রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

সমস্যা

জীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

স্লিপ অ্যাপনিয়া হলে কী করণীয়?

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২২, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

ঘুমের সময় নাক ডাকা, শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া, বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া এমন অনেক সমস্যার সাথেই আমরা অনেকেই পরিচিত। ঘুমের মাঝে এই ব্যাঘাত, ঘুম পূর্ণতা পেতে বাধার সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে দেখা যায় দিনের বেলায়ও সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব থেকে যায়। এই পরিস্থিতিকে বলা হয় ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ বা ‘নিদ্রাকালীন শ্বাসব্যাঘাত’।

ঘুম মানুষের একটি অত্যাবশ্যকীয় শরীরতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। পরিমিত ঘুম সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে। হৃদরোগ সহ নানা রোগের ঝুঁকিও কমায়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে যদি শ্বাসনালী বাধাগ্রস্থ হয়, তবে ঘুমের মধ্যে সশব্দে নাক ডাকার শব্দ হয়। স্লিপ অ্যাপনিয়া হলো নাক ডাকার ও ঘুম কম হওয়ার সমস্যা। বিভিন্ন ধরনের স্লিপ অ্যাপনিয়া আছে, তবে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ) হল সবচেয়ে সাধারণ ঘুম-সম্পর্কিত শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যাধি। এই ধরনের অ্যাপনিয়া ঘটে যখন গলার পেশী মাঝে মাঝে শিথিল হয় এবং ঘুমের সময় শ্বাসনালী ব্লক করে। সারা বিশ্বে সাধারণত প্রতি ১০০ জনের মধ্যে দুই থেকে চারজন এই ওএসএ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগে থাকে। বাংলাদেশের শহুরে জনসংখ্যার এক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষ ও নারীদের ৪.৪৯ ও ২.১৪ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত। স্লিপ অ্যাপনিয়া হলে এর চিকিৎসা করা দরকার না হয় এটি আরও গুরুতর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

লক্ষণ

কিছু লক্ষণ রোগীর নিদ্রার সময় দেখা দেয়। ফলে রোগী নিজেও বুঝতে পারেনা। কিন্তু ঘুমানোর সময় পাশে কেউ থেকে সাহায্য করতে পারে যাতে তারা লক্ষণগুলো পরীক্ষা করতে পারে। এর লক্ষণ ও উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

-দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম

-জোরে নাক ডাকা

-হঠাৎ জেগে উঠার সাথে হাঁপাতে বা দম বন্ধ হয়ে যাওয়া

-মুখ ও গলা শুকিয়ে যাওয়া

-সকালে মাথাব্যথা

-মেজাজ পরিবর্তন যেমন বিষন্নতা বা বিরক্তি

-উচ্চ রক্তচাপ

ঝুঁকির কারণ

যে কারো অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে। যাইহোক, কিছু কারণ যা তোমাকে এই ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। যার মধ্যে রয়েছেঃ

-যাদের অতিরিক্ত ওজন রয়েছে তাদের স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

-এক্ষেত্রে বয়সও একটি ফ্যাক্ট। ৩০ থেকে ৬৫ বছর বয়সীদের স্লিপ অ্যাপনিয়ার প্রবণতা বেশি। তবে, শিশুদের ক্ষেত্রে যাদের টনসিল বা অ্যাডিনয়েড আকারে বড় হয়, তাদেরও হতে পারে।

-মুখ ও করোটির গঠনগত ত্রুটি থাকলেও স্লিপ অ্যাপনিয়া হতে পারে।

-যারা ধূমপান করে, তাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

-আরেকটি কারণ হতে পারে জেনেটিক বা বংশগত। হার্ট ফেইলিওর, অ্যাজমা, স্ট্রোক ইত্যাদি এ রোগ বাড়িয়ে দেয়।

করনীয় ও প্রতিকার

স্লিপ অ্যাপনিয়া রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে এর ধরণ ও তীব্রতার উপর। অবস্থা যদি গুরুতর পর্যায়ে চলে যায় তবে সেক্ষেত্রে সিপিএপি মেশিন নামে একটি ডিভাইস ব্যবহার করতে হয়। এটি ঘুমের সময় মুখ বা নাকে পরা একটি মাস্কের মধ্যে বাতাস পাম্প করে শ্বাস-প্রশ্বাসের উন্নতি করে। আর যদি এটি হালকা পর্যায়ে হয়ে থাকে তবে নিজের কিছু লাইফ স্টাইল চেইঞ্জের মাধ্যমে এর প্রতিকার ব্যবস্থা নিজে নিজেই করা সম্ভব। যেমনঃ

-ওজন যদি বেশি হয় তবে তা কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

-নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। সক্রিয় থাকা নিজের ভেতর বিদ্যমান থাকা লক্ষণগুলোকে উন্নত করতে পারে এবং একটি স্বাস্থ্যকর ওজন রাখতে সাহায্য করতে পারে।

-ভালো ঘুমের অভ্যাস করতে হবে। শুতে যাওয়ার আগে চারপাশের পরিবেশ শান্ত এবং ঘুমের উপযোগী করে তুলতে হবে। প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া ও উঠার অভ্যাস করতে হবে।

-ধূমপান এবং অ্যালকোহল পানে অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করতে হবে।

-চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যে কোন ধরনের ঘুমের ঔষধ খাওয়া উচিৎ নয়। এগুলো স্লিপ অ্যাপনিয়াকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংসচেতনতাসমস্যা

সম্পর্কে ছন্দপতন, অতঃপর…

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২২, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

‘অবশেষে রাজা, রানী আর তাদের রাজকন্যা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলো’। রুপকথার কাহিনীগুলোতে প্রায় সব গল্পেরই পরিসমাপ্তি ঘটে একটি সুখী পরিবারের বুনন ঘটিয়ে। কিন্তু বাস্তবতা কখনোই রুপকথার কাহিনী নয়। এখানে সবার জীবনের গল্পেরও হ্যাপি এন্ডিংয়ের নিশ্চয়তা থাকেনা। মাঝে মাঝে সম্পর্কের দোলাচালে ঘটে ছন্দপতনের। কখনো ভেবে দেখেছো কী, জীবনের এই টানাপোড়েন ঘরের ছোট্ট সদস্যের উপর কি ধরনের প্রভাব ফেলে? 

 

ছোট্ট আরীবা, যে কিনা ছিল স্কুলে সবচেয়ে প্রাণচাঞ্চল্য ও ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট; হঠাৎ করেই মাসখানেক তার মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। ক্লাসে অমনোযোগী, চুপচাপ একদম। একা থাকতেই যেন পছন্দ করে সে। তাকে ঘিরে ডিভোর্স, ব্রোকেন ফ্যামেলি এমন খটমটে শব্দ শুনতে পায় সে। কিছু বুঝে উঠতে না পারলেও আরো যেন বিষন্নতা ঘিরে ধরে তাকে। এটি একটি কল্পকাহিনী হলেও এমন ঘটনা আমাদের আশেপাশে অহরহ দেখা যাচ্ছে। বিবাহবিচ্ছেদ যেকোন পরিবারের জন্য একটি কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং বিষয় হতে পারে। একটি পরিবার ভেঙ্গে যাওয়া মানে তার সাথে সম্পর্কিত অনেকগুলো স্বপ্নের মৃত্যু। সম্পর্কের হঠাৎ এই পরিবর্তন পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপর যেমন প্রভাব ফেলে তেমনি ঘরে যে বাচ্চারা আছে তাদের উপরও সমান প্রভাব ফেলে। কিন্তু কখনও কখনও, পিতামাতারা তাদের সন্তানদের উপর এই বিচ্ছেদের পরবর্তী প্রভাবগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকেনা। দম্পতিদের জন্য তাদের সন্তানদের দীর্ঘমেয়াদী মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর বিবাহবিচ্ছেদের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে আত্মদর্শন এবং আলোচনা করা অপরিহার্য। সন্তানদের উপর কেমন প্রভাব পড়ে, আসো আমরা জেনে নিই।

খারাপ একাডেমিক পারফরম্যান্স

সম্পর্কের টানাপোড়েনের দরুন পরিবারের পরিবর্তনশীল গতিশীলতা তাদের বিভ্রান্ত করে তোলে। আর এই বিভ্রান্তিতা তাদের দৈনন্দিন ফোকাসে বাধার সৃষ্টি করে। যার ফলাফল পরে একাডেমিক পারফরম্যান্সে। শিশুরা যত বেশি বিভ্রান্ত হয়, তাদের স্কুলের কাজে মনোযোগ দিতে না পারার সম্ভাবনা তত বেশি।

আবেগীয় অনুভূতি

বিবাহবিচ্ছেদ একটি পরিবারের জন্য বিভিন্ন ধরনের আবেগকে সামনে আনতে পারে এবং এর সাথে জড়িত শিশুরাও আলাদা নয়। উত্তেজনা, নার্ভাসনেস, উদ্বেগ, ক্রোধ এমন আরও অনেক কিছুই এই পরিবর্তন থেকে আসতে পারে। ছোট বাচ্চাদের বয়স্কদের তুলনায় এটির প্রবণতা হয় বেশি কারণ তারা বাবা- মা উভয়ের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। একটি উদ্বিগ্ন শিশু তার পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে অসুবিধা বোধ করবে এবং সকলধরনের ক্রিয়াকলাপে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে যা একসময়ে তার কাছে খুবই লোভনীয় বলে মনে হতো।

বিষন্নতা

পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদের কারণে সৃষ্ট যন্ত্রণা এবং হৃদয়বিদারক অনুভূতি একটি শিশুকে বিষন্নতায় ফেলে দিতে পারে। বিষন্নতা একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং বিবাহবিচ্ছেদের সাক্ষী শিশুদের মধ্যে বিষন্নতা এবং সামাজিক প্রত্যাহারের ঘটনা বেশি থাকে। গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে শিশুদের মধ্যে বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদ একটি অবদানকারী কারণ হতে পারে।

অপরাধবোধের অনুভূতি

আমেরিকান একাডেমি অফ চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রি অনুসারে, অনেক শিশু তাদের পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদের পিছনে নিজেকে কারণ বলে মনে করে অপরাধবোধে ভোগে। এই অপরাধবোধ হতাশা, চাপ বাড়ায়; এতে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং দুঃস্বপ্নের মতো বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন

ছোট বাচ্চারা ঘন ঘন মুড সুইং এ ভুগতে পারে এবং এমনকি খিটখিটেও হতে পারে পরিচিত মানুষের সাথে যোগাযোগ করার সময়। তাদের রাগ অনুভূত কারণগুলোর বিস্তৃত পরিসরে পরিচালিত হতে পারে। বিবাহবিচ্ছেদ প্রক্রিয়াকারী শিশুরা তাদের পিতামাতা, নিজেদের, তাদের বন্ধুবান্ধব এবং অন্যদের প্রতি রাগ প্রদর্শন করতে পারে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে তারা প্রত্যাহার মোডে চলে যায়। যেখানে তারা কারও সাথে কথা বলা বন্ধ করে দেবে এবং অন্যের সাথে মেশার পরিবর্তে একা সময় কাটাতে পছন্দ করবে।

ধ্বংসাত্মক আচরণের ভূমিকা

শিশুরা যখন বিবাহবিচ্ছেদের মতো এই ট্রমার মধ্য দিয়ে যায়, তখন অমিমাংসিত দ্বন্দ্ব ভবিষ্যতে অপ্রত্যাশিত ঝুঁকির দিকে নিয়ে যেতে পারে। তালাকপ্রাপ্ত পিতামাতার সাথে কিশোর-কিশোরীরা ঝুঁকিপূর্ণ আচরণে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তালাকপ্রাপ্ত বাবা-মায়ের কিশোর-কিশোরীরা আগে অ্যালকোহল পান করে এবং তাদের সমবয়সীদের তুলনায় বেশি অ্যালকোহল, গাঁজা, তামাক এবং মাদক সেবনের রিপোর্ট করে।

সন্তানের মানসিক চাপ কমানোর উপায়

বিবাহবিচ্ছেদের মতো এমন বিরুপ পরিস্থিতির সাথে শিশুরা কীভাবে সামঞ্জস্য করে তার জন্য পিতামাতারা একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে। এখানে কিছু কৌশল রয়েছে যা শিশুদের উপর মানসিক চাপ কমাতে পারেঃ

-বাবা-মায়ের মধ্যকার দ্বন্দ্ব বাচ্চাদের সহজেই ট্রমাটাইজড করে দেয়। প্রকাশ্য শত্রুতা, একে অপরের উপর চিৎকার করা, হুমকি দেয়া শিশুদের আচরণের সমস্যার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সন্তানের কথা মাথায় রেখেই এগুলো পরিহার করা উচিৎ।

-বাবা-মায়ের দ্বন্দ্বের মাঝখানে বাচ্চাদের রাখা এড়িয়ে চলতে হবে। তাদের দুজনের মাঝে একজনকে বেছে নেয়া বা এমন কোনো কথা না বলা যাতে সন্তান নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। তাই সন্তানকে এত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে ফেলার আগে ভাবনাচিন্তা করা দরকার।

-বিবাহবিচ্ছেদ এমন এক বিচ্ছিন্ন ঘটনা যা কোন সুফলতা বয়ে আনেনা। কিন্তু বিচ্ছেদের পরেও সন্তানের কথা চিন্তা করেই একটি সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখা যেতে পারে। ইতিবাচক যোগাযোগ, পিতামাতা উভয়ের উষ্ণতা বাচ্চাদের উচ্চ আত্মসম্মান এবং একাডেমিক পারফরম্যান্স বিকাশে সহায়তা করে।

-পরিত্যাগের ভয় এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তা অনেক উদ্বেগের কারণ হতে পারে। সন্তানকে ভালোবাসা, নিরাপদ এবং সুরক্ষিত বোধ করতে সাহায্য করা তার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকিও কমাতে পারে।

-নিজের স্ট্রেস লেভেল কমানো তা সন্তানকে সাহায্য করার জন্য সহায়ক হতে পারে। সেজন্য স্ব-যত্ন নেয়া প্রয়োজন। আর দরকার হলে পেশাদারের সাহায্য নেয়া যেতে পারে।

-ছবি সংগৃহীত

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অনুসঙ্গঅন্দরের ডায়েরিআয়নাঘররূপ ও ফ্যাশনসমস্যা

চুলে খুশকি, কি করি?

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১২, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

মনের মতো করে সাজ-পোশাকে নিজেকে সাজিয়ে বাইরে বের হচ্ছো। হঠাৎই দেখলে কাঁধের কাছে কাপড়ে সাদা গুড়ি গুড়ি খুশকি পড়ে রয়েছে। এর চেয়ে বিব্রতকর অবস্থা আর কিছুই হতে পারেনা। শুধু কাপড়ে নয় চিরুনি, বালিশেও এর দেখা মেলে। সারাবছর চুলে খুশকির সমস্যা অনেকের থাকলেও, শীতে যেন তার উপস্থিতি আরও বেড়ে যায়।

খুশকি আমাদের মাথায় দেখা দেয় যখন মাথার স্কিনে মৃত ত্বকের কোষগুলো ঝরে যায়। কখনও কখনও, কোষগুলো অতিরিক্ত উৎপাদনে যায় এবং স্বাভাবিক হারের দ্বিগুণ হারে ঝরে যায়; যা মাথার ত্বকের জন্য একটি সমস্যা উপস্থাপন করে। যখন মাথার ত্বকে অতিরিক্ত তেল উৎপন্ন হয়, তখন তেল মৃত কোষগুলোকে একত্রে আটকে রাখে এবং সাদা ক্লাম্প অর্থাৎ খুশকি তৈরি করে। বিজ্ঞানীরা ম্যালাসেজিয়া ছত্রাককে খুশকি এবং অন্যান্য অবস্থার সাথে যুক্ত করেছেন যেমন অ্যাটোপিক একজিমা, সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এবং ফলিকুলাইটিস। ছত্রাক তেলের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং তেল উৎপাদনে ম্যালাসেজিয়া ছত্রাক বহুগুণ বেড়ে যায়। যদিও খুশকি কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করেনা, তবে যারা এতে ভুগছে তাদের জন্য এটি বেশ বিরক্তিকর হতে পারে।

কীভাবে মুক্তি পেতে পারি?

খুশকি রাতারাতি পুরোপুরিভাবে নির্মূল করা যেতে না পারলেও একে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা যায়। সেজন্য কিছু পদক্ষেপ অবলম্বন করা প্রয়োজন। যেমনঃ

নিয়মিত চুল ব্রাশ করা

খুশকির চিকিৎসা বলতে বুঝায় মাথার ত্বকে চুলকানি এবং ফুসকুড়ি থেকে মুক্তি পেতে বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারা। এইজন্য চুল নিয়মিত ব্রাশ করা প্রয়োজন। স্থির, দৃঢ় স্ট্রোক দিয়ে মাথার ত্বক থেকে নিচের দিকে চুল ব্রাশ করো। এটি তোমার মাথার ত্বক থেকে তেলকে দূরে নিয়ে যায়, যেখানে এটি এবং ত্বকের কোষগুলো খুশকির কারণ হতে পারে। এছাড়াও এটি চুল চকচকে এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে সাহায্য করে।

শ্যাম্পু পরিবর্তন

শীতের খুশকি কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হল নিয়মিত ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করা। তোমার ব্যবহার করা প্রতিদিনকার শ্যাম্পুতে এমন কিছু উপাদান থাকতে পারে যা উপসর্গগুলোকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। যেমন সালফেট, থ্যালেটস এবং উত্তেজক সুগন্ধি। খুশকির শ্যাম্পুতে অ্যান্টি ফাংগাল বৈশিষ্ট্য আছে যা খুশকিকে বিনাশ করতে সাহায্য করে। উপরন্তু, অ্যান্টি-ড্যান্ড্রাফ শ্যাম্পুগুলো সাধারণত ত্বকে মৃদু, আরও ময়েশ্চারাইজিং এবং হাইড্রেটিং করে।

গরম পানি এড়িয়ে চলো

শীতকালে গরম পানি দিয়ে গোসল করা অনেক আরামদায়ক। তবে এক্ষেত্রে অত্যন্ত গরম পানি মাথায় ঢালা থেকে বিরত থাকতে হবে। এটি মাথার ত্বককে আরও শুষ্ক করে এবং যখন অতিরিক্ত শুষ্ক বাতাসের সাথে মিলিত হয়, তখন শীতের খুশকির উপসর্গগুলোকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

ঘরোয়া চিকিৎসা

খুশকির শ্যাম্পু ছাড়াও আরও কিছু জিনিস আছে যা এটি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। এই প্রাকৃতিক চিকিৎসার কিছু হয় ময়েশ্চারাইজিং করবে নয়তো ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের বিরুদ্ধে সহায়ক হবে।

-নারকেল তেলে এমন এক বৈশিষ্ট্য আছে যা অবিশ্বাস্যভাবে হাইড্রেটিং করে, আর তা হল- অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য। এটি একটি শক্তিশালী সংমিশ্রণ যা শীতকালীন খুশকি প্রশমিত করতে সাহায্য করে। এটি ৩ থেকে ৫ চা চামচ মাথার ত্বকে ঘষে ঘষে লাগিয়ে নাও। তারপর ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ফেলো।

-অ্যালোভেরা এমন এক রসালো উদ্ভিদ যা এর  নিরাময় বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত। এর পাতার জেলে অ্যামিনো অ্যাসিড এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মতো বেশ কিছু জৈব সক্রিয় যৌগ রয়েছে যা খুশকি কমাতে পারে। এছাড়াও এর জেল ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে । চুলে শ্যাম্পু করার আগে এর জেল মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখতে পারো।

-অ্যাসপিরিনে থাকা স্যালিসিলিক অ্যাসিড, এমন একটি সক্রিয় উপাদান যা সাধারণত খুশকির শ্যাম্পুতে ব্যবহৃত হয়। স্যালিসিলিক অ্যাসিড অতিরিক্ত খুশকির ফ্লেক এক্সফোলিয়েট করতে, তেল জমা হওয়া রোধ করতে এবং মাথার ত্বকে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। খুশকিতে স্যালিসালিরিক অ্যাসিড ব্যবহার করতে ১টি বা ২টি আনকোটেড অ্যাসপিরিন ট্যাবলেটকে গুঁড়ো করে তা তোমার শ্যাম্পুর সাথে মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারো। ২ মিনিটের মত রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলো।

-অলিভ অয়েলও ভালো কাজে দেয়। মাথার ত্বকে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল দিয়ে, শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল ঢেকে রাখো। পরদিন সকালে চুল শ্যাম্পু করে নিলেই হয়ে যাবে।

-সোডিয়াম বাইকার্বোনেট, যাকে আমরা বেকিং সোডা বলে চিনি; খুশকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। বেকিং সোডাতেও অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা খুশকির জন্য দায়ী ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে এতে একটি খুব উচ্চ পিএইচ স্তর রয়েছে, যা একজন ব্যক্তি ঘন ঘন ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। তাই এটি পরিমিতভাবে ব্যবহার করা উচিৎ।

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরাণাপন্ন

সব ঘরোয়া প্রতিকার সবার জন্য কাজ করবে এমনটা ভাবা ঠিক নয়। এইসব প্রস্তুতি নেয়ার পরেও যদি তুমি দেখে থাকো সমস্যার তেমন কোন সমাধান হচ্ছেনা তবে বসে না থেকে কোন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়াই উত্তম।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাপ্যারেন্টিংসচেতনতাসমস্যা

বয়স যখন দুই

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ৯, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

এমন কখনো খেয়াল করে দেখেছো কি বাসার যে ছোট্ট সদস্যটি রয়েছে, যে সদ্য কথা বলতে শিখেছে, আধো আধো বোলে ঘরকে মাতিয়ে রেখেছে সেই বাচ্চার রাগ, জেদে সবার অবস্থা নাজেহাল। একদিকে সে চায় তার সব কাজ সে নিজে নিজেই করতে আবার অন্যদিকে সেই প্রচেষ্টার বিফল ঘটলে হয়ে যায় হতাশ, পরবর্তীতে যা রুপ নেয় বদমেজাজে। শিশুর জীবনের এই টার্মকে বলে টেরিবল টু। অনেকেই এই শব্দটির সাথে পরিচিত না থাকলেও বাচ্চার এই আচরণগত পরিবর্তনের সাথে কম বেশি সবাই পরিচিত।

টেরিবল টু বা ভয়ংকর দুই শব্দটি দীর্ঘকাল ধরে ২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে বাবা মায়েরা যে পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করে তা বর্ণনা করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। সন্তানের মেজাজ এবং আচরণের দ্রুত পরিবর্তন এবং তাদের সাথে মোকাবেলা করার অসুবিধার কারণে একজন পিতামাতা এই বয়সটিকে ভয়ানক বলে মনে করতে পারে। এটি একটি শিশুর বিকাশের স্বাভাবিক পর্যায়কে বোঝায় যেখানে একটি শিশু নিয়মিতভাবে প্রাপ্তবয়স্কদের উপর নির্ভরতা এবং স্বাধীনতার জন্য নতুনভাবে বেড়ে উঠার আকাঙ্ক্ষার মধ্যে বাউন্স করতে পারে। লক্ষণগুলো শিশুর মধ্যে ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন এবং মেজাজ ক্ষুব্ধ হতে পারে। এক মিনিটে দেখা যাবে বাচ্চাটি পরম মমতায় তোমাকে আঁকড়ে ধরে থাকবে আবার পরের মিনিটেই দেখা যাবে সে বিপরীত দিকে দৌড়াচ্ছে। টেরিবল টু বলা হলেও এই ধরনের আচরণ প্রায়শই ১৮ মাস থেকে শুরু হয় এবং তা ৪ বছর বয়স পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

এটি কেন হয়?

২ বছর বয়সের আশেপাশে শিশুরা সাধারণত অনেক ধরনের বড় উন্নয়নমূলক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। এই সময় তাদের মধ্যে নতুন সব ধরনের দক্ষতার বিকাশ পরিলক্ষিত হয়। যেমন জাম্পিং, ক্লাইম্বিং, ব্লক স্ট্যাক করা, ক্রেয়ন বা মার্কার দিয়ে আঁকিবুঁকি করা ইত্যাদি। এই পর্যায়ে সে চাইবে স্বাভাবিকভাবেই নিজের একটা পরিবেশ অন্বেষণ করতে এবং নিজের মতো করে সব কিছু করতে। এটা সবই স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত আচরণ। কিন্তু এই সময় তাদের মৌখিক, শারীরিক এবং মানসিক দক্ষতা ভালোভাবে বিকশিত না হওয়ায়, সন্তান পর্যাপ্তভাবে যোগাযোগ করতে বা কোনো কাজ করতে ব্যর্থ হয়। তাদের চাহিদা এবং তা প্রকাশের অক্ষমতার জন্য তারা তখন এই ধরনের আচরণ করে থাকে।

লক্ষণ

সকল বাচ্চাই সমান নয় এবং সমভাবে তারা আচরণও করেনা। তাই এই টেরিবল টু’র লক্ষণগুলো বাচ্চা থেকে বাচ্চাদের মধ্যে আলাদা। তবে কিছু আচরণগত নিদর্শন রয়েছে যা পিতামাতাকে সংকেত দিতে পারে যে তাদের সন্তান এই জটিল বিকাশের পর্যায়ে থাকতে পারে। যেমনঃ

-ভাইবোন বা খেলার সাথীদের সাথে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঝগড়া করা

-রাগ হলে লাথি, থুতু বা কামড় দেয়া

-ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন যেমন এই হাসি তো এই কান্না

-মনোযোগ আকর্ষনের জন্য চিৎকার চেঁচামেচি করা, হাতের কাছে জিনিস ছুঁড়ে ফেলা

টেরিবল টু-এর সাথে আসা উত্তেজনা এবং অবাধ্যতা স্বাভাবিক যা সময়ের সাথে সাথে চলে যেতে পারে। কিন্তু তুমি যদি মনে করো যে আচরণগুলো বেশ দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং তা বাচ্চার খাওয়া, ঘুম বা ডে কেয়ারে যোগদান করাকে প্রভাবিত করছে, তখন একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে নিলে ভালো হয়। এক্ষেত্রে তারা সন্তানের আচরণ সংশোধন করার জন্য টিপস দিতে পারেন এবং মানসিক স্বাস্থ্য মূল্যায়নের প্রয়োজন হলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে পারেন।

টেরিবল টু ম্যানেজের টিপস

সন্তান এবং নিজেকে এই ভয়াবহ টার্মটি পরিচালনার জন্য কিছু টিপস ফলো করতে পারোঃ

-বাচ্চার ঘুমের সময়সূচী রাখো। সন্তান যখন ক্লান্ত থাকে তখন এই ধরনের আচরণ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই তার ঘুমের সময় যতটা সম্ভব সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার চেষ্টা করো। ভালো ঘুম ও বিশ্রাম তাদের মেজাজ স্থির রাখতে সাহায্য করবে।

-একই কথা খাবারের বেলায়ও প্রযোজ্য। বাচ্চারা যখন ক্ষুদার্ত অনুভব করে তখন বাইরে যাওয়া এড়াতে চেষ্টা করো। আর যদি খাবারের সময় সন্তানের সাথে বাইরে থাকতেই হয় তবে খাবার প্যাক করে সাথে নিয়ে রাখতে পারো।

-তুমি যে আচরণগুলো অনুমোদন করবে সেগুলোর প্রশংসা করো এবং যেগুলো থেকে বিরত রাখতে চাও সেগুলোকে উপেক্ষা করো।

-সন্তানের সামনে অহিংস আচরণ উপস্থাপন করতে চাইলে তাদের আঘাত করবেনা এবং তাদের উপর চেঁচামেচি করা এড়াতে হবে।

-তাদের কোন কিছু করতে পুননির্দেশ বা বিভ্রান্ত করো। বাচ্চা যখন উত্তেজিত হয়ে চেঁচামেচি করা শুরু করতে থাকে তখন তাদের মনোযোগ অন্য দিকে ডাইভার্ট করার জন্য মজার বা আকর্ষনীয় কিছু দেখানো বা করার নির্দেশ করো।

-বাচ্চার জন্য একটি নিরাপদ, শিশুরোধী পরিবেশ নিশ্চিত করো। ভঙ্গুর বা মূল্যবান বস্তু তার হাতের নাগালে থাকতে পারে এমন জায়গায় রাখবেনা।

-বাচ্চাকে সীমিত পছন্দ করার ব্যাপারে অফার করো। উদাহণস্বরুপ, সে কি খেতে চায় তা জিজ্ঞাসা না করে তাদের আপেল বা কমলা থেকে একটি বেছে নিতে বলতে পারো। এটি শিশুকে অনেক পছন্দের সাথে যোগ না করে নিয়ন্ত্রণের অনুভূতি দেয়।

-সর্বোপরি নিজেকে শান্ত রাখো। এমন পরিস্থিতিতে যে কারোরই মেজাজের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু নিজেও ধৈর্য্য হারা হয়ে গেলে এতে আরও বিপত্তি বাড়ে। তাই যখনই পরিস্থিতি তোমাকে রাগের প্রান্তে নিয়ে আসে, তখন কিছুক্ষন বসে থেকে গভীরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার জন্য সময় নাও। এটি তোমাকে শান্ত করতে এবং সহানুভুতির সাথে সন্তানের সাথে যোগাযোগ করতে সহায়তা করবে।

সন্তান যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা গ্রহণ করে এবং তাকে বা তার ভালোবাসা এবং সম্মান দেখানোর মাধ্যমে, তুমি তোমার সন্তানকে এই কঠিন পর্যায়ে সাহায্য করতে পারবে এবং তাদের মাঝে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে সহায়তা করতে পারবে।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্যান্যগ্যাজেটপ্রযুক্তিসমস্যা

স্লো হয়ে যাচ্ছে মুঠোফোনটি?

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ৫, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

তোমার অ্যান্ড্রয়েড ফোন কী ধীর গতিতে কাজ করছে? অথবা এটি পরিবর্তন করার সময় এসেছে, কিন্তু তুমি এখনই প্রস্তুত নও? কারণ যাই হোক না কেন অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে দ্রুততর করার বিষয়ে যদি জানতে চাও, তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছো। তোমার পুরনো বা কম ক্ষমতাসম্পন্ন ডিভাইসটির পরিবর্তনের কিছু উপায় নিয়ে আজকের লেখা সাজানো হয়েছে।

স্মার্টফোন আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। পুরো বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে আপডেট রাখতে এর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কিন্তু দৈনন্দিন ব্যবহারের সাথে, মোবাইল ফোন সময়ের সাথে ধীর হয়ে যায়। অবশ্যই দিনের শেষে প্রতিটি গ্যাজেট শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে যেতে শুরু করবে এবং একটি মোবাইল ডিভাইস এর ব্যতিক্রম নয়। তবে এটা প্রায়শই বিরক্তিকর হতে পারে, প্রধানত সেই সময়ে যখন আমরা বেশিরভাগ বাড়িতে থেকে কাজ করি এবং প্রতিদিনের কাজগুলো সম্পুর্ণ করার জন্য আমাদের এই মুঠোফোনের উপর নির্ভর করতে হয়। তার উপর একটি নতুন ফোন কেনা সবার পক্ষেও সম্ভব হয়ে উঠেনা, তাই ফোনের কার্যক্ষমতা বাড়ানো খুবই দরকার হয়ে পড়ে। যদি তোমার ফোন ধীর গতিতে চলতে থাকে, তাহলে তোমার অ্যান্ড্রয়েডের পারফরম্যান্স স্পিড অপ্টিমাইজ করতে এবং ফোনকে স্বাভাবিকের মতো চালানোর নিমিত্তে এই টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারো।

ফোন রিস্টার্ট করো

তোমার ফোন যখন সর্বোত্তম গতিতে কাজ করছেনা তখন প্রথমেই যে পদক্ষেপ নিতে পারো তা হল ডিভাইসটি পুনরায় চালু করা। কখনও কখনও এই সাধারণ পুনঃসূচনাই সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে। তুমি যখন ফোন রিবুট করবে, তখন এটি তোমার ডিভাইসে খোলা সমস্ত অস্থায়ী ফাইল মুছে দেয় এবং র‍্যাম পরিষ্কার করে। আর এভাবেই এটি তোমার ডিভাইসের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। সপ্তাহে অন্তত একবার ফোন রিস্টার্ট করা ভালো।

ডিভাইস আপডেট চেক

অ্যান্ড্রেয়েড ডিভাইসগুলো ধীর হয়ে যাওয়া সমস্যার আরেকটি কারণ হল তাদের একটি সফটওয়্যার আপডেটের প্রয়োজন। শেষ কবে তুমি ফোন আপডেট করেছিলে? ফোনে সফটওয়্যার আপডেট পরীক্ষা করতেঃ

-ফোন সেটিংসে যাও

-সিস্টেমে নিচে স্ক্রোল করে আলতো চাপ দাও

-সিস্টেম আপডেটে যাও

-স্ক্রিনের নিচে আপডেটের জন্য চেক করো এবং ট্যাপ করো

যদি কোন আপডেট দেয়া থাকে তবে এন্ড্রোয়েড সিস্টেমকে অপ্টিমাইজ করতে সেগুলো চালাও। সফটওয়্যার আপডেটগুলো পূর্ববর্তী সংস্করণে খুঁজে পাওয়া বাগ এবং পারফম্যান্স সমস্যাগুলো সমাধান করার জন্য তৈরি করা হয়। একইভাবে, প্লেস্টোরে যাও এবং নিশ্চিত করো যে তোমার সমস্ত অ্যাপও আপ টু ডেট আছে।

অপ্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো আনইনস্টল

এন্ড্রোয়েড ডিভাইসে প্রতিটি অ্যাপ কিছু পরিমাণ মেমরি ব্যবহার করে। যেহেতু প্রতিটি ডিভাইসে মেমরির স্থান সীমিত থাকে, তাই শুধুমাত্র সেই অ্যাপগুলোই রাখো যা তুমি ব্যবহার করো। যে অ্যাপগুলো কখনই ব্যবহার করোনা এবং এগুলো এখনও তোমার ডিভাইসে থাকে সেগুলো শুধুমাত্র ফোনে স্টোরেজ স্পেস নেয় এবং সেগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে চললে মেমরি আটকে যেতে পারে। ডিভাইসে অ্যাপের তালিকা দেখতে, সেটিংস > অ্যাপে যাও এবং সব ট্যাবে সোয়াইপ করো। এখানে সমস্ত অ্যাপ তালিকাভূক্ত হবে। যেসব অ্যাপ তোমার প্রয়োজন নেই সেগুলো আনইনস্টল করে দাও। যদি আনইনস্টল অপশনটি না থাকে তবে তা ডিজাবেল করে দাও।

স্টোরেজ স্পেস খালি করো

তোমার ফোন যদি পুরানো হয়ে থাকে তবে তুমি সম্ভবত স্টোরেজ ফুরিয়ে যাওয়া টার্মটির সাথে পরিচিত। সীমিত স্টোরেজের জন্য ফোন ধীর গতিতে চলতে পারে। এই কাজ করতে সহজ পদক্ষেপ অনুসরণ করতে পারোঃ সেটিংস > স্টোরেজ > ফ্রি স্পেস ট্যাপ। এর মাধ্যমে তুমি ক্লিন করতে পারোঃ

-জাঙ্ক ফাইল

-বড় ফাইল

-অব্যবহৃত অ্যাপস

-যেকোন ব্যাক-আপ মিডিয়া

হোম স্ক্রীন পরিষ্কার করো

তোমার হোম স্ক্রীন এবং উইজেটগুলোতে লাইভ ওয়ালপেপার স্থাপন করা ভালো দেখায়, তবে এটি একটি অতিরিক্ত লোড রাখে এবং তা তোমার ডিভাইসের কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। তোমার লাইভ ওয়ালপেপারটিকে একটি স্থির চিত্র দিয়ে প্রতিস্থাপন করা এবং সমস্ত  অব্যবহৃত আইকন ও উইজেটগুলো সরিয়ে রাখা ভালো।

ক্যাশড অ্যাপ ডেটা সাফ

আমরা প্রতিনিয়তই ফোনে ইন্টারনেট ব্রাউজ করে থাকি। হতে পারে কোন রেসিপি খুঁজতে অথবা কোন সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে আমরা অনেক কিছুই সার্চ করে থাকি। আমরা যদি নিয়মিত ভিত্তিতে এগুলো সাফ না করে থাকি তবে এই অনুসন্ধানগুলো ডিভাইসে মেমরি নিতে শুরু করে। ক্যাশ সাফ করা মেমরি খালি করতে সাহায্য করতে পারে এবং ফোনকে দ্রুত চালাতে সহায়ক হয়।

অ্যাপের লাইট সংস্করণ ব্যবহার

অনেক জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন যেমন ফেসবুক, টুইটার, ইন্সটাগ্রাম তাদের অ্যাপের জন্য একটি লাইট সংস্করণ অফার করে। লাইট সংস্করণের অ্যাপগুলো ব্যবহার করা ডিভাইসের কার্যক্ষমতা উন্নত করে এবং তোমার ডেটা ব্যবহার হ্রাস করে এবং এইভাবে অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলোকে দ্রুততর করা যায়। তুমি যদি অল্প মেমরি এবং বাজেটের স্মার্টফোনের মালিক হও তবে লাইট সংস্করণের অ্যাপগুলো তোমার জন্য সেরা।

কাস্টমাইজড রম ইনস্টল

যদি তোমার ফোনটি তূলনামূলক ভাবে পুরাতন হয়ে থাকে তবে এটিতে একটি কাস্টম রম বা কার্ণেল ইনস্টল করার কথা বিবেচনা করতে পারো। কাস্টম রমগুলো পুরানো অ্যান্ড্রোয়েড ডিভাইসগুলোর জন্য একটি সমাধান যা আরওএস আপডেট পায়না। তুমি কাস্টম রমগুলোও পেতে পারো যা কোনও ব্লোটওয়্যার অন্তর্ভূক্ত করেনা এবং বিভিন্ন আকর্ষনীয় কাস্টমাইজেশন এবং সমন্বয় প্রদান করে।

ফ্যাক্টরি রিসেট

উপরে বর্ণিত সব পদক্ষেপ যদি তোমার জন্য খুব বেশি সহায়ক মনে না হয়, তবে তুমি তোমার ডিভাইসে ফ্যাক্টরি রিসেট করতে পারো। ফ্যাক্টরি রিসেট কর্মক্ষমতা উন্নত করার একটি চমৎকার কিন্তু চরম উপায়। এটি তোমার ফোনটিকে তার আসল সেটিংসে ফিরিয়ে দিবে যা তুমি ডিভাইসটি কেনার সময় এটিতে ছিল। এটি সমস্ত নতুন অ্যাপ, ফটো, বার্তা, কন্ট্রাক্ট লিস্ট সব মুছে ফেলবে। তুমি যদি তোমার অ্যান্ড্রোয়েড ডিভাইস ফ্যাক্টরি রিসেট করার সিদ্ধান্ত নাও, তাহলে প্রথমে তোমার প্রয়োজনীয় ডেটার একটি ব্যাকআপ তৈরি করো। তারপর ফোন রিসেট করার পরে, এটি সেট আপ করো এবং প্রয়োজনীয় অ্যাপগুলো ইনস্টল করো। ফযাক্টরি রিসেট করার সময় ডিভাইসে পর্যাপ্ত ব্যাটারি আছে বা চার্জ হচ্ছে তা নিশ্চিত করো কারণ এটি সম্পূর্ণ হতে কিছুটা সময় লাগতে পারে।

আমাদের ফোনগুলো প্রতিদিনের কাজগুলো সম্পাদন করতে সহায়তা করে এবং আমরা প্রতিদিন চলার সময় প্রায়শই এটি লাইফলাইন হয়ে উঠে। ডিভাইসের এই ধীরগতি আমাদের ছোটখাটো অনেক অসুবিধায় পড়তে হতে পারে। তাই অ্যান্ড্রোয়েড এর গতি অপ্টিমাইজ করতে সাহায্য করার জন্য ধাপগুলো অনুসরণ করে দেখতে পারো।

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবননারীপ্যারেন্টিংরোদসীর পছন্দসংগ্রামসমস্যাসুস্থ মন

একলা চলো রে

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ৩, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

মাতৃত্ব এমন এক অনুভূতি যার কোন তুলনা হয়না। কিন্তু মাতৃত্বের যাত্রা সবার জন্য সহজবোধ্য হয়না, আর তা যদি হয় সিঙ্গেল মাদারহুড; তখন পরিস্থিতি তো আরও কঠিন মনে হতে পারে। এমন অনেক দ্বন্দ্ব এবং চাপ রয়েছে যা একক মায়েদের মধ্য দিয়ে যায় যা অন্য পরিবারগুলো সরাসরি অনুভব করতে পারেনা। একক মায়েদের শক্তি এবং স্থিতিস্থাপকতা অবিশ্বাস্যভাবে প্রশংসনীয়, তবে এর পেছনে তাদের ক্লান্তি অনুভব করাও বোধগম্য।

সুখী সমৃদ্ধময় একটি পারিবারিক জীবন কে না চায়। কিন্তু অনেক সময় বাস্তবতার খাতিরে আমাদের এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় যা কারোরই কাম্য হতে পারেনা। সিঙ্গেল প্যারেন্টস এমনই এক বিষয়। একক অভিভাবক হওয়ার পেছনে অনেক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বিবাহবিচ্ছেদ, পরিত্যাগ, বিধবা হওয়া, ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স, একক ব্যক্তি দ্বারা সন্তান জন্মাদান বা দত্তক নেয়া। সঙ্গীর সাথে অভিভাবকত্ব ইতিমধ্যেই অপ্রতিরোধ্য এবং চ্যালেঞ্জিং হতে পারে। সেখানে একক মা হওয়া সম্পূর্ণ অন্য এক অগ্নিপরীক্ষা। তাদের প্রতিনিয়ত জীবনে বেশকিছু অপ্রতিরোধ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। যেমনঃ

আর্থিক চ্যালেঞ্জ

সন্তানের জীবনে একমাত্র উপার্জনকারী এবং যত্নশীল হওয়া অবিশ্বাস্যভাবে চ্যালেঞ্জিং। একজন প্রাপ্তবয়স্ককে একাই ভার বহন করতে হয় যা সাধারণত দুজন বহন করে। এতে করে বিশাল এক দায়িত্ব এসে পড়ে। এই কষ্ট শুধুমাত্র আর্থিক নয়, এটি একটি মানসিক বোঝাও বটে এবং মা প্রায়ই তার বাচ্চাদের জন্য যথেষ্ট না দেওয়ার জন্য নিজেকে দোষী বোধ করেন।

মানসিক চ্যালেঞ্জ

বাস্তবতা হলো একক মা হওয়া মানে একাকী হয়ে যাওয়া। নিজেদের ভালো লাগা, মন্দ লাগা শেয়ার করার মতো কোন সঙ্গী থাকেনা। উদ্বেগ, স্ট্রেস, আশাহীন বা মূল্যহীন বোধের মতো মানসিক স্বাস্থ্যের লড়াই একক মায়েদের জন্য সাধারণ।

সামাজিক বিচ্ছিন্নতা

একটি একক মায়ের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা অনেক বড় এক প্রতিবন্ধকতার কাজ করে। সিঙ্গেল মাদারহুডের সাথে সাথে সামাজিকভাবে যে অপবাদ আসে তা পুরানো এবং সেকেলে কিন্তু কোনভাবেই তা দূর করা যাবেনা। সমাজ এখনও মনে করে একজন একক বাবা শান্ত ও সাহসী এবং একক মা দরিদ্র ও ক্লান্ত।

সিদ্ধান্তের চাপ

অভিভাবকত্ব দায়িত্ব পালন করা কঠিন। বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে এই দায়িত্ব আরও বেশি বেড়ে যায়। একজন সঙ্গীর সমর্থন ছাড়া একটি সন্তানের জীবনের অনেক বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য একক মায়ের উপর সবকিছুই ছেড়ে দেয়া হয়। এটি অবিশ্বাস্যভাবে ভীতিজনক এবং প্রচুর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

অপরাধবোধ

সমস্ত একক মায়ের সংগ্রামের মধ্যে, এটির বিরুদ্ধে লড়াই করা সবচেয়ে কঠিন হতে পারে। তাদের মনে অপরাধবোধ আসার যেন শেষ নেই। নিজে যে আর্থিক জিনিসগুলো সরবরাহ করতে পারবেনা সে সম্পর্কে অপরাধবোধ, বাচ্চাদের থেকে দূরে কাটানো সময় সম্পর্কে অপরাধবোধ, পরিস্থিতি ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে যেগুলো করতে পারা যায়না সে সম্পর্কে অপরাধবোধ। সন্তানরা একক পিতামাতার সন্তান হিসেবে যেভাবেই বেড়ে উঠুক না কেন তা তাদের উপর কী প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ও নিজেদের দায়ী বোধ মনে হয়।

একক মাতৃত্ব সহজ করার উপায়

একটি শিশুকে নিজের মতো করে বড় করা সহজ কাজ নয়, তবে তুমি একা নও। নিজের মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে, ব্যক্তি হিসেবে উন্নতি করতে এবং মাতৃত্ব সহজ করার কিছু উপায় দেয়া হলঃ

-তুমি তোমার ধারণার চেয়েও বেশি শক্তিশালী। একজন সঙ্গী ছাড়া সবচেয়ে কঠিন কাজ তুমি একাই করতে পারছো। যখন ক্লান্তি ও হতাশা মনে ধরে যাবে তখন নিজেকে ব্যর্থ মনে হবে। কিন্তু সেখান থেকে একবার পাশ কাটিয়ে উঠে যখন দেখবে দিন শেষে বাচ্চারা সুস্থ থাকে, সুখী হয় তাহলে এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিছুতেই নেই।

-মাতৃত্বের কঠিন সময়ে পরিবার এবং বন্ধুদের উপর নির্ভর করতে সক্ষম হওয়া তোমার সুস্থতা রক্ষার জন্য অপরিহার্য। সাহায্য প্রয়োজন তা স্বীকার করা শক্তি প্রমাণ করে, দূর্বলতা নয়।

-নিজের জন্য সময় বের করা। যদিও এটা অর্জন করা কঠিন হতে পারে কিন্তু নিজের জন্য কিছুটা সময় বের করা বার্নআউট এবং ক্লান্তি এড়াতে প্রয়োজনীয়। নিয়মিতভাবে মাইন্ডফুলনেস ভিত্তিক স্ব-যত্ন অভ্যাস অনুশীলন করতে হবে। এটি শারীরিক পাশাপাশি মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

-কীভাবে একজন একক মা সুখী হতে পারে? নিজেকে জীবনে অনুপ্রাণিত রাখতে নিজের জন্য স্মার্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। যদিও তোমার সন্তানের উপর ফোকাস করা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে তোমার সমগ্র জীবনকে কেন্দ্র করে তাদের চারপাশে থাকতে পারবেনা। তাই নিজের জন্যও কিছু ব্যক্তিগত লক্ষ্য থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

-একাকীত্ব বোধ এমন এক জিনিস যা অনেকের ভিড়ে থেকেও নিজেকে নিঃসঙ্গ বোধ করিয়ে দেয়। এই একাকীত্ব বোধের সাথে লড়াই করতে হবে। ছবি আঁকা, বই পড়া, গান শোনা বা বন্ধুদের নিয়ে প্রিয় কোন মুভি দেখতে যাওয়ার মতো কাজ করা যেতে পারে।

তুমি তোমার জীবনের স্থপতি। মনে রাখবে প্রতিটি দিন নতুন করে তৈরি হয়। নিজেকে বিশ্বাস ও সম্মান করা তোমার সন্তানের জন্য একটি চরিত্র গঠনের পরিবেশ তৈরী করতে সাহায্য করে।

-ছবি সংগৃহীত

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
চলন বলনজীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

ব্যাক পেইন থেকে মুক্তি? জেনে নাও এখনই

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ৩, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

ব্যাক পেইন বর্তমানে সবচেয়ে সাধারণ শারীরিক সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি। গবেষণায় দেখা যায় যে প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৮জন তাদের জীবনের কোন না কোন সময়ে এই ব্যথার মুখোমুখি হয়। এটি একটি নিস্তেজ, অবিরাম ব্যথা থেকে হঠাৎ তীক্ষ্ম ব্যথা পর্যন্ত হতে পারে। যে কোন বয়সে, যে কোন পরিস্থিতিতে এর যন্ত্রণা শুরু হতে পারে; যা স্বাভাবিক জীবনযাপনের প্রতি পদে পদে বাধার সৃষ্টি করে। কারণ ও উপসর্গের উপর  নির্ভর করে এর চিকিৎসা পদ্ধতি পরিবর্তিত হয়।

মূলত মেরুদন্ড বা স্পাইন সম্পর্কিত ব্যথাকেই আমারা ব্যাক পেইন বলে থাকি। ব্যাক পেইন কেন হয়? এর নির্দিষ্ট কোন উত্তর নেই। মানুষের পিঠ পেশী, লিগামেন্ট, টেন্ডন, ডিস্ক এবং হাড়ের একটি জটিল কাঠামোর সমন্বয়ে গঠিত, যা শরীরকে সমর্থন করার জন্য একসাথে কাজ করে এবং আমাদের চারপাশে চলাফেরা করতে সক্ষম করে। এই উপাদানগুলোর যেকোন একটির সমস্যা হলে ব্যাক পেইন হতে পারে। কখনও কখনও এটি হঠাৎ আসতে পারে- দূর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া বা ভারী কিছু তোলার কারণে বা মেরুদন্ডে বয়স-সম্পর্কিত অবক্ষয়জনিত পরিবর্তনের কারণে এটি ধীরে ধীরে বিকাশ হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, প্রদাহজনিত ব্যাধি বা অন্যান্য চিকিৎসার কারণে এই ব্যথা হয়ে থাকে। আবার আমাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপও এইক্ষেত্রে দায়ী হতে পারে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা বা বসে থাকে, ঘাড় সামনের দিকে চাপিয়ে গাড়ি চালানো বা কম্পিউটার ব্যবহার করা, এমন বেডে শোয়া যা শরীরের জন্য উপযুক্ত নয় ইত্যাদি। এটি সাধারণত শুরুতে একটি নির্দিষ্ট স্থানে লোকাল পেইন থেকে শুরু করে পুরো পিঠে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কখনও কখনও ব্যথা পিঠ থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে যেমন নিতম্ব, পা বা পেটে ছড়িয়ে পড়ে। এই ব্যথার তীব্রতা প্রতিটি ব্যক্তির জন্য পরিবর্তিত হয়।

ঘরোয়া প্রতিকার

হঠাৎ বা তীব্র ব্যথা ডাক্তার বা শারীরিক থেরাপিস্ট দ্বারা পরীক্ষা করা উচিৎ। কিন্তু কখনও কখনও তুমি নিজেই এই বিরক্তিকর ব্যথা এবং অস্বস্তি দূর করতে ঘরোয়াভাবে কিছু ব্যবস্থা নিতে পারো।

ভালো ঘুম

ব্যাক পেইন দেখা দিলে তা ঘুমের জন্য কঠিন হতে পারে। এটি একটি দুষ্টচক্র হতে পারে কারণ যখন তুমি পর্যাপ্ত ঘুমাতে পারবেনা তা ব্যথার মাত্রা অসহনীয় করে তোলে। এক্ষেত্রে পাশ ফিরে শুতে পারো যাতে মেরুদন্ড একটি নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে পারে এবং পিঠের উপর চাপ কমাতে হাঁটুর মধ্যে বালিশ রাখতে পারো। এছাড়াও ম্যাট্রেসও এক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। আরামদায়ক শক্ত ম্যাট্রেস নির্বাচন করতে ভূলবেনা।

সঠিক ভঙ্গি

সঠিক ভঙ্গিমার অভাবেও ব্যথার উদ্রেক হতে পারে, বিশেষ করে যদি তোমাকে দীর্ঘ সময় ধরে বসে থেকে কাজ করতে হয়। স্ক্রিনের সামনে কাজ করতে হলে তা টেবিল বা ডেস্কে এমনভাবে রাখো যাতে বাহুর সমভাবে অবস্থান থাকে এবং পর্দার শীর্ষে চোখ সমান থাকে। অযথা কীবোর্ডের উপর ঝুঁকে কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম

শক্তিশালী পেশী, বিশেষ করে পেটের মাসল পিঠকে সর্থন করতে সাহায্য করে। শক্তি এবং নমনীয়তা উভয়ই ব্যথা উপশমে এবং এটি প্রতিরোধ করতে সহায়তা করতে পারে। যোগব্যায়াম, পাইলেটস এবং তাই চি হলো পেটের কোর এবং নিতম্বের চারপাশের পেশীগুলোকে শক্তিশালী করার কয়েকটি উপায়। বয়স্ক ব্যক্তিরাও ইয়োগার কিছু স্টেপ ফলো করেও উপকার পেতে পারে।

স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা

শরীরের অতিরিক্ত ওজন ঝরানো পিঠের উপর লোড হালকা করে।ওজন কামানো ব্যথায় দারুন কাজ করে কারণ এটি মেরুদন্ডে যান্ত্রিক শক্তির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। যদি মাত্রাতিরিক্ত ওজন হয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শে ডায়েট এবং ব্যায়ামের পরিকল্পনা করে নিতে পারো।

আইস এবং হিট থেরাপি

বেদনাদায়ক জায়গায় বরফের নিয়মিত প্রয়োগ আঘাত থেকে ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে। প্রতিবার ২০ মিনিট পর্যন্ত এটি দিনে কয়েকবার চেষ্টা করো। ত্বকের সুরক্ষার জন্য একটি পাতলা কাপড়ে বরফের প্যাকটি মুড়িয়ে রাখো। কয়েক দিন পর, হিটে স্যুইচ করো। পেশী শিথিল করতে এবং আক্রান্ত স্থানে রক্ত প্রবাহ বাড়াতে সাহায্য করার জন্য একটি হিটিং প্যাড প্রয়োগ করো। এছাড়া শিথিলায়নের জন্য উষ্ণ পানি দিয়ে গোসল করতে পারো। পোড়া এবং টিস্যুর ক্ষতি এড়াতে কখনোই হিটিং প্যাড নিয়ে ঘুমাবেনা।

সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ

আমরা যা খাই তা থেকে ভিটামিন এবং মিনারেল পাওয়া ভালো। কিন্তু যদি কোন প্রকার সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন দেখা দেয় তবে ডাক্তারের পরামর্শে তা নেয়া ভালো। উদাহরণস্বরূপ, অনেকেই পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি পায় না, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি সূর্যালোকের এক্সপোজারের অভাব থেকে বা শরীর খাবার থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি শোষণ করতে পারেনা বলে ঘটতে পারে। ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি পেশী দূর্বলতা এবং ক্র্যাম্প হতে পারে। এক্ষেত্রে যথাযথ সাপ্লিমেন্ট গ্রহনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নাও।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
জীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

চোখের ক্লান্তি, নিমিষেই মিলবে শ্রান্তি

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ২৭, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

আধুনিক জীবন চলার পথ সুগম করার সকল উপকরণ সবসময় আমাদের চোখের জন্য সদয় হয়না। অনেক ডিভাইস, যেমন কম্পিউটার, ফোন এবং ট্যাবলেট থেকে নির্গত নীল আলো আমাদের চোখের জন্য চাপ সৃষ্টি করে। যা চোখের ক্লান্তি, ঝাপসা দৃষ্টি এবং মাথাব্যাথার কারণ হতে পারে। এই ক্লান্তি দূর করার এবং চোখ শিথিল করার উপায় জানতে লেখাটি পড়তে পারো।

আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মধ্যে চোখ হচ্ছে সবচেয়ে স্পর্শকাতর অংশ। দৈনন্দিন জীবনে চোখের উপরেই পড়ে সবরকমের চাপ। আধুনিকায়নের এই যুগে বেশির ভাগ কাজের জন্য আমাদের ইলেকট্রনিক ডিভাইসের উপর নির্ভর থাকতে হয়। এছাড়াও সাম্প্রতিক ভার্চুয়াল শিক্ষার প্রয়োজনে বাচ্চারা স্ক্রিনের সামনে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় কাটাতে পারে। সবকিছু ডিজিটালাইজড হওয়ার কারণে একদিকে যেমন সময় ও শ্রম সাশ্রয় হচ্ছে অন্যদিকে এসব কিছুই আমাদের চোখের উপর অনেক বড় প্রভাব ফেলছে। আমাদের চোখ অনেক সূক্ষ্ম পেশী দ্বারা গঠিত। শরীরের অন্যান্য পেশীগুলোর মতো, যখন আমরা আমাদের চোখের পেশীগুলো অনুশীলন করি, তখন তাদেরও বিশ্রাম দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। চোখকে বিশ্রাম দেয়া, পুরো শরীরকে শিথিল করতেও সাহায্য করতে পারে। চোখের বিশ্রাম ব্যায়াম প্রতিদিন সঞ্চালিত করা উচিৎ কারণ চোখের ফিটনেস পুরো জীবনকালের ভালো দৃষ্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চোখ শিথিলকরণের কিছু কৌশল জেনে নিইঃ

চোখ শিথিলকরণ

এর জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হলো আলো বন্ধ করে দেয়া। হাতে যদি সময় থাকে, তবে কয়েক মিনিট চুপচাপ বসে থাকো কিংবা শুয়ে পড়ো। চোখ বন্ধ করে শ্বাসের দিকে মনোনিবেশ করো। শান্ত শ্বাস মুখের পেশী শিথিল করতে সাহায্য করবে এবং চোখ বন্ধ করলে চোখের চাপ কমবে।

হাতের তালুর ব্যবহার

চক্ষু বিশেষজ্ঞরা এই কৌশলটিকে চক্ষু চিকিৎসক উইলিয়াম বেটস এর ‘দ্য বেটস মেথড’ নামক একটি বিকল্প থেরাপির সাথে যুক্ত করেছেন। হাতের তালু অপটিক স্নায়ু শিথিল করতে পারে এবং একই সাথে চোখকে আলো থেকে বিরতি দিতে পারে। হাত একসাথে ঘষে তাদের উষ্ণ করতে হবে। তারপর তা চোখের বলের উপর চাপ না দিয়ে বন্ধ চোখের উপর কাপ করে রাখো। ধারণা করা হয় যে এটি চোখকে শিথিল করতে সাহায্য করতে পারে।

লাইট এবং ডিভাইস স্ক্রীনে সামঞ্জস্য

বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন ধরনের আলো রিকয়ারমেন্ট করে। তুমি যখন টিভি দেখবে, তখন ঘরকে হালকা ভাবে আলোকিত রাখা চোখের জন্য ভালো। যখন কিছু পড়বে, তখন আলোটি তোমার পিছনে রাখো এবং চোখের বাইরে পৃষ্ঠার দিকে নির্দেশ করো। ডিজিটান স্ক্রিনে, চারপাশের আলোর স্তরের সাথে মেলে উজ্জ্বলতা সামঞ্জস্য করো। পাশাপাশি স্ক্রিনের বৈসাদৃশ্য সামঞ্জস্য করো, যাতে চোখকে দেখতে চাপ দিতে না হয়।

স্ক্রিন ব্রেক নাও

একটানা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার না করে নিয়মিত স্ক্রিন ব্রেক নেওয়া উচিৎ। আইস্ট্রেন এবং শুষ্ক চোখের ঝুঁকি কমাতে বিশেষজ্ঞরা ২০-২০-২০ নিয়ম অনুসরণের সুপারিশ করে। প্রতি ২০ মিনিটের স্ক্রিন টাইম পরে, প্রায় ২০ সেকেন্ডের জন্য প্রায় ২০ ফুট দূরত্বে তাকাও; এটি তোমার চোখ শিথিল করবে এবং তাদের বিরতি দেবে।

উষ্ণ ওয়াশক্লথ প্রয়োগ

তোমার ক্লান্ত, ব্যথাযুক্ত চোখের উপর গরম পানিতে একটি ওয়াশক্লথ ভিজিয়ে তা ৫-১০ মিনিটের মতো প্রয়োগ করে দেখতে পারো। এর দ্বারাঃ

-আর্দ্রতা যোগ করে

-ব্যথা কমায়

-রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়

-পেশীর খিঁচুনি শিথিল করে

কম্পিউটার সেটআপ পরিবর্তন

নিশ্চিত করতে হবে যে, স্ক্রিনটি তোমার মুখ থেকে প্রায় বাহুর দৈর্ঘ্য ২০-২৬ ইঞ্চি দূরে রয়েছে। পর্দার কেন্দ্রটি চোখের স্তরের সামান্য নিচে (৪-৫ ইঞ্চি) হওয়া উচিৎ। যারা ল্যাপটপ বা আই প্যাডে কাজ করে, তা কোলে রেখে কাজ করলে ঘাড় নুইয়ে দেখতে হয়। এর ফলে অনেক সমস্যা হতে পারে। উত্তম হয় এগুলোকে যদি ডেস্কটপের মতো করে ব্যবহার করা যায়। টেবিলে রেখে অথবা বই বা অন্যকিছু দিয়ে এর উচ্চতা বাড়িয়ে নাও।

টি ব্যাগের ব্যবহার

টি ব্যাগ গরম পানীয়ের চেয়ে ভালো কাজে দেয়। এগুলো চোখের জন্য একটি আরাদায়ক ঠান্ডা সংকোচ হিসেবে কাজ করে। টি ব্যাগ ব্যবহারের পর তা ফেলে না দিয়ে ফ্রিজে একটি পরিষ্কার পাত্রে রেখে দাও। একবার এগুলো ঠান্ডা হয়ে গেলে চোখকে প্রশমিত করতে এবং চোখের ফোলা ভাব কমাতে তা চোখের পাতায় রাখো।

চোখের ব্যায়াম করো

চোখের চারপাশে যে পেশী আছে, তারা একটি ওয়ার্কআউট থেকেও উপকৃত হতে পারে। তোমার আঙুল তোমার চোখ থেকে কয়েক ইঞ্চি ধরে রাখো এবং এটিতে ফোকাস করো। তারপর দূরত্বের দিকে ফোকাস করো, তারপর আবার আঙুলের দিকে ফিরে যাও। এইভাবে কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করো। এছাড়াও, আরেকটা করতে পারো; চোখ বন্ধ করে, সেগুলোকে সিলিঙয়ের দিকে রোল তারপর মেঝেতে নাও। ডানদিকে তাকাও, তারপর বামে। এই ব্যায়ামগুলো চোখের ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

চোখ অনেক সংবেদনশীল এক অঙ্গ। বেশি সমস্যা দেখা দিলে কালক্ষেপণ না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়াই সবচেয়ে উত্তম। তারপরে, চোখকে বিশ্রাম দিতে এবং তাদের চাপ এড়াতে এই টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারো।

–ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.অন্দরের ডায়েরিগ্রুমিংজীবনজীবনযাত্রাসমস্যাস্বাস্থ্য

ভুলে যাওয়া রোধের উপায়

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ২০, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

আধুনিকতার এই যুগে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে সবকিছুরই বদল হচ্ছে। বদলে যাচ্ছে আমাদের লাইফ স্টাইল। কিন্তু এতো কিছুর মাঝেও বেড়ে যাচ্ছে স্ট্রেস, মানসিক অস্থিরতা। যার প্রভাব পড়ে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে। ছোট খাট জিনিস ভুলে যাওয়া খুবই নিত্ত নৈমত্তিক ব্যাপার। কিন্তু এর পরিমান যখন বেড়ে যায় তখনই হয় বিপত্তি। ভুলে যাওয়া রোধ করতে এবং ব্রেনকে কর্মক্ষম রাখতে কি করণীয় আসো জেনে নিই।

হতে পারে তুমি একটি রুমে চলে গেছো এবং ভূলে গেছো কেন সেখানে গিয়েছিলে?  এবং অন্তত কয়েকবার তোমার চাবি বা চশমা এক জায়গায় রেখে পুরো ঘর খুঁজে তোলপাড় করে রেখেছ। দোকান থেকে অনেক কিছু কিনে আনলে কিন্তু দেখলে যেটাই বেশি প্রয়োজনীয় তাই ভূলে গেলে। কি পরিচিত লাগছে ঘটনাগুলো? এই ধরনের কাহিনীগুলো প্রায় সবারই জীবনে কমবেশি ঘটে থাকে। অনেকেই এই স্মৃতি ঘাটতি নিয়ে চিন্তিত থাকে। তারা ভয় পায় যে আলঝেইমারের রোগের মতো গুরুতর অবস্থার দিকে যাচ্ছে কিনা। মাঝে মাঝে ভূলে যাওয়া জীবনের একটি স্বাভাবিক অংশ, যা আমরা বড় হওয়ার সাথে সাথে আরো সাধারণ হয়ে উঠে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এটি অ্যালার্মিং কোন বিষয় হয়ে উঠেনা। আমাদের বয়সের সাথে সাথে মস্তিষ্ক সহ সারা শরীরে পরিবর্তন ঘটে। ফলস্বরুপ, লক্ষ্য করলে দেখবে যেকোন নতুন কিছু শিখতে আগের চেয়েও তোমার বেশি সময় লাগছে। সৌভাগ্যবশত স্নায়ুবিজ্ঞানীগণ আশ্বস্ত করেছে যে এইগুলো স্বাভাবিক এবং কিছু নির্দিষ্ট অভ্যাস এবং অনুশীলনগুলো প্র্যাকটিসের মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি উন্নত করা যায়।

-যদি তুমি সবসময়ই কিছুনা কিছু ভুলে যাও, তবে এটি কমিয়ে আনার দুর্দান্ত উপায় হলো জিনিস যত্রতত্র না রেখে যথাস্থানে রাখা। হোক সেটা চাবি, মানিব্যাগ কিংবা রিমোট- এগুলো একই জায়গায় রাখা এবং বিশেষত এমন একটি জায়গায় রাখা যা তুমি নিয়মিত দেখ।

-টু ডু লিস্ট করে রাখা। প্রতিদিনকার কি কাজ করতে হবে তার প্রায়োরিটি অনুযায়ী লিস্ট করে রাখলে কাজ সম্পাদনে সুবিধা হবে।

-খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। সবুজ শাক, ইলিশ মাছ এসবে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই অনেকেই এসব খেয়ে বুদ্ধি তথা স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপদেশ দেন।

-সৃজনশীল কাজে যুক্ত থাকলে একাগ্রতা বাড়ে। ফলে মনযোগী হতে সুবিধা হয়।

-ক্রসওয়ার্ড পাজল সলভ করো। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সাইকিয়াট্রিস এবং নিউরলজির অধ্যাপক দেবানন্দ এবং ডিউক ইউনিভার্সিটির মেডিসিনের অধ্যাপক মুরালি ডোরাইস্বামি বলেন, তারা ৭৮ সপ্তাহ ধরে ১০৭ ভলেন্টিয়ারের উপর স্টাডি করে দেখেছ যে, যাদের নিয়মিত ক্রসওয়ার্ড পাজল করতে বলা হয়েছিল তাদের স্মৃতিশক্তি হ্রাস বা অভাব পরিপ্রেক্ষিতে তাদের তুলনায় অনেক ভাল ফল করেছে যাদের ভিডিও গেম খেলে একই পরিমাণ সময় ব্যয় করতে বলা হয়েছিল।

-আনন্দের জন্য পড়া শুরু করো। সাম্প্রতিক এক গবেষণার মাধ্যমে গবেষকরা নির্ধারণ করেছে যে এমন জ্ঞানীয় অভ্যাস আছে যা গেম খেলা এবং ক্রসওয়ার্ড পাজল ডুয়িংকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। তারা দেখেছে যে আনন্দের সহকারে পড়া বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের স্মৃতিশক্তি শক্তিশালী করে।

-পর্যাপ্ত ঘুমানো। কীভাবে ওজন কমানো যায় থেকে শুরু করে কীভাবে মেজাজ উন্নত করা যায় সব কিছুর পরামর্শ দেওয়া নিবন্ধগুলোতে পর্যাপ্ত ঘুমানোর কথা বলা হয়ে থাকে। এ থেকে বুঝা যায় ঘুম শরীর ও মন উন্নত করতে কতটা জরুরী। ঘুমের অভাব কীভাবে আমাদের প্রভাবিত করে তা বিচার করার বিষয়গত ক্ষমতা আমরা হারিয়ে ফেলি- তাই আমরা জানি না আমাদের স্মৃতি কতটা খারাপ হয়। তাই এর একমাত্র উপায়? ঘুমকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

এই ধরনের টুকিটাকি ভূলে যাওয়া আমাদের জীবনের ব্যস্ততা, স্ট্রেসের পরিমানের উপর নির্ভর করে। একটি হেলদি লাইফ স্টাইল ফলো করা, সুষম খাবার খাওয়া, শরীরচর্চা করা ইত্যাদির অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তবে পরিস্থিতি যদি মনে হয় আয়ত্ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছে, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়াই উত্তম।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.অনুসঙ্গঅন্দরের ডায়েরিআয়নাঘরদেহ ও মনরূপ ও ফ্যাশনসচেতনতাসমস্যাস্বাস্থ্য

শীতে ত্বকে চুলকানি? সমাধান নাও এখনই

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ২০, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

শীতে ত্বক শুষ্ক হয়ে উঠেছে? শুষ্কতার পাশাপাশি চুলকানি ত্বকের সাথে লড়াই করতে হচ্ছে? আমরা জানি, ত্বকের চুলকানি, র‍্যাশের সাথে মোকাবিলা করা কতটা হতাশাজনক হতে পারে- বিশেষত এই শীতকালে! তবে জেনে নাও এই পরিস্থিতিতে তুমি একা নও, আমাদের বয়স যাই হোক না কেন, আবহাওয়া ঠান্ডা হয়ে গেলে আমাদের মধ্যে বেশিরভাগই ফ্লেকি, চুলকানি ত্বকের সম্মুখীন হয়। এক্ষেত্রে আমরা কী করতে পারি শুষ্ক ত্বককে প্যাম্পার এবং প্রতিরোধ করতে? আসো এই ব্যাপারে জেনে নিই।

শীতকালীন চুলকানি, যা প্রুরিটাস হিমেলিস নামেও পরিচিত, এটি এক ধরনের ডার্মাটাইটিস যা ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। এটি শরীরের যেকোন অংশে হতে পারে। শীতের এই সময়টাতে বাতাসে শুষ্কভাব বেড়ে যায়। এই শুষ্ক বাতাস ত্বকের উপর থেকে কেড়ে নিচ্ছে আর্দ্রতা। এর ফলে ত্বকও হচ্ছে শুষ্ক। এই শুষ্ক ত্বক ফেটে গিয়ে চুলকানির সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এমনকি চুলকাতে চুলকাতে রক্ত পর্যন্ত বেরিয়ে আসতে পারে। এই শীতকালীন চুলকানির চিকিৎসার জন্য বেশ কয়েকটি বিকল্প রয়েছে। প্রায়শই এগুলোর সংমিশ্রণ চুলকানি ত্বক থেকে  মুক্তি পেতে সহায়তা করবে।

উষ্ণ পানিতে গোসল করা

শীতে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এমতাবস্থায় অনেক গরম পানি ব্যবহার না করে ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করলে ভালো হবে। এই সময় ক্ষারীয় সাবান যতটুকু সম্ভব পরিহার করলেই ভালো। শরীরের যে অংশে সত্যিই প্রয়োজন সেগুলোতে শুধু ব্যবহার করো। এছাড়া এর স্থলে হালকা ক্লিনজার বা সাবান মুক্ত পণ্য ব্যবহার করো যা তোমার শরীর থেকে প্রয়োজনীয় তেল অপসারণ করবেনা।

ময়েশ্চারাইজার, ময়েশ্চারাইজার এবং ময়েশ্চারাইজার

শুষ্ক ত্বকের রক্ষায় ময়েশ্চারাইজারের কোন বিকল্প নেই। গোসলের পরে শরীর ভেজা থাকা অবস্থায় এবং তোমার ত্বক শুষ্ক বা চুলকানি অনুভব করার পরে লোশন, ক্রিম বা তেল  প্রয়োগ করো। একটি ঘন, সুগন্ধ মুক্ত ক্রিম ব্যবহার করো এবং তোমার সাথে সর্বদা একটি ছোট টিউব রাখো। এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল চলতে পারে। এক্ষেত্রে চুলকানি দমনকারী ক্রিম ব্যবহার করা এড়িয়ে চলো, কারণ এতে এমন ক্যামিকেল রয়েছে যা শীতের চুলকানিকে আরো খারাপ করতে পারে।

পর্যাপ্ত পানি পান

শীতের দিনে আমাদের দেহ থেকে ঘাম কম নির্গত হওয়ার দরুন আমরা তেমন তৃষ্ণা বোধ করিনা। এতে করে আমাদের মাঝে পানি পানেও তেমন দেখা যায়না। কিন্তু শীতের দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি  ও অন্যান্য তরল পান করা অত্যন্ত জরুরী। পানির অভাবজনিত রুক্ষতা কিন্তু কোন ময়েশ্চারাইজারেই দূর হবেনা। তাছাড়া শরীরে জমে থাকা যাবতীয় টক্সিন বের করে দিতেও পানি তোমার প্রধান সহায় হতে পারে।

বিজ্ঞতার সাথে পোশাক নির্বাচন

সিল্ক এবং সুতির মতো হালকা ওজনের পোশাক পরুন এবং ফ্ল্যানেল ও উলের মতো ত্বক জ্বালাদায়ক কাপড় থেকে দূরে থাকো। বিরক্তিকর সংস্পর্শ কমাতে সুগন্ধ মুক্ত লন্ড্রি ডিটারজেন্ট ব্যবহার করো।

সূর্যের আলো শরীরে লাগানো

সকালের রোদ অন্তত আধ ঘন্টার জন্য রোদ লাগানো জরুরী। ভিটামিন ডি স্তরে কোন ঘাটতি না  থাকলে ত্বক ভালো থাকবে।

অতিরিক্ত সমাধান

-ঘরোয়া প্রতিকার এড়িয়ে চলো যাতে অ্যালকোহল বা উইচ হ্যাজেল অন্তর্ভূক্ত থাকে

-শীতকালে সানস্ক্রিন ব্যবহার করো

-ওমেগা ৩ এভং ভিটামিন এ, সি এবং ই সমৃদ্ধ খাবার খাও

কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবে

যদিও ত্বক বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করা কখনই খারাপ ধারনা নয়, তবে কখনও কখনও তোমার লক্ষণগুলো ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট গুরুতর কিনা তা বলা কঠিন। উপরের টিপস ফলো করার পরেও যদি ত্বকে এখনও চুলকানি, ফ্ল্যাকি দেখা দেয়, তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া এটাই হাই টাইম। বেদনাদায়ক, চুলকানি ত্বকের বোঝা কেউই ইচ্ছা করে বহন করতে রাজি নয়। তাই চুলকানি থেকে পরিত্রান পেতে টিপস গুলো ফলো করো আর যন্ত্রনামুক্ত শীত উপভোগ করো।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • শীতের সাজকথন

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook