অচিন্ত্য চয়ন
বর্তমান প্রজন্মের কণ্ঠে বাংলা গানের জয়ের নিশানার সুর বাজছে যে সুরে মুগ্ধ হবে শ্রোতারা, টিকে থাকবে বাংলা গান। বর্তমান সময়ে কিছু তরুণ ফোক গানে ভালো করছে। স্বপ্ন দেখছে ফোক গান নিয়ে। প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ কণ্ঠযোদ্ধাদের মধ্যে লালনকন্যা শাহরিন সুলতানা মীম অন্যতম।
মীম একদিন বাদ্যযন্ত্রহীন বন্ধুদের টেবিল থাপড়ানো তালে খালি গলায় গেয়েছিলেন, ‘এক চক্ষেতে হাসন কান্দে; আরেক চক্ষে লালন/ গুরু তোমার বিরহে জ্বলে আমার বুকের আগুন।’ বাদ্যযন্ত্রহীন খালি গলার এ গানটিতেই ভাইরাল হয়েছিলেন মীম। এই ভাইরাল পরিবর্তন করে দেয় জীবনের মোড়। গান ভালো বাসতেন, গান হৃদয়ের গভীরে লালন করতেন কিন্তু বড় কোনো স্বপ্ন তার ছিল না। স্বপ্ন না থাকলেও তার মেধা ছিল, কণ্ঠে ছিল শ্রোতাকে পাগল করার মতো জাদু। এখন এই স্মৃতি মীমকে বহুদূরে যাওয়ার সাহস জোগায়। এই সাদাকালো স্মৃতি রঙিন হওয়ার স্বপ্ন বহন করে।
দৃশ্যটি এমনই ছিল ক্যাম্পাসের ছোট ভাই ফাহিমের আবদারে ক্যাফেটেরিয়ায় বসে গান শুরু করেন মীম। প্রাণবন্ত আড্ডার পাশ থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে ভিডিও করে হুমায়ের। হুমায়েরের ফোনবন্দী হয় তার গান। সাদা-কালো ‘ইফেক্ট’ দিয়ে ছেড়ে দেয় ফেসবুকে। সেখান থেকে ইউটিউবে। তারপর গানটা শেয়ার শুরু। তার কণ্ঠ স্পর্শ করে শ্রোতাদের মন, গানের হৃদয়। অতঃপর ভাইরাল। পরদিন থেকে মীম হয়ে যান ‘লালনকন্যা’। ভাইরাল হওয়ার পর মীমের ফেসবুকে ফলোয়ার বাড়তে থাকে। সেই থেকে শাহরিন সুলতানা মীম গানের হৃদয় হৃদয় রেখে হাঁটছেন দূরে, বহুদূরে যাওয়ার প্রত্যয়ে। ফোক গান করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ মীমের।
জীবন চলে জীবনের গতিতে। যে গতি নির্মাণ করে তার সৃজনশীল সৃষ্টি। এসবের অন্তরালে থাকে যুদ্ধের গল্প। যুদ্ধ জীবনের ঘনিষ্ঠ ছায়া। এই ছায়ায় প্রস্ফুটিত হয় কর্মফল। যে ফলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে মানুষের হৃদয়ে থেকে হৃদয়ে। মীমেরও এমন গল্প আছে। গান নিয়ে বেড়ে ওঠার গল্প শুনতে চাইলে মীম শুরুর গল্প বলেন, ‘আব্বুর কাছে ঘুমানোর সময় ছোটবেলা থেকেই গান শুনতাম। আম্মুও গুনগুন করে ছড়াগান শেখাতেন। স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নাম দিতাম প্রতিবার, পুরস্কারও পেতাম দ্বিতীয় বা তৃতীয়। ক্লাস থ্রিতে যখন পাঁচমিশালি গানে কিরণ রায়ের “গাছের মূল কাটিয়া” গানটি গাইলাম, অনেক প্রশংসাও পেলাম। কিš‘ প্রথম হতে পারলাম না। খুবই কষ্ট পাই আমি। তারপর জেদ পেয়ে বসল। জেদ থেকেই একদম হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করি। এরপর থেকে স্কুলে সব সময় গানে প্রথমই হয়েছি।’ পরাজিত হলেও জয়ের নিশানা দেখা মেলে। তবে থেমে থাকা যাবে না। ‘একবার না পারিলে দেখো শতবার’ কথাটিও প্রমাণ করে দিল মীমের চেষ্টা। জয়-পরাজয় নিয়ে মীম কখনো ভাবেননি। সব সময় ভাবনায় ছিল ভালো করা। থেমে থাকেনি মীমের পথচলা। আস্তে আস্তে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নাম লেখাতে শুরু করেন। বাবার উৎসাহ ও গানের শিক্ষক সঞ্জয় কুমার ওঝা, তপন নট্ট, জয় প্রকাশ বিশ্বাস, সুমন দাসের অনুপ্রেরণায় থানা, জেলা এবং বিভাগ পর্যায় উতরেও গেছে তার কণ্ঠের জাদু। এই ধারাবাহিকতায় চ্যানেলের রিয়েলিটি শোগুলোতে প্রতিযোগিতায় নাম লেখান।
২০১৪ সালে ব্র্যাকের আয়োজনে চ্যানেল আইয়ের তারায় তারায় দীপশিখা প্রতিযোগিতায় সারা বাংলাদেশের মধ্যে তৃতীয় হন। স্টেজ শো তার প্রিয় জায়গা। তারায় তারায় দীপশিখা থেকে ফিরে স্টেজ শোতে মনোযোগী হন। তার এই পরিশ্রম বিফলে যায়নি। বরিশাল বেতারে লালনগীতি ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে বৃত্তের বাইরে নামক অনুষ্ঠানে ছিলেন নিয়মিত। বিভিন্ন কারণে কিছু প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। এ বিষয়ে মীম বলেন, ‘বয়স বাড়ার সাথে সাথে পড়াশোনার চাপ বেড়ে যায়। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণও কমে যায়। একবার একটা প্রতিযোগিতায় বরিশাল থেকে ফার্স্ট হই কিন্তু ঢাকায় আর যাওয়া হয় না আমার আম্মার অপারেশনের জন্য। আরও বিভিন্ন রাগ, ক্ষোভ, অভিমান থেকে। বড় হয়ে বুঝলাম অভিমান পুষিয়ে রেখে নিজের ক্ষতি করতে নেই। দিন শেষে গানটা নিজের জন্যই গাওয়া শুরু করি।’
তার অজান্তে করা একটা ভিডিও, ‘এক চক্ষেতে হাসন কান্দে; আরেক চক্ষে লালন/ গুরু তোমার বিরহে জ্বলে আমার বুকের আগুন’ গানটা সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল ভাইরাল হয়। সেই গানের ভিডিওতে ক্যাপশন ছিল ‘লালনকন্যা’। সেই থেকে এ নামটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয় মীমকে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মীম বলেন, ‘যদিও ছোটবেলা থেকেই আমার গানের জন্য “লালনকন্যা” নামটি আমি খুব শুনেছি। খুব ছোটবেলায় এ নামে আমাকে ডাকত আমার একজন নানা রশিদ উদ্দীন তালুকদার। ২০১৮ সালে সাইমুন হোসেন আমাকে বাকেরগঞ্জে গানের জন্য একটি অ্যাওয়ার্ড দেন, যাতে “লালনকন্যা” ঘোষণা করেন। সেই শব্দ এখনো কানে বাজে। এমন মধুর স্মৃতি ভুলবার নয়।’
মানুষের জীবনে অনেকবার সকাল আসার দরকার নেই। আলোকিত একটি সকাল হাজার সকাল এনে দেয়। মীমের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে। তার অজান্তে একটি সকাল এসেছিল ২০১৯ সালের অক্টোবরে। গানটি ভাইরাল হওয়ার পর প্রথম কী কাজ করেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমার বন্ধুবান্ধবীরা আমার নিজস্ব একটা পেজ খুলতে বলে, যা আমি করিনি। ইতিমধ্যে আমার জি-সিরিজ থেকে ডাক আসেন সেখানে কাজ করার সুযোগ পাই। এরপর তো করোনাই চলে এল। পরে ঢাকায় চলে আসি। আমার ছোট ভাই ফাহিম আমাকে একদিন একটা পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেল খুলে দেয়। পেজের নাম দিলাম “লালনকন্যা মীম” কারণ, এ নামেই মানুষ আমাকে বেশি খোঁজে। পেজের জন্য কিছু মানুষ আমার গান ভালোবাসে, আমি অজান্তে মানুষের ভালোবাসা পেয়ে যাই।’
মানুষ ভালোবাসে সৃষ্টিশীল মানুষকে। মানুষের ভালোবাসায় মীম বড় স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। তিনি এই স্বপ্নের পরিধি আরও প্রসারিত করতে যুক্ত হন আরটিভির তুমুল জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘বাংলার গায়েন সিজন-২’তে। মীমের মেধা-মনন দিয়ে ফাইনালিস্টে স্থান দখল করেন। পেছনের সবকিছু পুঁজি করেই তার এই গানযুদ্ধ। মীমের গানজীবনে আরটিভি আরেক অধ্যায়, যা তাকে একটা প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে। চাওয়া ছিল তার মা-বাবার। আরটিভি নিয়েও তার স্মৃতিবিজড়িত আবেগের শেষ নেই। তিনি আরটিভিকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘ছোট ভাই ফাহিম আমার পেজের অ্যাডমিন। ফাহিম আরটিভির জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘বাংলার গায়েন’-এ একটি গান পাঠায়, যে গান থেকে আমি স্টুডিও রাউন্ডের জন্য সিলেকশন পাই। পরের জার্নি বেশ উপভোগ করেছি। অনেক কিছু অর্জন করেছি। সবকিছুর জন্য আরটিভি ও আমার শ্রোতাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।’
‘মানুষ স্বপ্নের সমান বড়’বাক্যটি গুণীজন এমনি এমনি বলেননি। মানুষ সব সময় স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন দেখেই বাঁচে। লালনকন্যা মীমও একজন স্বপ্নবান তরুণ কণ্ঠযোদ্ধা। তিনি সবকিছুর জন্য শুকরিয়া আদায় করে বলছেন, ‘বাংলার গায়েন সিজন-২-এর টপ ফাইনালিস্টে থাকতে পারাটা আমার জন্য স্বপ্নের মতো।’ কিন্তু শ্রোতার রিভিউ অন্য রকম ছিল। গ্র্যান্ডফিনাল অনুষ্ঠিত হওয়ার পরে তার ফেসবুক ও পেজে অনেক শ্রোতা মন্তব্য করেন। মীমকে প্রথম তিনজনের মধ্যে দেখার প্রত্যাশা ছিল সবার। ভক্তদের প্রত্যাশা বেশি থাকলেও তাদের প্রত্যাশা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। কারণ, গানের বিচারক দিন শেষে শ্রোতা। মীম বলেন, ‘প্রিয় শিল্পীর নিকট প্রত্যাশা, একটু বেশিই থাকতে পারে। আমি হয়তো পূরণ করতে পারিনি। ভালো গাইতে পারিনি। তবে সব প্রতিযোগিতায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকে। এতে আমি হতাশ না। শ্রোতারা আমার পাশে থাকলে ভালো কিছু করতে পারব বলে আমার বিশ্বাস। শ্রোতাদের প্রতি শ্রদ্ধা সব সময়। এভাবে পথ চলতে চাই, চাই আরও আরও অধ্যায় আসুক আমার। গান নিয়ে কাজ করতে চাই। মানুষ আমার গান ভালোবেসে যেভাবে পাশে আছেন, তাদের জন্যই আমি আজকের মীম। তাদের প্রতি আমার দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে কাজ করে যেতে চাই সব সময়।’
একজন শিল্পীর দায় শিল্পের কাছে। শিল্পকে ফাঁকি দিয়ে শিল্পী হওয়া যায় না এই বিষয়টি মীমও অনুধাবন করেন। গানকে ভালোবাসতে বাসতে একজন কণ্ঠশিল্পীর শ্রোতার প্রতি দায় বেড়ে যায়। এই দায় ও শ্রোতাদের ভালোবাসা নিয়েই মীমের পথচলা। এই লালনকন্যার মুখে কোনো হতাশার গল্প নেই। তার মুখে হতাশার গল্প মানায় না। তার জীবনে প্রত্যাশা, অর্জন নিয়ে জানতে চাইলে তিনি সহজ করে বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, জীবনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সফলতা-ব্যর্থতা নিয়েই মানুষের জীবন। আমি ব্যর্থতার হিসাব কষতে বসি না, জীবন আমাকে যা দিয়েছে, আমি শুধু তার হিসাব রাখি আর তাতে আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছা বেড়ে যায়, জীবনের প্রতি অভিযোগ কমে যায়, জীবনটা সুন্দর মনে হয়।’ মীম খুবই আশাবাদী, ইতিবাচক মানুষ। তার দৃষ্টিতে জীবনে ব্যর্থতা বলতে কিছু নেই। সবকিছুই অর্জন। জীবনে ব্যর্থ হলেও অনেক কিছু শেখা যায় এমন দর্শন মীমের। ফোক গানে মীম নিজেকে খুঁজে পান। মন ভালো-খারাপে ফোক গান তার বড় সঙ্গী, ফোক গানে প্রশান্তি পান। ফোক গান নিয়ে একটি স্বপ্ন বুকে লালন করছেন লালনকন্যা। ফোক গানের সুর-কথা যেন না হারিয়ে যায়, সে জন্য কাজ করবেন মীম। তিনি ফোক গানের শিল্পীদের নিয়ে বছরে একবার মেলার আয়োজন করার স্বপ্ন দেখছেন। প্রচলিত-অপ্রচলিত ফোক গান নিয়ে কাজ করতে চান। তার এই স্বপ্ন নিঃসন্দেহে ফোক তথা বাংলা গান ও সংস্কৃতির জন্য ভালো। বাংলার গায়েন সিজন-২-এর পরে মীমের প্রথম ঈদ। এবারের ঈদ নিয়েও তার আলাদা কোনো পরিকল্পনা নেই। ঈদে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করাটাই তার মুখ্য স্বপ্ন।
একজন শিল্পীর স্বতন্ত্র পরিচয় মৌলিক গান। এমন পরিচয় বহন করতে চান না এমন শিল্পী খুঁজে পাওয়া যাবে না। মৌলিক গান নিয়ে কোনো চিন্তা আছে কি না, জানতে চাইলে মীম বলেন, ‘একজন শিল্পীর পরিচয় তার মৌলিক গান। ইচ্ছা আছে এ বছরে মৌলিক গান নিয়ে কাজ করার। নিজের ভালো দিকগুলোকে ধারণ করে খারাপ দিকগুলো শুধরানোর চেষ্টাও থাকবে। সর্বোপরি নিজেকে ভালো মানুষ এবং নিজের সৎ ইচ্ছাগুলোর পূর্ণতা দিতে নিজেকে প্রস্তুত করার চেষ্টা করব।’ মানুষ গান নিয়ে ভেসে বেড়ায় জীবনের ভেলায়। জীবনযুদ্ধের বক্ররেখায় গানের যুদ্ধটাও যুক্ত করে পথ চলেন একটু প্রশান্তির জন্য গানকে সঙ্গে রাখতে হয়। এই গানের ছায়ায় মন রেখে যারা যুদ্ধ করেন, তারাই সুরের মানুষ, গানের মানুষ, হোক ছোট কিংবা বড়। একজন শাহরিন সুলতানা মীমও গানের হৃদয়ে হৃদয় রেখে হাঁটছেন। ঈদেও গানের বাইরে থাকছেন না মীম। ঈদের আনন্দের সঙ্গে যুক্ত করেছেন গান। বাংলার গায়েন শেষ করার পর এক বছরের জন্য যুক্ত হয়েছেন আরটিভিতে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের ঈদে তারা আয়োজন করেছে গানের বিশেষ অনুষ্ঠান ‘স্টুডিও বাংলার গায়েন’। এ বিষয়ে জানতে চাইলে লালনকন্যা বলেন, ‘আরজু আহমেদের প্রযোজনায়, ইমন সাহা স্যারের মিউজিক কম্পোজিশনে আরটিভির ঈদ অনুষ্ঠান স্টুডিও বাংলার গায়েনের শুটিং শেষ করেছি বেশ আগেই। আশা রাখি, এ অনুষ্ঠান দর্শকের গ্রহণযোগ্যতা পাবে।’
মানুষ বলতেই স্মৃতির পাহাড় বহন করে চলে। একমাত্র মানুষই বেশি স্মৃতিকাতর। আনন্দ-বেদনার কত স্মৃতি মানুষকে তাড়া করে বেড়ায়। মীমকেও তাড়া করে বিভিন্ন স্মৃতি। একটি স্মৃতির কথা জানতে চাইলে মীম বলেন, ‘যেহেতু ঈদ বিশেষ আয়োজন, তাই ঈদের স্মৃতিচারণাই করি। মজার বিষয় হলো, আমি বাবার সাথে ঈদগাহে যেতাম, ঘাড়ে করে নিয়ে যেতেন আব্বু। বাবা নামাজ পড়তেন, আমি বসে থাকতাম। তারপর তো শুরু হতো ঘোরাঘুরি। আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা ছিল শিশুপার্ক। আমি এখনো সময় করতে পারলে শিশুপার্কে যাই। আমার ভালো লাগে। শিশুদের ছোটাছুটিতে নিজেকে খুঁজে পাই।’
জীবনের বড় অংশ বা বড় সিদ্ধান্ত বিয়ে। বিয়ে মানেই দুটি মানুষের একসঙ্গে জীবন কাটানোর সমাজ স্বীকৃত অঙ্গীকার। সবার জীবনেই বিয়ে জরুরি। সাধারণ মানুষের মতোই তারকাদের জীবনেও বেজে ওঠে বিয়ের সানাই। ভক্ত-অনুরাগীরা বরাবরই তারকাদের প্রেম-বিয়ে নিয়ে দারুণ আগ্রহী। তারা জানতে চান প্রিয় তারকার প্রিয় মানুষটির সম্পর্কে। গানযোদ্ধার চিন্তা অন্যান্য তারকার মতো নয়। তাই গানের মানুষের বিয়েটা ভিন্ন রকম হয়। মীমের কাছে প্রেম-বিয়ে নিয়ে জানতে চাইলে খুবই কৌশলী উত্তর দেন। তিনি বলেন, ‘প্রেম-বিয়ে নিয়ে কোনো খবরই নাই। মূলকথা প্রেমের বয়স নাই, আর বিয়ে তো করাই লাগবে, তবে পায়ের নিচে নিজের একটা ভিত্তি হোক, পরিচয় হোক।’
মানুষের নিজের ভিত্তি ও পরিচয় দরকার। সব মানুষের ভালো পরিচয় ভালো নিরাপত্তা। মানুষকে যেমন বিশ্বাস করে পথ চলতে হয়, তেমনি ‘গান’ বিষয়টাও বিশ্বাসের। জীবনের উত্থান-পতনেও গান তাকে ছাড়েনি। তিনি গানের মাঝে নিজের সুখ ও বিশ্বাস খুঁজে পান। তার স্বপ্ন শুধুই গান নিয়ে। লোকগান আমাদের জীবনের কথা বলে তাই লোকগানকে ছড়িয়ে দিতে চান সর্বত্র। কাজের প্রতি বিশ্বাস রেখে অগ্রসর হতে হয় নীরবে। তবেই জয়ের নিশানা হাতের মুঠোয় আসবে। সার্বিকভাবে সংগীতে যে শব্দগুলো একজন শিল্পী কণ্ঠে উচ্চারণ করে সেগুলো বিশ্বাস না করলে অন্য কাউকে স্পর্শ করবে না। একজন প্রকৃত শিল্পী হয়ে ওঠার জন্য বিশ্বাসটা জরুরি। একটা গানকে ধারণ করতে গেলে ভেতরটা শূন্য করতে হয়। বিশ্বাস ছাড়া কিচ্ছু হয় না। তাই শিল্পীর কখনো বিশ্বাস হারাতে নেই। অর্জন নয়, একজন প্রকৃত শিল্পীকে কাজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। বিশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি বুকে লালন করে লালনকন্যা মীম এগিয়ে যাবে এমন প্রত্যাশা মীমের গানপাগল ভক্তদের।