এই সময় বিয়ের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে বাড়তি চিন্তায় অনেকেই নিজের খাবারদাবার বা ডায়েটের কথা ভুলে যায়। আবার কেউ নিজেকে তাড়াতাড়ি স্লিম দেখাতে গিয়ে একেবারেই খাওয়াদাওয়া কমিয়ে দেয়। যেটা মোটেও করা উচিত নয়।

বিয়ের অনুষ্ঠানের আগে যদি হাতে কিছু সময় থাকে, তবে সেই সময়ের মধ্যেই নিজের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন এনে নিজেকে করতে পারো ফিট এবং সুন্দর। বিয়ের এই সময়টাতে বর-কনের মানসিক চাপ বেড়ে যায় এবং এর প্রভাব পড়ে ত্বকে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা করলে চেহারায় ক্লান্তির ছাপ পড়তে পারে। ত্বক সুন্দর রাখতে তাই দুশ্চিন্তা কম করতে হবে এবং তৈলাক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। প্রচুর পানি পান করে ত্বককে ডিহাইড্রেট রাখতে হবে। সবজি, ফলমূল বেশি করে খেতে হবে। এতে ত্বক সজীব দেখাবে।

এছাড়া বিয়ের সময়টাতে অতিরিক্ত চিন্তার কারণে খাওয়াদাওয়ার অনিয়মে শরীরে ক্যালরি কম সঞ্চয় হয়। তাই বাদাম খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। প্রতিদিন সকালে একমুঠো যেকোনো ধরনের বাদাম খেলে পুষ্টিও পাওয়া যাবে। সঙ্গে ক্যালরিও সঠিক মাত্রায় শরীর গ্রহণ করতে পারবে।

-বিয়ের আগে বর ও কনের অবশ্যই একটা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের নিয়ম করা উচিত। বাইরের খাবার বা ভাজাপোড়া খেয়ে যেন পেটের পীড়া না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এই সময় ডায়েট চার্টে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার এবং সবজি ও ফল রাখতে হবে। শরীরের ইমিউনিটি বৃদ্ধি করে এমন খাবার ও রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়।

-বিয়ের আগে যদি হাতে একমাস সময় থাকে, তবে একমাস আগে নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করো। একমাসে মাঝেমধ্যে একদিন বেশি খেয়ে ফেললেও চিন্তার কোনো কারণ নেই। ভাত ও রুটির পরিমাণ একটু কমিয়ে দাও এবং সালাদ ও সবুজ শাকসবজি বেশি করে খাও। ব্যায়াম করার সময় একটু বাড়িয়ে দাও।

-নিজের পছন্দমতো সবজি দিয়ে তৈরি জুস খেতে পারো। ডায়েট সঠিক রাখতে গেলে গাজর, বিট রুট এবং টমেটো সব থেকে ভালো অপশন। এসময় স্কিন গ্লোর জন্যও এটি বেশ উপকারী। বাইরে খাওয়াদাওয়া করলে সঙ্গে সালাদ খাওয়ার চেষ্টা করো। ডুবোতেলে ভাজা খাবার থেকে বিরত থাকো।

-সারাদিন বাইরে থাকতে হলে ড্রাই ফ্রুটস সঙ্গে নেওয়া যেতে পারে। সেগুলো হেলদি স্ন্যাকস হিসেবে ভালো হবে। জাংক ফুড খাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে। বাইরের কোনো খাবার খেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করো। সারাদিনে খুব বেশি চা বা কফি না খাওয়াই ভালো।

-চিয়া সিডের পানি প্রতিদিন পান করার চেষ্টা করো। চিয়া সিড ওমেগা থ্রির সব থেকে ভালো উৎস, এটি অল্প পরিমাণে ফ্যাট যেমন আয়ত্তে রাখে, তেমনই স্কিনের সঙ্গে শক্তি বাড়াতে কাজ করে।

-খেতে ভালো লাগলে এক বাটি পাকা পেঁপে প্রতিদিন খেতে পারো। এটি দেহের কোষগুলোকে পুষ্টি প্রদান করে এবং সতেজ রাখতে সাহায্য করে। সঙ্গে খাবার হজমেও সহায়তা করে।

-টক দই সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। খাবারের সঙ্গে সঙ্গেই ভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম দুটিই দারুণভাবে সরবরাহ করে। সে কারণে টক দই প্রতিদিন খেতে হবে।

-রাতে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করো।

-যদি ওজন কমানোর ডায়েট করতে চাও, তাহলে অবশ্যই চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে। স্টার্চযুক্ত সবজি যেমন, আলু, ভুট্টা, মিষ্টি আলু কখনোই খাবে না। দুধ চা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটা বদলে চিনি ছাড়া চা বা গ্রিন টি খাওয়ার অভ্যাস করো। এ ছাড়া রাতে কার্বোহাইড্রেট-জাতীয় খাবার যেমন ভাত, রুটি বাদ দিয়ে সবজি ও প্রোটিনজাতীয় খাবার যেমন মাছ, মাংস, ডিম, দুধ তালিকায় রাখো। পর্যাপ্ত পানি বা তরলজাতীয় খাবার গ্রহণ করো এবং অবশ্যই দিনে অন্তত ৩০ মিনিট রাখো শরীরচর্চার জন্য।

বিয়ের এক সপ্তাহ আগে খাও এই খাবারগুলো

তুমি ছেলে হও আর মেয়ে হও, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া বিয়ে জীবনে একবারই হয়। বিয়ে মানেই নতুন সঙ্গীর হাত ধরে নতুন জীবনে প্রবেশ। এই সময় সবারই টেনশন, স্ট্রেস, উত্তেজনা বেশি থাকে। বিয়ের মাস তিনেক আগে থেকে সবাই ডায়েট চার্ট মেনে চলো, নিয়মিত শরীরচর্চাও করো।

এর মধ্যে অনেক খাবার স্বাস্থ্যকর হলেও বিয়ের আগের এক সপ্তাহের টেনশন, স্ট্রেসের কথা মাথায় রেখে তা ডায়েট চার্টের বাইরে রাখার পরামর্শ দেন ডায়েটিশিয়ান ও মনোবিদেরা। জেনে নাও কোন খাবারগুলো রয়েছে এর মধ্যে।

০১. চুইংগাম:

বিয়ের ছবিতে সেলফি আদর্শ। সেলফি ফেস তৈরির জন্য অনেক ট্রেনারই চুইংগাম খাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু যত চুইংগাম খাবে, তত শরীরে হাওয়া ঢুকে পেট ফাঁপবে। তাই বিয়ের এক সপ্তাহ আগে থেকে চুইংগাম বন্ধ করো।

০২. ড্রাই ফ্রুট:

শুকনো ফল অবশ্যই অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। ডায়েট চার্টে অবশ্যই রাখা উচিত। কিন্তু এর মধ্যে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি থাকে। বিয়ের এক সপ্তাহ আগের টেনশনে ড্রাই ফ্রুট ওজন বাড়াতে পারে।

০৩. কপি:

বাঁধাকপি, ফুলকপি ও ব্রকলিজাতীয় সবজির মধ্যে সেলুলোজের পরিমাণ খুব বেশি থাকে, যা হজমের সমস্যা করতে পারে। বরং শসাজাতীয় সবজি এই সময় বেশি করে খাও।

০৪. কফি:

এই সময় নিয়ম করে সময় মেনে ঘুমের খুব প্রয়োজন। স্ট্রেস কাটাতে তাই কফির ওপর নির্ভর করবে না। এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে চেহারায় ক্লান্তির ছাপ পড়বে। বেশি কফি খেলে অ্যাসিডিটিও হতে পারে।

০৬. কার্বনেটেড ড্রিংক :

অনেকেই ভাবে, ডায়েট সফট ড্রিংক এই সময় খাওয়া যায়। কিন্তু বিয়ের আগে সবাই ডায়েট চার্ট মেনে চলে। সফট ড্রিংকের মধ্যে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। পেটের মধ্যেও বুদবুদ কাটে সফট ড্রিংক। ওজনও বাড়বে, স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হবে।

০৭. জাংকফুড:

এ ব্যাপারে আর নতুন করে কিছু বলার নেই। এই সময় স্ট্রেস বেশি থাকে। পিজা, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ মুড ভালো করবে ঠিকই, কিন্তু হজমের সমস্যায় পড়বে।

০৮. দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার:

ভারতীয় মায়েরা মনে করে, বিয়ের আগে রোজ দুধ খাওয়া প্রয়োজন। এতে কমজোরি যেমন কাটবে, তেমনই রংও ফরসা হবে। কিন্তু ডায়েটিশিয়ানরা জানাচ্ছেন, এই সময় অনেক রকম টেনশন থাকে। দুধ থেকে হজমে সমস্যা হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে দুগ্ধজাত খাবারে ওজন বাড়ার প্রবণতাও দেখা যায়।

বিয়ের এক মাস আগে থেকেই নানা জায়গায় আইবুড়ো ভাত খাওয়া শুরু হয়ে যায়। সেই সময় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। একইসঙ্গে পেটও ভালো রাখা প্রয়োজন। এরপর আসে বিয়ের আগের দিন। সেদিন দুপুরে বাড়িতে আইবুড়ো ভাত খাওয়া হয়। তাই খাবারের দিকে যথেষ্ট লক্ষ রাখা উচিত। দুপুরের খাবারকে তুমি না বলতে পারবে না। কিন্তু সারাদিনের ডায়েট তো তোমার হাতেই থাকে।

অত্যন্ত তৈলাক্ত খাবার খাবে না

শরীর সুস্থ রাখার প্রধান শর্তই স্বাস্থ্যকর ডায়েট। তাই বিয়ের আগের দিন ডায়েটে তেল ঝাল মসলা দেওয়া খাবারকে বাদ দাও। বিয়ের আগের রাতে এমনিই ঠিকঠাক ঘুম হয় না। তার ওপর ওদিন যদি এসব খাবার খাও, তাহলে তোমার শরীর খারাপ কে আটকায় বলো দেখি। বিয়ের দিন ভালো থাকতে হলে বিয়ের আগেরদিনও তোমাকে সুস্থ থাকতে হবে।

কফি ও কোল্ড ড্রিংক খাবে না

কফি খেতে অনেকেই ভালোবাসে। শীতকালে আবার বাঙালি বাড়িতে কফি খাওয়ার একটা প্রচলন আছে। কিন্তু তুমি তোমার ডায়েট থেকে কফি বাদ দাও ওইদিনের জন্য। কারণ, কফি তোমার শরীরকে ডি-হাইড্রেটেড করে দিতে পারে। কোল্ড ড্রিংকও শরীরের জন্য খুবই খারাপ। তাই তুমি ফলের রস বা গ্রিন টি খেতে পারো।

দুধের প্রোডাক্ট

অনেকের চিকিৎসকই তাঁর ডায়েট থেকে দুগ্ধজাত খাবার বাদ দিয়ে দেন। আমার নিজেরই সেসব খাওয়া বারণ। আমি টক দই, দুধ চা কিছুই খাই না। কিন্তু যারা খেতে ভালোবাসে, তারাও বিয়ের দিনের কথা মাথায় রেখে আগের দিন এসব খাবে না। কারণ, দুধ হজম হতে সময় নেয়। তাই ঠিকঠাক ঘুম না হওয়ার কারণে সমস্যা তৈরি হতে পারে।

পর্যাপ্ত ফল খাবে

পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল খেলে তোমার শরীর এমনিই ভালো থাকবে। তুমি ব্রেকফাস্টে বা ব্রেকফাস্ট ও লাঞ্চের মাঝামাঝি সময়ে ফল খেতে পারো। তোমার শরীর ভালো থাকবে। যেহেতুতুমি লাঞ্চ বাদ দিতে পারবে না, তাই কিছু করার নেই। ফলের রসও খেতে পারো।

সালাদ

ডিনারে ভাত বা রুটির বদলে চিকেন সালাদ কিংবা স্প্রাউটস সালাদ খেতে পারো।

পানি

পরের দিনও তোমাকে ফল ও জলের ওপরেই থাকতে হবে। এবং রাতে উল্টোপাল্টা খাওয়া তো হবেই। তাই আগের দিন শরীর ডিটক্স করা প্রয়োজন। সেই সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেয়ে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে। যাতে বিয়ের দিন কোনোভাবেই ডিহাইড্রেশন হয়ে শরীর খারাপ না হয়ে যায়।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনরোমান্স রসায়নসচেতনতাসমস্যাসুস্থ মন

সুস্থ সম্পর্কের জন্য…

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২৩

শায়লা জাহান:

কথায় বলে, ‘তোমার সম্পর্কগুলো কেবল তোমার মতো স্বাস্থ্যকর হতে পারে’। একটি সুস্থ সম্পর্ক আমাদের সুখ বাড়াতে, স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে এবং চাপ কমাতে অনেক কার্যকর। কিন্তু বাস্তবে সব সম্পর্কেই সবসময় সুখকর অবস্থা বিরাজমান নয়। নানান উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায়। সম্পর্কগুলো ভালোভাবে চলতে, ভারসাম্য আনতে জেনে নিতে পারো কিছু টিপস।

আতিয়া, বিয়ের বয়স সবে বছরখানেক হলো। তাদের নবদম্পতি বলাই চলে। কিন্তু কিছুদিন ধরে সে যেন লক্ষ করছে তাদের সম্পর্কের সেই ফিলিংস, সেই টান যেন কিছুটা কমে যাচ্ছে। এর পেছনে কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ না থাকলেও কোথায় যেন সুর কেটে যাচ্ছে। ঘটনাটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক হলেও এমন আতিয়া আমাদের আশপাশে অনেক আছে। সব রোমান্টিক সম্পর্ক অনেক আপস-ডাউনের মধ্য দিয়ে যায় এবং তা সত্ত্বেও সবাই নিজ সঙ্গীর সঙ্গে মানিয়ে নিতে বা পরিবর্তিত হতে চায়।একটি সুস্থ সম্পর্ককে সংজ্ঞায়িত করার একটি অংশ হলো তুমি সম্পর্কটি ঠিক কীভাবে দেখতে চাও এবং তা কোথায় নিয়ে যেতে চাও, তার একটি লক্ষ্য সেট করে নেওয়া। সম্পর্ক সবে শুরু হোক বা বছরের পর বছর চলতে থাকুক, একটি সুস্থ সম্পর্ক গড়ে তুলতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। আর এগুলোই হতে পারে সুসম্পর্কের মূল চাবিকাঠি।

বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা

আমরা সবাই চাই নিজ পার্টনার যেন মনের মতো হয়। কিন্তু কেউই সবকিছু হতে পারে না, যা আমরা তাদের মধ্যে দেখতে চাই। একটি সম্পর্কের মধ্যে থাকা দুজন ব্যক্তি পৃথক অভিজ্ঞতা, চিন্তাভাবনা, আচরণ এবং ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকে। স্বাস্থ্যকর সম্পর্কের অর্থ হলো যে যেমন আছে তাকে তেমনই গ্রহণ করা এবং তাদের মধ্যে জোর করে পরিবর্তন করার চেষ্টা না করা।

কমিউনিকেশন ব্যবস্থা

একটি হেলদি এবং স্ট্রং রিলেশনের জন্য স্মুথলি কমিউনিকেশন অপরিহার্য। সঙ্গীকে প্রয়োজনীয়, পছন্দসই এবং প্রশংসা করার জন্য কীভাবে যোগাযোগ ব্যবহার করবে, সে সম্পর্কে চিন্তা করো। যেকোনো ধরনের আগ্রাসন, নীরব আচরণ, গালিগালাজ বা এই ধরনের কার্যক্রম উদ্বেগের সংকেত দেয়। তাই একে অন্যের নানা বিষয়ে অভিজ্ঞতা, অনুভ‚তিএবং আগ্রহ সম্পর্কে জানতে হবে। যেকোনো বিষয়ে তথ্য ভাগাভাগি করা, সে ব্যাপারে মতামত প্রদান করাকে সম্মান জানাতে হবে।

ন্যায্য যুদ্ধ

ব্যাপারটি দেখলে মনে হবে বিধ্বংসী যুদ্ধের কথা বলা হয়েছে। আসলে ব্যাপারটি তা নয়। বেশিরভাগ সম্পর্কের মধ্যেই কিছু দ্বন্দ্ব থাকে। এর মানে এই নয় যে তুমি কোনো বিষয়ে একমত নও; আবার এটাও নয় যে তুমি একে অপরকে পছন্দ করোনা। একসঙ্গে চলতে গেলে এমন মনোমালিন্য থাকবেই। আর এর জন্য যা করতে হবেঃ

-কথা বলার আগে নিজেকে ঠান্ডা করো। রাগের মাথায় মানুষ সবচেয়ে বেশি ভুল ডিসিশন নিয়ে থাকে। তাই কথোপকথনটি আরও ফলপ্রসূ হবে, যদি তোমার আবেগ কিছুটা ঠান্ডা হয়ে যায়। তাই এমন কিছু বলবেনা, যা পরে অনুশোচনার সৃষ্টি করে।

-অন্যকে সরাসরি ব্লেম বা দোষ দেওয়ার পরিবর্তে ঘটমান পরিস্থিতিতে তুমি কী ফিল করছ এবং তুমি কী চাও, তা শেয়ার করো।

-বলার ভাষা পরিষ্কার এবং নির্দিষ্ট রাখো। সমালোচনা ও বিচার না করে পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করো।অর্থাৎ সমস্যাকে আক্রমণ করো, ব্যক্তিকে নয়।

-বর্তমান ইস্যুতে ফোকাস করো। আগে কী হয়েছে না হয়েছে, তা সবকিছু স্তুপ করা এড়িয়ে একেবারে একটি সমস্যা সমাধান করো।

-নিজের ভুল স্বীকার করার মানসিকতা থাকতে হবে। তুমি যদি কিছু ভুল করে থাকো, তবে তা মানার দায়িত্ব নিতে হবে। এই ছোট্ট একটি কাজ অনেক সমস্যার সমাধান করে দেয়।

অনুভূতির প্রকাশ

সম্পর্ক গবেষক জন গটম্যানের মতে, সুখী দম্পতিদের প্রতি একটি নেতিবাচক মিথস্ক্রিয়া বা অনুভূতির জন্য পাঁচটি ইতিবাচক মিথস্ক্রিয়া বা অনুভূতির অনুপাত থাকে। সময়ে সময়ে নিজের উষ্ণতা এবং এফেকশান প্রকাশ করো।

কমিটমেন্ট থাকা

প্রতিশ্রুতি মানে একে অপরকে এবং সম্পর্ককে প্রথমে রাখা। এর জন্য অনেক কিছু দিতে হবে এবং অবশ্যই ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। কিন্তু প্রতিদান হলো এমন একটি সম্পর্ক, যা একে অপরের জীবনে সত্যিকারের আনন্দ এবং পরিপূর্ণতা নিয়ে আসে। প্রতিটি ব্যক্তি চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে কাজ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং একসঙ্গে বেড়ে ওঠা বিশ্বাস এবং ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে এবং দম্পতিদের ভয় ও সন্দেহ মুক্তি দিতে সাহায্য করে।

প্রতিটি সম্পর্কই চ্যালেঞ্জিং হতে পারে এবং মানসিক, শারীরিক স্বাস্থ্য, মেজাজ বা এমনকি তা কর্মক্ষেত্রে ফোকাস করতে পারে। তাই কোনো সম্পর্ক বা ব্যক্তিগত উদ্বেগের বিষয়ে পারস্পরিক খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে ফেলাই বিচক্ষণের কাজ হবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গআয়নাঘরগ্রুমিংরূপ ও ফ্যাশনরোদসীর পছন্দসচেতনতাসমস্যা

বয়স সবে উনিশ-কুড়ি

করেছে Shaila Hasan ফেব্রুয়ারী ১, ২০২৩

‘কুড়িতে বুড়ি’- এই টার্মটির সাথে পরিচিত নেই এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কথাটি শুনতে হাস্যকর মনে হলেও, শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের সাথে সাথে এইসময় ত্বকে অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু এজিং সাইন দেখা যায়, যা বেশ বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি করে। যদিও বর্তমানে মানুষ এখন অনেক সচেতন। ভাল জীবনধারা এবং ত্বকের যত্নের অভ্যাস এই বয়স থেকেই অনুশীলন করার মাধ্যমে অকালে ত্বকে পড়া এই বার্ধক্য কমিয়ে এনে আগামী বছরগুলোতে হয়ে উঠতে পারবে ঝলমলে। আর এইসব আয়োজন নিয়েই হাজির হয়েছি আমি শায়লা জাহান। 

অনেক কিছুই আমাদের ত্বকের বয়স বাড়াতে নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। তার মধ্যে কিছু বিষয়ে আমাদের কিছুই করার থাকেনা, আর কিছু বিষয়কে আমরা প্রভাবিত করতে পারি। প্রাকৃতিক নিয়মে আমাদের সকলেরই ধীরে ধীরে বয়স বেড়েই যায়। বয়স বাড়ার সাথে মুখের আগের সেই তারুন্যতা, লাবন্যতা হারিয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু অকাল বার্ধক্য হল যখন বার্ধক্যের সাধারণ প্রভাবগুলো তাড়াতাড়ি ঘটে। এতে তোমার শরীর প্রকৃত বয়সের চেয়ে বড় দেখায়। বলিরেখা, বয়সের দাগ, শুষ্কতা, চুল পড়া বা পাকা চুল ইত্যাদি অকাল বার্ধক্যের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। এই অবস্থাটি সময়ের আগেই এবং দ্রুত ঘটে থাকে। এর পেছনে জড়িয়ে আছে পরিবেশগত এবং জীবনধারা ব্যবস্থার কারণ। কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে আমরা এই অবস্থাকে রোধ করতে পারি।

অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধের উপায়

বয়সের আগেই যদি ত্বকে এজিং সাইনের দেখা মেলে, তা নির্দেশ দেয় যে কিছু কিছু অভ্যাস পরিত্যাগ করার এবং নিজের যত্ন নেয়ার এখনই সময়। এইক্ষেত্রে নীচের কিছু সহজ টিপস অনুসরণ করা যেতে পারে, যা একে থামাতে এবং আরও খারাপ হওয়া থেকে রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।

-সূর্য আমাদের ত্বকের অকালে বার্ধক্যের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করে। তাই ত্বককে রোদ থেকে রক্ষা করতে হবে। কোথাও অবকাশ যাপনে যাওয়া হোক কিংবা কাজে বের হতে হোক, সূর্য থেকে সুরক্ষা পাওয়া অপরিহার্য। চোখকে ঢাকার জন্য ইউভি সুরক্ষা সহ সানগ্লাস পরিধান করা যেতে পারে। পাশাপাশি কাপড় দ্বারা অনাবৃত শরীরের অংশগুলোতে ভাল করে সানস্ক্রিন লাগাতে হবে।

-অভ্যাসবশত আমরা কিছু কিছু মুখের অভিব্যক্তি করে থাকি যা অজ্ঞনতাবশত আমরা বারংবার করে থাকি। এমন অভ্যাস থাকলে তা এখনই এড়িয়ে চলতে হবে। এইধরনের মুখের অভিব্যক্তি অন্তর্নিহিত পেশীগুলোকে সংকুচিত করে এবং তা পুনরাবৃত্তি করার জন্য লাইনগুলো স্থায়ী হয়ে যায়।

-স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্যচার্ট অনুসরণ করতে হবে। প্রচুর পরিমাণে তাজা ফল এবং শাকসবজি খাওয়া এই ধরনের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে। চিনি বা অন্যান্য পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাদ্যও এই অকাল বার্ধক্যকে ত্বরান্বিত করতে পারে।

-পরিমিত ব্যায়াম রক্তসঞ্চালন উন্নত করতে পারে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। এছাড়াও এটি ত্বককে আরও তারুন্যময় এনে দিতে পারে।

-ভালোভাবে ত্বকের যত্ন নিতে হবে। ময়লা, মেকআপ, ঘাম এবং অন্যান্য পদার্থ দূর করতে প্রতিদিন নিয়ম করে স্কিন ক্লিন রাখা মাস্ট। সুগন্ধি বা উচ্চ পিএইচ যুক্ত কঠোর ত্বকের পণ্য থেকে দূরে থাকতে হবে। শুষ্কতা দূর করতে ত্বকে প্রতিদিন ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করতে হবে।

-রাতারাতি ত্বক ঔজ্জ্বল্য বাড়ানোর ভাইরাল প্রোডাক্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়াও এন্টি এজিং এর কোন কিছু ব্যবহার করতে চাইলেও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া না ব্যবহার করাই উত্তম।

-জীবন থেকে স্ট্রেস লেভেল কমাতে হবে। যে স্ট্রেস কমাতে ব্যর্থ হবে তার জন্য স্বাস্থ্যকর স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট কৌশল যেমন ধ্যান বা ব্যায়ামের অনুসন্ধান করো।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ঘরেই বানিয়ে নাও মেকআপ সেটিং স্প্রে

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook