রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

সম্ভাবনা

কর্মক্ষেত্রসম্ভাবনাসাফল্য

‘ঘরের কাজগুলো ভাগাভাগি হওয়া দরকার’

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ১৬, ২০২৩

কর্মজীবি নারীর প্রধান সমস্যা হলো অফিস সামলেও তাকে ঘরের কাজ করতে হয়। ঘরের কাজগুলো ভাগাভাগি হলেই নারীরা আরো অনেক বেশি নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাবে বলে আমি মনে করি এভাবেই বলছিলেন নেক্সাস টেলিভিশনের অনুষ্ঠান নির্মাতা জাকিয়া সুলতানা– তিনি নারী দিবসে রোদসীর সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুরাইয়া নাজনীন

ক্যারিয়ার শুরু করার সেই সময়ের গল্প যেমন ছিল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে মাস্টার্স করে ২০০৬ সালে বৈশাখী টিভিতে সহকারী প্রযোজক হিসাবে কর্মজীবন শুরু হয়। সম্মান ও সফলতার সাথে এখন পর্যন্ত কাজ করে যা”িছ। প্রযোজনার পাশাপাশি সরাসরি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করা হয়।

জীবনের প্রতিবন্ধকতা ছিল কী? থাকলে তা কেমন আর কিভাবে সেগুলো অতিক্রম করা হয়েছে?

আমাদের সমাজে নারীর যে অবস্থান সেই জায়গা থেকে বলতে গেলে আমি খানিকটা প্রিভিলেজড। আমার পরিবারে নারী হিসাবে আলাদাভাবে ট্রিট করেনি কেউ কখনও আর বিয়ের পরও আমি ততটাই সুবিধা পেয়েছি যতটা বিয়ের আগে পেতাম। তবে নারী হিসেবে সামাজিক ঘেরাটপগুলো আমাদের মগজে প্রথিত থাকে বলে কিছুক্ষেত্রে আমরা পিছিয়েই থাকি। সন্তান জন্মের পর আমার কর্মবিরতি ছিল। বাচ্চাকে টেক কেয়ারের জন্য নির্ভরযোগ্য অবস্থা না থাকায় কর্মবিরতি নিতে হয়। যদিও আমি সেসময়টাকে আমার উচ্চশিক্ষায় কাজে লাগাই।

নারী হিসেবে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় ঘরে ও বাইরে?

কর্মজীবি নারীদের প্রধান সমস্যা হলো অফিস সামলেও তাকে ঘরের কাজ করতে হয়। ঘরের কাজগুলো ভাগাভাগি হলেই নারীরা আরো অনেক বেশি নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পাবে বলে আমি মনে করি। আর অন্যদিকে অফিসে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য তাকে পুরুষ সহকর্মীর চাইতে বেশি কাজ করতে হয় নারীদের। আবার নারীরা অফিসে ভালো করলে বাহবার বদলে পুরুষ সহকর্মীরা তার মনোবল ভেঙে দিতে চেষ্টা করে নানাভাবে। আমাদের দেশে এখনও কখনও কখনও পুরুষের চাইতে কম বেতন দেয়া হয়। নারী-পুরুষের বৈষম্যের কারণে বেসরকারি সংস্থায় সমান যোগ্যতা থাকার পরও কোনো কোনো ক্ষেত্রে নারীর বেতন পুরুষের বেতনের চেয়ে কম। আবার এক অফিসে নারী ও পুরুষ কর্মকর্তা একই পদমর্যাদার হলেও অধস্তনেরা পুরুষ কর্মকর্তাকে যতটা মানেন, নারীর ক্ষেত্রে ততটা না। রাস্তাঘাটে যানবাহন সমস্যা তো রয়েছেই। সবমিলিয়ে নারীর জন্য এখনও আমাদের সমাজব্যবস্থা সহনশীল অবস্থায় পৌঁছায়নি। তাই পরিবেশ ও মানসিকতার বদল হওয়া জরুরী।

নারীর আত্মনির্ভরশীলতার সঙ্গা কি?

আমাদের দেশের নারীরা নিজের মতের গুরুত্ব না দিয়ে বাবা-ভাই-স্বামীর হাত ধরে জীবন পার করে দেয়। কিন্তু সময় বদলেছে। নারীর আত্মনির্ভরশীলতা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। আত্মনির্ভরশীলতা মানে নিজের ওপর নির্ভরশীলতা। একজন নারী যখন অন্যের ওপর নির্ভর না করে নিজেই নিজের অবস্থান তৈরি করেন, তার চাহিদা মেটান, তার পছন্দমত স্বা”ছন্দ্যে চলতে পারেন সেটাই আত্মনির্ভরশীলতা।

 

নারী আত্মনির্ভরশীল হতে হলে কি কি থাকা দরকার বলে মনে হয়?

আত্মনির্ভরশীলতা হলো জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। প্রথমত নারীশিক্ষা জরুরী এরপর তাকে স্বাবলম্বী হতে হবে। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী নারী অনেক বেশি আত্মনির্ভরশীল। একজন মানুষ তার নিজস্ব শক্তি ও আত্মনির্ভরশীলতা থেকেই নিজের স্বাধীনতা অনুভব করে। শুধুই সংসার ও পরিবার প্রতিপালনে নারী কখনোই সুখী হতে পারে না, কারণ চাকরিটা তাঁর কাছে যতটা না আর্থিক প্রয়োজনের, তারচেয়ে বেশি ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য বিকাশের পরিচিতির। তাই নারীর আত্মনির্ভরশীল হওয়া জরুরী। আত্মনির্ভরশীলতার মধ্য দিয়ে যেকোনো অসুবিধাকে জয় করা যায়।

নারীর আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পেছনে সমাজ ও পরিবারের কি কি করনীয় আছে?

আমাদের পরিবার থেকে কন্যা সন্তানদের এভাবেই গড়ে তোলা হয় যে, বিয়ের পর নারীদের প্রধান এবং একমাত্র অবলম্বন স্বামী। স্বামীই তাদের সর্বস্ব, স্বামীই দেবতা। কিš‘ বর্তমান নারীরা ঘরের বাইরেও নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে। দেশ ও দেশের বাইরেও তাদের সমান বিচরণ। তবু মান্ধাতা আমলের প্রথা থেকে তারা মানসিকভাবে এখনও বের হতে পারেনি। আসলে নারীদেরকে এই অবস্থা থেকে বের হতে দেওয়া হয় না। তাই নারীরা পরিবারের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে ওঠে; তাদের নির্ভরশীল করে তোলা হয়। শিশুকাল থেকেই একজন ছেলে সন্তানকে যতটা বহির্মুখী করে গড়ে তোলা হয়, কন্যাসন্তানকে ততটা অন্তর্মুখী। এভাবে নারীরা শৈশব থেকে এত বেশি ঘরমুখো হয় যে, তাদের নির্ভরশীলতাও মজ্জাগত হয়ে পড়ে। তাই নারীরা বাবার বাড়িতে যেমন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ বাবা-ভায়ের দেখানো পথে চলে, তেমনি জীবন পরিচালনা করতে আরও একটু বাড়তি সংযোজন ঘটে স্বামীর পরিবারে এসে। হুট করে বিপ্লব ঘটিয়ে নিজের অধিকার বা আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা নারীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। যুগ যুগ ধরে যে নিয়মের বেড়াজাল তৈরি হয়েছে পরিবার ও সমাজে তার বদল ঘটতে হবে সমাজ থেকেই। সমান মর্যাদায় গড়ে তুলতে হবে কন্যা ও পুত্র সন্তানকে। শিক্ষার সমান পরিবেশ দিতে হবে। তাহলেই পরিবর্তন আসবে হয়তো।

চাকরি কিংবা ব্যবসা যাই হোক পরিবারের সাপোর্ট কতটুকু দরকার?

পুরোটাই দরকার। পরিবারের বাইরে গিয়ে কাজ করা ভীষণ কষ্টসাধ্য। পরিবারের সবার সহযোগিতা পেলে তার জন্য সবকিছু সহজ হয়ে যায়। আর নারীরা কাজ করার ফলে অর্থনৈতিক সুফল তো সবাই ভোগ করবে তাই সহযোগিতাটা খুব প্রয়োজন।

চ্যালেঞ্জিং পেশায় নারীদের ভূমিকা ও টিকে থাকার লড়াই সম্পর্কে জানতে চাই

শুরুতেই বলেছি, আমি অন্য অনেকের চাইতে বেশ সাপোর্ট পেয়েছি তাই আমার চ্যালেঞ্জ খানিকটা কমই ছিল । পরিবারে মানুষের বাইরের কথা যদি বলি তাহলে বলবো আমি যে বিষয়ে পড়ালেখা করেছি তখন শুনতে হতো নাটক বিষয়ে পড়ে কী করবো, ক্যারিয়ার কী হবে ইত্যাদি। আমি যে সময়ে জবে জয়েন করি তখন বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ভরপুর সময়। রেজাল্ট বের হবার আগেই চাকরী পেয়ে যাই তাই বেকার থাকতে হয়নি। মিডিয়ার কাজটা অন্যান্য অফিস জবের মত না। আমি একজন অনুষ্ঠান নির্মাতা। আউটডোরে শুটিং থাকে, সরাসরি অনুষ্ঠান থাকে ফলে সেই সময়গুলো মেইনটেইন করতে হয়। একটু তো পরিশ্রম হয় কিš‘ আমি বলবো সৃষ্ঠির একটা আনন্দ শেষমেশ পাওয়া যায়।

একজন গনমাধ্যমকর্মী হিসেবে অন্য নারীর অনুপ্রেরণার জায়গা নিশ্চয়ই?

গনমাধ্যমে কাজ করার ফলে এর কন্টেন্ট নির্মাণ করতে নিজেকে হতে হয় বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী। গবেষণা থেকে শুরু করে পান্ডুলিপি তৈরি, উপস্থাপন সম্পাদনা, পরিচালনা। আবার একটি টিম পরিচালনা করার দক্ষতা ও সকলের সাথে মানিয়ে চলার একটা যোগ্যতা তৈরি হয়। নানা ধরনের মানুষের সাথে মেশার সুযোগ যেমন রয়েছে তেমনি নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত অগ্রগণ্য ব্যক্তিবর্গের জীবনযাপন সবকিছুর সাথে একাত্মতার ফলে গনমাধ্যমে কাজ করা মানুষটি একজন শুদ্ধ ও রুচিশীল মনন লাভের সুযোগ পায়। একজন শুদ্ধ, সুচিন্তার মানুষই পারেন সমাজে পরিবর্তন আনতে। নারী উন্নয়নে নারীর আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে দিতে আমরা নির্মান করছি নারীদের মন খুলে কথা বলার একটি প্ল্যাটফর্ম লেডিস ক্লাব। এখানে বিভিন্ন শ্রেনি পেশার নারীদেরকে তাদের কাজ সম্পর্কে কথা বলার সুযোগ তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। গৃহিনী থেকে শুরু করে সবাই এসে কথা বলার সুযোগ পায় ফলে তাদের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। তুমিই প্রথম অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন সেক্টরের প্রথম নারীদের জীবনযাপন, প্রতিবন্ধকতা, সফলতা তুলে ধরা হয় যা অন্য নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার। অনুষ্ঠান নির্মাতা হিসাবে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই ভালো মানের অনুষ্ঠান নির্মাণের প্রতি মনোযোগ থাকে। নির্মাতা হিসাবে নারীরা খুব কম কাজ করেন। সৃজনশীল এই পেশায় সৃষ্টির আনন্দ রয়েছে।

নারীকে স্বাবলম্বি হতে চাকরী না ব্যবসা? কোনটা বেশি সহজ করে

আমাদের দেশে নারী শিক্ষা বৃদ্ধির সাথে সাথে নারী চাকরিজীবীর হার বেড়েছে। তবে প্রথম শ্রেণির চাকরিজীবীদের মধ্যে নারী এখনো অনেক কম। এর কারণ উচ্চশিক্ষার অভাব। এছাড়া নারী দীর্ঘসময় চাকরিতে টিকে থাকে না। বিবাহিত নারীর চাকরিজীবনে অনেক প্রতিবন্ধকতারকতার মধ্যে পড়তে হয়। অনেককেই সন্তান জন্ম বা প্রতিপালনের জন্য স্বামীর জোরাজুরিতে চাকরি ছাড়তে হয়। বদলির কারণেও অনেক নারী হয় চাকরি ছাড়েন, না হয় দুর্বিষহ জীবনযাপন করেন। অনেকে চাকরির অনুমতি পান এ শর্তে যে তাঁর বেতনের পুরোটাই স্বামীর হাতে তুলে দিতে হবে। এত সব হতাশা নিয়ে চাকরি করতে গিয়ে নারীদের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায় আর দিনের বেশির ভাগ সময় অসš‘ষ্টির মধ্যে কাটিয়ে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসু¯’ হয়ে পড়েন তারা। এমনকি আমাদের দেশে এখনো কোনো কোনো অফিসে নারীর জন্য আলাদা প্রক্ষালন কক্ষের সুবিধা নেই। সন্তান পালন বা নানাবিধ কারণে কর্মক্ষেত্রে নারী ঝরে পড়ে। সংসার সামলানো একটা বড় দায়িত্ব হলেও এর অর্থনৈতিক কোন মুল্যায়ন নেই তাই ব্যবসা একটা ভালো পদক্ষেপ হতে পারে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাংক নারী উদ্যেক্তাদের জন্য লোনের সুযোগ দিচ্ছে। ব্যবসা হতে পারে নারীর আত্ম কর্মসংস্থানের ভালো একটা ক্ষেত্র। এতে বাড়ির সংস্পর্শে থেকেই ঘর বাহির দুইই সামলানো যাবে।

এবার নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘নারী-পুরুষের সমতায় ডিজিটাল প্রযুক্তি’ এ বিষয়ে কিছু বলুন

ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেট ভিত্তিক নানা কর্মকান্ডে নারীরা পিছিয়ে নেই। করোনাকালীন সময়ে ই কর্মাসে নারীর অগ্রগতি চোখে পরার মতো। তারা যেমন আত্মনির্ভরশীল হয়েছে তেমনি পরিবারের পাশে থেকে দেশের অর্থনীতির চাকাকে আরো বেশি জোরদার করেছে নারী। সামনে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে সফল করতে হলে নারী পুরুষ সবাইকে সমানভাবে কাজ করতে হবে; ডিজিটাল যুগের সাথে সমানভাবে দক্ষ হতে হবে নারী পুরুষ সকলকে।

সমাজের কথিত দৃষ্টিভঙ্গি আছে নারী মানেই না পারার দলে’ তাই কী?

নারী মানেই এক শক্তির আধার। একজন নারী প্রকৃতিগতভাবেই ধারণ করার শক্তি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। যে জন্ম দিতে পারে তার পক্ষে সব কিছুই করা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন পারিপার্শ্বিক সহযোগিতা। আর প্রয়োজন সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। তাহলেই দেশের অগ্রগতি দ্রুত সম্ভব। নারীদেরকেও দৃঢ় মনোহল রাখতে হবে। আমি নারী আমি সব পারি নিজের প্রতি এই বিশ্বাস রাখতে হবে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
বিদেশসম্ভাবনা

ফ্রান্সের জাতীয় ক্রিকেট বোর্ডের স্পন্সর হলেন সাত্তার আলী

করেছে Suraiya Naznin ফেব্রুয়ারী ২৬, ২০২৩

 

 

রোদসী ডেস্ক: ফ্রান্সের জাতীয় ক্রিকেট বোর্ড কর্তৃক ফ্রান্স-বাংলাদেশ কুটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত “ফ্রান্স-বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের স্পন্সর হলেন ফ্রান্সে বাংলাদেশী মালিকানাধীন দুই কোম্পানি শাহ্ ও মীর্জা গ্রুপ।

 

প্যারিসের উপকণ্ঠ সেন্ট মাউরিসে ফ্রান্স জাতীয় ক্রিকেট বোর্ডের হল রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ও চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। এসময় চুক্তিস্বাক্ষর শেষে ফ্রান্স ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি প্রভু বালানের হাতে স্পন্সর চেক তুলে দেন শাহ্ গ্রুপের চেয়ারম্যান সাত্তার আলী সুমন ওরফে শাহ্ আলম ও মীর্জা গ্রুপের চেয়ারম্যান মীর্জা মাজহারুল।

 

এসময় ফ্রান্স ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি প্রভু বালান বলেন, বাংলাদেশী মালিকানাধীন কোম্পানি কর্তৃক জাতীয় ক্রিকেট বোর্ডের স্পন্সর হওয়া একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এঘটনায় আমরা খুবই আনন্দিত। এর ফলে ফ্রান্স ক্রিকেট অনেক দূর এগিয়ে যাবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। সর্বপরি জয় হবে বিশ্ব ক্রিকেটের।

 

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে ফ্রান্স জাতীয় দলে খেলছেন বাংলাদেশী বংশদ্ভূত ক্রিকেটার জুবায়ের। বোর্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে আরো অনেকে। যারা অদূর ভবিষ্যতে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাবেন।

 

শাহ্ গ্রুপের চেয়ারম্যান সাত্তার আলী সুমন ওরফে শাহ্ আলম বলেন, ফ্রান্স ক্রিকেট বাংলাদেশী তরুণদের জন্য একটি বিরাট সম্ভাবনার জায়গা। যেখানে জাতীয় দলে জুবায়েরের মতো মেধাবী ক্রিকেটার খেলার সুযোগ পেয়েছেন। আরো অনেকেই আছেন সামনের সারিতে। যা দেখে একজন বাংলাদেশী হিসেবে গর্বে বুকটা ভরে ওঠে। তাদের প্রচেষ্টার সঙ্গে শামিল হতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।

 

বাংলাদেশ কমিউনিটির নতুন প্রজন্মকে ক্রিড়ামুখি করে ফ্রান্সের মাটিতে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করাই আমার লক্ষ্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মীর্জা গ্রুপের চেয়ারম্যান মীর্জা মাজহারুল বলেন, বিশ্বের বুকে লাল সবুজের পতাকাকে তুলে ধরতেই আমরা ফ্রান্স ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। আমরা চাই বাংলাদেশ কমিউনিটির তরুণ প্রজন্ম মুলধারার ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হোক। আর বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করুক।

 

এপ্রিল মাস থেকে শুরু হওয়া ফ্রান্স-বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে মোট ২৪টি দল অংশ নেবে। যার মধ্যে বাংলাদেশ কমিউনিটির রয়েছে ৪টি দল। চুক্তিস্বাক্ষর শেষে সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্স জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য জুবায়ের, বাংলাদেশ ক্রিকেট ক্লাব-ফ্রান্সের সভাপতি আজিজুল হক সুমন ও বেঙ্গল টাইগার ক্রিকেট ক্লাব- ফ্রান্সের সভাপতি আরিয়ান খান রাসেল।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নারীসংগ্রামসচেতনতাসম্ভাবনা

অভিবাসী নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি

করেছে Suraiya Naznin জানুয়ারী ১১, ২০২৩

নাজমুল হুদা খান

অভিবাসী নারী শ্রমিকদের অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। তারা অনেক বেশি অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকেন। ডায়রিয়া, যক্ষ্মা, চর্মরোগ, জন্ডিসসহ নানাবিধ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য রয়েছে।

বৈশ্বিক অর্থনীতির বর্তমান প্রেক্ষাপটে অভিবাসী শ্রমিকেরা দেশের অর্থনীতি মজবুত করতে জোরালো ভূমিকা রাখছেন। বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজারে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বের ১৭৪টির বেশি দেশে প্রায় দেড় কোটি অভিবাসী শ্রমিকের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সমৃদ্ধ করছে এবং শতকরা ১২% জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রাখছে। এই অভিবাসীদের উল্লেখযোগ্য অংশ নারী শ্রমিক। ২০০৪ সালে অভিবাসী নারী শ্রমিকের শতকরা হার ছিল মাত্র ৪ শতাংশ, এক যুগের ব্যবধানে অর্থাৎ ২০১৫ সালে এর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৯ শতাংশ। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০ শতাংশে উন্নীতকরণ; যদিও করোনা অতিমারিতে এ লক্ষ্যমাত্রায় ছেদ পড়েছে।

বাংলাদেশি অভিবাসী নারী শ্রমিকদের প্রায় ৯০ শতাংশই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কর্মরত। বর্তমানে সৌদি আরবে দুই লক্ষাধিক নারী শ্রমিক রয়েছে, আরব আমিরাত ও জর্ডানে আছে দেড় লক্ষাধিক অভিবাসী নারী, লেবাননে লক্ষাধিক, ওমানে প্রায় এক লাখ। এ ছাড়া কুয়েত ও বাহরাইনে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। এসব নারী অভিবাসী শ্রমিক উল্লিখিত দেশগুলোতে গৃহকর্মী, হাসপাতাল, পোশাকশিল্প, বিভিন্ন কলকারখানা, অফিস, কৃষি খামার, মার্কেট, রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি কর্মকা-ে নিযুক্ত রয়েছে। পুরুষ কর্মীদের প্রবাসে গমনের বিষয়ে সমাজ ও পরিবারের বাধাবিপত্তি না থাকলেও নারীদের নানা ধরনের বিপত্তি পেরিয়ে অগ্রসর হতে হয়। অথচ রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র দেখা যায়। পুরুষ শ্রমিকেরা যেখানে উপার্জিত আয়ের ৫০ শতাংশ দেশে প্রেরণ করে থাকেন; সেখানে নারীদের এর পরিমাণ ৯০ শতাংশ।

অভিবাসী নারী শ্রমিকদের অপেক্ষাকৃত বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়। তারা অনেক বেশি অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকেন। গৃহস্থালি, রেস্টুরেন্ট, কলকারখানার গরম, আর্দ্র ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে হয় বলে অনেকেরই ডায়রিয়া, যক্ষ্মা, চর্মরোগ, জন্ডিসসহ নানাবিধ সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য রয়েছে। পশুপাখির খামারের কর্মরতদের মধ্যে যক্ষ্মা, চোখের নানাবিধ ব্যাধি এবং পেশি ও অস্থিসন্ধিতে দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা ও প্রদাহ দেখা দেয়। খনি ও অন্যান্য কারখানায় কর্মরতদের ফুসফুসের কর্মক্ষমতা হ্রাস, উ”চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ক্যানসার, প্রভৃতি রোগে ভুগতে দেখা যায়। খাবারের রেস্টুরেন্ট ও খাবার তৈরির কাজে নিয়োজিতরা খাদ্যনালি, পরিপাকতন্ত্র, লিভারসহ নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংক্রামক ব্যাধিতে ভুগে থাকেন।

প্রবাসী নারী শ্রমিকেরা বিভিন্ন সামাজিক অসংগতি, বৈষম্য ও অপরিচিত পরিবেশের কারণে শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা বৃদ্ধি ঘটে। অধিকাংশ নারী গৃহশ্রমিককে অতিরিক্ত কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা যায়। তারপরও মুখ বুজে সহ্য করে এবং নিজের অসুস্থতাকে লুকিয়ে বিদেশের মাটিতে কামড়ে পড়ে থাকতে হয়। নারী শ্রমিকদের অধিকাংশেরই নিরাপত্তাহীন বারান্দা, রান্নাঘর, স্টোররুমে রাতযাপন করতে হয়। এমন পরিস্থিতিতে অনেককেই দৈহিক নির্যাতন ও যৌন নিপীড়নের মুখোমুখি হতে দেখা যায়। ফলে ভুক্তভোগী নারী শ্রমিকদের যৌনবাহিত রোগ, এইডস, অনিচ্ছাকৃত ও অবৈধ গর্ভধারণ, অনিরাপদ গর্ভপাতের মতো ঘটনা সংঘটিত হয়। এ ধরনের অসহ্য নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং ডিপ্রেশন, সিজোফ্রেনিয়াসহ নানাবিধ মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। এমনকি আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটতে দেখা যায়। উপরš‘ পরিবারের কাছ থেকে দীর্ঘদিন আলাদা থাকা, সামাজিক ও পারিবারিক স্নেহ-মমতা থেকে বঞ্চনা, একাকিত্ব, দারিদ্র্য; সব মিলিয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হয়।

 

নারী শ্রমিকেরা অসুস্থতার পরও বিভিন্ন বাধাবিঘ্নর কারণে অথবা চিকিৎসাকেন্দ্রসমূহে প্রবেশাধিকার কিংবা ইনস্যুরেন্স না থাকার কারণে চিকিৎসা-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালমুখী হতে পারলেও ভাষা সমস্যা বা অদক্ষতার কারণে সঠিক চিকিৎসাটি পায় না। অনেক সময় বেতন কম পাওয়া বা বেতন না পাওয়ার ভয়ে শারীরিক অসুস্থতাকে পুষে রাখে; যা পরে জটিল আকারে রূপ নেয়। অবৈধ পথে গমনকারী বা অবৈধ ভিসা পাসপোর্টধারী নারী শ্রমিকদের অবস্থা আরও প্রকট।
নারী শ্রমিকেরা বিদেশ গমনকালে ফিটনেস টেস্টেও বিড়ম্বনার শিকার হয়। অনেক সময় মেডিকেল পরীক্ষার ফলাফল জালিয়াতি করে ফিটনেসের জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়। ফিট শ্রমিককে আনফিট কিংবা আনফিটকে ফিট করতে অর্থ প্রদানে বাধ্য করা হয়।

 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) গবেষণার তথ্যমতে, ৩৮ শতাংশ নারী বিদেশে যাওয়ার পর শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, ৫২ শতাংশ নারী শ্রমিককে জোর করে অতিরিক্ত কাজে বাধ্য করা, ৬১ শতাংশ বিদেশে খাদ্য ও পানির অভাব, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে তথ্য উঠে এসেছে। ৮৭ শতাংশ নারী শ্রমিক প্রবাসে সঠিক চিকিৎসাসেবা পান না বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। চাকরি হারিয়ে বা দেশে ফিরে ৮৫ শতাংশ নারী হতাশাগ্রস্ত, ৬১ শতাংশ ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন, ৫৫ শতাংশ শারীরিকভাবে ও ২৯ শতাংশ মানসিকভাবে অসুস্থতায় ভুগে থাকেন। এমনকি বিদেশ থেকে হেয়প্রতিপন্ন হয়ে দেশে ফেরত আসার পর নারী শ্রমিকেরা সমাজ ও পরিবারের কাছে অসম্মানিত হচ্ছেন। ৩৮ শতাংশ নারী চরিত্রহীনা বলে গণ্য, ২৮ শতাংশ দাম্পত্যজীবন ক্ষতিগ্রস্ত এবং ১৫ শতাংশ তালাকপ্রাপ্ত হন। বিদেশ ভ্রমণের প্রাক্কালে নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও সেবাবিষয়ক তথ্যাদি পুরোপুরি অবগত করা হয় না। এবং বিদেশে তাদের চিকিৎসাসেবাবিষয়ক তথ্যসংবলিত চুক্তিনামাও অনেক ক্ষেত্রে থাকে না।

 

অভিবাসী শ্রমিক ও নারী শ্রমিকের স্বাস্থ্যসেবা সুনিশ্চিতের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গুরুত্বারোপ করেছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) সব দেশসমূহকে অভিবাসী শ্রমিকদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসী শ্রমিক অধিকার কনভেনশন সব অভিবাসী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা; এমনকি অবৈধ শ্রমিকের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের ওপর জোরারোপ করেছে। সুতরাং অভিবাসী শ্রমিকদের স্বাগতিক দেশসমূহকে শ্রমস্বাস্থ্যআইন সঠিকভাবে নিশ্চিতে এগিয়ে আসা প্রয়োজন। শ্রমিক নিয়োগকৃত কোম্পানিসমূহকে স্বাস্থ্যসেবা চুক্তিনামা পালনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কর্মকান্ডে নজরদারি বাড়ানো উচিত।

 

মালিকপক্ষের অভিবাসী শ্রমিকদের প্রাথমিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে এগিয়ে আসা দায়িত্ব ও কর্তব্য। শ্রমিক নিয়োগ চুক্তিপত্রে হেলথ ইনস্যুরেন্স, চিকিৎসা-সুবিধা, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা, জখম ও মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ প্রদানের বিষয়গুলো স্পষ্টীকরণ করা উচিত। বাংলাদেশে অভিবাসী শ্রমিক ও নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি লাঘবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশের আলোকে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সুনির্দিষ্ট পলিসি ও ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছে। আইএলওর সহায়তায় অভিবাসী শ্রমিকের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে তিন বছর মেয়াদি জাতীয় কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছে। অভিবাসী আইন ২০১৩ এবং অভিবাসীকল্যাণ ও নিয়োগ আইন ২০১৬-তে জখম ও মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ এবং শ্রমিকের নিরাপদ ও সম্মানজনক কাজ এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় অভিবাসীদের সঠিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, হেলথ ইনস্যুরেন্স, সামাজিক ও স্বাস্থ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং স্বাস্থ্যগত কারণে ফেরত আসা অভিবাসী শ্রমিকের তথ্য-উপাত্তের প্রোফাইল সংরক্ষণের কাজ করছে।

 

অভিবাসী শ্রমিক, বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্ব প্রদান করে সব অভিবাসী শ্রম আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। অভিবাসী শ্রমিকের অভিবাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে পৃথক স্বায়ত্তশাসিত স্বাস্থ্য বিভাগ গঠন করা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট এনজিও এবং ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিষয়সমূহ বাস্তবায়ন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন করতে ভূমিকা রাখতে এগিয়ে আসতে হবে। অভিবাসী নারী শ্রমিকের সমাজ ও পরিবারকে তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধার আসনে মর্যাদা প্রদান করতে হবে।
রাষ্ট্রের অর্থনীতি সুদৃঢ়, সামাজিক ও পরিবারের স”ছলতা আনয়নে জীবনের প্রতিটি স্তরে ঝুঁকি নিয়ে অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে নারীরা সাহসী ভূমিকা রাখছে। জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থাসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংগঠন নারীর ক্ষমতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সারা বিশ্বে ভূমিকা রাখতে উৎসাহ প্রদানের পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্য ও সম্মান সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় গঠন ও বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অভিবাসী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্বটি সুচারুরূপে পালনে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি পরিবার ও সমাজের অংশ হিসেবে তাদের পাশে সদা আমাদের দাঁড়াতে হবে।

লে. কর্নেল নাজমুল হুদা খান
এমফিল, এমপিএইচ
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
সাবেক সহকারী পরিচালক, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুর্মিটোলা ঢাকা।

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিআমরা গড়িপ্যারেন্টিংসচেতনতাসম্ভাবনা

সন্তানদের সৃজনশীলতা বিকাশের উপায়

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

যখন আমরা ক্রিয়েটিভিটি বা সৃজনশীলতা সম্পর্কে কথা বলি, আমরা প্রায়শই মনে করি এটি এমন একটি প্রতিভা যার সাথে আমরা জন্মগ্রহণ করেছি। হয় তুমি স্বাভাবিকভাবেই একজন সৃজনশীল ব্যক্তি অথবা তুমি নও, এবং এটি অনেকাংশে সত্যও।  যদিও অভিভাবকারা অল্প বয়সেই তাদের সন্তানদের সৃজনশীল চিন্তা করার ক্ষমতাকে লালন করতে পারেন। তাদের সেভাবে বেড়ে উঠার জন্য শেখানো এবং উৎসাহিত করার ক্ষেত্র তৈরি করতে পারেন। যদিও তুমি গ্যারান্টি দিতে পারো না যে, বাচ্চা পরবর্তী পিকাসো হবে, কিন্তু তাদের সৃজনশীল ভাবে চিন্তা করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সরঞ্জাম উপহার দিতে পারো। আর্ট প্রজেক্ট, বিল্ডিং ব্লক এবং কল্পনাপ্রসূত খেলার মতো ক্রিয়াকলাপগুলো বাচ্চাদের তাদের সৃজনশীল চিন্তার দক্ষতা উন্নত করতে এবং তাদের কল্পনাকে আলোকিত করতে সাহায্য করতে পারে।

কেন সৃজনশীলতা গুরুত্বপূর্ণ?

এটি বাচ্চাদের জ্ঞানীয় ক্ষমতা উন্নত করার পাশাপাশি মেজাজ এবং সুস্থতার উন্নতি করতে পারে। ব্রুকলিন কলেজের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, আঁকাআঁকি শিশুদের শিশুদের শান্ত করতে সাহায্য করে। এবং তারা যখন একটি সৃজনশীল প্রকল্পে মনোনিবেশ করে, তখন তারা আরও বেশি সুখী বোধ করে।

 

সৃজনশীলতা বিকাশের উপায়

-সৃজনশীলতার বিকাশ মন থেকে শুরু হয়। এটি মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতাকে উন্নত করতে পারে। গবেষণা অনুযায়ী, সৃজনশীল চিন্তা আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়বিক সংযোগ বিকাশ এবং নতুন ধারণা শিখতে সাহায্য করতে পারে। এক্ষেত্রে বাচ্চাদের মনে নতুন নতুন চিন্তাভাবনা তৈরিতে সহায়তা করতে হবে। তাদের এমন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করো যা তাদের মনে নতুন ভাবনার খোরাক সৃষ্টি করে। এছাড়াও, তাদের অনুসন্ধিৎসু মনে সেখানে কী আছে তা খুঁজে বের করতে, কল্পনা করতে সাহায্য করতে পারো। তাদের এমন জিনিস খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারো যা তাদের সৃজনশীলতার জন্য লঞ্চিং পয়েন্ট হিসেবে শুরু হবে।

-সৃজনশীলতা এমন কিছু নয় যার উদ্ভাবনের প্রয়োজন, এটি সবার মধ্যেই একটি মাত্রায় বিদ্যমান। আমাদের বাচ্চারা যখন স্রিজনশিলভাবে নিজেদের প্রকাশ করতে শিখতে শুরু করে, তখন আমাদের উচিৎ তাদের এই প্রক্রিয়ায় উৎসাহিত করা এবং তাদের মনে করিয়ে দেয়া এটি জটিল নয়।

-বাচ্চাদের প্রশ্ন করা শিখাতে হবে। সাইকোলজি টুডে-র সাথে একটি নিবন্ধে গবেষক মেলিসা বার্কলে শিশুদের সৃজনশীলতা বাড়াতে তাদের জিজ্ঞাসা করতে শেখানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

-বাচ্চারা নিরুৎসাহিত বোধ করতে পারে যখন তারা প্রথমবার কিছু চেষ্টা করে সফল না হয়। কিন্তু ভুল প্রায়ই আমাদের সাফল্যের চেয়ে বেশি শেখায় এবং সন্তানকে নতুন, সৃজনশীল সমাধান চেষ্টা করতে উৎসাহিত করতে পারে। তাই বাচ্চারা যখন নতুন কিছু শিখতে চায় বা করতে চায়, তাতে সফল হতে না পারলেও তাতে নিরুৎসাহিত না করে ভিন্ন আঙ্গিকে দেখতে সাহায্য করতে পারো।

-ডেনিশ গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন যে প্রকৃতিতে বের হওয়া শুধুমাত্র মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যই ভালো নয়- এটি সৃজনশীলতাকেও উন্নত করতে পারে। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে যে, বাইরে সময় কাটানো কৌতুহল বাড়াতে পারে, নমনীয় চিন্তাভাবনাকে উৎসাহিত করতে পারে এবং রিচার্জ করতে সাহায্য করতে পারে। তুমি যখন বাচ্চাকে বসার ঘর থেকে গাছের ছায়ায় নিয়ে যাও তখন এটির পার্থক্যটি দেখ। সন্তানের মনকে সতেজ করতে এবং তাদের একটি ভাল মস্তিষ্ক বৃদ্ধি করতে আশেপাশে হাঁটতে বেরিয়ে যাও।

-সৃজনশীলতা শেখার আরেকটি গুরুত্বপূর্ন উপাদান হল প্রতিক্রিয়া। বাচ্চারা তাদের কাজ সম্পর্কে তুমি কি ভাবছো তার ফিডব্যাক পেতে চায়। তাদের সমালোচকের প্রয়োজন নেই, তবে তারা জানতে চায় তোমার প্রিয় অংশ কি? তাই তোমার প্রিয় দিকটি চিহ্নিত করো এবং তা তাদের বর্ননা করো।

-একটি সত্যিই সহজ উপায় হল বাচ্চাদের নতুন জিনিস আবিষ্কার করার কথা মনে করিয়ে দিয়ে আরও এগিয়ে যেতে উৎসাহিত করা। যদি তারা কিছু লিখতে পছন্দ করে তবে তাদের একটি বই দাও যা লেখার বিভিন্ন শৈলী বর্ননা করে। অথবা তাদের একটি একটি ভিডিও ক্যামেরা দাও এবং তাদের স্পিলবার্গ-স্টাইলের কিছু শুট করতে দাও।

-একসাথে পড়ো। তুমি জানো কি পড়া তোমার সন্তানের কল্পনাশক্তি এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়াতে পারে। প্রতিদিন একসাথে কিছু সময় একটি ছবি বা অধ্যায় পড়ার লক্ষ্য তৈরি করতে করো। যদি তোমার বইটিতে ছবি থাকে তবে একসাথে পড়ার আগে বাচ্চাকে ছবিটি কি সম্পর্কে তা অনুমান করতে বলো। এটি শিশুদের সমস্যা সমাধান অনুশীলনের পাশাপাশি পড়ার বোঝার অনুশীলন করতে সহায়তা করতে পারে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
আমরা গড়িগ্রুমিংজীবনযাত্রাসম্ভাবনাসাফল্য

নতুন বছরের রেজ্যুলেশন করেছো কি?

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, হাসি-কান্না সবকিছুর মিশেলে আরেকটি বছর চলে গেলো। এসেছে নতুন বছর। আজ হলো ৩৬৫ পৃষ্ঠার বইয়ের প্রথম ফাঁকা পৃষ্ঠার শুরুর দিন। নতুন বছরের নতুন স্বপ্ন ও সংকল্প পূরণে নিজেকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছো কি? নতুন বছরের তোমার সেট করা রেজ্যুলেশন পূরনের জন্য কিছু টিপস নিয়ে আজকের আয়োজন।

নিউ ইয়ার রেজ্যুলেশন হল এমন একটি ঐতিহ্য যা পশ্চিমা বিশ্বে খুবই কমন। তবে এখন এই ধারণা বিশ্বব্যাপী সমান তালে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ক্যালেন্ডার বছরের শুরুতে একজন ব্যক্তি তার মধ্যে ভাল অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার, একটি অবাঞ্ছিত বৈশিষ্ট্য বা আচরণ পরিবর্তন করার, একটি ব্যক্তিগত লক্ষ্য অর্জন বা অন্যথায় উন্নতি করার সংকল্প করে। নতুন বছরের রেজ্যুলেশনগুলো দীর্ঘকাল ধরে আমাদের জীবনে সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে স্টক করার এমন এক উপায়, যা আমাদের পিছনের বছরটিকে থামাতে এবং প্রতিফলিত করার পাশাপাশি সামনের বছরের জন্য পরিকল্পনা করতে দেয়। এটি শরীর, মন এবং আত্মার উন্নতি ও নতুন বছরের জন্য তোমার দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যগুলো সংগঠিত করার একটি দূর্দান্ত উপায়। কী থাকে এই রেজ্যুলেশনে? স্বাস্থ্য ও সুস্থতার দিকে মনোযোগ দেওয়াকে লক্ষ্য রেখে নতুন ডায়েট বা ওয়ার্কআউটের পরিকিল্পনা করা, তোমার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য দৃষ্টিভঙ্গি সেট করা, অথবা হতে পারে নতুন কোন বিষয়ে নিজেকে পারদর্শী করার চেষ্টা করা। লক্ষ্য যাই থাকুক না কেন নিজেকে ট্র্যাকে থাকতে সাহায্য করার জন্য রেজ্যুলেশনগুলো করা হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে,সমস্ত রেজ্যুলেশনের অর্ধেকেরও বেশি ব্যর্থ হয়ে যায় তা পূর্ণতা দেয়ার ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে, জীবনকে উন্নত করার জন্য সঠিক রেজ্যুলেশনটি কীভাবে সনাক্ত করা যায় এবং কীভাবে এটিতে পৌঁছানো যায় যে সম্পর্কে কিছু টিপস দেয়া হলঃ

-প্রথমেই যা তোমাকে ঠিক করতে হবে তা হলো তুমি কী চাও এবং তা কেন চাও? অর্থাৎ তোমার রেজ্যুলেশনটি হতে হবে একেবারে স্পেসিফিক। আমি ওজন কমাতে চাই, অস্পষ্টভাবে এটা বলার পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য তৈরি করা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। তুমি একটি লক্ষ্য রাখতে চাওঃ কতটা ওজন কমাতে চাও এবং কতো সময়ের ব্যবধানে? এভাবে নিজের লক্ষ্যের ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা রাখা চাই।

-আমরা প্রায়ই এমন পরিকল্পনা সেট করি যেগুলোকে আমরা পরিচালনাযোগ্য মনে করি কিন্তু বাস্তবে অসম্ভব এবং এটি অবাস্তব রেজ্যুলেশন যা তোমাকে বিভ্রান্ত করবে। খুব দ্রুত একটি বড় পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করা তোমাকে হতাশ করে দিতে পারে অথবা তোমার জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই শুরুতেই একেবারে অনেক পরিবর্তন করার চেষ্টা না করাই ভালো। নিজেকে উৎসাহ দিতে এবং ছোট জয়ের দ্বারা অনুপ্রাণিত হতে বড় লক্ষ্যগুলোকে ছোট ছোট ভাগ করো।

-প্রাসঙ্গিকতা থাকতে হবে। এটি কি এমন একটি লক্ষ্য যা সত্যিই তোমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ, এবং তুমি কি সঠিক কারণে এটি তৈরি করেছো? যদি তুমি সেই মুহূর্তে আত্ম-ঘৃণা বা অনুশোচনা বা তীব্র আবেগের অনুভূতি থেকে এটি করো তবে এটি সাধারণোত দীর্ঘস্থায়ী হয়না। কিন্তু তুমি যদি এমন একটি প্রক্রিয়া তৈরি করো যেখানে তোমার জন্য কী ভালো তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেছো, নিজের জীবনের কাঠামো পরিবর্তন করছো তবেই তা হবে পূরনের জন্য যথার্থ।

-রেজ্যুলেশন পুরণের লক্ষ্যে নিজের অভ্যাস পরিবর্তন করো। তোমার লক্ষ্য যদি থাকে চাকরি পরিবর্তন করার, তাহলে সেই রেজ্যুলেশনে পৌঁছানোর জন্য এই বছর ভিনভাবে কি করতে চাও? আরও নির্দিষ্টভাবে, এখন তোমার কোন অভ্যাস আছে যা তোমাকে সেই লক্ষ্যে থেকে পিছিয়ে দিচ্ছে? হতে পারে তোমার প্রতি রাতে টিভি দেখতে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে স্ক্রোল করার সময় ২-৩ ঘন্টা নিমিষেই হারিয়ে যাচ্ছে। তোমার বর্তমান রুটিন পুনরায় মূল্যায়ন করো এবং সময়কে কিভাবে ব্যয় করবে পেশাদার দক্ষতা শিখতে, কাজের তালিকা চেক করতে বা পেশাদারদের সাথে নেটওয়ার্কিং করতে তা ঠিক করে নাও।

-নিজেকে সর্বদা অনুপ্রাণিত রাখতে হবে। কাঙ্ক্ষিত রেজ্যুলেশনে পৌঁছাতে অনুপ্রাণিত থাকার জন্য, তোমাকে অনুপ্রাণিত করে এমন খাবার, কার্যকলাপ, বিষয়বস্তু, মিউজিকে নিজেকে নিমজ্জিত রাখো। তোমার অদি এবার লক্ষ্য থাকে নতুন কোন ভাষা রপ্ত করার, তবে প্রিয় মানুষদের নিয়ে সেই ভাষার ফিল্ম বা মিউজিক উপভোগ করতে পারো। যদি নতুন কোন দক্ষতা কোর্স করার সিদ্ধান্ত নাও তবে সেই ব্যাপারে ইউটিউবে ভিডিও দেখো, সফল ব্যক্তিদের কথা শুনো যা তোমাকে অনুপ্রাণিত ও উত্তেজিত রাখবে। মোট কথা লক্ষ্য পূরণের চেষ্টার সাথে সাথে নিজেকেও ইন্সপায়ার্ড করতে হবে।

-সর্বোপরি, নিজের প্রতি সদয় হও। যদি তুমি তোমার প্রত্যাশার কম হও তবে নিজেকে সহানুভূতি দেখাও। নিজের সাথে নিজে কথা বলো। তুমি যদি নিজের প্রত্যাশা পূরন না করার জন্য নিজেকে নিচু করে ফেলো বা খারাপ বোধ করো তবে হতাশা আর আত্মগ্লানি বাড়বে বৈ কমবে না। তাই নিজের প্রতি সদয় হও, নিজের সাথে বন্ধুর মত আচরণ করো। মনে রাখবে রেজ্যুলেশনগুলো হল আমাদের সেরা হয়ে ওঠার সুচনা বিন্দু, এটি চূড়ান্ত গন্তব্য নয়।

তাই চলো আমরা এগিয়ে যাই এবং আমাদের লক্ষ্য নির্ধরণ করে, সেগুলোর দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে নতুন বছর শুরু করি।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
আমরা গড়িতুমিই রোদসীনারীরোদসীর পছন্দসম্ভাবনাসাফল্য

আলোয় ভুবন ভরা

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ২৯, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘুচিয়ে অবশেষে আসলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। গতকাল উদ্বোধন (২৮ ডিসেম্বর) হয়ে গেলো দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত মেট্রোরেলের। সাথে সংযুক্ত হয়েছিলেন ছয় নারী চালক। এ স্বপ্নযাত্রায় চালকের আসনে আসীন হয়ে মরিয়ম আফিজা দেশের ইতিহাসের গর্বিত অংশ হিসেবে নিজেকে যুক্ত করতে পেরেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাথে নিয়ে মরিয়ম আফিজার পরিচালনায় মেট্রোরেল উড়ে গিয়েছে আগারগাঁওয়ের দিকে। কে এই মরিয়ম আফিজা? লক্ষীপুরের মেয়ে আফিজা নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। পড়াশোনার পাট চুকিয়ে গতানুগতিক ধারায়  ক্যারিয়ারকে পরিচালিত না করে সম্পূর্ণ ভিন্ন ঘরানায় নিজেকে নিয়ে গেছেন। অনেকটা নিজ আগ্রহ বশতই এই পদে আবেদন করে গত বছরের ২ নভেম্বর পান ট্রেন অপারেটর হিসেবে নিয়োগ। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষনের পর দেশের এই মেট্রোযুগে প্রবেশে নিজেকে শরীক করতে পেরেছেন।

শুধু মরিয়ম আফিজাই নন, এমন অনেকেই আছেন যারা সমাজের প্রচলিত ট্যাবু ভেঙে সামনে এগিয়ে গিয়েছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় উবার চালক লিউজার কথা। আমাদের দেশে নারী উবার চালক?  তার উপর আবার রাতে-বিরেতে বের হওয়া? অত চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। কিন্তু সমাজের সব বাধা-বিপত্তিকে পাশে ঠেলে তিনি সামনেই এগিয়ে গিয়েছেন। গল্পটি আবার হতে পারে আন্তর্জাতিক মঞ্চে অংশ নেয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী বডিবিল্ডার মাকসুদা আক্তারের। কোন মেয়ে বডি বিল্ডিং করছে এমন দৃশ্য তো ভাবাই যায়না। কিন্তু সকল কটুবাক্যকে হটিয়ে আন্তর্জাতিক আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। এই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের বুকে দেশের পতাকা উড়ানোর স্বপ্ন দেখেন তিনি।

এবছরই সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশীপে নারী ফুটবল দল দেখিয়ে দিয়েছে তাদের ক্ষমতা। নেপালকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে ইতিহাস রচনা করেছেন বাংলার এই বাঘিনীদের দল। এই শিরোপা জেতা তাদের জন্য অতটা সুগম ছিলোনা। ২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া এই চ্যাম্পিয়নশিপে একবারই ফাইনাল খেলার সুযগ থাকলেও জয়ের স্বাদ নিতে ব্যর্থ হয় তারা। পরবর্তীতে ২০২২ সালে এসে সেই আকাঙ্ক্ষিত জয় আনতে সক্ষম হয়।

নারীদের এমন শত শত সাফল্যগাঁথা গল্পও রয়েছে। যার পদে পদে থাকে অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু সব কিছু জয় করে তারা সামনে এগিয়ে যেতে পেরেছে। যে কোন সেক্টরেই হোক না কেন, সহযোগিতা, অনুকুল পরিবেশ এবং ইতিবাচক মনোভাব থাকলে নারীরাও এগিয়ে যেতে পারে। নারীর অধিকার মানে অন্যদের দাবিয়ে রেখে তাদেরকে উপরে তোলা নয়, বরং তাদেরকেও দেশ ও সমাজের উন্নয়নের জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার জন্য হাত বাড়িয়ে দেয়া।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.আমরা গড়িকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনজীবনযাত্রাসম্ভাবনাসাফল্য

সফল ব্যক্তিদের অনুকরণীয় অভ্যাস

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ৫, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

কিসে সফলতা আসে? সবার হয় আমি কেন জীবনের উত্থান-পতনে মুখ থুবড়ে পড়ি? সফলতার চাবিকাঠি কি? এমন এমন হাজারো প্রশ্ন আমাদের মাথায় সবসময় উঁকি মেরে থাকে। যখন একজন সাকসেসফুল ব্যক্তিকে দেখি তখন এইসব চিন্তা আমাদের মাঝে আরও বেশি হানা দেয়। কারণ আমরা যখন একজন সফল ব্যক্তিকে দেখি, তখন কেবল তার সর্বজনীন গৌরব দেখতে পাই কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর জন্য তাদের ব্যক্তিগত ত্যাগ স্বীকারের চিত্র দেখতে পাইনা। বিশ্বের সবচেয়ে সফল ব্যক্তিরা, যারা উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করেছেন কেউই সেখানে অতি সহজে বা দূর্ঘটনাক্রমে আসেননি। ভাগ্য ছাড়াও, সফল হতে হলে যেমন দরকার কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায়ের তেমনি দরকার ভালো কিছুর অভ্যাস গড়ে তোলার। এই অভ্যাসগুলো কি এবং কিভাবে তা তোমার জীবনে কাজে লাগাতে হয় তা শেখা জরুরী। এমন কিছু অভ্যাসের ব্যাপারে আসো জেনে নিই।

অর্গানাইজেশন

যারা জীবনে সফল তাদের প্রায়শই উল্লেখ করা অভ্যাসগুলোর মধ্যে এটি হল একটি। অর্গানাইজেশনের মানে হল পরিকল্পনার পাশাপাশি অগ্রাধিকার ও লক্ষ্য নির্ধারণ করা। এর মাধ্যমে সময় পরিকল্পনার সাথে পরিকল্পিত কার্যাবলীর সবকিছুই একটি ট্র্যাকের মধ্যে থাকে। এটি এক ধরনের টু-ডু লিস্ট করে রাখার মতো ব্যবস্থা। সংগঠিত আচরণের উদাহরণ হলোঃ

-কোন কাজ শুরু করার আগে নির্দেশাবলী বুঝা গেছে তা নিশ্চিতকরণ।

-দিন/কাজের জন্য প্রয়োজনীয় রিসোর্স বা উপাদান প্রস্তুত আছে তার ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা

-একটি পরিকল্পনা ও সে ব্যাপারে সংগঠিত চিন্তা আছে।

লক্ষ্য নির্ধারণ করা

সাফল্যের বিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞরা প্রকাশ করেছেন যে মস্তিষ্ক হল একটি লক্ষ্য নির্ধারণকারী অর্গানিজম। সফল ব্যক্তিরা জানেন যে, তারা যদি তাদের অবচেতন মনকে একটি লক্ষ্য দেন তবে তা অর্জনের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করবে। তারা উচ্চ লক্ষ্য নির্ধারণ করে যা বাস্তবসম্মত এবং পরিমাপযোগ্য উভয়ই, এবং তারা সেই লক্ষ্য পূরনের দিকে কাজ করার চেষ্টা করে।

 অধ্যবসায়

কঠিন চেষ্টা করা এবং হাল ছেড়ে না দেওয়া- খুবই কঠিন একটি কাজ। সফলতা পাওয়ার কোন শটকার্ট ওয়ে নেই। একমাত্র অধ্যবসায় পারে এই লক্ষ্যে পৌছুতে সাহায্য করতে। সাফল্যের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার সময় মনে রাখতে হবে যে, যাই হোক না কেন অধ্যবসায় করে যেতে হবে। এর অনেকটাই নিজের প্রতি বিশ্বাস এবং জীবন সম্পর্কে নিজ উপলব্ধির উপর নির্ভর করে। অধ্যবসায় এবং সাফল্য হলো একটি ম্যারাথনের মতো। সেই ম্যারাথনে তোমাকে দৌড়াতে হবে তবে সফলতা ধরা দিবে।

উপলব্ধি

কিছুই ভালো বা খারাপ নয়- জিনিসগুলো কেবল তুমি যেভাবে উপলব্ধি করো। রায়ান হলিডে তার  ‘দ্য অবস্ট্যাকল ইজ দ্য ওয়ে’ বইয়ে উপলব্ধির ব্যাপারে উদাহরণ দিয়ে বলেছেন ‘একটি হরিণের মস্তিষ্ক একে দৌড়াতে বলে কারণ জিনিসগুলো খারাপ। এটি সরাসরি একটা ট্র্যাকের মধ্যে চলে’। তোমার উপলব্ধি হলো কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করার এবং এটিকে খারাপ বা ভাল হিসেবে দেখছো কিনা এবং কীভাবে এটি পরিচালনা করবে তা সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা। তোমার মনোভাব এবং উপলব্ধি তোমাকে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তের দিকে নিয়ে যাবে।

অ্যাকশন গ্রহণ

সফল ব্যক্তিরা জানেন যে, নিজে যা জানে তার জন্য পৃথিবী মূল্য দেয়না; যা করে দেখানো হয় তাই মূল্য প্রদান করে। সংগঠিত করা, পরিকল্পনা করা এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু কর্ম ছাড়া একটি পরিকল্পনা সম্ভাবনা ছাড়া আর কিছুই নয়।

ইতিবাচক মনোভাব

অনেক সফল মানুষের মতে, একটি ইতিবাচক মনোভাব শুধুমাত্র সফল হওয়ার ফলাফল নয়- এটি সাফল্যের মূল কারণগুলোর মধ্যে একটি। জোয়েল ব্রাউন অতি সফল ব্যক্তিদের জীবনে কৃতজ্ঞতা এবং ইতিবাচক মনোভাবকে অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেন।

নেটওয়ার্কিং

সফল ব্যক্তিরা নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে অন্যদের সাথে আইডিয়া শেয়ারের মূল্য জানেন। একজন সফল ব্যক্তি অন্য সফল ব্যক্তিদের মাঝে নিজেকে ভিড়িয়ে রাখতে পছন্দ করে।

ভোরে উঠার অভ্যাস

আমরা ছোট বেলায় আর্লি রাইজিং এর রাইমস পড়েছি। যেখানে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার ব্যাপারে বলা হয়েছে। সফল ব্যক্তিদের মাঝেও এই অভ্যাস বিদ্যমান। তাদের মতে, সফল হওয়ার জন্য যে যত বেশি সময় দিতে পারে, সাফল্যের সম্ভাবনা তার তত বেশি। এই আর্লি রাইজারদের মধ্যে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যক্তির নাম রয়েছে। যেমন, ভার্জিন গ্রুপের স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন, ডিজনির সিইও রবার্ট ইগার এবং সাবেক ইয়াহু সিইও মারিসা মায়ার।

ভূল থেকে শিক্ষা নেয়া

পৃথিবীতে কেউই ভূলের উর্দ্ধে নয়। সাধারন মানুষের পাশাপাশি সফল ব্যক্তিদেরও ভূল করার চান্স থাকে। কিন্তু তারা এতে আশাহত না হয়ে বরং তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নেয় এবং ভবিষ্যতে চলার পথে তার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে সজাগ থাকে।

নিজের উপর আত্মবিশ্বাস

সর্বোপরি বিলিভ ইউরসেলফ। তুমি যদি তোমার স্বপ্নের জীবন সফল করার পথে এগুতে চাও তাহলে তোমাকে বিশ্বাস করতে হবে যে, তুমি এটা ঘটাতে সক্ষম। নিজেকে বিশ্বাস করা মানে নিজের ক্ষমতার উপর বিশ্বাস রাখা। যখন নিজের উপর বিশ্বাস করো, তা তখন আত্ম-সন্দেহ কাটিয়ে উঠতে এবং নতুন পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নিজেকে সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
বিশেষ রচনাসংগ্রামসম্ভাবনা

‘সুমির সাথে রান্না’ যেমন..

করেছে Suraiya Naznin এপ্রিল ২৭, ২০২২

জীবনের নিরেট সত্য হলো, আর্থিক সচ্ছলতা ছাড়া কেউ কখনো স্বনির্ভর হতে পারে না। প্রথম সংগ্রাম শুরু হয় নিজের সঙ্গে নিজেরই। বলছিলেন রন্ধনশিল্পী আফরোজা নাজনীন সুমি। তিনি এবার বইমেলায় রন্ধনশিল্পের ওপর একেবারেই ভিন্নধর্মী বই প্রকাশ করেছেন, যা বাংলাদেশে প্রথম। নানা বিষয় নিয়ে কথা হলো তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন সুরাইয়া নাজনীন-

কেমন আছেন?
সুমি : ভালো আছি। সত্যি বলতে কি আমি সব সময়ই ভালো থাকতে চেষ্টা করি।

আপনি একজন জনপ্রিয় রন্ধনশিল্পী। এই জনপ্রিয় হতে গিয়ে আপনার সংগ্রামটা কেমন ছিল?
সুমি : জনপ্রিয় হওয়ার চেয়ে সেই জনপ্রিয়তা ধরে রাখাটা কঠিন। সংগ্রাম ছাড়া তো সফলতা আসে না। ধৈর্য আর পরিশ্রম মানুষকে তার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। কাজটাকে ভালোবেসে করতে হবে। তবেই সে কাজে সফল হবে। বাধা পেয়ে থেমে যাওয়া যাবে না। আর সংগ্রামের গল্প যদি বলতে হয়, আমার সংগ্রামের গল্পটা সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে একজন সাধারণ গৃহিণী থেকে বহুমুখী প্রফেশনাল হয়ে ওঠার। পড়াশোনা করেছি ‘এইচআর’ নিয়ে এমবিএ। ইচ্ছা ছিল করপোরেট জগতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। কিন্তু সংসার ও সন্তান সামলিয়ে নানা প্রতিকূলতার কারণে সেই করপোরেট জগতে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু সব সময়ই ইচ্ছা ছিল কিছু একটা করার, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। এই কিছু একটা করার ইচ্ছা তাড়িয়ে বেড়াত সব সময়। কারণ নিরেট সত্য হলো আর্থিক সচ্ছলতা ছাড়া কেউ কখনো স্বনির্ভর হতে পারে না। প্রথম সংগ্রাম শুরু হয় নিজের সঙ্গেই। ড্রাইভিং শেখা, ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ওপর প্রফেশনাল ট্রেনিং, বারিস্তা ট্রেনিং নেওয়া, ফুড হাইজিনের ওপর কোর্স করা, এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপের ওপর সার্টিফিকেশন কোর্স করা, ফটোগ্রাফির কোর্স করা এসবের মধ্য দিয়ে শুরু হয় নিজেকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করা। বাবার সরকারি চাকরির সুবাদে ছোটবেলাটা কেটেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়। সেই থেকেই বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক খাবারের সঙ্গে পরিচয় আর ভালোবাসা।

 


আফরোজা নাজনীন সুমির বিশেষত্বের জায়গা কোনগুলো?
সুমি : বিশেষত্বের জায়গা যদি বলি, আমি একা এগিয়ে যেতে চাই না, সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে ভালো লাগে। আমি অসম্ভব পরিশ্রমী, সততা আর নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করি। সমাজের অবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য কাজ করছি, করে যেতে চাই। নারীদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

এই পেশার প্রতি আগ্রহ কেন হলো?
সুমি: ভিন্ন ভিন্ন ধরনের খাবার রান্না করতে আর আশপাশের মানুষকে খাওয়ানোর আনন্দ থেকেই এই পেশার প্রতি আগ্রহ জন্মে। ভালো রান্নার হাত থাকায় খুব অল্প সময়েই আশপাশে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। এভাবেই একদিন ডাক পড়ে যমুনা টেলিভিশনের লাইভ কুকিং শোতে। সেই থেকে ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় পথচলা শুরু। এরপর আর থেমে থাকতে হয়নি।

হাজারো প্রতিকূলতা সামাল দেওয়া হয় যেভাবে
সুমি : পরিবার থেকে সে রকম কোনো সহযোগিতা না থাকায় একাই ঘরসংসার সব সামলিয়ে হাজারো প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে বাইরের জগতে টিকে থেকে, কাজ করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে শুরু হয় নতুন এক সংগ্রামের। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় সুনামের সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি সুমিস কিচেনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং প্রতিষ্ঠিত করা শুরু হয়। শুধু রন্ধনশিল্পী থেকে ধীরে ধীরে নিজেকে একজন উদ্যোক্তার ভূমিকায় প্রতিষ্ঠিত করতে সচেষ্ট হই। এই পথচলার শুরুটাও খুব সহজ ছিল না। আসলে আমাদের এই সমাজে এখনো মেয়েদের এগিয়ে চলতে হয় নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে। কাজ করতে গেলে বাধা আসবেই আর সেই বাধাটা প্রথম আসে পরিবার থেকেই। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা তো আছেই। ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে প্রথম যে বাধার সম্মুখীন হই, সেটা হলো মূলধনের অপ্রতুলতা। তারপর দক্ষ কর্মী প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে রাখাটাও একটা চ্যালেঞ্জ। আমাদের দেশে মেয়েদের ব্যাংক লোন জোগাড় করা খুব একটা সহজ নয়। আমিও তার ব্যতিক্রম ছিলাম না।

বাংলাদেশে রন্ধনশিল্পের মূল্যায়ন কেমন?
সুমি : এখনো আশানুরূপ পর্যায়ে যায় নেই, তবে আগের চেয়ে অনেক ভালো বলব।

 

নতুনেরা এ পেশায় আসতে হলে কী বলবেন
সুমি : ডেডিকেশন, ধৈর্য থাকতে হবে, পরিশ্রমী হতে হবে।

 

এবার ঈদ নিয়ে আয়োজন কী?
সুমি : ঈদ সব সময়ই পরিবারের সঙ্গে একান্তে কাটাতে চাই। খাবারের আয়োজনেও থাকবে পরিবার আর আত্মীয়স্বজনের পছন্দের মেনু।

এবারের বইমেলায় আপনার বই প্রকাশ হয়েছে, সেটার ভিন্ন রকমের বৈশিষ্ট্য আছে, জানতে চাই বিস্তারিত
সুমি : ‘সুমির সাথে রান্না’ নামে বাংলানামা প্রকাশনা থেকে এবার আমার যে বইটি বের হয়েছে, সেটা বাংলাদেশের প্রথম রেসিপি বই, যেখানে কিউআর কোডে রেসিপির ভিডিও দেখা যাবে, নিউট্রিশন ভ্যালু আছে, বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষাতেই রেসিপি পাওয়া দেওয়া। প্রতিটি রেসিপির সঙ্গে সেই রেসিপির ছবিও পাওয়া যাবে। তা ছাড়া গত বছর বইমেলায় স্পর্শ ফাউন্ডেশন থেকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ‘বাহারি রান্না’ নামে একটা ব্রেইন রেসিপি বই প্রকাশিত হয়েছিল।

 

দেশে রন্ধনশিল্পের জন্য তৈরি প্ল্যাটফর্ম কতটুকু মজবুত?
সুমি : প্ল্যাটফর্ম তো তৈরি থাকে না, করে নিতে হয়। আমাদের আগে অনেকেই সেই প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন, আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করে যাচ্ছি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটা শক্ত ভিত করে দেওয়ার।

 

পারিবারিক সাপোর্ট কতটুকু দরকার বলে মনে করেন?
সুমি : একা একা যুদ্ধ করাটা অনেক কঠিন। পরিবারের সাপোর্ট ছাড়া এগিয়ে চলা খুবই কষ্টসাধ্য। পরিবারের সাপোর্ট থাকলে কঠিন কাজটাও অনেক সহজ হয়ে যায়। গত বছর বইমেলায় স্পর্শ ফাউন্ডেশন থেকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ‘বাহারি রান্না’ নামে একটা ব্রেইন রেসিপি বই প্রকাশিত হয়েছিল।

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
বিনোদনবিশেষ রচনাসংগ্রামসম্ভাবনা

৬০ এর পরেই জিতলেন সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায়

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ১৪, ২০২২

রোদসী ডেস্ক: সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা জেতার কোন বয়স নেই তা দেখিয়ে দিলেন মার্কিনি নারী। ৬০ বছরের পিয়ানো শিক্ষিকা কিম্বার্লি ঘেদির রয়েছে সাত নাতি-নাতনি। টেক্সাসের বাসিন্দা বহু দিন মনে করতেন বয়স ৬০ পেরোলেই জীবন শেষ। কিন্তু ৬৩ বছর বয়সে এসে তিনি শরীরচর্চা করা শুরু করেন, বিয়ে করেন এবং ‘মিস টেক্সাস সিনিয়র আমেরিকা’ নামে এক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার বিজয়ী হন। তাই বয়স নিয়ে সব রকম ভুল ধারণা ভেঙে গিয়েছে তাঁর।

 


‘‘নিজেকে নিয়ে ধারণা পাল্টে গিয়েছে আমার। এখন মনে হয় বলিরেখার মধ্যেও অন্য রকম সৌন্দর্য রয়েছে। পরিণত বয়সের নারীরা সত্যিই সুন্দর,’’ প্রতিযোগিতা জিতে বললেন কিম্বার্লি।

৬০ থেকে ৭৫ বছর বয়সি নারীদের নিয়ে এই প্রতিযোগিতা হয় প্রত্যেক বছরই। বেলি ডান্সিং থেকে এক হাতে পুশ আপ— সব রকম খেলাতেই অংশ নেন নারীরা।


এই প্রতিযোগীরা মনে করেন ৪০, ৫০, ৬০, ৭০— যে কোনও বয়সেই মেয়েরা সুন্দর। বিজয়ী কিম্বার্লি জানিয়েছেন, ১৯ বছর বয়সেও তিনি এতটা ফিট ছিলেন না। ৬৩ বছর বয়সে শরীরচর্চা শুরু করার পর থেকে তিনি অনেক বেশি ফিট হয়ে গিয়েছেন।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.তুমিই রোদসীনারীপ্রধান রচনাসম্ভাবনাসাফল্য

স্বপ্ন দেখি নারী দিবসের দরকারই হবে না

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ১০, ২০২২

দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি কাজ করছেন বাংলাদেশের ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে। চরের মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান নানান বিষয়ে কাজ করলেও তার মূল আগ্রহ নারীর জীবন নিয়ে। কারণ তিনি মনে করেন, নারীর উন্নয়ন না হলে সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিশ্ব নারী দিবসে রোদসীর বিশেষ সংখ্যায় কথা হলো ফ্রেন্ডশিপ-এর ফাউন্ডার ও এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রুনা খানের সঙ্গে। কথা বলেছেন সোলাইমান হোসেন-

 

রুনা খান

 

শুরুতেই আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি সাতক্ষীরার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের আন্তর্জাতিক রিবা অ্যাওয়ার্ড লাভ করার জন্য। শুরুতেই আমরা আপনার ছোটবেলার গল্প শুনতে চাচ্ছি। কীভাবে কেটেছে আপনার ছেলেবেলা?

রুনা খান : বাংলাদেশের একটি কয়েকশ বছরের পুরোনো পরিবার থেকে আমি উঠে এসেছি। আসলে একটা নির্দিষ্ট গ-ির মধ্যে আমরা বড় হয়েছি। আমাদের আশপাশে গরিব কী তা আমরা জানতাম না। ঢাকা শহরে গাড়িতে যখন বসতাম, তখন গরিব আসতÑওটাই আমাদের জন্য গরিব দেখা ছিল। এর একটাই কারণ- আসলে একটা গ-ির মধ্যে আমরা সবাই বড় হয়েছি। পারিবারিকভাবেই আমার বিয়ে হয়ে যায় এবং এখন আমার তিনটি সন্তান আছে। তবে আমি যতই নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে বড় হই না কেন, কখনো কাজ থামাইনি।

 

অনেকেরই তো অনেক রকম চিন্তা থাকে। কেউ ডাক্তার হতে চায়, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। আপনার ছোটবেলায় এমন কোনো ইচ্ছা ছিল কি?

রুনা খান : আমি আইনজীবী হতে চেয়েছিলাম। আমি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান সবখানেই পড়াশোনা করেছি। কিন্তু একটা জিনিস সারা জীবন মনে হতো, তা হলো দেশের জন্য কিছু করব। কিন্তু কী করব এমন কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তবে এটা আমার মাথায় সব সময় ছিল যে, এই দেশ ছেড়ে আমি কখনোই চলে যেতে পারব না। আমি যখনই চিন্তা করি আমি কখনো ধানখেত দেখতে পারব না, কখনো কৃষক দেখতে পারব না, আমার তখন মন খারাপ হয়ে যায়। আমি যখন নৌকা নিয়ে এদিক-সেদিক যেতাম, তখন দেখতাম সবচেয়ে গরিব লোক এখানে থাকে। তখন মনে হলে এসব মানুষকে নিয়ে কিছু একটা করা যেতে পারে। সেভাবেই শুরু।

চরের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে তো আপনারা কাজ করছেন। এর মধ্যে নারীর জীবন নিয়ে আপনার আলাদা কোনো ভাবনা আছে কি?

রুনা খান : আমি নারী, কেমন করে নারীদের জন্য ভাবব না? ভাবনা অবশ্যই আছে। নারীদের জন্য সব সময় ভাবি। নারীদের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো তাদের সন্তান। এ কারণেই নারী এবং শিশু আমার কাজের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু একটা সংসার সুন্দর হয় নারী-পুরুষ আর সন্তান নিয়ে। তাই আমি শুধু নারীকে নিয়ে কাজ করি, এটা কখনো মনে করি না। কারণ, উন্নতি সবাইকে নিয়েই হবে। যে কারণেই আমাদের কোনো কাজ শুধু নারীর জন্য নয়। তারপরও আমাদের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ উদ্যোক্তা হলেন নারী।

নারীকে নিয়ে অনেক কাজই তো করেছেন, কিন্তু এমন কোনো কাজ কি আছে, যেটা ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে তৃপ্তি দিয়েছে?

রুনা খান : চরে একটা মেয়ের যখন ফিস্টুলা কিংবা পোলাস্ট নিউট্রেস হয়, ১৯ কিংবা ২০ বছরের একটা মেয়েকে যখন দেখি এসব কারণে তার স্বামী তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে, তখন খুব খারাপ লাগে। পরিবার থেকে আলাদা করে দিয়ে আলাদা ঘরে রেখে দেয়। অথচ সাধারণ আধা ঘণ্টার একটা অপারেশন করিয়ে তাকে আবার পরিবারে ফেরত পাঠানো যায়। এমনি করে যখন আমি লাইফ চেঞ্জ দেখতে পারি, তখন এমন কাজের শান্তি অন্য রকম হয়।

আপনার দীর্ঘ কাজের অভিজ্ঞতা। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আপনার কি কখনো মনে হয়েছে নারীর কোন জায়গাটা উন্নত হলে পুরো সমাজ উন্নত হবে?

রুনা খান : আমি মনে করি, নারীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে হবে। সেই শ্রদ্ধাবোধ যেমন তার স্বামীর, সেই সঙ্গে তার পরিবারের। নারী যখন তার সঠিক শ্রদ্ধাবোধ এবং মূল্যায়নটা পাবে, তখনই কেবল নারী সব করতে পারবে। একটা নারী একই সঙ্গে বাড়ির কাজ, বাড়ির বাইরের কাজ করে সন্তান জন্ম দেওয়া, টাকা আয় করা থেকে শুরু করে সব রকম কাজের সঙ্গেই যুক্ত।

আসলে একটা সমাজ কিংবা পরিবার কিন্তু নারীকেন্দ্রিক। আমরা যতই অস্বীকার করার চেষ্টা করি না কেন, আসলে একজন নারীকে কেন্দ্র করেই কিন্তু পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র সবই চলে। আপনি বিষয়টি কীভাবে দেখেন?

রুনা খান : আসলে এ বিষয়টি অস্বীকার করার উপায় নেই। একজন নারীকে কেন্দ্র করেই তার সন্তান-সংসার এবং সমাজ। নারীকে কেন্দ্র করেই সংসারের আয়, এমনকি কিভাবে সংসারের জন্য সুন্দরভাবে ব্যয় করতে হয় সেই ব্যাপারে নারীর জানাশোনা অসামান্য। নারীরা যেভাবে সংসার চালাতে পারেন, ছেলেরা সেই আন্দাজে চালাতে পারেন না।

আসলে নারীর যে সঞ্চয়ক্ষমতা, সেটা পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি আলাদা। আমাদের দাদি-নানি কিংবা মায়েদের দেখেছি ভাতের চাল থেকে একমুঠ হয়তো রেখে দিত সঞ্চয় করার উদ্দেশ্যে। এই চাল আবার কোনো বিপদের দিনে সংসারের কাজেই লাগাত। এগুলো তো নারীর অন্য রকম ক্ষমতা।

রুনা খান : হ্যাঁ, এটা নারীদের একটা অসামান্য একটা ক্ষমতা। আর এ কারণেই আমাদের একটা ফিন্যান্সিয়াল প্রোগ্রাম আছে, যেটার নাম দিয়েছি মুষ্টি। কারণ, এটাই কিন্তু মেয়েদের সক্ষমতার জানান দেয়। এটাই নারীর বিশেষত্ব। কোনো একদিন দেখা দেখা গেলো ওই পরিবারের ঘরে চাল নেই, সেদিন এ চালই তাদের মুখে ভাত তুলে দেয়। চিন্তার এই জায়গার কারণেই তারা শ্রদ্ধার যোগ্য। মেয়ের ক্ষমতা এবং ছেলের ক্ষমতা কিন্তু আলাদা। আমি বলছি না মেয়েদের শক্তি ছেলেদের মতো হতে হবে। বা একটা মেয়ে, ছেলেদের মতোই কাজ করবে।

মেয়ে আসলে তার বৈশিষ্ট্য নিয়েই মেয়ে এবং এটাই তার সৌন্দর্য

রুনা খান : একদম তাই। মেয়ে তার নারীত্ব নিয়েই সুন্দর। একটা মেয়ের মনুষ্যত্ববোধ আর নমনীয়তাকে যে ছেলে দুর্বলতা ভাবে, সে আসলে বিরাট ভুল করে। এগুলো নারীর দুর্বলতা নয়। এটাই কিন্তু নারীর সাহস, এটাই নারীর ক্ষমতা।

সামনে বিশ্ব নারী দিবস। আপনি যে নারীদের নিয়ে কাজ করছেন, তাদের কাছে নারী দিবস এবং অন্য আর দশটা দিন একই। প্রতিবছর নারী দিবস আসে কিন্তু এই নারী দিবস কি কোনো প্রভাব তৈরি করতে পারে? এই নারী দিবসটা আপনি কীভাবে দেখেন?

রুনা খান : যখন কোনো পরিবর্তন আনতে হয়, তখন একটা একক জিনিস দিয়ে তা হয় না। আমি যদি বলি সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজই আমার সমাজ বদলে দেবে কিংবা মাইক্রোফিন্যান্সই আমার সমাজ বদলে দেবে, তা কিন্তু কখনো সম্ভব নয়। কোনো একটা কিছু দিয়ে কখনো দুনিয়া পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। দুনিয়ায় বিভিন্ন রকম মানুষ, তাই বিভিন্ন রকম জিনিস লাগে এই দুনিয়াকে পরিবর্তন করতে। আমরা নারী দিবস পালন করি, এটা আসলে একটা কম্পোনেন্ট। এটা নারীকে অনুভূতি দেয় যে, তুমি স্পেশাল। তাই আমি মনে করি নারী দিবস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমার স্বপ্ন হলো হয়তো কোনো একদিন নারী দিবসের আর দরকারই হবে না। হয়তো নারী-পুরুষ মিলে একটা দিবস পালন করবে, যেটার নাম হবে হিউম্যান ডে।

 

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, বিশেষ করে নারীদের নিয়ে?

রুনা খান : আমরা বিভিন্ন বিষয়ে অনেক উন্নতি করেছি। আমাদের মতো অর্থনীতির সক্ষমতার দেশের তুলনায় এদেশের নারীদের আমরা অনেক ওপরে নিয়ে গেছি। আপনি যদি আশপাশের কোনো দেশের সঙ্গে তুলনা করেন, তাহলে দেখবেন আমরা খুব ভালো অবস্থানে আছি। কিন্তু দারিদ্র্য আমাদের অনেক কিছু বাধাগ্রস্ত করছে। এসব কিছুর মধ্য থেকেও আমি চেষ্টা করছি চরের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে।

এবার চরের তিনটি মেয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে চান্স পেয়েছে। যাদের বাসায় একটা মাত্র কুঁড়েঘর। যেখানে কোনো রকমে তারা পরিবার নিয়ে বাস করে। অথচ এই মেয়েগুলো এখন পুরো দুনিয়ার মানুষের সঙ্গে মিশতে পারছে। আমার স্বপ্ন হলো প্রতিটি চর থেকে যেন অন্তত একটি করে মেয়েকে এমন ভাবে তৈরি করতে পারি, যারা তাদের পুরো কমিউনিটির আদর্শ হবে।

এখন তো ডিজিটালাইজেশনের যুগ। আপনি যে নারীদের নিয়ে কাজ করছেন, তাদের প্রযুক্তিগতভাবে উন্নয়নের জন্য কিছু করছেন কি?

রুনা খান : হ্যাঁ, এগুলো আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে করি। আমাদের স্কুলগুলো সব ডিজিটালাইজড। তা ছাড়া বাচ্ছাদের আমরা কম্পিউটারে দক্ষ হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দিই।

আপনারা এখন পর্যন্ত কতগুলো স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন?

রুনা খান : আমাদের প্রাইমারি স্কুল ৪৮টির মতো। হাইস্কুল আছে ২২টির মতো। এ ছাড়া অ্যাডাল্ট এডুকেশন সেন্টার আছে ৪৮টি। আর আমাদের রোহিঙ্গাদের জন্য প্রায় ৪০০ স্কুল আছে।

এর বাইরে আপনারা আর কী কী বিষয়ে কাজ করছেন?

রুনা খান : আমরা প্রথমেই চেষ্টা করি মানুষের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে। যেখানে মানুষ দাঁড়াতে পারে। সেই প্ল্যাটফর্মটা তৈরি করতে কী কী দরকার? প্রথমেই লাগে স্বাস্থ্য। আমরা স্বাস্থ্য খাতে খুব বেশি কাজ করি। প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ লোককে আমরা সরাসরি সেবা দিই। শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি। এরপর আমরা ইনকাম জেনারেশন করাই। যারা কৃষিকাজ করতে পারে, তারা সেটা করে। যারা হাঁস-মুরগি পুষতে পারে, তারা সেটা করে। কেউ বাগান করে। মাছ চাষ করে। এমন অনেক কাজ।

 

আপনার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫১ শতাংশ নারী কর্মী কাজ করেন। এটা কি কোনো বিশেষ চিন্তা থেকে করা?

রুনা খান : এটা আসলে বিভিন্ন আমাদের অফিসের বিভিন্ন দপ্তরে ভেদে কমবেশি আছে। তবে চেষ্টা থাকে নারী-পুরুষের সমন্বয়টা ঠিক রাখতে। বিশেষ কোনো চিন্তা থেকে নয়।

 

বাংলাদেশের নারীদের উদ্দেশে কিছু বলবেন?

রুনা খান : আমি বলব বাংলাদেশের লোকজন যেন নারীদের আরও একটু সম্মান করে। আমি সব পুরুষকে অনুরোধ করব আপনি আপনার স্ত্রী-সন্তান-মাকে সম্মান করুন। আপনি যদি সম্মান না করেন, তাহলে আপনি জানেনই না আপনার কি ক্ষতি হচ্ছে। অর্ধেক সম্ভাবনা আপনি হারাচ্ছেন যদি আপনি আপনার স্ত্রীকে সম্মান না করেন।

এতক্ষণ সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
রুনা খান : আপনাকেও ধন্যবাদ।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ঘরেই বানিয়ে নাও মেকআপ সেটিং স্প্রে

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook