রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
বিভাগ

.

.তুমিই রোদসীনারীপ্রধান রচনাসম্ভাবনাসাফল্য

স্বপ্ন দেখি নারী দিবসের দরকারই হবে না

করেছে Suraiya Naznin মার্চ ১০, ২০২২

দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি কাজ করছেন বাংলাদেশের ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে। চরের মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান নানান বিষয়ে কাজ করলেও তার মূল আগ্রহ নারীর জীবন নিয়ে। কারণ তিনি মনে করেন, নারীর উন্নয়ন না হলে সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিশ্ব নারী দিবসে রোদসীর বিশেষ সংখ্যায় কথা হলো ফ্রেন্ডশিপ-এর ফাউন্ডার ও এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রুনা খানের সঙ্গে। কথা বলেছেন সোলাইমান হোসেন-

 

রুনা খান

 

শুরুতেই আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি সাতক্ষীরার ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের আন্তর্জাতিক রিবা অ্যাওয়ার্ড লাভ করার জন্য। শুরুতেই আমরা আপনার ছোটবেলার গল্প শুনতে চাচ্ছি। কীভাবে কেটেছে আপনার ছেলেবেলা?

রুনা খান : বাংলাদেশের একটি কয়েকশ বছরের পুরোনো পরিবার থেকে আমি উঠে এসেছি। আসলে একটা নির্দিষ্ট গ-ির মধ্যে আমরা বড় হয়েছি। আমাদের আশপাশে গরিব কী তা আমরা জানতাম না। ঢাকা শহরে গাড়িতে যখন বসতাম, তখন গরিব আসতÑওটাই আমাদের জন্য গরিব দেখা ছিল। এর একটাই কারণ- আসলে একটা গ-ির মধ্যে আমরা সবাই বড় হয়েছি। পারিবারিকভাবেই আমার বিয়ে হয়ে যায় এবং এখন আমার তিনটি সন্তান আছে। তবে আমি যতই নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে বড় হই না কেন, কখনো কাজ থামাইনি।

 

অনেকেরই তো অনেক রকম চিন্তা থাকে। কেউ ডাক্তার হতে চায়, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। আপনার ছোটবেলায় এমন কোনো ইচ্ছা ছিল কি?

রুনা খান : আমি আইনজীবী হতে চেয়েছিলাম। আমি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান সবখানেই পড়াশোনা করেছি। কিন্তু একটা জিনিস সারা জীবন মনে হতো, তা হলো দেশের জন্য কিছু করব। কিন্তু কী করব এমন কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তবে এটা আমার মাথায় সব সময় ছিল যে, এই দেশ ছেড়ে আমি কখনোই চলে যেতে পারব না। আমি যখনই চিন্তা করি আমি কখনো ধানখেত দেখতে পারব না, কখনো কৃষক দেখতে পারব না, আমার তখন মন খারাপ হয়ে যায়। আমি যখন নৌকা নিয়ে এদিক-সেদিক যেতাম, তখন দেখতাম সবচেয়ে গরিব লোক এখানে থাকে। তখন মনে হলে এসব মানুষকে নিয়ে কিছু একটা করা যেতে পারে। সেভাবেই শুরু।

চরের সামগ্রিক বিষয় নিয়ে তো আপনারা কাজ করছেন। এর মধ্যে নারীর জীবন নিয়ে আপনার আলাদা কোনো ভাবনা আছে কি?

রুনা খান : আমি নারী, কেমন করে নারীদের জন্য ভাবব না? ভাবনা অবশ্যই আছে। নারীদের জন্য সব সময় ভাবি। নারীদের জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো তাদের সন্তান। এ কারণেই নারী এবং শিশু আমার কাজের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু একটা সংসার সুন্দর হয় নারী-পুরুষ আর সন্তান নিয়ে। তাই আমি শুধু নারীকে নিয়ে কাজ করি, এটা কখনো মনে করি না। কারণ, উন্নতি সবাইকে নিয়েই হবে। যে কারণেই আমাদের কোনো কাজ শুধু নারীর জন্য নয়। তারপরও আমাদের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ উদ্যোক্তা হলেন নারী।

নারীকে নিয়ে অনেক কাজই তো করেছেন, কিন্তু এমন কোনো কাজ কি আছে, যেটা ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে তৃপ্তি দিয়েছে?

রুনা খান : চরে একটা মেয়ের যখন ফিস্টুলা কিংবা পোলাস্ট নিউট্রেস হয়, ১৯ কিংবা ২০ বছরের একটা মেয়েকে যখন দেখি এসব কারণে তার স্বামী তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে, তখন খুব খারাপ লাগে। পরিবার থেকে আলাদা করে দিয়ে আলাদা ঘরে রেখে দেয়। অথচ সাধারণ আধা ঘণ্টার একটা অপারেশন করিয়ে তাকে আবার পরিবারে ফেরত পাঠানো যায়। এমনি করে যখন আমি লাইফ চেঞ্জ দেখতে পারি, তখন এমন কাজের শান্তি অন্য রকম হয়।

আপনার দীর্ঘ কাজের অভিজ্ঞতা। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আপনার কি কখনো মনে হয়েছে নারীর কোন জায়গাটা উন্নত হলে পুরো সমাজ উন্নত হবে?

রুনা খান : আমি মনে করি, নারীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে হবে। সেই শ্রদ্ধাবোধ যেমন তার স্বামীর, সেই সঙ্গে তার পরিবারের। নারী যখন তার সঠিক শ্রদ্ধাবোধ এবং মূল্যায়নটা পাবে, তখনই কেবল নারী সব করতে পারবে। একটা নারী একই সঙ্গে বাড়ির কাজ, বাড়ির বাইরের কাজ করে সন্তান জন্ম দেওয়া, টাকা আয় করা থেকে শুরু করে সব রকম কাজের সঙ্গেই যুক্ত।

আসলে একটা সমাজ কিংবা পরিবার কিন্তু নারীকেন্দ্রিক। আমরা যতই অস্বীকার করার চেষ্টা করি না কেন, আসলে একজন নারীকে কেন্দ্র করেই কিন্তু পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র সবই চলে। আপনি বিষয়টি কীভাবে দেখেন?

রুনা খান : আসলে এ বিষয়টি অস্বীকার করার উপায় নেই। একজন নারীকে কেন্দ্র করেই তার সন্তান-সংসার এবং সমাজ। নারীকে কেন্দ্র করেই সংসারের আয়, এমনকি কিভাবে সংসারের জন্য সুন্দরভাবে ব্যয় করতে হয় সেই ব্যাপারে নারীর জানাশোনা অসামান্য। নারীরা যেভাবে সংসার চালাতে পারেন, ছেলেরা সেই আন্দাজে চালাতে পারেন না।

আসলে নারীর যে সঞ্চয়ক্ষমতা, সেটা পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি আলাদা। আমাদের দাদি-নানি কিংবা মায়েদের দেখেছি ভাতের চাল থেকে একমুঠ হয়তো রেখে দিত সঞ্চয় করার উদ্দেশ্যে। এই চাল আবার কোনো বিপদের দিনে সংসারের কাজেই লাগাত। এগুলো তো নারীর অন্য রকম ক্ষমতা।

রুনা খান : হ্যাঁ, এটা নারীদের একটা অসামান্য একটা ক্ষমতা। আর এ কারণেই আমাদের একটা ফিন্যান্সিয়াল প্রোগ্রাম আছে, যেটার নাম দিয়েছি মুষ্টি। কারণ, এটাই কিন্তু মেয়েদের সক্ষমতার জানান দেয়। এটাই নারীর বিশেষত্ব। কোনো একদিন দেখা দেখা গেলো ওই পরিবারের ঘরে চাল নেই, সেদিন এ চালই তাদের মুখে ভাত তুলে দেয়। চিন্তার এই জায়গার কারণেই তারা শ্রদ্ধার যোগ্য। মেয়ের ক্ষমতা এবং ছেলের ক্ষমতা কিন্তু আলাদা। আমি বলছি না মেয়েদের শক্তি ছেলেদের মতো হতে হবে। বা একটা মেয়ে, ছেলেদের মতোই কাজ করবে।

মেয়ে আসলে তার বৈশিষ্ট্য নিয়েই মেয়ে এবং এটাই তার সৌন্দর্য

রুনা খান : একদম তাই। মেয়ে তার নারীত্ব নিয়েই সুন্দর। একটা মেয়ের মনুষ্যত্ববোধ আর নমনীয়তাকে যে ছেলে দুর্বলতা ভাবে, সে আসলে বিরাট ভুল করে। এগুলো নারীর দুর্বলতা নয়। এটাই কিন্তু নারীর সাহস, এটাই নারীর ক্ষমতা।

সামনে বিশ্ব নারী দিবস। আপনি যে নারীদের নিয়ে কাজ করছেন, তাদের কাছে নারী দিবস এবং অন্য আর দশটা দিন একই। প্রতিবছর নারী দিবস আসে কিন্তু এই নারী দিবস কি কোনো প্রভাব তৈরি করতে পারে? এই নারী দিবসটা আপনি কীভাবে দেখেন?

রুনা খান : যখন কোনো পরিবর্তন আনতে হয়, তখন একটা একক জিনিস দিয়ে তা হয় না। আমি যদি বলি সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজই আমার সমাজ বদলে দেবে কিংবা মাইক্রোফিন্যান্সই আমার সমাজ বদলে দেবে, তা কিন্তু কখনো সম্ভব নয়। কোনো একটা কিছু দিয়ে কখনো দুনিয়া পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। দুনিয়ায় বিভিন্ন রকম মানুষ, তাই বিভিন্ন রকম জিনিস লাগে এই দুনিয়াকে পরিবর্তন করতে। আমরা নারী দিবস পালন করি, এটা আসলে একটা কম্পোনেন্ট। এটা নারীকে অনুভূতি দেয় যে, তুমি স্পেশাল। তাই আমি মনে করি নারী দিবস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমার স্বপ্ন হলো হয়তো কোনো একদিন নারী দিবসের আর দরকারই হবে না। হয়তো নারী-পুরুষ মিলে একটা দিবস পালন করবে, যেটার নাম হবে হিউম্যান ডে।

 

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, বিশেষ করে নারীদের নিয়ে?

রুনা খান : আমরা বিভিন্ন বিষয়ে অনেক উন্নতি করেছি। আমাদের মতো অর্থনীতির সক্ষমতার দেশের তুলনায় এদেশের নারীদের আমরা অনেক ওপরে নিয়ে গেছি। আপনি যদি আশপাশের কোনো দেশের সঙ্গে তুলনা করেন, তাহলে দেখবেন আমরা খুব ভালো অবস্থানে আছি। কিন্তু দারিদ্র্য আমাদের অনেক কিছু বাধাগ্রস্ত করছে। এসব কিছুর মধ্য থেকেও আমি চেষ্টা করছি চরের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে।

এবার চরের তিনটি মেয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে চান্স পেয়েছে। যাদের বাসায় একটা মাত্র কুঁড়েঘর। যেখানে কোনো রকমে তারা পরিবার নিয়ে বাস করে। অথচ এই মেয়েগুলো এখন পুরো দুনিয়ার মানুষের সঙ্গে মিশতে পারছে। আমার স্বপ্ন হলো প্রতিটি চর থেকে যেন অন্তত একটি করে মেয়েকে এমন ভাবে তৈরি করতে পারি, যারা তাদের পুরো কমিউনিটির আদর্শ হবে।

এখন তো ডিজিটালাইজেশনের যুগ। আপনি যে নারীদের নিয়ে কাজ করছেন, তাদের প্রযুক্তিগতভাবে উন্নয়নের জন্য কিছু করছেন কি?

রুনা খান : হ্যাঁ, এগুলো আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে করি। আমাদের স্কুলগুলো সব ডিজিটালাইজড। তা ছাড়া বাচ্ছাদের আমরা কম্পিউটারে দক্ষ হওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দিই।

আপনারা এখন পর্যন্ত কতগুলো স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন?

রুনা খান : আমাদের প্রাইমারি স্কুল ৪৮টির মতো। হাইস্কুল আছে ২২টির মতো। এ ছাড়া অ্যাডাল্ট এডুকেশন সেন্টার আছে ৪৮টি। আর আমাদের রোহিঙ্গাদের জন্য প্রায় ৪০০ স্কুল আছে।

এর বাইরে আপনারা আর কী কী বিষয়ে কাজ করছেন?

রুনা খান : আমরা প্রথমেই চেষ্টা করি মানুষের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে। যেখানে মানুষ দাঁড়াতে পারে। সেই প্ল্যাটফর্মটা তৈরি করতে কী কী দরকার? প্রথমেই লাগে স্বাস্থ্য। আমরা স্বাস্থ্য খাতে খুব বেশি কাজ করি। প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ লোককে আমরা সরাসরি সেবা দিই। শিক্ষা নিয়ে কাজ করছি। এরপর আমরা ইনকাম জেনারেশন করাই। যারা কৃষিকাজ করতে পারে, তারা সেটা করে। যারা হাঁস-মুরগি পুষতে পারে, তারা সেটা করে। কেউ বাগান করে। মাছ চাষ করে। এমন অনেক কাজ।

 

আপনার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫১ শতাংশ নারী কর্মী কাজ করেন। এটা কি কোনো বিশেষ চিন্তা থেকে করা?

রুনা খান : এটা আসলে বিভিন্ন আমাদের অফিসের বিভিন্ন দপ্তরে ভেদে কমবেশি আছে। তবে চেষ্টা থাকে নারী-পুরুষের সমন্বয়টা ঠিক রাখতে। বিশেষ কোনো চিন্তা থেকে নয়।

 

বাংলাদেশের নারীদের উদ্দেশে কিছু বলবেন?

রুনা খান : আমি বলব বাংলাদেশের লোকজন যেন নারীদের আরও একটু সম্মান করে। আমি সব পুরুষকে অনুরোধ করব আপনি আপনার স্ত্রী-সন্তান-মাকে সম্মান করুন। আপনি যদি সম্মান না করেন, তাহলে আপনি জানেনই না আপনার কি ক্ষতি হচ্ছে। অর্ধেক সম্ভাবনা আপনি হারাচ্ছেন যদি আপনি আপনার স্ত্রীকে সম্মান না করেন।

এতক্ষণ সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
রুনা খান : আপনাকেও ধন্যবাদ।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.

খেজুর রসের সন্ধানে

করেছে Tania Akter জানুয়ারী ১৩, ২০২২

সুমন্ত গুপ্ত

গ্রামীণ মেঠোপথ আর খেজুরগাছের সারির সেই মুগ্ধতা ভাষায় বর্ণনা করার চেষ্টা নেহাতই বৃথা। প্রকৃতির তৈরি খেজুর সাম্রাজ্য, যা চোখে দেখেও বিশ্বাস করা কঠিন। চোখ ভরে গেল খেজুরগাছের সারি আর রসের ঠিলা দেখে

 

ঘড়ির কাঁটায় তখন ভোর পাঁচটা হবে। সূর্য দেব সবে তার নয়ন মেলেছে। মোবাইল ফোন বেজে উঠল। দাদা আমি চলে এসেছি, আপনি দ্রুত তৈরি হয়ে চলে আসুন। দেরি করলে আজও যাওয়া হবে না। গত দিনও আমরা যেতে চেয়েছিলাম নতুন ভ্রমণ গন্তব্যে কিন্তু বাদ সাধে বৃষ্টি।

শেষ পর্যন্ত আর যেতে পারিনি। তাই আজ আর দেরি না করে তৈরি হয়ে নিলাম। ঘড়ির কাঁটা ৫টা ৩০, মাঘ মাস, কুয়াশার চাদরে ঢাকা জনপথ। এর মাঝেই আমরা ছুটে চলছি। ও বলাই হলো না আমরা যাচ্ছি খেজুরের রসের সন্ধানে। অফিসে কাজের চাপে যখন পিষ্ট, তখন মাথার বোঝা ঝেড়ে ফেলে দেওয়ার জন্য চোখ ফেলেছি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তখন সন্ধান পেলাম খেজুরের রস বিক্রির।

সিলেট নগরী থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে সিলেটের সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে কান্দিগাঁও ইউনিয়নে একটি এতিমখানায় বিক্রি করা হয় খেজুরের রস। যাত্রাপথে এর আগে আসা হয়নি। তাই পথিমধ্যে আমাদের গাড়ি থামিয়ে আমরা সঠিক পথে আছি কি না তা জানতে চাইলাম। যদিও পথে জনমানব নেই বললেই চলে। তাই একটু সময়ই লাগল বৈকি। দূর থেকে দেখা পেলাম খেজুরগাছের।

 

গন্তব্যের কাছে এসে যে দৃশ্য দেখলাম, ফজরের আজানের আগেই প্রাইভেট কার, মোটরবাইক, সিএনজি অটোরিকশা করে শতাধিক মানুষ এসে হাজির এতিমখানার পাশে। সাধারণত এই এতিমখানার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ছাড়া এখানে কোনো মানুষের আনাগোনা থাকে না। কিন্তু কিছুদিন ধরে কাকডাকা ভোর থেকে এই এতিমখানার আশপাশে ভিড় করছে মানুষজন। সবাই আসছে খেজুরের রস খেতে। গাড়ি থেকে নেমে আমরা পদব্রজে এগিয়ে গেলাম।

গ্রামীণ মেঠোপথ আর খেজুরগাছের সারির সেই মুগ্ধতা ভাষায় বর্ণনা করার চেষ্টা নেহাতই বৃথা। প্রকৃতির তৈরি খেজুর সাম্রাজ্য, যা চোখে দেখেও বিশ্বাস করা কঠিন। চোখ ভরে গেল খেজুরগাছের সারি আর রসের ঠিলা দেখে। দোয়েল, বুলবুলি, শালিকসহ নানা রকম পাখি রসের চুঙ্গিতে বসে রস খাচ্ছে আর উড়াল দিচ্ছে, মৌমাছিরাও রস খাওয়ার আশায় ভোঁ-ভোঁ উড়ে বেড়াচ্ছে। মুগ্ধতা কাটিয়ে ক্যামেরা বের করি, এ যেন সীমার মধ্যে অসীম ধরার প্রয়াস। গাছি মো. ইমান আলী গাছ থেকে রসের হাঁড়ি নামাতে দেরি হয় কিন্তু হাঁড়ি শেষ হতে দেরি হয় না। সকাল সাতটার ভেতরে শেষ হয়ে যায় রসের হাঁড়ি। এতিমখানার দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সদর উপজেলার জাঙ্গাইল টুকেরবাজার এলাকায় গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে দারুল আয়তাম হালিমাতুস সাদিয়া (রা.) এতিমখানার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপরই এতিমখানার দায়িত্বরতরা খেজুরগাছসহ অন্য গাছগুলোর পরিচর্যা শুরু করেন।

 

এতিমখানার কাজে লাগানোর জন্য গাছগুলো থেকে রস নিয়ে গুড় বানানোর চিন্তা করে তারা। সে জন্য সুনামগঞ্জের নারায়ণতলা এলাকার ইমান আলী নামের একজন গাছিকে মৌখিক চুক্তিতে আনে এতিমখানার কর্তৃপক্ষ। গাছি ঈমান আলী জানান, এখানে ৬৩টি খেজুরগাছ আছে। এর মধ্যে ৫৫টি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করেন। বাকি গাছগুলো থেকে রস আসে না। এক মাস ধরে খেজুরগাছের রস সংগ্রহ করছেন তিনি।

এতিমখানার শিক্ষার্থীদের রস খাইয়ে বাকি রস দিয়ে গুড় তৈরি শুরু করেন। প্রতিদিন ২০ থেকে ১০০ লিটার রস পাওয়া যায় এই গাছগুলো থেকে। সব গাছ থেকে প্রতিদিন রস সংগ্রহ করা হয় না। একটি গাছ থেকে দুই দিন বিরতি দিয়ে রস সংগ্রহ করা হয়। যে গাছ দুর্বল হয়ে যায়, সে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা বন্ধ করে দেন গাছি। মাটির হাঁড়ি ও প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। প্রতি গ্লাস খেজুরের রস ১০ টাকা ও প্রতি লিটার খেজুরের রস ৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়। আমরা খেজুরের রসের স্বাদ আস্বাদন করলাম এক কথায় অসাধারণ।

যাবে কীভাবে : ঢাকার সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল, রাজারবাগ ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রিনলাইন, শ্যামলী, এনা, হানিফ বা বিআরটিসি বাসে অথবা ট্রেনে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সকালে আন্তনগর পারাবত, দুপুরে জয়ন্তিকা ও কালনী এবং রাতে উপবন সিলেটের পথে ছোটে। ভাড়া ৩৬০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে। সিলেট নগরী থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে কান্দিগাঁও ইউনিয়নে দেখা পাবে খেজুরগাছ ও রসের। সিলেট শহর থেকে মাইক্রোবাস বা সিএনজি রিজার্ভ করে যেতে হবে। ভাড়া পড়বে ৩০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

ছবি – লেখক

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.এই সংখ্যায়সম্পাদকীয়

সম্পাদকীয়

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ২০, ২০২১

আমরা কেউই পারফেক্ট নই। ইম্পারফেকশনের মধ্যেই আমাদের পারফেকশন। কথাটি মাথায় গেঁথে রাখো, অন্তত জীবনসঙ্গী খোঁজার ক্ষেত্রে। অনেক সময়ই দেখা যায় অতি রূপবান ছেলেদের হয়তো চরিত্রের দোষ আছে। অতি সুন্দরী নারীর জিহ্বায় সমস্যা আছে। মুখ দিয়ে যা বেরোয়, কলিজা খানখান করে দেয়! অন্যদিকে, ঘরোয়া পরিবেশে বেড়ে ওঠা অতি সহজ সরল ও সাধারণ দর্শন মেয়েটি হয়তো যার জীবনে যাবে, তাকে ধন্য করে দেওয়ার যোগ্যতা রাখে। লেখাপড়ায় অতি সাধারণ, চেহারায় অতি সাধারণ, স্কুল-কলেজের বন্ধুবান্ধবের টিটকারির শিকার, গরিব মধ্যবিত্ত পুরুষটি হয়তো তাঁর জীবনসঙ্গিনীর জন্য প্রাণ উজাড় করা ভালোবাসা জমা করে রেখেছেন।
কথা হচ্ছে, আমরা কোন বিষয়কে প্রাধান্য দেব? একথা সত্যি পারফেক্ট ছেলে বা মেয়ে এই পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া সম্ভব না। আমাকে কোথাও না কোথাও ছাড় দিতেই হবে। আমাকেই ঠিক করতে হবে আমি কোন গুণটা বেশি করে চাই। কোন দোষটা সামান্য পরিমাণে থাকলেও আমি ইগনোর করতে পারব। সেই অনুযায়ী আমাকে জীবনসঙ্গিনী বেছে নিতে হবে।
টিভিতে মডেলিং করে এমন একজনের রূপ-ফিগারে মুগ্ধ হয়ে উ-লা-লা বলতে বলতে আমি বিয়ে করলাম এবং তারপর আবিষ্কার করলাম তাঁর মডেলিং ক্যারিয়ারটা আমার পছন্দ না। বরং আমি চাই গৃহিণী টাইপ বধূ। তাহলে আমার গালে কষে একটা চড় আমি ডিজার্ভ করি। দেশে হাজার হাজার, কোটি কোটি গৃহিণী মেয়ে ফেলে রেখে কেন একটা মডেলকে আমি বেছে নিলাম। তারপর জোর জবরদস্তি করে তাঁর মতের বিরুদ্ধে তাঁর ক্যারিয়ারের ওপর হস্তক্ষেপ করতে গেলাম?

অনেক মেয়েই সচ্ছল স্বামী চান। চান অফিসে উচ্চপদে কাজ করনেওয়ালা পতি। আবার একই সঙ্গে চান সেই স্বামী তাঁর সঙ্গে ম্যাক্সিমাম সময় কাটান। ঠিক ছয়টায় বাড়ি ফিরে আসবেন, রাতে ডিনারে যাবেন ইত্যাদি ইত্যাদি। তাঁকে বলতে চাই, যে ছেলে অফিসে উচ্চপদে কাজ করেন, কিংবা ব্যবসায় ব্যস্ত থাকেন, তাঁর বাড়িতে ফিরতে প্রায়ই মধ্যরাত হয়ে যাবে। ভালোবেসে টাইম কাটানেওয়ালা স্বামী চাইলে সাধারণ চাকরিজীবীকে বিয়ে করো। কোনটা প্রায়োরিটি?
দুজন পারফেক্ট চরিত্রের অধিকারী স্বামী-স্ত্রীরও কিন্তু ডিভোর্স হওয়ার ঘটনা ঘটে। চরিত্র অবশ্যই সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর, কিন্তু তার চেয়েও বেশি জরুরি পারস্পরিক সংগতি। একজন আরেকজনের জন্য উপযুক্ত কি না। ফ্যামিলি সমপর্যায়ের কি না- বিয়ের আগে এসব বিষয় খেয়াল রাখা দরকার। বিয়েশাদিতে একটু আপ-ডাউন হবেই। কিন্তু দুজনের সংগতি যতটা কাছাকাছি হবে, তত ভালো।
যে আপা ও ভাই কথায় কথায় নিজের স্বামী/স্ত্রীকে ছেড়ে চলে আসেন, বার্ধক্যে গিয়ে আবিষ্কার করেন কতটা একা তাঁরা। আফসোস করে ভাবেন, হয়তো সামান্য আলোচনাতেই সমস্যার সমাধান হওয়াটা সম্ভব ছিল। এইটা ফ্যাক্ট, বাস্তব উদাহরণ দিচ্ছি, আশপাশে খুঁজলেই দেখতে পাবে।

বিয়ে কোনো কমপিটিশন না। বিয়ে কম্পেনিয়নশিপ। আমি আমার জীবনসঙ্গিনীকে সাহায্য করব, তিনিও আমাকে সাহায্য করবেন। দুজন মিলে একটা সংসার গড়ে তুলব। প্রচুর ঝড়-তুফান আসবে। কিন্তু বুড়ো-বুড়ি হওয়ার পরে যখন পেছন ফিরে তাকাব, তখন নিজেদের মজবুত ইমারত দেখে নিজেরাই মুগ্ধ হব।
সবার জন্য শুভকামনা।

 

 

 

০ মন্তব্য করো
1 FacebookTwitterPinterestEmail
.অনুসঙ্গএই সংখ্যায়চলন বলনজীবনযাত্রারূপ ও ফ্যাশন

ঘরেই বিয়ের সাজ

করেছে Sabiha Zaman ডিসেম্বর ১৯, ২০২১

বিয়ে মানে কেবল বিয়ে নয়, একটা স্বপ্ন। বিয়ের দিনে সব মেয়েই চায় সবচেয়ে সেরাভাবে সাজতে। বিয়ের সেরা সাজের জন্য সেরা পারলারগুলোয় ধুম লেগে যায় বিয়ের মৌসুম এলেই। বিয়ের পোশাক আর সাজ নিয়ে ছোট থেকেই প্রায় সব মেয়ে নানান পরিকল্পনা করে। কিন্তু সব সময় ভাবনার সঙ্গে বাস্তবের মিল হয় না। অনেক সময় দেখা যায় ঘরেই ছোট পরিসরে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়। আবার অনেকের আকদের আয়োজন ঘরেই সেরে নেওয়া হয়। কিন্তু তাই বলে কি কনে সাজে কম্প্রোমাইজ করলে চলবে না। চাইলে ঘরেই ব্রাইডাল মেকআপ সম্ভব খুব সহজেই। ঘরে বিয়ের সাজ নিয়েই রোদসীর আজকের আয়োজন। লিখেছেন সাবিহা জামান_

বেস মেকআপ :

ময়েশ্চারাইজার

ব্রাইডাল মেকআপ শুরু করার আগে বেসিক তৈরি করতে হবে। প্রথমে ভালোভাবে ফেস পরিষ্কার করতে হবে। এরপর ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার দিয়ে মুখ ও গলা ময়েশ্চারাইজ করে নাও।

প্রাইমার

ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার আগে অবশ্যই প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে। কারণ, এটি মেকআপ দীর্ঘক্ষণ ধরে রাখতে সাহায্য করে। যেহেতু বিয়ের সাজ আর দীর্ঘ সময় নিয়েই সাধারণত বিয়ের অনুষ্ঠান চলে, তাই ব্রাইডাল প্রাইমার ছাড়া মেকআপ করা চলবে না।

চোখের জন্য প্রাইমার
ভুলে গেলে চলবে না বেস তৈরি করার সময় চোখের দিকেও নজর দিতে হবে। ব্রাইডাল মেকআপের জন্য আইলিড প্রাইমার ব্যবহার করতে হবে।

চোখের ব্রাইডাল মেকআপ :


ভুরু : চোখে মেকআপে ভুরু থেকেই শুরু করো। বাজারে বিভিন্ন ভালো ব্র্যান্ডের ভালো আইব্রো কিট পাওয়া যায়, এগুলোর দাম ৫০০ থেকে শুরু হয়। চোখের সাজ শুরু করার আগে ভুরু হাইলাইট করা জরুরি। এ জন্য ভুরুতে আইব্রো কিট দিয়ে হাইলাইট করে নাও।

ছবি: রেড স্টুডিও অ্যান্ড স্যালুন

আইশ্যাডো : চোখের সাজ আইশ্যাডো ছাড়া পূর্ণতা পায় না। ব্রাইডাল মেকআপে আইশ্যাডোর কালার সিলেক্ট করার ক্ষেত্রে বিয়ের পোশাকের সঙ্গে মিল রাখো। আইশ্যাডোর ওপরে বুভার করতে পারো গ্লিটার। এতে করে চোখ আরও বেশি হাইলাইট হবে।

আইলাইনার ও কাজল : চোখের সৌন্দর্য বাড়াতে আইলাইনার আর কাজল না হলেই নয়। ফেসের সঙ্গে মিল রেখে আইলাইনার ব্যবহার করো। চোখ বড় দেখানোর জন্য হোয়াইট বা সাদা কাজল ব্যবহার করতে পারো।

মাসকারা : মোহনীয় চোখের সাজে মাসকারা মিসিং থাকলে চলবে না। বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাসকারা পাওয়া যায়। ব্রাইডাল সাজের জন্য কার্ল মাসকারা বেছে নিতে পারো। এতে করে চোখের পাপড়ি অনেক বড় দেখাবে আর ফেসের সঙ্গে মানিয়ে যাবে।

আইল্যাশ : হাল আমলে আইল্যাশ বেশ জনপ্রিয়। যদি আই ল্যাশ পরে কমফোর্টেবল থাকো, তবে চোখের পাতা ঘন করতে আইল্যাশ লাগাতে পারো। চোখের মাপ অনুযায়ী আইল্যাশ নির্বাচন করো। তবে যদি আইল্যাশ ব্যবহার করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করো, সে ক্ষেত্রে ভালো ব্র্যান্ডের কার্ল আইশ্যাডো বেছে নাও।

ফেস মেকআপ
ফাউন্ডেশন : বিয়ের আগে সঠিক ফাউন্ডেশনটি খুঁজে বের করা উচিত। ত্বকের কালারের থেকে মিলিয়ে ফাউন্ডেশন শেড বেছে নাও। শেড ভুল হলে ভালো ব্রাইডাল মেকআপ সম্ভব নয়। আর এতে বিয়ের মতো একটি বিশেষ দিনে তোমার ছবি বাজে আসবে।
ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করার জন্য ভালো স্পঞ্জ ব্যবহার করো। তুমি যত ভালো ব্লেন্ড করবে, মেকআপ দীর্ঘক্ষণ লং লাস্টিং করবে।

কনসিলার : ব্রাইডাল মেকআপের জন্য ভালো ব্র্যান্ডের কনসিলার বেছে নিতে হবে। কনসিলার ডার্ক সার্কেল কভার করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ত্বকের দাগ স্পট ঢাকতে কনসিলারের জুড়ি নেই। ফাউন্ডেশনের মতো কনসিলার নির্বাচন করার সময় শেড ম্যাচ করতে হবে।

ছবি: ছায়াছাবি

ব্লাশন : মেকআপ কমপ্লিট করতে ব্লাশন অনিবার্য। বিভিন্ন কালারের ব্লাশন পাবে তোমার ত্বকের সঙ্গে মানিয়ে ব্লাশন নির্বাচন করো। তবে খুব বেশি ব্লাশন লাগানো উচিত নয়।

কমপ্যাক্ট পাউডার : সবশেষে কমপ্যাক্ট পাউডার ব্যবহার করতে হবে। কমপ্যাক্ট পাউডার কেনার আগে স্কিন টোনের সঙ্গে মিল রেখে কিনবে। মূলত কমপ্যাক্ট পাউডার মেকআপ ব্রাইট করে। এর সঙ্গে মেকআপ স্কিনে ভালোভাবে বসতেও সাহায্য করে। অবশ্যই ভালো মানের কমপ্যাক্ট পাউডার নির্বাচন করো, যাতে করে মেকআপ লং লাস্টিং করে। এবং অনেকক্ষণ পর্যন্ত মেকআপ টিকিয়ে রাখবে। তবে কমপ্যাক্টটি দামি কিনবে।

লিপস্টিক : ঠোঁটে লিপস্টিক দেওয়ার আগে ভালোভাবে ঠোঁট ময়েশ্চারাইজার নিতে হবে। লিপলাইনার ব্যবহার করতে ভুলবে না। এতে করে ঠোঁট আরও আকর্ষণীয় লাগবে। এবার লিপস্টিক দেওয়ার পালা। ব্রাইডাল মেকআপের জন্য ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করো। কারণ, এটি দীর্ঘ সময় ঠোঁটে থাকবে। পোশাকের সঙ্গে মানানসই সঠিক লিপস্টিক কালার চয়েস করবে।

সেটিং স্প্রে : মেকআপ শেষে ভালো ব্র্যান্ডের সেটিং স্প্রে দাও। সেটিং স্প্রে মেকআপ লং লাস্টিং করে। তবে খুব কাছ থেকে কখনো সেটিং স্প্রে দেবে না। এতে করে স্প্রের দাগ থাকবে।

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.জীবনযাত্রাপ্রযুক্তি

ভিডিও গেমসের উপকারিতা

করেছে Sabiha Zaman নভেম্বর ৪, ২০২১

প্রযুক্তির কল্যাণে এখন আর খেলাধুলা মানেই মাঠে যাওয়া নয়। গোটা স্টেডিয়াম ধরা দিচ্ছে আমাদের ডিজিটাল গ্যাজেটের স্ক্রিনে। কয়েক কোটি ভিডিও গেমসের দুনিয়ায় হারিয়ে যাওয়া এখন অনেক সহজ। ভিডিও গেমস নিয়ে তৈরি হয়েছে পক্ষ-বিপক্ষ। আজকের রোদসীর আয়োজনে থাকছে গেমসের কিছু পজেটিভ দিক নিয়ে । লিখেছেন সাবিহা জামান

গেমসের উপকারিতা

ভিডিও গেমসের আসক্তির বিষয়টি কারোরই অজানা নয়। আসক্তি কোনো জিনিসেরই ভালো নয়, কিন্তু ভিডিও গেমস খেলারও যে কিছু ভালো দিক আছে, সেটা জানা আছে কি? গেমসের কিছু উপকারিতাও রয়েছে। অবাক লাগলেও সত্যি, গেমসের বিভিন্ন উপকারী দিক রয়েছে, যার পজিটিভ প্রভাব আমাদের জীবনে পড়ে।

স্ট্রেস কমাতে গেমস
বাসার কাজ, অফিসের কাজ মিলিয়ে আমরা অনেকেই মানসিক চাপের ভেতর দিয়ে যাই। রোজকার জীবনের মানসিক চাপ বা স্ট্রেস থেকে মুক্তি দিতে গেমস কিন্তু বেশ কার্যকর। আমরা যখন গেমস খেলি, আমাদের মস্তিষ্ক ব্যস্ত হয়ে পড়ে গেমস জেতার জন্য। আর জিতে গেলে আমাদের স্ট্রেস অনেকটাই কমে আসে। তবে না জিতলেও গেমসের আনন্দে আমরা অনেকটাই রিল্যাক্স বোধ করি।

প্রবলেম সলভিং স্কিল
সমস্যা সমাধান করা কিন্তু অসাধারণ একটি দক্ষতা। এখন তো বিভিন্ন চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে প্রবলেম সলভ করার স্কিল চাওয়া হয়। গেমস খেলা কিন্তু আমাদের সমস্যা সমাধান কৌশল শিখতে খুব ভালো কাজে আসে। কারণ, বেশির ভাগ গেমসেই প্রতি পদক্ষেপে নিজেকে সাবধানে থেকে একেকটি পদক্ষেপ নিতে হয়। এতে করে তুমি একসময় সহজেই কোন সমস্যা কীভাবে সমাধান করা যায়, সেটি আয়ত্তে আনতে পারো।

স্মৃতিশক্তি বাড়াতে গেমস
ঘরের কাজ থেকে শুরু করে অঙ্কের ফর্মুলা মনে রাখতে না পারলে সবটাই ফলাফল শূন্য। বাচ্চা থেকে প্রবীণ মনে না রাখতে পারার সমস্যা আমাদের বেশ ভোগায়। একটু গেমস নিয়ে বসলে কিন্তু একটা সমাধান আসতে পারে। গেমস খেলার ফলে অনেক কিছু মনে রাখতে হয় গেমস-সংক্রান্ত। এতে করে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বেশ সাহায্য করে।

একাকিত্ব দূর করে
গেমস খেলে একাকিত্ব দূর করা সম্ভব। অনেকেই আছে, যারা একা থাকতে পারে না, একা থাকলে তারা হাঁপিয়ে ওঠে। নানান দুশ্চিন্তা ডালপালা মেলতে থাকে তাদের মনে। একাকিত্ব দূর করতে গেমস খেলা কিন্তু চমৎকার কাজ করে। আমাদের মস্তিষ্ক ব্যস্ত হয়ে যায় আর আমরা একাকিত্ব অনুভব করার সুযোগ পাই না।

ভালো-খারাপ দুটি বিষয় নিয়েই জীবন। মন্দের সঙ্গেই ভালোর বাস। গেমস খেলার যত উপকারী থাকুক না কেন, এতে আসক্ত হওয়া যাবে না। যেকোনো আসক্তিই জীবনে ডেকে আনে বিপদ। আমরা অনেকেই বাচ্চাদের মন ভোলাতে তাদের গেমস খেলতে দিই। এদিকে লক্ষ রাখতে হবে তারা আসক্ত হয়ে পড়ছে কি না। পরিবার আর নিজের সচেতনতা থেকেই আমরা গেমসের মতো ভয়াবহ আসক্তি থেকে দূরে থাকতে পারি। ডিজিটাল স্ক্রিনের গেমসের আসক্তি থেকে মুক্ত পৃথিবীর আনন্দ অনেক দামি।

তথ্য সংগ্রহ : বিবিসি নিউজ ও জিকো লিভিং

 

 

 

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.এই সংখ্যায়ঘুরে বেড়াইদেশবিশেষ রচনা

ইতিহাস-ঐতিহ্যের খোঁজে

করেছে Sabiha Zaman সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১

প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন একটি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে পরিগণিত। বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাস, জাতিসত্তা বিকাশের সুদীর্ঘ পথপরিক্রমা উদঘাটনে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো অনন্য ভূমিকা পালন করছে। আমাদের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে প্রাচীন স্থাপত্য-বৌদ্ধবিহার, মন্দির, মসজিদ, সাধারণ বসতি, আবাসিক গৃহ, নহবতখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জমিদার প্রাসাদ অথবা রাজপ্রাসাদ, অসংখ্য প্রাচীন পুকুর ও দিঘি, শানবাঁধানো ঘাট, পানীয় জলের কুয়া, প্রস্তরলিপি, তাম্রলিপি, মুদ্রা, প্রাচীন পুঁথি-তুলট বা তালপাতায় লেখা, পোড়ামাটির ফলকচিত্র, পোড়ামাটি ও পাথরের ভাস্কর্য, মৃৎপাত্র ইত্যাদি। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সমৃদ্ধ ভান্ডার এ দেশের ইতিহাস বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহ নিয়ে লিখেছেন সুমন্ত গুপ্ত

লালবাগ কেল্লা, ঢাকা
লালবাগ কেল্লা মোগল আমলের বাংলাদেশের একমাত্র ঐতিহাসিক নিদর্শন, যাতে একই সঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে কষ্টিপাথর, মার্বেল পাথর আর নানান রংবেরঙের টালি। লালবাগ কেল্লা ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো ঐতিহাসিক নিদর্শনে এমন বৈচিত্র্যময় সংমিশ্রণ পাওয়া যায়নি আজ পর্যন্ত। লালবাগ কেল্লা পুরান ঢাকার লালবাগে অবস্থিত। লালবাগের কেল্লার নকশা করেন শাহ আজম। মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র আজম শাহ ১৬৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার সুবাদারের বাসস্থান হিসেবে এ দুর্গের নির্মাণকাজ শুরু করেন। দুর্গের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই মারাঠা বিদ্রোহ দমনের জন্য সম্রাট আওরঙ্গজেব তাকে দিল্লি ডেকে পাঠান। ফলে একটি মসজিদ ও দরবার হল নির্মাণের পর দুর্গ নির্মাণের কাজ থেমে যায়। নবাব শায়েস্তা খাঁ ১৬৮০ সালে ঢাকায় এসে পুনরায় দুর্গের নির্মাণকাজ শুরু করেন। তবে শায়েস্তা খানের কন্যা পরী বিবির মৃত্যুর পর এ দুর্গ অপয়া মনে করা হয় এবং শায়েস্তা খান ১৬৮৪ খ্রিষ্টাব্দে এর নির্মাণ বন্ধ করে দেন।

লালবাগ কেল্লা, ঢাকা

এই পরী বিবির সঙ্গে শাহজাদা আজম শাহের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। পরী বিবিকে দরবার হল এবং মসজিদের ঠিক মাঝখানে সমাহিত করা হয়। শায়েস্তা খাঁ দরবার হলে বসে রাজকাজ পরিচালনা করতেন। ১৬৮৮ সালে শায়েস্তা খাঁ অবসর নিয়ে আগ্রা চলে যাওয়ার সময় দুর্গের মালিকানা উত্তরাধিকারীদের দান করে যান। শায়েস্তা খাঁ ঢাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর নানা কারণে লালবাগ দুর্গের গুরুত্ব কমতে থাকে। ১৮৪৪ সালে ঢাকা কমিটি নামে একটি আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান দুর্গের উন্নয়নকাজ শুরু করে। প্রথমে এর নাম ছিল কেল্লা আওরঙ্গবাদ। পরে লালবাগ দুর্গ নামে পরিচিতি লাভ করে। ১৯১০ সালে লালবাগ দুর্গের প্রাচীর সংরক্ষিত স্থাপত্য হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে আনা হয়।

হাজীগঞ্জ দুর্গ, নারায়ণগঞ্জ
হাজীগঞ্জ দুর্গ নারায়ণগঞ্জ শহরের হাজীগঞ্জ এলাকায় শীতলক্ষ্যার পশ্চিম তীরে অবস্থিত। ঢাকা থেকে হাজীগঞ্জ দুর্গে যেতে প্রায় এক ঘণ্টা লাগে। হাজীগঞ্জ দুর্গ আবার খিজিরপুর দুর্গ নামেও পরিচিত। জলদুর্গের বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত দুর্গটি শীতলক্ষ্যার সঙ্গে পুরাতন বুড়িগঙ্গার সঙ্গমস্থলে নির্মিত হয়। মুগল সুবাদার ইসলাম খান কর্তৃক ঢাকায় মুগল রাজধানী স্থাপনের অব্যবহিত পরে নদীপথে মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে দুর্গটি নির্মিত হয়। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক হাজীগঞ্জ কেল্লার স্থানটির সামনে দাঁড়াতেই বুকটা কেমন যেন ধক করে উঠল। অদ্ভুত সুন্দর বিশাল এক কেল্লা। ১৫৮০ খ্রিষ্টাব্দে মোগল শাসক ঈশা খাঁ মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের কবল থেকে এ জনপদকে রক্ষা করার জন্য শীতলক্ষ্যা-ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা নদীর মিলনস্থলে কেল্লাটি নির্মাণ করেন। ১৭০০ শতাব্দী বা তারও আগে নির্মিত এ দুর্গের সঠিক স্থপতির নাম তেমন পরিষ্কারভাবে কোথাও নেই। তবে ধারণা করা হয়, সম্ভবত সুবাদার ইসলাম খানের সঙ্গে সংঘর্ষকালীন ঈশা খাঁ এ দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। তার মৃত্যুর পর রাজধানী সোনারগাঁয়ের নিরাপত্তার জন্য মীর জুমলা অধিকাংশ সময় অবস্থান করতেন এ কেল্লায়। প্রায় দুই কিলোমিটার জায়গা নিয়ে বিস্তৃত এ দুর্গ।

হাজীগঞ্জ দুর্গ, নারায়ণগঞ্জ

দুর্গের উত্তর দেয়ালেই দুর্গের একমাত্র প্রবেশপথ ‘দুর্গ তোরণ’। কিছুটা উঁচু এই দুর্গে ঢুকতে হলে তোমাকে প্রবেশ তোরণের প্রায় ২০টি সিঁড়ি ডিঙাতে হবে। আর তোরণ থেকে দুর্গ চত্বরের নামতে হবে ৮টি ধাপ। প্রাচীরের ভেতরে চারদিকে চলাচলের পথ রয়েছে প্রাচীর ঘেঁষেই। দুর্গের পূর্ব-দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় দুটি বুরুজ আছে। আরও একটি বুরুজ রয়েছে দক্ষিণ পাশে। টাওয়ারে ঢোকার জন্য ছিল ছোট্ট একটি পূর্বমুখী দরজা। ভেতরে ঠিক মাঝখানে একটি মোটা গোল পিলার, পিলারের সঙ্গে ছিল গোলাকার সিঁড়ি। আজ পিলারটি টিকে থাকলেও নিচের দিকের অনেকটুকু সিঁড়িই ভেঙে গেছে।

যাবে কীভাবে
ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে তোমাকে প্রথমে যেতে হবে গুলিস্তান, যাত্রাবাড়ী বা কমলাপুর। গুলিস্তান বা যাত্রাবাড়ী থেকে নারায়ণগঞ্জে যেতে পারবে এসি বা নন-এসি বাসে।

শশী লজ, ময়মনসিংহ
মুক্তাগাছা জমিদারির প্রতিষ্ঠাতা শ্রীকৃষ্ণ আচার্য চৌধুরীর তৃতীয় উত্তরপুরুষ রঘুনন্দন আচার্য চৌধুরী নিঃসন্তান ছিলেন। অথচ পিতৃতান্ত্রিক সমাজের সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী সম্পত্তি সংরক্ষণে সক্ষম একটি পুত্রসন্তান ভীষণভাবে প্রয়োজন! কী করা যায়? গৌরীকান্ত আচার্য চৌধুরীকে দত্তক নিলেন রঘুনন্দন। সময়ের এক বিশেষ লগ্নে দত্তক পুত্রের হাতে জমিদারির ভার অর্পণ করে কিছুদিনের মধ্যেই তিনি পাড়ি জমালেন পরপারে! জমিদার গৌরীকান্ত আচার্য চৌধুরীর প্রতিও সদয় ছিল না নিয়তি! সন্তানহীন অবস্থায় অকালপ্রয়াণ ঘটল তাঁরও! গৌরীকান্তের বিধবা পত্নী বিমলা দেবী দত্তক নিলেন কাশীকান্তকে। কাশীকান্তের কপালও মন্দ ছিল ভীষণ! দীর্ঘ রোগযন্ত্রণায় ভুগে সন্তানহীন অবস্থায় পরলোকগমন করলেন তিনিও! তার বিধবা পত্নী লক্ষ্মী দেবী আচার্য চৌধুরানী পূর্বসূরিদের পথ অনুসরণ করে দত্তক নিলেন চন্দ্রকান্তকে! ভাগ্যের বিরুদ্ধাচরণে চন্দ্রকান্তও অতিদ্রুত ত্যাগ করলেন পৃথিবীর মায়া। তবে হাল ছাড়লেন না লক্ষ্মী দেবী। পুনরায় দত্তক নিলেন তিনি। দ্বিতীয় দত্তক পুত্রের পূর্ব নাম পূর্ণচন্দ্র মজুমদার।

শশী লজ, ময়মনসিংহ

কুলগুরুর সামনে মহাসমারোহে লক্ষ্মী দেবী নতুন নাম রাখলেন পুত্রেরÑ সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী! সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরীর শাসনামলে ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী জনপদে যুক্ত হলো সোনালি মাত্রা। প্রায় একচল্লিশ বছর জমিদারি পরিচালনার প্রশস্ত প্রেক্ষাপটে বহু জনহিতকর কাজ করলেন তিনি। ময়মনসিংহে স্থাপন করলেন একাধিক নান্দনিক স্থাপনা। ঊনবিংশ শতকের শেষ দিকে ময়মনসিংহ শহরের কেন্দ্রস্থলে ৯ একর ভূমির ওপর একটি অসাধারণ দ্বিতল ভবন নির্মাণ করলেন সূর্যকান্ত। নিঃসন্তান সূর্যকান্তের দত্তক পুত্র শশীকান্ত আচার্য চৌধুরীর নামে এই ভবনের নাম রাখা হলো শশী লজ।

যাবে কীভাবে
ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে ভোর পাঁচটা থেকে প্রতি আধা ঘণ্টা পরপর ময়মনসিংহের উদ্দেশে সৌখিন, এনা, নিরাপদ বাস ছেড়ে আসে। এরপর মাসকান্দা বাস টার্মিনাল অথবা স্টেশন থেকে রিকশা, অটোরিকশাযোগে যাওয়া যায় অথবা ব্রিজ থেকে রিকশা, অটোরিকশা, টেম্পোযোগে যাওয়া যায় শশী লজে।

জৈন্তেশ্বরী, সিলেট
সিলেট-তামাবিল সড়কের পাশে জৈন্তাপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছেই ‘জৈন্তেশ্বরী বাড়ি’র অবস্থান। ‘জৈন্তেশ্বরী বাড়ি’ মূলত সিন্টেং বা জৈন্তা রাজাদের পূজিত দেবতার বাড়ি। জৈন্তার রাজা যশোমানিক ১৬১৮ সালে অত্যন্ত আড়ম্বরে উপহার হিসেবে প্রাপ্ত কালী দেবীর মূর্তিকে এ বাড়িতে স্থাপন করেন এবং বাড়িটি নির্মাণ করেন। বাড়িটির মধ্যখানে মূল মন্দিরঘরটির অবস্থান। বর্তমানেও মূল ঘরটির ভিটা এবং সংলগ্ন দক্ষিণের ঘরটি নানা দৈব-দুর্বিপাকের মধ্যেও দাঁড়িয়ে আছে। কিছুটা সংস্কার করে একদল হিতৈষী ব্যক্তি ঘরটি ‘ইরাদেবী মিলনায়তন’ নামকরণ করেছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মাঝেমধ্যে এতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ঘরটির স্তম্ভগুলো লোহার এবং স্থাপত্যশৈলী বেশ দৃষ্টিনন্দন। বর্তমানে বাড়িটিতে মোট তিনটি ফটক দেখা যায়।

জৈন্তেশ্বরী, সিলেট

প্রধান ফটকটি দক্ষিণ দিকে অবস্থিত এবং সেটি সাবেক কালেব রাজকীয় ভাব অনেকটা ধরে রাখতে পেরেছে। যদিও সংস্কার ও পরিচর্যার অভাবে সেটি এখন প্রায় বিবর্ণ এবং ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পের কারণে ওপরের অংশটি ভেঙে পড়েছে। অপর গেট দুটির একটি পূর্ব দিকে এবং একটি পশ্চিম দিকে অবস্থিত।

যাবে কীভাবে
ঢাকা থেকে ট্রেনে বা বাসে সিলেট। সিলেট থেকে এক ঘণ্টার পথ জৈন্তাপুর। বাস, মিনিবাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মাইক্রোবাসে চড়ে জৈন্তাপুর চলে যেতে পারো। উঠতে পারো জৈন্তা হিল রিসোর্টে অথবা কাছের নলজুড়িতে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয়।

বাঘা মসজিদ, রাজশাহী
বাঘা মসজিদ রাজশাহী জেলা সদর থেকে প্রায় ৪১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে বাঘা উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। সুলতান নাসিরউদ্দিন নসরত শাহ ১৫২৩ খ্রিষ্টাব্দে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। মসজিদটি ১৫২৩-১৫২৪ সালে (৯৩০ হিজরি) হুসেন শাহি বংশের প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন শাহের পুত্র সুলতান নসরত শাহ নির্মাণ করেন। পরে বিভিন্ন সময় এই মসজিদের সংস্কার করা হয় এবং মসজিদের গম্বুজগুলো ভেঙে গেলে ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদে নতুন করে ছাদ দেওয়া হয় ১৮৯৭ সালে। মসজিদটি ২৫৬ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত। সমভূমি থেকে ৮-১০ ফুট উঁচু করে মসজিদের আঙিনা তৈরি করা হয়েছে। উত্তর পাশের ফটকের ওপরের স্তম্ভ ও কারুকাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। মসজিদটিতে ১০টি গম্বুজ আছে। আর ভেতরে রয়েছে ৬টি স্তম্ভ। এ ছাড়া আছে পোড়ামাটির অসংখ্য কারুকাজ যার ভেতরে রয়েছে আমগাছ, শাপলা ফুল, লতাপাতাসহ ফারসি খোদাইশিল্পে ব্যবহৃত হাজার রকম কারুকাজ। মসজিদের ভেতরে-বাইরে সর্বত্র টেরাকোটার নকশা বর্তমান।

বাঘা মসজিদ, রাজশাহী

যাবে কীভাবে
ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও আকাশপথে রাজশাহী যাওয়া যায়। ঢাকার কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে দেশ ট্রাভেলস ও গ্রিন লাইন পরিবহনের এসি বাস যায় রাজশাহী। এ ছাড়া ঢাকার গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে শ্যামলী পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, বাবলু এন্টারপ্রাইজ প্রভৃতি পরিবহন প্রতিষ্ঠানের বাস যায় রাজশাহী।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, নওগাঁ
পাহাড়পুরকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার বলা যেতে পারে। আয়তনে এর সঙ্গে ভারতের নালন্দা মহাবিহারের তুলনা হতে পারে। এটি ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের অতি বিখ্যাত ধর্মচর্চাকেন্দ্র ছিল। শুধু উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, চীন, তিব্বত, মিয়ানমার (তদানীন্তন ব্রহ্মদেশ), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশের বৌদ্ধরা এখানে ধর্মচর্চা ও ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে আসতেন। খ্রিষ্টীয় দশম শতকে বিহারের আচার্য ছিলেন অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান। ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম এই বিশাল স্থাপনা আবিষ্কার করেন। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নে অবস্থিত। পাহাড়পুরের এই ভগ্ন মন্দিরের জন্যই পাহাড়পুর বিখ্যাত। মূল গেট দিয়ে প্রবেশ করতে সামনে পাবে জাদুঘর। জাদুঘর থেকে মন্দিরে যেতে খানিকটা হাঁটতে হবে। মন্দিরটি অনেক পুরোনো হওয়ায় ভেতরে প্রবেশের রাস্তাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। পুরো মন্দির এলাকা ঘুরতে দুই ঘণ্টার মতো সময় লাগবে।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, নওগাঁ

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, নওগাঁ

যাবে কীভাবে
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে নওগাঁ শহরে এসে নওগাঁ বালুডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে সরাসরি বাসযোগে ঐতিহাসিক পাহাড়পুরে যাওয়া যায়। দূরত্ব আনুমানিক ৩২ কিলোমিটার এবং বাসভাড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা। অথবা দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে জয়পুরহাট শহরে এসে বাস অথবা অটোরিকশা নিয়ে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার চলে আসতে পারবে। জয়পুরহাট থেকে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব মাত্র ১৩ কিলোমিটার। ট্রেনযোগে জয়পুরহাটের জামালঞ্জ স্টেশনে নামলে এখান থেকে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে আসতে চাইলে তোমাকে ভ্যান অথবা অটোরিকশা নিতে হবে। জামালগঞ্জ থেকে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার।

মহাস্থানগড়, বগুড়া
মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি। প্রসিদ্ধ এই নগরী ইতিহাসে পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর নামেও পরিচিত ছিল। একসময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানী ছিল। যিশুখ্রিষ্টের জন্মেরও আগে অর্থাৎ প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এখানে সভ্য জনপদ গড়ে উঠেছিল প্রত্নতাত্ত্বিকভাবেই তার প্রমাণ মিলেছে। ২০১৬ সালে এটি সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে ঘোষণা হয়। প্রাচীরবেষ্টিত এই নগরীর ভেতরে রয়েছে বিভিন্ন আমলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত এ স্থান পরাক্রমশালী মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন শাসকদের প্রাদেশিক রাজধানী এবং পরে হিন্দু সামন্ত রাজাদের রাজধানী ছিল। তৃতীয় খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে পঞ্চদশ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অসংখ্য হিন্দু রাজা ও অন্যান্য ধর্মের রাজারা রাজত্ব করেন। মহাস্থানগড়ের অবস্থান বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত। বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার উত্তরে করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে গেলে এই শহরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। মহাস্থানগড় থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিমে ভাসুবিহার নামের গ্রামটিতে পা দিলে চোখে পড়বে এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ধ্বংসের চিহ্ন।…যে পুণ্ড্রনগরীর কথা এখানে বলা হচ্ছে তা ছিল রাজধানী।

মহাস্থানগড়, বগুড়া

মৌর্য, গুপ্ত, পাল রাজা যিনিই ক্ষমতায় এসেছেন, পুণ্ড্রনগরীকেই বানিয়েছেন রাজধানী। মৌর্যদের শাসনের পর গুপ্ত আমল। এরপর আনুমানিক ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে গোপাল পাল পুণ্ড্রনগরের শাসনভার গ্রহণ করলে পরবর্তী ৪০০ বছরে পালদের শাসনামলেই বাংলাদেশ শৌর্যে, বীর্যে, কৃষ্টিতে ও সভ্যতার চরম শিখরে পৌঁছায়। এরপর সেনরাজদের আমলে এ অঞ্চলের শাসন স্থানান্তরিত হতে থাকে গৌড়ে। প্রাচীরঘেরা নগরী শুরু হওয়ার আগে উঁচু যে স্থান দেখা যায়, সেখানেই রয়েছে শাহ সুলতান (র.)-এর বিশাল মাজার। আর এর পাশেই রয়েছে বিশাল মসজিদ।

কীভাবে যাবে
ঢাকা থেকে বগুড়া যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো সার্ভিস হলো গ্রিন লাইন, টিআর ট্রাভেলস এবং এসআর পরিবহনের এসি বাস। বগুড়া শহর থেকে অটোরিকশা কিংবা টেম্পোতে চড়ে আসতে পারো মহাস্থানে।

তাজহাট জমিদারবাড়ি, রংপুর
শত বছরের অমলিন কীর্তি রংপুরের তাজহাট জমিদারবাড়ি। কালের পরিক্রমায় আমাদের অনেক কীর্তি হারিয়ে গেলেও এখনো অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে তাজহাট জমিদারবাড়ি। শহর থেকে অল্প কিছুদূরেই এর অবস্থান। রিকশায় যেতে আধা ঘণ্টার মতো সময় লাগে। রংপুর শহরের তাজহাট জমিদারবাড়ি বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অন্যতম স্মারক। শহরের কাছেই ইতিহাসবিজড়িত সংগ্রহশালার ঐতিহাসিক প্রাসাদটি যে কাউকে মুগ্ধ করবে। তাজহাট জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা মান্না লাল রায়। তিনি পাঞ্জাব থেকে এসে রংপুরের মাহীগঞ্জে বসবাস শুরু করেন। সে সময় মাহীগঞ্জ ছিল রংপুরের জেলা শহর। কথিত আছে যে স্বর্ণ ব্যবসায়ী মান্না লাল রায়ের আকর্ষণীয় ‘তাজ’ আর ‘রত্ন’খচিত মুকুটের কারণে এ এলাকার নামকরণ হয় তাজহাট। জীবদ্দশায় তিনি বিপুল পরিমাণ ভূসম্পত্তির মালিক হন। রংপুরের অনেক এলাকা তার আয়ত্তে আসে। বংশপরম্পরায় মান্না লাল রায়ের নাতি ধনপতি লাল জমিদার হন। ধনপতি রায়ের নাতি উপেন্দ্র লাল রায় জমিদারি গ্রহণের পর অল্প বয়সে মারা যান। তখন জমিদারির দায়িত্ব তার কাকা ‘মুনসেফ’ গিরিধারী লাল রায়ের হাতে আসে। তিনি নিঃসন্তান হওয়ার কারণে কলকাতার গোবিন্দ লালকে দত্তক হিসেবে গ্রহণ করেন। গোবিন্দ লাল ১৮৭৯ সালে এই জমিদারির উত্তরাধিকারী হন।

তাজহাট জমিদারবাড়ি, রংপুর

কীভাবে যাবে
ঢাকা থেকে ট্রেন ও বাসে রংপুর যাওয়া যায়। রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুর ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন পরিবহনের বাস যেকোনো সময় রংপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

কান্তজিউ মন্দির, দিনাজপুর
ইন্দো-পারস্য ভাস্করশৈলীতে নির্মিত দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দির দেশের সবচেয়ে সুন্দর মন্দির। শুধু নির্মাণশৈলীই নয়, উৎকর্ষের জন্য অধিকাংশ স্থাপত্যকর্মীকেও পারস্য থেকে আনা হয়েছিল। এ মন্দির শ্রীকৃষ্ণের জন্য নিবেদিত। কালিয়াকান্ত জিউ অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ স্থাপনের জন্য তাই মন্দিরের নাম কান্তজিউ, কান্তজি বা কান্তজির। মন্দিরের জন্য এ এলাকা কান্তনগর নামে পরিচিতি পায় এবং সে কারণে পরে এ মন্দিরের অপর নাম কান্তনগরের মন্দির হয়ে ওঠে। মন্দিরের উত্তর দিকের ভিত্তিবেদীর শিলালিপি থেকে জানা যায়, তৎকালীন দিনাজপুরের মহারাজা জমিদার প্রাণনাথ রায় তার শেষ বয়সে মন্দিরের নির্মাণকাজ শুরু করেন। ১৭২২ খ্রিষ্টাব্দে তার মৃত্যুর পরে তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী তার পোষ্যপুত্র মহারাজা রামনাথ রায় ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে মন্দিরটির নির্মাণকাজ শেষ করেন। শুরুতে মন্দিরের চূড়ার উচ্চতা ছিল ৭০ ফুট। ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দে মন্দিরটি ভূমিকম্পের কবলে পড়লে এর চূড়াগুলো ভেঙে যায়। মন্দিরের বাইরের দেয়ালজুড়ে পোড়ামাটির ফলকে লেখা রয়েছে রামায়ণ, মহাভারত এবং বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনি।

কান্তজিউ মন্দির, দিনাজপুর

যেভাবে যাবে
দিনাজপুর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার উত্তরে এবং কাহারোল উপজেলা থেকে সাত কিলোমিটার দূরে সুন্দরপুর ইউনিয়নে কান্তজিউ মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরের পাশেই ঢেপা নদী।

ষাটগম্বুজ মসজিদ, বাগেরহাট

ষাটগম্বুজ মসজিদ বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। মসজিদটির গায়ে কোনো শিলালিপি নেই। তাই এটি কে নির্মাণ করেছিলেন বা কোন সময়ে নির্মাণ করা হয়েছিল, সে সম্বন্ধে সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে মসজিদটির স্থাপত্যশৈলী দেখলে এটি যে খান-ই-জাহান নির্মাণ করেছিলেন, সে সম্বন্ধে কোনো সন্দেহ থাকে না। ধারণা করা হয় তিনি ১৫শ খ্রিষ্টাব্দে এটি নির্মাণ করেন। মসজিদটি বহু বছর ধরে ও বহু অর্থ খরচ করে নির্মাণ করা হয়েছিল।

 ষাটগম্বুজ মসজিদ, বাগেরহাট

কীভাবে যাবে
ঢাকা থেকে বাগেরহাটে বাসে যাওয়ার দুটি ভিন্ন রুট রয়েছে। একটি হচ্ছে ঢাকার গাবতলী হয়ে আরিচা ফেরি পারাপার হয়ে খুলনা বাগেরহাট। আর অন্যটি গুলিস্তান, সায়েদাবাদ হয়ে মাওয়া ফেরি বা লঞ্চ পারাপার হয়ে বাগেরহাট।

ছবি: লেখক

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.এই সংখ্যায়হেঁসেল

চিকেন হারিয়ালি কাবাব ও চিকেন কর্ডেন ব্লু রেসিপি

করেছে Sabiha Zaman সেপ্টেম্বর ৫, ২০২১

কিছুদিন আগেই চলে গেল কোরবানির ঈদ। আমাদের প্রায় সবার বাসাতেই এখনো রয়ে গেছে কোরবানির ঈদের মাংস, যা দিয়ে মজাদার নাশতার পদ তৈরি করতে পারো। বিকেলে নাশতায় মজাদার খাবার না হলে বিকেলটা যেন পানসে মনে হয়। জিভে জল আনা সুস্বাদু রেসিপি পাঠিয়েছেন আফরোজা নাজনীন সুমি।

চিকেন হারিয়ালি কাবাব

উপকরণ
মুরগির বুকের মাংস ১ কাপ, আদাবাটা ১/৪ চা-চামচ, রসুনবাটা ১/৪ চা-চামচ, চিনি পরিমাণমতো, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, সাদা গোলমরিচগুঁড়া ১/৪ চা-চামচ, টক দই ১ টেবিল চামচ, চাট মসলা ১/৪ চা-চামচ, গরম মসলার গুঁড়া ১/৪ চা-চামচ, ধনেগুঁড়া আধা চা-চামচ, জিরাগুঁড়া আধা চা-চামচ, সরিষার তেল আধা টেবিল চামচ, ধনে, পুদিনাপাতা ও কাঁচা মরিচ পেস্ট ১ টেবিল চামচ, সরিষাবাটা ১/৪ চা-চামচ, তেল পরিমাণমতো, লবণ স্বাদমতো।


প্রণালি
প্রথমেই মুরগির মাংস কিউব করে কেটে নিয়ে আদাবাটা, লবণ, চিনি, লেবুর রস, আদা, গোলমরিচ, টক দই, চাট মসলা, গরম মসলার গুঁড়া, ধনেগুঁড়া, জিরাগুঁড়া, সরিষার তেল, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা, কাঁচামরিচ বাটা ও সরিষাবাটা দিয়ে মেখে মেরিনেট করে নাও। এবার মেরিনেট করা মাংস কাঠিতে গেঁথে নিয়ে ফ্রাইপ্যানে অল্প তেলে স্যালো ফ্রাই করতে হবে। ফ্রাই হয়ে এলে উঠিয়ে পরিবেশন করো টমেটো কেচাপ দিয়ে।

চিকেন কর্ডেন ব্লু
উপকরণ
মুরগির বুকের মাংস ১ পিস, মাখন ১ চা-চামচ, রোজমেরি আধা চা-চামচ, গোলমরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ, পাপড়িকা আধা চা-চামচ, লেবুর রস আধা চা-চামচ, পনির ১টি স্লাইস, ডিম ১টি, লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি
প্রথমে মুরগির মাংস মাঝ বরাবর কেটে পলি পেপার ওপরে বিছিয়ে হেমার দিয়ে মাংসটি থেঁতলে নাও। এখন থেঁতলানো মাংসটিতে মাখন ব্রাশ করে লবণ, রোজমেরি, গোলমরিচ, পাপড়িকা ও লেবুর রস দিয়ে ভালো করে মেখে মেরিনেট করো। এবার মাংসটিতে পনির স্লাইস দিয়ে রোল করে টুথ পিক দিয়ে আটকে নিতে হবে। এবার একটি বাটিতে ফেটানো ডিমের মধ্যে প্রথমে লবণ ও গোলমরিচগুঁড়া দিয়ে মিশিয়ে মেরিনেট করা মাংসটি চুবিয়ে নাও। চুবানো হয়ে গেলে উঠিয়ে ময়দায় গড়িয়ে আবার ডিমে চুবিয়ে ব্রেডক্রাম্বে গড়িয়ে গরম তেলে ভেজে উঠিয়ে পরিবেশন করে ফেলো কেচাপ দিয়ে।

ছবি: রোদসী

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.

আজকের রাশি ২৬ আগস্ট

করেছে Sabiha Zaman আগস্ট ২৬, ২০২১
মেষ ,২১ মার্চ-২০ এপ্রিল
মেঘলা দিনে মনের মেঘলা ভাব কমে যাবে আজ।
বৃষ, ২১ এপ্রিল-২১ মে
ব্যস্ততার মাঝেই যাবে তোমার আজকের দিন।
মিথুন, ২২ মে-২১ জুন
শরীরের দিকে নজর দাও। নয়তো বিপাকে পরবে।
কর্কট, ২২ জুন-২২ জুলাই
মন খারাপ ভাবটা কেটে নতুন করে স্বপ্ন দেখবে আজ।
সিংহ, ২৩ জুলাই-২৩ আগস্ট
নিজের উপর আস্থা রাখো।
কন্যা, ২৪ আগস্ট-২৩ সেপ্টেম্ব
সিধান্ত নিতে নিজের বুদ্ধি কাজে লাগাও।
তুলা, ২৪ সেপ্টেম্বর-২৩ অক্টোবর
অতীত ভুলে নতুন করে শুরু করো।
বৃশ্চিক, ২৪ অক্টোবর-২২ নভেম্বর
পরিবারকে সময় বেশি দাও মন খারাপ ভাব কেটে যাবে।
ধনু, ২৩ নভেম্বর-২১ ডিসেম্বর
নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ আসবে আজ।
মকর, ২২ ডিসেম্বর-২০ জানুয়ারি
ঠিক সময় মত কাজ করো।
কুম্ভ, ২১ জানুয়ারি-১৮ ফেব্রুয়ারি
আজ কাজের জন্য নিজের দিকে নজর দেওয়ার সময় নাও পেতে পারো।
মীন, ১৯ ফেব্রুয়ারি-২০ মার্চ
কোথাও ঘুরে আসতে পারো।
০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.

কেন খাবে চিয়া সিড

করেছে Sabiha Zaman আগস্ট ১৮, ২০২১

সুস্থতা অনেক বড় একটি রহমত সৃষ্টিকর্তার। সুস্থ থাকার জন্য আমরা কত কিছুই না করি। কেউ পালন করি নিয়মিত ডায়েট, কেউবা করছি নিয়মিত শরীরচর্চা। আমাদের সুস্থতার জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে কিছু পুষ্টিকর খাবার। শরীরকে চাঙা আর ফিটফাট রাখার জন্য তাই আমরা বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার খেয়ে থাকি। যেগুলোর বেশির ভাগ পরিচিত সুপারফুড নামে। এ রকম একটি সুপারফুড হচ্ছে চিয়া সিড বা চিয়া বীজ। বর্তমান সময়ে অনেকেই শুনবে, চিয়া সিড খাচ্ছে শরীরটাকে আরও বেশি ফিটফাট রাখার জন্য। কারণ, চিয়া সিডের পুষ্টিগুণ তোমার শরীর ঠিক রাখতে অনেক উপকারী। লিখেছেন সাবিহা জামান।

চিয়া সিড কী?
সালভিয়া হিস্পানিকা নামক মিনট প্রজাতির উদ্ভিদের বীজ হচ্ছে চিয়া সিড। এটি মরুভূমির উদ্ভিদ, যেটি মূলত আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমি অঞ্চলে বেশি জন্মায়। চিয়া সিড দেখতে অনেকটা তিলের দানার মতো। অনেকে আবার তোকমা দানার সঙ্গে এটির মিল খুঁজে পায়। তবে তোকমা দানা চিয়া সিডের থেকে আকারে কিছুটা বড়। এটি খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার।

পুষ্টিগুণ
বর্তমান সময়ে মানুষ অনেক বেশি সচেতন তার শরীর নিয়ে। সুস্থ থাকতে তাই প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর প্রতি সবাই এখন বেশি ঝুঁকছে। চিয়া সিডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে এর পুষ্টিগুণের কারণে। তাই প্রতিদিনের পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে চিয়া সিড। আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের পুষ্টির প্যাক বলা যেতে পারে এই চিয়া সিডকে। তুমি সব ধরনের পুষ্টি পাবে এই একটি খাবার থেকে।
চিয়া সিডে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ওমেগা-৩, ফাইবার, ফসফরাস, প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, আয়রন, ভিটামিন বি থায়ামিন নিয়াসিন ক্যাফেইনের মতো পুষ্টিকর উপাদান। আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের প্রয়োজনীয় উপাদানের একটি কমপ্লিট প্যাকেজ হচ্ছে চিয়া সিড।

উপকারিতা

ওজন কমাতে
শরীরে একটু বাড়তি মেদ এলে আমরা অনেকেই চিন্তায় পড়ে যাই কী করে এ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দিনরাত ব্যায়াম করলেও আমরা প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর কথা ভাবি না অনেকেই। অথচ প্রাকৃতিক উপাদানগুলো থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে ওজন কমানো সম্ভব। এমন একটি উপাদান হচ্ছে চিয়া সিড।
এতে থাকা উচ্চ মাত্রায় ফাইবার আর এটি অনেক বেশি পানি শোষণ করে। চিয়া সিড খেলে তাই মনে হয় পেট ভরা রয়েছে। তখন স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুধা কম লাগে। কিন্তু কম খেলেও পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয় না। উল্টো নিয়মিত চিয়া সিড খেলে তোমার ওজন কমে আসবে ধীরে ধীরেই।

হাড়ের সুস্থতায়
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরে নানা অসুখ হতে শুরু করে। যার ভেতরে অন্যতম হচ্ছে হাড়ের সমস্যা। হাড় ক্ষয় হয়ে যাওয়ার কারণে আমরা অনেকেই ঠিকমতো চলাচল করতে পারি না বৃদ্ধ বয়সে। এমনকি হাড়ের সমস্যা বা হাড় ক্ষয়ের সমস্যা বর্তমান সময়ে তরুণদের ভেতরে দেখা দিচ্ছে। হাড়ের সুস্থতার জন্য প্রোটিনের পাশাপাশি ক্যালসিয়াম ভূমিকা রাখে।
তোমার হাড়ের সুস্থতার জন্য চিয়া সিড খেতে পারো। চিয়া সিডে থাকা উপকরণগুলো হাড়ের সুস্থতায় কাজ করে থাকে। তাই নিয়মিত খেতে পারো এ খাবার।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
চিয়া সিড হচ্ছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের অন্যতম উৎস। আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের ভূমিকা অনেক এ কারণে চিকিৎসকেরা বারবারই বলেন আমাদের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট-জাতীয় খাবার খেতে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি
প্রয়োজনীয় সব ধরনের উপকরণ রয়েছে চিয়া সিডে। শরীরের সুস্থতায় তাই অনেক বড় ভূমিকা পালন করে থাকে এই খাবার। অনেক পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসক রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য চিয়া সিড খেতে বলেন। আর এই করোনাকালে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করাটা খুব বেশি প্রয়োজন। তাই আজ থেকেই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখতে পারো চিয়া সিড।

প্রোটিন চাহিদা পূরণ
অনেকেই মনে করে থাকে যে প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য আমিষজাতীয় খাবার খেতে হবে কিন্তু বাস্তবে এমন নয়। প্রোটিনের জন্য খেতে পারো চিয়া সিড কারণ উচ্চমাত্রার প্রোটিন রয়েছে এতে। সব সময় প্রোটিনের উৎস হতে মাছ-মাংসের ওপর নির্ভর না করে প্রাকৃতিক উৎসের ওপর নির্ভর করে ভালো থাকা যায়। যার উদাহরণ হচ্ছে এই উপাদানটি।
অনেক বাচ্চা আছে যারা মাছ-মাংস খেতে আগ্রহী নয়। তাদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতেও কিন্তু তাদের চিয়া সিড খাওয়াতে পারো। উল্লেখ্য, প্রতি ২৮ গ্রাম চিয়া সিডে প্রায় ৪ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।

ফ্যাটি অ্যাসিড
আমাদের হার্ট সুস্থ রাখার কাজে ফ্যাটি অ্যাসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অনেক গবেষক দাবি করেন, স্যালমন মাছের চেয়েও বেশি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে চিয়া সিডে। তাই হার্ট সুস্থ রাখার দাওয়াই হিসেবে এখন থেকেই খাওয়া শুরু করতে পারো চিয়া সিড।

ক্লান্তি ভাব কাটাতে
অনেক সময় দেখা যায় যে আমরা অল্প একটু কাজ করেই ক্লান্ত হয়ে পড়ি। দ্রুত ক্লান্তি ভাব কিন্তু আমাদের শরীরে পুষ্টির অভাবে ইঙ্গিত দিয়ে থাকে। শরীরের পুষ্টির ঘাটতি কাটানোর জন্য চিয়া সিড খেতে পারো, যা ক্লান্তি দূর করে আরও বেশি চাঙা রাখবে তোমাকে।

কীভাবে খাবে
অনেকেই চিয়া সিড কীভাবে খাবে, এটা দিয়ে কনফিউশনে পড়ে যায়। চিয়া সিড একটি ড্রাই ফুড। তাই নিজের সুবিধা আর পছন্দমতো যেকোনোভাবেই এটি খাওয়া যায়। চাইলে বাদামের মতো শুকনো চিয়া সিড খেতে পারো অথবা স্মুদি ড্রিংকস বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে। অনেকেই আছে, যারা ফলের জুসের সঙ্গে চিয়া সিড মিশিয়ে খায়। এতে করে যেমন খাবারের স্বাদ অনেক বেড়ে যায়, তার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় পুষ্টিগুণ।
ছবি: সংগৃহীত

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
.প্রযুক্তিসম্ভাবনাসাফল্য

ই-ক্যাবের নেতৃত্বে ডিজিটাল বিপ্লব

করেছে Suraiya Naznin জুলাই ১৫, ২০২১

দেশের ই-কমার্স সেক্টরের উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। নতুন উদ্যোক্তা তৈরির পাশাপাশি এ সেক্টরের ব্যবসায়ীরা ব্যবসার ক্ষেত্রে যেসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, সেগুলো সমাধানে কাজ করছেন তারা। উদ্যোক্তাদের দক্ষ করে তুলতে নানা বিষয়ে নিয়মিত কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ব্লগ সাইটের মাধ্যমেও উদ্যোক্তাদের তারা বিভিন্ন সহায়তাও দিচ্ছেন। ফলে প্রসারিত হচ্ছে ই-কমার্স, সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র।
বাংলাদেশে ই-কমার্স শুরু হয়েছে নব্বই দশকের শেষ ভাগে। প্রথম দিকে ধীরগতি থাকলেও গত পাঁচ বছরে এটি দেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে মানুষ দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল। ফলে এই সময়ে এর চাহিদা আরও অনেক বেড়েছে।

ই-ক্যাবের কার্যক্রম নিয়ে ই-ক্যাবের সহসভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন শিপন বলেন, জাতীয় বাজেটে ৯ দফা প্রস্তাবনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্টের নেতৃত্বে আনুষ্ঠানিকভাবে ই-ক্যাবের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল এনবিআর সভাকক্ষে এনবিআর চেয়ারম্যানকে গত ৪ মার্চ ই-ক্যাবের দাবিসমূহের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে। ট্রেড লাইসেন্স অ্যাক্ট ২০১৬ সংশোধন করে ই-কমার্স সংযুক্ত করেছে। ই-কমার্স ট্রেড লাইসেন্স ন্যূনতম ফিস ধার্য করা ও অফিস ঠিকানার বাধ্যবাধকতা রহিত করাসহ সার্বিক শর্ত সহজীকরণ করছে।
এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পেশ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অতি শিগগির ট্রেড লাইসেন্স অ্যাক্ট ২০১৬ সংশোধন করে সহজ শর্তে ই-কমার্স সংযুক্তির ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ‘ডিজিটাল কমার্স নির্দেশিকা ২০২১’ প্রণয়ন করছেন।

সাহাব উদ্দিন শিপন

এ বিষয়ে ই-ক্যাব সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহকে খসড়া এসওপির কপি প্রেরণ করেছে। যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের মতামত দিয়েছে, সেগুলো সংযোজন করা হয়েছে এবং অভিজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে ইতিমধ্যে ই-ক্যাবের প্রস্তাবনা পেশ করেছে। শিগগিরই এ নির্দেশিকা বাস্তবায়ন হবে। এটা বাস্তবায়ন হলে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে। তাতে ব্যর্থ হলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মূল্য ফেরত দিতে হবে।

ই-ক্যাবের ভূমিকা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এমনকি আইসিটি নীতিমালায় ই-ক্যাবের বাস্তবায়নযোগ্য কাজের একটা বড় অংশ ই-ক্যাব বাস্তবায়ন করেছে। এবং কিছু বিষয় সংশোধনের জন্য প্রস্তাব পেশ করেছে। বাকিগুলো বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে।

ই-ক্যাব সদস্যদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়সীমা নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে এবং যৌক্তিকতা তুলে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সভা আয়োজন করা হয়েছে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট কথা বলছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় ঊঝঈজঙড সেবা উন্নয়নে কাজ করছে। ঊঝঈজঙড হচ্ছে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে অনলাইন পেমেন্টে প্রদত্ত ক্রেতার টাকা সরাসরি বিক্রেতার কাছে না গিয়ে ঊঝঈজঙড তে জমা থাকে।

যখন ক্রেতা সাত দিনের মধ্যে কোনো অভিযোগ না করে কেবল তখনি বিক্রেতা বা মার্কেটপ্লেস বা অনলাইন শপ টাকা পায়। এতে করে প্রতারণার সুযোগ থাকে না বা পণ্য ডেলিভারি না দেওয়া, ভুল পণ্য দেওয়া এগুলোর সুযোগ থাকে না। তাই এটা বাস্তবায়ন হলে অনলাইন ক্রেতার আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে একটি সভা আহ্বান করে। তাতে ই-ক্যাবের প্রস্তাব অনুসারে একটি কমিটি গঠন করা হয় এবং ঊঝঈজঙড সেবা চালুর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ই-কমার্স খাতে সুষম প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরিতে কাজ করছে ই-ক্যাব। এ বিষয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনের সঙ্গে প্রাথমিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমিশনকে এ বিষয়ে নীতি পলিসি তৈরিতে সাহায্য করছে ই-ক্যাব। এটা বাস্তবায়িত হলে অস্বাভাবিক অফার দেওয়ার পথ থাকবে না।

সাহাব উদ্দিন শিপন আরও বলেন, গ্রামীণ ও প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের জন্য লজিস্টিক ও অন্যান্য সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সঙ্গে কাজ করছে ই-ক্যাব। জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ই-কমার্স অকুপেশন স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করছে। ই-কমার্স সেক্টরের কর্মী ও পেশাজীবীদের বিভিন্ন পেশা এখনো সরকার স্বীকৃত হয়নি। তাদের পেশার মান ঠিক করা ও স্বীকৃতির জন্য জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষেও কাছে প্রস্তাবনা পেশ করেছে ই-ক্যাব। যা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিবেচনাধীন।

তা ছাড়া চলতি বছর ২০২১ সালে সীমিত চলাচল ঘোষণার শুরুতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আইসিটি ডিভিশনের অনুমতির মাধ্যমে স্টিকার দিয়ে সদস্য প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা সচল রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে ই-ক্যাব। ই-ক্যাবের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে সাহাব উদ্দিন শিপন বলেন, দেশের সমস্ত ই-কমার্স সাপ্লাই প্রক্রিয়া একটি অভিন্ন চেইনের মধ্যে নিয়ে আসার জন্য পরিকল্পনা করা হ”েছ। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মধ্যে নিয়ে আসতে চায় ই-ক্যাব। ই-কমার্স-সংক্রান্ত সব সেবাকে একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিসের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা রয়েছে। ক্রসবর্ডার ই-কমার্সের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানিযোগ্য সব ই-কমার্স পণ্য অভিন্ন চেইনের মাধ্যমে বিদেশে প্রেরণের পথ সুগম করার পরিকল্পনা আছে।

গ্রন্থণা সুরাইয়া নাজনীন

০ মন্তব্য করো
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নতুন লেখা
আগের লেখা

পোর্টফোলিও

প্রকাশিত সংখ্যা

রোদসীর পছন্দ

  • ওয়েডিং ডেস্টিনেশন

তুমিই রোদসী

  • স্বপ্ন দেখি নারী দিবসের দরকারই হবে না







rodoshee logo

© স্বত্ব রোদসী ২০১৪ - ২০২১
সম্পাদক ও প্রকাশক:   সাবিনা ইয়াসমীন
৯১/এ, প্রথম ও দ্বিতীয়তলা, ব্লক-এফ, রোড-৩, চেয়ারম্যান বাড়ি, বনানী, ঢাকা-১২১৩।
ফোন: +৮৮০-২-৫৫০৪১০৪৬-৪৮, ই-মেইল: info@rodoshee.com

রোদসী

রোদসী

ক্যাটাগরি

আর্কাইভ

@2014-2018 -রোদসী. All Right Reserved.

রোদসী
  • হোম
  • লাইফস্টাইল
  • রূপ ও ফ্যাশন
  • রোমান্স
  • কালচার
  • নারী
    • সাফল্য
    • সম্ভাবনা
    • সংগ্রাম
    • সমস্যা
Facebook