রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

সাফল্য

আইনআমরা গড়িজীবনযাত্রাবাতিঘরবাংলাদেশ ও বিশ্ববিশেষ রচনাসাফল্য

স্বীকৃতি পেল মায়ের একক অভিভাবকত্ব

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ২৫, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

“কোন কালে একা হয়নি ক জয়ী, পুরুষের তরবারি

প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে, বিজয়লক্ষ্মী নারী”।

প্রাগৈতিহাসিক কাল ধরেই নারী পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সভ্যতার উন্মেষ। নারীদের ত্যাগ-তিতিক্ষা, তাদের অবদান সব কিছু নিয়েই সাহিত্যে রচিত হয়েছে অসংখ্য রচনার। কিন্তু বাস্তবতা কী বলে? সমাজের মানদণ্ডে প্রাপ্য স্বীকৃতির ক্ষেত্রে নারীরা কী আসলেই মূল্যায়িত না এগুলো সবই ফাঁকা বুলি সেটাই মূখ্য বিষয়।

নারীর পরিচয় কি? বাবা, ভাই, স্বামী বা ছেলে ছাড়া কি আসলেই তার আর কোন পরিচয় নেই? ভূললে চলবেনা এই নারীর মাঝেই বাস করে এক স্নেহময়ী মায়ের জাত, একটি জাতির ভবিষ্যৎ সন্তানকে সুষ্ঠুভাবে লালন-পালনের মাধ্যমে তাঁকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে সফলতার লক্ষ্যে পৌঁছাতে মায়ের অবদান কোন অংশে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। শুধু তাই নয় দায়িত্ব নিতে অনিচ্ছুক এমন অনেক পিতার অবর্তমানেও নিজের সমস্ত সুখ জলাঞ্জলি দিয়ে সন্তানের একক অভিভাবক হিসেবে যোগ্যতার সাথে মায়ের ভূমিকা পালনের অনেক নিদর্শনও রয়েছে। মায়ের অভিভাবকত্বের এই যাত্রা শুরু হয় মূলত সন্তানকে গর্ভ ধারণের পর থেকেই। অভিভাবক হিসেবে সন্তানের পিতা-মাতার উভয়ের সম-মর্যাদা থাকলেও কিন্তু এতো কিছুর পরেও শিক্ষা ও চাকরি জীবনের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বাবার পরিচয়ই যেন মূখ্য হয়ে উঠে। এক্ষেত্রে মায়ের ভূমিকা হয় উপেক্ষিত। কিন্তু আশার প্রদীপ জ্বলে উঠেছে। শিক্ষাসহ প্রয়োজনীয় সব ফরম পূরণের ক্ষেত্রে অভিভাবকের নামের জায়গায় বাবার নাম ছাড়াও আইনগতভাবে শুধুমাত্র মায়ের নাম ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত মঙ্গলবার ( ২৪ জানুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মোঃ খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ যুগান্তকারী রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট আইনুন্নাহার লিপি ও অ্যাডভোকেট আয়েশা আক্তার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিত দাশগুপ্ত।

ঐতিহাসিক এই রায়ের পথ কিন্তু এতো সুগম ছিলোনা। এর পেছনের ইতিহাস জানতে হলে আমাদের যেতে হবে পনের বছর পিছনে। ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০০৭ সালে এপ্রিল মাসে বিভিন্ন সংবাদপত্রে “বাবার পরিচয় নেই, বন্ধ হলো মেয়ের পড়ালেখা” শীর্ষক সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে। প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ফরমে তথ্য পূরণের ক্ষেত্রে বাবার নাম পূরণ করতে পারেনি ঠাকুরগাঁওয়ের এক তরুনী। এর ফলশ্রুতিতে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড সে তরুনীকে প্রবেশপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানায়। উল্লেখ্য যে, মা ও সন্তানকে কোনরুপ স্বীকৃতি না দিয়ে দায়িত্বহীন বাবার চলে যাওয়ার পর ওই তরুনী তার মায়ের একক ছত্রচ্ছায়ায় বড় হয়ে উঠে। পরবর্তিতে এই ঘটনার পর্যাপ্ত অনুসন্ধান করে মায়ের অভিভাবকত্ব প্রতিষ্ঠার দাবীতে, শুধু মায়ের নাম ব্যবহার করলে পরীক্ষার ফরম অপূর্ণ বিবেচিত হবে কেন; তা জানতে চেয়ে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এবং নারীপক্ষ যৌথভাবে জনস্বার্থে ২০০৯ সালের ২ আগস্ট রিট দায়ের করে। ওই রিটের প্রেক্ষিতে আদালত তখন রুল জারি করেছিলেন। একই সঙ্গে বর্তমানে কোন কোন শিক্ষাবোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বাবা-মা উভয়ের নাম সম্পর্কিত তথ্য বাধ্যতামূলকভাবে উল্লেখ করতে হয়, তার একটি তালিকা এবং যেসব যোগ্য শিক্ষার্থী তাদের বাবার পরিচয় উল্লেখ করতে অপরাগ তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে কী ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, সে সম্পর্কে প্রতিবেদিন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়। ২০২১ সালের ৬ জুন মানবাধিকার সংস্থা ব্লাস্ট আবেদনকারীদের পক্ষে একটি সম্পূরক হলফনামা আবেদন আকারে দাখিল করে। রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে হাইকোর্ট রায় ঘোষনার জন্য এইদিন অর্থাৎ ২৪ জানুয়ারি ধার্য করেন।

কালজয়ী এই রায়ের ফলে এখন থেকে বাবার নামের পাশাপাশি আরও দুটি অপশন যুক্ত হলো। এতে করে কেউ চাইলে বাবার পরিচয় ব্যবহার না করেও ফরম পূরনের সময় মা কিংবা আইনগতভাবে বৈধ অভিভাবকের নাম লিখতে পারবেন। এ যেন মায়ের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা লাভে এক বড় ধরনের সাফল্য সংযোজিত হলো।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
আমরা গড়িগ্রুমিংজীবনযাত্রাসম্ভাবনাসাফল্য

নতুন বছরের রেজ্যুলেশন করেছো কি?

করেছে Shaila Hasan জানুয়ারী ১, ২০২৩

শায়লা জাহানঃ

প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, হাসি-কান্না সবকিছুর মিশেলে আরেকটি বছর চলে গেলো। এসেছে নতুন বছর। আজ হলো ৩৬৫ পৃষ্ঠার বইয়ের প্রথম ফাঁকা পৃষ্ঠার শুরুর দিন। নতুন বছরের নতুন স্বপ্ন ও সংকল্প পূরণে নিজেকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছো কি? নতুন বছরের তোমার সেট করা রেজ্যুলেশন পূরনের জন্য কিছু টিপস নিয়ে আজকের আয়োজন।

নিউ ইয়ার রেজ্যুলেশন হল এমন একটি ঐতিহ্য যা পশ্চিমা বিশ্বে খুবই কমন। তবে এখন এই ধারণা বিশ্বব্যাপী সমান তালে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ক্যালেন্ডার বছরের শুরুতে একজন ব্যক্তি তার মধ্যে ভাল অনুশীলন চালিয়ে যাওয়ার, একটি অবাঞ্ছিত বৈশিষ্ট্য বা আচরণ পরিবর্তন করার, একটি ব্যক্তিগত লক্ষ্য অর্জন বা অন্যথায় উন্নতি করার সংকল্প করে। নতুন বছরের রেজ্যুলেশনগুলো দীর্ঘকাল ধরে আমাদের জীবনে সত্যিকারের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে স্টক করার এমন এক উপায়, যা আমাদের পিছনের বছরটিকে থামাতে এবং প্রতিফলিত করার পাশাপাশি সামনের বছরের জন্য পরিকল্পনা করতে দেয়। এটি শরীর, মন এবং আত্মার উন্নতি ও নতুন বছরের জন্য তোমার দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যগুলো সংগঠিত করার একটি দূর্দান্ত উপায়। কী থাকে এই রেজ্যুলেশনে? স্বাস্থ্য ও সুস্থতার দিকে মনোযোগ দেওয়াকে লক্ষ্য রেখে নতুন ডায়েট বা ওয়ার্কআউটের পরিকিল্পনা করা, তোমার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য দৃষ্টিভঙ্গি সেট করা, অথবা হতে পারে নতুন কোন বিষয়ে নিজেকে পারদর্শী করার চেষ্টা করা। লক্ষ্য যাই থাকুক না কেন নিজেকে ট্র্যাকে থাকতে সাহায্য করার জন্য রেজ্যুলেশনগুলো করা হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় যে,সমস্ত রেজ্যুলেশনের অর্ধেকেরও বেশি ব্যর্থ হয়ে যায় তা পূর্ণতা দেয়ার ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে, জীবনকে উন্নত করার জন্য সঠিক রেজ্যুলেশনটি কীভাবে সনাক্ত করা যায় এবং কীভাবে এটিতে পৌঁছানো যায় যে সম্পর্কে কিছু টিপস দেয়া হলঃ

-প্রথমেই যা তোমাকে ঠিক করতে হবে তা হলো তুমি কী চাও এবং তা কেন চাও? অর্থাৎ তোমার রেজ্যুলেশনটি হতে হবে একেবারে স্পেসিফিক। আমি ওজন কমাতে চাই, অস্পষ্টভাবে এটা বলার পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য তৈরি করা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। তুমি একটি লক্ষ্য রাখতে চাওঃ কতটা ওজন কমাতে চাও এবং কতো সময়ের ব্যবধানে? এভাবে নিজের লক্ষ্যের ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা রাখা চাই।

-আমরা প্রায়ই এমন পরিকল্পনা সেট করি যেগুলোকে আমরা পরিচালনাযোগ্য মনে করি কিন্তু বাস্তবে অসম্ভব এবং এটি অবাস্তব রেজ্যুলেশন যা তোমাকে বিভ্রান্ত করবে। খুব দ্রুত একটি বড় পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করা তোমাকে হতাশ করে দিতে পারে অথবা তোমার জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই শুরুতেই একেবারে অনেক পরিবর্তন করার চেষ্টা না করাই ভালো। নিজেকে উৎসাহ দিতে এবং ছোট জয়ের দ্বারা অনুপ্রাণিত হতে বড় লক্ষ্যগুলোকে ছোট ছোট ভাগ করো।

-প্রাসঙ্গিকতা থাকতে হবে। এটি কি এমন একটি লক্ষ্য যা সত্যিই তোমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ, এবং তুমি কি সঠিক কারণে এটি তৈরি করেছো? যদি তুমি সেই মুহূর্তে আত্ম-ঘৃণা বা অনুশোচনা বা তীব্র আবেগের অনুভূতি থেকে এটি করো তবে এটি সাধারণোত দীর্ঘস্থায়ী হয়না। কিন্তু তুমি যদি এমন একটি প্রক্রিয়া তৈরি করো যেখানে তোমার জন্য কী ভালো তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করেছো, নিজের জীবনের কাঠামো পরিবর্তন করছো তবেই তা হবে পূরনের জন্য যথার্থ।

-রেজ্যুলেশন পুরণের লক্ষ্যে নিজের অভ্যাস পরিবর্তন করো। তোমার লক্ষ্য যদি থাকে চাকরি পরিবর্তন করার, তাহলে সেই রেজ্যুলেশনে পৌঁছানোর জন্য এই বছর ভিনভাবে কি করতে চাও? আরও নির্দিষ্টভাবে, এখন তোমার কোন অভ্যাস আছে যা তোমাকে সেই লক্ষ্যে থেকে পিছিয়ে দিচ্ছে? হতে পারে তোমার প্রতি রাতে টিভি দেখতে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে স্ক্রোল করার সময় ২-৩ ঘন্টা নিমিষেই হারিয়ে যাচ্ছে। তোমার বর্তমান রুটিন পুনরায় মূল্যায়ন করো এবং সময়কে কিভাবে ব্যয় করবে পেশাদার দক্ষতা শিখতে, কাজের তালিকা চেক করতে বা পেশাদারদের সাথে নেটওয়ার্কিং করতে তা ঠিক করে নাও।

-নিজেকে সর্বদা অনুপ্রাণিত রাখতে হবে। কাঙ্ক্ষিত রেজ্যুলেশনে পৌঁছাতে অনুপ্রাণিত থাকার জন্য, তোমাকে অনুপ্রাণিত করে এমন খাবার, কার্যকলাপ, বিষয়বস্তু, মিউজিকে নিজেকে নিমজ্জিত রাখো। তোমার অদি এবার লক্ষ্য থাকে নতুন কোন ভাষা রপ্ত করার, তবে প্রিয় মানুষদের নিয়ে সেই ভাষার ফিল্ম বা মিউজিক উপভোগ করতে পারো। যদি নতুন কোন দক্ষতা কোর্স করার সিদ্ধান্ত নাও তবে সেই ব্যাপারে ইউটিউবে ভিডিও দেখো, সফল ব্যক্তিদের কথা শুনো যা তোমাকে অনুপ্রাণিত ও উত্তেজিত রাখবে। মোট কথা লক্ষ্য পূরণের চেষ্টার সাথে সাথে নিজেকেও ইন্সপায়ার্ড করতে হবে।

-সর্বোপরি, নিজের প্রতি সদয় হও। যদি তুমি তোমার প্রত্যাশার কম হও তবে নিজেকে সহানুভূতি দেখাও। নিজের সাথে নিজে কথা বলো। তুমি যদি নিজের প্রত্যাশা পূরন না করার জন্য নিজেকে নিচু করে ফেলো বা খারাপ বোধ করো তবে হতাশা আর আত্মগ্লানি বাড়বে বৈ কমবে না। তাই নিজের প্রতি সদয় হও, নিজের সাথে বন্ধুর মত আচরণ করো। মনে রাখবে রেজ্যুলেশনগুলো হল আমাদের সেরা হয়ে ওঠার সুচনা বিন্দু, এটি চূড়ান্ত গন্তব্য নয়।

তাই চলো আমরা এগিয়ে যাই এবং আমাদের লক্ষ্য নির্ধরণ করে, সেগুলোর দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে নতুন বছর শুরু করি।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
আমরা গড়িতুমিই রোদসীনারীরোদসীর পছন্দসম্ভাবনাসাফল্য

আলোয় ভুবন ভরা

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ২৯, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘুচিয়ে অবশেষে আসলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। গতকাল উদ্বোধন (২৮ ডিসেম্বর) হয়ে গেলো দেশের প্রথম বিদ্যুৎচালিত মেট্রোরেলের। সাথে সংযুক্ত হয়েছিলেন ছয় নারী চালক। এ স্বপ্নযাত্রায় চালকের আসনে আসীন হয়ে মরিয়ম আফিজা দেশের ইতিহাসের গর্বিত অংশ হিসেবে নিজেকে যুক্ত করতে পেরেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাথে নিয়ে মরিয়ম আফিজার পরিচালনায় মেট্রোরেল উড়ে গিয়েছে আগারগাঁওয়ের দিকে। কে এই মরিয়ম আফিজা? লক্ষীপুরের মেয়ে আফিজা নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। পড়াশোনার পাট চুকিয়ে গতানুগতিক ধারায়  ক্যারিয়ারকে পরিচালিত না করে সম্পূর্ণ ভিন্ন ঘরানায় নিজেকে নিয়ে গেছেন। অনেকটা নিজ আগ্রহ বশতই এই পদে আবেদন করে গত বছরের ২ নভেম্বর পান ট্রেন অপারেটর হিসেবে নিয়োগ। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষনের পর দেশের এই মেট্রোযুগে প্রবেশে নিজেকে শরীক করতে পেরেছেন।

শুধু মরিয়ম আফিজাই নন, এমন অনেকেই আছেন যারা সমাজের প্রচলিত ট্যাবু ভেঙে সামনে এগিয়ে গিয়েছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় উবার চালক লিউজার কথা। আমাদের দেশে নারী উবার চালক?  তার উপর আবার রাতে-বিরেতে বের হওয়া? অত চাট্টিখানি ব্যাপার নয়। কিন্তু সমাজের সব বাধা-বিপত্তিকে পাশে ঠেলে তিনি সামনেই এগিয়ে গিয়েছেন। গল্পটি আবার হতে পারে আন্তর্জাতিক মঞ্চে অংশ নেয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী বডিবিল্ডার মাকসুদা আক্তারের। কোন মেয়ে বডি বিল্ডিং করছে এমন দৃশ্য তো ভাবাই যায়না। কিন্তু সকল কটুবাক্যকে হটিয়ে আন্তর্জাতিক আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। এই ধারাবাহিকতায় বিশ্বের বুকে দেশের পতাকা উড়ানোর স্বপ্ন দেখেন তিনি।

এবছরই সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশীপে নারী ফুটবল দল দেখিয়ে দিয়েছে তাদের ক্ষমতা। নেপালকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে ইতিহাস রচনা করেছেন বাংলার এই বাঘিনীদের দল। এই শিরোপা জেতা তাদের জন্য অতটা সুগম ছিলোনা। ২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া এই চ্যাম্পিয়নশিপে একবারই ফাইনাল খেলার সুযগ থাকলেও জয়ের স্বাদ নিতে ব্যর্থ হয় তারা। পরবর্তীতে ২০২২ সালে এসে সেই আকাঙ্ক্ষিত জয় আনতে সক্ষম হয়।

নারীদের এমন শত শত সাফল্যগাঁথা গল্পও রয়েছে। যার পদে পদে থাকে অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা। কিন্তু সব কিছু জয় করে তারা সামনে এগিয়ে যেতে পেরেছে। যে কোন সেক্টরেই হোক না কেন, সহযোগিতা, অনুকুল পরিবেশ এবং ইতিবাচক মনোভাব থাকলে নারীরাও এগিয়ে যেতে পারে। নারীর অধিকার মানে অন্যদের দাবিয়ে রেখে তাদেরকে উপরে তোলা নয়, বরং তাদেরকেও দেশ ও সমাজের উন্নয়নের জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার জন্য হাত বাড়িয়ে দেয়া।

-ছবি সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
অন্দরের ডায়েরিকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনযাত্রাদেহ ও মনসচেতনতাসাফল্যসুস্থ মন

জীবনে বদলে দিতে পারে যে অভ্যাস

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ২৯, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

অভ্যাস এবং রুটিন থাকা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য দিক। তুমি একটি লক্ষ্য পূরণ করতে চাও, আরও উৎপাদনশীল হতে চাও বা আরও ভারসাম্যপূর্ণ জীবনযাপন করতে চাও; অভ্যাসগুলো হল সেই ছোট ছোট পরিবর্তনের সমন্বয় যা সময়ের পালাক্রমে উল্লেখযোগ্য ফলাফল যোগ করতে পারে।

‘সফল ব্যক্তিরা কেবল শীর্ষে চলে যান না। সেখানে পৌঁছানোর জন্য জিনিসগুলো ঘটানোর জন্য প্রতিদিন ফোকাসড অ্যাকশন, ব্যক্তিগত শৃঙ্খলা এবং প্রচুর শক্তি প্রয়োজন’। আমেরিকান লেখক এবং উদ্যোক্তা জ্যাক ক্যানফিল্ড এর উক্তি দ্বারা বোঝা যায় একটি সুখী এবং আরও উৎপাদনশীল জীবনের জন্য কতিপয় অভ্যাস গড়ে তোলা কত প্রয়োজনীয়। আমরা যা কিছু ভাবি, বলি এবং করি তা বছরের পর বছর ধরে আমাদের মনের মধ্যে গেঁথে থাকা অভ্যাসের ফল। তারা আমাদের জীবনের সাথে এতটাই অবিচ্ছেদ্য যে একটি গবেষণায় নির্ধারণ করা হয়েছে যে আমরা প্রতিদিন যা কিছু করি তার প্রায় ৪৫ শতাংশ আমাদের অভ্যাস দ্বারা চালিত হয়। তোমার মনোভাবই তোমার উচ্চতা নির্ধারণ করে। তাই পুরাতন অভ্যাসগুলো তোমাকে আটকে রাখতে দেবেনা এবং কিছু সহজ তবে প্রয়োজনীয় অভ্যাসগুলো তৈরি করা শুরু করে দাও।

ভোরে জেগে উঠো

ভোরবেলা হলো শান্তিপূর্ণ প্রতিফলন এবং পর্যাপ্ত উৎপাদনশীলতার একটি সময়; যেখানে পৃথিবী স্থির এবং ঘুমিয়ে আছে, যা তোমাকে তোমার দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যগুলোতে ফোকাস করার অনেক সময় দেয়। হয়তো তুমি দৌড়ের জন্য যেতে চাও অথবা স্বাস্থ্যকর প্রাতঃরাশ উপভোগ করতে পছন্দ করো। একটি অর্থপূর্ণ সকালে এই ধরনের কার্যক্রম তোমাকে সুপারচার্জ বোধ করায়। এই অভ্যাস ইলন মাস্ক, মার্ক জুকারবার্গের মতো নেতারা প্রতিদিন অনুশীলন করে। তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠা একটি দৈনন্দিন রুটিনে সেট করবে যা তোমাকে আরও উৎপাদনশীল হতে সাহায্য করতে পারে।

যা আছে তাতে ফোকাস করো

আমরা আমাদের সমস্যায় ডুবে অনেক সময় ব্যয় করি। কিন্তু সমস্যাগুলোও জীবনের একটি অংশ। তুমি যদি তোমার সমস্যাগুলো থেকে তোমার ফোকাসকে সরিয়ে নিতে চাও তবে তোমার যা আছে তার জন্য কৃতজ্ঞ হতে হবে। কৃতজ্ঞতা স্বাস্থ্য, সুখ এবং সাফল্যের নিশ্চিত পথ। এটি আমাদের যা নেই তার চেয়ে আমাদের যা আছে তার দিকে আমাদের মনোযোগ সরিয়ে দেয়।

দিন নির্ধারণ করো

তোমার দিন নির্ধারণ করা অভ্যাসের এই তালিকায় আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন যা তোমার জীবনকে পরিবর্তন করতে পারে। বিভ্রান্ত হওয়া এবং ফোকাস হারানো এড়াতে তুমি দিনের জন্য কী করছো তা জানা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, দিনের সময় নির্ধারণ করা তোমার অগ্রাধিকার সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে যাতে তুমি তোমার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কী তা সম্পন্ন করতে পারো।

প্রাণ খুলে হাসো

গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা সত্যিকারের হাসি হাসে তারা জীবনে সুখী হয়। এটি তোমাকে সময়ের সাথে সাথে মানসিক এবং আধ্যাত্মিক শান্তি খুঁজে পাওয়ার একটি সেরা অভ্যাস। আমাদের দেহের ফিজিওলজি আমাদের মনের মনস্তত্ত্বকে নির্দেশ করে। যখন আমাদের মাঝে হতাশা ও অসুখের অনুভূতি প্রকাশ হয়, তখন আমাদের মন সেই ইঙ্গিতগুলো গ্রহণ করে এবং তাদের সাথে চলে। যাইহোক, একবার আমরা সচেতনভাবে নিজেদেরকে সামঞ্জস্য করে আমাদের বাহ্যিক চেহারা পরিবর্তন করি, দেখবে আমাদের অভ্যন্তরীণ অনুভূতিও তা অনুসরণ করে নিবে।

৮০/২০ নিয়ম অনুসরণ

প্যারোটের নীতি বা ৮০/২০ নিয়ম মানে যে কোন পরিস্থিতিতে, ২০% কাজগুলো ৮০% ফলাফল দেয়। সুতরাং, তুমি সেই কাজগুলোতে তোমার বেশিরভাগ সময় এবং শক্তি বিনিয়োগ করে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারো যা সবচেয়ে বড় প্রভাব তৈরি করবে। একবার তুমি সেই কাজগুলো শেষ করে ফেললে, তোমার করণিয় তালিকায় থাকা অন্যান্য ক্রিয়াকলাপগুলোতে ফোকাস করতে পারবে।

পড়, পড় এবং পড়

বই পড়া জ্ঞান অর্জন এবং সৃজনশীলতাকে উদ্দীপিত করার একটি দূর্দান্ত উপায়। এটি মনোযোগকে উন্নত করে এবং ধ্যানের মতই মনে শান্ত প্রভাব ফেলে। তাছাড়া, ঘুমানোর আগে পড়া ভালো ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে।

ইতিবাচক মানুষের মাঝে থাকা

কার সাথে সময় কাটাচ্ছো তা সাবধানতার সাথে বিবেচনা করা উচিৎ। এমন সম্পর্কগুলো ছেড়ে দাও যা তোমাকে উপরে তোলার পরিবর্তে নীচে নিয়ে আসে। এমন লোকদের সাথে মিশো যারা সুখ ভাগ করে নিতে জানে। যেহেতু সুখ সংক্রামক, এটি তোমার জীবনে ইতিবাচকতা তৈরি করার সবচেয়ে সহজ উপায়গুলোর মধ্যে একটি।

প্রতিদিন ব্যায়াম করো

জীবনের সর্বোত্তম অভ্যাসগুলোর মধ্যে একটি হল প্রতিদিন ব্যায়াম করা। এটি ভারি ভারোত্তোলন বা ম্যারাথন দৌড়ানো নয়। রক্তের অক্সিজেন এবং শরীরে এন্ডোরফিন বাড়াতে হালকা কার্যকলাপের সাথে যুক্ত। তুমি যখন এই অভ্যাসটি শুরু করবে তখন কেবল শারীরিকভাবে ভাল বোধ করবেনা, আরও অনুপ্রাণিত বোধ করবে এবং মানসিকভাবে সুস্থ হবে। ব্যায়াম ডোপামিনিন, অক্সিটোসিন এবং সেরোটোনিনকে সিস্টেমে ছেড়ে দেয়, যা কোন ঔষধের ব্যবহার ছাড়াই ভালো প্রভাব বিস্তার করে।

ভয় মোকাবেলা করো

আমরা অনেক সময় ভয়ে ডুবে থাকি। আমরা ভবিষ্যৎ নিয়ে এতটাই চিন্তিত এবং নার্ভাস থাকি যে বর্তমান মুহূর্ত উপভোগ করতে ভুলে যাই। জিনিসগুলোকে ভয় করা আমাদের মনে এতটাই গেঁথে গেছে যে এটি আমাদের অগ্রগতিকে বাধা দেয়। ভয় ভেঙে ফেলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাসগুলোর মধ্যে একটি যা তুমি বিকাশ করতে পারো।

নিজের জন্য সময় বের করা

এমন একটি অভ্যাস যা আমাদের অধিকাংশই জীবনে বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ হয় তা হল কিছুটা নিজস্ব সময় উপভোগ করা। প্রতিদিন এমন একটা ছোট কাজ করো যা করতে তুমি পছন্দ করো। এই কাজ করার মাধ্যমে, তোমার মনে শান্তি স্থাপন হবে যা তোমার মেজাজ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং আত্ম-সম্মানের জন্য বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। হেডফোনের মাধ্যমে নিজের পছন্দের মিউজিক শুনো না কেন, পার্কের মধ্যে হাঁটাহাঁটি, প্রিয় রাস্তা ধরে ড্রাইভ অথবা প্রিয় কোন সিনেমা দেখা- যাই করোনা কেন, নিশ্চিত হও যে সর্বদা নিজের জন্য কিছুটা সময় বের করতে পারছো।

এই অভ্যাসগুলো বিকাশের জন্য দৃঢ় সংকল্প, ধৈর্য এবং অবিরাম প্রচেষ্টা প্রয়োজন। হতে পারে এটি মাত্র কয়েক সপ্তাহ বা এক বছরেরও বেশি সময় নিতে পারে। তবে হাল ছেড়োনা, জয় হবেই।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.আমরা গড়িকান পেতে রইগ্রুমিংজীবনজীবনযাত্রাসম্ভাবনাসাফল্য

সফল ব্যক্তিদের অনুকরণীয় অভ্যাস

করেছে Shaila Hasan ডিসেম্বর ৫, ২০২২

শায়লা জাহানঃ

কিসে সফলতা আসে? সবার হয় আমি কেন জীবনের উত্থান-পতনে মুখ থুবড়ে পড়ি? সফলতার চাবিকাঠি কি? এমন এমন হাজারো প্রশ্ন আমাদের মাথায় সবসময় উঁকি মেরে থাকে। যখন একজন সাকসেসফুল ব্যক্তিকে দেখি তখন এইসব চিন্তা আমাদের মাঝে আরও বেশি হানা দেয়। কারণ আমরা যখন একজন সফল ব্যক্তিকে দেখি, তখন কেবল তার সর্বজনীন গৌরব দেখতে পাই কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর জন্য তাদের ব্যক্তিগত ত্যাগ স্বীকারের চিত্র দেখতে পাইনা। বিশ্বের সবচেয়ে সফল ব্যক্তিরা, যারা উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করেছেন কেউই সেখানে অতি সহজে বা দূর্ঘটনাক্রমে আসেননি। ভাগ্য ছাড়াও, সফল হতে হলে যেমন দরকার কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায়ের তেমনি দরকার ভালো কিছুর অভ্যাস গড়ে তোলার। এই অভ্যাসগুলো কি এবং কিভাবে তা তোমার জীবনে কাজে লাগাতে হয় তা শেখা জরুরী। এমন কিছু অভ্যাসের ব্যাপারে আসো জেনে নিই।

অর্গানাইজেশন

যারা জীবনে সফল তাদের প্রায়শই উল্লেখ করা অভ্যাসগুলোর মধ্যে এটি হল একটি। অর্গানাইজেশনের মানে হল পরিকল্পনার পাশাপাশি অগ্রাধিকার ও লক্ষ্য নির্ধারণ করা। এর মাধ্যমে সময় পরিকল্পনার সাথে পরিকল্পিত কার্যাবলীর সবকিছুই একটি ট্র্যাকের মধ্যে থাকে। এটি এক ধরনের টু-ডু লিস্ট করে রাখার মতো ব্যবস্থা। সংগঠিত আচরণের উদাহরণ হলোঃ

-কোন কাজ শুরু করার আগে নির্দেশাবলী বুঝা গেছে তা নিশ্চিতকরণ।

-দিন/কাজের জন্য প্রয়োজনীয় রিসোর্স বা উপাদান প্রস্তুত আছে তার ব্যাপারে নিশ্চিত থাকা

-একটি পরিকল্পনা ও সে ব্যাপারে সংগঠিত চিন্তা আছে।

লক্ষ্য নির্ধারণ করা

সাফল্যের বিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞরা প্রকাশ করেছেন যে মস্তিষ্ক হল একটি লক্ষ্য নির্ধারণকারী অর্গানিজম। সফল ব্যক্তিরা জানেন যে, তারা যদি তাদের অবচেতন মনকে একটি লক্ষ্য দেন তবে তা অর্জনের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করবে। তারা উচ্চ লক্ষ্য নির্ধারণ করে যা বাস্তবসম্মত এবং পরিমাপযোগ্য উভয়ই, এবং তারা সেই লক্ষ্য পূরনের দিকে কাজ করার চেষ্টা করে।

 অধ্যবসায়

কঠিন চেষ্টা করা এবং হাল ছেড়ে না দেওয়া- খুবই কঠিন একটি কাজ। সফলতা পাওয়ার কোন শটকার্ট ওয়ে নেই। একমাত্র অধ্যবসায় পারে এই লক্ষ্যে পৌছুতে সাহায্য করতে। সাফল্যের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করার সময় মনে রাখতে হবে যে, যাই হোক না কেন অধ্যবসায় করে যেতে হবে। এর অনেকটাই নিজের প্রতি বিশ্বাস এবং জীবন সম্পর্কে নিজ উপলব্ধির উপর নির্ভর করে। অধ্যবসায় এবং সাফল্য হলো একটি ম্যারাথনের মতো। সেই ম্যারাথনে তোমাকে দৌড়াতে হবে তবে সফলতা ধরা দিবে।

উপলব্ধি

কিছুই ভালো বা খারাপ নয়- জিনিসগুলো কেবল তুমি যেভাবে উপলব্ধি করো। রায়ান হলিডে তার  ‘দ্য অবস্ট্যাকল ইজ দ্য ওয়ে’ বইয়ে উপলব্ধির ব্যাপারে উদাহরণ দিয়ে বলেছেন ‘একটি হরিণের মস্তিষ্ক একে দৌড়াতে বলে কারণ জিনিসগুলো খারাপ। এটি সরাসরি একটা ট্র্যাকের মধ্যে চলে’। তোমার উপলব্ধি হলো কী ঘটছে তা পর্যবেক্ষণ করার এবং এটিকে খারাপ বা ভাল হিসেবে দেখছো কিনা এবং কীভাবে এটি পরিচালনা করবে তা সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা। তোমার মনোভাব এবং উপলব্ধি তোমাকে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তের দিকে নিয়ে যাবে।

অ্যাকশন গ্রহণ

সফল ব্যক্তিরা জানেন যে, নিজে যা জানে তার জন্য পৃথিবী মূল্য দেয়না; যা করে দেখানো হয় তাই মূল্য প্রদান করে। সংগঠিত করা, পরিকল্পনা করা এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু কর্ম ছাড়া একটি পরিকল্পনা সম্ভাবনা ছাড়া আর কিছুই নয়।

ইতিবাচক মনোভাব

অনেক সফল মানুষের মতে, একটি ইতিবাচক মনোভাব শুধুমাত্র সফল হওয়ার ফলাফল নয়- এটি সাফল্যের মূল কারণগুলোর মধ্যে একটি। জোয়েল ব্রাউন অতি সফল ব্যক্তিদের জীবনে কৃতজ্ঞতা এবং ইতিবাচক মনোভাবকে অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেন।

নেটওয়ার্কিং

সফল ব্যক্তিরা নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে অন্যদের সাথে আইডিয়া শেয়ারের মূল্য জানেন। একজন সফল ব্যক্তি অন্য সফল ব্যক্তিদের মাঝে নিজেকে ভিড়িয়ে রাখতে পছন্দ করে।

ভোরে উঠার অভ্যাস

আমরা ছোট বেলায় আর্লি রাইজিং এর রাইমস পড়েছি। যেখানে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার ব্যাপারে বলা হয়েছে। সফল ব্যক্তিদের মাঝেও এই অভ্যাস বিদ্যমান। তাদের মতে, সফল হওয়ার জন্য যে যত বেশি সময় দিতে পারে, সাফল্যের সম্ভাবনা তার তত বেশি। এই আর্লি রাইজারদের মধ্যে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যক্তির নাম রয়েছে। যেমন, ভার্জিন গ্রুপের স্যার রিচার্ড ব্র্যানসন, ডিজনির সিইও রবার্ট ইগার এবং সাবেক ইয়াহু সিইও মারিসা মায়ার।

ভূল থেকে শিক্ষা নেয়া

পৃথিবীতে কেউই ভূলের উর্দ্ধে নয়। সাধারন মানুষের পাশাপাশি সফল ব্যক্তিদেরও ভূল করার চান্স থাকে। কিন্তু তারা এতে আশাহত না হয়ে বরং তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নেয় এবং ভবিষ্যতে চলার পথে তার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে সজাগ থাকে।

নিজের উপর আত্মবিশ্বাস

সর্বোপরি বিলিভ ইউরসেলফ। তুমি যদি তোমার স্বপ্নের জীবন সফল করার পথে এগুতে চাও তাহলে তোমাকে বিশ্বাস করতে হবে যে, তুমি এটা ঘটাতে সক্ষম। নিজেকে বিশ্বাস করা মানে নিজের ক্ষমতার উপর বিশ্বাস রাখা। যখন নিজের উপর বিশ্বাস করো, তা তখন আত্ম-সন্দেহ কাটিয়ে উঠতে এবং নতুন পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নিজেকে সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.আমরা গড়িএই সংখ্যায়খেলাধুলাসাফল্য

বাংলার বাঘিনী’দের জয়

করেছে Shaila Hasan সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২

শায়লা জাহান

হিমালয়কন্যা খ্যাত নেপালে ইতিহাস গড়েছেন বাংলার নারী ফুটবলাররা। সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ৩-১ গোলে নেপালকে হারিয়ে প্রথমবারের মত শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ দল।

নেপালের কাঠমুন্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়াম, রণক্ষেত্র তৈরি।  বৃষ্টিস্নাত কর্দমাক্ত মাঠে একপাশে রয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল অন্যদিকে রয়েছে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বি স্বাগতিক নেপাল দল। বাংলাদেশের সময় বিকেল সোয়া ৫টায় শুরু হয়ে যায় সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের শিরোপা লড়াই। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ও স্টেডিয়াম থেকে ধেয়ে আসা নেপালের সমর্থকদের হর্ষধনি কে উপেক্ষা করে ১৪ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় শামসুন্নাহার করেন প্রথম গোল। পরবর্তীতে ৪১ মিনিটে নেপালি দর্শকদের আবার স্তব্ধ করে দেন কৃষ্ণা। তাঁর দুর্দান্ত শটে গোলকিপার আনজিলার মাথার ওপর দিয়ে বল চলে যায় সোজা নেটের জালে। ফলাফল ২-০। প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যান সাবিনা খাতুনরা। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন আনতে মরিয়া হয়ে উঠে নেপাল দল। যার ধারাবাহিকতায় ৭০ মিনিটের মাথায় আনিতা বাসনেতের এক শটে বল উড়ে যায় বাংলাদেশের জালে। ম্যাচ পরিনত হয় ২-১ এ। এরপর চলতে থাকে আক্রমন-পাল্টা আক্রমন। তবে খুব বেশি আর অপেক্ষা করতে হয়নি। ৭৭ মিনিটেই কৃষ্ণা রানী সরকারের সেই কাঙ্ক্ষিত গোল দিয়ে জয়ের ট্রফি ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ।

                                                                   

 

 

 

সাফ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা অতটা সহজ ছিলোনা বাংলাদেশ দলের জন্য। ২০১০ সাল থেকে শুরু হওয়া এই চ্যাম্পিয়নশিপে ৬ বারের মধ্যে ৫বার শিরোপা জিতেছে ভারত। ২০১৬ সালে শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত সাফের আয়োজনে ৬-০ গোলে মালদ্বীপকে হারিয়ে প্রথমবারের মত ফাইনাল খেলার স্বাদ নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু শিরোপা জেতার স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। পরবর্তীতে ২০২২ সাল। ফাইনালে উঠার পথে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ হারায় মালদ্বীপ ও পাকিস্তানকে। সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় ভুটানের সাথে। ৮-০ এক বিশাল ব্যবধানে ভুটানকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মত ফাইনালে পৌঁছায় বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে টানা পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারানো নেপালের বিপক্ষে জয়ী হওয়া বাংলাদেশ দলের জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং ছিলো বটে, কিন্তু বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ দল দক্ষতা ও গোল কিপার রুপনা চাকমা’র সুনিপুণ রিসিভিং, টাইমিং  তাদের জয় আনতে সক্ষম হয়েছে। টুর্নামেন্টে ৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। হয়েছেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ও।

                                                               

২০০৩ সালে ছেলেদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের পর এটি বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের সর্বোচ্চ অর্জন। আজ বুধবার (সেপ্টেম্বর, ২১)  দেশের আপামর ক্রীড়াপ্রেমীরা এই বীর ফুটবলারদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নিয়েছেন।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
সাফল্য

করেছে tarek সেপ্টেম্বর ১, ২০২২

নারী প্রাধান্য পারিবারিক ম্যাগাজিন রোদসী। প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে রোদসীর প্রিন্ট কপি প্রকাশিত হয়। এছাড়াও আছে অনলাইন সংস্করণ। বাংলাদেশের স্বনামধন্য অ্যাডভাটাইজিং এজেন্সি প্রচিত’র সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০১৪ সাথে প্রকাশ পায় রোদসী।

নারী জীবনের বলা-না বলা কথা ‍তুলে আনতেই রোদসীর যাত্রা শুরু। বিগত ৯ বছর ধরে আমাদের সে চেষ্টা অবিরত। এবার আয়োজন করতে যাচ্ছি ভিন্ন কিছুর। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা অত্যন্ত আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি ‘রোদসী সূর্যকন্যা অ্যাওয়ার্ড ২০২২’।

নারী জীবনকে সমাজের অনেকেই মনে পরনির্ভর। কিন্তু কেউ কেউ আছেন সমাজের শত বাধা অতিক্রম করে আলো ছড়ান চারপাশে। হয়ে ওঠেন সূর্যকন্যা।

আমরা এমন কয়েকজন গুণীকে সম্মাননা জানাতে চাই। আমরা চাই ভালো কাজ সংক্রমিত হোক সমাজে। এই সূর্যকন্যারা হয়ে উঠুক সমাজের উদাহরণ।

তোমার কাজ যদি রাষ্ট্র-সমাজ এমনকি পরিবারেও এমন ব্যাঞ্জনা দিয়ে থাকে যা সমাজের জন্য উদাহরণ হতে পারে তাহলে তুমিই আমাদের সূর্যকন্যা। তোমাকেই খুঁজছে টিম রোদসী। আমরা চাই তোমার দেখানো পথেই আলো ছড়ুক আরো বিস্তৃত হয়ে।

নিচের তথ্যগুলো পূরণ করে পাঠিয়ে দাও আমাদের কাছে। আমরা জানতে চাই তোমার কথা। জানাতে চাই তোমার কথা।

আগামী ২২ অক্টোবর ২০২২ ইং তারিখে বনানী ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ৭জন নারীর হাতে তুলে দেয়া হবে ‘রোদসী সূর্যকন্যা অ্যাওয়ার্ড ২০২২’।

১. শিক্ষা ২. স্বাস্থ্য ৩. ফ্রিল্যান্সিং ৪. উদ্যোক্তা ৫. কৃষি ৬. সংগঠন এবং ৭. সাংবাদিকতা এই সাত ক্যাটাগরিতে আমরা মনোনয়ন নিয়ে আমাদের জ্যাজ প্যানেল তোমাদের কাজের মূল্যায়ন করবেন। এর মধ্যে বাছাইকৃতদের সাথে টিম রোদসী যোগাযোগ করবে।

ফরম জমা দেবার শেষ তারিখ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২
রোদসীর অফিস ঠিকানা:
৯১/১, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যানবাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩
প্রয়োজনে: ০১৭৩০৩০৬২৪১

পুরন করো এই ফর্মটিঃ রোদসী সূর্যকন্যা অ্যাওয়ার্ড-২০২২

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.তুমিই রোদসীনারীপ্রধান রচনাসম্ভাবনাসাফল্য

স্বপ্ন দেখি নারী দিবসের দরকারই হবে না

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ১০, ২০২২

দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি কাজ করছেন বাংলাদেশের ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে। চরের মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান নানান বিষয়ে কাজ করলেও তার মূল আগ্রহ নারীর জীবন নিয়ে। কারণ তিনি মনে করেন, নারীর উন্নয়ন না হলে সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিশ্ব নারী দিবসে রোদসীর বিশেষ সংখ্যায় কথা হলো ফ্রেন্ডশিপ-এর ফাউন্ডার ও এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রুনা খানের সঙ্গে। কথা বলেছেন সোলাইমান হোসেন-

 

রুনা খান

 

শুরুতেই আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি সাতক্ষীরার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের আন্তর্জাতিক রিবা অ্যাওয়ার্ড লাভ করার জন্য। শুরুতেই আমরা আপনার ছোটবেলার গল্প শুনতে চাচ্ছি। কীভাবে কেটেছে আপনার ছেলেবেলা?

রুনা খান : বাংলাদেশের একটি কয়েকশ বছরের পুরোনো পরিবার থেকে আমি উঠে এসেছি। আসলে একটা নির্দিষ্ট গ-ির মধ্যে আমরা বড় হয়েছি। আমাদের আশপাশে গরিব কী তা আমরা জানতাম না। ঢাকা শহরে গাড়িতে যখন বসতাম, তখন গরিব আসতÑওটাই আমাদের জন্য গরিব দেখা ছিল। এর একটাই কারণ- আসলে একটা গ-ির মধ্যে আমরা সবাই বড় হয়েছি। পারিবারিকভাবেই আমার বিয়ে হয়ে যায় এবং এখন আমার তিনটি সন্তান আছে। তবে আমি যতই নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে বড় হই না কেন, কখনো কাজ থামাইনি।

 

অনেকেরই তো অনেক রকম চিন্তা থাকে। কেউ ডাক্তার হতে চায়, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। আপনার ছোটবেলায় এমন কোনো ইচ্ছা ছিল কি?

রুনা খান : আমি আইনজীবী হতে চেয়েছিলাম। আমি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান সবখানেই পড়াশোনা করেছি। কিন্তু একটা জিনিস সারা জীবন মনে হতো, তা হলো দেশের জন্য কিছু করব। কিন্তু কী করব এমন কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তবে এটা আমার মাথায় সব সময় ছিল যে, এই দেশ ছেড়ে আমি কখনোই চলে যেতে পারব না। আমি যখনই চিন্তা করি আমি কখনো ধানখেত দেখতে পারব না, কখনো কৃষক দেখতে পারব না, আমার তখন মন খারাপ হয়ে যায়। আমি যখন নৌকা নিয়ে এদিক-সেদিক যেতাম, তখন দেখতাম সবচেয়ে গরিব লোক এখানে থাকে। তখন মনে হলে এসব মানুষকে নিয়ে কিছু একটা করা যেতে পারে। সেভাবেই শুরু।

চরের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে তো আপনারা কাজ করছেন। এর মধ্যে নারীর জীবন নিয়ে আপনার আলাদা কোনো ভাবনা আছে কি?

রুনা খান : আমি নারী, কেমন করে নারীদের জন্য ভাবব না? ভাবনা অবশ্যই আছে। নারীদের জন্য সব সময় ভাবি। নারীদের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো তাদের সন্তান। এ কারণেই নারী এবং শিশু আমার কাজের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু একটা সংসার সুন্দর হয় নারী-পুরুষ আর সন্তান নিয়ে। তাই আমি শুধু নারীকে নিয়ে কাজ করি, এটা কখনো মনে করি না। কারণ, উন্নতি সবাইকে নিয়েই হবে। যে কারণেই আমাদের কোনো কাজ শুধু নারীর জন্য নয়। তারপরও আমাদের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ উদ্যোক্তা হলেন নারী।

নারীকে নিয়ে অনেক কাজই তো করেছেন, কিন্তু এমন কোনো কাজ কি আছে, যেটা ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে তৃপ্তি দিয়েছে?

রুনা খান : চরে একটা মেয়ের যখন ফিস্টুলা কিংবা পোলাস্ট নিউট্রেস হয়, ১৯ কিংবা ২০ বছরের একটা মেয়েকে যখন দেখি এসব কারণে তার স্বামী তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে, তখন খুব খারাপ লাগে। পরিবার থেকে আলাদা করে দিয়ে আলাদা ঘরে রেখে দেয়। অথচ সাধারণ আধা ঘণ্টার একটা অপারেশন করিয়ে তাকে আবার পরিবারে ফেরত পাঠানো যায়। এমনি করে যখন আমি লাইফ চেঞ্জ দেখতে পারি, তখন এমন কাজের শান্তি অন্য রকম হয়।

আপনার দীর্ঘ কাজের অভিজ্ঞতা। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আপনার কি কখনো মনে হয়েছে নারীর কোন জায়গাটা উন্নত হলে পুরো সমাজ উন্নত হবে?

রুনা খান : আমি মনে করি, নারীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে হবে। সেই শ্রদ্ধাবোধ যেমন তার স্বামীর, সেই সঙ্গে তার পরিবারের। নারী যখন তার সঠিক শ্রদ্ধাবোধ এবং মূল্যায়নটা পাবে, তখনই কেবল নারী সব করতে পারবে। একটা নারী একই সঙ্গে বাড়ির কাজ, বাড়ির বাইরের কাজ করে সন্তান জন্ম দেওয়া, টাকা আয় করা থেকে শুরু করে সব রকম কাজের সঙ্গেই যুক্ত।

আসলে একটা সমাজ কিংবা পরিবার কিন্তু নারীকেন্দ্রিক। আমরা যতই অস্বীকার করার চেষ্টা করি না কেন, আসলে একজন নারীকে কেন্দ্র করেই কিন্তু পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র সবই চলে। আপনি বিষয়টি কীভাবে দেখেন?

রুনা খান : আসলে এ বিষয়টি অস্বীকার করার উপায় নেই। একজন নারীকে কেন্দ্র করেই তার সন্তান-সংসার এবং সমাজ। নারীকে কেন্দ্র করেই সংসারের আয়, এমনকি কিভাবে সংসারের জন্য সুন্দরভাবে ব্যয় করতে হয় সেই ব্যাপারে নারীর জানাশোনা অসামান্য। নারীরা যেভাবে সংসার চালাতে পারেন, ছেলেরা সেই আন্দাজে চালাতে পারেন না।

আসলে নারীর যে সঞ্চয়ক্ষমতা, সেটা পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি আলাদা। আমাদের দাদি-নানি কিংবা মায়েদের দেখেছি ভাতের চাল থেকে একমুঠ হয়তো রেখে দিত সঞ্চয় করার উদ্দেশ্যে। এই চাল আবার কোনো বিপদের দিনে সংসারের কাজেই লাগাত। এগুলো তো নারীর অন্য রকম ক্ষমতা।

রুনা খান : হ্যাঁ, এটা নারীদের একটা অসামান্য একটা ক্ষমতা। আর এ কারণেই আমাদের একটা ফিন্যান্সিয়াল প্রোগ্রাম আছে, যেটার নাম দিয়েছি মুষ্টি। কারণ, এটাই কিন্তু মেয়েদের সক্ষমতার জানান দেয়। এটাই নারীর বিশেষত্ব। কোনো একদিন দেখা দেখা গেলো ওই পরিবারের ঘরে চাল নেই, সেদিন এ চালই তাদের মুখে ভাত তুলে দেয়। চিন্তার এই জায়গার কারণেই তারা শ্রদ্ধার যোগ্য। মেয়ের ক্ষমতা এবং ছেলের ক্ষমতা কিন্তু আলাদা। আমি বলছি না মেয়েদের শক্তি ছেলেদের মতো হতে হবে। বা একটা মেয়ে, ছেলেদের মতোই কাজ করবে।

মেয়ে আসলে তার বৈশিষ্ট্য নিয়েই মেয়ে এবং এটাই তার সৌন্দর্য

রুনা খান : একদম তাই। মেয়ে তার নারীত্ব নিয়েই সুন্দর। একটা মেয়ের মনুষ্যত্ববোধ আর নমনীয়তাকে যে ছেলে দুর্বলতা ভাবে, সে আসলে বিরাট ভুল করে। এগুলো নারীর দুর্বলতা নয়। এটাই কিন্তু নারীর সাহস, এটাই নারীর ক্ষমতা।

সামনে বিশ্ব নারী দিবস। আপনি যে নারীদের নিয়ে কাজ করছেন, তাদের কাছে নারী দিবস এবং অন্য আর দশটা দিন একই। প্রতিবছর নারী দিবস আসে কিন্তু এই নারী দিবস কি কোনো প্রভাব তৈরি করতে পারে? এই নারী দিবসটা আপনি কীভাবে দেখেন?

রুনা খান : যখন কোনো পরিবর্তন আনতে হয়, তখন একটা একক জিনিস দিয়ে তা হয় না। আমি যদি বলি সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজই আমার সমাজ বদলে দেবে কিংবা মাইক্রোফিন্যান্সই আমার সমাজ বদলে দেবে, তা কিন্তু কখনো সম্ভব নয়। কোনো একটা কিছু দিয়ে কখনো দুনিয়া পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। দুনিয়ায় বিভিন্ন রকম মানুষ, তাই বিভিন্ন রকম জিনিস লাগে এই দুনিয়াকে পরিবর্তন করতে। আমরা নারী দিবস পালন করি, এটা আসলে একটা কম্পোনেন্ট। এটা নারীকে অনুভূতি দেয় যে, তুমি স্পেশাল। তাই আমি মনে করি নারী দিবস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমার স্বপ্ন হলো হয়তো কোনো একদিন নারী দিবসের আর দরকারই হবে না। হয়তো নারী-পুরুষ মিলে একটা দিবস পালন করবে, যেটার নাম হবে হিউম্যান ডে।

 

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, বিশেষ করে নারীদের নিয়ে?

রুনা খান : আমরা বিভিন্ন বিষয়ে অনেক উন্নতি করেছি। আমাদের মতো অর্থনীতির সক্ষমতার দেশের তুলনায় এদেশের নারীদের আমরা অনেক ওপরে নিয়ে গেছি। আপনি যদি আশপাশের কোনো দেশের সঙ্গে তুলনা করেন, তাহলে দেখবেন আমরা খুব ভালো অবস্থানে আছি। কিন্তু দারিদ্র্য আমাদের অনেক কিছু বাধাগ্রস্ত করছে। এসব কিছুর মধ্য থেকেও আমি চেষ্টা করছি চরের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে।

এবার চরের তিনটি মেয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে চান্স পেয়েছে। যাদের বাসায় একটা মাত্র কুঁড়েঘর। যেখানে কোনো রকমে তারা পরিবার নিয়ে বাস করে। অথচ এই মেয়েগুলো এখন পুরো দুনিয়ার মানুষের সঙ্গে মিশতে পারছে। আমার স্বপ্ন হলো প্রতিটি চর থেকে যেন অন্তত একটি করে মেয়েকে এমন ভাবে তৈরি করতে পারি, যারা তাদের পুরো কমিউনিটির আদর্শ হবে।

এখন তো ডিজিটালাইজেশনের যুগ। আপনি যে নারীদের নিয়ে কাজ করছেন, তাদের প্রযুক্তিগতভাবে উন্নয়নের জন্য কিছু করছেন কি?

রুনা খান : হ্যাঁ, এগুলো আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে করি। আমাদের স্কুলগুলো সব ডিজিটালাইজড। তা ছাড়া বাচ্ছাদের আমরা কম্পিউটারে দক্ষ হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দিই।

আপনারা এখন পর্যন্ত কতগুলো স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন?

রুনা খান : আমাদের প্রাইমারি স্কুল ৪৮টির মতো। হাইস্কুল আছে ২২টির মতো। এ ছাড়া অ্যাডাল্ট এডুকেশন সেন্টার আছে ৪৮টি। আর আমাদের রোহিঙ্গাদের জন্য প্রায় ৪০০ স্কুল আছে।

এর বাইরে আপনারা আর কী কী বিষয়ে কাজ করছেন?

রুনা খান : আমরা প্রথমেই চেষ্টা করি মানুষের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে। যেখানে মানুষ দাঁড়াতে পারে। সেই প্ল্যাটফর্মটা তৈরি করতে কী কী দরকার? প্রথমেই লাগে স্বাস্থ্য। আমরা স্বাস্থ্য খাতে খুব বেশি কাজ করি। প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ লোককে আমরা সরাসরি সেবা দিই। শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি। এরপর আমরা ইনকাম জেনারেশন করাই। যারা কৃষিকাজ করতে পারে, তারা সেটা করে। যারা হাঁস-মুরগি পুষতে পারে, তারা সেটা করে। কেউ বাগান করে। মাছ চাষ করে। এমন অনেক কাজ।

 

আপনার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫১ শতাংশ নারী কর্মী কাজ করেন। এটা কি কোনো বিশেষ চিন্তা থেকে করা?

রুনা খান : এটা আসলে বিভিন্ন আমাদের অফিসের বিভিন্ন দপ্তরে ভেদে কমবেশি আছে। তবে চেষ্টা থাকে নারী-পুরুষের সমন্বয়টা ঠিক রাখতে। বিশেষ কোনো চিন্তা থেকে নয়।

 

বাংলাদেশের নারীদের উদ্দেশে কিছু বলবেন?

রুনা খান : আমি বলব বাংলাদেশের লোকজন যেন নারীদের আরও একটু সম্মান করে। আমি সব পুরুষকে অনুরোধ করব আপনি আপনার স্ত্রী-সন্তান-মাকে সম্মান করুন। আপনি যদি সম্মান না করেন, তাহলে আপনি জানেনই না আপনার কি ক্ষতি হচ্ছে। অর্ধেক সম্ভাবনা আপনি হারাচ্ছেন যদি আপনি আপনার স্ত্রীকে সম্মান না করেন।

এতক্ষণ সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
রুনা খান : আপনাকেও ধন্যবাদ।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
শিল্প ও সাহিত্যশিল্প-সংস্কৃতিসাফল্য

এবার একুশে পদক পেলেন যারা

করেছে Tania Akter ফেব্রুয়ারী ২০, ২০২২

দেশের ২৪ জন বিশিষ্ট নাগরিককে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০২২ সালের একুশে পদক প্রদান করা হয়েছে।

রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘একুশে পদক-২০২২’ প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক অনুষ্ঠানে বিজয়ী ব্যক্তিদের পদক প্রদান করেন।

সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং স্বাগত বক্তব্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।

এবার দেশের ২৪ জন বিশিষ্ট নাগরিককে একুশে পদক প্রদান করেছে সরকার। সরকার ৩ ফেব্রুয়ারি ‘একুশে পদক ২০২২’ প্রদানের জন্য ২৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম ঘোষণা করে।

এ বছর ভাষা আন্দোলন বিভাগে ২ জন, মুক্তিযুদ্ধে ৪ জন, শিল্পকলা (শিল্প, সংগীত ও নৃত্য) বিভাগে ৭ জন , সমাজসেবা বিভাগে ২ জন, ভাষা ও সাহিত্যে ২ জন, গবেষণায় ৪ জন, সাংবাদিকতায় ১ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ১ জন এবং শিক্ষায় ১ জন পুরস্কার পেয়েছেন।

ভাষা আন্দোলনের ক্ষেত্রে মোস্তফা এম এ মতিন (মরণোত্তর) ও মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল (মরণোত্তর) পুরস্কার পেয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিভাগে পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মতিউর রহমান, রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (মরণোত্তর), কিউ এ বি এম রহমান ও আমজাদ আলী খন্দকার।

সাংবাদিকতায় পেয়েছেন এম এ মালেক। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে পেয়েছেন মো. আনোয়ার হোসেন। শিক্ষায় পেয়েছেন অধ্যাপক গৌতম বুদ্ধ দাস।

নৃত্যে পেয়েছেন জিনাত বরকতুল্লাহ। সংগীতে নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), ইকবাল আহমেদ ও মাহমুদুর রহমান। অভিনয়ে খালেদ মাহমুদ খান (মরণোত্তর), আফজাল হোসেন ও মাসুম আজিজ।

সমাজসেবা বিভাগে পেয়েছেন এস এম আব্রাহাম লিংকন ও সংঘরাজ ডা. জ্ঞানশ্রী মহাথেরো। ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন কবি কামাল চৌধুরী ও ঝর্ণা দাস পুরকায়স্থ।

গবেষণা বিভাগে পেয়েছেন ইমেরিটাস অধ্যাপক মো. আবদুস সাত্তার মণ্ডল, ডা. মো. এনামুল হক (টিম লিডার), ডা. শাহানাজ সুলতানা (টিম) ও ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস (টিম)।

 

একুশে পদকের নীতিমালা অনুযায়ী, এককালীন ৪ লাখ টাকাসহ ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয় নির্বাচিত প্রত্যেক বিজয়ীকে।

 

জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে ও একুশের চেতনাকে ধারণ করে দেশের শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, সংস্কৃতির বিকাশসহ আলোকিত সমাজ বিনির্মাণে যাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভূত অবদান রাখছেন, তাঁদের সবার প্রতি সম্মান জানিয়ে সরকার প্রতিবছর গৌরবময় একুশে পদক প্রদান করে থাকে।

লেখা: রোদসী ডেস্ক

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
এই সংখ্যায়ঘুরে বেড়াইদেশসম্ভাবনাসাফল্য

ভ্রমণ প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে

করেছে Sabiha Zaman সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১

জীবনে আনন্দের মানে একেকজনের কাছে একেক রকম। তবে ভ্রমণে আনন্দ পান না, এমন মানুষ বিরল। অসুস্থ মানুষও ভ্রমণ করলে সুস্থ হয়ে যায়। এমন ধারণা থেকে ফেসবুকে কিছু আয়োজন রেখেছে ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা। তারা নানাভাবে ভ্রমণপ্রেমীদের আনন্দ দেয়। কথা হলো এমন কয়েকজনের সঙ্গে। লিখেছেন সুরাইয়া নাজনীন

বাউন্ডুলে ট্রাভেল ক্লাব
ফেসবুক গ্রুপ ‘বাউন্ডুলে ট্রাভেল ক্লাব’-এর অ্যাডমিন ইমরান হোসেন বাঁধন। কথা হলো তার সঙ্গে ট্যুরের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে। কীভাবে যাত্রা শুরু?
বাউন্ডুলে ট্রাভেল ক্লাবের শুরুটা হয়েছিল ক্রিকেটের মাধ্যমে। আমি প্রতি মাসের অন্তত ১৫-২০ দিন নারায়ণগঞ্জ থেকে বিভিন্ন জেলায় দলবেঁধে খেলতে যেতাম। এতে আমার মনে হলো খেলার সঙ্গে ঘোরাঘুরির অভ্যাসও তৈরি হচ্ছে। এলাকার বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে অনেকেই ফোন দিয়ে বাসের ভাড়া, হোটেল খরচ, রুট প্ল্যান ইত্যাদি জানতে চাইত। আমি ফ্রিতেই এসব সার্ভিস দিয়েছি অনেক দিন। একসময় হোটেল ম্যানেজার, বাস কাউন্টারের লোক এদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেল। এরা প্রায়ই আমাকে ফ্রিতে বাসের টিকেট দিত। হোটেলে একটা এক্সট্রা ডিসকাউন্ট আমার জন্য থাকত। এভাবেই হঠাৎ করে মনে হলো এই কাজটা সার্ভিস হিসেবে খেলার পাশাপাশি নেওয়া যায়। আর এভাবেই ‘বাউন্ডুলে ট্রাভেল ক্লাব’-এর জন্ম।

ইমরান হোসেন বাঁধন

আপনারা একসঙ্গে কতজন ট্যুরের আয়োজন করেন?
আমাদের প্রথম দিকে লিমিট ছিল। নতুন অবস্থায় আমরা ১০-১২ জনের বেশি নিয়ে যেতাম না। আস্তে আস্তে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কাজের চাপ বাড়ে। এখন আমরা প্রতি ১৫ থেকে ২০ জনের জন্য একটা গাইড হিসাব করে ১০০-১৫০ জনের পর্যন্ত ট্যুর পরিচালনা করে থাকি।
কত দিনের জন্য হতে পারে অর্থাৎ সময়সীমার কোনো ব্যাপার আছে কি?
আমাদের নির্দিষ্ট কোনো দিন নেই। আমরা কাস্টমার প্রায়োরিটির ওপর ভ্রমণ পরিকল্পনা করে থাকি। ডে ট্যুর থেকে শুরু করে বিদেশে আমরা ১৫-১৭ দিনের ট্রিপ নিয়েও কাজ করেছি। প্রথম দিকে গ্রুপ মেম্বার বা ক্লায়েন্ট ছিল বেশির ভাগই বন্ধুবান্ধব। আস্তে আস্তে এখন মেম্বার বা ক্লায়েন্ট যা-ই বলেন পরিচিত লোকের চেয়ে অপরিচিত লোকই বেশি। ভ্রমণের পর বাড়ি ফেরার পথে সবাই আবার বন্ধু বা ফ্যামিলি হয়ে যায়।


করোনা ট্যুরের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলেছে, আপনার কী মনে হয়?
পর্যটনের একদম উঠতি বয়স যখন ছিল, ঠিক তখনই করোনার থাবা আসে। টানা দেড় বছর পর এখন একটু স্বাভাবিকতার মুখ দেখছি। এই ক্ষতি পোষাতে আরও সময় লাগবে।

নারীদের জন্য কি আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়?
আমাদের কাছে নারী-পুরুষ সবাই সম্মানী ব্যক্তি। আমরা চেষ্টা করি আপনি যেহেতু ফ্যামিলি রেখে বাইরে ঘুরতে এসেছেন, অতএব বাইরে এসে যাতে আপনাকে ফ্যামিলিকে মিস করতে না হয়। আমরা সেই সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি সব সময়।

রূপসী বাংলা ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম
ফেসবুক গ্রুপ রূপসী বাংলা ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজমের অ্যাডমিন মোহাম্মদ ফারুক। তিনিও কথা বলেন রোদসীর সঙ্গে

মোহাম্মদ ফারুক

যেভাবে তাদের যাত্রা শুরু
প্রথমে আমরা নিজেরাই নিজেদের প্রয়োজনে টুকটাক ঘোরাঘুরি করতাম। একটা সময় পরিচিত মুখের সংখ্যা দিন দিন বাড়তে লাগল। তখন উপলব্ধি করলাম আমাদের দেশের পর্যটনটা আসলে অনেক সম্ভাবনাময়ী কিন্তু এই সেক্টর সম্পর্কে দেশের বেশির ভাগ মানুষ এখনো ঘোর অন্ধকারে রয়েছে। মানে তারা জানেই না যে আমাদের দেশে এমন এমন কিছু স্পট আছে, যেগুলো বাইরের কোনো দেশের থেকে কোনো অংশে কম সুন্দর নয়। বরং অনেক দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের থেকে আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অনেক বেশি সুন্দর এবং ঘোরার মতো। তখন একটা ইচ্ছা বা টার্গেট সেট করলাম যে দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যগুলোকে লোকচক্ষুর সামনে আনব। তাদের দেখাব যে আমাদের দেশও কম সুন্দর নয়। মূলত এই উদ্দেশ্যেই ২০১৬ সালের আমার গ্রুপ রূপসী বাংলার পথচলা শুরু। আমরা আমাদের ইভেন্টে ১০ জন, আবার কোনো ইভেন্টে ৩৬ জন। আবার করপোরেট ইভেন্টগুলোতে আরও বেশি হয়। মাঝেমধ্যে কমও হয়।

ট্রিপের সময়সীমা কেমন থাকে
কিছু কিছু ট্রিপ থাকে ডে টাইপ। দিনে গিয়ে দিনে ঘুরে আসি। কিছু থাকে এক রাত বা দুই রাতের। যেহেতু আমাদের শুক্র-শনি সাপ্তাহিক বন্ধের দিন, সেহেতু এক রাত স্টে করার ইভেন্ট বেশি হয়। কারণ, এতে রোববার ঢাকায় ব্যাক করে ক্লায়েন্টরা অফিস করতে পারে। আবার সেন্ট মার্টিন বা বান্দরবান দুই রাতের ইভেন্ট বেশি হয়। সত্যি বলতে স্পট প্লাস ক্লায়েন্টের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে ট্যুরের স্থায়িত্বকাল।

ক্লায়েন্টরা কি আপনাদের পরিচিতই বেশি থাকে?
প্রথমেই বলেছি যে দিন দিন আমাদের কাছে পরিচিত মুখের সংখ্যা বাড়ছে। মানে আমাদের থেকে যে বা যারা সার্ভিস নিয়েছে বা নিচ্ছে, তারাই তাদের পরিচিতদের আমাদের সঙ্গে ঘুরতে যেতে সাজেস্ট করে। তাই আমাদের মেম্বার পেতে অতটা কষ্ট হয় না। তা ছাড়া মোটামুটি এখন দেশের মানুষ তাদের দেশের পর্যটন সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত। একটু ছুটি বা ব্রেক পেলেই প্রকৃতির কাছে ছুটে যেতে চায়।
আমরা মূলত বাস, ট্রেন, লঞ্চ বা বিমান সব ধরনের ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে থাকি। ক্লায়েন্টের ডিমান্ডের ওপর নির্ভর করে যাতায়াতব্যবস্থাটা। আমরা চেষ্টা করি ক্লায়েন্টকে খুশি রেখে পূর্ণ সার্ভিস প্রদান করতে। আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত সফলভাবে কোয়ালিটিফুল সার্ভিস প্রোভাইড করতে সক্ষম।
করোনা মহামারি এখন একটু স্বাভাবিক হওয়ার পরে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী আমরা আমাদের কার্যক্রম আবারও শুরু করেছি। ইনশা আল্লাহ্ ক্লায়েন্টদের নিরাপত্তার দিক দিয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় ইভেন্ট পরিচালনা করছি। অর্ধেক মেম্বার নিয়ে ইভেন্ট আয়োজন, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ হচ্ছে প্রত্যেক ইভেন্টে। নিজেদের সাধ্যের মধ্যে যতটুকু করা সম্ভব সবটুকু আমরা করছি।

আর নারীদের জন্য আমাদের আলাদা নারী হোস্ট থাকে। তাদের যাওয়া-আসার বাসে সিট থাকে তাদের পছন্দ অনুযায়ী। খাবার থেকে শুরু করে থাকার জায়গা বা স্পট সুন্দরভাবে ঘোরানোর জন্য দক্ষ ফিমেল গাইড প্রদান করে থাকি। তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে থাকি।
আমাদের দেশের নারীরা আগে স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারত না কিন্তু এখন দিন পরিবর্তন হয়েছে। আমরা নারীদের আমাদের সঙ্গে ভ্রমণের জন্য সাদরে আমন্ত্রণ জানাই।

ছবি: বাউন্ডুলে ট্রাভেল ক্লাব ও  রূপসী বাংলা ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • সঠিক হুইস্ক বাছাই করবো কীভাবে?

তুমিই রোদসী

  • আলোয় ভুবন ভরা







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook